শ্রদ্ধাঞ্জলি: শহীদ জননী জাহানারা ইমাম
পঁয়ত্রিশ বছর আগে পনেরোই অগাষ্ট ১৯৭৫ সালের খুব সকালে বাবাকে দেখলাম মুখ ভার করে গম্ভীর হয়ে সোফায় ঠায় বসে আছেন। বেশ উদবিঘ্ন আর এক অজানা আশংকায় দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ্! তখনো আসল খবর পাইনি! মা’কেও দেখলাম উৎকন্ঠায়! বাবাকে কারো সাথে বেশী কথাবার্তা না বলার পরামর্শ দিলেন। উৎকনঠা টের পেয়ে বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কি হয়েছে, টপ টপ করে চোখের জলে নেয়ে তিনি বললেন, “বঙ্গবন্ধু আর মনে হয় নেই রে!” বুকটা কেঁপে ঊঠলো! তার পরে বাবার কাছ থেকেই সব জানলাম আর বাবার সাথে রেডিওতে কান পাতলাম। এক পর্যায়ে বাবা বললেন, “দেশটা চলবে কিকরে তাইতো বুঝছিনা”!
তারপরে অনেকদিনে একটু একটু করে বুঝলাম, দেশটা আসলে চলেনি, চালক বিহীন তরী ভেসে চলেছে অজানা গন্তব্যে লক্ষ্যবিহীন এক যাত্রায়! আজ থেকে ষোল বছর আগে আজকের এই দিনে আরেক মর্মন্তুদ খবর এসে পৌঁছোয় এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বদ্বীপে, “জননী জাহানারা ইমাম আর নেই”! সেই দিনও আমি বাবার মতোই অনুভব করেছিলাম, ’৭১ এর ঘৃন্য ঘাতকদের বিচারের আন্দোলনের যে আগুন, প্রকৃতিকি সত্যিই তাতে জল ঢেলে দিলো! তারপরেও অনেক গড়িয়েছে জল উজান থেকে ভাটীতে আমাদের বুক শুকোনো মড়া নদীর বাঁকে বাঁকে। শেষ বার, দেশ ছাড়ার আগে জননী বলেছিলেন, “ওদের মৃত্যুঘন্টা বেজে গেছে। দেখিস, এবার ফিরে এলেই দুর্বার আন্দোলন গড়বো আমরা। দেশ জেগেছে, তরুনেরা ধরেছে হাল। আমার সন্তনেরা একাট্টা হয়েছে ‘দানবশক্তি’র বিরুদ্ধে। জয় আমাদের সুনিশ্চিত!” সেই ফিরে আসা আর হয়নি জননীর। সেই ক্ষমাহীন যুদ্ধাপরাধের বিচার আজো কেঁদে মড়ে বদ্বীপের আকাশে বাতাসে। মৃত্যুর হিমশীতল হাত যখন প্রসারিত, মা আমদের ভুলে জাননি তাঁর শেষ কর্ত্যব্য বোধটিও। কাঁপা কাঁপা হাতে এক চিঠিতে উদাত্ত আহ্বান তিনি জানালেন প্রিয় সন্তান সম মানুষের কাছে, এই বাংলায়। তাঁর দানব-দমনের দায়িত্ত্ব অর্পন করলেন মানুষের হাতে। আজ যদি নিজেদের মানুষ বলে দাবী করি তবে সে দায়িত্ত্ব আমাদের সবার।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পরে নির্বাসিত হয়েছিলো আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতার চেতনা পলে পলে। সে ধারা অব্যহত আছে, কারণ শত্রুরা ছদ্মবেশে! ঝাড়ে বংশে উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত এ মাতৃভূমির রেহাই নেই। আজ যারা তরুণ, যারা নবীন, রক্ত যাদের ফুটন্ত পলাশের মতো, চোখের তাড়ায় যাদের আলো ঝলমল করে, মায়ের ডাক মূলতঃ তাদের প্রতি। “তোমরা জাগো, বাংলাকে জাগাও”।
আজকের এই পড়ন্ত বিকেলে জননী জাহানারা ইমামের প্রতি আমার অনিঃশেষ শ্রদ্ধা। যিনি আগলে রেখে পাহারা দিয়েছেন তাঁর সন্তানের, এদেশের লক্ষ-কোটি নতুন প্রজন্মকে। শেষে যখন দেয়ালে ঠেকেছে পিঠ, ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, যুদ্ধ করেছেন কালের পরাজিত দানবের বিরুদ্ধে! এভাবেই একদিন ছেড়ে গেলেন আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে। তাঁর অর্পিত দায়িত্ত্ব আজ এদেশের সহস্র তরুনের হাতে! যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই।
যদিও আমার আসল প্রশ্নটার উত্তর পেলাম না। বাংলাদেশের যারা আছেন তারা কি এই আলোচনায় স্বচ্ছন্দ নন?
আবার বলছি বানান ভুলের জন্যে অত্যন্ত দুঃখিত। বানান যে জানিনা এমন নয়। browser based অভ্র ব্যবহার করছি বলে features কিছু কম পাচ্ছি। ভুল বানান ব্যবহার করলে খারাপ লাগে। কিন্তু অভ্র client এখানে install করার admin rights নেই আমার। ভুল ত্রুটিগুলো নিয়ে যত্নবান হবার চেশ্টা করবো।
বানান ভুলের জন্যে অত্যন্ত দুঃখিত। সুনীল হবে সুনিম নয়। তবে গঙ্গোপাধ্যায়কে আমরা গাংগুলি বলেয় থাকি।পশ্চিম বাংলায় বেশির ভাগ লোক ওনাকে সুনীল গাংগুলি-ই বলে।
সরি একটা ছোট্টো ভুল হয়েছে –সুনিল গাংগুলির প্রথম আলো উপন্যাস নয়, ওটা হবে সুনিল গাংগুলির পূরবো পশ্চিম।
(এই পূরবো বানানটাও ভুল লিখলাম। অভ্রতে তেমন expert নই!)
🙁
@অনামী,
আপনি দু`বারই লেখকের নাম ভূল লিখেছেন। লেখকের নাম হচ্ছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
ভালো থাকবেন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
ভূল নয়, হবে ভুল।
অনামী পশ্চিম বাংলার ছেলে। উনি যদি তার এলাকার বানানে লিখেন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে সুনিল গাংগুলি বলেন তাহলে কী বলবেন? তখন কি ভুল হবে?
বলুন তো বানান নিয়ে কচকচানী কতদিন চলবে?
জাহানারা ইমামের কথা প্রথম জানতে পারি সুনিল গাংগুলির প্রথম আলো উপন্যাস থেকে। প্রসংগত জানাই যে আমি পশ্চিম বাংলার ছেলে ও আমার জন্ম মুক্তিযুদ্ধের বেশ পরে।এমন মহিয়সী জননীর কথা পরে গ্’রবে বুক ভরে যায়।পরে পড়ি একাত্তরের দিনগুলি।
কিন্তু আজো যেটা বুঝিনি বা আমার কাছে স্পস্টো নয় তা হল কোন পরিস্থিতে মুজিব হত্যার মতন ব্যাপার ঘটল। আমার লেখাপড়ার অগভীরতা দায়ী না বুঝতে পারার জন্যে নিশ্চয়, কিন্তু মুজিব কেন বাকশাল করতে গেলেন? ইতিহাসের অন্যতম সেরা বিরোধি নেতার শাসক হিসেবে এই পরিণতি কেন?
এই নিয়ে মুক্ত মনায় স্বতন্ত্র আলোচনা হলে কিছু অনেক কিছু জানতে পারব আশা করি।
লক্ষ্য শহীদ ডাক পাঠালো
সব শহীদদের খবর দে
সারা বাংলা ঘেরাও করে
রাজাকারদের কবর দে ।
কেশব অধিকারী, জাহানারা ইমাম যখন এই যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারে রাস্তাঘাটে সভা সেমিনারে অনবরত কথা বলে চলেছেন তখন বিশেষত ছাত্রদের মধ্যে এক ধরনের জাগরণ এসেছিল বিষয়টা নিয়ে। কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে হঠাত করেই এই আন্দোলনটা থেমে যায়। এর পিছনে কারণগুলো খুব স্পষ্ট নয়। এই মহান নারীকে স্মরণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
উনি শুধু রুমির মা ই নন। উনি আমাদের সবার মা, বাংলার মা। মাকে অশেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
@সাইফুল ইসলাম,
এই মাকে নিয়ে যুদ্ধপরাধীরা কত আজে বাজে কথা-ই না বলেছে। জামাতের দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ওয়াজ মাহফিলে জাহান্নামের ইমাম বলে উল্লেখ করতো।
মাকে কেউ গালি দিলে কি মাথা ঠিক রাখা যায়?
তাই তো যুদ্ধাপরাধীদের অবিলম্বে ফাঁসি চাই।
@মাহফুজ, :yes: :yes:
অনি:শেষ শ্রদ্ধা।
এই ভবিষ্যদ্বাণী একদিন ফলবেই ফলবে। বিচার হবেই হবে।
পর পর পোষ্ট করা দুটো লেখাই জননীকে নিয়ে লেখা। একেই বলে জননীর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা। মুক্তমনার সকল সদস্যরা মায়ের প্রতি উপযুক্ত সম্মানই প্রদর্শন করে যাবে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই। রাজাকারদের ক্ষমা নেই।।
—
শহীদ জননীকে শ্রদ্ধা। :rose:
@বিপ্লব রহমান,
যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই। রাজাকারদের ক্ষমা নেই।
@বিপ্লব রহমান,
কষ্মিনকালেও নয় :guli: :guli: :guli: :guli: :guli: