উৎসর্গ: নৃপেন্দ্র সরকার
কষ্টকাল্পনিক ১/ ২/ ৩
ধরা যাক, $latex n$ একটি ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা। তাহলে $latex 1$ এবং $latex n$ এর মধ্যে কয়টি মৌলিক সংখ্যা[১] রয়েছে? যেমন $latex n$ যদি হয় ১০, তাহলে ১ ও ১০ এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যা আছে ৪টি (২, ৩, ৫, ৭)।
যেকোন $latex n$ এর জন্য কি এই প্রশ্নের উত্তর কোন সুন্দর ফর্মুলার মাধ্যমে পাওয়া যায়? এই প্রশ্নের উত্তর গণিতে মৌলিক সংখ্যা থিয়োরেম নামে পরিচিত। উত্তরটি হল $latex \frac{n}{\ln n}$ (মোটামুটি ভাবে), যেখানে $latex \ln n$ হচ্ছে $latex n$ এর natural logarithm।
মৌলিক সংখ্যা বিষয়ক এই প্রশ্নটি উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে গণিতবিদদের চিন্তিত করে তোলে। উত্তরটি যে $latex \frac{n}{\ln n}$, সেটা অনুমান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ। কিন্তু এটি প্রমাণ করার জন্য অপেক্ষা করতে হয় ১৮৯৬ পর্যন্ত যখন একই সাথে হাদামার্দ ও দে লা ভেলে পুস্যাঁ এই অনুমানকে প্রমাণ করেন। এসব কথা যে জন্য বলছি তা হল এই যে, দুজনই কাল্পনিক সংখ্যার সাহায্যে complex analysis ব্যবহার করে প্রমাণটি করেন। খুবই বিস্ময়কর ব্যাপার, কারণ প্রশ্নটা কাল্পনিক সংখ্যা বিষয়ক নয় একেবারেই। বস্তুত complex analysis ব্যবহার না করে মৌলিক সংখ্যা থিয়োরেম প্রমাণ করা সম্ভব কিনা, এটি বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে একটি বিরাট প্রশ্ন হিসেবে দেখা দেয়। এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায় বছর তিরিশেক পরে যখন প্রায় একই সময়ে বিংশ শতাব্দীর প্রধান দুই গণিতবিদ complex analysis ছাড়াই এই থিয়োরেমটি পুনঃপ্রমাণ করেন। স্যালবার্গ ও পল এরদিশের মধ্যে কে আগে প্রমাণটি করেছেন এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে তীব্র তিক্ততার গল্প পশ্চিমের গণিত বিভাগগুলির ক্লাসরুমে-করিডোরে আজও শুনতে পাওয়া যায়।
তাহলে দেখছি, সাধারণ সংখ্যা বিষয়ক একটি প্রশ্ন কাল্পনিক সংখ্যা ব্যবহার করে প্রমাণ করাটা অপেক্ষাকৃত সোজা, বা অন্তত ঐতিহাসিক ভাবে অনেক আগে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়েছিল। শুধু তাই নয়, আজ অব্দি এবিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে কাল্পনিক সংখ্যা ভিত্তিক analysis সব সময়েই ব্যবহৃত হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে এর কারণটা সাধারণ ভাষায় প্রকাশ করা একটু দুষ্কর — শুধু এটুকুই বলা যাক যে কাল্পনিক সংখ্যা-ব্যবস্থা এমন কিছু টেকিনিক্যাল সুবিধা দেয় যার কারণে সাধারণ সংখ্যা বিষয়ক বহু প্রশ্নের জবাব খঁোজার জন্য গণিতবিদ ও বিজ্ঞানীরা কাল্পনিক সংখ্যার দ্বারস্থ হন।
তবে ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ কাল্পনিক সংখ্যার একটি নান্দনিক প্রয়োগ রয়েছে যেটি প্রায় পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। তবে এর জন্য আগে আমাদের জানতে হবে অয়লারের ফর্মুলা: যেকোন সংখ্যা $latex \theta$ র জন্য $latex e^{i \theta} = \cos \theta + i \sin \theta$.
এই সমীকরণের বাম দিকে রয়েছে e (=2.71828183) এর একটি কাল্পনিক ঘাত, আর ডান দিকে একটি ত্রিকোণমিতিক ফর্মুলা। এই অত্যাশ্চর্য সমীকরণ বীজগণিত ও ত্রিকোণমিতির মধ্যে একটি সম্পর্ক স্থাপন করে কাল্পনিক সংখ্যার মাধ্যমে। বস্তুত এই সমীকরণের প্রয়োগ এতই ব্যাপক যে লিখে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।
যাহোক তড়িৎ কৌশলে কাল্পনিক সংখ্যা ও অয়লারের ফর্মুলার ব্যবহার দেখা যাক। দুই প্রকারের তড়িৎ প্রবাহের সাথে আমরা পরিচিত — ডিসি এবং এসি, এর মধ্যে এসি কারেন্টের ক্ষেত্রে কারেন্ট ও ভোল্টেজের পরিমাণ অনবরত ওঠানামা করতে থাকে। যেমন এসি ভোল্টেজের ওঠানামা হতে পারে নিচের ছবিটির মত।
এই ছবিতে X-অক্ষ বরাবর সময় ও Y-অক্ষে বিভিন্ন সময়ে ভোল্টেজের পরিমাপ দেখানো হচ্ছে — এবং এই ভোল্টেজ উঠছে নামছে একটি ত্রিকোণমিতিক ফর্মুলা অনুযায়ী। এই ছবির ক্ষেত্রে ফর্মুলাটি এরকম — সময় $latex t$ তে ভোল্টেজের মান $latex 10 \cos t$ হবে। এসি কারেন্টের ক্ষেত্রে ভোল্টেজ এরকম ওঠে নামে কেন? এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে এসি কারেন্ট কিভাবে উৎপাদিত হয় তার মধ্যে। আপাতত সেটা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। এসি কারেন্টের বৈশিষ্ট্যই এরকম, এটা মেনে নিয়ে আমরা চাইছি একটি গাণিতিক প্রকাশভঙ্গি খুঁজে পেতে যেটি এসি কারেন্ট বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে সহায়তা করবে।
লক্ষ্য করুন, প্রথম ছবির ঢেউটির কিছুক্ষণ পর পর পুনরাবৃত্তি ঘটছে। অর্থাৎ দীর্ঘ ঢেউটিকে নিচের চিত্র ২ এর ছোট ঢেউটিরই পুনরাবৃত্তি বলে মনে করা যায়।
এখন, ভোল্টেজ বা কারেন্ট বিষয়ক হিসেব নিকেশে অনেক সময়ই এই ছোট ঢেউ-এর ঠিক কোথায় আমরা আছি সেটি প্রকাশ করবার প্রয়োজন ঘটে। যেমন ধরুন নিচের চিত্র ৩-এ দুটি নীল বিন্দু আর একটি লাল বিন্দু — এদের গাণিতিক প্রকাশ কি রকম হতে পারে?
আমরা ভাবতে পারি, ওই বিন্দু গুলিতে ভোল্টেজের মান দিয়েই তো এদের প্রকাশ করা যায়। যেমন, লাল বিন্দুটিকে প্রকাশ করা যেতে পারে -৮ সংখ্যাটি দিয়ে। সমস্যা হল, এই ছোট ঢেউটির মধ্যে একই মান বিশিষ্ট দুটি করে বিন্দু আছে। যেমন, নীল বিন্দু দুটির মানই 5। তাহলে এদের মধ্যে পার্থক্য করব কিভাবে? একটা উপায় হল, সময়টাও জুড়ে দেয়া। তাহলে একটি নীল বিন্দু হচ্ছে $latex (5, \pi/3)$, আরেকটি হচ্ছে $latex (5, 2 \pi/3)$[২]। এই রূপায়ণ ব্যবহার করা যেতে পারে ও হয়েও থাকে। কিন্তু প্রকাশটি কিছুটা জবড়জং, কারণ দুটি সংখ্যা নিয়ে চলতে ফিরতে হচ্ছে এবং সাধারণ যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগের প্রয়োগ এক্ষেত্রে অনান্দনিক।
এক্ষেত্রে কাল্পনিক সংখ্যা ব্যবহার করে একটি চমৎকার রূপায়ন সম্ভব। প্রথম নীল বিন্দুটিকে আমরা প্রকাশ করব $latex 10 e^{i \pi/3} = 10 e^{i \times 1.04} $ দিয়ে। বা সাধারণ ভাবে, সময় $latex t$ তে যে মানটি পাচ্ছি তাকে $latex 10 e^{i t}$ দিয়ে। এই রূপায়ন এত শক্তিশালি কেন? একদিকে লক্ষ্য করুন আমরা এখন ব্যবহার করছি একটি মাত্র সংখ্যা (হোক সে সংখ্যা কাল্পনিক) কাজেই সংখ্যা ব্যবস্থার যে গাণিতিক ঐতিহ্য তার পুরোটা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। অন্যদিক, অয়লারের ফর্মুলা অনুযায়ী প্রথম নীল বিন্দুটির জন্য পাচ্ছি:
$latex 10 e^{i \pi/3} = 10 \cos \pi/3 + i 10 \sin \pi/3 = 5 + i 10 \sin \pi/3$
অর্থাৎ $latex (5, \pi/3)$ এই রূপায়নেরই একটি ফর্মকে আমরা একটি মাত্র কাল্পনিক সংখ্যার মধ্যে প্যাকেজজাত অবস্থায় পাচ্ছি। আর প্রয়োজন হলেই কাল্পনিক সংখ্যার রূপায়ন থেকে ওই দুই সংখ্যা বিশিষ্ট রূপায়ণটি ফিরে পাওয়া সম্ভব।
পাঠক হয়ত ভাবতে পারেন, একটি বিশেষ সময়ের ভোল্টেজ $latex 10 e^{i \pi/3}$, একথাটার অর্থ কি? ভোল্টেজ একটা সাধারণ সংখ্যা, যন্ত্রপাতি দিয়ে তাকে মাপা যায় প্রয়োজনে, সেই ভোল্টেজ “কাল্পনিক” হতে যাবে কেন? এই সিরিজের প্রথম দিকে এবং গণি-অগ্নির আলোচনায় একথাটার জবাব আছে। ভোল্টেজ “আসলে” যাই হোক না কেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। মোদ্দা কথাটা হল, ভোল্টেজ সম্বন্ধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা কাল্পনিক সংখ্যার ভাষা ব্যবহার করে প্রকাশ করতে পারছি, যার রূপায়ণ নান্দনিক, এবং টেকনিক্যালি সুবিধাজনক। পাঠক শুনে আনন্দ পেতে পারেন, শুধু এসি ভোল্টেজেই নয়, মোবাইল কমিউনিকেশনেও সিগন্যাল আদান-প্রদান বোঝাবার জন্য ঠিক এই রূপায়নটিই ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু টেকনিক্যালি সুবিধাজনক কেন? একটা ছোট উদাহরণ দিই। ওহমের সূত্রের কথা মনে থাকতে পারে হয়ত। ব্যাপারটি সরল। একটি মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যখন বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, তখন মাধ্যমটি বিদ্যুৎকে “বাধা” দিতে থাকে এবং এই বাধা বা resistance নিয়ন্ত্রণ করে ভোল্টেজ ও কারেন্টের সম্পর্ক। যেমন, ভোল্টেজ যদি হয় ১০ আর রেসিসটেন্স যদি হয় ২, তাহলে কারেন্ট হবে ১০/২ = ৫। গাণিতিক পরিভাষায়
$latex V = I \times R$ যেখানে V হচ্ছে ভোল্টেজ, I হচ্ছে কারেন্ট আর R হচ্ছে রেসিসট্যান্স।
ওহমের সূত্রের কথা যা বললাম সেটা ডিসি কারেন্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এখন, এসি কারেন্টের ক্ষেত্রেও ওহমের সূত্র যদি কার্যকর হত, তাহলে ব্যাপারটা হত এরকম, যেকোন মুহূর্তে কারেন্টের মান পাওয়ার জন্য সেই মুহূর্তের ভোল্টেজর মানকে ২ দিয়ে ভাগ করতে হবে, নিচের ছবিটির মত।
লক্ষ্য করুন, ভোল্টেজ ও কারেন্ট একই ভঙ্গিতে ঢেউ খেলে চলেছে, শুধু কারেন্টের ঢেউটি আকারে ছোট।
