আমার না বলা কিছু কথা।
আকাশ মালিক
(উৎসর্গ, ম্যারিয়া ওয়েলস)
যে কথা বলবো বলে আজ লিখতে বসেছি তা কোন ঘটনাই নয়। তাই কোথায়, কী ভাবে, কোথা হতে, কখন এর শুরু, সঠিক ভাবে বলা যাবেনা। স্মৃতির পাতা তন্নতন্ন করেও খুঁজে পাইনা আমি অবিশ্বাসী হলাম কোন্ দিন থেকে? কোন খনিজ দ্রব্যের সঙ্ঘর্ষের ফলে বিস্ফোরণ, বা বিগ ব্যাং এর মত ঘটনা হলে সময় কাল নির্ধারণ করা যেতো। বেঙ, মাছি বা প্রজাপতিরা কি বুঝতে পারে তারা আগে কী ছিল, ঠিক কোন্ শুভক্ষণে তাদের রূপান্তর ঘটে? ব্যাপারটা বোধ হয় এ রকম কিছু। এ প্রশ্নটি অনেকেই আমাকে করেছেন যে, আমি অবিশ্বাসী হলাম কী ভাবে কোন্ দিন থেকে? ‘কোন্ দিন থেকে’ এ প্রশ্নের যেহেতু সঠিক উত্তর জানা নেই, তাই ‘কী ভাবে অবিশ্বাসী হলাম’ তা’ই বলা ভাল। স্মৃতির পাতার অনেক কিছুই আজ অস্পষ্ট, আর কিছু বিলীন হয়ে গেছে চিরতরে। জীবনে চলার পথে বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা যা কিছু আজও স্পষ্ট দেখতে পাই তা থেকে কুড়িয়ে কুড়িয়ে এনে আজ কিছু ঘটনা বর্ণনা করবো।
একটি রক্ষণশীল ধার্মিক পরিবারে আমার জন্ম। ঠিক কত বয়সে বাবা আমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলেন আজ আর মনে নেই। ছোট বেলা থেকেই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতাম মহা-পরাক্রম, প্রতাপশালী বিরাট শক্তিশালী আল্লাহ একজন সাত আসমানের উপরে বসে আছেন, তিনি আকাশে পাতালে যা কিছু দৃশ্য অদৃশ্য সবকিছুর স্রস্টা, রক্ষক ও নিয়ন্ত্রক। বিশ্বাস করতাম সত্য, কিন্তু তাকে অন্যান্য মানুষের মত, বা যেভাবে মানা উচিৎ সেভাবে কোনদিনই মেনেছি বলে মনে পড়েনা। ছোট বেলায় আল্লাহকে যত গালি দিয়েছি (অবশ্যই মনে মনে) সারা জীবনেও মানুষকে এতো গালি দেইনি। অকথ্য অশ্লীল ভাষায়ও গালি দিয়েছি, এমন কি একদিন পূর্ণিমার চাঁদনী রাতে, ভরা গাঙ্গের জলে নৌকা ভাসিয়ে দিয়ে গলুইয়ের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে প্রস্রাব করেছি, এই আশায় যে আল্লাহ যদি কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়। আল্লাহ কিছুই করেনা। তখন ভাবতাম আল্লাহ তো বিরাট বড় মহান, এই সীমাহীন আকাশ, বিশাল পৃথিবীর দায়িত্ব তার হাতে, তাই আমার মত পিচ্চি বালকের দুষ্টুমিতে তার সাড়া দেয়া ইজ্জতে ধরে, অথবা তিনি আমাকে সুযোগ দেন বা পরীক্ষা করেন। আল্লাহকে এমনিতে বকাবকি করতাম না, এর পেছনে কারণও ছিল। কোন খেলায় বা প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিকে হারাতে না পারার ক্ষোভে, অথবা আমি যা চাই তা না পেলে আল্লাহকে অভিশাপ দিতাম- তুমি বেটা অন্ধ, বোবা, কিছু করতে পারোনা তো মরো না কেন? শবে বরাতের রাতে সারা রাত গাছের দিকে তাকিয়ে কাটিয়েছি, কোন গাছ-বৃক্ষ আল্লাহকে সেজদা করতে দেখলাম না। বড়দেরকে কারণ জিজ্ঞেস করায় বললেন, ‘গাছের সেজদা বড়বড় আউলিয়াগণ ছাড়া কেউ দেখতে পায়না’।
যখন দিন তারিখ ঠিক করা হলো আমার মুসলমানী (Circumcision) হবে, মানত করলাম একটা রোজা রাখবো, রেখেছিও। শাহ পরাণের মাজারে গিয়ে মোমবাতি, আগরবাতি দিলাম, শিন্নী দিলাম, দোয়াও করলাম- ‘আল্লাহ, যে আজম বেটা আমার মুসলমানী করবে তাকে ফেরাও, একটা রোগ দাও, না হয় তাকে মেরে ফেলো, সে যেন আমাদের বাড়িতে আসতে না পারে’। আল্লাহ আমার কথা শুনলেন না, তাই আমি তাকে গালি দিয়েছি।
গ্রামে রাস্তায় চলার পথে প্রশস্ত পরিষ্কার রাস্তা ছেড়ে, বন-বাদাড় জংগলের বাঁকা সংকীর্ণ দুর্গম পথে চলা, আর নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করা আমার একটা নেশা ছিল। কেন ছিল জানিনা। তবে ভাবতাম, নিত্যদিনের পরিচিত সোজা পথে সবাই তো হাটে, অন্য পথে গেলে নতুন কিছু দেখা বা পাওয়া যেতেও পারে। হিজল গাছের মরা শাখার গর্তে দোয়েলের বাচ্চা, বা কালাকচুর পাতায় টুনটুনির বাসা পেলে মন্দ কি? আমাকে বলা হতো, মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে কালণী বুড়ির জঙ্গল দিয়ে কোনদিন যাবেনা কারণ ঐ জঙ্গলের বিশাল উঁচু চৈতা গাছের মাথায় নারায়ণ সিং দানবের বাসা। শুনতে অবশ্যই ভয় লাগে, কিন্তু সত্য কথা বলতে কি ঐ চৈতা গাছের নিকটে আসলেই আমার কেন জানি প্রস্রাবের বেগটা বেড়ে যেতো। আবুল (আমার সহপাটি) বলতো, দেখবে একদিন তোর ওটা পঁচে গলে নিঃশেষ হয়ে যাবে আর খুঁজেও পাবিনা। আমি বলতাম তা হউক, তুই শুধু হুজুরকে বলবিনা আমি পেশাব করে পানি লই নাই। জীবনে ভাল মতে একদিনও অজু করে নামাজ পড়ি নাই। আর রোজা? ঐ একদিনই রেখেছিলাম। তারপর তওবা করেছি আর না। তবে রোজা রেখে বিড়ি যদি খাওয়া যেতো তাহলে হয়তো আরো দু একটা রাখতাম। মাদ্রাসায় মাঝে মাঝে নামজের আজান দিতাম, নামাজ পড়তাম না। আবুলকে একটা বিড়ি ঘুষ দিয়ে বলতাম- তুই আকামত দিবি, আমি মাদ্রাসার পেছনে তেঁতুল গাছের গুড়িতে বসে মনের সুখে বিড়ি টানব। আমার এই বিশ্বস্ত সহপাটি বন্ধু আবুল একদিন আমাকে ভীষণ দুঃখ দিয়ে দিল। আমরা তখন মক্তব পাঞ্জমে (পঞ্চম শ্রেণী) পড়ি। বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারী ছাত্রদেরকে দুই মাস মাদ্রাসায় রেখে পড়ানো হতো। একদম গরুর খোয়াড়ে বন্দী অবস্থা। একদিন ‘তারিখুল ইসলাম’ (ইসলামী ইতিহাস) এর হুজুর বললেন- ‘তিন মাইল দূরে এক গ্রামে বিরাট ওয়াজ মাহফিল আছে আমাদেরকে রাতে সেখানে যেতে হবে’। হুজুর আরো বললেন যে, দেশের সেরা আলেমগণ সেখানে আসবেন। তম্মধ্যে একজন আউলিয়া আসছেন, যাকে একই সাথে দুই জায়গায় অবস্থান করতে লোকে দেখেছে। আবুল বললো সেও কার কাছ থেকে শুনেছে ঐ মৌলানাকে কেউ নাকি একই দিনের একই সময়ে ঢাকায় এবং সিলেটে ওয়াজ করতে দেখেছে। আমি মনে মনে আল্লাহর কাছে একটা লম্বা দোয়া করলাম- ‘হে মাবুদ, আমি যদি ছহি-সালামতে ঐ আউলিয়ার জুতা মুবারক চুরি করতে পারি, কসম তোমার, আমি বিড়ি খাওয়া ছেড়ে দেবো’। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করলেন, কিন্তু আমি বিড়ি ছাড়ি নাই। ফজরের নামাজের আগে জিকির শুরু হলো। সবাই হেলেদুলে চোখ বুঁজে জিকিরে মত্ত। আমার কাজটা সেরে নিতে কোনই অসুবিধা হলোনা। ঐ দিনই জোহরের নামাজের পরে হুজুর আমাকে ডেকে তার রুমে নিলেন। তার চেহারার দিকে তাকিয়ে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। রক্তবর্ন গাল, ঠোঁট কাঁপছে, হাতে একটি এবং পাশে আরো চারটি মুড়ালী বাঁশের কাঁচা পাকা বেত। হুজুর জিজ্ঞেস করলেন- ‘জুতা কই’? আমি বললাম, ‘আসার পথে কাছিম বাড়ির ডরে (গভীর জলের কুয়ো) ফেলে দিয়েছি’। হুজুর জানেন এই ডরের নিচে শুধু বিশালাকারের কাছিমই (কচ্ছপ) নয় আরো ভয়ংকর জন্তুরাও বাস করে। এই ডরে পা রাখার সাহস সাত গ্রামে কারো নেই। সুতরাং জুতা উদ্ধার করা আর সম্ভব নয়। হুজুর আমার গায়ে বেত্রাঘাত করার আগেই আমি ডান হাত বাড়িয়ে দিলাম। তিনি দরজা বন্ধ করে দিলেন। যতটুকু শক্তি তার গায়ে ছিল সব উজাড় করে বেত্রাঘাত শুরু করলেন। আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম। প্রথম চার পাঁচটা বাড়ির পরপর আমি হাতের মুষ্টি শক্ত করে বন্ধ করে আবার খুলে দিয়েছিলাম। এই ট্রিকসটাও শিখেছিলাম আবুলের কাছ থেকে। সে প্রায়ই পড়ার জন্যে পিটুনি খেতো। বলতো, হাতের মুষ্টি শক্ত করে বন্ধ রাখলে হাতে রক্ত চলাচল কম হয়, আঘাত বেশী টের পাওয়া যায়না। একটি বেত আগা থেকে ভেংগে ভেংগে যখন গোড়ায় আসলো হুজুর তখন ক্লান্ত আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না, আমারও মুষ্টি বন্ধ করার শক্তি আর হাতে নেই। তিনি চারটি বেত একসাথে নিয়ে কয়েকটি আঘাত করলেন, আমি আর কিছুই টের পেলাম না। হুজুর বসে পড়লেন, হাত দিয়ে ইশারা করলেন বেড়িয়ে যেতে। এখান থেকে আবুলের সাথে আমার বন্ধুত্বের সমাপ্তি আর হুজুরের শাস্তির প্রতিশোধ নেয়ার শুরু।
