ভূমিকাঃ বাংলাদেশে বাম আন্দোলনের বিকাশ ও ক্ষমতায়নের উজ্জল সম্ভবনা ছিল কিন্তু তাকে কাজে লাগানো যায়নি। এই সংকট নিয়ে অনেক আলোচনা-বিশ্লেষণ হয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। সংকট না কমে বরং বেড়েছে। বাম দলগুলোও আরো বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রভাব ও আকৃতির দিক থেকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তারপরো যা আছে তা নিয়ে এভাবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে না রেখে ক্ষমতা দখলের রোডম্যাপ ও কৌশল ভাবতে হবে।
একই আদর্শের কেন এত দল, বিভেদ ও ভিন্নতা?
বাংলাদেশে কতগুলো বাম দল আছে তার সঠিক সংখ্যা পাওয়া মুশকিল। আবার একই নামে একাধিক দল থাকা এবং কে কাকে বাম মনে করে সেটি নিয়েও বিতর্ক ও জটিলতা আছে। একই মার্কসীয় দর্শণের দলগুলোর মধ্যেও আছে ভয়াবহ দ্বন্দ্ব ও বিরোধ। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন একই মতাদর্শের কেন এত দল? কেন এক দল নয়? আর দলের ভিতরে যদি উপদল থাকে সেখানে তো শত প্রশ্ন? এই সব বিতর্ক নেতাকর্মীদের জন্য প্রচন্ড বিব্রতকর। এতে দলে, মানুষে বিভ্রান্তি ও হতাশা বাড়ে, অনেক ক্ষেত্রে তা তামাশা ও হাস্যরসে পরিণত হয়। লক্ষ্য করেছি দেশের প্রধান সমস্যা-সংকটের কথায়-চিন্তায় তাদের তেমন কোন ভিন্নতা নেই। সমাধানের পথ-উপায় কি খুব বিপরীতি? সেটা যদি না হয় তাহলে দ্বন্দ্বটা আসলে কোথায়?
বামদল অনেক থাকলেও সবার অবস্থা এক নয়। অধিকাংশ দলের বিকাশ-বিস্তার নেই, যুগযুগ ধরে ক্ষয়িষ্ঞু অবস্থায় কোনভাবে টিকে আছে। কেন এমনটা হচ্ছে? সেটা কি উপযুক্ত কর্মসূচীর অভাব, নেতৃত্বের সংকট, সময়কে বুঝতে না পারা, না অন্য কোন কারণ? নাকি ব্যক্তির স্বার্থ-সুবিধা, নেতৃত্ব-কর্তৃত্বই প্রধান কারণ?
বামরা কি জানে তাদের শক্তি ও সক্ষমতা?
বাংলাদেশের সংকট বিষয়ে বামরা অবগত। তারা এও জানে যে কারো একার পক্ষে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তারজন্য বড় সংগঠন ও ঐক্য দরকার। কিন্তু তাদের এই জানার অর্থ কি, যদি না তা চর্চা ও চেষ্টায় থাকে? মোটা দাগে বাংলাদেশে বাম দলগুলোর তিনটি ধারা-প্রবণতা লক্ষ্যনীয়। একটি ধারা আওয়ামী লীগের সাথে আরেকটি বিএনপি ধারার সাথে আন্দোলন ও ক্ষমতার অংশীদার হতে আগ্রহী এবং অন্যটি এই দুই ধারার মাঝামাঝি বা কোনটিতে নেই। বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে-প্রয়োজনে জোট-ঐক্যের চর্চা নতুন নয় অতীতেও ছিল। নিজস্ব শক্তির উপর ভরসা করে সেটা না করতে পারলে অন্যের অনুগ্রহের উপর থাকতে হয় এবং তার পরিণতি সুখকর নয়, তার প্রমাণও অনেক।
বামরা কি তাদের শক্তি-সক্ষমতা সম্পর্কে কতটা অবগত জানি না তবে বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হলে তারা দেশে একটি অঘটন ঘটিয়ে ফেলার মত অবস্থা রাখে। সেটা করতে পারার কারণ দেশের মাদ্রাসাগুলো প্রায় শতভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণে। ইসলামী দলগুলোর যে জমায়েত ক্ষমতা আছে বামদলগুলোর সে অবস্থা আছে কিনা সন্দেহ। তবে ইসলামপন্থীদের তুলনায় বামদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান ও প্রভাব অধিক। তারপরো বাংলাদেশে কোন বামদলই দাবী করতে পারবে না যে তাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে সংসদে একটি আসন পেতে পারে। এর বাইরে প্রধান দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কথা না হয় বাদই দিলাম, তাহলে বামরা কোন ভাবনায় বিচ্ছিন্ন ও বিভক্ত?
