মানুষের উৎপত্তি খুঁজতে গিয়ে গত দশকে মানব কৌ্লিতত্ববিদদের (হিউম্যান জেনেটিসিষ্ট) মধ্যে বারবার “মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভ” এবং “ওয়াই ক্রোমজোমাল এড্যাম” শব্দ দু’টো উচ্চারিত হত।
ডিএনএ১ নমুনা ছাড়া বহু পুর্বে মারা যাওয়া কারো জেনোম২ (কোন জীবের সম্পুর্ন বংশগতির বিবরন) পুনর্নিমাণ (রিকন্সট্রাক্ট) করা সম্ভব নয়।বংশধরদের ডিএনএ বিশ্লেষন করে আংশিক ভাবে পুর্ব পুরুষদের জেনোম সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়।বিজ্ঞানীরা এই ভাবে পুর্ব পুরুষদের বংশগতি সম্পর্কে ধারনা পাওয়ার জন্য মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ৩ এবং ওয়াই ক্রোমোজোম ডিএনএ৪ বিশ্লেষন করেন।মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ সাধারনত অপরিবর্তিত অবস্থায় মা থেকে ছেলে এবং মেয়ে উভয় শিশুতেই যায়।তবে তা ছেলে শিশু থেকে পরবর্তী বংশধরে আর যেতে পারে না। কিন্তু মেয়ে শিশু থেকে পরবর্তী বংশধরে যায় এবং একই ভাবে তার পরবর্তি বংশধরে যায়।মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শুধু মাত্র মেয়েদের মাধ্যমেই বংশানুক্রম ভাবে এক বংশ থেকে পরবর্তী বংশে যায় বলে একে রৈখিকমাতৃপরম্পারিক রেখা (ম্যাট্রিলিনেয়াল লাইন) ও বলা হয়।মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ দিয়ে মা থেকে তার মা, তার মা থেকে তার মা এবং এভাবে এক আদি মাকে খুঁজে বের করা হয়েছে যাকে মানব কৌ্লিতত্ববিদরা (হিউম্যন জেনেটিসিষ্টরা) আনুমানিকভাবে (হাইপোথেটিক্যালি) “মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভ” নাম দিয়েছেন।মানব কৌ্লিতত্ববিদরা “মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভ” কে এমন একজন নারী বলে চিন্তা করেছেন যার থেকে সমস্ত মানুষের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ উৎপত্তি লাভ করেছে। কৌ্লিতত্ববিদরা সময় হিসাব করে বলেছেন যে “মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভ” প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার বছর আগে আফ্রিকায় বাস করতেন। এখানে উল্লেখ্য যে বাইবেলে বর্নিত ঈভের সাথে এই ঈভের কোন যোগসুত্র আছে কি নেই তা বিশ্লেষন করা হয় নি।
মজার ব্যাপার হল মানব কৌ্লিতত্বে “মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভে”র মত আনুমানিক (হাইপোথ্যাটিক্যালি) “ওয়াই ক্রোমোজোম এড্যাম” ও খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবী করা হয়।কিন্তু এই দু’জনের পৃথিবীতে অবস্থানের সময় ছিল ভিন্ন। এড্যাম ঈভের চেয়ে প্রায় ৫০ থেকে ৮০ হাজার বছরের ছোট তবে তারও নিবাস আফ্রিকায় ছিল বলে মনে করা হয়।
“ওয়াই ক্রোমোজোমাল এড্যাম” হল এমন একজন পুরুষ যাকে সমস্ত পুরুষের ওয়াই ক্রোমোজোমের ডিএনএ এর উৎস মনে করা হয়। ওয়াই ক্রোমোজোম সব সময় পুরষ থেকে পুরুষে যায়। পুরুষের পৌরষ্যত্ব প্রকাশক যত বৈশিষ্ট্য তা এই ওয়াই ক্রোমোজোমে কোড করা থাকে। মানুষসহ প্রায় সব স্তন্যপায়ীর লিংগ নির্ধারনী ক্রোমোজোম হল এক্স এবং ওয়াই। ক্রোমোজোম সব সময় জোড়ায় জোড়ায় থাকে। পুরুষের লিংগ নির্ধারনী ক্রোমোজোম জোড়ার নাম হল এক্স-ওয়াই অন্যদিকে নারীদের লিংগ নির্ধারনী ক্রোমোজম জোড়ার নাম হল এক্স-এক্স।“মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভে”র মত “ওয়াই ক্রোমোজোম এড্যাম” বাইবেলে বর্নিত এড্যাম বা কোরানের আদমের সাথে কোন যোগসুত্র আছে কি নেই তা নিয়ে কোন গবেষনা হয়নি এবং কেউ এদের মধ্য যোগসুত্র খুজছেন কিনা তাও জানা নেই।এই নামটি নিতান্তই কৌতুহলের বশে বিজ্ঞানীদের দেওয়া যেখানে তারা এমন একজন পুরুষের কথা বলেছেন যার থেকে সমস্ত পুরুষের ওয়াই ক্রোমোজোমের উৎস।
ওয়াই ক্রোমোজোম এড্যামকে রৈখিকপিতৃপারম্পারিক আদি পুরুষ বা দ্যা প্যাট্রিলিনেয়াল মোষ্ট কমন এন্সেষ্টর বলা হয়। আবার মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভকে রৈখিকমাতৃপারম্পারিক আদি নারী বা দ্যা মোষ্ট রিসেন্ট কমন ম্যাট্রিলিনেয়াল এনসেষ্টর বলা হয়।
নোটঃ
১।ডিএনএঃ ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড।এটা একটা নিউক্লিক এসিড। এটা সমস্ত জিবিত প্রানী এবং কিছু ভাইরাসের বৃ্দ্ধি এবং তাদের কর্মক্ষম রাখার প্রয়োজনীয় কৌ্লিতাত্বিক তথ্য ধারন করে। ডিএনএ অনুর প্রধান কাজ হল বংশগতির তথ্য সমুহের দীর্ঘকালীন সংরক্ষন।ডিএনএ কে কোন কিছুর মৌলিক কাঠমো বা ব্লুপ্রিন্ট, রেসিপি বা উপাদন এবং মুল একক বা কোড এর সাথে তুলনা করা যায়।এরা কোষের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অন্যান্য উপকরন যেমন প্রোটিন এবং আরএনএ সংশ্লেষনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী ধারন করে। ডিএনএ এর যে অংশে বংশগতির তথ্য থাকে তাকে জিন বলে। তবে অন্যান্য অংশ গাঠনিক উদ্দেশ্য এবং তথ্য নিয়ন্ত্রনের জন্য কাজ করে (নন কোডিং সিকোয়েন্স)।
২।জেনোমঃ কোন জীবের বংশগতির সম্পুর্ন তথ্যকে জে্নোম বলে। জেনোমে জিন এবং ডিএনএ এর নন কোডিং সিকোয়েন্স থাকে।সাধারনত এটা ডিএনএ তে কোড করা থাকে তবে অনেক ধরনের ভাইরাসে এটা আরএনএ তে কোড করা থাকে।তবে সাধারন ভাবে জেনোম বলতে নিউক্লিয়ার জে্নোমকে বোঝায়।নিউক্লিয়াসের সম্পুর্ন জেনেটিক মেটেরিয়াল মানে ক্রোমোজোম বা ডিএনএ কে বোঝায়।যেমন সাধারন ভাবে মানুষের জেনোম বলতে ৪৬টি বা ২৩ জোড়া ক্রোমোজমকে একত্রে বোঝায়। কিন্তু মাইটোকন্ড্রিয়াতে যে জেনেটিক মেটেরিয়াল বা ডিএনএ থাকে তাকে মাটোকন্ডিয়াল জেনোম বলে।তেমনি ভাবে ক্লোরোপ্লাষ্টে যে ডিএনএ থাকে তাকে ক্লোরোপ্লাষ্ট জেনোম বলে। সাধারনত মানুষের বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয় নিউক্লিয়ার জেনোম দিয়ে। মাইটোকন্ড্রিয়াল জেনোম দিয়ে নয়।
৩।মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএঃ কোষের মাইটোকন্ড্রিয়াতে যে ডিএনএ থাকে তাকে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ বলে।এটা মায়ের ডিম্বানু থেকে পরবর্তি বংশে যায়। যদিও বাবার শুক্রানুতেও মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে কিন্তু কিছু কিছু কারনে শুক্রানুর মাইটোকন্ড্রিয়া জাইগোটে যেতে পারে না। যেমন ডিম্ব কোষে মাইটোকন্ড্রিয়ার সংখ্যা শুক্র কোষের মাইটোকন্ড্র্যার সংখ্যার চেয়ে কয়েকগুন বেশী।তাই প্রতিযোগিতায় টিক্তে পারে না। আবার শুক্রানুতে মাইটোকন্ড্রিয়া লেজের দিকে থাকে বলে নিষিক্তকরনের সময় নতুন জাইগোটে যেতে পারে না (যেহেতু লেজ ডিম্বানুর সাথে যায় না তাই পুরুষের মাইটোকন্ড্রিয়া জাইগোটে যেতে পারে না)।কারন যাই হোক না কেন মাইটোকন্ড্রিয়া সব সময় মা থেকে সন্তানে যায়। যদিও নিউক্লিয়াস এবং মাইটোকন্ড্রিয়া উভয়ই কোষের মধ্যে থাকে তবুও সাধারন ভাবে নিউক্লিয়ার জেনোমের সাথে মাইটোকন্ড্রিয়াল জেনোমের কোন বিনিময় হয় না বা মিশ্রন ঘটে না।কিছু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এদের মাঝে ডিএনএ বিনিময় হলেও তা জীবের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যে প্রকাশ পায় না কারন মাইটোকন্ড্রিয়াল জেনোমের বৈশিষ্ট্যগুলি রিসিপ্টিভ জোনে প্রকাশ পায় না।মাইটোকন্ড্রিয়াল জেনোম সাধারনত জীবের জীবন নির্ধারনকারী কিছু কাজ করে যেমন নির্দৃষ্ট কিছু এনজাইম উৎপাদন করে। তাই, মাইটোকন্ড্রিয়াল জেনোম, কখনই মানুষের সাধারন বৈশিষ্ট্যে যেমন স্বভাব, চেহারা ইত্যাদিতে অবদান রাখেনা।
৪।ওয়াই ক্রোমোজোম ডিএনএঃ মানুষসহ অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রানীর প্রতিটি কোষে এক জোড়া লিঙ্গনির্ধারনী ক্রোমোজোম থাকে। ক্রোমোজোম দুইটার নাম হল এক্স এবং ওয়াই। পুরুষের একটা এক্স এবং একটা ওয়াই ক্রোমোজোম থাকে এবং নারীদের কোন ওয়াই ক্রোমোজোম থাকে না, থাকে দুইটাই এক্স ক্রোমোজোম। মানুষের ওয়াই ক্রমোজোম এক্স ক্রোমোজোমের সাথে এর রিকম্বিশন হয় খুবই কম (৫% এর বেশী নয়)। তাই ওয়াই ক্রোমোজোমের যে ডিএনএ থাকে তা প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থায় পিতা থেকে ছেলে সন্তানে যায়, এবং এ ভাবে ওয়াই ক্রোমোজোমের ডিএনএ বিশ্লেষন করে পুরুষদের বংশের পুর্বপুরুষের পরিচয় খুঁজে বের করা যায়। এই জন্য পারিবারিক ইতিহাস বের করার জন্য ওয়াই ক্রোমজোমের ডিএনএ বিশ্লেষন করা হয়।
ঋণগ্রস্থ পরিস্কার ভাবেই একজন তরুণ লেখক, যার বিজ্ঞান নিয়ে এখনো সম্যক ধারনা নেই। কিন্ত আমাদের উপমহাদেশে এই সমস্যাত অনেকেরেই। বিজ্ঞান শিখতে গেলে যে নিঁখুত ভাবে শিখতে হয়, ২+২=৪ করতে হয় অ র্জিত জ্ঞানকে, সেটা ত আমাদের পুঁথিগত বিদ্যা শেখায় না। ফলে আমাদের এই উপমহাদেশে গন্ডায় গন্ডায় অপবিজ্ঞানীর জন্ম হয়। যার মূল কারন বিজ্ঞান সঠিক ভাবে না বোঝা।
ঋণগ্রস্থকে উৎসাহ দেওয়া উচিত সঠিক ভাবে কি ভাবে বিজ্ঞানের পথে থাকতে হয়-যার প্রথম কাজই হল “বোঝা” এবং সঠিক প্রশ্ন করা। যে লেখে শিম্পাঞ্জী থেকে মানুষের জন্ম হয়েছে, এবং তারপরে বিবর্তন নিয়ে লিখতে যায়, তাহলে বুঝতে হবে সে বিবর্তন নিয়ে কিছু না পড়েই লিখতে বসেছে। ক্রীস্টাল ক্লিয়ার। এই ক্ষেত্রে তাকে তার ভুল গুলো সহানুভুতির সাথে ধরিয়ে দিতে হবে। মানছি, যেকোন লোকের কাছেই ওর লেখা খোরাক যোগাচ্ছে-কিন্ত সহানুভূতি কাম্য।
@বিপ্লব দা,
মজার ব্যাপার এখানেই। এই দেশে অনেকে নামকরা বিজ্ঞানী হয়ে গেছেন অথচ বিজ্ঞানের দর্শটাই এখনও ধরতে পারেন নি, এমন লোকের অভাব নেই। অথচ যেই দর্শনটা মাধ্যমিক লেভেলেই ধরতে পারার কথা।
আর ঋণগ্রস্তের মতো মানুষরা বিবর্তন পড়েন না, পড়েন বিবর্তন “সম্পর্কে” একজন কী বললো সেটা 😉
আল্লাচালাইনা,
প্রথমেই বলি কি অদ্ভুত নাম দিয়েছেন রে ভাই। 😀
অসাধারন বলেছেন ভাই। আমি এখনই আন্দাজ করতে পারছি তিনি কি উত্তর দিবেন। যাই হোক, আপনাকে নিয়মত আশা করছি মুক্তমনাতে।
ভাল থাকবেন।
আল্লাচালাইনা এর মন্তব্যের জবাব আশাকরছি ঋণগ্রস্ত এর কাছথেকে। একটা জমজমাট এবং প্রানবন্ত বিতর্কের আশায় মাদুর পেতে বসলাম।
@নিদ্রালু, ভাই এটা আমার বিতর্কের ফোরাম নয়। বিতর্ক করতে হলে যুক্তিবাদী হতে হয়। এবং বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হয়। এখানে আমার মনে হচ্ছে সবাই আক্রমনাত্বক। এবং কেউ কেউ বলছেন আমি বায়োলজিষ্টই নই। তা হলে আর কি ভাবে কি বল্বো!
@ঋণগ্রস্ত,
আপনাকে কেউ ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে না। আপনার কাছে কিছু বৈজ্ঞানিক প্রশ্ন করা হয়েছিল, যার উত্তর আপনি দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, এবং সেটি ঢাকতে এখন এই ফোরাম “বিতর্কের ফোরাম নয়”, “বিতর্ক করতে হলে যুক্তিবাদী হতে হয়” “বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হয়” ইত্যাদি অবান্তর কথা বলা শুরু করেছেন (এ বিষয়ে জ্ঞান শুধু আপনারই আছে, এটা মনে করা হাস্যকর)। শুধু তাই নয় দাবী করছেন যে, এখানে নাকি সবাই “আক্রমনাত্বক”।
আমাদের ব্লগ সদস্যদের সম্পর্কে ঢালাওভাবে এ ধরণের অপ্রাসঙ্গিক অভিযোগ সম্বলিত লেখা বা মন্তব্য করতে থাকলে আপনাকে মডারেশনের আওতায় আনা হবে। মুক্তমনার সাথে অন্য ব্লগের গুনগতভাবে পার্থক্য আছে, সেটি ভবিষ্যতে মন্তব্য করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
@মুক্তমনা এডমিন, ধন্যবাদ।
দেখুন তো এটা আপনার কাছে ব্যক্তি আক্রমনাত্বাক মনে হয় কিনা?
আল্লাচালাইনা এর জবাব:
জুন ২, ২০১০ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ
@অভিজিৎ, এই বিরিঞ্চি-বাবাটির সাথে আপনার সময় নষ্ট করা দেখে কষ্ট পাচ্ছি। চম্পট যখন সে দিয়েছিলো তখন অন্তত এটা মনে হয়েছিলো যে তার অ্যাড্রেনালিন ফ্লো ঠিক আছে, সে ফ্লাইট অর ফাইট রেসপন্স বেশ ভালোই বুঝে। এখন দেখা যাচ্ছে তার হাইপারঅ্যাকটিভ থাইরয়েড।
আর ঋণগ্রস্থকে উদ্দেশ্য করে একটা কথাই বলবো- আমি ইডিয়ট সনাক্ত করার একটি খুব সহজ অ্যাসে আবিষ্কার করেছি, সেটা হলো নির্ণয় করা কে নিজেকে কতোটা স্মার্ট মনে করে।
চাইলে আরো উদাহরন দিতে পারি।
আপনি রাহাত খানের প্রশ্নের উত্তর দেননি, আল্লাচালাইনার গুলোও নয়, আপনি এখানে অনেকদিন পর পর এসে এসে হঠাৎ করে মন্তব্যের ফ্লাডিং করার আগে কতগুলো প্রশ্নের উত্তর দিন সঠিকভাবে। রাহাত খান আপনাকে বলেছে, “২)আপনি দেখলাম এক জায়গায় বলেছেন বিবর্তন কোন প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব নয়, এর উপরে লেখা লিখলে নাকি ডিস্ক্লেইমার দিতে হবে।”
বন্যা আহমেদ তার উপরের এই কমেন্টে বলেছেন আমি অনেকের প্রশ্নের উত্তর দেইনি। আবার বলছেন আমি কমেন্ট ফ্লাডিং করছি। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। আমাকে যে প্রশ্নগুলো করা হয়েছে তার উত্তর দিচ্ছি না বলা হচ্ছে আবার দিতে গেলে বলা হচ্ছে আমি ফ্লাডিং করছি!!দয়া করে কি দেখবেন আমি কোথাও ইররেলিভেন্ট উত্তর দিয়েছি কিনা। যাতে বলা যায় আমি ফ্লাডিং করছি!
@ঋণগ্রস্ত,
আপনাকে যদি কেউ বায়লজিস্ট বলতে দ্বিধা করে তাহলে হয়ত সে সেটা ভুলও করতে পারে। কিন্তু তার ভুল ভংগানোর চেষ্টা না করে হাঁসা হাঁসি করলে তো কোন ফল বয়ে আনবে না। আপনি যতই হেঁসে উড়ানোর চেষ্টাকরেন না কেন পাঠক কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারছে আসল ব্যাপারটা কি।
আল্লাচালাইনা আপনাকে কিছু প্রশ্ন করেছেন আপনি সুন্দর করে একটা একটা করে উত্তর দিয়ে দিন। তাহলেই দাঁতভাঙ্গা জবাব হবে।
আমার মনে হয় উনি বইয়ের স্কান করে দিয়ে ভালই করেছেন কারণ বইয়ের নাম দিলে হয়ত শুধু আপনি দেখতেন আর স্কান করে দিয়েছেন বলে আমরা সবাই দেখতে পেলাম। ক্ষতি কি?
আর আল্লাচালাইনা যে পুর্বক্তো লিংকের কথা বলেছেন সেটা সম্ভবত এটা
<a href=”http://horus.amarblog.com/posts/102176″ target=”_blank”
@নিদ্রালু, আপনি যে লেখার কথা বলছেন ওটার লেখক আমি নই।
আর কোথায় আমি হাসাহাসি করলাম তা বুঝতে পারিনি! আল্লাচালাইন যে ভাবে বই স্ক্যান করে দিয়েছেন এবং প্রশ্ন করেছেন (সেল বায়োলজির কয়েকটা ল্যাব টেকনিকের নাম জানতে চেয়েছে এবং বলেছে আমি উত্তর দিতে পারবো না) এবং বলেছে যে আমি বায়োলজিষ্টই না? তাই আমি তাকে তার দুটো প্রশ্নের উত্তর দিয়ে মজা করে বলেছি যে নিশ্চয় সে এখন আমাকে বায়োলজিষ্ট বলবে (যদি উত্তর কারেক্ট হয়ে থাকে)। এখানে ব্লগারদের সাথে কি ফান করা মানা? নাকি আপ্নারা সব বিজ্ঞাএর বিষয়ে লেখেন বলেন ফান বোঝেন না?
কাউকে অসম্মান করে কথা বলা আর ফানের টোন যদি না ধরতে পারেন তাহলে আমাকে আসলেই দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।
@ঋণগ্রস্ত,
আমি নিজেকে নিয়ে খুববেশী উচ্চধারণা পোষন করি না কিন্তু ফান টান কিছু কিছু বুঝি। মানে বন্ধু মহলে কখনো টিউবলাইট নাম ছিলনা।আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন যা বলে এই ব্লগে ফান করতে একেবারেই মানা নেই। আপনি মনের আনন্দে ফান করতে পারেন।
আমি যে লেখার লিংকদিয়েছি ওটা যে আপনার লেখা সেটা কে দাবী করেছে? কিন্তু ঋণগ্রস্ত নিকের যে সকল মন্তব্য সেগুলো আপনারতো নাকি?
দেখেন ভাই আপনারা হলেন বিষেশজ্ঞ এই লাইনে আর আমি হলাম চুনোপুটি আপনারা সুস্থভাবে আপনাদের আলোচনা চালিয়ে যাবেন আমরা কিছু হলেও জ্ঞান আহরণ করব সেই আশায়ই মুক্তমনায় আসা।
আমি আবারো বলছি কেউ যদি আপনাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করে তবে তার জবাব আপনাকেই দিতে হবে। পাঠকরা আছে বিচারের জন্যে।
সিভিলিয়ান বর্ণিত আপনার পুর্বোক্ত পোস্ট পড়ে জানলাম আপনি একজন বায়োলজিস্ট। এটা সম্ভবত আমার সৌভাগ্য যে একদম সুসময়ে আমি আপনার দেখা পেয়েছি। বায়োলজি বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ বায়োলজিস্টের কিছু সাহায্য আমার এই মুহুর্তে খুবই দরকার। কিছু প্রশ্নের উত্তর রেডি করতে হবে। যেহেতু প্রথম বছরের প্রথম টার্মের প্রশ্ন আমি নিশ্চিত আপনি সাহায্য করতে পারবেন। আমার প্রশ্নগুলো বলছি। ১। সেল সাইকেলের কোন ফেইজে একটি কোষ রয়েছে বের করার জন্য কি অ্যাসে ব্যাবহার করবো? ২। একটি এম্ব্রিওকে হত্যা না করে তার এক্সপ্রেশন প্যাটার্ন বের করার জন্য কি অ্যাসে ব্যাবহার করবো? ৩। একটি ইনফেকশনের শিকার প্রানী ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার কোন প্রজাতি দ্বা্রা আক্রান্ত কি করে বের করবো? ৪। লাইট মাইক্রোস্কোপে দেখে কি করে নিশ্চিত হবো যে একটি কোষপুঞ্জ ক্যান্সারাস কিনা? ৫। ব্লাস্ট এবং ক্লস্টোল কি করে করবো? ৬। নকআউট ইঁদুর কি করে বানাবো, মানুষের জিন ইঁদুরে রিকম্বাইন কি করে করবো?
যদিও পূর্বের পোস্টে আপনি দাবি করেছিলেন নিজেকে একজন বায়োলজিস্ট হিসেবে এই পোস্টে এসে খানিকটা গুটিয়ে গেছেন। তারপরও খুবই ভালো লাগল শুনে যে মলিকিউলার লেভেলে আপনি কিছু মেডিকেল বায়োলজি পড়েছেন। মলিকিউলার লেভেলে যেহেতু তাই আমি নিশ্চিতি অন্তত কয়েকটি বই আপনাকে শুধু ঠোঁটস্থই করতে হয়নি বরং একটি দীর্ঘ সময় ঘাড়ে বয়ে বেড়াতে হয়েছে। কেননা, ভার্চুয়ালি এই বইগুলোর অন্তত একটি অন্তর্ভুক্ত করে না এমন কোন কারিকুলাম আমি দেখিনি। যেমন ধরুন-
জেমস ওয়াটসন তানিয়া বেকার মলিকিউলার বায়োলজি অফ দি জিন। যেই বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের প্রথম পাতায় বলা হচ্ছে- (হাইলাইটেড অংশগুলো দেখুন)[img]http://farm5.static.flickr.com/4017/4578210309_a19cbdf387_o.jpg[/img][/img]
ব্রুস অ্যালবার্টস মলিকিউলার বায়োলজি অফ দি সেল যেই বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের প্রথম পাতায় বলা হচ্ছে-[img]http://farm4.static.flickr.com/3305/4578209821_e865c0a012_o.jpg[/img]
লোডিশ মলিকিউলার সেল বায়োলজি যেই বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের চতুর্থ পাতায় বলা হচ্ছে-[img]http://farm5.static.flickr.com/4022/4578840044_bdbbf6c46b_o.jpg[/img]
ডেভিড মাউন্ট বায়োইনফর্মেটিক্স সিকোয়েন্স অ্যান্ড জিনোম অ্যানালিসিস যেই বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের দ্বিতীয় পাতায় বলা হচ্ছে-[img]http://farm5.static.flickr.com/4029/4578839670_1e35f19189_o.jpg[/img]
এবং পরবর্তীতে একই বইএর ফাইলোজেনেটিক প্রেডিকশন নামক ষষ্ঠ অধ্যায়ে আরও বলা হচ্ছে-[img]http://farm5.static.flickr.com/4033/4578839214_eb836cae0a_o.jpg[/img]
ম্যাক্সিমাম পার্সেমনি মেথড যেটা দিয়ে এমটিডিএনএ অ্যালাইন করে আমরা মানুষ সহ অন্যান্য প্রাইমেটদের বিবর্তনের ইতিহাস জেনেছি। মজার ব্যাপার না, যেই মাইটোকন্ড্রিয়াল ইভ ও ওয়াই ক্রোমোজমাল অ্যাডামের কথা আপনি বলছেন তা বিবর্তনতত্বেরই একটি প্রেডিকশন। যা কিনা আপনি অল্প একটু ভুল করে বিবর্তনের বিরোধীতাকারী এভিডেন্স মনে করে বসেছিলেন?
গ্রিফিট প্রিন্সিপালস অফ জেনেটিক অ্যানালিসিস যেই বইয়ের ইভোলিউশনারি জেনেটিক্স নামক একুশতম অধ্যায়ে বলা হচ্ছে- [img]http://farm4.static.flickr.com/3327/4578840404_cded01e810_o.jpg[/img]
গিলবার্ট স্কট ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি যেই বইয়ের ইভো-ডেভো নামক একুশতম অধ্যায়ে বলা হচ্ছে- [img]http://farm5.static.flickr.com/4059/4578840790_4ce2900c2a_o.jpg[/img] এবং [img]http://farm5.static.flickr.com/4023/4578211689_1fd2b210aa_o.jpg[/img]
প্রোটোস্টোম ও ডিওটেরোস্টোমের মত দুরবর্তী ক্লেইডের দুটি প্রজাতির দুটি জিন প্রডাক্টের সিকোয়েন্স ও ফাঙ্কশন এক হলে এবং তারা উভয়ে একই সংকেত ট্রান্সডাকশন গমনপথের ভেতর দিয়ে গেলে বলা হয় তারা প্রদর্শন করছে ডিপ হমোলজি। এইখানে দেখান হয়েছে ডিপ হোমোলজির খুবই ছোট একটি লিস্ট। আমার স্বল্প জ্ঞানে এই মুহুর্তে আমি মনে করতে পারছি এমন আরও ডজঙ্খানেক জিনের নাম- প্রতিটি হোমিওবক্স হক্স জিন, নচ, নেট্রিন, পলিকম্ব, ওটিএক্স, ইএমএক্স, অর্থডেন্টিকল, এম্পটি স্পাইরাকল, সেভেনলেস, সন অফ সেভেনলেস, আইলেস, টেইললেস, ডিস্টাললেস, ডিকাপ্যান্টাপ্লেজিক, টর্পেডো, গুর্কেন, ভাসা ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি জানি শতাধিক পাবলিকেশনের অধিকারী এসকল অ্যাকাডেমিকের কষ্টার্জিত জ্ঞানের উপর দিয়ে নির্দয়ভাবে আল্লা চালিয়ে দিতে আপনার এক ফোঁটাও বাধবে না। কেননা আপনি একজন স্বঘোষীত ক্রিয়েশনিস্ট। আমি জানি নিজের হোকাস-পোকাস বোগাস ক্রেডেন্সিয়াল দেখিয়ে আপনি কোন না কোন যুক্তি ফেঁদে বসবেনই। শত হলেও আপনি একজন বায়োলজিস্ট যিনি মিলিকিউলার পর্যায়ে মেডিকেল বায়োলজি পড়া সত্বেও ইভোলিউশন বোঝেন না। আর পাবমেডে সার্চ টার্ম ইভোলিউশন রিটার্ন করে কতোটি পেপার? [img]http://farm5.static.flickr.com/4046/4578841054_bcb3e08fb2_o.jpg[/img] দুইশত ছেষট্টি হাজার যার মধ্যে ৬৭হাজার ফ্রিভিউ। বের করুন না এই ৬৭হাজার থেকে একটা পেপারও যা কিনা বিবর্তনতত্বের বিরুদ্ধে যায় এমন কোন প্রমান নিয়ে এসেছে? আপনার মনগড়া কথা বিংবা ঘোষণা নয় আপনি যদি আসলেই সিরিয়াস হন বের করুন পিয়ার রিভিউকৃত পাবলিকেশন থেকে একটি কোন রেফরেন্স। মলিকিউলার বায়োলজি অফ দি জিনের প্রথম পাতা থেকেই একটা কোট করে শেষ করি evolution is a fact for everyone except a fundamentalist minority whose objection are not based on reasoning but on doctrinal adherence to religious principles.
@আল্লাচালাইনা,
আপনার দীর্ঘ উত্তরের জন্য ধন্যবাদ। আমিও আসলে বুঝতে অক্ষম যে, মলিকিউলার লেভেলে যিনি মেডিকেল বায়োলজি পড়েছেন, তিনি কি করে বিবর্তন না বুঝে কিংবা অস্বীকার করেই তার রিসার্চ করেছেন। আপনার বইয়ের সূত্র এবং রেফারেন্সগুলো সত্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমি যেহেতু মেডিকেলে পড়িনি, সেহেতু আমার পক্ষে বলা সম্ভব ছিলো না যে, উনাদের পাঠ্যসূচীতে আসলে ঠিক কি পড়ানো হয়। আপনার দেয়া জেমস ওয়াটসন তানিয়া বেকার মলিকিউলার বায়োলজি অফ দি জিনে তো বিবর্তনের সারাংশ প্রায় পুরোটাই তুলে দেয়া হয়েছে। আর লোডিশ মলিকিউলার সেল বায়োলজি বইয়ে (যে পৃষ্ঠার স্ক্যান কপি দিয়েছেন) ফাইলোজেনেটিক ট্রি থেকে শুরু করে সাধারণ পূর্বপুরুষ সহ সব কিছুর কথাই আছে। পাবমেডে দুইশত ছেষট্টি হাজার পেপারের কথা নাহয় নাই বললাম। তারপরেও যিনি চোখ বুজে ঘুমাতে চান, তাকে জাগাবে কে?
যা হোক, আপনি মুক্তমনায় আরো লিখলে আমাদের ভাল লাগবে। আপনার সঠিক ইমেইলটি জানলে মুক্তমনায় লেখার আমন্ত্রণ জানানো যেত।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। নিয়মিত লিখবেন আশা করছি।
@অভিজিৎ, আমি ৭৫% নিশ্চিত উনি কোন বায়োলজিস্ট নন। প্রতিটি ক্রিয়েশনিস্টই নিজেকে বায়োলজিস্ট মনে করে থাকে, সম্ভবত তিনি তাদেরই একজন। উনার দুটি পোস্টে বায়োলজি সম্পর্কে নিজের ব্যক্তিগত ঘোষণা ছাড়া উনি আর কিছুই দেননি। সেই ঘোষণাগুলোও কোন উন্নতমানের কিছু ছিলো না। বুদ্ধিবৃত্তিক পয়ঃ ছড়িইয়ে কতগুলো মানুষকে তিনি বিভ্রান্ত করে বেড়াচ্ছিলেন এটা দেখে আসলেই আমি কিছুটা বিচলিত হয়েছিলাম। মানুষ সাধারণত নিজের অজ্ঞানতা নিয়ে গর্বিত বোধ করে না, এটা নর্মাল মোড অফ হিউম্যান বিহেইভিয়ার; কিন্তু সদম্ভে উনার নিজেকে গর্বিত ক্রিয়েশনিস্ট ঘোষণা করা দেখে ভ্রু কুঁচকেছি। ফাইনালি সিভিলিয়ান বর্ণিত পূর্বের পোস্টগুলোতে উনার গাম্ভীর্য আর অকালতত্বজ্ঞান দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এইবার এই মাখনলালটিকে গুঁড়িসমেত গড়িয়ে দেওয়া উচিত। আমি প্রোব হিসেবে কয়েকটা প্রশ্ন তাকে করেছিলাম। ইন্টারনেট ঘেটে এগুলোর উত্তর তিনি বের করতে পারবেন না। ব্যাপারটা অনেকটা সাঁতার কাটার মতো। তত্বজ্ঞান নয় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এটার জন্য চাই। কিছু বায়োলজি তাকে বুঝতে হবেই। আমি অপেক্ষা করছি কি উত্তর তিনি নিয়ে আসেন দেখার জন্য। উনি যদি বলতেন বিবর্তন সম্পর্কে কোন ধারণা অর্জন না করেই উনি পড়ে শেষ করেছেন নিউক্লিয়ার মেডিসিন বা রেডিওবায়োলজি আমি সম্ভবত সেটা কিনতাম। কিন্তু রাসায়নিক বায়োলজি? না এটা কেনা যায় না। জৈবিক রসায়নের শুরুর কথাই বিবর্তন। এজন্যই জৈবিক রসায়নের সব বইগুলোর প্রথম অধ্যায়ের প্রথম পাতায় এবং পাতার পর পাতা জুড়ে পাওয়া যায় বিবর্তন। জৈবিক রসায়নের যেখানেই আমরা তাকাই না কেনো আমরা দেখি বিবর্তন বিবর্তন এবং বিবর্তন। বিবর্তন ছাড়া জৈবিক রসায়ন যতটা না উত্তর তার চেয়ে বড় প্রশ্ন। আর ন্যাচারাল সিলেক্সন না বুঝলে রসায়নের অনেক জিনিস ব্যাখ্যাই করা যায় না। যেমন- রোগ প্রতিরোধ ব্যাবস্থার এন্টিজেন রিকগনিশন মেকানিজম, নিউরাল নেটওয়ার্কের অ্যাক্সনাল গ্রুথ; বস্তুত জীবজগতে আমরা য-তো-কি-ছু দেখি এর সবকিছুকে একটা মাত্র শব্দে প্রকাশ করা যায়- “কম্পিটিশন”। ন্যাচারাল সিলেকশন না বুঝলে কি করে আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি ডেভেলপমেন্টের মতো জটিল একটা বিষয় যেখানে বিভাজন-সক্ষম প্রতিটি কোষ প্রতিযোগীতা করছে গ্রুথ ফ্যাক্টর অনুর জন্য। সব কোষ বিভাজিত হতে পারছে না, ন্যাচারাল সিলেক্সন মেরে ফেলছে অযোগ্যগুলোকে, এই সিলেক্সন প্রেসার অতিক্রম করতে পারলেই জন্ম নিচ্ছে ক্যান্সার। এবং কিভাবে অযোগ্য কোষ এই সিলেক্সন প্রেসার অতিক্রম করছে? মিউটেশনের মাধ্যমে।
নিয়মিত যদি নাও লিখি অন্তত বর্তমান সময়ে- ব্যার্থ ক্রিসমাস বম্বিং এর পর, অ্যামেরিকায় প্যালেস্টাইনিয় মেজর কর্তৃক ১৩ জন নিরপরাধ মানুষ নিহত হবার পর, মস্কো বম্বিং এর পর, গতকালকের টাইম স্কয়ারে ব্যার্থ বম্বিং এর পর- অন্তত একজন দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে ইসলাম সমস্যা নিয়ে কিছু লেখার জন্য আমি মুখিয়ে আছি। খুব তারাতারিই লিখবো।
@আল্লাচালাইনা,
অপেক্ষায় রইলাম।
@আল্লাচালাইনা,
আপনি মন্তব্য করার দু দিন পার হয়ে যাবার পরেও যখন ঋণগ্রস্থ-এর আর দেখা মিলছে না, তখন ধরে নেয়া যাচ্ছে উনার এ নিয়ে বিতর্ক করার আর ইচ্ছে নেই। 🙂
আপনি ইসলাম নিয়ে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন, পাশাপাশি বিনীতভাবে মলিকিউলার বায়োলজির দৃষ্টিকোন থেকে বিবর্তন নিয়ে লিখবারও সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি। আসলে জৈবরসায়ন আর জীববিজ্ঞানের এই অজানা বিষয়গুলো নিয়ে লিখবার মত বাংলায় খুব বেশি লোক পাওয়া যায় না, সেজন্যই বললাম।
আপনি খুব চমৎকারভাবেই ক্যান্সারের ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করেছেন –
খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। আমি আমেরিকার কোষ জীববিদ Carlo Maleyর গবেষণার কথা জানি। তিনি তার গবেষনায় দেখিয়েছেন কিভাবে স্থান এবং সম্পদ নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দেহে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যান্সার সেলের বিবর্তন ঘটে। শুধু তাই নয়, ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো ঔষধের প্রতিক্রিয়া থেকে কিভাবে রেজিস্টেন্ট হয়ে উঠছে সেটাও স্পষ্ট হয়ে উঠে এ ধরনের গবেষণায়। আবার বিবর্তন চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকেই ডারউইনীয় নির্বাচন স্ট্র্যাটেজী থেকে কিভাবে সমাধান পাওয়া যায়, সেটাও বলে দিয়েছেন জীববিজ্ঞানী গ্রেগ উইন্টার। বিবর্তন না মেনে এগুলো সম্ভব – সেটা বিশেষজ্ঞদের কেউই বলবেন না।
যাহোক, আমরা কয়েকজন মিলে বিবর্তনের উপরে একটা আর্কাইভের কাজে হাত দিয়েছি, দেখেছেন বোধ হয়। আপনার অংশগ্রহণ এটিকে নিঃসন্দেহে সমৃদ্ধ করতে পারে।
আর মডারেটরের পক্ষ থেকে আপনার জন্য একাউন্ট খোলার তথ্য পাঠানো হয়েছে খুব সম্ভবতঃ। পেলেন কিনা জানাবেন।
@আল্লাচালাইনা, আপনি শুধু আপনার পেপারটার লিঙ্ক অথবা বইয়ের নাম এবং পৃষ্ঠা নং দিন। আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবো।কষ্ট করে স্কান করার দরকার নেই। আপনি যে ভাবে দিয়েছেন আমি পড়তে স্বাছন্দ্য বোধ করছি না। ধ্ন্যবাদ।
@আল্লাচালাইনা,আমি ৭৫% নিশ্চিত উনি কোন বায়োলজিস্ট নন।
কি ভাবে প্রমান দেবো? সার্টিফিকেট/ উনিভার্সিট এনরোলমেন্ট ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি দিয়ে?
কিন্তু সদম্ভে উনার নিজেকে গর্বিত ক্রিয়েশনিস্ট ঘোষণা করা দেখে ভ্রু কুঁচকেছি।
ঘোষনটা আপনি কোথায় দেখেছেন? আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে কোন ফোরামে আপনার সাথে আমার এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল? কোন কনফারেন্স বলবেন কি?
এবার একটা কথা বলি; আবার যেন না শুনেই চ্যালেঞ্জ না করতে আসেন। আমি বলেছিলাম মাদ্রাসা শিক্ষার দরকার নাই। তখন কিছু কাঠ মোল্লা বলেছিল জানেন মাদ্রাসা মানে কি? মাদ্রাসা মানে স্কুল/বিদ্যালয়।
এখন আপনি যদি বলেন যে বিবর্তন মানে শিম্পাঞ্জী থেকে মানুষের উদ্ভব হয়েছে। এবং এটাই বিবর্তন। তা হলে আমি সত্যিই দুঃখিত।
আমি বিবর্তনকে অস্বীকার নয়। আমি বিবর্তন নামে মানুষের উদ্ভবের যে ব্যাখা এখন দেয়া হচ্ছে এটা বিনা প্রশ্নে আমি মানতে রাজী নই। আমাকে বুঝতে হবে।
আমি এই ব্লগে মানুষের বিবর্তনের উপর পোষ্ট দিয়েছি। কিন্তু কেন যেন দেখতে পাচ্ছি না। হয়ত মডারেশ্নে আছে।
এচ্ছে হলে এখানে পড়ে দেখতে পারেন।
@আল্লাচালাইনা, ২। একটি এম্ব্রিওকে হত্যা না করে তার এক্সপ্রেশন প্যাটার্ন বের করার জন্য কি অ্যাসে ব্যাবহার করবো?
বোল্ড করা অংশটুকু দেখুন। আপনি embryo এর developmental pattern এর কথা বলছেন? নাকি character expression এর কথা বলছেন বুঝিনি।
তবে খুব সাধারন ভাবে মানুষের জন্য অহরহ ব্যবহার করা হচ্ছে আল্ট্রাসনোগ্রাফি।
@আল্লাচালাইনা, না আর উত্তর দেবো না। আমাকে কি বায়োলজিষ্ট সার্টিফিকেট দেবেন? দেবেন কি মুক্ত মনা সার্টিফিকেট? হা হা হা…
মানুষ বড়ই অসহিষ্ণু!!!
@আল্লাচালাইনা, সিভিলিয়ান বর্ণিত আপনার পুর্বোক্ত পোস্ট পড়ে জানলাম আপনি একজন বায়োলজিস্ট।
এই ব্লগে এটাই আমার প্রথম পোষ্ট। আপনি পুর্বোক্ত পোষ্ট বলতে কি বুঝিয়েছেন। প্লিজ সেই পোষ্টের লিঙ্ক দিন।আপনি স্কান না করে বাইরের নাম দিলে ভাল করতেন।
আপনাদের এত বড় চ্যালেঞ্জ দেখে তো ভয়ই পেয়ে গেছি। ওরে বাবা সব মার মার কাট কাট। হা হা হা…
ফার্স্ট ইয়ার তো তাই একটু বেশী উত্তেজিত। অপেক্ষা করুন উত্তর দিচ্ছি।
এত দিন আস্তে পারিনি বলে দুঃখিত। তবে এবারো নিয়মিত হতে পারবো না। আর এত তর্ক করতে গেলে আসল কাজে পিছিয়ে যাব।
@আল্লাচালাইনা, আমি পাশ নাও করতে পারি। হা হা হা…
তবু বলিঃ১। সেল সাইকেলের কোন ফেইজে একটি কোষ রয়েছে বের করার জন্য কি অ্যাসে ব্যাবহার করবো?
এখন বিভিন্ন কোম্পানীর সেল সাইকেল এ্যসে কিট পাওয়া যায়। সবাই নরমালি তাই ব্যবহার করে। যেমন GenScript এর Cell Cycle Analysis Kit
এখানে দেখুন
Cellomics-ceel cycle kit-1
তারপর বলি পরীক্ষায় পাস করার জন্য টেক্সবইয়ে লেখা মেথড এর বাইরে প্রায় প্রত্যেক ল্যাবেরই নিজস্ব মেথড আছে।
ফ্লোসাইটোমেট্রি আগে বেশী ব্যবহৃত হত।
@আল্লাচালাইনা, আসুন Introduction থেকে পড়া শুরু করি, কেমন?
আপনার হলুদ রংয়ের হাইলাইটেড অংশগুলো নিয়েই শুধু কথা বলবোঃ
All organisms, and all of the cells that constitute them, are believed to have descended from a common ancestor cell through evolution by natural selection.
আপনি দেখুন এখানে বলা হয়েছে believed কিন্তু বলা হয়নি proved. আপনি নিশ্চয় believe এবং prove অর্থাৎ “বিশ্বাস” এবং “প্রমান” এই শব্দ দুটোর গুরুত্ব বোঝেন।
একটা “বিশ্বাস” যাকে “প্রমানিত বলা হচ্ছে না” সেটাকে প্রমানিত সত্যের মত বলাটা কি সত্যের অপলাপ নয়?
@ঋণগ্রস্ত,
বৈজ্ঞানিক বিশ্বাস আর সাধারণ বিশ্বাসের মধ্যে কিন্তু পার্থক্য আছে। আপনি যদি এস্ট্রোফিজিক্স পড়েন, তাহলে দেখবেন অনেক বইয়েই লেখা থাকে যে, ‘বিগ ব্যাং ইজ বিলিভড টুবি হ্যাপেন ফরটিন বিলিয়ন ইয়ারস এগো’। এখানে বিলিভড বলা হচ্ছে কারণ কেউ চোখের সামনে বিগ ব্যাং ঘটতে দেখেনি। কিন্তু আপনি বই খুলে আরেকটু এগুলেই দেখবেন কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন সহ বহু প্রমাণ বিগ ব্যাং কে কত জোরালোভাবে বিজ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
বিবর্তনো তেমনি। উক্ত বইয়ের ইণ্ট্রোডাকশনে হয়ত “all of the cells that constitute them, are believed to have descended” বলা হয়েছে, কিন্তু সেই বইয়ের এবং আল্লাচালাইনার অন্য বইগুলোর পুরোটা পড়লেই বোঝা যায় বিবর্তনের সাক্ষ্য প্রমাণগুলো (প্রাণ রাসায়নিক প্রমাণ, কোষবিদ্যা বিষয়ক প্রমাণ, শরীরবৃত্তীয় প্রমাণ, জীবাশ্ম বা ফসিলের প্রমাণ, সংযোগকারী জীবের প্রমাণ, ভৌগলিক বিস্তারের প্রমাণ, তুলনামূলক অঙ্গসংস্থানের প্রমাণ, শ্রেনীকরণ সংক্রান্ত প্রমাণ, নিষ্ক্রিয় বা বিলুপ্তপ্রায় অঙ্গের প্রমাণ ইত্যাদি) কিভাবে সেটিকে বৈজ্ঞানিক সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এখন তো এভু ডেভুর আগমন সেটাকে আরো স্পষ্ট করেছে। কোন বৈজ্ঞানিক জার্নালেই কিন্তু বিবর্তনের বিরোধিতা করা হয় না, আর জৈবিবিজ্ঞানের কোন জার্নালেই বিবর্তনের অল্টারনেটিভ হিসেবে সৃষ্টিতত্ত্বের উল্লেখ নেই (একটি পেপারেও নয়)। এটা মাথায় রাখতে হবে আমাদের সবার।
@আল্লাচালাইনা, এবার আসুন আপনার হাইলাইটেড দ্বিতীয় সেন্টেন্স এঃ
Evolution is the central principal of biology, helping us to make sense bewildering variety in the living world.
লক্ষ্য করুন এখানে Evolution কে biology এর একটা central principle বা principle বলা হচ্ছে। আমি আবারও বলছি, এখানে বলা হচ্ছে Evolution is the central principal of biology। হ্যা, আমি এটা বিশ্বাস করি এবং খুব ভালভাবেই বিশ্বাস করি যে Evolution is a principle of biology.
এবার আপনি প্রথম হাইলাইটেড বাক্যে ফিরে যান। সেখানে বলা হয় এই principal দিয়ে All organisms, and all of the cells that constitute them, have descended from a common ancestor cell-এটা বিশ্বাস করা হয়।
আমি স্পষ্ট করে বলছি আমি সবার মত এই বিশ্বাসটা বিনা প্রশ্নে মানতে পারি না। এটা মনে রাখবেন এই Evolution principle দিয়ে কিন্তু শুধুমাত্র single cell থেকে সব অর্গানিজমের উতপত্তি এটাই ব্যাখা করে না, আরো অনেক কিছু ব্যাখা করে।
তারপরও খেয়াল করুন এখানে বলা হচ্ছে “Evolution helping us to make sense bewildering variety in the living world.” দেখুন এখানে বলেছে make sense, কিন্তু বলেনি its proved bewildering variety in the living world.
আশা করি কিছুটা হলেও আমি বুঝাতে পেরেছি আমি কি বলতে চাচ্ছি।
এবার আসুন Evolution এর mechanism কী? দেখুন Genetic drift, Gene flow, Mutation, Natural selection। আপনি Evolution এর যে কোন বইতে আরো ক্লিয়ার ভাবে পেতে পারে।
হ্যা আমি genetic drift, Gene flow, Mutation এবং Natural selection এ বিশ্বাস করি।আর তাই আমি evolution কে biology এর একটা principal হিসাবে মানি।
কিন্তু সেটা দিয়ে যে ভাবে All organisms, and all of the cells that constitute them, have descended from a common ancestor cell ব্যাখা করে সেটা বিনা প্রশ্নে এখনও বিশ্বাস করি না।
ধ্ন্যবাদ।
@ঋণগ্রস্ত,
আপনি যখন বিবর্তনকে এখন central principal of biology বলে স্বীকার করেছেন, তখন বুঝতে হবে আপনি এ ব্যাপারে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছেন। বন্যাকে দেয়া আপনার আরেকটি মন্তব্যে দেখলাম আপনি পরিস্কারভাবেই বলেছেন, মানব বিবর্তনকে ভুল বলার ধৃষ্টতা আপনার নেই। কেবল এখন বলছেন, হয়ত ব্যাপারটা অন্যভাবে ঘটতে পারে।
আমার মনে আছে আমরা যখন জার্নাল থেকে ডবঝাস্কির উক্তি দিয়ে বলেছিলাম “নাথিং ইন বায়োলজি মেক সেন্স এক্সেপ্ট ইন দা লাইট অব এভুলুশন’ তখন আপনিই বলেছিলেন যে, ডবঝানস্কি তো বলবেনই, কারণ তিনি বিবর্তনবাদী। আপনার সেই অবস্থান থেকে এখনকার অবস্থান অনেকদূর অগ্রসর।
বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে কিভাবে ফাইলোজেনেটিক রিলেশন বের করেন, তা হলেই বুঝবেন কেন প্রজাতিগুলো একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত, আর কেন সরল কমন এনসেস্টর থেকে ধীরে ধীরে জটিল জীবজগত উদ্ভুত হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা ঠিক মনে করেন। তারপরেও আপনার অনুসন্ধিৎসার জন্য ধন্যবাদ। মুক্তভাবে অনুসন্ধিৎসা চালিয়ে যান, শুধু বিবর্তনের ক্ষেত্রে নয়, সব ক্ষেত্রেই।
@অভিজিৎ, “নাথিং ইন বায়োলজি মেক সেন্স এক্সেপ্ট ইন দা লাইট অব এভুলুশন’
আমি এখনও এর বিরোধিতা করছি। nothing কোন ভাবেই নয়। হতে পারে many things.
ধন্যবাদ।
[img]http://i41.tinypic.com/6pcdxu.jpg[/img]
আপনার টীচারদের কাউকে আপনার প্রশ্নগুলা করেন নি। এইরকম টপ লেভেলের ডিপার্টমেন্টের টীচারদেরতও এ ব্যাপারে ভালোই জ্ঞান থাকার কথা। তারা আপনাকে কি উত্তর দি্যেছেন জানতে ইচ্ছা করছে। অথবা যে রেফারেন্স গুলো আপনাকে পড়তে বলেছেন সেগুলো কি আপনি পড়েছেন? রেফারেন্স গুলা আমাদের সাথে শেয়ার করা যায় না?
@হোরাস, ধন্যবাদ। আপনি না হলে আমার এখানে আসা হত না। হ্যা আমি বায়োলজিক্যাল সাইন্সের অত্যন্ত এপ্লাইড একটা বিষয়ে পড়ছি। মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টিতে। না আমি বা আমার টিচাররা আপনাদের মত বিবর্তন নিয়ে ভাবেন না। ব্লগে আপনার সাথে দেখা না হলে আপনাদের এই সব ধারনা আমার অজানাই থেকে যেতো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
মুক্তমনায় স্বাগতম ঋণগ্রস্ত। মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভ এবং ওয়াই ক্রোমোজোমাল এড্যাম নিয়ে অনেকেরই খুব অস্পষ্ট ধারণা আছে। এ নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে কিছু জিনিস আরেকটু ভালভাবে স্পষ্ট করা দরকার ছিলো বলে মনে করি।
যেমন, লেখাটিতে বলা হয়েছে,
লেখক হয়তো বাইবেলে বর্নিত ঈভের সাথে এই ঈভের কোন যোগসুত্র আছে কি নেই সেই বিশ্লেষণে যেতে চাননি; কিন্তু, ব্যাপারটা স্পষ্ট না করলে অযথা ধোঁয়াশা তৈরি হতে পারে। আশরাফ আহমেদের চমৎকার ‘আমি কার বাবা রে, আমি কার খালু রে?’ লেখাটিতে মন্তব্য করতে গিয়ে আমি বলেছিলাম, Mitochondrial Eve আর ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত ‘ইভ’ এক বিষয় নয়। মাইটোকন্ড্রিয়াল ইভ বলে বিজ্ঞানীরা প্রচলিতভাবে যেটির নামকরণ করেছেন, সেটি কোন মহিলা ‘ব্যক্তি’ নয়, বরং সবচেয়ে কাছাকাছি কমন ফিমেল এন্সেস্টর। আরো ভাল করে বললে – ‘is the most recent common female ancestor, not the original female ancestor। Mitochondrial Eve was merely the youngest common ancestor of all today’s mtDNA. She may not even have been human.
আরো একটি বিষয় খেয়াল করার মতো যে, মাইটোকন্ড্রিয়াল হাওয়া বা ইভের বয়স ওয়াই ক্রোমোজোমাল আদমের চেয়ে অনেক বেশি। সেজন্যই আশরাফ আহমেদ তার লেখায় বলেছেন, মা হাওয়া পৃথিবীতে এসেছিলেন বাবা আদম থেকে প্রায় দেড় লক্ষ বছর আগে। যুক্তির আলোকে হাওয়া’র গর্ভ থেকেই আদমের বের হওয়া উচিৎ, অথচ (বাইবেল অনুযায়ী) শেখানো হয়েছে আদমের পাঁজরের হাড় থেকে হাওয়া’র জন্ম হয়েছে।
লেখক অবশ্য নিজেই প্রকারন্তরে এই বৈসাদৃশ্যের কথা পরোক্ষভাবে হলেও উদ্ধৃত করেছেন –
টক অরিজিনের এই লিঙ্কটি হয়তো ব্যাপারটিকে আরো পরিস্কার করবে –
Claim CB621
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ আপ্নাকেও।
ওয়াই ক্রোমোজোম এড্যামকে রৈখিকপিতৃপারম্পারিক আদি পুরুষ বা দ্যা প্যাট্রিলিনেয়াল মোষ্ট কমন এন্সেষ্টর বলা হয়। আবার মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভকে রৈখিকমাতৃপারম্পারিক আদি নারী বা দ্যা মোষ্ট রিসেন্ট কমন ম্যাট্রিলিনেয়াল এনসেষ্টর বলা হয়।
আপনি ইংরেজীতে যেটা লিখেছেন সেটা আমি আমার লেখায় আছে। উপরের বোল্ড অংশটা আমার লেখা থেকে।
মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভ এবং ওয়াই ক্রোমোজোমাল এড্যাম যে হাইপোথ্যাটিক্যাল সেটাও বলেছি। তাই কনফিউশনের কারন বুঝিনি। বাইবেলের ঈভ এবং এড্যাম এবং করাআনের আদম এবং হাওয়া যতটুকু জানি একই সময়ের আর এই এড্যাম ঈভের চেয়ে ৫০ থেকে ৮০ হাজার বছরের পরের ছিলেন বলেছি। এতে তো আদম হাওয়া বা ঈভের সাথে এদের কোন কনফিউশন হতে পারেনা।
আশরাফ আহমেদের চমৎকার ‘আমি কার বাবা রে, আমি কার খালু রে?’ লেখাটা আমি পড়িনি।
আবার আপনাকে ধন্যবাদ।
@ঋণগ্রস্ত,
আপনি বলেছেন লেখক অবশ্য নিজেই প্রকারন্তরে এই বৈসাদৃশ্যের কথা পরোক্ষভাবে হলেও উদ্ধৃত করেছেন
প্রকারন্তে নয় আমি অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই বলেছি। যে মাইটোকন্ড্রিয়াল ঈভের চেয়ে ওয়াই ক্রোমোজোম এড্যাম ৫০-৮০ বছর পরের। এটা আপনার কাছে প্রকারান্তে মনে হওয়ার কারন কি?
আমি সব জায়গায় বলেছি বিজ্ঞানীরা দাবী করেছেন। এটা well established fact কি না আমি তাও বলি নি। আমি সব জায়গায় বলেছি এটা হাইপোথ্যাটিক্যাল।
আর আমার অরিজিন্যাল লেখায় বাইবেল এবং কোরআনের কোন কথাই ছিল না। আমি মডারেটরদের পরামর্শে এটা যে কোরআন এবং বাইবেলের আদম ঈভ নয় সেটার জন্য ওই দুটো লাইন এড করেছি মাত্র।এখানে প্রকারান্তের কিছু নেই। সবটাই collected information.
@ঋণগ্রস্ত,
‘প্রকারান্তরে’ বলার উদ্দেশ্য ছিলো যে, আপনার আগের বাক্যে যেখানে বাইবেলের আদম ঈভের কথা বলেছিলেন, সেখানে ব্যাপারটা পরিস্কার ছিলো না। অন্ততঃ পড়ে আমার তাই মনে হয়েছে। কিন্তু পরের বাক্যটি পড়লেই বোঝা যায় যে, ওয়াই ক্রোমোজোমাল এড্যাম আসলে সময়ের হিসেবে অনেক পরের। সেটাই বলার চেষ্টা করেছি।
যাহোক ব্যাপারটা আপনি মন্তব্যে আসলে ক্লিয়ার করেছেনই। এরপর আর বিতর্কের কোন অবকাশ নেই।
@অভিজিৎ, আমি আগে স্পষ্ট ভাবে বলেছি আদ্ম এবং ঈভের কথা এই ব্লগের মডারেটরদের কথায় এড করেছি।
আপনিই নিশ্চয় সেই ঋণগ্রস্ত, যিনি আইডিপ্রেমী বলে স্বীকার করেছিলেন নিজেকে হোরাসের এই পোস্টে?
ভালো জায়গাতেই এসেছেন।
আইডির মাহাত্ম্য বর্ণনা করে এবার একখানা পোস্ট ছাড়ুন না জীববিজ্ঞানী ভাইয়া….
এখানে আপনার সেই মহান এরশাদকৃত বয়ান ঊদ্ধৃত হৈল:
ঋণগ্রস্থ মার্চ ২৮, ২০১০ @ ১:১৮ পুর্বাহ্ন ১১.২.৩.১.১.১.২.২.১.১.১
@যুদ্ধদেব, হ্যা ভাই পড়ে দেখেই বলেছি। আপনার মত শোনা কথা মানুষ ৫০% কলা মানুষকে বোঝাতে যাই না।
আপনি কি মনে করেন আপনি একাই বোঝেন? অন্যরা কিছু বোঝে না।
আমি আপনাকে শুধু ডিস্ক্লেইমার দিতে বলেছি যে আপনি লেখার শুরুতে বলে দিন এটা এখনো বিতর্কিত।
নাকি এটা কোরা’আন কেউ ফতোয়া দিয়ে দিয়েছে যা বলা হইয়াছে তাহাই সত্য কোন প্রশ্ন করা যাইবে না।
তা হলে আর প্রশ্ন করবো না। শুধু মেইল ফিমেই এর বিবর্তনটা বুঝিয়ে বলুন।
আর হ্যা আপনি জানতে চেয়েছিলেন আমি কি বিশ্বাস করি। আমি বোধ intelligent design এ বিশ্বাসী।
আহলান ওয়াসাহলান…
@ব্লাডি সিভিলি্নাকে।হ্যা আমিই সেই ঋণগ্রস্ত। হ্যা আমি যেমন ধর্মগ্রন্থের বর্নিত ঘটনা বিনা প্রশ্নে মানি না তেমনি অনেকেই যেভাবে বায়োজেনেসিসের কথা বলছে তাও মানতে পারি না। অনেকেই যেমন বুঝে গেছেন বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের উতপত্তি সেটা আমার বুঝতে সময় লাগছে। কারন জীবনের শুরুটাই এখন পর্যন্ত আমার কাছে অস্পষ্ট।বিজ্ঞানীরা যদি একটা কোষ তৈরী করে দেখাতেন তা হলে আর প্রশ্ন করতাম না।
আর হ্যা আপনি জানতে চেয়েছিলেন আমি কি বিশ্বাস করি। আমি বোধ intelligent design এ বিশ্বাসী।
আপনি নিশ্চয় বাংলা ভালোই বোঝেন। আর বোধ হয় যে কোন কিছু নিয়ে নিশ্চিত নয় সেটা বুঝায় তা নিশ্চয় আপনাকে বোঝাতে হবে না।
“আহলান ওয়াসাহলান… “মানে কি?
এটা কি কোন গত বাধা কথা আপনার?
ধন্যবাদ। দেখি আমি কি মুক্তমনা কি না!
@ঋণগ্রস্ত,
আপনি যদি নিজেকে আইডি তে বিশ্বাসী বলে ধরে নেন তাহলে আপনি ধরে নিচ্ছেন যে একজন ডিজাইনার আছে, যে সব কিছু ডিজাইন করেছে আলাদা আলদাভাবে? দয়া করে বিবর্তন নিয়ে আপনার অবস্থানটা কি পরিষ্কার করবেন? আপনি কি মনে করেন যে সরল এক কোষী আদি প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়ে সব জীব এখানে এসে পৌঁছেছে? আপনার সাথে জীববিজ্ঞানের যে কোন বৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে আলোচনার আগে এই অবস্থানটা পরিষ্কার হতে হবে। আরেকটু পরিষ্কার করে বলি, আপনি নিজে ধর্মে বা ডিজাইনার এ বিশ্বাস করেন কি করেন না সেটা আমার প্রশ্ন নয়, আমি জানতে চাচ্ছি প্রাণের বিবর্তন প্রসঙ্গে আপনার অবস্থান কি। আপনি যে বিষয়টা নিয়ে লিখেছেন সেটা বিবর্তনের একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এবং জীববিজ্ঞানের যে কোন আলোচনায় যাওয়ার আগে বিবর্তন সম্পর্কে পরিষ্কার একটা অবস্থান থাকা অপরিহার্য।
এবার আপনার লেখা সম্পর্কে একটা মন্তব্য করি, আপনি বলেছেন
বিজ্ঞানের কোন লেখার জন্য এরকম মন্তব্য আমার কাছে ‘মিস লিডিং’ বলে মনে হয়। প্রথমত এরা যে ধর্মগ্রন্থের আদম এবং ইভ নয় সেটা নিয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই কারণ এই ইভ আর আদমের উৎপত্তি ঘটেছে হাজার হাজার বছরের ব্যাবধানে, এটা নিয়ে গবেষণা হয়েছে কি হয়নি সেটা জানারও কোন প্রয়োজন নেই, আর তাছাড়া বিজ্ঞান ধর্মগ্রন্থে কি আছে বা কি নেই তা নিয়ে গবেষণা করে না।
আপনার লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে আরও কিছু আগ্রহ এবং প্রশ্ন ছিল, কিন্তু উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়ার পরেই সে প্রশ্নগুলো করবো।
@বন্যা আহমেদ, ধন্যবাদ।
আমি এখন পর্যন্ত ভাল ভাবে বিবর্তন বুঝি না। তাই বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন তেমন নেই।
না আমি ডিজাইনারের ব্যাপারটাতেও কনফিউজড। তবে এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতির উৎপত্তি এটা ভাল বুঝি না। যেমন ধরুন কলাগাছ আর আমগাছ কত দিন আগে কোন এনসেষ্টর থেকে হয়েছে বুঝিনি।
তবে আমি মানুষের মেইলনেস এবং ফিমেলনেস এর বিবর্তন নিয়ে খুব বেশী কনফিউজড।
ধন্যবাদ আপনাকে।
কোরআন এবং বাইবেলে কথা প্রথমে ছিল না। আমি এ লেখাটি এডিটরকে ই মেইল করে পাঠিয়েছিলাম কারন আমার কোন একাউন্ট ছিল না। উনারা আমাকে বলেছিলেন ধর্মগ্রন্থের ঈভ এবং এডামের সাথে কোন কফিউশন আছে কিনা। তা ক্লিয়ার করার জন্য। তাই আমি লিখেছি যে এদের সাথে কোন সম্পর্কের কথা কেউ চিন্তা করেছে কিনা তা আমার জানা নেই।
@ঋণগ্রস্ত,
মুক্তমনায় লিখতে থাকুন। কনফিউশন তো বিভিন্ন বিষয়ে থাকবেই। লিখতে লিখতে এবং আলোচনা করতে করতেই অনেক কনফিউশন কেটে যাবে বলে আমার ধারণা।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আপনি যদি জীববিজ্ঞান এবং জেনেটিক্সের বিভিন্ন কাটিং এজ বিষয় নিয়ে লিখতে চান, তা হলে বোধ হয় আপনাকে বিবর্তন কিছুটা হলেও বুঝতে হবে। আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করে থাকেন (ব্লাডি সিভিলিয়ানের লিঙ্ক থেকে বোধ হয় তাই দেখেছিলাম), তাহলে আপনাকে বলি, আপনারই একজন শিক্ষক ড ম আখতারুজ্জামান ‘বিবর্তনবিদ্যা’ নামে একটি পাঠ্যপুস্তক লিখেছেন যেটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর কিন্তু সেই বইয়েই আছে খুব ভালোমত। ডঃ আখতারুজ্জামান বাংলায় বংশগতিবিদ্যা, কোষ বংশগতিবিদ্যা প্রভৃতি নিয়েও বই লিখেছেন। জীববিজ্ঞানের প্রান্তিক শাখাগুলো আসলে বিবর্তনবাদ ছাড়া যে অচল তা বইগুলোতেই উল্লেখ করা হয়েছে। আর সাধারণ পুস্তক হিসেবে তো বন্যার ‘বিবর্তনের পথ ধরে’ বইটি আছেই।
এবারে আপনার কিছু মন্তব্যের বিষয়ে বলি।
আসলে বিজ্ঞানীরা অনেক কিছুই ল্যাবে তৈরি করতে পারেন না। যেমন তারা ল্যাবরেটরিতে বিগ-ব্যাং ঘটিয়ে দেখাতে পারেন না। তারা ব্ল্যাক হোল তৈরি করতে পারেন না। আপনি কিন্তু প্রশ্ন করছেন না যে, বিজ্ঞানীরা আগে বিগ ব্যাং ঘটিয়ে দেখাক, তারপর আমি বিশ্বাস করব। করছেন না। কারণ আপনি জানেন যে কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন সহ হাজারো পরোক্ষ প্রমাণ বিগ ব্যাং – এর পক্ষে রায় দিয়েছে। চিন্তা করে দেখুন – পরমাণুর অস্তিত্বও প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞান গ্রহণ করেছিলো পরোক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতেই (কিছু রায়াসায়নিক পদার্থের সংমিশ্রনের অনুপাত থেকে, কিংবা ব্রাউনীয় গতি অধ্যয়ন করে)। বিবর্তনের ব্যাপারটাও তাই। অজস্র সাক্ষ্য প্রমাণই বিবর্তন তত্ত্বের অনুকূলে। যেমন, আপনি দুটো এই লিঙ্ক দেখতে পারেন, আমাদের আর্কাইভ থেকে –
বিবর্তনের পক্ষে কোন সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি – এই দাবীর উত্তর
বিবর্তন কখনও পর্যবেক্ষণ করা হয়নি এবং এর ফলাফল পুনরাবৃত্তি করা সম্ভব না -এই দাবীর উত্তর
এবং আপনি দেখবেন যে সাক্ষ্যগুলোর অনেকগুলোই প্রত্যক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতেই।
আরেকটা কথা। বিজ্ঞানীরা জীবকোষ বানালে সেটা যে বিবর্তনের প্রমান হবে এমন কোন কথা নেই। কেউ হয়তো দাবী করতে পারেন, এটা বিবর্তন নয়, বরং সৃষ্টিতত্ত্বের প্রমাণ হিসেবে। কারণ একন মানুষ কৃত্রিমভাবে কোষটি বানাচ্ছে, প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ঘটা বিবর্তন প্রক্রিয়ায় নয়। আপনি জেনেটিসিস্ট ক্রেগ ভেন্টরের গবেষণার কথা নিশ্চয় জানেন। ক্রেগ ভেন্টরের “সিন্থেটিক লাইফ’” নিয়ে একটা সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল ডিস্কোভার ম্যাগাজিনে। সেই সাক্ষাৎকারে ভেন্টর মত প্রকাশ করেছেন যে, কৃত্রিম জীবন তৈরির একেবারে দ্বারপ্রান্তে আছেন বিজ্ঞানীরা। রসায়নাগারে কৃত্রিমভাবে ভাইরাস তৈরী করার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে অনেক দিন হল; ২০০৩ সালে প্রথম সিন্থেটিক ভাইরাস তৈরী করা হয়েছিল – এবং তা ১০০% নিখুঁত। পোলিও ভাইরাস সহ দশ হাজার প্রজাতির ভাইরাস তৈরী করা গেছে ভাইরাসের জিনোম পর্যবেক্ষন করে এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সাহায্যে। এক ব্যাক্টেরিয়া থেকে অন্য ব্যাক্টেরিয়াতে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়াও সফল হয়েছে। তিনি মনে করেন আর আগামী দুই বছরের মধ্যেই আদি কোষ বা প্রোক্যারিওট আর দশ বছরের মধ্যে প্রকৃত কোষ বা ইউক্যারিওট বানানো সম্ভব হবে। তবে সেটা কিন্তু ‘সিন্থেটিক লাইফের’ এর সাহায্যে।
এক প্রজাতি থেকে অন্য পজাতির উন্মেষের প্রত্যক্ষ প্রমাণ কিন্তু অনেকই পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। উপরে যে লিঙ্কগুলো দিয়েছি সেখানেই বহু উদাহরণ পাবেন। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পলিপ্লয়ড, এলোপলিপ্লয়ডের মাধ্যমে প্রজাতি তৈরী হওয়ার ব্যাপারটা বিজ্ঞানীরা চোখের সামনেই প্রত্যক্ষ করেছেন। স্যালসিফাই মূলা, কিউ গার্ডেনে নতুন একটি প্রজাতি Primula Kewensis, কিংবা বাধাকপি আর মূলার সমন্বয়ে তৈরি Raphano-brassica – এগুলোতো বিজ্ঞানীরা চোখের সামনেই দেখেছেন। দেখেছেন চক্র প্রজাতি বা রিং স্পিশিজগুলোকেও। আপনি বন্যার বই থেকে চোখের সামনেই ঘটছে বিবর্তন অধ্যায়টা পড়ে নিতে পারেন।
মুক্তমনায় লেখার এবং আলোচনা করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ আপনাকে। যে সব রেফারেন্স দিয়েছেন তা আমি অনেক আগেই পড়েছি।
না, আমি প্রানী বিজ্ঞানে পড়িনি তবে জীব বিজ্ঞানের একটা বিষয়ে পড়েছি-মৌ্লিকুলার লেভেলে।
হ্যা আমি জানি প্লয়েডী চেঞ্জ করে উদ্ভিদ জগতে অনেক কিছু করা সম্ভব। আর আমার সমস্যাটা সেখানেই।
প্রানীদের প্লয়েডী চেইঞ্জ করলেও কি উদ্ভিদের মতই অন্য প্রজাতি হয়ে যাবে?
মানুষের মেইল এবং ফিমেইলনেস এর বিবর্তন নিয়ে আমার অনেক কৌ্তুহল। এ ব্যাপারে বললে ভাল হবে।
@অভিজিৎ, দুঃখিত। আপনাদের ধারনা ঠিক নয়। আপনারই একজন শিক্ষক ড ম আখতারুজ্জামান ইনি আমার শিক্ষক নন।
@অভিজিৎ, হ্যা ভাইয়া, বন্যা আপার লেখাটা পড়লাম ‘চোখের সামনেই ঘটছে বিবর্তন”। তা বুঝলাম না আপু কি বলতে চেয়েছেন। HIV বিবর্তিত হয়ে কি অন্য কোন জীবানু হচ্ছে নাকি তা ভাইরাসই থাকছে?
আর বিবর্তন না থাকলে আধুনিক চিকিৎসা ইত্যাদি হবে না মানে আধুনিক জীব বিজ্ঞানের যা ঘটছে সবই বিবর্তন! আপনি দেখি আমাকে বিপদে ফেলে দিলেন! আগে যা বুঝতাম এখন তাও উল্টে গেল!
@ঋণগ্রস্ত,
হাঃ হাঃ! এটা কিন্তু আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে। একটা হিন্ট দেই – মাইক্রোবিবর্তন, ম্যাক্রোবিবর্তন এবং প্রজাতির সংজ্ঞা – এই তিনটা বিষয় আপনার পরিস্কার করতে হবে আগে। আমার এই লেখা দুটো থেকে কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন – এটা এবং এটা।
এক্সাক্টলি! সেজন্যই তো বলা হয় যে, বিবর্তন তত্ত্ব ছাড়া জীববিজ্ঞানের কোন অর্থ হয় না। এটা কিন্তু আমার কথা নয় বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী থিওডসিয়াস ডবঝানস্কি অনেক আগেই বলে গেছেন।
@অভিজিৎ, এবার বলুন আপনি কি কি বিষয়কে বিবর্তন বলছেন? আমি জানতে চাচ্ছি HIV বিবর্তিত হয়ে কি হচ্ছে? ভাইরাস বিবর্তিত হয়ে কিন্ত ভাইরাসই আছে তা কিন্তু ব্যাকটেরিয়া কিম্বা অন্য কোন জীবানু হচ্ছে না।
আসলে আমি আপনাদের বিবর্তনের পরিধি বুঝতে পারছি না।আপ্নারা কি এপ্লাইড বায়োলজির সব কিছুকেই বিবর্তন বলছেন? আগে আমাকে আপনাদের বিবর্তনের ডেফিনিশনটা বলুন। তারপর আমি মাইক্রো ম্যাক্রো লেভেলে যাবো। আপনাদের কথায় মনে হচ্ছে আপ্নারা বায়োটেকনোলজি, জেনোমিক্স, কনভেনশন্যাল ব্রিডিং, এগুলো সবই আপনারা বিবর্তনের মধ্যে টেনে আনছে।
সেজন্যই তো বলা হয় যে, বিবর্তন তত্ত্ব ছাড়া জীববিজ্ঞানের কোন অর্থ হয় না।
এটা ব্যাখা করুন।
@ঋণগ্রস্ত,
হ্যা সেজন্যই সেগুলো ম্যাক্রোবিবর্তনের উদাহরণ নয়। পলিপ্লয়ড, এলোপলিপ্লয়ডের মাধ্যমে প্রজাতি তৈরী হওয়ার ব্যাপারটায় উদ্ভিদের একেবারেই ভিন্ন ধরণের প্রজাতি তৈরি হয়ে যাচ্ছে, কিংবা প্রাণিদের ক্ষেত্রে রিং স্পিশিজগুলোতে। সেগুলো উদাহরণ তো দেয়া হয়েছেই। সেজন্যই ‘প্রজাতির’ সংজ্ঞা জানাটা দরকারী বলেছিলাম।
কিন্তু বিবর্তন মাইক্রো লেভেলে হোক, আর ম্যাক্রো লেভেলেই হোক, এর প্রক্রিয়াগুলো একই ফ্যাক্টরেরই অধীন – প্রাকৃতিক নির্বাচন, জিন মিউটেশন, ক্রোমোজম মিউটেশন, জেনেটিক রিকম্বিনেশন, জেনেটিক ড্রিফট কিংবা অন্তরণ।
আমার চোখে বিবর্তন হচ্ছে জনপুঞ্জে কালের পরিক্রমায় জিনপুলের পরিবর্তন।
এটা ডবঝানস্কির অতি পরিচিত উক্তি। যে কোন বিবর্তনের পাঠ্যপুস্তক খুললেই এই উক্তির সার্থকতা আপনি পাবেন। সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতি উদ্ভুত হলে প্রজাতিগুলোর মধ্যে যে সম্পর্ক থাকবে, এবং সমস্ত কিছুকে জাতিজনি বৃক্ষ (Phylogenetic tree) আকারে সাজানো যায়, সেই আলোকে দেখলেই এই উক্তির সার্থকতা দেখতে পাবেন। পৃথিবীর জৈব বৈচিত্রকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে চাইলে বিবর্তন তত্ত্ব ছাড়া অন্য কোন তত্ত্বই এই মুহূর্তে সফল নয়। আর বিবর্তনের অনুষঙ্গিক প্রয়োগ – যেমন, বিবর্তনীয় বিকাশমান জীববিজ্ঞান (Evolutionary Developmental Biology), বিবর্তনীয় চিকিৎসাবিদ্যা (Evolutionary or Darwinian medicine), বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান (Evolutionary Psychology), জিনোম ইভলুশন, আনবিক এবং কোষীয় বিবর্তন, ডারউইনীয় গ্যাস্ট্রোনমি, এবং সোশিওবায়োলজি নিয়ে কথা নাহয় এখন নাই বা বললাম।
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ। আমি আপনার সাথে একটা একটা বিষয় নিয়ে আলাপ করবো। প্রথমে বলি “জনপুঞ্জে’ এর অর্থ কি? বুঝিনি।
এবার বলুন প্রাকৃতিক নির্বাচন এর কথা। এটা কি একই স্পিসিসের মধ্যে ঘটে? কেন? এক প্রজাতির সাথে অন্য প্রজাতির টিকে থাকার জন্য এই সিলেকশনটা বা প্রতিযোগিতা কতটুকু হয়?
আপনার কথায় মনে হচ্ছে বায়োলজিক্যাল সাইন্স সবটাই বিবর্তন!!! জিনের আবিস্কার, প্লান্ট ব্রিডিং, সেল বায়োলজি, অর্থাৎ বায়োলজিক্যাল সাইন্স পুরোটাই বিবর্তন! ফ্যান্টস্টিক!!!
@ঋণগ্রস্ত,
আপনাকে কে বলল প্রাকৃতিক নির্বাচন শুধু একই স্পিসিসের মধ্যে ঘটে? আপনি কি অন্তঃপ্রজাতি (intra-speciaes) এবং আন্তঃপ্রজাতি (inter-species) প্রতযোগিতার কথা শুনেছেন? আমার মনে হয় ব্লগে এগুলো নিয়ে লেখার আগে আপনার বিবর্তনের বই টই একটু ঠিকমত পড়া দরকার।
আপনি যতটা অবাক হবার ভান করছেন বিষয়টা মোটেই অবাক হবার মত কিছু নয়। পৃথিবীর সকল জীব আসলে একই সাধারণ উৎস থেকে এসে থাকলে আপনার তো বুঝতে পারার কথা যে, সকল জীব সে মৃতই হোক আর জীবিতই হোক – তাদের উৎপত্তি আর ক্রমবিকাশ ঘটেছে দীর্ঘ বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। আপনি জিন নিয়ে কাজ করুন আর সেল বায়োলজি নিয়েই কাজ করুন, বিবর্তনকে অস্বীকার করে জীববিজ্ঞানের কিছুই করা সম্ভব নয়। এটা কি খুব অবাক হবার মতো ব্যাপার? কেউ যদি বলেন কোয়ান্টাম ফিজিক্সের প্রায় পুরোটাই সম্ভাবণার বিজ্ঞান – এটা বললে যেমন কেউ অবাক হয় না, ঠিক তেমনি – Nothing in Biology Makes Sense Except in the Light of Evolution বললেও এখন কেউ অবাক হয় না। কেউ কেউ চোখ বুজে অবাক হবার ভান করে যায় যদিও।
@অভিজিৎ, ২০০৭ এ কোন এক নিউজে দেখেছিলাম ক্রেগ ভেন্টরের এই আবিস্কারের কথা। তা এই তিন বছরে উনি কতদুর আগালেন জানি না। জানেন কিছু?
উনি কি উনার এই আবিস্কারের স্বিকৃ্তি পেয়েছেন? যেমন নোবেল প্রাইজ। এই নাম তো মনে করতে পারছি না শুনেছি কিনা।
আর ওই সিন্থেটিক ক্রোমোজোম উনি ব্যাক্টেরিয়াতে না দিয়ে একটা inanimate কিছুতে দিলে বোঝা যেতো কি আসলে হচ্ছে।
আমার আসল ইন্টারেষ্ট মানুষের মেইল ফিমেইলনেস এবং মানুষের বিবর্তন। অন্য কিছু নয়। আমি এটা বুঝতে চাই। মানুষ কি ভাবে বিবর্তিত হল।
@ঋণগ্রস্ত,
এখান থেকে শুরু করতে পারেন।
নারী পুরুষের ব্যাপারটা অনেক বিস্তৃত পরিসরে আলোচনা করতে হবে। আমি আমার সমকামিতা বিষয়ক বইয়ে এ নিয়ে লিখেছিলাম। এ ছাড়া ইংরেজীতে অসংখ্য বই আছে, যেমন মার্ক রিডলীর রেড কুইন। আপনি আগে বিবর্তনের বেসিক জিনিসগুলো পরিস্কার করতে পারেন, পরে এগুলো নিয়ে ডিটেলে যাওয়া যাবে ক্রমশঃ।
@ঋণগ্রস্ত, আপনার অবস্থানটা বোধ হয় বুঝতে পারছি। ধন্যবাদ আপনার অবস্থানটা পরিষ্কার করার জন্য। জীববিজ্ঞানের এই কাটিং এজ গবেষণাগুলো বিবর্তনের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তাই বিবর্তন না এনে কিভাবে এই আলোচনা করা সম্ভব তা আমি জানি না বলেই আর আলোচনাটা আগাচ্ছি না। বিবর্তনবাদ জীববিজ্ঞানের ভিত্তি, এছাড়া জীববিজ্ঞান অচল। আপনি এক জায়গায় বলেছেন আপনি হয়তো আইডি তে বিশ্বাস করেন, আইডি কিন্তু বিজ্ঞানের ফিল্ডে সম্পূর্ণভাবে অগ্রহনযোগ্য। তাই আপনি যদি একদিকে জীববিজ্ঞানের খুব নতুন সব গবেষণা নিয়ে লিখেন কিন্তু আবার আইডি তে বিশ্বাস করেন তাহলে সেক্ষত্রেও বৈজ্ঞানিক দিক থেকে আলোচনা কিভাবে এগুবে তাও আমার জানা নেই। একটা উদাহরণ দেই, কেউ যদি মনে করে যে ছয় হাজার বছর আগে পৃথিবী তৈরি হয়েছে, তাহলে তার সাথে ডার্ক ম্যটার বা প্লেট টেকটোনিক্সের মত বিষয়গুলো ( যেগুলো পৃথবীর বয়সের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত না হলেও সম্পর্কিত বিষয়) নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। খুব মজার একটা বিষয় হলেও আপাতত আপনার লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনায় আর এগুচ্ছি না। আশা করি ভবিষ্যতে আরও লিখবেন।
@বন্যা আহমেদ, ধন্যবাদ। লিখবো।
@বন্যা আহমেদ, বিবর্তনবাদ জীববিজ্ঞানের ভিত্তি, এছাড়া জীববিজ্ঞান অচল। কি ভাবে এটা বুঝালে কৃ্তজ্ঞ থাকবো।
@ঋণগ্রস্ত, বিবর্তন আজকে জীববিজ্ঞানের সর্বস্বীকৃত একটা তত্ত্ব। আজকে সব জীব বিজ্ঞানীরা স্বীকার করেন যে, বিবর্তন ছাড়া জীববিজ্ঞান ব্যখ্যা করা যায় না কারণ জীবের বৈশিষ্ট্য, গঠন, তার জেনেটিক গঠন কোন কিছুই বিবর্তন ছাড়া আর কিছু দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। আপনি বিবর্তন ছাড়া জীবের বৈচিত্র ব্যাখ্যা করতে পারবেন না, প্রায় ৯৯% ভাগ জীবের বিলুপ্তি বা ভূত্বকের বিভিন্ন স্তরের নির্দিষ্ট ফসিলগুলোর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন না, বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে জেনেটিক এবং মলিকুলার সদৃশ্য, বা নিষ্ক্রিয় অঙ্গের অস্তিত্ব থেকে শুরু করে ওষুধ কোম্পানীতে আ্যন্টিবায়োটিক তৈরি পর্যন্ত অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। আপনি যদি একটু খতিয়ে দেখেন কিভাবে মানুষের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছিল তাহলেই দেখবেন বিবর্তনের কন্সেপ্ট ছাড়া এই কাজটা করাই সম্ভব হতো না। এরকম হাজার হাজার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সেটা লেখার সময় এবং সুযোগ কোনটাই এখন নেই। আপনাকে অনুরোধ করবো বিবর্তনের উপর ভালো কোন একটা বেসিক বই পড়তে, আপনি বলছেন মানুষের বিবর্তন এবং সেক্সের উৎপত্তি সম্পর্কে জানতে চান, এটা কোন বিচ্ছিন্ন বিষয় না। জীববিজ্ঞান যেহেতু বলে মানুষ অন্যান্য জীবের মতই বিবর্তনের ধারাই এখানে এসে পৌঁছেছে, তাই বেসিক বিবর্তনটা না বুঝলে মানুষের বিবর্তন বোঝা বোধ হয় সম্ভব হবে না।
বিবর্তনবাদ জীববিজ্ঞানের ভিত্তি, এছাড়া জীববিজ্ঞান অচল – একথাটা আমার নয়, যে কোন ইউনিভার্সিটি লেভেল এর জীববিজ্ঞানের বইয়েই এটা পাবেন। আর একথাটা প্রথম বলেছিলেন বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী ডবঝানাষ্কি। আপনাকে বরং তার লেখাটারই লিঙ্ক দিচ্ছি এখানে। মজার বিষয় হচ্ছে, উনি নিজে ধর্মে বিশ্বাস করতেন এবং আরও অনেকের মতই বিবর্তনের সাথে ধর্মের কোন বিরোধ নেই বলেই মনে করতেন।
http://www.pbs.org/wgbh/evolution/library/10/2/l_102_01.html
http://www.pbs.org/wgbh/evolution/library/10/2/text_pop/l_102_01.html
এরপর গত ৩০-৪০ বছরে জেনেটিক্স, মলিকুলার বায়োলজী, এভ্যুলেশনারী ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজীর মত জীববিজ্ঞানের শাখাগুলো যত এগিয়েছে ততই বিবর্তনতত্ত্ব প্রমাণিত এবং সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জীববিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত সব শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যই এখন বিবর্তন তত্ত্বকে সমর্থন করে বা তাকে তুলে ধরে।
@বন্যা আহমেদ, বিবর্তনবাদ জীববিজ্ঞানের ভিত্তি, এছাড়া জীববিজ্ঞান অচল – একথাটা আমার নয়, যে কোন ইউনিভার্সিটি লেভেল এর জীববিজ্ঞানের বইয়েই এটা পাবেন। আর একথাটা প্রথম বলেছিলেন বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী ডবঝানাষ্কি।
ডবঝানাষ্কি ছিলেন একজন বিবর্তনবিদ। উনি যে এটা বলবেন এটাই তো স্বাভাবিক। আর পৃথিবীর সব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতা কিন্তু ক্রিয়েশনিজমের উপর ডিপার্টমেন্ট এমন কি ফ্যাকাল্টিও আছে। তার মানে এই নয় যে ক্রিয়েশনিজম সর্বস্বীকৃ্ত।
আপনার কথা মত এনিমেল ব্রিডিং সেন্টার গুলোকে কে বলতে হবে এনিমেল ইভোলুশন সেন্টার! মানুষের যে সন্তান হয় সেখানেও ক্রোমোজোমের রিকম্বিনেশন হয় তা হলে সেটাও ইভোলুশন।জীব বিজ্ঞান মানেই ইভোলুশন আর বায়োলজির যত বিষ্য আছে সব ইভোলুশনকে প্রমান করার জন্য পড়ানো হয়!
আচ্ছা টিসু কালচার, ক্লোনিং এ সবো কি ইভোলুশন। ক্লোনিং এ কি জীন সিকোয়েন্সের কোন পরিবর্তন হয়? ক্লোন্ড ডলি কি করে ইভোলুশন হয় তাই ভাবছি।
@ঋণগ্রস্ত, আপনি যদি আসলে বিজ্ঞানের কোন সাবজেক্টের সাথে থিওলজি কেন পড়ানো হয় সেটার তুলনা করেন তাহলে আমার আর কিছু বলার থাকে না। আপনি বিজ্ঞানের একটি প্রতিষ্ঠিত শাখাকে অস্বীকার করছেন। বিজ্ঞানীরাই বিজ্ঞানের তত্ত্ব প্রমাণ করে বাইরে থেকে কেউ এসে করে দিয়ে যায় না। থিওলজীর কোন সাবজেক্ট বিজ্ঞানের তত্ত্বের মত প্রমাণ করতে হয় না। এই খুব বেসিক পার্থক্যটা করতে না পারলে আপনার সাথে আমি কি নিয়ে আলোচনা করবো ঠিক বুঝতে পারছি না। কোন একটা তত্ত্ব কোন বিষয়ের ভিত্তি হওয়া মানে এই নয় যে, সেই বিষয়গুলো নাম পালটে তা রাখতে হবে। পদার্থবিদ্যার সব শাখার নাম পালটে আপেক্ষিকবাদ রাখা হয়না।
@বন্যা আহমেদ, আমি থিওলজিকে বিজ্ঞানের সাথে তুওলনা করিনি। আপনি বলছেন যে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ইভোলুশন পড়ানো হয় তাই বললাম যে বিশ্ববিদ্যাল্যগুলোতে তো থিওলজিও পড়ানো হয়। তার মানে এই না যে ধর্মে যা বলেছে সবই সত্য।
@ঋণগ্রস্ত,
এটা আসলে কোন উত্তর হল না। ডবঝানাষ্কির লেখা বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, তার বিবর্তন নিয়ে কাজ পরীক্ষাগারে প্রমাণ করা গেছে, যেমন, ড্রসোফিলা নিয়ে অন্তরনের পরীক্ষার মাধ্যমে ড্রসোফিলার ভিন্ন একটি প্রজাতি উদ্ভাবনে সমর্থ হয়েছিলেন তিনি (T Dobzhansky, O Pavlovsky, Experimentally created incipient species of Drosophila, Nature. 1971 Apr 2;230(5292):289-92.)। বিজ্ঞানীরা তার কাজের প্রমাণ পেয়েছিলেন বলেই সেটা বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত, তিনি ব্যক্তিগতভাবে কি ছিলেন, সেটা মূখ্য নয়।
ক্রিয়েশনিজমের উপর ডিপার্টমেন্ট থাকতে পারে, কিন্তু সেটা বিজ্ঞানের নয়। হয়তো ইতিহাসের কিংবা অন্য সামাজিক গবেষনার জন্য, সেটা বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত নয়। পৃথিবীকে এক সময় সমতল মনে করা হত – সেটাও আমরা ইতিহাসে পড়ি, সেটা নিয়ে গবেষণা করার লোক বা ফ্যাকাল্টিও থাকতে পারে, কিন্তু বিজ্ঞানে ‘সমতল পৃথিবী তত্ত্ব’ আর পড়ানো হয় না। আশা করি এ দুইয়ের পার্থক্য আপনি বুঝবেন।
কেউ সেটা বলছে না।
@অভিজিৎ, আপনি আর বন্যা আপু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড ম আখতারুজ্জামান স্যার এর সাথে সাক্ষতকারে স্যার ক্লোন ডলির উদাহরন দিলেন আর আপ্নারা চুপ করে ছিলেন (যতটুকু মনে করতে পারি)।
এবার একটা কথা বলি, আমি বিবর্তন নিয়ে তেমন কখনো ভাবিনি বা ভাবার সময় আমার ছিল না (যদিও আমি বায়োলজিক্যাল সাইন্সের পড়াশুনা করি)।এমনি বিভিন্ন ব্লগে ঘুরতাম সময় পেলে। এমনি ভাবে এক ব্লগে ইভোলুশনের উপর লেখা দেখে ঢু মেরে কথা প্রসংগে বলেছিলাম যে লেখার শুরুতে ডিস্ক্লেইমার দেয়ার জন্য। আমি এখনো বিবর্তন কে (মানুষের উতপত্তিকে) তত্ত্ব/হাইপোথেসিস বলবো একে আমি ফ্যাক্ট বলবো না।
তাই অনেকেই আমাকে বলেছিল, মুক্তমনায় দেখার জন্য। তাই এলাম আপনাদেরকে দেখতে।
@ঋণগ্রস্ত,
আপনি নিশ্চয় সায়েন্স এবং এপ্লাইড সায়েন্সের পার্থক্য বোঝেন। একজন আর্কিটেক্ট এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ার যখন পঞ্চাশতলা বাড়ির নকশা করেন এবং তা তৈরি করেন, তখন সরাসরি পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র প্রয়োগ করেন না, কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞানের বেসিক সূত্রগুলো তাকে মেনে চলতেই হয়।পদার্থবিজ্ঞানের মূল সূত্র অস্বীকার করে কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং করতে পারেন না। ঠিক তেমনি, আপনি ক্লোনিং করুন আর জিনোম সিকোয়েন্সিং করুন, বিবর্তন অস্বীকার করে কিছু করা সম্ভব নয়। এটা যদি না বোঝেন তবে কিছু করার নেই।
আপনাকে একটা সহজ উদাহরণ দেই। বিজ্ঞানীরা যখন জিনোম সিকোয়েন্সিং করেন, তখন হয়তো বিবর্তনের কিছু প্রয়োগ না করেও তিনি তা করতে পারেন, কিন্তু যখন মানুষ শিম্পাঞ্জি এবং ম্যাকাকুয়ির জিনোম তুলনা করেন তখন তাকে বিবর্তনের ফাইলোজেনেটিক ট্রির কথা মাথায় রাখতেই হয়।
সেটা আপনার ব্যাপার। পৃথিবীতে অনেকেই আছেন যারা পৃথিবী যে গোল তা ফ্যাক্ট বলে মানেন না। কিছু করার নেই। বিবর্তনের পক্ষে বহু সাক্ষ্যপ্রমাণই বহুবার হাজির করা হয়েছে, বিবর্তন যে তত্ত্বের পাশাপাশি তা বাস্তবতাও সেটাও বহু রেফারেন্স দিয়ে দেখানো হয়েছে, তারপরেও কেউ চোখ বুজে ভাঙ্গা ঢোল বাজিয়ে যেতে থাকলে খুব বেশি কিছু করণীয় নেই।
ঠিক আছে, দেখতে আসার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু নীচে আল্লাচালাইনার প্রশ্নের পরে আপনাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এটা বড়ই দুঃখের। 🙂
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ। আমি জানতাম না যে আপনি মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা। আর এ না জানাটা যদি আমার ভুল হয় তা হলে ক্ষমা প্রার্থী।
আমি আবারও বলছি এখানে আমাকে বন্যা আপা প্রশ্ন করেছেন, রাহাত খান প্রশ করেছেন, আল্লাচালাইন প্রশ্ন করেছে। আমি উনাদের প্রশ্ন দেখেছি এবং সবার প্রশ্নের উত্তরই দেয়ার চেষ্টা করছি।
আপনি উত্তর গুলো একটু দেখবেন। উত্তর ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন প্লিজ।
@ঋণগ্রস্ত,
ঠিক কিসের জন্যে আপনার মনে হয় বিবর্তন প্রশ্নাতীত না?
আপনি তাই নিয়ে একটু লিখুন। কারন এই ব্যাপারে যা লেখালেখি হয়েছে তার সবটাই খোরাক-বিবর্তন ঠিক ঠাক না জেনে অজ্ঞতার সার্কাস।
বিবর্তন নিয়ে কাজ হচ্ছে ১৫০ বছর ধরে। বিজ্ঞানের দর্শনের মূলেই আছে ফলসিফিকেশন-প্রতিটি তত্ত্বকে ভুল প্রমান করার চেষ্টা বিজ্ঞানীরাই করেন। কারন তার মধ্যেই লুকিয়ে আছে বিজ্ঞানের অগ্রগতি। যদি বিবর্তনের বেসিক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে এমন কোন জার্নাল পেপার আপনার জানা আছে কি? থাকলে জানাবেন।
সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে আমেরিকাতে ক্যাঁচাল আছে ঠিকই-কিন্ত কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে তা পড়ানো হয় জানাবেন? কারন এগুলো অপবিজ্ঞান বলে কোর্ট রায় দিয়েছে, বিজ্ঞানীদের সমস্ত এসোশিয়েশন ঘোষনা দিয়েছে কাগযে বিজ্ঞাপন দিয়ে। অপবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রম চালাতে চাইলেই আমেরিকাতে অত সহযে কেও চালাতে পারবে না।
অন্য একটি ব্লগে আপনার সাথে কথা হয়েছিল ও মুক্ত-মনায় লেখা পাঠানোর নিয়ম বলেছিলাম। আপনি নিশ্চয় সেই ‘ঝণগ্রস্থ’। 🙂
ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী, হ্যা আমিই সেই ঋণগ্রস্ত।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
পোষ্টের ক্যাটাগরীটা “ব্লগাড্ডা” থেকে জীববিজ্ঞান করে দিলে ভাল হবে।
@পৃথিবী, ধন্যবাদ। নতুন তো তাই বুঝতে পারছিলাম না। 🙂
বেশ ইন্টারেষ্টিং বিষয়। আরো বিষদভাবে জানার ইচ্ছা রইলো।
@ব্রাইট স্মাইল্, অনেক ধন্যবাদ। নতুন এলাম। কথা হবে।