দুই মাস মাদ্রাসায় থেকে পড়ার সময় প্রায় শেষ। বৃত্তি পরীক্ষায় যাওয়ার দু দিন আগের কথা। মাটির বেড়া টিনের ছাউনীর মাদ্রাসার দক্ষিণ বেড়া ঘিরে দুটো পেঁপে গাছ ছিল। একটা পাঁকা পেঁপে হুজুরের দৃস্টিতে পড়লো। তিনি একজন ছাত্রকে হুকুম করলেন ফলটি নিয়ে আসতে। এবার আর আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম না। আগের বার আল্লাহ দোয়া কবুল করেছিলেন সত্য, কিন্তু পরে আমাকে শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। ফলটি তৈরী করতে করতে আজানের সময় হয়ে গেলো। টিনের বরতনে (প্লেইট) কাটা পেঁপে রেখে হুজুর নামাজে চলে গেলেন। নামাজ শেষে তার রুমে ফিরে আসলেন। আমি পাশেই টিউব-ওয়েলের (নলকূপ) নিচে বসে টুপি ধোয়ার ভান করছিলাম। বিসমিল্লাহ বলে হুজুর এক টুকরো পেঁপে মুখে দিলেন। পরক্ষণেই থুথু করে বের করে ফেলে দিলেন। একজন ছাত্রকে ডেকে এনে বললেন- ‘দেখতো ফলটা কি পঁচা নাকি, কি যেন একটা গন্ধ লাগে, পাঁকা পেঁপে নুনটা হয় কী করে’? আমি মনে মনে বললাম, খাও বাবাজী খাও, মনের সুখে পেট ভরে খাও, আমার হাতের দাগ এখনও শুকায়নি, তুমি খাও। হুজুরের বেত্রাঘাতে সেদিন মোটেই চোখে জল আসেনি, আমি কেঁদেছি তার বিদায়ের দিনে। আমার অজান্তে মাদ্রাসার ভেতরে গত দুই মাসে একটা ঘটনা ঘটে গেছে যার কিছুই আমি ভালভাবে বুঝতাম না। ছাফেলা আউয়ালে (ষষ্ঠ শ্রেনী) উঠে শুনলাম ঐ হুজুরকে সমকামিতার অভিযোগে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিদায়ের দিন হুজুর গোপনে আমাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন- ‘তুই আমাকে বদ-দোয়া (অভিশাপ) দিয়েছিলে’? আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। কী উত্তর দেবো ভেবে পাইনা। হুজুরের চোখের উপর চোখ ফেলে অপলক নির্বাক নিরুত্তর ঠাই দাঁড়িয়ে আছি। ঐ দিনের কথা মনে পড়লো। হঠাৎ আমার ডান হাতের পাঁচটা আঙ্গুল মুষ্টিবদ্ধ হয়ে গেল আর ঠিক তখনই অঝোরে দু চোখ বেয়ে নেমে আসলো অশ্রুধারা। বুকটা বারবার ফুপিয়ে ফুপিয়ে উঠছিল। দেয়ালে হেলান দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে কাঁপা ভগ্নকণ্ঠে অস্পষ্ট স্বরে বলেছিলাম- ‘হুজুর সেদিন আপনি আমাকে এভাবে না মারলেও পারতেন’।
এ ছিল আমার দশ থেকে বারো বৎসর বয়সের কাহিনি। পরের বৎসর আমার মা মারা যান। আমার জগৎটা যেন উলট পালট হয়ে গেল। পাড়ার ছেলেদের সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে মারবেল খেলতে, ফুটবল খেলতে গিয়ে মাঝে মাঝে ধরা পড়ে হুজুরদের হাতে কত মার খেয়েছি। এখন আর সেদিকে মন যায়না। সেই চঞ্চলতা, দুরন্তপনা ভাব আর নেই। নিজের অজান্তেই শান্ত হয়ে গেলাম। ওদিকে ছাফেলা আউয়াল থেকে ফার্সী ও ছাফেলা দুওম (সপ্তম শ্রেনী) থেকে আরবী গ্রামার শুরু হয়। হুজুররা বলতেন এই দুই বিশেষ জামাতের ছাত্রদের কুত্তার মগজ হওয়া চাই। আসলেই আমাদের পড়ার অবস্থা দেখলে কুকুরও অবাক হতো যে, এই ছাত্রগুলো রাতদিন এত বকবক করে কীভাবে? এ ভাবে আরো চার বছর অতিবাহিত হলো। ৯টি বছর মাদ্রাসার শিক্ষা জীবনে যা পড়লাম, তা শুধুই মৃত্যুর পরে কবরের জীবন নিয়ে। কো্রান হাদীস চষে এতদিনে যা জেনেছি তা এক আরব্য উপন্যাস ছাড়া আর কিছু নয়। তবে ওমর খৈয়্যাম, শেখ সা’দী ও জালালুদ্দীন রুমীর মতো বেশ কয়েকজন বিখ্যাত পার্সীয়ান কবি, সাহিত্যিক দার্শনিক এর লেখা পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। এ মহা বিশ্ব, এ সুন্দর পৃথিবী নিয়ে মাদ্রাসার কোন ভাবনা চিন্তা নেই।
ছোট বেলায় বিশেষ কয়েকটি জিনিস নিয়ে আমি খুবই ভাবতাম। যেমন, জোয়ার ভাটা, সূর্য-গ্রহণ, চন্দ্র-গ্রহণ, চাঁদের বুড়ীর সুতা কাটা, ভুমিকম্প, রংধনু, যাদু-টোনা, জীন-ভুত, ভুতের আগুন, সাপের মন্ত্র আর তাবিজ। এ ছাড়াও মানুষের দাঁত থেকে বাইদানীরা কী ভাবে পোকা বের করে, সিলেটের হাসান মার্কেটের চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে গোড়া কৃমির ঔষধ বিক্রেতা, বালকের গলা কেটে কেমনে জোড়া লাগায়, টিয়া পাখি কী ভাবে ভবিষ্যত বলে দেয় ইত্যাদি জানার তীব্র আগ্রহ আমার সব সময়ই ছিল। মাদ্রাসা থেকে হাইস্কুলে ভর্তি হওয়ার মধ্যবর্তী এক বৎসর অবসর সময়টা এ সমস্ত বিষয়ের সমাধানে, আর স্কুলের ছাত্রদের সাথে আড্ডা দিয়ে কাটিয়েছি। প্রতি বৎসর আষাঢ় জৈষ্ঠ মাসে ঝাঁকে ঝাঁকে বাইদানীরা আমাদের গ্রামে আসতো। সাপ ধরার মন্ত্র শেখার জন্যে এক বাইদানীকে খালা ডাকা শুরু করলাম। মাঝে মাঝে বাড়িবাড়ি গিয়ে তার কাষ্টমার যোগাড় করে দিতাম। প্রথমে অসম্মতি জানালেও নাছোড় ভগ্নীপো’কে শেষ পর্যন্ত খালা বাধ্য হলেন মন্ত্র শেখাতে। এখান থেকে দাঁতের পোকা বের করার পীরাকি, আর ওঝা কী ভাবে সাপের বিষ নামায় তাও শিখলাম। যেহেতু বাইদানী খালা কসম কীড়া দিয়েছিলেন কাউকে না বলতে তাই আজ তা আর বলতে পারলাম না। যাদু-টোনা, জীন-ভুত আর তাবিজ কবজের অলৌকিক বিদ্যা মাদ্রাসায় থাকতেই জেনে নিয়েছিলাম। তাবিজের ভেতরে আল্লাহর নাম লিখে দিলে রোগী যে ফল পায়, শয়তানের নাম লিখলেও একই ফল পায়। আরবীতে লিখলেও যা হয় বাংলায় লিখলেও তা হয়। ভুতগ্রস্থ যুবতীর মাথা থেকে ভুত তাড়িয়েছি, লোহার জিঞ্জিরে বাঁধা যুবকের জীনও বোতলে ভরে গাঙ্গের জলে ভাসিয়ে দিয়েছি, কোন প্রকারের কোরান, পুরাণের একটি বাক্য-আয়াত বা কামরূপ-কামাইখ্যার তন্ত্র মন্ত্রও উচ্চারণ করিনি। মন্ত্রের নামে আরবী, উর্দু, ফার্সী, সংস্কৃত ও বাংলা মিশায়ে যে পঞ্চরূপী ভাষা উচ্চারণ করতাম, তা ছাগলের ভাষার চেয়েও দূর্বোধ্য। এই অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হতে হলে, বিশ্বস্ত একজন সাথী আর বুদ্ধিমান একজন গুপ্তচরই যথেষ্ট।
একদিনের ঘটনা- প্রায় একসপ্তাহ রিহার্সেল দিয়ে অমাবশ্যার এক মেঘলা দুপুর রাতে একজন মহিলাকে আমার বুজুর্গী দেখালাম। মহিলা মুগ্ধ হয়ে শ্রদ্ধা ও ভক্তির নিদর্শন স্বরূপ আমাকে তার গলার স্বর্ণালংকার খুলে দিতে চাইলেন। আমি বিকট গুংগানীর মত শব্দ করে, লম্বা চুলের মাথায় একটা ঝাকুনি তুলে বিরক্তি প্রকাশ করলাম। আমার গুনধর শিষ্য গুংগানী আওয়াজ ও বিরক্তির বাংলা তরজমা করে দিল। বললো, ‘এই দরবেশ খাসিয়া- জৈন্তা পাহাড়ের ফলমূল আহার করে জীবন কাটান, মাছ মাংস ভক্ষন করেন না। তিনি বাংলা জানেন না, কোন প্রকার দান খয়রাত, উপহার গ্রহন করেন না। তিনি দুনিয়ায় শুধু দিতে এসেছেন, নিতে আসেন নি’। মহিলা আমার পা ছুঁয়ে সালাম করতে চাইলেন, আমি পা সরিয়ে নিলাম। তিনি আমার নাভী তক লম্বা শুভ্র দাড়ি আর পিঠ পর্যন্ত দীর্ঘ চুল দেখে কল্পনাই করতে পারেন নি, বিগত কয়দিন আমি আর আমার গুপ্তচর তার কতো কাছে ছিলাম। এই আইডিয়াটা মাথায় ঢুকেছিল, দুই সপ্তাহ পূর্বে ঢাকার জোনাকী সিনেমা হলে শাবানা অভিনীত ‘দস্যু রাণী’ ছবি দেখার পর।
