পোস্টের প্রথমেই বলে দেই যে এটি মোটেও বিজ্ঞান বিষয়ক কোন পোস্ট নয়। এখানে ধর্মবাদীদের কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমি কিছু যুক্তির অবতারনা করতে যাচ্ছি। জানিনা যুক্তিগুলো কতটা গ্রহনযোগ্য বা বাস্তবসম্মত হবে। তারপর প্রশ্নগুলো বারবার আসে বলে এগুলো নিয়ে প্রায়ই মাথায় চিন্তা খেলে। তাই কিছু সমাধান খোঁজার এই প্রচেষ্টা।
প্রশ্ন ১- মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র মেনে। তাহলে সেই সূত্রগুলো এলো কোত্থেকে? নিশ্চয়ই এর পেছনে কোন ঈশ্বরের হাত আছে!!
উ- এই প্রশ্নের সবচেয়ে সহজ উত্তর হচ্ছে যে আপনি আগে থেকেই ঈশ্বরে বিশ্বাসী হওয়ায় আপনার সব কিছুই ঐ ঈশ্বরে গিয়ে শেষ হয়!
এটা যুক্তির দিক দিয়ে কোন উত্তর হয় নি। আসুন যুক্তি খেলি। প্রশ্নের প্রধান টার্নিং পয়েন্ট কোনটি? অবশ্যই “পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র”।
এক্ষেত্রে প্রথমেই বলব যে, পদার্থ বিজ্ঞানের এই সূত্র গুলো মেনেই যে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হতে হবে এমন কোন কথা কি আছে? মহাবিশ্ব তো অন্য কোন ভাবেও সৃষ্টি হতে পারত। তখন বিজ্ঞানীরা অন্য কোন সূত্র খুঁজে নিতেন। মোদ্দা কথা হল এই যে, সূত্র অনুযায়ী কিছু হয় না, আমরাই আমাদের কাজের সুবিধার জন্য সব কিছুর ভেতর থেকেই একটা সূত্র খুঁজে নেই। কোন কিছুই নিয়ম মাফিক হয় না, আমরাই একটা ক্রম খুজে নেই।
এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন হওয়ায় এটার উত্তর পরবর্তী প্রশ্নগুলোতেও ক্রমান্বয়ে আসতে থাকবে।
প্রশ্ন ২-এই যে আপনি বললেন কোন কিছুই নিয়ম মাফিক হয় না(!!) কথাটাই তো ভূয়া! প্রতিদিন সূর্য পুর্ব দিকে উঠছে, পশ্চিমে অস্ত যাচ্ছে, এর থেকে নিয়মের বড় উদাহরন আর কিই বা হতে পারে!?
উ- ভালো প্রশ্ন। প্রথম কথা হল, এখানে আমাদের পৃথিবীতে সূর্য পুর্বে উঠে পশ্চিমে অস্ত যায়, কিন্তু অন্য কোন গ্যলাক্সিতে অন্য কোন সৌরজগতে হয়তো সেখানকার সূর্য উত্তরে ওঠে আর দক্ষিনে অস্ত যায়!
দ্বিতীয় কথা হল, দিকগুলো কারা ঠিক করে দিয়েছে? মানুষইতো কাজের সুবিধার জন্য উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম দিক নির্ধারন করে নিয়েছে! আপনি পুরো সৌরজগতের সাপেক্ষে চিন্তা করুন, তাহলে কিভাবে আপনি দিকগুলো নির্ধারন করবেন! পৃথিবীর সাপেক্ষে আপনি যে সব দিক ঠিক করছেন, সৌর জগতের সাপেক্ষে সে দিকগুলোর কোন অর্থ থাকে না, আবার সৌরজগতের সাপেক্ষেও যদি আপনি কোন দিক ঠিক করে নেন তাহলে মহাবিশ্বের মহাশুন্যের সাপেক্ষে সেই দিকেরও আবার কোন অর্থ থাকেনা!
প্রশ্ন ৩- এর পরেও আপনি প্রশ্ন করতে পারেন এই যে, আচ্ছা! দিকের কথা না হয় বাদই দিলাম!! তারপরও তো পৃথিবী একই ভাবে ঘুরছে, দিন হচ্ছে রাত হচ্ছে একই সময়ে বছর হচ্ছে, এগুলোও কি নিয়ম নয়?
উ-ভালো প্রশ্ন! কথা হল একই ভাবে ঘুরছে কে বলেছে! বছরের কোন সময় দিন বড় হচ্ছে, কোন সময় রাত। কোন সময় শীত পড়ছে, কোন সময় গরম। এই শীত গ্রীষ্মও কিন্তু প্রতি বছর মাস পরিবর্তন করছে, আগাচ্ছে পিছাচ্ছে। আবার সব দেশের ঋতুও এক না, দেশ ভেদে ভিন্ন, তা ও আবার পরিবেশগত কারনে দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে।
আবার যদি বছরের কথাই বলেন, যে সবসময়ই তো ৩৬৫ দিনে বছর হচ্ছে! তাহলে আবার ভূল হলো, প্রতি বছরই কিছু সময় বাড়তি থাকছে এবং প্রতি চার বছর অন্তর অন্তর একটা দিন আমরা বাড়িয়ে নিচ্ছি!
যা হোক, এগুলো কিছুটা অর্থহীন কথাবার্তা হয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন ৪- এই যে সব কিছু এত “ফাইন টিউনড”, সুক্ষ ভাবে বিন্যস্ত তার কি হবে? সব কিছু এমন ভাবে বিন্যস্ত যে এর একটু এদিক ওদিক হলেই পৃথিবীতে প্রাণের সৃষ্টি হত না! তাহলে?
উ- এটা আমার দেখা সবচেয়ে আজগুবি টাইপ প্রশ্ন! আরে ভাই, বৃত্ত থেকে বেরিয়ে তারপর চিন্তা করেন! আপনি একটা কাজ একভাবে চেষ্টা করে পারলেন না, তার অর্থ এই না যে কাজ টা আর কোন ভাবেই করা সম্ভব না। টমাস আলভা এডিসন ৫৯/৬৯ বার চেষ্টা করে তার মন মতো বাল্বের ডিজাইন করতে পেরেছিলেন। অর্থাৎ একটা কাজ একাধিক উপায়ে হতেই পারে। সৌরজগত এভাবে বিন্যস্ত না হয়ে অন্য ভাবে বিন্যস্ত হতেই পারত, পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বে না ঘুরে উত্তর-দক্ষিণেও ঘুরতে পারত, পৃথিবীর প্রাণীরা অক্সিজেনে শ্বাস না নিয়ে ক্লোরিনে শ্বাস নিতেই পারত!! একটা সম্ভাবনার দ্বার বন্ধ হওয়া মানে, হাজার খানেক সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাওয়া এটা নিয়ে নিশ্চয়ই কোন প্রশ্ন নেই!!
মজার ব্যপার হল, আমাদের ক্লাসে যখন আমাদের কে পৃথিবীর সব কিছুর নিয়মে (সব কিছুই সুন্দর ভাবে বিন্যস্ত, সব কিছুই নির্দিষ্ট form and order এ আছে! ঈশ্বর সব কিছুকে অতিমাত্রায় সুসজ্জিত করে বানিয়েছেন……ব্লা ব্লা ব্লা!!!) থাকা নিয়ে শেখানো হচ্ছিল এবং পরবর্তিতে ঐ বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট করতে দেয়া হল তখনই চিন্তা করতে গিয়ে আমার মনে হয় যে আদতে কিছুই নিয়মে নেই!
আমাদের চিন্তার ধারাকেই আমাদের সমাজ একটা নিয়মে বেধে ফেলেছে, তাই আমরা নিয়মের বাইরে কোন কিছুই চিন্তা করতে পারি না, নিয়মের বাইরে সব কিছুই আমাদের বিরক্ত লাগে। যেমন আমাদের দেশে মেয়েরা গ্রামে হাফপ্যান্ট আর টিশার্ট পড়ে ঘুরতে বেরুলে গৃহিনীরা ছি ছি করবে আর ছেলে বুড়োরা হা করে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে! কিন্তু অন্য কোন দেশে, বা আমাদেরই ঢাকা শহরের কোন কোন স্থানে ব্যপারগুলো অতিমাত্রায় স্বাভাবিক।
আবার ধরেন কেউ যদি ন্যংটো হয়ে ঘুরে তাহলেও আমরা তাকে পাগল বলব। কিন্তু ধরুন আস্তে আস্তে পৃথিবীতে এ ধরনের পাগলের সংখ্যা বাড়তে লাগল, তাহলে দেখা যাবে এরাই তখন সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে পড়ছে এবং কারো কাছেই ব্যপারটা আর অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে না!(আদিম যুগে মানুষ কিন্তু ন্যংটো হয়েই ঘুরত! আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই যে মানুষ বাইরে এত ভাব দেখায়, কিন্তু সেক্সের সময় পুরোপুরি অপরিচিত একটা মানুষের সামনেও ন্যংটো হয়ে যেতে মানুষের বাধে না, এবং ইন্টারনেটে পর্ন দেখার সময় বন্ধুদের নিয়ে কোন কোন সময় বড় ভাইদের নিয়ে দেখতেও বাধে না!!)
অর্থাৎ কি দাড়ালো, আমাদের কে যেভাবে দেখতে শেখানো হচ্ছে আমরা সব কিছুকে সেভাবেই দেখছি। আমাদের মন কে যদি বেধে না ফেলা হত, তাহলে দেখা যেত এক এক মানুষ একই বিষয় কে এক এক দিক থেকে ব্যখ্যা করত।
তাহলে বাস্তবিক অর্থে এসকল নিয়মের আদৌ কি কোন অর্থ আছে!!!!
[আমার ধৈর্য অত্যন্ত নিম্ন মানের! তাই এক বসায় কোন লেখা শেষ করতে না পারলে পরে সেই লেখায় আর কখনো হাত দেয়া হয় না! তাই আমি ক্ষমাপ্রার্থী, কারন আরো প্রশ্ন-উত্তর আসতে পারত। কিন্তু আমার ধৈর্যহীনতার কারনে আমি আর কষ্ট করে গবেষণা করতে যাইনি!!!এই পোস্টটা দেয়া মোটেই উচিত হচ্ছে না!! :P]
পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মগুলোর উৎস নিয়ে ঃ
হকিং তার গ্র্যাণ্ড ডিজাইন বইয়ে নিয়মের নীতি (The rule of Law) শিরোনামের অধ্যায়টিতে পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র বলতে কি বুঝায়, কিভাবে সেগুলো উদ্ভুত হতে পারে তা নিয়ে বেশ কিছু অংশ জুড়ে আকর্ষনীয় আলোচনা করেছেন। যে প্রান্তিক বিষয়গুলো আলোচনার জন্য বেছে নিয়েছেন, তার মধ্যে আছে –
১) নিয়মগুলো কিভাবে উদ্ভুত হল?
২) নিয়মগুলোর কি কোন ব্যতিক্রম আছে?
৩) নিয়মগুলোর কি একটিই সম্ভাব্য সেট আছে?
এনিয়ে আমি রায়হানের পোস্টে মন্তব্য করেছি কিভাবে তিনি রিচার্ড ফেইনমেনের কোয়ান্টাম মেকানিক্সের এপ্রোচ ধরে এগিয়েছেন আর মহাবিশ্বের নিয়মগুলো কিভাবে উদ্ভুত হয়েছে, তার একটা বর্ণনা দিয়েছেন। বইটা পুরোটা পড়লে আরো ভালভাবে বোঝা যাবে সম্ভবতঃ। দেখি কোথায় যায়।
আজকে রাত ৯ টায় ল্যারি কিং এর প্রোগ্রামে স্টিফেন হকিং আসছেন। দেখি কি কহেন উনি সেখানে…
@অভিজিৎ,
ওহো ভুলেই গিয়েছিলাম। মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
অভিজিৎ এর মন্তব্য পড়ে ধারণা জন্মেছে যে (১) দর্শনশাস্ত্র দিয়ে সৃষ্টিকর্তার অনাস্তিত্ব প্রমান করা গেলেও, তার মতে শাস্ত্রটি সনাতন । তিনি মশা মারতে কামান দাগাতে চান, এমনকি এটম বোম মারতেও তার আপত্তি নাই । তা তিনি এটম বোমা মারুন, আমারও কোন আপত্তি নাই । আমি তাকে শুধু বলতে চেয়েছিলাম কামান বা এটম বোমের প্রয়োজন নাই; (২) সামাজিক সমস্যা সমাধানের উপায় বেড় করা নয়, তার একমাত্র কাম্য তর্ক করে জয়ী হওয়া এবং নিজ চিন্তাধারা অন্যের উপর চাপানো । ফলে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের সিদ্ধান্তে আসতে তার অনীহা । নিজ বক্তব্য চাপাতে ব্যর্থ হলে ফেউদের দ্বারা ব্যক্তি চরিত্র হনন আরম্ভ করেন । তিনি অন্যের বক্তব্যের গভীরে প্রবেশ করেন না; (৩) মানব জ্ঞানের যে কোন শাখার লোক দার্শনিক হোতে পারেন । কিন্তু একজন দার্শনিক পদার্থবিদ হোতে পারেন না । কারন পদার্থবিদ হোতে হলে বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন হয় । স্টিফেন হকিং যে দার্শনিক হোতে পারবেন না, আমিতো সে কথা বলি নাই । আধুনিক মানুষ তার জ্ঞান বিভাজন করতঃ জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন শাখার গন্ডি ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে । জ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে জ্ঞানের শাখাগুলি বিভাজিত হয়ে উপশাখা সৃষ্টি হচ্ছে । ঐকমত্যের এই গন্ডিই ডিকশনারিতে প্রতিফলিত হয়েছে । তবে আপনি যে ভাবে পদার্থবিদ্যার গুণ কীর্তন করলেন এবং সনাতন বলে দর্শনশাস্ত্রের অবমূল্যায়ন করলেন, আমি কিন্তু সেভাবে বিষয়টি অবলোকন করি না । আমার কাছে মানব জ্ঞানের সকল শাখাই সমতুল্য; (৪) বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড ঈশ্বর যে সৃষ্টি করে নাই এটা স্টিফেন হকিং এর নতুন কোন আবিষ্কার না । একশত ষাট/সত্তুর বছর পূর্বে বিবর্তন তত্ত্বসহ সৃষ্টিকর্তার অনাস্তিত্ব দার্শনিক তত্ত্ব স্বীকৃত । ডারইউন থিসিসের survival of the fittest বক্তব্যটি দার্শনিক বিবর্তন তত্ত্বের সাথে সাংঘর্ষিক বিধায় বাদ পরে যায়; (৫) আর্থিবসহ আপনি নিজ বক্তব্যের স্বপক্ষে যে সকল ব্যক্তির বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন, তা সর্বজনীন নয় । সমপর্যায়ের শতেকখানি ব্যক্তি, আপনার বর্ণিত ব্যক্তিদের বক্তব্যের বিরুদ্ধাচরণ করে বক্তব্য দিয়েছেন, যা ইন্টারনেটে খুঁজলেই পাওয়া যায় । এগুলি সবই ব্যক্তিগত অভিমত, কোন তত্ত্ব নয় । অর্থ্যাৎ বিষয়টি আলোচনার পর্যায় । তবে যুক্তিবিদ্যা শাখাটি যদি সর্বজনীন স্বীকৃত ভাবে পদার্থবিদ্যা জ্ঞান শাখায় যুক্ত করে দেয়া হয়, তখন ডিকশনারিতেও প্রতিফলিত হবে, তাতে আমার আপত্তি থাকার কথা নয় । আমি আপনার মতো closed system এ বসবাস করি না । আপনি মুহাম্মদ, ইসলাম, কোরান ও মুসলমানকে দেখেন জঙ্গী হিসাবে, যা সমাজ-বিজ্ঞান ও ইতিহাসের পরিপন্থী । সমাজকে আপনি দেখেন আস্তিক-নাস্তিক হিসাবে, যা আমার কাছে একই মুদ্রার পরস্পর বিপরীত দু’টি পিঠ । উভয়ের মধ্যই কিছু উগ্র মানুষ বিদ্যমান । এই উগ্ররা যথাস্থানে যুক্তি খুঁজে না । ফলে যুক্তির চেয়ে ঘৃনা তাদের মধ্যে বেশি কাজ করে; (৬) গণিতশাস্ত্রের “শূন্য” সংখ্যাটির সাথে আপনি যথেষ্ট পরিচিত । কিন্তু পদার্থবিদ্যার ক্যালকুলাস অনুযায়ী সকল সংখ্যাই শূন্যের দিকে ধাবিত । কোন সংখ্যাই শূন্যে রূপান্তিরিত হয় না । অর্থ্যাৎ শূন্য মানুষ (বস্তু) কর্তৃক সৃষ্ট একটি কাল্পনিক সংখ্যা । অনুরূপ ভাবে সৃষ্টিকর্তাও মানুষরূপী বস্তু কর্তৃক সৃষ্ট একটি কাল্পনিক সত্ত্বা । এবার আপনি হিসাব করে দেখুন পৃথিবীর ৬০০ কোটি মানুষের মধ্যে কয় হাজার নাস্তিক আছে ।
উপরুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এই ঐকমত্যে আসতে পারি যে আমাদের মধ্যে অনৈক্য বিদ্যমান । তবে সকলেরই মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে । মত প্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ দ্বিমত পোষণকারী বক্তব্যের বক্তাকে গালাগালি বা ঘৃণা প্রকাশ করা নয় ।
@আ. হা. মহিউদ্দীন, বেশ কদিন পর ব্লগে আসলাম। আমি বাম রাজনীতির তেমন কিছু বুঝি না স্বীকার করেই আপনাকে প্রশ্নগুলো করেছিলাম। বয়সের উপর বোঝা বা জানা সবসময় নির্ভর করে না মনে রাখলে ভাল করবেন। দেশে বাম ধারার রাজনীতি কোনদিনই (অন্তত আমার দেখা সময়ে) তেমন সক্রিয় বা গুরুত্বপূর্ন ছিল না বলেই জানার আগ্রহ সেভাবে বোধ করিনি। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মানে কি যদিও নিশ্চিত নই, তাও আমি যে উচ্চবিত্ত নই তা কেমন করে বুঝলেন? শ্রেনীহীন সমাজ শুনতে যত ভাল লাগে বাস্তবিক অর্থে সম্ভব নয় বলেই আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করি। বড়জোর বলা যায় যে সামাজিক বৈষম্য কোথাও কম আর কোথাও বেশী। আপনি তেমন ব্যাখ্যা না করে দ্বান্দিক বস্তুবাদ তত্ত্ব পড়ার পরামর্শ দিলেন। তত্ত্ব কথা না শুনিয়ে উদাহরন দিয়ে দেখানোটা সবচেয়ে ভাল। কেউ ইসলাম বা অন্য কোন ধর্মের নামে গোলযোগ সৃষ্টি করলে, বোমা মেরে নিরীহ মানুষ মারলে মানুষ সেই ধর্মকে সমালোচনা করবে না তা কি করে ভাবা যায়? বড়জোর তর্ক করা যায় যে ধর্মের দোষ কতটুকু আর ধার্মিকের দোষ কতটুকু সেটা। যদিও সেটাও হতে পারে খুবই প্রশ্নবিদ্ধ। ৯১১ এর পর বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের ফূর্তির দৃশ্য নিশ্চয়ই দেখেছেন। ধার্মিকের দোষ হলেও সে যেই ধর্মের দোহাই পেড়ে এসব করছে সেই ধর্ম অবশ্যই আলোচনায় আসবে। হিন্দু ধর্মের নামে এককালে মানুষ পোড়ানো হত, করা হত আরো নানান কুকুর্ম। এখন হিন্দু ধর্মের লোকেরা যদি বলেন যে তাদের ধর্মে তেমন কিছুই নেই, সব অন্য ধর্মের লোকদের মিথ্যা প্রচারনা আর অল্প কিছু পুরুত ঠাকুরের নিজস্ব মতামত তো আমরা মেনে নেব? ধরা যাক আজকে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন মুসলমান দেশে হিন্দু ধর্মের লোকেরা তাদের পূরানের শ্লোকের দোহাই দিয়ে মুসলমান মারা শুরু করলে ধর্মের ভূমিকা আমরা চেপে যাব? বলব যে হিন্দু ধর্মের কোনই দোষ নেই, অল্প কিছু সন্ত্রাসীর নিজস্ব দায়?
মন্তব্যকারী: আদিল মাহমুদ
তারিখ: সেপ্টেম্বর 8, 2010
আদিল মাহমুদ, লেখা পড়ে তো মনে হয় না যে আপনি রাজনীতি বুঝেন না । বক্তব্য আনুযায়ী ধরে নিলাম আপনি বাম রাজনীতি বুঝেন না । কিন্তু ডান রাজনীতি তো বুঝেন । কেন ডান রাজনীতি বুঝেন, কারন ওখানে কিছু লোকের স্বার্থ নিহীত আছে এবং আর কিছু লোক ঐ স্বার্থের ভাগিদার হোতে চায় । আর বাম রাজনীতিও হলো অগনিত সাধারণ মানুষের স্বার্থ । কিন্তু সাধারণ মানুষের বুঝার অভাব হেতু পেন্ডুলামের মতো ডান-বাম করে । আমার লেখা “জাতিয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধ ও তাজউদ্দীন”, যা সাতরং, খবর ডট কম ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধটি পড়তে পারেন । প্রবন্ধটি সাতরং এর নীচের দিকে আছে ।
আপনি যে মধ্যবিত্ত সেটা আমি কি করে বুঝলাম । দেখুন শিক্ষিত ইয়ং মধ্যবিত্ত ছাড়া উচ্চবিত্ত বা নিম্নবিত্তরা ধর্মকে গালাগালি করে না । আবার গালাগালি ও সমালোচনা বা আলোচনা এক জিনিষ নয় । দুই/চারটা লোক ধর্মকে বাহানা বানিয়ে মানুষ হত্যা করলো বলে ধর্মের দোষ হয়ে গেলে বলে আমি মনে করি না । বেশ কয়েকটি মার্কিন মিডিয়া চ্যানেল ৯/১১ এর জন্য CIA কে দায়ী করে । হ্যা এই সংস্থাটি পৃথিবীর বহু অঘটনের জন্য দায়ী । মধ্যপ্রাচ্যের রাজা-বাদশাহ ও শেখেরা ক্ষমতায় আছে এই সংস্থস্টির কারণে । উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ মানুষের কাছে এই সংস্থাটির কারণে মার্কিনীরা ঘৃণিত ।
@আ. হা. মহিউদ্দীন,
আপনি এটম বোমা, কামান যা ইচ্ছে উপমা ব্যবহার ব্যবহার করুন। আমার আপত্তি নেই, আপনি যে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান যে অধিবিদ্যা আর দর্শনের অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিতে সক্ষম এবং সেই শাখাগুলোকে প্রতিস্থাপন করতে চলেছে, সেই ব্যাপারটাই তো জানতেন না। আমি হকিং এর বই থেকে রেফারেন্স হাজির করে আপনাকে দেখিয়েছি। উদাহরণ হিসেবে হাজির করেছি আজকের দিনের বিখ্যাত দার্শনিকদের। অপার্থিব Harry Redner এর “The Ends Of Philosophy” থেকো উদাহরণ দিয়েছেন। তারপরেও আপনি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যেই ভাঙ্গা ঢোল বাজিয়ে চলেছেন সেটা দারুণ আনন্দজনক এবং বিনোদনময়।
ও হো হো। কি কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে। যিনি কোন তর্কই ব্যক্তিগত আক্রমণ (লক্ষ্য করুণ কীভাবে তানভীকে জিন পরিশুদ্ধ হবার উপমা ব্যবহার করেছিলেন) আর নিজের মার্ক্সবাদী কাঠামোর মধ্যে গড়ে উঠা চিন্তা অন্যের উপর চাপানো ছাড়া বক্তব্য দিতে পারেন না, আর যে যাই বলুক তালগাছ আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকেন, তিনি আজ এসেছেন এখানে গলাবাজি করে সামাজিক সমস্যা সমাধানের উপায় ‘বেড়’ করতে! আরে আপনি নিজেই তো এক মূর্তিমান সামাজিক সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন এখানে। সমাধান আপনাকে দিয়েই খুঁজতে হবে।
রিয়েলি? আপনি এই ব্লগে আসার পর থেকেই অর্থহীন প্রলাপ বকে চলেছেন ক্রমাগত। আমি এতোদিন ভদ্রভাবেই আপনার সাথে আলোচনা চালিয়েছিলাম। অন্যরা বহু আগেই আপনার বিভ্রান্তিতে পূর্ণ উদ্ভ্রান্ত কথাবার্তায় রিয়েক্ট করলেও আমি অন্ততঃ করি নি। অথচ আমাকেই দেয়া হচ্ছে ব্যক্তি চরিত্র হননের অপবাদ। আপনি আসলে শক্তেরই ভক্ত, বেশ বোঝা যাচ্ছে। আমি আপনার দর্শন সংক্রান্ত আপ্তবাক্যগুলো রেফারেন্স দিয়েই খণ্ডন করেছি, একটা বাক্যেও আপনাকে আক্রমণ করিনি। আর আপনি তার উত্তরে কি বলছেন দেখুন। যারা আপনার বক্তব্যের বিরোধিতা করছেন তারা নাকি সবাই আমার ‘ফেউ’! আসলে সবাই আপনার বিষাক্ত কথায় যেভাবে রিয়েক্ট করেছে, ঠিক সেভাবেই আমারো করা উচিৎ ছিলো। এখন থেকে যেরকম বক্তব্য দেবেন, ঠিক সেরকম পাটকেলটি খাবার প্রত্যাশা করতে পারেন।
গভীরতা থাকলে তো প্রবেশ করার ব্যাপার। আপনার অযাচিত তালগাছ মার্কা বক্তব্যে কারো পক্ষে ‘বক্ত্যব্যের গভীরে’ প্রবেশের আশা না করাই ভাল হবে। উপরে আপনাকে উদ্দেশ্য করে রৌরবের মন্তব্যটি দেখেছেন – আপনার অধিকাংশ মন্তব্য কোন যুক্তি বহন করেনা, ওগুলো স্রেফ ঘোষণা মাত্র। শুধু একটা সুডো-যুক্তির কাঠামো থাকে। আপনার উপরের বক্তব্যের গভীরতা সংক্রান্ত উক্তিটিও তারই সম্যক প্রমাণ, নয়?
প্যারটের মতো আমাদের কথাই রিপিট করলে হবে ক্যামনে? উপরে তো অপার্থিবই বলেছে দেখুন – ‘But who is the philosopher now? It is anybody, no matter from what profession, who carries out knowingly or unknowingly the functions of philosophy; often it is a scientist or scholar totally divorced from official philosophy.”
আমিও বলেছিলাম – ‘একটা সময় ছিল দর্শন জ্ঞান চর্চার মধ্যমনি। প্রাকৃতবিজ্ঞান ছিল তার সহচরী। এখন দিন বদলেছে – বিশ্বতত্ত্ব, জ্ঞানতত্ত্ব এমনকি অধিবিদ্যার জগতেও প্রাকৃতবিজ্ঞান বিশেষ করে পদার্থবিদ্যা শুধু প্রবেশ করেনি, দর্শনকে প্রায় স্থানচ্যুত করে দিয়েছে। অধিবিদ্যা জানতে হলে তো এখন আর ‘স্পেশাল কোন জ্ঞান’ লাগে না। কেবল ধর্মের ইতিহাস, নদন তত্ত্ব আর ভাষার মধ্যে আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর কোন পথ পায়নি আধুনিক অধিবিদ্যা। অন্যদিকে, আধুনিক পদার্থবিদ্যা আজকে যে জায়গায় পৌছেছে – সেটি অধিবিদ্যার অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারে।’
আপনি আর নতুন কি শোনালেন? একজন দার্শনিক পদার্থবিদ হোতে পারেন না । কারন পদার্থবিদ হোতে হলে বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন হয়। বাহ বাহ বাহ!, এজ ইফ এটা আমাদের অজানা ছিলো।
সংখ্যা দিয়ে বিচার করলেই সবকিছু সত্য হয়ে যায় নাকি? টলেমির সময় অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করতো সূর্যই পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে, আর কোপার্নিকাস, গ্যালিলিওর মত দুই একজন ভাবতেন বিপরীত। তো সংখ্যাধিক্যের কারণে কি তাদের মতামত সত্য হয়ে গেছে? তখন নিশ্চয় আপনার মত অনেকেই বলার চেষ্টা করতো এত কোটি মানুষের মধ্যে কয়জন বিশ্বাস করে যে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরেছে! এখনোও তো বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই বিবর্তনে বিশ্বাস করে না। আত্মা, ঈশর কিংবা জ্যোতিষ কিংবা অনুরূপ কুসংস্কারে ঢের বেশি লোক বিশ্বাস করে। সেজন্য কি বিবর্তন মিথ্যা আর কুসংস্কারগুলো সত্য হয়ে যাবে? শোনেন, আপনি মুক্তমনায় লেখার আগে একটু লজিক নিয়ে পড়াশোনা করুন, আর Argumentum ad numerum আর Argumentum ad populum ফ্যালাসিগুলো কি সেটা জানার চেষ্টা করুন। যে কথাগুলো নাস্তিক সম্বন্ধে বলছেন, সেই কথাগুলো আপনার দর্শন সম্বন্ধেও বলা যায় ৬০০ কোটি মানুষের মধ্যে কয় হাজার কমিউনিস্ট বা মার্ক্সিস্ট আছে? তারপরেও এইগুলা আবোল তাবোল কথা বলা ছাড়লেন না। আর অন্যদের বলছেন বক্তব্যের গভীরে প্রবেশ করেন না! আগে দেখুন নিজে কি লিখছেন।
শোনেন, কেউ মন্তব্য করলেই তার উত্তরে কিছু একটা লিখে দিতে হবে – সেটা যতই বস্তাপঁচা গার্বেজ হোক – এই মানসিকতা থেকে বেড়িয়ে আসুন। অর্থ থাকুক আর নাই থাকুক – শেষ কথাটা তো মনে হচ্ছে আপনাকেই বলতে হবে। নইলে আপনার আবার শান্তি হয় না।
আপনার বাকি মন্তব্যগুলো আমার জবাব প্রত্যাশা করারও অনুপযোগী। দে আর সো ওয়ার্থলেস দ্যাট, দে আর নট ইভেন রঙ।
@অভিজিৎ,
অভিজিৎ দা, আমার মনে হয় ওনার বক্তব্যের জবাব দেয়াটা নিস্প্রয়োজন। উনি ওনার মত আবোল তাবোল বকে যাক। ওদিকে নজর দিয়ে সময় ও শক্তি নষ্ট করার কোন মানেই হয়না।
@মিঠুন,
না না!! উনার জবাব না দিলে ক্যমনে হবে!! উনি কমেন্ট দেন আর অভি দা উত্তর দেন, আর আমার পোস্টের রেটিং হু হু কইরা বারতে থাকে!! উনি প্রথম কমেন্ট দেয়ার আগে আমার পোস্ট পাত্তাই পাচ্ছিল না (পাবে ক্যামনে! যে লেখা দিসি!!) আর উনি কমেন্ট দেয়ার পরেই আমার পোস্ট একদম শীর্ষ আলোচনায় চলে এসেছে! আজাইরা পোস্ট দিয়ে টপে আসার মজাই আলাদা! 😛
@তানভী,
:laugh: ভাই আপনি হাসাতে পারেনও বটে!
@তানভী,
:hahahee: :hahahee:
@মিঠুন,
আসলেই তাই মনে হচ্ছে। যখনই উনার যুক্তিগুলো খণ্ডন করা হয় তখনই আবোল তাবোল বকতে শুরু করেন। সামাজিক সমস্যা সমাধান করতে চান, কৃষকদের জন্য কাজ করতে চান, সাধারণ মানুষদের সাথে মিলে কাজ করতে চান… আরো কত কি। এগুলো বলে বলে আসলে মানুষের সহানুভুতি কুড়াতে চান, আর কিছুই না। উনাকে চিনতে এই ব্লগে আর কারো বাকি নেই। উপরে ফরিদ ভাই তো বেলেই দিয়েছেন, উনার শবযাত্রার সময় হয়ে গেছে তবুও উনি শিষ্টাচার শিখলেন না। কিছু দিন পর পর এর ওর ঘা খেয়ে পালান, আবার দেখি নির্লজ্জের মতো ফিরে আসেন এক রাশ কুযুক্তির নৈবদ্য নিয়ে। যে মুক্তমনা নিয়ে তার এত অভিযোগ, সেখানেই পড়ে থাকেন এক মুঠো ‘আঁতেলেকচুয়াল’ ভিক্ষের আশায়। সত্যই বিচিত্র।
@অভিজিৎ, মহানুভবের পদধূলিতে প্রবন্ধগুলির জনপ্রিয়তা বারছিল। এহেন মহেনন্দ্রক্ষনে উনাকে এই ভাষায় বলা ঠিক না। উনি চলেগেলে আমাদের জীবন থেকে বিনোদন কমে যাবে। আজকাল সব কিছুই দুর্মল্য হচ্ছে বাজারে-বিনামুল্যে বিনোদন পাওয়াও কঠিন হচ্ছে-সে অবস্থায় আমার পার্থনা, সেতারা হাসেম পিশি বা মইউদ্দিন পিশে ফিরে আসুন।
বাই দি ওয়ে-পশ্চিম বঙ্গের বামেদের মনোভাব এবং বিদ্যার দৌড় উনার মতন বা উনার চেয়েও কম। তাই উনার ওয়ার্লড ভিউকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত যেহেতু উনি একটি বৃহত্তম লেনিনিস্ট বাম জনগোষ্ঠির প্রতিনিধি। এনার্কিস্ট বামেরা অবশ্যই জ্ঞান গম্যিতে এই কমিনিউস্ট বামেদের চেয়ে এগিয়েই থাকে।
@ মুক্তমনার মডারেটরদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন ছিল। এই ধরণের বারবার দুই নম্বরি করা, ভারসাম্যহীন, চটি বই থেকে বাম রাজনৈতিক তত্ত্ব টুক্লিফাই করা একজন লোকের মন্তব্য কেন ছাপান আপনারা মুক্তমনায়? বারবার বিভিন্ন নামে বেনামে স্প্যামিং করার কারণেই তো একে ব্যান করে দেওয়া উচিত। মুক্তমনায় তার মন্তব্যগুলো না ছাপালেই তো উনি আবার ওনার অরিজিনাল ধর্মীয় সাইটে ফুলটাইম ফেরত যেতে পারেন, এভাবে কমেন্টগুলো পোষ্ট করে অযথাই ওনার সময় নষ্ট করাচ্ছেন আপনারা :laugh: ।
@ফাহিম রেজা,
একমত না। আপনারা সৌভাগ্যবান যে এখানে আপনাদের শুধু ইসলামিস্টদের উৎপাত সহ্য করতে হয়। আমাদের দিকের ফোরামে আমাদের কমিনিউস্টদের অত্যাচার সহ্য করতে হয়, যেখানে ৫ টা কমি একই বিষয়ে মন্তব্য করলে, সেগুলো এত এক গতে হয়-স্পামিং বলে মনে হবে।
কমিনিউস্টরা বাজে, ইসলামিস্টরা বাজে , হিন্দুইস্টরা বাজে-এগুলো যদি আমি বলি-লোকে আমাকে বিশ্বাস করবে না। এগুলো বিশ্বাস করার শ্রেষ্ঠ উপায় এদের কথা বলতে দেওয়া। আজকে দেখুন সদালাপে এখজন লিখেছে কি কি করিলে মুসলমান ধর্মচ্যুত হয়-বেশী না ১০ টা পয়েন্ট। ওই দশটা পয়েন্ট পড়েল যেকোন সুস্থ মস্তিত্বের লোক বুঝে যাবে ইসলামে কেন এত অসহিষ্ণুতা আর রক্ত। আমাকে বলতে হবে না।
অধিকাংশ মানুষের মন সুস্থ এবং যুক্তিবাদি।
@আ. হা. মহিউদ্দীন,
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর বক্তব্যের জন্য।
যুক্তির সাথে তর্ক থাকবেই। আলোচনা/সমালোচনা বিষয়টা অনেকের ভিতর পাওয়া যায়না, শুধু তর্কের দ্বারাই জিতে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা সবার ভিতরে, এক নেশা জেতার, অপরকে পরাজিত করার, তবে ইহাও জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্মেষের এক কারন। ব্যপারটা খুব সুন্দর যদিও- তবে উহা যখন ব্যক্তিগত আক্রমনে চলে যায় তখনই কেমন যেন …
যাইহোক আপনার মন্তব্য আরও দেখার, পড়ার আশায় থাকলাম।
আসলে ব্যাপার হল, পদার্থ বিজ্ঞান, সূত্র, পৃথিবী… এমন কি ঈশ্বর এই শব্দগুলো কেবলই আমাদের সৃষ্টি। পৃথিবীর নাম আমরাই রেখেছি পৃথিবী। ঈশ্বরের নাম আমরাই রেখেছি ঈশ্বর! আমরা যখন মহাবিশ্ব নিয়ে আমাদের অনন্ত তৃষ্ণার উত্তর খুঁজছি, তখনই আমরা দেখছি, একটা নিয়মে চলছে সব। যেমন আমরা অক্সিজেন নিয়েই বেঁচে থাকছি। পৃথিবীরে প্রান জগৎ যে অক্সিজেন নিয়েই বেঁচে থাকবে এটাই আমাদের কাছে স্বাভাবিক, এই স্বাভাবিকতার আরেকটা নাম সত্য অথবা নিয়ম। নিপূণ গাণিতিক ব্যাপারগুলো বোঝাতে আমরা আমাদের জ্ঞান, পর্যবেক্ষনকে আমাদের মত সুবিধাজনক ভাগে ভাগ করে নিচ্ছি। তেমনই একটি ভাগ পদার্থবিজ্ঞান বা তার সূত্র। অন্তত একটা কথা নিশ্চিত, পদার্থবিজ্ঞান বা ফিজিক্স টার্মটার সৃষ্টি মানুষের মস্তিষ্কে। এখন ফিজিক্স কি? প্রকৃতি বা মহাবিশ্ব যে নিয়মে চলে, তাই। ইলেক্ট্রন প্রোটোন সমৃদ্ধ নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘুরবে, এটাই পদার্থবিজ্ঞান, এটাই প্রকৃতি, এটাই নিয়ম।
তাহলে প্রশ্ন আসে, এই নিয়ম গুলো এবং বস্তুর উৎপত্তি কোথা থেকে… নিয়ম পরে, আগে বস্তুর উৎপত্তি, তাই নিয়ে হকিং এর গবেষনা । উৎপত্তির হদিস পেয়ে গেলে তার মাঝেই বস্তু কিভাবে বিরাজ করবে তার উত্তর নিহিত। রেডিওঅ্যাক্টিভ ম্যাটেরিয়াল যে ক্রমাগত শক্তি বিকিরণ করবে, এটাই নিয়ম। নিয়ম আর কিছুই না, পদার্থের ধর্ম!
(হকিং এর নতুন বইটা পড়ার অপেক্ষায় আছি, সেটা না পড়েই এই মন্তব্য করা। বাকি আছে আরো অনেক জানা। তাই ধারণায় অসম্পূর্ণতা বা ভুল থাকতে পারে।)
একটা ব্যাপার কিন্তু সত্যি, উত্তপ্ত গলিত অবস্থা থেকে পৃথিবী যে পথে চলে বর্তমান অবস্থায় এসেছে, সেই পথে না চলে অন্য পথে চললে আজ পৃথিবীতে অক্সিজেন গ্রহণকারী প্রানী না থেকে ক্লোরিন গ্রহনকারী প্রানীও থাকতে পারত।
পদার্থবিজ্ঞান যখন উত্তর দিচ্ছে কিভাবে সৃষ্টি হল সব, তখন আমরা নাহয়, পদার্থবিজ্ঞানের উত্তর ভালোভাবে বুঝে তারপর প্রশ্নগুলো করি। কিন্তু সবচেয়ে দরকার হল, ঈশ্বর নামের চিন্তাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা। আমি পদার্থবিজ্ঞানে ঈশ্বর খুঁজতে গেলে চক্রে আটকে যাবো। একবার ভেবে দেখি, একটা সাদা পৃষ্ঠা, আগে কিছুই লেখা ছিল না, মানুষ তাদের পর্যবেক্ষনের কিছু ফলাফল সাদাকাগজে লিখেছে, মাঝে ভীরুর দল তাতে খেই না পেয়ে ঈশ্বর ঈশ্বর বলে পূজা করেছে, ঐ ঈশ্বর পূজার জায়গাগুলো বাদ দিয়ে বা মুছে ফেলে নিরপেক্ষ মনে আরেকবার জানার চেষ্টা করি সব।
আমাদের সমস্যা আমাদের অর্ধেক পাঠ, মধ্যিপথে ঈশ্বর পূজা, আর পরবর্তীতে পূজারীর চোখে বাকিটুকু জানার চেষ্টা করা। ঈশ্বর নামের একটা মানব আবিষ্কৃত ধারণা আমাদের চিন্তাকে বারবার বায়াসড করে দিচ্ছে। 🙁
[আমিই জওশন আরা, নীল রোদ্দুর নামের প্রতি আমার দূর্বলতা। চেয়েছিলাম এইখানে পিতৃদত্ত নামেই লিখব, কথা বলব। কিন্তু রোদ্দুর হবার লোভ সামলাতে পারলাম না। তাই পরিচিতি নাম নীল রোদ্দুর করে নিলাম। মুক্ত-মনা পাঠক, লেখক ও মডারেটররা, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরধ করছি আমার নীল রোদ্দুর এর প্রতি দূর্বলতাকে। প্রোফাইলে জওশন আরা নাম বহাল আছে। :)]
@নীল রোদ্দুর,
আহ, হা। তাহলে আপনি কোনো একটা নাম বেছে নিতে হবে এবং তা যদি “জওশন আরা” এর পরিবর্তে “নীল রোদ্দুর” হয় তবে সেক্ষেত্রে এডমিনের অনুমতি নেয়া অবশ্য প্রয়োজন। আর নামের সাথে মুক্ত-মনার আপনার ব্লগের লিংক জুড়ে দিলে সুবিধা হয়, তাই না?
@সৈকত চৌধুরী, ঠিক আছে। মুক্ত-মনা এডমিন এর অনুমতি চাইব। 🙂
নামের সাথে মুক্ত-মনা বাংলাব্লগের লিঙ্কও জুড়ে দেব। অনেক ধন্যবাদ পরামর্শের জন্য।
@নীল রোদ্দুর,
আপনি নীল রোদ্দুর কিংবা জওশন আরা – যে কোন একটি নাম ব্যবহার করতে পারেন। একাধিক নামে মন্তব্য না করলে আমাদের নীতিমালা অনুযায়ী ঠিক আছে।
আপনার নীল রোদ্দুর নামের লিঙ্কের সাথে আপনার ব্লগের লিঙ্ক যোগ করে দেওয়া হয়েছে মডারেটরের পক্ষ থেকে।
@মুক্তমনা এডমিন, ধন্যবাদ।
একাধিক নামে লিখতে বা মন্তব্য করতে চাইনি, নীল রোদ্দুর নামেই থাকতে চাই।
অভিজিৎ এর ভাল প্রত্যুত্তর দিয়েছে, হকিং কে উদ্ধৃতি দিয়ে। দর্শনের এই অবলুপ্তীকরণ খুব নতুন কিছু নয়, এটা বস্তুত কয়েক দশক ধরেই চলছে। আমি ঠিক এই বিষয়ের উপর ১৯৮৬ সালে লেখা Harry Redner এর “The Ends Of Philosophy” বই থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি। সময় ও কলেবর বিবেচনায় অনুবাদ করলাম না। উল্লেখ্য যে রেডনার বিজ্ঞানী নন। তিনি কলা বিভাগের অধ্যাপক । কাজেই পক্ষপাতদুষ্ট বলে নাকচ করে দেয়া যাবে না।
From Inside Jacket:
————————
“Philosophy today finds itself in a desperate predicament. Deprived by the sciences of
the capacity to deal with issues of substantive knowledge, fragmented and divided against
itself – philosophy might not continue much longer as anything other than an academic
discipline.
The Ends of Philosophy traces the ways in which this situation has arisen, going back to
the initial secession of science from philosophy at the start of the Scientific
Revolution. As a result of this continuing process of secession, metaphysics is now at an
end and philosophy itself is threatened with extinction.
The ending of metaphysics was accomplished within philosophy itself largely be the
critiques of the “great destroyers”: Marx, Nietzsche, Wittgenstein and Heidegger. The
book concentrates particularly on Nietzsche and Wittgenstein and seeks to turn their
destructive arguments against them so as to destroy their ways of philosophising.
However, the book does not rest on this negative conclusion, but proceeds to open up new
ways of philosophising; for example, it seeks a model for language-analysis in psyche-
analysis. No one with a concern for philosophy will want to ignore this often
provocative, wide ranging and penetrating discussion of the End(s) of Philosophy.”
Page 20:
———-
“However, there is this difference between the philosopher as specialized expert and
every other expert: the philosopher has no specific object or field that is peculiarly
his own. He is the expert on nothing — and everything. Every specialty that philosophy
has sought to preserve for itself has been taken over by the sciences and expropriated
from philosophy. Over the last two centuries philosophy has been gradually displaced from
one field to another as it has tried to escape the relentless pursuit of the sciences.
After metaphysics had to abandon the claim to the whole of Being, philosophy sought refuge
in epistemology and the mind, but that had to be given up to psychology and the scientific
methodologies. Philosophy tried to retreat into concepts and ideas, only to have to
abandon these to the new cultural sciences. The escape into consciousness was blocked by
psychoanalysis, which revealed the secondary nature of the conscious Ego as compared with
the unconscious systems that subtend it. For analogous reasons History had to be given
up to the sociologists and world-historians, Life to the biologists and cyberneticists
and Thought to the logicians and methodologists. Language had seemed a last refuge for
philosophers but philology, linguistics and semiology are now making it insecure, and,
before long, it, too, may have to be given up. A history of wrecks of modern schools of
philosophy since Kant is like a swathe of ruins beaten by the flight of philosophy from
the world, crushed under the relentless pursuit of ever newer sciences and humanities.”
Page 21-22:
—————
“Sociologically considered, the retreat of philosophy from the scientific world and its
withdrawal into its own purified spheres must be seen as a way of preserving itself from
having to face the scientific challenge. In their own departmental fastnesses
philosophers could busy themselves with matters in which by stipulation no scientist had
any competence and for which no philosopher need know any science or have any other
specialized knowledge. Indifference to outside knowledge began to typify the professional
philosopher. Secure from serious outside challenge, such philosophy has ipso facto
rendered itself obsolete. The problems and solutions of school philosophy are usually of
no. concern to anybody else. No scientist, historian or critic waits on the deliverances
of philosophy to resolve any one of his difficulties, for that which the philosophers say
is likely to be irrelevant to him.”
P-23:
——
“But who is the philosopher now? It is anybody, no matter from what profession, who
carries out knowingly or unknowingly the functions of philosophy; often it is a scientist
or scholar totally divorced from official philosophy.”
Pages 83-84:
—————–
“Within the university rationalisation produced departmental separations as the universe
of knowledge was parcelled out through a division of labour between the sciences.
Philosophy was pushed into a specialised department of its own and gradually displaced
from any substantive area of knowledge. It could only find room for itself in the
temporarily unoccupied gaps between the sciences. This process had already begun much
earlier during the second secession. As metaphysics was driven out from all natural and
cultural reality by the new sciences, so simultaneously was room opened up between the
sciences for new modern non-metaphysical philosophies to fill. But then these
philosophies too were continually expelled by the formation of yet other sciences filling
the gaps between the older ones. Still more specialised philosophies were devised to
escape the newer sciences, and these, too, were then threatened by still further
scientific developments. The structure of this total economy of knowledge following on
the second secession does explain the bewildering proliferation of usually short-lived
schools of philosophy whose ruins litter the historical landscape of the nineteenth and
twentieth centuries. Inmost cases, each of these schools resulted from a specific
configuration of sciences between whose interstices it was designed to fit. The total
field of philosophy thus became fragmented and scattered as each philosophy could only be
partial, and none could any longer hope for a general system to cover everything.
The process of fragmentation and displacement of philosophy begun earlier seems about
to complete itself in this era of the third and perhaps final secession of science. There
seems no place for Philosophy at all among the technosciences in the technocratic
‘multiversity’, the current successor of the old university. It is temporarily tolerated as
an antiquarian fossil only when it keeps to its own department. Outside it has no
relevance. The sciences hem it in from all sides and remove the ground from any aspect of
reality it might wish to occupy. The natural sciences deprive it of any say on the old
philosophical issues, such as matter, space, time, the nature of life, or of the universe.
The social sciences reject all its assump- tions about history, language or knowledge. On
behalf of a new discipline, the science of science, which is to take over from the
philosophy of science, Elias pronounces the concluding expulsion of philosophy from
science:
Transcendental philosophers often claim that they can prescribe
for sciences generally. Their claim ought to be firmly rejected.
Theirs is an esoteric enterprise of no relevance to the work of
social scientists, and probably not to that of natural scientists
either.
Bereft of all relevance to knowledge, philosophy seems about to come to an end. This final
outcome is not, however, fore-ordained, nor is it completely necessitated by present
intellectual conditions. It is true that the history of metaphysics is now a closed book.
It holds for us no unrealised possibilities or undiscovered truths. For us the question
‘what is metaphysics’ can only be answered in the past tense: metaphysics is what it was.
But this harsh verdict is not completely applicable to philosophy itself.”
P-96:
——-
“Modern science and philosophy had one by one critically to weaken and destroy almost
every element of method and principle in Aristotelian science before it could take its place. It
could not have succeeded in this without the support of a philosophy of reduction, though
this was at first limited.
This was where the work of the new epistemological philosophers was auxiliary to that
of the physicists. Philosophy assumed the role of what Locke called ‘the under-labourer in
clearing the ground, and removing some of the rubbish that lies in the way of knowledge’,
in the way, that is, of ‘master builders’ like the ‘incomparable Mr.Newton with some others
of that strain. Philosophy, no longer the queen of the sciences, was henceforth reduced
to being their handmaiden; it was restricted to studying the formation of ideas,
restricted, that is, to the basis of knowledge — knowledge itself became the preserve of
science.”
Pages 286-287:
——————-
“Others, however, have already resigned themselves to the demise of philosophy and turned
away from it to the history of science or the science of history, or alternatively to the
art of criticism or the criticism of art.
In an article on Nietzsche, de Man puts it quite explicitly ‘philosophy turns out to be
an endless reflection on its own destruction at the hands of literature’ . The reflection
is endless because the destruction is ‘a rhetorical mode … unable ever to escape from
the rhetorical deceit it denounces. Philosophy, on this account, is trapped in figures
of speech. Philosophy cannot get beyond or behind language, seen as figural and
rhetorical, to some external realm of reference, to Truth, Being, or even Society; it is
inextricably caught in language, that is, in the art and artifice of words. Hence, it is
consigned to literature, the primary mode of the figural disposition of words. Like
Polonius we ask: ‘what is the matter?’ in the book of philosophy, only to be told that it
is ‘words, words, words’. If it is nothing but words, ‘this is the same as saying that it is
structured as rhetoric. And since, if one wants to conserve the term “literature”, one
should not hesitate to assimilate it to rhetoric, then it follows that the deconstruction
of metaphysics, or “philosophy”, is an impossibility to the precise extent that it is
“literary”. So philosophy lives on because it is literature; it cannot be finally
destroyed because the destructive attempt is itself a literary trope doomed to continuous
self-repetition. But once one is aware of the internal irony of this literary game, why
one should keep on playing it out is not explained.”
এছাড়া ডকিন্স এর ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে বিবিসি তে দেয়া বক্তৃতাও উদ্ধৃতি করার লোভ সামলাতে পারলাম না।
“You could give Aristotle a tutorial. And you could thrill him to the core of his being. Aristotle was an encyclopedic polymath, an all time intellect. Yet not only can you know more than him about the world. You also can have a deeper understanding of how everything works. Such is the privilege of living after Newton, Darwin, Einstein, Planck, Watson, Crick and their colleagues.”
সনাতন দর্শনের ক্ষেত্রে উপরের উক্তি ঠিক ছিল, কিন্তু এখন আর নেই। আমার পোস্টে লজ্জিত হলাম এর উত্তরে যে কথাগুলো বলেছিলাম, সেগুলো এখানেও বলার প্রয়োজনবোধ করছি। আজকের দিনে কয়েকজন বিখ্যাত বিজ্ঞানের দার্শনিকের নাম বলতে বললে হকিং, ওয়াইনবার্গ, ভিক্টর স্টেঙ্গর, ডকিন্স -এদের কথা সবার আগেই চলে আসে। এরা কেউ প্রথাগত দার্শনিক নন, কিন্তু তবুও দর্শনগত বিষয়ে তাদের অভিমত যথেষ্ট গুরুত্বপুর্ণ হয়ে উঠেছে। একটা সময় ছিল দর্শন জ্ঞান চর্চার মধ্যমনি। প্রাকৃতবিজ্ঞান ছিল তার সহচরী। এখন দিন বদলেছে – বিশ্বতত্ত্ব, জ্ঞানতত্ত্ব এমনকি অধিবিদ্যার জগতেও প্রাকৃতবিজ্ঞান বিশেষ করে পদার্থবিদ্যা শুধু প্রবেশ করেনি, দর্শনকে প্রায় স্থানচ্যুত করে দিয়েছে। অধিবিদ্যা জানতে হলে তো এখন আর ‘স্পেশাল কোন জ্ঞান’ লাগে না। কেবল ধর্মের ইতিহাস, নদন তত্ত্ব আর ভাষার মধ্যে আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর কোন পথ পায়নি আধুনিক অধিবিদ্যা। অন্যদিকে, আধুনিক পদার্থবিদ্যা আজকে যে জায়গায় পৌছেছে – সেটি অধিবিদ্যার অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারে। মহাবিশ্বের উৎপত্তি আর পরিণতি নিয়ে একজন দার্শনিকের চেয়ে অনেক শুদ্ধভাবে লেকচার দিয়ে সক্ষম হবেন একজন হকিং কিংবা ওয়াইনবার্গ। ডিজাইন আর্গুমেন্ট নিয়ে অধিবিদ্যা জানা পন্ডিতের চেয়ে বিজ্ঞান থেকেই অনেক ভাল দৃষ্টান্ত দিতে পারবেন ডকিন্স বা শন ক্যারল। আজকে সেজন্য মহাবিশ্ব এবং এর দর্শন নিয়ে যে কোন আলোচনাতেই পদার্থবিজ্ঞানীদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়, এরিস্টটলের ইতিহাস কপচানো কোন দার্শনিককে কিংবা সনাতন ধর্ম জানা কোন হেড পন্ডিতকে নয়। মানুষও বিজ্ঞানীদের দার্শনিক কথাই শুনতে চায়, তাদের কথাকেই গুরুত্ব দেয়। গ্রান্ড ডিজাইন বইয়েও ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে – সনাতন দর্শনের প্রয়োজন দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, আর তার স্থান নিতে চলেছে আধুনিক বিজ্ঞান! আমার কথা যদি বিশ্বাস না করেন তবে সাম্প্রতিক বই গুলো – গড – দ্য ফেইল্ড হাইপোথিসিস, গড ডিলুশন, নিউ এথিজম থেকে শুরু করে গ্র্যান্ড ডিজাইন -এর মত বইগুলো কারা লিখছেন তা দেখলেই ট্রেন্ডটা উপলব্ধি ককরতে পারবেন।
তাও যদি কনভিন্সড না হন, তাহলে হকিং এর নতুন বই গ্র্যান্ড ডিজাইন থেকে তার অভিমত ব্যক্ত করি দর্শন এবং আধুনিক বিজ্ঞান সম্বন্ধে –
Traditionally these are questions (including existance of God) for philosophy, But philosophy is dead. Philosophy has not kept up with modern developments in science, particularly physics. Scientists (not philosophers) have become the bearer of the torch of discovery in our quest for knowledge (Grand design, page 5, ব্রাকেটের অংশগুলো আমার সন্নিবেশন)
কি বোঝা গেল?
@অভিজিৎ,
এটা ঠিকই অভিজ্ঞতাবাদ ছারা আর কোন কার্যকরী দর্শনের অস্তিত্ব আর থাকবে না। আমি ত এটা বিজ্ঞানবাদ প্রবন্ধে বহুদিন আগেই লিখেছিলাম।
কিন্ত তার পরেও কিছু দার্শনিক গুগলি আছে, যেগুলো খুব বৈজ্ঞানিক ভাবেই বিজ্ঞানের বাইরে থাকবে। এবং আমার মতে সেগুলো বর্তমান সমাজে অপ্রয়োজনীয়ও বটে।
যেমন আদি শঙ্করের অদ্বৈতবাদে বেশ কিছু প্রশ্ন আছে।
১) আমাদের অভিজ্ঞতা সসীম-কিন্ত সৃষ্টি অসীম। আমরা শুধু আমাদের দৃশ্যমান মহাবিশ্বকেই জানতে পারছি-তার বাইরে কি হচ্ছে জানা সম্ভব না।
২) তাহলে শুধু অভিজ্ঞতাবাদের ভিত্তিতে কি করে ধ্রুব সত্যকে জানা সম্ভব? ধ্রুব সত্য মানে যা অপরিবর্তনশীল। এই দৃশ্যমান মহাবিশ্বত পরিবর্তনশীল।
এই দুটি প্রশ্ন ভারতীয় অদ্বৈতবাদের ভিত্তি। আমার মতে এগুলি কোন প্রয়োজনীয় প্রশ্ন না-সত্যকে ধ্রুবক কেন হতে হবে আমি জানি না-কারন আমার কাছে একটি সত্য কার্যকরী সত্য হলেই চলবে। ফলে যদিও শঙ্করের আপত্তি সত্য-আমার কাছে তার প্রয়োজন নেই।
@অভিজিৎ,
মন্তব্যে দারুন ভাবে সহমত।
একই কথাটি আমার শেষ লেখায় বলেছিলাম যেটা এখানে দিচ্ছি আবারো।
@অভিজিৎ,
গ্র্যান্ড ডিজাইন বইটি তো বাজারে চলে এসেছে। দেখি কাছা কাছি বুক স্টোরে এসেছে কিনা।
@স্বাধীন,
আমাদের এখানে বার্নস এন্ড নোবেলে ২০% অফে দিচ্ছে। কালকেই পেয়ে গেছি। খুব বেশি বড় বই না। একেবারেই ক্ষুদ্রকায়া। অর্ধেকটা রাতেই পড়ে ফেলসি।
কানাডায় মনে হয় বার্ন্স এন্ড নোবেল নাই, বর্ডাস আছে…না?
@অভিজিৎ,
না কিছু নাই। লোকাল এক লাইব্রেরীতে ফোন দিলাম। ওদের কাছে আছে কিন্তু দাম বেশি মনে হল। চাইল ৩৩ কানাডিয়ান ডলার। বরং আমাজন কানাডাতে ২০ ডলার। আমাজন.কমে ১৫ ইউস ডলারে দিচ্ছে। সেখানে থেকে কিনেলে শিপিং সহ কমই পড়বে। কিন্তু কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে এই আর কি 😥 । আপনার ওখানে কত পড়লো তাহলে। অরিজিনাল দাম কত? ২০ ইউস ডলার?
@অভিজিৎ,
মেজাজটা কেমন খারাপ হয় দেখেন। এখন ইউস এবং কানাডিয়ান ডলার প্রায় সমান। অথচ কানাডায় বইটার দাম ধরা হয়েছে ৩৩ ডলার। হওয়া উচিত ২১/২২ কানাডিয়ান ডলার। তার উপর কোন ডিস্কাউন্ট নেই 😥 । এখন হিসেবে করে দেখলাম আমাজন.ca তে আমার কম পড়বে শিপিং সহ। ওরা ৩৭% ডিস্কাউন্ট দিচ্ছে। অর্ডার দিয়ে দিচ্ছি।
@স্বাধীন,
অর্ডার দিয়ে দিলাম। সাথে আরো দু’টো বই দিতে হল। ফ্রি শিপিং এর জন্য 😥 ।
@স্বাধীন,
দুঃখিত, কাল আর উত্তর দিতে পারি নাই। হ্যা, বার্ন্স এণ্ড নোবেলে ২০ ডলারই পড়লো।
এ ছাড়া আর দুটো কি বই অর্ডার করলেন?
@অভিজিৎ,
কোন সমস্যা নেই। বার্ন্স এ বিশ ডলার পড়লো কেন? আপনি না বললেন ২০% ডিস্কাউন্ট দিয়েছে 😛 । তাহলে তো আরো কম পড়ার কথা।
যা হোক, আমাজনে ৪০ ডলারের উপর বই কিনলে শিপিং ফ্রি পাওয়া যায়।তাই আমি সব সময় এক সাথে তিন/চারটা বই কিনি। ইউএস তে আরো কম, মাত্র ২৫ ডলারের বই কিনলেই শিপিং ফ্রি :-Y । শিপিং এর টাকা দিয়ে যদি একটি বই ফ্রি পাওয়া যায় ক্ষতি কি।
আইনস্টাইন এর একটি বই দিয়েছিঃ ideas and opinions ।
আরেকটার নাম বললে অবাক হতে পারেন 😀 । এই দু’টো অর্ডার দেওয়ার পর দেখি আমাকে ৬ ডলারের মধ্যে আরেকটি বই দিতে হবে ৪০ বানানোর জন্য :-X । খুঁজতে খুঁজতে যে বইটা পেলাম তা হচ্ছে ডারউইনের On the Origin of Species :rotfl: . ভাবলাম আসল বইটা পড়া হয়নি। এই সূযোগে কিনে রাখি ।
@স্বাধীন,
আমাজনের চেয়ে বার্ন্সে দাম এমনেই ২০% বেশি থাকে। 😛 । তবে বেরুনোর দিনেই পড়ার আগ্রহতে সেটাই সই! কি আর করা।
@স্বাধীন,
সবার দেখাদেখি আমিও একখান গ্র্যান্ড ডিজাইন কিনে ফেললাম চ্যাপ্টারস থেকে একটু আগে। বিজ্ঞানমূর্খ মানুষ আমি। পড়ে কিছুই বুঝবো না জানি, তবুও পড়বো। 😛
@অভিজিৎ,
:yes:
দর্শন বিদ্যার আদৌ কোন প্রয়োজন আমি দেখি না। হয়ত রাজনৈতিক দর্শনের কিছুটা প্রয়োজন আছে।
সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব বা অনাস্তিত্ব পদার্থবিদ্যার বিষয় নয় । বিষয়টি দর্শনশাস্ত্রের । তবুও মৌলবাদী নাস্তিকেরা স্টিফেন হকিংকে নিয়ে ইউরেকা ইউরেকা চিল্লাচ্ছেন ।
আলোচনার জন্য আমেরিকান হেরিটেজ ডিকশনারী থেকে পদার্থবিদ্যার সংজ্ঞা গ্রহন করতঃ দর্শনশাস্ত্রের সাথে সম্পর্ক নির্ণয়ের এবং সৃষ্টিকর্তার অনাস্তিত্ব প্রমানের চেষ্টা করা গেল ।
Physics is the science of matter and energy and of interactions between the two. মূল এই সংজ্ঞার সাথে atomic, nuclear and cosmic physics বর্তমানে যুক্ত হয়েছে । তত্ত্ব বা নিয়মের সংজ্ঞা হলো a system of assumptions, accepted principles, and rules of procedure devised to analyze, predict, or otherwise explain the behavior of a specified set of phenomena. তবে আদিতে পদার্থবিদ্যা যখন দর্শনভুক্ত ছিল, তখন উক্ত জ্ঞান শাখার সংজ্ঞা ছিল The study of the natural or material world and phenomena; natural philosophy.দর্শনের বর্তমান সংজ্ঞা হলো The investigation of causes and laws underlying reality. উপরুক্ত সংজ্ঞাগুলি থেকে অবগত হলাম যে ঈশ্বর খোঁজা পদার্থবিদ্যার কাজ নয় । বিষয়টি দর্শনশাস্ত্রভুক্ত ।
দেখা যাক পদার্থবিদ্যার matter ও energy কি ? পদার্থবিদ্যা অনুযায়ী, (1) matter: An entity displaying gravitation and inertia when at rest as well as when in motion ; (2) energy: The work that a physical system is capable of doing in changing from its actual state to a specified reference state, the total including, in general, contributions of potential energy, kinetic energy, and rest energy.
দ্বিতীয় প্রশ্ন, বস্তু ও শক্তি কোথা থেকে আসলো । বস্তু/শক্তির অবিনাশিতাবাদ(conservation) থেকে জানা যায় যে the total amount of energy/mass(matter) in an isolated(closed) system remains constant over time. দেখা যাচ্ছে বস্তু ও শক্তি সময়ের সাথে যুক্ত ।
সৃষ্টির আরম্ভ আছে । যার আরম্ভ আছ্ তার শেষও আছে । এখন সময় যদি সৃষ্টি হয়ে থাকে, তবে তার আরম্ভ আছে । তা হলে প্রশ্ন আসে, সময় আরম্ভের আগের সময়টা কি ?
সময়ের সংজ্ঞা অনুযায়ী Time has been defined as the continuum in which events(a point in space-time specified by its time and place) occur in succession from the past to the present and on to the future. আলোচ্য সংজ্ঞা থেকে প্রতীয়মান হয় যে সময়ের আরম্ভ ও শেষ নাই, অর্থ্যাৎ সময় সৃষ্টি হয় নাই । আনুরূপ ভাবে প্রমান করা যায় যে Space ও সৃষ্টি হয় নাই । তাছাড়া স্থান ও কাল event এর সাথে যুক্ত ।
সংজ্ঞা অনুযায়ী কালের সাথে বস্তু/শক্তি ধ্রুব থাকে বিধায় সৃষ্টি করা যায় না । অর্থ্যাৎ দর্শনের যুক্তি অনুযায়ী কাল, স্থান ও বস্তু/শক্তি সৃষ্টি হয় নাই । তাই দেখা যাচ্ছে মৌলবাদী নাস্তিকেরা অন্ধের হাতি খোঁজার মতো সৃষ্টিকর্তার অনাস্তিত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছেন ।
মানুষের আচরণ তার জিনের ও পরিবেশের সাথে সম্পর্কীত । তানভীরের অভদ্র আচরণ দেখে মনে হয়েছে, তার জিন এখনো পরিশুদ্ধ হয় নাই ।
@আ. হা. মহিউদ্দীন,
তানভীতো বাচ্চা ছেলে। ও অভদ্রতা করলে তবু না হয় সহ্য করা যায় (যদিও সেরকম কিছু চোখে পড়ে নি আমার।) কিন্তু আপনার অনায়াসসিদ্ধ অবিরাম অভদ্রতাতো অনন্য, অনিঃশেষ, অননুকরণীয় এবং অনিরাময়ী। শবযাত্রার সময় হয়ে গেছে তবুও শিষ্টাচার শিখলেন না। অকারণে অন্যকে অভদ্র আচরণের দোষে দুষ্ট বলার বালখিল্য ব্যারাম থেকে বেরিয়ে আসুন। তানভীর জিন এখনো পরিশুদ্ধ হয় নি, কিন্তু একদিন হবে। আপনার জিনতো মনে হয় না পরকালে পা রাখার আগে আর পরিশুদ্ধ হবে।
@আ. হা. মহিউদ্দীন,
আপনার একটা কথাও আমার এই পোস্টের কথাবার্তার সাথে আদৌ গিয়েছে কিনা একবার চিন্তা করে দেখেন!
আপনি যে কথা গুলো বলেছেন, সেগুলোর কথা বলতে গেলে আরজ আলির মত বলতে হয়,
“তবে পরমেশ্বর ‘স্থান’কে সৃষ্টি করিলেন কোন স্থান থাকিয়া, ‘কাল’কে সৃষ্টি করিলেন কোন কালে এবং শক্তি কে সৃষ্টি করিলেন কোন শক্তির বলে?”
আর আপনার কথা মত যদি এগুলো অনাদি অনন্তই হয়, তবে ঈশ্বরের কৃতিত্বটা কোথায়? তার জন্য এগুলো কেই বা আগে থেকে রেখে গিয়েছে? নাকি ঈশ্বরের মত অনাদি ও অসৃষ্ট? ঈশ্বর যদি অসৃষ্টই হবে, তাহলে বাকি সব কিছু কে অসৃষ্ট ধরে নিতে সমস্যা কোথায়?
আর আমি আমাকে আপনার তুলনায় মোটেও অভদ্র মনে করি না! আপনার লেভেলে যেতে হলে আমাকে এখনো অনেক অনেক দূর পথ পারি দিতে হবে!! আপনার যা বয়স, তাতেও আপনার মন্তব্যের যে ধরন! আমি তো তার তুলনায় মাসুম বাচ্চা!!
আচ্ছা এখানে তানভী অভদ্র আচরনটা করল কোন খানে? :-/
ও আরেকটা কথা, মি/মিস/মিসেস, আহা মহিউদ্দিন নামের (অ?)ভদ্র লোক/মহিলা যেন আমার এই মন্তব্যে প্রতিমন্তব্য না করে। কারন আমি তাকে এই মন্তব্য করিনি। করেছি অন্য সবাইকে। আমার হিজরাদের প্রতি এলার্জি আছে।
@আ. হা. মহিউদ্দীন,
কেন? আপনার অধিকাংশ মন্তব্য কোন যুক্তি বহন করেনা, ওগুলো স্রেফ ঘোষণা মাত্র। শুধু একটা সুডো-যুক্তির কাঠামো থাকে।
আপনার দেয়া সংজ্ঞা থেকে সেটা মোটেও প্রতীয়মান হয়না। মনে করা হয় বিগ ব্যাং এই সময়ের উৎপত্তি হয়েছে। আমি বিস্মিত হচ্ছি, আপনি ডিকশনারির সংজ্ঞা দিয়ে বাস্তবতার প্রকৃতি নির্ধারণ করছেন। বাস্তবতা কি heritage dictionary খুলে বসে আছে?
কিন্তু আমার আরেকটা প্রশ্ন আছে। আপনি তো অলরেডি সৃষ্টিকর্তার অনস্তিত্ব প্রমাণ করে বসে আছেন উপরোক্ত উদ্ধৃতিতে। অন্তত, কেউ যদি দাবি করেন সৃষ্টিকর্তা সময় ও শূণ্যও সৃষ্টি করেছেন, সেই সৃষ্টিকর্তা হেরিটেজ অভিধান দ্বারা অপ্রমাণিত।
অভিনন্দন।
দ্র: তানভীর জিন পরিষ্কার বিষয়ক যে কথা বলেছেন সে বিষয়ক কোন মন্তব্য করতে ঘৃণা বোধ করছি।
@আ. হা. মহিউদ্দীন,
নাস্তিকেরা অবিশ্বাসী “অন্ধ অনুকরণে” নয়,প্রমাণের ভিত্তিতে হন ।
আর………মন্তব্যের ব্যাপারে শালীনতা কাম্য।
আপনি বিষয়টি যেভাবে ভেবেছেন তা আমার ভাল লেগেছে। আমার মনে হয় মাইক্রো আর ম্যক্রো লেভেলে বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা যায়।ধরুন কোন একটা ঘটনা বা সিস্টেম আপাতদৃষ্টিতে কিছু নিয়ম মেনে চলে।কিন্তু আবার এই ঘটনা কে যদি একটা বৃহৎ পরিসরে বিবেচনা করা হয়,তাহলে দেখা যাবে,হয় আরো কিছু নিয়ম যোগ হয়েছে,বা আগের সিস্টেমের কিছু কিছু নিয়ম শিথিল হতে হতে বাতিল হয়ে গেছে।ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকলে একটা chaos ছাড়া আর কিছুই পাব না।তবে অনেক নৈরাজ্যবাদী এ দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের পক্ষে প্রোপাগান্ডা চালায়।যাই হোক এটা ভিন্ন ব্যাপার।আর একটা ধরে নেয়া সিস্টেমে কিছু নিয়ম থাকবেই ।কিন্তু এতে দেবালয়-এর অথরিটি খুঁজতে যাওয়া বোকামী।
এটা আমার নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা।ভুলও হতে পারে।এটা চূড়ান্ত কিছু না।
এমন কথাই তো আছে। হকিং তাকি বলছেন। শন ক্যারলের ভিডিও তাই বলছে। মোটামুটি সব পদার্থবিজ্ঞানীদের একই মত। হকিং কে নিয়ে এই যে হৈ চৈ সেটা তো এই কারণেই। মহাবিশ্ব পদার্থ বিজ্ঞানের সুত্রের কারণেই সৃষ্ট অবশ্যম্ভাবীরূপে। অন্য কোন ভাব সৃষ্ট হতে পারত কিনা অবান্তর। যেভাব হতে পারে বলে আমরা জেনেছি সেটাই আমাদের ইন্টারেস্ট। অন্যভাবে হলে সেটাকেও পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মই বলা যেত। প্রকৃতির নিয়মকে যে নামেই ডাকা হোক না কেন, সেটা তো প্রকৃতির নিয়মই।
তাহলে এটা গভীর কোন ব্যাপার হত না। আবারও স্মরণ করিয়ে দেই যে হকিং এর গবেষণা নিয়ে আলোড়নের কারণ হল পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রের অবশ্যম্ভাবী পরিণতিতে মহাবিশ্বের সৃষ্টি। মহাবিশ্ব সৃষ্টি হবার পর সে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র খুঁজে পেলেও সূত্রটা তো আগেই ছিল এবং মহাবিশ্বের সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছিল। খুঁজে পাওয়া মানে তো তৈরী করা নয়। পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রকে তৈরী করা হয় না, খোঁজা হয়।
@অপার্থিব,
পদার্থবিদদের এই “মত” একটা ধর্ম বিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নয়। তাঁরা এর প্রমাণ দিতে অক্ষম।
@রৌরব,
বিজ্ঞানীদের মত “ধর্ম বিশ্বাস” হয় না। কারণ ধর্ম যা বলে তাকে সে একটা “বিশ্বাস” মানতে রাজি না, সে বলে ওটা ফ্যাক্ট। অপর পক্ষে বিজ্ঞানীরা যা মত দেন বা বিশ্বাস করেন ওটা যে “মত” সে বিষয়ে তারা সচেতন বা তাদেরকে সচেতন থাকতে হয়। বিজ্ঞান দ্বিমতকে উৎসাহ দেয়। যেমন আপনি কোনো বিজ্ঞানীর দেয়া মতকে ভুল প্রমাণ করলেন তাতে হয়ত আপনি হয়ে উঠলেন আরো বড় বিজ্ঞানী কিন্তু ধর্মের ক্ষেত্রে তার উল্টো।
কোনো বিষয়ে দেয়া মতকে বিজ্ঞানীরা ঠিকমত প্রমাণ দিতে না পারলেও ঐ মত দেয়ার পেছনে তাদের উপযুক্ত কারণ থাকতে হয় নাহলে যে চলবে না, কারণ বিজ্ঞানের জগত সকলের জন্যই উন্মুক্ত- যে কেউ সেখানে ঢুকে সব এলোমেলো করে দিয়ে আসবে।
@সৈকত চৌধুরী,
প্রমাণহীন বিশ্বাস অর্থে ধর্ম বিশ্বাস বলেছি। আমাদের পরিচিত অধিকাংশ ধর্মের অন্য অসংখ্য বদভ্যাস আছে, সেসব নয়। হয়ত প্রমাণহীন বিশ্বাস বলাটাই আমার উচিত ছিল।
কিন্তু এটাই আমার পয়েন্ট। তারা এবিষয়ে যথেষ্ট সাবধান কিনা এ বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে। উদাহরণ দিই (অনেক দেয়া যাবে)। স্টিফেন হকিং-এর থ্রেডটাতে হোরাস একটি বইয়ের নাম দিয়েছেন, সেখানে লেখক সমান্তরাল বিশ্ব বা মাল্টিভার্সের কথা তুলেছেন। অথচ এটা একটা অপ্রমাণিত জিনিস, অনেক বিজ্ঞানীর “মত”। তাতে আমার সমস্যা ছিলনা। কিন্তু হোরাস ৩টি অধ্যায় পড়ে নিশ্চিত হতে পারেননি এটি লেখকের মত, না বাস্তবতা। ধরে নিচ্ছি পরবর্তী অধ্যায়ে লেখক জিনিসটি পরিষ্কার করেছেন, তারপরও ৩ অধ্যায় জুড়ে এই অস্পষ্টতা কেন? একই কথা স্ট্রিং থিয়োরির ব্যাপারে প্রযোজ্য।
@রৌরব,
আগে যেটা বলেছিলাম সেটা কিন্তু আবার রিপিট করতে হবে। মাল্টিভার্স কিংবা স্ট্রিং তত্ত্বের হাইপোথিসিসগুলো কিন্তু গাণিতিকভাবে সুসংবদ্ধ। পর্বেক্ষণগত প্রমাণ এখনো পাইনি। হয়তো ভবিষ্যতে পাবো। যদি পাই তাহলেই তা বাস্তবতা ব্যাখ্যার সত্যিকার মডেল হয়ে উঠবে, নচেৎ তা হবে না। সেররকম তো বিজ্ঞানের অনেক বিষয়ই এভাবে এগিয়েছে। প্রত্যক্ষ প্রমাণ ছাড়াও শুধু পরোক্ষ পরীক্ষণের ভিত্তিতে বহু তত্ত্বকে বিজ্ঞান গ্রহন করে নিয়েছে; বিজ্ঞানের ইতিহাস অন্ততঃ তাই বলে। আসলে পরমানুর অস্তিত্বও প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞান গ্রহণ করেছিল পরোক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতেই (কিছু রাসায়িনিক পদার্থের সংমিশ্রনের অনুপাত থেকে, আর পরবর্তীতে ব্রাউনীয় সঞ্চরণ থেকে); আবার প্রাথমিকভাবে ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্বও বিজ্ঞান স্বীকার করে নিয়েছিল পরোক্ষ পর্যবেক্ষণে, ‘চোখে দেখে’ নয়। সেগুলোকে ধর্মের সাথে মেলানো না হলে স্ট্রিং তত্ত্ব বা মাল্টিভার্সকেই বা মেলানো হবে কেন?
আর তাছাড়া অনেকেই মনে করেন মাল্টিভার্স ব্যাপারটা কোন তত্ত্ব নয়, বরং বড়জোর প্রেডিকশান বলা যায়। একে যে চোখে দেখে পর্যবেক্ষণ করতেই হবে তা তো নয়। অনেকে আবার ভাবেন মাল্টিভার্সের ধারণা বোধ হয় অক্কামের ক্ষুরের লংঘন। তা কিন্তু নয়। অধ্যাপক ভিকটর স্টেঙ্গর তার ‘টাইমলেস রিয়ালিটি’ এবং ‘হ্যাজ সায়েন্স ফাউন্ড গড’ বইয়ে বলেন, পদার্থবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক তত্ত্বগুলোর কোনটাই অসংখ্য মহাবিশ্বের অস্তিত্বকে বাতিল করে দেয় না। বরং যেখানে লিন্ডের তত্ত্ব কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে অসংখ্য মহাবিশ্ব সৃষ্টির দিকেই ইঙ্গিত করছে, সেখানে কেউ যদি অযথা বাড়তি একটি প্রকল্প আরোপ করে বলেন আমাদের এই মহাবিশ্ব ছাড়া আর কোন মহাবিশ্ব নেই, কিংবা কখনই তৈরী হওয়া সম্ভবপর নয়, তবে সেটাই বরং হবে অক্কামের ক্ষুরের লংঘন। তাকেই সেটা অন্ততঃ গাণিতিকভাবে হলেও প্রমাণ করতে হবে। সেরকম কোন প্রমাণ কিন্তু এখনো পাওয়া যায়নি।
যা হোক, শেষ কথাটা বলি কারিগরী সীমাবদ্ধতার জন্য তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান আর ব্যবহারিক পদার্থবিজ্ঞানের মধ্যে একটা গ্যাপ সবসময়ই থাকে। আইনস্টাইনের রিলেটিভিটির তত্ত্ব এডিংটন প্রমাণ করেছিলেন অনেক পরে। হকিং এর ব্ল্যাকহোল সংক্রান্ত তত্ত্বগুলোও কারিগরী সীমাবদ্ধতার জন্য বহুদিন প্রমাণ করা যায় নি। কিন্তু সেগুলোকে ‘জোঁকের তেল বিক্রেতার’ সাথে তুলনা করাটা ঠিক নয়, ধর্মের গাঁজাখুরি রূপকথার সাথে তো নয়ই।
@অপার্থিব,
পোস্ট টা দেয়ার পরপরই বুঝতে পেরেছি যে ঝাড়ি খাবো!
উহু! আমার কথাটা মনেহয় বেশি সংক্ষেপিত হয়ে গেছে, আরেকটু বাড়িয়ে লিখলে ভালো হত।
আমি বলিনি যে পদার্থ বিজ্ঞান ভবিষ্যতবাণী করতে পারে না। আমি শুধু বলতে চেয়েছি এই যে সবকিছুই অন্য আরো হাজার রকম ভাবে হওয়া সম্ভব ছিল, এখন যে অবস্থায় মহাবিশ্ব আছে তা আসলে অসীম সম্ভাবনার মধ্যে একটি অবস্থা মাত্র।
লাখ খানেক মানুষকে এক জায়গায় গাদাগাদি করে দাড়া করিয়ে উচু জায়গা থেকে একটা ছোট পাথর ছুড়ে দিলে সেটা কারো না কারো মাথায় লাগবেই। সেখানে আমি দাবি করতে পারবো না যে আমার একান্ত ইচ্ছায় লাখ খানেক মানুষের মাঝে ঐ ব্যক্তির মাথায়ই পাথরটা পরেছে (যে দাবিটা ঈশ্বরবাদীরা সব সময় করেন এভাবে যে, ঈশ্বর সব কিছু সূত্র মাফিক তৈরি করেছেন, নাহলে এত কিছুর কিছুই হত না!)।
এখন বিজ্ঞানীদের যদি গবেষণা করে পাথর মারার আগেই ভবিষ্যতবানী করতে বলা হয় যে পাথরটা ঠিক কার মাথায় লাগবে, তাহলে তারা বিভিন্ন কোণে বিভিন্ন শক্তি তে মারার ভিন্নতা অনুযায়ী ভবিষ্যত বানী করে বলে দেবেন যে এভাবে মারলে এর মাথায় পড়বে। এরপর আমি যত দিক থেকে যত ভাবেই পাথরটা ছুড়ি না কেন, কোন ভাবেই আমি বিজ্ঞানীদের ভবিষ্যতবাণীর বাইরে যেতে পারব না। (যেটা আপনি বলছেন)
জানিনা বোঝাতে পারলাম কি না। নাকি আরো ঘোলা করে ফেললাম!! :-X
@তানভী,
এখানে দুটি ব্যাপার আছে। একটি হচ্ছে ঈশ্বর বিশ্বাসীদের দাবি, যেটা হাস্যকর। কিন্তু দ্বিতীয় আরেকটি ব্যাপার আছে, সেটি হল পদার্থবিদ্যা (বা অন্য যেকোন বিজ্ঞানের) সূত্রগুলি পর্যবেক্ষণের উপর আমাদের আরোপিত pattern, নাকি আসলেই এরকম কোন সূত্রের “অস্তিত্ব” আছে। এটা একটু ভিন্ন প্রশ্ন। এটা ধর্মীয় প্রশ্নটির মত খেলো নয়, কিন্তু আমি এটিকেও হাস্যকর প্রশ্ন মনে করি, কারণ, কোন সূত্রের পর্যবেক্ষণ-ঊর্দ্ধ অস্তিত্ব প্রমাণ করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা যখন তা দাবী করেন তখন তাঁদেরকেও জোঁকের তেল বিক্রেতা হিসেবে সন্দেহ করা চলে। স্টিফেন হকিং এর থ্রেডে শন ক্যারলের যে ভিডিও দেয়া হয়েছে, সেটিকেও আমি এই দলে ফেলব।
@রৌরব,
আপনার সাথে বলছি। এরকম কোনো সূত্র থাকলেও তা কিন্তু ঈশরের অস্তিত্বের কথা বলছে না। ঈশ্বর স্রেফ একটা ঘোড়ার ডিম। তারপরো কেউ ঈশ্বরের অস্তিতে দাবি করলে তা সে সংজ্ঞায়িত করুক ও প্রমাণিত করুক কারণ এটা তারই দায়িত্ব।
আরেকটা বিষয়ে আমাদের খেয়াল দেয়া দরকার। মহাবিশ্বের কোনো ঘটনা যদি ঠিকমত ব্যাখ্যা না করা যায় তবে তার সঠিক ব্যাখ্যা পাবার জন্য অপেক্ষা করার মানসিকতা অর্জন করা খুব দরকার।
@সৈকত চৌধুরী,
সেটা উপরে @রৌরব লেখা দেখেই সন্দেহ করেছিলাম 🙂
:yes:
:yes:
@অপার্থিব,
উফ, দারুণ বলেছেন দাদা। নিজের তো মুরদ নাই সাহস করে কিছু বলার, তাই মনেমনে এ রকম একটা কথা বিজ্ঞজনদের কাছ থেকে শুনার আশায় ছিলাম।
এরপরেও ধর্ম বিশ্বাসীরা বলবেন- পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র যে তৈরী করেছিল তার নাম ঈশ্বর, অথবা সেই সুত্রের নাম ঈশ্বর।
@আকাশ মালিক,
এটা যে কেউ বলতে পারে। ধর্মবিশ্বাসী হতে হবে না। একটা সম্ভাবনা তো আছেই যে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র স্বয়ম্ভূ। এটা কারও তৈরী নয়। যারা এই সম্ভাবনায় বিশ্বাসী তারা পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রকেই ইশ্বর বলে সংজ্ঞায়ন করতেই পারে। আর যদি পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র স্বয়ম্ভূ না হয়, অন্য কোন মহাকারণের কার্য হিসেবে এটা ব্যক্ত হয় তাহলেও যারা ঐ সম্ভাবনায় বিশ্বাসী তারা সেই অজানা মহাকারণকে ইশ্বর বলে সংজ্ঞায়ন করতেই পারে। কিন্তু সংজ্ঞায়নের দ্বারা তো কোন আবিষ্কার বা নতুন জ্ঞান সঞ্চার হয় না। এটা নামকরণের সুবিধার্থে। বলাই বাহুল্য এভাবে ইশ্বর সংজ্ঞগায়ন করার মানে সম্পর্কে কিছুই না জানা। আর যেহেতু ইশ্বর নামে একর জনপ্রিয় ধারণা ধর্ম আগেই দিয়ে রেখেছে, তাই এই ইশ্বরের নতুন কোন নামকরণ করা শ্রেয়। পবিশ্বর (পদার্থ+বিজ্ঞান+ইশ্বর) বললে কেমন হয়? 🙂