মনুষ্য প্রজাতির অহমবাদের বারটা বাজিয়েছিলেন যারা
– নুরুজ্জামান মানিক
মনুষ্য প্রজাতির আত্মপ্রসাদ লাভ আর অহমিকার সীমা পরিসীমা কোনকালেই ছিল না কিন্তু কতিপয় মহাত্মা তাদের সেই অহমের বারটা বাজিয়েছেন গত পাঁচশত বছরে ।
: যেমন?
: এই পৃথিবী তথা বাস্তুভিটা কে কেন্দ্র করে মনুষ্য প্রজাতি বড়ই আত্মপ্রসাদ লাভ করতো -ধুলির ধরা ,বসুন্ধরা আরও কত কি ? তো তাদের এই অহং এর বারটা বাজালেন কোপার্নিকাস আর গ্যালিলিও । তারা দেখালেন এই পৃথিবী নামের গ্রহটা নক্ষত্র জগত্ দুরের কথা খোদ সৌরজগতেরও কেন্দ্রভুমি নয়, বরং সুর্য ব্যাটার চারদিকে কলুর বলদের মত নিগড় বাঁধা এক ভবঘুরে ।
: গ্রহ নক্ষত্র ছায়াপথ এই সব প্যাচাল পেরে লাভ কি,”আশরাফুল মাখলুকাত” ত‘ আর অন্য কোথাও অদ্যাবধি আবিস্কৃত হইনি?
:মনুষ্য প্রজাতির ঠিক এই জায়গায় কুঠারাঘাত করেছিলেন আরেকজন , নাম তার চার্লস ডারউইন । তিনি দেখালেন মানুষ প্রাণী জগতের কেন্দ্র নয়, আলাদা রাজা ত‘ নয়ই ,তার গোত্রীয়তা আছে অন্য প্রাণীর সাথে । মানুষে আর দশ প্রাণীতে ভেদ অত নয়, যতটা চেতনলোকের অহমবাদী মানবসন্তান ভেবে আত্মপ্রসাদ লাভ করে ।
: তর্কের খাতিরে না হয় মানা গেল ,মনুষ্য প্রজাতি বিশ্বজাহানের কেন্দ্রে সংসার বাঁধেনি । এটাও না হয় মেনে নেয়া গেল মানুষ প্রাণীজগতের উৎ স স্থল নহে । এমনকি “জীবজন্তু উদ্ভিদ সবই ঐ আশরাফুল মাখলুকাতের সেবা ও সন্তূষ্টির জন্য ” এই কথাটিও না হয় প্রত্যাহার করা গেল । তাতে কি? মানুষ যে যুক্তিনশীন ও বুদ্ধিমান প্রাণী , নীতিনিষ্ঠায় অটল সেটা কি অস্বীকার করা যাবে ? আধুনিক দর্শন শাস্ত্রের প্রবক্তা দেকার্ত যে বলতেন ‘কজিতে এরগে সুম‘ সেটা কি ঠিক নয়?
: মনুষ্য প্রজাতি তখনও টের পায়নি যে , তার কপালে আরও দুঃখ আছে । মনুষ্য প্রজাতির অহমবাদের শেষ আশ্রয় -মানুষের যুক্তিনির্ভরতা সেটার বারটা বাজানোর দায় বর্তায় সিগমন্ড ফ্রয়েড মহাশয়ের । তার আবিস্কারের বড় দলিল “খোয়াবনামা”। ফরাসি দার্শনিক লুই আলথুসার তার আবিস্কারকে বলেছেন “নতুন মহাদেশ”আবিস্কার ।
ভাইয়া, ফ্রয়েড সম্পর্কে একটা বিস্তারিত লেখা পেলে খুব ভালো হয়। আমরা বেশিরভাগই অন্য বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে মোটামুটি জানলেও ফ্রয়েড সম্পর্কে একদম অজ্ঞ। আর বাংলাদেশী অনুবাদে ফ্রয়েডের কোন ভালো বই আছে কিনা তা আমার জানা নেই। কলকাতার বইয়ের দাম বেশি বলে সব বুকস্টলে পাওয়াও যায় না। তাই ফ্রয়েডের উপর বিস্তারিত লেখার অনুরোধ রইল।
বিষয়টি খুবই চমৎকার, কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল- পড়ে অতৃপ্তি থেকেই গেল। আরকটু বিস্তারিত লেখা যেত না কি?
বিশেষ করে- শেষ প্যারাটুকু- ফ্রয়েড এর “খোয়াবনামা” কি করে মানুষের অহমবাদের বারোটা বাজালো- তা কোনমতেই পরিষ্কার হলো না।
তদুপরি অনেক ধন্যবাদ।