নির্বাচনের দাবী ও বামদের অবস্থা-বাস্তবতা
বাংলাদেশের বামপন্থী দলগুলো একটি বড় সংকট হচ্ছে নিজেদের নির্ভুল ও বিশুদ্ধ ভাবার প্রবণতা। সে কারণে দলগুলোর মধ্য এক ধরণের দূরত্ব বিদ্যমান। বর্তমান সংকটের সময়ও কি সেই অবস্থা বজায় থাকবে নাকি নিজেরা অধিক দায়িত্বশীল হয়ে সেই দূরত্ব দূর করবে সেই প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ?
৩ জানুয়ারি সিপিবি’র জনসভা থেকে এই মাসের মধ্যে সরকারের কাছ থেকে নির্বাচনের পরিষ্কার সময় ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে। ধরে নিলাম সরকার শীঘ্রই নির্বাচনের একটি দিনক্ষন ঘোষণা করলো তাতে সিপিবি বা বামপন্থীদের কি লাভ? দেশে এ পর্যন্ত ১২টি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনগুলোতে কি বামদের কোন অবস্থান ছিল? এরমধ্যে ৪টি বাদে বাকি নির্বাচনগুলো ছিল নানা মাত্রায় বিতর্কিত। কিন্তু যে কয়েকটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে সেখানেও কি বামদের আশাবাদী হওয়ার মত কিছু ছিল?
অতীতে দেখা গেছে নির্বাচন এলে বামদলগুলো বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে, কোন দল-জোটে গেলে কি সুবিধা পাবে সেটাই মূখ্য সেখানে নীতি-আদর্শ সামান্য কাজ করে। কেউ জোট, মহাজোটে, কোন কোন বাম নিজেরা জোট করেছে, আবার নিশ্চিত পরাজয় জেনেও নিজেরাও নিজেদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছে। এমনটাই চলছে যুগযুগ ধরে। তাতে সাময়িক স্বার্থ-সুবিধা, আত্মতৃপ্তি, রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা ছাড়া কোন লাভ হয়নি। তারপরো কি যে যার আমিত্ব, শ্রেষ্ঠত্বের অহমিকা নিয়ে থাকবে? সেটা না করে তারা যদি তাদের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে অবিচল থাকতো তাহলে যুগযুগ ধরে ব্যর্থতার গ্লানি বহন করতে হতো না। অবশ্য তারা নিজেদের কোন ভাবে ব্যর্থ মনে করেন কিনা সেটাও প্রশ্ন।
বৃহত্তর ঐক্যের সংকট কোথায়?
বামরা জনগণের ঐক্যের কথা বলবে কিন্তু নিজেদের বিভেদ-বিতর্ক বন্ধের কোন চেষ্টা-উদ্যোগ নেই। তাহলে কোন নৈতিকতায় তারা ঐক্যের কথা বলে? সবাই চায় দেশে একটি বিকল্প রাজনীতি গড়ে উঠুক। জনগণের সেই চাওয়া যুগ যুগ ধরেই ছিল। কতটা দুর্নিবার ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় জুলাই অভ্যুত্থানে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে দলমত নির্বিশেষে লাখো জনতা সেদিন তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল। এক অভূতপূর্ণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়।
অভ্যুত্থান পরবর্তি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর মানুষ তাদের আকাঙ্খার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছে না। দেশে এখন এক ধরণের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলছে। ইতোমধ্যে আন্দোলনে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব-অবিশ্বাস তৈরী হয়েছে। জুলাই-আগস্টে দেশে যে অভূতপূর্ণ ঐক্যের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল তা হাতছাড়া প্রায়।
