লেখক : হাইপেশিয়া অফ আলেক্সান্দ্রিয়া রিবর্ন

লোকটাকে আমি মিস করিনা।
একেবারেই করিনা!
সত্যি বলতে কি,করার কখনো প্রয়োজনই হয়নি।
২৬ফেব্রুয়ারি তাই খুব একটা বিশেষ দিনও না আমার কাছে।এসএসসি ফিজিক্স পরীক্ষার আগের রাতে অল্প একটু টেনশনের রাত এই ২৬তারিখ।এইতো!

আকাশে একলাখ চাঁদের মাঝে অভিজিৎ যখন মিটমিট করে,তখনও একবারো মনে হয়নি যে লোকটা নেই।

অভিজিৎ রায়ের সাথে আমার প্রথম পরিচয় ঠিক ৫বছর ১১মাস হলো আজ।বাংলাদেশের এক মফস্বল শহরের নিতান্তই উচ্চমানের এই ছাগলের হাতে অভিজিৎ রায় কিভাবে এসে জড়ো হলেন সেই এক বিস্ময়।২৬মার্চ জেলা বই মেলায় খুব ভাগ্য করে “আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী” বইটা পেয়ে গেলাম।অভিজিৎ রায়কে তখন মনে হয়না আমার পরিচিতজন কিংবা শহরের কেউই চিনত।ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন,হ্যারি পটারের শেষ বইটার পাতাগুলো সবেমাত্র আমার চোখের জলে স্নান সেরেছে।ভাবিনি,ঠিক একিভাবে “শূন্য থেকে মহাবিশ্ব” বইটার শেষ পাতাগুলোরও একি দশাই হবে।
সে যাই হোক(নস্টালজিয়া!!!!),মূল গল্পে ফিরে যাই।শৈশব পাড় হয়নি তখনও,ইন্টারনেটের সুবিধা তখনও পাইনি।অবশ্য একদিক দিয়ে ভালই ছিল,আমার অন্ধমনে অভিজিৎ রায় আলো হয়ে এসছিলেন! হৃদয়ের মণিকোঠায় আসন পেতেছিলেন।ছোট ছোট সহজ অথচ কি আশ্চর্য শক্তিশালী লেখা দিয়ে উনি শক্তপোক্ত সিংহাসন গেড়েই বসলেন আমার দ্বাদশী চিন্তার নরম মাটিতে।
একে কি আমি সৌভাগ্য বলব?
মুক্তমনা ব্লগের সাথে দেখা আরো ৩বছর পর।এর মাঝে মাত্র ১টা বই পড়া হল,ফরিদ আহমেদের সাথে যৌথ লেখা “মহাবিশ্বে প্রাণ এবং বুদ্ধিমত্তার খোঁজে”।লেখক আবারও আমাকে মুগ্ধ করলেন!

অভিজিৎ রায়কে কখনো ধন্যবাদ দেইনি তাই বলে।এমনটাই তো হওয়ার ছিল,এমনটাই তো হওয়া উচিত!
যারা তাঁকে ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করা তারা বড়ই ভাগ্যবান,হিংসেও হয় মাঝেমধ্যে।ইশ!যদি আমার এসএসসি পরীক্ষা না থাকত,ঠিক ঠিক দেখা হত আমাদের বই মেলায়।গুরুদেবের সান্নিধ্যে থাকত কিছু সোনার সময়!

