১
আমি ধর্ম পালন না করলেও ধর্ম নিয়ে আমার আগ্রহ রয়েছে। তাই টিভিতে যখন আব্বু-আম্মু নিবিষ্ট মনে ডঃ জাকির নায়েকের বক্তৃতা শুনে তখন কাজ না থাকলে আমিও সোফায় যেয়ে বসি। বোঝার চেষ্টা করি তিনি কী বলতে চান। তেমনি ধর্ম নিয়ে লেখা বইও পড়ি। কয়েকবছর আগে বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ আহমদ দিদাদ এর লেখা “কুরআন ও বিজ্ঞান” নামে একটা বই দেখলাম কাটাবনের মসজিদের নীচে মার্কেটটায়। কিনে নিয়ে আসলাম। সেই বইয়ে নানা ভাবে কুরআনকে স্বর্গীয় কিংবা আলৌকিক প্রমানের জন্য বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের সাথে মিল দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি ছিল, উনিশ সংখ্যা দ্বারা আল্লাহ যে কুরআনকে বেঁধে দিয়েছিলেন তার প্রমান। আল্লাহতায়ালা বাঁধলেও সর্বসমক্ষে এই মিরাকলের ব্যাপারটি প্রথম তুলে ধরেন ডক্টর রাশাদ খালিফা।
পুরো ব্যাপারটি যে কোন মানুষকে আকৃষ্ট করবে। যিনি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী তিনি প্রমানটি দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন- জিনিসটা মাথায় রাখার চেষ্টা করবেন, ক্ষেত্র বিশেষে কোন সংশয়বাদীর সাথে তর্কে লিপ্ত হলে তলোয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন। আর যিনি অবিশ্বাসী তিনিও সামান্য দ্বন্দ্বে পড়ে যাবেন।
আপনারা যারা এই মিরাকল সম্পর্কে জানেন না- তারা উইকিতে আমার লেখা এই নিবন্ধটি পড়ে দেখতে পারেন। পড়ে দেখতে পারেন ব্লগার মাহমুদুল আলমের এই লেখার শেষ অংশটুকু।
২
আসলেই কী কুরআনে সাংখ্যিক মাহাত্ম্য (মিরাকল অফ ১৯) বিদ্যমানঃ-
স্পষ্ট উত্তর হচ্ছে- না। ডক্টর খলিফা বেশকিছু ছলনার আশ্রয় নিয়েছেন। এই লেখায় বেশকিছু উদাহরণ এবং গঠনমূলক আলোচনায় তা দেখানো হবে।
মূলত পৃথিবীর যেকোন বিষয়েই একটি গানিতিক মিরাকল বের করা সম্ভব (প্রবন্ধের নীচের অংশে উদাহরণ দ্রষ্টব্য)। সেটি গণিতবিদদের দ্বারা সমর্থিত না হলেও মানুষকে আনন্দ কিংবা ধাঁধায় ফেলার জন্য যথেষ্ট।
ধরুন একটি সমুদ্র সৈকত। আপনি একটি নিক্তি নিলেন- এবং সমুদ্র সৈকতের একটি একটি করে বালুর ওজন মাপা শুরু করলেন। যেসব বালুর ওজন হচ্ছে এক গ্রাম সেটিকে আপনি থলেতে ভরে রাখলেন। যেগুলো না সেগুলো ফেলে দিলেন। আরও ধরি আপনার হাতে অফুরন্ত সময় রয়েছে এবং এই অফুরত্ন সময় আপনি শুধু বালুর ওজন মাপবেন এবং এক গ্রামের ওজনের বালু আলাদা করবেন। তাহলে দীর্ঘসময় পর আপনি বেশ বড় একটি বালুর স্যাম্পল জোগাড় করতে পারবেন যাদের প্রত্যেকের ওজন এক গ্রাম করে। এখন যদি আপনি ঘোষণা দেন যে, এই সমুদ্র সৈকতটি একটি মিরাকল এবং এর প্রত্যেকটি বালু কণার ওজন এক গ্রাম তাহলে কী তা যুক্তি সংগত হবে? হবে না।
কারণ গণিত আমাদের বলে, এই সৈকতে প্রতিটি বালুকণার ওজন এক গ্রাম- এই শর্ত আরোপ করার আগে আপনাকে শতকরা কতভাগ বালুর ওজন এক গ্রাম তা নির্ণয় করতে হবে। যদি শতকরা মান ৯০- ৯৯% হয় তাহলে আমরা সেই শর্ত সঠিক বলে ধরে নিতে পারি।
শতকরা= এক গ্রাম ওজন এমন বালুর সংখ্যা/ পরীক্ষণীয় মোট বালুর সংখ্যা (যে বালু আপনি ফেলে দিয়েছেন+ যে বালু আপনি রেখেছেন) * ১০০
আপনার পরীক্ষায় একবস্তা বালুর বিপরীতে কমপক্ষে এক হাজার বস্তা বালু আপনি বাদ দিয়েছেন (কারণ তাদের ওজন এক গ্রাম নয়)। সুতরাং আপনার শতকরা মান হবে খুব কম। অর্থাৎ মিরাকলটি সত্যি নয়।
ডক্টর খালিফা ঠিক এই কাজটি করেছেন। কিভাবে?
তিনি বলেছেন কুরআনকে আল্লাহ ঊনিশ দ্বারা আটকে দিয়েছেন। তিনি বেশ কিছু উদাহরণ দিয়েছেন। যেমন,
‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’-এ মোট বর্ণ ১৯।
সর্বপ্রথম নাযিলকৃত ৫টি আয়াতে (সূরা আলাক) মোট শব্দ সংখ্যা ১৯, তাতে মোট বর্ণ ৭৬ (যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য)।
সর্বপ্রথম নাযিলকৃত পূর্ণাংগ সুরার (সুরা আলাক) আয়াত সংখ্যা ১৯।
সর্বশেষ নাযিলকৃত সুরায় (সুরা নসর) শব্দ সংখ্যা ১৯।
সর্বশেষ নাযিলকৃত আয়াতে (সুরা নসর-১) অক্ষর সংখ্যা ১৯।
পুরো কুরআনে ‘কুরআন’ শব্দটি এসেছে ৫৭ বার (যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য)।
কুরআনের সর্বমোট সুরার সংখ্যা ১১৪ (যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য)।
কুরআনের সর্বমোট আয়াত সখ্যা ৬৩৪৬ (যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য)।
তাহলে ডক্টর খালিফার চালাকিটা কোথায় হল? বের করা খুব সহজ।
যেকোন বই থেকেই আপনি “বিশেষ কিছু অংশ”/অপশন বাছাই করতে পারেন। তারপর যেই যেই অপশন আপনার মিরাকল প্রমানে কাজে লাগবে তা রেখে (ধরুন সাত দ্বারা বিভাজ্য) বাকিগুলো ফেলে দিতে পারেন। কুরআনের ক্ষেত্রে যেমন, একটি শব্দের অক্ষর সংখ্যা, চ্যাপ্টারের সংখ্যা, নির্দিষ্ট একটি শব্দ সর্বোমোট কতবার ব্যবহৃত হয়েছে সেই সংখ্যা ইত্যাদি- ইত্যাদি গ্রহন করা হয়েছে। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি চাইলে অন্য একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা, বিজোড় সুরার সংখ্যা, জোড় চ্যাপ্টারের সংখ্যা, বিজোড় চ্যাপ্টারে অতটি অক্ষর রয়েছে- জোড়টিতে কতটি রয়েছে ইত্যাদি নিতে পারেন। অর্থাৎ আপনি মাথা খাটিয়ে অসীম সংখ্যক অপশন/”বিশেষ অংশ” বাছাই করতে পারেন। ডক্টর খালিফা তাই করেছেন। অসংখ্য অপশন থেকে তিনি উনিশ দ্বারা বিভাজ্য প্রমান করা যায় এমন অপশনগুলো গ্রহণ করেছেন- বাকিগুলো ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু কুরআনে যদি আসলেই ঊনিশের মিরাকল থেকে থাকে তাহলে তা সব কিছুতেই থাকবে- শুধু মাত্র কয়েকটি জিনিসে নয়।
তারপরও কথা থেকে যায়। উনি তো অনেক কিছুই মেলাতে সক্ষম হয়েছেন। সেগুলো কী আসলেই মিলেছে? সেগুলো কি আসলেই ঊনিশ দ্বারা বিভাজ্য? চলুন দেখি পরবর্তী আলোচনায়।
৩
এই অংশে, প্রমানিত শর্তগুলোও অনেক ক্ষেত্রে সঠিক নয় তা দেখানো হবে। সেক্ষেত্রে আমরা ব্যবচ্ছেদের জন্য একটি নিয়েই আলোচনা করবো।
ডক্টর রাশেদ খলিফা বলেন,
“The key to Muhammad’s perpetual miracle is found in the very first verse of the Qur’an, `IN THE NAME OF GOD, MOST GRACIOUS, MOST MERCIFUL = BiSM ALLaH, AL-RaHMaN, AL-RaHIM’…
মুহাম্মদের বলে যাওয়া- কুরআন যে একটি মিরাকল তার সন্ধান লাভ করা যায়, কুরআনের সর্ব প্রথম আয়াতেই। IN THE NAME OF GOD, MOST GRACIOUS, MOST MERCIFUL = BiSM ALLaH, AL-RaHMaN, AL-RaHIM’…
এই প্রথম আয়াতের অক্ষর গণনা করে (ইংরেজীতে শুধু মাত্র বড় হাতের অক্ষর) আমরা দেখতে পাই যে, এখানে ঊনিশটি অক্ষর রয়েছে। এবং এতে যে শব্দগুলো রয়েছে সেগুলো প্রত্যেকটি ঊনিশের গুনিতক। যেমন প্রথম অক্ষর, `ISM’ ঊনিশ বার; দ্বিতীয় শব্দ, `ALLaH’ ২৬৯৮ বার, যা ১৯ এর গুনিতক (১৯X১৪২) ; তৃতীয় শব্দ , `AL-RaHMaN ‘ আছে ৫৭ বার, (১৯ X ৩); সর্বশেষ শব্দ , `AL-RaHIM’ আছে ১১৪ বার (১৯ X ৬)”
ডঃ খালিফা দাবী করেছেন, কুরআনের এই অলৌকিকত্বে মানুষের কোন হাত নেই। অথচ, “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” বাক্যে যে ১৯টি বর্ণ আছে, এই মৌলিক দাবীতেই মানুষের হাত আছে। আরবি বাক্যটিকে ইংরেজিতে প্রতিবর্ণীকরণ করার সময় আমরা যদি স্বরবর্ণ বাদ দেই, তাহলে বাক্যটি এরকম দাঁড়ায়: “BSM ALLH ALRHMN ALRHIM”, উল্লেখ্য আরবীতে স্বরবর্ণগুলো লেখা হয় না, পড়ার সময় ধরে নেয়া হয়। এই প্রতিবর্ণীকৃত বাক্যে বর্ণের সংখ্যা ১৯। কিন্তু, আরবিতে “তাশদিদ” বলে একটি প্রতীক আছে, কোন বর্ণের উপর সে প্রতীক থাকলে তা দুই বার উচ্চারণ করতে হয়। “ALLAH” শব্দের দ্বিতীয় “L” এর উপর একটি তাশদিদ আছে। সেক্ষেত্রে এই লাম দুইবার উচ্চারণ করে এভাবে লেখা যেত (বা এভাবে লেখা উচিত): “ALLLAH”; আর বর্ণ সংখ্যা হয়ে যেত ২০টি।
তাশদিদ যুক্ত বর্ণ দুইবার ধরা হয়েছে নাকি একবার ধরা হয়েছে, সে বিষয়টি ডঃ খালিফা কোথাও স্পষ্ট করে বলেননি। এছাড়া যে স্বরবর্ণগুলো লেখা হয় না, কিন্তু পড়ার সময় ধরা হয় সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করা বা বাদ দেয়ার ব্যাপারটাও তিনি স্পষ্ট করেননি।
পরবর্তী সমস্যা “BISM” শব্দ নিয়ে। এটি প্রকৃতপক্ষে দুটি শব্দের সমন্বয়: “Bi” (এক্ষেত্রে এই শব্দের অর্থ “মধ্যে”) এবং “ISM” (অর্থ “নাম”)।
ডঃ খালিফা সবসময় আরবি বর্ণক্রম ব্যবহারের কথা বলেছেন। এই আরবি বর্ণক্রম ব্যবহার করে “ISM” শব্দটির অনুসন্ধান করা যেতে পারে। আবদুল বাকি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত কুরআনের একটি নির্ঘণ্ট ঘেটে এই আশ্চর্যজনক তথ্য পাওয়া গেছে:
“BiSM” শব্দটি কুরআনের প্রথম আয়াতেই আছে। এই শব্দটি কুরআনের মাত্র তিনটি স্থানে উল্লেখিত হয়েছে: ১:১১, ১১:৪১ এবং ২৭:৩০।
কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে কেবল “ISM” শব্দটি কুরআনে মোট ১৯ বার উল্লেখিত হয়েছে।
কিন্তু তৃতীয় আরেকটি তালিকা আছে। “ISMuHu” শব্দের অর্থ “তার নাম”। এটি আরবিতে একটি অখণ্ড শব্দ হিসেবে লেখা হয়। কুরআনে এটি ৫ বার এসেছে।
সবগুলো ফলাফল যোগ করলে পাওয়া যায়: ৩ + ১৯ + ৫ = ২৭, স্পষ্টতই এখানে ১৯ এর সাংখ্যিক তাৎপর্য আর থাকছে না।
আমাদের সামনে আরও অনেকগুলো অনুমানের ব্যাপার আছে, যেগুলো সম্বন্ধে ডঃ খালিফা কোন ব্যাখ্যা দেননি। কোন বিবেচনায় তিনি তিনবার উল্লেখিত “BiSM” শব্দটি গণনা থেকে বাদ দিয়েছেন? যে শব্দ নিয়ে গবেষণা করছিলেন সেই শব্দটিই বাদ দেয়ার পিছনে কোন যুক্তিই দেখাননি। আর কেবল বিচ্ছিন্ন “ISM” শব্দ গণনার ব্যাপারেই বা তিনি কোন নীতি অনুসরণ করেছেন? সর্বনামযুক্ত বিশেষ্য “ISMuHu” কেই বা কেন বাদ দিলেন?
তাহলে কি এই তিন ধরণের শব্দের অর্থের মধ্যে কোন ব্যাখ্যা লুকিয়ে আছে? হয়ত বা, যেসব স্থানে এই শব্দগুলোর মাধ্যমে কেবল আল্লাহ্র নাম বোঝানো হয়েছে সেগুলোকেই ডঃ খালিফা গণনা করেছেন। কিন্তু নিম্নোক্ত দুটি আয়াতের দিকে লক্ষ্য করলে এই ধারণাও ভুল বলে প্রমাণিত হয়। সূরা মায়িদার ৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“…but pronounce God’s name (ISM ALLaH) over it…”
এবং সূরা বাক্বারার ১১৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,
“And who is more unjust than he who forbids in places for the worship of God, that His name (ISMuHu) should be pronounced?”
মূল আরবি বা ইংরেজি অনুবাদ কোনটিতেই এই শব্দগুলোর মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই, একটি ছাড়া: এখানে “God’s name” সরাসরি বিধেয় এবং “His name” উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আরবি বর্ণক্রমেএই শব্দ দুটির লেখ্য রূপের ভিত্তিতেই কেবল দুটিকে ভিন্ন স্থানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
আরও কথা আছে, কিসের ভিত্তিতেই বা ডঃ খালিফা এই শব্দগুলোর বহুবচন রূপগুলো বাদ দিলেন? এগুলোর বহুবচন কুরআনে আরও ১২ বার এসেছে। বিশেষত সূরা আ’রাফের ১৮০ নম্বর আয়াতের কথা উল্লেখ করা যায়, “The most beautiful names belong to God…”
বহুবচন বাদ দেয়ার কেবল একটি কারণই থাকতে পারে। সেটি হচ্ছে, বহুবচনগুলো গণনা করলে মোট সংখ্যাটি ১৯ না হয়ে ৩৯ হয়ে যায়।
উপরন্তু ALLAH শব্দটির ব্যবহারের ধরণের ব্যাপারেও সন্দেহ আছে। এই শব্দের সাথে যখন “Li” প্রসর্গ যুক্ত হয় তখন দুইয়ে মিলে “LiLaH”বা “LiLLah” শব্দের জন্ম দেয়। এখানে প্রসর্গটির অর্থ “প্রতি”। এই লিল্লাহ শব্দেও একটি লাম এর উপর তাশদিদ আছে। (উদাহরণ হিসেবে ২:২২ আয়াতটি দেখা যেতে পারে।) ব্যকরণ অনুসারে এই প্রসর্গযুক্ত শব্দটি ঠিক “BiSM” এর মত করেই ব্যবহৃত হয়। পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলতে পারি ডঃ খালিফা এবার প্রসর্গযুক্ত শব্দগুলো বাদ দিয়ে কেবল মূল শব্দটিই গণনা করবেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। এবার ঠিকই “LiLaH” গুলো গণনা করেছেন, কারণ এগুলো গণনা না করলে মোট সংখ্যাটা ২৬৯৮ হত না এবং তা ১৯ দিয়েও বিভাজ্য হত না। এ ধরণের যাদৃচ্ছিক ব্যবহারের পেছনে কি আদৌ কোন যুক্তি আছে?
