ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে আসা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
দ্য বব্স ২০১৬: ডয়চে ভেলের অনলাইন প্রতিযোগিতা শুরু
জার্মানির আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্র ডয়চে ভেলের আন্তর্জাতিক অনলাইন প্রতিযোগিতা ‘‘দ্য বব্স – বেস্ট অফ অনলাইন অ্যাক্টিভিজম’’-এর ১২তম আসর শুরু হয়েছে৷ ইন্টারনেটে বাকস্বাধীনতা ও সুশীল সমাজকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে এই প্রতিযোগিতা৷ যার অংশ হিসেবে ডিডাব্লিউ-র বাকস্বাধীনতা অ্যাওয়ার্ডও দেয়া হচ্ছে৷
দ্য বব্সের চলতি আসরের জন্য মনোনয়ন জমা দেয়া যাবে আগামী ৩ মার্চ অবধি৷ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা তাদের পছন্দের ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট বা অনলাইন প্রকল্পকে মনোনয়ন করতে পারেন এই ঠিকানায়৷ বাংলাসহ ১৪টি ভাষায় মনোনয়ন জমা দেয়া যাবে৷ চলতি বছর চারটি ক্যাটেগরিতে পুরস্কার দেয়া হবে:
‘সোশ্যাল চেইঞ্জ’ বা ‘সামাজিক পরিবর্তন’ বিভাগে ডিজিটাল উপায়ে সমাজে পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখছে এমন প্রকল্প বা ব্যক্তিকে পুরষ্কৃত করা হবে৷ এক্ষেত্রে শিক্ষা, সমতা, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের মতো বিষয়াদি প্রাধান্য পাবে৷
‘টেক ফর গুড’ বা ‘প্রগতির জন্য প্রযুক্তি’ বিভাগে গুরুত্ব পাবে এমন সব প্রকল্প যা তথ্য সুরক্ষা, বিনা খরচার সফটওয়্যার, অনলাইন নিরাপত্তা কিংবা সেন্সরশিপ এড়াতে কাজ করছে৷
‘আর্টস অ্যান্ড কালচার’ বা ‘শিল্প এবং সংস্কৃতি’ বিভাগে এই নামের সঙ্গে সম্পৃক্ত ইন্টারনেট প্রকল্প প্রাধান্য পাবে৷
‘সিটিজেন জার্নালিজম’ বা ‘নাগরিক সাংবাদিকতা’ বিভাগে প্রাধান্য দেয়া হবে ব্লগার বা সাংবাদিকদের যারা ইন্টারনেট প্রযুক্তির সুবিধা কাজে বিকল্প উপায়ে মানুষের কাছে খবর পৌঁছে দিচ্ছেন৷
এছাড়া, ডয়চে ভেলে বাকস্বাধীনতা অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে৷ গতবছর এই পুরস্কার জয় করেন সৌদি আরবে কারারুদ্ধ ব্লগার রাইফ বাদাউয়ি৷ দ্য বব্স প্রতিযোগিতার সম্পর্কে ডয়চে ভেলের প্রোগ্রাম ডিরেক্টক গ্যার্ডা ময়ার বলেছেন, ‘‘ভাষা এবং সংস্কৃতির বাধা ডিঙিয়ে আমরা সেই সব সৃজনশীল ব্যক্তিকে স্বীকৃতি দিতে চাই, যাঁরা বাকস্বাধীনতা রক্ষায় এবং উন্মুক্ত সমাজ গড়ায় কাজ করছেন৷ তাঁদের কাজ অবশ্যই বিশ্ববাসীর স্বীকৃতির দাবিদার৷’’
১৪ দেশের ১৪ বিচারক বিজয়ী নির্ধারণ করবেন
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদে জমা দেয়া মনোনয়নগুলো যাচাইবাছাই এবং চূড়ান্ত মনোনয়ন নির্ধারণ করবেন দ্য বব্স-এর চৌদ্দটি ভাষার বিচারকরা৷ গত বছর অনলাইন ৪,৮০০ মনোনয়ন জমা পড়েছিল৷ চূড়ান্ত মনোনীতদের তালিকা ডয়চে ভেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে আগামী ৩১ মার্চ৷ আর চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে আগামী ২ মে, বার্লিনে এক সংবাদসম্মেলনে৷
থাকছে অনলাইন ভোটের সুযোগ
দ্য বব্স বিচারকমণ্ডলী তাদের পছন্দের ‘জুরি অ্যাওয়ার্ড’ বিজয়ীদের নির্ধারণ করবেন৷ পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ভোটে নির্বাচন করা হবে ‘ইউজার অ্যাওয়ার্ড’ বিজয়ীদের৷ www.thebobs.com/bengali ওয়েবসাইটে ভোটাভুটি চলবে ৩১ মার্চ থেকে ২ মে পর্যন্ত৷
বাংলা ভাষার বিচারক বন্যা আহমেদ
দ্য বব্স-এর গত চারটি আসরে বাংলা ভাষার বিচারক ছিলেন ড. শহিদুল আলম৷ এই সময়ে বাংলা ভাষার চারটি প্রকল্প দ্য বব্স-এর সম্মানজনক ‘জুরি অ্যাওয়ার্ড’ জয় করেছে৷ চলতি বছর বিচারকমণ্ডলীতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে৷ বাংলা ভাষার পক্ষে বিচারক হিসেবে যোগ দিচ্ছেন বন্যা আহমেদ৷ (ডয়চে ভেল ওয়েবসাইট থেকে)