আসলে এসি কারেন্টের ক্ষেত্রে খেলাটা একটু ভিন্ন। মাধ্যমটি শুধু যে বাধা দেয় তাই নয়, কারেন্টকে কিছুটা “সরিয়ে” দেয়, অর্থাৎ কারেন্টের ঢেউটি শুধু আকারে ছোট হয়ে যায় না, ডানে বা বামে একটু সরেও যায়, নিচের ছবির মত।
সরে যাওয়ার ব্যাপারটিকে স্পষ্ট হয়েছে? না হয়ে থাকলে, উপরের সরে যাওয়া ছবির সাথে তার আগের ছবিটির কারেন্টের অংশের ছবি একসাথে দেখলে হয়ত বোঝা যাবে।
লক্ষ্য করুন নিচের ছবিটি উপরের ছবিরই একটু “সরে যাওয়া” রূপ, যেমন প্রথম ঢেউটি শুরু হচ্ছে একেবারে উপরে ৫ কারেন্ট দিয়ে, কিন্তু দ্বিতীয়টি শুরু হচ্ছে অনেকটা নিচে শূণ্য কারেন্টে।
কেন এমন হয় সেটা পদার্থবিদ্যার প্রশ্ন, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। আমরা যেটা জানতে চাচ্ছি তাহল এই phenomenon কে কিভাবে সুন্দর ভাবে মডেল করা সম্ভব, যাতে ওহমের সূত্রের মত একটি পরিচ্ছন্ন সূত্র পাওয়া সম্ভব। বিস্ময়ের ব্যাপার হল, এই দুধারি রেসিসট্যান্স (যাকে বলা হয় Impedance) কে যদি একটি কাল্পনিক সংখ্যা হিসেবে প্রকাশ করা যায়, তাহলে হিসেব ঠিক ঠিক মিলে যায়। আগেই দেখেছি ভোল্টেজকে কাল্পনিক সংখ্যা হিসেবে প্রকাশিত হতে, এখন ইমপিডেন্স এবং কারেন্টকেও কাল্পনিক সংখ্যা হিসেবে প্রকাশ করলে আমরা পেয়ে যাচ্ছি ওহমের সূত্রের এসি রূপায়ণ
$latex V = I \times Z$ যেখানে V হচ্ছে ভোল্টেজ, I হচ্ছে কারেন্ট আর Z হচ্ছে ইমপিডেন্স, এবং তিনটিই কাল্পনিক সংখ্যা।
যেমন, ইমপিডেন্স যদি হয় $latex Z = 2 e^{i \pi/2}$, তাহলে সময় $latex t$ তে কারেন্টের মান $latex I = V/Z = 10 e^{it}/2 e^{i \pi/2} = 5 e^{i (t – \pi/2)}$। এই গাণিতিক রূপ যে আমাদের শেষ দুটি ছবির “সরে যাওয়া” কারেন্টের ছবির সাথে ঠিক ঠিক মিলে যাচ্ছে পাঠক চাইলে যাচাই করে দেখতে পারেন। পাঠক আরেকটু ভাবলে বুঝতে পারবেন, কাল্পনিক সংখ্যা ব্যবহার না করে অন্য যে দুই সংখ্যা ওয়ালা রূপায়ণটি দেখেছিলাম আগে, সেটিকে এখানে কাজে লাগাতে গেলে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হত। অন্যভাবে বলা যায়, “বাধা দেয়া” এবং “সরে যাওয়া”, ইমপিডেন্স-এর দুই বৈশিষ্ট্য চমৎকার ভাবে একটি কাল্পনিক সংখ্যার মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব, যা অন্য কোন ব্যবস্থায় এতটা সহজ নয়।
এর পরও একটি প্রশ্ন হয়ত থাকে: এই বিশেষ বৈদ্যুতিক phenomenon এর মডেলে কাল্পনিক সংখ্যাটা এরকম অত্যাশ্চর্য ভাবে লেগে গেল কিভাবে? এর একটা জবাব আছে। গত পর্বে, মনে করে দেখুন, কাল্পনিক সংখ্যাকে একধরণের ঘূর্ণন হিসেবে দেখেছিলাম আমরা। এখন, এসি কারেন্ট কিভাবে তৈরি হয়? তৈরি হয় ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মধ্যে একটি কয়েলকে বাঁই বাঁই করে ঘুরিয়ে।
শুধু তাই নয়, এই ঘোরানোর সাথে ভোল্টেজ ঢেউ এর ওঠানামার একটা সরাসরি সম্পর্ক আছে। Impedance যে কাজটা করে, সেটাকে তুলনা করা যায় ঘুরতে থাকা কয়েলটাকে অল্প কিছুক্ষণ চেপে রাখার সাথে বা কয়েলটাকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার সাথে। পুরো ব্যাপারটাই অতএব ঘূর্ণনের ধারণার সাথে সংশ্লিষ্ট, তাই কাল্পনিক সংখ্যার প্রয়োগটা আসলে বেশ স্বাভাবিকই।
কাল্পনিক সংখ্যা নিয়ে কচকচি এখানেই শেষ করছি।
[১] মৌলিক সংখ্যা হচ্ছে এমন সংখ্যা যাকে অন্য কোন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যায় না (১ ছাড়া)
[২] $latex \pi$ এর মান 3.14 এর কাছাকাছি। নীল বিন্দুদুটির ক্ষেত্রে সময় মানদুটি যে যথাক্রমে $latex \pi/3$ ও $latex 2 \pi/3$ হবে, সেটা ক্যালকুলেটরে হিসেব করে দেখতে পারেন। অথবা, ছবিটি লক্ষ্য করলেও মোটামুটিভাবে এই মানগুলির সঠিকতা বোঝা যাবে।
লেখা সম্পর্কে কি আর বলবো, এক কথায় চমতকার। তবে এখানে শেষ না করে দিয়ে পরের একটা পর্ব লিখতে পারতেন ইন্টেগ্রাল ট্রান্সফর্ম যেমন ফৌরিয়ার ট্রান্সফর্মের উপর। ফৌরিয়ার ট্রান্সফর্ম কিন্তু বিশ্লেষণবাদী রসায়ন বা এনালিটিকাল কেমিস্ট্রির প্রাণ, এটা হচ্ছে খুঁটি যার উপর আধুনিক একবিংশ শতাব্দীর বিশ্লেষণবাদী রসায়ন দন্ডায়মান। আর ট্রান্সফর্ম দন্ডায়মান ইউলার্সের সমীকরণের উপর, বস্তুত যে কোন সিগনাল প্রসেসিঙ্গই তো দন্ডায়মান ইউলার্সের উপর তাই না(উচ্চারণটা কি অয়লার্স? অনেকে তো দেখি ইউলার্স বলে।)? ক্রিস্টালোগ্রাফি, এনএমআর স্পেক্ট্রোস্কোপি, এক্সরে এবসর্পশন ফাইন এজ স্ট্রাকচার বা এক্সাফ just to namea few। বলাই বাহুল্য এগুলো সবই করে কম্পিউটার এখন তারপরও আমি জানার জন্য খুবই আগ্রহী কি করে এর অন্তর্নিহিত গণিত কাজ করে। ভাল লাগলো।
@আল্লাচালাইনা,
অয়লার বলেই জানি, এখন দেখছি উইকিপিডিয়াও তাই বলছে।
ফুরিয়ার ট্রান্সফর্ম এ যাওয়া মানেই লিনিয়ার অ্যালজেবরা নিয়ে টানাটানি করা। মেট্রিক স্পেস, অর্থোগোনালিটি, ইউক্লিডিয়ান স্পেস থেকে শুরু করতে হবে, তারপর অয়লারের ফর্মুলার সাথে সেসবকে যুক্ত করতে হবে। অনেক হ্যাপা 🙂
রসায়ণে এত সব ব্যবহার সম্বন্ধের তেমন ধারণাই ছিলনা, যদিও সিগন্যাল প্রসেসিং সম্বন্ধ জানি মোটামুটি। ভাল লাগল। আপনিই লিখুন না কেন কিছু একটা।
ও হ্যাঁ, পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ :rose: ।
@রৌরব, আসলে আমার পক্ষে এটা নিয়ে লেখা সম্ভব না কেননা আমার এই ব্যাপারগুলতে গভীর ইনসাইট নেই, ফলে আত্নবিশ্বাসেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আপনার কথা শুনে মনে হলো এই ব্যাপারে লেখা আপনাকেই মানায়। হ্যাপা অনেক ঠিক, তারপরও একেবারে গোড়াথেকে না লিখে অল্পস্বল্প প্রাথমিক ধারণা পাঠকের রয়েচছে ধরে নিয়েই লিখতে পারেন, অন্তত আমাকে পাঠক হিসেবে পাবেন, এই ব্যাপারগুলো জানার জন্য আমি খুবই আগ্রহী। এছাড়া ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিজম নিয়ে লিখতে পারেন। এই ব্যাপারেও আমি যথেষ্ট উতসাহী!
