কম্পিউটারের কারিগরি সম্পর্কে একটু যাদের ধারণা আছে তারা নিশ্চই ডিজিটাল সিসটেমের একটা সীমাবদ্ধতার কথা জানেন? সেটা হচ্ছে রেজলিউশন। মনে করেন আমার কম্পিউটার স্ক্রীন ৮০০ বাই ৬০০ এর মানে হলো আমার কম্পিউটার স্ক্রীনে মোট ৮০০x৬০০ টি পিক্সেল আছে। এখন আমি যদি চাই স্ক্রীনে একটা ডট আকতে। যেটা এক পিক্সেল সাইজের তখন আমাকে এই ৪৮০ হাজার বিন্দু থেকে যেকোনো একটা কে বেছে নিতে হবে। তার মানে কোনো একটা কলামে আমি বড়জোর ৬০০ টা স্থান বেছে নিতে পারি।
এখন আমি যদি একটা আনিমেশন করতে চাই যেখানে এরকম কিছু বিন্দু উপর থেকে নিচে নামছে। অনেকটা বৃষ্টির ফোটার মত। তখন চাইলেও আমি এই বৃষ্টিকে স্মুথ করতে পারবো না। স্ক্রীনের উপর একটা আতশ কাচ ধরলেই দেখা যাবে যে বিন্দুগুলো এক পিক্সেল থেকে আরেক পিক্সেলে লাফিয়ে চলে যাচ্ছে। স্ক্রীনের দুইটা পিক্সেলের মধ্যবর্তি স্থানে তাই কারো পক্ষে একটা বিন্দু দেখানো সম্ভব না। স্ক্রীন রেজোলিউশন অনেক বাড়িয়ে এ অসুবিধাকে আপাত দৃষ্টিতে কমানো গেলেও আমি যদি আরো শক্তিশালী আতশ কাচ ধরি তাহলে আবারো আমি পিক্সেলগুলোকে আলাদা আলাদা দেখতে পাবো।
কম্পিউটারের মেমরীতেও সব কিছু এরকম ডিজিটাইজড। মানে ছাড়াছাড়া আলাদা আলাদা বিচ্ছিন্ন। বাস্তব জগতের মত ‘নিরবিচ্ছিন্ন’ নয়। তাই কম্পিউটারে ফ্লুইড সিমুলেশন করলেও সেটা তার নাম্বারের প্রিসিশন, ও অন্যান্য রেজলিউশন দ্বারা সীমিত থাকে। শেষ মেশ মাইক্রো স্কেলে সেটা হয়ে যায় বিচ্ছিন্ন ঘটনার সমষ্টি। যাক গে আমি যেটা বুঝাতে চাচ্ছিলাম সেটা মনে হয় আপনারা বুঝেই গেছেন। এখন কথা বাড়ালে আবার গুলিয়ে যেতে পারে সব। তার চে মূল কথায় আসি।
আগের প্যারাতেই লিখলাম ‘বাস্তব জগতের মত নিরবিচ্ছিন্ন নয়’ আসলেই কি বাস্তব জগত নিরবিচ্ছিন্ন?
আমাদের অভিজ্ঞতা বলে নিরবিচ্ছিন্ন। একটা বল যখন গড়িয়ে যেতে থাকে তখন সে ছোটো ছোট জাম্প করে যায় না। বরং ধারাবাহিক ভাবে সরে সরে যায়। আমাদের ধারণা মতে বাস্তব জগতে কোনো কিছু সরে যাওয়া আর ডিজিটাল জগতে কোনো কিছু সরে যাওয়াতে তাই বিস্তর ফারাক। কিন্তু এখন যদি বলি বাস্তব জগতেও আসলে সব বস্তু এরকম ছোটো ছোটো ধাপে সরে যায়? যদি বলি বাস্তব জগতেও রেজুলেশন নির্দিষ্ট। এর চেয়ে সুক্ষ কোনো কিছু নড়াচড়া করতে পারে না। নড়লে সেই ঐটুকু নাইলে নাই! খুব অবাস্তব শোনাবে কি তখন?
কোয়ান্টাম মেকানিক্স আমাদের এটাই বলছে। যেমন দৈর্ঘ্যের একটা মিনিমাম লিমিট আছে। তার চেয়ে ছোটো কিছু থাকতে পারে না। কোনো কিছু যখন সরে তখন এই ছোটো ধাপে লাফ দিয়ে দিয়ে সরে। যেন সে আমার কম্পিউটার স্ক্রীনের একটা পিক্সেল! এই সর্বনিম্ন দৈর্ঘ্যকে বলে ‘প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্য’
তেমনি ভাবে আমরা অনেকে লাটিম ঘুরিয়েছি। একটা লাটিম যখন ঘুরতে ঘুরতে থেমে যায়। আমরা ভাবি তার কৌনিক গতি বা কৌনিক ভরবেগ ধারাবাহিক ভাবে কমতে কমতে শূন্য হয়ে গেল। কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল জগতে তাকালে আমরা দেখতে পাবো এমনটা হয় না। কৌনিক ভরবেগের নিরধারিত কিছু মান থাকে। এবং কোনো কণার কৌনিক ভরবেগ লাফ দিয়ে লাফ দিয়ে এক মান থেকে আরেক মানে চলে যায়। মাঝা মাঝি কোনো মানের অস্তিত্বই নেই! এ যেন কম্পিউটারে করা সিমুলেশন। নির্দিষ্ট প্রিসিশনের কমে আর কিছু সম্ভব না!
পড়ছিলাম বোসন আর ফার্মিওন কণা নিয়ে। এদের স্পিন এমন হয়। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় ইলেক্ট্রনের কথা ইলেকট্রনের স্পিন সম্ভাব্য স্পিন (ক্লাসিকালি বললে কৌনিক ভরবেগ) দুই মানের $latex {-\hbar \over 2}$ এবং $latex {\hbar \over 2}$ এই দুই মান ব্যতিত ইলেকট্রনের অন্য কোনো মানের স্পিন সম্ভব নয়। একই ভাবে সব অনু পরমানুর ও স্পিন বের করা যায়। এখন বাস্তব জগতের বস্তুসমূহ যেহেতু এসব অনুপরমানূ দিয়েই তৈরি। তাদের কৌনিক ভরবেগও এ ধরনের নির্ধারিত মান মেনে চলে। মানে বড় করে ভাবলে যদি এই কোয়ান্টার সাইজ হতো পাঁচ, তাহলে আমরা দেখতাম লাটিমের ভরবেগ ২৫ থেকে হূঠ করে ২০ এর পর লাফ দিয়ে কমে ১৫ এভাবে বিচ্ছিন্ন ধাপে ধাপে ০ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভাগ্যিস প্লাঙ্ক ধ্রুবক h এর মান এতই কম যে এ ধরনের লাফ, যেটা বাস্তব সব বস্তুই দেয়, তা আমরা অনুভব করতে পারিনা। অনুভব করতে পারিনা মানে যে হয় না তা নয়। পরীক্ষাগারে এটা নির্নয় করার উপায় আছে! জাস্ট আরো ‘শক্তিশালী আতশ কাচ‘ লাগবে।
এরকম কিছু অদ্ভুত কারণেই কোয়ান্টাম মেকানিক্স এত ইন্টারেস্টিং!
[সঙ্গত কারণেই লেখাটি অতিসরলীকরণদোষে দুষ্ট]
তানভীরুল ইসলাম, সুরঞ্জনা ও জওশন আরাকে ধন্যবাদ । 😀
লেখাটা ভালই হয়েছে। অনেকটা সহজ সাবলিল। মজার ট্রপিক্স চালিয়ে যান। সব বিষয়ই বুঝার চেষ্টা করলে সহজ না করলে কঠিন। 🙂
@সুমিত দেবনাথ,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
আমাদের মত বিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষ-অজ্ঞ মানুষদের জন্য বেশ ভাল সূচনা এটা। :yes: চমতকার উদাহরণের মাধ্যমে একটা নতুন জিনিসের ধারণা পেলাম। পরবর্তী পর্বগুলো তাড়াতাড়ি দিয়ে ফেলেন, তবে আমাদের কথা মাথায় রেখে প্লিজ। যারা এ ব্যাপারে ভাল জানেন তাদের কাছে হয়ত অনেক সরল লাগবে, কিন্তু আমাদের কথা মাথায় না রাখলে আমাদের প্রতি অবচার হয়ে যাবে। সহজ থেকে কঠিনের দিকে যান। আশা করি কোন গ্যাপ পড়বেনা েভাবে লেখাকে একটু সহজবোধ্য করতে গিয়ে।
কোয়ান্টাম মেকানিক্সের উপর লেখা সহজবোধ্য কিছু বইয়ের নাম বলবেন কি যেগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যাবে?
@লীনা রহমান,
একটা বই আছে। ‘কোয়ান্টাম মেকানিক্স’ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
@লীনা রহমান,
ধন্যবাদ 🙂
জাফর ইকবাল স্যারের একটা বই আছে কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে। সেটা দেখতে পারেন।
পরের পর্বে শক্তির স্বরূপ আর তার ‘কোয়ান্টাইজেশন’ নিয়ে লেখার ইচ্ছা আছে। সে লেখাটাও বর্ণনামূলকই রাখার চেষ্টা করব 🙂
@তানভীরুল ইসলাম, জাফল ইকবালের বই ছাড়া অন্য কোন বই আছে? আর আপনি যে ফাইনম্যান সিরিজের কথা বললেন ওই বই বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যাবে?
@লীনা রহমান,
খুঁজলে পাওয়ার কথা।
@লীনা রহমান,
হ্যা ফাইনম্যানের বইটা আমি নিউমার্কেটের ‘বুক ভিউ’ নামের দোকানে পেয়েছিলাম। তিনটা বই এর ভলিউম। ‘ইকোনমি এডিশনের’ দাম তখন পড়েছিলো ১৬০০ টাকার মত। সকল পদার্থবিজ্ঞান প্রেমির এই বইটা সংগ্রহ করা উচিত। নেটেও পাওয়া যায়।
@লীনা রহমান, gigapedia.com এ লগিন করে ফাইনম্যানের বই খুঁজলেই ফাইনম্যানের লেকচার নামে ৩ ভলিউমের পিডিএফ বইটা পেয়ে যাবেন। ৬০ মেগাবাইট মাত্র। পড়তে বসলে মনে হয়, বিজ্ঞান দেখি আকর্ষনের দিক থেকে মনোহর সাহিত্যকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে, আমার তো তাই মনে হয় 🙂
@লীনা রহমান, জিনাত বুক স্টোর আছে নিউমার্কেটে, ১ নং গেট দিয়ে ঢুকে হাতের বায়ে যেতে থাকবেন। দোকানে যারা বসেন তারা বইয়ের খবর রাখেন, খুব সম্ভব বারোশো-পনরোশো টাকায় সিরিজ এর বইগুলোর একটা কম্পাইলেশন পাওয়া যায়। একদিনই দেখেছি অবশ্য, আমার ভুল হতে পারে। 🙂
Hope this helps.
প্যাকেট প্যাকেট শক্তি, বোঝা গেলো, এর পর?
“বাস্তব নিরবিচ্ছিন্ন নহে” – এটা কি প্রমাণিত?
@তনুশ্রী রয়,
হ্যাঁ ভৌত জগতের যে কোনো ‘ইন্টারঅ্যাকশনই’ নিরবিচ্ছিন্ন নহে। ত্বরণ-মন্দন থেকে শুরু করে কোনো এনার্জি ব্যারিয়ার অতিক্রম করা। এমন অনেক কিছুই ঘটে থাকে এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ধাপে ধাপে।
মনে করুন একটা পজিটিভ চার্জের কারণে একটা নেগেটিভ চার্জের গতির বিচ্চুতি হচ্ছে। এখন এই চার্জ দ্বয় একে অপরের সাথে কমিউনিকেট করে ‘ফোটন’ এর মাধ্যমে। আর ফোটন যেহেতু ‘বিচ্ছিন্ন কণা’ তাই পজিটিভ চার্জের উপস্থিতির ফলে নেগেটিভ চার্জের সকল ‘নড়াচড়াই’ হবে বিচ্ছিন্ন ধাপে ধাপে।
আর পুরো দুনিয়াটাই যেহেতু এ ধরণের ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ইন্টারয়াকশন এর খেলা তাই পুরোটাকেই এ রকম ধরে নেওযা যায়। মানে পুরো দুনিয়ার সকল মুভমেন্টই হচ্ছে এমন ঝাকি দিয়ে দিয়ে!
গ্রাভিটেশনও ‘গ্রাভিট্রন’ কণার আদান প্রদান অনুসারেই হয়। (‘স্টান্ডার্ড মডেল’ অনুযায়ী)।
আর প্লাঙ্ক দৈর্ঘ হচ্ছে থিওরিটিক্যালি ভৌত জগতের সব চেয়ে ছোটো দৈর্ঘ্য। স্পেস টাইম কে কম্পিউটার স্ক্রীনের মত করে বা গ্রাফ পেপারের মত করে কাটা কাটা না ভাবলেও। স্পেসটাইমের মধ্যে থিওরীতিক্যালি অবজার্ভেবল সর্ব নিম্ন দৈর্ঘ্য হচ্ছে প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্য। এই ব্যাসের একটা গোলককে যদি পিন পয়েন্ট করা সম্ভব হয় তা হলে আনসার্টেনটি প্রিন্সিপাল অনুযায়ী সেই গোলকের শক্তি এতটাই বেশি হতে হবে, যে ওটা হয়ে যাবে একটা ব্লাকহোল। যেখানে স্পেস টাইম ভেঙ্গে পড়ে। তাই ভৌত জগতের যেসব অংশ ‘ব্লাক হোলে’ পরিণত হয়নি সেসব অংশে আসলেই প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্যের সম আকৃতির কোনো কিছুই সম্ভব না।
সোজা বাংলায় বললে ধরেন x ও y দুইটি বিন্দু আছে স্পেসে। এদের সংযোগ কারী একটা সরল রেখা কল্পনা করুণ। এবং ভৌত জগত যদি নিরবিচ্ছিন্ন হয় তাহলে আমি x ও y এর মধ্যে a ও b দুইটি বিন্ধু কে যত কাছা কাছিই স্থাপন করি না কেন। a ও b এর মাঝা মাঝি একটা বিন্দু o আপনি পিন পয়েন্ট করতে পারবেন।
x….a…o…b….y
কিন্তু কোয়ান্টাম মডেল অনুযায়ী এই a ও b দুইটা বিন্দুর দূরত্ব যদি প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্যের সমান হয় তখন আর তাদের মাঝা মাঝি কোনো o বিন্দুকে ‘পিনপয়েন্ট’ করা যাবে না। মানে জ্যামিতিক তত্ত্ব অনুযায়ী তেমন ইনফিনাইট সংখ্যক বিন্দু থাকলেও। আমরা আমাদের কোনো ইন্সট্রুমেন্ট দিয়েই সে বিন্দুকে ‘পিনপয়েন্ট’ করতে পারবো না। এর মানেই হলো আমরা আমাদের ‘অবজার্ভেবিলিটির’ মিনিমাম রেজলিউশনে পৌছে গেলাম। আর যেটা আমরা অবজার্ভ করতে পারছি না। এবং যে অংশে ঘটে যাওয়া ঘটনা আমাদেরকে ‘আফেক্ট করতে’ পারছে না (আফেক্ট করলেই অবজার্ভ করতে পারতাম)। তার অস্তিত্ত্ব নেই। 🙂
এই মন্তব্যটাও সরলীকরণ দোষে দুষ্ট। তবে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের কোনো আলোচনাই আসলে নিষ্পাপ (সরলীকরণদোষহীন) করা সম্ভব নয়।
এই হলো ব্যাপার।
@তানভীরুল ইসলাম,
‘ফোটন’ এর স্থলে কি ইলেক্ট্রন হবে না?
কোয়ান্টাম মেকানিক্স সম্বন্ধে আগ্রহ থাকলেও এর গাণিতিক দিকটা আসলে কিছুই পড়িনি। যদিও আমাদের কোয়ন্টাম মেকানিক্স কোর্স হিসেবে সিলেবাসে ছিল, কিন্তু শিক্ষকের অভাবে পড়ানো হয়নি। 🙁 🙁 🙁
এই বিষয়ে পড়ার আগ্রহ আছে। মোটামুটি সহজে বুঝা যাবে এরকম কোন বইয়ের সন্ধান দিতে পারেন কি?(net এ free পেলে ভাল হয়)
শক্তির পরিবর্তন যে বিচ্ছিন্নভাবে হয় সেটা বুঝতে পেরেছি। কিন্তু একটা প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট বস্তুর চলন কি করে বিচ্ছিন্নভাবে হয় সেটা এখনো পুরোপুরি বোধগম্য হয় নি। এতো এরকম যে বস্তুটা এক জায়গায় অদৃশ্য হলো তো প্লাঙ্কদৈর্ঘ্য পরে দৃশ্যমান হলো।
আরও কিছু ভাবনা চিন্তুা মাথায় এসেছে। যাহোক হাবিজাবি বলে আর লেখলাম না।
@রনবীর সরকার,
না ফোটনই হবে। একটা চার্জ যখন অন্য কোনো চার্জের সাথে ‘আকর্ষণ বিকর্ষণ’ এর মত ‘ইন্টারয়াকশনে যায় তখন একজন আরেকজনের অস্তিত্ব সম্পর্কে বুঝতে পারে ‘ফোটন’ আদান প্রদান এর মাধ্যমে। তাই আপনি কোথাও কিছু চার্জ জমা করলেও তার ইফেক্ট চারিদিকে ‘আলোর বেগে ছড়াবে’ তার মানে একটা পজিটিভ চার্জ থেকে এক আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটা নেগেটিভ চার্জ সেই ‘অনুভুতিটা’ পাবে এক বছর পরে।
আর ‘চলন বিচ্ছিন্ন ভাবে হয়’ বললে ব্যাপারটা ঠিক ‘এক্সাক্ট হয়না’ নরমালি সব ধরণের ইন্টারাকশন(যেমন শক্তি বা ভরবেগের আদান প্রদান) বিচ্ছিন্ন ভাবে হয়। আর একটা বস্তু থেকে আরেকটা বস্তুর দূরত্ব আমরা সব সময় ‘প্লাঙ্ক দৈর্ঘের পূর্ণ গুণিতক আকারে’ নির্ণয় করতে বাধ্য। এবং কেন ‘প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্যের কোনো ফ্রাকশন’ কে আমরা গণনায় আনছি না সেটা আগের মন্তব্যে কিছুটা বলার চেষ্টা করেছি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
ফাইন ম্যান লেকচার সিরিজের তৃতীয় ভলিউম এ বিষয়ে খুবই সুন্দর একটা বই। দেখতে পারেন। এক সময় অন্য একটি ব্লগে এই বইটার কিছু অংশ অনুবাদ করতে শুরু করেছিলাম। (পর্ব ১ পর্ব ২) ।
@তানভীরুল ইসলাম,
বিষয়টা clear করার জন্য ধন্যবাদ। তবে একটা বিষয়ে একটু সমস্যা আছে। ধনাত্মক/ঋনাত্মক চার্জ কি করে বুঝবে যে ফোটনটি ঋনাত্মক/ধনাত্মক চার্জ হতে আসছে। আর কোন চার্জ থেকে অনবরত ফোটন চলে গেলে তো তার শক্তি ক্রমশঃ কমে আসবে। সেক্ষেত্রে তো একসময় চার্জটির কোন অস্তিত্ত্ব থাকবে না।
আপনার এই বাক্যটি থেকেই আসলে বিচ্ছিন্ন চলনের ধারণা হয়েছিল।
এই ব্যাপারটাই clear হচ্ছে না। কোন বস্তুর দৈর্ঘ্য প্লাঙ্ক দৈর্ঘের পূর্ণ গুণিতক আকারে নিতে হবে এইটা ঠিক আছে। কিন্তু যখন দুইটি বস্তুর দুরত্ব নির্ণয় করা হচ্ছে সেক্ষেত্রে তো দুরত্ব আমরা space এর দুই বিন্দুর দুরত্বই (বস্তুদ্বয়ের প্রান্তবিন্দু)নির্ণয় করছি। সেক্ষেত্রে তার plank constant এর গুণিতক হওয়ার বাধ্যবোধকতা কেমন করে আসে।
আমি আসলে বলতে চাচ্ছি যদি দুরত্বকে অবশ্যই plank constant এর গুণিতক আকারে নিতে হয়, তবেতো চলন বিচ্ছিন্ন না হলে তা সম্ভব না। ধরুন A এবং B দুইটি বিন্দু এবং তাদের দুরত্ব k*h(plank constant)। সেক্ষেত্রে চলন যদি অবিচ্ছিন্নভাবে হয় তাহলে যদি A, B এর দিকে h/2 দুরত্ব সরে আসে তবে তো A ও B এর দুরত্ব h এর গুণিতক আর থাকছে না।
আসলে কোয়ান্টাম মেকানিক্স সম্পর্কে খুব একটা লেখাপড়া করা হয়নি। নেটে যা পড়েছিলাম তাও ভাসাভাসা বুঝেছি। আপনি যখন শুরু করেছেন তখন আশা করি বুঝিয়ে তারপর মঞ্চ ত্যাগ করবেন। 😀 😀 😀
@রনবীর সরকার,
প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। আসলে একদম শুরুর মন্তব্যে বিপ্লব পাল যেভাবে বলেছিলেন যেভাবে রিগরাস বর্ণনা দিলে আপনার এ প্রশ্নগুলোর উত্তর মূল লেখাতেই হয়তো থাকতো। কিন্তু সে ক্ষেত্রে পাঠককে ধরে রাখা মুশকিল হয়ে যেত। আমি স্রেফ বেশ কিছু ডিটেইল স্থুল উদাহরণের আড়ালে রেখে ভৌত জগত সম্পর্কে যে চমকপ্রদ কোয়ান্টাম দৃষ্টিকোন। সেটাই লিখতে চেয়েছি।
যাই হোক এবার আসি দূরত্ব আর অবস্থান বিষয়ে। সিট বেল্ট বেধে ফেলুন।
O……….X…….
O ও X দুইটা বিন্দুর মধ্যে দ্বূরত্ব আমরা বলতে পারি |OX| = r আমাদের তাত্বিক জ্যামিতির যে ‘ইনটুইশন’ সে হিসাবে এটা হবে একটা নির্দিষ্ট ‘রিয়েল নাম্বার’।
ভৌত জগতে বা আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের জগতে আসলে এ ধরণের ‘এক্সাক্ট দূরত্ব’র কোনো স্থান নাই। এখানে দুইটা বিন্দুর দূরত্ব বলার সাথে সাথে আপনাকে বলতে হবে সেই মান টা সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা কত। তার মানে আমাদের আগের উদাহরণে যে কথাটা বলা হচ্ছে (কোয়ান্টাম)পদার্থবিজ্ঞাণের ভাষায় বলতে গেলে সেটা দ্বাড়ায় O থেকে X এর দূরত্ব |OX| বা r হবার সম্বাবনা 1 (with probability 1).
কিন্তু আপনি যদি ‘কন্টিনিউয়াস প্রোবাবিলিটি ডিস্ট্রিবিউশন‘ নিয়ে একটু ঘাটা ঘাটি করেন তাহলেই দেখবেন কোনো একটা নির্দিষ্ট বিন্দুর জন্য ‘প্রোবাবিলিটি’ সব সময়ই শূন্য! আমরা যদি বলি x বস্তুটি O থেকে r দূরত্বে থাকার সম্ভাবনা কত? উত্তর: 0 ।
কিন্তু আমরা যদি বলি x বিন্দুটি r এর কাছে মানে r ± d রেঞ্জের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা কত? যেখানে d->0। তখনই প্রশ্নটা ‘মিনিংফুল হয়’। এবং আমরা সে সম্ভাবনা নির্ণয় করতে পারি।
আমাদের যদি O থেকে ৩০ একক দূরে একটা বিন্দুর প্রয়োজন হয়। তখন আমরা যেটা করি এমন একটা ব্যবস্থা ক্রিয়েট করি যেটা ৩০ এর আগে পরে ছোট্টো একটা রেঞ্জে ঐ বিন্দুটাকে থাকার সম্ভাবনা 1 এর কাছে নিয়ে যায়। এখন যদি এই d এর মান হয় ০.০০৫ তখন আমরা ঐ বিন্দুটাকে আপ্রক্সিমেটলি ৩০ ±০.০০৫ একক দূরত্বে আছে ধরতে পারি। যদি d হয় ০.০০১ তখন বিন্দুটাকে আমরা আরূ সূক্ষ ভাবে ‘পিনপয়েন্ট করলাম’। ঐ বিন্দুর অবস্থান সম্পর্কে আনসার্টেনিটি আরো ‘কমল’। এবং হাইজেনবার্গের আনসার্টেনিটি প্রিনসিপাল অনুযায়ী- তার ‘এনার্জি’ সম্পর্কে আনসার্টেনিটি একটু বাড়লো।
এখন আসুন প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্য বিষয়ক প্রশ্নে। আমাদের ভৌত জগতে যেহেতু ‘এক্সাক্ট দূরত্ব’ বলে কিছু নেই। সেহেতু একটা বিন্দু কেন্দ্র থেকে X অক্ষ বরাবর সাড়ে পাঁচ প্লাঙ্ক দূরত্বে আছে। এটা বলা যাবে না। আমরা যেটা করতে পারি বিন্দুটা যেন সাড়ে পাঁচ প্লাঙ্ক দূরত্বের ± є রেঞ্জের মধ্যে আছে। সেটা নিশ্চিত করতে পারি বড় জোর।(খেয়াল করুণ এখানে є প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্যের চেয়ে ছোটো)। এখন হাইজেনবার্গের আনসার্টেনিটি প্রিন্সিপাল অনুযায়ী। তেমন কোনো বিন্দুকে অতটা সূক্ষভাবে ‘পিন পয়েন্ট’ করতে হলে তার এনার্জি আনসার্টেনিটি এতটাই বাড়তে হবে ফলে ‘আভারেজ কেইস এনার্জি’র মান এতই বেড়ে যাবে যে ঐ অংশের স্পেস টাইম কল্যাপ্স করবে। এবং একটা ব্লাকহোল সৃষ্টী হতে হবে।
[(এ অংশ পরে পড়ুন) মজার ব্যাপার হলো এই ইফেক্টটার কারণেই ইলেক্ট্রন নিউক্লিয়াসে কলাপ্স করে না, আপনি-আমি মেঝে ফুড়ে পাতালে চলে যাই না। কেন ইলেক্ট্রন নিউক্লিয়াসে কলাপ্স করে না এর ব্যাখ্যাটাও এখান থেকেই আসে। নিউক্লিয়াস এর ইলেক্ট্রনের দূরত্ব যত কমতে থাকে ইলেক্ট্রনের অবস্থান সম্পর্কে আন সার্টেনিটিও তত কমতে থাকে। আনসার্টেনটি প্রিন্সিপাল মতে তখন ইলেক্ট্রন টির শক্তির অনিশ্চয়তা বাড়তে থাকে। আর অনিশ্চয়তা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে তার ‘এক্সপেক্টেড এনার্জি’ এর মান। কিন্তু ইলেক্ট্রনের মধ্যে ‘অতটা এনার্জি’ থাকে না যে সে ইচ্ছা মত নিউক্লিয়াসের কাছা কাছি যেতে থাকবে। তাই একটা পর্যায়ের পরে ঈলেক্ট্রন একটা প্রায় অনতিক্রম্য এনার্জি ব্যারিয়ারের সম্মুখীন হয়। ওদিকে উচ্চ পর্যায়ের অর্বিটাল গুলোর এনার্জিও বেশি। তাই সে মাঝা মাঝি ‘নিজের অর্বিটালের’ এনার্জি পকেটে থিতু হয়। ]
তাই ভৌত জগতের যেসব অংশ আসলে ‘ব্লাক হোল না’ (যেমন পৃথিবীর সারফেস।) সেখানে আমাদের পক্ষে প্লাঙ্ক দূরত্বে অবস্থিত দুইটা বিন্দুর মাঝা মাঝি কোনো বিন্দুকেই ‘আলাদা করে অবজার্ভ করা সম্ভব নয়। আর ব্লাক হোল হয়ে গেলে তো কথাই নেই!
তাই দুইটা বস্তু পরস্পর থেকে সাড়ে পাঁচ প্লাঙ্ক দুরত্বে আছে। এটা একটা বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় “অর্থহীন অ্যাসার্শন” দুই ভাবে:-
১. এক্সাক্ট দূরত্ব বলে (অবজার্ভেবল) কিছু নেই। বড়জোর সূক্ষতর একটা রেঞ্জ সেট করতে পারি আমরা।
২. আর এই ‘রেঞ্জ এর সূক্ষতা’ও আনসার্টেনটি প্রিন্সিপাল দ্বারা একটা লিমিটের উপরে আটকানো। সেই লিমিটটাই হচ্ছে ‘প্লাঙ্ক দৈর্ঘ্য’।
তাহলে আমরা কী বলতে পারি? আমরা বড় জোর বলতে পারি একটা বিন্দু X, অরিজিন O থেকে বা আরেকোটা বস্তু থেকে $latex r \pm (l_p/2) $ দূরত্বে আছে। এটাই ভৌত জগতের ‘সূক্ষতার নিম্নসীমা’।
ধন্যবাদ। 🙂
@রনবীর সরকার,
আর ফোটন চার্জহীন কণা। ‘ভরবেগ’ ‘এনার্জি’ আর ‘ছুটে চলার দিক’ ছাড়া এটা আর কোনো তথ্য ‘প্রিজার্ভ করে না। ইনফ্যাক্ট ফোটনের ক্ষেত্রে এনার্জি জানা থাকলে ভরবেগও বের করে নেওয়া যায়। কারণ গতি তো c ।
খেয়াল করুণ আমি বলেছি ফোটন ‘আদান প্রদান’ এর মাধ্যমে। এক ধরণের ‘সাম্যাবস্থার গন্ধ’ পাওয়া যাচ্ছে না? চার্জ গুলোকে পরস্পররের সাপেক্ষে যতক্ষন ‘এক্সিলারেট’/মুভ করা না হচ্ছে ততক্ষণ এই সাম্মাবস্থা বজায় থাকে। এক্সিলারেশন ডি এক্সিলারেশন বা নড়াচড়া শুরু হলেই আমরা ফোটন বিকিরণ দেখতে শুরু করি। যাই হোক এই বর্ণনা অতিসরলিকৃত।
ফোটনে যেহেতু চার্জ নাই। তাই একটা চার্জড অবজেক্ট থেকে দুনিয়ার সব ফোটন বেরিয়ে গেলেও সেটা চার্জড অবজেক্টই থাকবে। যতক্ষণ না কোণো চার্জড পার্টিকেলও বেরিয়ে যাচ্ছে। যাই হোক। আমি আর বিশদ আলোচনায় গেলাম না। পরের কোনো পোস্টে বিশদে লেখার আশা রাখি। 🙂
বেশ মজার একটা জিনিস শিখলাম। :yes:
@সাইফুল ইসলাম,
ধন্যবাদ 🙂
খুবই ভাল লেগেছে।
খুব অল্প করে কোয়ান্টাম মেকানিক্স পড়েছি।
আমার বুঝতে কোন সমস্যা হয়নি।
অনার্সে কিছুটা ছিল কিন্তু তা কয়েকটা থিউরি মুখস্ত করাই সিমাবদ্ধ।
কিছুই বুঝিনি। যারা আমাদের বুঝাবে তারা বুঝেন কিনা কে জানে?
ড.জাফর ইকবাল এর কোয়ান্টাম মেকানিক্স পড়ে খুব ভাল লেগেছে।
এ ব্যাপারে আমার আ্গ্রহ আছে কিন্তু বাঙলা বই পাওয়া সমস্যা।
@আসরাফ,
ধন্যবাদ। এসব নিয়ে আগ্রহ থাকলে ফাইনম্যানের লেকচার সিরিজ পড়তে পারেন। আমার দেখা সেরা বিজ্ঞান বই।
শেষ প্যারাটা বাদে পুরো লেখাটাই বেশ সহজবোধ্য হয়েছে। কমপিউটারের উদাহরণটা খুব ভাল কাজ করেছে :yes:
@পৃথিবী,
শেষ প্যারার লাটিমের ব্যাপারটা এভাবে বলা যায়। ঘুর্ণায়মান লাটিমের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট পরিমান শক্তি থাকে। এখন লাটিমের গতি যখন কমবে তখন তার সেই শক্তিও কিছুটা কমতে হবে। কিন্তু কোয়ান্টাম জগতে শক্তি একেকটা নির্দিষ্ট সাইজের প্যাকেট আকারে নড়া চড়া করে। যেমন এখানে আমরা ধরে নিয়েছি প্যাকেটের আকার ৫। তাই আমরা দেখব লাটিমের ঘুর্ণনের পরিবর্তনটা ‘কন্টিনিউয়াস’/ধারাবাহিক না হয়ে বিচ্ছিন্ন ধাপে ধাপে হচ্ছে।
উদাহরণটাতে অবশ্য শক্তি না লিখে ‘কৌনিক ভরবেগ’ লিখেছি। কারণ কৌনিক ভরবেগও শক্তির মতই সংরক্ষণশীলতার নীতি মেনে চলে। তাই এই রিজনিং ওখানেও খাটবে।
লাটিম এর উদাহরণটা স্থুল উদাহরণ হলেও। বাস্তব জগতে বা ভৌত জগতে কোনো কিছু যখন ঘুরতে থুরতে থেমে যায় তখন এমন অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে ধাপেই থামে। সে লাটিম হোক বা কোনো গ্রহানূ, বা হোক না কোনো নক্ষত্র। 🙂
লেখাটি আমার মত যারা কোয়ান্টাম মেকানিক্স বোঝেনা তাদের জন্য যথেষ্ঠ ভালো হয়েছে। মনিটরের রেজলিউশন এর উদাহরণ ব্যাবহার অনেক ভাল হয়েছে। :yes: :yes:
কোয়ান্টাম মেকানিক্স সম্পর্কে সাধারণ পাঠকের উপযোগী কিছু ভালো বইয়ের নাম বলতে পারবেন কী যেগুলো বাংলাদেশে পাওয়া সম্ভব।
@মিথুন,
ধন্যবাদ। মোটামুটি একটা বোধগম্য চিত্র আকাই লক্ষ্য ছিলো। 🙂
মুহাম্মাদ জাফর ইকবালের একটা বই দেখেছিলাম। বাংলায় সহজবোধ্য আর কোনো বই আমার চোখে পড়েনি।
@তানভীরুল ইসলাম, ইকবাল স্যারের বইটি পড়েছি।আমি আরো বেশী কিছু পড়তে চাই। বাংলা বই হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বাংলাদেশ থেকে পাওয়া গেলেই চলবে। আপনি কি অনূগ্রহ করে কয়েকটি ইংরেজী বইয়ের নাম বলতে পারবেন? আমি খুজে দেখতাম এখানে পাওয়া জায় কি না।
@মিথুন,
‘ফাইনম্যান লেকচার্স অন ফিজিক্স’ (তিন ভলিউম) এই বইটাই সবচেয়ে ভালো। নিউমার্কেটে ‘বুক ভিউ’ তে পাবেন (আমি পেয়েছিলাম)। নীলক্ষেতেও খুজে দেখতে পারেন।
@তানভীরুল ইসলাম, ধন্যবাদ
@মিথুন,
এমাজন থেকে এই বইটি দেখতে পারেন, খুবই সহজ করে কার্টুন এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।
http://www.amazon.com/Introducing-Quantum-Theory-Sciences-Discovery/dp/1840468505/ref=pd_sim_b_3
মুক্তমনাতে ঢুকতে পারছিনা। টর দিয়ে ঢুকলাম। কি হল কেউ কি জানেন?
@মিঠুন,
@নৃপেন্দ্র সরকার,
টর হচ্ছে এক রকম ‘প্রক্সি’ ব্যবস্থা।
কোনো সাইট ব্লক করা হলে এমনটা হয়। নরমালি তখন আক্সেস করা যায় না।
@মিঠুন
আসলেই কি??? বাংলাদেশ নাকি ভারত?
বাংলাদেশ থেকে আমার বন্ধুরা আক্সেস করতে পারছে এখনো।
@তানভীরুল ইসলাম,
আমি বাংলাদেশ থেকে।
এখন ঢুকতে পারছি। অকারন ভয় পেয়েছিলাম।
@মিঠুন, মুক্তমনাতে ঢুকতে না পারলেই সবাই “ব্যান” এর ভয় পায়!! নতুন সার্ভার নিয়ে এখনো কিছু কাজ চলছে,ঢুকতে না পারলে ভয়ের কিছু নাই,কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
হে হে, ব্যান করুক না..যত খুশী করুক। টর আছে না!! ভয় কিসের?
ফেসবুক তো বন্ধ করেছিল। কি ক্ষতিটা হয়েছিল তাতে?
উঁহু ঠিক ঠাক ব্যাখ্যা হল না।
প্রথমেই শুরু কর বাস্তবতা বনাম পর্যবেক্ষন দিয়ে।
তারপরে কোয়ান্টাম বাস্তবতার ধারনা কেন এল পর্যবেক্ষন থেকে।
তারপরে কোয়ান্টাম কি সেটা বোঝাও-খেয়াল রাখতে হবে, মুল ব্যাপারটা কিন্ত শক্তি দেওয়া নেওয়ার ব্যাপারটা থেকে।
@বিপ্লব পাল,
হ্যা। আসলে এজন্যেই ‘অতিসরলিকরণদোষের’ কথাটা বলে নিয়েছি।
এ নিয়ে একটু ডিটেইলে একটা লেখা তৈরি করছি কদিন ধরেই। কিন্তু ওটা সবার জন্য ‘আক্সেসিবল’ করতে মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
স্রেফ বিচ্ছিন্নতার ধারণাটা যাতে পাওয়া যায় সেটারই একটা ‘গ্লিম্পস’ দিতে চাচ্ছিলাম।
@তানভীরুল ইসলাম,
তাতে লোকে আরো ভুল বুঝবে।
@বিপ্লব পাল,
হ্যাঁ সে সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। তবে আমি এই রিস্ক টুকু নিতে রাজি।
@বিপ্লব পাল,
কোয়ান্টাইজেশনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এবং পরবর্তী পর্বের জন্য Introductionটা ভাল হয়েছে। :yes: LED দিয়ে শুরু করলে আরও ভিসুয়্যাল হত।
ভালর শেষ নেই।
প্রকৃতির সীমাবদ্ধতা নেই। আমাদের আছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর বৈজ্ঞানিক আলোচনায় সমস্যা হয় দ্বিমুখী।
১. এতে ব্যবহৃত গণিত ‘সাধারণ গণিত’ নয়।
২. এতে ব্যবহৃত ‘বাস্তবতার মডেল’ ইনটুইটিভ নয়।
তাই আপনি অনেক চর্চার মাধ্যমে একটা কোয়ান্টাম ঘটনার সকল গাণিতিক ব্যাপার হিসাব করতে সক্ষম হলেও শেষমেষ দেখা যাবে একটা ‘মানসিক চিত্র’ তৈরি করতে বেশ সমস্যা হচ্ছে।
তাই আমার মতে বর্ণনার অ্যাটাকও দ্বিমুখী হওয়া উচিত। কোয়ান্টাইজেশন সম্পর্কে একটা ‘ইনটুইটিভ আইডিয়া’ করে নিতে পারলে সেটাকে পরে গণিতের সাহায্যে একদম জায়গা মত বসিয়ে নেওয়া সহজ হয়।
নইলে হঠাৎ বেশকিছু ইকুয়েশন আর রিগোরাস বর্ণনার ধাক্কা সহ্য করা মুশকিল।
@তানভীরুল ইসলাম, সূচনা ভালো লেগেছে। আগে ঠিক করতে হবে, কাদের জন্য লিখছেন। একটা সহজবোধ্য ধারণা যদি দিতে চান, তাদের জন্য, যারা ভয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ছায়া মাড়ায় না, তাহলে ঠিক আছে।
কিন্তু আমার মনে হয় আমাদের(বাংলাভাষীদের) জন্য আরেকটু বেশীও দরকার আছে, সেটা বাংলায়। একটা প্রিভিউ এর পরই ইন্টারভিউ দরকার হয়ে যাবে। একবারে জটিল কিছুর ধাক্কা সামলানো কঠিন হবে, এটা যখন বুঝতেই পারছেন, তখন এমন ভাবে আগাতে পারেন, যাতে কি নিয়ে পড়ছি, পাঠকের মনে এই পরিবেশ তৈরী করার পরই সহজভাবে জটিল কিছু আসে, কিন্তু কোন ফাঁক না রেখে। বিজ্ঞান নিয়ে লিখতে গেলে ফাঁক রেখে লেখাটা অনেকটা আধাসত্যের মত ব্যাপার হয়ে যাবে। আশা করছি সেই ব্যাপারটা ঘটবে না। কিছুটা সময় নিয়ে ধীরে ধীরে সহজ থেকে কঠিনের দিকে এগুলে সমস্যা হওয়ার কথা না।
পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় রইলাম।