দুপুরের খাবার খেয়ে, খানিকটা আয়েশি ভঙ্গিতে বিছানায় একটু গড়াগড়ি দিতে না দিতেই দরজায় কোমল আঘাত। কারিগররা এসেছেন, ‘বহুত ফায়দা’ আদায়ের কারিগর। কি কি করলে বহুত ফায়দা আদায় হবে সেটা এদের থেকে বেশি কেউই জানে না। সবচাইতে সহজে ফায়দা আদায়ের উপায় হচ্ছে মাগরিবের পর দশ মিনিট পরকালের রাস্তায় দেয়া কিংবা বৃহস্পতিবারে কাকরাইল মসজিদে গিয়ে উপস্থিত হওয়া। কিন্তু মুশকিলের ব্যাপার হচ্ছে এদের সাথে তাল মিলিয়ে এদের ভাষায় কথা বলা। জগতে প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর যে’ আলহামদুলিল্লাহ, মাশাল্লাহ আর সোবাহানাল্লাহ এই তিনটা শব্দ দিয়ে দেয়া যায়, সেটা আমার জানা ছিলো না। এদেরকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আপনি কেমন আছেন? উত্তর আসে আলহামদুলিল্লাহ’। যদি বলা হয় ডঃ ইউনূস নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন, তার জবাব হচ্ছে ‘সোবাহানাল্লাহ। অবশ্য এদের দেখাদেখি আমিও একটা শব্দ রপ্ত করে রেখেছি, সেটা অবশ্য মনে মনে বলতে হয়। এরা যাই বলে, আমি মনে মনে বলি ‘ইন্নালিল্লাহ’, আপনি আপনার মাতৃভাষা ভুলে গেছেন।
না না করতে করতেও, কোন এক রোমান্টিক দুপুরে এই ভদ্র সম্প্রদায়ের লোকদের মায়াবী দৃষ্টি উপেক্ষা করা আমার মত দুর্বল চিত্ত সম্পন্ন লোকের পক্ষে আর সম্ভব হয়ে উঠলো না। ভাবলাম, নিজের অনিচ্ছাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে, এই ফ্যান্টাসী কিংডমে কত কিছুইতো করি। অন্য কত পিতা-মাতার নাম মুখে নিয়ে মিছিল করি, নিজের পিতা মাতার নামও জীবনে এতবার মুখে নিতে হয় নি। ক্ষমতার পালাবদলে আবার সেই পিতা-মাতার নাম ভুলে গিয়ে অন্য সব শহীদ গাজীদের নিয়ে মেতে উঠি। কিছুইতো নিজের ইচ্ছেয় করি না, করতে হয় বলে করি। সেখানে দলবেঁধে আসা এই সব লোকজন, যাদের দেয়া বহু তথ্য এবং বিশ্বাস নিয়ে আমার অজস্র প্রশ্ন আছে, কিন্তু তারপরও মনে হয়- তারাতো খারাপ কিছু বলার জন্য আসে নি। তারা একটা জিনিস বিশ্বাস করছে, সেটার প্রচারের জন্য নম্রভাবে বলতে এসেছে। অথচ, কোনো পলিটিক্যাল ক্যাডার আসলে আমাকে সুযোগই দেয়া হতো না, পরীক্ষা থাকলেও আমাকে মিছিলে যেতে হত, আমিও কথা না বাড়িয়ে চলে যেতাম ভালো মানুষটি হয়ে। অতএব, জীবনে প্রথমবারের মত ফায়দার কারিগরদের কায়দার কাছে ধরা দিয়ে, পুরান ঢাকার কোন এক ঐতিহ্যবাহী মসজিদে বহুত ফায়দা আদায়ের বন্দোবস্ত করে ফেললাম।