পূর্বের দ্বি-দলীয় ধারার স্থানে এখন ত্রি-দলীয় ও বহুদলীয় ধারা তৈরী হয়েছে এবং সবগুলো ডান ও অতি দক্ষিনপন্থী ধারা। এর বাইরে গণমানুষের পক্ষের একটি মধ্যবাম বিকল্প তৈরীর ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হলেও শক্তিশালী জোট-সংগঠনের অভাবে তা আবারো হাতছাড়া হতে যাচ্ছে। মানুষ হতাশার যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে। অথচ এই সুযোগকে কাজে লাগাতে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতসহ সদ্য গজিয়ে ওঠা অভিন্ন চেতনার কিছু দল-সংগঠন তৎপর। অভ্যুত্থানে অংশীদার ছাত্রদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তারা ক্ষমতা দখলে তৎপর।
দ্বি-দলীয় ধারার বাইরে শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতা
জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট) সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতা দখলের জন্য শ্রীলঙ্কায় দুইবার (১৯৭১ ও ১৯৮৭-৮৯) স্বশস্ত্র বিদ্রোহ করেছিল। এই বিদ্রোহের তাদের দলের মূলনেতা রোহানা উইজেভরাসহ ৪০ হাজার নেতা-কর্মীসহ প্রায় ৭০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এই হটকারি রাজনীতির কারণে দেশটিতে তাদেরকে প্রচন্ড সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। এই ভ্রান্তনীতির পর তারা আত্মসমালোচনা করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ফিরে আসে। নিজেদের ভুলের জন্য জনগণের কাছে বার বার হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়েছেন, তাদের আত্মপলব্ধি ও অনুসচনা প্রকাশ করেছেন। জনগণও তাদের নিরাশ করেনি।
২০১৯ সালে জেভিপি’র নেতৃত্বে ২১টি সংগঠন নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) গঠিত হয়। এই জোটে শুধু রাজনৈতিক দল নয় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ-সংগঠন যুক্ত। তাদের নির্বাচনী প্রতীক ছিল কম্পাস। ২০২২ সালের শ্রীলঙ্কার অভ্যুত্থানের সময় এনপিপি তাদের জনসমর্থন বৃদ্ধি করে। ২০২৪ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনপিপি প্রার্থী অনুর কুমারা দিসানায়েক ৫৫.৮৯% ভোট পেয়ে রাষ্ট্রপতি হন। মাত্র ৩টি আসন থেকে ২০২৪ এর সংসদ নির্বাচনে২২৫টি আসনের মধ্যে তারা ১৫৯টি আসন অর্জন করে। তাদের এই উদাহরণ কি বাংলাদেশের বাম দলগুলোর জন্য অনুকরণীয় নয়?
শুধু রাজনৈতিক দল নয় প্রয়োজন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের জোট
বাংলাদেশে যে জোট চর্চার যে ধারা আছে তা থেকে বামপন্থীদের বেড়িয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক দলের বাইরে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, সমাজ-সম্প্রদায়, সংগঠন নিয়ে ব্যাপক ভিত্তিক জোট গড়ে তুলতে হবে। যাতে করে সমাজের পরিবর্তনকামী সকল অংশকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা যায়। এরমধ্যে ট্রেড ইউনিয়ন, পরিবেশবাদী, শিক্ষক, আদিবাসি, উপজাতি এমন কি ধর্মীয় সংখ্যালঘু সংগঠনও যুক্ত হতে পারে। এই ধারার চর্চা বাংলাদেশের জন্য অভিনব হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তা আছে। শ্রীলঙ্কায় বামপন্থীদের ক্ষমতায়নে এই কৌশল সাফল্য দিয়েছে।
বামদের পূর্ণমিলন প্রয়োজন
স্বার্থ-সুবিধার নানা কারণ-সমীকরণে কিছু বামদল ও নেতা লুটেরাদের উচ্ছিষ্টভোগী এবং ক্ষমতার অংশীদার হয়েছে। কিন্তু সে কারণে তাদের মূল্যও কম দিতে হয়নি। দলে ভাঙ্গন হয়েছে, তাদের সন্মান-মর্যাদাও বহুভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাদের কারণে অন্যান্য বামদলে ভাবমূর্তিও ক্ষতির মূখে পড়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা যদি তাদের অতীত কর্মকন্ডের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নতুন করে মানুষের স্বার্থের পক্ষে কাজ করতে চায় তাদেরও ভবিষ্যত রাজনীতিতে বৃহত্তর ঐক্যের অংশীদার হওয়ার সুযোগ দেয়ার কথা ভাবতে হবে। তাদের রাজনীতি থেকে ঝরে পরা, ছিটকে পড়া, অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নেয়া অংশকে হয়তো রাজনীতিতে পুনরায় যুক্ত করা যাবে।
জাতীয় পর্যায়ে আমরা পূর্নমিলনের (রিকনসিলিয়েশন) কথা বলি কিন্তু একই আদর্শের (?) বলয়ের ক্ষেত্রে কেন সে কথা বলি না বা ভাবছি না? নিজেদের বিচ্ছিন্নতা প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী করবে। মুক্তিযুদ্ধের আওয়ামী বয়ানের বাইরে ৭২ এর সংবিধান (অগণতন্ত্রিক অসঙ্গতি বাদে) মুক্তিযুদ্ধের মূল স্পিরিট হতে পারে বৃহত্তর ঐক্যের ভিত্তি। এক্ষেত্রে সংকট হচ্ছে একই নামের ব্রাকেটবন্দী বিভিন্ন দল একেঅন্যের বিষয়ে আপত্তি জানাবে কিন্তু বর্তমান জরুরী পরিস্থিতির কর্তব্য বিবেচনায় উদারতার পরিচয় দিতে হবে। ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তির ক্ষমতাসীন হলে তা কারো জন্যই সুখের ও স্বস্তিকর হবে না।
বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা না তিউনিয়িশার পথে হাটবে, সিদ্ধান্ত এখনই
২০১১ সালে তিউনিশিয়ায় স্বৈরশাসক বেন আলীর উৎখাতে তরুণদের নেতৃত্বে জেসমিন রেভ্যুলেশন সংগঠিত হয়েছিল। কিছু তরুণের দেয়াল লেখা ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে তা আন্দোলন শুরু করেছিল। সেই বিপ্লবে ২৩ বছর ক্ষমতায় থাকা বেন আলী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। বেন আলীর পতন ও পলায়নের পর অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে- মধ্যপন্থী ধর্মনিরপেক্ষ দল নিদা টৌনস ও ইসলামপন্থী এনাহ্ধা যৌথভাবে জয়ী হয়েছিল। পরবর্তিতে উভয় দল এক ধরণের বোঝাপড়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় এলেও তারা বেশিদিন টিকতে পারেনি। জনগণ তাদের সামাজিক নীতি ও ধর্মান্ধতাকে সমর্থন করেনি। বিশেষ করে মধ্যধারার দল ’নিদা নিটৌস’ তাদের ধর্মনিরপেক্ষ নীতি থেকে বিচ্যুত হলে তাদের অনেক সমর্থন দলত্যাগ করেন। পরবর্তিতে অন্যান্য দল-জোট ক্ষমতায় এলেও তাদেরও একই পরিণতি হয়। বিশাল অভ্যুত্থানের পরে সেই একই চক্রে দেশ চলছে, সংকট তাদের পিছু ছাড়ছে না। ১৫ বছরেও দেশটিতে কোন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আসেনি। তিউনিশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ তিনটি দেশেরই অভ্যুত্থানের কারণ ও চরিত্র প্রায় অভিন্ন, ব্যবধান শুধু সময়ের। শ্রীলঙ্কা মাত্র দুই বছরে ঘুড়ে দাড়াতে পারলেও তিউনিশিয়া ১৫ বছরেও পারেনি, বাংলাদেশ কোন পথে যাবে শ্রীলঙ্কা না তিউনিশিয়া.. সিদ্ধান্ত এখনই।
শেষ কথাঃ দশকের পর দশক দল টিকিয়ে রাখাকেই রাজনীতি বলা যায় না যদি না তা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কোন কাজে না লাগে। দেশে দক্ষিনপন্থী রাজনৈতিক সমীকরণের ধারা-বিপদ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে অত্যন্ত ভয়াবহ। সেই বিপদ থেকে দেশকে মুক্ত করা বামপন্থীদের প্রধান কর্তব্য মনে করি। যে কারণে দেশের বৃহৎ ও প্রাচীনতম বামপন্থী সংগঠন সিপিবিসহ অন্যান্যদের এই মূহুর্তের সঠিক কর্তব্য নির্ধারণ অত্যন্ত জরুরী। নতুন রাজনৈতিক বন্দবস্ত ও অভিনব অন্তর্ভূক্তমুলক রাজনীতি নিয়ে ভাবতে হবে বামপন্থীদেরই।
————————————————————————-
ডঃ মঞ্জুরে খোদা, লেখক-গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
Leave A Comment