“ISM” এর সাথে “Bi” যুক্ত হয়ে যখন “BiSM” হয়েছে তখন ডঃ খালিফা সেটা বাদ দিয়েছেন, কিন্তু “ALLAH”-র সাথে “Li” যুক্ত হয়ে যখন “LiLaH” হয়েছে তখন তিনি সেগুলো ঠিকই গণনা করেছেন; কেবল ১৯ দিয়ে বিভাজ্য একটি সংখ্যায় পৌঁছানোর জন্য।
AL-RaHMaN শব্দের ক্ষেত্রে কোন দ্বিধা নেই। এটি কুরআনে ৫৭ (১৯ X ৩) বারই উল্লেখিত হয়েছে। লেখকও এমনটিই বলেছেন।
এবার AL-RaHIM শব্দের দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক। ডঃ খালিফা বলেছেন, এই শব্দ মোট ১১৪ (৬ X ১৯) বার এসেছে। কিন্তু আবদুল-বাকির নির্ঘণ্ট অনুসারে কুরআনে এই শব্দটি হুবহু এই রূপে মাত্র ৩৪ বার উল্লেখিত হয়েছে। অর্থাৎ এই ৩৪ স্থানেই শব্দের আগে “AL” নামক ডেফিনিট আর্টিক্লটি আছে। কিন্তু বাকি ৮১ স্থানে শব্দের আগে কোন ডেফিনিট আর্টিক্ল নেই। এখন আর্টিক্ল সহ এবং ছাড়া সবগুলোই যদি আমরা গণনা করি, তাহলে মোট সংখ্যাটি দাঁড়ায় ১১৫। এক বার এর বহুবচনও উল্লেখিত হয়েছে। তাহলে মোট ১১৬ হয়ে যাচ্ছে। ১১৫ এবং ১১৬, কোনটিই ১৯ দ্বারা বিভাজ্য নয়।
ডঃ খালিফার এই আবিষ্কারকে অনেকেই সম্পূর্ণ অনুমোদন দিয়েছেন। ডঃ Bèchir Torki এ নিয়ে রীতিমত ৪ পৃষ্ঠার এক বিশাল সারাংশ রচনা করেছেন। এই সবগুলো অনুমোদন পত্র বা সারাংশতেও উপরে উল্লেখিত চারটি মৌলিক অনুমিতির ব্যাপার সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
ডঃ খালিফা “ALLAH” শব্দে তাশদিদের কারণে দ্বিত্ব হয়ে যাওয়া লামগুলো গণনা থেকে বাদ দিয়েছেন, আবার অলিখিত স্বরবর্ণগুলোও বাদ দিয়েছেন।
তিনি “ISM” এর মোট সংখ্যা গণনা করতে গিয়ে “BiSM” শব্দটি সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছেন, কিন্তু ওদিকে আবার “ALLaH” শব্দ গণনা করতে গিয়ে “LiLaH” অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
এছাড়াও তিনি তার গণনা থেকে “ISMuHu” বাদ দিয়েছেন, যদিও ব্যকরণগত দিক দিয়ে এটি হুবহু “ISM” এর মতোই অর্থ বহন করে।
এছাড়া তিনি “ISM” এবং “AL-RaHIM” শব্দের বহুবচন রূপগুলো বাদ দিয়েছেন।
উপরন্তু তার “AL-RaHIM” শব্দের গণনা ভুল হয়েছে।
সুতরাং মিরাকল প্রমানের জন্য খলিফা নিজের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন- মিল করার জন্য। কিন্তু সে ব্যাপারে কোন ব্যাখ্যা প্রদান করেন নি। তার অন্যান্য সিদ্বান্তগুলোও ভুলে ভরা। সেগুলোও আলাদা করে প্রমান করা সম্ভব।
৪
এ ধরণের সংখ্যাতাত্ত্বিক খেলা বিজ্ঞানবহির্ভূতঃ-
সংখ্যা নিয়ে এ ধরণের ধাঁধাময় খেলা অনেক প্রাচীন। সেই পিথাগোরাসের আমল থেকেই মানুষ এসব করে আসছে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের জন্ম হওয়ার পর অনেক কিছুর মত এটাকেও বিজ্ঞানের অঙ্গন থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করা হয়েছে। এই অপবিজ্ঞানের নাম দেয়া হয়েছে Numerology তথা সংখ্যাতত্ত্ব। গণিত থেকে সংখ্যাতত্ত্ব সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে গেছে; যেমন জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকে জ্যোতিষ শাস্ত্র আলাদা হয়েছে এবং রসায়ন থেকে আলকেমি আলাদা হয়েছে। সংখ্যাতত্ত্ব তাই একটি পরিপূর্ণ অপগণিত বা অপবিজ্ঞান। বিজ্ঞানের কুসংস্কারাচ্ছন্ন অপব্যবহারকেই অপবিজ্ঞান বলা হয়।
গাণিতিক মিরাকলের আরও উদাহরণঃ-
মূলত চাইলে কুরআনে সাত কিংবা অন্য যেকোন সংখ্যার মিরাকল বের করা সম্ভব। সম্ভব পৃথিবীর যেকোন কিছুতেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে এমন একটি গাণিতিক ব্যাখ্যা বেশ জনপ্রিয়। বলা হয়ে থাকে- এই ঘোষণা পত্রের মাধ্যমে আমেরিকার ভবিষ্যতের সকল ঘটনা আগে থেকেই বলে দেওয়া সম্ভব। খুব রিসেন্টলি টুলের (Tool) একটা গানে (Lateralus) ফিবোনাক্কি সিরিজের সুন্দর প্রয়োগ আছে। সব রকম কবিতাতেই গণিতের খেলা দেখা যায়, সেই ঋগ্বেদ থেকে শুরু করে। পিকাসোর ছবিতে পাওয়া যায় ত্রিমাত্রিক জ্যামিতির খেলা। গস বা অয়লারের মত গণিতবিদের জীবনী পড়লে মানুষের গাণিতিক ক্ষমতায় আপনার আরো আস্থা বাড়বে।
আরেকটি উদাহরণ হতে পারে ইহুদিদের বিখ্যাত শেমহামেফোরাস। ইহুদি ধর্মবেত্তার সেই মধ্যযুগ থেকেই সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে মত্ত। সে সময়ই তারা তাদের ধর্মগ্রন্থ তোরাহ-র দ্বিতীয় গ্রন্থ এক্সোডাস থেকে স্রষ্টার রহস্যময় নাম বের করেছিল। এক্সোডাসের ১৪:১৯-২১, এই তিনটি আয়াতের মাধ্যমে তারা স্রষ্টার ৭২টি নাম উদ্ভাবন করেছে। এই প্রতিটি আয়াতে ৭২টি করে বর্ণ আছে।
– প্রথমে প্রথম আয়াতটি ডান থেকে বামে লিখেছে
– তারপর দ্বিতীয় আয়াত বাম থেকে ডানে লিখেছে
– সবশেষে তৃতীয় আয়াত আবার ডান থেকে বামে লিখেছে
– এই লেখার কাজটি ১৮ কলাম ও ১২ সারিতে করা হয়েছে। ১৮ গুন ১২ = ৭২ গুন ৩
– এবার ১২ টি সারিকে ৩ সারি ৩ সারি করে ভাগ করেছে। মোট চারটি ভাগ হয়েছে যার প্রতিটিতে ১৮ কলাম ও ৩ সারি।
– প্রতি ভাগের একটি কলাম দ্বারা স্রষ্টার একটি তিন অক্ষরের নাম পাওয়া গেছে। এভাবে মোট ১৮ গুন ৪ = ৭২ টি তিন অক্ষরের নাম পাওয়া গেছে।
– চার ভাগের প্রতিটিতে আবার একটি বর্ণের সাথে মিলিয়েছে। এতে স্রষ্টার একটি চার অক্ষরের নাম পাওয়া গেছে।
– এই যে চার অক্ষরের নাম তার সঠিক উচ্চারণ জানার চেষ্টা করছে তারা। এ নিয়েই তারা সংখ্যাতত্ত্বের খেলা খেলছে, এখনও। এই শব্দকে ডিজিটে নিলে নাকি ২১৬ ডিজিটের একটা নাম পাওয়া আছে। ড্যারেন আরনফ্স্কির “পাই” সিনেমায় এই ২১৬ ডিজিটের সাথে পাই এর সম্পর্ক দেখানো হয়েছে।
৫
রাশাদ খলিফাকে দরকারী সাইজ মুমিন মোসলমানরা পরে ঠিকই করেছেন। তিনি যে ভন্ড হেন তেন অনেক অনেক কিছুই পরবর্তীতে তারা চিৎকার করে বলেছেন। আবার তারাই “কুরআনকে অন্যরকম কিছু একটা” প্রমাণের জন্য রাশাদ খলিফার এই মিরাকল নাইন্টিন ব্যবহার করছেন আজ অবদি। তা করুক। আমার মতো কেউ যেন এই মিরাকল নাইন্টিন দেখে কুরআনের গ্রন্থকে অলৌকিক না ভেবে বসেন- সে জন্যই এই লেখা।
তথ্যসূত্রঃ অনেক কিছুই হুবুহু অনুবাদ করা হয়েছে। সাইটের লিংকটা পেয়েছিলাম অভিজিৎদার কাছ থেকে। অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি এখন খুঁজে পাচ্ছিনা। আমার কৃতজ্ঞতা থাকলো।
পূর্বপ্রকাশঃ ক্যাডেট কলেজ ব্লগ
আসলেই… এই সব হাস্যকর জিনিস নিয়েই ধর্মান্ধরা আজীবন পরে থাকবে
রায়হান আবীর,
সদালাপে আরেকজন রায়হান সাহেব এ বিষয়ে একটি লেখা সম্প্রতি লিখেছেন, জানি না সেটাকে আপনাদের লেখার রিবুটাল বলা যায় কিনা। তবে পড়ে দেখতে পারেন।
http://www.shodalap.com/R_19.htm
@আদিল মাহমুদ,
ধন্যবাদ লিংকের জন্য। লেখাটি পড়লাম। যুক্তিখন্ডন তো কিছু করেন নাই উনি। রায়হান সাহেবের এই ধরণের লেখার সাথে আমি পরিচিত।
একটা কথাই খালি পেলাম, উনি বলেছেন এই ধরণের লেখা যারা লেখে তারা আরবী সম্পর্কে কিছু জানে না। আমি একটু মজা পেলাম। আমি খুবি ভালো আরবী জানি। কুরআন শরীফের বিশাল বিশাল অনেক সুরা আমার মুখস্থ আছে। পাঁচ ছয় বারের মতো কুরয়ান খতমও দিয়েছি আমি 😀
@রায়হান আবীর,
আমি নিজেও লেখাটি দেখে যতটা উতসাহিত হয়েছিলাম পড়ে ততোধিক হতাশ হয়েছি। উনি কোন নির্দিষ্ট পয়েন্টে যাননি, ঢালাওভাবে কিছু গতবাধা কথা বলে গেছেন। কি কি পয়েন্টে সমালোচনা ভ্যালিড না তার কোনরকম ব্যাখ্যাই দেননি, তাই বলেছিলাম যে ওই লেখাকে রিবুটাল বলা যায় না।
কোরান খতম করা আর আরবী ভাষা জানা কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। হতে পারে আপনি আরবী ভাষাও জানেন। তবে আমাদের দেশের অধিকাংশ লোকে কোরান খতম ছেলেবেলাতেই দেয়, তারা কেবলমাত্র আরবী পড়তে পারে।
@আদিল মাহমুদ,
আমিও সেই ছেলেদের মতৈ। মানে ব্যাকরণ শিখে জাস্ট পড়া শিখেছি। তবে অল্প বিস্তর জানি বৈকি। আমাদের ইউনিতে দুই ক্রেডিট এরাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ (স্পিকিং, রিডিং, রাইটিং) কোর্স করতে হয়েছে। 😀
লেখাটিকে মুক্তমনা ই-বুক ‘বিজ্ঞান ও ধর্ম – সংঘাত নাকি সমন্বয়?’ এর সপ্তম অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করা হলো।
@মুক্তমনা এডমিন,
আরে এটা তো খেয়াল করি নাই। ধন্যবাদ।
সবাইকে আরেকবার ধন্যবাদ জানাই। বিবর্তন সম্পর্কিত একটা নতুন লেখা প্রস্তুত হয়েছে। অখন্ড করে মুক্তমনায় ছেড়ে দিবো অতিশীঘ্রই।
মানিক ভাই, ধন্যবাদ।
ব্রাভো রায়হান।
এইরকম লেখা দিয়েই কুসংস্কার, কন্সপাইরেসি আর অন্ধত্ব দূর করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
:yes: রায়হানকে এবার মুক্তমনায় লেখক হিসেবে দেখে ভাল লাগল ।
মুক্তমনার নিয়মিত পাঠক ও শুভান্যুধায়ীদের অন্যতম রায়হান । রায়হানের সাথে আমার যতবার আলাপ হয়েছে বিষয় হিসেবে মুক্তমনা ছিল সব সময় ।
এই থ্রেড পড়ে মনে হল, কি করে মানুষ এইসব ধাপ্পাবাজিতে এখনো বিশ্বাস করে। জীবনের উদ্দেশ্যত পরবর্ত্তী প্রজন্মকে আরো ভাল ভাবে বাঁচিয়ে রাখা। একটা সময়ে সেই রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেসের পেছনে ধর্মগ্রন্থগুলির ভূমিকা নিশ্চয় ছিল। কিন্ত বর্তমানে এই ধর্মগুলির ভূমিকা ঠিক কি? গরুর গায়ের পোকার মতন মানব সভ্যতার গায়ে লেগে আছে। যারা ছেলে মেয়েদের জোর করে ধর্ম বিশ্বাসী বানাতে চাইবে, সেই সব ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত সেখানেই শেষ করে দেবে। এবং জানবেও না তাদের অন্ধ বিশ্বাসে তারা তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে জীবন সংগ্রামে ুরর্বল করে দিল।
একজন নাস্তিককে যতটা মানসিক শক্তি দিয়ে বেঁচে থাকতে হয়-আস্তিক সেখানে ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে বেঁচে থাকে। ফলে সে ঈশ্বরের হাগুমুতু ( এই সব ধাপ্পাবাজি, জিহাদ ইত্যাদি) ও চরনামৃত বলে হজম করে। আসলে সে ভীষন ভাবে মানসিক দিক দিয়ে দুর্বল। ফলে এই সব ধাপ্পাবাজি তাকে যা বোঝাবে সে সেটাই বিশ্বাস করবে।
রাশাদ খলীফার কিছু আয়াতের নিজস্ব ব্যাখ্যা, ভক্তদের আনুগত্য, তাকে নিজের সম্বন্ধে reformer হিসেবে না ভেবে, মেসেঞ্জার হিসেবে আখ্যায়িত করতে অনুপ্রানিত করেছে। কারন মানুষ মাত্রই নিজেকে গুরুত্ব দেয়ার প্রবনতা আছে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে কোরানের সত্য বানী উৎঘাটনের জন্যই তাকে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এই ভাবনা শুরু হয় তার হাদীসগুলো বাদ দেবার পর থেকেই। যখন সে কোরানের প্যাটার্ন আবিস্কার শুরু করলেন, তিনি প্রতিটি শব্দ খুব ভালভাবে বিশ্লেষন করতেন এবং বিশ্বাস করতে শুরু করেন এটা অবশ্যই খোদার বানী এবং এর প্রমান এর ভিতরেই আছে। তিনি এই প্যাটার্নের ভিতর যে আয়াতটি পড়বে না সেটিকেই বাদ করতে চেয়েছেন এবং সেটি আল্লাহর বানী নয় বলতে চেয়েছেন এবং এই ধারনা থেকেই তিনি বুঝতে পারলেন হাদীসগুলো এই টেষ্টে ধোপে টিকবে না। যারা তার সাথে কাজ করেছেন তাদের কেউ কেউ এখনো বিশ্বাস করেন কোরানে ১৯ প্যাটার্ন বিদ্যমান এবং এর জন্য আরো গবেষনা প্রয়োজন।
তার হাদীস অস্বীকারের পর থেকেই তার আবিস্কার ইসলামিক বিশ্বে ছড়িয়ে পরে। এইবভাবে ধর্মের উপর আঘাত মোল্লাশ্রেণী এবং হাদীস-সুন্নাহ বিশ্বাসী লোকদের জন্য খুবই মর্মান্তিক হলো এবং অনেক লেখা বের করা হলো এর বিরুদ্ধে যে, ১৯ প্যাটার্ন একটা hoax. এই বইগুল লেখা হলো তাদের দারাই যারা একদিন তাকে এই কোড আবিস্কারের জন্য প্রশংসা করেছিলেন। খলীফার কোরানের প্রতি মনোভাব দ্বারা সুন্নীরা এখনো প্রভাবিত। তিনি কোরানের ব্যখায় একে ধর্মীয় বই এবং ritual বিষয়গুলোকে অনেক বেশী প্রাধান্য দিয়েছেন। যেমন তারই একজন প্রাক্তন অনুসারী বলেছেন,
তার বক্তব্য অনুসারে, খলীফা নিজেকে মেসেঞ্জার হিসেবে ঘোষনা দেবার পর থেকেই তার অনুসারীরা তাকে ছেড়ে যেতে শুরু করে, কিন্তু আবিস্কারকের হঠকারিতার জন্য তার আবিস্কারকে অবহেলা না করতে অনুরোধ করেছেন। খলীফা মনে করতেন monotheistic Christian or Hindu বেহেশ্তে যাবে শুধুমাত্র একজন গডের উপর বিশ্বাস রাখে। কিন্তু খলীফা সম্পুর্ণ কোরানের পলিটিকাল অংশটি উপেক্ষা করেছেন। তার প্রাক্তন এই অনুসারীর মতে, তিনি যদি বেঁচে থাকতেন তবে তার কোডিং ধারনার সত্যি সঠিক রুপটি উন্নয়ন করতে পারতেন। তাই তিনি শুধু মাত্র তার ভুলগুলোকে বিচার না করে তার সাফল্যগুলোকে মূল্যায়ন করতে অনুরোধ করেছেন।
এখানে একটে ১৯ কোডের উদাহরন দেয়া হলো। আমরা যদি সুরা আল-ফাতিহা recite করি তবে দেখব
বা ও মিম উচ্চারনের সময় আমরা ঠোঁট ১৯ বার একসাথে করছি। বাকী অংশটি add দেলাম।
Lets count them:
Bismi Allāhi Ar-Raĥmāni Ar-Raĥīmi = 4
Al-Ĥamdu Lillāhi Rabbi Al-`Ālamīna = 3
Ar-Raĥmāni Ar-Raĥīmi =2
Māliki Yawmi Ad-Dīni = 2
‘Īyāka Na`budu Wa ‘Īyāka Nasta`īnu = 1
Ahdinā Aş-Şirāţa Al-Mustaqīma = 2
Şirāţa Al-Ladhīna ‘An`amta `Alayhim = 2
Ghayri Al-Maghđūbi `Alayhim Wa Lā Ađ-Đāllīna = 3
4+3+2+2+1+2+2+3= 19
The missing Bismilleh of Surah 9 can be found in the letter of Queen Sheba in Surah 27, exactly 19 surahs later.
In surah 2 verse 55, it is told that the Jews demanded to see God, this is the 19th time the word God is mentioned in the Quran starting from Al-Fatiha.
সবাইকে ধন্যবাদ।
আইভি
@আইভি,
“তিনি এই প্যাটার্নের ভিতর যে আয়াতটি পড়বে না সেটিকেই বাদ করতে চেয়েছেন এবং সেটি আল্লাহর বানী নয় বলতে চেয়েছেন”
মানে ১৯ প্যাটার্নে পড়ে না এমন কোরানিক আয়াতকেও তিনি বাদ দিতে চেয়েছেন? তাই না? তার মানে তো দাড়ায় যে আবীর রায়হান যা বলে শুরু করেছেন তার স্বীকৃতি। আবীর বলেছেনঃ “যেকোন বই থেকেই আপনি “বিশেষ কিছু অংশ”/অপশন বাছাই করতে পারেন। তারপর যেই যেই অপশন আপনার মিরাকল প্রমানে কাজে লাগবে তা রেখে (ধরুন সাত দ্বারা বিভাজ্য) বাকিগুলো ফেলে দিতে পারেন।”
বুঝতে পারছেন তো কি বলছি? এখন যদি নিরপেক্ষ কেউ বলেন যে আসলে গডের বানী ফানী ভূয়া কথা, খলিফা সাহেব যা তার ১৯ তত্ত্বকে প্রমান করে তাই তার হিসেবে রেখেছেন, যা ১৯ তত্ত্বে পড়ে না তাকে বাদ দিয়েছেন, বললে কি খুব অযৌকিক্ত শুনাবে?
@আদিল মাহমুদ,
১৯ প্যাটার্নের মাধ্যমে আয়াত বাদ দিতে চেয়েছেন –এর মানে হচ্ছে তার (খলীফা) মতে, সেই আয়াতটি পড়ে ঢোকানো হয়েছে। আমি এই বিষয়ে নিজ়স্ব কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলাম। তবে একটা ব্যাপার আমাকে খুব আগ্রহী করে তোলে। কোরান তো একটা লিখিত বই; এই রকম আর কোন বইয়ের খোঁজ কি পেয়েছেন যার structure, form, ricitation নিয়ে সংখ্যার খেলা খুঁজে পাওয়া যায়?
ধন্যবাদ।
আইভি
@আইভি,
হ্যা যায়। ইহুদিদের বিখ্যাত শেমহামেফোরাস-এর উদাহরণ রায়হান আবীর তার লেখাতেই দিয়েছেন। বাইবেলের অনেক কিছুই ৭ সংখ্যাটি দিয়ে বিভাজ্য তা দাবী করা যায়। যেমন,
“In the beginning God created the heavens and the earth.”
The verse consists of 7 Hebrew words and 28 letters (7 x 4). There are three nouns: ‘God, heavens, earth.’ Their total numeric value (Hebrew has no numbers but these are represented by letters: the sum of the number letters being the numeric value) is 777 (7 x 111). The verb ‘created’ has the value 203 (7 x 29). The object is contained in the first three words – with 14 letters (7 x 2) The other four words contain the subject – also with 14 letters (7 x 2). The Hebrew words for the two objects – “the heavens and the earth” – each have seven letters.
The fourth and fifth words have 7 letters. The value of the first, middle and last letters in the verb ‘created’ is 133 (7 x 19) the numeric value of the first and last letters of all the words is 1393 (7 x 199) and the value of the first and last letters of the verse is 497 (7 x 71). The Hebrew particle ‘eth’ with the article ‘the’, used twice, has the value 407 (7 x 58) and the last letters of the first and last words equal 490 (7 x 70).
In all, there are over 30 different numeric features related to 7 in this verse. The odds against the above features occurring by chance are 33 Trillions:1.
But the number seven is also interwoven throughout the Bible. Creation took 7 days; Naaman had to wash 7 times in the Jordan to be cleansed from leprosy; the Israelites had to march around Jericho 7 days and 7 times on the 7th day; they had to set aside one day in 7 for rest and worship. There was a 7-armed lampstand in the temple, etc. In the last book, Revelation, we find mentioned 7 spirits, 7 lampstands, 7 churches, 7 stars, 7 seals, 7 trumpets, 7 vials, 7 thunders, 7 plagues, 7 mountains and 7 kings. The tribulation period is to be 7 years being the last “week of years” of Daniel’s 70 weeks (Dan 9:24 ff).
Beyond this we know that the incubation period of the human embryo is 280 days (7 x 40). In Genesis we are told that man was formed from the dust of the ground. The “dust of the ground” contains 14 (7 x 2) elements, and so does the human body. Every cell in the human body is renewed every 7 years and every 7th day the pulse beats slower. In certain diseases the critical days are the 7th, 14th, 21st, etc. and the female cycle is 28 (7 x 4) days. Light is made up of 7 colours, the moon completes its orbit around the earth in 28 days (7 x 4) and the earth is 49 (7 x 7) times larger than the moon. …… ইত্যাদি।
কিন্তু এগুলো সবই সিলেকশন বায়াস -এর উদাহরণ । ইচ্ছে করলেই যে কেউ এ ধরনের মিল যে কোন বই খুলেই দেখিয়ে দিতে পারে। হিন্দু রা আবার দাবী করেন তাদের ঋকবেদ-এ নাকি ২ এর মাহাত্ম্য আছে। কারণ আমাদের সব কিছুই দুই – দুই হাত, দুই পা, দুই চোখ, নারী -পুরুষ দুই সত্ত্বা। চাঁদ আর সূর্য -আবারো দুই !
মধুসূদনের সনেটেই অমিত্রাক্ষর ছন্দ পাওয়া যায়। পাওয়া যায় চোদ্দ শব্দ আর লাইনের সনেট। বড় বড় কবিদের অনেকে কবিতাতেই আশ্চর্যজনক ছন্দ খুঁজে পাওয়া যাবে। যেমন আমি পাই আমার প্রিয় কবি সুকুমার রায়ের সব কবিতাতেই।
@আইভি,
আবীর কিন্তু প্রথমেই দেখিয়েছেন যে একটু চাতূরীর আশ্রয় নিলেই যেকোন বই থেকে সংখ্যার খেলা খেলা যায়। রাশাদ খলিফা বেশ বিতর্কিত উপায় বেছেছিলেন বলেই তো প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই “আর কোন” বই বলাটা মনে হয় উচিত নয়। “আর কোন” বলা মানে হচ্ছে যে কোরান ছাড়া। যেখানে কোরানেই সংখ্যার মিল পাওয়াটা বেশ বিতর্কিত। আবীর দেখিয়েছেন।
আমি অভিজিতদের মত এসব নিয়ে অত গবেষনা তো করিনি, তবে এই জাতীয় কিছু উদাহরন মাঝে মাঝেই চোখে পড়েছে। যেমনঃ লিঙ্কন কেনেডীর ব্যাপারটাই ধরুন না। এই জাতীয় আরো কিছু উদাহরন আছে।
সেবা প্রকাশনীর “বিশ্বের বিস্ময়” নামে একটা সিরিজ ছিল। তাতে একটা বিস্ময়কর জিনিস ছিল এই রকম; যেকোন একটা বই খুলুন, তারপর কিছু ষ্টেপ ছিল আজ আর তা মনে নেই। বিস্ময়কর ব্যাপারটা হল যে, আপনি যেকোন বই খুলে যেকোন পেজ থেকে শুরু করতে পারেন, শেষ পর্যন্ত একই সংখ্যা উত্তর পাবেন, অনেকটা এমন। দূঃখিত, আজ আর পুরোটা মনে নেই। তবে সেসময় অনেক বই নিয়ে পরীক্ষাটা করে দেখেছি, উত্তরে কখোন ভুল পাইনি।
ক্যালিফোর্ণিয়ার একজনের কথা বেশ কয়েক বছর আগে শুলেছিলাম, তিনি নাকি বাইবেলের পুরনো সংস্করন ব্যাবহার করে যেকোন মানুষের জন্ম, মৃত্যু বলে দিতে পারেন। ওনাকে নাকি একবার ওপ্রাহ ইউনফ্রেও তার অনুষ্ঠানে এনেছিলেন যদিও নিজের মৃত্যু কবে জানাতে চাইলেও জানতে চাননি। এই ভদ্রলোক নাকি বাইবেল দেখে কিসব গণনা করে বলে দিতে পারেন। আরো কত কি।
@অভিজিত দা,
আচ্ছা অভিজিত দা, কোরানে কি পরবর্তী সময়ে মেসেঞ্জার এর আবির্ভাবের বিষয়ে কিছু বলা আছে? যদি না থাকে, তবে এই রাশাদ খলিফার আয়াত বাদ দিয়ে নতুন কোরানের উদ্ভাবন কে কিছু বিশ্বাসীদের আজও বিশ্বাস করে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা দেখে, তাদের বিশ্বাসের প্যাটার্ন সম্পর্কে জানতে প্রবল কৌতুহলের উদ্রেক হয়। কারন যদিও কোরান আল্লার কাছ থেকে মুহাম্মদের মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছে বলে বিশ্বাসীদের নি:সংশয় দাবী, তথাপি রাশাদ খলিফার কোরানে বিশ্বাস করলে, মুহাম্মদের কোরান কে আল্লাহ প্রদত্ত নয় বলে বিশ্বাস করতেই হয়। বিশ্বাসের বৈশিষ্ট্যই বোধ হয় এরকম স্ববিরোধীতা। এই জগতে বোধ হয় একমাত্র লজিক্যাল অ্যানালাইসিসেই স্ববিরোধের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। এছাড়া যেকোন বিষয়েই স্ববিরোধ থাকার সম্ভবনা থেকেই যাচ্ছে। সুতরাং লজিকের বিপরীত বিশ্বাসের ভিত্তিতে চালানো গবেষনায় স্ববিরোধের অস্তিত্ব থাকার সম্ভবনা সবথেকে বেশী কারন বিশ্বাস জিনিসটাই যে স্বিরোধকে সসম্মানে গ্রহন করে। স্বয়ং বিশ্বাসীরাই যে এর প্রমান উত্ফুল্ল চিত্তে, লজ্জাহীন ভাবে অহরহ তাদের বিশ্বাসের ধরনের মধ্য দিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন।
অবাক এই জগত।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনেকদিন ধরেই মুক্তমনায় ঘোরাঘুরি করি। কিন্তু কখনও লেখার সাহস পাই নাই। কারণ বেশির ভাগ বিশ্লেষণ ধর্মী প্রবন্ধ অতন্ত্য বড় কলবরে, অসংখ্য তথ্য সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। আমি হালকা ফাইজালামি টাইপ লেখক। তাই এখানে শুধু পড়ে যাই।
মিরাকল নাইন্টিন নিয়ে “বিজ্ঞানময় কুরআন” লেখাটায় অভিজিৎদার কাছে জানতে চেয়েছিলাম। উনি লিংকগুলো দেন, সেদিন রাতে পড়ে দেখেই আমি বিশাল টাশকি। এইরকম জালিয়াতি। তখনই ভেবেছিলাম বাংলায় একটা পূর্ণাংগ প্রবন্ধ লিখবো। কিন্তু লেখা হয় নি।
কয়েকদিন আগে কুরআনকে মহিমান্বিত করতে যেয়ে একজন মিরাকল নাইন্টিন পেড়ে বসলেন। আমি ভাবলাম আর না। সেই কারণে লিখে ফেলা। লেখাটির অনেক কিছুতে মুহাম্মদ (শিক্ষানবিস) আমাকে সহায়তা করেছে।
মাথার মধ্যে মুক্তমনার দেয়ার জন্য বেশ কিছু লেখার প্ল্যান আছে। যদি কখনও লিখতে পারি, দিয়ে দেবো। আমার মতো একজন মানুষও যদি মুক্তমনার কারণে ধর্মের অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে পারেন, তাহলেও তো অনেক।
@রায়হান আবীর,
ভাই এবার তো সাহস পেলেন, আরো বেশী করে সময় দেন, এই জাতীয় লেখা দেন। অপেক্ষায় থাকব।
@রায়হান আবীর,
বেড়ে হয়েছে ভাই!আরও একটু রস দিলে আমার মত হালকা ফাজিল টাইপের পাঠকের কাছে আরও ভালো লাগতো 😉 ।আর সত্যিই আপনার লেখার দৃষ্টিভঙ্গি চমৎকার।আরো আরো লেখা লিখুন এবং চূড়ান্ত ফাজলামো করে অপ্রিয় সত্যগুলো উদঘাটন করুন। 😀
Rashad Khalifa has divided the Qur’an according to his own convenience.
Please take a Qur’an (Yusuf Ali do) and Count the number of verses.
I did that, and found that number to be 6, 239. This number is not divisible by 19.
Some other person did the counting and he came up with the number of Qur’anic verses to be 6, 236. This number is also not divisible by 19.
Some Mullahs say the number of verses in the Qur’an to be 6, 666. How nice–there are four sixes. This counting is certainly wrong. Again, this number is also not divisible by 19.
So it appears only Rashad Khalif’a’s number of verses, 6, 346, is divisble by 19. How cunning.
Please do the counting and verify for yourself.
AK
@Abul Kasem,
কোরানের আয়াত সংখ্যা কত এই নিয়েও দেখা যাচ্ছে যে মতভেদ আছে। যা বুঝলাম তাতে মনে হয় এটা আয়াত কাকে বলা যায় তার উপর নির্ভর করে।
কারো কারো মতে নম্বরবিহীন ১১২ টি বিসমিল্লাহ সহ কোরানের মোট আয়াত ৬,৩৪৬ যা রাশাদ খলিফা ব্যাবহার করেছেন। এর মধ্যে আবার প্রথম সূরাতে নম্বরওয়ালা বিসমিল্লাহ আছে।
http://answers.yahoo.com/question/index?qid=20071115164548AANYsOC
আমাদের মডারেটর সাহেব দেখি অনেক ব্যস্ততার মাঝেও ছোট ছোট ব্যাপারগুলিও বেশ মনে রাখেন।
হ্যা, আমি অনেকদিন থেকে এই লেখাটির অপেক্ষায় ছিলাম। ইংরেজী কিছু পড়েছি অভিজিতের দেওয়া লিংকগুলি থেকে, কিন্তু বাংলায় না পাওয়া গেলে কি আর মনের সাধ মেটে? তবে এ বিষয়টি বোঝা খুব সরল নয়, একটু ধৈর্য্য ধরে ধীরে ধীরে পড়ে বুঝতে হবে। লেখক যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন এটাকে সরল করে লিখতে।
অভিজিতের উল্লেখ করা আলোচনায় সম্ভবত অনন্ত বিজয় বলেছিলেন একটু ধৈর্য্য ধরতে, যুক্তির পরের সংখ্যায় এ বিষয়ে পূর্নাংগ লেখা আসছে। জানি না সে লেখা এসেছিল কিনা।
তবে সংখ্যাতত্ত্বের কিছু আজব খেলা কিন্তু আসলেই দেখা যায়। যেমন; আমাদের সবার জানা আব্রাহাম লিঙ্কন ও জন এফ কেনেডির সংখ্যাতাত্ত্বিক মিল খুবই আজব কো-ইন্সিডেন্স। রাষ্ট্রপতি জিয়া যখন মারা যান, আমরা তখন নিতান্তই শিশু, তখন ও মনে পড়ে একজন বিচিত্রায় জিয়ার জীবনে ৭ নাকি ৯ কোন সংখ্যার বিরাট প্রভাব দেখিয়েছিলেন।
লেখককে আবারো ধণ্যবাদ।
@আদিল মাহমুদ,
আসলে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে না দিয়ে মুক্তমনে যদি বিশ্লেষণ করেন, তাহলে দেখবেন, লিঙ্কন-কেনেডীর কোইন্সিডেন্সগুলো আসলে মিরাকেল কিছু নয়, বরং অনেকগুলোই অতিরঞ্জিত। আমি অনেক আগে এ নিয়ে লিখেছিলাম এখানে। অপার্থিবেরও একটা উত্তর ছিলো, সেটা পাওয়া যাবে এখানে। দেখতে পারেন।
@অভিজিৎ,
বলেন কি! অবশ্যই পড়ে দেখব। লিংকন কেনেডীর সংখ্যাতাত্ত্বিক মারম্যাচেও তাহলে ফাক আছে? আমার ধারনা ছিল এটা বিতর্কের উপর।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল ভাই, এটাই কি আপনার মুক্তমনার ধরন । আপনি যুক্তির কথা বলেন, কিন্তু আপনি ই আবার “এটা বিতর্কের উপর” বলেন । আশ্চর্য ।
**আরবি ভাষা না জেনে কুরানে সংখ্যাত্বত্ত আছে, কি না , তা নিয়ে চিন্তা করা, পাগলামি ছাড়া, আর কিছুই নয় । **
কুরানে সংখ্যাত্বত্ত থাকলেই বা কি, আর না থাকলেই কি । এতে তো কিছু যায় আসার কথা না ।
শেখ আহমেদ দিদাত তো Scientist ছিলেন না, Science এর বইয়ের চেয়ে, উনার খিষ্ঠান ধর্ম সম্পর্কিত বই গুলি পড়েন । ভাল বুঝতে পারবেন । তাছাড়া, উনি উনার সময় অনুষারে লিখেছেন । জিবিত থাকলে হয়তো আপনাদের প্রশ্নের উত্তর উনি দিতে পারতেন ।
আর একটি বিষয়, ধরেন একজন একটি বিষয় বলল, আরেক জন বিরোধিতা করল , ঐ বিষয়ে প্রথম ব্যাক্তির কি পরবর্তি মতামত, তাও জানা উচিত। আমি মনে করি ।
Sincerely
Fuad
@ফুয়াদ,
আমি তো ভাই নিজেকে মুক্তমনা বা বদ্ধমনা কোন কিছুই দাবী করি না। নেহায়েত কৌতূহল থেকে এই সাইটে আসি, অনেক কিছু শিখতে পারি, জানতে পারি যার সুযোগ সহজে পাওয়া যায় না, যেমন ধরেন না এই কেনেডি-লিংকনের ব্যাপারটাও। আমার ধারনা ছিল এটা খুবই শক্ত ভিত্তির একটা জবর কো-ইন্সিডেন্স, এখন দেখছি আসলে তত শক্ত ভিত্তির না।
বিতর্কের উপর বলেছি যে এই বিষয় ছোটবেলা থেকে এতবার শুনেছি যে এটাও যে অন্য কোন ব্যাখ্যা থাকতে পারে তা ধারনাতেই আসেনি।
আমি এখানে সম্পুর্ণ একমত। কাজেই এ ধরনের কাজ বলপূর্বক করা নিশ্চয়ই অন্যায়, কি বলেন? কোরান মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য বা একমাত্র জীবন বিধান বলে প্রতীয়মান হলে মানুষ এমনিতেই কোরান গ্রহন করবে। তার মধ্যে মিরাকল আছে, বিজ্ঞানের সব থিয়োরী লিখা আছে এমনধারা কথাবার্তা প্রমানের চেষ্টার কি কোন কারন আছে?
ঠিক। আমিও একমত। রাশাদ খলিফা তার জীবিতকালেই অনেক মোসলমানের দ্বারাই তীব্রবাহবে সমালোচিত হয়েছিলেন। আইভির কথাতেই দেখুন দেখা যাচ্ছে যে তিনি তার খূশীমত কোরানের কিছু আইয়াত গডের নয় বলে রায় দিয়ে বাদ দেবার চেষ্টা করেছিলেন। আপনি কি বলেন? ওনার কি বক্তব্য থাকতে পারে?
@আদিল মাহমুদ,
হা একমত । তবে কেউ ঐ বইয়ের বৈশিষ্ঠ হিসাবে নিজের মতামত বললে দোষ হওয়ার কথা নয় । সবকিছুই নির্ভর করে ধারনার উপর ।
ধরুন আমি একটি বইলিখলাম সংখ্যা মিলিয়ে, এজন্য তো আল্লাহর বানী হয়ে যাবে না । তাই বলে কি আল্লাহর বানী, সংখ্যা ত্ব সাথে মিলে গেলে মানুষের বানী হয়ে যাবে । তাও না ।
________________________________
আবার সব কিছু বিশ্বাস বলাটাও বুকামি, এমন ও তো হতে পারে মানুষের মধ্যে কেউ কেউ সত্যিই আল্লাহ বুঝতে পারে ।
আমি নিজের দিকে তাকাই, নিজেকে বাটপার, ধ্বাপ্পাবাজ মনে করতে পারি না । অথবা, নিজেকে, ভালর জন্য, বিরাট মিথ্যার আশ্রয় কারীও মানুষ হিসাবে ভাবতে পারি না । তাই আমি নবী সঃ বিশ্বাস করতে পারি । বিশ্বাস করতে পারি তার প্রতিটি কথা ও কাজ কে ।
________________________________
যুক্তি তো সব জায়গায় ই আছে, তার কি কোন শেষ আছে । যেমন, আমি আমার নিজের যুক্তি অনুযায়ী চলি । আপনি আপনার । তাই অন্য মানুষ গুলো যুক্তিহীন{ধার্মিকরা}, এটাও ভুল ধারনা ।
________________________________
এখন, যদি আপনি যুক্তির সংজ্ঞা দার করিয়ে বললেন, এর ভিতরে পরলে যুক্তি, না হইলে না, তাহলে ও ভুল হবে, যুক্তির সংজ্ঞা সবার কাছে একরকমন হবে না ।
________________________________
যুক্তি দিয়ে ধর্ম হয়না, কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসের অনেক মানুষ যুক্তি দিয়ে ইসলাম পেয়েছে ।
________________________________
আবার বিজ্ঞান দিয়ে ধর্ম আনা কারো মতে বিদাত, মানে ইবাদতের নামে নুতুন কিছু সংযোগ করা । যেমন : মওলানা মওদদী রঃ তফসির আল কুরান {বিদাত} অথবা ডঃ জাকিরের রঃ বিজ্ঞানিক ব্যাক্ষা{বিদাত} । ঐ বিষয় গুলো, তারই বিষয় যে ঐ গুলো বুঝতে পারে, Only তার জন্য Reference , কিন্তু সর্বসাধারনের জন্য নয় ।
________________________________
যদি বলেন, আমিযে এখানে লেখতেছি ঐটাও বিদাত, আমার যুক্তিতে না । আগে মানুষ পাথরে লিখত, এখন web site Internet এ ।
________________________________
ডাঃ খলিফা বিদাত করতে করতে নিজেই ডুবে গেছেন । ডাঃ খলিফা আসার আগেও ইসলাম ছিল, এখন ও আছে । কি লাভ সংখ্যাত্বত্ত দিয়ে ? তবে নিজের মতামত হইলে, আমি কিছু বলবো না । ধরমের আসংশ বললেই, সমস্যা ।
আমার মনে আছে, আমি যখন আমাদের মুক্তমনা সাইটটিকে ব্লগ আকারে দাঁড় করাচ্ছিলাম, তখন রানা ফারুকের একটি পোস্টে সম্ভবতঃ আদিল মাহমুদ রাশাদ খলিফা প্রসঙ্গের অবতারনা করেন। আমি তাকে সেসময় বেশ কিছু উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছিলাম কিভাবে ডক্টর রাশাদ খলিফা কোরান ডক্টরিং-এর মাধ্যমে ‘মিরাকেল ১৯’ তত্ত্ব সাজিয়েছেন। আদিল মাহমুদ সে সময় কনভিন্সড হলেও একটি পূর্ণাংগ প্রবন্ধের দাবী করেছিলেন। রাশাদ খলিফাকে নিয়ে সংশয়বাদী দৃষ্টিকোন থেকে একটি লেখার চাহিদা ছিল তখন থেকেই। রায়হান আবীরের সুলিখিত প্রবন্ধটি সে অভাব অনেকাংশেই পূরণ করবে। এ প্রবন্ধটি দেখেই বুঝেছিলাম প্রথম কমেন্টটি আদিল মাহমুদের কাছ থেকেই আসবে সম্ভবতঃ 😀
যা হোক, একটি জিনিস আবারো উল্লেখ করা প্রয়োজন। কারণ অনেকেই ব্যাপারটি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল নন। রাশাদ খলিফার কোরানে (সাবমিশন ডট অরগ সাইটে রাশাদের অনুবাদ করা কোরান রাখা আছে) যদি চোখ রাখা যায় তা হলে দেখা যাবে, উনি ১৯ তত্ত্বকে সার্থকতা দিতে গিয়ে ৯:১২৮ এবং ৯:১২৯ – এই আয়াতগুলো গায়েব করে দিয়েছেন। খালিফার কোরানে ওই দুটো আয়াত নেই। এবার ইন্টারনেটের যে কোন ইসলামিক সাইট থেকে কোরানের অন্য অনুবাদগুলোতে (যেমন, এটি) চোখ বুলিয়ে নিন। আপনি রাশাদ খলিফার কোরান টেম্পারিং এর জলজ্যান্ত উদাহরণ হাতে নাতে পেয়ে যাবেন। আবার কোন কোন সুরাতে খালিফা নিজের নাম পর্যন্ত বসিয়ে দিয়েছেন অনুবাদে (যেমন, ৮১:২২)। এগুলো রাশাদ খলিফার কোরান টেম্পারিং এর ছোট্ট কিছু উদাহরণ। রায়হান আরো বিস্তৃত দৃষ্টিকোন থেকে ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করেছেন।
রায়হান আবীরের এ লেখাটি ছাড়াও আরো দুটো প্রাসঙ্গিক লেখা আছে আমাদের সংকলন গ্রন্থ – ‘বিজ্ঞান ও ধর্ম – সংঘাত নাকি সমন্বয়?’ এ। লেখক ছিলেন ব্লগার নাস্তিকের ধর্মকথার। লেখাগুলোর লিঙ্ক নীচে দিলাম –
* ডিম্বের সন্ধান এবং রাশেদ খালীফা ও তার ম্যাথমিটিকল মিরাকল
* অলৌকিক সংখ্যাতত্ত্ব
তবে রায়হানের এ লেখাটি তথ্যে গুনে নিঃসন্দেহে তুলনাহীন। আরো একটি কারণে এ লেখাটি আমার ভাল লেগেছে – লেখাটিতে লেখকের তরফ থেকে প্রতিপক্ষের প্রতি কোন ধরণের উষ্মা প্রকাশ পায় নি, যা ধর্ম সংক্রান্ত স্পর্শকাতর লেখালিখিতে খুবই বিরল। লেখাটির স্টাইল এবং শব্দচয়ন মুক্তমনা লেখকদের জন্য আদর্শ হতে পারে।
নীচে আরো কিছু প্রাসঙ্গিক ইংরেজী লেখার লিঙ্ক দেওয়া গেল –
* Numerical Miracles of the Quran
* The Miracle of 19
* The Mysterious 19 in the Quran : A Critical Evaluation
* A Numeric Miracle of the Number 19?
* The Myth of Scientific Miracles in The Quran: A Logical Analysis
লিঙ্কগুলো ইচ্ছে করেই দিলাম। থাকুক এই পোস্টটির সাথে। ভবিষ্যতে কেউ খোঁজ করলে পেতে সুবিধা হবে।
সাবাস রায়হান আবীর। দুর্দান্ত বিশ্লেষণ।
সুন্দর বিশ্লেষন, বছর তিনেক আগে রাশাদ খলিফার নিউমেরিক্যাল মিরাকল পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম, পরে ঘটনা জানতে পেরে ততোধিক দূঃখ পেয়েছি। তবে এই লেখার আগে এভাবে পূর্নাংগ বিশ্লেষন বাংলায় আগে দেখিনি।
ধর্মবাদীরা ধর্মের সমালোচনাকারীদের খুব কঠোর চোখে দেখেন। তাদের একটা সাধারন অভিযোগ (বিশেহ করে সরব ইসলাম ডিফেন্ডার যারা) হল যে নাস্তিক বা বিধর্মীরা ইসলামে কালিমা লাগাতে ইচ্ছে করে বিকৃত করে প্রকাশ করে। এতে আমারো সন্দেহ নেই, কেউ কেউ বা অনেকেই এটা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে করে থাকতে পারেন।
কথা হল, একই যুক্তিতে যারা ধর্মকে অতিমহিমান্বিত করতে একই কাজ করেন তাদের বেলায় কি হবে? নাকি ধর্মের নামে মিথ্যা, ছালচাতূরীপূর্ণ ব্যাখা, গাজাখুরী গল্প চালানো জায়েয আছে?