পৃথিবীতে প্রচলিত সবধর্মগুলোই মানুষের অন্ধবিশ্বাস, দূর্বলতা, অজানার প্রতি ভয়, দারিদ্র্য, অজ্ঞানতা, অশিক্ষা, কুশিক্ষার উপর ভর করে টিকে ছিলো বা আছে। তবে শুধুমাত্র কুসংস্কার, অন্ধভক্তি বা কূপমণ্ডূকতার উপর নির্ভর করে টিকে থাকার জন্য যদি কোনো শিরোপা থেকে থাকে তবে তা অতি অবশ্যই হিন্দুধর্মের প্রাপ্য। পৃথিবীতে যতগুলো ধর্ম আজ পর্যন্ত এসেছে তার সবগুলোই পাল্লা দিয়ে নারীবিদ্বেষী, কঠিন পুরুষতান্ত্রিক চরিত্র ধারণ করেছিলো। তবে এক্ষেত্রেও হিন্দুধর্মের জূড়িমেলা ভার। ইসলাম ধর্ম বাদে কালের বিবর্তনে প্রায় সব ধর্মই এখন অনেকটা নিরামিষ রূপ ধারণ করেছে । কিন্তু হিন্দু ধর্ম যেনো আরো বেশি সংস্কারাচ্ছন্ন বা উদ্ভট হবার সংকল্প করেছে।
এখানে একটা প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যেখানে সারাবিশ্ব আজ ইসলাম ধর্মের ভয়ংকর চেহারার সাথে বোঝাপড়া করতে ব্যস্ত; কিম্বা বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব মুসলমান অধ্যুষিত দেশে যেখানে সংখ্যালঘুরা তীব্র নির্যাতন, নিপীড়ণে অস্তিত্ত্ব সংকটে ভুগছেন, সেখানে হঠাৎ করে হিন্দুধর্মকে খাঁড়ার নিচে টেনে আনবার দরকার কি? এর উত্তরে বলা যায় হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করবার কারণে এতবেশি এসব কুসংস্কার, অজ্ঞানতা, অন্ধবিশ্বাস আর কূপমণ্ডূকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে যে যারপরনাই তিতিবিরক্ত হয়ে এই লেখাটির প্রস্তাবনা করতে হল।
হিন্দুধর্মের এসব বালখিল্য সংস্কার, রীতিনীতির কথা বলতে গেলে আসলে তা কয়েকটি মহাকাব্যের সমান হয়ে যাবে। এই ধর্মের প্রায় পুরোটাই এসব দিয়ে ভর্তি। যেমন আমরা যদি কূমারী পূজার কথা ধরি যা বাংলাদেশে মূলত দূর্গাপূজার অষ্টমী কিম্বা নবমীতিথিতে পালন করা হয়। এই প্রথাটি একটি চরম নারীবিদ্বেষী ও পুরুষতান্ত্রিক থিমের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এই পূজায় একজন প্রাক ঋতুমতী মেয়েশিশুকে যোগাড় করা হয় ও তার পূজা করা হয়। প্রাক ঋতুমতী কেন? কারণ ঋতুস্রাব হয়ে গেলে সেই মেয়ে বা নারী আর নিষ্পাপ বা পবিত্র থাকে না। তা সে পরবর্তী জীবনে যত ভালো কাজই করুক না কেন। আর প্রায় একশভাগ ক্ষেত্রেই সেই মেয়েটি ব্রাহ্মণ পরিবারের হয়ে থাকে। কারণ কে না জানে যে তারা সৃষ্টি হয়েছে ব্রহ্মার মাথা থেকে। তাই তাদের সাথেই স্রষ্টার একেবারে ডাইরেক্ট হটলাইন। সবচেয়ে হতাশার বিষয় হচ্ছে এই হাস্যকর ও আধুনিক সভ্যজগতের সাথে চুড়ান্ত বেমানান প্রথাটি নিয়ে বিপুলসংখ্যক হিন্দুধর্মাবলম্বীদের আদিখ্যেতা বা আদেখলাপনা একেবারেই মাত্রাছাড়া বা সীমাহীন।
শুধু তাই নয় মেয়েদের মাসিক বা ঋতুস্রাব হয় দেখে ভারতের অনেক মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশই নিষেধ। মজার বিষয় হল এই নিয়ে অনেক আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত মহিলারা আবার আদালতে মামলা করেছেন তাদের প্রবেশাধিকার ফিরে পাবার জন্য। যেন এতে জিতলেই নারী স্বাধীনতার বিরাট অগ্রগতি সাধিত হবে। ধর্ম যে কিভাবে নারীসমাজের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেতে পারে এটা তার একটা বড় প্রমাণ। ব্যাপারটি অনেকটাই হিজাব পড়া মেয়েদের কাছ থেকে নারীস্বাধীনতার সবক নেবার মতই। অবশ্য এটা হিন্দু মুসলমান দুই ধর্মের ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে মেয়েরাই এর পক্ষে সবচেয়ে বড় অন্ধ সমর্থক হয়।
