কিছুদিন আগের ঘটনা। সকালে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলাম। বাসা থেকে বেরিয়ে রিক্সায় চেপে বসলাম পরিবাগের উদ্দেশ্যে। যখন প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছি তখন হঠাৎ রিক্সাওয়ালা আমাকে বললেন, আপনি কি পড়ালেখা করেন? আমি বললাম, হ্যা। এরপর তিনি রাস্তার ধারে রিক্সা থামেলেন। বুঝলাম আমাকে তিনি কিছু বলতে চান। ধারণা করেছিলাম এখানে সাহায্য চাওয়া সংক্রান্ত কোন ব্যাপার থাকবে।
এরপরের কথোপকথন ছিল এরকমঃ
রিক্সাওয়ালাঃ বুঝলেন, আপনি খুব ভাগ্যবান। আপনার বাবা-মা আপনাকে অনেক ভালবাসে। (আমার বাবা যে মারা গেছে একথা না বলে আমি ভুরু কুচকে অপেক্ষা করতে লাগলাম জানতে যে সে আসলে কি বলতে চায়)
দেখি দেখি আপনার বাম হাত উপুড় করেন তো।
আমিঃ (আমি বা হাত উপুড় করে দেখালাম)
রিক্সাওয়ালাঃআপনি এক চামচ মধু আর আধ ছটাক কালিজিরা একসাথে নিয়ে এই হাতের উপরে প্রতিদিন সকালে একবার করে মাখবেন।
(আমি বুঝতে পারছিলাম যে ব্যাটা কিছু একটা বুজরুকির তালে আছ। তবুও তার কথা গুরুত্ব দিচ্ছি এমন মুখে তাকিয়ে রইলাম তার কথা শেষ পর্যন্ত শোনার জন্য)
রিক্সাওয়ালাঃ আপনি এক কাজ করবেন।দোকানে যাবেন গিয়ে এক দামে আধা কেজি আপেল কিনবেন। দামাদামি করবেননা।
আমিঃ(সিরিয়াস চেহারায়) এরপর?
রিক্সাওয়ালাঃ ওখান থেকে এরপর একটা আপেল খাবেন আর পরের শুক্রবার রোজা রাখবেন। তাহলে আপনার মনের সব আশা পূর্ণ হবে।ভাল রেজাল্ট করতে চান, ভাল বিয়ে চান সব আশা পূরণ হবে, সব।
আমিঃ(হাসি চেপে) হুমমম…
উনি এরপর রিক্সা চালিয়ে আমার গন্তব্যে নিয়ে গেলেন। আমি ভাড়া দেবার সময় তিনি বললেন
রিক্সাওয়ালাঃআর আপনি এখন আমাকে ১৭১ টাকা যে দেবেন তা কিন্তু খাস দিলে হতে হবে।
আমিঃ কি?(মোটামুটি বিস্ফোরিত চোখে)
রিক্সাওয়ালাঃ (একটুও বিচলিত না হয়ে) বললাম আপনি এখন আমাকে যে ১৭১ টাকা দিবেন সেটা কিন্তু খাস দিলে দিতে হবে। নইলে কিন্তু আপনার ইচ্ছে পূরণ হবেনা।
আমিঃ (ভাড়া দিয়ে নেমে গিয়ে) আমি এসব বিশ্বাস করিনা। মানিওনা।
রিক্সাওয়ালাঃ অসুবিধা নেই। এই টাকাটা যদি মসজিদে দেন তাহলেও হবে। নামাজ কালাম পড়বেন নিয়মিত। যা যা বললাম ওগুলো করবেন। আমার কথা স্মরণ করবেন। আমার নাম জাহেদুল ভাই।
(আমি সেই লোকের চোখের পাতি না ফেলে মিথ্যে কথা বলার ক্ষমতা দেখে অবাক না হয়ে পারিনি।)
যাহোক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেয়ে যখন আমার বন্ধুদের একথা বলছিলাম তখন এক বন্ধু আমাকে বলল, ‘দোস্ত পরের বার যখন ঐ রিক্সাওয়ালাকে দেখবি তখন তাকে বলবি,ভাই জানেন আপনাকে আপনার বাসার লোকজন অনেক ভালবাসে।
