মডারেটর নোটঃ ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বইমেলা থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাসায় যাওয়ার পথে ঘাতকদের আক্রমণের শিকার হন হুমায়ুন আজাদ। সেই ন্যাক্কারজনক হামলার শোকাবহ স্মৃতির প্রেক্ষিতে একদিন দেরিতে হলেও পুরোন এই লেখাটি আবার পাঠকদের উদ্দেশ্যে পেশ করা হলো।
:line:
“যখন আমরা বসি মুখোমুখি, আমাদের দশটি আঙুল হৃৎপিন্ডের মতো কাঁপতে থাকে
দশটি আঙুলে, আমাদের ঠোঁটের গোলাপ ভিজে ওঠে আরক্ত শিশিরে,
যখন আমরা আশ্চর্য আঙুলে জ্বলি, যখন আমরাই পরষ্পরের স্বাধীন স্বদেশ,
তখন ভুলেও কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা জিজ্ঞেস করো না;
আমি তা মূহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, -তার অনেক কারণ রয়েছে।
তোমাকে মিনতি করি কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা তুলে কষ্ট দিয়ো না।
জানতে চেয়ো না তুমি নষ্টভ্রষ্ট ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের কথা, তার রাজনীতি,
অর্থনীতি, ধর্ম, পাপ, মিথ্যাচার, পালে পালে মনুষ্যমন্ডলি, জীবনযাপন, হত্যা, ধর্ষণ,
মধ্যযুগের দিকে অন্ধের মতোন যাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন ক’রে আমাকে পীড়ন কোরো না;
আমি তা মুহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, – তার অনেক কারণ রয়েছে ।
তোমাকে মিনতি করি কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা তুলে কষ্ট দিয়ো না।
জানতে চেয়ো না তুমি নষ্ট ভ্রষ্ট ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ
মাইলের কথা: তার রাজনীতি
অর্থনীতি, ধর্ম, পাপ, মিথ্যাচার, পালে পালে মনুষ্যমন্ডলী
জীবনযাপন, হত্যা, ধর্ষণ
মধ্যযুগের দিকে অন্ধের মতোন যাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন
করে আমাকে পীড়ন কোরো না
তার ধানক্ষেত এখনো সবুজ, নারীরা এখনো রমনীয়, গাভীরা এখনো দুগ্ধবতী,
কিন্তু প্রিয়তমা, বাঙলাদেশের কথা তুমি কখনো আমার কাছে জানতে চেয়ো না;
আমি তা মুহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, তার অনেক কারণ রয়েছে।“
–হুমায়ুন আজাদ। কাব্যগ্রন্থঃ পেরোনোর কিছু নেই।
তাঁর জন্ম ১৯৪৭ এর এপ্রিলে। ২৮শে এপ্রিলে। প্রচন্ড বোশেখে, নানা বাড়ি কামারগাঁয়ে। বড় হয়েছেন রাড়িখালে। তিনি কবি। তিনি প্রথাবিরোধী। তিনি বিশ্বাসবিমুখ। তিনি অবিশ্বাসী। তিনি নাস্তিক। তাঁর বাবার দেয়া নাম হুমায়ুন কবীর। আমার কাছে, সমগ্র বাংলাদেশের কাছে তাঁর পরিচিতি হুমায়ুন আজাদ নামে।
হুমায়ুন আজাদ। অক্ষরের হিসেবে নামটা খুব একটা বড় না হলেও এ নামের দ্যোতনা ব্যাপক। এ নামের পরিব্যপ্তি “ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল”- বাংলাদেশ। অসম্ভব আলোকিত এ নাম। এ নামের প্রখর ঔজ্জ্বল্য সহ্য করতে না পেরে আধাঁরকামে কম্পিত কিছু মহাপুরুষ তাঁকে পৈশাচিক উল্লাসে ক্ষত বিক্ষত করেছিল অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে। যে ক্ষতের জীবাশ্ম তাঁকে বইতে হয়েছে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
তাঁর কন্ঠস্বরে কোন সেন্সরশীপ ছিল না। অন্যদের মত কথা বলার আগে সেন্সরবোর্ডের কাছে তিনি তাঁর বক্তব্য জমা দেননি। যার ফলে তাঁর বক্তব্য কেঁটে ছেঁটে পবিত্রগ্রন্থের সাথে মিলিয়ে প্রকাশ করা যেত না। তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে। তাঁর কথা তাঁর জীবদ্দশাতেই ফলে গেছে। নষ্টরা তাঁকে আতিথীয়তা দেখাতে কার্পণ্য করে নি। এ দিক থেকে দেখলে তাঁর অন্যসকল গুণের সাথে ভবিষ্যতদ্রষ্টা গুণটিও উল্লেখযোগ্য।
তিনি লিখেছেন পাক সার জমিন সাদ বাদ নামের একটি বিস্ফোরক পুস্তক। একটি প্রামাণ্য দলিল। যেটা দেশের মৌলবাদীদের পশ্চাৎদেশে লাগিয়েছিল এক প্রবল লাথি। গালে প্রচন্ড চপেটাঘাত। স্বাভাবিকভাবেই তাদের নুরাণী দেহে আঘাতের প্রতিবাদ স্বরূপ তারা দৃঢ় হাতে তার জবাব দিয়েছিল। পার্থক্য হল হুমায়ুন আজাদের প্রতিবাদের অস্ত্র ছিল কলম আর নূরানী পক্ষের অস্ত্র ছিল চাপাতি।
তিনি লিখেছেন নারী । বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত বই। যার সাথে তুলনা করার মত পুস্তক এখনও এদেশে লেখা হয় নি। হয়েছেন বিপুলভাবে আলোচিত, সমালোচিত, নন্দিত এবং একই সাথে নিন্দিত। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়(?) (অ)ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ যে বই পড়ে বলেছিলেন “বইটি খুবই কুৎসিত”। আর আজাদের একজন ছাত্রীর ভাষায়, “ এই বই পড়েই আমি যে নারী তা উপলব্ধি করেছি। এ বই প্রকাশের সাথে সাথে মৌলবাদীর ভুমিকায় অবতীর্ণ হয় স্বয়ং রাষ্ট্রযন্ত্র। বইটি নিষিদ্ধ হয়। পুনঃপ্রকাশিত হয় নিষিদ্ধ হবার চার বছর পরে।
তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এত কিছু থাকতে আপনি নারী নিয়ে বই লিখলেন কেন?
তার উত্তর ছিলঃ ”……… নারী খুবই গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। নারীবাদীদের বই পড়ে আমি মুগ্ধ হই, যা এতো দিন আমার মনে অস্পষ্টভাবে ছিলো তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে; আমি নারী সম্পর্কে একটি সম্পুর্ণবই লেখার পরিকল্পনা করি। নারিবাদীদের বই আমার বোধকে তীক্ষ্ণ করেছে।
আপনি কি নিজেকে নারীবাদী মনে করেন?
– হ্যাঁ।”
তিনি আরো লিখেছেন আমার অবিশ্বাস। যার তীব্র আলোয় আলোকিত হয়েছে হাজারও তরুন প্রান। হুমায়ুন আজাদ জনপ্রিয় অপন্যাসিকদের মতন শাড়িচুরিলিপস্টিকময় শিল্প তৈরী করেন নি। যদিও তিনি অজনপ্রিয় নন। তিনি তৈরী করতে চেয়েছেন নিখাদ শিল্প। এবং বস্তুত, সচেতন পাঠক মাত্রেই জানেন তিনি তা করেছেনও।
তাঁর ভাষায় তিনি জন্মেছেন অন্যদের সময়ে। যেখানে কোন কিছুই তাঁর নিজের নয়। যেখানে সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে। এখানে আমরা তাঁর বহুল পঠিত
সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে নামক কবিতাটি পাঠ করতে পারিঃ
আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।
নষ্টদের দানব মুঠোতে ধরা পড়বে মানবিক
সব সংঘ পরিষদ;-চ’লে যাবে অত্যন্ত উল্লাসে
চ’লে যাবে এই সমাজ সভ্যতা-সমস্ত দলিল-
নষ্টদের অধিকারে ধুয়েমুছে, যে-রকম রাষ্ট্র
আর রাষ্ট্রযন্ত্র দিকে দিকে চ’লে গেছে নষ্টদের
অধিকারে। চ’লে যাবে শহর বন্দর গ্রাম ধানখেত
কালো মেঘ লাল শাড়ি শাদা চাঁদ পাখির পালক
মন্দির মসজিদ গির্জা সিনেগগ নির্জন প্যাগোডা।
অস্ত্র আর গণতন্ত্র চ’লে গেছে, জনতাও যাবে;
চাষার সমস্ত স্বপ্ন আঁস্তাকুড়ে ছুঁড়ে একদিন
সাধের সমাজতন্ত্রও নষ্টদের অধিকারে যাবে।
আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।
কড়কড়ে রৌদ্র আর গোলগাল পূর্ণিমার রাত
নদীরে পাগল করা ভাটিয়ালি খড়ের গম্বুজ
শ্রাবণের সব বৃষ্টি নষ্টদের অধিকারে যাবে।
রবীন্দ্রনাথের সব জ্যোৎস্না আর রবীশংকরের
সমস্ত আলাপ হৃদয়স্পন্দন গাথা ঠোঁটের আঙ্গুল
ঘাইহরিণীর মাংসের চিৎকার মাঠের রাখাল
কাশবন একদিন নষ্টদের অধিকারে যাবে।
চ’লে যাবে সেই সব উপকথা: সৌন্দর্য প্রতিভা-
মেধা;-এমনকি উন্মাদ ও নির্বোধদের প্রিয় অমরতা
নির্বোধ আর উন্মাদদের ভয়ানক কষ্ট দিয়ে
অত্যন্ত উল্লাস ভরে নষ্টদের অধিকারে যাবে।
আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।
সবচে সুন্দর মেয়ে দুই হাতে টেনে সারারাত
চুষবে নষ্টের লিঙ্গ; লম্পটের অশ্লীল উরুতে
গাঁথা থাকবে অপার্থিব সৌন্দর্যের দেবী। চ’লে যাবে
কিশোরীরা চ’লে যাবে, আমাদের তীব্র প্রেমিকারা
ওষ্ঠ আর আলিঙ্গন ঘৃণা ক’রে চ’লে যাবে, নষ্টদের
উপপত্নী হবে। এই সব গ্রন্থ শ্লোক মুদ্রাযন্ত্র
শিশির বেহালা ধান রাজনীতি দোয়েলের ঠোঁট
গদ্যপদ্য আমার সমস্ত ছাত্রী মার্কস-লেনিন,
আর বাঙলার বনের মতো আমার শ্যামল কন্যা-
রাহুগ্রস্ত সভ্যতার অবশিষ্ট সামান্য আলোক-
আমি জানি তারা সব নষ্টদের অধিকারে যাবে।
-কাব্যগ্রন্থঃ সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।