এ-এক নতুন দুনিয়াদারী। সবাইকে নাকি এক পাত্রে বসে খেতে হবে, অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর আয়োজন। সেটা না হয় সহ্য করা গেল, কিন্তু ডারউইন ব্যাটার বিবর্তন আর নীল আর্মস্ট্রং-এর চাঁদের বুকে দৌঁড়াদোড়ি সবকিছু যে আগে থেকেই কিতাবে লেখা ছিল এবং বোরাকের কাহিনি থেকে যে আলোর গতিতত্ত্ব এসেছে – এ-সমস্ত বৈজ্ঞানিক ভূতের গল্প শোনার মত রোমান্টিকতা যে আমার মধ্যে নেই। মুখ কান চেপে কোনো ভাবে সহ্য করে থেকে অবশেষে ‘আসর’ এর নামাযের পর হেদায়েত করানোর উদ্দেশ্যে সবাই দলবেঁধে পাড়ি দিলাম। পুরান ঢাকার সব আলু পটলের ব্যবসায়ীরা ধর্ম কর্ম ভুলে ব্যবসায় মেতে উঠেছে, ওদেরকে সঠিকপথে আনার জন্য আমাদের এই আয়োজন। দলনেতা সবার আগে বলে দিলেন কি করে চোখের হেফাজত করতে হবে। ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটে আজকাল বেপর্দা মেয়ে মানুষে ভরে গেছে, এমতাবস্থায় চোখের হেফাজত করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের সন্মুখে যিনি থাকবেন তিনি রাস্তায় বেপর্দা মেয়ে মানুষ দেখলেই আমাদেরকে আওয়াজ দেবেন, আর আমরা সাথে সাথে চোখ নামিয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকব। একবার মনে হলো দলনেতাকে বলে দেখি, এই মহান দায়িত্বটা আমাকে দেয়া যায় নাকি। কিন্তু, প্রথমবারের মত এইরকম মহান কাজে এসেছি, অতএব অভিজ্ঞতা কম, তাই এই ধরণের অনুরোধ করা থেকে স্বেচ্ছায় বিরত থাকলাম।
যথাসময়ে শুরু হলো আমাদের অভিযান। দীনের দাওয়াত নিয়ে একটা একটা করে দোকানে দোকানে যাচ্ছি, আর এক একটা করে ব্যবসায়ী নানা কাজে কর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। অথচ, এতক্ষণ পায়ের উপর পা উঠিয়ে তারা বাখরখানি কিংবা পান-সুপুরির চিবোচ্ছিলেন। তাদের ভাব দেখে মনে হলো, আমার একমাত্র রিক্সাচালক ছেলের জন্য তাদের টমি হিলফিগার টিশার্ট পরা মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেছি। কিন্তু এতে করেও আমার অভিজ্ঞ সহকর্মীদের কারোরই কোনো ধরণের পরিবর্তন নেই। তারা পাথরের মত সব সয়ে যাচ্ছে, বরং দিগুণ উৎসাহ নিয়ে হেঁটে হেঁটে এ-দোকান থেকে সে-দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কাজের মধ্যে যে কাজটা হলো, আমি সবসময় মাটির দিকে চোখ নামিয়ে চলছি, যখনই বেপর্দা মেয়ে মানুষ দেখে আমাদের পথপদর্শক আওয়াজ দিচ্ছে, সাথে সাথে আমার চোখ উপরে উঠে যাচ্ছে, বেপর্দা মেয়ে মানুষ দেখে শেষ হলে আমি আবার চোখ নামিয়ে ফেলছি।
অনেকক্ষণ ধরে চোখ হেফাজত করবার অপচেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে সিদ্ধান্তে আসি, কি করে এই অভিযান থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আরো একবার মনে হলো, সত্যিই বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। যেই কথা সেই কাজ, সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে রাত দশটার মধ্যে এসে হাজির হলাম ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলিতে। নিজের শহীদুল্লাহ হলে আর যেতে পারিনি, একুশে হলের সালাম ভবনে এসে অভিযান ক্লান্ত শরীরে লম্বা একটা ঘুম দিয়ে উঠলাম পরদিন ঠিক দুপুর বেলা।