মাদ্রাসায় থাকতে ছুটি পেলে, কিংবা একটু ফুরসত পেলেই প্রতিবেশী পাঠশালা ও হাইস্কুলের ছাত্রদের পড়ার ঘরে যেতাম। মাঝে মাঝে তাদের প্রাইভেট টিউশন- মাস্টারের পাশে চুপ করে বসে তাদের পড়া শুনতাম। কিছুটা তাদের কাছ থেকে শুনে আর কিছুটা তাদের বই থেকে পড়ে জোয়ার ভাটা, সূর্য-গ্রহণ, চন্দ্র-গ্রহণ, চাঁদের বুড়ীর সুতা কাটা, ভুমিকম্প, রংধনু, ভুতের আগুন এসব ব্যাপারে মোটামুটি একটা ধারনা পেয়ে যাই, যার কোন কিছুই মাদ্রাসায় পড়ানো হয়না। সব চেয়ে বেশী আশ্চর্য হয়েছি পৃথিবী গোল জেনে। হাইস্কুলে নবম শ্রেণীতে বিজ্ঞানের স্যার গ্লোবের উপর টর্চলাইট ফেলে দেখালেন কী ভাবে রাত-দিন হয়, কী ভাবে সূর্য- গ্রহণ, চন্দ্র-গ্রহণ, শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুম হয়। পাড়া গাঁয়ের হাইস্কুল, সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ছিলনা। তবুও দশম শ্রেণীতে কেমিস্ট্রী ও ফিজিক্সের স্যারের সাহায্যে অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, হিলিয়াম, কার্বন ডাইওক্সাইড, কার্বন মনক্সাডাইড ইত্যাদির উপর বাস্তব পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল। একদিন স্যার, শুধু মাত্র আগুন ঝরা প্রখর রৌদ্রের ফাল্গুন চৈত্র মাসের সন্ধাবেলা কেন বিলের ধারে ভুতের আগুন দেখা যায়, তাও পরীক্ষা করে দেখালেন। এই বিজ্ঞানের স্যারই একদিন ল্যাবরেটরিতে বসে আলাপকালে বিজ্ঞানীদের নতুন আবিষ্কৃত কোন একটা উপগ্রহের কথা জানাতে গিয়ে বললেন, ‘এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা আল্লাহর সৃষ্টির যা কিছু আবিষ্কার করতে পেরেছেন তা কোরানের মাত্র এক পৃষ্ঠা’। তখনও আমি এ নিয়ে কোন প্রকারের প্রশ্ন করার বা সন্দেহের কারণ বোধ করিনি। আমার মনেই পড়েনি আমিও যে মাদ্রাসায় পড়েছি বা কোরানের অর্থ বুঝি। স্কুলে এসে এতসব বিস্ময়কর নতুন নতুন বস্তুর সাথে পরিচয় হলো, অনেক অজানা সত্য জানা হলো, কিন্তু কোনদিন প্রশ্ন করিনি, মাদ্রাসায় এ সমস্ত কেন পড়ানো হয়না? আসলে স্কুলে এসে আমি জীবনের অন্য একটা রূপ দেখতে পাই। মাদ্রাসার জীবনটাকে ভুলে যাওয়াতেই ছিল যেন আমার সুখ, আমার আনন্দ। খুবই সুখী, বর্ণালী, ও সুন্দরতম দিনগুলো ছিল হাই স্কুলের ঐ ক’টি বছর।
ইংল্যান্ড আসার পর, বছর খানেকের মধ্যে ম্যারিয়া নামের এক সমবয়সী ইংরেজ যুবতীর সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠে। নতুন পরিবেশে, নতুন এক ভিন্নধর্মী জীবনে প্রবেশ করে আমার মনেই হয়নি যে আমি এমন একটি দেশে এসেছি, যে দেশে জন্ম গ্রহন করেছিলেন, William Shakespeare, আর Isaac Newton এর মত মনীষীগণ। Shakespeare আর Newton সম্মন্ধে স্কুলে পড়েছি, এখানে এসে আরো নতুন তিনজন বিজ্ঞানীর নাম শুনলাম, Charles Robert Darwin, Thomas Henry Huxley ও Edmond Halley। আমরা যে এলাকায় থাকতাম, সেখানে, দু একটা বাঙ্গালী পরিবার ছিল তাদের কাউকে কোনদিন ধর্ম-কর্ম করতে দেখিনি। রোজা ঈদের চাঁদ কবে আসে কবে যায় কেউ খোঁজ নিতোনা। বান্ধবী ম্যারিয়া Patrick Moore এর The Sky at Night আর David Attenborough এর উপস্থাপনায় Life on Earth দুটো টিভি সিরিজ দেখার উৎসাহ দেখে বুঝতে পারলেন যে, বিজ্ঞানে আমার আগ্রহ আছে। নিজের পকেট থেকে পয়সা খরছ করে, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের উপর এক গাদা বই নিয়ে আসলেন। বইগুলো পড়তে পারলাম কিন্তু এর অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম না, যদিও ম্যারিয়া মাঝে মাঝে নিজেও ইংরেজী থেকে ইংরেজী তরজমা করে আমাকে বুঝাতে চেষ্টার ত্রুটি করেন নি। একদিন সন্ধায় আমরা বসে টিভিতে Wild Life প্রোগ্রাম দেখছিলাম। একটি হরিণী বাচ্চা প্রসব করবে। নিকটেই ঝোপের আড়ালে বসে কয়েকটি Hyena তা দেখছে। বাচ্চাটি মাটিতে পড়ার সাথে সাথে Hyena রা তার মায়ের চোখের সামনে থেকে বাচ্চাটিকে কেড়ে নিল। মা ফ্যালফ্যাল করে শুধু তাকিয়ে দেখলো, একবার বাচ্চাটিকে ছুঁয়েও দেখতে পারলোনা। আমি ম্যারিয়াকে বলি, ‘এটা অসম্ভব, এ হতেই পারেনা’। ম্যারিয়া অবাক হন। জিজ্ঞেস করেন, ‘ব্যাপার কী’? আমি বিরক্ত চোখে বললাম, ‘ছবির ক্যামেরা ম্যান, প্রডিউসার, ডাইরেক্টর এরা এতো নিষ্ঠুর কেন, বাচ্চাটিকে তারা ইচ্ছে করলে বাঁচাতে পারতো’। ম্যারিয়া শান্তস্বরে বলেন, ‘পরের সিনটায় দেখোনা কী হয়’। ওদিকে Hyena র ক্ষুধার্ত ছোট্ট বাচ্চারা মায়ের পথের পানে চেয়ে আছে। গর্তের বাইরে উঁকিবাকি দিচ্ছে কিন্তু সম্পূর্ণ বেরিয়ে আসছেনা, যদি অন্য কোন জীব তাদেরকে আক্রমন করে বসে। আমার কাছে ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগে। এমন দৃশ্য আমি আগে কোনদিন দেখিনি। কী অবাক কান্ড, এসব হচ্ছেটা কী? প্রত্যেকটা জীব অপর একটি জীবের উপর নির্ভরশীল। একজনের বিলুপ্তিতেই আরেকজনের উৎপত্তি! একজনের মৃত্যুই আরেকজনের বাঁচার উপায়। আমার মাঝে এক অস্থিরতা দেখা দেয়, আমি হতবাক। ম্যারিয়াকে বললাম, ‘বাঘেরা নিষ্ঠুর ভাবে হরিণ শাবক মেরে খাচ্ছে, নতুন জলে আনন্দে উল্লসিত নির্দোষ Salmon Fish ভল্লুকেরা ধরে ধরে খাচ্ছে, আর আমরা মানুষ’? ম্যারিয়া বলেন, ‘আমরাও তাই, আজকের ডিনারে তো Salmon Fish তুমিও খাবে’। আমার অস্বস্তি দেখে ম্যারিয়া তার নারীসুলভ উৎফুল্লতা প্রকাশ করে বললেন, ‘’তোমাকে কিছু আফ্রিকান ট্রাইবদের খাদ্য সংক্রান্ত কিছু ভিডিও চিত্র দেখাবো, দেখবে তাদের ডিনারের লিষ্টে জীবন্ত কীট-পতঙ্গ, টাটকা জীবের রক্ত, আর কুমীর, ইঁদুর, বানর এমনকি সাপও আছে’’। ছবিগুলো দেখে আমার বমি হওয়ার উপক্রম। ম্যারিয়া তার রক্তজবা ঠোঁটে হাসি তোলে বলেন, আমরাও এসেছি ওখান থেকে। আমি একবার শ্যাম বর্ণের আমার দেহ, কৃষ্ণাঙ্গ দেহের ঐ মানুষগুলো, আর একবার শ্বেত বর্ণের ম্যারিয়ার দিকে তাকাই। ম্যারিয়া বলেন, ‘কী ভাবছো’? আমি বলি, ‘কিছু না’।
ম্যারিয়ার হাত ধরে আমার প্রথমে কলেজ তারপর ইউনিভার্সিটিতে আসা। অবিশ্বাসের ধারণাটা মূলত ম্যারিয়ার কাছ থেকে পেয়েছিলাম। তবে শুধু ধারণাই। প্রথমে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল যে, কী ভাবে এত সহজে নির্দ্বিধায় মানুষ বলতে পারে, ‘আমি আল্লাহ বিশ্বাস করিনা’। ম্যারিয়ার অবিশ্বাস আর আমার বিশ্বাসে কার্যত কোন পার্থক্য ছিলনা। যেখানে পাপের বা কোন ঐশ্বরিক শক্তির কাছে জবাবদিহিতার কোন ভয় নেই, সেখানে বিশ্বাস থাকায় আর না থাকায় কী আসে যায়? ইউনিভার্সিটিতে সাবজেক্ট নিলাম, সোসিয়েল সায়েন্স। পরিচয় হলো, Karl Marx, Max Weber, Bertrand Russell এর মত সমাজ বিজ্ঞানীদের লেখার সাথে। ধর্ম বিষয়ে তাদের বক্তব্য বা চিন্তা ধারণার সাথে আগে আমার কোন পরিচয় ছিলনা। আমার মনে প্রশ্ন জাগে, আমি তো কতো আকুতি মিনতি, গালিগালাজ করেও কোনদিন আল্লাহর সাড়া পেলাম না, জগতের সেরা জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জীববিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী মনীষীগনও আল্লাহর কোন সন্ধান পেলেন না, বিষয়টা কী? আমি ভাবতে থাকি, তাহলে আসলেই কি আল্লাহ আছেন? আল্লাহর অস্তিত্বের উপর আমার সন্দেহ জেগে উঠে। তবে আমার বিশ্বাসের প্রদীপ তখনও নিভু নিভু হয়ে জ্বলছিল।
ইউনিভার্সিটিতে আসার দু বছরের মাথায় চোখের সামনে এক আশ্চর্য এবং মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। ২৫ বৎসর বয়সে ম্যারিয়া তার মায়ের মত ক্যান্সারে মারা যান। মৃত্যুর একমাস আগেও (সম্ভবত ১৯৮৫/৮৬ সালে) ম্যারিয়া আমার জন্যে হিলের-ধুমকেতু সংক্রান্ত, সেই সময়ে টিভিতে প্রচারিত সকল সংবাদ ডুকুমেন্টারী, রেকর্ড করে রাখতে ভুলেন নি। সাগর পারে বেঞ্চের উপর বসে আমরা দুজনে হাতে হাত রেখে হিলের-ধুমকেতু আর কোনদিন দেখতে পারবোনা জানতাম, কিন্তু একমাস পরে একসাথে বসে আর কোনদিন পূর্ণিমার চাঁদও দেখতে পারবোনা তা কল্পনাও করিনি। ম্যারিয়ার মত একজন সত্যবাদী, স্পষ্টবাদী, নৈতিক চরিত্রের মানুষ আমি জীবনে খুব কমই দেখেছি।