বন্যা একজন মানবতাবাদী অ্যাক্টিভিস্ট, লেখক এবং মুক্তমনা ব্লগের মডারেটর৷ তিনি ড. অভিজিৎ রায়ের বিধবা স্ত্রী, যিনি একজন লেখক, ব্লগার এবং অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে অত্যন্ত পরিচিত ছিলেন এবং মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা৷ ২০১৫ সালে এই দম্পতি একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে হামলার শিকার হন৷ ব্লগার অভিজিৎ রায় সেই হামলায় প্রাণ হারান, গুরুতর আহত হন বন্যা৷ ধর্মীয় উগ্রপন্থিরা এই হামলার পেছনে জড়িত বলে মনে করেন বন্যা৷ তাঁর মতে, মুক্তচিন্তার কণ্ঠরোধে এই হামলা চালানো হয়েছিল৷ তবে তিনি ছেড়ে দেয়ার পাত্র নন, বরং বাকস্বাধীনতা নিশ্চিতে যে লড়াই অভিজিৎ শুরু করেছিলেন, তা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি৷
এছাড়াও মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে সামহয়্যার ইন ব্লগ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরডটকম, বাংলা ট্রিবিউন, চায়না ডিজিটাল টাইমস, আইফেক্স, গ্লোবাল ভয়েসেস অনলাইন, ওয়াজা, সত্যগ্রহ, ওয়েবদুনিয়া, গয়া, হোরোমাডস্ক, নভয়ি ভ্রেমিয়া এবং মিডিয়াটাভা৷
এ বিরল সম্মান মুক্ত-মনা পরিবারের। সে পরিবারের পক্ষ থেকে বন্যাদিকে শুভেচ্ছা। তবে উপড়ে বিপ্লব কর্মকার যে বিষয়টির অবতরণা করেছেন তাও আমি মনে করি বিবেচনার দাবী রাখে। তবে পুরো বিষয়টি যেহেতু আন্তর্জাতিক এবং ডয়েসে ভেলের একটা প্রজেক্ট কাজেই বিবেচনাটিও সম্ভবতঃ তাদেরই। তবুও আমি এ স্বীকৃতি দানের প্রথাকে যথাযথ সম্মান এবং গুরুত্ত্ব দিতে চাই এবং আমাদের প্রতিনিধি বন্যাদির সফলতা কামনা করছি।
অভিনন্দন বন্যা আহমেদ।
বিচারক বন্যা আহমেদ কে স্বাগতম। :rose:
:good:
বাংলা ভাষার পক্ষে বিচারক হিসেবে বন্যা আহমেদের যোগদানকে স্বাগত জানাচ্ছি।
এখানে একটা গুরুত্বপুর্ন ক্যাটাগরির কথা উল্লেখ করা হয়নি।
ব্লগ লেখার কারনে হুমকীর শিকার(হত্যার আগের পর্ব)- এই ক্যাটাগরি। অবশ্য পশ্চিমা দেশে এ সবের অস্তিত্ব নেই, তাই এ ধরনের একটা ক্যাটাগরি যে থাকা লাগবে তা তাদের মাথায়ও নেই। তবে বাংলাদেশের মত দেশের জন্য এ ধরনের ক্যাটাগরি থাকা উচিত।
সবাই শুধু বলে ধর্মীয় উগ্রবাদী লেখার কারনে লালমিয়া, ধলামিয়া, অমুক ,তমুককে হুমকী দেয়া হয়েছে। ব্লগার মানে অলিখিতভাবে ধর্মীয় বিষয়ে লেখে এমন একজনের ছবি মানুষের চোখে ভেসে ঊঠে। যখন সে হত্যাকান্ডের শিকার হয় তখন বেশির ভাগ মানুষ মনে করে সে ইসলামের সমালোচনা করেছিল, তাই এমন পরিনতি।
কিন্তু এর বাইরেও কিছু বিষয় আছে। আমি ধর্মীয় বিষয়ে এখনো কোন ব্লগ লিখিনি। বিভিন্ন দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট –তাদের কাছে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য (পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর, কিছু ক্ষেত্রে উত্তরপত্রে ফটোকপি,পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয় ইত্যাদি ) চাই । পাওয়া তথ্য এবং তথ্য না পেলে সেই না পাওয়ার অভিজ্ঞতা ব্লগে শেয়ার করি।
তাতেই অনেকের আরশ কেঁপে উঠে। হুমকী দেয়, কিন্তু কেউ সামনে এসে বা শুনানীতে অংশ নিয়ে কোন কথা বলে না। এরাও যথারীতি রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় পেছন থেকে হামলার তালে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে বেহেস্ত পাওয়া যাবে কি না এ বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে হয়ত আর অগ্রসর হয় না।
প্রয়াত অভিজিৎ রায় আমাকে বলেছিলেন, আপনি লিখে যান, এখন কেউ এসবের গুরুত্ব বুঝবে না, বুঝবে অনেক পরে।তবে দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশে এসবও অনেক ঝুঁকিপুর্ন।
যথার্থই বলেছেন বাংলাদেশের জন্য এরকম একটা ক্যাটাগরি থাকা উচিত ছিল, অন্ততঃ করা উচিত