লিখেছেনঃ নিঃসঙ্গ বায়স

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে যে ক্ষেত্রটি এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সেটি হলো আমাদের পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থাৎ গার্মেন্টস সেক্টর। বর্তমানে বাংলাদেশে এই খাতটি থেকে বাংলাদেশ সরকার বছরে সবচেয়ে বেশি (৭৬%) বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। একই সাথে দেশের নিম্নবিত্ত জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ যুক্ত এই শিল্পটির সাথে। সবচেয়ে বেশি মেয়েরা। তাই এই সেক্টরটি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও এর জনগনের আশা আকাঙ্ক্ষা অনেকদিনের। আর এইপোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানসমূহের মালিকদের সবচেয়ে বড় সংঘবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে BGMEA (Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association) যা মূলত একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রায় ৩৫০০ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান এই BGMEA এর সাথে যুক্ত। BGMEA মূলত বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নতিকল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করে থাকে সম্মিলিতভাবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মালিক পক্ষের সংঘবদ্ধ প্লাটফর্ম হওয়ার কারণে, পোশাক শিল্পে মালিক-শ্রমিক অসন্তোষ যখন তুঙ্গে উঠে, শ্রমিকরা যখন তাদের ন্যায্য দাবীতে আওয়াজ তোলে সমস্বরে, তখন এই প্রতিষ্ঠানটি সবসময়ই মালিক পক্ষের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে। এই কিছুদিন আগের ঘটনাগুলো তারই জ্বলন্ত প্রমাণ।

বিশ্বে এই মুহূর্তে সবচেয়ে সস্তা শ্রম আমাদের এই বাংলাদেশে। পোশাক শ্রমিকদের ৫০০০ টাকার দাবীতে স্বতঃস্ফূর্ত যৌক্তিক আন্দোলনকে কাচকলা দেখিয়ে বর্তমান সরকার BGMEA ও কথিত শ্রমিক সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করে মজুরি নতুনভাবে ১৬৬২ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা ঠিক করলেও অন্যান্য যে কোনো দেশের তুলনায় এখনো তা অপ্রতুল। বাংলাদেশে যখন পোশাক খাতের শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি ১৬৬২ থেকে ৫০০০ টাকা করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে, ঠিক সেই সময়ে কম্বোডিয়ার পোশাক শ্রমিকরা তাদের মজুরি ৫৪ ডলার থেকে ৬০ ডলারে নেওয়ার জন্য বিক্ষোভ করছে। অথচ সম্পদ, অবকাঠামো এবং বিনিয়োগ সক্ষমতা- কোন বিচারেই কম্বোডিয়ার অবস্থা বাংলাদেশের চাইতে সুবিধার না। যদিও বলা হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন কাঠামোয় মজুরি শতকরা গড়ে ৮০ ভাগ বাড়িয়ে ৩০০০ টাকা করা হয়েছে, কিন্তু এই মজুরির এই ৮০ ভাগ বৃদ্ধি আসলে নিচের দিকের কয়েকটি পদের জন্যই শুধু কার্যকর। ন্যূনতম মজুরি বাংলাদেশি টাকা ৩০০০ টাকা হলে পরে ডলারের হিসাবে তা দাড়িয়েছে ৪০ ডলার- অথচ কম্বোডিয়ার শ্রমিকরা এখনই পাচ্ছে ৫৪ ডলার।