কয়েক বছর পরের কথা- একদিন রাস্তায় দেখা হলো ঢাকা থেকে আগত চারজন ছাত্রের সাথে, তারা ভাড়াটিয়া ঘর খুঁজছেন। পরের সপ্তাহে কুশলাদি জিজ্ঞেস করতে তাদের বাসায় গিয়ে উপস্থিত হলাম। ঘরটির মালিক একজন ইরাণী ভদ্রলোক। আলাপকালে তাদের টেবিলের উপর রাখা একটি বইয়ের উপর আমার দৃষ্টি পড়লো। ‘‘নির্বাচিত কলাম’’। প্রথম পৃষ্ঠা পড়েই আমি তাদের কাছে আবদার করলাম, বইটি আমাকে ধার দিতে হবে। একজন বললেন, এই লেখিকার বই ভাল লাগলে আরো দু একটা বই আছে আপনি নিতে পারেন। তারা আমাকে তাসলিমা নাসরিনের ‘’নির্বাচিত কলাম’’ ‘’অপর পক্ষ’’ ও ‘’যাবো না কেন যাবো’’ বই তিনটি দিলেন। একটি বইয়ের (সম্ভবত ‘অপর পক্ষ’, বইগুলো এখন আর আমার কাছে নেই) এক জায়গায় এসে আমার চক্ষু স্থির আটকে গেল। তাতে লিখা আছে (বাক্যটা বোধ হয় এ রকমই ছিল) ‘রাস্তার বখাটে ছেলেরা নারীদের দেখে যেমন ‘মাল’ বলে, ইসলামের নবী মুহাম্মদও নারীকে ‘মাল’ বলেছেন’। বইটিতে হাদীসের রেফারেন্স উল্লেখ করা। অন্য একটি জায়গায লেখিকা কোরানের সুরা ও আয়াত নম্বর উল্লেখ করে ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। সংশ্লিষ্ট হাদীস ও কোরানের আয়াত দুটো আমি আগে মাদ্রাসায় থাকতে ওয়াজীনদের মুখ থেকে শুনেছি, নিজেও পড়েছি। সেই বয়সে, তখন মনে করতাম, এটাই নিয়ম, এ ভাবেই হওয়া উচিৎ যেভাবে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল চান, তারা যা বলেন, তাতেই সকল মানুষের ইহকাল ও পরকালের মঙ্গল। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের বাণী ও নির্দেশের উপর সন্দেহ বা প্রশ্ন করা নিজেকে কাফির ঘোষনা দেয়ার শামিল। পরের মাসে ঐ ছাত্রদের একজন সাথী বাংলাদেশ থেকে আসার সময় আমার জন্যে নিয়ে এলেন আরজ আলী মাতুব্বরের ‘’সত্যের সন্ধানে’’ বইটি। সম্পূর্ণ বইটি পড়ে আমি নিশ্চিত হয়ে গেলাম, এতোদিন বৃথাই আমি আল্লাহর সন্ধান করেছি, তার কাছে প্রার্থনা করেছি, তাকে অভিশাপ দিয়েছি, সে তো আসলেই নেই।
এবার আমার মনে প্রশ্ন জাগে, কে সেই ধূর্ত-বাটপার যে সর্বপ্রথম ধর্মের বা আল্লাহর কন্সেপ্ট তৈরী করেছিল? এই ঢাহা মিথ্যা, বিশ্বজুড়ে প্রচার ও বিস্তারই বা হলো কী করে? গ্রীক, মিশরীয় ও পারস্য সভ্যতার আলোয় উদ্ভাসিত পৃথিবীতে, মাত্র দেড়হাজার বছর পূর্বে মুহাম্মদ কী ভাবে এতোবড় প্রতারণা করতে পারলেন, তার সফলতার চাবিকাঠিটা কী? সোজাভাবে উত্তরটা পেয়েছি Karl Marx, আর Bertrand Russell এর কাছে। Capital আর Power, অর্থ এবং শক্তি। জগতের সকল মঙ্গল-অমঙ্গল, ঝগড়া-বিবাদ, ব্যর্থতা-সফলতা, ‘অর্থকে না শক্তিকে কেন্দ্র করে’ এ নিয়ে উইনিভার্সিটিতে টিম ওয়ার্ক বা গ্রুপ ওয়ার্কে তর্ক বিতর্ক করেছি, আমি সব সময়েই অর্থের পক্ষে ছিলাম। প্রমাণটা পেয়েছি মুহাম্মদের ইসলাম বিস্তারের ইতিহাস পর্যালোচনা করে। ঢাকার ছাত্রদের ল্যান্ডলর্ড ইরাণী ভদ্রলোকের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম, আরবেরা (খলিফা আবু বকর (রাঃ), ওমর (রাঃ) ও উসমান (রাঃ) এর শাসনামলে) কি ভাবে পার্সীয়ানদের হাজার বছরের সনাতন কৃষ্টি ধ্বংস করেছিল। তিনি বলেন, শিয়ারা বিশ্বাস করেন, কিয়ামতের দিনে ব্যভিচারিণী আয়েশার (রাঃ) বিচার অবশ্যই হবে। এবার আমি ধর্মের উল্টো পৃষ্ঠা দেখার লক্ষ্যে, লাইব্রেরী আর ইন্টারনেটে অনেক দৌড়াদৌড়ি করে যা পেলাম, তা কারো কাছে বলার মানুষ খুঁজছিলাম। একজনকে পেয়েও গেলাম। একদিন হঠাৎ আমার এই বন্ধু, ‘মুক্তমনা’ ওয়েব সাইটের ঠিকানা দিলেন। এখানে এসে দেখি, একজন নয়, আমার কথা সারা বিশ্বকে শুনানোর জন্যে তারা ব্যবস্থা করে রেখেছেন। সেখানেও পেলাম অনেক অজানা তথ্য। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এলেন বেশ কয়েকজন মুক্তমনা। লিখা হলো একটি বই, ‘যে সত্য বলা হয়নি’। সে বইটি লিখার, আর আমার অবিশ্বাসের সুত্রপাত কী ভাবে হয়েছিল, সেই ‘না বলা কিছু কথা’ আজ বলে দিলাম।
আকাশ মালিক
ফেব্রুয়ারী ২০১০।
আরজ আলী মাতুব্বর, হুমায়ূন আজাদা, তসলিমা পড়লে জীবন নিয়ে অন্য চিন্তা মাথায় আসতে বাধ্য যদি মনের জানালাগুলো ঠিক ভাবে খোলা থাকে
@তানবীরা,
এতদিন পরে খুঁজে খুঁজে লেখাগুলো পড়েছেন তাহলে। কতদিন হলো মুক্তমনায় আপনাকে দেখিনি। পুরাতন ব্লগারগনকে দেখে সত্যি ভাল লাগছে।
@আকাশ মালিক, আপনার “আল্লাহ হাফিজের” দেশের প্রথম পর্বটি পড়েছিলাম খুব সম্ভবত “সাতরং” এ। অনেকদিন অপেক্ষা করেছিলাম পরের পর্বের জন্যে, আর পাইনি। এখানে দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না, পড়ে ফেললাম। আর লেখায় লিঙ্ক ছিলো তাই দেখে ধরে ধরে পড়েই ফেললাম ………… পুরো সন্ধ্যা আপনার লেখা পড়েই গেলো আজ ………… ভাল থাকবেন। মনে রেখেছেন জেনে কৃতজ্ঞ হলাম 😀
আকাশ মালিক ভাই, আপনার পরামর্শের জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আপনি ওভাবে না বললে আজ হয়ত অনেক বিপদেই থাকতাম।
আপনার কথাগুল পড়ে আমার পুর মাদ্রাসা জীবন নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করছে। পুর ১০ বছরের মাদ্রাসা জীবন কিভাবে সংক্ষেপে লিখব বুঝতে পারছি না। দু তিন পৃষ্ঠা লিখে লিখা বন্ধ করে রেখেছি। কারন ছোট করতে গিয়ে অনেক কথা বাদ দিতে হয়েছে দেখে ভাল লাগেনি।
তবে আপনার যাপিত জীবন অনেক বেশী অভিজ্ঞতা আর সচেতনতা সমৃদ্ধ, এবং আপনার বই “যে সত্য বলা হয়নি” আমি সহ আমার অনেক বন্ধুর অবিশ্বাসকে জোড়াল করেছে। এই বইটা নিয়ে আমার একটা মজার ঘটনাও আছে। আমার এক বন্ধু বইয়ের একটা অংশের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ করে প্রমান চাইল, আমি তাকে বোঝালাম যে এসবের প্রমাণ ইতিহাসে আছে। মউদুদি সহ অনেক ইসলামিক লেখক এগুলই পজিটিভ ভাবে বর্ণনা করেছে। লেখক শুধু অপর পিঠটিও দেখিয়েছেন। এর পরও সে বার বার যখন প্রমান চাইল। তাকে বললাম আল্লাহকে যদি প্রমান ছাড়াই বিশ্বাস করতে পারো, এসবও পারা উচিত। প্রমান ছাড়া বিশ্বাস করাতো ধর্মের-ই শিক্ষা!
“যতক্ষণই শ্বাস রয়েছে ততক্ষণই আশ , এই আছেতো এই চলে যায় ঈশ্বরে বিশ্বাস,
ততক্ষণই কলঙ্কভয় মুখে ঝাঁটা’র বাড়ি, যতক্ষণ না সবার সামনে…………”
জয় গোস্বামী’র লাইনগুলো ভুলভাল লিখলাম বোধহয়!
অন্ধ, আকুল বিশ্বাস আপনারতো দেখছি কখনই ছিল না। ভারি অন্যরকম আর মনকাড়া আপনার কাহিনী। বাংলাদেশ’এ বেড়ে ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়ালে খুব সংগত কারনেই ধর্ম ও এসংক্রান্ত সমস্ত কিছুকে দিনে দুবার তুলে আছাড় দিতে ইচ্ছে হবার কথা। তবু এটাও মনে হয় যে ঈশ্বরের নাম ধাম কখনও সম্পুর্ন মুছে ফেলা গেলেও আমি বনাম তুমি’র লড়াইয়ে মানুষ ঠিকই আরো কোন অজুহাত/অবলম্বন খুঁজে নেবে। ঘৃণার আগুনে ধর্মাভিমান, জাত্যাভিমান, জন্মাভিমান….যে কোন ব্র্যান্ডে-র ঘি।
ম্যারিয়া ওয়েলসের কথা পড়ে মন যে কেমন করলো তা মনই জানে। ভাল থাকুন।
আপনার কাহিনী সত্যিই খুব চমকপ্রদ। ম্যারিয়ার জন্য অনেক শ্রদ্ধা। আমার এক মাদ্রাসায় পড়া বন্ধু আছে। ওর বাবা চেয়েছিলো ওকে কোরানে হাফেজ বানাতে। তার বাবার ভয়ে সে এখনো দাড়ি, টুপি নিয়েই চলাফেরা করে, দাড়ি, টুপি নিয়েই সে নিষিদ্ধ পল্লিতে নিয়মিত জাতায়াত করে। সে কবিতা লেখে। তাকে একদিন খুব করে ধরাতে আমাকে সে অনেক কথাই বলে ফেললো যা সে কারো সাথে বলতে পারে না।
তার প্রশ্নগুলো ছিলো এরকম, আচ্ছা আল্লাহ এমন একটা পরীক্ষার ব্যাবস্থা করলেন কেন যেখানে কেউ পাশ আবার কেউ ফেল করবে ? অল্লাতো বলছেন তিনি ফলাফল জানেন, তাহলে এটা কেমন পরীক্ষা ? তাহলে যারা ফেল করছেন তাদের প্রতি কি একটা অবিচার হচ্ছে না ? আমি বলেছিলাম আপনাকে তো বিবেক দেয়া হয়েছে। বন্ধুটি বললো, সবার বিবেক কি সমমানের না ? যদি না হয় তবে তার দায় কার ?
এটা সত্যিই আদ্ভুৎ যে কেউ মাদ্রাসায় পড়েও প্রশ্ন করতে শেখে আবার কেউ বিজ্ঞানে বড় ডিগ্রী নিয়েও তা পারেনা। আপনার মত যারা পেরেছেন তারা সত্যিই অনন্য। আপনাকে সাধুবাদ।
আপনার না বলা কথা পড়লাম । আপনার দেখা যাচ্ছে কাহিনীর ভিতর আবার নানা রকম উপকাহিনী এসে মিশেছে । তবে মাদ্রাসার গল্পে মজা পেয়েছি বেশী । 🙂
আপনার তুলনায় আমার তো তাহলে কোন কাহিনীই নেই । সাদা-মাটা একেবারে, প্রায় গড়ের মাঠ 😀 , মানে বলার মত কিছুই প্রায় নেই । কবে কখন অবিশ্বাস দানা বাঁধে মনে কিছুই দিন তারিখ ধরে বলতে পারব না । আমি কখনই সেরকম ধর্ম-বিশ্বাসী ছিলাম না । জীবনের প্রথম দশ/এগারো বছর বাদে ।
আপনার বই বের হওয়ার অপেক্ষায় রইলাম ।
@নন্দিনী,
অনেকদিন পর সাইটে নিয়মিত হয়েছেন দেখে ভাল লাগছে। আপনিও আপনার ঘটনা কিংবা অভিজ্ঞতা লিখে ফেলুন। মুক্তমনায় আপনার তো একাউণ্ট আছেই ( লগইন তথ্য ভুলে গিয়ে থাকলে ইমেইল করতে পারেন)। কাজেই নিজেই লেখা পোস্ট করে দিতে পারবেন।
আর একটা বিষয় বলে রাখি। লগইন করে মন্তব্য করলে মন্তব্য সরাসরি প্রকাশিত হয়ে যায়। নইলে মডারেটরের এপ্রুভের জন্য পড়ে থাকে। কাজেই লগ ইন করে মন্তব্য করাই ভাল – কারো অনুগ্রহের উপর নির্ভর করতে হয় না। 🙂
@অভিজিৎ,
যাক বাবা বাঁচা গেলো ! লগ-ইন করেই ফেললাম আজ 🙂 ভাবছিলাম কোন এক কালে লগ- ইন ডিটেইলস পেয়েছিলাম হয়ত খোঁজে (এখানে বোধ হয় খুঁজে হবে না, খোঁজে-ই হবে? 🙂 ) পাবো না । শেষ মেশ কষ্টে-সৃষ্টে খোঁজে পেয়ে লগ ইন করতে পেরে মহা আনন্দ হচ্ছে । যেন কি না কি জয় করে ফেলছি ! এখন থেকে আর মডারেটরদের মর্জির উপর নির্ভর করে বসে থাকতে হবে না ।
চেষ্টা করছি নিয়মিত হবার । কোন একটি ‘বিশেষ’ ঘটনা আমার নেই, যার জন্য অবিশ্বাসী হয়েছি । তবে হ্যাঁ, অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার বেশ সমৃদ্ধ-ই আছে বলা যায় । প্রতিনিয়ত-ই এত কিছুর ভিতর দিয়ে যাচ্ছি, এখন না হলেও কখনো পরে হয়ত লিখব ।
@নন্দিনী,
না, এখানে খুঁজেই হবে।
মানে সঠিক বাক্যটি হবে –
কোন এক কালে লগ- ইন ডিটেইলস পেয়েছিলাম, হয়ত খুঁজে পাবো না ।
আবারো পরের লাইনে –
শেষ মেশ কষ্টে-সৃষ্টে খোঁজে পেয়ে লগ ইন করতে পেরে মহা আনন্দ হচ্ছে ।
এখানেও খুঁজে হবে।
তবে লগ ইন করে মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
@নন্দিনী,
আমি মনে করি প্রত্যেকটা মানুষের জীবনই এক একটা কাহিনী। ধর্মান্ধ পুরুষ শাসিত সমাজে একজন অবিশ্বাসী নারীর চলার পথে পুষ্প ছড়ানো থাকবে তা বিশ্বাস করা কঠিন। আমি মনে করি আমার চেয়ে আপনার অভিজ্ঞতা অনেক বেশী। আস্তিকতার পেছনে কোন কারণ না হলেও চলে, কিন্তু নাস্তিকতার পেছনে অবশ্যই কারণ থাকতে হবে। আপনাকে মুক্তমনায় বড্ড মিস করছি। চটপট লিখে ফেলুন, কোন অজুহাত নেই।
@আকাশ মালিক,
কঠিনভাবে একমত ! :yes:
একটা কথা আগের মন্তব্যে বলা হয়নি, একটা ব্যাপারে আপনার সাথে কিছুটা মিল খোঁজে পেলাম। আমিও মাঝে মধ্যেই কোন কারণ ছাড়াই ‘আল্লাহ’ কে গালি দিতাম পরীক্ষা করার জন্য যে আল্লাহ আছেন কি নেই ! প্রথম গালিটা ছিল বেশ ভয়ে ভয়ে দেওয়া, এর পর যখন দেখলাম আল্লার কোন প্রতিক্রিয়াই হচ্ছে না, তখন আস্তে আস্তে সাহস বেড়ে যায় 😀 (অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো আমার গালি ছিল বেশ সুশীল সুশীল ) 🙂
অন্য একটা বিষয় নিয়ে লিখছি এখন, হয়ত আগামী সপ্তাহে লেখাটা দিতে পারব । চেষ্টা করছি এখন থেকে নিয়মিত হবার ।
@নন্দিনী,
খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে !!!!!!!!
কি মুশকিল! সৈকত চৌধুরী, আকাশ মালিক, নন্দিনী – সব এক প্যাটার্ণে লিখা শুরু করে দিলো কেন! 🙂
@অভিজিৎ,
অভিজিৎ দা, আপনার পাগলদের আপনাকেই সামলাতে হবে। প্রয়োজনে পায়ে জিঞ্জির লাগায়েও। তবে একটা কথা আছে, শুধু আমরাই না, আরো অনেক লাইনে আছেন। দেখি একটি তালিকার চেষ্টায় আছি। এ আলোচনা থেকে লাভবান হবেন কিন্তু অগণিত বাঙ্গালী। ঝগড়া করবো আমরা, আর মাঝপথে দূরে থেকে নীরবে নিশ্চুপে অনেকেই নিজেকে সংশোধন করে নিবেন। করুন, অসুবিধা কি, আখেরাতে আমাদেরকে সত্তর গুণ দিতে হবে।। অন্তত আমি তো কয়েকটা বানানে আর কোনদিন ভুল করবোনা- ইনশিল্লাহ।
@আকাশ মালিক, আমি আরজ আলী মাতুব্বরের লেখা পড়েছি। হুমায়ূন আজাদের `আমার অবিশ্বাস’ বইটা একসময় আমার সব জানা আর অজানার মূল গ্রন্থ ছিল। সা’দ উল্লাহর কথা না বললেই নয়। তার লেখা বই তখন অনেক পড়েছি। কোথায় ধর্ম নিয়ে জানা যাবে তার খোঁজে কত না ঘুরেছি। তখনও ইন্টারনেটের সংস্পর্শে আসিনি। মুক্তমনার ঠিকানা আমাকে কেউ বলেও দেয়নি। বাংলা ব্লগ সাইট ঘুরতে ঘুরতে মুক্তমনাকে খুঁজে পেলাম। প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করলো ভবঘুরে। পরে আপনি আকাশ মালিক, আপনাকে খুঁজে পেলাম। বাংলা ভাষায় আপনি ছাড়া আর কেউ ইসলাম নিয়ে এত বড় কাজ আর কেউ করেনি। এ কথা আমি সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি। আপনার এই লেখায় আরজ আলী মাতুব্বর, হুমায়ুন আজাদ আর তাসলিমা নাসরীনের উল্লেখ করাতে এই কথাগুলো মনে হলো। আপনার কাজ তাঁদের থেকে (অতান্ত বিনয়ের সঙ্গে তাদের অবদান স্বীকার করছি) অনেক মহৎ, ব্যাপক, অসাধারণ…
মালিক ভাই এর কাছে এই আব্দার অতীতে কয়েকবার করেছিলাম। বিশেষ করে তার মাদ্রাসার ছাত্রজীবনের অভিজ্ঞতা শোনার খুবই ইচ্ছে ছিল।
মাদ্রাসার ছাত্র নাস্তিকে পরিনত হলেন কিভাবে এ নিয়ে তীব্র কৌতূহল ছিল।
ছোটবেলার কাহিনী গুলি বেশ মজা দিয়েছে। বিশেষ করে খোলা নৌকায় আকাশ পানে জল ত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহর অস্তিত্ব যাচাইএ অভিনবত্ব আছে 🙂 । যদিও ঠিক পরিষ্কার হয়নি যে ঐ বয়সেই ওনার কেন আল্লাহ খোদার উপর অত রাগ বা বিরক্তি আসল। কারন খুব ছোট বয়সেই আল্লাহর উপর রাগ হবার মত কোন কারন দেখলাম না। ঐ বয়সে ধার্মিক পরিবারে জন্মগ্রহন করলে সাধারনত ছেলেপিলে বিরাট আল্লাহভক্তই হয়ে ওঠে।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল ভাই,
আল্লাহর কসম দিয়ে বললেও আমার পরিবারের কেউই বিশ্বাস করবে না আমি নাস্তিক। কিন্তু নাস্তিক যে হয়ে গেছি তা তো সত্য। আমার পরিবারের কেউই কোনদিন তাস হাতে নেন নি, জুয়া খেলেন নি, মদ পান করেন নি, গাঁজা সেবন করেন নি, বিবাহ বহির্ভুত নারী গ্রহন করেন নি, ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটিতে পড়েন নি, নাইটক্লাবে যান নি, (তালিকা অনেক লম্বা হয়ে যাবে) কিন্তু
( আল্লাহ মাফ করতো) আমি এ সবই করেছি। মিথ্যে বলার কি আছে ভাই? সত্যকে লুকিয়ে রাখায় কোন মহত্ত নেই। কেন করেছি তা তো সঠিক জানিনা, হয়তো আমার জিন এর কেরামতি, না হয় আল্লাহর হুকুম বা নিয়তির বিধান। একই পরিবারের সকল তো সমান হয় না, ঐ যে আমরা চার ভাই খুবই ফর্সা রঙের, আর একজন একেবারে কৃষ্ণ কালো।
ছোট বেলার কথা বলছেন? গ্রামের জীবনটাই বোধ হয় আলাদা। যেমন গ্রামের বিচিত্র রূপ তেমন বিচিত্র তার মানুষগুলো। অদ্ভুত সব প্রশ্ন, চিন্তা, কল্পনা কিছু কিছু মানুষের মনে এমনিতেই বোধ হয় জাগে। চিন্তা করলাম (জীবনে প্রথমবার) গাঁজা সেবন করে, সাথে সাথে মাতাল কেন হলাম না। একবন্ধু বললো ডাবের পানি অথবা মিঠা কিছু খেতে হবে। এ জন্যে নিজের উঠোনের ইক্ষু চুরি করে কেউ চিবায়? আমি সেটাও করেছি। দেখেন না, ডারউইনের বাবা একজন ধার্মিক লোক ছিলেন, নবী মুহাম্মদের বংশধর পৌত্তলিক ছিলেন। ঐ যে বললাম, সকল মানুষ তো সমান হয় না। এ ছাড়া আর কোন উত্তর তো আমার জানা নেই।
আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
@আকাশ মালিক,
আপনার লেখার প্রথম প্যারা পড়েই বুঝতে পেরেছিলাম যে আপনার কেইসটা একটু ভিন্ন। কোনরকম বড় কারন ছাড়াই অবিশ্বাসের বীজ আপনার ভেতরে এমনিতেই ছিল। আমার ছোটবেলাতেও মনে আছে অল্প দূয়েকজন এই টাইপ ছিল। আমরা সারা ক্লাস ভক্তিতে গদগদ করলেও তারা কেমন যেন বেদ্বীন টাইপ ছিল। আল্লাহ রসূল নিয়ে হাসাহাসি করত। প্রকাশ্যে উপরের দিকে থুথু ছুড়ত আর আমরা আসমানী গজবের আশংকায় চোখে হাত দিতাম। এদের মাঝে বিজ্ঞান বা ধর্মের বই পড়ে ফাক ধরার কোন ব্যাপার ছিল না। স্রেফ জন্মগত অবিশ্বাসী বলা যায়।
আপনার মাদ্রাসা টূ নাস্তিক সম্বন্ধে আমার আগে একটা বদ্ধমূল ধারনা ছিল যে মাদ্রাসায় কোন বাজে অভিজ্ঞতার পর থেকেই আপনার মনে হয় ধর্মে অরুচি চলে এসেছিল। এখন তো দেখছি ব্যাপার তা নয়। বরং উলটা বলা যায় আপনাকে নিয়েই মাদ্রাসা ওয়ালাদের হাতে হারিকেন অবস্থা হয়েছিল 🙂 ।
আসলে আমার অভিজ্ঞায় আস্তিক টূ নাস্তিক হবার পেছনে আশে পাশের ধার্মিকদের ভন্ডামী, ধর্মের নামে নানান অর্থহীন অমানবিক কালাকানুন, সর্বোপরি বিজ্ঞানের সাথে সঙ্ঘাত এই কারনগুলিই বেশী থাকে।
আপনার সাথে একমত; সত্য কথনে কোন অন্যায় নেই। সত্য গোপনেও কোন কৃতিত্ত্ব নেই। মনে ভক্তিভাব না আসলে গদগদ ভক্তি দেখানোরও কোন মানে নাই।
আপনার কথা প্রসংগে আমার এক বন্ধুর কথা মনে পড়ল। সেও কিছুটা আমার টাইপের। ধর্ম আল্লাহ বিশ্বাস করে তেমন নামাজ রোযা কালাকানুনের ধার ধারে না। তার আশে পাশের বাংগালীরা খুব কৌতূহলের সাথে তার জীবন যাপন লক্ষ্য করে। খুব আগ্রহের সাথে বের করার চেষ্টা করে সে নাইট ক্লাবে যায় কিনা, মদ মেয়ে মানূষের অভ্যাস আছে কিনা এসব। সবার মোটামুটি বধ্যমূল ধারনা যে নামাজ রোযা যখন সে করে না তখন তার অবশ্যই এসব অভ্যাস আছে। বেচারাদের খুবই হতাশ হতে হয় কারন তার এসব কোন অভ্যাসই নেই। দিব্বী সংসারী মানুষ।
আপনার সাহিত্যের হাতের খুব ভক্ত আমি। মাদ্রাসার গল্গগুলি আরো বড় করে কয়েক পর্বে লিখতে পারেন। সবাই খুব মজা পাবে। মাদ্রাসার অন্দরমহল সম্প্ররকেও হ্যান্ডস অন ধারনা হবে।
মন খারাপ করা লেখা আর খুব সিনেমেটিক জীবন আপনার।
আপনার জন্য একটি বিশাল ধন্যবাদ রয়ে গেছে। আপনার “যে সত্য বলা হয় নি’ বইটি থেকে অনেক কিছুই জেনেছি আসলেই। সেটিকে বই হিসেবে ছাপাতে পারলে ভাল হয়তো, কিন্তু এই বই কেউ ছাপাতে রাজী হবেন কিনা সন্দেহ। সেটা না হোক, আমরা ই-বুকটিকেই ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি ব্যক্তিগত উদ্যোগে।
ভাল থাকবেন সবসময়। আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
@স্বাধীন,
আপনাকেও একটি বিশাল থ্যাঙ্কু—————-উ।
হ্যাঁ, এখন পর্যন্ত কেউ ছাপাতে রাজী হয়নি। শুদ্ধস্বরের রশীদ ভাই এর সাথে আলাপ চলছে।
অভিজিৎ দা মুক্তমনায় লিখেন এই খবরে আমি মুক্তমনায় আসলেও এই সাইটে আমি আটকা পড়েছিলাম ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত আপনার লেখা “যে সত্য হয়নি বলা” পড়ে। সত্যি বলতে লেখাটার ৯০ভাগ ছিল আমার কাছে নতুন, যত পড়েছি তত আমার মনে হয়েছে আমি সঠিক পথে আছি। আগেও বলেছি, এরপর থেকে আমি আপনার বিরাট ভক্ত।
আজকের লেখাটা পড়েও আমি সেই প্রথম আমলের আকাশ মালিকের সন্ধান পেলাম, অকপট সত্যভাষী আকাশ মালিক।
আমি নিজে এই ধরণের একটা লেখা লিখতে আগ্রহী, ভাবছি অনেকদিন ধরে, কিন্তু আজকে আপনার লেখা পড়ে মনে হলো ধূর আমি লিখবো ক্যান। আকাশ মালিকেরটাই তো আস্তিক থেকে নাস্তিক হবার একটা চমৎকার ভাষ্য হতে পারে। মূলকাজ তো মানুষকে বোঝানো তাই না।
লেখাটা পড়ে বেশ আবেগঘণ হয়ে গেছি, মন্তব্যটা তাই বেশ উলটা পালটাই হলো। ভালো থাকুন।
লেখাটির কিছু লাইন সেলফ্ পোর্টেট মনে হয়েছে। পোংটা শব্দটা দীর্ঘদিন পর শুনলাম । শেষ কবে শুনেছিলাম ? মনে নেই……… । হুজুররা সমকামিতায় এগিয়ে ! এটা চরম সত্য ! লেখক কে ধন্যবাদ।
১৯৭১,আমি তখন ক্লাস টেন এর ছাত্র।নিয়মিত পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি আর আল্লার কাছে মুক্তিযোদ্বাদের জন্য দোয়া করি। আমাদের পুরো্ পরিবার তখন গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছে, বাসায় আমি আর আমার বাবা। বাবা স্কুলের হেডমাস্টার।স্কুলের পিয়ন হালিম ভাই রান্না করে দেয়।১৫ই জুন ৭১ বেলা তিনটা সোয়া তিনটার কিয়ামত নেমে এল আমাদের এলাকায়।পাকিস্হানি সেনারা আক্রমন করে আমাদের মফস্বল টাউনে। শুরু করে গনহত্যা। মাত্র ঘন্টা দুয়েক, হত্যা করল ২০০র মত মানুষ। এক পর্যায়ে দুজন পাকিস্হানি সৈন্য হামলা করল আমাদের বাসায়। বাসায় তখন আমি একা।আমাকে রুনে আটকে রেখে পুরো বাসায় লুট তারাজ করল।পরে দু পাকি সৈন্য আমাকে ******** করল ( 😥 😥 😥 ) ।পাশের বাসায় থাকত এক দারোগা,তার যুবতী বউ,তার চীৎকার শুনছিলাম যখন তাকে ধর্ষন করা হচ্ছিল।দু ঘন্টা পর সৈন্যরা চলে যায়। পুরো এলাকায় কান্নার রোল। চারিদিকে লাশ আর লাশ।আমার বিশ্বাসের ভিত টলে গেল। পাকি সৈন্যরা নাকি ইসলাম রক্ষা করছে। শুরু করলাম কোরানের অনুবাদ পড়া। থ হয়ে গেলাম, যখন পড়লাম, কোরান যুদ্বের সময় শত্রু পক্ষকে ধর্ষনের অধিকার দিয়েছে (২৩:১-৬)। সেই শুরু… ইসলাম সম্পর্কে ব্যাপক পড়াশুনার পর আজ আমি পুরো নাস্তিক।
@ফরহাদ,
ফরহাদ ভাই, আশা করি এভাবে এক কলাম না লিখে যদি আকাশ মালিকের মতো আপনিও অবিশ্বাসের জীবন বৃত্তান্ত লিখতেন তাহলে মনে হয় আমরা সাধারন পাঠকেরা অনেক বেশী জানতে পারতাম।
“পরে দু পাকি সৈন্য আমাকে ******** করল ( )””””””
ভয়ংকর বিভৎস ভয়ংকর ঘটনা অনুমান হচ্ছে !!!!!!!!
@ফরহাদ ভাই,
আপনি অবশ্যই আপনার ঘটনা গুছিয়ে লিখবেন। মুক্তমনার পক্ষ থেকে আমাদের অনুরোধ। হ্যা একাত্তরের ঘটনা অনেকেরই জীবন বদলে দিয়েছে। আবুল কাশেম তাদের মধ্যে একজন। পঁচিশে মার্চের ইকবাল হলের ঘটনা তার জীবন বদলে দিয়েছিলো। আপনার ঘটনাও নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক, বুঝতে পারছি । এই ঘটনাগুলো ডকুমেন্টেড থাকা প্রয়োজন, আমাদের সবার স্বার্থেই।
কাজেই আপনার কাছ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ লেখা চাইছি। লিখে ফেলুন।
@অভিজিৎ, কথা দিলাম, লিখব।
সামু ব্লগে আমরা কিছু নাস্তিক বন্ধুরা মিলে “নাস্তিক হয়ে ওঠার গল্প নিয়ে সংকলন …..” তৈরী করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ফেসবুকের Atheist Association Of Bangladesh গ্রুপের ডিসকাশন বোর্ডে How I became Atheist শিরোনামে একটা টপিকেও নাস্তিক বন্ধুরা তাদের নিজেদের গল্পগুলো জানিয়ে যাচ্ছে।
এরকম লেখাগুলোকে আমরা এই সাইটটিতে নিয়ে রাখছি (সাইটটি আসলে খসড়া/টেস্টিং অবস্থায় আছে, যে কাজ করে- সে সময় দিতে পারে না)। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত সমস্ত লেখাগুলো একসাথে কম্পাইল করে আমরা শীঘ্রই আমাদের পূর্বঘোষিত (সামু ব্লগে ঘোষিত) ই-বুকটি তৈরী করতে যাচ্ছি। আশা করি, সাইটটিতে এবং ই-বুকটিতে আপনার এই লেখাটা রাখতে আপনি আপত্তি করবেন না।
@নাস্তিকের ধর্মকথা, মুক্তমনায়ও মনে হয় এরকম একটা বই বের করার চিন্তাভাবনা চলছে। আপনার বন্ধুদের এখানে লেখাগুলো পোষ্ট করতে বলতে পারেন।
@পৃথিবী,
অনেকেই মুক্তমনায় লিখে না, ফেসবুকের দু একজন তো কোন ব্লগেই লিখে না (এদেরকে মুক্তমনা বা অন্য ব্লগ প্লাটফর্মে লেখালেখি করার জন্য উৎসাহিত করা হইতেছে)। ই-বুকটা আসলে অনেক আগেই করার কথা ছিল, কিন্তু যার করার কথা ছিল- সে কোনমতেই সময় করে উঠতে পারছিল না। এখন আবার সবাই মিলে চাইপা ধরায়- একটু নড়েচড়ে বসছে।
ঐটা অবশ্যই মুক্তমনাতেও দেয়া হবে; তাইলে “অবিশ্বাসের জবানবন্দী’ ক্যাটেগরিতে এক সাথে অনেকগুলো লেখাও জমা পড়বে।
বই বের করার কথা আমরাও স্বপ্ন আকারে সার্কুলেট করছিলাম- কিন্তু নিশ্চিত জানি সেটা আমাদের সাধ্যে কুলাইবো না। সেটা মুক্তমনার পক্ষে খুবই সম্ভব। মুক্তমনা যদি বই প্রকাশ করে, তবে তো খুবই ভালো হয়- যেকোন ধরণের সহযোগিতার দরকার হলে করতে রাজী আছি।
আর, আমাদের ই-বুকটি বের করা বা আমাদের এইসব বিচ্ছিন্ন উদ্যোগগুলোর সাথে মুক্তমনার উদ্যোগরে কন্ট্রাডিক্টরি মনে করি না (আমি তো মুক্তমনারে নিজের বইলাই মনে করি- যদিও মুক্তমনার চেয়ে সামু ব্লগেই বেশী সময় কাটাই- কারণ নাস্তিকগো লগে খুনসুটি করোনের চাইতে আস্তিকগো লগে ফাইট করোনটা বেশী জরুরী মনে হয়)।
আপনারে ধন্যবাদ। আপনার গপ্পোটা আমরা কোনদিন শুনতে পারবো?
@নাস্তিকের ধর্মকথা, খাড়ান, আগে ম্যাট্রিকটা দিয়া লই।
তয় আমার গপ্পো কিন্তু খুবই ছোট, কারণ আমার যাপিত জীবনও বেশ ছোট 😀
দারুন …..
দুটো অধ্যায়, দুইরকম স্বাদ পেলাম। আপনার ছোটবেলার মাদ্রাসার জীবন-যাপন পড়তেও ভালো লগছিল- মজা পাচ্ছিলাম (আপনি তো মেলা পোংটা টাইপের ছিলেন!!); কিন্তু প্রবাস জীবনের কাহিনী শুরু হওয়ার পরে বলতে গেলে দমবন্ধ করে মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়ে গেলাম- অসাধারণ বললে কম বলা হবে।
সাধারণতা এইধরণের লেখাগুলো পড়লে একরকমের স্মৃতিকাতরতা এসে ভর করে, এবারো ভর করেছে- তবে আপনার এই লেখার পুরোটা জুড়ে কেমন একটা বিষন্নতার আবহ আছে, মনটা একটু খারাপ হয়ে যায়। ম্যারিয়া ওয়েলসের জন্যই কি? জানি না। ম্যারিয়ার জন্য শ্রদ্ধা। তাঁকে নিয়ে আরো লিখবেন কি?
@নাস্তিকের ধর্মকথা,
হ্যাঁ, তারই জন্যে। একারণেই বিস্তারিত কিছু লিখি নাই। জীবনে প্রথম প্রেমের, প্রথম নারীর সাথে, প্রথম রাত্রীযাপন যাদের জীবনে এসেছে, আমি নিশ্চিত বলতে পারি তারা জানেন, সে রাত জীবনে একবারই আসে। সে রাতে অনেকেই কামনা করেন- ‘রজনী তুই হইসনারে প্রভাত’।
সব চেয়ে বড় বিষ্ময় তার সততা আর মমতা। শত দুঃখ কষ্টেও কোনদিন মিথ্যার আশ্রয় নেন নি। একজন বৃদ্ধ লোক (সম্ভবত এর আগে কোনদিন কার্ড ব্যবহার করেন নি) ক্যাশ মেশিন থেকে ১০০পাউন্ড তুলতে গিয়ে বুঝতে পারেন নি যে, তার টাকা বেরিয়ে এসেছে। তিনি বেমালুম টাকা না নিয়েই চলে গেলেন। আমরা তার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। লক্ষ্য করলাম ক্যাশ বক্সে টাকা পড়ে আছে। ম্যারিয়ার দৌড় কে দেখে, মিনিট খানেক পরে হাপাতে হাপাতে এসে বললেন, ‘ভদ্র লোককে পেলাম না’। ব্যাঙ্ক কাউন্টারে টাকা দিয়ে ঐ লোকের নাম ঠিকানা যোগাড় করে তার টাকা ফেরত দেয়ার তাগিদ দিয়ে যখন ফিরে আসলেন তখন লাইনে কমপক্ষে ২০জন মানুষ খাড়া। ম্যারিয়া সকলের পেছনেই দাঁড়ালেন।
রাতের পার্ট-টাইম শিফটে কাজ থেকে একাএকা আসার পথে, মুষলধারে বৃষ্টিপড়া রাতে আমার গাড়ি ব্রেইকডাউন হলো, বাসা থেকে তিন মাইল দূরে এমন একটি যায়গায়, যেখানে ভুত না থাকুক জীব জন্তুর ভয় আছে। অদূরে পেট্রোল স্টেশন থেকে ফোন করে ম্যারিয়াকে দেরী হওয়ার কারণ জানালাম। মোবাইল ফোন তখনও হয়তো আবিষ্কার হয়নি। আধা ঘণ্টার মধ্যে এই অন্ধকার রাতে প্যাডেলবাইকে চড়ে, ভেজা কাপড়ে ম্যারিয়া এসে আমার পেছনে দাঁড়াবেন, তা শুধু কল্পনাই করা সম্ভব।
না। যেই মাত্র আপনার এই বাক্যটি পড়েছি, আপনা থেকেই চোখে জল এসেছে।
অবশ্যই না। তবে বানানগুলো একবার দেখে নিবেন। পূর্ণ লেখা চাইলে ঠিকানা দেবেন আপনাকে পাঠিয়ে দেবো।
@ তানভী,
হাজীরা যেমন সাফা-মারওয়া পাহাড়ে ৭ চক্কর দেন, আমার অনন্তও (অনন্ত বিজয় দাশ) টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, ঢাকা থেকে কলকাতা হৈন্য হয়ে দৌড়াচ্ছে কোন কুল-কিনারা করতে পারছেনা। কোন্ প্রকাশকের এমন দায় পড়েছে ক্ষুরধার দুমুখো কুড়াল গলায় বেঁধে দৌড়াদৌ্ড়ি করে। তবুও অনন্ত শত ব্যস্ততার মাঝেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
@আকাশ মালিক,
আমার মনে হয় শুদ্ধস্বরের রশীদ ভাই এই ধরণের বই প্রকাশে আগ্রহী। তারসাথে কী একবার কথা হয়েছে?
@আকাশ মালিক,
জীবনে প্রথম প্রেমের, প্রথম নারীর সাথে, প্রথম রাত্রীযাপন যাদের জীবনে এসেছে, আমি নিশ্চিত বলতে পারি তারা জানেন, সে রাত জীবনে একবারই আসে। সে রাতে অনেকেই কামনা করেন- ‘রজনী তুই হইসনারে প্রভাত’। 🙂 :rose2:
ভাইজান, হাঁ, জীবনে একবার এসেছিল।আহারে ঐ রকম রাত যদি বারবার জীবনে আসত।লতার গানের সুরে “প্রেম একবার এসেছিল জীবনে——–আমার দুয়ার প্রান্তে———–
http://www.youtube.com/watch?v=9UC0KaeoIMU
এ তো এক বিশাল কাহিনি!!!!!!
দারুন!! অবিশ্বাস্য রকম দারুন!! সে তুলনায় আমার কোন ঘটনাই নেই(আসলে আমার যে শর্টটার্ম মেমরি তাতে ঘটনা কিছু ঘটে থাকলেও মনে নাই!!! তবে আপনার মত এত ঘটনা অবশ্যই নাই।)
খুব ভালো লাগল। তবে এখনো আমার কেন জানি তসলিমা নাসরিনের বই পড়া হয়ে উঠছে না, সময় করে পড়ে নিতে হবে।
আর আপনার বইটার খবর কি? এবারই বের হয়ে গেলে অনেক পাবলিককে ঐটা দিয়া সাইজ করা যাবে (অবশ্য আরজ আলি দিয়ে যারা সাইজ হয় না, তাদের জন্য আর কিছুই যথেষ্ট না।)
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি আকাশ মালিককে এরকম একটি লেখা মুক্তমনার জন্য লেখার জন্য। সৈকত বলছিলো লেখা প্রকাশের সময় ক্যাটাগরি হিসেবে “অবিশ্বাসের জবানবন্দী“টা নির্বাচন করতে। সেটা এডমিনের তরফ থেকে করে দেয়া হয়েছে। মুক্তমনার কারণে তিনি যে কথা বলার মতো লোকজন খুঁজে পেয়েছেন, তাতে আমরা সত্যই আনন্দিত।
এবারে, বানান নিয়ে যখন কথা চলছেই, তখন ‘ডেভিলস এডভোকেট’ হিসেবে কিছু মতামত দেই। আশা করি আকাশ মালিক কিংবা সৈকত কেউ কিছু মনে করবেন না। আর মনে করলে ধরে নেবেন সাইটের মানের স্বার্থে আমরা নিজেরাই নিজেদের সমালোচনা করছি।
সৈকতের মধ্যে ট এবং ঠ গুলিয়ে ফেলার একটা প্রবণতা আছে। উটেছিলাম, টিক ইত্যাদি। এগুলো হবে উঠেছিলাম কিংবা ঠিক (মাহবুব সাঈদ ইতোমধ্যেই আলোকপাত করেছেন)।
এই ট এবং ঠ এর ব্যাপারটা আকাশ মালিকের মধ্যেও আছে। উনি প্রায়শঃই লেখেন ঘঠনা। আসলে সঠিক শব্দটি – ঘটনা।
একই রকমভাবে, তিনি লিখেছেন – ঘঠে। আসলে হবে ঘটে।
আরো একটা বিষয়ে নজর দিতে পারেন তিনি – উকার এবং ও-কার। যেমন – এই বাক্যটিতে –
এখানে খোঁজে পাইনা – হবে না, হবে খুঁজে পাইনা।
তারপর…
শব্দটি অস্পষ্ঠ নয়, অস্পষ্ট ।
তারপর… প্রতিক্রীয়া নয়, প্রতিক্রিয়া।
প্রতিযোগীতা নয়, প্রতিযোগিতা। প্রতিদ্বন্ধী নয়, শব্দটি প্রতিদ্বন্দ্বী।
এখানেও সঠিক শব্দটি হবে – খুঁজছিলাম।
কিন্তু বানান সংশোধন আমার উদ্দেশ্য নয়, বিশেষতঃ আমি নিজেই বানানে দুর্বল। কিন্তু আমাদের ভুলগুলো আমাদের সাইটের মানের জন্য, এবং সর্বোপরি অনেকের চোখের জন্যই পীড়াদায়ক। শুধু সে কারণেই এটা বলা। আশা করি আমার এই মন্তব্য সবাই বন্ধুসুলভ ভাবে নেবেন।
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ অভিজিৎ দা, একদম প্রীন্ট করে রাখলাম, অন্তত এই শব্দ গুলোয় যাতে আর ভুল না হয়।
@অভিজিৎ,
আপনার তালিকায় আমিও একটা যুক্ত করি:
করেণকে করেন করেন।
@অভিজিৎ দা,
Bangla Academy Bengali-English Dictionary তে দেখলাম ‘খোঁজ’, ‘খোঁজাখুঁজি’ বানান রয়েছে কিন্তু ‘খুঁজ’ বানানটি নেই। :-/ :-/
ক্যাটাগরি ‘অবিশ্বাসের জবানবন্দী’ হবে নাকি ‘অবিশ্বাসীর জবানবন্দি’ হবে(বানান)? :-/
প্রশ্নই উঠে না। যখনই কোনো ভুল চোখে পড়বে আমাকে নির্দ্বিধায় জানাবেন। কিছু কিছু ভুল অন্যে ধরিয়ে না দিলে কোনদিনই শোধরানো হয়ে উঠে না। আমরা নিজেরা যদি ভাষার প্রতি যত্নবান না হয়ে হাস্যকার অহমিকা নিয়া বসে থাকি তবে ভাষার বারোটা যে আমাদের হাতেই বাজবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
@ আকাশ ভাই,
ভুল বানানের একটা তালিকা করলাম। আপনিও একটু যাচাই করে নিবেন।
বানান ঠিক করতে না পারলে এডমিনের সাহায্য নিন।
ভুল বানান-সঠিক বানান
১ম অনুচ্ছেদঃ ঘঠনাই – ঘটনাই, বেংগ –ব্যাঙ/ব্যাং, অস্পষ্ঠ –অস্পষ্ট, স্পষ্ঠ –স্পষ্ট, ঘঠনা –ঘটনা
২য় অনুচ্ছেদঃ ধার্মীক- ধার্মিক, স্রস্টা-স্রষ্টা, পূর্ণীমার-পূর্ণিমার, প্রতিক্রীয়া-প্রতিক্রিয়া, দুস্টুমীতে-দুষ্টুমিতে, করেণ-করেন, প্রতিযোগীতায়-প্রতিযোগিতায়
৪র্থ অনুচ্ছেদঃ পিটুনী-পিটুনি, মুষ্ঠি- মুষ্টি, সমকামীতার-সমকামিতার
৫ম অনুচ্ছেদঃ কোরাণ- কোরান
৬ষ্ট অনুচ্ছেদঃ জিনিষ –জিনিস, সূর্য গ্রহন – সূর্য-গ্রহণ, চন্দ্র গ্রহন – চন্দ্র-গ্রহণ, মধ্যবর্তি-মধ্যবর্তী, যথেষ্ঠ- যথেষ্ট, কুরাণ পুরাণের- কোরান-পুরান, কামাইক্ষার – কামাখ্যার
৭ম অনুচ্ছেদঃ সূর্য গ্রহন, চন্দ্র গ্রহন – সূর্য-গ্রহণ, চন্দ্র-গ্রহণ, ঘ্রীষ্ম- গ্রীষ্ম
৮ম অনুচ্ছেদঃ আফ্রীকান –আফ্রিকান, মনিষী – মনীষী
৯ম অনুচ্ছেদঃ নির্দিধায়-নির্দ্বিধায়, জবাবদিহীতার- জবাবদিহিতার, মনিষী-মনীষী,
১০ম অনুচ্ছেদঃ স্পষ্ঠবাদী – স্পষ্টবাদী, পূর্ণীমার – পূর্ণিমার
১১শ অনুচ্ছেদঃ পারেণ – পারেন, কোরাণের – কোরানের
ইত্যাদি। অনুচ্ছেদ নম্বর ঠিক বললাম কিনা একটু মিলিয়ে নিবেন।
আপনার লেখাটি বেশ মূল্যবান মনে হওয়ায় এটি করতে গেলাম। ভালো থাকবেন।
@সৈকত চৌধুরী,
খুঁজ দিয়ে সার্চ দিলে তো পাওয়া যাবে না। কারণ মূল শব্দটি তো খুঁজ নয়। মূল শব্দটি খোঁজ। যেমন – খোঁজ করা, খোঁজ নেওয়া, খোঁজ পাওয়া, খোঁজাখুঁজি করা ইত্যাদি।
কিন্তু আমি/তুমি দিয়ে যদি বাক্য শুরু হয় (এমনকি যদি উহ্যও থাকে) তা হলে আর ওভাবে বাক্য তৈরি হয় না। যেমন,
আমি তোমাকে খুঁজে পাচ্ছি না।
এটা ঠিক আছে। কিন্তু তুমি যদি লেখো – আমি তোমাকে খোঁজে পাচ্ছি না – সেটা অবশ্যই ভুল। সেজন্যই
স্মৃতির পাতা তন্নতন্ন করেও খোঁজে পাইনা – হবে না
হবে, স্মৃতির পাতা তন্নতন্ন করেও খুঁজে পাইনা ।
কিংবা কারো কাছে বলার মানুষ খুঁজছিলাম। ইত্যাদি।
@অভিজিৎ,
শুধু
এই শব্দগুলো নয়, আরো কিছু শব্দ নিয়ে বেশ কনফিজড আছি। এক একজন এক এক রকম লিখেন। সময়ের বড় অভাব, পরে একটা তালিকা দেবো। কিছু সময়ের জন্যে বিজ্ঞান থেকে সরে যদি ব্যাকরণে একটু সাহায্য করেন, সকলের জন্যেই ভাল হবে।
পড়ে বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লাম। বেশ কিছু জায়গা আপনার সাথে মিলে যায়। তবে আমি বেশ ধার্মিক হয়ে উটেছিলাম। মাঝে মঝে ইমাম সাহেব মসজিদে না থাকলে আমিই নামাজ পড়াতাম যদিও এত অল্প বয়সে ইমামতি টিক কিনা তা নিয়ে অনেকে আপত্তি করতেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে কারো দ্বারা অনুপ্রাণিত না হয়েই নিজে থেকে কিভাবে পুরো নাস্তিক হয়ে উটেছিলাম তা আজো আমাকে ভাবায়।
দুঃখ পেলাম।
🙂
🙂
ম্যারিয়া -এর প্রতি শ্রদ্ধা। :rose:
:yes:
বেশ সাবলিল ও সুন্দর ভাষায় লিখেছেন।
(লেখার বিভাগে ‘অবিশ্বাসীর জবানবন্দী’ সংযুক্ত করে দিন। আপনার বইটির নামের সাথে লিংক জুড়ে দেন। অল্প কিছু বানান এদিক-সেদিক হয়ে গেছে একটু টিক করে নিলে সুন্দর দেখায়। )
@সৈকত চৌধুরী,
“উটেছিলাম ” এ রকম না হয়ে “উঠেছিলাম” আর সাবলিল লিখতে কি ি নাকি ী (সাবলীল) হবে?
ভালো থেকো।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
আপনাকে দেখে ভালো লাগলো। আমি আসলেই বানানে বেশ কাঁচা। হ্যা, বানান ‘উঠেছিলাম’ ও ‘সাবলীল’ হবে। আমরা এভাবে পরস্পরকে বানানের ব্যাপারে সহায়তা করা উচিত।
বিষয়টি খেয়াল করায় আপনাকে ধন্যবাদ। :rose2:
@সৈকত চৌধুরী,
এই তো হলো আপনজনের ভাষা। আমি লেখাটি আপনার কাছে পাঠিয়ে দেবো। বানান ঠিক করে, লেখার বিভাগে ‘অবিশ্বাসীর জবানবন্দী’ সংযুক্ত করে, আমার বইয়ের নামের সাথে লিংক জুড়ে দেয়া আপনার দায়ীত্ব। আমি এ ব্যাপারে দক্ষ নই তাই বলছি। একবার তো একটু হেল্প করেন দাদা প্লীজ।
কোনকিছুর প্রয়োজন হলে ই-মেইল করবেন। এবার :coffee: :cake: :cigarette: খেয়ে খেয়ে কাজটা করে দিন, পি—-:cry: লি—— 😥 —-জ—– 😥 ।
@সৈকত চৌধুরী,
ঠিক করে দিলাম। থ্যাঙ্কু—————উ। :rose: :rose:
এবার এগুলোর একটা ব্যবস্থা করুন। আমি জানি অনেকেই হয়তো ইচ্ছে করে ভুল করেন নি, কী-বৌর্ডের ভুত হতে পারে। কিন্তু এই দুর্ভাগাকে তো সঠিকটা শিখতে হবে। আপনারা যারা বাংলায় কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন, কেউ না কেউ নিশ্চয়ই জানেন, এর একটি সাধারণ নিয়ম এবং কিছু ব্যতিক্রম আছে। কেউ বলে দিলে, শুধু আমি নয়, আরো অনেকেই উপকৃত হবেন।
1.এক ভাষায় যে জিনিষ অসম্ভব আকর্ষণীয়, অন্য ভাষায়–প্রায়শই হয়ে পড়ে পানসে ধরনের।
2.একটা জিনিষের রঙ তখনি আমরা সবুজ বলি যখন তার দ্বারা প্রতিফলিত আলোর তরংগদৈর্ঘ্য
3.যদি বিজ্ঞান জিনিসটা কারো হাতে সত্যি সত্যি কাব্যে রূপ নেয়,
4.একটি জিনিস এখানে বলা প্রয়োজন। কোরাণ খুব প্রাচীন আরবী রীতি অনুসরণ
5.সুভাষ মুখোপাধ্যায় সকল আশা প্রত্যাশাকে– নিজে অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন কবি হবার কারণে
6.একই কারনে, একজন পুরুষ একের অধিক স্ত্রীর প্রয়োজন– কিন্তু একজন নারী সাধারনত এই
7.মনটা খুবই খারাপ কারন দেশে এখনই যেতে পারছি না। দুঃখিত। তবে এ বছরের
8.তারা অন্যান্য সংগটন করবে, দেশের প্রয়োজনে আন্দোলন থেকে আরম্ভ করে প্রয়োজনে
9.অতিথিকে খোঁজ খবর করে । অর্থাৎ আমন্ত্রণ করে আনা। ছোটবেলার সে রীতিটি কেন যেন মাথায়
10.জীবজগৎ যন্ত্র নয়; — এর পেছনে – – বা পরিকল্পনার মত ‘উদ্দেশ্য’ খোঁজার দরকার নেই।
11.বই মেলায় শুদ্ধস্বর, অংকুর এবং অবসরের স্টলে বইগুলো খোঁজ করুন।
12.শিশু বুক ভরা আশা নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিল তার হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে।
13.না দেখা সেই মাকে খোঁজার হৃদয় বিদারক যন্ত্রণা
14.ছাত্র রাজনীতি– লেজুর বৃত্তি (লেজুড় বৃত্তি) আদু ভাইদের খোয়ার (খোঁয়াড়- Pen) ।
15.এই ভিত্তিগুলো সম্পর্কে আগে অস্পষ্ট কিছু ধারণা ছিল, এখন পরিষ্কার হল।
16.সমকামিতা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। এটাতেও বংশ বৃদ্ধির ধারনা কাজ করে না।
17.টি-প্লাসমিড (সাধারাণতঃ গাছে ব্যবহৃত) পরিবর্তন করে বা কোন ভাইরাসের ক্ষতিকারক ধর্ম
18.এখনতো লিভ টুগেদার প্রেম পাশ্চাত্যে সাধারন ব্যপার, এ ধরনের সম্পর্কে সাধারনত
19.ঈশ্বরের লীলা আমরা সাধারণেরা কি আর বুঝব?’ এগুলোই মূলতঃ নালিশের জবাবে
20.অণুজীবের ক্ষেত্রে এই সংজ্ঞার অনেক হেরফের হয়, তারপরও সাধারণ ধারণার জন্য এটি
21.একই কারনে, একজন পুরুষ একের অধিক – কিন্তু একজন নারী সাধারনত এই সক্ষমতার
22.হারেমের প্রয়োজনীয়তাটা স্পষ্ট না। কারন সেখানেতো বংশ বৃদ্ধির কোন ব্যপার নেই,
23.নেশার মত টান হয় ডোপামিনের কারণে। পাখীদের মধ্যে ডোপামিনের কারণে
24. জাকির নায়েকরা –“কোরআন নিয়ে বিভ্রান্তির জবাবে” – – এমন নানা শিরোনামে তারা
25.একটা পুরো যুগকে বুঝতে গেলে- কোরআন-হাদীসের শরণাপন্ন অবশ্যই হতে হবে।
26.কোরানের– ভুলগুলো, নারীদের প্রতি ট্রিটমেণ্ট, — এবং অবিস্বাশীদের প্রতি আচরন
27.মুখে ইসলামের তুবড়ি ছুটিয়ে কোরাণ-বিরোধী নারী-বিরোধী আইন বানিয়েছেন, স্বামীর জন্য –
28.আর তা ছাড়া কোরানকে ‘পার্ফেক্ট এরাবিক’ বলা হলেও কোরান যে ব্যাকরণগত ভুল
29.জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে প্রাচীন দার্শনিক
30.বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনের কোনো ‘উদ্দেশ্য’ যদি থেকে থাকে তবে