পৃথিবীর সমস্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকালেই আসামিপক্ষের অপরাধ অস্বীকারের নজির আছে।
যেমন গতকালের ঘটনাই ধরা যায়-

Profile of Chad’s former dictator Hissene Habre summarising the crimes of which he is accused. (180 x 151)
–
-180 x 151 mm
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আফ্রিকার দেশ চাদের সাবেক সামরিক স্বৈরাচারী শাসক হাইসেন হাবরিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে সেনেগালের একটি বিশেষ আদালত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, খুন, গণহত্যা, নির্যাতন, যৌন দাসত্ব, ধর্ষণ।
১৯৯০ সালে এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেনেগালে পালিয়ে যান হাইসেন। তার বিচার সম্পন্ন করতে ১৬ বছর ধরে লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছে ভুক্তভোগীদের। ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে ৭২ বছর বয়স্ক এই সামরিক শাসক মোট ৪০ হাজার লোককে হত্যা করেছিল।
তার বিচারের জন্য সেনেগালের রাজধানী ডাকারে বিশেষ আদালত স্থাপন করার উদ্যোগ নেয় পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর সংগঠন আফ্রিকান ইউনিয়ন। উল্লেখ করতে হয় এর আগে আরও একটি আদালতে হাইসেনের বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৫ আগস্ট ২০০৮ হাইসেনের নিজের ক্ষমতাধিন চাদের একটি আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় কিন্তু পশ্চিমা মোড়লদের খোদাগিরির কারণে সেই রায় বাস্তবায়িত হয়নি।
এরপর হাইসেনের বিরুদ্ধে আও ১৪টি অভিযোগ দায়ের করা হয় এবার সেটা করা হয় সেনেগালের একটি আদালতে। ৮ জুলাই ২০১১ আদালতের বিচারকার্য শুরু হবার কথা কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠে। এর ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম কোর্টে (ICC) তার বিচার করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু আইনি সিমাবদ্ধতার কারণে সেটাও সম্ভব হয়নি।
ডিসেম্বর ২০১২ সেনেগালের সংসদ থেকে একটা আইন পাশ করা হয় যার দ্বারা সেনেগালে একটা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত স্থাপন করা হয়। এই আদালতের বিচারক নিয়োগ দেয় আফ্রিকান ইউনিয়ন।
২০১৩ সালের জুনের ৩০ তারিখ হাইসেন সাহেবকে গ্রেফতার করা হয় আর আর ২০ জুলাই ২০১৫ তার বিচার কাজ শুরু হয়। গতকাল সেই আদালত থেকে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের জন্য ১৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে হাবরিকে। বিচার কাজের পুরো সময়জুড়ে আদালতের বৈধতা মেনে নিতে অস্বীকার করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আর দুনিয়া দেখছে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম কোন শাসককে হত্যা এবং ধর্ষণের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
গণহত্যা কখনো চাপা দেয়া যায় না…
আরও বিস্তারিত জানুন-
http://www.pri.org/stories/2016-05-30/chads-former-dictator-convicted-crimes-against-humanity-landmark-trial
শুভেচ্ছা আরিফ রহমান ,
আপনার লেখাটা মনোযোগ দিয়ে কয়েকবার পড়লাম । সংক্ষেপে লেখার পাশাপাশি বিস্তারিত পড়ার জন্য লিংক শেয়ার করার জন্য কৃতজ্ঞ । ফ্যাসিবাদী , মানবতা বিরোধীদরা মনে করে যে , তাদের পরে আর কেউ আসবেনা ; জনগণকে দাবায় রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে প্রশাসন দিয়ে । কিন্তু তারা হয়তো এই কথা ভুলে যায় , সেই প্রশাসনে কিন্তু সেই জনগনের ভাই – বোনেরাই কর্মরত । সব ফ্যাসিবাদেরই পতন হয়েছে – বিচার হয়েছে , হবে । জয় মানবতারই হয় , হবে –
সেনেগালের সামরিক স্বৈরাচারী শাসকের বিচারের ক্ষেত্রে বিচারিক কাঠামো বাংলাদেশের রাজাকারদের বিচারের মডেলে সাজানো হোক।