এছাড়াও, ২০০৬ সালের পরে এই প্রথম বাংলাদেশে শ্রমিকের নূন্যতম মজুরি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হল। যদিও মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি দুইটাই বাড়ছে প্রতি বছর। দ্রব্যমূল্য থেমে থাকছে না। কিন্তু মজুরি একই জায়গায় থেমে আছে। দীর্ঘ দিনের শ্রমিক আন্দোলনে মালিকপক্ষ আন্তর্জাতিক বাজারে মন্দার কথা বলেছেন অনেকবার। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে এসব সমস্যা প্রায়ই মোকাবিলা করতে হয় প্রতিযোগী চীনকেও। তাহলে প্রশ্ন এসে দাঁড়ায়- চীনে পোশাক শ্রমিকের মজুরির কি অবস্থা? ইকনমিস্টের এই পরিসংখ্যানগত তথ্যানুসন্ধানের শিরোনাম হচ্ছে “গেটিং ডিয়ারার”। এই পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে ২০০৪ থেকে ২০০৯ এর মধ্যে চীনে মজুরি বেড়েছে ৬ বার। যদিও এটা একটা প্রদেশের মজুরির খতিয়ান এবং শুধু পোশাক খাত না বরং সব খাতের গড় মজুরি। কিন্তু দেশটাতে সব খাতেই মজুরি গড়-পরতা একই হারে বাড়ে। আর চনে গার্মেন্টস শ্রমিকের এখনকার ন্যূনতম মজুরি হল মাসে ৩০০ ডলার, অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ১.৪৪ ডলার। এছাড়াও তৈরি-পোশাক খাত আছে এমন কয়েকটা দেশের ন্যূনতম মজুরি হচ্ছেঃ ভিয়েতনাম ৯২ ডলার (ঘণ্টায় ০.৪৪ ডলার), শ্রীলঙ্কা ৯২ ডলার (ঘণ্টায় ০.৪৪ ডলার), তুরস্কে ৫১০ ডলার (ঘণ্টায় ২.৪৪ ডলার), মেক্সিকো ৪৫৩ ডলার (ঘণ্টায় ২.১৭ ডলার), পাকিস্তান ১১৬ ডলার (ঘণ্টায় ০.৫৬ ডলার)। আর বাংলাদেশে এ মজুরি হচ্ছে ৪২ ডলার (ঘণ্টায় ০.২০ ডলার)। ইনডিয়ায় শ্রমিক মজুরি বাংলাদেশের চেয়ে তিন গুণ বেশি।

এখন শুরু থেকেই এই ন্যূনতম মজুরির দাবীর বিপক্ষে পোশাক মালিকরা প্রায়শই একটি বক্তব্য/ প্রোপাগান্ডাকে সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। সেটি হলো-

ন্যুনতম মজুরির দাবী পূরণের কিছু অর্থনৈতিক সমস্যা আছে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের যে তুলনামূলক সুবিধা রয়েছে সেটার উৎস্য কিন্তু স্বল্পমজুরির শ্রমিক।

একটু খোঁজ নিলেই আপনারা জানতে পারবেন যে প্রকৃতপক্ষে এটি একটি কৃত্রিম সংকট/সমস্যা ও বক্তব্যটিও সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা। যখন এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়, আমি ব্যক্তিগতভাবে ২-১ জন গার্মেন্টস মালিকের সাথে কথা বলেছি। তাদের বক্তব্য অন্য জায়গায়। তারা যেটা বলেছেন- এককভাবে কোনো মালিকের পক্ষে পোশাক শ্রমিকের মজুরি চাইলেও বাড়ানো সম্ভব না। এতে তা সম্পূর্ণ ব্যবসা মার খাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কেননা, দেশের ভিতর ও বাইরের পোশাক আমদানীকারকরা যেখানে কম খরচে তার চাহিদা অনুযায়ী মাল পাবে, সেখানেই অর্ডার দিবে। কিন্তু শ্রমিকের বেতন বাড়ালে স্বাভাবিকভাবেই সেটা তার উৎপাদিত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলে ক্রেতা তার কাছ থেকে তখন অতিরিক্ত মূল্যে সেই পন্য কিনতে চায় না। কিন্তু সকল মালিক পক্ষ যদি একই সাথে তাদের শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি করে, তাহলে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সকলের পন্যের ক্ষেত্রেই ঘটবে। ফলে যেই যার কাছে থেকেই কিনুক তাকে ওই অতিরিক্ত (নতুন)মূল্যেই কিনতে হবে। তথাপিও আন্তর্জাতিকভাবে বাজার হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার কোনই সম্ভাবনা নেই। কেননা ন্যূনতম মজুরি ৫০০০ টাকা, এমনকি ৭০০০ টাকা করলেও আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের তৈরি পোশাকের মূল্য যেটুকু বাড়তো, তাও অন্যান্য দেশের তৈরি পোশাক থেকে অনেক কম হত। একইসাথে গুণগত মানের দিক দিয়েও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের যথেষ্ট কদর রয়েছে।
এছাড়াও “চিন্তা” পত্রিকার একটি পরিসংখ্যানভিত্তিক লেখার কিছু অংশ তুলে দিচ্ছি আপনার বোঝার সুবিধার্থে-

“মজুরি পাঁচ হাজার টাকা হলে কি বন্ধ হবে?

পাঁচ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হলে বড়জোর বাংলাদেশের পোশাক খাতের অঘোষিত কিছু মধ্যস্বত্বভোগীর বিলোপ ঘটতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে সেই সমস্ত মালিক এবং বায়িং হাউস যারা সাব কন্ট্রাক্টে ছোট কারখানার কাছ থেকে কম দামে মাল তৈরি করিয়ে কিনে নেয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার দরে বায়ারদের কাছে বিক্রি করে থাকে। এ ধরনের ব্যবসা আর টিকবে না। বরং এ কারখানাগুলা বড় কারখানার সাথে একীভূত হয়ে ব্যবসা করতে বাধ্য হবে। সুতরাং এই মধ্যস্বত্বভোগীদের ব্যবসা বা অল্প পুঁজির কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা–শিল্পের স্বাভাবিক নিয়মের দিক থেকে এটা কোন আশঙ্কাই না। একটা খাতের মধ্যকার বিন্যাসের এমন অদল বদল খুব স্বাভাবিক। তার সাথে পুরা খাতের সামগ্রিক লাভ ক্ষতির আশঙ্কার কোন ভিত্তি নাই।
তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজারের নানা দিক নিয়মিত পরিবর্তন হয়। চাহিদা, যোগান, প্রতিযোগিতা–সবকিছু। বাংলাদেশ যখন এই বাজারে ঢুকল সেই সত্তরের দশকে, তখন এই বাজারে যারা প্রতিযোগী ছিল তাদের অনেকেই এখন এ খাতে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। তারা এখন আর এ ব্যবসাতে নাই–যেমন তুরস্ক। চীন একতরফাভাবে রফতানিমুখি পোশাক উৎপাদন করায় তার স্থানীয় পোশাকের বাজার এখন চাহিদা মেটাচ্ছে আমদানি করে। আর সেই স্থানীয় বাজারে বাংলাদেশ ঢোকার চেষ্টা করছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে চীন যে দামে পোশাক বেচে তার চেয়ে কম দামে চীনের স্থানীয় বাজার পোশাক আমদানি করে। এবং বাংলাদেশের রফতানি পোশাকের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে চীনের পোশাকের দামের চেয়ে কম, অর্থাৎ চীনের স্থানীয় বাজার যে দামে পোশাক আমদানি করে সেই দামের কাছাকাছি। ফলে বাংলাদেশের জন্য চীনের স্থানীয় বাজার দখল নেয়া কোন কঠিন কাজ না। তাছাড়া তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজার ক্রমশ আয়তনে (বিজনেস ভলিউম) বাড়ছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান হচ্ছে; ২০০৫ সালেই দেশটার চাহিদা তার আগের ৩ বছরের চাইতে শতকরা ২০০ ভাগ বেড়েছে। একই সাথে তাদের নিজেদের স্থানীয় বাজার থেকে পোশাক সরবরাহের সক্ষমতা শতকরা ৩২ ভাগ কমে গেছে। এর বাইরেও বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় নতুন বাজার হচ্ছে; অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়া। কাজেই সামনের দিকে বাংলাদেশের তৈরি-পোশাক খাতের ব্যবসায়ের আয়তন ক্রমশ বাড়বে, কমবে না। এছাড়া গত দশকজুড়ে বাংলাদেশেই পোশাক খাতের অনেকগুলা পেছনে থাকা সংযোগ খাত (ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ) তৈরি হওয়ায় ঝুঁকি অনেক কমে গেছে। কাঁচামালসহ অন্যান্য সমর্থনের জন্য আমদানি নির্ভরতা কমছে। আমদানি নির্ভরতা কমায় এবং আমদানির ক্ষেত্রে জাহাজ ও বন্দর প্রযুক্তির উন্নতি ঘটায় ‘অপরচুনিটি কস্ট’ কমে। ফলে উৎপাদনশীলতা বাড়ার সাথে সাথে বাংলাদেশের রফতানিমুখি পোশাক খাতের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়ছে। এ অবস্থায়ও যদি শ্রমিকদের যা না হলেই নয় মার্কা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় মজুরি–ন্যূনতম মজুরি ৫০০০ টাকা করা হয় তাহলে পোশাক খাতে এর কি প্রভাব পড়তে পারে? এর ফলে কি তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে বাংলাদেশ?
এমন আশঙ্কার সমর্থনে কোন পরিস্থিতি এখন বিদ্যমান নাই। কিম্বা সুদূর ভবিষ্যতে অমনতরো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার মত কোন শর্তও বিদ্যমান নাই। কারণ, প্রথমত; এ প্রতিবেদনে অনেকগুলা প্রতিযোগী দেশের উদাহরণ থেকে দেখতে পাচ্ছি এর চাইতে অনেক বেশি মজুরি দিয়ে দিব্যি তাদের ব্যবসা চলছে। দ্বিতীয়ত; বাংলাদেশ যদি তৈরি পোশাকের দাম অনেকটা বাড়িয়েও দেয়, তারপরও আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতাদের হাতে খুব কমই বিকল্প আছে। কারণ অনেক দেশই গত দুই দশকে রফতানি পোশাক খাত গুটিয়ে নিয়েছে। কেউ আরো উন্নত ও টেকসই খাতে যাওয়ার জন্য, আবার অনেকে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে। অন্যদিকে অনেক প্রতিযোগী দেশ আবার ইতিমধ্যে তার উৎপাদন সক্ষমতার চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছে। যেমন কম্বোডিয়া, ওই দেশটার যে পরিমাণ শ্রমশক্তি ও সম্পদ-মূলধন ইত্যাদি আছে, তাতে করে এই খাতে দেশটা তার ব্যবসায়ের বর্তমান আয়তন আর বাড়াতে পারবে না। অন্যান্য খাতের চেয়ে তৈরি-পোশাক খাতের উপযোগিতার দিক থেকেও তা সম্ভব না কম্বোডিয়ার পক্ষে। কোন দেশ চাইলেই তার পুরা ভূখ- জুড়ে নিশ্চয়ই পোশাক কারখানা বানিয়ে ফেলতে পারে না, সেই অবকাঠামো গড়ে তোলা অসম্ভব। তাই ক্রেতাদের অবশ্যই বাংলাদেশের কাছে আসতে হবে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের ভাগ কমছে না সুদূর ভবিষ্যতে। তাছাড়া প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারানোর যে আশঙ্কার কথা বলা হয়–তার প্রধান কারণ হল বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারকদের মুসাবিদার যোগ্যতার অভাব। ভিয়েতনামের মত দেশগুলার সাথে আমাদের প্রতিযোগিতা শুধু পণ্যমূল্যেই না। ইওরোপ আমেরিকার ক্রেতারা যেহেতু তৈরি পোশাক খাতকে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ছড়িয়ে রেখেছে তাই বিভিন্ন দেশের পণ্য বিভিন্ন হারে শুল্ক দিয়ে দামটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর ইওরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে স্থিতিশীল (নরমালাইজ) করা হয়। মুসাবিদা হওয়া দরকার ওই শুল্ক হার কমিয়ে শ্রমিকের শ্রমের ন্যায্য মূল্য পরিশোধ করা নিয়ে। তাছাড়া এ ধরনের প্রতিযোগিতা দেশের ভেতরের বাজারেও থাকে, আছে। বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারে কি দাম নিয়ে প্রতিযোগিতা নাই? আছে। এক কারখানা মালিক কি আরেক মালিকের চাইতে কম দামে পণ্য বিক্রির প্রস্তাব করেন না ক্রেতাদের কাছে? করেন। রফতানির বাজারে কি কোন সিন্ডিকেট নাই? আছে। তারপরও বাজার অর্থনীতি চালু আছে? বর্তমান পুঁজিতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতি এভাবেই চালু থাকে। যেসব দেশের উদাহরণ আগে দেয়া হয়েছে তারা নিজেদের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে না, বরং ক্রেতাদের সাথে দামের মুসাবিদায় জয়ী হয়ে সক্ষমতা ধরে রাখছে।
বাংলাদেশের যেটা বাড়াতে হবে তা হচ্ছে তদবির মানে লবিং এবং মুসাবিদার দক্ষতা মানে নেগোশিয়েশন স্কিল। এমন কি যদি দরকষাকষি করে দাম বাড়ানো সম্ভব না হয়, তাহলে শুধু মালিকের মুনাফার অংশটাই কিছু কমবে। ব্যবসায়ের আয়তন বাড়িয়ে মানে নতুন বাজার নিশ্চিত করে মুনাফার এ কমতিও ঠেকানো খুব সম্ভব। অর্থাৎ মজুরি বাড়ালে ব্যবসার আয়তন কমবে না, বন্ধ হয়ে যাওয়া তো দূরের কথা। ”
তাই সব মিলিয়েই বলা যায়, ৫০০০ টাকা মজুরী করলে পোশাক শিল্পে যে ক্ষতির কথা সংশ্লিষ্ট মালিক পক্ষ দাবি করেন তা সম্পূর্ণ রূপেই মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

তাই, যে কোনো অবস্থাতেই বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে, BGMEA বর্তমানে মালিক শ্রেণীর স্বার্থ সংরক্ষণকারী একটি প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক শ্রেণীর নয়।

এখন, বর্তমানের যে বিষয়টি আমার সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে এবং যার প্রতি আমার এক ধরনের প্রবল সন্দেহ দেখা দিচ্ছে, সেটি হলো সম্প্রতি তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের গানের প্রতিভা অন্বেষণে BGMEA আয়োজিত প্রিমিয়ার ব্যাংক “গাও- প্রাণ খুলে গাও” নামক প্রতিযোগিতাভিত্তিক অনুষ্ঠানটি। যে BGMEA শ্রমিকদের ন্যূনতম যৌক্তিক দাবীকে রাষ্ট্রের প্রশাসনের লাঠিয়াল বাহিনীর দ্বারা ধ্বংস করে দিতে উদ্যত হয়, তারা যখন শ্রমিকদের প্রতিভার খোঁজ খবর নেয়া শুরু করে, তার পেছনে অর্থ লগ্নি করে(!) , জানি না তখন অজানা কোন শংকায় কেঁপে ওঠে মন। কী কী কারণে এরকম একচোখা একটি প্রতিষ্ঠান হঠাৎ এমন উদার হলো, কিছুদিন আগে যেই শ্রমিকের উপর সে সরকারের সহায়তায় দমন-নিপীড়নের রোলার চালিয়েছে এবং এখনো যাদের একাংশকে পুলিশ জেলে আটকে রেখেছে- তাদের প্রতিভা বিকাশে হঠাৎ এতো আগ্রহী হয়ে উঠলো কেনো এই লোভী সংগঠনটি, তার কিছু অনুমান আমি করেছি।

বাংলাদেশের জনগণ তার সংস্কৃতির কারণেই গান-কবিতার প্রতি একটু আলাদা ভালোলাগা পোষণ করে থাকে। আগ্রহও অপিরিসীম। সেই ভালো লাগা থেকেই এই ধরনের প্রতিযোগিতার প্রতি তাদের ঝোঁকের সৃষ্টি। একই সাথে আছে নিজের কোনো একটি সুপ্ত সুম্ভাবনার সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। এই দুই মিলিয়ে এই ধরনের প্রতিযোগিতাগুলো যে কোনো শ্রেনী, পেশা মানুষের কাছে বড় রকমের আকর্ষণ হিসেবে কাজ করে। খেটে খাওয়া শ্রমিক শ্রেণীর নিকট তো অবশ্যই। তাতে আসলে এই গার্মেন্টস শ্রমিকদের কী শংকা থাকতে পারে? বেশ কিছু শংকাই এখানে কাজ করে আসলে।

প্রথমত, এই প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার সময়টা সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ। এতদিন পর্যন্ত মালিক সমিতি শ্রমিকদের এই ন্যূনতম মজুরীর যে দাবী পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ছিলো, তা কিন্তু এখনো রয়েছে। এখনো বিভিন্ন জায়গায়, প্রকৃত শ্রমিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো নূন্নতম মজুরী ৫০০০ টাকা ও এই দাবীতে সরকারের পেটোয়া পুলিশ বাহিনীর হাতে আটক হওয়া সকল শ্রমিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবীতে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে। এমন পরিস্থিতিতে BGMEA এর এই ধরনের প্রতিভা খোঁজের প্রচেষ্টা মূলত শ্রমিক আন্দোলন থেকে সাধারন শ্রমিকদের ও সাধারণ জনগণের দৃষ্টি ফেরানোরই একটি প্রয়াস বলেই মনে হচ্ছে আমার কাছে।

দ্বিতীয়ত, এই ধরনের প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যে দিয়ে BGMEA এই সাম্প্রতিক সময়ের যৌক্তিক কারণে গড়ে ওঠা শ্রমিক আন্দোলন ও এর রেশ বন্ধ করতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সাধারণ পোষাক শ্রমিকদের উপর অন্যায় অত্যাচার চালিয়ে দেশের আপামর মানুষের কাছে তাদের যে ভাবমূর্তি হারিয়েছে, তা কিছুটা হলেও পুনুরুদ্ধারে সচেষ্ট হচ্ছে বলেই আমার দৃঢ় ধারনা। একই সাথে এই আয়োজনের ভিতর দিয়ে তারা এক ধরনের “Social Responsibility” প্রদর্শন করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে এবং নতুন করে জনমানসে নিজেদের এক ধরনের গ্রহনযোগ্য ও পজেটিভ অবস্থান তৈরির ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠছে, যদিও তার কর্পোরেট রূপটি একেবারেই দিবালোকে পরিষ্কার হয়ে যায় আমাদের কাছে। কেননা, মিডিয়া কেন্দ্রিক এই ধরনের প্রতিভা অন্বেষণের প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য যে প্রতিভার উদার ও অনৈতিক বানিজ্যিকীকরণ; সচেতন ব্যক্তিমাত্রই এই বিষয়টি এখন স্পষ্ট বোঝেন। আবার এর মধ্যে দিয়ে তারা স্ব স্ব শমিকদের নিকট নিজেদের একটা পজেটিভ ইমেজ তৈরি করারও উদ্যোগ নেবে।

তৃতীয়ত, এই ধরনের আয়োজনের ভিতর দিয়ে মালিকপক্ষ পোশাক শ্রমিকদের ভিতর একধরনের আত্নকেন্দ্রিক বোধ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে বলেই আমার ধারনা। যারা এই ধরনের আয়োজনগুলোর সার্বিক বিষয় সম্পর্কে ধারনা রাখেন, তারা জানেন এই আয়োজনগুলোর ফলাফল শেষ পর্যন্ত আয়োজক গোষ্ঠীর সিদ্ধান্তের উপরি নির্ভরশীল, বিচারক, sms বা এই ধরনের বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসা হলেও মূল বিচারে তা কখনোই আয়োজকের স্বার্থবিরোধী বা উদ্দেশ্যের বিপরীত হয়ে উঠে না। ফলে আয়োজক গোষ্ঠীগুলো এই প্রক্রিয়ার দ্বারা সহজেই অংশগ্রহণকারীদের চিন্তা চেতনা দৃষ্টিভঙ্গি ও সার্বিক আচরণে নিয়ন্ত্রণ আরোপের সুযোগ পায়। এই সুযোগের অনৈতিক ব্যবহারের ভুরি ভুরি উদাহরণ মিডিয়া জগতে মেলে। BGMEA এর এই প্রতিভা খোঁজার আয়োজনের অন্তরালে পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে স্বার্থপরতার বীজ বপনের চক্রান্ত সুস্পষ্ট। বিভিন্ন রাউন্ডে উত্তীর্ণ হওয়া ও সেই লড়াইয়ে থাকা প্রতিযোগিদের তখন সহজেই সুন্দর আগামীর(!) স্বপ্ন দেখিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে বিভ্রান্ত করার বড় ধরনের সুযোগ তারা পেয়ে যাবে। এতে মূল আন্দোলন ও তাদের যৌক্তিক দাবী আদায়ের যে লড়াই শেষ পর্যন্ত তা চরম্ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে আমার আশংকা রয়ছে। সহজ সরল পোশাক শ্রমিকরা খুব স্বাভাবিক কারণেই তাদের এই চক্রান্ত বুঝতে সক্ষম নয়, কেননা এই ধরনের উচ্চ (কু)বুদ্ধিসম্পন্ন psychological game এ তারা অভ্যস্ত নয় এবং একই সাথে এই বিষয়টি সামগ্রিকভাবে অনুধাবনের জন্য যে শিক্ষা ও জ্ঞানের প্রয়োজন তা থেকে এই সমাজব্যবস্থায় তারা সবসময়ই বঞ্চিত হয়ে আসছে। এই বিষয়টি নিয়ে বন্ধুমহলে আলোচনাতেও একটি বড় প্রশ্ন প্রায়শই আমার সামনে চলে এসেছে। সেটি হলোঃ

শ্রমিকদের সাংস্কৃতিকভাবে এনগেজ করার চেষ্টায় চক্রান্ত থাকতে পারে – অসম্ভব নয়। কিন্তু দেখুন যদি আপনি আশা করেন পুজিপতিরা শ্রমিকদের কন্ঠে বলার ক্ষমতা দিক, তাদেরকে মানুষ হিসাবে গন্য করুক, তাহলে তাদের কাছ থেকে কি ধরনের আচরন আশা করবেন? এই প্রতিভা বিকাশের ব্যপারটা কি সেই ঘরানায় পরে না?

আসলে মালিকপক্ষের এই মুহূর্তে তাদের শ্রমিকদের দেওয়ার মত অনেক কিছুই আছে। শ্রমিকদের পরিবারকে চিকিৎসা সুবিধা, তাদের সন্তান্দের জন্য শিক্ষা সুবিধা, স্বল্প পরিসরে হলেও আবাসন সুবিধা ইত্যাদি অনেক কিছুই। কিন্তু মৌলিক এসকল সুবিধা পূরণ না করেই সে এক ভ্রান্ত ও সন্দেহ উদ্রেককারী সময়ে তাদের কন্ঠের প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। এই প্রতিযোগিতার মোটিভ আমি আগেই বলেছি লেখাতে। এই প্রসঙ্গে এক কাছের বড় ভাই অসাধারণ মন্তব্য করেছিলেন-

“এত পরিমান ব্যাথা পোশাক শ্রমিকদের দেয়া হচ্ছে যে এখন বেদনানাশক না দিলে আর চলছে না। বাচার মত মজুরি দিয়ে এই বেদনা নাশ করা যেত কিন্তু সেদিকে মালিকেরা যাবেন না। এখন দেয়া হবে আফিম, তাতে এক কাজে দুই কাজ হবে.. ঝিমুনি তৈরি করা যাবে আবার আফিমের ব্যবসাও হবে।”

আমারো তাই ধারনা।
তাই বলবো, কেউ যদি তার পরিবারের অসুস্থ শিশুর সুস্থতার(মৌলিক দাবী তখন ঐ শিশুটির) চেষ্টা না করে, তাকে বিভিন্ন প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহারে সুন্দর করে অন্যদের নিকট উপস্থাপন করতে চায়, তখন তা একই সাথে অমানবিক, অনৈতিক বলা যায় এবং তা নিয়ে সন্দেহ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
যে বিষয়টি আমার কাছে সবচেয়ে ভয়ংকর ও হীন বলে মনে হয়েছে, সেটি হলো, এই ধরনের প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে খুব সহজেই BGMEA পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে এই সকল আন্দোলন ধরে, তা নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা চালাবে, এবং নিঃসন্দেহে তাদের চক্রান্তের সফলতার জন্য এই ধরনের আয়োজন বড় ধরনের নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশ শব্দের আবরণে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হলেও, এর সংস্কৃতি এখনো সামন্তবাদী। আর সামন্তবাদী সংস্কৃতিতে গড়ে ওঠা নিম্নবর্গের শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে লুম্পেন চরিত্র থাকা খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। আমার ধারনা এই প্রতিযোগিতার ডামাডোলের আড়ালে BGMEA সেই সুযোগটি গ্রহনের চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রতিযোগিতার নাম করে তা পোশাক শ্রমিকদের একটি অংশকে বিশেষ সুবিধা দানের মাধ্যমে মালিকপক্ষ তাদের স্ব-শ্রেণীর বিপক্ষ হিসেবে দাড় করিয়ে দেবে। এর ফলশ্রুতিতে পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে যে ঐক্য তা বিনষ্ট হবে, সামগ্রিকভাবেই তাদের যৌক্তিক আন্দোলনটি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কিন্তু সেখানে এখন যেমন মালিক-শ্রমিক পক্ষ-বিপক্ষ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, তা না হয়ে শ্রমিক-শ্রমিক পক্ষ-বিপক্ষ হবে। অর্থাৎ নিজেদের পায়ে তারা মালিকদের পরিকল্পিত পন্থায় নিজেরাই কুড়াল মারবে/ মারতে উদ্যত হবে। আর এতে সামগ্রিকভাবে লাভবান হবে মালিকশ্রেণী তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। একটা দীর্ঘ সময়ের জন্য তারা আবারো পোশাক শ্রমিকদের প্রশ্নাতীতভাবে শোষণের সুযোগ পেয়ে যাবে। বিপরীতে শ্রমিকরা এই সকল ঘাত-প্রতিঘাতের ফলে নিজেদের প্রতিই আস্থাহীনতায় ভুগবে, যা তাদের পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

তাই শেষ পর্যন্ত পোশাক শ্রমিকদের প্রতিভা অণ্বেষণের এই প্রক্রিয়াকে আমার কাছে মোটেও শুভ উদ্যোগ বলে মনে হচ্ছে না। এর অশনি সংকেত অনেক বেশি গভীর ও উদ্বেগজনক। কিন্তু সামগ্রিকভাবে আমি এই ধরনের নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিভা অণ্বেষণের বিপরীতে অবস্থান করি না। আমি মনে করি যে, নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণীর জন্যই শুধু নয়, বরং সকল শ্রেণীর মানুষের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রেরই। আমার বক্তব্য হচ্ছে, এই ধরনের উদ্যোগ আসলে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র্যভাবে ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি সহকারে না নিয়ে বরং রাষ্ট্রীয়ভাবেই এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করা উচিৎ। তাহলে এর প্রক্রিয়া অনেক বেশি সুষ্ঠু হবে, এতে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে মানুষের অন্তর্নিহিত প্রতিভার বিকাশ করা ও তাকে সাপোর্ট করা সম্ভব হবে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংগঠনসমূহ এই ব্যাপারে সহযোগিতাপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এক্ষেত্রে, কিন্তু এর মৌলিক প্রক্রিয়াটি শুরু করার ব্যাপারে রাষ্ট্রকেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিভা অন্বেষণের বাণিজ্যিক সকল প্রচেষ্টাকে নিরুৎসাহিত করা উচিৎ।

তথ্যসূত্রঃ
১. উল্লিখিত পরিসংখ্যানমূলক বেশিরভাগ তথ্যই “চিন্তা” পত্রিকা থেকে নেওয়া হয়েছে। http://www.chintaa.com/index.php/chinta/index/bangla
২. BGMEA এর নিজস্ব ওয়েবসাইট। http://www.bgmea.com.bd/