এরপর বলবি,দেখি আপনার হাত উপুড় করেন তো? হুমমমম… আপনি প্রতিদিন শুকনা মরিচ গুড়া এখানে ডলে ডলে মাখবেন। আর এখনি বাজারে গিয়ে এক দামে এক কেজি করলা কিনবেন। দামাদামি করা যাবেনা কিন্তু। এরপর বাজারে দাড়িয়েই ওই করলাগুলো কাঁচা খেয়ে ফেলবেন। আর এক কেজি শুকনা মরিচ কিনে ওগুলো পাটায় বেটে সারা গায়ে মেখে বসে থাকবেন প্রতি শুক্রবার। তাহলে আপনার সকল মনের আশা পূরণ হবে।
আর শোনেন, এখন আমি রিক্সা থেকে নামার পর আপনি যে আমার কাছ থেকে রিক্সা ভাড়াটা নিবেননা এটা কিন্তু আপনাকে খাঁস দিলে করতে হবে, বুঝেছেন? নইলে কিন্তু আপনার মনের আশা পূরণ হবেনা।’
সেই থেকে আমি জাহেদুল ভাইকে খুঁজছি।
@লীনা রহমান,
আফা, গরিব রিক্সালার শরিয়তি জ্ঞায়ান নিয়া অনেক হাসাহাসি কর্ছেন। আপ্নে রে তীব্র ধীক্কার জানাই! 😀
:-Y
জাহেদুল ভাইকে খুঁজে কি করবেন? কত জাহেদুল আপনি ঠিক করবেন? এইসব লোক প্রচুর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সার্বিকভাবে সাধারণ মানুষের মানষিকতা না বদলালে এইসব লোক থাকবেই।
জাহেদুল ভাই তো তাও গরীব রিক্সা ওয়ালা, ঢাকা শহরে বহু ‘প্রফেসর হাওলাদার’ টাইপের জ্যোতিষী ভং চং করে বিরাটা অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিনই পত্রিকাগুলোতে তাদের ঢাউস আকারের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। কেউ আবার ‘কম্পিউটারে ইদানিং আবার তারা কোয়ান্টাম পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু করেছেন…
যাক, জাহেদুল ভাইরে পাইলে খবর দিয়েন…
@অভিজিৎ,
কম্পিউটরের সাথে অক্টোপাস মেলানো যায় না?
@আদিল মাহমুদ,
যায় তো! অক্টোপাস + কোয়ান্টাম = অক্টোমাম।
আমেরিকার “সেলিব্রিটি” (?) অক্টোমাম -এর কথা জানেন তো? না জানলে সার্চ দিয়া দেখেন।
@অভিজিৎ, খবর তো পাবেনই জাহেদুল ভাইকে পেলে।
আর বুজরুকির কি আর শেষ আছে? সেদিন দেখলাম টি ভি সি স্কাই শপ মার্কা কোম্পানির বিজ্ঞাপনে বদনজর ঠেকানোর জন্য কি কি রুদ্রাক্ষের মালার বিজ্ঞাপন।সেখানে আবার দেখাচ্ছে পাশের বাড়ির মহিলার চোখ থেকে কেমন রশ্মি বের হচ্ছে আর মালা পরার পরই মানুষজন বদনজরপ্রুফ হয়ে যাচ্ছে। হায়রে কাহিনি :-Y
আর ইসলামিক টিভি খুললেই তো একদল হোমিও ডাক্তারের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে সারাদিন যারা দাবি করেন তারা ক্যান্সারেরও ঔষধ আবিস্কার করে ফেলেছেন। আমার মা তার কথা শুনে তার কাছে গিয়েছিলেন।কারন উনার হোমিওর উপর অগাধ বিশ্বাস। কিন্তু একগাদি টাকা ফি দিয়ে আর ঔষধ খেয়ে শেষে সেই “যাহাই লাউ তাহাই কদম্ব” অবস্থা।ক্যান্সারের এসব জাদরেল ডাক্তাররা এতদিন কোথায় ছিল কে জানে? তারা নাকি ১৫-২০ বছর ধরে চিকিৎসা করছেন অথচ আমারা ইসলামিক টিভি আসার আগে তাদের নামও জানলামনা।আর এখন তারা নোবেলের জন্য আবেদন করলেও তো দেশে একটা নোবেল আসত।তা না করে তারা ইসলামিক টিভিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে দিয়ে বিদেশ ফেরত (!) রোগীদের ক্যান্সার সারাচ্ছেন!!! :-Y
