পাগল আমাদের সমাজে অতি পরিচিত এবং বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ ।সেই শব্দটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে সামাজিক, পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যার সূত্র। কিন্তু একটা মানুষকে পাগল আখ্যা দিয়ে সমাজ নিস্তার পায়। সেই সাথে থাকে ঘৃণা, বঞ্চনা, অপমান। কিন্তু এই কথা সমাজ চিন্তা করে না যে এটাও দশটা রোগের মতো রোগ এবং যার পিছনে থাকে শরীর বৃত্তীয় কারণ। জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে কোন উন্নত ঔষধ ও বিভিন্ন থেরাপি থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা হয় তন্ত্র-মন্ত্র, কবজ, তাবিজ, মাদুলি দিয়ে। তা থেকে তথা কথিত শিক্ষিত মানুষও ব্যতিক্রম নয়। অথবা কাউকে বলতে শুনি সব তো কপালের দোষ বা আগের জন্মের পাপের শাস্তি, এই সব যখন শুনি তখন মনে হয় যে শিক্ষার উদ্দেশ্য মানুষের গুনগত পরিবর্তন এবং সুন্দর সমাজ গঠন তা যদি না হয় তা হলে এই শিক্ষা অর্জন করে লাভ কি? আসুন পাঠকবৃন্দ আমরা সংক্ষেপে কিছূ মানসিক রোগ সম্পর্কে জেনে নেই।
প্রথমত আমি যে রোগের কথায় সেটার নাম হল ডিপ্রেশন ।আমরা সবারই
কোন না কোন সময় মন খারাপ হয় আবার ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু যদি কারও দু-সপ্তাহের বেশী সময় ধরে বিষন্নতা চলতে থাকে তখন ধরতে হয় ডিপ্রেশেন রোগ হয়েছে । এই রোগের লক্ষণ সাধারণত ব্যাক্তিসত্তার উপর নির্ভর করে। যেমন সাধারণ অবস্থা থেকে চুড়ান্ত পযায়ে থাকতে পারে। জীবনের উদ্দম্যের অভাব, আত্মবিশ্বাসের অভাব, ক্ষুদা কম বা বেশী, ঘুম কম বা বেশী, আত্মহত্যার প্রবণতা ইত্যাদি। আর কারণ বলতে গেলে একে তিনভাগে ভাগ করা যায় ১) শরীরবৃত্তিয় ২) মনস্তাতিক কারণ ৩) সামাজিক কারণ।
* শরীরবৃত্তীয় কারণ :- আমদের মস্তিষ্কে অবস্থিত নিউরোট্রান্সমিটার রাসায়নিক খবর আদন-প্রদান করে থাকে। তার মধ্যে যদি Noradrenaline ও Serotonin রাসায়নিকের স্তর নিউরোট্রান্সমিটারের মধ্যে কমে যায় তা হলে ডিপ্রেশন দেখা দেয়। তাছাড়া আছে জিনগত কারণ মা-বাবার ডিপ্রেশন থাকলে সন্তানের মধ্যে ডিপ্রেশন হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া হরমোনের অস্বাভাবিকতা ও একটি বড় কারণ এই রোগের।
* মনস্তাতিক কারণ :- এই ক্ষেত্রে ব্যক্তির উপর নির্ভর করে যেমন যারা অতিরিক্ত উচ্ছাবিলাসী, বদ্ধধারণায় জর্জরিত এই ধরণের লোকদের সাধারণত ডিপ্রেশনের কবলে পড়ে।
* সামজিক কারণ :- সাধারণত নানা আঘাত যেমন প্রিয়জনের মৃত্যু, পরীক্ষায় অসফলতা, বিবাহ বিচ্ছেদ এবং যারা একাকিত্ব জীবন যাপন করে তাদের মধ্যে ডিপ্রেশন বেশী দেখা যায়।
এই রোগের উন্নত চিকিৎসা সম্ভব কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় রোগী চিকিৎসার বাইরে থাকে এবং দু:খজনক ভাবে শেষ পরিনতি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
এখন আমি যে রোগটা নিয়ে আলোচনা করবো তার নাম অবসেসিভ
কম্পালসিভ ডিসওর্ডার এই রোগ একধরণের উদ্দেগজনক বিশৃঙ্খলা বলা চলে। এই ধরণের রোগীর মনে বিভিন্ন অর্থহীন চিন্তা বারবার ঘুরে আসে। রোগী বুঝে যে তার চিন্তাগুলি অর্থহীন এবং সে যথা সম্ভব তা দূর করার চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পযন্ত তার চিন্তাগুলি তার মন দখল করে। অর্থাৎ কোন বদ্ধধারণার বশবর্তী হওয়াকে অবসেশন। আর ঠিক একই ভাবে কোন উদ্ভট বা অর্থহীন কাজ করাকে বলে কম্পালশন। যেমন এই ধরণের রোগীরা বারবার হাত ধোয় ,স্নান করে, কোন কাজ করলে বারবার দেখবে তা ঠিকই হয়েছে কিনা যেমন বারবার দেখবে সে দরজা লাগিয়েছে কিনা। বা টাকা গুনতে দেয়া হল বারবার দেখবে টাকা গুনা হয়েছে কিনা।এই সব রোগীরা সাধারণত খুতখুতে স্বভাবের হয় এবং তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব থাকে।
এই রোগ ও ঔষধ এবং থেরাপীর মাধ্যমে সারানো সম্ভব কিন্ত সাধারণত সামাজিক এবং পারিবারিক সচেতনার অভাবে রোগী চিকিৎসার বাইরে থাকে। সাধারণত এইসব রোগীদের বলতে শুনি লোকটির স্বভাব খারাপ।
এই রোগের কারণ বলতে গেলে বিভিন্ন মত আছে তার মধ্যে সাধারণত শৈশবে অতিরিক্ত কড়া নিয়ম মানবার ফলে এইসব রোগ দেখা যায়। তাছাড়া আমাদের মস্তিষ্কের যেসব অংশ আমাদের চিন্তাধারা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রন করে সেইসব অঞ্চলের বিশৃংখলার ফলে এই রোগ হয়।
অ্যাংজাইটি ডিসওর্ডার এইরোগের রোগীরা সবসময় একটা অপ্রীতিকর কিছূ ঘটার
ভয়, ফলে মানসিক চাপ এবং তার ফলে নানারকম শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয় অ্যাংজাইটি অনেক মনরোগে থাকতে পারে তবে এই রোগে প্রধান লক্ষণই হল আতঙ্ক।
কারণ বলতে গেলে কিছূটা জিনেটিক আর শৈশবে কোন ভীষণ ভয়ংকর অভিজ্ঞতা শিশুদের মনে চিরস্থায়ী আতঙ্কের কারণ হয়ে দাড়ায়।
প্রধান লক্ষণ আতঙ্ক বা উদ্বেগ, রোগীর মনে সব সময় একটা ভাব কখন কি হয়? কিন্তু এই “কিছু” সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণার অভাব। এই আতংকভাব তরুণ বয়স থেকে শুরু করে সারাজীবন চলতে থাকে।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে ঔষধ ও সাইকোথেরাপী বিশেষ কায্যর্করী।
হিষ্টিরিয়া এইরোগে রোগী বিভিন্ন রোগ তার নিজের সুবিধায় সৃষ্টি করে কিন্তু অবচতেনভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে নয়।
কারণ বলতে গেলে বংশগত কারণ বড় নয় আসল হল পরিবেশ। যারা ছোটবেলায় শৈশবে অতি মাত্রায় আদর দেওয়া হয়। এবং যাদের অতি আদরের ফলে বাস্তব থেকে দূরে রাখা হয় তাদের পরবর্তী সময়ে কঠিন বাস্তবের সম্মুখীন হওয়ার ফলে অচেতন ভাবে হিষ্টিরিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।
লক্ষণ বলতে গেলে যে কোন রোগের লক্ষণ থাকতে পারে। যেমন হঠাৎ অন্ধতা, বধিরতা, মাথাব্যাথা, মানসিক অবসাদ, ফিট, বাকরোধ।
এইরোগেও সাইকোথেরাপীর পাশাপাশি মেডিসিন ব্যবহার করতে হয়।
সিজোফ্রেনিয়া এইরোগকে মোটামোটী উন্মাদ অবস্থা বলা চলে। এইরোগে
সাধারণত রোগীর চিন্তা শক্তি কমে আসে। রোগীর বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা জন্মায়। যেমন কেউ তাকে পাছে ছুরি মারছে। রোগী কানের কাছে বিভিন্ন ভ্রান্ত শব্দ শুনতে পায়। এই রোগের সমস্যা হল রোগী বুঝতে পারে না সে যে একজন রোগী।
এইরোগের পেছনে বংশগত এবং পারিপাশ্বিক কারণ কাজ করে।
সুচিকিৎসায় রোগী প্রায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। কিন্তু মেডিসিন দির্ঘ্যদিন চালিয়ে যেতে হয়।
রোগের লক্ষণ কমে এলে সাইকোথেরাপী বিশেষ কায্যর্কর হয়।
সাইকো সোমাটিক ডিসওর্ডার এর অর্থ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যা ও চাপের ফলে দেহে প্রকৃতই রোগের উদ্ভব হয়। এগুলোকেই বলে সাইকো সোমাটিক ডিসওর্ডার।
চিকিৎসা মানসিক সমস্যার সঠিক মূল্যায়ন করে সমস্যাগুলির সমাধান করা। এবং লক্ষণ বোঝে সঠিক চিকিৎসা।
তাছাড়া ও আছে আরো বিভিন্ন মানসিক ব্যাধি যা সঠিক চিকিৎসায় একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব। আমি আজ পযন্ত কোন রোগীকে দেখিনি তুক-তাক বা সাধুবাবা -পীরবাবার মাধ্যমে ভাল হতে। যখন তুকতাকের মাধ্যমে রোগী ভাল হয় না তখন ঔ ধুর্ত বাবাদের বলতে শুনি কোন শয়তানের শক্ত থাবা রোগীর উপর পড়েছে এবং তাকে সুস্থ করা সম্ভব নয়।
সবশেষে বলব অন্ধবিশ্বাসের বশবর্তী না হয়ে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা করান। সেই সঙ্গে প্রয়োজন সামাজিক চেতনা, দাম্পত্য সম্পর্কের সঠিক মূল্যায়ণ, ছেলেমেয়েকে সঠিক বাতাবরনে গড়ে তোলা। যেমন অতিরিক্ত শাসন বা অতিরিক্ত স্নেহ শিশুদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। স্কুল স্তর থেকেই শারিরীক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের পাঠ্যক্রম চালু করা।
আমি আবারও বলছি চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মত মানসিক চিকিৎসা ও উন্নতস্তরে পৌছেঁ গেছে। আর কোন রোগীকে পাগল আখ্যা না দিয়ে দূরে সরিয়ে রাখবেন না। সুস্থ মানসিক চেতনাই সুস্থ সমাজ গঠনের হাতিয়ার।
আমার শৈশব (৪ বছর)থেকে বর্তমান পর্যন্ত কোন স্মৃতিই ভুলি নাই, ভুলতে চাই কিন্তু পারি না। আনন্দ, কষ্ট সব কিছুই চোখের সামনে ছবির মতোন ভাসে। আমি এ থেকে কি করে পরিত্রাণ পেতে পারি?? এটা কোন ধরনের রোগ???
প্রিয় সুমিথ দেবনাথ ভাইকে বলছি…
আমি দীর্গ দিন ধরে সিজোফ্লেনিয়ায় আক্রান্ত,প্রথমে যখন আমার এই রোগ হয়ে ছিল তখন আমার অবস্তা খুব খপরাপ ছিল এখন আমি মোটা মুটি ভালোর দিকে, ডক্তার ওষুদের পরিমান ও কমিয়ে দিয়েছে, এখন আমার প্রশ্ন এই রোগ কি চির তরে নিরমূল হয়
মন্তব্য…আমি এমনিতেই রাগী মেজাজের ছিলাম। তবে প্রায়ই দুবছর ধরে রাগের মাত্রা অসাভাবিক বেশি হয়ে গেছে। এমন কিছু সময় পার করেছি যে আত্মহত্যা চেষ্টা করছি অনেক বার। হয়তো কপাল জোরে বেচে থাকা । এখন আর আত্মহত্যার কথা মাথায় আসে না । তবে রাগটা যেন আমি কমাতেই পারছি না । কি করা উচিত এখন আমার?
লেখককে ধন্যবাদ এই রকম একটি সময় উপযোগী লেখার জন্য। obsessive compulsive disorder রোগটা আমার ও আছে। দরজা ও চুলা বন্ধ করেছি কি না তা বার বার চেক করে দেখি। বার বার মনে হয় বন্ধ করি নাই। তবে সবচেয়ে ভালো হত লেখক যদি কোন একটি রোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতেন।
একমাত্র হোমিও চিকিতসা ছাড়া আর কোনভাবেই আপনি এর থেকে মুক্তি পাবেন না ।
Comment…মদ গাজা খেলে কি ডিপ্রেশন হয়? আমি পর পর দুবার ডিপ্রেশনের সমস্যায় পরলাম।
তবে এখন চিকিৎষকের পরামর্শ নিয়ে ভাল আছি। আমি সারাজীবন ভাল থাকতে চাই। কিভাবে ভাল থাকব।
গত বছর আমার এক চাচা ও চাচার ছোট ছেলে মারা গিয়েছিল সেখান থেকে আমার মনের মধ্যে মৃত্যুভয় কাজ করে আর যদি একটু শরীর থারাপ হয় তাহলে মনে হয়েএ আর ভাল হবে না আমি বোধ হয় এবার মরে যাব। তা ছাড়া রুমে ভিতরে রাতে একা একা থাকলে মনে হয় কোন মৃত ব্যক্তি আমাকে ডাকছে বা আমার সামনে এসে দেখা করতেছে। দয়া করে এ থেকে উ্ত্তরনে জন্য আমাকে যদি একটু পরামর্শ দিতেন তাহলে আমি উপকৃত হতাম। আমার বয়স 24 বছর।
প্রয়োজনীয় লেখা।
@স্বাধীন, ধন্যবাদ।
লেখাটার জন্য অসম্ভব ধন্যবাদ লেখককে। আমার শৈশব ও যৌবনের শুরুটা আমি অনেক কঠিন সময়ের ভিতর দিয়ে গিয়েছি। ডিপ্রেশনটা বলতে গেলে একটা স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে ভিতরে, কিন্তু ঘুমিয়েই থাকে। যখন ওটা জেগে ওঠে, তখন বুঝি, একটা মানুষকে শেষ করে দিতে এরকম একটু কিছুই যথেষ্ট। যদিও, এখন আমার ডিপ্রেস্ড হবার মত কিছু নেই।
আমার আরএকটা সমস্যা হল হঠাৎ ঘাবড়ে যাওয়া, বুক ধরফড়। যদিও খুব ক্ষনস্থায়ী হয় ব্যপারটা। এই জিনিসটাকে কী বলে? আমি জানি নিজের জন্য নিজে ডাক্তার হওয়া সবচেয়ে ভালো, সবকিছুই নিজের উপর ডিপেন্ড করে। আমি সমস্ত প্রতিকুলতা পারি দিয়েছি নিজের আত্মবিশ্বাসের সাথে। আমি এই সম্যাটাকে দূর করতে চাই। চেষ্টা করছি…
@শ্রাবন মনজুর, আপনাকেও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আর অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা ধরা ছোয়ার বাইরে চলে যায় তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়।
শুনেছি মনোবিজ্ঞানের তত্ত্ব মোতাবেক প্রতিটি মানুষের মধ্যেই নাকি সামান্য হলেও কিছু না কিছু মনো বৈকল্য বিদ্যমান। সে কারনে আমি মনোবিজ্ঞান সম্পর্কিত কোন ব্যখ্যা বিশ্লেষণ পড়ি না পাছে আমারও না কোন মনো বৈকল্য ধরা পড়ে। পরে তাহলে নিজেই নিজেকে পাগল কিসিমের মনে করব এই ভয়ে। :-X
এসব মেনে চললে মনে হয় অনেক সমস্যা এড়ানো সম্ভব!
সুখী,সুস্থ শৈশব আসলে পরবর্তী জীবনের ওপর প্রভাব ফেলে!
লেখাটা বেশ দরকারী।
আমাদের দেশে দুঃখজনক ভাবে এ বিষয়ে একেবারেই মনযোগ দেয়া হয়না।
এরকম লেখা আরও লিখবেন আশা করি!
@লাইজু নাহার, আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ঠিকই বলেছেন শৈশবই হল পরবর্তী জীবনের ভিত্তি সেটাকে সঠিক ভাবে গঠন করলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
আপনি যে সমস্যাগুলোর কথা বললেন তার মধ্যে আমি ভয়ানক ডিপ্রেশন, অবসেসন, এংজাইটি ডিসর্ডার, এবং Adult Attention Deficit Hypersensitivity Disorder (Adult ADHD) এ ভুগছি। কতটা যে কস্টের তা আমি জানি। অনিদ্রা যে কত বড় একটা সমস্যা তা গত দু বছরে বেশ ভালভাবে বুঝেছি। 😥
@লীনা রহমান,
আপনার যেটা প্রয়োজন তা হলো দীর্ঘমেয়াদী কাউন্সিলিং সেশন। দেরী করা উচিৎ হবে না।
@সংশপ্তক, আমি জানি আমার কাউন্সিলিং দরকার। কার কাছে যেতে পারি? কোন পরামর্শ?
@লীনা রহমান,
নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে প্রথমেই যেতে হবে একজন ভালো জিপির কাছে । প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে সেই জিপি আপনাকে একজন ভালো কাউন্সিলরের কাছে পাঠাবে। খুবই সোজা সাপটা প্রসেস।
@লীনা রহমান, আমি জানি এই সমাজ ব্যবস্থায় কতটুকু ভাল থাকা যায়। তবু আমাদের ভাল থাকতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে একটি সুন্দর সমাজ স্থাপনের জন্য লড়াই চালাতে হবে।এবঙ তার জন্য আমাদের ভাল থাকতে হবে।
মানুষের মন এক অদ্ভুত বস্তু। মন একবার যাকে বিশ্বাস করে, সেই বিশ্বাস যদি কোনভাবে সামান্যও ভঙ্গ হয় তাহলে মনের উপর অনেক চাপ পড়ে। এতটা যে, ভেতরে মনে হয় সব উলট-পালট। কেমন পাগল পাগল লাগে। কত নারী তার স্বামী কর্তৃক বিশ্বাস ভঙ্গের ঘটনায় পাগল হয়ে আজ রাস্তায়! এর কোন চিকিৎসা কি আছে?
@mahmuda nasrin kajol, আমি তো বলালাম তার জন্য দাম্পত্য সম্পর্কের সঠিক মূল্যায়ন প্রয়োজন।
মানসিক রোগ বলতে অনেকেই শুধু গুটিকয়েক আচরণগত অস্বাভাবিকত্ব বুঝে থাকেন যা ঠিক নয়। Attention Deficit Hyperactivity Disorder (ADAH) এর কথা এ প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে যা শিশুদের মানসিক সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম। নিতান্ত বাঁদরামো বলে একে উপেক্ষা করা হয়।
প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে অন্যতম কিন্তু অবহেলা করা হয় এমন একটা সমস্যা Adult Attention Deficit Hypersensitivity Disorder (Adult ADHD)। আক্রান্তের লক্ষন :
প্রায়ই বলে থাকে ”আমি confused !!” , অতি উৎসাহ , বাচাল , অতি উদ্বেগ। এদের সবসময় শুধু একটি জিনিষ নিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় যেমন , বই পড়া , ইন্টারনেট কিংবা গান শোনা। কিন্তু এরা অনেক গুরুত্বপূর্ন কাজের কথা (যেমন , অ্যাপয়েন্টমেন্ট) প্রায়ই ভুলে যায়। বকেয়া বিলের কারনে গ্যাস, বিদ্যুৎ , ফোন ইত্যাদির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া এ ক্ষেত্রে ঘটতে পারে।
@সংশপ্তক, হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন মনোব্যাধি অনেক ধরণের হয়। আজকাল অপরাধীদের চিকিৎসা হচ্ছে। এবং অপরাধ করা এটাও এক ধরণের রোগ। বলা হচ্ছে ছোট থেকেই একটি শিশুর মধ্যে বোঝা যায় তার মধ্যে কতটুকু অপরাধ প্রবণতা আছে। এবং সেই সময় সঠিক চিকিৎসা করালে সমাজে অনেক অপরাধ কমিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।
খুব ভাল বিষয়, অত্যন্ত জরুরী জিনিস। মনরোগ সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। বিশেষ করে আমাদের দেশে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। আমার ব্যাক্তিগত ধারনা আমাদের দেশের একটা বড় সংখ্যক মানুষ নানান ধরনের সাইকোলজিক্যাল সমস্যায় ভোগেন যা সম্পর্কে তারা বা আশে পাশের লোকজন অবহিত না।
আমি কখনোই ডিপ্রেশনে ভুগি না। এটা কি অস্বাভাবিক কিছু? মানে আমার সংবেদনশীলতা কম বা তেমন কিছু? হয়ত কোন কারনে মন খারাপ হয়, তবে তা খুব দীর্ঘ সময় ধরে মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে না। মনে হয় বয়সের সাথে সাথে এটা হচ্ছে।
আশা করি আরো লিখবেন।
@আদিল মাহমুদ, হাঁ আমাদের সমাজে এটা একটা সমস্যা। আর আপনি যদি ডিপ্রেশনে না ভুগেন আর কোন কষ্ট না হয় অস্বাভাবিকতা না থাকে। তাহলে চিন্তার কিছু নেই।
ভাল লাগল পোষ্ট; বেস কিছু জিনিস জানলাম, আমার কোনটা আছে সেইটা মিলানোর চেষ্টা করছি,- এইটা কি কোন রোগ নাকি? 🙁
যাইহোক মেডিসিন কি ডাক্তার এর কাছে যেয়েই নিতে হয়? মানে ঐ মাথা ব্যাথা হইলেই যেমন প্যরাসিটামল খাই, 😀 এইটার কি তেমন কোন ঔষধ আছে? যেমন ঠান্ডা লাগলে হিস্টাসিন, পেটে গ্যাস হইলে এন্টাসিড, তেমন এর কি কোন সর্ট-কার্ট ঔষধ আছে?
ধন্যবাদ
@Russell, আপনাকেও ধন্যবাদ দেখুন মানসিক রোগে এমন রেডিমেট কোন ঔষধ নেই যে খেলাম আর সুস্থ হলাম। তার চিকিৎসার জন্য অবস্থা বুঝে ব্যাবস্থা নিতে হয়। তার জন্য নিশ্চয় সাইকিয়াটিষ্ট এর পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণত ডিপ্রেশনে SSRI জাতীয় ঔষধ ব্যবহার হয়।
@Russell, দেখুন মানসিক রোগে এমন কোন রেডিমেট ঔষধ নেই। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হয়। এবং তার জন্য একজন সাইকিয়ট্রিষ্টএর পরামর্শ নেয়া জরুরী।
আমার কৈশোরে অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসওর্ডার সমস্যা ছিল। মাঝে মাঝে একনাগাড়ে ৬ মাস বা এর চেয়েও বেশি সময় পর্যন্ত এ রোগে ভোগতাম। এটি কতটা যে কষ্টকর আমি তা জানি। মজার বিষয় হল এ রোগের কারণে একদম অহেতুক একটা বিষয় নিয়ে চিন্তা ঘুরে ফিরে মনের মাঝে চলে আসে- এভাবে আসতেই থাকে, আসতেই থাকে। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছিল, ঘুমালে দূর হয়- কিন্তু রাতেই যদিবা ঘুমটা ভেঙ্গে গেল তাহলেই এ চিন্তাটা চলে আসে। আমি নিজে তখন এ রোগ সম্পর্কে জানতাম এবং মাঝে মাঝে ভাবতাম- এ কী হাস্যকর বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করছি!! কিন্তু কিছুতেই রক্ষা পাওয়া যায় না। আর আমি যে এ সমস্যায় ভুগছি তা আমি ছাড়া আর কেউই টের পায় নি- কারণ আমার আচরণে কখনো অস্বাভাবিক ভাবটা আসত না। অনেকেই এ সমস্যায় কোনো না কোনো সময় ভুগে থাকে।
সুমিত দেবনাথ কে অনেক ধন্যবাদ এ লেখাটির জন্য। তাঁকে আরো লেখার জন্য বিণীত অনুরোধ করছি।
@সৈকত চৌধুরী,
‘অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসওর্ডার’ এটার জন্য যে কৈশোরে কতটা যন্ত্রনা পেয়েছি তা আসলে অবর্ণনীয়। সেসময় এমন উদ্ভটচিন্তা মাথায় আসত যে এখন সেটা চিন্তা করলে মনে হয়, কিভাবে এরকম এক একটা চিন্তা মাথায় নিয়ে দিন-রাত পার করতাম। যখন এমনকি 2-3 মাস পর অনেককষ্টে একটা চিন্তা মাথা থেকে দূর করতাম, তখন কোথা থেকে যেন অন্যচিন্তা এসে ভর করত। আমার চিন্তাধারার বিপরীতে কোন কিছু ঘটলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে মস্তিস্কে সেটা অবিরত ঘুরতে থাকত আর লজিক দিয়ে আমি সেই চিন্তা দূর করার চেষ্টা করতাম কিন্তু সেসময় আসলে লজিক কোন কাজ করত না।
আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাউন্সিলিং এর জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ থাকা দরকার। তাহলে অনেক শিক্ষার্থীই এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে।
@রনবীর সরকার,
আমি যতটুকু জানি,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে, টিএসসি’র দোতলায়।
@সৈকত চৌধুরী, মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের অনুপ্রেরণা আমার এগিয়ে যাওয়ার ধারা। সময়ের অভাবে লিখা আর হয়ে উঠে না তবু চেষ্টা করব আরো লেখা পোষ্ট করার।
@সৈকত চৌধুরী, আমারও এই সমস্যাটা আছে, তবে আমার ক্ষেত্রে এটা ঠিক রোগের পর্যায়ে পড়ে না।
@সৈকত চৌধুরী, ভাই আমি আপনার মত সমস্যায় ভূগছি