হুমায়ুন আজাদ বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিত্ব, অন্যতম আলোচিত নাম। অন্যতম আলোচিত অধ্যায়। হুমায়ুন আজাদ আজ অতীত। আজ হুমায়ুন আজাদ ইতিহাস। তাঁর সমন্ধে কিছু লিখতে হলে, কিছু বলতে হলে ব্যাকরনের অতীতকালের নিয়ম মেনে লিখতে ও বলতে হয় যা তার পাঠক ও ভক্তদের জন্য বেদনাদায়ক। বাংলাদেশ জানে হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর বদলা নেয়া হয় নি, এবং এও জানে ভবিষ্যতেও ওকাজটি আর করা হয়ে উঠবেনা। হুমায়ুন আজাদ আশার থেকে হতাশাকেই দার্শনিকভাবে বেশী মূল্যবান ভাবতেন। হতাশার মাঝে আশা দিয়ে জীবনকে অর্থময় করতে চাইতেন।
তেমনিভাবে আমরা জানি এ হত্যার প্রতিশোধ নেয়া হবে না কিন্তু আশা করি তা হবে। কেননা আশা করতে তো দোষ নেই, তাই না?
হুমায়ুন আজাদ মানে……
হুমায়ুন আজাদ মানে, বিনাপ্রশ্নে মেনে না নেয়া
হুমায়ুন আজাদ মানে, বস্তুত ব্যাতিক্রম, শুদ্ধতা
হুমায়ুন আজাদ মানে, মিথ্যের বিরুদ্ধে চমকপ্রদ সত্য
হুমায়ুন আজাদ মানে, অবিশ্বাস, বিশ্বাসের রাহিত্য
হুমায়ুন আজাদ মানে নিস্তব্ধ বাংলাদেশে সরব উপস্থিতি।
হুমায়ুন আজাদ মানে, সৌন্দর্যে কেঁপে ওঠা থরথর অনুভুতি
হুমায়ুন আজাদ মানে চমৎকার সাতটি কাব্যিক ইশতেহার।
হুমায়ুন আজাদ মানে, শৃঙ্খল ভাঙার হাতিয়ার
হুমায়ুন আজাদ মানে মুক্ত প্রেমে থরথর কেঁপে ওঠা
হুমায়ুন আজাদ মানে, চাঁদ, ফালি ফালি করে কাটা
হুমায়ুন আজাদ মানে, ‘লাল নীল দীপাবলী’।
হুমায়ুন আজাদ মানে, সত্যের বুলেটে মিথ্যে আবেগের তীক্ষ্ণ জলাঞ্জলি
হুমায়ুন আজাদ মানে, কবি ও কবিতা হাঁটছে আগুপিছু
হুমায়ুন আজাদ মানে, এবং, আরো অনেক, অনেক কিছু।।
সাইফুল ইসলাম
২৭-০২-২০১১
আরো বসন্ত, বহু বসন্ত
তোমার নামে আসুক
তুমি তো সূর্য, অস্তবিহীন
চীর জাগরূক (Y)
পোস্টটি দেখে ভালো লাগলো। লেখককে এজন্যে ধন্যবাদ।
হুমায়ুন আজাদ যেমন একজন উজ্জ্বল ব্যাক্তিত্ব, তাকে সম্পূর্ণভাবে কখনো উদঘাটন করা হয় নি। এ ব্যার্থতা আমরা নিজেরও বলে আমি মনে করি। হুমায়ুন আজাদ প্রথাবিরোধী, উজ্জ্বল ব্যাক্তিত্ব এগুলো না বলেও হুমায়ুন আজাদের অনেক ব্যাপকতা আছে যা আমি কখনো দেখি নি আলোচনায় আসতে। বাংলা সাহিত্যের যতগুলো কবিতার সমালোচনা দেখেছি এবং কবিতার ইতিহাসভিত্তিক আলোচনা এসেছে একবারের জন্যেও হুমায়ুন আজাদের নাম আসে নি; অথচ উনি অবশেষে আমার কাছে একজন কবিই ছিলেন। হুমায়ুন আজাদ একজন কবি, কবি এবং অবশেষে একজন কবি। তাঁর প্রত্যেকটা প্রবন্ধ, উপন্যাস মূলত কবিতার বাইরে কিছুই না (আবেগের আতিশায্য থাকতে পারে তবে কিছু বাস্তবতা তো আছেই)। ক্লাস নাইন-টেনের উপন্যাসের পাঠ্য বই এবং ইন্টারের পাঠ্যবই এর আগে বাংলা সাহিত্যের একটা ধারাবাহিক ইতিহাস বর্ণণা করা আছে যেখানে ঐপন্যাসিক হিসেবে হুমায়ুন আজাদের কোন নাম নেই। যদিও উপন্যাসে যে কাব্যিক মাত্রা এনেছেন সেটা অনেক বেশি প্রশংসনীয়।
আমি আমার আরেকটা ধারণার কথা বলি যা আমার ইদানিং কেবলই মনে হচ্ছেঃ হুমায়ুন আজাদকে বারবার প্রথাবিরোধী বলেই অর্ধেক শহীদ করে ফেলা হচ্ছে। বারবার বলা হচ্ছে উনি বাঙালির ভণ্ডামি, অন্ধকার তুলে ধরেছেন; সেটা ধরেছেন ঠিকই; তবে তাঁর সৌন্দর্য কাতরতার বিষয় কখনো আলোচ্য হচ্ছে না। হুমায়ুন আজাদ জন্ম থেকেই প্রথাবিরোধী ছিলেন; উনি এটি নতুন করে হতে চান নি। হুমায়ুন আজাদ ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী; যা উনি হতে চেয়েছেন; এবং হুমায়ুন আজাদ আমার কাছে তা-ই।
আমার মনে হচ্ছে লিখায় একটা তথ্যগত ভুল ছিলো। আমি যতদূর পড়েছি বা জেনেছি হুমায়ুন আহমেদ ‘নারী’কে কুৎসিত বই বলেন নি; ‘পাক সার জমিন স্বাদ বাদ’ বইটিকে বলেছিলেন। একটু অন্যভাবে বলেছিলেন। যাইক হোক, ধন্যবাদ এবং ভালো থাকবেন।
আজকের এ দিনের জন্য মানানসই এ ব্যানারটি করেছেন বাউণ্ডুলে বাতাস
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/themes/neobox/headers_backup/baundule_batash/humayun_azad_boimela_baundule.jpg[/img]
চমৎকার ব্যানার! অভিনন্দন বাউন্ডুলে।
কতগুল বছর পেরিয়ে গেল দেখতে দেখতে।
তবুও এখনো রাজিব হত্যা হয়; ব্লগার গ্রেফতার হয়।
লজ্জা লজ্জা।
হুমায়ুন আজাদের প্রতি হৃদয় থেকে শ্রদ্ধা।
বাঙালি কি হারিয়েছে সেটা একদিন না একদিন ঠিকই উপলব্ধি করবে।
কিন্তু হুমায়ুন আজাদ তখন ফিরে আসবেন না।
কিন্তু হুমায়ুন আজাদের শতকোটি সহযাত্রী তখন সাক্ষ্য দেবে ; আমরা ছিলাম আমরা আছি আমরা থাকবো।
জয়তু মুক্তমনা মানুষ; জয়তু হুমায়ুন আজাদ 🙂
@স্রষ্টার সৃষ্টি,
প্রকৃত মানুষ যে জীবনে সুখ ও দুঃখ সমান ভাবে গ্রহন করেন।কিন্তু সুখকে তারা কখনো বড় করে দেখেন না।তারা নিজের স্বার্থ তুচ্ছ করে মানব কল্যানের চিন্তায় ও কর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হাতের কাছে দিনলিপি-র খাতাটা নেই। তাই সন তারিখ বলতে পারবো না। যে বছর বড় বুশ ইরাক আক্রমন করেছিল, সে সময়ের কথা বলছি। জাতীয় কবিতা পরিষদের উৎসবে ( এ ঘটনাটা কোন এক লেখার প্রেক্ষিতে উল্লেখ করেছিলাম) তাঁর প্রবন্ধ ( কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় প্রতিক্রিয়াশীলতা) পাঠ করতে গিয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণের ( কাজী নজরুল ইসলামের ভক্ত) সাথে হাতাহাতি হলো। দর্শকসারিতে অহিংস বাঙ্গালী, মঞ্চে উপবিষ্ট আহমদ শরীফ ও আলোচক বৃন্দ। শরীফ স্যার কি বলছিলেন, দূর থেকে শুনতে পাইনি। দর্শক সারি থেকে শেষ পর্যন্ত তিনজন যুবক দাঁড়িয়ে ডঃ হুমায়ুন আজাদের পক্ষে চিৎকার জুড়ে দিল।
তারপর সেই স্রোতে অনেকে গা ভাসালো।
অনুষ্ঠান শেষে অনেকটা আগ্রহ নিয়ে ছুটে গিয়েছিলাম, সব কথা মনে নেই, শুধু এটুকু মনে আছে, উনি বড় বুশের ইরাক আক্রমনকে খুব জোর সমর্থন দিচ্ছিলেন। যারা এর বিরোধী তাদের খুব নিন্দা করছিলেন। বিরোধীতার জোয়ারের বিরুদ্ধে একা দাঁড়িয়ে গেলেন।
আবার সংগঠিত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধেও একা একা লড়ে যাবার ধারণা নিয়েই এগিয়ে গেছেন তিনি। এই যে ধারণা-ভাবনা-মানসিকতা এ নিয়ে একটুখানি আলোকপাত করলে ভাল হয়।
যে কথাটা ঐ সময় খুব কানে আসতো, তা হলো বাংলা ভাষার ব্যাকারণের শক্ত একটা কাঠামো নির্মাণ ডঃ হুমায়ুন আজাদের পক্ষেই সম্ভব হতো। এ রকমও শুনেছি ( সম্ভবত কোন একটা পত্রিকাতেও পড়েছিলাম) উনি বলেছিলেন, এর জন্য সরকারের সহযোগিতা দরকার। এর জন্য যে সময় ও লোকবল দরকার তার ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা ডঃ হুমায়ুন আজাদের ছিল না। আমাদের সরকারগুলো ভাষার জন্য ভাষণ দিতে দিতে আর খেলাধূলার জন্য স্টেডিয়াম বানাতে বানাতে রাতে ঠিকমত ঘুমাতেও পারছে না।
কিন্তু আমরা কি হারিয়েছি সেইটুকুও বুঝবার ক্ষমতা আমাদের নেই। আমরা স্তুতি অথবা নিন্দাতেই পরম শান্তি লাভ করি।
যেমনটি স্বয়ং করে থাকেন ঈশ্বর।
@স্বপন মাঝি,
অনেক ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
তিনি সবসময়েই আপোসহীন ছিলেন। তাঁর পূর্ণাঙ্গ একটা বাংলা ব্যাকরনের বই করার ব্যাপারটা জানি। এনিয়ে অন্য এক সময়য় লেখা আশা রাখছি।
অনেক ধন্যবাদ স্বপন ভাই।
হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে এই সুন্দর লেখাটির জন্য কবি সাইফুলকে অশেষ ধন্যবাদ।
@ফরিদ আহমেদ,
অনেক ধন্যবাদ ফরিদ ভাই।
আপনি তো বিরাট ডুব মারলেন দেখা যায়। :-s
@সাইফুল ইসলাম,
আমি ডুবে থাকলে কারো কারো ডানা মেলে ভেসে থাকতে সানন্দময় সুবিধা হয়। তাইতো এই ডুবসাতার। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
অন্যের ভেসে থাকার বিনিময়ে তো আমরা ফরিদের ডুবে থাকাকে মেনে নিতে পারি না।
তোমার ঘুম ভাঙ্গুক এ প্রত্যাশা করছি।
@গীতা দাস,
একদম ঠিক গীতাদি। আজকাল ওনাকে সভাবী অন্যত্র দেখা যায়…খুবই ব্যস্ত! :-Y
@ফরিদ আহমেদ,
ঐসকল প্যারাসাইটগুলোর ভাসলেই কী আর ডুবলেই কী। এরা রোগ ছড়াবেই। সুতরাং একটা ঝলক দেন। :))
@সাইফুল ইসলাম , তা বটে ……. কিন্তু হুমায়ুন আজাদ রচিত উপন্যাস আদৌ উপন্যাস হয়ে উঠেছে কিনা সেটাও ভাবতে হবে বৈকি ! 🙂
@মির্জা গালিব,
ভাবতে তো কোন সমস্যা নেই, কিন্তু ভাবার জন্য ভাবলেই তো হবেনা, ভাবার কারনও থাকতে হবে বৈকি। হুমায়ুন আজাদের লেখা উপন্যাসগুলো আদৌ উপন্যাস হয়ে উঠেছে কি না এ কথা তোলা তো বিশাল দাবী। আশা করছি তাঁর লেখা পড়েই দাবীটা করছেন। অনেক আলোচনা করা যেত, কিন্তু এই থ্রেডে এ ব্যাপারে কথা বলাটা কতটুকু উচিত হবে বুঝতে পারছি না।
সমস্যা নেই পরে একসময় এ ব্যাপারে আলোচনা করা যাবে।
ভালো থাকবেন।
@বন্যা ,অপন্যাস ,অকবিতাও ছিল তাঁর ই নতুন নামকরন ।
@মির্জা গালিব,
এর মধ্যে অপন্যাসটাই বেশী জোশ। কী বলেন? :))
কিছু জনপ্রিয় গল্পবলিয়েদের উনি অপন্যাসিক বলতেন।
“হুমায়ুন আজাদ বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিত্ব, অন্যতম আলোচিত নাম। অন্যতম আলোচিত অধ্যায়। হুমায়ুন আজাদ আজ অতীত। আজ হুমায়ুন আজাদ ইতিহাস”
সময়োপযোগী লেখা
@পার্থ,
ধন্যবাদ পার্থ পড়া এবং মন্তব্যের জন্য।
হুমায়ুন আজাদ বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিত্ব, অন্যতম আলোচিত নাম। অন্যতম আলোচিত অধ্যায়। হুমায়ুন আজাদ আজ অতীত। আজ হুমায়ুন আজাদ ইতিহাস।”
ভালো লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ, সাইফুল ভাই।
@অনন্য আজাদ,
আপনাকে এখানে পেয়ে অনেক ভালো লাগল। শুভেচ্ছা জানবেন।
@অনন্য আজাদ,
আপনাকে এখানে দেখে ভীষণ খুশি হলাম। নিয়মিত যদি আসতেন।
“সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে”
অনেক আগে পড়েছিলাম।
কবিরা ভবিষ্যতদ্রষ্টা হয় –
নিজের নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করলেন।
অনেক ধন্যবাদ!
@লাইজু নাহার,
(Y)
স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা।
আমাকে মুক্তমনার সদস্য করার আহবান জানাচ্ছি।
@ধর্ম নিয়ে কনফিউজ,
শ্রদ্ধা। (Y)
কমেন্ট করতে থাকেন। মডারেটররা যোগ্য মনে করলে অবশ্যই সদস্য হবেন। নিয়মিত হবেন আশা করছি।
অসাধারণ লেখা
@রৌরব,
ধন্যবাদ জাহান্নাম। :)) ( রৌরব মানে দোজখই তো নাকি? ফরিদ ভাই মনে হয় এটাই বলেছিল।)
@সাইফুল ইসলাম,
ঠিক তাই 😉
সাইফুল,
কারো কি সন্দেহ আছে বা থাকবে যে তুমি বাংলা বিভাগের ছাত্র না ? অন্ততঃ আমার বদ্ধমূল ধারনা ছিল তুমি আজ যে মহতি মানুষ হুমায়ন আজাদ নিয়ে লিখলা ওনার বিভাগের ছাত্র,অথচ না,তুমি পড়ো সাহিত্যের একবারে উলটো রথে।একেই বলে একাডেমিক পড়া একজিনিস আর সাহিত্য-সংস্কৃতি ও জ্ঞান-বিজ্ঞান জানা অন্য জিনিস।
হুমায়ন আজাদ এক অগ্নি স্ফুলিংগের নাম ব-দ্বীপ নামের বাংলাদেশের ও বাংলাভাষী মানুষের কাছে।ওনার কীর্তি বেঁচে থাকবে বাংলা ভাষা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন আর অন্ধকারের নর-পিশাচ খুনিরাতো প্রতিদিনই মরে কালের অন্ধকার গহবরে বিলীন হয়, পাছে শুধু রেখে যায় তাদের নষ্ট,পঁচা,দূর্গন্ধময় বদ্ধ জলাশয় জীবনের গ্লানি আমাদের জীবনে ও সংস্কৃতিতে।
আজ এমন দিনে ওনাকে নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য তোমাকে বিশেষ ধন্যবাদ। (F)
ভালো থেকো।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
অনেক ধন্যবাদ মামুন ভাই। বাঙলাদেশে আপনার সাহচর্য অনেক ভালো লেগেছে। শীঘ্রই আবার এসে পড়েন। :))
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
একদম ঠিক বলেছেন। আর এজন্যে সাইফুল ইসলাম এই (F) অভিনন্দনটি অধিকার করেন।
যদিও তিনি অজনপ্রিয় নন
>>>
নতুন শব্দের ব্যাবহার সব সময় দরকার। কিন্ত “অজনপ্রিয়” কথাটা কি খাপ খেল? সাধারণত আমরা ” উনিও কম জনপ্রিয় নন” বা জনপ্রিয়তায় কম যান না-এই ধরনের ফ্রেজ ব্যাবহার করি। অজনপ্রিয় কথাটি ব্যাকারণ গত ভাবে বোধ হয় ঠিক না।
অন্য কেও এই ব্যাপারে দৃষ্টি আলোকপাত করলে বাধিত হই।
@বিপ্লব দা,
বলতে পারছি ঠিক ব্যাকরনগত ভাবে ভুল কিনা। জানতে পারলে ভালোই হত।
@বিপ্লব পাল,
আমার জানামতে অজনপ্রিয় শব্দটি ভুল নয়। তবে সাধারনতঃ নেতিবাচক শব্দ এড়িয়েই সাহিত্য সৃষ্টির একটি হেতু আছে। নেতিবাচক শব্দ প্রকারান্তরে ব্যবহার করা হয়।
@ বন্যা আহমেদ
সর্বপ্রথম ডঃ আহমদ শরীফ-ই কিন্তু “বাঙলাদেশ” লেখার প্রস্তাব করেন ও লেখেন। হুমায়ুন আজাদ নিজেও “বাঙলাদেশ” লিখেছেন সবসময়।
সাইফুল ভাই, আপনি লেখার সময় কি উপলব্ধি করেছেন জানিনা তবে এই লাইনটি পড়ার সময় আমি উপলব্ধি করছি এর চেয়ে সত্য আর নেই।
অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
“রাহিত্য” মানে কি?
@লীনা রহমান,
অভাব। 🙂
@লীনা,
ঠিক, হুমায়ুন আজাদ মানে, এবং, আরো অনেক, অনেক কিছু।।
(F)
খুব ভালো একটা কাজ হয়েছে সাইফুল ইসলাম। এটাও প্রতিশোধের জন্য একটি জমানো বুলেট। হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে যত লেখা হবে, সবগুলো লেখা এক একটা তাজা বুলেটে রুপান্তরিত হয়ে জমা হবে। বিস্ফোরণের মহাপ্রত্যয় নিয়ে অপেক্ষা করবে।
হুমায়ুন আজাদ ‘এর দেহ হয়তো আজ অতীত, তা ইতিহাসও বটে কিন্তু তাঁর ভাষায় তিনি জন্মেছেন অন্যদের সময়ে। তার কাজ, আমাদের এবং ভবিষ্যতের জন্য।
@কাজী রহমান,
ঠিক।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
দিনোপযোগী চমৎকার লেখা, সাইফুল! (Y)
@অভিজিৎ, @সাইফুল,
(Y) (F)
@গীতা দি,
ধন্যবাদ গীতা দি পড়ার জন্য।
@অভিদা,
ধন্যবাদ অভিদা মন্তব্যের জন্য।
চমৎকার একটি লেখা, বলিষ্ঠ একটি লেখা (Y) ।
ভালো লাগলো এইদিনে এমন কবিতার জন্য।
@স্বাধীন,
হেই স্বাধীন ভাই, আপনাকে তো দেখাই যায় না। কোথায় থাকেন?
পড়ার জন্য ধনিয়াপাতা, এক ঝাকা। :))
@সাইফুল ইসলাম,
ব্যস্ত আছি থিসিস লেখা নিয়ে। লেখা না দিলেও নিয়মিত ঘুরে যাই, মন্তব্য করি মাঝে মাঝে। আরো কয়েক মাস যাবে এভাবে।
চমৎকার একটি লেখা। কবিতাটি খুব ভাল লেগেছে।
@তামান্না ঝুমু,
ধন্যবাদ ঝুমু পড়ার জন্য।
স্মরণ করি হুমায়ুন আজাদের কিছু কথা, যেগুলো ধর্মীয় অন্ধকার দূর করে আলোকিত (I) করে মনকে।
* সব ধর্মের নৈতিকতার ভিত্তি ভয়। বহু ধর্মে বিধাতা ক্রদ্ধ ও হিংস্র; ক্রদ্ধ ও হিংস্র হয়ে থাকা ছাড়া তাঁর আর কোনো কাজ নেই; অবিশ্বাসীকে শাস্তি দেয়ার জন্যে তিনি ব্যগ্র, এবং বিশ্বাসীকেও সব সময় রাখেন সে ভীতির মধ্যে।
* ধর্মের নৈতিকতার সাথে মানবিক নৈতিকতার তুলনা করলে ধরা পড়ে যে ধর্মীয় নৈতিকতার মূলে নৈতিকতা নেই, রয়েছে সেচ্ছাচারী নির্দেশ; আর মানবিক নৈতিকতার ভিত্তি হচ্ছে কল্যাণ।
* নাস্তিক চায় মানুষের চেতনাকে বদলে দিতে, মানুষকে বিকশিত করতে; আর ধার্মিক চায় মানুষের চেতনাকে নষ্ট করতে, মানুষকে রুদ্ধ করতে। ধার্মিকদের নৈতিকতাবোধ খুবই শোচনীয়।
* যে-কোনো নির্বোধের পক্ষে ধার্মিক হওয়া সহজ, কিন্তু শুধু জ্ঞানী ও মানবিক ব্যক্তিই হ’তে পারে নাস্তিক। নাস্তিক হত্যা আর ধ্বংস করে না; কিন্তু ধার্মিক সব সময় হত্যা ও ধ্বংসের জন্যে ব্যগ্র থাকে; তারা ইতিহাসের পাতাকে যুগে যুগে রক্তাক্ত করেছে। প্রত্যেক ধর্মে রয়েছে অসংখ্য সন্ত, যারা মস্তিষ্কের হত্যাকারী।
* মৃত্যুর পর মানুষের পরিণতি বর্ণনা ধর্মের এক প্রিয় বিষয়; এ এলাকায় ধর্মগুলো মানুষকে লোভের পর লোভ আর ভয়ের পর ভয় দেখায়। মৃত্যুর পর মানুষের পরিণতি সম্পর্কে ধর্মগুলো যা বলে, তা হাস্যকর, যাতে বিশ্বাস করতে পারে শুধু লোভী ও ভীত মানুষ।
* মৃত্যু হচ্ছে জীবনপ্রক্রিয়ার উল্টোনো অসম্ভব পরিসমাপ্তি। আর ফেরা নেই, আর অগ্রগতি নেই; চিরকালের জন্য থেমে যাওয়া। যে ছিলো সে আর সেই; আর সে নিশ্বাস নেয় না, তার শিরা আর কাঁপে না, আলো তাকে আর চকিত করে না, আঘাত তাকে আর ব্যথা দেয় না। আমি জানি, ভালো করেই জানি, কিছু অপেক্ষা করে নেই আমার জন্যে; কোনো বিস্মৃতির বিষণ্ন জলধারা, কোনো প্রেতলোক, কোনো পুনরুত্থান, কোনো বিচারক, কোনো স্বর্গ, কোনো নরক; আমি আছি, একদিন থাকবো না, মিশে যাবো, অপরিচিত হয়ে যাবো, জানবো না আমি ছিলাম। নিরর্থক সব পুণ্যশ্লোক, তাৎপর্যহীন প্রার্থনা, হাস্যকর উদ্ধত সমাধি; মৃত্যুর পর যে-কোনো জায়গাই আমি পড়ে থাকতে পারি,- জঙ্গলে, জলাভূমিতে, পথের পাশে, পাহাড়ের চূড়োয়, নদীতে।
@মাহফুজ,
চমৎকার মাহফুজ ভাই। তাঁর এই অল্প কয়েকটি কথাতেই তাঁর সম্পর্কে অনেক কিছু আন্দাজ করা যায়।
ধন্যবাদ লাইনগুলোর জন্যে।
@মাহফুজ, গ্রেট। নতুন একটা প্রশ্ন মাথায় এসেছে-
মানুষের নৈতিকতার ভিত্তি যদি ধর্ম (আস্তিকদের দাবী) হয়, তাহলে ধর্মের নৈতিকতার ভিত্তি কী? 🙂
@শ্রাবণ আকাশ,
সবই আল্লাপাকের ইচ্ছারে ভাই। সবই আল্লপাকের ইচ্ছে। :))
@সাইফুল, ধন্যবাদ আজকের দিনে হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে লেখার জন্য। ফরিদ ভাই সকালে কথা দিয়েছিলেন লিখবেন, তারপর যথারীতি হাওয়া…
‘অপন্যাসিক’ এবং ‘অজনপ্রিয়’ শব্দদুটো বড়ই ভালো লাগলো। ‘ব্যাতিক্রম’ কী ব্যতিক্রম হবে? আর হুমায়ুন আজাদই কী বাংলাদেশ বানানটা ‘বাঙলাদেশ’ লিখেছিলেন তার কবিতায়?
আর ‘হুমায়ুন আজাদ’ মানে কবিতাটা এত চেনা চেনা লাগছে কেন বলুন তো? রফিক আজাদের কি ‘ভালোবাসা মানে’ বলে এরকম একটা কবিতা আছে? কবিতাটা ভালো লাগলো ( যদিও রাহিত্য শব্দটার অর্থ দেখতে অভিধান খুলতে হল দেখে আপনার উপর চ্রম বিরক্ত হলাম, আর তাছাড়া আমার মত ‘কবিতাজ্ঞ’ মানুষের ভালো লাগা বা না লাগায় কীইবা এসে যায় :)) )
@বন্যা আহমেদ,
অপন্যাসিক শব্দটা হুমায়ুন আজাদ জনপ্রিয় স্টোরিটেলারদের জন্য বরাদ্দ করেছিলেন। আমার বেশ প্রিয় শব্দ। আর অজনপ্রিয় শব্দটা আমার ক্ষেত্রে আমি প্রথম ব্যাবহার করলাম। জানি না আর কেউ করছে কিনা। ব্যকরনগত ভুল থাকলে অবশ্য ব্যাপক সমেস্যা। :))
হুমায়ুন আজাদ বাঙলাদেশ ব্যাবহার করতেন। তবে প্রথম প্রচলন করেন সম্ভবত আহমেদ শরীফ। আমি নিশ্চিত নই।
রাহিত্যের জন্য যদি অভিধান দেখতে হয় তাইলে তো ভালু। নতুন একটা শব্দ শিখলেন। ধন্যবাদ জ্ঞ্যাপন করেন তাড়াতাড়ি। :))
কবিতাটা হঠাৎ করেই লেখা।
আপনার অনুমান ঠিক। রফিক আজাদের
ভালোবাসার সংজ্ঞা নামে চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া কাব্যগ্রন্থে একটা কবিতা আছে।
মন্তব্যের জইন্যে ধইন্যা। :))
@সাইফুল ইসলাম, আমি যেন কোথায় দেখেছিলাম টগর “বাংলা” লিখলেও “বাঙলাদেশ” লেখার পিছনে কিছু যুক্তি দিয়েছিলেন।
কেউ হেলপান জানা থাকলে!
রাহিত্য [ rāhitya ] বি. অভাব, বিহীনতা (গুণরাহিত্য)।
[সং. রহিত + য]।
@বন্যা আহমেদ, ‘অপন্যাসিক’ হুমায়ুন আজাদের নিজেরই আবিস্কার। তিনি ইমদাদুল হক এবং হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসকে বলেছিলেন ‘অপন্যাস’। হুমায়ুন আজাদ ‘বাঙলাদেশ’ লিখতেন কারণ ‘ঙ’ তেই আছে বাঙালির ইতিহাস এবং সংস্কৃতি।
লেখাটিকে আজকের দিনের জন্য স্টিকি করে দেয়া হল।