[এই লেখাটি মূলত WCSF এর মূল পোর্টাল অনুসরণে ইংরেজি থেকে বাংলা করা। লেখাটি প্রথমে মুক্তাঙ্গনে প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকেই হুবহু কপি করে মুক্তমনায় দেয়া হল, মূলত বার্তাটি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে।]

War Crimes Strategy Forum (WCSF) স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠন ও সংগঠনবহির্ভূত কর্মী-সংগঠকদের একটি জোট, যার মূল লক্ষ্য যুদ্ধাপরাধীদের আসন্ন বিচারপ্রক্রিয়াকে সর্বতোভাবে সহায়তা করা, মূলত এ-লক্ষ্যে চালিত নাগরিক উদ্যোগগুলোকে সমন্বিত করার মাধ্যমে। আজ ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধীরা শুধু দেশেই নয়, বিদেশের মাটিতেও সুপ্রতিষ্ঠিত। বিচারপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত ও ব্যর্থ করতে তারাও সংকল্পবদ্ধ, কারণ এটা তাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। এর বিপরীতে আবেগঘন বক্তব্য কিংবা বিবৃতি প্রদানের বাইরে মূল বিচারকার্যকে সরাসরি সহায়তা করতে পারে, তেমন বিষয়গুলোতে আমরা ঠিক কতটুকু তৈরি রয়েছি? কিংবা কতটুকু সমন্বিত আমাদের নাগরিক পর্যায়ের উদ্যোগগুলো? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একটি জটিল ও বিস্তৃত প্রক্রিয়া। আর এটি এমনই একটি প্রক্রিয়া যে এককভাবে কোনো সরকারের পক্ষেই হয়তো এটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা কঠিন, এমনকী হয়তো অসম্ভবও, যদি না এ-কর্মযজ্ঞে নাগরিক পর্যায়ের উদ্যোগগুলো উল্লেখ করার মতো সম্পূরক ভূমিকা পালন না করে। নাগরিক পর্যায়ে উদ্যোগগুলোর সমন্বয়ের উদ্দেশ্য মাথায় রেখে এই বিচারপ্রক্রিয়াকে ঘিরে কিছু মৌলিক বিষয়ে সমমনা সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলাকে এই কোয়ালিশন অত্যন্ত জরুরি মনে করে।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :

সংক্ষেপে এই কোয়ালিশন এর মূল উদ্দেশ্যগুলো হল :

১। যুদ্ধাপরাধ সংশ্লিষ্ট প্রাপ্য তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পর্যালোচনা করা ।
২। যুদ্ধাপরাধ সংশ্লিষ্ট নির্দিষ্ট ইস্যুতে নুতন গবেষণা এবং নুতন তথ্যের খোঁজ করা।
৩। মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে গণমানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা।
৪। দেশি/বিদেশি সমমনা গোত্রের মানুষ/দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা।
৫। দেশি/বিদেশি মিডিয়া ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ/প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা।
৬। বিচারপ্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা এবং
৭। অভিজ্ঞ আইনবিদ প্যানেলের সহায়তায় বিচারের কাজে পরামর্শ প্রদান করা।

কাদের নিয়ে এই কোয়ালিশন?

ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে WCSF আজ উল্লেখযোগ্য পথ পাড়ি দিয়েছে। WCSF-এর মূল শক্তি এর স্বেচ্ছাসেবকেরা, যাঁরা ছড়িয়ে রয়েছেন পৃথিবীর সর্বত্র। এখানে রয়েছেন ছাত্র, শিক্ষক, মানবাধিকার-কর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিকসহ নানা পেশার মানুষ। ১৯৭১-এর সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে স্বজন হারানো মানুষও রয়েছেন এই কোয়ালিশনে। WCSF-এর কর্মযজ্ঞের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে প্রতিদিনই আমাদের সঙ্গে নতুন স্বেচ্ছাসেবক ও সংগঠন যুক্ত হচ্ছেন বা যুক্ত হওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করছেন। এখন পর্যন্ত, স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও, যেসব সংগঠন WCSF-এর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছে, সেগুলো হল : (১) মুক্তাঙ্গন; (২) ক্যাডেট কলেজ ব্লগ (সিসিবি); (৩) সেন্টার ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড রিসার্চ; (৪) জেনোসাইড আর্কাইভ অনলাইন; (৫) নিউজ বাংলা; (৬) ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেক্যুলার বাংলাদেশ এন্ড ট্রায়াল অফ ওয়ার ক্রিমিনাল। উল্লেখিত প্লাটফর্মগুলো ছাড়াও বর্তমানে সম্ভাব্য আরও পাঁচটি প্লাটফর্মের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যেগুলো অচিরেই এই উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হবে বলে আমরা আশা করছি।

