পূর্ব প্রকাশিতের পর বাকী অংশ
সংস্কৃতির ক্ষেত্রে পুজিঁবাদী সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের কয়েকটি নমুনা:
১। লেবুর শরবৎ, ডাব ইত্যাদি দেশী স্বাস্থসম্মত পানীয় আমাদের সংস্কৃতিতে ঐতিহ্য হিসাবেই আবহমান কাল থেকে ছিল। কিন্তু কোকাকোলার আগ্রাসনে কাগজী লেবুর শরবতের গ্লাসটি এখন উধাও।
২। চুরি, মিথ্যা, ঘুষ-দূর্নীতি, পণ্যে ভেজাল দেয়াও আমাদের সংস্কৃতি। ঘুষের নাম এখন স্পীড মানি,পার্সেন্টেজ যা উপরি আয় বা বেশতি রোজগার হিসাবে সমাজে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত।
৩। ১লা বৈশাখ, থার্টিফার্ষ্ট নাইট, ভালবাসা দিবস, মা দিবস, বাবা দিবস উদযাপন ইত্যাদি।
বাঙালির ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান, মায় প্রাণের অনুষ্ঠান হিসাবে ১লা বৈশাখের যে প্রচারণা, বাঙালিয়ানার যে উন্মাদনা ইদানিং পরিলক্ষিত হচ্ছে তার তো পুরোটাই ফানুস, ভিতরে সারবস্তু কিছু আছে বলে মনে হচ্ছে না। সার যেটুকু আছে সেই ইতিহাস ঘাটলে দেশী লেবাসে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের নগ্ন চেহারাই উন্মোচিত হয়। ব্রিটিশ আমলে জমিদারগণ এদিনটিতে পুণ্যাহ অনুষ্ঠান করতেন, যা ছিল জমিদারদের বকেয়া খাজনা আদায়ের দিন; যে ঢাকের বারি পড়তো/ আওয়াজ শুনা যেতো পুরো চৈত্রমাস জুড়েই। আজ এই গ্রামে তো কাল সেই গ্রামে; ঢাকের বারি পরতো আর গরীব প্রজার বুকের ভিতরও দ্রিম দ্রিম করতো। প্রজা কৃষকের জন্য তা ছিল একটা সাংঘাতিক ভয়ের দিন। কারণ প্রাকৃতিক দূর্যোগ যেমন খরা/বন্যা বা পোকার আক্রমণে ফসল প্রাপ্তিতে বিঘ্ন ঘটলেও জমিদারদের নায়েব, লাঠিয়ালরা কোন ওজর আপত্তিই শুনতো না, কৃষকদের তারা নির্মমভাবে অত্যাচার করতো। জমিদারদের জন্য এদিনটি আনন্দের হলেও গরীব প্রজা/ভূমিদাস/চাষীর জন্য তা ছিল সত্যিকার অর্থেই একটা ভয়ের দিন। আর সুদের ব্যবসা যারা করতেন, সেই সুদখোর মহাজনরা (বেনিয়া) এদিনটিতে সুদ আদায় ও নবায়নের দিন হিসাবে ‘শুভ হালখাতা’ অনুষ্ঠান করতেন। যারা সুদ দিয়ে ঋণ নবায়ন করতে পারতেন তাদেরকে মিষ্টি খাওয়ানো হতো। আর যারা পারতেন না তাদের জন্য থাকতো নির্মম অত্যাচার এমনকি কখনো কখনো তাদের বউ বেটিদের বেগার খাটায় বাধ্য করা হতো। কারণ ধূর্ত সুদখোর বেনিয়ারা ঋণ প্রদানের সময়ই সাদা কাগজে (ষ্ট্যাম্প) টিপসই নিয়ে রাখতো। যার জন্যে অতি দরিদ্র এসব সাধারণ মানুষদের জন্য ১লা বৈশাখটা ছিল একটা আতংকের দিন।
কাজেই পহেলা বৈশাখের দিন যে সুন্দর জামা-কাপড় পরে, পান্থা খেয়ে, নেচে-গেয়ে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আনন্দ-উল্লাস করা হয় তার যৌক্তিকতা কোথায়? আমরা কি আজও দেশের সাধারণ মানুষের জন্য শুভ নব-বর্ষের শুভটা কিছু দিতে পেরেছি? শাসকের ছত্রছায়ায় শোষকের তান্ডবে আজও মানুষ ঘরবাড়ি হারায়, উচ্ছেদ হয়। সেই সুদখোর বেনিয়াদেরই নব্যরূপ নোবেলখ্যাত ডঃ ইউনুস উদ্ভাবিত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচী, যারা আজও সেইসব মানুষদের ঘরের চাল, টিনের বেড়া, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী কেড়ে নেয়। এই ব্যাংকের কিস্তি মেটাতে ঐ সংস্থায় যায়ও শেষ পর্যন্ত ভিটে-মাটি হারিয়ে বস্তিবাসী হয়। এস্থলে আমার প্রশ্ন তাই, আমরা কি ঐসব অত্যাচারী জমিদার/ সুদখোর বেনিয়াদের উত্তরসুরী নাকি শোষিত-বঞ্চিত সাধারণ মানুষের উত্তরসুরী? শোষণ-প্রতারণা চালু রাখার যে সংস্কৃতি আমরা পালন করি যা শোষক-শাসকের সংস্কৃতি আমাদের উপর নতুন কৌশলে চাপিয়ে দেয় তা বদলে ফেলা কি এতই অসম্ভব? সত্যের খাতিরে, গণ-সচেতনতা তৈরীর খাতিরে আমরা বরংচ ১লা বৈশাখের মত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শোষণের রূপ পরিগ্রহের ইতিহাস তুলে ধরতে পারি, যাতে আমাদের শোষিত বঞ্চিত মানুষেরা, আমাদের ছেলেমেয়েরা শোষণ বঞ্চণার নব্য রূপটি ধরতে পারে।
তেমিনভাবে আমাদের সংস্কৃতিতে এখন যুক্ত হয়েছে থার্টি ফার্ষ্ট নাইট, ভালবাসা দিবস, মা দিবস, বাবা দিবস ইত্যাদি। এতে কেউ কেউ মনে করছেন, বলছেন পশ্চিমা সংস্কৃতির আমদানী ঘটছে। গান হয়েছে ব্যান্ড সঙ্গীত যার তীব্র ঝাঁঝালো আওয়াজে কারো হার্ট এট্যাক হবার যোগার। ছেলেমেয়েদের পোষাক-ফ্যাসানে, মনেরভাব প্রকাশে একটা জগাখিচুরী ভাষার ব্যবহার, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার অনভিপ্রেত ব্যবহার, সব মিলিয়ে যাকে অনেকে ব্যঙ্গ করে বলছেন ডিজুস কালচার। বলছেন এসব অপসংস্কৃতি। আসলে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সুস্থ ধারার সংস্কৃতি বা অপসংস্কৃতি এভাবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিটাই ভুল।কোন ঘটনাকে সঠিকভাবে বুঝতে হলে দরকার তার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়সমূহকেও জানা, সেই সময়কার উৎপাদনের স্তরটিকেও বুঝা। উৎপাদন ব্যবস্থা, উৎপাদন সম্পর্কের উপর ভিত্তি করেই তার সংস্কৃতিও বদলায়। যেমন এই সেদিনও যখন আমাদের কৃষিকাজে সেচ পাম্পের প্রচলন হয়নি, কৃষকরা কাঙ্খিত বৃষ্টির জন্য নির্ভর করতো প্রকৃতির উপর। সেই বৃষ্টি দেয়ার মালিক দেবতা/ভগবান বা আল্লার নিকট মানুষ তখন বিশেষ পুঁজা বা মোনাজাত করেছে, কৃষকেরা দলবেঁধে জারিসারি গেয়ে, বাড়ী বাড়ী চাউল তোলে শিন্নী রেধেঁ খেয়েছে, নেচেছে, নাচার উঠোন বা মাটিটিকে তারা পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়েছে,তাদের মুখে তখন থাকতো “আল্লাহ মেঘ দে পানি দে” সুর। এটাও আমাদের সংস্কৃতিই ছিলো। কিন্তু পাম্প এসে সেই বাস্তবতার পরিবর্তন ঘটিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে সেই সংস্কৃতিরও।
আমাদের জনস্বাস্থের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক উন্নতি আজ হয়েছে বটে, কিন্তু তা সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য নয়। চিকিৎসকের প্রতারণা ও রোগীদের ভোগান্তির কথা আমরা কমবেশী সবাই জানি। যা তেমন প্রচারে আসেনি তাহলো মুনাফা শিকারী ঐসব ঔষধ কোম্পানীগুলোর লোভী, হিংস্র দাঁত, নখের খবর। এখানেও মানুষের অসচেতনতাকে ও অসহায়ত্বকে জিম্মি করে, চিকিৎসকদেরকে কিনে নিয়ে তাদের সম্পদের পাহাড় গড়ার কাহিনী। আমরা জানি রোগ ভোগের ক্ষেত্রে প্রতিরোধ পতিষেধক থেকে সব সময়ই ভাল। বিভিন্ন রোগ ও তার কারণ সম্পর্কে তথ্যাদি, খাদ্যাভাস বিষয়ে সচেতন করা হলে আমরা অনেক রোগ ভোগ থেকে বেঁচে যেতে পারি। অজ্ঞানতার কুফল যে কী মারাত্মক তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো – আজ থেকে ৫০/৬০ বছর আগেও কলেরা ও গুটিবসন্ত মহামারী আকারে ছিলো। কলেরা ও বসন্ত যে রোগ জীবানুর কারণে হয় এটি তারা তখন জানতো না। সেই সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা বিশ্বাস করতো এসব ওলা দেবী ও শীতলা দেবীর কুদৃষ্টির ফল। আর মুসলমান ধর্মাবলম্বী মানুষেরা মনে করতো এগুলো আসমানী বালা/ আল্লাহর গজব ইত্যাদি। মানুষ তখন মন্দিরে/মসজিদে পুঁজা দিয়ে/শিন্নী দিয়ে, পুরোহিত-ঠাকুর/মোল্লা-মৌলভীদের খাইয়ে দেবতা/ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে মহামারী আকারের মসিবৎ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা করতো। কিন্তু পরিত্রাণ মেলেনি, দেবতা বা আল্লাহ কেউ তাদের বাঁচাতে আসেনি। বরং এমন ভুল জানার কারণে, ভাববাদী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ফি বছরই বহু মানুষ মারা পড়েছে। এই অন্ধ বিশ্বাস থেকে যখন মানুষ মুক্ত হতে পেরেছেন, এসব রোগের বস্তুগত কারণ যে রোগ জীবাণু তা আবিষ্কার করতে পেরেছে, তখনই এর প্রকোপ থেকে বাঁচার উপায়ও আবিষ্কার করতে পেরেছে। ব্যাপক প্রচারের ফলে আজ আমরা সকলেই জানি যে এক চিমটি লবন, এক মুঠ গুড় আর এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি হলেই স্যালাইন তৈরী করা যায়; আর এই স্যালাইন খেলেই কলেরা ভাল হয়ে যায়। বসন্তের টিকাও তখনই আবিষ্কার করা গিযেছিল তার প্রয়োগে বসন্ত থেকেও আমরা এখন মুক্ত।
মহান শিক্ষাগুরু, দার্শনিক, সমাজ বিজ্ঞানী, মানব দরদী, মণীষী কার্ল মার্কসের শিক্ষানুসারে আমরা জানি যে মানুষের চিন্তা-চেতনা বস্তুকে, বাস্তব অবস্থাকে নিয়ন্ত্রন করে না বরং বস্তুই চেতনাকে নিয়ন্ত্রন করে। বস্তুর অন্তর্গত কারণে/ নিজস্ব নিয়মেই তার পরিবর্তন ঘটে; তার গতি প্রাপ্তি হয়, তার লয়-ক্ষয় হয়,আবার নতুন রূপে উদ্ভবও ঘটে। বস্তুর অন্তর্গত কারণ তথা অন্তর্দ্বন্ধের নিয়ম মেনেই সংগঠিত হয় তার স্থিতি, বিকাশ বা তিরোধান। বস্তুর ক্ষুদ্রতম রূপ হলো পরমানু (atom )। এই পরমাণু ইলেক্ট্রন ও প্রোটনদ্বারা গঠিত, যারা যথাক্রমে নেগেটিভ ও পজেটিভ চার্জ ধারণ করেন। বিপরীত চার্জ ধারণের ফলে নিয়ত চলে বৈপরীত্বের টানাপোড়েন, দ্বন্ধ-সংঘাত, আবার দ্বন্ধ সত্বেও ঐক্য । সংঘাত ও ঐক্যের দ্বান্ধিক নিয়ম মেনেই চলছে এই জগৎ সংসারের সব কিছু, তাই এটি সদা গতিশীল, পরিবর্তনশীল। এজন্যই সমাজের সঙ্গতি-অসঙ্গতি, ভাল-মন্দ, সত্যি-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়, ভালবাসা-ঘৃণা, সুন্দর-অসুন্দর সবকিছুই সেই যুগ/কাল সময়ের উৎপাদনের বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত; কোন অতিপ্রাকৃতিক শক্তির কল্পণা/চিন্তা এখানে অজ্ঞতা/ অবান্তর। সত্যিকারের জ্ঞানতো এটাই, এটাই প্রজ্ঞা, বিশ্ববীক্ষা। প্রকৃত জ্ঞানীতো সেই জন, যিনি নিজের ভুল সংশোধন করতে পারেন। এই জ্ঞান তত্ত্বের আলোকে যিনি নিজেকে আলোকিত করতে পারেন তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।
সৃষ্টি ও ধ্বংসে, তাবৎ প্রাণীকুলের বিবর্তনে, মানব সমাজের ইতিহাস পর্য্যালোচনায়, যাবতীয় ঘটনার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে একখানি যথোপযুক্ত টুলস হিসাবে এই জ্ঞানতত্ত্বকে আমরা ব্যবহার করতে পারি। সঠিক চিকিৎসা বা রোগ ভোগ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য চিকিৎসকেরা প্রতিষেধক/ঔষধ প্রয়োগের আগে যেমন বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগের আসল কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেন, তেমনি আমাদেরও উচিৎ মূল সমস্যার দিকে দৃষ্টি দেয়া, খুজেঁ বের করা। সকল মানব সন্তানের শিক্ষা পাওয়া না পাওয়ার সমস্যা, শিক্ষা ব্যবস্থার নানা সংকট -অর্থ বরাদ্দ থেকে পাঠক্রম; স্বাস্থ সেবার দুষ্প্রাপ্যতা, বেকারত্ব, জনজীবনে অনিশ্চয়তা, ভয়, আতংক সবই রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সম্পর্কজাত। রাজনৈতিক -অর্থনৈতিক অবস্থাকে বলা হয় উপরিকাঠামো, তার মূল বা খুঁটি ধরা হয় উৎপাদন ব্যবস্থা ও উৎপাদন সম্পর্ককে। যে কথাটা স্পষ্ট করে বলা হয়না তাহলো এই উপরিকাঠামো দাঁড়াবে কিসের উপড় সেই ভিতের কথাটি। এই ভিতটি সমতলের হবে না কি উঁচু-নীচু থাকবে, কতটা নরম কতটা শক্ত মাটির হলে চলবে কি না ? এসব পশ্নের আগে মিমাংসা দরকার। রোগ নিরাময় করতে ঔষধ নির্বাচনের আগে যেমন রোগ র্নিনয় দরকার হয় তেমনি। ঘর রূপী সমাজ কাঠামোর বেলায়ও উপরিকাঠামো ঠিক করার আগে দরকার তার ভিতটা আদর্শ কিনা তা ঠিক করা। মানুষে মানুষে বৈষম্য থাকবে না সাম্য থাকবে, সর্বাগ্রে নির্দ্ধারণীয় বিষয় এটিই। এই মতাদর্শের ভিত ঠিক না হলে ভূমিকম্পের মতো, সুনামির মতো উপরিকাঠামোর সবকিছু উলটপালট করে দিতে পারে, দেয়ও এবং ভবিষ্যতেও দেবে।
বর্তমানে আমাদের সমাজে যত সমস্যা বিদ্যমান, শ্রেণিগত, ধর্মীয়, লিঙ্গীয়, জাতিগত, সকল সমস্যারই মূল একজায়গায়ই প্রোথিত। তা হলো পুরো সমাজটাই এখন বৈষম্যবাদী ভিতের উপড় দাঁড়িয়ে। যে জায়গায় ঘর বাঁধব সে জায়গার মাটি যদি হয় উঁচু-নীচু, কতখানি নরম কতখানি শক্ত তাহলে হবে না। ঘর বাঁধতে চাই শক্ত সমতল মাটির ভিত। সুষ্ঠ,সুন্দর সমাজ গড়তে চাই সাম্যের আদর্শ যেখানে মানুষে মানুষে উঁচু নীচু ভেদাভেদ থাকবে না, মেধাশ্রম বা কায়িক শ্রমের ফারাক করা হবে না, সুবিধাভোগী বা সুবিধা বঞ্চিতের ভাগ থাকবে না। আমাদের সমাজ নামক ঘরে বিদ্যমান বৈষম্যবাদী নীতির ভিত নড়বড়ে করে দিচ্ছে উৎপাদন/অর্থনীতির খুটিগুলোকে যার ফলে অস্থিরতার রাজনীতি ফাটল ধরিয়েছে চালায়/ছাদে। যে উৎপাদন (পুঁজিবাদী) ব্যবস্থা শুধুই মুনাফা খোঁজে মানুষের প্রয়োজন/ অপ্রয়োজন বুঝে না, মানুষের দুঃখ-কষ্ট, বাঁচা-মরায় যা অবিচলিত থাকে, তৈরী করে লোভী, মিথ্যুক, প্রতারক, ভন্ড, হিংস্র ভয়ানক সব মানুষ। খন্ডিতভাবে/বিচ্ছিনাভাবে একে দেখার কোন সুযোগ নেই, আমরা মানুষের সমাজের এক যুগ-সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছি। চলতি ব্যবস্থা মেনে নিয়ে নীরবে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাওয়া, অথবা পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহনে সক্রিয় হওয়া সিদ্ধান্ত এখন আমাদেরই নিতে হবে। (সমাপ্ত)