বাংলাদেশে ডারউইন দিবস
ডারউইনের দুশ বছর পূর্তি উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও কর্মশালা
প্রকৃতিবিদ ও জীববিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনতত্ত্ব কেবল মানুষের চিন্তায় পরিবর্তন আনেনি, জৈবপ্রযুক্তির গবেষণাসহ আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চার্লস ডারউইনের জন্নদ্বিশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিজ্ঞানচেতনা পরিষদ আয়োজিত বছরব্যাপী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ মিলনায়তনে বিকেল সাড়ে তিনটায় এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট প্রকৃতিবিদ অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা। উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘আমরা প্রযুক্তির বিরুদ্ধে নই। বর্তমানে পাঠ্যক্রম থেকে জৈববিবর্তনতত্ত্ব বাদ দিয়ে জৈবপ্রযুক্তিকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারা কী উদ্দেশ্যে উচ্চমাধ্যমিক স্তর থেকে জৈববিবর্তনতত্ত্ব বাদ দিয়েছে তা ঠিক জানি না। কিন্তু বিজ্ঞান থেকে প্রযুক্তিকে আলাদা করার ফল ভালো হয় না।’ পরে ‘জৈববিবর্তন: সাম্প্রতিক চর্চা ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. মনিরুল ইসলাম ও ডা. মাহবুবুর রহমান। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচক ছিলেন ড. আলী আসগর, আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক রাখহরি সরকার, ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ, অধ্যাপক এ এন রাশেদা। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নুরুননবী সিদ্দিকী। সেমিনারে বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা, নতুন নতুন রোগের প্রতিষেধক তৈরি, কীটপতঙ্গ প্রতিরোধী উদ্ভিদের গবেষণাসহ আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বিবর্তনতত্ত্বের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এর আগে সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে উৎসবের অংশ হিসেবে ‘জৈববিবর্তন: ভিত্তি, যৌক্তিকতা ও বিতর্ক’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালা শুরু হয়। কর্মশালা পরিচালনা করেন ডা. মনিরুল ইসলাম ও ডা. মাহবুবুর রহমান। কর্মশালার উদ্বোধন করেন সংগঠনের সহসভাপতি শফি উদ্দিন সরকার। শোভাযাত্রা: ডারউইন দ্বিশতজন্নবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি বিকেল তিনটায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শুরুর আগে কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক অজয় রায় বক্তব্য দেন। (সূত্র : প্রথম আলো)
এ ছাড়া শোভাযাত্রা নিয়ে দৈনিক সমকালের রিপোর্ট পাওয়া যাবে এখানে।
ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা শিক্ষানবিস-এর ফেসবুক ফটো
যারা র্যালী এবং কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন, তাদেরকে এই ব্লগে আপডেট জানাতে অনুরোধ করা হচ্ছে
মালয়শয়িার মুক্তমনরা জাগো !
দেশে নেয় বলে র্যালি ও সেমিনারে থাকতে না পেরে আপাতত আপসোস করা ছাড়া আর কিছু করার নেয়।
যদিও মুক্তমনা শুধুমাত্র বাঙ্গালীদের নয়,তবু আমরা যেসব বাঙ্গালী প্রবাসে থাকি,তারা একে অপরকে জানতে পারলে ,অন্তত এরকম বিশেষ দিনে একত্রিত হওয়া যায়। ফলে আমার অনুরোধ মুক্তমনায় কি এমন কোন পদক্ষেপ নেয়া যায় ?যদি সম্ভব না হয়, অন্তত আমরা অষ্ট্রেলিয়ায় যারা থাকি,তাদের নাম ও ই-মেইল জানতে চাচ্ছি ।অস্ট্রেলিয়ার মুক্তমনারা জাগো…….।
এবারের ডারউইন দিবস পালন অতীতের সব রেকর্ডকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছে, সন্দেহ নেই। ড়্যালি ও সেনিমারে অংশ নিয়ে খুব ভাল লেগেছে। তবে সেমিনারে এক বক্তা বললেন,
“পৃথিবীর সব বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই ডারউইন দিবস উপলক্ষ্যে সেমিনার হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই এগুলো আয়োজনের ব্যবস্থা করছে। এমনকি ভারতেরও ৩০ টির বেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে সেমিনার হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার হওয়া সত্ত্বেও এর আয়োজক হচ্ছে বিজ্ঞান চেতনা পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এতে কোন অংশগ্রহণ নেই।”
সেদিনের প্রত্যাশা আছি, যেদিন পাঠ্যপুস্তকে আবার বিবর্তনবাদ যোগ করা হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ উদ্যোগে বিবর্তন জনপ্রিয়করণের কাজ করবে। ড়্যালিতে প্রায় সব প্ল্যাকার্ডই ছিল পাঠ্যপুস্তক থেকে জৈব বিবর্তনবাদ বাদ দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে।
ড়্যালিও অনেক লম্বা হয়েছিল। এত বড় হবে সেটা প্রথমে বুঝিনি। কারণ, ৩ টার সময় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সে সময় গিয়ে দেখি হাতে গোনা কয়েকজন আছে। কিন্তু আধ ঘণ্টার মধ্যেই রাস্তা ভরে গিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কোন ছাত্র সংঘটন বোধহয় এক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিশাল ড়্যালি এসে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হয়েছিল। পড়ে এখান থেকে মূল ড়্যালি বের হয়। ডারউইনীয় শ্লোগান শুনেও খুব ভাল লেগেছে। বাংলাদেশের মানুষ রাজনীতি ছাড়াও অন্য কিছুর জন্য শ্লোগান দিতে শিখছে। ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।