১৯৭১-এ আমার বয়স চার। চার বছরের শিশুর স্মৃতিতে কোন্ ঘটনা কীভাবে রেখাপাত করে আমি ঠিক জানি না। কিন্তু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়ের কিছু স্মৃতি আমার কাছে এখনো জীবন্ত।
আমাদের গ্রামের নাম নাপোড়া। গ্রামের এক পাশে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর যে রাস্তাটি চলে গেছে তার দু’পাশে গড়ে উঠেছে নাপোড়া বাজার। এখানেই আমাদের বাড়ি। ইটের দেয়াল আর টিনের ছাউনি দোতলায় আমরা থাকি, নিচের তলায় বাবার দোকান। দোকানের সামনে রাস্তার ওপর একদিন বাঁশ আর কাগজ দিয়ে বিরাট একটা নৌকা বানানো হলো। নৌকাটি দড়ি দিয়ে টাঙিয়ে দেয়া হলো রাস্তার এপার থেকে ওপারে। ঝুলন্ত নৌকাটি বাতাসে দুলছে একটু একটু। দোকানের সামনে মানুষের ভীড়- সবাই নৌকা দেখছে। এরপর অনেকদিন বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গেলেও নৌকাটি ছিল সেখানে।
তারপর একদিন বাজারের রাস্তা ধরে উত্তর দিক থেকে মিছিল এলো। অনেক মানুষ, হাতে তাদের লাঠি, কারো কারো হাতে লম্বা লম্বা দা। চিৎকার করে কিছু বলছে তারা। আমি ভয় পেয়ে বাবার বুকে মুখ লুকিয়েছি। বাবাও খুব ভয় পেয়েছেন। একটু পরে দেখি আগুন জ্বলছে। দাউ দাউ করে জ্বলে যাচ্ছে নৌকা। সবাই পালাচ্ছে।
২
ছুটছে সবাই। বাবাও ছুটছেন। আমাকে বুকে আঁকড়ে ধরেছেন এক হাতে, অন্যহাতে দাদার হাত। দাদার হাত ধরে ছুটছে আমার দিদি। দাদা তখন নয়, দিদি তেরো। আশেপাশে ছুটছে গ্রামের মানুষ। ছুটছে পাহাড়ের দিকে। একসঙ্গে এত মানুষ আগে দেখিনি কখনো।
৩
ঘুটঘুটে অন্ধকার। ভয়ে ‘বাবা’ বলে কেঁদে উঠতেই আমার মুখ চেপে ধরলো কেউ। কানের কাছে মুখ লাগিয়ে ফিসফিস করে দিদি বললো, “কাঁদিস না, কাঁদলে মেরে ফেলবে”। আমি আরো ভয় পেয়ে দিদির কোলে মুখ গুঁজেছি। প্রচন্ড ক্ষুধায় ছটফট করতে করতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়েছি। ঘুম ভাঙার পর দেখলাম সকাল হয়ে গেছে। একটি বাড়ির উঠোনে শত শত মানুষ। কলাপাতায় খাবার দেয়া হলো। চাল আর ডাল মেশানো এ ধরণের খাবার আগে খাইনি কখনো। সবাই নিঃশব্দে খাচ্ছে। খাওয়ার পর আবার চলার পালা। এবার ছুটছে না কেউ। খুব আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে চলছে সবাই ঘন জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে। বাবার কাঁধে আমি। দাদা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। তার পায়ে কাঁটা ফুটেছে।
জঙ্গল শেষ হয়ে গেলো এক সময়। এবার ধানের ক্ষেত। ক্ষেতের আল ধরে হাঁটতে হাঁটতে এক সময় ধানক্ষেতেই শুয়ে পড়লো সবাই। বাবা আমাকে বুকের মধ্যে চেপে ধরে হামাগুড়ি দিচ্ছেন। আমার সারা গা পানিতে ভিজে গেছে। বাবা আমার নাকে হাত দিয়ে রেখেছেন যেন পানি ঢুকে না যায়।
৪
এ জায়গার নাম ‘কঁইয়া কাটা’। উঁচু-নিচু অনেক পাহাড়ের মাঝখানে কয়েকটি মাটির ঘর। পাহাড়ের মাঝখানে আশ্রয় নিয়েছে শত শত মানুষ। কিন্তু সবাই খুব চুপচাপ। এখানে অনেক কাঁঠাল গাছ। এক জায়গায় বসে কাঁঠাল খাচ্ছে কয়েকজন। আমি আর দাদা অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম সেদিকে। তারা খাওয়া শেষ করে কাঁঠালের খোঁসা ফেলে দিয়ে এলো গোয়াল ঘরে। দাদা আমাকে নিয়ে ছুটে গেল সেখানে। গরুর মুখ থেকে কেড়ে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে চুষলাম কাঁঠালের ভুঁতি।
৫
দিদি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার দুই হাঁটু ফুলে গেছে। গায়ে খুব জ্বর। সবাই বলছে সে মরে যাবে। এরমধ্যে খবর এলো মিলিটারি এসে গেছে। ‘মিলিটারি’ কী জানি না, তবে বুঝতে পেরেছি ভয়ংকর কিছু। সবাই ছুটোছুটি করে লুকিয়ে পড়লো যে যেখানে পারে। বাবা আমাদের নিয়ে ঢুকলেন একটি পানের বরজে। একটু পরেই শুরু হলো গুলির বৃষ্টি। বাবা আমাদের শুইয়ে দিলেন বরজের একহাঁটু জলকাদার ভেতর। আমাদের সারা শরীর কাদার ভেতর, শুধু মাথাটা বাইরে। বাবা আমার গায়ের ওপর শুয়ে আড়াল করে রেখেছেন আমাকে। পানের বরজের ভেতর আমাদের মাথার ওপর দিয়ে একটু পর পর ছুটে চলেছে রাইফেলের গুলি।
৬
দিদির অবস্থা খুব খারাপ। সে আর হাঁটতে পারছে না। ভালো ডাক্তার না পেলে সে মরে যাবে। শোনা যাচ্ছে শান্তি কমিটিকে টাকা দিলে নাকি বাড়ি ফিরে যাওয়া যাবে। পাড়ার কিছু মানুষ শান্তি কমিটির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে। তারা নাকি হিন্দু রাজাকার। বাবার কাছ থেকেও টাকা নিয়ে যায় তারা। বাজারের সব দোকানপাট, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে রাজাকাররা। আমাদের এখন থাকার জায়গা নেই। পাড়ার ভেতর একটা বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিলাম আমরা। বাবা পাগলের মত হয়ে গেছেন। মুখভর্তি দাড়িগোঁফ। বাবার বন্ধু আওরঙ্গজেব ডাক্তারকে খবর দেয়া হলো। তিনি এসে বললেন দিদির ‘রিওমেটিক ফিভার’ হয়েছে। আমি আর দাদাও নাকি অসুস্থ। ঠিকমতো খেতে না পেয়ে এ রকম হয়েছে। বাবাকে বললেন দাড়িগোঁফ কেটে ভদ্রস্থ হতে। হিন্দু রাজাকার এসে বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে অভয় দিয়ে গেলো- “আর ভয় নেই, সব কিছু স্বাভাবিক। নাপোড়ার রাজাকাররা কিছু করবে না। মিলিটারিরা ধরলে বলতে হবে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ। লা ইলাহা ইল্লাল্লা’।
৭
অনেকদিন পর বাবা বাজারে এলেন। পরিচিত নাপিতের দোকানে বসে দাড়ি কাটাচ্ছেন। আমি বসে আছি বাবার পাশের চেয়ারে। হঠাৎ গুলির শব্দ। কোত্থেকে একটা গুলি ছুটে এসে দোকানের চৌকাঠে লেগে ছিটকে চলে গেলো অন্যদিকে। আবার দৌড়।
৮
ঈদের দিন, কিন্তু রাস্তাঘাট নির্জন। আমরা পালাচ্ছি গ্রাম ছেড়ে। একটা অপরিচিত গ্রামের ভেতর দিয়ে যাবার সময় আমাদের দেখে ঈদের সেমাই খাবার জন্য ডাকছে কেউ কেউ। আমরা থামছি না কোথাও। আমাদের সঙ্গে আছেন আমার এক কাকা ও দাদু। দিদি এখনো ভালো করে হাঁটতে পারছে না। বাবা তাকে ধরে আস্তে আস্তে হাঁটছেন। আমি দাদুর পিঠে। পথে একটি ছোট নদী পড়লো। আমাকে পিঠে নিয়ে সাঁতরে নদী পার হলেন দাদু। বিকেলের দিকে আমরা যেখানে পৌঁছলাম- সে জায়গার নাম বড়ঘোনা। এখানে নাকি রাজাকার নেই, মিলিটারিও আসবে না কোনোদিন।
৯
কিন্তু ক’দিন পরে এখানেও এলো রাজাকার। বাবা আমাকে কোলে নিয়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলেন রাজাকারের হাতে। এরা বাবার পরিচিত। আমিও চিনি এদের একজনকে। আমাদের দোকানে আসতেন নিয়মিত। আমি তাকে চাচা বলে ডাকি। চাচা এখন হাতে একনলা বন্দুক দিয়ে গুঁতো মারছেন বাবাকে। তিনি বাবাকে হুকুম দিলেন আমাকে কোল থেকে নামিয়ে তাদের সঙ্গে যেতে। বাবা পকেট থেকে একতাড়া নোট বের করে ছুঁড়ে দিলেন তার দিকে। রাজাকাররা বাবাকে দু’দিনের মধ্যে এখান থেকে চলে যাবার পরামর্শ দিয়ে চলে গেলো।
১০
জোছনা রাত। আমরা বড়ঘোনা ছেড়ে পালাচ্ছি। নৌকার পাটাতনে ধান বোঝাই করা হয়েছে। ধানের ওপর চাদর বিছিয়ে শুয়ে আছি আমরা। সারা রাত দাঁড় বেয়েছেন মাঝি। সকাল হবার একটু আগে হঠাৎ নৌকার গতি কমে গেলো। মাঝি বাবাকে ডেকে বললেন লুকিয়ে পড়তে। সামনে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের ঘাট। এখানে সব নৌকা চেক করা হয়। না থামলে গুলি করে থামানো হয়, আর চেক করে হিন্দু পেলে গুলি করে মারা হয়। বাবা আমাদের গায়ের ওপর চাদর বিছিয়ে তার ওপর ধান দিয়ে ঢেকে দিতে লাগলেন। মাঝি নৌকা ভিড়াতে ভিড়াতে চিৎকার করে বলছেন, “ধান নিয়ে যাচ্ছি হুজুর। পেকুয়ার মিঞাদের ধান হুজুর”। নৌকার ভেতর ততক্ষণে আমাদের শরীর ধানের ভেতর, আর মুখের উপর উপুড় করা ধামা। রাজাকাররা নৌকার ভেতর এলে আমাদের দেখতে না পেলেও বাবাকে ঠিকই দেখতে পাবে। তখন? ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছি। একটু পর নৌকা আবার চলতে শুরু করলো। নৌকার মুসলমান মাঝি রাজাকারদের সামনে অশ্রাব্য ভাষায় হিন্দুদের গালিগালাজ করছিলেন আর বলছিলেন যে হিন্দুদের পেলে তিনি নিজেই খুন করবেন। রাজাকাররা আমাদের নৌকা চেক করে দেখার আর দরকার মনে করেনি। আমরা বেঁচে গেলাম।
১১
বিজয়ের পর আমরা গ্রামে ফিরলাম। বাবা আমাদের নিয়ে গেলেন পোড়া ভিটেয়। তিন পাশের পোড়া দেয়াল ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। যা আগুনে পোড়া যায় নি তা লুট হয়ে গেছে। বাবার দুই কাকা মারা গেছেন মিলিটারির গুলিতে। গ্রামে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে মিলিটারিরা, লুটপাট চালিয়েছে রাজাকাররা। বাবার আত্মীয়স্বজনের অনেকেই ভারতে চলে যাচ্ছেন। বাবাকেও বলছেন চলে যেতে। বাবার একটাই কথা, তিনি যাবেন না। একমুঠো পোড়া ছাই হাতে নিয়ে বাবা কেঁদে ফেললেন। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টাতে এই প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
১২
তারপর কেটে গেছে ৩৫ বছর। পোড়া ভিটেয় আবার বাড়ি করেছেন বাবা। আমরা সে বাড়িতেই বড় হয়েছি। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার আঁচ লাগে যখন তখন। তার ফল আমাদেরও ভোগ করতে হয়। দুঃসহ কষ্টে বাবাকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম- সর্বস্ব হারিয়েও তিনি কেন দেশ ছাড়েন নি। তখন চলে গেলে তো ধর্মীয় সংখ্যালঘু হয়ে থাকতে হতো না। উত্তর দেয়ার বদলে বাবা আমাকেই প্রশ্ন করেছিলেন, “আমি যদি কখনো কষ্টে পড়ি, তোদের ঠিকমতো দেখাশোনা করতে না পারি, তোরা যা চাস তা দিতে না পারি- তবে কি তোরা আমাকে ছেড়ে চলে যাবি? আমার বদলে আর কাউকে ‘বাবা’ বলে ডাকবি?
[লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক ২০০০ এ- ২০০৬ এর ১৬ জুন সংখ্যায়, পরে ২০০৭ সালে সময় প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত গোলাম মোর্তোজা সম্পাদিত ‘হৃদয়ে একাত্তর’ বইয়ের ১৪৫-১৪৮ পৃষ্ঠায়। মুক্তিযুদ্ধের চল্লিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে মুক্তমনার পাঠকদের জন্য লেখাটি মুক্তমনায় প্রকাশ করা হলো।]
আমি নিশ্চিত আরো হাজার হাজার বাংলাদেশী হিন্দুর একই দুরাবস্থা হয়েছিল। এর ওপর প্রমান্য তথ্যচিত্র বা চলচ্চিত্র একটাও নেই-যা বাংলাদেশী হিন্দুদের দূরাবস্থার ওপর ফোকাস করে তোলা।
বেঁচে থাকাট এতো কষ্টের কেন এই প্রশ্নের জবাব পাই নে কোন। বেশির ভাগ মানুষ কিন্তু খুব বেশি কিছু চায়না। শুধু শান্তিতে বসবাস করতে চায়। সেটা কি খুব বেশি চাওয়া, বুঝতে পারি না। তারপরেও দেখুন পৃথিবীতে যুদ্ধ বন্ধ হয় না। এই মুহুর্তে সারা বিশ্বে কোথাও না কোথাও শুধুমাত্র মুক্তির জন্য, দুবেলা পেট ভরে খাবার জন্যে মানুষ প্রাণ দিচ্ছে। মাঝে মাঝে বড় অসহ্য লাগে এই মানবজীবন!
হৃদয় ছুয়ে গেল এবং সেই সাথে মনটাও ভারী হয়ে গেল। আপনার বাবার প্রতি অন্তরের অন্তঃস্হল থেকে শ্রদ্ধা জানাই। আর যে মাঝিটি আপনাদের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছিলো তার প্রত্যুৎপন্নমতিতা এবং সাহসের জন্য তাকেও সাধুবাদ জানাই। (F)
অসম্ভব ভাল ্লাগল।
আর কি লিখব? আমি যে এই সব দৃশ্য নিজের চক্ষেই দেখেছি।
পড়ুন আমার মন্তব্য আদিল ভাইয়ের লেখাতে।
প্রদীপ, মর্মস্পর্শী লেখা। পুনঃপ্রকাশ করে ভালোই করেছ, নইলে এই মূল্যবান লেখাটা পড়া থেকে বঞ্চিত থাকতাম।
কি যে কষ্ট হয়,
সবটুকু কি আর বলা যায়?
কষ্টের যতটুকু প্রকাশ
তাতেই যদি
চোখের আকাশে মেঘ জমে,
সবটুকু প্রকাশ পেলে কি হবে?
প্রদীপ দা,
আপনার এই লেখাটি কি অন্য কোন ব্লগে শেয়ার করতে পারি?
@আদিল ভাই, অবশ্যই পারেন। অনেক ধন্যবাদ।
@প্রদীপ দেব,
অনেক ধন্যবাদ প্রদীপ দা।
এই ধরনের লেখা না পড়লে জীবনের অনেক কিছুই মনে হয় অজানা থেকে যাবে।
আপনার বাবার শেষোক্তি যদি আমাদের সবাই অনুভব করতে পারতাম!! হৃদয় ছুঁয়ে গেলো লেখাটি।
দারুন একটি লেখা পড়লাম।চোখে পানি চলে এসেছে।ধিক্কার জানাই ঐ ঘৃণ্য পশু রাজাকারদের।
মনে হল যেন নিজের সামনেই সব দেখছি।
অসাধারণ একটা লেখা। খামোখাই প্রদীপ দেব আমার অন্যতম প্রিয় লেখক নন।
প্রদীপ
আপনার চোখ দিয়ে পুরো ঘটনা যেন স্বচক্ষে দেখে ফেললাম। সত্যই সেসময় আপনার বাবা যেভাবে বুকে আগলে করে আপনাকে বাঁচিয়েছেন তা সত্যই দুর্দান্ত। পানের বরজে, ধানের ভিতর, কিংবা কাদার ভিতরে আত্মগোপনের অংশগুলো পড়ে শরীর রোমাঞ্চিত হয়ে উঠল।
ফেসবুকে শেয়ার করলাম লেখাটি।
খুব ভাল লেগেছে লেখাটি। এ যেন মুক্তিযুদ্ধে মানুষের দুর্ভোগের পুরো চিত্র।
লেখাটা হৃদয় ছুয়ে গেল!
মানুষ এত অমানুষ কেন?
অশ্রু ঝরানো লেখা!
পড়ে সত্যি সত্যি কেঁদে ফেললাম। উহ!
আমাদের থানায় এক গণকবর আছে যেখানে বহু সংখ্যক লোককে জীবন্ত কবর দেয়া হয়েছিল। বলাবাহুল্য তাদের প্রায় সবাই ছিলেন হিন্দু।
হৃদয় ছুয়ে গেল। এমন সরল ভাষায় মন ছোঁয়া বাস্তব কাহিনী তেমন পড়িনি।
জয়নুল আবেদীনের আঁকা দূর্ভিক্ষের ছবিতে দেখা যায় মানুষ কুকুর এক সাথে আস্তাকুড় থেকে আবর্জনা কুড়িয়ে খেতে, সেই কথা মনে করিয়ে দিলেন।
দেশের প্রতি এমন অকৃত্রিম ভালবাসা কয়জনে দেখাতে পারে জানি না।
হৃদয় ছোঁয়া লেখা। আমার অনেক স্স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন।’হৃদয়ে একাত্তর – বাবার মুখ’ আমার হারানো বাবার কথা মনে করিয়ে দিলেন।
রাজাকারদের জন্যইতো মুক্তিযুদ্ধ নয়মাস দীর্ঘ হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।
কিন্তু লেখাটিতে আপনার মায়ের অনুপস্থিতির বিষয়টি একটু জানতে ইচ্ছে করছে।
অসাধারণ ভালো লাগল। সেই সময়কার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল।
অনেক – অনেক স্মৃতি।
গীতাদির সাথে এক মত মায়ের কথা জানতে ইচ্ছে করছে।
@গীতাদি ও আফরোজা আপা,
অনেক ধন্যবাদ আমার মায়ের কথা জানতে চাওয়ার জন্য। তিনি এখানে অনুপস্থিত – কারণ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার দু’বছর আগে তিনি মারা গেছেন। তাঁর কোন স্মৃতি আমার নেই।