এ-পর্যন্ত গৃহীত উদ্যোগসমূহ :

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ প্রকল্প-আকারে (বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন) হাতে নেওয়া হয়েছে। যেমন :

(ক)
মিডিয়া আর্কাইভ, যেখানে যুদ্ধাপরাধের বিচার ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক প্রতিদিনকার পত্রিকার খবর/নিবন্ধ/সাক্ষাৎকার, ব্লগ, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার খবর, ইন্টারনেটে প্রাপ্ত খবর বা চলচ্চিত্র সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার বিষয়ে ঘটনার গতি-প্রকৃতি-অগ্রগতি খুব সহজে একটি পোর্টালের ভেতরেই মনিটর করা এবং সে-অনুযায়ী কর্মপন্থা নির্ধারণ-পরিবর্তন করাই মূলত এই আর্কাইভের উদ্দেশ্য। এ-আর্কাইভটি একটি পূর্ণাঙ্গ সাইট।

(খ)
ই-লাইব্রেরি ‘৭১, যেখানে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ-এর উপর প্রকাশিত দেশি/বিদেশি বই ও জার্নাল থেকে নিবন্ধ এবং দলিলপত্র ডাউনলোডযোগ্য পূর্ণ টেক্সটসহ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হচ্ছে। লাইব্রেরিতে ইতিমধ্যেই শতাধিক ভুক্তি সংযুক্ত করা হয়েছে এবং প্রতিদিনই আরও নতুন নতুন ভুক্তি যোগ করা হচ্ছে। এ-লাইব্রেরির মূল উদ্দেশ্যে : ভৌগোলিক বাধা অতিক্রম করে উন্নততর রেফারেন্স লেখক-পাঠকদের কাছে সহজলভ্য করার মাধ্যমে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের ইতিহাস, যুদ্ধাপরাধ ও বিচারপ্রক্রিয়া বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার পথকে সুগম করা। লাইব্রেরিটি একটি পৃথক পূর্ণাঙ্গ সাইট হিসেবে নির্মিত।

(গ)
WCSF-এর উদ্যোগে শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে ইংরেজিতে একটি পৃথক গ্রুপব্লগ সাইট বর্তমানে নির্মাণাধীন, যা আগামী পক্ষকালের মধ্যেই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া সম্ভব হবে। ব্লগটির মূল উদ্দেশ্য : যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের গতি-প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা, বিচারকার্যকে বিলম্বিত ক্ষতিগ্রস্ত বা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে — এমন বিষয়গুলো নিরীক্ষার আওতায় আনা, বিচারকার্যের বিপক্ষে যে-কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অপপ্রচার বা প্রোপাগান্ডা তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবিলা করা এবং সার্বিকভাবে কর্মপন্থা নির্ধারণ ও জনমত গঠনে ভূমিকা রাখা।

(ঘ)
বিচারকালীন সম্ভাব্য আইনগত বাধাসমূহ সুনির্দিষ্টকরণ ও প্রতিপক্ষের সম্ভাব্য আইনি কৌশল/অবস্থান খণ্ডনের লক্ষ্যে WCSF-এর আওতায় আন্তর্জাতিক আইন, যুদ্ধাপরাধ আইন ও আইনগত প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞ পেশাদারদের একটি প্যানেল ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। এছাড়াও একাধিক সুনির্দিষ্ট যুদ্ধাপরাধীর বিষয়ে (আইনি প্রক্রিয়ায় আমলযোগ্য) তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের কাজে অত্যন্ত অভিজ্ঞ তদন্তকারীদের তত্ত্বাবধানে একটি স্বেচ্ছাসেবক তদন্ত দল বর্তমানে কাজ করছে। প্রচারকার্য কিংবা লবিইং ছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করা যায়, সে-উদ্দেশ্যে সুনির্দিষ্ট ‘তথ্যপত্র’ (বা প্রাথমিক প্রতিবেদন) তৈরির কাজও পাশাপাশি চলছে। বাংলা ও ইংরেজি উইকিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, যুদ্ধাপরাধীদের কার্যকলাপ লিপিবদ্ধ করার জন্য একটি দল কাজ করে যাচ্ছে।

বলা বাহুল্য, WCSF-এর বর্তমান কর্মকাণ্ড বিষয়ে উপরের এ-তালিকাটি সম্পূর্ণ নয়। সব তথ্য ইন্টারনেটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশযোগ্যও নয়। এর বাইরেও আরও কয়েকটি উদ্যোগ বর্তমানে সচল। বাকি উদ্যোগগুলোর কিছু বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন (যেমন : অনুবাদ প্রকল্প) এবং কিছু বিবেচনাধীন (যেমন : সামষ্টিক স্মৃতি প্রকল্প, নাগরিক মীমাংসা-সাধন) পর্যায়ে রয়েছে।

আপনি কীভাবে সাহায্য করতে পারেন?

আপনি যদি মনে করেন, এই অনুচ্ছেদে উল্লেখিত যে-কোনো একটি বিষয়ে আপনি কোনো না কোনোভাবে অবদান রাখতে পারবেন, তাহলে ধরে নেয়া যায় যে আপনার সাহায্য আমাদের প্রয়োজন। যেমন : আপনি সাহায্য করতে পারেন নিজের মূল্যবান সময় দিয়ে। কোনো বিশেষ দক্ষতা (যেমন : প্রকল্প ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, অনুসন্ধানী দক্ষতা, গ্রাফিক্‌স ডিজাইন) থাকলে তা দিয়েও আমাদের সাহায্য করতে পারেন। কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে কারিগরি বা পেশাদার প্রশিক্ষণ/জ্ঞান (যেমন : আইন, হিসাবরক্ষণ, ফরেনসিক আর্কিওলজি, প্রোগ্রামিং, ডাটাবেজ ব্যবস্থাপনা, ওয়েব ডিজাইনিং, কম্পিউটার সিকিউরিটি) থাকলে তা দিয়ে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি গবেষণায় (যেমন : ইতিহাস, আইন, সমাজতত্ত্ব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে) পূর্বতন প্রশিক্ষণ কিংবা অভিজ্ঞতালব্ধ দক্ষতা থাকে, সে-প্রশিক্ষণ/দক্ষতা প্রয়োগ করার মতো আমাদের একাধিক প্রকল্প রয়েছে। আপনি যদি আইনজীবী হন অথবা সাংবাদিক, কূটনীতিক, ইতিহাসবিদ, সমাজতাত্ত্বিক, তাহলেও এমন একাধিক প্রকল্প রয়েছে যেখানে আপনি যুক্ত হয়ে সহায়তা করতে পারেন। আপনি সাহায্য করতে পারেন আপনার পরিচিত মণ্ডলে কোনো বিশেষ যোগাযোগ (যেমন : সরকারে, ট্রাইবুনালে, প্রসিকিউশন টিমে, কোনো বিশেষ সংগঠনে বা মোর্চায়), যার মাধ্যমে এই কোয়ালিশনের কাজে সাহায্য হতে পারে, তেমন যোগাযোগের সেতু তৈরি করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে। লেখার কিংবা সম্পাদনার কাজে দক্ষতা থাকলে সে-সাহায্যও আমাদের দরকার। বাংলা ভাষার বাইরে অন্য কোনো ভাষায় (যেমন : ইংরেজি, উর্দু) দখল থাকলে তাও আমাদের সাহায্যে আসবে। আপনি যদি ভালো বক্তা কিংবা তার্কিক হন (ইংরেজি কিংবা বাংলার যে-কোনো একটিতে), সে-দক্ষতাও আমাদের সাহায্যে আসতে পারে। গণযোগাযোগে, প্রচারে, কিংবা তহবিল সংগ্রহে যদি আপনার পূর্ব-অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা থাকে, তার মাধ্যমেও আমাদের সাহায্য হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত কোনো বিশেষ দলিল, বিশেষ বই, নিবন্ধ কিংবা কোনো বিশেষ তথ্য-প্রমাণের সন্ধান দিয়ে আপনি আমাদের সাহায্য করতে পারেন। কোনো বিশেষ যুদ্ধাপরাধী, ১৯৭১ ও তৎপরবর্তীকালে তার কার্যক্রম এবং সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে কোনো তথ্য দিয়ে আমাদের সাহায্য করতে পারেন। আপনার আত্মীয়, পরিচিত বন্ধুমহলে বর্ষীয়ান প্রজন্মের মানুষদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৯৭১-এ তাঁর বা তাঁদের এলাকার বয়ান লিপিবদ্ধ (খসড়া আকারে লিখে হলেও) করে আপনি আমাদের কাছে পাঠাতে পারেন, যাতে সেগুলোকে সংকলিত করে আমরা ‘সাধারণের চোখ দিয়ে দেখা এবং জানা মুক্তিযুদ্ধকে’ ধরতে পারি অনানুষ্ঠানিক ছায়াচ্ছন্ন ইতিহাসের অংশ হিসেবে, সে-সবকে ডাটাবেজের এলাকাভিত্তিক প্রকোষ্ঠে পাশাপাশি সংরক্ষণ করার মাধ্যমে।

