অভিজিৎ
-মোকছেদ আলী*
ঈশ্বরদী থেকে আল্লাহর দর্গা যাওয়ার নতুন রেল লাইন হয়েছে। এজন্য বেলা ১০ টার সময় আল্লাহর দর্গা ষ্টেশনে এলাম। ঈশ্বরদী যাওয়ার আপ ট্রেনটি প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে। আমি টিকিট কাটার জন্য বুকিং অফিসের দিকে যাচ্ছি। গার্ড সাহেব চীৎকার করে যাত্রীদের ডেকে বলছেন, “ঈশ্বরদীগামী প্যাসেঞ্জারদের কোন টিকিট লাগবে না, বিনা ভাড়ায় যেতে পারবেন। তাড়াতাড়ি এসে গাড়ীতে উঠে বসেন।”
প্রায় ৩০/৪০ জন যাত্রী গার্ডের কাছে গিয়ে হাজির হল। দেখাদেখি আমিও গার্ড সাহেবের কাছে গেলাম। গার্ডসাহেব বললেন, বিনা ভাড়ায় যাবেন, তবে একটা শর্ত আছে। শর্তটা হল, বুকে হাত দিয়ে সত্য করে বলতে হবে, আপনি বেগোনাহগার মানে নিস্পাপ। অর্থাৎ সব পাপের মা মিছা কথা আপনি বলেন না। কারো নিন্দা করেন না। কারো প্রতি হিংসা করেন না। ব্যভিচার করেন না। লোভ লালসা করেন না। ঐ যে কুটি মনসুর পল্লী গীতি গান করে- ‘হিংসা আর নিন্দা ছাড়ো, দীলটা করো পরিষ্কার।’ দেখুন আপনার দীলটা পরিষ্কার আছে কিনা? যদি পরিষ্কার থাকে, তাহলে গাড়ীতে উঠে বসেন।
গভীরভাবে চিন্তা করে দেখলাম। আমি গেঞ্জি, লুঙ্গি, গামছা, শাড়ী কাপড়ের ব্যবসা করি। খদ্দেরের কাছে ১০০ টাকা দামের শাড়ীর দাম ৪০০ টাকা চাই। খদ্দের আমার মাথায় টুপী, মুখে গালপাট্টা চাপ দাড়ী, গায়ে লম্বা জুব্বা দেখে আমাকে সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করেন। তবুও খদ্দের বলেন-‘ ৪০০ টাকা, দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে।’ আমি ছরাছর মিছা কথাই বলি- “৩৮৫ টাকায় কেনা পোড়াদহের হাটে। হাটের খাজনা শতকরা ২ টাকা। হাটে সন্ত্রাসীদের চাঁদা, আর তাদের গড ফাদারদের চাঁদা শাড়ী প্রতি ৫ টাকা।
দোকানের কর্মচারীকে হুকুম দেই, জগলু, সামছুলের দোকান থেকে ১ কাপ দুধ-চা আর হাকিমপুরী জর্দা দিয়ে একটা পান নিয়ে আয়। খদ্দের খুশি হয় মনে মনে। চা পান শেষে ৪০০, টাকা দেয়। খাতির দেখায়ে ৫ টাকা ফেরত দেই। খুব বিনয়ের সঙ্গে বলি, আপনি আমার পুরাতন বাধা খদ্দের। ১ টা শাড়ীতে ৫/৭ টাকা লাভ নাইবা করলাম। ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে কত লেনদেন হবে। ছাপানো কভারে শাড়ী পুরে ষ্ট্যাপলার দিয়ে পিন আপ করে দেই। চট করে প্রসঙ্গ ঘুরে ফেলি। বলি- ভাইজান, আপনার বড় ছেলে কি মাষ্টারস্ পাশ করেছে? ভাইজান আমার কথায় খুশি হয়ে একটু খুশ খুশ করে কেশে বলেন- ফাইন্যাল দিয়েছে, দোয়া করবেন। রেজাল্ট এখনও বের হয়নি।
ভাইজানের মুখের উপর দোয়া করি- হে আল্লাহ মাবুদ, আমার ভাইজানের বড় পোলাটা যেন ফাষ্ট ক্লাস ফাষ্ট হয়। আপনার বান্দার প্রতি মেহেরবানী কইরেন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
সুতরাং আমার দিল যে কিরূপ পরিষ্কার তাতো আমি নিজেই বুঝতে পারছি।
আকতার মেকারের ছেলে জাপান থাকে। লাখ লাখ টাকা পাঠায়, বড় রাস্তার ধারে আলট্রা মডার্ন ৪ তলা বাড়ি করেছে। নাম দিয়েছে মেরিডিয়ান ভিলা। অট্টালিকার দিকে তাকিয়ে হিংসায় আমার অন্তর জ্বলে যায়। কাজেই বিনা টিকিটে গাড়ীতে ওঠা হল না।
পাশেই ছিল জগদীশ বাবু। ঘড়ির মেকার, আবার নতুন ঘড়িও বেচা বিক্রি করে। শুধালো, মোসকেত ভাই, গাড়ীতে উঠলা না? দাঁত কেলায়ে বললাম, বিনা ভাড়ায় গাড়িতে উঠা যাবে না, অন্তর দিল পরিষ্কার নাই। তুমি উঠলা না, শুধালাম। জগদিস দাঁত বের করে হেসে বলল, গার্ড সাহেব বলেছেন, দিলটা পরিষ্কার থাকলেই গাড়ীতে উঠে বসেন। সত্যি কথা বলতে তো তোর কাছে বাধা নাই। তুই আমার বুজম ফ্রেন্ড, অন্তরঙ্গ বন্ধু।
তাইলে ঘটনাটা কই শোন্, আমাদের পাড়ার নগেনদার বড় জামাই একটা ঘড়ি নিয়ে এলো। বলল, “কাকাবাবু, ঘড়িটা বন্ধ হয়ে গেছে। একটু দেখে দেন তো।” বললাম, “বাবাজী বসো।”
একটা ঘড়ি মেরামত করছিলাম। সেটা রেখে জামাইয়ের ঘড়িটা খুললাম। দেখি একটা স্ক্রুপ সামান্য লুজ হয়ে আছে। টাইট দিলেই আবার চলবে।
এখন কথাটা হল, ওর সামনে যদি টাইট দেই- তাহলে তো পয়সা নেয়া যাবে না। তাই খুব পাম দিতে লাগলাম। বললাম, “এটা খুবই ভালো ঘড়ি, অনেক দামী ঘড়ি। কত দিয়ে কিনেছ বাবাজী?” হেসে বলল, “কিনি নাই। বড় মামা জার্মানীর বার্লিনে থাকেন। ৫/৬ মাস হলো, বাড়ি এসেছিলেন, এই ঘড়িটা আমাকে উপহার দিয়ে গেছে।”
বললাম, “বাবাজী এই ঘড়িটি খুবই দামী ঘড়ি, তা ৬/৭ হাজার টাকা হবে। সুইজারল্যান্ডের রিকো। এতে যে পাওয়ারের ব্যাটারী দেয়া আছে তা অনায়াসে ২০ বৎসর চলবে।”
বুঝছিস, মোসকেত ভাই- ঘড়ি তো প্রায় লোকেই হাত থেকে খুলে টেবিলের উপর রাখে। তাই শুধালাম, বাবাজী, ঘড়িটা কি খুলে টেবিলের উপর রাখতে? জবাব দিল, “আজ্ঞে, চান করার সময় হাত থেকে খুলে টেবিলের উপরেই রাখি।” আমি বললাম, “ও বুঝেছি, যেভাবেই হোক ঘড়ি মাটিতে পড়ে গিয়েছিল।”
চালাকি করে বললাম, বাবাজীর বাজারে কোন কাজ আছে? যদি থাকে, সেরে আসো। না হয় কাল সকালে এসে নিয়ে যেও। আমার কর্মচারী রিপনকে বললাম, রিপন, কালামের দোকান থেকে ভাল দুইটা সবরী কলা আন্ আর রামের চায়ের ষ্টল থেকে ১ কাপ সর সমেত দুধ নিয়ে আয়।
বাবাজী নাহু নাহু করে বলল, কাকা আমি কিছু খাব না। বড় বাজারে এক লোকের সঙ্গে দেখা করতে যাব। বলেই উঠে চলে গেল। আমি খুশি হয়ে একটু খুশ খুশ করে কাশলাম।
পরদিন বেলা দশটার সময় জামাই বাবাজী এলো। চা, পান, কলা খাওয়ালাম। ৫/৬ টাকা খরচ হল। ঘড়ি দিলাম। শুধালো, চার্জ করত? বললাম, তুমি আমার নগেদনদার জামাই। সুতরাং তুমি আমারও জামাই। তোমার কাছে কি চার্জ নেয়া যায়? তুমি কি পর? ছড়াছড় মিছা কথা বললাম- “একটা পার্টস লেগেছে, অন্য লোক হলে ৩০০ টাকা চার্জ নিতাম। তোমাকে কি আর বলব, যা ভালো মনে কর দিও।” জামাই বেটা মানি ব্যাগ খুলে ৫০০ টাকার কড়কড়ে নোট একটা দিল। আমিও ড্রয়ার খুলে কড়কড়ে ২৫০ টাকা ফেরত দিলাম। বেটা খুশি হয়ে চলে গেল।
নতুন ঘড়ি বেচার বেলায় খদ্দেরের পোশাক দেখেই বুঝতে পারি বেটা পয়সাওয়ালা। ২০০ টাকার ঘড়ি দিয়ে ১২ শত দাম হাঁকি। বেটা কত কমাবি কমা। শেষে ১২ শত টাকাই দেয়।
চিন্তা করে দেখলাম, আমার দিল একটুও পরিষ্কার নাই। কাজেই বুঝতে পারছ- বিনা ভাড়ায় আমারও ঈশ্বরদী যাওয়া হলো না। একে একে সবাই মাথা নিচু করে চলে গেল।
জগদীশ বলল, মোসকেত ভাই- ঐ যে রবি মাথা নিচু করে চলে গেল। হল বাজারে ওর ভ্যারাইটি ষ্টোর আছে। কসমেটিকের দোকান। সৌন্দর্য বর্ধনের দোকান। মেয়েরাই বেশি আসে। মওকা বুঝে ৫ টাকার মাল ৫০ টাকা দাম হাঁকে। সকাল আটটা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। দিল তো পরিষ্কার হয় নাই। সেদিন কুটি মনসুরের গান শুনলাম রেডিওতে- “নিন্দা আর হিংসা ছাড়ো, দিলটা করো পরিষ্কার।” কি চমৎকার কথা। এই যুগে অন্তর দিল পরিষ্কার রাখা বড়ই কঠিন। ঠিক কিনা মোসকেত ভাই?
জগদিস দা গার্ড সাহেবের কাছে চলে গেল। বলল, স্যার আপনি গাড়িতে উঠছেন না কেন?
গার্ড সাহেব হাস্য করে বললেন- আরে বাপু আমার দিলটাও পরিষ্কার নয়। ঘুষ খাই। ড্রাইভারের সঙ্গে আঁতাত করে ডিজেল বিক্রি কোরে আধাআধি ভাগাভাগি করি। আমার দিলটাও পরিষ্কার নাই। কাজেই আমিও গাড়ীতে উঠতে পারছি না।
এমন সময় জগদীশদার নাতী অভিজিৎ এসে বলল- দাদু চল গাড়ীতে উঠে বসি। জগদীশ বাবু খুব দুঃখ করে বলল- অভিজিৎ, আমি গাড়িতে উঠতে পারব না। আমার অন্তর দিলটা পরিষ্কার নয়। দিল পরিষ্কার না থাকলে গাড়ীতে ওঠা যাবে না। এমন সময় আমার মেজ মেয়ের ছোট ছেলে ফরিদ এলো। ফরিদ আর অভিজিৎ গাড়ীর পা দানীর উপর উঠল। ভেতর থেকে টিটি এসে ওদের দুজনকে হাত ধরে তুলে ভেতরে নিয়ে গেল।
একি! আশ্চর্য ব্যাপার তো, রেলগাড়ী, জেট বিমানের মত আকাশে উড়াল দিল। আমি ভীত হয়ে চীৎকার করে ডাকলাম- অভিজিৎ, অভিজিৎ, ফরিদ, ফরিদ। কিন্তু গলার স্বর বের হচ্ছে না। কে যেন পেছন থেকে আমার পিঠে হাত দিয়ে ধাক্কা দিল। ঘুম ভেঙ্গে গেল। গিন্নি বলল- ফরিদ ফরিদ করে চিল্লাচ্ছো ক্যা? ফরিদ তো ঐ রুমে ওর মায়ের কোলে ঘুমিয়ে আছে। বললাম, কি একটা স্বপ্ন দেখলাম!
অনুলেখক: মাহফুজ
*মোকছেদ আলী (১৯২২-২০০৯)। স্বশিক্ষিত।
জগদীশদার নাতী অভিজিৎ আর মোকছেদ আলীর মেজ মেয়ের ছোট ছেলে ফরিদের দিল পরিস্কার? তারা বিনা টিকিটে ইশ্বরদীর ট্রেনে চড়ে? গররররররর ( কান দিয়ে ধোঁয়া উঠার ইমো) … 😉
@বিপ্লব রহমান,
গল্পের মধ্যে তাই তো বুঝা যাচ্ছে।
ওদের দিল পরিষ্কার বলে কি খুব হিংসা হচ্ছে?
নৃপেনদা আমাদের আরও একটা বিষয় স্মরণ রাখতে হবে। তা হচ্ছে-
১.২। মুক্তমনা কোন চ্যাটরুম, ফোরাম, বন্ধুসভা কিংবা সোশ্যাল কমিউনিটি ব্লগের মত গল্পগুজবের স্থান নয়। এখানে মুক্তমনার উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ (১.১ দ্রঃ) লেখা এবং তা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনাকে উৎসাহিত করা হয়।
এদিকে নজর না দিলে, এডমিন সাহেব হয়তো আমাদের ঝাড়ি দিতে পারেন।
আমি আগেই আচ করতে পেরেছিলাম যে, আপনি আমার কাছ থেকে ছাত্রের নাম জানতে চাইবেন। আমার ভেতর এ ধরনের আচ কেন এলো সেটাই ভাবছি।
@মাহফুজ,
ঠিক আছে। ঝাড়ির চিন্তা আমার মাথায়ও ছিল। মনে করে দিয়ে ভালই করেছ।
বাড়ীর কাজ জমা না দেওয়ার জন্য ভাল সুযোগটা নিলে।
কাজের কথা বলি (ঝাড়ি খাওয়া এড়ানোর জন্য ভেবো না)। মোকসেদ আলীর সংকলন বই আকারে বের করছ কবে? অপেক্ষায় থাকছি।
আমারও সাজেসন – লেখাগুলোর মৌলিকত্বে হাত দিও না। যেমনঃ
১) সাধু ভাষায় থাকলে সাধু ভাষাতেই রেখ
২) বানান ভুল থেকে থাকলে ঠিক করে দেওয়ার দরকার নেই
৩) চরিত্রের নাম যা আছে তাই থাকুক। অভিজিত এবং ফরিদের কথা পড়ার সময় মুক্তমনার অভিজিত আর ফরিদের কথা আমার একবারও মনে পড়েনি।
এগুলো কোন উপদেশ নয়। এডমিনদের ঝাড়ির হাত থেকে বাঁচার পথ।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনার সাজেশনগুলোর ব্যাপারে কিছু কথা আছে-
– নীতি: ২.৪। পোস্ট এবং মন্তব্যের ভাষা হওয়া উচিত (মূলত) বাংলা — অবশ্যই বাংলা হরফে; আর ভাষারীতি লেখ্যভাষা হিসেবে প্রচলিত প্রমিত বাংলা হওয়াই শ্রেয়।
-নীতি: ২.১৪। লেখায় বানান ভুলের প্রতি সদস্যরা সচেতনতা দেখাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বানান ভুল থাকলে লেখা প্রকাশ করা হবে না কিংবা লেখা সরিয়ে ফেলা হবে।
এ ব্যাপারে নীতিমালায় কিছু পেলাম না।
মোকছেদ আলীর সংকলন বই আকারে করতে চাই ঠিকই, তবে তার আগে পাণ্ডুলিপিগুলি কম্পোজ এডিটিং- এর কাজ শেষ হোক, তারপর ভাবা যাবে।
@ নৃপেনদা,
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আপনি ঈশ্বর কর্তৃক প্রেরিত পুরুষ।
ব্যাটারী দূর্বল ছিল। এক্সট্রা ব্যাটারী ছিল, সেটা লাগানোর পর সব ঠিক।
আপনার কাছে আবেদন করার পরই, মাথার মধ্যে নতুন ব্যাটারীর চিন্তাটা এলো। আপনি কি কোনো টেলিপ্যাথিক উপায়ে আমার মধ্যে কিছু ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন নাকি?
@মাহফুজ,
তোমার কি আমার সেই দুই ছাত্রের কথা মনে আছে? জানতে চাওনা ওরা এখন কোথায় আছে?
@নৃপেনদা,
জানতে চাই, বলুন আপনার সেই দুই ছাত্রের কথা। কোথায় কেমন আছে?
নৃপেনদা, এই যে আমরা দুজন দুপ্রান্তে থেকেও আলাপ আলোচনা কিম্বা মিথস্থ্ক্রিয়া হচ্ছে, আজ যদি বিজ্ঞানের অবদান না থাকতো তাহলে কি সম্ভব হতো?
@মাহফুজ, এখানে আসার চার দিন পরে আমার বাবা মারা যান। আমি জানতে পারি বিশ দিন পরে। চিঠি ছাড়া যোগাযোগের সহজ পথ ছিল না। আর এখন আমার মা খোজ খবর নেয় – আমি সকালে কী খেলাম, lunchএ কী খাচ্ছি, ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় খবর।
বিজ্ঞানের অবদান ছাড়া তোমার সাথে আমার ইহজীবনে যোগাযোগ হত না।
আমরা বেঁচে থেকেও মৃত থাকতাম।
তোমার জন্য বাড়ীর কাজ
ছাত্র দুটোর নাম বলতে হবে তোমার।
প্রথম ছাত্রের নাম –
দ্বিতীয় ছাত্রের নাম –
লেখা যারই হোক, লেখা ভাল। এবারের কাহিনীটির বক্তব্য কিছুটা গতানুগতিক, কিন্তু ডিটেইলের জোরে ভাল ভাবে উৎরে গেছে।
লেখক সাধুভাষায় লিখে থাকলে তাঁর উপর খোদকারী না করতে যাওয়াটাই বোধহয় ভাল, আমার মতে। সাধুভাষায় বঙ্কিমের কমেডি গুলোর মত একটা ঢং আসত, সেটাও মন্দ হত না।
আর ইয়ে, মোকছেদ আলী রৌরব-টৌরব এরকম কাউকে নিয়ে কিছু লেখেননি 😉 ? মুক্তমনার কোন কোন সদস্যের প্রতি পক্ষপাতে নিন্দাজ্ঞাপন করছি :no: ।
@রৌরব,
বন্ধুর পরামর্শে লেখার রীতি পরিবর্তন করেছিলাম। পরামর্শ শুনে কি ভুল করলাম? আজকাল তো রবীন্দ্র সঙ্গীতের সুরও পাল্টিয়ে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
যদি পাই তাহলে পোষ্ট করে দেবো। তখন হয়ত অন্যেরা আপনার ভাষায় বলবে- মুক্তমনার কোন কোন সদস্যের প্রতি পক্ষপাতে নিন্দাজ্ঞাপন করছি No ।
ধন্যবাদ।
এমন করে গোছানো গল্প স্বপ্ন হয় কী করে? বিভ্রান্ত/মজা করার জন্য সত্য ঘটনাকে স্বপ্ন বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
পাণ্ডুলিপিটি পড়ার সময় ঘটনাটি সত্যই মনে হচ্ছিল। শেষে গিয়ে বুঝলাম এটা স্বপ্ন। বিভ্রান্ত কিম্বা মজা করার জন্য লেখক ঘটনাকে স্বপ্ন বলে চালিয়ে দিয়েছেন কিনা জানি না। জীবিত থাকলে হয়ত প্রশ্ন করে জেনে নিতাম, কিন্তু ২০০৯ সালের ১৪ ই মে তিনি ইহধাম ত্যাগ করেন। মৃত্যুর আধা ঘন্টা আগে তার কাছে গিয়ে পৌছায়। তার মৃত্যু নিয়ে আমি একটা ছোট নিবন্ধও লিখেছি। কোনো এক সময় হয়ত তা পোষ্ট করে দেবো।
@মাহফুজ, আমার মনে হয় তোমাকে মনে করতে পেরেছি। ১৯৮৮ সাল। অক্টোবর কি নভেম্বর মাসে তোমার সাথে একদিনের আলাপ হয়েছে মাত্র। ঠিক কিনা বল।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
এভাবেই মানুষ অতীত স্মৃতি রোমন্থন করে সুখ দুখ উপলব্ধি করে। অথবা ডায়েরী খুজে বের করতে চায় কাঙ্খিত ব্যক্তি বা ঘটনাকে।
স্যার, যেভাবে ভাবছেন সেভাবে নাও হতে পারে। আবার হতেও পারে।
@মাহফুজ, আমার খুব ভাল লাগছে মাত্র একদিনের পরিচয়; তারপরেও মনে রেখেছ। আমিও কিন্তু তাড়াতাড়িই মনে করতে পেরেছি। যে ব্যক্তিটি এত সুন্দর সুন্দর লেখা উপহা্র দিচ্ছে তাকে যে আমি আগে থেকেই চিনি সেটা আরো ভাল লাগছে।
চাকুরীটা তোমার পছন্দ ছিল না। এখন নিশ্চয় পছন্দের কাজ করছ।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
ভালো থাকবেন নৃপেনদা। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি।
আমার ল্যাপটপটি সমস্যা করছে। পাওয়ার এসেই চলে যায়। আজ যদি আপনি কাছে থাকতেন তাহলে আপনার কাছে নিয়ে যেতাম। আমার বিশ্বাস আছে, আপনার স্পর্শ পেলেই সেটা ঠিক হয়ে যাবে। আপনি হয়ত নিজেও জানেন না যে আপনি একজন অলৌকিক ব্যক্তি।
@মাহফুজ,
স্মরণ (নাকি শ্মরণ) যেহেতু করেছ তাতেই কাজ হবে। দেখ, এতক্ষনে ঠিক হয়ে গেছে হয়তো। জালাল সাহেবের ঘটনাগুলোর কথা বলছ তো? সত্যি অদ্ভূত। তাঁকে একবারও আশাহত হতে হয়নি। ক্যান্সের বিষয়টি ভাব! যেন আল্লাহ মাটিতে এসে আমাকে দিয়ে তাঁর প্রিয় জনকে ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন।
ভিন্ন আর একটি ঘটনা বলি তোমাকে। vending machine থেকে লটারী টিকিট কিনলেন এক আমেরিক্যান – scratch type. কিছুই পেলেন না। পরেরটা আমি কিনলাম। একটা symbol আছে উপরে। নীচে চারটা। মিললেই পুরস্কার। আমি কিছু পাই কিনা তাকিয়ে আছেন। মজার লোক তো! কেউ কারো দিকে তাকিয়ে থাকে?
যেহেতু আমারটা দেখতে চাচ্ছেন, আমি একটু দুষ্টুমী করে বললাম – এই যে দেখ, এইটা মিলছে। ঘষা দিলাম, মিলে গেল। একই কথা বললাম দ্বিতীয় এবং তৃতীয়টার বেলায়। আশ্চর্য, পর পর লেগে গেল। লোকটা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে। আমি এটা কী করে যাচ্ছি পর পর!
আমার উপর তখন দারূণ চাপ। শেষটিও মিলিয়ে দেখাতে হবে। তা না হলে ইজ্জত থাকে না। মজা করার জন্য বললাম – দেখ, এটাও মিলবে। এবং মিলেও গেল। বোঝ, এখন লোকটা কী ভাবতে পারে। নিশ্চয় এটি ভেল্কী বাজি!
হ্যা, এটা জান্তে চাই।
@আরিফ,
আপনি কেন, আমিও জানতে চাই মোকছেদ আলী সম্পর্কে। আর সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। তবে তার চেহারা সুরত পোষাক পরিচ্ছদে তিনি একজন চরম রকমের ধার্মিক ছিলেন বলেই বোধ হয়। কিন্তু তার লেখার মধ্যে অতটা প্রকাশ পায় না।
@মাহফুজ,
মোকসেদ আলী সাহেব বিষয়ে এবং তার সাথে মুক্তমনার সম্পর্কটা একটু বিস্তারিত বলবেন কী। এ বিষয়ে আমি কিছুটা অন্ধকারের মধ্যেই আছি বলে মনে হচ্ছে।
@ফরিদ আহমেদ,
শুনেছি, সবুরে মেওয়া ফলে। আমি নিজেও মোকছেদ আলী সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি। পুরোপুরি জানতে পারিনি। তবে তার লেখালেখির মধ্যে দিয়ে কিছুটা পরিচয় আমিও পাচ্ছি। যে অন্ধকারের কথা বলছেন, এ অন্ধকার একদিন কাটবেই। তবে এতটুকু বুঝতে পারছি, তিনি কখনো আস্তিক, কখনও নাস্তিক। এই ধরনের মানুষকে কী বলা যায়? সংশয়বাদী? নাকি অন্যকিছু? তবে তার লেখার মধ্যেই তার পরিচয় মেলে।
আমিও ভাবিনি এটা একটা স্বপ্ন হতে পারে
ভালো লাগলো। :yes:
অ. টঃ মোট ৬ বার ‘মোসকেত’ লেখা দেখলাম। এটা কি আসলে ‘মোকসেত’ হবে না? নাকি আঞ্চলিকতার প্রভাবে নামের বিকৃতি ঘটেছে?
এ গপ্পোকে ব্যাক্তিগত আক্রমন ধরিয়া মোকছেদ ওরফে মাহফুজ সাহেবের নামে ক্ষতিপূরন মামলা দায়ের কেন করা হইবে না এ মর্মে কারন দর্শাতে নির্দেশ দেওয়া যাইতেছে।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার মন্তব্যে বুঝা যাইতেছে যে, মোকছেদ আলী আর মাহফুজ একই ব্যক্তি। না ভাই এক ব্যক্তি নয়। মোকছেদ আলীর জন্ম ১৯২২ এবং মৃত্যু ২০০৯। আর মাহফুজ এখনও জীবিত।
আর এই গপ্পে ব্যক্তিগত আক্রমণের কি দেখিলেন সেটাই তো মাথায় আসিতেছে না। আর মামলা করিলে অভিজিৎ কিম্বা ফরিদ করিতে পারেন, আপনি এখানে নাক গলাইতেছেন কেন? আপনি কি উকিল? টু পাইস কামানোর ধান্ধায় আছেন তাই না! সে আশা গুড়ে বালি। আমার চাচাও কিন্তু নামকরা উকিল, আপনারে বাজায়া দিতে পারি।
@মাহফুজ,
আপনার সাথে আমার উকিল নোটিস মারফত কথা হইবে। টের পাইবেন কত মন গমে কত মন আটা।
@আদিল মাহমুদ,
ঠিক আছে, সেই অপেক্ষায় থাকলাম। আপাতত বিদায়। টা টা বাই বাই।
@আদিল মাহমুদ,
আমরাও আসছি আদিল ভাই, এট্টু অপেক্ষা করেন। 🙂
তবে জানিয়ে রাখি, মোকছেদ আলী কোনো কাল্পনিক চরিত্র নয়। আমি তাঁর কথা আগেই শুনেছি।
@সৈকত চৌধুরী,
আসেন, তা হলে আমার মামহানির মামলা সাজাতে আরেকটু সুবিধা হয়।
মোকছেদ আলী কি আরজ আলীর চাচাতো ভাই টাই কিছু নাকি???
@আদিল মাহমুদ,
🙂 না। শুনেছি মোকছেদ আলী কিছুটা সংশয়বাদী ছিলেন। পুরোটা শোনার আশা করেছিলাম মাহফুজ সাহেবের কাছে। তিনি এদিকে না গিয়ে বরং অভিজিৎ-ফরিদকে রেলগাড়ীতে করে আকাশে উড়াচ্ছেন!! ফরিদ ………… :-X :lotpot:
স্বশিক্ষিত মোকছেদ আলীর গল্পের চরিত্র একেবারে অভিজিৎ এবং ফরিদ পর্যন্ত চলে গেলো? বড়ই চিন্তার বিষয়। সামনে কি আছে ভবিতব্যই জানে! 🙂
যা হোক, জগদীশদার নাতী অভিজিৎ আর মোকছেদ আলীর মেজ মেয়ের ছোট ছেলে ফরিদকে আমার সালাম আর শুভেচ্ছা। কামনা করি আপনার যেন এমন দিবাস্বপ্ন আর দেখতে না হয়।
@অভিজিৎ,
মোকছেদ আলী আর কখনও স্বপ্ন দেখবেন না। কারণ তিনি প্রয়াত।
আমি স্বপ্ন দেখি মুক্তমনাকে নিয়ে, আর তা রাত্রেই দেখি। মাঝে মাঝে ভাবি, আমার সেই স্বপ্নগুলো লিখে রাখলে কেমন হয়, গল্পের মত করে চালিয়ে দেয়া যাবে মুক্তমনায়।
আমি দিনে ঘুমাই না, সেজন্য দিবাস্বপ্নের প্রশ্নই উঠে না।
তবে মোকছেদ আলীর স্বপ্নের উপর ‘স্বপ্ন কথা’একটা পাণ্ডুলিপি আছে। ভবিষ্যতে কোন এক সময় পোষ্ট করে দেবো।
অভিজিৎ দা,
সমকামিতার নবম অধ্যায় : ধর্মে সমকামিতা, এই অধ্যায়টি পড়তে ইচ্ছে করছে। কিভাবে পাবো এই অংশটুকু, দয়া করে জানাবেন।
😀 😀
মজা পেলাম খুব॥
@আরিফ,
প্রথম যখন গল্পটি পড়া শুরু করি, তখনও ভাবিনি যে এটা একটা স্বপ্ন।
একি! আশ্চর্য ব্যাপার তো, রেলগাড়ী, জেট বিমানের মত আকাশে উড়াল দিল।এখানে আসার আমার সন্দেহ শুরু হয়।
মজা তো আমিও খুব পেয়েছি।
মূল পাণ্ডুলিপিতে এই লেখাটি সাধুরীতিতে লেখা ছিল। আমি চলিত-এর রূপান্তরিত করেছি। স্বশিক্ষিত মোকছেদ আলীর অধিকাংশ লেখাই সাধু ভাষায়। আমার এক বন্ধুর পরামর্শে লেখাটি চলিত-এ করেছি। আমি জানি না এই রূপান্তর অন্যায় কি-না? কারো কোনো পরামর্শ থাকলে জানালে খুশি হবো। -অনুলেখক।
@মাহফুজ,
:lotpot: