২০১০ সালের একুশে গ্রন্থমেলায় শুদ্ধস্বর থেকে প্রকাশিত হয়েছিলো অভিজিৎ রায়ের লেখা “সমকামিতা: একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান” বইটি। বইটির ভূমিকায় অভিজিৎ রায় লিখেছিলেন- “সমকামিতা অস্বীকৃত শুধু নয়, অনেক জায়গায় আবার এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এখানে সমকামীদের হয় লুকিয়ে থাকতে হয়, কিংবা অভ্যস্ত হতে হয় ‘ক্লোসেটেড গে’ হয়ে ‘বিবাহিত’ জীবন যাপনে। তাদের অধিকার হয় পদে পদে লঙ্ঘিত। এর সুযোগ নিয়ে অনেক সময় খুব কাছের বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ঘটে আক্রমণ আর নানা পদের হেনস্থা। ‘সনাতন বাঙালি কিংবা ধর্মীয় সংস্কৃতি’র ধারক এবং বাহকের দল আর অন্যদিকে ‘অপসংস্কৃতি’র বিরুদ্ধে সদা-সোচ্চার স্বঘোষিত অভিভাবকবৃন্দ; কারো কাছ থেকেই সমকামীরা বিন্দুমাত্র সহানুভূতি প্রত্যাশা করতে পারে না। আসলে সমকামীদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির একটা বড় কারণ আমাদের বিজ্ঞানমনস্কতার অভাব। আর এ কথা বলে দেয়া নিষ্প্রয়োজন যে–সব পুরানো সংস্কৃতির মতোই আমাদের সংস্কৃতিরও অনেকটা জুড়েই বিছানো আছে অজ্ঞতার পুরু চাদর। আমাদের সংস্কৃতিতে গুরুভক্তি যেমন প্রবল তেমনি লক্ষণীয় ‘মান্য করে ধন্য হয়ে যাবার’ অন্তহীন প্রবণতা। আমরা গুরুজনদের বহু ব্যবহারে জীর্ণ আদর্শের বাণী আর অভিভাবকদের শেখানো বুলি তোতাপাখির মতো আজীবন আউরে যেতে ভালোবাসি। আমাদের ভয় অনেক। সীমাহীন স্ববিরোধ আর বংশপরম্পরায় চলে আসা প্রথা মান্য করে যাওয়াকেই আমাদের সমাজে ‘আদর্শ’ বলে চিহ্নিত করা হয়। এর বাইরে পা ফেললেই বিপদ। কিন্তু তারপরও কাউকে না কাউকে তো ‘বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার’ দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতেই হবে। এই বইয়ের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বাংলাভাষীদের জন্য অজ্ঞতার চাদর সরানোর প্রয়াস নেয়া হয়েছে, সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ হাজির করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, সমকামিতা কোনো বিকৃতি বা মনোরোগ নয়, এটি যৌনতারই আরেকটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি।”
২০১৪ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে সমকামীদেরকে গ্রহণ করা ও বৈষম্য দূর করার অভিপ্রায়ে প্রকাশিত হয় রূপবান পত্রিকা। গে, লেসবিয়ান ও বাই সেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিলো রূপবান পত্রিকাটির প্রকাশ। পত্রিকাটির দ্বিতীয় সংখ্যায় ছাপা হয়েছিলো মুক্তমনা সম্পাদক ও সমকামিতা বইটির লেখক অভিজিৎ রায়ের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার। বাংলাদেশে সমকামিদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গীর কেমন পরিবর্তন হচ্ছে জানতে চাইলে অভিজিৎ রায় আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন- “আমি আশাবাদী। একটা সময় রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় এ নিয়ে আলোচনার কোন প্রেক্ষাপটই ছিল না। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। ফেসবুক, ব্লগ কিংবা টুইটারে মানুষ আলোচনা করছে। রাষ্ট্র চাইলেও সবার কণ্ঠরোধ করতে পারছে না। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মেইনস্ট্রিম পত্রিকাগুলোর কয়েকটি এ ব্যাপারে লেখা ছাপাতে আগ্রহী হচ্ছেন, সেটাও দেখছি। সে লেখাগুলো দ্রুতগতিতে পাঠকদের হাতে পৌঁছেও যাচ্ছে। আমি আশা করছি অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতির অনেক উন্নয়ন হবে। সমকামীদের লুকিয়ে ছাপিয়ে থাকতে হবে না, হবে না অযাচিত আক্রমণের ভয়ে ভীত হয়ে চলতে।”
সাক্ষাৎকারটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন অভিজিৎ রায়, যে বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে অজস্র লেখক, অধিকারকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী, মুক্তমনা সচেতন মানুষ সেই বাংলাদেশ আজ ইসলামি মৌলবাদের চাপাতিতে আক্রান্ত। নিয়ম করে খুন হচ্ছেন মানবতাবাদী, ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল শিক্ষক, লেখক, অধিকারকর্মী। সরকার অবস্থান নিচ্ছে মৌলবাদের পক্ষেই, বেছে নিয়েছেন আক্রান্তকে দোষারোপ করে দায় এড়ানোর সংস্কৃতি। সরকার প্রধান থেকে শুরু করে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা সবাই কথা বলছেন জঙ্গিদের সুরে। “রূপবান” পত্রিকার সম্পাদক ও অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নান নিজ বাসায় বন্ধু সহ জবাই হবার পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন-
“আমরা যতটুকু জেনেছি জুলহাজ রূপবান নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। আর তিনি সমকামীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করতেন। এটা আমাদের সমাজের সঙ্গে মানানসই না।”
আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আর আমিও আগেই বলেছি কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে বা বিশ্বাসে আঘাত দেওয়ার অধিকার অন্য কারো নেই। সবাইকে সংযত হয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করার অনুরোধ করছি ।
তবে অবশ্যই বাংলাদেশের সবাই শেখ হাসিনা নন, সবাই আসাদুজ্জামান কামালও নন, সবাই আনসার বাংলা, দাওয়াতে ইসলাম, আল-কায়েদা বা আইএস নন। উঁচু থাকা মাথারা একে একে কাটা পড়লেও প্রগতির পথ বন্ধ হবে না কখনই, বন্ধ হবে না মানবতাবাদী, ধর্মনিরপেক্ষ, সবার অধিকারে সচেষ্ট বাংলাদেশ রক্ষার আন্দোলনও। খুন হওয়া মানবাধিকার কর্মী জুলহাজ মান্নানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মুক্তমনা ফ্রি ই-বই প্রজেক্টের আওতায় আজ প্রকাশিত হলো অভিজিৎ রায়ের লেখা “সমকামিতা” বইটি।
ডাউনলোড লিংক
মন্তব্য…যে দেশে যৌনতা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে কথা বলা লজ্জাজনক বলে প্রচলিত, সেখানে সমকামিতা নিয়ে কথা বলা তো রীতিমতো স্পর্ধা বলে বিবেচিত। আর সমকামিতা কে সমর্থন করলে তো ভবলীলা সমাপ্ত। আর মৃত্যুর পর ন্যায়বিচারটা অনিশ্চিত।
মানুষ কোরান লিখেছে
হজরত মোহাম্মদ কখনো এক আয়াত, কখনো একাধিক আয়াত বলতো আর মানুষ সাথী, মানে সাহাবায়েক্বেরামরা কেউ কেউ তা লিখে রাখতো নিজেদের কাছে। মানুষ। হজরত মোহাম্মদের জীবদ্দশায় তার কাছের সঙ্গী সাথীরা চামড়ায়, খেজুর পাতায়, পশুর হাড়ে ইত্যাদিতে আয়াত লিখে রাখতো। অনেকে মিলে তা মুখস্থও করত, কেউ কেউ শুধু মুখস্থই রাখতো। কয়েকটি আয়াতের যোগফল হল এক একটি সূরা, আর; এখনকার কোরান সেই রকম ১১৪টা সূরার যোগফলের গ্রন্থ।
আপনি মুক্তমনায় প্রকাশিত পোষ্টগুলো থেকে কপি পেস্ট করেই চলেছেন। আসলে কি করতে বা বলতে চাচ্ছেন একটু পরিষ্কার করেন তো। আপনার মতামত বা মন্তব্য অংশটুকু কোনটি?
ঢাকা এটাকের পর ২০ জন মানুষকে জবাই
ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড হোক, তনু হত্যা, শিশু রাজন হত্যাকান্ডের পর যেমন পুরো বাংলাদেশ ফুসে উঠেছিল। অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে, ঢাকা এটাকের পর ২০ জন মানুষকে জবাই। যেকোন মূল্যে এই হত্যার পেছনের ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হক-এটা ছিল পাবলিক ভারডিক্ট। এরকম সাগর-রুনি হত্যাকান্ড, হলমার্ক কেলেঙ্কারিসহ আরও নানা বিষয়ে আমাদের পাবলিক ভারডিক্ট এইরকমই। […]
জিহাদিরা গুলি করে আল্লাহু আকবর হুঙ্কারের পর
কিছুদিন আগেই গুলশান, ঢাকা, বাংলাদেশের একটি রেস্টুরেন্টে , বোমা ফাটিয়ে জিম্মি করে খুন করেছে কয়েকজন বিদেশি নাগরিক সহ প্রায় ২২ জন মানুষকে।
মুক্তমনা আক্রান্ত সকল সুনাগরিকের নিরাপত্তা কামনা করছি।
ব্রেইন ওয়াশিং চলছে নিরাপদে মসজিদে বসে
মসজিদে বসে নিরাপদে ব্রেইন ওয়াশিং চলছে, তবে আমি তাবলীগ ও জামায়াতের ঘোর বিরোধী? আসুন, জঙ্গিবাদকে ‘না’ বলি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলি। এই জঙ্গিবাদের বিষয়টিকে আরো খতিয়ে দেখার সময় এসেছে।
বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিবাদের স্বরূপ ও সম্ভাব্য করণীয়
২০১৩ সাল থেকে ইসলামী জঙ্গিরা ধারাবাহিকভাবে নাস্তিক-সংখ্যালঘু-প্রগতিশীলদের কুপিয়ে হত্যা করলো, সরকার তখন এসব নৃশংস ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন বলে আখ্যায়িত করে; সরকার স্বীকারই করলো না যে, বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিবাদ ভয়ংকরভাবে বিস্তার করেছে।
গুলশানে ইসলামি জঙ্গিদের হামলায় ২০ জন বিদেশী ও ০২ জন পুলিশ নৃশংসভাবে মারা গেছে, আহত হয়েছে অসংখ্য।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি হয়তো ঘটতো না, যদি ২০১৩ সাল হতে ইসলামী জঙ্গিদের হাতে ধারাবাহিকভাবে নৃশংসতম উপায়ে বগ্লার লেখক খুনের ঘটনাগুলোকে সরকার বিচ্ছিন্ন ঘটনা আখ্যা না দিয়ে বরং জঙ্গিবাদ দমনে জরুরি ব্যবস্থা নিতো।
সে সময় মুক্তমনা ও প্রগতিশীলরা বারবার সরকারকে বলেছিল, ইসলামী জঙ্গিদের হাতে প্রগতিশীল লেখক হত্যাকাণ্ড একসময় মহীরূপ নেবে, দ্রুত জঙ্গিদের টার্গেটে পরিণত হবে বাংলাদেশে বসবাসরত সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু সরকার সে সময় এগুলোকে শুধু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিবাদের উপস্থিতি প্রকারান্তরে অস্বীকার করেছিল তা নয়, উপরন্তু সরকারের মন্ত্রী ও প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা সহিংসতার জন্য নিরীহ ভিক্টিমদের তাদের লেখালেখি ও আচরণের জন্য দায়ী করেছিল।
ইসলামী জঙ্গিবাদ বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড়া।
এই ফোঁড়া যখন ছোট ছিল, তখন সরকার এর উৎপাটনের দায় এড়িয়ে গেছে বরং ভিক্টিমদের দোষারপ করেছে। বর্তমানে এই ফোঁড়া দেশের সবকিছুকে টার্গেট করছে; প্রতিদিনই ইসলামী জঙ্গিরা বাংলাদেশের কোথাও না কোথাও তাদের নৃশংস অভিযান পরিচালনা করছে।
এখনও যদি সরকার ইসলামী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে না যায়, তবে বাংলাদেশের পুরোপুরিভাবে পাকিস্তান-অাফগানিস্তান-নাইজেরিয়ায় পরিণত হওয়া অতিস্বল্প সময়ের ব্যাপার।
প্রথমে আলোকপাত করা যেতে পারে, বাংলাদেশের এই ইসলামী জঙ্গিগোষ্টী কারা?
বাংলাদেশের জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও আনসার আল ইসলাম আন্তর্জাতিকভাবে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল কায়েদার সঙ্গে যুক্ত।
সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ যে জঙ্গিবাদের বিস্তার হয়েছে তা একদিনে হয়নি। রুট লেভেল থেকে শুরু করে আপার লেভেল পর্যন্ত বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন নামে জঙ্গি-মতবাদের বিস্তার করে চলছে। ফলে বিভিন্ন সময় সরকার এসব সংগঠন কিংবা দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে পারেনি। সময়ের পরিক্রমায়, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রশ্রয় ও মদদে চলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বিস্তার। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বিস্তারে বিভিন্ন এনজিও, দাতবসংস্থা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইসলামপন্থী সংগঠন ও ব্যাংক প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। যুদ্ধাপরাধী দল জামাতী ইসলামের ছাত্র সংগঠন জঙ্গিবাদের সৈন্য সংগ্রহের প্রাথমিক স্তর হিসেবে কাজ করলেও বর্তমানে অনেক জিহাদী কিংবা জঙ্গি জামাত কিংবা শিবির ত্যাগ করে আরো বেশি রেডিক্যাল সংগঠনের সাথে যুক্ত হচ্ছে। এর মূল কারণ মতবাদ ও কার্যক্রম সম্পর্কে ভিন্ন-পন্থায় বিশ্বাসী। আমরা স্মরণ করতে পারি সারা দেশে বোমা হামলা করে জানান দেওয়া জেএমবি দলটির কথা। যারা সবাই ছিল জামাত, শিবিরের সাবেক সদস্য।
বিশ্বের জঙ্গিবাদের ঢেউ বাংলাদেশেও ধাক্কা দিচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমান যে জঙ্গিবাদ তার শেকড় খুঁজতে গেলে আমাদের দৃষ্টি নিতে হবে তালেবানের উত্থানের সময়টিতে। ৮০-এর পর বাংলাদেশ থেকে অনেক ইসলামিক যোদ্ধা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আফগানিস্তানে যায়। যুদ্ধে অনেকে নিহত হয় অনেকে যুদ্ধ শেষে ফিরে আসে। তালেবান হল সুন্নি ওহাবী গোষ্ঠী। যারা তালেবানদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে তারা যুদ্ধে যাওয়ার আগে ওহাবী কিংবা সালাফি ছিল কিনা তা নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও তারা যে ফিরে আসার সময় ওহাবী মতবাদ মাথায় করে নিয়ে এসেছে তা স্পষ্টভাবে বলা সম্ভব। দেশে এসে তারা বিভিন্ন মাদ্রাসা, মসজিদ তৈরি করে কেউ বা মসজিদ মাদ্রাসার প্রধান হয়ে বসে। সুতরাং মাদ্রাসায় ইসলামিক শিক্ষার নামে বলে বলে ওহাবী মতবাদের প্রসার আর মসজিদের খুতবায় চলে ওহাবীদের পক্ষে প্রচার। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বীজ বপনের কাজটি হয়েছে সেসময়।
মুক্তমনা কর্তৃপক্ষের নিকট সবিনয়ে নিবেদন করছি নিম্নোক্ত প্রবন্ধটি আমার স্বরচিত বা স্বমদতপুষ্ট নহে, ইহা নিজস্ব সাইটে প্রকাশ করেছেন ভারতীয় যুক্তিবাদী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক প্রবীর ঘোষ
“গত ১১-ই ডিসেম্বর, ২০১৩, ভারতের শীর্ষ আদালত জানালো, সমকামিতা বা সম-লিঙ্গ প্রেম অসাংবিধানিক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আদালত এই রায় দিলেন ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩৭৭ অনুযায়ী………..দুর্নীতিতে ডুবে থাকা কেন্দ্রীয় সরকারের ‘মহামাতা’ শ্রীমতী সনিয়া এবং তাঁর আস্তাবলের দুই ‘নন্দী-ভৃঙ্গী’ জানালেন যে সরকার এই রায়ের বিপক্ষে, কারণ, এটা নাকি ব্যক্তিস্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ!!! ওয়াহ! ক্যা বাত হ্যায়! ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সমস্ত আইনের পক্ষে চিকন গলা তোলা এই সব সন্ত্রাসবাদের বাবা-মায়েরা উতলা হচ্ছেন স্বাধীনতা, গণতন্ত্র নিয়ে । ……………….সুতরাং, ‘যৌন-স্বাধীনতা’ বলে যেটা প্রচার করা হচ্ছে, সেরকম কিছুই
যদি কেউ স্বেচ্ছাকৃত ভাবে প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে কোনো পুরুষ, স্ত্রী বা পশুর সাথে যৌন সংসর্গ করে-তবে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা দশ বছর অবধি সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড হবে, এবং সে অর্থদণ্ড দিতেও দায়ী থাকবে।
এটা গ্রেপ্তার যোগ্য ও জামিন অযোগ্য অপরাধ।যারা এই ধারা বাতিলের দাবী নিয়ে, যৌন-স্বাধীনতার ধ্বজা ধরে গলা ফাটাচ্ছেন, তাদের কাছে বিনীত ভাবে জানতে চাই- কোনো সমকামী ‘দম্পতি’-র মধ্যে যৌন সংসর্গ কিভাবে সম্ভব, যা আপনাদের মতে প্রকৃতির নিয়ম মেনে বা না মেনে? পুরুষের সঙ্গে পুরুষের? নারীর সাথে নারীর? অথবা পুরুষ বা নারীর সাথে কোন পশুর??………………………….অনেকেই আছেন যারা বিষয়টা নিয়ে হয়তো একটু বা বেশ বিভ্রান্ত। আবার একটা বড় অংশ সব জেনে বুঝেই চূড়ান্ত যৌন-অজাচারের পক্ষে এক গন-উন্মাদনা করতে চাইছেন। তোল্লাই দিতে চাইছেন এক লুম্পেন সংস্কৃতিকে।এটা নিঃসন্দেহেই এক সাংস্কৃতিক সন্ত্রাস। এই আগ্রাসন থামাতে প্রয়োজন পাল্টা আগ্রাসনের, যা বয়ে আনবে সুস্থ সংস্কৃতির ঝোড়ো বাতাস, যার শিরায়-শিরায় জানান দেবে দিন বদলের চেতনার তীব্র আকুতি।……….কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে আমরা সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি এই নোংরা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যা সমাজের একটা অংশকে নিশ্চিতভাবেই ঠেলে দিতে পারে সীমাহীন নৈরাজ্য ও অজাচারের অন্ধকার দুনিয়ায়।”
উপরোক্ত প্রবন্ধটির নির্বাচিত অংশ থেকে ইহা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে অভিজিত রায়ের মত যাঁহারা সমকামিতার সপক্ষে মন্তব্য করেন, তাঁহাদের মতাদর্শকে প্রবীর ঘোষ কটাক্ষ করেছেন লুম্পেন ও নোংরা সংস্কৃতি বলে । মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা,যিনি প্রবীরের একান্ত অনুগামী এবং এবং মুক্তমনায় সংরক্ষিত এই চিঠি থেকে জানা যায় তিনি প্রবীরের বই পরে যুক্তিবাদের আদর্শে দীক্ষিত হয়েছিলেন,তিনি এই প্রবন্ধ পাঠ করলে তাঁর এই যুক্তিবাদী আদর্শটির সম্বন্ধে নিজ মনোভাব পরিবর্তন করতেন না’কি নিজে সমকামিতার সমর্থম ত্যাগ করতেন, তা আমার পক্ষে অনুধাবন করা অসম্ভব ।
সমকামিতা সম্বন্ধে নিজ মতামত ব্যক্ত করা বা ইহার ঔচিত্য অনৌচিত্য বিষয়ক কোনো মন্তব্য করিবার উদ্দেশ্যে আমি আপনাদের নিকট এই প্রবন্ধটি উপস্থাপন করিনি, বরং একটি সামান্য কিন্তু মূল্যবান দার্শনিক উপলব্ধির উপর আলোকপাত করেছি মাত্র – যদি আপনারা নির্মোহ দৃষ্টিতে প্রবন্ধটি পথ করেন, তবে নিশ্চয় উপলব্ধি করবেন যে – দন্দ্ব হলো প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম, শুধুমাত্র আস্তিক বা কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষেরাই নয়, স্বার্থসংঘাত বা মতাদর্শগত বিরোজনিত কারণে যুক্তিবাদীরাও অনায়াসে অন্তর্দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরেন। যদি পৃথিবীর সল মানুষ যুক্তিবাদী হয়ে যান, বা বিপরীতভাবে বলা যায় একই মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে যান, তবেও তাঁহারা অন্তর্দন্দ্বের হাত থেকে রেহাই পাবেন না ।
আমি কি ভাবে আমার পোষ্ট গুলি দেখতে পারি একটু বলবেন আপনারা?
মুক্তমনায় আপনি কি কখনো লিখেছিলেন?
প্রধান মন্ত্রীর বৈশাখী ওয়াজ
ব্লগার সাংবাদিক সাকিব আহমদ মুছা-লেখক ও ব্লগারদের ব্যাপারে অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। নিহত বা মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকা। এতদিন এ ব্যাপারে একটি ধুঁয়াশা ছিল এখন প্রায় দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে গেল কেন রাষ্ট্রের পুলিশ বা গোয়েন্দারা ভিন্নমতাবলম্বী লেখক হত্যাকান্ডের কোন সূত্র খুঁজে পায়না অথবা ক্ষেত্র বিশেষে জনতার হাতে ধরা পড়লেও কেন হত্যাকারীদের […] <img style="width:400px" src="
মুক্তমনা কে এই বইটির পিডিএফ ভার্সন দেবার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
জুলহাস হত্যাকান্ড নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্রীর মন্তব্যের পর আমার এ বইটির কথাই বার বার মনে হয়েছে। ইচ্ছে হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে আমার বাসার কপিটা পাঠিয়ে দিই। উনি আবার আমার নির্বাচনী এলাকার এম পি।
মুক্তমনা শুধু নামেই মুক্তমনা নয় কাজেও মুক্তমনা। জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে মুক্তমনার এই অবস্থান খাঁটি বিপ্লবী চেতনার প্রতিফলন। মুক্তমনাকে জানাই হাজারো সালাম।
আমার কেনা অভিজিৎ রায়ের প্রথম বই। শ্রদ্ধা অশেষ!
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিগ্যেস করছি, আমাদের সমাজের সাথে অমাননসই কাজ করলেই তাকে খুন করে ফেলতে হবে? সেই লাইসেন্সই কি আপনারা ক্ষমতাসীনরা খুনীদের দিয়ে রেখেছেন? ইসলামে ত নারী নেতৃত্ব হারাম। তার কী হবে, মন্ত্রী সাহেব?
দাদা সব সময়ই একটু বেশী আশা করতেন। সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য হল এর ফলও তাকেই ভোগ হল। যা মুক্তচিন্তার ইতিহাসে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
এই পোড়া দেশকে নিয়ে যে আশা করার কিছু নেই এবিষয়টি উনি বুঝলেন না !!
মুক্তমনা লেখকদের চিন্তা দুরদর্শী । আজ যে সমস্যার সৃষ্টি হবে তা তারা ১০ বছর আগেই চিন্তা করে। এক মুক্তমনা ব্লগারের সাথে ফেসবুক চ্যাটে কথা প্রসংগে উঠে এসেছিল, হুমায়ুন আজাদ , অভিজিত রায় এরা সময়ের চেয়ে অনেক অগ্রসর এদের জন্ম আরো ৫০ বছর পরে হলে ঠিক হত।
মুক্তমনা যে বইটি শেয়ার করেছে সেটি ডাউনলোড করে পড়লে বিভ্রান্তি দূর হবে। বইয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনায় আমার অভিমত-
মানুষের জিনগত ত্রুটির কারনে মানুষ সমকামি ও হিজড়া হয়। এর জন্য যদি কাউকে দোষ দিতেই হয় তাহলে দেয়া উচিত পিতামাতা ও সৃষ্টিকর্তাকে । কারন তাদের কারনেই একটি শিশু সেই জিন ধারন করেছে।অবশ্য বিষয়টা প্রাকৃতিক তাই তাদেরও দোষ দেয়ার কিছু নেই।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সমকামীর দেখা মিলে কোথায় ? এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে গেলে কেউ হয়ত দেশদ্রোহী বা নাস্তিক বলবেন। তবুও বলছি সবচেয়ে বেশি সমকামী আছে সেনাবাহিনী ও আবাসিক মাদ্রাসাগুলোতে। তাই বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে যে নেই তা বলছি না, সেখানেও আছে।
সেনাবাহিনীতে নিয়োগের সময় issb নামে দুই বা চারদিনের আবাসিক পরীক্ষা দিতে হয়। সেখানে ভাইভাতে একজন প্রার্থী ব্লু ফ্লিম দেখে কিনা, মেয়েদের প্রতি আসক্তি আছে কি না, কাউকে চুমু খেয়েছে বা ইতিমধ্যে বিছানায় গেছে কিনা ইত্যাদি জিজ্ঞেস করা হয়। পরীক্ষকদের মাঝে মনস্তাত্বিকরাও থাকেন, তারা ঠিকই ধরে ফেলেন প্রার্থী সমকামি কি না।
ধরা পড়ার পর কি করে ? ফায়ারিং স্কোয়াডে পাঠায়? চাপাতি দিয়ে হত্যা করে? কখনোই না। তাকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার পর কেউ যেন সমকামিতার দিকে না যায় সেজন্য সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে সিনেমা হল গুলোতে ইংরেজি ব্লু ফ্লিম চালানো হয়।
কিন্তু এত মোটিভেশন ও পরীক্ষার মাঝেও কেউ কেউ ধরা পড়ে না, সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার পর তাদের মাঝে সুপ্ত সেই জিনের বিকাশ ঘটে।
এতো গেল সেনাবাহিনীতে । ঠিক একই ব্যাপার আমাদের সমাজে ও আছে। সবকিছু গোপন করতে অভ্যস্ততার কারনে আমরা হয়ত জানতে পারি না। কিন্তু সোস্যাল মিডিয়ার কারনে আজ তারাও নিজেরাই নিজেদের মাঝে সংগঠিত। এ কারনে কি তাদের হত্যা করতে হবে?
তাহলে সেনাবাহিনীর issb পরীক্ষার সময়ই কিছু কিছু হত্যা করা উচিত। এতে বিষয়টা আইনগত বৈধতাও পাবে , সমাজে কিছু সমকামীও কমবে। একটা ভিডিওতে দেখলাম তারা হত্যা করে দৌড়ে পালাচ্ছে। বেহেস্তি সৈনিক হত্যা করে দৌড়ে পালাও কেন, দাঁড়িয়ে থাক আর স্লোগান দাও। সেই দৌড়ের গন্তব্য কি বেহেস্ত?
বেহেস্তে যেতে চাও যেতে দেরি কর কেন?
কোন অজুহাতেই এ ধরনের হত্যাকান্ড গ্রহনযোগ্য নয়।
কথা হচ্ছে তাহলে আর্মিতে কেউ ভর্তিই হতে চাইবে না |
দুটো জিনিস বলা দরকার। আমার মনে হয়না এই বইটিতে বলা হয়েছে যে এটি জিনগত ‘ত্রুটি’। এটা একধরণের ভেরিয়েশন হতে পারে, কিন্তু ‘ত্রুটি’ বলা ঠিক হবেনা কোন মতেই। আর এই বইটিতে কোথাও ‘সৃষ্টিকর্তা’র কথাও বলা হয়েছে বলে আমার মনে পড়ে না।
সেই ভেরিয়েশনকে ‘ত্রুটি’ বলেই তো সমকামী ও হিজড়াদের অপরাধী মনে করে সমাজ থেকে দুরে রাখি, খুন করি। ভেরিয়েশন স্বীকার করলে তো এই দৃষ্টি ভংগি থাকতো না।
স্রষ্টা র ইশারা ছাড়া যদি গাছের একটা পাতাও নড়ে না বলে দাবী করি,তাহলে এই ভেরিয়েশনের জন্য ও কেন তাকেই দায়ী করব না?
তার মানে কি তার সমাজের কেউ বেমানান কিছু করলে জবাই করে মেরে ফেলা তিনি সমর্থন করেন? ইনি না প্রধানমন্ত্রীর পর নাগরিকের নিরাপত্তা রক্ষা করবার জন্য প্রধান রাষ্ট্ররক্ষক? নাগরিক একে চাকুরিচ্যুত করছে না কেন?
নাগরিকরা ক্ষমতাচ্যুত করবে কি ? নাগরিকের সেই ক্ষমতা নেই | আইনের বই বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি [ভুল হলে সংশোধন করবেন ] | উনিই শুধু সরাতে পারেন আইনসম্মত ভাবে | রাষ্ট্রপতিকে কে নিয়োগ করেন ? মন্ত্রিসভা | জনতার সাথে কোনো কানেকশন নেই | জনতা শুধু দলকে নির্বাচন করে | ব্যাস জনতার দায়িত্ব শেষ |
এরই নাম গণতন্ত্র, বন্ধু |
সব ক্ষমতা তো নাগরিকেরই 🙂 মন্ত্রী ফন্ত্রী’রা চাকর, নাগরিকের, দেশের; নয় কি বন্ধু? আর আমি চাকর বাকরদের ক্ষমতাচুত্যির কথা বলিনি, বলেছি তাদের চাকুরিচ্যুতির কথা। এরা নাগরিকের চাকর কাজেই নাগরিক ইচ্ছে করলে তার সর্বোচ্চ আইনের বই মেনেই এই সব মাননীয় চাকর বাকরদের চাকরগিরি থেকে অব্যহতি দিতে পারে। দুঃখের ব্যপারটা এই যে, এত সহজ জিনিষটা নাগরিকে বোঝাবার মানুষের বড়ই অভাব। জন্য; নয় কি?
– বাণী অমৃত -
“আমরা যতটুকু জেনেছি জুলহাজ রূপবান নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি সমকামীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করতেন। এটা আমাদের সমাজের সঙ্গে মানানসই না।”
– পুলিসমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।