১। বাংলা ব্লগ সাইটগুলোতে যে ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, তা সত্যিই এখন বাংলা ভাষাপ্রেমীদের ভাবিয়ে তুলেছে। এফএম রেডিওগুলোর বাংলিশ ভাষার বহুল ব্যবহার ও উচ্চারণও এই ভাবনা আরো উস্কে দেয়। তবে একই সঙ্গে দিন দিন বাড়ছে বাংলা ব্লগের জনপ্রিয়তা ও পরিধী। শেষ পর্যন্ত এর গন্তব্য কোথায়? আর কেমনই বা এর অন্তর্দশন?
তার আগে আসুন, সংক্ষেপে জেনে নেই ‘ব্লগ’ ধারণাটির পেছনের কথা।
২। এক সময় মানুষ যখন লিখতে শেখেনি, তখন ছবি এঁকে সে মনের ভাব প্রকাশ করতো। গুহাচিত্রে এর অসংখ্য নজির রয়েছে। বিবর্তনের ধারায় ভাষা ও অক্ষরের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে লেখার উপকরণের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। মানুষ পাথর, মাটির পোড়া ফলক, চামড়া, গাছের ছাল ও পাতা, কাপড় এবং সবশেষে প্যাপিরাস ও কাগজে লিখে মনের ভাব প্রকাশ করতে থাকে; লেখা-পড়া, শিক্ষা-দীক্ষা ও দাপ্তরিক কাজ তো বটেই।
আরো পরে প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে টাইপরাইটার হয়ে চলে আসে কম্পিউটার, লেখা হতে থাকে কম্পিউটারের অন্তর্জালে, মুঠোফোনের সংক্ষিপ্ত বার্তা, এসএমএস-এ। মূল বিষয়টি কিন্তু একই থেকে যায়, ভাব প্রকাশ। আমি যা ভাবছি, তা অন্যকে জানানো, অন্যের ভাবনা জানা, আমার ভাবনা বা অন্যের ভাবনা সম্পর্কে পাঠকের ভাবনাটুকুও জেনে নেওয়া। এটি যেনো অনেকটা সেই লিটল ম্যাগাজিনেরই অন্তর্জাল রূপ। প্রথাবিরোধী লেখা-লেখির এক নতুন মাধ্যম।…
প্রিন্ট মিডিয়ার সঙ্গে এর আরেকটি প্রধান পার্থক্য হচ্ছে, ব্লগে পাঠক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় লেখাটি প্রকাশ হওয়ার পর পরই মন্তব্যের ঘরে। সেখানেও চলে তর্ক-বিতর্ক, প্রসংশা, এমনকী লেখার নিন্দাও। আবার একটি লেখার বিতর্ক জন্ম দেয় আরো অনেক চিন্তাশীল লেখাও।
‘ওয়েবলগ’ কথাটি থেকে ‘ব্লগ’ কথাটির জন্ম, এর প্রথম সূচনা জর্ন বার্গার নামের একজন আমেরিকানের হাত ধরে ১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর। তিনিই প্রথম ওয়েবলগ কথাটি ব্যবহার করেন, আদি ব্লগারদের তিনি একজন, প্রথম দিকের ব্লগ সাইটের উদ্যোক্তা তো বটেই। ১৯৯৯ সালের এপ্রিল-মের দিকে পিটার নামে জনৈক ওয়েবলগ কথাটিকে আরো সহজ করে ‘উই ব্লগ’ কথাটি ব্যবহার করেন। ক্রমে উই ব্লগ, পরে শুধু ব্লগ কথাটিই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে; মনের ভাব প্রকাশ, সামাজিক যোগাযোগ ও তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বিস্তৃত করে। ব্লগ ধারণাটির বাড়তে থাকে দ্রুত লেখক-পাঠক সংখ্যা। যারা জীবনে কখনো পরীক্ষার খাতা, চাকরি জীবন বা চিঠি পত্রের বাইরে কোনো রকম লেখালেখি করেননি, অধিকাংশ এমন মানুষও ব্লগ পড়তে পড়তে এর ভক্ত হয়ে ওঠেন, তিনি নিজেই এক সময় লিখতে শুরু করেন। পেশাদার লেখকরা তো এখানে আছেনই। ব্লগের এই ধারাবাহিক অগ্রগতি এখনো চলছেই।
৩। তথ্য-প্রযুক্তিতে আমরা অনেক পিছিয়ে, ব্লগের ধারণাটিও প্রায় নতুন, তাই বাংলা ব্লগ সাইটও অনেক পিছিয়ে থাকবে, এটিই যেনো স্বাভাবিক। কিন্তু এর পরেও মাত্র চার বছরের পথ পরিক্রমায় বাংলা ব্লগের অর্জন নেহাত সামান্য নয়। এই সাফল্য কতোটা ও কেমন করে, তা এক নজরে এখন জেনে নেওয়া যাক।
‘বাঁধ ভাঙার আওয়াজ’ শ্লোগান নিয়ে ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রথম যাত্রা শুরু করে বাংলা ব্লগ সামহোয়ারইনব্লগ ডটনেট। এখনো এটিই সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা ব্লগ সাইট; এর নিবন্ধিত সদস্য এখন আটত্রিশ হাজার। বাংলা ভাষাভাষী অধিকাংশ ব্লগারই এর সদস্য। তারপর তৈরি হয়েছে সচলায়তন, আমার ব্লগ, মুক্তমনা, পেঁচালী, নির্মানব্লগ, নাগরিকব্লগ, প্রজন্ম ফোরাম…। এসেছে শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো ব্লগ। দেশের প্রথম অনলাইন দৈনিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-ও বাংলা এবং ইংরেজী— দুভাষাতেই ব্লগ সাইট চালু করেছে।
সাময়োরইনব্লগ ডটনেট -এর পরে সচেলায়তন ডটকম জনপ্রিয়তা পেলেও এখন এটি হারিয়ে ফেলেছে ব্লগ চরিত্র। বরং অনলাইন সাহিত্যপত্র হিসেবে এখন এটি একটি সুশীল চরিত্র অর্জন করেছে, কমছে এতে পুরনো লেখকদের পদচারনা।
এর বাইরে ব্লগ সাইটের সদস্য সংখ্যাও বাড়ছে। এরই মধ্যে প্রথম আলো ব্লগের সদস্য সংখ্য ১৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে অভিনব বাংলা ব্লগ সাইট আমারব্লগ ডটকম। ‘কথা হোক ইচ্ছে মত’ শ্লোগান নিয়ে মডারেশন বিহীন সাইটটি মাত্র দুবছরেই প্রায় ১০ হাজার সদস্য সংগ্রহ করেছে। তারাই প্রথম ব্লগ সাইটে মুক্তি দিয়েছে ‘হিল্লা’ নামক একটি স্বল্প দৈর্ঘ চিত্র। অন্তর্জালের সঙ্গে পরিচিত নন, এমন পাঠককে ব্লগারদের লেখার সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে দিতে ব্লগগুলো গত দুবছর ধরে প্রতি বই মেলায় নির্বাচিত লেখা নিয়ে বই প্রকাশ করছে। বিভিন্ন জাতীয় দুর্যোগ, এমন কী অসহায় মানুষের পাশে আর্থিক সাহায্য নিয়েও দাঁড়াচ্ছেন ব্লগাররা।
আবার এক-এগারোর পরে এই লেখক ও ব্লগার, সাংবাদিকতার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অন্যান্য সহকর্মীসহ সেনা বাহিনী কর্তৃক আটক ও হয়রানীর শিকার হলে প্রথম এর প্রতিবাদ জানান ব্লগাররাই। টেলিভিশনে খবরটি জেনেই তারা একাধিক বাংলা ব্লগে তো বটেই, এমন কী ইংরেজী ব্লগেও সহব্লগারের মুক্তি দাবি করতে থাকেন। আবার ব্লগাররা নিয়মিত আড্ডা, পিকনিক, ব্লগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস. একুশে ফেব্রুয়ারিতে বন্ধু-বান্ধবসহ সপরিবারে মিলিত হন। পরিচিত হন একে অপরের সঙ্গে। মেতে ওঠেন আনন্দ-হাসি-গানে।
এ সবই হচ্ছে একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা বোধ এবং একটি অন্য রকম যুথবদ্ধতা — যা আগে কখনোই এ ভাবে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে দেখা যায়নি। আর প্রবাসী বাঙালিরা তো অনেকই দেশচিন্তা ও একান্ত নিজস্ব ভাবনা প্রকাশের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন ব্লগকেই। কম্পিউটারে বিজয় সফটওয়ারের পর অভ্র ফ্রন্ট ও কি-বোর্ড এবং ইউনিকোডে বাংলা প্রকাশ হওয়ার পর ব্লগেও ঘটে গেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
৪। কিছু দিন আগে বাংলা ব্লগের প্রসঙ্গ তুলতেই একজন প্রগতিশীল শিক্ষক বলেছিলেন, শুনেছি, সেখানে নাকি খুব নোংরা ভাষা ব্যবহার করা হয়? আর নাকি গালাগালিও হয় প্রচুর!
এই লেখক তার কথার প্রতিবাদ করেননি। শুধু তাকে অনুরোধ করেছেন, সাইটগুলোতে এক নাগারে কয়েকদিন ঢুঁ মারার জন্য। পরে ওই শিক্ষক জানিয়েছে, ব্লগ সম্পর্কে তার ধারণাই পাল্টা দিয়েছে বাংলা ব্লগ। আর ব্লগ সাইটে হালকা লেখারা পাশাপাশি যে সব সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লেখালেখি হয়, এমন কী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণাধর্মী লেখাও, তা দেখে তিনি সত্যিই হতবাক! ব্লগ সাইটে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ, তেল-গ্যাস-বিদ্যুতসহ খানিজ সম্পদের সংরক্ষণ, কিংবা টিপাইবাঁধ মুখ বা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুতেও জোরালো ভূমিকা রাখছেন ব্লগাররা।
কিন্তু শিক্ষক মহোদয়ের সেই প্রথম সন্দেহটিও কী এক কথায় উড়িয়ে দেওয়া যায়? খানিকটা তেমন প্রবনতা ব্লগগুলোতে থেকেই যাচ্ছে। আবার জামাতী প্রচারণার মাধ্যম হিসেবে চেষ্টা করা হয়েছে ব্লগ সাইটগুলো ব্যবহার করার।
তবে ব্লগাররাই শেষ পর্যন্ত রুখে দেন সব ধরনের অপচেষ্টা, শক্তিশালী যুক্তি-তর্ক ও তথ্য-নির্দেশিকায় ছিন্ন করেন বিভ্রান্তির মায়াজাল, দাঁত ভাঙা জবাব দেন মৌলবাদী, ধর্মান্ধ ও সাম্প্রায়িক চেতনার আগ্রাসনকে। সম্মিলিতভাবে ব্লগাররাই ব্লগে রুখে দেন চিন্তার প্রতিবন্ধকতাসমূহ।
একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। অতি সম্প্রতি নো-মডারেশন ব্লগ সাইট আমারব্লগ ডটকম সাইটটি পরিচালনায় সাতটি নীতি (যদিও এটি এই ব্লগে না থাকারই কথা ছিলো) যোগ করেছে। ‘এখন থেকে আমারব্লগের সৌন্দর্য রক্ষার্থে নিম্নোক্ত পোস্ট গুলো প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে’ ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হচ্ছে:
এক. অ্যাডমিন যদি মনে করে কোনো পোস্ট মেশিন-রাইট/অর্থহীন/বক্তব্যহীন, তাহলে সেই পোস্ট প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে, দুই. যে কোন কপি পেস্ট/কপি রাইটেড ম্যাটেরিয়াল উপযুক্ত রেফারেন্স ছাড়া এবং ব্লগারের নিজের কোন বিশ্লেষণ ছাড়া পোস্ট করা হলে সেটা ও প্রথম পাতা থেকে সরানো হবে, তিন. আমারব্লগ ডটকম এ স্প্যামিং বা সাইটের টেকনিক্যাল বা অন্য যেকোনো সমস্যার কারণ হলে যে কোনো পোস্ট বা কমেন্ট আমারব্লগ কর্তৃপক্ষ মুছে দেওয়ার বা প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করেন, চার. আমারব্লগ.কম এ এক্সটার্নাল কোড ব্যবহার করে ব্লগারদের আইপি বা লোকেশন বের করার চেষ্টা করলে আপনার ইউজার আইডি ডিলিট এবং আপনার আইপি পার্মানেন্টলি ব্যান করে দেওয়া হবে, পাঁচ. যে কোনো অশ্লীল নিক/ছবি/অডিও/ভিডিও/বক্তব্য প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে, ছয়. যে কোনো ইংরেজী লেখা প্রথম পাতা থেকে সরানো হবে এবং সাত. যে কোনো ধরনের ফ্লাডিং কার্যকর পন্থায় প্রতিরোধ করা হবে।…
লক্ষ্যনীয়, ব্লগ যাত্রার শুরুতে কর্তৃপক্ষ ওই সাতটি পন্থার কথা বলেননি। কিন্তু উপরিক্ত পন্থাগুলো না মানার কারণে বা চেষ্টা করায় সদস্য ব্লগাররা বহুবার বিব্রত হয়েছেন, ব্লগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে, এমন কী কর্তৃপক্ষও সাইটটি চালাতে গিয়ে নানা রকম ঝক্কি-ঝামেলার শিকার হয়েছেন; আর এ সব কারণেই ‘ব্লগের সৌন্দর্য রক্ষায়’ এ সব পন্থা আরোপ করতে হয়েছে নো-মডারেশন ব্লগ সাইটকেও!
৫। এসব শ্লীল-অশ্লীল ভাষা ও ছবির বাইরে অনেক সময়ই ব্লগে চলে দলাদলি, ব্যক্তিগত হিংস্র আক্রমনও। এ কারণে নীতিমালার বাইরে মোটামুটি সব বাংলা ব্লগ সাইটেই ‘ব্লগারকে ব্লক’ এবং ‘মন্তব্য মুছে দিন’ এমন অপশন যুক্ত করা হয়েছে।
প্রায় শুরু থেকেই ব্লগে চলছে প্রমিত ভাষার লেখা-লেখির পাশাপাশি কথ্যভাষায় পোস্ট ও মন্তব্য দেওয়া। এই প্রবনতাটি বাংলা ব্লগের প্রধান ভাষা রীতি অবশ্যই নয়, তবে খুব ক্ষীণ ধারায় হলেও প্রবণতাটি আছেই। আবার রম্য লেখার ক্ষেত্রেও ব্লগাররা অনেক সময় সাধু ভাষা বা কথ্য ভাষা বেছে নেন।
এছাড়া ব্লগে ব্যবহার করা হয় বেশ কিছু কিম্ভুদ ভাষা। এগুলো একই সঙ্গে যেনো সংক্ষিপ্ত মোবাইল বার্তার ব্লগ সংস্করণ, এমন কী এই লেখার শুরুতে যে বাংলিশ ভাষা ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে, তা-ও।
উদাহরণ দেওয়া যাক। একটি মজার ফটো-ব্লগ পোস্ট দেখে একজন পাঠক মন্তব্যের ঘরে জানতে চাইলেন:
এসব ফটুক পাইলেন কৈ? জানতে মঞ্চায়!
পোস্ট দাতার উত্তর: খোমাখাতা+গুগলাইয়া।
মন্তব্য দাতা: হাহামগে। :hahahee:
পোস্টদাতা: ডিজিএম !
মন্তব্যদাতা: আরো পোস্টান! ।
পোস্টদাতা: দিমুনে, অহন দৌড়ের উর্প্রে আছি।
যারা বাংলা ব্লগের সঙ্গে তেমন পরিচিত নন, তাদের জ্ঞাতার্থে বললে ‘ভদ্র ভাষায়’ কথোপকথনটি হবে অনেকটা এরকম–
মন্তব্যদাতা: এসব ছবি কোথায় পেয়েছেন? জানতে মন চায়।
পোস্টদাতা: ফেসবুক ও গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে।
মন্তব্যদাতা: হাসতে হাসতে মরে গেলাম।
পোস্টদাতা: দূরে গিয়ে মর!
মন্তব্যদাতা: দয়া করে এ রকম আরো পোস্ট দিন।
পোস্টদাতা: পরে দেবো, এখন খুব ব্যস্ত আছি। …ইত্যাদি।
লক্ষ্যনীয় ফান-পোস্টে এমন রসালো ভাষা ও ইমোকটিনের ব্যবহার মন্তব্যগুলোকেও সরস করে তুলেছে। এটি হয়তো সুশীল ভাষায় ঠিক তেমন জমতো না।
কিন্তু কথ্য ও কিম্ভুদ ওই ভাষায় ব্লগে অনেকে লিখলেও একটু পর্যবেক্ষণ করলেই দেখা যাবে, গত চার বছরেও এটি ব্লগের প্রধান ভাষা হতে পারেনি, পাঠক নন্দিতও হয়নি সেভাবে। সিরিয়াস সব লেখা হচ্ছে, ওই প্রমিত বাংলা ভাষাতেই। ব্লগারদের নির্বাচিত লেখা নিয়ে এ পর্যন্ত যে সব ই-বুক অন্তর্জালে এবং অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় বই আকারে প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে ওই রকম কথ্য ও কিম্ভুদ ভাষার লেখা স্থান পায়নি।
সব মিলিয়ে এসবই ব্লগ লেখালেখির সার্থকতা এবং অগ্রযাত্রার নির্দেশক। আর বাংলা ভাষার অমিত অন্তর্নিহিত শক্তি এখানেই।
জয় হোক মুক্ত চিন্তার, শুভ বুদ্ধির। হ্যাপি ব্লগিং।। :yes:
—
ছবি: বুনো ফুল, কেওক্রাডং, বান্দরবান, লেখক।
আরো পড়ুন: নির্বাচন কমিশন ও পাইরেটেড সফটওয়্যার বিতর্ক [লিংক], আইটিতে বাংলার জয়জয়কার [লিংক]
এই ধরনের লেখা মন্তব্যে হলে আসলে কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু মাঝে মাঝে দেখা যায় অনেক লেখক এই ভাষাতেই মুল পোষ্ট দিচ্ছে( রম্য রচনার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা মানা যায়।)। তখন আসলেই খারাপ লাগে।
তবে সব কথার শেষ কথা ”
“
@সাইফুল ইসলাম,
একমত। সব ভাষাতেই কথ্য ভাষা দ্রুত রূপান্তরশীল। এক প্রজন্মের ভাষা অন্য প্রজন্মের পক্ষে বোঝাটা তাই কষ্টকরই হয়ে উঠে। এখনকার এমএসএন, ইয়াহু জেনারেশন তাদের প্রয়োজনেই নিজস্ব শব্দভান্ডার তৈরি করে নিয়েছে (বলা উচিত শব্দকে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর করে নিয়েছে) নিজেদের মধ্যে যোগাযোগকে দ্রুততর করার জন্যে। তাদের এই ভাষা আগের প্রজন্মের কাছে দূর্বোধ্য ঠেকবে সেটাই স্বাভাবিক। এই প্রজন্মই মূলত এখন বাংলায় ব্লগিং করছে। ফলে, ব্লগেও সেই ভাষা এসে যাচ্ছে আপন গতিতে। এতে আমি খুব একটা আপত্তি দেখি না। মূল লেখা যতক্ষণ প্রমিত বাংলায় আছে ততক্ষণ কোন সমস্যা নেই মনে হয়। মুক্তমনাতেও আমরা বন্ধুরা (আমি, অভি, বন্যা এবং বিপ্লব পাল) প্রায়শই একে অন্যের প্রতি মন্তব্যের সময় ঢাকাইয়া কথ্য ভাষায় নেমে যাই।
@ফরিদ ভাই,
মাঝে মাঝে মন্তব্য যদি এ ধরনের ভাষায় লেখা না হয় তাহলে মনে হয় ব্লগের মজাই শেষ হয়ে যাবে।
তবে আসল কথা ওটাই যে, এই ভাষা ব্যাবহার না করে পোষ্ট দেয়াটাই বাঞ্ছনীয়।
@ফরিদ আহমেদ,
আবার জিগস্!
@সাইফুল ইসলাম,
স হ ম ত । :yes:
:yes:
@পৃথিবী,
খুবই আশার কথা এবং ডিজিটাল পৃথিবীতে ভাল কিছু করার সুযোগের অপব্যবহার করছি না। তবে মাঝে মাঝে ইন্টারনেট সার্চ করতে গিয়ে এমন জঘন্য কিছু বাংলা হরফে পেয়েছি যে বিরক্তিতে ঘৃণায় মনটা বিষিয়ে গেছে।
যাহোক, সবাই মিলে ‘বাংলা ভাষার অমিত অন্তর্নিহিত শক্তি’কে শক্তিশালী করব এ প্রাত্যাশা বাংলাভাষীদের কাছে।
তথ্যবহুল ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক লেখাটির জন্যে ধন্যবাদ।
@গীতা দাস,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। :rose:
তবে সাহেব বাবুর বৈঠকখানাতেও যখন দশচক্রে ভূতই ভগবান হয়ে যান, তখন আর বলার কি থাকে !! :deadrose:
ব্লগ সম্পর্কে যাদের ধারণা কম তাদের জন্য এটা বেশ তথ্যমূলক একটা পোস্ট। :yes:
তবে বিভিন্ন ব্লগগুলোর লিঙ্ক দিলে মনে হয় আরও ভাল হত।
@হোরাস,
পাঠ ও মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ। :rose:
অন্তর্জালের মন্থরগতিতে বার দশেক কষরতের পর লেখায় বেশ কয়েকটি লিঙ্ক দিয়েছি।