তোমার চোখ কি আজ বন্ধ?
তুমি কি তোমার চারপাশের সমাজের
মলে ঢাকা দেহের গন্ধ নাকে পাও না?
তোমার নাঁক, তোমার চোখ কি বন্ধ?
তুমি কি রাস্তায় হেটে যাও চোখে
রঙ্গিন চশ্মার আঁধার নিয়ে, ফুটপাতে
অসহায় চাহনির সেই তথাকথিত
ভারসাম্যহীণ কি তোমার
হৃদয়ে কোন অনুভবের জন্ম দেয় না?
ভাল অথবা হৃদয় নিংড়ানো ব্যাথা?
তুমি নিশ্চয়ি বুঝেছ আমি কি ইঙ্গিত
করছি? না, তুমি বুঝবে
এমন আকাশ পানে উন্মুক্ত মস্তিষ্ক
তোমার নেই।
হ্যা, আমি তোমার চোখটাতে টোকা
দিয়ে খুলব বলে, চোখের আঁধার আলো দ্বারা
পরিষ্কার করব বলে তোমায় বলছি…
তাহলে শোন…তোমার ঐ হৃদয়ে
যতসব নিষ্কম্মের আঁধার লেপন পড়েছে;
তোমার মানবীয় অনুভূতিগুলো সব আজ পাথর চাঁপা।
তোমার চোখে আজ পার্থিব ভোগের রঙ্গিন পর্দা,
চোখ আর কিছুই দেখছেনা/ দেখতে পারছে না আর।
তুমি কি জানো আজ কে করল তোমার
এই সর্বকরূণ দশা?
বলছি,
আর কেউ নয়…
তুমিই
হ্যা, সত্যি, বাস্তবিকই, তুমি।
তুমি তোমার কর্মগুনে এই ফল লাভ করেছ…
তুমি হলে এক ‘সত্যপ্রত্যাক্ষাণকারী’।
কিভাবে?
তাহলে শোন…
তোমার পাশে রাস্তায় যখন ঐ
অসহায় হাটছিল তখন তোমার
হৃদয়ে মায়ার যে পরশ ছুয়েছিল
তা তুমি উপেক্ষা করেছিলে, কারণ…
কারণ আর কিছুই নয়, তুমি ভেবেছিলে
‘ওকে দিলে আমার যে থাকেনা কিছু…’
হ্যা, তোমার পার্থিব সম্পদের প্রতি, আত্মভোগের প্রতি
যে মোহ তুমি লালন করেছিলে তার
কল্যানেই আজ তোমার এ সুকরুণ
অন্ধত্ব।
আজ পথের কোন অসহায়ই তোমার
হৃদয়ে কোন অনুভব তৈরী করে না;
কারণ, আজ তোমার মস্তিষ্ক আর
হৃদয়ে মোহর পড়েছে…আজ
তোমার সর্বাঙ্গে খালি ‘আমিত্ব’,
হ্যা, তোমার চিন্তায়, হৃদয় অনুভবে
আজ শুধুই ‘আমি’,
‘আমি’
আর
‘আমি’।
সেখানে ‘তুমি’ বা ‘সে’র কোন স্থান নেই।
তুমি আমার কথা বিশ্বাস না করলে
নিজেই তোমার হৃদয় পরখ করে
দেখতে পার।
শোন…তোমায় বলি, এভাবে চলে না।
তুমি কি শীতের কালে গরম পেয়ালায়
কিছু চুমুক কখনো দিয়েছো?
দিখেছ, পেয়ালার উষ্ণতা চারপাশের
শীতলতাকে কি পরম আবেশেই না ভালবাসে?
হ্যা, ওরা সবাই সাম্যবাদী, সাম্যই ওদের ধর্ম।
ওরা সবাই এক হতে চায়…
তাই পেয়ালার উষ্ণতা পাশের শীতের মাঝে
আত্মবিলীন হয়ে সাম্য তৈরী করতে চায়,
করে।
তুমি কি শীতল বায়ুকে উষ্ণ স্থানে গমন করতে দেখেছ?
তুমি কি কখনো সাগরের পানে নদীর ছুটে চলা দেখেছ?
তুমি কি কখনো বিরাণ প্রান্তরে সবুজের অভিবাসন দেখেছ?
অথবা, কোন শব্দের চারদিকে ছড়িয়ে যাওয়া?
অথবা, ঝড়নার পানি কলকলিয়ে নিচে পড়া?
অথবা, মেঘমালা হিমালয়ের পানে ছুটে চলা?
হ্যা, আমি কি বলতে চাই তুমি নিশ্চয়ই বুঝেছ…
প্রকৃতির সবাই ছুটেছে সাম্যের পানে, হৃদয়ে
শান্তি পাবে বলে।
আচ্ছা, তুমি তো প্রকৃতির সন্তান, এরই অংশ;
তাই তোমারও এদের মত হওয়া কি বাঞ্চনীয় নয়?
…না হলে তো এঁরাই তোমায় বিলীন করে দেবে।
তুমি বুঝতে পেরেছ আমি কি বলছি?
হ্যা, বলছি, তোমারও সেই গন্তব্য…
‘সাম্য’, চলো ছুটি কল্যাণের
পথে, সাম্যের পানে…
নইলে…নইলে
প্রকৃতি তার সকল উপাদানের
চারিত্রিক বৈশিষ্টের ‘সাম্য’ আনয়নের
জন্যে তোমাকে হয় সাম্যবাদী হতে
বাধ্য করবে, না হয় উপড়ে ফেলবে।
তাই সাবধান!
চলো ছুটি সাম্যের পানে।
যেন জীবনানন্দ আবার ফিরে এসেছেন। :guli:
@সৈকত চৌধুরী,
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ এটা কোন তৈলের পিপা বা আধার জাতীয় কিছু নয় যে এখানে তৈল ঢালতে হবে, আর এখানে তৈলের কোনো চাহিদাও তৈরী হয় নি। তাই জনাবের কাছ থেকে ভবিষ্যতে এরকম দান বা উপহার গ্রহণ করা হবে না অথবা এটাকে আজীবনই নিরুৎসাহিত করা হবে।
তবে মন্তব্যের জন্য জনাবের একটি আকুন্ঠ ধন্যবাদ অবশ্যই প্রাপ্য। :rose2: ( :guli: )
@মুহাইমীন,
মোটেও তেল ঢালা হয়নি। এমনিতেই আমার তেলের অভাব রয়েছে।
আপনার কবিতার আরো কিছু প্রশংসা করার ছিল কিন্তু যদি আবার তাকে তেল মনে করে ফেলে দেন। :-Y
আপনাকে শুভেচ্ছা। :rose2:
@সৈকত চৌধুরী,
:rose2:
“তাই সাবধান!
চলো ছুটি সাম্যের পানে।”
কবিতার বক্তব্য বেশ ভাল । আপনি আরো কিছু কবিতার বই পড়ুন । পড়লে আরো ভালো লেখা আসবে । ধন্যবাদ আপনাকে ।
@আফরোজা আলম,
ধন্যবাদ উৎসাহ দানের জন্যে :rose2:
আসলে আমি কবিতা আমার মর্ম থেকে লিখি। মন যখন চায় কেবল তখনই আমি কলম তুলে নেই। কবিতায় বলা কথা মালা আর বাচনভঙ্গি আমার নিজস্ব, সেখানে অন্যের অনুকরনের চেষ্টা কমই লক্ষনীয়। তাই বলিঃ আমি অন্য কবিতার বই পড়ে কবিতা লিখব এটা যেমন চিন্তা করতে পারি না তেমনি এমন কাজ হবেও হয়তো না। কারণ অন্যের কাছ থেকে ধার করা বিদ্যা আর যাই প্রকাশ করুক অন্তরের সেই অন্তর্নিহিত বিরল অনুভূতিগুলো কখনোই প্রকাশ করতে পারে না। আমার কথা হয়তো আপনি বুঝতে পেরেছেন। আর সবচে বড় কথা আমি কবিতার বই খুব কমই পড়েছি তবে এটুকু স্বীকার করব যে কবিতার বই পড়লে হয়তো কবিদের অভিজ্ঞতাটা আমি ভাগ করে নিতে পারব।
ধন্যবাদ আপনার নিঃস্বার্থ মন্তব্যের জন্য। :rose2: