(লেখার সাথে বিবর্তন-বিরোধের কোনো সম্পর্ক নেই।)
আমি এখন পাশ্চাত্য সভ্যতার এক অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকের বিষয়ে আলোকপাত করব। বিজ্ঞানকে এই সভ্যতা একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে আমাদের সাংস্কৃতিক উপনিবেশ বানাতে চায়। আমাদের দীর্ঘদিনের সভ্যতা আজ এই সভ্যতার হাতে ক্ষতবিক্ষত। কিভাবে আমাদের সভ্যতা বিজ্ঞানের করালগ্রাসে পড়েছে তার একটা নমুনা তুলে ধরব এবার।
যেমন ধরা যাক মহাকর্ষ সূত্র। এই সূত্রের কোনো প্রমাণ নেই, আদপে সূত্র শুরুই হয় কিছু স্বতঃসিদ্ধ দিয়ে যেগুলোকে কেউ কোনোদিনও প্রশ্ন করতে পারবে না। দুটি মহাজাগতিক বস্তু একে অপরকে নাকি নিজের দিকে টেনে নেবার চেষ্টা করে। কেন করে তার কোনো উত্তর নেই। অথচ সেই অর্ধসত্যই বছরের পর বছর ধরে আমাদের স্কুলে ক্লাসে পড়ানো হয়ে চলেছে। এইভাবে আমরা আমাদের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে ঈশ্বরের বাণী ভুলে তারই পেছনে পড়েছি।
মহাকর্ষ সূত্র নিয়ে সংশয়ের শেষ নেই। আপেল পৃথিবীর মাটিতে পড়লে পৃথিবীরও তো আপেলের দিকে কিছুটা এগোনোর কথা – কিন্তু আমরা কি সেটা দেখতে পাই, বিজ্ঞানীরা কি সেটা মাপতে পারেন? বললে তো তারা হাস্যকর দাবী জানান, পৃথিবীর বিচ্যুতি নাকি এতই কম হয় যে তা মাপাই যায় না। শুধু তাই নয়, বলা হয় দুটো এরকম বস্তুর মধ্যে আকর্ষণ বল নাকি তাদের ভরের গুণফলের সমানুপাতিক। এও এক মজার গল্প – আসলে বল মাপার কোনো যন্ত্রই তো আবিষ্কৃত হয় নি, তাই এই ভাওতাবাজী চলবেই। তাই বল মেপে এই সূত্রকে রিফিউট করার কোনো সম্ভাবনাই নেই। এরপরে আসে এই কাল্পনিক মহাকর্ষ বল নাকি বস্তুদ্বয়ের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। বাঃ, ভরের বেলায় সোজাসুজি, আর দূরত্বের সময় বর্গ কেন? কোন উত্তর নেই।
জোয়ার-ভাঁটাকে ধরে নেওয়া হয় মহাকর্ষের পরোক্ষ প্রমাণ। পৃথিবীর যেদিকে চাঁদ সেদিকে নাহয় জোয়ার আসার একটা কারণ আছে – তার উল্টোদিকে তাহলে কেন হয়? এটা কি মহাকর্ষীয় বিকর্ষণ তাহলে? শুধু তাই নয় মহাকর্ষ দিয়ে শনির বলয় গঠনের ব্যাখ্যাও পাওয়া যায় না। আসলেই মহাকর্ষের তত্ত্ব দিয়ে যা ব্যাখ্যা করা যায় তার থেকে আরো অনেক বেশী জিনিস ব্যাখ্যা করা যায় না।
সবথেকে বড় জালিয়াতি তো সেই বল মাপার সময়। কি একটা ধ্রুবক দিয়ে গুণ করে বল মেপে ফেলা হচ্ছে। এর মানে কি? ইচ্ছা হলেই কি কোনো প্রাকৃতিক রাশিকে এভাবে গুণ করে ফেলা যায়? বাঃ, তাহলে তো আমিও এবার থেকে দূরত্বকে একটা ধ্রুবক দিয়ে গুণ করে বলব। আমার বাড়ি থেকে অফিস পাঁচ মাইল রাস্তা পাঁচ গজ হবে – কি মজা।
আরও বড় প্রশ্ন সময়কাল নিয়ে। আজকে দুটো বস্তু নাহয় একে অপরকে আকর্ষণ করে – কালকে তা নাও করতে পারে। আর কে দেখেছে আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে যে এই বলের অস্তিত্ত্ব ছিল? এতদিন ধরে পৃথিবীতে মহাকর্ষ থাকলে তো উল্কাপিণ্ডের আঘাতে আঘাতে পৃথিবীর জর্জরিত হয়ে থাকার কথা। শুধু তাই নয়, কয়েক বছর পরে তথাকথিত মহাকর্ষ বল দূরত্বের সমানুপাতিক হয়ে যেতে পারে, সে নিয়ে কি কেউ গবেষণা করছে?
মহাকর্ষ সূত্র একটা হাইপোথিসিস মাত্র যা দিয়ে সৌরজগতের কিছু গ্রহের আর চাঁদ-তারার অবস্থান সঠিকভাবে জানা যায় আপাতত। তাও সেই হাইপোথিসিসও সর্বজনগ্রাহ্য নয়, ইলেক্ট্রিকাল চার্জ বা ম্যাগনেটিজমের জন্যও আপাত-মহাকর্ষ প্রভাব হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু পশ্চিমারা আমাদের এমনই অন্ধ করে রেখেছে যে আমরা ঈশ্বর-বিশ্বাস দূরে থাক, বিজ্ঞানের অলটারনেটিভগুলোও ভেবে দেখাও ভুলে গেছি।
মহাকর্ষের আবিষ্কর্তা আইজ্যাক নিউটনও তার থিয়োরীর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন তার তত্ত্ব সমকালীন বিজ্ঞানীরা মেনে নেবেন না। তাই তিনি ফ্লাক্সিয়নস নামে একটি নতুন ধরণের অঙ্কের শাখা বের করেন যা কিনা এখন ক্যালকুলাস নামে পরিচিত। অবশ্য তিনি নিজেও গভীরভাবে ঈশ্বরবিশ্বাসী ছিলেন ও নিজেই স্বীকার করে গেছেন কোনো বুদ্ধিমান সত্ত্বার হস্তক্ষেপ ছাড়া তিনি গ্রহের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে ভাবতেই পারেন না। ১৬৯২ সালে ডাঃ রিচার্ড বেণ্টলিকে লেখা একটি চিঠিতে উনি লেখেন –
“আপনার প্রশ্নের উত্তর প্রসঙ্গে বলি গ্রহের বর্তমান গতিবিধি কেবলমাত্র প্রাকৃতিক কারণ দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। আমার ধারণা এই গতিবিধি কোনো বুদ্ধিমান সত্ত্বার দ্বারা প্রভাবিত। ”
তবে পশ্চিমাদের এই অপবিজ্ঞান আর বেশীদিন ধামাচাপা দিয়ে তারা রাখতে পারছেনা। এখন আবিষ্কৃত হয়েছে ডার্ক ম্যাটার – ঈশ্বরের নবতম সৃষ্টি। ডার্ক ম্যাটার এতদিনের বিজ্ঞানীদের সব হিসাবনিকেশ উলটে দিতে পারে। ঈশ্বর মনে হয় যেন মানুষকে শিক্ষা দেবার জন্যই এর উপস্থাপনা করেছেন। ঈশ্বরের সৃষ্ট জগতের রুলস শুধু তিনিই জানতে পারেন – তিনি সর্বশক্তিমান। শুধু তাই নয়, তিনি কিছুদিনের মধ্যেই মহাকর্ষ সূত্র পালটে ফেলে সারা পৃথিবীর মানুষকে শিক্ষা দিতে চান। আমরা যারা ঈশ্বরের মহিমায় বিশ্বাসী – তারাই কেবলমাত্র বেঁচে যাব। যারা অবিশ্বাসী তারা মহাকর্ষ সূত্র মেনে চলে এমন যন্ত্রে (যেমন স্পেশশিপ বা এরোপ্লেন) চড়তে যাবে আর ধুপধাপ পড়ে মরবে। এখনও সময় আছে আমাদের নিজেদের পথে ফেরার। এ জন্য দরকার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ আর ধর্মের প্রতি আস্থা ফেরানো।
সবশেষে মহাকর্ষ-বিশ্বাসীদের প্রতি একটা শেষ চ্যালেঞ্জ। পৃথিবীর কোনো জায়গায় দুটো বস্তু রেখে তাদের মধ্যে ন্যূনতম আকর্ষণ মেপে দেখাতে পারবেন কি তারা? না পারলে কে তাদের অধিকার দিয়েছে এই আজগুবি মহাকর্ষ সূত্র আমাদের ওপর চাপিয়ে দেবার?
সূত্র – ইন্টেলিজেন্ট ফলিং, কেনেথ মিলারের বই “Only a Theory”।
আমি আপনার কথায় একমত।কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি যে। আমার মনে হয় পৃথিবীর কেন্দ্রে এমন কোন জিনিস আছে যা পৃথিবীর অভ্যন্তর বাহির এবং বাইরের বায়ুমণ্ডলের নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত আকর্ষণ করছে। যে আকর্ষণ পৃথিবীর কেন্দ্রে বেশি এবং কেন্দ্র থেকে যতই দূরে যাওয়া যাবে ততই এর আকর্ষণ শক্তি কমে। আর অন্য কোন বস্তু বা গ্রহ পৃথিবীতে আঘাতে হানছে না কারণ ওইগুলার আকর্ষণ ও নির্দিষ্ট এবং সবকিছু সূর্যকে আকর্ষণ করে চলছে। আর সূর্যের আকর্ষণ শক্তি এমন যে কোন বস্তু নির্দিষ্ট সীমা ছাড়া তার কাছে ও যেতে পারে না আবার নির্দিষ্ট সীমা ছাড়া দূরেও যেতে পারে না।
বুঝি না
লিখাটি বেশ মজার হয়েছে। তবে মুক্তমনার ধর্মীয় কলিমার প্রতি অস্পৃক্ততার অগ্রীম স্বীকৃতি (লেখার সাথে বিবর্তন-বিরোধের কোনো সম্পর্ক নেই), জ্ঞাপন আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে। চমৎকার!
ধন্যবাদ আপনাকে,
খুব সুন্দর লিখেছেন, মনে হয় আমাদের জানার শেষ হবে না । আপনি আমাকে নুতুন একটি বিষয় এর পরিচয় করিয়ে দিলেন । আমার বন্দুরা মহকর্ষ বল নিয়ে অনেক প্রশ্ন করে ছিল, যুক্তিসঙ্গত Ans জানা ছিল না । এখন দেখি মহাকর্ষ বল ঈ ফেলে দেওয়া যায় । অদ্ভুদ এই পৃথিবী । যদিও এখন পর্যন্ত মহাকর্ষ বল আমাকে অনেক উত্তর দিতে পারতেছে ।
আপনাকে, আবারো ধন্যবাদ ।
@ফুয়াদ,
You totally misunderstood the article.
@Mithoon,
May be. thank you.
I just say that article is nice. and i introduced a new subject by writer. Where did you find misunderstanding ? I didn’t understand.
If you would know where I misunderstand, then please tell me, I would like to know new things.
@ফুয়াদ,
Please read the comment made by Abhijit Roy.
I think, you would be able to find out the point of misunderstood.
ভালো স্যাটায়ার হয়েছে দিগন্ত। বিবর্তনকে যারা মনে করেন ‘প্রমাণিত’ কোন বিষয় নয়, স্রেফ তত্ত্বকথার ফুলঝুড়ি, তাদের আগে মহাকর্ষ-এর দিকে দৃষ্টি রাখতে বলি। আসলেই তো দুটি বস্তুকনার আকর্ষণ বলকে স্রেফ ‘ইন্টিলিজেন্ট ফলিং’ দিয়ে ব্যাখ্যা করলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়, কেন অযথা মহাকর্ষ ধ্রুবক ফুবকের আমদানী, আর অযথা প্রাকৃতিক কারণ দিয়ে অহেতুক ব্যাখ্যা! প্রাণের উদ্ভব আর বিকাশের ক্ষেত্রে যারা ‘ইন্টিলিজেন্ট ডিজাইনের’ স্মরণাপন্ন হন, তারা মহাকর্ষকে ব্যাখ্যা করার জন্য ‘ইন্টিলিজেন্ট ফলিং’ এর শরণ নিচ্ছেন না কেন, কে জানে!