অভিযোগ উঠেছে যে ১৯ বছরের নান্যাচর কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী রমেল চাকমাকে ৫ই এপ্রিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনি রাঙামাটির নানিয়ারচর বাজার থেকে উঠিয়ে নিয়ে চরম অত্যাচার করে। সেনাক্যাম্পে অমানুষিক নির্যাতনের ফলে রমেলের যখন মুমূর্ষু অবস্থা তখন সেনাবাহিনি পুলিসের কাছে রমেলকে হস্তান্তর করার চেষ্টা করে, পুলিস রমেলের অবস্থা দেখে তাকে নিতে অস্বীকার করে। এরপরে ১৯ এপ্রিল’ ২০১৭, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রমেল চাকমা। কিছু সময় পরে তার দেহকে – সাক্ষ্য প্রমাণ মুছে ফেলবার জন্য – আগুনে পুড়িয়ে ফেলবারও অভিযোগ উঠেছে। সুস্থ রমেল চাকমাকে ৫ এপ্রিল ধরে নিয়ে গিয়েছিলো সেনাবাহিনীর বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বার বার এমন ঘটনা ঘটছে এবং কোন ভাবে সুবিচার পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা মনে করি পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনির বিচারহীন ঔপনিবেশিক বাহিনির মত আচরণের ফলেই এইসব ঘটনা ঘটছে। মুক্তমনা রমেল চাকমা হত্যাকাণ্ড সহ সকল অত্যাচার ও হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, আদর্শিক অবস্থান নির্বিশেষে মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মানুষ। কারো ইচ্ছে হলেই সে অন্যকে খুন করে ফেলতে পারে না। আজকের রাজনৈতিক ভাবে টানা সীমানায় আবদ্ধ থেকেও একটি জাতি তার মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে চায়। এজন্য সে তার রাষ্ট্র-কর্মচারীদের চাকুরী দেয় সূনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে দেশ চালাবার। এই নিয়মগুলো লেখা থাকে দেশটির সংবিধানে। কোন দেশের সংবিধানে সে দেশের মানুষ নিজেদেরকে ইচ্ছেমত খুন হতে দিতে বা শোষণ, পেষণ, শাসন, অন্যায় কিংবা অত্যাচারের লাইসেন্স দেয় না। এমন ঘটনা ঘটলে দোষ হয় রাষ্ট্র চালাবার চাকরি করে যারা; তাদের প্রত্যেকের। এমন দোষে দুষ্ট যারা তাদের সকলের বিচার ও শাস্তি দাবি করছে মুক্তমনা পরিবার।
শাস্তি দাবি করার বিষয়টিকে আমার কাছে খুব ক্লিশে মনে হয়। সরকারের কি সেনাবাহিনীর বিচার করার সামর্থ্য, ইচ্ছে কোনোটাই আছে? এর আগে বিচার হয়েছে, এমন কোনো উদাহরণ রয়েছে? যারা বিচার করবে তাদের নিজেদেরকেই তো তাইলে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। যেটা দরকার সেটা হলো ৭১ এর মতো সিভিল ডিসঅবিডিয়েন্স যেটা এখন বাংলাদেশে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
বিচারের দাবি’টা জানানো হয়েছে দেশের মালিক; নাগরিকদের কাছে। মানুষের জন্য মানুষের কাছে। ছদ্ম জনপ্রতিনিধি; রাজঠিকাদার’দের কাছে নয়।
প্রিয় মুক্তমনা সম্পাদক,
দুঃখিত, পোস্টের বক্তব্যে তা স্পষ্টভাবে ওঠে আসেনি। বিচার দাবি করা অনেকটা দায়সারা ব্যাপার, তা সরকারের কাছেই করা হোক, কিংবা জনগণের কাছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিক অধিকার-বঞ্চিত আদিবাসীদের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ণ সম্পর্কে অবহিত নন, অনেকে আবার জাতীয়তাবাদী চেতনা থেকে পরোক্ষ মদদ দিয়ে থাকেন। সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য বরং চাই আন্দোলন, যা জন-মানসপটে পরিবর্তন আনতে কাজে দেবে। মুক্তমনা যেহেতু সেই শুরু থেকেই এ বিষয়ে সোচ্চার, সুতরাং মুক্তমনা এ আন্দোলনে চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করতে পারে। সেজন্য প্রয়োজন আদিবাসী-অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন তৃণমূল অধিকার-কর্মীদের সাথে ব্যাপক আন্তঃসংযোগ।
সংবিধানে কিন্তু আদিবাসীদের পূর্ণ সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই। অন্যদিকে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্মেরও বিধানও এক্ষেত্রে আদিবাসী সহ অন্যান্য সংখ্যালঘু নির্যাতনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ দিয়ে যাচ্ছে।
মন্তব্য আলোচনা করে আরো স্পষ্ট করে তুলুন।
বাংলাদেশের সরকারের কাছে কিছুই চাওয়া হয়নি। যা চাওয়া হয়েছে তা নাগরিক; দেশের মালিক যারা, তাদের কাছে। এখানে অষ্পষ্ট কিছু নেই। নাগরিক ঠিক করে নেবে তারা দেশের সংবিধানে খুন খারাপি খেঁজুর খোর্মা রাখবে না সুস্থ গণতন্ত্রের চর্চা রাখবে।
আসলে কথা বলতেও এখন ঘৃণা লাগে। যারা একটু কথা বলে, তাদের কেন জানি দমিয়ে দেয়া হয়!
পাহাড়ে পাকিপনা নিপাত যাক!
মুক্তমনা সম্পাদককে ধন্যবাদ, নিপীড়িত আদিবাসীদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য।
#অফটপিক: এই সুযোগে মুক্তমনা টেকিদের জানাই, নতুন সংস্করণে মোবাইল থেকে লগইন করা যায় না। সময়ের দাবি, দ্রুত মুক্তমনার মোবাইল সংস্করণ করা হোক।
আর নতুন ভার্সনে কলাম করায় ডেক্সটপ ভিউ এ এক সঙ্গে অনেক পোস্ট চোখে পড়ে বটে, কিন্তু দেখতে বেশ হিজিবিজি লাগে। এটি মোটেই আইফ্রেন্ডলি নয়!
অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে আপনিও শক্তি জোগাচ্ছেন অবিরাম; আপনাকেও ধন্যবাদ।
আপনার পরামর্শ সক্রিয় বিবেচনায় থাকলো।
এই ব্লগে কমেন্ট কিভাবে তা এখনো জানিনা ৷অনেক মাস হলো এই ব্লগ টা অনুসরণ করতেছি ৷