আজকে প্রথমবারের মত অভিজিৎ রায় সম্পর্কে লিখতে বসেছি।ব্যক্তি অভিজিৎকে কতটা দেখেছি তার হিসেব নিকেশ করব না,আমার দৌড় বই পর্যন্তই।তার চেয়ে বরং বইয়েদ কথাই বলি।
আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুইটি বই ছাড়া সবগুলো বইই পড়েছি।পিডিএফ নিতান্ত বাধ্য না হলে পড়িনা,তাই সবই হার্ড কপি।এরমাঝে বেশিরভাগ বই পড়া হয়েছে ২০১৩-২০১৫ এই সময়টায়(আমার এসএসসি পরীক্ষার টার্মে)।

১.আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী

-অভিজিৎ রায়ের প্রথম বই।এই বইটা সম্পর্কে একটা কথাই খাটে “এলেন দেখলেন এবং জয় করলেন”।
বিজ্ঞানমনস্কতা আর বিজ্ঞানচর্চা যে এক জিনিস নয় এই বইটি প্রথম শেখাল।’লেট নিউটন বি’ নামের প্রথম অধ্যায়েই জোরেশোরে ধাক্কা দিয়ে অভিজিৎ রায় ‘মিলিত মৃত্যু’ কবিতার লাইনগুলো যেন খাপে খাপে মিলিয়ে দিলেন:
” বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখ দ্বিতীয় বিদ্যায়।
বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে।
বরং বুদ্ধির নখে শান দাও, প্রতিবাদ করো।
অন্তত আর যাই করো, সমস্ত কথায়
অনায়াসে সম্মতি দিও না।
কেননা, সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়,
তারা আর কিছুই করে না,
তারা আত্মবিনাশের পথ
পরিস্কার করে।”

বিজ্ঞান নিয়ে যে বাপের বেটা যাই বলুক না কেন,সেটাকে যে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া যাবেনা,এই বই পড়েই প্রথম শিখলাম।
বিশেষ করে ‘স্ট্রিং তত্ত্ব:নাচছে সবাই সুতার টানে” সবচেয়ে ফাটাফাটি অধ্যায়!!!এর অনেক বছর পর হিমাংশু করের “স্ট্রিং থিওরি” বইটায় আরো বিষদে জানতে পেরেছিলাম।
…..বিজ্ঞানের এই বেসিকটুকু দিয়ে গেলেন যিনি,তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন না করা ধৃষ্টতাই বলা চলে!(কেন করি না,একটু পরেই বলছি।)

২.মহাবিশ্বে প্রাণ এবং বুদ্ধিমত্তার খোঁজে

-গালে হাত দিয়ে এলিয়েনের আশায় আকাশের পানে চেয়ে না থেকে উৎসুক সবারই ঝটপট এই বইটা পড়ে ফেলা উচিত।একেবারেই আধুনিক জীববিজ্ঞানের ভিত্তিগুলোর উপর দাঁড় করানো বইটা।আমার পড়া অভিজিৎ রায়ের দ্বিতীয় বই(২০১১সালে)।
সেদিনকার অনুভূতি একবাক্যে বললে,
লেখক যথারীতি আমাকে মুগ্ধ করলেন।

*বলে নেয়া ভাল,মাঝে দুই বছর আমি কোনো অভিজিৎ রায়ের বই পড়িনি।ব্লগ চিনতামও না তখন।রিভাইজ করলাম দুইটা।

বাকি বইগুলো যখন পড়া শুরু করি,তখন গণজাগরণ মঞ্চের জন্য সারাদেশ উত্তাল।নাস্তিকতা বনাম আস্তিকতা যে বাঁচামরার বিষয় হয়ে যেতে পারে,তখনও বুঝে উঠেনি।বুঝলাম অনেক পরে,অনেক অনেক পরে।

৩.বিশ্বাস ও বিজ্ঞান

-এটি প্রকৃতপক্ষে মুক্তমনার লেখাগুলোর সংকলন।কেবল অভিজিৎ রায় নন,অন্যান্য মুক্তমনাদের সাথেও এই বই থেকে পরিচিত হলাম।বহুমুখী বিষয়ে লেখা একটা বই।এই বইটি এবং ৪নং এ লেখা বইটি থেকে মুক্তচিন্তার বিভিন্ন বাঁক সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
১ ও ২নং এর মত এটি কেবলমাত্র বিজ্ঞান কেন্দ্রিক নয়,ধর্ম,সমাজ,সভ্যতা সংস্কৃতি সবকিছুর অপূর্ব সমন্বয় এই বইটায়।
মোটাসোটা বই।সময় নিয়ে পড়তে হবে।যারা মুক্তমনা শব্দটাকে ধর্ম বা নাস্তিকতার মাঝেই বেঁধে ফেলতে চান,কিংবা যারা মনে করেন আমি মুক্তমনা কেবল বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে হব,ধর্ম আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার,তারা দয়া করে পড়ে দেখবেন।
এই বইয়ের শিক্ষা একবাক্যে:
জ্ঞানের সৃষ্টি বিশ্বাস নয়,
জ্ঞানের শুরুই অবিশ্বাস থেকে।
একটা কবিতায় পড়েছিলাম “আর বিশ্বাসীমাত্রই স্পর্শ করেছে ঐশ্বর্যের শেষ সীমা”।আজকে যখন বসে এই লাইনটার মর্ম বুঝতে চেষ্টা করি,তখন মনে হয়- এই ঐশ্বর্য কি শুধুই বেঁচে থাকা,বুক ভরে শ্বাস নেয়া(এই বিষাক্ত অন্ধত্বের বাতাসে)?

৪.স্বতন্ত্র ভাবনা

-৩নং এ যা লিখলাম,তাই এই বইয়ে খাটে।নির্দিষ্ট করে একটা প্রিয় লেখার নাম বলি “হাইপেশিয়া : এক বিস্মৃত নারী গণিতবিদ”,অভিজিৎ রায়ের লেখা।
বলেছিলাম,ক্লাস সিক্স এক অর্থে আমার স্বর্ণযুগ!তখন হাইপেশিয়ার কথা জানতে পারি মুহম্মদ জাফর ইকবালের “একটুখানি বিজ্ঞান”(অথবা “আরো একটু খানি বিজ্ঞান”) বই থেকে।তার রেশ ধরেই এখন আমার আঁকা হাইপেশিয়ার পোর্ট্রেট ড্রইংরুমের দেয়ালে ঝুলছে।
অভিজিৎ রায় আরো বিশদ ভাবে জানালেন।(৫থেকে বাকি বইগুলো পড়ার পর) আমি একপর্যায়ে আবিষ্কার করলাম,এই অসাধারণ নারীর জাতিস্মর বুঝি আমি।হাইপেশিয়াকে আমার সাথে মিলিয়ে মিশিয়ে এক করে দিলেন অভিজিৎ রায়।

৫.বিশ্বাসের ভাইরাস

-বিশ্বাসের উপর পড়া আমার প্রথম বই(সম্ভবত)।মুক্তমনাদের সিংহভাগের হাতেখড়ি হুমায়ুন আজাদ স্যারের কাছে।
স্যারের বই “আমার অবিশ্বাস” আমি পড়েছি বিশ্বাসের ভাইরাসের পরে।(স্যারের বাংলা ভাষার উপর বইগুলোই এর আগে পড়া হয়েছে,মুক্তচিন্তার বই কিনতে পারিনাই।পরিবারের রক্ষণশীলতার কারণে)
আমার অনেক প্রশ্নের তৃষ্ণা মিটিয়েছে এই বই।মুক্তিযুদ্ধ বনাম নাস্তিকতা,মুক্তচিন্তা বনাম কূপমণ্ডূক জাগতিক সুখ,ধর্ম বনাম মানবতাবাদ…..সম্পূর্ণ নতুন একটা প্লাটফর্মে এসে দাঁড়ালাম আমি।নতুন করে দেখতে শিখলাম সমাজের মানুষের মন মানসিকতায়।আগে ব্লগার জাতটার নামে চুনকালি লাগানো মানুষগুলোর সাথে রগফুলিয়ে তর্ক করতাম,সেখানে মায়া হতে লাগল।ধৈর্য্য শেখালেন আমাকে অভিজিৎ,প্রতিটা মতবাদকে যুক্তি দিয়ে দেখতে শেখালেন।

স্কুল পড়ুয়া মেয়ে ছিলাম আমি।লেখাগুলো কি আমার জীবন ওলট পালট করেছিল?হ্যাঁ করেছিল।বাঁকা চোখে তাকানো লোকের অভাব ছিল না।প্রতিবাদের ভাষায় যে দুএকটা ব্লগ লিখেছিলাম,তার জন্য হুমকিও কম শুনিনি।ভয় হতনা কখনোই,অভিজিৎ নক্ষত্রের আলোয় আমার চিন্তা জগত তখন পরিষ্কার,অনেকটাই কন্টকমুক্ত।

৬.সমকামিতা

-LGBT আইন চালুর পর অনেক নিন্দুকেই বাঁকা হাসি হেসে জিজ্ঞেস করেছিল,এই ব্যাপারে আমার মতামত কি?বলাই বাহুল্য,আমার খুব একটা ধারণা ছিল না এই ব্যাপারে।সমর্থন বা অসমর্থনের উত্তরে তখন পুরোপুরি দ্বিধান্বিত।তখন দুইটা বই হাতে পেয়ে গেলাম,সমকামিতা এবং ৭নং বইটা।

বইয়ের শিক্ষা: সেক্স কোনো ট্যাবু না।এটাকে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখ,যুক্তি দাও,তর্ক করো।এরপর সিদ্ধান্ত নাও।এর আগে লজ্জায় মুখ ফেরানোর কোনো মানে নাই।
কলেজে এইচএসসি ১ম বর্ষের ক্লাস সবেমাত্র শুরু।ঝিম ধরানো ক্লাসের ফাঁকে শেষ করলাম বইটা।আরেকটা অন্যরকম বই।অনেক বিষদ বর্ণনা রেফারেন্সে ভর্তি।বইটা আমার সাহস আরো এক ধাপ উপরে নিয়ে গেল।এরপর LGBT বা যৌনশিক্ষা দেয়ার ব্যাপারে কখনো কার্পন্য করিনি।আমাকে একটা ধন্যবাদ(!)

৭.শূন্য থেকে মহাবিশ্ব

-এই বইটা আরো আগে লিখা উচিত ছিল।মিজান রহমানের সাথে যৌথ প্রকাশনার বই।গণিতেদ ইতিহাস একেবারে ধাপে ধাপে বর্ণনা করা।
এককথায় রিভিউ:
বইটা পড়ে যেকোনো গণিতবিদের “পীথাগোঁড়ানুভূতি”তে আঘাত লাগবে।বিশ্বাস না হলে পড়ে দেখতে পারেন।
ভাব দেখিয়ে কাজ নেই,এমন লেখা আর পাবনা,মনে হলেই হাহাকার জন্মায়।নাহ,হারালাম কিনা প্রশ্নটা এই হাহাকার থেকেই আসে।

৮.ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো : এক রবি বিদেশিনীর খোঁজে

-অভিজিৎ রায়ের রবিঠাকুর প্রীতি তাঁর লেখার একটা অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য(ভালই ছিল,সাহিত্যজ্ঞানও বোনাস হিসেবে পাইলাম)।ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর খোঁজ করেছি বহুবার,নাই নাই নাই শুনতে শুনতে রবিবাবুর প্রথম প্রেম “কাদম্বরী দেবীর সুইসাইড নোট” পড়ে ফেললাম(সেই রসায়ন অন্য কোনো দিন)

রবিবাবুর পূরবী বইয়ের বিদেশিনী কন্যা ছিলেন এই ভিক্টোরিয়া।শেষ জীবনের অমোঘ প্রেমের উপাখ্যান বই।একটা দীর্ঘসময় সাংস্কৃতিক বিভিন্ন বিষয়ের সাথে জড়িত থেকেছি।রবিবাবুর কথা উঠতেই খড়খরগসম কঠিন গবেষণা বই চলে আসে,সযত্নে পাশ কাটিয়ে গেছি।এই বইটা একেবারেই তেমন না।
অভিজিৎ রায় ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর উপর ক্রাশের সংখ্যা বাড়িয়ে দিলেন!

……
“অবিশ্বাসের দর্শন” আর “ভালবাসা কারে কয়” আজি কিনলাম মেলা থেকে।এখনো পড়া হয়নি।আশা করি আর কোনো বই লিখতে বাদ যায় নি।
.
শেষ করার আগে:
অভিজিৎ রায়কে আমি চোখে দেখিনি।তার খুব কাছে যাওয়ার সৌভাগ্যও আমার হয়নি।নক্ষত্রকে দূর থেকে দেখেছি।অনুসারী গ্রহদের ছন্দময় আবর্তন দেখেছি।বাইনারী স্টারের মত অভিজিৎ রায়ের যুগলবন্দী নক্ষত্রের আলোও আমি পেয়েছি(বন্যা আহমেদের “বিবর্তনের পথ ধরে”)।ধূমকেতুর আলোকিত লেজের মত অভিজিৎ রায় আমাকে গতি দিয়েছেন।এমন মানুষটার দেহের মৃত্যু দিয়ে এত সহজে আমার অস্তিত্ব ছেড়ে চলে যাবে??
এক বা একাধিক শারীরিক মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে কখনো মুক্তচিন্তার মিশনকে হত্যা করা যায়না।কারণ ব্যক্তির মৃত্যু ঘটতে পারে কিন্তু তার আদর্শের মরণ নেই।
আমি জানি উনার মায়াবতী স্ত্রী,স্নেহের সন্তান কিংবা আত্মা-পরম-নমনীয়(আপন) যারা তাদের কষ্টের এতটুকুও আমি বুঝতে পারব না।যে পিতা বুকে জড়িয়ে তার সন্তানের ঘ্রাণ নিতে পারবেন না তার কষ্ট আমি কখনো বুঝতে পারব না,নিতেও পারব না। বাইনারী স্টারদের জোড়ার একটা নিভে গেলে অন্যজনের কি হয় সে বিজ্ঞান আমার আজো পড়া হয়নি।
কিন্তু “তোমাকে উপরে নিলে বল তবে কি থাকে আমার” ভাব নিয়ে যারা আজকে হা হুতাশ করবেন তাদের জন্য নিচের লিখা:
#আমাদের ব্যর্থতা এটা না যে আমরা অভিজিৎ রায়কে হারালাম,
বাংলাদেশের ব্যর্থতা এই যে সে অভিজিৎকে হারিয়ে বুঝল না যে সে কি হারাল।

আমি বইগুলা আকড়ে ধরে রাখব,বারবার পড়ব একরম প্রথমবারের মত।একটাবারের জন্য আমার মনে হবেনা অভিজিৎ রায়ের রক্তমাখা শরীরটা হাসপাতালে নিতে উৎসুক জনতা আসেনি।
আমি অভিজিৎ রায়ের জন্য জাস্টিসও চাব না।উনি বেঁচে ছিলেন অন্যদের সময়ে,উনার জাস্টিস পাওয়ার সময় এখনো আসেনি।ততদিনে উনার রক্ত বিন্দু থেকে জন্ম নেবে অযুত লক্ষ অভিজিৎ,পাপ মুক্ত হবের তার মাতৃভূমি(প্রচ্ছদ : বিশ্বাস ও বিজ্ঞান)।

চোখ বন্ধ করে তাই আমি একটা হাসি মাখা মুখ চিন্তা করি।এইই হাসিটার কথা মনে রাখলেই আর কাঁদার ইচ্ছেই হয়ে ওঠেনা।

আমার মুক্তির মন্দিরে এমনই সদাহাস্যজ্জ্বল থাকবেন,অভিজিৎ রায়।এর থেকে বেশি অতটুকুও চায়না এই বালিকা!