তবে হিন্দুধর্ম একটি ব্যাপারে অন্য সবাইকে একেবারে টেক্কা দিয়ে থাকে। সেটি হচ্ছে ধর্মের মাধ্যমে শ্রেণীস্বার্থ বা আর্থসামাজিক অবস্থানকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া। হিন্দুধর্মের জাতিভেদ পৃথিবীর সমগ্র ধর্মসমূহের মধ্যে একেবারে ইউনিক। মানুষকে তার জন্মের দ্বারা শ্রেণিবিভেদ করা ও এর মাধ্যমে কোটারী স্বার্থ ও স্বজনপ্রিয়তার অনানুষ্ঠানিক কিন্তু দৃঢ় রুপ দেয়ার একমাত্র উদাহরণ হিন্দুধর্ম। দূর্ভাগ্যজনকভাবে পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেলেও হিন্দুধর্মাবলম্বীরা এখনো এর হাত থেকে মুক্তি পায়নি। বরং প্রায়ই দেখা যায় যে বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরাও এই জাতভেদের বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে পারেনা। এমনকি উন্নত বিশ্বে বসবাস করেও তারা এই অন্ধবিশ্বাসের হাত থেকে মুক্ত নয়। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ পত্রিকার পাতায় হিন্দু পাত্রপাত্রী চাই বিজ্ঞাপনগুলো। সবচেয়ে অবাক লাগে বিশ্বের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার পরও বিশ্বের হিন্দু সমাজের এক বড় অংশই এসবে বিশ্বাস করে। ভারতে ত জাতের বাইরে প্রেম বা বিয়ে করার জন্য অনার কিলিংইয়ের শিকার হবার সংখ্যা একেবারে আতংক জাগানোর মত। এমনকি নিম্নবর্ণের ছেলে হয়ে তথাকথিত উচ্চবর্ণের মেয়েকে বিয়ে বা নিদেনপক্ষে প্রেম করার অপরাধে সেই ছেলের বংশকে একেবারে ঝাড়েবংশে নির্মূল করে দেয়ারও অনেক দৃষ্টান্ত আছে।
জাতপাতের নামে ভারতবর্ষের এক বিরাটসংখ্যক জনগণকে যেভাবে চিরন্তন শাসন, শোষণ, নিপীড়ন, লাঞ্ছণা বৈষম্যের ভেতর নিমজ্জিত করে রাখা হয়েছে আধুনিক মানবসভ্যতার ইতিহাসে তা একমাত্র আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দাসব্যবস্থার সাথে তুলনীয়। তবে এই দাসব্যবস্থার হাত থেকে আমরা মুক্ত হলেও ভারত এখানে ব্যতিক্রম। কারণ ভারতে তা করা হচ্ছে ধর্মের মোড়কে, তাই এই জঘণ্য প্রথার হাত থেকে মুক্তির আশাও সুদূরপরাহত। ভারতে এই নিম্নবর্ণের মানুষেরা সংখ্যাগুরু ধর্মের অংশ হলেও প্রায় প্রতিক্ষেত্রেই তারা অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের থেকে অনেক বেশি বৈষম্যের শিকার হন। ব্যাপারটি অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিকরূপ লাভ করেছে বলা যায়। যদিও তাদের জন্য প্রায় সবকিছুতেই আসন সংরক্ষ্ণের ব্যাবস্থা আছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় এই সংরক্ষিত আসনের প্রায় বেশিরভাগই ফাঁকা থেকে যায়। যেমন কিছুদিন ধরেই ভারতের উত্তরপ্রদেশের শাহারানপুরে উচ্চবর্ণের ঠাকুরদের নিম্নবর্ণের দলিতদের উপর দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাওয়া অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলে আসছিল। সেখানেও দেখা যায় এই আন্দোলন প্রশমিত করার জন্য প্রশাসন যে ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে দলিতরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হতাহত এবং গ্রেফতারকৃতদের প্রায় সবাই দলিত সম্প্রদায়ভুক্ত।
বলাই বাহুল্য হিন্দুধর্মের বালখিল্য বা চরম হাস্যকর রীতিনীতির কথা বলতে গেলে শেষ হবে না। যদিও হাস্যকর বলছি এগুলো প্রকারান্তরে সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর বা ভয়ংকর হয়ে দাঁড়ায়। কারণ এর প্রতি মানুষের অন্ধ আনুগত্য। যেমন এই একবিংশ শতকে এই রকেট সায়েন্সের যুগে দাঁড়িয়ে হনুমান বা গণেশকে দেবতা হিসেবে পূজা করা এর অন্যতম উদাহরণ। এও দেখা গেছে যে ভারতে রকেট উৎক্ষেপণের আগে গণেশ বা অন্য দেবতাদের পূজা দেয়া হয়েছে। একটি নতুন ফাইটার বিমান কমিশনের আগে পূজা দেবার দৃশ্যত ইন্টারনেটে বহুল প্রচলিত। এছাড়া গণেশের ঘাড়ে হাতির মাথা বসানোকে দুনিয়ার প্রথম প্লাস্টিক সার্জারী হিসেবে দাবী করা লোকে সংখ্যাও এই ধর্মে একেবারে কম নেই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই এর মধ্যে একজন। দেবরাজ ইন্দ্রের বজ্রকে মিসাইলের আদিরূপ ভাবা কিংবা কুবেরের পুষ্পক রথকে বিমানের পূর্বসূরী হিসেবে ভাবার মানুষও এই ধর্মে অগুনতি। সম্প্রতি ভারতের এক ন্যাশনাল সাইন্স কনফারেন্সে এই তথাকথিত বেদিক সাইন্সের উপর এক বিশাল প্রবন্ধও উপস্থাপন করা হয়েছে। সবচেয়ে হতাশার ব্যাপার হচ্ছে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত বিপুলসংখ্যক মানুষ এতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন। তবে সম্ভবত এই ধর্মের মধ্যে বিজ্ঞান আবিষ্কারের বিষয়টি তারা মুসলমানদের কাছ থেকে ধার নিয়েছেন। শুধু একটু দেরী হল এই যা!
এসব মধ্যযুগীয় ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে যে সংস্কারে্র চেষ্টা একেবারে হয়নি তাও নয়। এক্ষেত্রে উনবিংশ শতকের সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় কিংবা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথা বলা যায়। কিন্তু তারা যদি এখন জন্ম নিতেন তাহলে কতটুকু কি পারতেন সেব্যাপারে আমি ঘোর সন্দিহান। এই বিজেপি আরএসএস এর বাড়বাড়ন্তের যুগে তাদের যে দেশদ্রোহী তকমা খেতাব পেতে হত না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। উপরন্তু বিধবাবিবাহ আইন চালু হলেও হিন্দুসমাজে বিধবাবিবাহ এখনও একটি ট্যাবু হিসেবেই রয়ে গেছে। শহুরে শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে এর সামান্য কিছু প্রচলন থাকলেও গ্রামীণ হিন্দুসমাজে এর প্রায় একদমই কোনো অস্তিত্ত্ব নেই। এমনকি বিধবাবিবাহের ক্ষেত্রে অনেক সময় এই বিবাহে ইচ্ছুক ছেলে খুঁজে পাওয়াই দায় হয়ে ওঠে। আর রাজা রামমোহন রায় ত হিন্দু ধর্মে কুসংস্কারের ব্যপ্তি দেখে এর আমূল সংস্কারের চেষ্টা বাদ দিয়ে প্রায় আলাদা একটি ধর্মমতই চালু করেছিলেন। যদিও সেই ব্রাম্মধর্মও কালের বিবর্তনে হিন্দুধর্মে লীন হয়ে গেছে। এর কুসংস্কারের শক্তি এতই ব্যাপক ও সর্বগ্রাসী। এখানে বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকারের কথাও উল্লেখ করা যায়। তিনি অবশ্য বিংশ শতকের লোক ও ভারতের সংবিধানের প্রণেতা। তিনি দলিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে এই জাতিভেদের ভয়াল ও কদর্য রূপ দেখে এর সংস্কারের চিন্তাভাবনা করেছিলেন। পরে অবশ্য সবছেড়েছুড়ে শেষ বয়সে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন।
পরিশেষে শেষ করছি একটি উদাহরণ দিয়ে। বাংলাদেশে বর্তমানে যে হিন্দু আইন প্রচলিত আছে তা প্রায় মধ্যযুগ থেকেই অপরিবর্তিত অবস্থায় আছে। এতে নারীর কোনো অধিকারের কথাই বলা হয়নি। অবশ্য এতে হিন্দু উচ্চশিক্ষিত থেকে অশিক্ষিত নারীদের কোনোই মাথাব্যাথা নেই। তারা শাখা সিঁদুর পরে এয়োস্ত্রীর পরিচয় পেলেই ধন্য ধন্য করেন। যাইহোক এই আইনটির পর্যালোচনার ব্যাপারে কয়েকবছর আগে বেশ কথাবার্তা হচ্ছিল। কিন্তু দেখা গেল যে এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো প্রতিবাদ এসেছিলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভেতর থেকেই। এর একটা বড় অংশই ছিল আবার তথাকথিত হিন্দু ধর্মীয়গুরু নামধারী। আরও তাজ্জব ব্যাপার হচ্ছে এই প্রতিবাদকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীও ছিলেন। তাই আপাতত হা হতোস্মী করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
ভাই, বেদ পুরান ভাগবতের বৈজ্ঞানিক ভুলগুলো দয়া করে সাজানো হলে মুমিনদের সাথে হিন্দুদের সাথেও ডিবেট করতে সুবিধা হবে।
বর্নবাদের ব্যাপারটাযাই বলেননা কেন, এটার ব্যাখ্যা হিন্দুরা বেশ ভালোভাবেই দেয়।
কিন্তু ফ্ল্যাট আর্থ বা রাহু কেতু,বিবর্তনেরবাদের ভুলগুলো যদি তুলে ধরা যায় তবে নড়বার আর সুযোগ থাকে না।
তাছাড়া হিন্দুধর্মে নারীদের দুরাবস্থার কথাও যদি তুলে ধরা যায় তবে বেশ ভালো হয়।
আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো। যে কোনো ধর্ম মানুষকে শুধু বিশ্বাস করতে শেখায়। জানতে , বুঝতে শেখায় না। মানুষ ধর্মকে বিশ্বাস করে কারণ সে ভাবে ধর্ম তাকে উদ্ধার করবে। কিছু ব্যক্তি নিজের লাভের জন্য মানুষকে এই সমস্ত বলে বোকা বানায় । আর মানুষ ধর্ম কে ত্রাতা ভেবে তার সব অন্যায় আবদার মাথা পেতে মেনে নেয়। আমাদের অবশ্যই মানুষের তাদের ধর্ম সম্পর্কে ভুল ধারণা ভাঙতে হবে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে হবে কে তার ভালো চায় , কিসে তার ভালো হবে।
ধন্যবাদ , লেখক কে তাঁর লেখাটির জন্য।
দেখুন আমি ব্যক্তিগতভাবে অশ্রাব্য ও কুৎসিত গালাগাল, বর্ণবাদ, ব্যক্তি আক্রমণ, হত্যার হুমকি না থাকলে কোনো মত প্রকাশের বিরুদ্ধে নই। যদিও আপনার লেখায় এর সবকটি পুরোমাত্রায় ছিল।
আর মুক্তমনা একটি মডারেটেড ব্লগ। এর নিজস্ব নীতিমালা আছে। তার সাথে সাংঘর্ষিক কিছু পাওয়াতেই আপনার মন্তব্য অপসারিত হয়েছে।
আর মাথা কাটা আর মন্তব্য কাটার তফাত বুঝতে না পারার মত ফ্যাসিবাদী চিন্তাধারা ধারণ করলে সেটাই হওয়া স্বাভাবিক নয় কি?
এসব ফ্যাসিস্ট আদর্শ প্রচারের জন্য অনেক জায়গা আছে। আজকাল ত আর সোশ্যাল মিডিয়ার অভাব নেই। মুক্তমনায় যে এর কোনো জায়গা নেই, এটা আশা করি বুঝেছেন। অবশ্য গোসেনাদের কাছে এটুকু আশা করাও বৃথা।
@সত্য সন্ধানী বন্ধু,
আসলে কি জানেন আপনারা সেকুলাররা সবসময় ধর্মের নামে লোকে কি করে বেড়াচ্ছে সেটা দিয়ে ধর্মকে যাচাই করেন | এখহন কথা হলো : “ধর্ম” আর “ধর্মের নামে লোকের কর্ম ” দুটো কি এক না আলাদা ? দুটো যদি এক হত তাহলে মেডিকেল সাইন্স আর মেডিকেল ম্যালপ্রাকটিস দুটো এক হত | কিন্তু তাই কি হয় ? তাহলে রিলিজিওন আর রিলিজিয়াস ম্যালপ্রাকটিস কি করে এক হবে ?
……………….
আপনার উপরিউক্ত প্রশ্নের প্রেক্ষিত একটি প্রশ্ন খুব জোরাল হয়ে ওঠছে।
প্রশ্নটি হল, ধর্ম বলতে আপনি কি বোঝেন?
শুধু কি ধর্মগ্রন্থ আর তাতে অনুসৃত নির্দেশ? নাকি সেগুলোর ভিত্তিতে যে জীবন যাপন ব্যবস্থা প্রচলিত সেগুলোও?
এখন আপনি বলতে পারেন, বিজ্ঞানকে আমরা ভালো কাজে এবং খারাপ কাজে ব্যাবহার করি। তেমনি ধর্মের বেলাতেও তাই। কিন্তু কথা হল, বিজ্ঞানকে যে কাজে ব্যাবহার করি না কেন সেটা বিজ্ঞানই। তাহলে ধর্মের ক্ষেত্রেও তো তাই হবে?
আরেকটি প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তাহলে বিজ্ঞানের অপব্যবহার থাকা সত্ত্বেও কেউ বলছে না বিজ্ঞান হঠাও। কিন্তু ধর্মের ক্ষেত্রে বলছে কেন, ধর্ম হঠাও বা ধর্মের প্রয়োজন নেই?
ধর্মগ্রন্থের নির্দেশের ভিত্তিতে যে জীবন ব্যবস্থা প্রচলিত আছে তার মধ্যে যেগুলি সদর্থক সেগুলিই আমি ধর্ম বলে মনে করি | এছাড়া ধর্মগ্রন্থের নির্দেশ তো আছেই |
বিজ্ঞানকে যে কাজে ব্যবহার করি তা বিজ্ঞান নয় | যদি খারাপ কাজে ব্যবহার করি তা হলে সেটা হলো ছদ্ম বিজ্ঞান বা সিউডো সাইন্স | মেডিকেল প্রাকটিস আর মেডিকেল ম্যাল প্রাকটিস দুটি মেডিকেল সাইন্স নয় | ম্যাল প্রাকটিস তা সে বিজ্ঞানের যে শাখাতেই হোক না কেন সেটাকে বিজ্ঞানের দর্শন সিউডো সাইন্স বলে থাকে | বিজ্ঞানের দর্শন অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বিজ্ঞান আর অবিজ্ঞানের সীমারেখা টেনেছে | সেটা ভালো করে পরলেই আপনার ভ্রম দূর হবে |
ধর্মগ্রন্থও অতি স্পষ্টভাবে বলেছে যে শাস্ত্রে লেখা আচার ধর্ম নয় | মহাভারতের শান্তিপর্বে ভীষ্ম বলেছিলেন যুধিষ্ঠিরকে : সেইসব আচারের মধ্যে যা দ্বারা জীব রক্ষা পায় সেটাই হলো ধর্ম | আর যা দ্বারা জীব ধ্বংস হয়ে যায় সেটা হলো অধর্ম | একই কথা কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন কর্ণপর্বে | এবং এই রক্ষা পাওয়া এবং ধ্বংস হওয়া প্রত্যক্ষ প্রমাণসিদ্ধ | যেসমস্ত কদাচারকে আপনারা ধর্ম বলছেন সেগুলিতে জীব ধ্বংস হয়ে যায় এটা প্রত্যক্ষসিদ্ধ | সুতরাং সেগুলি ধর্ম নয় | যদিও এই পৃথিবীতে পাষন্ডরা সেগুলিকে ধর্ম বলে |
কারণ প্রচার | বিজ্ঞানের ম্যাল প্রাকটিসের প্রচার ব্যাপক নয় | অথচ ধর্মের ম্যাল প্রাকটিসের ব্যাপক প্রচার | বিজ্ঞানের নামে কত বিধংসী অস্ত্র তৈরী হয়ে জগত ধ্বংস হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে কিন্তু এই ব্যাপারে প্রচার কি সেইরকম আছে ? পুঁজিবাদীদের হাতে পরিপুষ্ট মিডিয়া বেছেবুছে প্রচার করে | ধর্মের খারাপ দিক আর বিজ্ঞানের ভালো দিক | এই কারণেই লোকে বলছে ধর্ম হঠাও | কিন্তু বিজ্ঞানকে হটাতে বলছে না | সবই কলি |
জয় শ্রীরাম
জয় শ্রীরাম নতুন ডাইমেনশনে আবির্ভূত হয়েছে। শ্রীরামের নিজের পক্ষে জয় লাভ করার সম্ভাবনা কী কমে গেছে। শ্রীরাম তিনি কী কোথাও তার পক্ষে লড়ে রামরাজ্য কয়েম করতে বলে গেছেন?
আসলে কি জানেন আপনারা সেকুলাররা সবসময় ধর্মের নামে লোকে কি করে বেড়াচ্ছে সেটা দিয়ে ধর্মকে যাচাই করেন | এখহন কথা হলো : “ধর্ম” আর “ধর্মের নামে লোকের কর্ম ” দুটো কি এক না আলাদা ? দুটো যদি এক হত তাহলে মেডিকেল সাইন্স আর মেডিকেল ম্যালপ্রাকটিস দুটো এক হত | কিন্তু তাই কি হয় ? তাহলে রিলিজিওন আর রিলিজিয়াস ম্যালপ্রাকটিস কি করে এক হবে ? সুতরাং আপনাদের এই যে যুক্তিগুলি যা ধর্মের ম্যাল প্রাকটিস-এর মধ্য থেকে এসে ধর্মের মুখে চুনকালি লাগাচ্ছে এগুলি হলো লজিকাল ফালাসী বা কুযুক্তি | লজিকের পরিভাষায় একে আপীল টু কমন প্রাকটিস বলে যা আপীল টু মাইন্ড নামক প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত |
যদি সুযুক্তি দিতে হয় তাহলে ধর্মগ্রন্থকে ভালোভাবে পড়ুন | ধর্মের মূল মর্ম বুঝুন | ধর্মের কর্ম আর জ্ঞানের মধ্যে পার্থক্যটাকে জানুন | তারপর ধর্মের সমালোচনা করুন | তাহলে দেখবেন অন্যরকম আলোচনা আসছে যাতে শুধু লোকে নয় আপনিও উপকৃত হবেন |
কুমারী পুজো, ঋতুমতি মেয়েদের মন্দির প্রবেশ, জাতপাত, বৈদিক সাইন্স এই সব কিছুই ধর্মের নামে মানুষের দুষ্কর্ম | প্রকৃত ধর্ম নয় | যে তন্ত্র বাংলায় চালু আছে, যাতে কালী পূজাই মুখ্য পুজো তা বৈদিক ধর্ম নয় | যত রকম দেবী কালী দূর্গা চন্ডি মনসা এসবই আগে বাংলায় ডাকাতরা করত | অত্যন্ত নিম্ন শ্রেনীর লোকেরা যেমন চন্ডাল শুদ্র এরা সব এই দেবীদের পূজা করত | এতে নরবলি দিত | মদ খেয়ে আকন্ঠ মাতলামি করত | ঠগিরা , যারা ফাঁস দিয়ে নিরীহ মানুষদেরকে হত্যা করত | তারা পূজা করত কালির | আজকেও সেই বলিদান আছে | তবে আইনের গুঁতোয় আর নরবলিটি হয় না | পশুবলি হয় যা আরো ন্যাক্কারজনক , অসভ্য বর্বর কর্ম |
ইংরেজদের হাত ধরে এইসব চন্ডাল ও নিম্ন শ্রেনীর রাক্ষস প্রকৃতির লোকগুলি জমিদার হয়ে যায় | সঙ্গে নিজেদের নোংরা দেবী পূজার সংস্কৃতি যাতে হিংসাই প্রধান সেটাকে সমাজের মূলস্রোতে নিয়ে আসে | এইভাবে বিভিন্ন জমিদার বাড়িতে দূর্গা, কালী পূজা যা বনেদী পূজা বা সাবেকি পূজা নামেও পরিচিত তা শুরু হয় | ফলে বৈদিক ভাবধারা যাতে যজ্ঞ হোম ইত্যাদি ছিল মূল কথা, অহিংসাই যার প্রাণ , পুরোপুরি শেষ হয়ে যায় | এই নিয়ে আরেকটা বড় গবেষণাধর্মী লেখা দেবার ইচ্ছা আছে |
সুতরাং সবকিছুকে হিন্দু ধর্ম বলে চালাবার আগে একটু ভেবে দেখবেন |
মি: সত্যসন্ধানী,
আরএসএস এবং গোরক্ষা ব্রিগেডের শিষ্য হয়েও যে আপনি মুক্তমনায় পদার্পণ করেছেন সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আসলে ভীষণ অলস প্রকৃতির তাই মন্তব্য প্রতিমন্তব্যের দীর্ঘ বিতর্ক সবসময় এড়িয়ে চলি। আর গোবৎসদের সাথে তর্ক বৃথা। শুধু আপনার তীব্র বর্ণবাদী এবং অন্যের প্রতি ঘৃণাপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদ করার জন্য এই উত্তরটি লিখলাম।
হিন্দুধর্মের যৎসামান্য ভাল দিক যদি কিছু থাকে তা ওই লোকজ ধর্মগুলোকে আত্নীকরণ করার মধ্যেই নিহিত। যদিও উত্তর ভারতে গোবৎস ও হনুছানাদের দাপাদাপি শুরু হবার পর সেটিও এখন হুমকির মুখে।
আর মুক্তমনা একটি মানবতাবাদী, উদার, সকল প্রকার ধর্মীয় বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন দেখে। এখানে লেখবার সময় এগুলো মাথায় রাখবেন।
আর আপনার জ্ঞান বিতরণের জন্য ত গোবৎস ও হনুছানারা আছেই তাদের কাছেই সেটা করুন।
আপনি এরকম কদর্য ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন আপনার অল্পবিদ্যা কত ভয়ঙ্কর। আপনি সৌখিন মজদুরি করতেই ব্যস্ত। একটু গভীরে গিয়ে পড়ুন ভাই। আর হনুছানা তো আপনিও ভাই। অন্ততঃ বিবর্তনবাদ তো তাই বলছে। জিজ্ঞাসা থাকলে …….. ……… ……. আসুন। সুতর্ক, বিতর্ক আলোচনা করুন প্রকৃতই মুক্ত মন নিয়ে, মুক্তমনা হয়ে।
ধন্যবাদ
প্রসূনজিৎ বাবু আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পারলাম হিন্দু ধর্মের প্রতি আপনার যথেষ্ট ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে । আপনি হয়তো জানেনা আচার ঠিক থাকলে বিচারের প্রয়োজন হয় না । আপনি কি জানেন আসুরিক প্রবৃত্তি দ্বারা ধর্মের অপব্যাখ্যার প্রয়োগ ও পেশী শক্তি প্রদর্শন বরাবরই চলে আসছে । কিন্তু তাতে মুল ধর্মের গ্লানি হয়না ।বাড়ে অধর্ম ।
আর আপনি যে গুলো উল্লেখ করেছেন তাহা অধর্মের প্রকাশ মাত্র । আর তাতে প্রকৃত ধর্মের কিছুই নয়।
হিন্দু ধর্ম নামটাই এখন সীলগালা মারা । এখন আর কেহ বলেনা বৈদিক ধর্ম বা সনাতন ধর্ম ।যাহা আসুরিক প্রবৃত্তির চুড়ান্ত প্রকাশ । পৃথিবীর প্রাচিন ধর্ম হলো এই সনাতন ধর্ম । যার ভিত্তি হলো বেদ । এই বেদেই প্রথম ঘোষনা হলো একেশ্বরাবাদ “একমেদ্বীতিয়ম”
মহর্ষি ঋষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস দ্বারা শুদ্ধ ভাবে বেদ বিশ্লেষিত হয় । যাহা চর্তুবেদ ও ছয় উপবেদে বিভক্ত হয়।
তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য উপবেদ হলো আয়ুর্বেদ ও ধনুর্বেদ।
আয়ুর্বেদ এর কথা না বললেই নয় যাহাকে বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানের আদিপিতা মানা হয় ।
আর ধনুর্বেদ সমরাস্র ও আকাশ বিদ্যায় পরিপূর্ণ এক জ্ঞান ভান্ডার।
জ্যোতিবিদ্যা কে আপনি কি মনে করেন।সময় গ্রহ নক্ষত্র কি ও তার রূপ রেখা হাজার হাজার বছর আগে এই বেদই বলে এসেছে ।
বর্তমানে তার পূনঃআবিস্কার মাত্র।শুন্য থেকে নয় পর্যন্ত এই সংখ্যা দশটি আজ সর্বত্র যাহা বেদ থেকে উৎপত্তি।
আপনি যদি সকল জ্ঞানের গভীরতায় পৌঁছেন তাহলে এই বেদকেই পাবেন।
রূপ বর্ণ কলুষতা ও সকল প্রান বস্তুতে সাম্য ঘোষনা এক মাত্র বেদই দিয়েছে ।বিভেদ নয়।
যাহা বেদের সর্বশেষ ঘোষনা “ওঁম শান্তি”
@অমৃত দাশ
ঠিক ধরেছেন, সবই বেদে আছে। এই বিষয়ে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা এ বিষয়ে কি মত দিয়েছেন তা আপনার জন্য অবশ্য পাঠ্য।
অভিজিৎ রায়ের এই লেখাটাও পড়তে পারেন,
সবই ব্যাদে আছে
‘সবই ব্যাদে আছে’ হুবহুই এই কথাটিই আমি বলতে চেয়েছিলাম। তার আগে আপনিই বলে দিলেন।
@সিদ্ধার্থ
@প্রসূনজিৎ
“ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান পঙ্গু আর বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ”–আলবার্ট আইনস্টাইন ।
…………………………………………………………………………….
বেদ-এর অপর নাম শ্রুতি । আর তাই আচাররিক ভাবে প্রথাসিদ্ধ বেদ ।
উৎপত্তি ও আছে এই দুয়ের মধ্যে ফারাক অনেক !
যেমন স্যার আইজ্যাক নিউটন মাধ্যাকর্ষন তত্ত্ব এর প্রবক্তা কিন্তু মাধ্যাকর্ষন শক্তির অস্তিত্ব ও তার ভারসাম্য অনুসারে চলেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা । তাদের তিথি সময় জ্ঞান সবসময়ই ব্যবহার হয় মাধ্যাকর্ষন শক্তির ভারসাম্যর অন্যতম প্রভাবক চন্দ্রর গতিবিধি চান্দ্রমাস কে ঘিরে, মাধ্যাকর্ষন শক্তির অস্তিত্ব জোয়ার ভাটায় যে বুঝা যায় আর কোন সময় তারতম্য ঘটে ।তা আপনি চাইলে ডাইরেক্টী পঞ্জিকা থেকেও দেখে নিতে পারেন।
বিজ্ঞানের অর্থ আমরা সবাই জানি বিশেষ জ্ঞান ।
এক সময় পিতৃস্থানিয় গন তাদের সন্তানদের “বিশেষ জ্ঞান” অর্জনের জন্য গুরুগৃহে পাঠাতেন ।
যার বর্তমান রূপ “একাডেমী” ।
আর তাই বিজ্ঞানকে খুজতে কোথাও যাবার দরকার হয় না।
আপনি কি একবার ভেবে দেখেছেন ? বত্রিশটা দাঁতের মধ্যে থেকে জিহ্বা কিভাবে নিজেকে অক্ষত রাখে ?
আমার পূর্বভাষ্য উপলুব্ধ মুলক ও যথেষ্ট তথ্য যুক্ত ।
অমৃত দাশ
ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান পঙ্গু আর বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ–আলবার্ট আইনস্টাইন
এই কথাটি আইনস্টাইন কখনো বলেননি। তখন উনি বিভিন্ন বক্তৃতা/কথায় ধর্মকে রূপক অর্থে টেনে আনতেন যা দ্বারা তখনকার ধর্মবাদীরা মনে করতো উনি যথেষ্ট ধার্মিক। আপনি উনার রেখে যাওয়া চিঠিগুলো পড়লে বুঝবেন। আসলে উনি এক মহাজাগতিক ধর্মকে বিশ্বাস করতেন যেটা ঐ সময়ে অনেকে চর্চা করতেন কিন্তু এটার তেমন প্রচার পায়নি কারণ এখানে কোন সৃষ্টিকর্তা/ কোন চরিত্র ছিল না।
ধর্ম নিয়ে যারা লেখালেখি করছেন- সে হিন্দু ধর্মই হোক, ইয়াহূদী, খৃষ্ঠান বা ইসলাম ধর্মই হোক তাদের সবার মধ্যে একটি প্রধান সমস্যা- তারা মূল ধর্ম গ্রন্থ বর্নিত আদেশ, উপদেশ, বিধান সম্পর্কে সমালোচনা বা আলোচনার বিষয়বস্তু না করে ধর্মের নামে ট্রাডিশন, সংস্কার বা প্রতারকদের কর্মকান্ডকে ধর্ম হিসাবে অভিহিত করছেন। এটা অবাক কান্ডই বটে। গণতন্ত্রের বা সমাজতন্ত্রের দোহাই দিয়ে স্বৈরাচারের ক্ষমতায় টিকে থাকার অপচেষ্টা বা স্বার্থ হাসিল যেমন গণতন্তের সমস্যা নয়, মানুষের মধ্যে পশুত্বের সমস্যা। গণতন্ত্রের বা সমাজতন্ত্রের নমালোচনা করতে হলে সে সম্পর্কে তাত্ত্বিক আলোচনার মধ্যে তার দোষ-ক্রটি তুলে ধরা যেতে পারে -আবার প্রতারকদের কর্মকান্ড তুলে দলে তারা যে গণতন্ত্রী বা সমাজতন্ত্রী নয় সে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা যেতে পারে -তেমনি ধর্মের ক্ষেত্রেও সে বিবেচনাটিই সামনে আসা উচিত।
দেখুন কোনো রাষ্ট্রনীতিই স্থবির নয় বা সংস্কারের বাইরে নয়। আপনি গণতন্ত্র বা সমাজতন্ত্র যার কথাই বলুন সেগুলোর উৎপত্তির প্রাথমিক যুগের সাথে এখনকার নীতিগুলোয় প্রায় আমূল পরিবর্তন এসেছে।
অপরদিকে কোনো কোনো ধর্ম ত সর্বকালের সবসময়ের জন্য নিজেকে আদর্শ বলে দাবী করে থাকে। তাই গণতন্ত্র বা সমাজতন্ত্রের সাথে ধর্মের তুলনা একদমই চলে না।
ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থ ত জড় পদার্থ। আপনি এর বিচার করবেন কিভাবে? মানুষ কিভাবে এর প্রয়োগ করছে বা এর দ্বারা কিভাবে প্রভাবিত হচ্ছে সেটা দিয়েইত এসম্বন্ধে ধারণা পেতে হবে। সেটা মাথায় রেখেই বলতে চাই, বর্তমান যুগে একটি ন্যনতম মানবিক সমাজ গড়তে হলেও তা থেকে ধর্মকে বাইরে রাখতে হবে। ধর্ম থেকে এখানে আমাদের কিছুই পাবার নেই শুধুমাত্র বিভেদ আর বিভীষিকা ছাড়া।
আপনের কাছে একটি প্রশ্ন রাখলাম,হিন্দু ধর্মে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে কি বলে?
সমাজ ও সভ্যতার বিকাশের পথে সকল ধর্মই প্রধান বাঁধা হিসাবে দাঁড়িয়েছে এবং এখনো ধর্মগুলো একই ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মগুলোকে ব্যবহার করছে অজ্ঞ ও স্বার্থপর রাজনীতিবিদরা। এর বিরুদ্ধে প্রয়োজন শিকড়-নাড়া একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন। এর কোন বিকল্প নেই।
একমত।
দুঃখিত, ফ্যাসিস্ট মোদির এই শাসনামলে এসে আপনার সাথে একমত হতে পারলাম না। এতো সংস্কারের পরেও হিন্দু-ধর্ম জাতপাত, অনার কিলিং এর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। ভারতে এখনো নারীর চেয়ে গবাদিপশুর সম্মান বেশি। উচ্চবর্ণের গো-পূজারীরা দলিত নারীদের ধর্ষণ করে প্রতিদিন পার পেয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে গোমাংস ভক্ষণের অভিযোগে দলিত ও মুসলিম সম্প্রদায় এর লোকজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে।
একমত
হাস্যকর ব্যাপার । আলোচনা হচ্ছে ধর্ম নিয়ে। এখানে ‘ফ্যাসিস্ট’ মোদি আসল কোত্থেকে?