ও কি শুনি, আজানের ধ্বনি?
প্রমাণ করতে চায় তারাই ‘একক মণি’?
ছিঃ কর না ভয়…
ও আযান যে জৌলসহীন;
স্বার্থের সাথে সদ্ভাব করে নিজেকে করিছে ক্ষয়।
যে আযান পারে না করিতে নিঃস্বার্থ, তা কিসের আযান হে?
দেখেছি আযান শুনে নামাজে ছুটিতে- পাশে অসহায় মরে বিবস্ত্রে।
আজি মানুষ নামাজ পড়িছে ভবিষ্যৎ ভোগ-লোভে
জানে না বেহেস্ত হাত ছাড়া হবে তিল লোভ ধারণের ক্ষোভে।
ও কি জানে, যার মনে আজ যাঁগা করিছে তিল পরিমাণ লোভ
রোজ কেয়ামতে বিধাতা বর্ষিবে তারে আসমান সম ক্ষোভ?
মনে আজি যার সমুদ্র অহং, বিরাট ওজন পায়ে
জান্নাত তার সহিবে না ভার…
জান্নাত তো তার-
বিনয় চলন যার গায়ে।
ও কি জানে, হাদিস কোরানে ‘পৃথিবী’ বলিতে বুঝায়েছে ‘ভোগ বিলাস’?
অথচ সে মত্ত সীমাহীন ভোগে, গায়ে তার ঈমানী লেবাস।
ও কি করে জানিবে, ওরে অন্ধ করিছে বিধাতা হায়,
বিধাতার কি দোষ…
ভোগে মত্ত ও যে বরিছে আঁধার স্বেচ্ছায়।
…এ যে অমোঘ আইন…
পথ সৃজিত দু’ধারে সমান
চোখের উপর আলো আঁধার ভাসমান
আমি দুটোরই স্বাদ গ্রহণে ক্ষমতাবান
বিধাতা আলোরে করিছে মহান-
আঁধারেরে অপসৃয়মান;
মেঁকি স্বাচ্ছন্দ্যের আঁধারেরে করিলে গ্রহণ
এ আইনই আমারে সঁপিছে চির-মরণ
অথবা…
কন্টকাকীর্ণ আলোক-কমল করিলে গ্রহণ
ঐ অমোঘ আইনই আমায় দানিছে অমর-কানন
বিধাতার কি দোষ… এ যে তার সৃজীত স্পষ্ট নিদর্শন
আমায় লহিতে সাথে সে উজার করিছে নিজ মন।
সামনে আমার দু’পথই সমান
ভান্ডারে মোর ‘ইচ্ছা’ নামক মহাবাণ;
সম্মুখে মোর স্বাদ গন্ধ দুয়েরই দৃশ্যমান
তবে কেন আমি উপেক্ষিয়া কচুরি ফুল
গ্রহিণু গোলাপ-কানন?
বিধাতার কি দোষ হে
অন্ধত্ব যে আমারই যোগ্য বাহন।
আপনার কবিতার নাম-
‘কেন আঁধার দেখি চোখে’
যে বুদ্ধিমান ডিজাইনার চোখটা সৃষ্টি করেছেন তিনি উত্তর দিচ্ছেন-
খাতামাল্লাহু আ’লা কুলুবিহিম, ওয়ালা ছামঈহিম, ওয়ালা আবসারিহিম– – (সুরা বাকারাহ, আয়াত ৭)
আপনাকে লজ্জা থেকে একটু মুক্তি দিতে চেষ্টা করি।
আমি কবিতার তেমন কিছুই বুঝি না, তাই এড়িয়ে চলি।
তবে আপনার প্রথম লাইন, “ও কি শুনি, আজানের ধ্বনি?”
পড়ে ক্লাস এইটে পড়া কায়কোবাদের আজান কবিতার কথা মনে পড়ল। কয়েক লাইন মনে আছে,
“কে ঐ শোনালো মোরে আজানের ধ্বনি
মর্মে মর্মে সেই সুর বাজিল কি সুমধরুর
আকুল হইল প্রান, নাচিল ধমনী
কে ঐ শোনালো মোরে আজানের ধ্বনি।”
কেহ মন্তব্য করিল না হায়!
আমিতো পড়িয়াছি লজ্জায়।