আর অন্য কোনোভাবে সাহায্য না করতে পারলেও অন্তত এই কোয়ালিশনের কর্মকাণ্ডের প্রচারের মাধ্যমে, এখানকার রিসোর্সগুলো ব্যবহারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে, এমনকী আমাদের তহবিলে সাধ্যানুযায়ী অনুদান প্রদানের মাধ্যমেও আপনি একাত্ম হতে পারেন আমাদের এই সামষ্টিক কাজগুলোর সঙ্গে। সাহায্যের প্রস্তাবসহ যোগাযোগের প্রাথমিক ঠিকানা :
wcsf [dot] workgroup at gmail [dot] com

কীভাবে সংশ্লিষ্ট হতে পারেন এই কর্মযজ্ঞে?

স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা পরিচালিত হলেও এই ফোরাম মূলত একটি গ্রুপভিত্তিক, স্তরবিহীন, সমন্বয়নির্ভর ফোরাম। আমাদের কর্ম ও ব্যবস্থাপনা-প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন। স্বেচ্ছাসেবকদের মতামতের ভিত্তিতেই নুতন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় এবং স্বেচ্ছসেবকদের দ্বারাই সেসব পরিচালিত হয়, এখানে চর্চিত সামষ্টিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। তবে প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য থাকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অথবা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংশ্লিষ্ট। WCSF-এর প্রতিটি বিভাগেই প্রচুর স্বেছাসেবকের প্রয়োজন। ঠিক কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আপনি সাহায্য করতে পারেন, সে-বিষয়ে উপরে কিছু ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের মূল পোর্টাল পাতাতেও প্রকল্প এবং টিমগুলোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়া রয়েছে। তারপরও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে বা সিদ্ধান্তগ্রহণে সাহায্য প্রয়োজন হলে সরাসরি WCSF-এর রিক্রুটমেন্ট টিমের কাছে লিখতে পারেন। ঠিকানা : wcsf-recruitment [at] googlegroups [dot] com

ব্যক্তি হিসেবে যুক্ত হতে চাইলে :

আপনি আপনার আগ্রহ, দক্ষতা এবং ক্ষেত্র বুঝে যে-কোনো প্রকল্পে অংশগ্রহণের মাধ্যমে WCSF-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করতে পারেন। আগ্রহীদের জন্য যোগাযোগের ঠিকানা উপরেই দেয়া হয়েছে। তবে এখানে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। কেবলমাত্র যুদ্ধাপরাধী কিংবা তাদের রাজনৈতিক সহচর ছাড়া সম্ভবত এমন কাউকে পাওয়া যাবে না এখন, যিনি যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। মৌখিকভাবে কিংবা নীতিগতভাবে যুদ্ধাপরাধের বিচারের ইস্যুটির যৌক্তিকতা কিংবা এর সঙ্গে একাত্মতা স্বীকার করার মতো মানুষ বহু রয়েছে। তবে সময়ের প্রয়োজনে এখন শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতি সহানুভুতিশীল মানুষের চেয়েও এই ফোরামের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেই সব নিবেদিতপ্রাণ মানুষ, যাঁরা তাঁদের অনুভূতি ও বিশ্বাসকে কাজে পরিণত করতে এবং সে-অনুযায়ী নিজেদের জীবনের হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দিতে প্রস্তুত। প্রস্তুত সামষ্টিক কর্মযজ্ঞের প্রয়োজনে ত্যাগ স্বীকার করতে।

সংগঠন/প্লাটফর্ম হিসেবে যুক্ত হতে চাইলে :

আপনার কোনো সংগঠন, প্রতিষ্ঠান কিংবা প্লাটফর্ম থেকে থাকলে তার মাধ্যমেও আপনি এই কোয়ালিশনের একজন সাংগঠনিক অংশীদার হিসেবে যুক্ত হতে পারেন। যুক্তিসঙ্গত কারণে, সংগঠনকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে অগ্রিম আলোচ্য কিছু পৃথক নীতিগত বিষয় রয়েছে। বিস্তারিত জানতে WCSF-এডমিন ঠিকানায় লিখুন।

সরাসরি বা পূর্ণভাবে জড়িত না হয়েও যেভাবে আমাদের সহযোগিতা করতে পারেন :

আপনি যদি এখনই WCSF-এর কাজের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত না-ও হতে পারেন, তবু আমরা অনুরোধ করব, আপনি WCSF-এর কথা আপনার পরিচিতজনের মধ্যে ছড়িয়ে দিন। সুনির্দিষ্ট কয়েকভাবে আপনি এখনই যুদ্ধাপরাধের বিচার সহায়ক এই উদ্যোগকে সহায়তা করতে পারেন। যেমন :

– এই ব্লগ-পোস্টটিকে ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দিতে পারেন, শেয়ার করার মাধ্যমে।
‌‌
– এই ব্লগ-পোস্ট কিংবা WCSF-এর কার্যক্রম বিষয়ে নিজে একটি লেখা লিখে সেটি ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে।

– ফেসবুকে WCSF-এর একটি পাতা রয়েছে, এই ঠিকানায়। সেখানে আপনি নিজে যুক্ত হয়ে এবং পাশাপাশি নিজের বন্ধুদেরও যুক্ত করার মাধ্যমে আপনার সমর্থন জানাতে পারেন। WCSF-এর জন্য বেশ কিছু প্রোফাইল ব্যাজ রয়েছে। আপনি এই ব্যাজকে আপনার ফেসবুকে প্রোফাইলে কিছুদিন ছবি হিসেবে ব্যবহার করে আপনার বন্ধুদেরও এই উদ্যোগের ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে পারেন। হয়তো তাঁদের মধ্য থেকেও কেউ কেউ WCSF-এ সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুক্ত হতে আগ্রহী হবেন। উল্লেখ নিষ্প্রয়োজন, WCSF-এর বহুমুখী কাজগুলোর সফল বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সকল স্তরের মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।

– আপনার যদি নিজের কোনো ওয়েবসাইট থেকে থাকে, অথবা কোনো ওয়েবসাইটের নির্মাতা/সংগঠকদের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ থাকে, তাহলে WCSF-এর ব্যাজটি সেই ওয়েবসাইটে প্রদর্শনের উদ্যোগ নিতে পারেন আপনি। ব্যাজটির মাধ্যমে উক্ত ওয়েবসাইটের পাঠকরাও WCSF-এর কথা জানতে পারবেন, যাঁদের কেউ কেউ হয়তো কোনো না কোনোভাবে আমাদের উদ্যোগগুলোতে সরাসরি সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও উদ্যোগগুলোর বিষয়ে মানুষের মধ্যে সাধারণ সচেতনতার সৃষ্টি হতে পারে এর ফলে। ওয়েবসাইটে প্রদর্শনযোগ্য ব্যাজটির প্রয়োজনীয় কোড ডাউনলোড করে নেয়া যাবে এই ঠিকানা থেকে।

ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে, ১৯৭১-এ, এই জাতির শ্রেষ্ঠতম গুণাবলির সম্মিলন ও সমন্বয় ঘটেছিল, যার কারণে আমরা এত প্রতিকূলতার মধ্যেও স্বাধীন হতে পেরেছিলাম। একটি পতাকা, একটি ভূখণ্ড, একটি মানচিত্র পেয়েছি; কিন্তু যুদ্ধটা ১৯৭১-এই শেষ হয়ে যায়নি, বাংলার মাটিতে পরাজিত শক্তির রাজনৈতিক সামাজিক অর্থনৈতিক পুনঃপ্রতিষ্ঠা যার সবচাইতে বড় প্রমাণ। মুক্তিযুদ্ধের পেছনে যে-আদর্শগুলো ছিল মূল প্রেরণা, সে-সবের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের পথটিও পাড়ি দেয়া জরুরি। সুতরাং এই মুক্তিযুদ্ধ চলমান। এই যুদ্ধ কোনো সরকারের নয়, এই যুদ্ধ কোনো দলের নয়, গোষ্ঠীর নয়। এই মুক্তিযুদ্ধ আপনার আমার। এই মুক্তিযুদ্ধ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। আমাদের সন্তানদের জন্য।

আসুন, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দল-মত নির্বিশেষে অন্তত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এই ইস্যুতে আমরা সকলে মনে-প্রাণে সক্রিয় হই।