এক.
১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে হারিয়ে যান একজন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি হয়তো হারিয়ে যেতে পারতেন আরও আগে। হারিয়ে যেতে পারতেন ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ, ২৫ মার্চ কিংবা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু তা হয়নি- তিনি নিখোঁজ হয়েছেন ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ। একজন ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সাথে বাংলা নামের এই রাষ্ট্র, রাষ্ট্রভাষা এবং রাষ্ট্রধর্মের প্রত্যক্ষ একটা সম্পর্ক আছে।
আজ তাই নিয়ে কিছুটা লিখতে হচ্ছে।
ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে বাঙালী যে চেনে না তা নয়। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কে বাঙালী চেনে ‘না পারতে’, ‘প্রয়োজনে’। কারণ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা আন্দোলনের প্রথম সৈনিক। সেজন্য যে কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কিংবা সাধারণ জ্ঞান পাঠে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত একটা জনপ্রিয় নাম। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত নামটা মানুষ ঠিকই চেনে কিন্তু কি করেছিলেন সেটা জিজ্ঞাসা করলে ভ্রু একটু কুঁচকে আসে, কষ্ট করে মনে করতে হয় মানুষজনের, আর কবে কখন কোথায় কেন মারা গিয়েছিলেন সেটা ক’জন বলতে পারবে সেটা গবেষণার বিষয় হতে পারে। দেশের জন্য অকাতরে কাজ করে যাওয়া মানুষদের আমরা এভাবেই সম্মান জানাই।
জেনে রাখা মঙ্গল বাংলা ভাষার জন্য পাকিস্তানের সূচনায় ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত যে প্রস্তাব করেছিলেন সে প্রস্তাবের আলোকেই ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত রক্তের অক্ষরে বাংলা ভাষার ইতিহাস রচিত হয়। এই ইতিহাসের সূচনাকারী কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। ১৯৪৮ সালের ২৫ আগস্ট পাকিস্তান গণপরিষদে তিনি অধিবেশনের সকল কার্যবিবরণী ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলাও অন্তর্ভুক্ত রাখার দাবি উত্থাপন করেন, সেটাই সূচনা। অধিবেশনের শুরুতে আলোচনার সূত্রপাত করে পূর্ব বাংলার কংগ্রেস দলীয় সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বলেনঃ
Mr. President, Sir, I move: “That in s-rubule (1) of rule 29, after the word ‘English’ in line 2, the words ‘or Bengalee’ be inserted.”
এরপর তো ইতিহাস, রাজপথে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ আরও অনেকের আত্মত্যাগ এবং অসংখ্য ভাষা সৈনিকের সংগ্রামের ফলে আজ আমরা মায়ের ভাষা বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে পেয়েছি। কিন্তু সেই মাতৃভাষার প্রথম প্রস্তাবক হলেন কুমিল্লার সূর্য সন্তান শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।
আর বাংলা ভাষার প্রস্তাবের জন্যই স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে মার্চের শুরুতেই প্রাণ দিয়েছিলেন এই ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। এমনকি তাঁর মরদেহটি খুজেঁ পায়নি তার পরিবার। সেই ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথকে নিয়ে জাতীয় পর্যায়েও তেমন কোন আলোচনা নেই। কথাসাহিত্যিক, প্রবন্ধকার ও গবেষক রশীদ হায়দার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লিখেছেন-
‘…এই রক্তগঙ্গার অন্যতম শিকার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। ৮৫ বছরের বৃদ্ধ কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে কী অমানবিক অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন, এক সাক্ষাৎকারে সেই বিবরণ দিয়েছেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের নাপিত রমণীমোহন শীল। রমণীমোহন শীল হিন্দু হলেও তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিলো পাকিস্তানী মিলেটারিদের প্রয়োজনেই, কারণ তাদের মৃত্যু হলে পাকিস্তানী সৈন্যদের চুল দাড়ি কাটার মতো কোনো লোক থাকবে না।
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের উপর যে অমানবিক নির্যাতন হয়েছে তা দেখে কোন সুস্থ ও বিবেকবান মানুষের চোখের জল সংবরণ করা সম্ভব নয়। সাখাওয়াত আলী খান প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে জানা যায়ঃ “ধীরেন বাবু সম্পর্কে বলতে গিয়ে রমণী শীলের চোখের জল বাঁধন মানে নি। মাফলারে চোখ মুছে তিনি বলেন, ‘আমার সে পাপের ক্ষমা নেই। বাবু স্কুলঘরের বারান্দায় অতি কষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে আমাকে জেজ্ঞেস করেছিলেন কোথায় প্রস্রাব করবেন। আমি আঙ্গুল দিয়ে ইশরায় তাকে প্রস্রাবের জায়গা দেখিয়ে দিই। তখন তিনি অতি কষ্টে আস্তে আস্তে হাতে একটি পা ধরে সিঁড়ি দিয়ে উঠানে নামেন। তখন ঐ বারান্দায় বসে আমি এক জল্লাদের দাড়ি কাটছিলাম। আমি বারবার বাবুর দিকে অসহায়ভাবে তাকাচ্ছিলাম বলে জল্লাদ উর্দুতে বলে, ‘এটা একটা দেখার জিনিস নয়-নিজের কাজ কর।’ এরপর বাবুর দিকে আর তাকাবার সাহস পাইনি। মনে মনে শুধু ভেবেছি বাবু জনগণের নেতা ছিলেন, আর আজ তাঁর কপালে এই দুর্ভোগ। তাঁর ক্ষতবিক্ষত সমস্ত দেহে তুলা লাগান, মাথায় ব্যান্ডেজ, চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় উপর্যুপরি কয়েকদিনই ব্রিগেড অফিসে আনতে নিতে দেখি।” (শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারকগ্রন্থ: পৃষ্ঠা ৩০২)
আজ আমরা নিঃসংশয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি, ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে করাচীতে পাকিস্তান গণপরিষদে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত যে দুঃসাহসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন তা পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠি তথা সামরিক জান্তা ভোলেনি, ভুলতে পারেনি। তাঁর অকুতোভয় ভূমিকাই যে পাকিস্তানকে দ্বিখন্ডিত করার বীজ বপন করেছিলেন তা পরবর্তীকালে দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে, প্রমাণিত হয়েছে।’
দুই.
ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে পাকিস্তানীরা যেই নির্মম ভাবে হত্যা করেছিল সেটার উদ্দেশ্য বিধেয় পরিস্কার করে বলে দিতে হয় না। ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখার ফলেই এই পুরস্কার পেয়েছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ৮৫ বছর বয়স্ক প্রবীণ খ্যাতিমান এই ব্যাক্তিতিকে পশুর মত নির্যাতন করতে করতে হত্যা করা হয়েছিলো।
ধীরেন বাবুর ধর্ম পরিচয় নিয়ে কিছু কথা বলবো। কথা সাহিত্যিক আহমদ ছফা তার ‘বঙ্গভূমির আন্দোলন, রাষ্ট্রধর্ম, মুক্তিযুদ্ধঃ বাংলাদেশের হিন্দু ইত্যাকার প্রসঙ্গ’ প্রবন্ধে সহজ কথাটা সহজে বলে গিয়েছন-
‘পাকিস্থানের ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতি অস্বীকৃতি ছিল বাঙালী তথা তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানীদের স্বাধিকার আন্দোলনের মুখ্য দাবী। স্বভাবতই বাংলাদেশের হিন্দুরা এই আন্দোলনের সাথে নিজেদের জড়িত করে ফেলেন। তাঁদের আকাঙ্খা ছিল ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পাকিস্থানের আওতা থেকে বেরিয়ে এসে আলাদা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তাঁরা সেখানে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মত সব রকম নাগরিক অধিকার পাবেন।
এই একটি মাত্র আকাঙ্ক্ষায় তাড়িত হয়ে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। এই যুদ্ধের কাছ থেকে তাঁদের প্রত্যাশার পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। তাঁদের জানমালের ওপর যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে একক সম্প্রদায় হিসেবে অন্য কারো সঙ্গে তার তুলনা চলতে পারে না। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রাথমিক যে রোষ তা হিন্দু-সম্প্রদায়কেই সর্বাপেক্ষা অধিক সহ্য করতে হয়েছে।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বেছে বেছে হিন্দু বস্তিতে আগুন লাগানো, তাঁদের বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন করে দেয়া, অধিবাসীদের হত্যা করা, মঠ-মন্দির-দেবালয় ধ্বংস করা, এসবের পেছনে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর একটা সুগঠিত পরিকল্পনা ছিল…’
পাকিস্তানীরা প্রকাশ্যে যেভাবে হিন্দুদের হত্যা করছিলো সেটার সানডে টাইমসের পাকিস্তান-প্রতিনিধি অ্যান্থনি ম্যারেসকানহাসের বিখ্যাত ‘জেনসাইড’ প্রবন্ধে পরিস্কার ভাবে উল্লেখ পাওয়া যায়-
“আবদুল বারী ভাগ্যের ভরসায় দৌড় দিয়েছিল। পূর্ব বাংলার আরো হাজার মানুষের মতো সেও একটা ভুল করে ফেলেছিলো- সাংঘাতিক ভুল-ও দৌড়াচ্ছিলো পাকসেনাদের একটি টহল-সেনাদলের দৃষ্টিসীমার মধ্যে। পাকসেনারা ঘিরে দাঁড়িয়েছে এই চব্বিশ বছরের সামান্য লোককে। নিশ্চিত গুলির মুখে সে থরথরিয়ে কাঁপে। “কেউ যখন দৌড়ে পালায় তাকে আমরা সাধারণত খুন করে ফেলি”, ৯ম ডিভিশনের জি-২ অপারেশনস-এর মেজর রাঠোর আমাকে মজা করে বলেন।
“ওকে খুন করতে হবে কেন?” উদ্বেগের সঙ্গে আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম।
“কারণ হয় ও হিন্দু, নয়তো বিদ্রোহী, মনে হয় ছাত্র কিংবা আওয়ামী লীগার। ওদের যে খুজছি তা ওরা ভালমতো জানে এবং দৌড়ের মাধ্যমে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করে।”
“কিন্তু তুমি ওদের খুন করছো কেন? হিন্দুদেরই বা খুঁজছ কেন?” আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম। রাঠোর তীব্র কন্ঠে বলেন: “আমি তোমাকে অবশ্যই মনে করিয়ে দিতে চাই, তারা পাকিস্তান ধ্বংস করার কী রকম চেষ্টা করেছে। এখন যুদ্ধের সুযোগে ওদের শেষ করে দেয়ার চমৎকার সুযোগ পেয়েছি।”
“অবশ্য,” তিনি তাড়াতাড়ি যোগ করেন, “আমরা শুধু হিন্দুদেরই মারছি। আমরা সৈনিক, বিদ্রোহীদের মতো কাপুরুষ নই।”
সবশেষে দুটো বাক্য উচ্চারণ করতে চাই। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সূচনা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ নামক একটা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। সেই যুদ্ধে তিরিশ লক্ষাধিক মানুষ শহিদ হয়েছে, চার লক্ষ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, এক কোটি মানুষ শরণার্থী হয়েছেন, দেড় কোটি মানুষ বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন এবং এই নিপীড়নের শিকার মানুষদের বড় অংশ ইসলাম ধর্মের অনুসারি ছিলেন না।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের ধর্ম বিশ্বাস ইসলাম এই যুক্তিতে যদি রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম হয় তাহলে বলতে হয় বাংলাদেশ গঠনে যারা জীবন দিয়েছিলেন তাদের বেশিরভাগের ধর্ম বিশ্বাস ইসলাম ছিলো না। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ধর্ম-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হতেই অকাতরে তাঁরা নিজেদের জিবন-ইজ্জত-সম্মান-সম্পদ বিলিয়েছেন। তাঁরা একটা আকাঙ্খাতেই এতোটা করেছিলেন-বাংলাদেশে তাঁরা হারানো সম্মান ফেরত পাবেন।
ঐ তিরিশ লাখ লাশ পাকিস্তানীরা ফেলেছিল ধর্মের নামে, ধর্ম রক্ষার নামে, ঐ লাখ লাখ ধর্ষণ হয়েছিলো ধর্মের নামে। আর ৪৫ বছর পর ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রতি কি গভীর সম্মান প্রদর্শন করে চলেছে স্বাধীন বাংলাদেশ।
যদি ধীরেন্দ্রনাথ এতসব জানতেন,
তাহলে কি এতোটা করতেন এই মাটির জন্য…?
সুত্রঃ
১)purbashabd24.com/bn/2015/02/23/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4/#.VvoYlNJ97rc
২)bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%A6%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4,_%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A5
৩)opinion.bdnews24.com/bangla/archives/4582
ভারত যখন স্বাধীন হয়, তখন পূর্ব পাকিস্থানে হিন্দু জনসংখ্যা গড়ে প্রায় ৪৫% শতাংশের মত ছিল। কোন কোন জেলায় হিন্দু জনসংখ্যা অনেক বেশী ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কারনে হিন্দুদের জন্মভূমি ছেড়ে আসতে হয়। বাংলা দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ও ২০% শতাংশের কাছা কাছি হিন্দু জনসংখ্যা ছিল। তারপর পরিকল্পিত ভাবে হিন্দুদের দেশ থেকে তারাবার জন্য তাদের উপর অত্যাচার করা হয়। বর্তমানে ৭\৮ % শতাংশ হিন্দু আছে কি না সন্দেহ। আমাদের মত অনেকে ১৯৭১ সালে মনে করেছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হলে, অন্তত পক্ষে হিন্দুরা ভালো ভাবে থাকতে পারবে। কিন্তু চিত্রটা দেখা গেল উল্টো। সব্ধীন্তা যুদ্ধে হিন্দুদের যোগদান ও ভালো ভাবে ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে তারা কি পেল? আজ তারা দেশে বাস করে ও, বিদেশীর মত থাকতে হয়। ভারতে ও মুসলমান ভাইয়েরা বাস করেন, তারা পুরোমাত্রায় নাগ্রিক অধিকার ভোগ করেন। ভারত একটি গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, এখানে সব ধর্মের লোকের স্মান অধিকার। অথচ পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশকে ইসলামিক দেশ হিসাবে সংবিধানে বলা হয়েছে। সুত্রাং মুসলমান ব্যতীত অন্য ধর্মের মানুষদের অধিকার না থাকাই স্বাভাবিক। যদিও এক শ্রেণীর শিক্ষিত লোক এর বিরুদ্ধে আন্দোলন আরম্ভ করেছে, কিন্তু সেই অধিকার কবে পাওয়া যাবে তা চিন্তার বিষয়। ব্রত্মান সরকার ও এই বিষয়ে বিশেষ নজর দিছেনা। সংখ্যালঘুদের জন্য কারো মাথা ব্যথা নেই।
সামসুদ্দিন বাবুর কথায় ব্লতে হয়, সারা বিশ্বে, স্নগখ্যা লঘূদের জন্য কেউ ভাবেনা। এরাই সব চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ। অথচ এদের নিয়ে রাজনীতি কম হয়না। মানবতার কথা চিন্তা করে, স্নগাখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন (সে যে ধর্মেরই হুক না কেন) বন্ধ হওয়া উচিত।
এ কোন সকাল , রাতের চেয়ে অন্ধকার , এ কি সূর্য নাকি আগুনের শিখা একি পাখির কুজন নাকি ……………………… হাহাকার।
আমি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালী । বাংলার প্রতি যথেষ্ট আবেগ আছে।
যাইহোক ধীরেন্দ্রনাথ বাবু সম্পর্কে বেশি কিছু জানিনা । তবে পাঠকদের মতামত পড়ে মনে হচ্ছে সংখ্যা লঘূ সম্প্রদায়ের মানুষ যথেষ্ট প্রানের আশঙ্কায় আছেন । সারা পৃথিবীতেই সংখ্যালঘুরা এমন পরিস্থির স্বীকার । এটার পিছনে একটি বৈজ্ঞানিক কারণ আছে । তবে যত অন্ধকার থাকুক না কেন ভোর একদিন হবেই ।
সেই বাংলায় আজ আমরা সংখ্যালঘু , কথায় কথায় মালাউন, কাফের বলে কথা শুনতে হয়। এই আমার সোনার বাংলা?
ফাখ্রুল বাবু স্টহিক কথা বলেছেন। ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত কুমিল্লা জেলার (পূর্বের ত্রিপুরা জেলা) ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার রাম্রাইল গ্রামে জন্ম। খ্যাতিমান আইনবিদ ছিলেন। তার কর্মস্থল ছিল কুমিল্লা সদরে। তিনি আবিভক্ত স্বাধীন দেশের স্ম্রথক ছিলেন। কিন্তু বিভক্ত হওয়ার পর তিনি পাকিসস্থান গ্ণপ্রিষদে একমাত্র বাঙ্গালী যিনি প্রথম বাংলা ভাষার মর্যাদা চেয়ে ছিলেন। যদিও ১৯৭০ সাল অবধি আমাদের অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু সেই বীজ থেকে অংকুর বেড় হ্যে আজ বাংলা স্বাধীন। তবে এক্টাই হতাশা, এই যে, হিন্দুরা আজ প্রায় নিরবাসিত।
করতেন। এরা দেশেকে ভালবাসেন, মানুষকে ভালবাসেন এই ভালবাসার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নয়, ভালবাসেন যাতে দেশ আর দেশের মানুষগুলো ভালো থাকে সেই জন্য।আমরা উত্তরসুরীরা যদি মানুষ না হই, এটা তাদের ব্যথিত করে,তবে নিজের কর্তব্য থেকে, নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত করে না। আর এজন্যেই তারা ধীরেন্দ্রনাথ।
দুঃখিত। ধন্যবাদ জানাতে ভুলে গিয়েছি। লেখাটি বেশ তথ্যবহুল, অনেক কিছুই অজানা ছিল। সেগুলি সুন্দর ভাবে তুলে আনার জন্য লেখক কে ধন্যবাদ ।
Correction: ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের বাড়ী কুমিল্লা নয় , ওনি জন্মে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদরের রামরাইল গ্রামে। আমরা ব্রাহ্মণবাড়ীয়া বাসির গর্বের ও ভালবাসার মানুষ এই প্রথিতযশা আইনজীবি ও গনমানুষের নেতা।
আমি একটু দেখলাম উইকি তে, Fakrul সাহেব ঠিক বলেছেন। উনার জন্ম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া,
তবে পড়াশুনা করেছেন কুমিল্লা জিলা স্কুল এবং কলকাতার রিপন কলেজে,
সুত্রঃ https://en.wikipedia.org/wiki/Dhirendranath_Datta
একটি রাষ্ট্রের মাথা থেকে পা পর্যন্ত কি পরিমান পচন হয়েছে তা আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশ নামক দেশটির দিকে থাকালে ……।
এখানে আজ সব ভূলন্ঠিত অপ-রাজনীতির করালগ্রাসে।
মুক্তিযুদ্ধ আজ একটি সবার ক্ষমতায় যাওয়ার বা উপরের উঠার একবাস্তব সিড়ি-কাঠি বেচাকেনার মাধ্যমে।
তবে সত্য সত্যই , যেদিন প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি দেশের শাসন ব্যবস্থায় ফিরে আসবে সে-দিনই কেবল আমরা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সহ সব সত্য,বস্তুনিষ্ট তথ্য ও মুক্তিযুদ্ধের বীরসেনানীদের কথা জানতে পারব।সে দিনের আশায় রইলাম।
আরিফ রহমানকে বিষেশ ধন্যবাদ :rose: যে সে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ইতিহাসের একেবারে ভিতর থেকে যাচাই-বাচাই করে তথ্য- উপাত্ত প্রমানসহ আমাদের সামনে নিয়ে আসে আর চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কি ছিল আসলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ভিতরের কাহিনি।
জয় বাংলা।