‘বাংলা ব্লগের ভাষা ও দিকদর্শন’ শিরোনামের লেখাটি রচনার সময় মনে হয়েছে, ব্লগে অনেক সময়ই যে সব সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করা হয়, তা নতুন ব্লগার বা সাধারণের কাছে তেমন পরিচিত নয়। আবার সুধী সমাজে এ সব ব্লগীয় অপ-শব্দ অশ্লীল হওয়াটাও বিচিত্র নয়। এমন চিন্তা থেকে বাংলা ব্লগের অপ-শব্দসমূহ একত্র করার উদ্যোগ নিয়েছি।

বলা ভালো, এটি মোটেই কোনো গূঢ় গবেষণাকর্ম নয়। নিছকই ব্লগাড্ডা মাত্র। তবে এটি রীতিমত প্রাপ্তমনস্কদের জন্য লেখা।

সকলের সহযোগিতা কাম্য। হ্যাপি ব্লগিং।


chulkani

১। ছাগু = ছাগলের সংক্ষিপ্ত রূপ। একটি বিশেষ গোষ্ঠিকে (যেমন তিন বাহু গং) বোঝায়। তারা জামাতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মগবাজারকে মক্কা শরীফ মনে করে আমোদিত হয়।

২। হিতা = হিযবুত তাহরীর। মডারেট জঙ্গি ইসলাম; অধুনা নিষিদ্ধ। তবে নানান ছদ্মবেশে ব্লগে তাদের আনাগোনা আছে।

৩। গদাম! = পশ্চাদে পদাঘাত। সাধারণত ছাগু তাড়াতে প্রযোজ্য।

৪। লাদি = ছাগুর পোস্ট বা মন্তব্য।

৫। ম্যাৎকার = ছাগুদের একক বা সম্মিলিত রব।

৬। কাঁঠাল পাতা = ছাগুকে আপ্যায়নের (?) ভাষা বিশেষ। ইদানিং কোনো কোনো ব্লগে দাবি উঠেছে, কাঁঠাল পাতার ইমোকটিন যোগ করার।

৭। ধনে পাতা = ধন্যবাদ। মতান্তরে, ধইন্যা।

৮। হা হা প গে = হাসতে হাসতে পড়ে গেলাম। মতান্তরে, হা হা ম গে = হাসতে হাসতে মরে গেলাম।

৯। রেসিডেন্ট ভাঁড় = রাজ-রাজরার আমলের ভাঁড়দের মতো ব্লগের স্থায়ী বিনোদন হিসেবে পরিচিত বিশেষ প্রজাতির ব্লগার । যেমন, সরব।।

১০। মাইনাস = বাজে লেখা বা মন্তব্য বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যেমন, ডা. আইজু বলেন, বা-ছা পোস্টে ডাবল মাইনাস! লেখায় এক তাঁরা চিহ্ন দিলেও মাইনাসই বোঝায়।

১১। তাঁরাইলাম = উত্তম লেখা বা প্রসংশাসূচক মন্তব্য। পাঁচ তাঁরা বা প্লাস চিহ্ন দিয়ে লেখাটিকে সর্বোচ্চ রেটিং করা হয়।

১২। হ = ঠিক তাই।

১৩। ঞঁ! = বলে কী রে! মতান্তরে, কস্কী মমিন?

১৪। ছিক! = ছিঃ কথাটির ভিন্নরূপ। দুষ্টুমী করে বলা হচ্ছে।

১৫। অশ্লীষ = অশ্লীল লেখা বা মন্তব্য। দুষ্টুমী করে বলা হচ্ছে।

১৬। কাফি = ব্লগারের অন্তিম পরিনতির উদাহরণ বিশেষ।

১৭। বিপ্লব = লেখায় পাঁচ তাঁরা। মতান্তরে, আপনাকে বিপ্লব।

১৮। চুলকাইতে মুঞ্চায়? = অন্যকে উত্যাক্ত করতে ইচ্ছে করছে কী না, তা বোঝাতে।

১৯। আছছালামু আলাইকুম = কহিনুল্লাহ। মতান্তরে, বঙ্গদেশ, সকলে ছহি ছালামতে থাকবেন – ইত্যাদি।

২০। পপকর্ন নিয়ে গ্যালারিতে বসলাম = ব্লগ বিতর্ক উপভোগ করছি, মতান্তরে, মজা দেখছি।

২১। জাঁঝা = উত্তম, লেখা বা মন্তব্য ভালো হয়েছে বোঝাতে।

২২। সুশীল = অতিশয় আঁতেল অর্থে। যেমন, এই ধেনু যাহ, নইলে ফুল ছুঁড়ে মারবো কিন্তু। অখবা, সুশীল ব্লগ = সাহেব বাবুর বৈঠকখানা বিশেষ।

২৩। লুল বা লুল পুরুষ = বালিকা, নাবালিকা দেখলেই লালা ঝড়ে, এমন ব্লগার। ইদানিং ব্লগে ‘লুল পুরুষ’ ইমোকটিন যোগ করার দাবি উঠেছে।

২৪। সিটিএন = ইয়ের টাইম নাই, কোনো ব্লগারের সঙ্গে বাদানুবাদে না জড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশে তীব্র ঘৃণায় এটি বলা হচ্ছে।

২৫। ডিজিএম = দূরে গিয়া মর।

২৬। মফিজ = এলেবেলে ধরণের সাধারণ জন।

২৭। ভাঁজ খুইল্যা গেছে = আসল রূপ ধরা পড়েছে।

২৮। বাঁচাও কালা কুদ্দুস = ছেঁড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি — এমন অর্থে। সাধারণতা উল্টো-পাল্টা মন্তব্য দেখলে এটি ব্যবহার করা হয়।

২৯। বুথে আয় বায়তুল = আবেগ সামাল দিন। লেখা বা মন্তব্যে মাত্রাতিরিক্ত আবেগের রাশ টেনে ধরতে বলা হচ্ছে।

৩০। চ্রম = চরম শব্দটির অপভ্রংশ। যেমন, চ্রম হৈছে — বলতে লেখা বা মন্তব্যটি অসাধারণ হয়েছে বোঝায়।

৩১। জটিল = খুব ভালো, মতান্তরে জট্টিল বা জটিলস্ = খুব ভালো লেখা বা মন্তব্য, এমন বোঝাতে।

৩২। খ্যাক খ্যাক = হাসি, দুষ্টুমী করে বলা হচ্ছে।

৩৩। মুঞ্চায় = মন চায়, মন চাইছে — অর্থে। মতান্তরে, মন্চায়।

৩৪। কোবতে = কবিতা, দুষ্টুমী করে বলা হচ্ছে।

৩৫। ভাদা = ভারতের দালাল।

৩৬। পৈতা টেষ্ট = ভারতের দালাল সনাক্তের ব্লগীয় পরীক্ষা। মতান্তরে, ঈমান পরীক্ষা।

৩৭। মডু = ব্লগের মডারেটর, মতান্তরে মডুরাম।

৩৮। ডেভু = ডেভোলপার, ব্লগের কারিগরদের সংক্ষেপে বোঝাতে।

৩৯। টেকি = টেকনোলজিস্ট, টেকনো কানা = প্রযুক্তিতে অজ্ঞ– এমন বোঝাতে।

৪০। খিকজ= খিক খিক করে হাসির সংক্ষিপ্ত রূপ।

৪১। জোসিল= জোস বা খুব মজা+ বোঝাতে।

৪২। চ্রম = চরম অর্থে, দুষ্টুমী করে বলা হচ্ছে।

৪৩। খ্রাপ = খারাপ অর্থে, দুষ্টুমী করে বলা হচ্ছে।

৪৪। ওকিজ = ওকে বা ঠিক আছে, দুষ্টুমী করে বলা হচ্ছে।

৪৫। খুদাপেজ = খোদা হাফেজ, দুষ্টুমী করে বলা হচ্ছে।


(চলবে?) 😉