যানজটের এই ঢাকা শহরে দুপুর বেলা বাইরে থেকে খানিকটা ঘুরে এলেই সমস্ত শরীর ঘামে ভিজে যায়। সালাম ভবেনের ৪০১ নাম্বার কক্ষ; ‘রুম’ না বলে কক্ষ বলার বিশেষ একটা কারণ আছে। খুব কাছের একজন বাংলার স্টুডেন্ট আমার রুমে আসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করার জন্য। সে কখনো তার বাক্যে বিদেশি শব্দ ব্যবহার করে না, সবকিছুই বাংলায় বলতে হবে। মাঝে মাঝে আমাকে বলত, ‘রাজু ভাই কিন্তু আমার কক্ষে এখনো আপনার পদচিহ্ন লেপন করেন নি’। আমিও বলতাম, ‘ইহা অত্যন্ত খারাপ কর্ম হয়েছে, শীঘ্রই তোমার কক্ষ আমার পদযুগলে লেপন করে দিয়ে আসব’। তার কক্ষে পদচিহ্ন লেপন করার সুযোগ না হয়ে উঠলেও তার ব্যবহৃত কক্ষ শব্দটা সুযোগ পেলেই আমি ব্যবহার করে চলছি। অতএব, যে-কথা বলছিলাম, সে ৪০১ নাম্বার কক্ষের কাছে ফিরে যাই।
৪০১ নাম্বার কক্ষে এসে আমার প্রিয় বন্ধু, গরমের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে, একে একে তার শরীর থেকে সবকিছু খুলে ফেলতে লাগলো। তার হাতের ব্রেসলেট্, গলার লকেট্, সান-গ্লাস, বেল্ট, চাবির রিং, কেডস্, সকস্, টি-শার্ট, জিন্স, ক্যাপ, ঘড়ি আরো নাম না-জানা অনেক অলঙ্কারাদি। একটা মানুষের শরীর থেকে যে এত কিছু খোলার থাকতে পারে, জীবনে তাকে না দেখলে আমার বিশ্বাস করতেই কষ্ট হতো। কিন্তু সবকিছুকে স্তব্ধ করে দিয়ে, গ্রীষ্মের আগুন দুপুরে, শুধুমাত্র শর্টস্ পরে থাকা আমার এই অবাক বন্ধু, ৪০১ নাম্বার কক্ষের সকলকে আরো একবার অবাক করে দিয়ে, তার শরীরের খোলার মত অবশিষ্ট জিনিসটুকুও আস্তে করে খুলে ফেললো। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে সবাই অপলকে দেখলো অভূতপূর্ব সে-দৃশ্য। কারো মুখে কোনো শব্দ নেই, সবাই শুধু নির্বাক হয়ে দেখলো। দেখলো, কেমন করে নিজ হাতে উপরের পাটির দুইটা দাঁত খুলে নিয়ে বন্ধু আমার সযতনে টেবিলের উপর রেখে দিলো।
বিচিত্র সব মানুষের সাথে পরিচয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে। কত রকমের বন্ধু আর কত রকমের যে বন্ধুত্ব। তবে যত বিচিত্রই হোক-না কেন, সবাই সবার বন্ধু, সবার মাঝে তৈরী হচ্ছে বন্ধুত্ব। আজ থেকে অনেক বছর পরে, ব্যস্তজীবনে চলার পথে যখন হঠাৎ দেখা হয়ে যাবে, হয়তো এদেরকেই বুকে জড়িয়ে ধরে বলবো, ‘বন্ধু কি খবর বল না’। আমার এই অবাক বন্ধুকে কখনো দেখেছি, শাহবাগ থেকে ফার্মগেইট যাবার গাড়ীতে উঠে ভিড়ের মধ্যে বাসের মেঝেতে বসে খোঁজাখুঁজি করছে। লোকজন জিজ্ঞেস করে, ‘ভাই আপনি কি খুঁজেন’। সে বলতে পারে না, ‘দাঁত খুজি ভাই’। কখনো হয়তো জানালার পাশে বসে তিনতলায় ক্লাস করছে, হঠাৎ সে ক্লাস রেখে বাইরে যাবে। শিক্ষক হয়তো বাইরে যাবার কারণ জিজ্ঞেস করছে। কিন্তু সে বলতে পারছেনা, জানালা দিয়ে তাকাতে গিয়ে তার দাঁত খুলে নীচে পড়ে গেছে।
বড়ই বেরসিক তার এই দন্তযুগল সবচেয়ে বড় রসিকতাটা করে বসল মাঠভর্তি মানুষের সামনে। আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট ম্যাচ চলছে। আমার অবাক বন্ধু তখন ব্যাট হাতে। কিছুক্ষণ আগে আমাদের পরপর দুই উইকেট চলে গেলো। খেলায় হারতে যাচ্ছি মোটামুটি নিশ্চিত, মান সন্মান নিয়েই টানাটানি। অবাক বন্ধু ব্যাট হাতে দাঁড়িয়েছে শচীন টেন্ডুলকারের মত ভাব নিয়ে, ওদিকে বোলারও বল করতে আসছে। এ-সময় গ্যালারী থেকে একজন তার ব্যাটিং স্টাইল দেখে উদ্দীপিত হয়ে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো, ‘দেখিয়ে দে, দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে আস’। বোলার বল করলো, আমার বন্ধু ডাউন দ্যা উইকেটে এসে সজোরে ব্যাট চালালো, অমনি তার দাঁতগুলো খুলে পড়লো পিচ্-এর উপর। সমস্ত মাঠভর্তি দর্শক দেখলো সে দৃশ্য, এতদিন তারা শুধু শুনেই এসেছে দাঁতভাঙ্গা জবাবের কথা, আজ তারা নিজ চোখে দেখতে পারলো কাকে বলে দাঁতভাঙ্গা জবাব। আম্পায়ার ‘নো’ বল ডাকলো। কেন ডাকলো কেউ কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পেলো না। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহবল আম্পায়ারকে দেখে মাঠভর্তি দর্শক হাসতে থাকলো। সবাইকে হাসতে দেখে আমার অবাক বন্ধুও হাসতে শুরু করলো, শুধু মাটিতে পড়ে থাকার কারণে দাঁত বের করে হাসাটা সম্ভব হয়ে উঠলো না।
(চলবে…)
[email protected]
January 11, 2010
আপনার সিরিজটা সবসময় পড়া হয়না। দুর্দান্ত লিখেছেন 😀 😀
@রৌরব,
অনেক ধন্যবাদ। 🙂
মাইরা ফেলবেন তো হাসায়া :lotpot:
আমিও নির্বাক হয়ে গেছিলাম এইখানে এসে…
আপনার সেই সবস্ময় বাংলায় কথা বলা বন্ধুর কাহিনি শুনে আমার কলেজ জীবনের কথা মনে পড়ে গেল।বিদ্যাসাগরের “শকুন্তলা” পড়ে আমরা কয় বান্ধবী খালি সাধু ভাষায় কথা বলতাম, তখন কিছু মজার মজার শব্দ আবিষ্কার করেছিলাম।আমরা কলমকে বলতাম ‘সীসক লেখনী’ পেন্সিলকে বলতাম ‘অস্থায়ী দাগনী বস্তু’ হাহাহা…
আমরা শকুন্তলার সম্বোধন রীতি (সখী শকুন্তলে, সখী অনসূয়ে প্রভৃতি)অনুসারে একেকজনকে বলতাম সখী লীনে(আমি), সখী নওশীনে(নওশীন), সখী সিন্থিয়ে (সিনথিয়া) ইত্যাদি বলতাম। আমি একবার একটা পুথি(!) লিখেছিলাম! আমরা প্রতিদিন ক্লাসে এই তিনজন মিলে কবিতা(!) লিখতাম। একজন এক লাইন লিখত আরেকজন তার সাথে ছন্দ মেলাত এভাবে দিন শেষে উদ্ভট মজার একটা সাধু ভাষায় রচিত কবিতা দাড়িয়ে যেত!!!
@লীনা রহমান,
পুঁথিখানা পোস্ট করন না কেন মুক্তমনায়?
এ-দিকে আপনাদেরকে কাহিনি বলতে গিয়ে বন্ধুর সাথে আমার সম্পর্ক প্রায় ছিন্ন হয় হয়।
@মইনুল রাজু,
এইজন্য জ্ঞানী ব্যাক্তির উক্তি: “কারো গোপন তথ্য ফাস করতে নাই।”
জুলিয়ান এ্যসেঞ্জ ফাস করতে গিয়ে ধরা খাইছে। এখন তার ভেতর ভয় ঢুকেছে- আম্রিকা পাইলে তারে মাইরা ফালাইবো।
আপনার বন্ধু আপনারে পাইলে কী করবো একটু ভাইবা দেখুন। (চুল টানার ইমো দিতে পারলাম না, {আপগ্রেডের কাম চলোনের কারণে})।
@মাহফুজ,
আমার বন্ধু আমাকে পেলে হাতজোড় করে বলবে, একটা কাহিনী বলেছিতো বলেছি, দয়া করে বাকী কাহিনীগুলো যেন না বলি। 😀
আর আমার বন্ধুর তথ্য-তো গোপন না। মাঠভর্তি মানুষ কোনো কিছু দেখলে সেটা কি আর গোপন থাকে বলেন।
@মইনুল রাজু,
পুঁথির মজাটা ছিল আমাদের পড়ায়…তাই এখানে ওটা দেয়া গেলনা…আরেকটা কারণে পুথিটা পোস্ট করা গেলনা। আজ থেকে কয়েক মাস আগে আমার পার্স চুরি হয়েছিল।সেখানে আমার ড্রয়ারের চাবিও ছিল যাতে আমি আমার স্মৃতিগুলো রাখি…সেই চাবি আজো বানানো হয়নাই।মনে হয় আমাকে “বিশিষ্ট আইলসা” ক্যাটাগরিতে নোবেল প্রাইজ দেয়া যেতে পারে 😛
চমৎকার লেখা। ভাল লাগল। আমাকেও ফায়দায় শামীল হওয়ার জন্য মাঝে মাঝে দাওয়াত দিতে আসে। কিন্তু সে দাওয়াতে যে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নাই সেটা তারা বুঝে গেছে।
পারতপক্ষে আমার কাছে আসে না।
চলুক। :yes:
@নিশাচর,
আপনার আগ্রহ না থাকলে কিছুদিন পর দেখবেন তারা আরো বেশি করে আসবে। পাপী বান্দাদের হেদায়েত করতে পারলে সওয়াব বেশি। 😛
@মইনুল রাজু,
এই যায়গায় থেমে গেলে খুব মজা হতো। পরে কোন এক যায়গায় বলা যেত-
আপনার লেখার এই সমস্ত ব্যাপারটা আমি রপ্ত করতে পারলে গল্প লেখা শুরু করে দিতাম। :yes:
@আকাশ মালিক,
এ-জায়গায় এসে তারপর কি লিখবো সেটা নিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তাও করেছি। পরে ভাবলাম থাক, মুক্তমনার পাঠকরা কি-না কি ভেবে বসে, তাই বেশি আর নাটক করলাম না। 🙂
আপনার লেখার মধ্যে একটা সুক্ষ রসবোধ আছে। পড়তে গিয়ে দারুন হাসি পায়, নষ্টালজিক না হয়ে উপায় থাকেনা। উপস্থাপনটা সত্যিই সুন্দর। চালিয়ে যান।
@আজম,
অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন। 🙂
দারুণ লিখেছেন ।
@রুপম,
ধন্যবাদ। 🙂
ব্যাপক বিনোদন :lotpot: ।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
কি আর করবা, সব তোমার সিনিয়র ভাইদের কাণ্ড-কারখানা। 😀
মজাক। আশাকরি বই বের করার পরিকল্পনা আছে।
@Atiqur Rahman Sumon,
মুক্তমনায় লেখা আমার তিনটা সিরিজ নিয়ে বই বের করার ইচ্ছে আছে, যদিও তার জন্য কি করতে সে-রকম কোনো প্রাথমিক ধারণাও আমার নেই। দেখা যাক কি হয়।
ভালো থাকবেন, অনেক ধন্যবাদ। 🙂
@মাহ্ফুজ,
বেপর্দা দাইয়ুস নারীদেরকে আল্লাহ্পাক হেদায়াত করুন,তারা যেন জাহেলিয়া যুগের নারীদের মতো বেপর্দায় বাইরে যাতায়াত না করে।তাদের হৃদয়ে আল্লাহ্তালা যে মোহর এঁকে দিয়েছেন তা যেন অবিলম্বে সরিয়ে নেন।পরম করুনাময় আমাদের সবার সহায় হোন, আমীন।
@তামান্না ঝুমু,
বেপর্দা দাইয়ুস নারীরাই এখন আল্লাহকেই হেদায়েত করে ফেলবে। আল্লাহর দীলেই মোহর মেরে দিচ্ছে। করুণাময় আল্লাহ নিজেই এখন করুণার পাত্র হয়ে যাচ্ছেন।
@মাহফুজ,নবীজী মীরাজে গিয়ে বেহেস্ত,দোযখ পরিদর্শন করেছিলেন।তিনি দোযখে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশী দেখতে পেয়েছিলেন।এর অন্যান্য কারনের মধ্যে বেপর্দা ও একটি প্রধান কারন।বেপর্দা নারী,আল্লার হুকুম অমান্যকারী ও অবিশ্বাসীদের জন্য তিনি প্রস্তুত করে রেখেছেন লোহার মুগুর।তারা শেষ বিচারের দিন পুল সীরাত পার হতে পারবেনা,দ্বিখন্ডিত হয়ে মাঝপথে জলন্ত দোযখে পরে যাবে।তাদের মাথায় ফুটন্ত পানি ঢেলে “ওয়াটার থেরাপী”দেয়া হবে।এছাড়াও রয়েছে নানা রকমের থেরাপীর ব্যাবস্থা।পৃথিবীর কয়েদীরা মাঝে মাঝে জেল ভেংগে পালিয়ে যায়।কিন্তু সেখান থেকে পালানোর কোন উপায় নেয়।পালিয়ে যাবে কোথায়?সব গ্রহ নক্ষত্র চুরমার হয়ে যাবে,মহাপ্রলয়ের দিন।এমনকী সাত আসমান ও!অবশিষ্ট থাকবে শুধু বেহেস্ত আর দোযখ।তখন আল্লাহ্পাক তার আরশ খানা নিয়ে কোথায় বাস করবেন সেটাও একটা চিন্তার বিষয়।পার্থিব জীবন ক্ষণিকের,জীবনান্তে অপেক্ষা করছে অনন্ত মহা জীবন।তাই জীবন থাকতে পরবর্তী জীবনের সুখ শান্তির ব্যাবস্থা করতে হবে।মানুষকে দীনে আনয়নের জন্য আল্লা যুগে যুগে অসংখ্য নবী রাসুল ধরনীতে প্রেরন করেছেন।তার চেষ্টার কোন ত্রুটি ছিলোনা।সুতরাং তাকে দোষারোপ করা যাবেনা।আমাদের এলাকার এক লোক নির্বাচিনে প্রার্থী হয়েছিলো ,তার সমর্থকরা তার সমর্থনে একটা গান রচনা করেছিলো,”সময় থাকতে কইরো চিন্তা সন্ধ্যা হইলে পাইবানা জামশেদ ভাইকে হারাইয়োনা।” তাই জীবন থাকতে চিন্তা করতে হবে।মৃত্যুর পরে দোযখে গিয়ে হায় হুতাশ করলে কোন কাজ হবেনা।বেহেস্তে সুরা,হুরী ছাড়াও রয়েছে বিপুল ভোগ বিলাসের বেসুমার ব্যাবস্থা।তাই এহেন বিলাসবহুল জীবনের সুযোগ হেলায় ফেলায় নষ্ট করা কী আদৌ যুক্তিসংগত হবে?
🙂
@দেবোত্তম,
🙂 🙂
এস এস সির পরীক্ষা শেষে আমিও সময় দিয়েছিলাম তাবলিগে। কথা আদায় করে নিয়েছিল ১ চিল্লা দেবার। কিন্তু এক পাত্রে খাবার ব্যাপারটি ধাতে কুলোতে পারিনি বলে, পেটে অসুখ বাধিয়ে বসেছিলাম। শেষে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছিলাম। বাড়িতে ফিরেই একটানা ৭ দিন বিছানায়। ওখানে যেসব গল্প বানিয়ে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয় তা রূপকথাকেও হার মানায়।
বেপর্দা নারী দেখলেই আমির সাহেব বলতেন, এরা সব দাইয়ুস।
দাঁতের বিষয়টিও খুব মজা করে লিখেছেন। আনন্দ পেয়েছি, অতীত জীবনে কিছু সময়ের জন্য ফিরে গিয়েছি। একেই হয়তো বলে নষ্টালজিয়া।
@মাহফুজ,
আমির শব্দটি ভুলে গিয়েছিলাম। আপনার লেখা দেখে আবার মনে পড়ল।
আমি নিজেও নস্টালজিয়া থেকেই লেখাটা লিখছি।
ভালো থাকবেন। 🙂
@মইনুল রাজু,
রমনার ভিতর দিয়ে চলার পথে সিমেন্টের বেঞ্চে কিম্বা গাছের নিচে একান্তভাবে যখন ছেলে-মেয়ে বসে থাকতো। তখন আমির সাহেব বলতেন, খবরদার ঐদিকে তাকাবে না। তাকালে কিয়ামতের দিন চোখ দুটোর মধ্যে গরম গলিত শীশা ঢেলে দেয়া হবে। ভয়ে মাথা নিচু করে চলতাম। কল্পনায় চোখের যন্ত্রণা অনুভব করতাম। প্রতিটি মুহূর্তে ভয় তাড়া করে ফিরতো।
@মাহফুজ,
আমির সাহেব কিন্তু নিজে দেখে তারপর সবাইকে সতর্ক করতো। 😛
@মইনুল রাজু,
প্রান খুলে হাসা গলো,আলহামদুলিল্লাহ্।আজকাল বেপর্দা মেয়েদের অত্যাচারে নেককার মুমিনদের রাস্তায় চলাফেরা করা কঠিন ব্যাপার হয়ে পড়েছে।নাউজুবিল্লাহ্।
@তামান্না ঝুমু,
আস্তাগফেরুল্লাহ্। কে আবার নিজেকে নেক-কার বলে দাবি করল।
ব্যাপক মজা আর রসালো গজা!
:-Y
😉
:laugh:
:lotpot:
তবে পর্বটাতে বিষয় এসেছে দুইটা। শুরু হয়েছে একটি দিয়ে আর শেষ আরেকটি দিয়ে। মনে হচ্ছে দুইটা বিষয় নিয়েই দুইটা ভিন্ন ভিন্ন কাহিনী হবার দাবী রাখে।
@শ্রাবণ আকাশ,
ঠিকই বলেছেন, দুইটা ভিন্ন কাহিনি হতে পারত। কিন্তু আমি দশ পর্বে শেষ করব, তাই অনেক কাহিনি সংক্ষিপ্ত করে বেশি কাহিনি কাভার করতে চাচ্ছি। 🙂
ধন্যবাদ।
@মইনুল রাজু,
এর মত রাজুর দশ পর্বে সব ধারাবাহিক শেষ করার রহস্যটা কি?
@গীতা দাস,
বিশেষ কোনো কারণ নেই গীতা’দি। এটা আমার একটা প্যাটার্ন হয়ে গেছে।
না হলে আমার নিজের কাছেই মনে হয়, কোথায় গিয়ে থামবো কোথায় কোথায় গিয়ে থামবো। তাই একটা টার্গেট ঠিক করে রাখি সবসময়। 🙂