@লীনা রহমান,
আমাদের ফারুক ভাই কিন্তু হোমিওপ্যাথ বিশ্বাস করেন।
শুধু উনি কেন, এমন কি বিপ্লব পালও মনে হয়েছে অন্তত বেশ খানিকটা বিশ্বাস করেন।
@আদিল মাহমুদ,বিশ্বাস না করে উপায় আছে? আমি ও আমার পরিবারের সকলেই সুফলভোগী।
তবে একটা জিনিষ সত্য , হোমিওপ্যাথি সকল রোগের মহৌষধ নয়। Acute রোগ যেমন ডাইরিয়া, কলেরা , এপেনডিসাইটিস , নিউমোনিয়া ইত্যাদি , যেগুলোতে জীবণ সংশয়াপন্ন , সেগুলোর হোমিওপ্যাথ চিকিৎসা ঘুনাক্ষরেও করবেন না। সাধারনত chronic যে সকল রোগের যেমন আর্থ্রাইটিস, পাইলস্ , কান পাকা ইত্যাদি ও ভাইরাস জনিত (ফ্লু)বিভিন্ন রোগের সুনির্দিষ্ট এলোপ্যাথি চিকিৎসা নেই , সেগুলোতে হোমিওপ্যাথ খুবি ভাল ফল দেয়।
বছরের পর বছর যারা কাড়ি কাড়ি ওষুধ খাচ্ছেন , তারা ২ ফোটা হোমিওপ্যাথ ট্রাই করে দেখতে পারেন।
@ফারুক,
শুনে তো খুবই লোভ হচ্ছে রে ভাই। দূর্ভাগ্যক্রমে আপাতত আমার তেমন কোন জটিল রোগ নাই। 🙂
তবে এডভান্সড কোন হোমিওপ্যাথী নাই যা এখনই খেলে ভবিষ্যতে দুরারোগ্য ব্যাধিতে পড়ার আর কোনই সম্ভাবনা থাকবে না???
@আদিল মাহমুদ,
আছে, আলবৎ আছে। তবে এডভান্সড নয়, মাগনা ফ্রি ঔষধ। আজ থেকে সব কাজের আগে বিসমিল্লাহ বলবেন। ভবিষ্যতে দুরারোগ্য ব্যাধিতে পড়ার আর কুনু——ই সম্ভাবনা নাই। এর পরেও যদি কোনদিন রোগাক্রান্ত হন, মনে করবেন নিশ্চিত আপনার ঈমান ড্যামেজ হয়ে গেছে। ঈমান রিপেয়ার করার হোমিওপ্যাথিক ট্রিটমেন্ট হলো-
মিন শাররিল ওয়াছ ওয়াছিল খান্নাস
ঘুম থেকে উঠে দশবার আর ঘুমোবার সময় দশবার, ব্যস। খান্নাস শব্দটা বেশি সুবিধের নয়, তাই ভাবি সামনে থাকলে আস্তে মনে মনে পড়বেন।
আহারে, আমার দয়াল নবি এই দোয়া পড়ে যাদু-টোনা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
@আকাশ মালিক,
:laugh:
@আকাশ মালিক, মনে হচ্ছে নতুন আয়াত পড়লাম- বিসমিল্লাহ-র মত এডভান্সড মাগনা ঔষধ দুনিয়ায় আর নাই 🙂
@ফারুক,
আমিও এসকল ক্ষেত্রে আমার নিজের পরিবারের মানুষদের ভাল ফল পেতে দেখেছি। আমি আসলেই কনফিউজড হোমিওপ্যাথি নিয়ে।
@লীনা রহমান,আমি কনফিউজড নই। হোমিওপ্যাথি সত্যিই ভাল কাজ করে।
আমার দেখা হোমিওপ্যাথির বড় ভক্ত রোগী নকুল কুমার বিশ্বাস (সিরিয়াসলী বলছি)। উনি সেটা ঢুকিয়ে দিয়েছেন আমার মামার মধ্যে। মামা ঢুকিয়েছেন তার সহকর্মী বন্ধুকে, তাও আবার গলব্লাডারে পাথরের চিকিৎসা (অপেরাশন করানোর ভয়ে)। আগে জার্নি করলে বা অনেকক্ষণ বসে থাকলে নাকি পিঠের দিকে ব্যথা হত। এখন অনেক কম। কয়েববার পরীক্ষা করে মেপে দেখেছে পাথরের সাইজ নাকি আসলেই কমতে শুরু করেছে।
এই দুই জনকে গিনিপিগ বানিয়ে চিকিৎসা করেন নিউইয়র্কে কাজ নেই তো খই ভাজ টাইপের এক জন যিনি কিনা শুধু ইন্টারনেট ঘেটে ঘেটেই ঔষধ বাতলে দেন।
আমিও কনফিউজড!
@আদিল মাহমুদ, হোমিওপ্যাথ ব্যাপারটা নিয়ে আমিও শিওর না। এখানে যে ডাক্তারদের কথা বললাম তাদের কাজকর্মে আমি বেশ বিরক্ত। আপনিও হবেন যদি ইসলামিক টিভিতে এদের বিজ্ঞাপন দেখেন। আর আমার মামাও একজন হোমিও ডাক্তার। আমার মায়ের একবার নাকের মাংস বেড়ে গিয়েছিল, প্রচুর রক্ত পড়ত। অপারেশনের ভয়তে তিনি মামার কাছে যান আর মামার ঔষধে তিনি ভাল হন, আর ছোটবেলা থেকেই আমরা ছোটখাট বিষয়ে হোমিও ডাক্তারের উপর নির্ভরশীল। এ ব্যাপারে মুক্তমনার হোমিওপ্যাথি নিয়ে একটা লেখায় কমেন্ট করেছিলাম। অনেকে বলে মানুষের উইল পাওয়ারের কারণেই নাকি হোমিও আশ্রয়ী রোগী অনেক সময় আরোগ্য হয়, অথচ আমার মায়ের এত বড় একটা সমস্যা ঠিক হয়েছে নিছক উইল পাওয়ারের জোরে তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তাই হোমিওপ্যাথি নিয়ে আমি কনফিউজড!!
@লীনা রহমান,
হোমিওপ্যাথি বিষয়ে আমার খুব প্রিয় একটি ছোট্ট ভিডিও। Ben Goldacre বলছেন:
httpv://www.youtube.com/watch?v=TZiLsFaEzog
আরও একটি চমৎকার ভিডিও ছিলো রিচার্ড ডকিন্সের। দশ মিনিট দীর্ঘ। কেন জানি খুঁজে পাচ্ছি না ইউটিউবে 🙁
@অভিজিৎ, কম্পিউটারাইজ পদ্ধতিতে “হস্ত গণনা”ও শুরু হয়েছে…
আজকাল রিক্সাভাড়া যা বেড়েছে না!! আপনি প্রতিদিন আমাকে কম ভাড়ায় ভার্সিটি নিয়ে যাবেন আমি প্রতিদিনই আমার হাত দেখতে দিব আপনাকে
:laugh: :laugh: :laugh: :laugh: :hahahee: :hahahee: :hahahee: :laugh: :laugh: :laugh: :laugh:
@ মুক্তমনা এডমিন
লগ ইন এর জন্য রেজিঃ এর অপসন কোথায় আছে?????????? :-Y :-Y :-Y 😥 😥 😥 এতেও নাহলে :guli: :guli: :guli:
@surajit chwdhury, সদস্যপদের জন্য নিয়মিত মন্তব্য ও লেখা পোষ্ট করতে হবে, সরাসরি নিবন্ধন করার কোন অপশন নেই।
খুবই মজার অভিজ্ঞতা, বলতেই হয়।
:laugh:
রিক্সাওয়ালাও ভাবছে আপনাকে ঠকানো কঠিন কোন ব্যাপার না? বোঝা যাচ্ছে আপনি খুব সহজ সরল মানুষ। 🙂
@হোরাস, এজন্যই তো বাসায় আমাকে কেউ মানেনা। বাসায় আমাকে কেউ টিভির রিমোটও দেয়না, ছোট ভাইরাও না। 😥
তাই কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকি।এতে অবশ্য আমি খুবই খুশি 😀
এই যে এইরকম একটা কাহিনী বানিয়ে বানিয়ে বলে এখানে মুক্তমনা সাদাসিদা মানুষগুলোর সাথে বুজরুকি করার চেষ্টা করা হচ্ছে না তার নিশ্চয়তা কী?! 😛 :lotpot: :rotfl:
লেখাটা বেশ ভালো হয়েছে। :yes: সাধুবাদ রইলো। :clap2:
@নিঃসঙ্গ বায়স,
হোরাস আমাকে সহজ-সরল বলল। এই অপবাদ তো ঘোচাতে হবে। আমার বুদ্ধি কি কম নাকি?? 😉 😛
@নিঃসঙ্গ বায়স,
বিশেষণ অফ দ্যা ব্লগ ইতিহাস :lotpot:
ভাবছি একটা রিক্সা কিনে চালানো শুরু করে দিব। মাইয়া মানুষের হাত উল্টায় পালটায় দেখার চান্স কে মিস করে???
:lotpot: :lotpot:
@অভীক, আসলেই শুরু করে দেন। আজকাল রিক্সাভাড়া যা বেড়েছে না!! আপনি প্রতিদিন আমাকে কম ভাড়ায় ভার্সিটি নিয়ে যাবেন আমি প্রতিদিনই আমার হাত দেখতে দিব আপনাকে 😛
@লীনা রহমান,
ভাড়ার কথা বলে আমাকে আর ছোট করবেন না। আপনি আমাকে হাত দেখানোর কথা বলেছেন, আমি রিক্সা নয় গাড়িতেই আপনাকে নিয়মিত লিফট দিব।
@অভীক, থাঙ্কু থাঙ্কু। দাড়ান বাসার ঠিকানা আকাশের ঠিকানায় পাঠায়া দিলাম। পেলে আওয়াজ দিয়েন। টাইমলি না আসলে কিন্তু চাকরি নট 😉
বেশ মজার তো !
ঢাকা শহরে গলায় বিভিন্ন রকমের মালা পরা ভিক্ষুকবেশি লোক রয়েছে যারা বলে, ১০টা টাকা দে । তাড়াতাড়ি দে। নইলে তোর অমঙ্গল হবে।
তাদের টাকা দিলে মঙ্গল হবার চেয়ে মনস্তাত্ত্বিকভাবে ঘায়েল করে ফেলে অমঙ্গলের কথা বলে।
@গীতা দাস, আরো একদল আছে যারা প্রথমে পাঁচ টাকা চায়। ভাংতি নাই বললে বলে ভাংতি করে দিবে এরপর কেউ ১০০ বা ৫০ টাকা দিলে পুরোটাই রেখে দেয়। বলে মনের আশা পূরণ হবে, টাকা না দিলে ক্ষতি হবে,একটা ঝুড়ি দেখিয়ে বলে তাতে সাপ আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এক লোক তো আমার কাছ থেকে তার ৯ এ পড়ুয়া ছেলের পড়ার খরচের জন্য বেশি করে টাকা নিত। উনি যখন ১ বছর চলে যাবার পরও ৯ এ পড়া ছেলের জন্য আমার কাছে টাকা চাইল তখনই তাকে টাকা বেশি দেয়া বন্ধ করে দিলা। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়ই এমন ভুয়া লোক দেখা যায়, তবে সত্যিকারের অভাবীরাও আসে। তখন সাহায্য করার চেষ্টা করি যথাসাধ্য।
:hahahee: :hahahee:
পরীবাগে আগে এক বুজুর্গ পীর সাহেব ছিলেন, এককালে তার অনেক মুরিদ ছিলেন। তার আশে পাশেরই ঘটনা নাকি??
ঐ এলাকাতেই আমার শৈশব কৈশোর কেটেছে।
আমাদের দেশের শিক্ষিত মানুষও এখনো কতটা কুসংস্কারচ্ছন্ন তা নানান টিভি চ্যানেলের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পাঠানো নানান চিঠি পত্র শুনলে বোঝা যায়। কারো কাছে শুনলে হয়ত সেসবে শিক্ষনীয় অনেক কিছুই থাকবে, আর আমার মত কম ঈমানের লোকে সেসব অনুষ্ঠান বিনোদনের উপকরন হিসেবে হয়ত দেখে 🙂 ।
@আদিল মাহমুদ,
নাহ নাহ,পরিবাগে না। আমার নতুন সংসার তখন শান্তিনগরে থাকি। এমন আরো কতো যে কিচ্ছা আছে কি আর বলি। 🙂
@আদিল মাহমুদ, সে এমনি এক রিক্সাওয়ালা ছিল। পরিবাগের কোন পীরের কথা জানিনা
@লীনা রহমান,
পরিবাগ মাজারের পীর সাহেব একসময় (মনে হয় পাকিস্তান আমলে) খুব বিখ্যাত ছিলেন। জাহানারা ইমাম রুমি ধরা পড়ার পর তাকে ছাড়ানোর আশায় এই পীর সাহেবের দরগাতেও ধ্বর্না দিয়েছিলেন। একাত্তুরের দিনগুলিতে পাবেন।
অন্য ব্লগে গেলে নানান কিসিমের লোকের দেখা পাওয়া যায়। কিছুদিন আগে একজনের দেখা পেয়েছিলাম যিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে বরিশালের কোন পীর যখন খুশী বৃষ্টি নামাতে পারেন। ঘটনার নাকি তিনি ছাড়াও হাজার হাজার লোক স্বাক্ষী আছে। ওনার কনফিডেন্স লেভেল দেখে আমিও ৯৫% বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম 🙂 ।
@আদিল মাহমুদ,
একাত্তরের দিনগুলি পড়েছি। মায়ের কষ্ট এত মন ছুয়ে গেছিল যে কি বলব। প্রথমবার যখন রুমি হুট করে বাড়ি আসে তখন আমঅ এত খুশি হয়েছিলাম যে পড়ে কেঁদে ফেলেছিলাম, রুমি হারিয়ে যাবার পর, বিজয়ের পর তার আর না ফিরে আসা এসবই এত মড়ড়মস্পর্শীভাবে বর্ণনা করা হয়েছিল যে এই বই পড়ে খুশির জায়গাগুলোতেও কেঁদেছি দুঃখের জায়গাগুলোতেও। এখনো রুমি, জাহানারা ইমাম, আজাদের মা এদের কথা ভাবলে চোখে পানি চলে আসে। দারুন একটা বই।
আর পীরের কাছে যাওয়ার ঘটনায় আরো কষ্ট লেগেছে, কারণ মানুষ ডুবে যাবার সময় যা হাতের কাছে পায় তাই আকড়ে ধরে। আমার বাবাকে দেখে সে প্রমাণ পেয়েছি
@লীনা রহমান,
খুবই সত্য কথা। আমার বাবাও ধার্মিক হলেও ঝাড়ফুঁক বা পীর ফকির জাতীয় যেকোন গায়েবী ব্যাপার স্যাপার একেবারেই বিশ্বাস করতেন না। তিনিও দূরারোগ্য ব্যাধীতে পড়ে একবার বাসায় এক পীর সাহেবের তেল পড়া নিয়েছিলেন।
জাহানারা ইমামের মতই আরেকজন কম পরিচিতা মহিলা আছেন বেগম মুশতারি শফি, ৭১ এর প্রথমেই যিনি স্বামী ও ভাই হারান। যার বাসা ছিল স্বাধীন বাংলা বেতারের সূতিকাগার। ওনার বইতে ৭১ সালে মীর শরাইতে পীরের কেরামতি আছে। পীরের শক্তিতে পাক আর্মি সেখানকার মাজারে প্রবেশ করতে পারেনি বলে উনি মোটামুটিভাবে বিশ্বাস করেন। এ অলৌকিক ঘটনা নাকি অনেকেই দেখেছে। পাক আর্মির সদস্যরা একটি নির্দিষ্ট লাইনের পর অদৃশ্য দেওয়ালে নাকি বাড়ি খাচ্ছিল। এরপরেও যারা চেষ্টা চালাচ্ছিল তারা নাকি বমি করতে করতে খাবি খাচ্ছিল।
দারুন হয়েছে টপিকটা। আপনার বন্ধুর কথাগুলোতে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেল। আশা করি আপনি জাহেদ ভাইকে খুঁজে পাবেন। কি হল সেটা নিয়ে মুক্তমনায় আরও একখান পোস্ট দিতে পারবেন। 😀
@পাপিয়া চৌধুরী, সেই আশাতেই আছি। :rotfl:
@লীনা রহমান,
আচ্ছা সত্যিই কি ভাড়া ১৭১ টাকা ছিল? ফিরতে আরো ১৭১? ডেইলি এত টাকা খরছ করে কী হবেন? শেষ ঠিকানা তো জাহান্নাম।
আল্লায় মাফ করতো, এ রকম বুজরুকি! জীবনে অনেক করেছি, তবে কসম খোদার কারো কাছ থেকে কোনদিন একটা পয়সাও নেই নাই, বরং এ জন্যে নিজের পকেটের টাকা খরচ করেছি।
আমার কাছে এই কথাটা দারুণ লেগেছে।
@আকাশ মালিক, ভাড়া ছিল ১০ টাকা। আপনি কি আমাকে বিল গেটসের দুঃসম্পর্কের আত্মীয় ভেবেছেন??
উনি কোন হিসাবে ১৭১ টাকা বলল উনার খোদাই জানেন। আর আমি আসলেই তাকে খুঁজছি। পেলে আপনাদেরকে জানাবো করলা আর মরিচ থেরাপি কেমন চলছে 😉
@লীনা রহমান,
চমৎকার অভিজ্ঞতা। আর একটা আমার নিজের মজার ঘটনা বলি। অনেক আগে একজন লম্বা হুজুর মার্কা লোক এসে সব বাড়ি বাড়ি বলে গেল” আপনাদের যা কিছু গামলা,ডেকচি,পাতিল,বা প্লেট আছে দেন, চেনা জাগার নাম জানিয়ে বলল যে ওরশ হচ্ছে তবরুক পাবেন”। তো অনেকেই দিল যার যা ছিল। লোকটা বলেছিল দুপুরের মাঝে সে এবং সাথের লোকজন মিলে বিরিয়ানি পৌঁছে দেবে।এইটা খেলে অনেক সওয়াব হবে। সবাই সওয়াবের জন্য দিল যা পেল হাতের কাছে।
দুপুর গড়ায়,বিকেল গড়ায়,বিরিয়ানি আর আসেনা। পাশের বাড়ির খালাম্মা কে জিজ্ঞেস করলাম,
খালাম্মা
আপনাদের বিরিয়ানি কই?
তিনি বললেন, তাই তো
সেই বিরিয়ানি তো আর আসেই নি। আরো সবার হাড়ি পাতিল বাসন যা যা ছিল সব গেলো।
আমি মনে মনে মুচকি হাসলাম। :guli:
আমি তো আরও ভাবলাম ছিনতাইয়ের ঘটনা। রিকশা হঠাত করে বিনা নোটিশে রাস্তার পাশে থেমে গেলে আমি সাধারণত লাফ দিয়ে দৌড় মারার জন্য প্রস্তুতি শুরু করি।
@পৃথিবী, আমিও সতর্ক থাকি। কিন্তু উনি যেখানে রিক্সা থামিয়েছিল সেখানে অনেক মানুষ ছিল।তাই ভয় পাইনি
:lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot:
সত্যিই আমাদের দেশে যে কত কোটি টাইপের বুজরুকি আছে যাকে বলে অসম্ভবের বুজরুকির দেশ।
ভালো থাকবেন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন, আমার বাবা দেশের বাইরে থাকতেন। একবার অনেকদিন পর্যন্ত আব্বুর কোন খোজ পাওয়া যাচ্ছিলনা।তখন এক বেদে মহিলা আমার আম্মুকে আমার বাবার সব বর্নণা বলে তার কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়ে গিয়েছিল। সে এটাও বলেছিল আব্বু নাকি ওখানে গিয়ে আরেকটা বিয়ে করেছে এইসব হাবিজাবি। সে বলেছিল বিছানার নিচে ৫০০০ টাকা রাখলে নাকি ৩ দিন পর তা ৫০০০০ টাকা হয়ে যাবে আর আব্বুর উপরে ওই শয়তানি মহিলার সব জাদুটোনা কেঁটে যাবে। আম্মু তাই শুনে বিশ্বাস করে তাকে টাকা দিয়েছিল। :-Y
আমার এই ধরণের বুজরুকির সাথে পরিচয় হয় আমার বাবার অসুখের সময়।উনি ৫ বছর রোগে ভুগে মারা যান।সঠিক রোগটি ধরা যাচ্ছিলনা বলে অবশেষে কবিরাজ ও পীর ফকিরদের আশ্রয় নেয়া হয়েছিল। এক মহিলা তো দাবি করে বসেছিল তার কাছে নাকি প্রতি রাতে ফেরেস্তা আসে। তাকে যদি ৫ লক্ষ টাকা দেয়া হয় তাহলে সে আব্বুর অসুখ সারিয়ে দেবে ফেরেস্তাকে বলে, কিন্তু টাকা চিকিৎসা শুরু করার আগে দিতে হবে। ফেরেস্তারাও ঘুষ খেয়ে আল্লাহর দেয়া অসুখ সারিয়ে দিতে পারে!!!
আরেক বুড়ি (যার নাম ছালা পরা বুড়ি, যে নাকি মহিলা মানুষ হয়েও সিগারেট খেতেন আর রোগিদেরকে কারণে অকারণে লাথি দিতেন রোগের অসুখ হিসেবে) তিনিও অনেক টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন। এক কবিরাজের বুজরুকিতে আব্বু এতই ভুলেছিলান যে তার মনের খায়েস পূরণের জন্য তাকে ঢাকা থেকে যশোরে প্লেনে করে পাঠিয়েছিলেন। কত টাকা যে এভাবে খরচ করেছিলেন আমার বাবা সুস্থ হবার জন্য। এখন ভাবলে কষ্ট লাগে, ছোট ছিলাম বলে এর বিপক্ষে প্রতিবাদ করা হয়ে ওঠেনি। আর বাঁচার আশায় যে বাবা এসব কিছুই বিশ্বাস করতেননা তিনি এই ভন্ডদের কথামত কি পরিমান টাকাই না নষ্ট করেছেন। :-Y
আমার এত অভিজ্ঞতা আছে যে সব বলতে গেলে বিশাল একটা পোস্ট দাড়িয়ে যাবে।
লীনা রহমান,
ভবিষ্যৎতে আপনার অভিজ্ঞতা গুলি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আমন্ত্রন জানাচ্ছি। :rose:
@লীনা রহমান, আমার বাবাও এখন শয্যাসায়ী। সারা দিন অফিস করে এসে রাতের বেলায় ব্রেইন স্ট্রোক করে সুস্থ মানুষটা একদম অন্যরকম হয়ে গেছেন। অনেক কাছের আত্মীয়রা বলেছেন আমার বাবা একজন নাস্তিক তাই তার এরকম করুন পরিনতি।অনেক হুযুর, পীর আর পড়া পানির সন্ধান পাচ্ছি অযাচিত ভাবে। কিন্তু এখনো আমরা তিন বোন আর আমার আম্মু এইসব ফালতু কথা এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিএ বের করে দিএ শুধু মাত্র ভাল ডাক্তারের সন্ধানদাতার কথাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি।
@সাধারণ মেয়ে, এভাবেই মন শক্ত রাখুন। আপনার বাবা ভাল হয়ে উঠুন এই কামনা রইল। মানুষের কাজই হল অন্যের দুঃসময়ে তাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করা। কারো স্বামী মারা গেলে বৌটির প্রতি সহানুভূতি না দেখিয়ে বরং তাকে দোষারোপ করে যে সে তার স্বামীকে খেয়েছে। আমার মা আর বড় খালার ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা ঘটেছে!