অসাধারণ হয়েছে। অনেক তথ্য বহুল। আপনাকে বিষেশভাবে ধন্যবাদ জানাই।
@এম হক,
:rose:
কেন এই সিরিজের নাম কষ্টকাল্পনিক সেটা বোঝা গেছে।
এত সুন্দর সব ‘ফিগার’ বানাতে না জানি কতো জীম-বিউটিপার্লারে দৌড়াদৌড়ি-ব্যাম করতে হয়েছে আপনাকে! আমি কয়েকবারই কয়েকটা লেখা তৈরি করতে গিয়েও থেমে গেছি ডায়াগ্রাম আঁকার ভয়ে। 🙁
@তানভীরুল ইসলাম,
:laugh:
মুক্তমনায় কেউ কোনো আকর্ষণীয় সিরিজ লেখা শুরু করলে দশ পর্বের আগে তার আর রেহাই নেই। এর আগে থামলে সশ্রম কারাদণ্ড। 😎
খুবই চমৎকার একটা সিরিজ হচ্ছিল। এত দ্রুত থেমে যাবেন বুঝতে পারি নি। 🙁
@ফরিদ আহমেদ,
তাই বুঝি? ক্যাটালিনা রামিরেজ সিরিজের দশম গল্পটি কবে পাচ্ছি আমরা?
আপনার কষ্ট কাল্পনিক প্রত্যেক পর্বই নিরবে পড়েছি। কারণ মন্তব্য করার সাহস নাই। এই গণিত বিষয়টা আমার গাধা মাথায় ঢুকতে চায় না। ঢুকলেও বেরিয়ে যায়। স্কুলে থাকতে কত যে মার খেয়েছি শিক্ষকের হাতে। আর এখানেও যদি মন্তব্য করে আপনার কানমলা খেতে হয় তাই মন্তব্য থেকে দূর রয়েছি। আজ শেষ পর্বে অনেক সাহস সঞ্চয় করে মন্তব্য করলাম। আপনি যদি আমার ধারে কাছে থাকতে তা হলে আমার গণিত শিক্ষক বানিয়ে ফেলতাম আপনাকে। তা তো সম্ভব নয়। তাই মুক্তমনায় আরও লেখা চাই আপনার। ধন্যবাদ। :rose2:
@সুমিত দেবনাথ,
ধন্যবাদ আপনাকেও 🙂
চমৎকার একটি সিরিজ শেষ করার জন্য ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন।
গণিতের জটিলতাকে এক লহমায় সহজবোধ্য জায়গায় নিয়ে আসতে আপনার তুলনা নেই।
আপনার আগের সিরিজটাকে ইবুকে রূপান্তরিত করব বলে ভেবেছিলাম। সময়ের অভাবে হাত দেয়া হয়নি। এবারে করে ফেলব। আসলে আপনার যে কোন সিরিজই মনে হয় ই-বই হয়ে উঠতে পারে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের জন্য এমন সহজভাবে সিরিজ লেখার জন্য। আরো লিখুন!
@অভিজিৎ,
ভাবছি কি লেখা যায়। ধন্যবাদ :)।
:rose2:
:yes:
দারুন লেখা রে ভাই রৌরব।
খুব সহজ সরল করে আসল মানে অবিকৃত রেখে বিজ্ঞান কে মাতৃ ভাষায় লেখা কিন্তু অত সোজা না যা আপনি করে দেখালেন এই সিরিজে।
কিন্তু যার নামে উদসর্গকৃত ওনার ত দেখা’ নেই ।
আপনাকে ও রামগড়ুড়ের ছানা মহাশয়কে ধন্যবাদ।:rose:
@সেন্টু টিকাদার,
ধন্যবাদ আপনাকেও 🙂
@সেন্টু টিকাদার,
আমি মাস খানেক বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গে কাটিয়ে এলাম। আর রৌরব কেনই যে তাঁর মূল্যবান সিরিজটি এই অধমের নামে উতসর্গ করলেন তিনিই জানেন।
এই পর্বে কাল্পনিক সংখ্যার সহজবোধ্য উদাহরণের তুলনা হয়না। উত্তরসূরীদেরকে (যারা এখন কলেজ লেভেলে আছে) এই সিরিজটি অবশ্য পঠনীয়। অনেক শিক্ষকই কাল্পনিক সংখ্যা বিষয়ক টপিক পড়ানোর সময় এর জটিলতা এড়িয়ে থাকেন। এই সিরিজটি সেই সব শিক্ষক এবং ছাত্রদের অবশ্য পঠনীয়।
প্রাণঢালা ধন্যবাদ, রৌরব।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনার ভ্রমণ সুখকর হয়েছে আশা করি। চমকপ্রদ কোন অভিজ্ঞতা হয়ে থাকলে একটি পোস্ট ঝেড়ে দিন, আপনার স্মৃতিচারণগুলি সবসময়ই চমৎকার হয়।
@রৌরব,
আপাতত
@রৌরব,
আপনার জন্য একটা ভিডিও লিঙ্ক দিলাম। গেলো কোথায়?
{এবারেও যদি না আসে, কপি-পেস্ট করবেন প্লিজ http://www.youtube.com/watch?v=CeMbTnAS6u0
}
মেয়েটি কেবল দ্বিতীয় শ্রেণীতে উঠল।
বেশ!
কিন্তু আমি কষ্টকাল্পনিক পড়া ধরলাম আর আপনি লেখা বন্ধ করে দিলেন, এ কি হলো?
@রূপম (ধ্রুব),
আপনি কষ্ট পেয়ে থাকলে দুঃখিত 😀
রৌরব, সাবলীল এবং সফল একটি উপস্থাপনার জন্য অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ। আমি একটানে সিরিজটি পড়ে ফেললাম। তবে মনে হলো একটু তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে গেলো। কমপ্লেক্স নাম্বার এর ব্যবহার নিয়ে আরেকটি পর্ব হলে ভালো হতো না? কোয়ান্টাম মেকানিক্স এ এর ব্যবহার কিংবা নিদেন পক্ষে ফ্র্যাক্টাল সেট আর ম্যান্ডেলব্রট সেট এর অকল্পনীয় সৌন্দর্য নিয়ে একটা গ্রাফিক সমৃদ্ধ লেখা? আমি জানি না এর আগে কেউ মুক্তমনায় এ নিয়ে লিখেছে কিনা।
@সফিক,
অসংখ্য ধন্যবাদ পাঠ ও উৎসাতের জন্য।
হুঁ, সিরিজটির সংক্ষিপ্ততা নিয়ে আগেও অভিযোগ এসেছে। পরবর্তী কোন সিরিজে ব্যাপারটি শুধরে নেয়ার আশা রাখছি।
তবে…
ইচ্ছে করেই টানিনি, এর সৌন্দর্য “অকল্পনীয়” বলেই। বিস্ময় উৎপাদনটা সীমাবদ্ধই রাখতে চেয়েছি এই সিরিজে।
অবশ্য…
কোয়ান্টাম মেকানিক্স ও সম্ভাবনার তত্ব নিয়ে ভিন্ন একটি সিরিজের কথা ভাবছি। আরো অনেক ভাবতে হবে 🙂
এ লেখায় মন্তব্য করার অপশনটি কোন কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। মডারেটরের পক্ষ থেকে খুলে দেয়া হল।
লেখা পরিবর্তন কিংবা পরিবর্ধনের সময় মন্তব্য করার অপশন থেকে যেন টিক মার্ক উঠে না যায়, সে দিকে নজর রাখার জন্য লেখকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
@মুক্তমনা এডমিন,
হুঁ, ধন্যবাদ। তবে সেটা করতে গিয়ে latex code এর বারোটা বেজে গিয়েছিল :)। আগেও একবার হল এই পোস্ট এডিট করতে গিয়ে, code এর বিভিন্ন অংশ থেকে \ উঠে গিয়ে রেন্ডারিং এর যাচ্ছেতাই অবস্থা। যাহোক ঠিক করে দিলাম, এবং টিক মার্কের ব্যাপারটাও খেয়াল রাখার চেষ্টা করব।
@রৌরব,
latex code লাগছে কোথায় 😕
@নিশাচর,
পুরো লেখা জুড়েই তো! যেমন $latex e^{i \theta} = \cos \theta + i \sin \theta$। এটা ইমেজ হিসেবে দিই নি, latex লিখেছি, সেখান থেকে rendered হচ্ছে।
কাল্পনিক সংখ্যা নিয়ে অকল্পনীয় অথচ বাস্তবিক আলোচনার জন্য ধন্যবাদ।
i ঘূর্ণনের ধারণাটাকে শুধু ব্যাখ্যাই করে নি, মাথাটাও ঘুরিয়ে দিয়েছে। মুক্তমনায় এসেও দেখি অংক থেকে মুক্তি নাই।
সিরিয়াসলি রৌরব, গণিতের কঠিন বিষয় নিয়ে এত সহজে বাংলায় লেখেন কেমনে? জানি, পাঠকের জন্য সহজ করতে গিয়ে আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, তাই ধন্যবাদ জানাচ্ছি। খুবই সুন্দর একটা সিরিজ হয়েছে।
@ইরতিশাদ,
সবই আল্লার ইচ্ছা 🙂
@রৌরব,
আর আদিল ভাইয়ের ইচ্ছা: তাকে বুঝাতে না পারলে শেষ পর্বে বিরাট মাইনাস দেওয়া হবে জানিয়েছিলেন। হতে পারে _________ এত বড়।
মনে রাখবেন আল্লাহর ৯৯ টি নামের মধ্যে একটি নাম হচ্ছে- আদিল। এই নামের অর্থ “ন্যায়পরায়ণ/ন্যায়নিষ্ঠ” (The utterly just). এই নাম জপ করলে বালা মুসিত সব দূরে পালাবে। :laugh:
@মাহফুজ,
সমস্যায় ফেললেন তো! এখন উনি যদি মাইনাস দিয়ে বসেন তাহলে সে মাইনাসকে utterly just হিসেবে মানা ছাড়া গতি থাকবে না 😥
@রামগড়ুড়ের ছানা,
কপিরাইট আইন ভঙ্গের দায়ে রৌরব বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হোক। :-/
@নিশাচর,
দণ্ডিতই যদি হলাম তাহলে আর বিনাশ্রম কেন? 😕
@রৌরব,
ভাল করে ভেবে দেখুন। একে তো জেলে থাকতে হবে তার ওপর রাতদিন খাটনি করতে হবে! অবশ্য আপনি চাইলে ভিন্ন কথা! কি বল, রামগড়ুড়ের ছানা? 😉
div class =”footnote” আর p ট্যাগদুটো বন্ধ করতে ভূলে গিয়েছিলেন :-Y :-Y ,যার ফলাফল স্বরূপ পোস্টে সাইডবার,কমেন্ট এরিয়ার বারোটা বেজে গিয়েছিল 😥 । ঠিক করে দিয়েছি। আপনি কি নিশাচর ভাইয়ের বন্ধু নাকি? প্রথমবার উনি এই ভূল করে আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছিল।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ভুল বানানটা ‘ভূল’ লিখে আপনিও ভুল করলেন; এতে অন্যদেরও মাথা খারাপ হতে পারে। বানান পুলিশ অথবা বানান ড়্যাবের খপ্পড়ে পড়লে আপনার বারোটা বেজে যাবে কিন্তু। 😉 এদিক ওদিক দেখি তাদের সন্ধান পাওয়া যায় কি-না।
অভ্রর লেটেস্ট ভার্সনের সাথে “অভ্র স্পেল চেকার” যোগ হয়ে গেছে। এবার যত তাড়াতাড়ি আপগ্রেড করে নেয়া যায়…
আপনার ‘কষ্টকাল্পনিক ১’ এ মন্তব্য করেছিলাম- মজার একটা বিষয়। এখন শুধু পড়ে যাবো। আসল মন্তব্য হবে সমস্ত পর্বের শেষে।
আজ শেষ পর্ব দিলেন। ভেবে দেখলাম আর কোনো মন্তব্য নয়, ‘তাবিজের গুণ’-এ আপনার আবদার মোতাবেক মাজারের সেই আসরে নিত্য/নৃত্য উভয়ভাবেই সঙ্গী হওয়ার নিমন্ত্রণ দেয়াটাই সমীচীন। কারণ ভোল্টেজ ঢেউ এর ওঠানামার সাথে “প্রজাপতির পাখার ন্যায় বাহুদুখানি উঠানামা’ এর সরাসরি সম্পর্ক আছে।
@মাহফুজ,
:lotpot: :yes: