বহু দুঃস্বপ্নের রাতের পর, রাম জন্মভূমি বনাম বাবরি মসজিদ মামলারা রায় আমরা পেলাম। গত দুদিন গোটা ভারত ছিল থমথমে- সর্বত্র পুলিশ মিলিটারি-এস এম এসে নিশেধাজ্ঞা-সব কিছু লাফিয়ে, অযোধ্যা মামলার রায় দিল লখণৌ হাইকোর্ট।
(রায়টি অনলাইন এখান থেকে সবাই দেখে নিন।)
বিতর্কটি কি? খুব সিরিয়াসলি পলিটিক্যালি কারেক্ট ভাবে বললে ১৯৯২ সালে হিন্দুত্ববাদিদের হাতে ধ্বংশপ্রাপ্ত বাবরি মসজিদটির জমি নিয়ে গত ১৫০ বছর ধরে ধারাবাহিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে। বৃটিশরা বুদ্ধিমান জাত-তাই দাঙ্গা ঠেকাতে ১৮৫৯ সালে ফৈজাবাদের কালেক্টর মসজিদের জমিতে প্রাচীর দিয়ে হিন্দু আর মুসলিমদের উপাসনা স্থান পৃথক করেন। এই ভাবেই নিরুপদ্রব ভাবে চলেছে নব্বইটি বছর-যদিও মাঝে মাঝেই মন্দিরওয়ালা এবং মসজিদওয়ালাদের মধ্যে গন্ডোগল এবং কোর্ট কাছারি লেগেই থাকত। ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আসল ঘটনা শুরু। কিছু হিন্দুত্ববাদি সংগঠন হঠাৎ করে রাতের বেলায় মসজিদের মধ্যে রামলীলা ঢুকিয়ে দিয়ে এলাহাবাদ কোর্টে মামলা করে, ঐ স্থল হিন্দুদের উপাসনার জন্যে খুলে দিতে হবে। নেহেরু এই সব উটকো ধার্মিক মালগুলোকে একদম পাত্তা দিতেন না। ফলে উনি কালেক্টরকে বললেন ঐ জায়গাটাই তালা ঝুলিয়ে দাও। কাউকেই উপাসনা করার নামে বাঁদরামো করতে দেবে না সরকার। ফলে সবাই ভুলেই গিয়েছিল বাবরি মসজিদের কথা। কিন্ত নেহেরুর নাতি রাজীব গান্ধী দাদুর মতন বিচক্ষন ছিলেন না। শাহবানু মামলায় কংগ্রেস মুসলিম মৌলবাদিদের নির্লজ্জ তোষন করাতে হিন্দুরা যখন অসন্তুষ্ট, তাদের মন টানতে ১৯৮৬ সালে উনি মসজিদের তালা খুলে দিলেন, হিন্দুদের উপাসনার জন্যে। কোন দরকার ছিল না-এই মরা সাপটিকে জ্যান্ত করার। কিন্ত রাজীবের অভিজ্ঞতা ছিল না নেহেরুর মতন-ফলে আধুনিক ভারতের সব থেকে কলঙ্কময় নদর্মার জলকে খালকেটে উনিই নিয়ে আসলেন। এবং এই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত্বও করলেন-বিজেপি
১৯৮৪ সালে দুটী আসন থেকে ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে ৯০ টি আসন পেল। বাঘের পিঠে চাপতে গিয়ে, বাঘই খেল রাজীবকে-উনি গদিচ্যুত হলেন। বিজেপি ক্ষমতা পেল আংশিক ভাবে। ভারতের কমিনিউস্ট-হিন্দুইস্ট সরকার একজোটে চলল ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। উত্তর প্রদেশে কন্যান সিং সরকার ক্ষমতায় এল-পরিস্কার হল বাবরি মসজিদ ভাঙার কাজ। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে করসেবকরা যখন মসজিদ ভাঙছে-কল্যানের পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল। তার পরেই এই জমিটা নিয়ে নিল সরকার এবং এই মামলার সূত্রপাত। এই দুই একর জমি কার?
রামের কোন ঐতিহাসিক অস্তিত্ব নেই। স্পাইডার ম্যান, ফ্যান্টমের মত তিনি এক পৌরানিক সুপার ম্যান, যাকে হিন্দুরা খুব মানে। রামের জন্মস্থান অযোধ্যা বলা আর স্পাইডারম্যানের জন্মস্থান নিউয়ার্ক বলার মধ্যে পার্থক্য নেই। আমেরিকার অনেক শিশু যেমন মানে স্পাইডারম্যান ম্যানহ্যাটনে থাকেন-থাকতেই হবে-হিন্দুরাও মানে রামের জন্ম অযোধ্যায় কারন রামায়ন অযোধ্যাকে কেন্দ্র করে। স্পাইডারম্যানের কার্যকলাপ যেমন ম্যানহ্যাটনকেন্দ্রীক।
এবার ধরুন কোন স্পাইডারম্যান ভক্ত দাবি করে বসল নিউইয়ার্কের এই বাড়িটিতে স্পাইডারমানের জন্ম, তাই বাড়িটি ভারা দেওয়া যাবে না, স্পাইডার ম্যান ভক্তরা সেখানে পুজো দিতে আসবেন। দাবি করলে ক্ষতি নেই-ধরুন মামলা করল। এবার কোর্ট কি করবে?
ঘাবরাবেন না। এর উত্তর ভারতের মহামান্য বিচারপতিরা গতকালই দিয়েছে-সেটা নিয়ে হাঁসাহাসি একটু পরে করব। তার আগে আমরা জানতে চাইব-হিন্দুদের অত রাগ কেন ঐ মসজিদের ওপর?
মসজিদটি কে বানিয়েছিল কেও জানে না-বাবারনামায় তার উল্লেখ নেই। কালকের রায় ও স্বীকার করেছে মসজিদটির জন্ম রহস্যর উদ্ঘাটন হয় নি। কিন্ত হিন্দুদের দাবী ওটিই ছিল রামজন্মভূমি মন্দির-অর্থাৎ ওখানেই রাম জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। ঠিক ওইখানেই। এবং বাবরের সাগরেদ ঐ মন্দির ধ্বংশ করে মসজিদ স্থাপন করে। এর উৎস জেসুইট পাদ্রী জোসেফ স্টিফেন ফেলারের ভ্রুমন কাহিনী যা প্যারিসে তিনি ছাপিয়েছিলেন ১৭৬৮ সালে।
২০০৩ সালে পুরাতাত্ত্বিক খননে পরিস্কার হয় ওখানে একটি বিরাট মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল। তারা যা হাইকোর্টকে জানিয়েছেন তা এই রকমঃ
Period 1000BC to 300BC:
The findings suggest that a Northern Black Polished Ware (NBPW) culture existed at the mosque site between 1000 BC and 300 BC. A round signet with a legend in Asokan Brahmi , terracotta figurines of female deities with archaic features, beads of terracotta and glass, wheels and fragments of votive tanks have been found.[6]
Sunga Period. 200 BC:
Typical terracotta mother goddess, human and animal figurines, beads, hairpin, pottery (includes black slipped, red and grey wares), and stone and brick structures of the Sunga period have been found.[6]
Kushan period. 100-300 AD:
Terracotta human and animal figurines, fragments of votive tanks, beads, bangle fragments, ceramics with red ware and large-sized structures running into twenty-two courses have been found from this level.[6]
Gupta era (400-600 AD) and post-Gupta era:
Typical terracotta figurines, a copper coin with the legend Sri Chandra (Gupta), and illustrative potsherds of the Gupta period have been found. A circular brick shrine with an entrance from the east and a provision for a water-chute on the northern wall have also been found.[6]
11th to 12th century:
A huge structure of almost fifty metres in north-south orientation have been found on this level. Only four of the fifty pillar bases belong to this level. Above this lied a structure with at least three structural phases।
কতগুলো ব্যাপার প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যবেক্ষনে পরিস্কারঃ
১। ওখানে নানান মন্দির ছিল খৃষ্টপূর্বাব্দ হাজার সাল থেকেই। কিন্ত কোনটাই রাম মন্দির না-বিষ্ণু শিব ইত্যাদি জনপ্রিয় হিন্দু দেবদেবীর মন্দির ওখানে ছিল। সুতরাং ওখানে রাম জন্মভূমির মন্দির ছিল, এই দাবী টিকছে না।
২| যেটা পরিস্কার না-সেটা হচ্ছে মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ হয়েছে না, ধ্বংশাবশেষের ওপর মসজিদ হয়েছে। কোন প্রমান্য ইতিহাস পাওয়া যাচ্ছে না।
তা বিচারকরা [২] পয়েন্ট নিয়ে কি বললেন?
মুসলিম বিচারক খান সাহেব বললেন, মন্দির ভেঙে মসজিদ হয় নি। দুই হিন্দু বিচারক লিখেছেন, প্রমানাদি ঘেঁটে তারা নিশ্চিত, মন্দির ভেঙেই মসজিদ হয়েছে। বিচারকরা এত সাম্প্রদায়িক বিশ্বাস হচ্ছে না? রায়টি পড়ে নিন।
যেখানে আদালাতের মহামান্য বিচারকরাই এত সাম্প্রদায়িক, সেখানে সাধারন জনগনের কাছ থেকে কোন অসাম্প্রদায়িকতা আশা করব?
এবার আসুন সব থেকে মজার ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করি। আসলে সেই জন্যেই এই লেখা।
হিন্দুরা যে দাবী জানাল ঐ বাবরি মসজিদ, তাদের প্রাণপ্রিয় রামের জন্মস্থল, সেটা নিয়ে মহামান্য বিচারকদের বক্তব্য কি?
জাস্টিস ভীর শর্মার বক্তব্য শুনুনঃ
1. Whether the disputed site is the birth place of Bhagwan
Ram?
The disputed site is the birth place of Lord Ram. Place of
birth is a juristic person and is a deity. It is personified as the
spirit of divine worshipped as birth place of Lord Rama as a
child.
Spirit of divine ever remains present every where at all
times for any one to invoke at any shape or form in accordance
with his own aspirations and it can be shapeless and formless
also.
পরিস্কার হচ্ছে না?
তাহলে উদাহরন দিচ্ছি। ধরুন স্পাইডারম্যান ফ্যান ক্লাব দাবী করল ম্যানহাটনের ওমুক স্ট্রীটে ৬৭৮ নাম্বার বাড়িটাতে স্পাইডারম্যানের জন্ম। তাহলে জাস্টিস শর্মার রায়টা এরকম-
এই দাবি না মানার কোন কারন নেই। কারন স্পাইডারম্যান সর্বভূতে বিরাজমান এবং বিশ্বাসীরা যদি সেই বাড়িটিকেই বিশ্বাস করে, তাহলে সেটিই সত্য!
আমি উনার রায়টা পড়ে হাঁসতে হাঁসতে চেয়ার থেকে পড়ে যাচ্ছিলাম। যদিও কোর্ট বিতর্কিত জমিকে তিন ভাগে ভাগ করে হিন্দু মুসলিম এবং এক সেবাইত সম্প্রদায়ের হাতে তুলে দিচ্ছে- কারন উনারা বলছেন জমির ওপর কারুর দাবীই আইন সম্মত না। কেওই তাদের দাবী প্রতিষ্ঠা করতে পারে নি-তাই মন্দের ভাল হিসাবে মিলেমিশে চল। অর্থাৎ ১৮৫৯ সালে বৃটিশদের রায় বহাল থাকল। জামি ভাগ করে “উপভোগ” কর।
তাহলে ব্যাপারটা কেমন হল? স্পাইডারম্যান ( রাম) এবং সুপারম্যান ( আল্লা) এর ফ্যান ক্লাবরা একটা জমি নিয়ে মারামারি করছিল-যে ওই জমিতে সঙ্গত অধিকার তাদের। কোর্ট বললো, জমিতে কারুরই আইনত অধিকার নেই-তাই জমিটা ভাগ করে স্পাইডারম্যানের পূজো কর আর সুপারম্যানের জন্য নামাজ পড়। বাচ্চারা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করলে বড়রা যা করে আর কি!
কিন্ত রাম আর রহিমের এই নাবালকদের ছেলেমানুষিতে মাথা হেঁট হচ্ছে ভারতের বা ভারতবাসী হিসাবে আমাদের। ভারতে পৃথিবীর সব থেকে বেশী নিরক্ষর, গরীব এবং ভিখিরী বাস করে। এর পরেও গত দুই দশকে অসংখ্য তরুন ভারতবাসীর প্রচেষ্টায় প্রযুক্তি, বিজ্ঞান এবং ব্যাবসাতে ভারতের অগ্রগতি অভাবনীয়-এবং বিশ্বের এই মুহুর্তে তৃতীয় শক্তিশালী দেশ হিসাবে ভারত স্বীকৃত। প্রতিটি তরুন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার যত পরিশ্রম করে এই দেশটাকে উচ্চাসনে টেনে নিয়ে চলেছে , আমাদের সুবিধাবাদি রাজনীতির ঘা খেয়ে দেশটা ততটা পেছনেও হাঁটছে। আজকের রায় তার প্রমান।
যে দেশে খাদ্যের বিশাল সংকট-পরিবেশ প্রায় ধ্বংশ -সে দেশের রাজনীতি যদি খাদ্য বা পরিবেশের বদলে স্পাইডারম্যান এবং সুপারম্যান ফ্যানক্লাবের মারামারি নিয়ে বিবর্তিত হয়, আমাদের কপালে দুঃখ আছে।
প্রিয় বিপ্লব পাল,
১. দৈনিক কালের কন্ঠে প্রকাশিত আমার একটি লেখা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেটি আসলেই দু:জনক। মাত্র ১ দিনের মধ্যই লেখাটি তৈরী করার জন্যে তাড়া থাকায় পর্যাপ্ত তথ্য আমার কাছে ছিল না। সেক্ষেত্রে উইকপিডিয়া এবং ব্লগের সাহায্য নেয়া হয়েছে। লেখাটির ৭ টি প্যারার মধ্যে ৩য় প্যারার ’রামের জন্মস্থান এবং রামমন্দিরের অস্বিত্ব’ অংশে ২ টি লাইনে প্রায় ৩০ শব্দ হুবহু আপনার একটি লেখার সঙ্গে মিলে যায়।
২. এবং আদালতের রায় অংশে, রায়ের উদ্ধৃতি ও ব্যাখার প্রায় ৫ টি লাইনে ৭০ শব্দও হুবহু মিলে গেছে।
আমি রাজকূটের সাবেক সম্পাদক আরিফ জেবতিককে শুরুতেই আমার লেখার সূত্র সম্পর্কে জানিয়েছি।
লেখাটির ৬ নম্বর প্যারায় ব্লগ থেকে যে অংশটুকু নেয়া হয়েছে তাতে ব্লগের নাম লেখকের নামসহ উদাহরন দেয়া হয়েছে। তাহলে বিপ্লব পালের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বিকার করা হল না কেন?
দু:খ এবং লজ্জার সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমি ইন্টারনেট থেকে বেশকিছু লেখা ডাইনলোড করে পড়েছি। ভাল যুক্তির কিছু লাইন আন্ডার লাইনও করেছি। আপনার লেখাটি একটি সাব-লিংক থেকে ডাউনলোড করায় লেখকের নাম পাইনি। ওই অল্প সময়ে পুরো রায়টি বিশ্লেষনেরও সুযোগ ছিল না। সেক্ষেত্রে ওই লেখাটির লাইনগুলোতে খুবই অল্প কথায় আপনি চমৎকার ভাবে রায়টিকে ব্যাখা করেছিলেন। ফলে লাইন ৫টি আমি ব্যবহার করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য নাম ছিলনা বলে ব্যবহার করতে পারিনি।
পুরো লেখাটি ২০০০ শব্দের। তার মধ্যে আপনার লেখা থেকে ১০০ শব্দের মত হুবহু গ্রহন করায় এবং পরিস্থিতির কারনে নাম না পেয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে না পারায় আমি আন্তরিকভাবে দু:খিত।
যেহেতু একই লেখায় ব্লগের অংশ বিশেষ গ্রহন করে তা স্বীকার করা হয়েছে, সেহেতু আপনার নাম স্বীকার করতেও আমি কুণ্ঠিত হতাম না। কিন্তু ঐ সাব লিংকে শুধু টেক্টটিই ছিল, লেখকের নাম ছিল না।
এই অনিচ্ছাকৃত মারাত্মত ত্রুটির জন্যে আমি বিপ্লব পাল, মুক্তমনা ব্লগ, আরিফ জেবতিক ও সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে অধিক সচতেন থাকব।
আবদুল্লাহ আল ইমরান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
@abdullah al imran,
আপনার এই স্বীকারুক্তি ও দুঃখ প্রকাশের জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই।
তবে আমার এখনো কিছুটা দ্বিধা রয়ে যাচ্ছে যে আপনি আসলেই ব্যাপারটির গুরুত্ব বুঝতে পারছেন কিনা, নাকি এখন শুধুমাত্র দুঃখ প্রকাশ করেই দায় এড়াতে চেষ্টা করছেন। কেন বলছি? তা হল হুবুহু কয়েকটি লাইন লেখা হলে সেটাকে “প্ল্যাগারিজম” বলে না সেটাকে বলে “কপি” করা অথবা নকল করা। নকল করা হলে সেটার কোন ক্ষমা পাওয়া যায় না কোথাও। নিয়ম হচ্ছে যদি কোন বাক্য হুবুহু তুলতে হয় সে ক্ষেত্রে সেই বাক্যের সুত্র দেওয়া মাস্ট এবং সেই সাথে বাক্য/বাক্যগুলোকে “বাক্য বন্ধনীর” মাঝেও রাখতে হবে। কোন বাক্য “বাক্য বন্ধনীর” মাঝে না থাকা মানে সেই বাক্যগুলোকে লেখকের ধরে নেওয়া হয়। তাই শুধু সুত্র দিলেই চলে না, হুবুহু বাক্যের ক্ষেত্রে বাক্য বন্ধনীর মাঝে রাখতে হয়।
যদি এই ১০০ শব্দের বাক্যগুলোকে আপনি মূল ভাব ঠিক রেখে নিজের ভাষায় লিখতেন সে ক্ষেত্রে বাক্য বন্ধনীর প্রয়োজন পড়ে না, কিন্তু সুত্র দিতে হবে। যদি সুত্র উল্লেখ না করা হয় তবে তিনি “প্ল্যাগারিজম” এর দুষে দুষ্ট হবেন। আশা করি নকল করা এবং “প্ল্যাগারিজম” এর পার্থক্যটি বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। এই বিষয়টি আমাদের সকল সাংবাদিক ভাইদের জেনে রাখা উচিত। উপরের সংজ্ঞা মতে আপনার লেখাটির পঞ্চাশ ভাগ অংশ সরাসরি নকল হিসেবে চিহ্নিত হবে। যেটার দায় শুধু দুঃখ প্রকাশ করে এড়ানো যায় না। তারপরেও আমি আপনার এই ভুলটিকে একটি অজ্ঞানতা জনিত ভুল হিসেবে দেখবো। আশা করি দ্বিতীয়বার এই ভুল হবে না। এখন যেহেতু জানলেন কোনটি নকল কিংবা কোনটি “প্ল্যাগারিজম”, দ্বিতীয়বার একই ভুল করা হলে সেটাকে আর দুঃখ প্রকাশ করে পার পাওয়ানো যাবে না। আর দেখতেই পারছেন, মানুষ এখন সচেতন। ইন্টারনেট থেকে লেখা তৈরী করা অনেক সহজ আবার সেটাতে কোন ভুল থাকলে ধরা পড়াও তাই অনেক সহজ। ভাল থাকবেন।
@স্বাধীন,
সঠিক উচ্চারণটি সম্ভবতঃ প্ল্যাজিয়ারিজম। বাংলায় একটা সুন্দর শব্দ আছে – কুম্ভীলকতা।
আব্দুল্লাহ আল ইমরানকে তার স্বীকারোক্তির জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এভাবে সবাই যদি নিজেদের দায় দায়িত্ব নিয়ে সচেতন থাকেন তাহলে অনেক সমস্যাই এড়ানো যাবে ভবিষ্যতে।
এবার আসল সিঁদেল চোর রণক ইকরাম এর বক্তব্য কি ভাবে পাওয়া যাবে সেটা জানা দরকার।
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ সঠিক উচ্চারণটি দেওয়ার জন্য। তবে বাংলা শব্দটি সুন্দর হলেও কঠিন কঠিন লাগে।
এটা কষ্টকর হবে বলে মনে হয়। তবে আমার মনে হয় তাকে আগেই ফাঁসি দিয়ে দেওয়া ঠিক না, মানে কোন বিশেষণে ভূষিত করা ঠিক না। তাহলে তিনি তো স্বীকারোক্তি অথবা দুঃখ প্রকাশে যেতে চাইবেন না। অনেকেই এটা যে ভুল সেটাই বুঝে না। দেশে নিজের মাস্টার্সের সময়ও ব্যাপারটির গুরুত্ব এতো বুঝতাম না। এখানে এসে এটার সিরিয়াসনেস্ বুঝতে পেরেছি।
আমার মতে দিগন্তের উচিত একটি লিখিত অভিযোগ পাঠানো। এই ক্ষেত্রে লেখককেই পেইনটা নিতে হবে, আমরা লেখককে সমর্থন জোগানোর কাজটুকু করতে পারি। লিখিত অভিযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট সম্পাদক অবশ্যই ব্যাপারটি আমলে নিতে বাধ্য। যদি সম্পাদক মহোদয় কোন ব্যবস্থা না নেন তখন সেই পত্রিকা এবং সম্পাদকের বিরুদ্ধে কলম ধরা যাবে। আজকের ইন্টারনেট, ব্লগ, ফেইসবুকের যুগে কেউ এই সব চৌর্যবৃত্তি করে পার পাবেন না।
@অভিজিৎ,
উচ্চারনটা আসলে pla·gia·rism /ˈpleɪdʒəˌrɪzəm, -dʒiəˌrɪz-/ প্লেইজা-রিজম, প্লেই-জিয়ারিজম। এটার উচ্চারন Rhotic /non-rhotic নির্বিশেষে অর্থাৎ উত্তর আমেরিকান অথবা ইংলিশ নিয়মে অপরিবর্তিত। তৎসম বাংলায় আরও একটা সুন্দর শব্দ আছে – কাব্যচৌর্য।
@সংশপ্তক,
“কাব্যচৌর্য” পছন্দ হয়েছে। অন্তত এটা শুনে চৌর্যবৃত্তি মনে আসে।
@স্বাধীন,
বিপ্লব পালের লেখার সঙ্গে হুবহু মিলে যাওয়া শব্দগুচ্ছের মধ্যে আদালতের রায়ের ইংরেজী টেক্সটই ছিল অর্ধেক। যেটি বিল্পব পালের মৌলিক লেখা নয়। সেক্ষেত্রে দায়ভার আরো কিছু কমে আসে। আমি সেসব বিতর্কে না গিয়ে সরাসরি আমার অনিচ্ছকৃত ভুল স্বীকার করে নিয়েছি। ব্যক্তিগত মেইলে বিল্পব পালকে জানিয়েছি। সামনের ইস্যূ রাজকূটে সংশোধনী দেবারও ব্যাবস্থা করেছি। এর পরেও যদি আপনার দ্বিধা কাটাতে আমি সক্ষম না হই তবে, আমার করনীয় আপনার আরও যে সব প্রস্তাব আছে, জানালে অবশ্যই বিবেচনা করা হবে। একটি বিষয় আমি বারবার বলছি একই লেখায় লোটা কম্বল ব্লগ থেকে একটি অংশ ব্যাবহার এবং লেখকের নাম সহ সূ্ত্র উল্লেখ করা হয়েছে কিন্তু সাব লিংকে পাওয়া লেখাটিতে বিপ্লব ভাইয়ের নাম না পাওয়াতে আমি সেটি উল্লেখ করতে পারিনি।
পুনরায় বিষয়টির জন্যে আন্তরিক ভাবে দু:খ প্রকাশ করা হল। মানসিক ভাবেও আমি লজ্জিত।
@abdullah al imran,
আপনার স্বীকারোক্তিকে আবারো ধন্যবাদ জানাই। আপনার এই দ্বিতীয় মন্তব্যেটি দেখে আমার দ্বিধা কেটেছে। ধন্যবাদ জানাই আবারো এই জন্য যে ভুল স্বীকার করার সৎ সাহস সকলের থাকে না। আপনি অবশ্যই এই ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম। আপনার উন্নতি কামনা করি। সেই সাথে মুক্তমনাতেও আপনাকে স্বাগতম জানাই এবং অনুরোধ করবো মুক্তমনাতে লেখালেখি করার জন্য।
কালের কন্ঠে কোন এক কলামিস্ট দেখছি আমার লেখাটা থেকে হুবহু অনেক লাইন লিখে দিয়েছে-এই খানে দেখুন ঃ [ আমাকে ফেসবুকে একজন লিংক পাঠিয়েছে]
আমার লেখাটা উল্লেখ করে লিখলে ক্ষতি ছিল না। কিন্ত এই ভাবে সোর্স অস্বীকার করে কি লেখা যায়?
@বিপ্লব পাল,
অবিশ্বাস্য! স্পাইডারম্যান-সুপারম্যান সহ কপি করেছে। মুক্তমনার পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো উচিত।
@রৌরব, একাউন্ট সৃষ্টি করে মন্তব্য করে বোধহয় লাভ হবে না, মন্তব্য ডিলিট করে দিবে। প্রথম আলোর ওয়েবসাইট বলে একে রীতিমত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। মুক্তমনার এডমিনের পক্ষ থেকে একটা মেইল পাঠানো যেতে পারে। লোটাকম্বল ব্লগের এক ব্লগারের নাম যেহেতু উল্লেখ করা হয়েছে, মুক্তমনা কি দোষ করল? লেখক কি ভয় পেয়েছেন নাকি?
@রৌরব,
শুধু স্পাইডারম্যানটা নকল করেছে-সুপারম্যানটা করার সাহস কোন মুসলিমদেশের প্রথম শ্রেণির একটা দৈনিকে হবে না। তাই হিন্দুদের দিক থেকে যেহেতু বাওয়ালের চান্স নেই শুধু স্পাইডারম্যানকে নিয়ছে।
তবে এই ধরনের কাজ খারাপ। বেমালুম আমার বাক্যগুলো টুকে দিল ঠিক আছে-কিন্ত মুক্তমনা ব্লগের থেকে নিয়েছে স্বীকার করে টুকতে পারত। তাহলে সবই ঠিক ছিল। এভাবে কারুর লেখা যদি কেও নিজের নামে টুকতে থাকে, তাহলে বিপজ্জনক পরিস্থিতির তৈরী হবে। এই ব্লগের কোন পাঠক কালের কন্ঠর সম্পাদককে জানালে বাধিত হয়। নইলে, আমরা এখানে লিখব-আর সেই লেখাটা অন্যরা নিজেদের নামে দৈনিকে ছাপিয়ে লেখক হবে।
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লব রহমান মনে হয় কালের কন্ঠের সাথে জড়িত। তিনি হয়ত আলোকপাত করতে পারবেন।
এই রোগ আজকাল ব্যাধীর মত হয়েছে। সব সংবাদপত্রের পক্ষেও নিশ্চয়ই প্রতিবাদ না করা পর্যন্ত বোঝার উপায় থাকে না কোনটা চোরাই।
@বিপ্লব পাল,
কালের কন্ঠে জানানো উচিত। মুক্তমনা থেকে অফিসিয়ালি জানালেই ভালো হয়। ব্লগের লেখা কাগুজে মাধ্যমগুলো মেরে দিলে কী কী করা যেতে পারে সেগুলো নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবার সময় এসে গেছে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার তো দূরে থাক, এমনকি উপমাটা সুদ্ধ মেরে দিয়েছে। এসব কী!
@বিপ্লব পাল,
ফেইসুবকেই দেখেছিলাম। আসলেই অবিশ্বাস্য! আমি বুঝি না কৃতজ্ঞতা স্বীকারে দোষ কোথায়। সেই তো ধরা খায়ই। সমস্য হলে ধরা খেলেও কোন শাস্তি নেই আমাদের দেশে, সে জন্যেই এই কাজ করার সাহস পায়।
@স্বাধীন,
কৃতজ্ঞতা স্বীকারের যে দরকার আছে এটাও সবাই জানে কিনা সেটাও একটা প্রশ্ন হতে পারে।
বাবরি মসজিদ নিয়ে আদালতের রায় প্রসঙ্গে দৈনিক আনন্দবাজারের উচ্ছাস লক্ষ্যনীয়। ইন্টারেস্টিং, ভেরি ইন্টারেস্টিং…
সম্পাদকীয়, দৈনিক আনন্দবাজার, ৪ অক্টোবর ২০১০। [লিংক]
@বিপ্লব রহমান,
আনন্দবাজার ইউনিকোড ব্যবহার করে না কেন? অদ্ভুত ব্যাপার। আমি পশ্চিম বাংলার আরো কিছু ওয়েব সাইটে এ জিনিসটা লক্ষ্য করলাম।
@রৌরব,
এ বিষয়ে আনন্দবাজারকে অনেক অনুরোধ করা হয়েছে। এমনকি তা অনলাইন পিটিশন পর্যন্ত গড়েছে। পিটিশনটা এখানে পাবেন এবং আপনিও তাতে অংশ নিতে পারেন।
@রৌরব, আনন্দবাজার ইউনিকোডে পড়তে পারেন এখানে –
http://anandabazar-unicode.appspot.com/proxy?p=index.htm
@বিপ্লব রহমান,
আদালতের রায় , ঐতিহাসিক গবেষণা ইত্যাদি প্রমান করছে যে বাবরি মসজিদের স্থানে আগে হিন্দুদের মন্দির বা ঐ জাতীয় কিছু ছিল। রামের জন্ম স্থান একটা মিথ অবশ্যই। বাবর হিন্দুস্থান দখল করার পর ক্ষমতার দম্ভে হিন্দুদের মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ করেছিল এটা ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর ইসলামের শিক্ষাও তাই। এখন একই শিক্ষায় অনুপ্রানিত হয়ে হিন্দুরা যদি ১৯৯২ সালে তাদের ক্ষমতার দম্ভে মসজিদ গুড়িয়ে দিয়ে তাদের মন্দির আবার বানাতে যায় তাতে হিন্দুরা কি অন্যায় করেছিল আমার মনে হয় এ পয়েন্ট টা অনেকেই জেনে বা না জেনে এড়িয়ে গেছে। মুসলমানরা এখনও বাংলাদেশ পাকিস্তান ইত্যাদি দেশে সব সময় মন্দির বা গীর্জা ইত্যাদি ভাঙ্গার তালে থাকে, ভেঙ্গেছেও অনেক। যাহোক, আমার মনে হয় আদালতের রায় বরং মুসলমানদের পক্ষেই গেছে কারন ঐ জায়গায় মুসলমানদের কোনই অধিকার নেই যেহেতু তারা জোর করে এক সময় তা দখল করেছিল। ৫০০ বছর আগে ঘটনা ঘটেছিল বলে সেটা তো আর বৈধ হয়ে যায় না । যা অপরাধ তা চিরকালই অপরাধ। তার মানে কি মুসলমানরা ক্ষমতার দম্ভে যা করবে সেটা জায়েজ আর অমুসলিমরা করলে দোষ ?
@বিপ্লব রহমান, এটা অবশ্য সবাই বলেছে। আদালতের রায় মেনে সমাধান হলে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ হবে। তবে আদালত নিজে যে আরো সাম্প্রদায়িক রায় দেওয়ার সুযোগ পাবে সে কথা খুব একটা কারো মাথায় নেই মনে হয়।
হ্যালো বিপ্লব পাল
আপনার এত তথ্য সমৃদ্ধ লিখাটির জন্য আপনাকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন এবং অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন
উত্তর পুরুষ
হাইকোর্টের বিচারকদের অভিমত দেখে চোয়াল ঝুলে পড়ল। পুরোপুরি ফরহাদ মজহারীয় স্টাইলের বক্তব্য।
অনেক তথ্যবহুল।কিছু নতুন তথ্য পেলাম।ভালো লাগল।
আমার একমাত্র বিচারপতি খানের বক্তব্যই গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। উনি বলেছেন মসজিদটি তৈরী হয়েছে ভাঙা মন্দিরের ওপরেই ও কিছু অংশ পুনঃব্যবহৃত হয়েছে। মসজিদ তৈরীর আগে ওই একই জায়গায় রামের জন্মভূমি বলে মনে করা হত বলেও উনি বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু যেহেতু হিন্দু ও মুসলিমেরা একত্রে বহুদিন ধরে ওই একই জায়গায় প্রার্থনা করে এসেছে তাই তার মতে জমি ভাগাভাগি করে দেওয়া হোক।
আমার মনে হয় জায়গাটা ইতিহাসের হাতে তুলে দিলেই ভাল হত, মিউজিয়ামের মত – যেরকম তুরস্ক করেছে।
@দিগন্ত,
এ ক ম ত।
—
অ/ট: অনেকদিন আপনার লেখা পড়ি না। 🙁
আমার মনে হয় না খাদ্য সংকটের সমাধান হওয়ার পরেও উপমহাদেশীয় স্পাইডারম্যান এবং সুপারম্যান ফ্যানক্লাবের মারামারি কখনও বন্ধ হবে। গত কয়েক বছরে টরোন্টোর প্রতিটা পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ গড়ে উঠেছে। যে কারও বাসার ৫ মিনটের মধ্যেই আপনি অবশ্যই একটা মসজিদ পাবেন যেটা শেষ ৫-৬ বছরে গড়ে উঠেছে। গত সপ্তাহে এক পার্টিতে গিয়েছিলাম। আপাতঃ ধর্ম নিয়ে খুব বেশী চিন্তিত না সেই লোকগুলোর আলোচনার বিষয় বস্তু ছিলো পাকিস্হানীদের বিশাল মসজিদ আছে, মধ্যপ্রাচ্যের লোকজনের বিশাল সাইজের মসজিদ আছে, কিন্তু বাংলাদেশীদের সেরকম বড়সড় কোন মসজিদ নাই। তাদের চিন্তা কিভাবে বাংলাদেশী কমইউনিটির জন্য এমন একটা মসজিদ বানানো যায় যেটা নিয়ে বাংলাদেশীরা গর্ব করতে পারে।
আর টরন্টোর ৪০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো মন্দিরটিতো এখন সবার কাছে দর্শনীয় স্হান/ল্যান্ডমার্ক হিসাবেই পরিচিত।
@হোরাস,
আমার ছেলের সাথে আমার কথোপকপনের দুটি লাইন শুনুনঃ
Why do you like Superman?
>>
Because I am a kid. Every kid likes him.
বিশ্বাসীদের উত্তরও তাই। সবাই আল্লা ভগবান মানছে-একটা সামাজিকতা-তারাও তার মধ্যে আছে।
মন্দির মসজিদ মানেই খারাপ কিছু এমন ধারনা আমি রাখএ চাই না।
হিউস্টনের দূর্গামন্দির এবং আমাদের এখানের কালী মন্দির বাঙালী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও বটে- গান-বাজনা, বাচ্চাদের বাংলা শেখানো সব কিছুই হয় এখানে।
দুর্ভাগ্য যে বাঙালী কমিনিউটি সেন্টার এখানে কেও বানায় না।
তাই মন্দির ঘিরেই কাজ চলে। অনেক বাংলাদেশী মসজিদে বাংলা চর্চা হয় বলে শুনেছি। আবার অনেক ক্ষেত্রেই হয় না।
@বিপ্লব পাল,
টরন্টোর অনেক পাব্লিক স্কুলেই উইকএন্ডে বাংলা শেখানোর প্রোগ্রাম চালু আছে। যেগুলোতে নেই সেগুলোতেও উদ্যোগ নিলেই চালু করা সম্ভব। আর মসজিদে গান-বাজনা-নাচ শেখানোর প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া অন্যান্য কমিউনিটি সার্ভিস দেয়ার জন্যও অন্যদের চাইতে বড় মসজিদের, যেটা দেখে সবাই তাজ্জব হবে, প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে হয় না।
@বিপ্লব পাল,
মন্দির মসজিদ বানালেই তো বাঙালী কমিনিউটি সেন্টার বানানো হয়ে যাচ্ছে যেখানে ধর্ম-কর্মও চলে, বাংলা চর্চাও চলে। এক ঢিলে দুই পাখী মারা আর কি। তাও মন্দিরে বাঙালী সাংস্কৃতিক গান-বাজনা চলে, মসজিদেতো সেটাও আবার হারাম। তাই যতদিন পর্য্যন্ত এই মন্দির মসজিদ বানাবার ধারা চালু থাকে ততদিন পর্য্যন্ত আলাদা বাঙালী কমিনিউটি সেন্টার না বানাবার দুর্ভাগ্যকে মেনে নেয়া ছাড়া উপায় কি?
যে দেশে ৮০% মানুষ গরীব লক্ষ লক্ষ মানুষ ভূমিহীন সেখানে একটি কাব্যের কাল্পনিক নায়ক রামকে বাস্তবে এনে এত মারামারি। আর এইসব দাঙ্গায় প্ররচনা কে দে এই বিজিপি তথা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এদের কাজই রাম রাম করে সাধারণ মানুষকে একত্রিত করে ক্ষমতায় আসা। আমি এই অপেক্ষায় আছি যে দিন সাধারণ মানুষ এদের চিত্র বুঝবে আর রাম ভক্ত লেজ ছাড়া হনুমানদের পিঠে দেশছাড়া করবে।
লেখকের লেখায় মুন্সীয়ানার ছাপ স্পস্ট। তিনি সুচতুর ভাবে যারা মসজিদ নামক উপাসনালয়টি ভেঙ্গে ফেলল তাদেরকে “হিন্দুত্ববাদি” আর যারা মূর্খতার বেড়া জালে আটকা পরে ঘটনার সময় ও পরে প্রান ও মান দুটোই দিল, তাদেরকে বললেন, “মুসলিম মৌলবাদি।” একথা অনস্বিকার্য যে “এর পরেও গত দুই দশকে অসংখ্য তরুন ভারতবাসীর প্রচেষ্টায় প্রযুক্তি, বিজ্ঞান এবং ব্যাবসাতে ভারতের অগ্রগতি অভাবনীয়-এবং বিশ্বের এই মুহুর্তে তৃতীয় শক্তিশালী দেশ হিসাবে ভারত স্বীকৃত। প্রতিটি তরুন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার যত পরিশ্রম করে এই দেশটাকে উচ্চাসনে টেনে নিয়ে চলেছে , আমাদের সুবিধাবাদি রাজনীতির ঘা খেয়ে দেশটা ততটা পেছনেও হাঁটছে। আজকের রায় তার প্রমান।” কিন্তু স্বাধারনের মনে প্রথমে উল্লেখিত বিষয়টিই প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে যে বিরাজ করছে, দ্বিতীয় অংশটা তারই বহি:প্রকাশ। এটা কোন নতুন কথাও নয় যে, ভারতীয়রা স্থানীয়ভাবে ভারতকে হিন্দুস্তান হিসেবেই আখ্যায়িত করে। এটা একটা কালচার, বিচারে তার প্রভাব পরা দোষের কিছু নয়। বরং এখন বিষয়টা এমন না হলে, ভেঙ্গে যাওয়া মসজিদ নিয়েও ভারতীয় মুসলমানেরা কিছুদিন ফালাফালি করার পরে, …তারা কিন্তু ব্যপারটা ভুলেই গিয়েছিল। ভাঙ্গা মন নিয়েও ভুলে তারা বেঁচে যেতও একটা জীবন; কিন্তু ভারত বেচে যেত একটা প্রহসনের হাত থেকে।
এই রায়টা এমন এক সময় এল, যখন সামনে কমনওয়েল্থ আশর; যখন ভারতের প্রাক্তন ১৬ জন প্রধান বিচারপতির মধ্যে ৮ জনই দূর্নিতীর দায়ে প্রশ্নবিদ্ধ। আর মাননীয় বিচারক ভীর শর্মার বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষনেরও কোন কারন আমি দেখছি না। তবে এই ক্ষেত্রে এ প্রায়গিক বিষয়টাও জরিত: রাম মন্দিরের উপরেই মসজিদটি ছিল কি না? পুরাতাত্ত্বিক খননেও পরিস্কার হয়, না! ওখানে কোন রাম মন্দির ছিল না। ওখানে কোন সভ্যতা ছিল, এবং কালের আবর্তে তা ধ্বংশ হয়েছে, তার প্রমান অবশ্য পাওয়া যায়। কোন মন্দির না থাকলেও দেব-দেবীর ছবি যুক্ত পোড়ামাটির ফলক পাওয়া যায়।
বাবরের সময় মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে,সুনির্দিষ্ট ভাবে সাল তারিখ সহ জানা গেলেও, কোন মন্দির ভেঙ্গে তার উপর করা হয়েছে এমন কোনও প্রমান, লোকগাঁথা, গল্প, ইতিহাস নেই। আর মসজিদটি ভাঙলে এর ইতিহাস প্রশ্নের সামনে আসে, সাধারন গল্প, ইতিহাসের পাশাপাশি এর মূল ইতিহাসের উৎস হিসাবে বাবর নামা আলোচনায় আসে, এবং দেখা যায় বাবর নামায় এই ইতিহাসের অংশ যুক্ত পৃষ্ঠা ধ্বংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ লিখিত ইতিহাস সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যে বা যাহারা এটা পেরেছে, তাদের হাত অনেক লম্বা। এর ফলে বিচার কার্য যেমন প্রলম্বিত হয়েছে, তেমনই সঠিক বিচারও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তবে আদালত বিতর্কের অবসান ঘটাতে গিয়ে নতুন বিতর্কেরই নির্দেশ-নামা লিখলেন। এটা আইনী ভাষায় সিদ্ধ হল যে ক এর ঘর খ ভাংলে, ক,খ ও গ, ভাঙ্গা ঘরের সমান অংশ পাবে বা পাবার সম্ভাবনা থাকে। এটা স্বাভাবিক যে, যদি এটা রাম মন্দির হয়, তাহলে “হিন্দুত্ববাদি”(তারা মৌলবাদি নয়!)রাই এর অধিকার পাবে। অথবা যদি এই দাবি মিথ্যা হয়, মুসলিম “মৌলবাদিরাই” এটা পাবে।
এই মসজিদ ভাঙ্গার অংশটুকু কোন আকস্মিক ঘটনা নয়। যে বা যাহারা এটা করে তারা সংগবদ্ধ ভাবে পূর্বপরিকল্পনা করেই যায়। যে সম্পর্কে ভারত সরকার অবগত ছিল, এবং তারা মসজিদটি ভাঙবেনা এমন প্রতিগ্ঞা বদ্ধ হয়, কিন্তু প্রায় দেড়লক্ষ্য লোকের সসস্ত্র কাফেলার লোকরা ভারতের সুপ্রিম কোর্টের “সাথে” করা প্রতিগ্ঞা ভংগ করে।
এই রায়টি সেই অর্থে ভারতে বিচার চাওয়া ও পাওয়া সম্পর্কে মানুষকে আরও বেশী চিন্তা গ্রস্থ করবে, লেখকের মত প্রগ্গাবানদের কাছে বিচারককে হাসির পাত্র করবে।
এই দীর্ঘ বিতর্কের যে সুরুয়াৎ, তা কিন্তু আমাদের আধূ্নিক আলোচনায় একেবারেই আসে না, মসজিদটির নাম; এর নাম ছিল মাসজিদ-ই-জানমাস্তান। অর্থাৎ, জন্মস্থানের মসজিদ। এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা, রামের জন্মস্থান নিয়েই এর নাম করন। কে জানে হয়ত বেশী উৎসাহি কেই মামলা করে দিল, বিরলা মন্দির বিরলার স্মৃতিশৌধের উপর করা হয়েছে। বলা যায় না, কালের আবর্তে এটাও একটা বিড়াট কিছু হয়ে যেতে পারে। কারন খুঁজতে আজকের জামানায় কে যায়!
@নাসিম মাহ্মুদ,
মসজিদের নামে “জন্মস্থান” আছে বলেই যে সেই জায়গাটা রামের জন্মস্থান হয়ে যাবে, তা কিন্তু না। যেহেতু মসজিদের নামটা রামের জন্মস্থানকে বৈধতা দেয় না(রামের অস্তিত্বকে তো নয়ই), তাই নামটা আলোচনায় অপ্রাসঙ্গিক।
@পৃথিবী, আপনাকে ধন্যবাদ। আমিও আপনার সাথে একমত। সে কারনেই, পরবর্তি লাইনে বিরলা মন্দিরের উদাহরনটি দিয়েছি। মন্দিরটির নামের মধ্যে বিরলা শব্দটি থাকলেও, বিরলা নামক খ্যাতিমান ব্যাক্তির জন্মস্থানের সাথে মন্দিরের অবস্থানের কোন সম্পর্ক নেই। আরেক ভাবে বলা যায়, যেমনটি মোহাম্মদপুর এলাকার কোন উপসনালয়ের সাথে হযরত মোহাম্মদের জন্মস্থানের কোন সম্পর্ক নেই।
এই রায় কোন আইনি সমাধান বা বিচার হয় নি, বরং উগ্র হিন্দুবাদ এর বহি:প্রকাশের আইনী রুপ। মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট যদি এই রায় সংশোধন না করেন, তাহলে এই রায় ইতিহাসে অত্যন্ত ক্ষতিকর বলেই বিবেচিত হবে যা প্রগতিশীল ও শিক্ষিত ভারতীয়দেরকের ব্যথিতই করবে বা করছে। একটি দীর্ঘ ও ভিন্নমতের আলোচনা পাওয়ার জন্য, ভারতের দি ডেইলী হিন্দুর ভারাদারাজনের লেখাটি দ্রষ্টব্য। বাংলাদেশের প্রথম আলোতে এর কিছুটা ভাবানুবাদও আছে।
@নাসিম মাহ্মুদ,
এই অসাধারন তথ্য টি কোথা থেকে পেলেন? হিন্দুস্থান বলে একটা শব্দের ব্যাবহার স্বাধীনতার পরে সরকারি ভাবে কিছু হত। বিগত তিন দশকে আর হয় না। আগে যেমন হিন্দুস্থান এরোনটিক্স লিমিটেড ইত্যাদি নামে সরকারি সংস্থা হয়েছে -এখন ভারত নামটাই ব্যাবহার করা হয়।
এটা ঠিকই ঔ স্থল রামের জন্মস্থান [ গর্ভগৃহ] এটা বহুদিন ধরে লোকে মানে। এসব সব মন্দিরই রটিয়ে থাকে যাতে দুপয়সা বেশী ইনকাম হয়।পশ্চিম বঙ্গের কালনাতে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির আছে যেখানের দাবি সতীর দেহকে (পুরাণ)
যেখন ১০৮ ভাগে চ্ছিন্ন করা হয়, এক ভাগ ওখানে পড়েছিল! কালনা একটি রক্ষনশীল ধর্মীয় শহর-ওখানের সবাই সেটা বিশ্বাস করে! এই মামলার রায় যা দাঁড়াল -সেটা হচ্ছে ভারতীয় কোর্ট অব ল, সেই ধর্ম বিশ্বাসকে মর্যাদা দেবে!
এখানে আমার বিরাট আপত্তি আছে। কারন সেক্ষেত্রে আস্তে আস্তে হিন্দু পারিবারিক আইন গুলোকেও কোর্টকে মর্যাদা দিতে হবে-যেটা নেহেরু তুলে দিয়েছিলেন। তাই এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিটা যুক্তিবাদির গর্জে ওঠা উচিত।
@নাসিম মাহ্মুদ,
বোল্ড করা অংশটুকু লেখার কোন যায়গায় পেলেন একটু জানাবেন কি? আমার চোখে তেমন কিছু পড়েনি।
@আদিল মাহমুদ, রামের জন্মস্থান ধরেই যদি নেয়া যায় তবে হিন্দুদের ভাষায়ই বলতে হয় : অতীত যখন ভুলেই থাকতে হবে এবং ছিলেনও বাবরের আমল থেকে তখন মসজিদের আন্দরে কেন মূর্তি ঢুকিয়ে তাকে মন্দির দাবী করতে হবে? আবার সেই মন্দিরই বা কেন কুঠরাঘাত করে ভাংঙ্গতে হবে?!!
তিন ভাগেরও বা প্রশ্ন কেন আসে তাকে অতিত ভুলে বর্তমানের মতই খোলা অমিমাংশিত রাখা হোক বা তার আগে যখন মসজিদ ছিল মসজিদই রাখা হোক।
পৃথীবির সবচাইতে সনাতন ধর্মে মুর্তিপূজাঁ প্রমানিত নয়, এমনকি হিন্দু ধর্মের বাহ্মবাদেও নয় তাহলে কেন মন্দির হোক মসজিদ হোক সেখানে মুর্তিপূজা হবে না হবে একেশ্বরের আরাধনা সব চুকে যাক।
সম্প্রীতির নামে অধিকার হরণ আগেও হয়েছে এখনো হচ্ছে তা কেবল মুসলমানরাই উচ্চবাচ্য করলে সম্প্রীতির ব্যতায় ঘটে আর মুসলমানদের কে যখন অবলীলায় কাশ্মীর-কারগীল-আর গুজরাটে :
An independent reporters group claims 5,000 Muslims killed, 50,000 made homeless, hundreds of mosques, and dozens of hotels, shops, and villages destroyed during riots in the Indian province of Gujrat.
সূত্র
রাস্ট্রীয় বিচার ব্যবস্থাটার স্বচ্ছাতা ও নিরাপেক্ষতাও এখন প্রশ্নবিদ্ধ হলো এই প্রহসনের মীমাংসার মাধ্যমে।
@প্রতিবাদি,
এইসব ভাংগাভাংগি সম্পর্কিত ভাগাভাগির যৌক্তিক সুবিচার করা কোন আদালতের পক্ষে আসলে সম্ভব নয়।
উত্তর আমেরিকায় আজ যদি নেটিভ আমেরিকানরা দাবী করে যে সব সাদা ইউরোপিয়ান সেটলারদের চলে যেতে হবে কারন তারা দখলদারের বংশধর যাদের পুর্বপুরুষরা নেটিভ আমেরিকানদের মেরে খেদিয়ে প্রায় নির্বংশ করে উত্তর আমেরিকা দখল করেছে তাহলে এই প্রশ্নের সমাধান কিভাবে করা যাবে?
@প্রতিবাদি,
বাংলাদেশে ১৯৪৭ থেকে সব রায়োটে কত হিন্দুর বাড়ি পুড়েছে? ওর থেকে অনেক বেশী হিন্দু নির্যাতন হয়েছে কাষ্মীরে।
এই ভাবে হিন্দু মুসলিমে ভাগ করে ভাবলে আমরা এগোবো না। প্রথমেই আমাদেরকে অসাম্প্রদায়িক হতে হবে-ভুল যেতে হবে আমরা হিন্দু বা মুসলমান। বাংলাদেশ বা গুজরাটে যার অত্যাচারিত-তাদের একটা পরিচয় ধর্মীয় সংখ্যালঘু। অচ্যাচারের কারন ও রাজনৈতিক ফায়দা যার ভিত্তি ধর্মীয় পরিচয়। তাই কে মুসলিম, কে হিন্দু এই সব ফালতু ধর্মীয় পরিচয় গুলোকে উপরে ফেলা হবে প্রথম মানব ধর্ম। সেটা করতে গেলে সবাইকে বোঝাতে হবে ধর্ম গুলি এককালে গুরুত্বপূর্ন ছিল-কিন্ত বর্তমানে তারা সমাজ ও সভ্যতার ক্ষতি করে।
@নাসিম মাহ্মুদ,
আমার মতে ভারতে এ মন্দির একটা ভাল উপকার করেছে। আগে কংগ্রেস ছাড়া আর কোন সর্বভারতীয় দল ছিল না আর যে কারনে বার বার কংগ্রেস ক্ষমতায় আসত কারন ভারতবাসীর কাছে কোন বিকল্প ছিল না।ভারতের মত একটা বহুজাতিক ও বহু ভাষা ভিত্তিক দেশে কংগ্রেসের মত একটা সর্বভারতীয় দল গঠন করা ও সমর্থন জোগাড় করা বেশ দুরুহ কাজ ছিল। এ মসজিদের কারনে আজকে বিজেপি সর্বভারতীয় দলের মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে। ফলে ভারতে গনতন্ত্র আরও সসংহত হওয়ার জন্য দুটো বড় সর্বভারতীয় দল পাওয়া গেছে যা ভীষণ দরকার ছিল। বলা হয় এরা মৌলবাদী , হতে পারে কিছুটা মৌলবাদী কিন্তু তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তারা মৌলবাদীতার তেমন কিছু দেখিয়েছে বলে মনে পড়ে না। বরং ধর্ম নিরপেক্ষতার পথেই হেটেছে। সুতরাং বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা নিয়ে একটা সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গা সেখানে হয়েছিল ঠিকই কিন্তু ফলশ্রুতিতে একটা ভাল ফল পেয়েছে সারা দেশ। আর বিজেপি যদি মৌলবাদী দলও হয় তা মানবসভ্যতার জন্য কোন হুমকি নয় ইসলামী মৌলবাদের মত, কারন হিন্দু মৌলবাদীদের মৌলবাদিত্ব পৃথিবীর অন্য দেশে রপ্তানী করার কোন খায়েশ নেই। বরং বলা যায় হিন্দু মৌলবাদের উত্থানই ঘটেছে মুসলমান মৌলবাদকে প্রতিহত করতে। অন্যথায় আমার ধারনা, বিজেপি কখনই এ পজিশনে আসতে পারত না। তবে মন্দির ভেঙ্গে বাবরি মসজিদ হয়েছিল – এ ব্যপারে মিথ্যা যাই হোক, ভারতে মন্দির ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার ইতিহাস বা তার ওপর মসজিদ নির্মানের উদাহরন কিন্তু মুসলমান শাসক গোষ্ঠিই সর্বপ্রথম দেখিয়েছে। বাবরি মসজিদ ছাড়া হিন্দুরা আজ পর্যন্ত কোন মসজিদ আজ পর্যন্ত ভাঙ্গে নি যদিও তারা ইচ্ছে করলে প্রতিশোধ হিসেবে করতে পারত।
অনেক ধন্যবাদ বিপ্লবকে এই তথ্যপূর্ন লেখাটি সংক্ষেপে লিখে ফেলায়। অন্য ব্লগে কিছু পড়েছিলাম তবে এত গভীর ছিল না।
কোর্টের রায়ে আমারও মনে হয়েছিল যে এই রায় অনেকটা খেলা ড্র এর মত বা যুগ্ম চ্যাম্পীয়ন ঘোষনার মত। জোড়াতালি মার্কা সমাধান। সবচেয়ে ভাল সমাধান হত যায়গাটিকে সরকারী সম্পত্তি ঘোষনা করে হাসপাতাল, স্কুল এ জাতীয় কোন সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান বানানো।
তবে মহামান্য বিচারপতি যে রামের জন্মস্থান নিয়ে কোন সন্দেহ পোষন করেননি জেনে বড়ই পুলকিত হয়েছি। তবে ভারতীয় সুপ্রীম কোর্ট মনে হয় না এতটা জোকারি দেখাবে। রাজীব গান্ধী যতটুকু মনে পড়ে প্রায়ই রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার ঘোষনা দিতেন, যদিও জানি না বস্তুটা আসলে কি।
ছোট বাচ্চাদের মিছিল দেখে আশান্বিত হয়েছি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় নেতা নামের ক্লাউনদের এসব রুটিন করে দেখানো উচিত। সাথে সাথে পুরো ভারতের রাস্তায় রাস্তায় গড মাষ্ট বি ক্রেজি ছবিটা প্রদর্শন করা উচিত।
@আদিল মাহমুদ,
একমত।
বেশ কিছু তথ্য জানলাম, তার মধ্যে NBPW-র খোঁজ ওখানে পাওয়া গেছে এটা সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং লাগল। আমি বুঝতে পারছি না এটাকে পুরাতাত্বিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ঘাড় ধরে হিন্দু মুসলিম সবাইকে বের করে দেয়া হচ্ছে না কেন।
@রৌরব,
একমত। এক্ষেত্রে তুরস্কের ইস্তাম্বুলেরআইয়া সোফিয়ার
দৃষ্টান্ত অনুসরন করা যেতে পারে। আমি যতদুর শুনেছি রায়ের ওপর আপীল হওয়ার পর নয়াদিল্লীর সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ ঐ পথই অনুসরণ করবে।
@রৌরব,
একদম মনের কথা বলেছেন। যে কোনো সভ্য দেশের আদালত এই কাজটিই করতো। …
ছিঃ! এর নাম ধর্ম আর বিচার!
ওখানে একটা shopping mall বানিয়ে দিলেই হয়। ভারতের একমাত্র দেবতা আজ পুঁজিবাদী ধনতন্ত্র। তাঁর আরাধনার এর থেকে প্রকৃষ্ট উপায় আর কি আছে? এই দেবতা জাতি, ধর্ম, বর্ণ বিচার করেননা।যার অর্থের উপঢৌকন দেবার ক্ষমতা থাকে, তার পূজা সানন্দে গ্রহণ করেন। বোলো neo-liberalism কি জয়।
:lotpot:
বিপ্লব পাল@ , খুব সুন্দর করে ব্যাখা করার জন্য আপনাকে ……………।।
সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে খুব ভাল জাজমেন্ট। অত্যন্ত বিচার বিবেচনা করে এলাহাবাদ হাই কোর্ট ভাল রায় দিল। সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু উভয় পক্ষেরই সেন্টিমেন্টকে গ্রাহ্য করা হল।
মুসলিম দেশে মন্দির মসজিদ পাশাপাশি বিরাজ না করুক কিন্তু ভারতে মন্দির মসজিদ পাশা পাশি বিরাজ করুক। ভারত হক বিশ্বের দরবারে হিন্দু মুসলিম মিলনের এক তীর্থ ক্ষেত্র। এই “মহামানবের সাগর তীরে” হিন্দু হক মুসলমানের ভাই ও মুসলমান হক হিন্দুর ভাই তা কোরানে যাই থাকুক না কেনো। ভারত হক মহাবিশ্বে এক রেফারেন্স দেশ।
লেখকের স্পাইডার ম্যান ও রামের তুলনার ব্যাপারে কনো মন্তব্য করতে চাই না কারন এটা তাঁর সম্পুর্ন ব্যক্তিগত ধারনা।
@সেন্টু টিকাদার,
এই রায় আপামর ভারত বাসি মেনে নিচ্ছে। মানছে না হিন্দু এবং মুসলিম নেতৃত্ব। কাল অনেক রাত অব্দি হিন্দু আর মুসলিম নেতৃত্বদের টিভিতে বাঁদরামো দেখলাম। আমার নিজের অর্জিত অভিজ্ঞতা আরো দৃঢ় হচ্ছে। অধিকাংশ লোকই অত ধার্মিক না-জাস্ট একটু মানসিক শান্তি আর পারিবারিক প্রথা বজায় রাখতে ধর্ম করে। কিন্ত সেই ধর্ম যদি রুটি রোজগারে পেটে কিল মারে, তারা সেটাকে ব্যাক বার্নারেই রাখতে চাই। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় মিডিয়া এবং রাজনীতিবিদদের কাজ হবে ধর্ম নেতাদের কোন ঠাসা করা।
তবে সেটা বোধ হয় অসম্ভব। বিজেপি বিশ্বহিন্দুপরিষদের কথায় ওঠবস করে। আর কংগ্রেস সিপিএম মসজিদের ইমামদের ভোট আনতে কাজে লাগায়। সবই এক গোয়ালের গরু।
@সেন্টু টিকাদার,
ধর্মীয় চরিত্রের অস্তিত্বের ব্যাপারে উত্তরাধুনিকতার কোন স্থান নেই। ধর্ম “চরম সত্য” এর ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত। সত্য যদি চরম হয় এবং রামকে যদি সত্য দাবি করা হয় ও স্পাইডারম্যানকে যদি মিথ্যা দাবি করা হয়, তবে অবশ্যই এই দু’টো চরিত্রের অস্তিত্ব নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব এবং উচিত। সেক্ষেত্রে আপনি বলুন তো কেন আমরা রামের অস্তিত্বকে স্বীকার করব? স্পাইডারম্যানকে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উপস্থাপন না করে বাচ্চাদের আনন্দের জন্য স্রেফ একটি সুপারহিরো হিসেবে পেশ করা হয়, এটাই কি স্পাইডির দোষ?
@পৃথিবী,
টিকাদার মশাই রামকৃষ্ণ কথামৃত পড়েন নি।
শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন ঈশ্বর ভজনায় শিষয়কে একদাম পাঁচ বছরের বালক তুল্য হতে হবে-সেই শিশুসুলভ বিশ্বাস না এলে নাকি ভজনা টজনা সবউ ব্যার্থ। আমার ছেলে প্রতিদিন সুপারম্যান পকেটে করে স্কুলে যায়। আমি একদিন কেরে নিতে গেলাম । কান্না কাটি শুরু করে দিল। ভক্তদের মনের অবস্থা এবং ম্যাচুওরিটি আমার শিশুপুত্রের চেয়ে বেশী কিছু না।
হিন্দি একটা ছবি দেখেছিলামঃ “দিল্লি 6”, এই মন্দির আর মসজিদ নিয়েই। রাম, খোদা, কালা বান্দার (শয়তান) যে সবার ভিতরে সেইটা কেউ দেখেনা, বাইরে খুজে মরে, আর মারামারি করে।
:yes:
এত ঝামেলা না করে যদি ওখানে উপাসনালয় স্থাপনই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হত, তাহলে মনে হয় ভাল হত।
@পৃথিবী,
ঠিক তাই; শিশু নিকেতন করলেও ভালো হতো।
@পৃথিবী,
সেটাই নেহেরু করেছিলেন ১৯৪৯ সালে। কারন উনি নাস্তিক ছিলেন। প্রকৃত ধর্ম নিরেপেক্ষ ছিলেন। রাজীব তালা খুলতে গন্ডোগল শুরু হয়। আবার প্রমানিত হল নাস্তিক না হলে প্রকৃত ধর্ম নিরেপেক্ষ হয় না। এর বেশী কিছু বলার নেই।
@বিপ্লব পাল,
নাস্তিক মানে হলো যে সৃষ্টিকর্তা মানে না আর সৃষ্টিকর্তা কেন্দ্রিক ধর্ম মানে না। যার ফলে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা বা কোন ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব সে কখনই দেখাবে না। এটাই স্বাভাবিক। একজন লোক যে ধর্মের অনুসারী হবে সে জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে স্বধর্মের মানুষের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাবেই তা সে যতই উদারমনা হোক না কেন। সেকারনেই তো বিচারপতিরা ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিল। তবে শুধু নাস্তিক না , খালেদা জিয়ার মতে – শিশু ও পাগলরাও নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গীর অধিকারী – আমিও তা বিশ্বাস করি।