@সাধারণ মেয়ে,
আর শত শত আস্তিকেরা বুঝি অসুস্থ হয় না? পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ আস্তিক এবং দরিদ্র। তাদের ব্যাপারে তো আল্লাহর বিশেষ মনযোগ আছে বলে মনে হয় না।
মানুষের অসুস্থতা, অসহায়ত্ব নিয়ে ধার্মিকদের এসব ভয়-ভীতি প্রদর্শনমূলক আচরণ খুবই common একটা ব্যাপার। বিপদগ্রস্ত মানুষকে ভয় পাইয়ে তারা ধর্মের দাস বানিয়ে রাখতে চায়।
এসব মানুষ নিজেরা অসুস্থ হলে প্রথমে ডাক্তারের কাছে যাবে, তারপর সুস্থ হলে বলবে, “আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী!” গর্ব করে বলবে তার নিজের ধার্মিকতার কারনে সে সুস্থ হয়েছে। ঘরে মোল্লা ডেকে এনে খাওয়াবে। কোন জায়গায় ঘুণাক্ষরেও ডাক্তারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবে না, বিজ্ঞানের প্রতি তো প্রশ্নই ওঠে না।
আমি এমন লোকও দেখেছি যারা অসুস্থ হয়ে মাদ্রাজে গিয়ে সুস্থ হয়ে ফেরার পর সেখানকার মানুষকে বিধর্মীদের দেওয়ার উপযুক্ত(!) সব ভাষায় গালাগালি করতে।
যা হোক, মন শক্ত রাখবেন। আপনার বাবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। ভালো থাকবেন।
@তুহিন তালুকদার, :yes: :yes: :yes:
@সাধারণ মেয়ে,
For receiving a medical advice you may come to Kolkata and meet Dr. Manojit Mookherjee , MD (Medicine). Most probably he is one of the best physicians in India and kind hearted. He is respected world wide. You can e mail your father’s papers to [email protected] for primary advice. Being a regular reader of Mukto-mona I would be happy to help you.
Hope, your father will be in good health soon.
Id Mubarak,
Regards,
Bhaskar
@লীনা রহমান,
স হানুভূতি নিবেন, আর ঐসব বুজরুকিদের কাছ হতে সাবধান। জীবনের আসল স্বার্থকতাকে খুজেঁ পেতে আমাদের সত্যের সংগ্রামে সামিল হতে হবে। তাই শত বাধাঁ-বিপত্তির মাঝে ও এগিয়ে যেতে হবে……সোনার হরিণের খুজেঁ। শুভ কামনা রইল। :yes:
@জয়েন্টু, আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল। ধন্যবাদ।
হাহাহাহা।
বেশ মজার কাহিনী তো!
তবে আপনার বন্ধুর কথাগুলোই বেশি ভালো লাগল। পরামর্শটা কাজে লাগাতে পারেন। 😀
@সাইফুল ইসলাম, বন্ধুর পরামর্শটা এত জোস দেখেই তো লেখাটা দিলাম। আমি আসলেই জাহেদুল ভাইকে খুজি তখন থেকে 😛
@লীনা রহমান, অনেক বৎসর (২০০১) আগে আমারও এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছিল। :rotfl:
:lotpot: :lotpot: :lotpot:
:lotpot: :lotpot: এই অংশটা জটিল হইসে!
@নিটোল, আমিও আমার বন্ধুর বুদ্ধি শুনে হা হা প গে :rotfl: