২৭শে ফেব্রুয়ারিকে স্মরণ করে গতবছরে দেওয়া ছোট একটি নোটকে সামনে নিয়ে আসা হল। এ ছাড়া আগের বছরের ব্যানারটিও সামান্য পরিবর্তন করে নতুনভাবে ব্যানার তৈরি করা হল। মুক্তমনার ব্লগারেরা এই দিনটিকে স্মরণ করে লেখা পাঠাতে পারেন।
২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১।
:line:
২৭শে ফেব্রুয়ারি দিনটির কথা হয়তো অনেকেই ভুলে গেছেন, এতদিনে। এদিনটির একটি আলাদা তাৎপর্য আছে, অন্ততঃ মুক্তমনাদের জন্য তো বটেই। ২০০৪ সালের এই দিনে বহুমাত্রিক এবং প্রথাভাঙ্গা লেখক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে নির্মমভাবে চাপাতি দিয়ে বাংলা একাডেমির বই মেলার পথে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা, যা তাকে পরবর্তিতে প্রলম্বিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। কাজেই ২৭শে ফেব্রুয়ারির একটি আলাদা গুরুত্ব আছে আমাদের কাছে।
দিনটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকাগুলোতে এ নিয়ে কোন লেখা চোখে পড়লো না। পেপার খুলে দেখলাম – সবাই ঈদেমিলাদুন্নবী নিয়েই ব্যস্ত। কেবল দৈনিক সমকালে খুব ছোট করে ছাপা হয়েছে হুমায়ুন আজাদের পুত্র অনন্য আজাদের ‘তিনি যে বাংলাদেশ চেয়েছিলেন’ নামের একটি লেখা। এ ছাড়া আর কোথাও কোন প্রাসঙ্গিক লেখা চোখে পড়লো না।
অনেকেই হয়তো জানেন না যে, মুক্তমনার সাথে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের একটি ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিলো। তিনি তার তার বিখ্যাত ‘ধর্মানুভূতির উপকথা’ নামের প্রবন্ধটি মুক্তমনায় প্রকাশের জন্য পাঠিয়েছিলেন, প্রিন্টেড মিডিয়ায় কোথাও ছাপা হবার আগেই। এ ছাড়াও তার পাক সার জমিন সাদ বাদ উপন্যাসটি সিরজ আকারে দৈনিক ইত্তেফাকে ২০০৩ সালে প্রকাশের সময় মৌলবাদীদের কাছ থেকে যে ক্রমাগত হুমকি ধামকি পাচ্ছিলেন তার কিছু নমুনা পাঠিয়েছিলেন আমাদের মুক্তমনা ফোরামে। তিনি তার কিছু দুর্লভ ছবিও আমাকে পাঠিয়েছিলেন ব্যক্তিগত ইমেইলে। আমি সেগুলো উল্লেখ করে গতবছর হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুদিবসে আমি একটি লেখা লিখেছিলাম – স্মৃতিতে হুমায়ুন আজাদ। আজকের দিনে লেখাটি পুনরায় পড়া যেতে পারে। এ ছাড়াও মুক্তমনায় হুমায়ুন আজাদকে উৎসর্গ করে একটি পাতা রেখে দেয়া হয়েছিলো, আমাদের পুরানো ওয়েব সাইটে, সেটি দেখা যাবে এখান থেকে।
গতকাল রাতে মুক্তমনার তরফ থেকে একটা ব্যানার করার চেষ্টা করলাম, উপরে ব্যানারের জায়গায় দেখা যাচ্ছে বড় আকারে। ছোট করে দিলাম এখানেও –
আমরা কি ২৭শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আজাদ দিবস’ কিংবা ‘মুক্তচিন্তা দিবস’ হিসবে ঘোষণা করে বাংলাদেশে প্রতি বছর যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য দাবী করতে পারি? এ ব্যাপারে পাঠক লেখকদের অভিমত কামনা করছি।
২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০
প্রাসঙ্গিক পোস্ট:
২০০৪ সালের মারচ মাসে নরসিংদি থেকে আমরা ঢাকা গেলাম হুমায়ুন আজাদের উপর বর্বরোচিত হামলাকারিদের বিচারের দাবিতে মিছিল করতে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর বেনারে, খুনি খালেদার ছাত্রদল সেদিন বোমাহামলা করে আমাদের মিছিলে, আর খুনি খালেদার পুলিশ সেদিন লাঠি নিয়ে ঝাপিয়ে পরে আমাদের উপর। শেখ হাসিনা সেদিন খুব মায়াকাননা করেছিল কিনতো আজ সব ভুলে গেছে।
স্যার উনার কবিতায় লিখেছিলেন “জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে”।
স্যারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলতে চাই….”সব কিছু নষ্টদের অধিকারে গেছে কিন্ত আমরা নষ্ট হয়ে যাইনি স্যার”।
মুক্তমনাকে ধন্যবাদ,
আমি “হুমায়ুন আজাদ দিবস” এর পক্ষে। ভাল থাকবেন
আমি হুমায়ুন আজাদ দিবস এর পক্ষে।
মুক্তচিন্তা দিবস এর পক্ষের কথাগুলো ঠিকমতই বুঝতে পারছি কিন্তু আমার মতটা হলো হুমায়ুন আজাদ শুধু মাত্র ব্যাক্তি হুমায়ুন আজাদ বলে আমি মনে করি না। সাইফুল ইসলাম ভাইয়া এখানে এভাবেই বলেছেন,
আর হুমায়ুন আজাদ স্যারের প্রতি শদ্ধা জানাই। :candle:
আমার মনে হচ্ছে ‘মুক্তচিন্তা দিবস’টাই ভাল হবে। আর হুমায়ুন আজাদকে ভুলে যাওয়া এত সহজ নয়। আমি যেমন তাকে ভুলবনা কখনো সেইসাথে আশেপাশের অন্যদেরও উনার কথা বলার চেষ্টা করি (আমি অলরেডি অন্তত ‘নারী’ বইটি পড়ার আগ্রহ তৈরি করতে পেরেছি আমার বন্ধুদের মাঝে, অন্য লেখাতেও অনেকেই আগ্রহী হচ্ছে) তেমনি অন্যরাও আমার মনে হয় একই কাজ করেন বা করবেন হুমায়ুন আজাদের চিন্তা ও কর্মের গুরুত্ব বুঝে। তাই হুমায়ুন আজার হারিয়ে যাবেননা বলেই মনে হয়, হুমায়ুন আজাদের সাথে সাথে অন্যন্য মুক্তচিন্তকদের চিন্তা ও কর্মেরও প্রচার ঘটানো ও আলোচনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে এই দিনটিতে।
হুমায়ুন আজাদের পরিচয় প্রথম পাই আমার বাবা-চাচাদের উনাকে গালাগালির মাঝে(স্বভাবতই তারা অন্য বাঙালির মতই না জেনে না বুঝেই গালাগালি করতেন তাকে, ঠিক যেমনি সাঈদীর কথায় জাহানারা ইমামকে বলতেন “জাহান্নামের ইমাম”) আমিও ভাবতাম এই লোক ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে এ মনে হয় খারাপই। যখন তার উপর আক্রমন হয় তখন দেখলাম দুনিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে এই ঘটনায়!তখন আমি হামলাকারীদের ঘৃণা করলাম এই চিন্তায় যে কেউ তার মত বলতেই পারে, অন্যভাবে ভাবতেই পারে, এজন্য তাকে এভাবে রক্তাক্ত করা কেন? এরপরও উনাকে চিনিনি।
আমার বন্ধু মিথুনের কাছে উনার কথা শুনি খুব মুগ্ধ হয়ে, কারণ সে উনার অনেক বই পড়েছে। তার কাছ থেকে হুমায়ুন আজাদের কিছু প্রবন্ধ পড়লাম, লোকটার চিন্তার ধরণে বিস্মিত হলাম, আমি জানতামই না প্রথাগত অপরিবর্তনীয় জিনিসগুলোকে যে এরকম যৌক্তিকভাবে প্রশ্ন করা যায়।
এরপর একদিন আমি কিনি “নারী” বইটি। বইয়ের ভূমিকে পড়েই শ্রদ্ধায় নত হলাম যখন দেখলাম উনি এদেশের অনেক লেখকদের মত রাতারাতি বই “প্রসব” করেননি, পড়েছেন, জেনেছেন প্রচন্ড অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে জন্মেছে তার “নারী”সহ অন্যান্য সৃষ্টি। এরপর নারী পড়ে তো আমার জীবন বদলেই গেল। বলতে দ্বিধা নেই, তার “নারী” আমাকে “মানুষ” করেছে। এরপর তার উপন্যাসও পড়েছি ২ টি, এই বইমেলায় কিনলাম আরেকটা। তার উপন্যাসগুলো পড়া অনেক কষ্ট, মাথায় প্রচন্ড চাপ দেয়। আর কি বলব আমার দর্শন-চিন্তাভাবনার অনেকটা জুড়ে হুমায়ুন আজাদ।
উনাকে শ্রদ্ধা জানাই। :candle:
অবশ্যই। (Y)
ভুলি নাই সেদিনের কথা ভুলি নাই। যখন শুনি হুমায়ুন আজাদের উপরে এমন বর্বরোচিত হামলা হয়। চোখ ভরে গেছিল জলে। এ দেশে আরো কত রক্ত ঝরবে? আরো কত খুন হবে?
হা-কার করে উঠেছিল মন।
মুক্তচিন্তার বাহক তিনি তাই মুক্তচিন্তা দিবস
এই হোক নাম। বাকী রাজনৈতিক নেতাদের মত নাম নিয়ে টানা হ্যাঁচড়া নাই বা থাকল। তাতে উনার আত্মা শান্তি পাবেনা। হুমায়ুন আজাদের উদ্যেশ্যে :candle:
আমি হুমায়ুন আজাদ দিবস এর পক্ষে। কারণ দুটো-এক হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ করা। দুই তার নাম বেশী প্রচার হলে তার লেখার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে এবং মানুষ সচেতন হবে।
অন্যদিকে মোল্লারাও কিন্তু বলে ইসলাম মানুষকে মুক্তি দেয়-শুধু তাই নয় তারা ভাবে এমন কোন মুক্তি নায় যা ইসলাম দিতে পারেনা। সুতরাং আমি মুক্তচিন্তা দিবস নাম করনের চেয়ে হুমায়ুন আজাদ দিবস নাম করনের পক্ষে।
দিনটি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ মুক্তমনাকে।
আমার একটি প্রস্তাব ছিল, যা আগামী বছরের আগে আবার চিন্তা করতে পারেন বা আজও করা যেতে পারে। অন্য কারো স্বীকৃতির অপেক্ষায় না থেকে আমরা মুক্তমনা থেকে এই দিনটি “হুমায়ুন আজাদ দিবস” হিসেবে পালন শুরু করতে পারি। মুক্তমনার বেশিরভাগের এই দিবসের প্রতি সমর্থন ছিল। সে হিসেবে ডারউইন দিবসে যেমন সকল সদস্যের কাছে লেখা চাওয়া হয়েছিল তেমনি এই দিনে হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে লেখা দিয়ে মুক্তমনার নীড়পাতাকে সাজানো যেতে পারে। বিশাল জ্ঞানগর্ভ লেখা হতে হবে সে কথা নেই। ব্যাক্তি হুমায়ুন আজাদ কিংবা তার বই কিভাবে আপনার উপর প্রভাব রেখেছে সেটা নিয়েই একটি স্মৃতিমূলক লেখাও হতে পারে।
এই দিনে শ্রদ্ধাভরে উনাকে স্মরণ করছি। :candle:
“হুমায়ুন আজাদ দিবস” দিবস হিসাবে নাম করনের জন্য এই নামটিই আমার পছন্দের। তাঁর প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা ।
‘”হুমায়ুন আজাদ দিবস’” এর পক্ষে মত দিলাম।
‘ডারউইন দিবস’ এর ন্যায় ‘হুমায়ুন আজাদ দিবস’ নামকরণের দিকে আমার মন টানে। ডারউইন দিবসে যেমন বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা, র্যালি বের করা হয়। তদ্রুপ হুমায়ুন আজাদ দিবসেও লেখনি নিয়ে আলোচনা এবং র্যালি বের করা হবে। তবে তারিখ নিয়ে মাথা ঘামায় না। হতে পারে জন্মদিনে, কিম্বা মৃত্যু দিনে কিম্বা হতে পারে আজকের ২৭ ফেব্রুয়ারিতে।
(F)
ডঃ আহমদ শরীফের মৃত্যুদিবস চব্বিশে ফেব্রুয়ারি এবং জন্মেও ছিলেন ফেব্রুয়ারি মাসেই।
হুমায়ূন আজাদ স্যারের উপর আঘাত হানে ফেব্রুয়ারি মাসে। শুধু হুমায়ূন আজাদ নয় অন্যান্য মুক্তচিন্তার ধারকদের কথাও চেতনায় এনে আমি মুক্তচিন্তা দিবস নামকরণের পক্ষপাতি।
ভবিষ্যতে মুক্তচিন্তা দিবসের ইতিহাস আলোচনায় স্বাভাবিকভাবেই হুমায়ূন আজাদ স্যারের প্রসঙ্গটি আসবে, যা অন্যান্য অনেক দিবস পালনের বেলায়ও অন্য অনেকের নাম আসে। যেমনঃ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মনে করি ক্লারা জেটকিনের নাম।
সহমত। ..পারি।
স্যারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উনার একটা কবিতা(সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয়) শেয়ার করলাম।
আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।
নষ্টদের দানবমুঠোতে ধরা পড়বে মানবিক
সব সংঘ পরিষদ;-চ’লে যাবে অত্যন্ত-উল্লাসে
চ’লে যাবে এই সমাজ সভ্যতা-সমস্ত-দলিল-
নষ্টদের অধিকারে ধুয়ে মুছে, যে রকম রাষ্ট্র
আর রাষ্ট্রযন্ত্র দিকে দিকে চলে গেছে নষ্টদের
অধিকারে।চ’লে যাবে শহর বন্দর গ্রাম ধানখেত
কালো মেঘ লাল শাড়ি শাদা চাঁদ পাখির পালক
মন্দির মসজিদ গির্জা সিনেগগ নির্জন প্যাগোডা।
অস্ত্র গণতন্ত্র চলে গেছে, জনতাও যাবে;
চাষার সমস্ত স্বপ্ন আস্তাঁকুড়ে ছুঁড়ে একদিন
সাধের সমাজতন্ত্রও নষ্টদের অধিকারে যাবে।
হুমায়ুন আজাদ স্যারের লেখার সাথে আমার পরিচয় ছোটবেলাতেই।উনার লেখা একটা উপন্যাস আমি পেয়েছিলাম জন্মদিনের উপহার হিসেবে; সেটি হলো ‘আব্বুকে মনে পড়ে”।একটু বড় হওয়ার পর যখন ভালোমতো পত্রিকা পড়তে শুরু করি তখন স্যারের আহত হবার সংবাদ আমার মনে দাগ কাটে।এরপর পড়ি “পাক সার জামিন সাদ বাদ”। সত্যি বলতে কি আমার বিশ্বাসের দুর্গে প্রথম আঘাত হানে এই বইটি। এতোদিন পর্যন্ত আমাকে দেখানো হয়েছে ধর্মের সুন্দর দিকগুলো,বইটি পড়ে চোখের সামনে দেখলাম ধর্মের হিংস্র ও ঘৃণ্য রূপ। আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল হুমায়ুন আজাদ স্যারের এই বই। আমাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখানোর জন্য আমি স্যারের প্রতি চিরঋণী।
আমি একটা কথা সবাইকে গর্বের সাথে বলতে পছন্দ করি, সেটা হলো- আমার কাছে হুমায়ুন আজাদ স্যারের কয়েকটি কবিতার বই ছাড়া বাকি সব বই ই আছে।উপন্যাস,প্রবন্ধ,সাক্ষাৎকার-সবই আছে আমার লাইব্রেরিতে। এজন্য আমি খুবই গর্বিত। এ গর্ব মানুষ হুমায়ুন আজাদের জন্য।
হুমায়ুন আজাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। (F)
দিবস হিসেবে নামকরণ করলে আমি বোধহয় ‘হুমায়ুন আজাদ দিবস’ই বেশী পছন্দ করবো। মুক্তচিন্তা দিবস নামটা ঠিক রিলেভেন্ট মনে হচ্ছেনা আমার কাছে; ‘হুমায়ুন আজাদ দিবস’ই বরং অনেক বেশী সোজাসাপ্টা, এক্সপ্লিসিট এবং ঠোঁটকাটা, ঠিক হুমায়ুন আজাদেরই মতো 🙂 ! হুমায়ুন আজাদের আদর্শ চিরজীবি হোক।।
বাংলাদেশে ২৭শে ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে। এই দিনটিতে হুমায়ুন আজাদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
হুময়ুন আজাদ স্যারকে খুব মনে পড়ে। দীর্ঘশ্বাস! 🙁
—
চমৎকার ব্যানার হয়েছে। :yes:
আজাদ নামে অনেক মানুষ আছেন, আর আজাদ শব্দের অর্থ স্বাধীন বা মুক্ত। পাকিস্তানীরা ৪৭ এর ১৪ আগষ্ট আজাদী দিবস পালন করে।
‘আজাদ দিবস’ কিংবা ‘মুক্তচিন্তা দিবস’ নয়, হুমায়ুন আজাদ দিবস চাই।
@আকাশ মালিক, (Y)
@নৃপেন্দ্র সরকার, (Y)
@আকাশ মালিক, সহমত (Y) (Y) (Y)
আমিও শুধু ‘আজাদ দিবসের’ চেয়ে ‘হুমায়ুন আজাদ দিবসের’ পক্ষে। মুক্তচিন্তার জন্য অন্য একটি দিবসের চিন্তা আলাদা ভাবে করা যেতে পারে। মুক্তচিন্তা দিবসটি আন্তর্জাতিক কেন্দ্রিক হলে বেশি গ্রহনযোগ্যতা পাবে।
আমি অবশ্য ‘হুমায়ুন আজাদ দিবস’-এর পক্ষে এবং সেটা হতে পারে ২৭ ফেব্রুয়ারী, বইমেলা থেকে ফেরার পথে মৌলবাদীরা যেদিন তাঁকে রক্তাক্ত করেছিলো।
নাম দিয়ে যেমন কিছুই আসে যায় না তেমনি কিছু কিছু নাম আছে যা সভ্যতার ধারক,বাহক,যেমন চার্লস ডারউইন দিবস।হুমায়ন আজাদ শুধু একটি নাম নয়, হুমায়্ন আজাদ একটি আন্দোলনের নাম, একটি সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক তথা ধর্ম, দশর্ন ও বিজ্ঞান বিষয়ক এক জোতির্ময় আন্দোলনের নাম। যিনি তার নিজের জীবন দিয়ে ১৫ কোটি বাংগালিদের চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন যেখানে মৃত্যুই সত্য সেখানে মিথ্যা ও ভন্ডামী্র সাথে কোনো আপোষ নয়।অন্যদিকে বাংগালি হলো এক মন ভূলা জাতি,তাই হুমায়ন আজাদ “নামটি” আমাদের দেশের ক্ষেত্রে মুক্তকন্ঠ বা মুক্তাচিন্তা থেকে “হুমায়ন আজাদ দিবস” আগামি প্রজন্মের জন্য এক বিশাল তাৎপর্য বহন করে।আর মানবাধিকার নাম নিয়ে আমাদের দেশে মুক্তকন্ঠ,মুক্তচিন্তা,কালের কন্ঠ,জন কন্ঠ, এ রকম শত শত নাম ইতিমধ্যে অনেক ব্যবরিত হয়ে আসছে।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
হুমায়ুন আজাদ দিবস নাম হলে ঠিক এই দিনের ইতিহাসটা বারবার আলোচিত হবে, দিনটি হবে মৌলবাদীদের মুখোশ উম্মোচনের দিন। এ জন্যেই বাংলাদেশে বইমেলায় ২৭ ফেব্রুয়ারিকে হুমায়ুন আজাদ দিবস ঘোষণার দাবীতে লেখক সাহিত্যিক প্রকাশকরা এক র্যালির আয়োজন করেছেন।
হুমায়ূন আজাদের ‘পাক সার জমিন’ পড়েই ওনার লিখার সাথে আমার পরিচয়।
উনি যে একজন অসাধারণ লেখক তাতে কোন সন্দেহ নাই।
আমার মনে হয় মুক্তকন্ঠ অথবা মুক্তচিন্তা নাম করনই ভালো হবে।
আমি ‘আজাদ দিবস’ এর পক্ষে।
টিভিতে হুমায়ুন আজাদের রক্তাক্ত ছবি দেখেই তাঁর সাথে আমার প্রথম পরিচয়। বাসায় “পাক সার জমিন সাদবাদ” ছিল, ছোট ছিলাম দেখে পড়ে আগামাথা কিছু বুঝি নাই। পরে সাম্প্রতিককালে ইবুক হিসেবে বইটা পড়ে আমি তাঁর ভীষণ ভক্ত হয়ে গিয়েছি। কয়েকদিন আগে তাঁর “নারী” বইটা পড়ে অনেক কিছুই নতুন করে ভাবতে শুরু করেছি। একটা ব্লগে তাঁর প্রবচনগুচ্ছ পড়ে আবারও আমি নতুন করে তাঁকে শ্রদ্ধা করা শুরু করলাম। চিন্তা করছি পরীক্ষার পর নীলক্ষেতে গিয়ে তাঁর সবগুলো বই কিনে ফেলব। উনি আসলেই একজন অনন্যসাধারণ মানুষ ছিলেন, আজকের সুশীলদের জঙ্গলে উনার মত একজন স্পষ্টভাষী মানুষের দরকার ছিল।
অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা রইল। “আজাদ দিবস” এর ব্যাপারে আদিল ভাইয়ের সাথে একমত।
আজাদ দিবসের থেকে মনে হয় মুক্তকন্ঠ বা মুক্তচিন্তা দিবস ভাল হবে। আজাদ দিবস হলে শুধু একজন হুমায়ুন আজাদকেই বোঝাবে, মুক্তকণ্ঠ বা মুক্তচিন্তা হলে উনি যে কারনে প্রান দিলেন সে কারনকে বোঝাবে।
@আদিল মাহমুদ,
ঠিক বলেছেন চাচা ( 🙂 )
আমরা মুক্তমনা থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি, ছাব্বিশে মার্চ, ষোলই ডিসেম্বর কিংবা কোন বিখ্যাতজনের জন্মদিন কিংবা কোন বিশেষ উৎসব – যেমন ডারউইন দিবস, নারীদিবস কিংবা যুক্তিবাদী দিবস উপলক্ষে আকর্ষনীয় ব্যানার তৈরি করতে ইচ্ছুক। গ্রাফিক্স জানা মুক্তমনা সদস্যরা যদি মুক্তমনার জন্য ব্যানার বানাতে চান তাহলে ব্যানার বানিয়ে মেইল করে দিতে পারেন – [email protected] এ। ব্যানারের সাইজ – ৯৪৫ বাই ১৭৫ পিক্সেল হতে হবে, এবং ব্যানারে মুক্তমনা শব্দটি উল্লিখিত থাকতে হবে
@অভিজিৎ রায়,
না, হুমায়ুন আজাদকে এতো সহজে জাতি ভুলে যাবে না। ভুলতে পারে না। আপনি শুনে খুশী হবেন যে একুশে টিভি আজ সারাদিন একটি এক্সক্লুসিভ নিউজ পরিবেশন করেছে ড. আজাদের হত্যা প্রচেষ্টা, তাঁকে আঘাতকারীদের বিচার প্রক্রিয়া ও হুমায়ুন আজাদ কবিতা পুরস্কার ২০১০ ইত্যাদির সমন্বয়ে। নিউজটি করেছেন ইটিভির দিপু সিকদার। হুমায়ুন আজাদের স্ত্রী, বড়ো মেয়ে, মৌলি আজাদ ও আমার কিছু বক্তব্য ওই রিপোর্টটির সাথে পরিবেশন করা হয়েছে। আমি ড. আজাদের হত্যা প্রচেষ্টার মদদ দাতাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছি। সাথে সাথে দ্বিধাহীন ভাবে বলেছি, “রাজাকার আলবদর আলশামসদের বিচার করা আর হুমায়ুন আজাদের উপর আঘাতকারীদের বিচার করা একই কথা।” কারণ তিনি সারাজীবন তাদের বিরুদ্ধে সাহসী কলম চালিয়ে গেছেন এবং ড. আজাদের মৃত্যুর জন্যে তারাই দায়ী। রিপোর্টটি নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০টা, ১২টা ও ২টার খবরে বিশেষ গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়েছে।
ওদিকে বইমেলায় ২৭ ফেব্রুয়ারিকে হুমায়ুন আজাদ দিবস ঘোষণার দাবীতে লেখক সাহিত্যিক প্রকাশকরা এক র্যালির আয়োজন করে।
এই বিশেষ দিনে হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ এবং মূল্যবান ব্যানারটি নির্মাণের জন্যে আপনাকে অভিনন্দন।
নোট: আমার লেখা বই “হুমায়ুন আজাদ: রক্তাক্ত কবির মুখ” (সাহিত্য বিকাশ, ২০০৭) এবছরও বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে। আগ্রহীরা বইটি পড়বেন বলে আশা রাখি।
দুইটা লেখা ছেপেছে কালের কণ্ঠ। একটা উপসম্পাদকীয় (উনার মেয়ে অনন্য আজাদের লেখা), অপরটি হামলার ছয়বছর হওয়ার খবর।
অনন্য আজাদ তো হুমায়ুন আজাদের ছেলে। কালের কণ্ঠ গোলমাল পাকায়ে দিসে মনে হয়।
আর ব্যানারটি খুব সুন্দর হয়েছে। এই ধরণের ব্যানার সুন্দর বলতে বাধতেছে, বলা উচিত ব্যানার যা বক্তব্য দিতে চায়, তা খুব ভালোভাবে ফুটে উঠেছে।
@রায়হান আবীর,
ধন্যবাদ রায়হান। আমিও তো অনন্যকে হুমায়ুন আজাদের ছেলে হিসেবেই জানতাম। হুমায়ুন আজাদের মেয়ের নাম স্মিতা আজাদ এবং মৌলি আজাদ। মৌলি আমাদের ব্লগের সদস্য। গতবার তার বাবার মৃত্যুদিবসে একটা লেখাও দিয়েছিলো আমাদের – বাবার জন্য।
@অভিজিৎ দা,
দ্বিতীয় ঝারি খাইয়া আফার নাম উঠায় দিসেন মনে হয় 😛 😛 সমবেদনা।
@রায়হান আবীর,
হ, খালি ঝারির উপ্রেই থাকি 🙁 তোমার আফায় ব্যানার বাইয়াছে, কিন্তু সেইটা আবার কওন যাইবো না। এতে নাকি প্রফেশনালিজম থাকে না। আমি নাদান কামলা মানুষ- এইগুলা বুঝি টুঝি না। মুইছা দিতে কইলে মুছি, রাখতে কইলে রাখি।
সহমত জানাই। আজাদ দিবসের চেয়ে মুক্তচিন্তা দিবসটা শুনতে তাৎপর্যপূর্ণ মনে হচ্ছে।
কালের কণ্ঠ বর্তমানে দ্বিতীয় জনপ্রিয় পত্রিকা (ছাপানোর দিক থেকে এবং তাদের মতে)। ওরা আজকে বেশ বড় রিপোর্ট দিয়েছে ঈদে মিলাদুন্নবী পাতার পাশে 😀 লিংকটা খুজে দিয়ে যাচ্ছি।
@রায়হান আবীর, কালের কন্ঠ প্রথম আলোর মত করপোরেট পত্রিকা হলেও আমার কাছে বেশ প্রগতিশীল মনে হয়। এর আগে বিশ্ব সাহিত্যের কিছু প্রাক্তন নিষিদ্ধ বই নিয়ে একটা সাপ্লিমেন্ট বের করেছিল।