লেখক: মিলন মুন্সি
এক-এক করে ঘোষণা দিয়ে, প্রকাশ্যে এবং অতি নিষ্ঠুরভাবে মুক্তমনাদের খুন করা হচ্ছে দেখে অসম্ভব মুষড়ে পড়ছি। এরপরও খুনিরা যেভাবে ধর্ম, রাষ্ট্র ও সমাজের ছায়াতলে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে তা দেখে প্রচণ্ড হাতাশ। অতএব, মুক্তমনাদের নিকট এ মূর্খের প্রশ্ন, এভাবে চাপাতির তলে মাথা পেতে দেয়াটা কী বুদ্ধিমানের কাজ নাকি বীরত্ব দেখানো? কলমে আরো বেশি শাণ দিন, প্রচণ্ড সূচালো করুন, যাতে এক কোপের বেশি প্রয়োজন না হয়। কারণ আপনাদের হাতে তো অসি নেই, তাই মসিকেই আরো বেশি শাণিত করতে হবে। বিশেষ করে আপনাদের লেখাগুলো কীভাবে সমাজের বেশিরভাগ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় সে চেষ্টাই করুন। কৌশলী হোন। কৌশল ঠিক করে যুদ্ধে অবতীর্ণ হোন। এব্যাপারে অধমের প্রস্থাব, উচ্চশ্রেণির মানুষ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের (বিশেষ করে ধর্ম বেশ্যাদের) ইমেইল সংগ্রহ করে, আপনাদের লেখাগুলো পাঠাতে পারেন। মানবতা বিরুদ্ধ ধর্মীয় বাণী (আয়াতগুলো) পাঠিয়ে প্রশ্নসহ পড়তে অনুরোধ এবং এর ব্যাখ্যা চাইতে ও দিতে পারেন। কারণ সাধারণ মানুষ তো নয়-ই, শিক্ষিত এবং উচ্চশিক্ষিতরাও ধর্মপুস্থক পড়ে না (নিচে দু-একটি উদহারণ দিলাম)। এছাড়াও সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারী কর্মকর্তা, র্যা ব-পুলিশের কর্মকর্তাসহ সকল উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের জানাতে হবে কেনো মুক্তমনারা ধর্মের সমালোচনা করে, কারণ ওনারা প্রায় সবাই বিশ্বাস করে, “ব্লগার” এবং “মুক্তমনা” মানেই ইসলামের সমালোচক। ফলে মুক্তমনা হত্যাসহ ধর্মীয় ছোঁয়া আছে এমন হত্যাকাণ্ডে প্রায় সকলেই ইসলামের পক্ষে থাকে (তাদের এ ভুল ভাঙ্গাতে না পারলে মুক্তমনা হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার দুরাশা মাত্র)। কারণ ধার্মিক তদন্তকারী, ধার্মিক বিচারক, ধার্মিক প্রশাসক… দিয়ে আর যাই-ই হোক মুক্তমনা হত্যার সুষ্ঠু বিচার আশা করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। অন্যদিকে যেসব উচ্চশিক্ষিতরা (টকশোতে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, লেখালেখিতে) ধর্ম নিয়ে সাফাই গাইছে তাদেরকেও ধর্মের যৌক্তিকতা রেফারেন্সসহ পাঠাতে পারেন। কারণ আপনারা ব্লগে এবং ফেইসবুকে যা লিখছেন তা মাত্র কয়েক’শ মানুষ পড়ছে, বাকিরা কিছুই জানছে না। সম্ভব হলে জাতীয় দৈনিকে ছাপা যেতে পারে (যদিও এদেশে তা অসম্ভব)।
একথা বললে মনে হয় অত্যুক্তি হবে না যে, বাংলাদেশে একমাত্র ইসলাম ছাড়া সর্বত্রই অন্য ধর্মের খোলামেলা ও কঠোর সমালোচনায় কোনো দোষ নেই। ফলে ইসলাম নিয়ে কিছু বলা আর চাপাতির নিচে মাথা পেতে দেয়া একই কথা। অতএব মুক্তমনাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বর্বর ইসলামিস্টদের হাতে রাজিব হতে শুরু করে বন্ধু অনন্ত এবং সর্বশেষ দীপনের নির্মম মৃত্যুর পরও আপনারা বলছেন, একটা মুক্তমনা মরলে হাজারটা মুক্তমনা জন্ম নেবে, আপনারা সবাই অভিজিত বা অনন্ত হবেন বা হয়ে গেছেন… ইত্যাদি। অধমের বক্তব্য, যারা এমনটা বলছেন তারা ভুল বকছেন। কারণ ইসলাম প্রশ্নে বাংলাদেশের মতো উগ্র, অসহনশীল, পরমত-অসহিষ্ণু, মহা ধর্মানুভূতিসম্পন্ন জাতি ও দেশে মুক্তমনা খুব কমই জন্মে, জন্মালেও আল্লা ও তার অনুসারীদের মহানুগ্রহে (হুমায়ুন স্যার টু দীপনের ন্যায়) স্বল্পায়ু হতে বাধ্য। অতএব দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য এই স্বল্পসংখ্যক মুক্তমনাদের অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে; যে যাই বলুন আর বীরত্ব দেখান, এর কোনই বিকল্প নেই। ফলে যারপর নাই সতর্ক থাকতে হবে এবং কীভাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা যায় তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে কৌশল ঠিক করতে হবে। মনে রাখবেন, একটা প্রকৃত মুক্তমনা পৃথিবীকে যা দেয়, কয়েক কোটি ধার্মিক তা দিতে পারে না, তাই ধার্মিকদের চেয়ে পৃথিবীর শান্তি ও কল্যাণেই মুক্তমনাদের বেঁচে থাকা অনেক অনেক বেশি জরুরি। ধার্মিকদের বলতে সরলীকরণ করলাম, কারণ মৌলবাদি বা চাপাতিধারিরা সংখ্যায় কম হলেও, সাধারণ ধার্মিকসহ তথাকথিত মডারেট (যাদের দৃষ্টিভঙ্গির তত্ত্বগত কোন পার্থক্য নেই) বলে দাবিকৃতরাও এসব বর্বরতাকে নিরবে সমর্থন দেয়, তা না হলে প্রতিবাদ করতো, যা মুক্তমনা বা অন্য ধর্মালম্বীদের (ইসলামের ভাষায় বিধর্মী, কাফের, নাস্তিক…) হত্যাসহ নির্যাতনের বেলায় দেখতে পাই না, বরং দলমত নির্বিশেষে তারা প্রায় সকলেই নিরব সমর্থক। কারণ ধর্মের উষ্কানিতে গণিমাতের মাল অর্থাৎ টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি, এমনকি নারী লুটও যে জায়েজ, সেই সুযোগ কোনো মুমিন কী ছাড়তে পারে? রামু-উখিয়াই এর চরম দৃষ্টান্ত। রামু-উখিয়ার মতো না হলেও, এদেশে অন্য ধর্মের উপর অত্যচার (প্রতিবাদ ও প্রতিকার ছাড়াই) ধারাবাহিকভাবে ও নিরবে চলছেই। অন্যদিকে একজন মুসলিমকে (শুধু এদেশেই নয় পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে) অন্যায়ভাবে হত্যা অথবা নির্যাতন করা হলে সারা পৃথিবীব্যাপী ওরা ভয়ানক আতঙ্ক সৃষ্টি করে (এতেও নিরবে সমর্থন দেয় প্রায় সব মুসলমান)। আজ পর্যন্ত দেখিনি কোনো ইসলামী দল, হুজুর, এমনকি মডারেট মুসলমান বলে খ্যাতরা ইসলামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল-মিটিং বা জোরলো প্রতিবাদ করেছে। অতি সামান্য (দু-একটা) যা প্রতিবাদ হয়, মুক্তমনাদের প্রচেষ্টায় এবং এতে শতকরা ১% সাধারণ কিংবা কথিত মডারেট মুসলমানও যোগ দেয় না। অথচ ইসলাম নিয়ে সামান্য সমালোচনা, করলে তাকে বন্দি বা হত্যা না করা পর্যন্ত দলমত নির্বিশেষে মিছিল-মিটিং, বিবৃতি, হুমকি-ধামকি চালাতেই থাকে। অথচ এদেশে অন্য ধর্ম সমালোচকদের (হুজুরদের) কিছুই হয় না। অন্য ধর্মালম্বীদের হত্যা বা নির্যাতনে মুসলমানেরা যে স্বতস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ করে না এর বহু উদাহরণ দেয়া যায়, এর মধ্যে রামু-উখিয়া অন্যতম (কারণ ধর্মীয় বিষয় বলে এতে দলমত নির্বিশেষে প্রায় সবাই জড়িত থাকে)। তাছাড়া অন্যধর্মালম্বী নির্যাতন ঘটনার তদন্তকারী, বিচারক, উকিল, জজ-ব্যারিস্টারগণও ধর্মীয়ভাবে দুর্বল হওয়াতে একটারও বিচার হয় না। বিদেশের উদাহরণ বহু; যেমন- কেনিয়াতে কয়েকমাস পূর্বে বোকহারাম বাস থামিয়ে বেছে বেছে খৃস্টানদের হত্যা করলো, গত ২ এপ্রিল/১৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করে (বেছে বেছে) ১৪৭ জন খৃস্টান ছাত্র হত্যা করলো, নাইজেরিয়াতে ২০০ খৃস্টান ছাত্রী তুলে নিয়ে মুসলমান বানিয়ে বিয়ে করলো, যা ধারবাহিকভাবে চলছেই। এছাড়াও পাকি মুসলমানেরা তো অত্যাচার করতে করতে সেখানকার সংখ্যালঘু প্রায় নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছে। অন্যদিকে বর্বর আইএস সন্ত্রাসীরা সেখানকার ইয়াজিদি ও খৃষ্টানদের উপর ধারবাহিকভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে। অথচ কোনো সাধারণ খৃস্টান বা মৌলবাদি খৃস্টান এসবের প্রতিবাদে রাস্থায় নামেনি, জ্বালাও-পোড়াও করেনি, পোপ সামান্য নিন্দা করেছে মাত্র, কোনো মুসলিম বিশ্বনেতারা এর জন্য নিন্দা বা দুঃখ প্রকাশ করেনি (করলেও আমতা আমাতা)। অথচ ঠিক এর উল্টাটা যদি ঘটাতে, অর্থাৎ যদি কোনো খৃস্টান বা হিন্দু মৌলবাদিরা একইভাবে বেছে বেছে মুসলমানদের হত্যা করতো, তাহলে সারা পৃথিবীজুড়ে (যেখানে ১০০ জন মুসলমান আছে সেখানেও) কী ভয়ানক তাণ্ডবই না এরা ঘটাতো (যাতে মডারেটসহ সকলেই জড়িত হতো, নতুবা নিবরে সমর্থন দিতো)? ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পর বাংলাদেশে একটা মন্দিরও আস্ত ছিলো না, বহু হিন্দুর উপর ভয়ানক অত্যাচার, বহু দেশছাড়া হয়েছিলো, সেকথা আমরা ভুলে গেছি। এছাড়াও স্বাভাবিক অবস্থাতেই প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও মন্দির ভাঙ্গা বা হিন্দু নারী বা পরিবারের উপর নির্যাতন, তাদের জমি দখল চলছেই, এদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসে না প্রতিবেশি মুসলমানেরা বরং এতে নিরবে সমর্থন দেয়। এর মূল কারণ, ইসলামই একমাত্র ধর্ম যারা নিজেদের সব সময় অন্যদের চাইতে শ্রেষ্ঠ, উন্নত এবং আলাদা জাতি হিসেবে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে আর সে কারণেই তারা বিশ্বকে দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে (মুসলিম বিশ্ব ও অন্য বিশ্ব)। তারা কখনো নিজেদের উম্মার বাইরে অন্যদের জন্য দোয়া করে না (যেমন হজ্জ্ব ও বিশ্বইসে-মায়…), অথচ অন্যেরা তাদের ধর্মানুষ্ঠানে বিশ্বের সকলের জন্য প্রার্থনা করে।
যারা ধর্মের সমালোচনা করেন তাদেরকে প্রায়ই ধর্ম বিদ্বেষী আখ্যা দেয়া হয়। বিশেষ করে যে ধর্মটি সবচাইতে ভয়ংকর এবং বেশি আলোচিত-সমালোচিত। তারা (উচ্চ শিক্ষিতসহ প্রায় সকলে) বলেন, অন্য ধর্মের সমালোচনা কোন হয় না? আমি মূর্খ মনে করি, (বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে) শুধু একটি ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মের সমালোচনার প্রয়োজন প্রায় ফুরিয়ে গেছে। তাই এ বিশেষ ধর্মালম্বীদের কাছে অনুরোধ, আগে নিজেদের ধর্মের সমালোচনা করতে ও সইতে শিখুন, পড়ে দেখুন, এরপর অন্যেরটার দিকে আঙুল তুলুন। ধর্মের সাথে মুক্তমনাদের কোন বিরোধ থাকতো না, যদি কিনা ধর্মের দোহাই দিয়ে বিশ্বব্যাপী এমন অমানবিক হত্যাযজ্ঞ এবং প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ অসংখ্য মানবতাবিরোধি অন্যায় না করতো। বিশেষ করে এসব ভয়ংকর নিষ্ঠুরতার উৎস যদি ধর্মপুস্থক না হতো। ফলে এর দায় একজন মুসলমানও এড়াতে পারে না, অথচ তারা (প্রায় সবাই) তেনাপ্যচানো বক্তব্য দিয়ে, মিথ্যাচার করছেন এবং দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। অন্য ধর্মগুলো এখন আর তেমন মারাত্মক নয় বলেই অন্য ধর্ম নিয়ে মুক্তমনাদের মাথা না ঘামালেও চলে। বর্তমানে শুধুমাত্র একটি ধর্মের অনুসারীরাই এসব অন্যায় করে যাচ্ছে বীর দর্পে ও প্রকাশ্যে এবং আরো করার হুমকি-ধামকি দিয়েই যাচ্ছে, ফলে মুক্তমনারা এ অন্যায়ের প্রতিবাদ না করলে তারা কোনোভাবেই মুক্তমনা হওয়ার যোগ্যই নয়। রাজনৈতিক সমালোচনা করতে গেলেও মুক্তমনাদের ধর্মের (বিশেষ করে ইসলামের) সমালোচনা করতেই হবে। কারণ ইসলাম রাজনৈতিক ধর্ম, রাজনীতি থেকে একে আলাদা করার কোন উপায় নেই, ফলে ইসলাম সমালোচনা ছাড়া মুক্তমনাদেরও উপায় নেই।
যাহোক, চাপাতির তলে মাথা দেয়ার পূর্বে মনে রাখবেন, সমাজ, রাষ্ট্র বা কথিত মডারেট মুসলিম কেউই মুক্তমনাদের পক্ষে নেই এবং এরা প্রায় সকলেই আপনাদের চরম ও নির্মম শত্রু, কেউ প্রকাশ্যে, কেউ গোপনে। আরো মনে রাখবেন, এ বিশেষ ধর্মটিতে সামান্য আঘাত করলে কথিত মডারেটসহ আপনার কাছের কোনো বন্ধু যে গোপনে আপনার নাম, পরিচয় মৌলবাদিদের জানিয়ে দেবে না, তা মোটেও ঠিক নয়। এছাড়া সব দেখে শুনে মনে হচ্ছে বিটিসিএল-এর কোন আইটি বিশেষজ্ঞ মৌলবাদিদের সহায়তা করছে, কারণ রাজিব হায়দার এবং ওয়াশিকুর বাবু ফেইক নামে লিখেও কীভাবে চিহ্নিত হলো, সেটাও বড় প্রশ্ন। তবে দেশের রাজনীতিবিদ থেকে সর্বস্থরের (বিশেষজ্ঞসহ) মৌলবাদিদের যে সহায়তা করে এ ব্যাপারে আমার অন্তত কোনো সন্দেহ নেই। (অন্য ধর্মের বেলায় এমনটা হওয়ার আশংকা নেই বললেই চলে, কারণ সমান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অন্য ধর্মে এমন উগ্রতা, অসহনশীলতার শিক্ষা দেয়া হয় না)। নিজ ধর্মের বেলায় এরা এমন উম্মাদ-অন্ধ হয়ে যায় যে কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক সেসব বিচার-বিবেচনাবোধ থাকে না। ফলে তাদের অযৌক্তিক আবদারগুলো সকলেই মাথা পেতে নিতে বাধ্য হয়। এটাই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় পুঁজি।
একজন ফেইসবুকে লিখেছেন:- আমার ফ্যামিলি বাদে আমার লেখালেখির কথা জানে আমার যে কজন বন্ধু তারা সবাই অমুসলিম। তাদের সঙ্গে এত খোলামেলা কথা বলি, হিন্দু ধর্মকে বাঁশ দেই কখনো এতটুকু দ্বিধা লাগে না। অথচ আমার মুসলিম বন্ধুদের কাছে আমার আইডিকে প্রকাশ করার কথা আমি ভুলেও চিন্তা করি না। সবাই ছোটবেলার বন্ধু, সবাই ভাল বন্ধু, তবু মুসলিম হওয়ার কারণে আমার মুক্তচিন্তার লেখালেখির সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দিতে পারি না নিরাপত্তার কথা ভেবে! বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন- এটাই সত্য!…
এ ভয় সকলেরই। ভেবে দেখুন, নিজের বাল্যবন্ধুদেরই বিশ্বাস করা দায়। অন্য ধর্মকে আপনি বাঁশ যতোই দিন তাতে আর যা হোক আপনার উপর আঘাত আসবে না, গ্যারান্টি। তবে পরিচয় জানিয়ে ইসলামকে ফুলের টোকা দিন, দেখুন কল্লা যেতে কতক্ষণ লাগে!!!! অথচ এদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদে অন্য সব ধর্মের সমালোচনা প্রকাশ্যে এবং মাইক বাজিয়েই হচ্ছে। অতএব যদি এসব হুজুরগণ ধর্ম বিদ্বেষী না হয়, আমরাও নই (যদিও রাষ্ট্র, সমাজ, ইসলাম তা মানবে না, কারণ তালগাছটা তাদেরই)।
আমি পূজামণ্ডপ, গির্জা এবং এ দুটি ধর্মের প্রার্থনা সভাগুলোতে বহুবার যোগ দিয়েছি; এদের ধর্মীয় কর্মকান্ডে আমি কখনো অন্য ধর্মের সমালোচনা শুনিন (গোপনে করলে করতেও পারে)। অন্যদিকে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যেন অন্য ধর্মের সমালোচনা ছাড়া জমেই না (প্রতিটি খুদবা কিংবা ওয়াজে কমপক্ষে ৫০%-ই থাকে অন্য ধর্মের সমালোচনা)। এতে উপসি’ত সব মুসলমানই পুলক অনুভব করে, যা দেখে বিস্মিত ও হতাশ হচ্ছি কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারছি না। কীভাবে প্রকাশ্যে এরা অন্য ধর্মের কড়া সমালোচনা করেও বীরদর্পে সমাজে বাস করছে অথচ সংখ্যালঘুরা ইসলামের সমালোচনা না করেও বহুরকম বিপদে পড়ছে অহরহই। এসব নিয়ে বেশিরভাগ মডারেট মুসলিম বা বুদ্ধিজীবির জোরালো কোন প্রতিবাদ করছে না। অথচ ইসলাম সমালোচকদের ব্যাপারে তাদের আলোচনায়, লেখায় প্রায়ই ইসলামকে ডিফেন্স করে বলছে, কেনো ইসলামের সমালোচনা করছে মুক্তমনারা বা এরা অথবা ওরা…। ইসলাম এটা বলেনি, ওটা বলেনি, এতে সন্ত্রাসের স্থান নেই… ইত্যাদি।
যাহোক, ড. অভির মৃত্যুযন্ত্রণা ভুলতে না ভুলতেই ওয়াশিকুর ও অনন্ত খুন (সর্বশেষ দীপন), জানি না- এরপর কার পালা? আপনারা হয়তো বলবেন, বীর মৃত্যুকে ভয় পায় না। কথা সত্য, কিন্তু এতো অল্প সংখ্যক বীর নিয়ে ওদের সুবিশাল বাহিনীর (রাষ্ট্র ও সমাজসহ প্রায় সবাই) সাথে লড়তে থাকবেন, আর একে একে চাপাতির তলে মাথা পেতে দেবেন সেটা মেনে নেবো কীভাবে ও কেনো? ভেবে দেখুন, হুমায়ুন স্যার, ড. অভি ও অনন্তর মৃত্যুতে যে ক্ষতি হয়েছে তা কী কোনভাবেই পূরণ করা সম্ভব? ওনাদের অভাব অন্যান্য মুক্তমনারা কোনকিছুতেই পূরণ করতে পারবে না। অন্যদিকে রাজিব, ওয়াশিকুরসহ অন্যান্যরা কোনো নামজাদা লেখক নয়, তথাপিও তাদের মৃত্যুতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। কারণ তারাও ছিলো কম বয়েসী, বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারাও যে শ্রদ্ধেয় ড. অভি, ড. হুমায়ূন বা আরজ আলী মাতুব্বর হতেন না তা-ই বা বলি কীভাবে? ড. অভি, অনন্ত এরা জানতো, তাদের জন্য দেশ মোটেও নিরাপদ নয় (যদিও বিদেশেও নিরাপদ নয়, কারণ যেখানেই ইসলাম আছে সেখানেই দু-একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আছে (না থাকলেও এদেশ থেকে গিয়ে হলেও খুন করবে, যেমন ওমর ফারুক লুক্সকে হত্যা করতে এক আল্লার প্রকৃত বান্দা নাকি জার্মানিতে গিয়েছে), ওরা সংখ্যায় অতি নগণ্য হলেও হিংস্রতায় সর্বশ্রেষ্ঠ)। সেজন্যই ড. অভির এই বীরত্ব দেখানো মোটেও মানতে পারছি না। যদিও অনন্ত ছিলো নিরূপায়।
যাহোক, এই তথাকথিত সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মটিকে আঘাত করে আপনি পৃথিবীর কোথাও নিরাপদ নয়। যারা দেশে আছেন তারা এ ধর্মটিকে সামান্য ফুলের টোকাও দিতে পারছেন না, তাহলে মৃত্যু অবধারিত। অতএব যা করার প্রবাসী মুক্তমনারাই করতে পারেন। আমি মনে করি, আপনাদের ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত। বিশ্বের সব মানবাধিকার সংগঠন ও পশ্চিমা সরকারগুলোকে জানানো উচিত কীভাবে এদেশে ধর্ম শিক্ষা দিয়ে প্রতিটি কোমলমতি শিশুকে কমবেশি জিহাদি হিসেবে সৃষ্টি করা হয় (পরিবারেই যা শুরু হয়)। এ ধর্মটির শিক্ষাকাঠামোর মধ্যেই রয়েছে প্রচণ্ড গোড়ামি, ঘৃণা, পরনিন্দা, পরচর্চা, সহিংসতা… যার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। এর পরিবর্তন করতে না পারলে, অন্য ধর্মের ন্যায় পাতালে নিয়ে আসতে না পারলে, আপনাদের লেখালেখি সব বিফলে যাবে। এরা প্রায় সবাই (শুধু মৌলবাদিরা নয়, মডারেটরাও) আপনাদের লেখা পড়ে না, এমনকি নিজেদের ধর্মপুস্থকও পড়ে না। (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অন্যান্য ধর্ম এখন আর তেমন ভয়ংকর নয়, যুগ পরিবর্তনের সাথে সংশোধিত হচ্ছে, গোড়ামি ভুলে নম্র হচ্ছে)। যাহোক, ভেবে দেখুন, যারা ফেইসবুকে ও ব্লগে লিখেন তা কতোজনে পড়ে? শিশুবেলার প্রথম পাঠেই এ ধর্মটি মহাকাশ ছোঁয়া তথাকথিত শ্রেষ্ঠত্ব ও মহাপবিত্র হিসেবে মস্তিস্কের কোষে কোষে যে সেন্টিমেন্ট তৈরি করে এবং অন্যসব ধর্মকে যেভাবে হীন ও জঘন্য হিসেবে শিক্ষা দেয়, সেটাই সর্বনাশের মূল। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা লাভ করেও বেশরভাগই এ সেন্টিমেন্ট থেকে ফিরে আসতে পারে না (কারণ ছেলেবেলায় আমরা যে ধর্মশিক্ষা পাই সেটাকেই চিরসত্য বলে মেনে নেই এবং কোনদিনই ধর্মপুস্থক ছুঁয়েও দেখি না, ফলে ওই শিক্ষা অনুসারেই আচরণ করি)। সেজন্যই সামান্য ফুলের আঘাতেই এরা এতোটা উম্মাদ হয়ে পড়ছে। ইসলাম সম্পর্কে এদের জ্ঞান শুধু মহাকাশছোঁয় উম্মাদনা (যা জন্মগতভাবে প্রাপ্ত)। অতএব এসব তাদের স্পষ্ট করে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে, নতুবা আপনাদের লেখালেখির কোনই মূল্য নেই। এ ভ্রান্ত সেন্টিমেন্ট মাটিতে নামাতে না পারলে, মানবতার মৃত্যু হতেই থাকবে। এদের সেন্টিমেন্ট এতোটাই আকাশচুম্বি যে একটুতেই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে (যা বংশগত বা জিনগত)। অতএব এদের নিজ ধর্ম পড়াতে ও বুঝাতে হবে নতুবা এর হাত থেকে বিশ্বের নিস্থার নেই। তারা আপনাদের লেখা ঘৃণার চোখে দেখে এবং তা পড়ছে না। অল্প কিছু লোকে পড়ছে আর যুক্তিতর্ক করছে। অতএব, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে অতি সাধাণর সকলকে এতে সম্পৃক্ত না করাতে পারলে চাপাতির নিচেই থাকতে হবে।
পাথরে খোদাই করে নিন, এদেশে মুক্তমনা হত্যার বিচার হবেই না, তদন্তকারীরা এর কোন ক্লু পাবে না, পেলেও তা মিইয়ে যাবে সমাজ, ধর্ম এবং রাষ্ট্রের সহায়তায়। কারণ এ তো আর যে-সে ধর্ম নয়, একেবারে সর্বশ্রেষ্ঠ, উচ্চতায় যা হিমালয়েরও উপরে, যার কোনো তুলনা নাই…। অন্যদিকে যেখানে রাষ্ট্র ও সমাজসহ প্রায় সবাই মৌলবাদিদের প্রকাশে ও গোপনে সমর্থন দিচ্ছে, সেখানে বিচার চাওয়াটা বোকামি। যাহোক, এই বোধহয় প্রথম হিজড়াদের কল্যাণে দুই হত্যাকারী (ছিচঁকে মৌলবাদি) হাতেনাতে ধরা পড়েছে, বিশ্বাস করি, হিজড়া না হলে এমন সাহস কেউ দেখাতো না এবং তারা যদি জানতো যে হত্যাকারিরা একটা নাস্তিক বা কাফের খুন করেছে, তাহলে তারাও হয়তো হত্যাকারিদের না ধরে পালিয়ে যেতে সহায়তা করতো। এর কারণ, আজন্ম ধর্মশিক্ষা, ধর্মের গায়ে যেন ফুলের টোকাও না লাগে, এমন শিক্ষাতেই তো আমরা বেশিরভাগ শিক্ষিত এবং উচ্চশিক্ষিত হয়েছি বটে, কিন্তু মুক্তমনা দূরে থাক, সুশিক্ষিতই হইনি! যাহোক, আবারো বলছি, আপনারা যারা ব্লগে ও ফেইস্বুকে লিখেন, তাদের আরো কৌশলী হতে হবে, বিশেষ করে যারা দেশে থাকেন। তবে যারা বিদেশে আছেন তাদেরও দেশে আসা উচিত নয়, কারণ যে ভুলটা অভিদা করেছে সেটা যেন আর কেউ না করেন। রাজনৈতিক খুন হলে বাঙালি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে সমর্থন করে, ধর্মীয় কারণে হলে সবাই এক, প্রায় সবাই একই প্রশ্ন তোলে, কেনো শুধু ইসলাম নিয়ে সমালোচনা করে নাস্তিকরা বা ব্লগারগণ? (রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ, তদন্তকারী অফিসার, উচ্চশিক্ষিত থেকে সাধারণ মানুষদের বেশিরভাগই জানে, ব্লগার অর্থই ইসলামের সমালোচক এবং নাস্তিক, যাদের হত্যা ধর্মীয়ভাবে স্বীকৃত বা জায়েজ)। তথাকথিত মডারেট বলে খ্যাতরা বলেন, কেউ নাস্তিক হতেই পারে, তাই বলে ইসলাম, নবী, আল্লার সমালোচনা করবে কেনো? আমি মূর্খ বলছি, করবে এজন্য যে, একমাত্র ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম এখন আর পৃথিবীর জন্য মারাত্মক হুমকি নয় (পূর্বে ছিলো কিনা সে প্রশ্ন অবান্তর)। যদি কেউ শুধু ইসলামের সমালোচনা করে, তবে বুঝতে হবে, তা বর্তমান বিশ্বজুড়ে ইসলামের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের নিরব ও স্বরব সমর্থনদানের কারণেই করে। উল্টা প্রশ্ন, ইসলাম সমালোচকদের হত্যা করতে হবে কেনো? তাহলে ইসলাম কী সত্যই ঠুনকো ধর্ম? অন্য ধর্মের এতো সমালোচনা হয় (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, শুধুমাত্র ইন্ডিয়াতে) তারা তো ধারবাহিকভাবে খুন করে না, তাহলে? যদি মুসলমানেরা আল্লাকেই সর্বশক্তিমান বলে জানে, তবে নাস্তিকের বিচার কেনো করবে? তাহলে কী তাদের আল্লার বিচারে ভরসা নেই? সেরূপভাবে অন্য ধর্মের সমালোচনাকারীদের বিচারও নিজ নিজ ঈশ্বর করবে, মানুষ কেনো করবে? অন্য ধর্মের সমালোচনার মোটেও যে প্রয়োজন নেই তা বলছি না, তবে যে ধর্মটির বিরুদ্ধে সামান্য প্রশ্ন তুললে পৃথিবীর কোণায় কোণায় গিয়ে হত্যা করা হয় (যা অন্য ধর্মে প্রায়ই দেখা যায় না)। সেজন্য ইসলামের সমালোচনাই সর্বপ্রথম হওয়া উচিত। অর্থাৎ এ ধর্মটিকে মাটিতে নামিয়ে আনাই মুক্তমনাদের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত। ধর্ম প্রচারক বিভিন্ন গোষ্ঠি (হুজুর/পাদ্রি/ঠাকুর..) পৃথিবীর কোথায় কী শিক্ষা দিচ্ছে তা জানি না, তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে স্পষ্ট ও জোর দিয়েই বলছি, এখানে শুধুমাত্র একটি ধর্মের প্রচারকরা যেভাবে প্রকাশ্যে জিহাদি মনোভাব সৃষ্টি করে যাচ্ছে, (স্বাভাবিক অবস্থায় সহাবস্থান করলেও) ধর্মের প্রশ্নে প্রায় সকলেই প্রকাশ্যে অথবা গোপনে উচ্ছৃংখল, অসহিষ্ণু এবং মহাউত্তেজিত হতে বাধ্য। তাই যখন মসজিদের ইমাম ধর্ম অবমানার প্রতিশোধের ডাক দেয় তখন মিছিল-মিটিং, দাঙ্গার জন্য লোকের অভাব হয় না।
মি. জয় (এদেশের ভবিষ্যত কর্ণধার) তো বলেই দিয়েছেন তারা নাস্তিকদের পক্ষে যাবে না। আওয়ামী লীগ কোন দিকে তা তো আরো স্পষ্ট লতিফ সিদ্দিকীর বহিষ্কারের ঘটনায়। যে দেশের রাজনীতিবিদরা ধর্মের ক্ষতি হয়েছে বলে নিজেদের দলের এমপিকে বহিষ্কার করে তারা কোনো মুক্তমনা হত্যার বিচার করবে?
যে ধর্ম নকল করে ইসলাম নামের তথাকথিত শান্তির ধর্ম জন্ম দেয়া হয়েছে, সেই ইহুদিরাও এমন কাজ করে না (পূর্বে করেছে কিনা তা অবান্তর)। অন্যদিকে হিন্দু মৌলবাদিরাও মুসলমান মৌলবাদিদের ন্যায় ধারবাহিকভাবে কাফের হত্যা করে না; তারা নিজ দেশ ছাড়া অন্য দেশ দখল করে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতেও চাইছে না, মাঝেমধ্যে কিছু হত্যাযজ্ঞ ঘটায়, তবে তা তাদের দেশেই সীমাবদ্ধ, ইসলামের ন্যায় সারা বিশ্বে নয়। এছাড়াও হিন্দু ধর্ম যেভাবে সংস্কার হচ্ছে, যেমন- সহমরণ, বিধবা বিয়েসহ অন্যের ছোঁয় খাওয়া… ইত্যাদি বহু বিষয়ে এখন আর তাদের মধ্যে তেমন একটা গোড়ামি দেখা যায় না। কেবলমাত্র মুসলমান মৌলবাদিরাই কোরানের আদেশ হুবহু ও পুরোটা মানছে এবং ধারাবাহিকভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে। খ্রীষ্টানদের কথা বলার প্রয়োজন নেই, কারণ তারা যতোটা মানবিক হয়েছে সেখানে পৌঁছাতে তথাকথিত মডারেটসহ মৌলবাদি মুসলমানদের শত-সহস্র বছর লাগবে। যাহোক, যখন কেউ বলে, মুসলমানেরা সন্ত্রাসী, ইসলাম সন্ত্রাস জন্ম দেয়… অর্থাৎ সমগ্র মুসলমানেদের দোষারোপ করে, তখন মুসলমানেরা (মডারেটসহ অনেক পরীক্ষিত নাস্তিকরাও) ক্ষেপে ওঠেন, ইসলামের কিছু ভালো দিক তুলে ডিফেন্স করেন, উদাহরণ দেন, বলেন, অতিসরলীকরণ করা হয়েছে, সবাই এক রকম নয়, সন্ত্রাসীরা মুসলমান নয়… ইত্যাদি। সব মুসলমান সন্ত্রাসীরা না হলেও, মারাত্মক সব সন্ত্রাসীরাই কিন্তু মুসলমান। অন্য ধর্মালম্বীরা তো তাই-ই বলবে কারণ যখন দিনভর মাইক লাগিয়ে গলা ফুলিয়ে অন্য ধর্মের সমালোচনা করা হয় তখন তো কোন মডারেটসহ সাধারণ মুসলমানেরা তাদের হুজুরগুলারে থামায় না, প্রতিবাদ করে না, বলে না যে, অন্য ধর্মের আলেচনা শুনতে আসিনি…! (প্রমাণ চান, জুম্মায় মসজিদে যান, বিভিন্ন ওয়াজের ভিডিও শুনুন ইউটিউবে অনেক পাবেন, এছাড়াও এগুলো প্রকাশ্যে রাস্থায় ক্যাসেট বাজিয়ে বিক্রি করা হয়, বাসে, গাড়িতে, লঞ্চেও বাজে)। মুসলমানেরা যে কথাটি কোনদিনও (ইসলাম, নবী ও আল্লা সৃষ্টি থেকে আজ পর্যন্ত) ভাবেনি, সেটাই আজ ভাবতে বলছি। তারা একথা ভাবেননি যে কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানরা… এমন সুন্দরভাবে পাশাপাশি বাস করে (কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া)? কেনো ইহুদি-খৃস্টানরা এমন ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আছে? একমাত্র ইসলাম ছাড়া সবাই যখন শান্তিতে থাকতে পারে তাহলে একমাত্র ইসলামই কেনো সকলের শত্রু? নাকি ইসলামই সকলকে শত্রু বানিয়েছে বা বানাচ্ছে? আমি তো মনে করি ইসলামই সকলকে শত্রু বানিয়েছে এবং ইসলাম সৃষ্টির সময় হতে একই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। অন্যরা পরিবর্তিত হয়েছে হাজার গুণ অথচ ইসলাম পরিবর্তিত হচ্ছে উল্টো দিকে। ইসলাম ধর্ম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক, বন্ধ হোক, ধ্বংস হোক ইত্যাদি চাই না কারণ তা সম্ভব না, প্রয়োজনও নেই। তবে আমি চাই ইসলাম কেবল তার বিষাক্ত ফণাটা একটু শিথিল করুক। অর্থাৎ তারা যেভাবে জোর দিয়ে তা প্রচার করছে, অন্য ধর্মের কঠোর সমালোচনা করছে সেসব বন্ধ করুক, তাদের কুসংস্কারগুলো নিয়ে মুখ না খুলুক, যারা সমালোচনা করছে তাদের উপর চাপাতিসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করুক (যেমনটা আজ প্রায় সব ধর্মই করছে, তারা সমালোচনা হজম করে নিচ্ছে এবং নম্র হচ্ছে)। তাহলে অন্য ধর্মগুলোর ন্যায় ইসলামও এমনিতেই নরম ও সহনশীল হয়ে আসবেই। যা মানব সভ্যতার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
বর্তমান পৃথিবীতে (সম্ভবত) ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যা রক্ষার্থে (বাংলাদেশসহ) প্রায় প্রতিটি ইসলামিক দেশেই আইন করা হয়েছে এবং তা অত্যন্ত কঠোর ও ভয়ানকও বটে। অথচ অন্য ধর্মগুলো রক্ষায় কোন আইন আছে কী? থাকলেও, ইসলামের ন্যায় এতো নিষ্ঠুর, অমানবিক আইন হয়তো নেই। ইসলাম নিয়ে অন্য মুসলিম দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বহু দল উপদল রয়েছে, এরা কেউ কাউকে মুসলমান বলে স্বীকার করে না। এসব নিয়ে “মুসলিম বিশ্বে” (মুসলমানদের হীন্যমনতার আর একটি বড় উদহারণ) প্রায় প্রতিদিনই প্রচুর খুনাখুনি হয়। অতএব কী করে ভাবলেন, এরা কাফের বা নাস্তিক নির্যাতনের বিচার করবে বা পাশে দাঁড়াবে? তারা নিজদের মধ্যেকার বিভিন্ন গোষ্ঠিকে যেটুকু ঘৃণা করে, তারচেয়ে অন্যদের শতগুণ বেশি ঘৃণা করে এবং এটাই তাদের প্রথম জীবনের ধর্মীয় শিক্ষা।
সামন্য একটু চিন্তা করে দেখুন, বর্তমান বিশ্বে কোন ধর্মালম্বীদের মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি এবং মারাত্মক ও হিংস্রত্মক মৌলবাদি সৃষ্টি হচ্ছে, যা সারা বিশ্বের জন্য অভাবনীয় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে? স্বীকার করেন বা নাই করেন, এই তথাকথিত শান্তির ধর্মটি থেকে আসা মৌলবাদিরাই সারা বিশ্বের মানব সভ্যতার জন্য এক চরম হুমকি এবং তা মোকাবেলার জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রের উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রেখে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। অথচ কী দেখছি, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় প্রতিটি ইসলামী রাষ্ট্র এবং সমাজ এই ধর্মটির অসহনশীলতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণে (বাংলাদেশের জন্য দুটোই প্রযোজ্য)। অতএব প্রাণের ভয়ে কেউ ন্যায়ের পক্ষে যেতে সাহস পাচ্ছে না। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে যা করা উচিত তা করার ক্ষমতা মুক্তমনাদের নেই, এমনকি রাষ্ট্রেরও নেই (যদি চায়ও)। এর জন্য এ ধর্মটির মূলে আঘাত হানতে হবে, কারণ তাদের শিক্ষা আগাগোড়াই ভুলে ভরা এবং অত্যন্ত মানবতাবিরোধী, সহনশীলতার শিক্ষা তারা মোটেও দেয় না। যারা প্রকাশ্যেই পরধর্ম নিন্দা শিক্ষা দেয় তারা গোপনে (মসজিদ/মাদ্রাসার ভেতরে) যে কী শিক্ষা দিতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদের ব্যাপারে ৫৭ ধারার কোনো ধার-ই (তীক্ষ্ণতা) নেই। পক্ষান্তরে মুক্তমনা বা অন্য ধর্মালম্বীরা ইসলামের সামান্য সমালোচনা করলেই কল্লা ফেলে দিচ্ছে। দেশে কোন পরিসংখ্যান নেই তারপরও সাধারণ জ্ঞানে বুঝি, এদেশের প্রায় ৯০% মানুষ নাস্তিক বা কাফের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়াহীন, ৯% মানুষ একটু-আধটু হা-হুতোশ করে, বাকি ১%-এর মতো প্রতিবাদে সামিল হয় (যা শাহবাগেই সীমাবদ্ধ)। কারণ, উক্ত ধর্মে নাস্তিককূল দূরে থাক অন্য ধর্মগুলোকেও অতি সামান্য সম্মান দেখানোর মতো শিক্ষা দেয়া হয় না। ফলে সাধারণ মুসলমানসহ প্রায় সকলেই এতে অভ্যস্থ হয়ে গেছে এবং এসব আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেয় না। তাছাড়া সংকোচ বা পাছে লোকে কিছু বলে, এমন মুসলমানই বেশি, যারা সামাজের চোখে ধর্মহীন হওয়ার ভয়ে প্রতিবাদ করে না। এটাও সত্য যে, যেসব রাষ্ট্র ধর্মকে বড় রাখতে, উচ্চে তুলতে এবং সুরক্ষা দিতে আইন করে, সেইসব রাষ্ট্রে ধর্ম সমালোচকরা এভাবেই মরবে এবং বিচার পাবে না এটাই তো সুনিশ্চিত।
মডারেটসহ প্রায় সব মুসলমানের ভাবখানা এই, অন্য ধর্মের সমালোচনা হোক, যেন ইসলামের না হয়। যেন অন্য ধর্মগুলো সব সময়ই ইসলামের মুখে সমালোচনার যোগ্য এবং এটা একমাত্র তাদেরই অধিকার, অন্যদের নয়। অতএব এরা প্রায় সবাই প্রাতিটি ওয়াজ ও জুম্মায় অন্য ধর্মের সমালোচনা শুনে বরং খুশিই হয়। অথচ কেউ তাদের ধর্ম নিয়ে সামান্য কুটক্তি করলে হয় তাকে ৫৭ ধারায় ধরবে, যদি এর আগে চাপাতি তলে পড়ে তো রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব শেষ। ৫৭ ধারা ধার শুধু একদিকে। এ আইন সম্পূর্ণরূপে ইসলাম রক্ষার্থেই সৃষ্টি করা হয়েছে, যা কেবল নাস্তিক ও সংখ্যালঘুদের বেলায় প্রযোজ্য, হুজুরদের বেলায় নয়। হুজুরদের উপর যদি সত্য সত্যই ৫৭ ধারার বিন্দুমাত্র প্রয়োগ থাকতো তাহলে প্রতিটা হুজুরকেই গ্রেফতার করতে হতো। কারণ হুজুরা প্রকাশ্যে (মাইকে-গলার শির ফুলিয়ে, বিশেষ অঙ্গ-ভঙ্গি করে) অন্য ধর্মের যে কঠোর ও উলঙ্গ সমালোচনা করে, মুরদাত, কাফের বলছে, এজন্য একটাও জেলের বাইরে থাকার কথা নয়, অথচ এসব শুনেও তথাকথিত মডারেট মুসলমানসহ রাষ্ট্র, সমাজ ও প্রশাসন সবাই চুপ (বরং পুলক অনুভব করে)। অন্যদিকে ইসলামের বিরুদ্ধে নাস্তিকরা লুকিয়ে-চুকিয়ে (একআধটু) মহাসত্য কথাও যদি বলে বা লেখে, সরকার টের পেলে গ্রেফতার করতে একটুও সময় নেয় না। এছাড়াও দেখা যাচ্ছে যে, ইসলামী সন্ত্রসাীদের যারা লালন-পালন করে, এরা সকলেই ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রচণ্ড ক্ষতাধর এবং প্রচুর অর্থের মালিক। সেজন্যই এসব হত্যাকাণ্ডের পর যারা (দু-একজন ছিচঁকে) গ্রেফতার হয়, তারা বারবার জেল থেকে বেরিয়েও আসছে। এসবই হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহায়তায়। মুক্তমনা খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা, জন্মদানকারী গডফাদার কারা তা সকলেই জানে, তারা কোনোদিনও ধরা পড়বে না, কারণ তারা তথাকথিত উচ্চশ্রেণির এবং এদের প্রধান পরিচয় এরা বিশাল মাপের ধর্মীয় নেতা, ধর্মরক্ষক ও ধর্মের প্রতি প্রচণ্ড আনুগত্যশীল। যাদেরকে গ্রেফতার করতে গেলে সরকার বিপাকে পড়ে যাবে। অতএব, এসব ধামাচাপা পড়তে সময় লাগে না। এছাড়া যদি ঘাতকরা কোনো তদন্ত কর্মকর্তাকে ধর্মের তথা দেযাখের ভয় দিয়ে পক্ষে আনতে না-ই পারে, তাহলে টাকার বস্থা পাঠিয়ে তাদের কব্জা করে নেয়। এটাই হলো তথাকথিত সর্বশ্রেষ্ঠ ও শান্তির ধর্মের প্রধান অস্ত্র এবং আচর-বিচার। অন্যদিকে, কথিত শিক্ষিত-উচ্চশিক্ষিতরাই (সুশিক্ষিত নয়) কেউ রাজনীতি দিয়ে, কেউ নিরব সম্মতি দিয়ে, কেউ অর্থ দিয়ে, কেউ লেখালেখি দিয়ে, কেউ আইনী সহায়তা দিয়ে, কেউ ধর্মীয় ফতোয়া দিয়ে, মসজিদে এবং ওয়াজে মগজ ধোলাই দিয়ে… মৌলবাদিদের সহায়তা করে, ফলে মুক্তমনা হত্যার বিচারও নিরবে কাঁদে।
জানি, মুক্তমনারা সত্যের পক্ষে বীর কিন্তু অকালে মরে গেলে তো পৃথিবী অনেক কিছুই পাবে না, পৃথিবীকে আরো কিছু দেবার জন্য যেমন অনন্ত ও অভিজিতদের বেঁচে থাকার প্রয়োজন ছিলো, তেমনি আপনাদেরও প্রয়োজন আছে। তাই অযথা ধর্মের কলে (চাপাতির তলে) মাথা দেবেন না। এভাবে ইসলামের গায়ে ফুলের আঘাত করবেন আর একটা একটা মরবেন এবং হুমায়ুন, রাজিব, ওয়াশিকুর, অভিজিত, অনন্ত… ইত্যাদি হওয়ার স্লোগান দিবেন, ফলাফল কিন্তু শূন্য। যদি পারেন কৌশল ঠিক করে, অত্যন্ত সতর্কভাবে ঝাপিয়ে পড়েন, কোনো রাখঢাক নয়, স্পষ্ট করে একমাত্র এই বিশেষ ধর্মটিকেই আক্রমণ করেন (অন্যগুলো পরে) নতুবা মরতে থাকেন।
দেখুন সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা (অন্য ধর্মে কী আছে বিতর্কে যাবো না কারণ অন্যগুলোকে ইসলামই সর্বনিকৃষ্ট বলে আখ্যা দিয়েছে। ওয়াশিকুরের খুনি বলছে-[জিকরুল্লাহ ও আরিফুল গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, ‘প্রশিক্ষণে তারা শিখেছে- মুরতাদ, নাস্তিক ও ইসলাম অবমাননাকারীদের হত্যা করতে হবে। গুলি করে হত্যা করলে সওয়াব কম। তাই তরবারি বা চাইনিজ কুড়াল দিয়েই কুপিয়ে হত্যা করতে হবে। সামনের চেয়ে পেছন দিক দিয়ে হত্যা করলে সওয়াব আরো বেশি। আর যদি এক কোপে ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করা যায় তাহলে সওয়াব সবচেয়ে বেশি। তাই তারা ঘাড় টার্গেট করে সব সময় কোপ দেয়।’] (২ এপ্রিল/১৫, ইত্তেফাক)। এ প্রশিক্ষণ কার এবং কোথা থেকে এসেছে তা জানতে হলে ওদের ধর্মপুস্থক পড়তে হবে।
দেখুন স্বয়ং আল্লা কী বলেছে (এমন বহু ভার্স আছে, লেখাটি বড় হয়ে যাচ্ছে, তাই মাত্র ৫টির আংশিক উল্লেখ করলাম):-
সূরা ২:১৯১ – আর যেখানে পাও, তাদের হত্যা কর…। …তোমারা তাদের হত্যা করবে, এটাই তো অবিশ্বাসীদের পরিণাম। সূরা ৯:১২৩ ঃ- হে বিশ্বাসগণ! অবিশ্বাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের নিকটবর্তী তাদের সাথে যুদ্ধ কর এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখুক…। সূরা ৯:৫ – অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে অংশীবাদীদের যেখানে পাবে বধ করবে এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তদের জন্য ওঁৎ পেতে থাকবে…। সূরা ২:২১৬ – তোমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান দেওয়া হল…। সূরা ৪৭:৪ – অতএব যখন তোমরা অবিশ্বাসকারীদের সাথে যুদ্ধে মোকাবিলা কর তখন তাদের গর্দানে আঘাত কর…।
ধর্ম ব্যবসায়ী বা সাধারণ মুসলমান নয়, মডারেট মুসলমানসহ দেশের বিদ্যাসাগরদের কাছে প্রশ্ন, পৃথিবীতে এমন বিকৃত লেখক ও জিঘাংসাপূর্ণ বাক্যে পূর্ণ অন্য কোন গ্রন্থ বা বই দেখাতে পারবেন? (অবশ্য যে ওল্ডস্টেটামেন্ট থেকে ইসলাম নকল করা হয়েছে সেখানে কিছুটা পাবেন, তবে তা ইসলামের মতো অত্যাধিক এবং কার্যকরী কোনটাই নয়)। চ্যালেঞ্জ দিলাম পৃথিবীতে এমন নিকৃষ্ট ভাষায় কোন পুস্থক পাবেন না। তথাপিও এটিকেই মহাপবিত্র ও মহামান্য বানিয়ে আপনারা বলছেন কেনো মুক্তমনারা ইসলামের সমালোচনা করে? আপনারা আরো বলেন, কোন ধর্মই খারাপ নয় এবং খারাপ শিক্ষা দেয় না। যদি তাই সত্য হবে, তাহলে আপনাদের কথিত সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মপুস্থকে এসব কী লেখা? এসব প্রশ্নগুলো তুলছেন না কেনো? মাফ করবেন, আমি মূর্খ হয়েও আপনাদের ধর্ম জ্ঞানকে ধিক্কার দিচ্ছে এবং আপনদের মহামূর্খ ভাবছি। হয়তো আপনার নিজেদের ধর্মগ্রন্থ পড়েনি, পড়লে মুক্তমনাদের দোষারোপ করতে পারতেন না। ওই ধর্মপুস্থক মুক্তমনারা লেখেনি, লিখেছে আপনাদের সর্বশ্রেষ্ঠ (!) নবী।
কোনো ঈশ্বর বা আল্লা যদি নিজের মান-সম্মান বাঁচানোর জন্য, নিজেকে শ্রেষ্ঠ রাখার জন্য একটি জঘন্য বাক্যও উচ্চারণ করে, তাহলে মানুষ কী-না করতে পারে? অতএব কেনই বা মুক্তমনারা এদের সমালোচনা করবে না? কোন অধিকারে মুক্তমনাদের নিরব থাকতে বা ধর্মের সমালেচনা বন্ধ করতে বলছেন বিষেশ ব্যক্তিরা? উপরোক্ত ধর্মীয় বাক্যগুলো যদি মুসলমানদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত না করে তাহলে তারা মানুষ নামের যোগ্য কিনা, নিজেরাই চিন্তা করুন। কোনো সুস্থ মানুষ কী এমন হুমকি ও আদেশ-নির্দেশ দিতে পারে? অতএব, যেখানে আল্লা নিজেই সমালোচনা সহ্য করেনি, সেখানে তার নবী ও মুরিদরা কীভাবে ও কেমন করে কারো সমালোচনা সহ্য করবে? আল্লা ও তার নবী উপরোক্ত (তথাকথিত পবিত্র!!!!) আয়াতগুলোর ন্যায় অসংখ্য (কারো মতে কোরানের এক-তৃতীয়াংশ) আয়াত দিয়েছে অনুসারীদের যা তাদের অবশ্যই পালনীয়। কিন্তু প্রকৃত মুক্তমনারা কী কখনো এমন আদেশ পালন করা দূরে থাকা, সহ্য করতে পারে? পারে না বলেই তো সমালোচনা করে। আর যারা এসব বাক্য পড়ে মুক্তমনাদের সমালোচনা করে, ঘাতকের হাতে তাদের মৃত্যুকে নিরবে সমর্থন করে, তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ আছে কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন। এমন অসংখ্য আয়াত কোরান ও হাদিস জুড়ে যা কোন মানুষ লিখেনি, লিখেছে স্বয়ং নবী! মানুষ এসব লিখতেও পারে না কারণ এগুলো পৃথিবীর নিকৃষ্টতম ও হিংস্রাত্মক আদেশ-নির্দেশ। তাই প্রকৃত মানুষের পক্ষে এসব লেখা বা পালন করা কোনক্রমেই সম্ভব না। কেবলমাত্র শয়তান বা ঈশ্বর/আল্লা সৃষ্টিকারী নবী-রাসূলরাই বোধকরি এসব লিখতে ও পালন করতে পারে। এরপরও মানুষ এসব ভার্সকে ঐশ্বরিক ভার্স বলে এগুলোক কেবল পবিত্রই নয়, মহাপবিত্র মনে করে, শ্রদ্ধা-ভক্তি করে, এতে চুমো খায়, মাথা ঠেকায়, এর একটু সমালোচনাও সহ্য করতে পারে না। কী আশ্চর্য! মানুষের বিশ্বাস কী করে এতো অন্ধ হয় (বিশেষ করে উচ্চশিক্ষিতদের) কিছু না পড়ে, না জেনেই যা মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ বলছেন! মূলত এসব সর্বনিকৃষ্টই শুধু নয়, জঘন্যও বটে। এসব নিকৃষ্টতম বাক্যগুলোর যারা সমালোচনা করে তাদেরকেই গর্দান দিতে হয় কতোগুলো গণ্ডমূর্খদের হাতে, এর চেয়ে মানবজাতির লজ্জার, অসহ্যের, দুঃখের, কষ্টের, হৃদয়হীতার, মূর্খতার… আর কী আছে?
ধর্মানুভূতি সম্পর্কে শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন আজাদ স্যার যথার্থই বলেছেন-
মানুষের শুধু একটি এলাকাই আছে, যেখানে যুক্তি চলে না; সেটি খুবই ভিন্ন রকম এলাকা, সেখানকার সব সত্য লাভ করা যায় অযুক্তি আর অন্ধ বিশ্বাস দিয়ে। মানুষের এই অন্ধ বিশ্বাসই অভিহিত হয়ে থাকে ধর্মানুভূতি নামে। একটি প্রশ্ন ওঠে মাঝেমাঝেই যে যারা শিক্ষিত, জ্ঞানের বিভিন্ন এলাকায় যাদের অনেকেই অর্জন করেছে সাফল্য, তারা কেনো ধর্মের মতো অযৌক্তিক বিশ্বাস পোষণ করে? তারা যে ধর্মবিশ্বাস পোষণ করে, এটাকেই মনে কর হয় ধর্মের সঠিকত্বের প্রমাণ। কিন্তু এটা কোনো প্রমাণ নয়। এ-ধরনের শিক্ষিত ও জ্ঞানী ব্যক্তিরাও জন্ম নেয় বিশেষ পরিবারে, বাল্যকালে তাদের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয় ভয় ও লোভ, তা থেকে তারা কখনো মুক্ত হ’তে পারে না; তারা যুক্তি ও অযুক্তির বিরোধিতার মধ্যে জীবন অতিবাহিত করে। তারা বিরোধিতাটা বুঝতেও পারে না, কেননা মানুষ এমন অদ্ভুত প্রাণী, যে একই সাথে পোষণ করতে পারে পরষ্পরবিরোধী চেতনা। জ্ঞানের বিকাশের অর্থই হচ্ছে পুরোনো পৌরাণিক বিশ্বাসগুলোকে আহত করা, শুধু আহত নয় সেগুলোকে সম্পূর্ণ বাতিল করা; কিন্তু রাষ্ট্রগুলো জ্ঞানের সুবিধাগুলো নিচ্ছে, কিন্তু পরিহার করছে তার চেতনাকে, এবং পোষণ ও পালন ক’রে চলছে পৌরাণিক বিশ্বাস।
আপনারা জ্ঞানীগুণি মানুষ হয়েও যদি অযুক্তি আর কুযুক্তি দিয়ে আমাদের ধমকিয়ে ধর্মের সমালোচনা বন্ধ করতে চান তাহলে দয়া করে বলবেন কী আপনাদের মতলবটা কী? জিহাদ সম্পর্কে মুসলমানেরা (কোরান ও হাদিসের আলোকে) কী বলছে দেখুন এখানে (যা কোন মানবতাবাদিরাই সমালোচনা না করে পারে না): http://ebanglalibrary.com/religious/?cat=927
পাদ্রি/ঠাকুর/মোল্লারা… না হয় সীমিত জ্ঞানের (ধর্মেই সীমাবদ্ধ) কারণে জিহাদি হয় ও বানায়। প্রশ্ন হলো, শিক্ষিত ও উচ্চশিক্ষিতরাও কী এসব আয়াতের অর্থ বোঝে না? নাকি পরোকালে শাস্তি পাবে, ৭২টা হুরপরী পাবে না… সেই ভয়ে এসবের সমালোচনা করেন না বরং ডিফেন্স করে? এজন্য বলছি, শ্রদ্ধেয় আরজ আলীর “সত্যের সন্ধানে” পড়ে আমার ঘনিষ্ট কয়েকজন (উচ্চ শিক্ষিত) যে মন্তব্য করেছে তাতে হতবাক হয়েছি এবং বুঝেছি এরা অন্ধবিশ্বাসে আষ্ঠেপৃষ্ঠে আটকে আছে। আরজ আলীর বই পড়ে হুমায়ুন আহমেদও বলেছিলেন, “…(তথাপিও) আল্লার অস্তিত্বে তার দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে।” আরজ আলী পড়ার পর বন্ধুরা যেন আল্লাকে আরো বেশি আকড়ে ধরেছে, আরো বেশি নামাজী হয়েছে, যেন তারা কী এক মহা অন্যায় করে ফেলেছে। আমার ধারণা, এরা শিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত অথচ সুশিক্ষিত নয় মোটেও। এসব ভার্স কোরান এবং ওল্ডস্টেটামেন্ট (অল্পকিছু তবে প্রয়োগ নেই) ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো নিকৃষ্টতম পুস্থকেও পাওয়া যাবে না। (ওল্ডস্টেটামেন্টের এসব বাণী বোধকরি অকার্যকর, কারণ ইহুদিরা তা ফিলিস্তিন ছাড়া অন্য কোথাও প্রয়োগ করে বলে শুনিনি কিন্তু কোরানের কল্যাণে আইএস, বোকহারাম, আল-কায়েদা, আল-শাবাব, আনসারুল্লাহ… সহ শতশত ইসলামী সন্ত্রাসী সারা বিশ্বব্যাপী প্রচণ্ডভাবে সক্রিয় এবং অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে এবং কমপক্ষে ৯০% মুসলমান এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিরব।
উপরোক্ত ভার্সগুলোসহ বহু ভার্সেই আল্লা স্বয়ং তার শত্রুদের এভাবেই অভিশাপ, হুমকি-ধামকি, ঘৃণা, হত্যা, যুদ্ধ, বন্দি, লুটপাট, যৌনদাসী, দাস্থদাসী, রক্ষিতাসহ শিশু বিবাহ ইত্যাদির হুকুম দিয়েছে এবং চিরদিনের জন্য তা জায়েজ করেছে (যার কোন পরিবর্তন নেই)। আরো লক্ষ্যণীয়, একমাত্র আল্লাই (হিন্দু, খৃস্টান, ইহুদি, বৌদ্ধ…) সবাইকে শত্রু বানিয়েছে, ঘৃণা করতে ও হত্যা করতে বলেছে, অন্য ঈশ্বরগণ করেছে কিনা জানি না, করলেও তা প্রযোজ্য নয়। কারণ এই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মটিই অন্যান্য সব ধর্ম বাতিল বা নিকৃষ্টতম বলে ঘোষণা করেছে, ফরে অন্য ধর্মগুলো কী কী করেছে তা আলোচ্য বিষয় নয়। যাহোক, এরপরও আল্লা ও তার সৃষ্টিকারী নবীকে কী করে মহাপবিত্র, দয়াময়, সহানুভূতিশীল, সহনশীল, পরোপকারি, মহৎ… ইত্যাদি বলতে পারি বা বলবো? এমন সব তথাকথিত ওহী পড়ে এবং বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে যে ইসলামী তান্ডব দেখেও কী প্রশ্ন করবেন- কেনো মুক্তমনারা শুধু ইসলামের সমালোচনা করছে? পূর্বেও বলেছি, ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মীয় সন্ত্রাসী দল এখন তেমন একটা জন্মে না, যা জন্মে তা বিশেষ করে দু-একটি রাষ্ট্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, সমগ্র বিশ্বে নয়। অথচ সারা দুনিয়াব্যাপী একটিমাত্র ধর্মই সকলের ঘুম হারাম করে ফেলেছে। তবে ধর্মীয় সন্ত্রাসী জন্ম দেয়াতে মুসলমানদের আসলেই দোষ নেই, কারণ এসব যে আল্লা সৃষ্টিকারী নবীরই সৃষ্টি। “…তোমাদের মধ্যে অন্যরা (বিধর্মীরা) কঠোরতা দেখুক, যেখানে পাও তাদের হত্যা কর। কীভাবে ওঁৎ পেতে থেকে হত্যা করতে হবে, কোথায় (গর্দানে) আঘাত করতে হবে… ইত্যাদি” সবই বলে দিয়েছে স্বয়ং নবী। এরপরও কী প্রকৃত মুসলমানেরা ভুল করতে পারে এবং মডারেটরাও কী এতে সমর্থন না দিয়ে পারে? বিধর্মীদের কীভাবে পরাস্থ করে, ভয়ভীতি দিয়ে… দলে ভিড়াতে হবে, পুরো পৃথিবীতে নবীর পতাকা উড়াতে হবে, সব টেকনিকই তো নবী তার মুরিদদের শিখিয়েছে (যা চলমান)। যাদের ভাষা অস্ত্র, সেসব কাপুরুষের সাথে নিরস্ত্র মুক্তমনারা পারবে কেনো? কাপুরুষরা তো সামনে আসবে না, যুক্তি/তর্ক করবে না, গোপনে এবং পেছন থেকেই আঘাত করবে। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে- সত্য সহ্য করার ক্ষমতা, সত্যের সামনে দাঁড়ানো- মৌলবাদিদের তো নয়ই, আল্লা সৃষ্টিকারী নবীরও সাহসে কুলায়নি। কারণ নবীও তার জীবনে অতর্কিত এবং ওঁৎ পেতে থেকে বহু হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে (এম.এ. খানের জিহাদ বইটিতে এর বহু প্রমাণ পাবেন)।
অভিজিত ও ওয়াশিকুর বাবু খুন হওয়ার পর, গত ৫/৪/১৫ তারিখ বিবিসি সংলাপে ব্লগারদের নিরাপত্তার প্রশ্নে কয়েকজন বিশিষ্ট এবং উচ্চশিক্ষিতদের বক্তব্য (ইসলাম ডিফেন্স করে বলছেন, যদিও এমনটা সবাই করেন) নিম্নরূপ:-
শাজাহান খান বলনে, …“কোন ধর্মকেই কারো ব্যঙ্গ করা উচিত নয়। সরকার লতিফ সিদ্দিকীর মতো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। যারা খুন করে তারা বিধর্মী। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা এখন জঙ্গীবাদে রূপ নিয়েছে। জনমত সৃষ্টি করতে হবে”।
জিনাত হুদা ওয়াহিদ বলেন, “নবী যখন ইসলাম ধর্মের কথা বলেন তখন তিনিও কিন্তু ভিন্নমতই দিয়েছিলেন। এজন্য তাকে জন্মভূমি ছাড়তে হয়েছে। একজন ভিন্নমত নিয়ে আসলেই তাকে জবাই হতে হবে, খুন হতে হবে সেটি মেনে নেয়া যায়না।এক্ষেত্রে নিরাপত্তা দেয়ার বড় দায়িত্ব সরকারের”।
হান্নান শাহ বলেন কেউ যেন অন্যের ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ না ছড়ায়। কেউ বিকৃত করলে উগ্ররা ছেড়ে কথা বলতে চাননা আর সেজন্যই হত্যাকাণ্ড হচ্চে। শুধু ব্লগার নয় রাজনৈতিক ভিন্নমতের জন্য অনেককে আক্রান্ত হতে হচ্ছে।
এরপর বন্ধু অনন্ত খুন হওয়ার পর, গত ১৭/৫/১৫ তারিখ বিবিসি সংলাপে ব্লগার হত্যা প্রশ্নে কয়েকজন বিশিষ্ট এবং তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতদের বক্তব্য (ইসলাম ডিফেন্ডারদের বক্তব্য) নিম্নরূপ:- ফরিদা আখতার বলেন , “যারা ধর্মপ্রাণ কিন্তু মৌলবাদী নয় তার যদি মনে হয় যে রসুলের নামে কিছু বললে তার নামে কষ্ট লাগছে, সে ধরনের কথা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পর্যায়ে পড়ে কিনা এটা বিবেচনা করতে হবে।”
একজন দর্শক মন্তব্য করেন , “ কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে মতামত প্রকাশ করা উচিত না। সেটা যে ধর্মেরই হোক ।”
ব্লগে ইসলাম ধর্ম নিয়ে যা লেখা হচ্ছে তা পত্রিকায় পড়েছেন বলে উল্লেখ করে একজন দর্শক বলেন “তাঁদের লেখাগুলিতে ধর্মীয় আঘাত দেয়া হচ্ছে, এটা বন্ধ করা উচিৎ।”
উপরোক্ত বিজ্ঞজনদের প্রতি শ্রদ্ধেয় কাজী নজরুলের একটি উদ্ধৃতি দেয়া হলো (ব্যাখ্যা নিসপ্রয়োজন): “হিন্দু লেখকগণ তাদের সমাজের গলদ-ত্রুটি-কুসংস্কার নিয়ে কি না কষাঘাত করেছেন সমাজকে, তা সত্ত্বেও তারা সমাজের শ্রদ্ধা হারাননি। কিন্তু হতভাগ্য মুসলমানের দোষ-ত্রুটির কথা পর্যন্ত বলবার উপায় নেই, সংস্কার তো দূরের কথা ! তার সংশোধন করতে চাইলেও এরা তার বিকৃত অর্থ করে নিয়ে লেখককে হয়ত ছুরিই মেরে বসবে। “(সওগাত, পৌষ ১৩৩৪)
আমার ধারণা এরা বহু বিষয়ে জ্ঞানে জ্ঞানী হলেও, বহু বইপত্র পড়লেও একজনও কোরান এবং হাদিস পড়েনি। কারণ তারা মনে করেছেন, ওসব তো এক্কেবারে খাঁটি, ঐশ্বী বাণী, মহাপবিত্র, সর্বশ্রেষ্ঠ… অতএব ওসব পড়ার প্রয়োজন নেই (যেমনটা ভাবে কমপক্ষে ৯৫% মুসলমান)। অতএব জ্ঞান হওয়ার আগেই যে ধর্মকে মহাপবিত্র বলে জানি ও শুনি সেটাই তো ১০০% সঠিক ও অভ্রান্ত!!! আসলে এরা ইসলামের উল্টা দিকটা জানে না। এদেরকে বলবো, অন্য কারো লেখা বা অন্য বইপুস্থক পড়ার প্রয়োজন নেই, কেবলমাত্র কোরান্তহাদিস পড়লেই জানতে পারবেন কেনো নাস্তিকরা আপনাদের ধর্মের সমালোচনা করে? নবী যে ইসলাম ধর্ম সৃষ্টি করার সাথে সাথেই তরবারি হাতে নিয়েছিলো, (অসংখ্য লুটপাট ও যুদ্ধ করেছিলো নিজের মতবাদ জোর করে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য) তারা কেউই জানেন না, জানলেও স্বীকার করতে ব্যথা পান, কারণ এতে নবীর অপমান হবে যে! এসব বললে হয়তো তারা বেহেশতের মহাসুখ হারাবেন। শাজাহান খান বলেছেন, “কোন ধর্মকেই কারো ব্যঙ্গ করা উচিত নয়।” অথচ সর্বত্রই যে ইমামদের দ্বারা অন্য ধর্মের চৌদ্দগোষ্ঠি উদ্ধার হচ্ছে তা ওনারা দেখছেন না বা দেখেও চোখ বন্ধ করে থাকছেন। শুধু ইসলাম নিয়ে সমালোচনার বেলায় ওনার কষ্ট পান। আপনাদের ধর্মপুস্থক পড়ার পর কোনো খাঁটি মানুষই সমালোচনা না করে থাকতে পারে না। অতএব সাধারণ জনগণকে কোনোভাবেই দায়ী করা যায় না। কারণ উচ্চশিক্ষিত মতলবাজরা আর কাঠমোল্লারা যা শেখায় সেটাই তো সাধারণেরা (যাচাই-বাছাই না করে) মনেপ্রাণে গ্রহণ করে। ফলে তারা এসবে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং প্রতিরোধে ও প্রতিবাদে সামিল হয় না এবং হতে ভয় পায় পাছে আল্লার অভিশাপে বিনষ্ট হয়। আমাদের উচ্চশিক্ষিত, উচ্চপদস্থরা মুহাম্মদের ভাল দিকগুলোকেই জানে (যা অক্ষর জ্ঞান হওয়ার আগেই শেখা), তার অন্ধকার দিকগুলো জানে না, জানলেও দোযখে যাবার ভয়ে তা প্রকাশ করে না, যারা প্রকাশ করে তাদের তা বন্ধ করতে বলে অর্থাৎ প্রকারান্তরে তারা মৌলবাদিদেরই সহায়তা করে। তাই স্পষ্টভাবে ও জোর দিয়ে সব সময়ই বলছেন, ধর্মানুভূতির কথা। মুহাম্মদের জীবনের অমানবিক ও অন্ধকার দিকগুলো যদি আপনাদের অনুভূতিতে আঘাত না দিতে পারে, তাহলে এসব নিয়ে নাস্তিকদের সমালোচনায় আপনারা আঘাত পান কীভাবে ও কেন? নাস্তিরা তো একটি কথাও বানিয়ে বলছে না বরং কোরান ও হাদিস এবং ইসলামী চিন্তাবিদের রেফারেন্স ছাড়া কথা বলে না। এসব রেফারেন্স যখন নাস্তিকরা লেখে বা বলে তখন আঘাত পান, মৌলবদিদের চাপাতির সমর্থনে গোপনে পুলক অনুভব করেন, অথচ কোরানে ও হাদিসে যার এসব লিখেছে, যারা জোর-জবরদস্তিভাবে এ ধর্মটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে, তাদের ব্যাপারে এতো সহানুভূতিশীল হচ্ছেন বা থাকছেন কীভাবে? আপনাদের মধ্যে কী কোন মানবতা বোধ আছে? নাকি ধর্মের ও ক্ষমতার লোভে সব বিকিয়ে দিয়েছেন?
আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরা, যারা আমতা আমতা করে কাফের হত্যায় মনে মনে খুশি হয়, মুখে খাটিকটা দুঃখ প্রকাশ করে কেনো জানেন? ইসলাম বিদ্বেষী, ধর্মদ্রোহী, ধর্মচ্যুত হওয়ার ভয়ে। যখন অভিকে “আল্লাহু আকবর” বলে কুপিয়ে ফেলে রেখেছিলো তখন কেউ এগিয়ে আসেনি ওই একই কারণে। তাৎক্ষণিক অভিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে হয়তো বেঁচে যেতো। কিন্তু উপসি’ত সকলেই যখন শুনেছে “আল্লাহু আকবর” তখনই বুঝেছে কাফের খুন করা হচ্ছে, অতএব ওকে ছুঁয়ে গুণা করার প্রয়োজন কী? জ্ঞানীগুণিরা, কেউ কী কখনো জোরালো প্রতিবাদ করেছে বা প্রশ্ন তুলেছেন যে, কোন প্রতিটি মসজিদে, ওয়াজে… প্রকাশ্যে এবং নগ্ন ভাষায় অন্য ধর্মের এতো সমালোচনা হচ্ছে? এতে কী অন্য ধর্মালম্বীরা আহত হচ্ছে না? আহত হওয়া কেবল মুসলমানেরই একচেটিয়া অধিকার, অন্যদের নয়? এসব প্রশ্ন আপনাদের মাথায় কখনোই ঢুকবে না, ঢুকবেই বা কেন আপনারাও যে আজন্ম এসব শুনতে শুনতেই বড় বেশি গুণি হয়েছেন! যে দোষে কাফের বা নাস্তিকদের হত্যা করা হচ্ছে, ঠিক একই দোষে যে আপনাদের প্রতিটা হুজুর দোষী, সেটা স্বীকার করছেন না। কেনো বলছেন না যে, প্রতিটি হুজুরকে গ্রেফতার করা হোক? হুজুরসহ আপনারা যখন নিজেদের ধর্মকেই সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহাশান্তির ধর্ম বলে বিচিত্র ভঙ্গিতে গলা ফুলিয়ে চিৎকার করছেন, অন্য ধর্মগুলোকে ব্যাঙ্গ করছেন, তখন আপনাদের প্রতি সত্যিই করুণা হয়! আপনারা প্রায়ই বলেন, মুক্তমনা হলেই কেন ধর্ম নিয়ে লিখতে হবে? কেন ধর্মানুভূতিতে আঘাত করতে হবে…? ইত্যাদি। মুক্তমনারা এসব মানতে পারে না, তাই যে কোন ধর্মের অমানবিক ও জঘন্য ভার্সগুলোর সমালোচনা করে। যদি এতে আপনারা আঘাতপ্রাপ্ত হন, তাহলে আপনাদের ধর্মপুস্থক যারা লিখেছে তাদেরকে প্রশ্ন করা করুন। কীভাবে ও কেন তারা এমন হিংস্রাত্মক, অমানবিক, ঘৃণ্য ও জঘন্য ভাষা/বাক্য/আদেশ/নির্দেশ… দিয়েছে? যদি এসব বাণী/আয়াত পরে আপনারা আঘাত না পান, তাহলে বলতেই হয়, আপনাদের মানবীয় কোন গুণাবলীই নেই, আছে কেবল ঈশ্বরীয় গুণাবলী। কারণ ইসলামী প্রতিটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পর প্রায় সব সন্ত্রাসীর বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের বলতে শোনা যায় এমন ছেলে ও নয়, এমনটা কেনো হলো, কিভাবে হলো, এতো ভালো ছেলে বা মেয়ে কী করে সন্ত্রাসী হলো, এটা সহি ইসলাম নয়, ওটা সহি নয়… ইত্যাদি।
ভেবে দেখুন, হিন্দু ধর্মের যেসব সংস্কার হয়েছে এবং যারা এসব করেছেন যেমন- রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর… এরা কেউ চাপাতির তলে পড়েনেনি। এরপরও আজ পর্যন্ত যেসব সংস্কারকগণ হিন্দু ধর্মের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে চলেছেন, তাদেরকেও যে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য নির্যাতন করা হয়েছে বলে শুনিনি। অথচ ইসলামের সংস্কার দূরে থাক, সামান্য সমালোচনা করলেই তার উপর চাপাতি নয় তো ৫৭ ধরা! এতো অসহিষ্ণু ধর্ম কী পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আছে? এরপরও কীভাবে এটিকেই শান্তির ধর্ম বলছেন?
তথাকথিত বুদ্ধিজীবিসহ মডারেটদের এম.এ. খানের লেখা- [মুহাম্মদ, জিহাদ ও ইসলামের সহিংস প্রসার] পড়ার জন্য অনুরোধ রইল। আমি মূর্খ কিন্তু অন্ধ নই। আমার চেয়ে আপনারা হিমালয় সমান উঁচুতে তাই আপনারাই ভালো জানেন যে, ইতিহাস কখনো পরাজিতদের পক্ষে লেখা হয় না। এর একটি অদৃশ্য বা গোপন দিক থাকে। যেমনটা রয়েছে মুসলিমদের ইতিহাস বা ইসলামের ইতিহাসেও। ইসলামের যে ইতিহাস পড়ে বহু বিদ্বান হন, অথচ ইসলামের ইতিহাসে কেবলই যুদ্ধের (যা মানবতাহীন) ইতিহাস ছাড়া কিছু নেই। যেসব যুদ্ধের কাহিনী গর্বভরে পড়ানো বা শেখানো হয় তা মানবতাবাদিের নিকট কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যাহোক, ইসলাম যতোটা যুদ্ধ ও জোর-জবরদস্তি করে বিস্থার লাভ করেছে, এর সিকিভাগও বোধকরি অন্য কোন ধর্ম করেনি। অতএব এসব ইসলামী যুদ্ধের ভয়ানক, হিংস্রাত্মক দিকগুলো পড়তে হলো নিম্নের লিংকটি পড়ার অনুরোধ রইলো। লেখক এম. এ. খানের ‘জিহাদ : জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও দাসত্বের উত্তরাধিকার’
wjsK: http://www.bangarashtra.net/article/index/51.html
জানি, এ লেখাটিকে বেশিরভাগ পাঠকই (মুক্তমনাসহ) ইসলাম বিদ্বেষী লেখা বলে আখ্যা দিবেন। একই তেনাপ্যাচানো কথা বলবেন- এটা সহি ইসলাম নয়, ওটা সহি নয়…। এসব বহু শুনেছি, আর নয়। সহি যে কোনটা সেটা বের করা তো স্বয়ং আল্লার পক্ষেও সম্ভব নয়, কারণ আল্লার জন্মদাতা নবীই যখন তা করনি। বরং কথিত আছে, নবীও তার অনুসারীদের ৭৩ ভাগে বিভক্ত করেছে, যার মধ্যে নাকি ১ ভাগ তথাকথিত বেহেশতে যাবে, তবে ওই ১ ভাগ কারা তাও নির্দিষ্ট করে দেয়নি। ফলে এসব হত্যাকাণ্ডসহ সারা পৃথিবীতে এদের অরাজকাতার হাত থেকে মানব জাতির মুক্তি মিলবে বলে মনে হয় না। একটু ভেবে দেখুন, বর্তমানে ইসলামী সমাজ থেকেই তো পৃথিবীর ছোট-বড় শতশত ইসলামী সন্ত্রাসী তৈরি হচ্ছে; নাকি অন্য কোন ধর্ম থেকে? ঢাকা থেকে জার্মানিতে গেছে লুক্সকে খুন করতে, ইউরোপ, আমেরিকা থেকে (সেখানে জন্ম নেয়া) যুবক-যুবতীরা যাচ্ছে আইএস, বোকহারাম, আলকায়দা… হতে। ফলে এর দায় ইসলাম কোনো যুক্তিতেই এড়াতে পারে না। অতএব অন্য ধর্মালম্বীরা যদি পুরো মুসলমান সমাজকে এর জন্য দায়ী করে তাহলে সকলকেই তা স্বীকার করে নিতে হবে। কারণ এর উল্টাটা যদি অন্য ধর্মালম্বীরা করতো তাহলে মুসলমানেরা তাদের কেটে কুচি কুচি করতো (যেমন বহুবার হয়েছে ইন্ডিয়ার ঘটনায় পাকিস্থান ও বাংলাদেশে)। মুসলমানেরা কোনদিই নিজেদের দায় স্বীকার করে না, ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে অন্যদের কাঁধে দায় চাপায়। ফলে মৌলবাদ নির্মূলের কথা মুখে বললেও, মোটেও আন্তরিক নয়। যাহোক, ত্যানাপেঁচানো উত্তর আর চাই না। আপনি যে কোনো ধর্মের বিদ্বেষী হয়ে অন্যসব ধর্মকে উলঙ্গ করে ফেলুন না কেন, একটা লাশও পড়বে না! কারণ এদেশে ইসলাম বাদে অন্য ধর্মের উলঙ্গ সমালোচনা প্রতিদিনই চলছে, যা শুনে আনন্দিত হচ্ছেন, বুঝতেই পারছেন না কী বিষ মগজে নিয়ে ঘুরছেন। বুঝবেন কীভাবে, এসব শুনতে শুনতেই যে বেড়ে উঠেছেন এবং চিরন্তনভাবে অভ্যস্থ হয়েছেন। গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, এদেশে অন্য ধর্মালম্বীদের মধ্যে এমন কোনো মৌলবাদি গোষ্ঠি নেই যারা প্রকাশ্যে কাউকে খুন বা সামান্য জখম করবে। অতএব আপনি অন্য ধর্মের যতোই সমালোচনা করুন লাশ পড়বে না। অথচ ইসলামে সামান্য ফুলের টোকা দিন, দেখুন তো লাশ পড়ে কী-না? অবশ্যই পড়বে এবং আপনি যদি তা প্রকাশ্যে করেন তাহলে মৌলবাদি গোষ্ঠির প্রয়োজন হবে না, সাধারণ মুসলমান অথবা ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই আপনার লাশ ফেলে দেবো নতুবা আপনাকে তুলে দেবে মৌলবাদিদের হাতে, এর কোন ব্যতিক্রম হবেই না (স্বাভাবিক অবস্থায় এদেশে সব ধর্মালম্বীরাই মোটামুটি সহনশীল, শুধু ধর্মের সমালোচনার প্রশ্নেই একথা প্রযোজ্য)। সংখ্যালঘুদের জব্দ করতে, ঘরবাড়ি দখল করতেও আপনাদের ধর্মাস্ত্রটি প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও প্রয়োগ করা হচ্ছে (যা এদেশের অন্য ধর্মালম্বীরা কল্পনাও করে না)।
একটি কথা প্রায় সব মুসলমানের মুখে শোনা যায় যে, মুসলমানদের পাছায় আঙুল দিয়ে পশ্চিমারা (পরোক্ষভাবে ইহুদি-খ্রীস্টানরা) নাচায় তাই ইসলামে এতো খুনাখুনি! প্রশ্ন হলো- মুসলমানদের আল্লার এতো আশির্বাদ ও ক্ষমতা থাকতে কাফেরদের কথায় নাচছে কেন? সর্বশ্রেষ্ঠ আল্লার কুদরতে মুসলমানেরা কেনো ওদের মতো উন্নতি করতে পারছে না? মুসলমানেরাই কেনো নিজেদের স্বার্থ নিজেরা রক্ষা করতে পারে না, কেনো উল্টো কাফেরদের পাছায় ঈমানদন্ড ঢুকতে পারে না? বরং নিজেদের পাছাতেই নিজোরা বেশি ঢুকাচ্ছে আর কোকাচ্ছে!!! যেহেতু তারাই সর্বশ্রেষ্ঠ!!!!!! আসলে কী জানেন, মুসলমানদের অন্যায় দাবি বিশেষ করে তাদের উত্তেজনা, উন্মাদনা, মহাতান্ডবের কাছে পৃথিবীর সব জাতি-ধর্মই মাথা নত করতে বাধ্য হয়। কারণ তাদের উম্মাদনাকে সকলেই ভয় পায় তা যতো অন্যায্যই হোক না কেনো। লক্ষ লক্ষ উদাহররণের একটি উল্লেখ করছি, অঘোষিত হিন্দু রাষ্ট্র ইন্ডিয়াতে তসলিমার বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে বাম নেতা বুদ্ধদেবের সময়ে, তাকে বহিস্কারও করা হয়েছে শুধু মুসলমানদের তান্ডব থামাতে। এবার ভাবুন হিন্দু রাষ্ট্রের মুসলমানদের কি দাপট? মুসলিম রাষ্ট্রের অবস্থার কথা না-ই বললাম, কারণ তা প্রতিদিনই দেখছি।
অনেকেই অসামপ্রদায়িকতার কথা বলেন। এ নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবি ও বাপন্থিদের অনেক উপদেশ শুনছি। সঙ্গত ও পারিবারিকভাবে ভারতের বুদ্ধিজীবি ও বাপন্থিরা বেশিরভাগই হিন্দু এবং বাংলাদেশে মুসলমান। তবে এরা মুখে যাই-ই বলুক এদের আচার-ব্যাবহারে প্রচণ্ডরকম পার্থক্য পরিলক্ষিত। যেমন, ভারতে গোমাংস বিতর্কে বুদ্ধিজীবি ও বাপন্থিরা তাদের জাতীয় পুরষ্কার ত্যাগ করেছে, রাস্থায় নেমে গোমাংস খেয়ে প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে যে বিরতিহীনভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে ইসলামের নাম, সেজন্য একটা বুদ্ধিজীবি ও বাপন্থি কি এমনটা করেছে? করেনি। শুধু উহ-আহা করেই এদের দায়িত্ব শেষ। আসলে এরা বর্ণচোরা বুদ্ধিজীবি ও বাপন্থি। এছাড়া এদের সংকোচ ও ভয় দুটোই যে এদেশের সংখ্যালঘু অত্যাচারের জন্য তারা যদি এসব করে তাহলে নাস্তিক তকমা যে তাৎক্ষণিক লাগেব এবং চাপাতির তলে চলে আসবেই সেই ভয়ে এরা চুপ থাকে। ধরুন আজ যদি বাংলাদেশে হিন্দু-খ্রীস্টানদের শূকর খেতে বারন করে কোন মুসলিম গোষ্ঠি ফতোয়া দেয়, তাহলে কি একটাও মুসলিম বুদ্ধিজীবি ও বাপন্থি রাস্থায় নেমে ভারতের হিন্দু বুদ্ধিজীবি ও বাপন্থিদের মতো শূকরের মাংস খেয়ে প্রতিবাদ জানাবে? কখনোই না। তাদের পক্ষে এটা সম্ভব নয় কারণ তারা সকলেই ভন্ড প্রকৃতপক্ষে মোটেও অসামপ্রদায়িক নয়। কারণ আমি যখন কোন ধর্মের সমর্থন করবেন তখন অসামপ্রদায়িক থাকতে পারবেন না। প্রতিটি ধর্মের স্পষ্ট ও কঠোর বিরোধিতা ছাড়া কেউ অসামপ্রদায়িক হতে পারে না। কারণ ধর্মগুলোই সামপ্রদায়িকতার কারাখানা। আর এ কারখানায় উৎপাদিত আমাদের শিশুবেলা সাদা মনটাতে সর্বপ্রথই তো ওই অসামপ্রদায়িকতার বীজ বোনা হয়েছে, ফলে এটা ভুলে অসামপ্রদায়িক হওয়া ভীষণ কঠিন।
আবারও মুক্তমনার লেখকদের বলছি, ইসলামের সমালোচনাকারীদের লেখা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল তর্ক করছেন দেখে হতাশ। কেউ কেউ আপত্তি তুলছেন, লেখাটি কদর্য, ঘৃণ্য, জঘন্য…। অধমের প্রশ্ন, কোরানে যেসব কদর্য, জঘন্য… ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে মুক্তমনার লেখদের (যাদের লেখা সরিয়ে ফেলা হয়েছে) ভাষা কী এর চেয়েও জঘন্য বা কদর্য? তথাকথিত মহামানব যে ভাষা/বাক্য ব্যবহার করেছে এরচেয়ে জঘন্য ভাষা ব্যবহার করার মতো মানুষ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আছে কী? থাকলে প্রমাণ দিন। জানতে চাইছি, ইসলামের চাপাতির তলে এতো মাথা যাওয়ার পরও (আরো যাবে) কেনো ইসলামকে ফুলের টোকা না দিয়ে শাণিত মসি চালাচ্ছেন না? ইসলামে ফুলের টোকা বা লাঠির আঘাত যেটাই দিন, চাপাতির তলে যখন পড়বেনই তখন আর রাখঢাক কেন? অতএব, দয়া করে হুমায়ূন আজাদ, অভি, অনন্ত, ওয়াশিকুর… হওয়ার শ্লোগান দিবেন না। সত্যি যা তা পুরোটা প্রকাশ করতে না পারলে, মিনিমিন করে বলা কেন? মডারেটদের স্ট্যান্ড পরিষ্কার করতে হবে অন্য ধর্মের সমালোচনা হোক বা না হোক ইসলামের সমালোচনা করতেই হবে এবং তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। এতে মানবতার কল্যাণ ছাড়া অকল্যাণ মোটেও হবে না। আর দুই নৌকায় পা দিয়ে থাকবেন না। অতএব কেউ যদি অন্য ধর্ম বাদ দিয়ে শুধু ইসলামের সমালোচনা করে, তাহলে তাকে ইসলাম বিদ্বেষী বলে আখ্যা না দিয়ে প্রকৃত ইসলাম কী সেটাই বলা উচিত। পূর্বেও বলেছি, অন্য ধর্মের সাথে ইসলামের তুলনা না করাই উচিত, কারণ ইসলামই একমাত্র ও সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম যা অন্যগুলোকে বাতিল করে দিয়েছে (ইসলামের ভাষায় ওরা সব সর্বনিকৃষ্ট)।
সর্বশেষে একটি কথা না বললেই না। কেনো শুধু ইসলামের সমালোচনা করছি, কারণ ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেটিকে বলা হয় “জীবন বিধান” অর্থাৎ জীবনের যা কিছু সবই এর সাথে জড়িত। ফলে এই বিধান ছাড়া অন্য কোন ধর্ম/বিধান নিয়ে সমালোচনায় রুচি নেই এবং প্রয়োজন আছে বলেও মানতে পারছি না। তাই ক্ষমা করবেন। অতএব অনুরোধ, ইসলামের তুলনা কেবল ইসলাম এবং এর অনুসারীদের কর্মকান্ডসহ সাধারণ মুসলমানদের আচার-আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি দিয়েই করবেন, অন্য ধর্মালম্বীরা কী করছে তা দিয়ে নয়। অতএব ইসলাম যে পর্যন্ত এর সেন্টিমেন্টকে মাটিতে নামিয়ে না আনবে, সে পর্যন্ত এর সমালোচনা হওয়াই উচিত। মনে রাখবেন, ইসলামে অসির ধার মসির চেয়ে বেশি। ইসলামে ফুলের টোকা দিলেও যখন মুক্তমনাদের মরতে হয়, তখন আর রাখঢাক নয়, এর কঠোর সমালোচনা করেই মরুন। ভালো থাকবেন। ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা করবেন।
কালের স্রোতে ভেসে গেছে অনেক কিছু, আবার মহাকালের পাটাতনে রয়েও গেছে অনেক সত্য সুন্দরের প্রতিধ্বনি; বদলেছে পৃথিবীর বিবর্তনের ইতিহাস। শুধু বদলায়নি ধর্মীয় অনুশাসনের অনুভূতি। বর্বর যুগে ধর্ম এসেছিল মানুষকে শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপনে অভ্যস্ত করে অসভ্য মানুষকে সভ্য করার তাগিদে। মানুষের মনে ধর্মীয় বিশ্বাস আর ধর্মের নামে অলৌকিক ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল জীবনের পরিমিতি বোধ, যা থেকে মানুষ পেতে পারে নিরবচ্ছিন্ন সুখ আর অসীম আত্মার পরিতৃপ্তি। বর্তমান যুগে শিক্ষা মানুষকে সভ্যতার চরম শিখরে পৌঁছে দিয়েছে, যেখানে শুধু মানবতারই ঝাণ্ডা উড়ে। কিন্তু শিক্ষা দীক্ষা জ্ঞান গরিমায় মানুষের মন ও মগজে সুস্থধারার মুক্তচিন্তা চেতনার বিকাশ যতটা না ঘটছে তারচেয়ে বেশী মনকে ধর্মের নামে কালো অন্ধকার থাবা আচ্ছন্ন করে রাখছে। যদিও সব ধর্মেই বলে, এমন কি বড় বড় ঋষি মনিষী্রাও বলেছেন, সব কিছুর উর্ধে হলো মানব ধর্ম। তাহলে এ কেমন ধর্ম যেখানে মানুষে মানুষে হানাহানি, কাটাকাটি, অপবাদ অপমান!আসলে মৌলবাদিরা বিশ্বাস করে ধমর্ত্যাগী-নাস্তিকদের হত্যা করা তাদের ইমানি দায়িত্ব। তাদের ধমর্ বিশ্বাসই তাদের বাধ্য করে হত্যা করতে!!!
সৃষ্টিকর্তা আছেন কি নেই,থাকলেও তার স্বরূপ কি, এই সত্য অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া দীর্ঘ অনির্দষ্টকাল চলবে সেটাই বাস্তবতা। ইসলামপূর্ব সময় থেকে এই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়ে আসছে, এবং বিগত চৌদ্দশত বছর থেকে নানা ভাবে নানা জন এতে তাঁদের মতামত প্রকাশ করে আসছে। হঠাত করে গত দুই যুগ থেকে একদল মৌলবাদী এই স্বাভাবিক অনুসন্ধিৎসাকে চরম বর্বরতার মাধ্যমে নিঃশ্চিহ্ন করার প্রয়াসে ক্ষেপে উঠেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার প্রয়োজন আছে, এবং এই প্রতিরোধের কার্য্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে। এই সময়োচিত আলোচনা অবতারণার জন্য লেখককে সাধুবা্দ।
আমার মনে হয়, সবাইকে ধর্মের অসারতা সম্পর্কে তথ্য প্রমান দিয়ে শিক্ষিত করে এই মৌলবাদীদের মোকাবেলায় সবাইকে সামিল করার প্রয়াসটি বাস্তব নয়। শিক্ষিত অশিক্ষিত কোন বিশ্বাসী ব্যাক্তিই মৌলবাদী চিন্তা হতে পুরোপুরি বের হয়ে আসতে অক্ষম। বিশ্বরাজনীতি্র আধিপত্যবাদ, পুঁজিবাদ, আর জাতীয়তাবাদের জটিল আবর্তে সবাই বিভ্রান্ত। মানুষের ধর্ম যে সর্বোপরি মানবতা, সেটা বিস্মৃত হয় সহজেই। বিজ্ঞানের কথা, যুক্তির কথা, এবং সব শেষে সে নিজের ধর্মের কথাও ভুলে গিয়ে প্রতিশোধ স্পৃহায় অন্ধ হয়। তাই ঐ পথে না হেঁটে, সহনশীলতা এবং মানবতাই যে সব ধর্মের প্রথম সত্য এটি প্রচার করাটাই উত্তম পথ। আমাদের দেশের বাঊল ঐতিহ্য একসময় এই পথেই অনেকদুর এগিয়ে নিতে পেরেছিল সভ্যতা। ধর্মের অসারতা প্রমান করার কাজটি বিজ্ঞানের হাতেই ছেড়ে দেয়া হোক।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রটি হবে আপন সংষ্কৃতি সম্পর্কে গরিমা সৃষ্টি করা। বস্তুত মৌলবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হচ্ছে, তারা ইসলামকে শ্রেষ্ঠ ধর্ম জ্ঞান করে বাস্তবে তাদের পশ্চাদপর ক্ষুদ্রতার হীনমন্যতাকে অতিক্রম করার প্রয়াস, যা কি না গায়ের জোড়ে বড় হওয়ার প্রয়াস। এই মানসিকতা থেকে সরিয়ে তাঁদের যদি নিজ সংষ্কৃতিকে গর্ব করার মত মানসিকতায় আনা যায়, তার হীনমন্যতা দূর হয়, এবং সে স্বাভাবিক বিশ্বনাগরিকদের কাতারে আসতে পারে। নিজ ভাষায় ধর্মচর্চা, স্বদেশী পোষাকের কদর করা, সব কাজে নিজ ভাষার ব্যাভার উত্তম, এই ধারনা সমাজে প্রতিষ্ঠা করা। হেজাবের চেয়ে ঘোমটা ভাল, আলখেল্লার চেয়ে পাজামা কুর্তা ভাল, এটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ছেলেমেয়ের বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণে নিজ ভাষার ব্যাভারে উতসাহিত করা, একই সাথে বিজাতীয় ভাষা ব্যাভারকে নিম্নমান জ্ঞান করা শিখাতে হবে। শিক্ষিত বিত্তবানরা যদি এর উদাহরণ তৈরী না করেন, অশিক্ষিতদের থেকে সেটা আসা করা যাবে না। মৌলবাদীরা মাদ্রাসার মত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ধর্মের সাথে সাথে অহেতুক বিজাতীয় লেবাস আর আচরণ প্রচার করে আমাদের সাধারণ জনগনের মাঝে হীনমন্যতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। একে ঠেকাতে আমাদের অধিক সচেতনার প্রয়োজন অসীম।
অবশ্যই এই প্রতিরোধ এক বিপুল পরিকল্পনার বিষয়,এবং এর অগুনিত ফ্রন্ট প্রয়োজন হবে। গতিময় কোন যান কে একমূহূর্তে ১৮০ ডিগ্রিতে ঘোরানো সম্ভব নয়, সেটা আত্মঘাতী। প্রয়োজন নিয়ন্ত্রিত বাঁক পরিবর্তন।
হুম সেটাই…..ইসলামই একমাত্র……ধর্ম। লেখাটার উদ্দেশ্য অবশ্যই ধর্মের প্রতি অনুত্সাহিত করা, তবু এরকম যুক্তিযুক্ত লেখা পড়লে এই অধমের কেবলই ইসলামের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। জাকির নায়েক এর থেকে বরং অভি আসিফ ভাইদের লেখা পড়েই বেশি আগ্রহ অনুভব করি। এরাই সত্যের অনুসন্ধান করে, অন্ধভাবে বিশ্বাস স্থাপন করে না। তবে তথাকথিত ‘নাস্তিকতা’ (disbelief of belief in the existence of God) আর একটি নতুন ধর্ম ছাড়া আর কিছুই না। ডীপ ইনসাইড আওয়ার মাইন্ড, আমরা সবাই খুব ভালো করেই জানি একজন সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই আছেন, আমাদের এ জীবনের কোনো উদ্দেশ্য আছে, এবং উই আর বিং ওয়াচড। কিন্তু সেটুকু অবশ্যই যথেষ্ট নয়। তাই আমাদের প্রয়োজন এভিডেন্স এর। এভিডেন্স হতে হবে লজিকাল ও সাইন্টিফিক। দেন এগেইন, আমরা সেটাও বুঝি বিজ্ঞান এই ইউনিভার্সের রহস্য এক্সপ্লেইন করার জন্য যথেষ্ট নয়। কিছু ব্যাপারে নি:সন্দেহে আমরা ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছি যেমন ইয়া বড় কম্পিউটার থেকে এসেছে ট্যাবলেট..আমাদের পাঠানো ভয়েজার আমাদের সোলার সিস্টেম অতিক্রম করেছে, সাস্থ্য কৃষি তেও প্রভূত উন্নতি হয়েছে, কিন্তু কিছু বেসিক ব্যাপারে উন্নতি শুন্য। ক্রিয়েশন এর পর থেকে এখন পর্যন্ত যা ঘটছে – তা আমরা বিজ্ঞান দিয়ে বেশ এক্সপ্লেইন করতে পারছি, কিন্তু বিফোর এন্ড বিয়োন্ড ক্রিয়েশন বিজ্ঞান কিছুতেই এক্সপ্লেইন করতে পারছেনা….বিগ ব্যাং পুরোটাই এক্সপ্লেইনড হয়ে গেছে কেবল শুরুটা ছাড়া, শুরু রেখে দেয়া হয়েছে ইশ্বর কণা নাম দিয়ে। হ্যা, আমরা মানুষরা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। আজ বাদে কাল যে বিজ্ঞান সব সমাধান করে ফেলবে, প্রাণ তৈরী করবে সে আশা করতেই পারি। তবে টু বি অনেস্ট, আমরা বেশ ভালই বুঝি যে সেটা হবার নয়। যাক, সৃষ্টিকর্তা মহাবিশ্ব প্রাণ নাহয় নাই বুঝলাম, অন্তত আমাদের উদ্দেশ্য টা বুঝার চেষ্টা ছেড়ে দিতে পারি না। তখন আমাদের সামনে আসে ইতিহাস। আসে বিবর্তনবাদ, কিন্তু সেটাও অনেক ঘোলাটে….আমাদের সামনে কোনো সিগ্নিফিক্যান্ট চেঞ্জ হচ্ছে না, বিজ্ঞানীরাই অস্বীকার করছে এই থিওরী। তখন আমাদের ভরসা ইতিহাসের ম্যানুস্কিপ্ট, দলিল, নিদর্শন গুলো। মূর্তি, স্থাপত্য দেখে যতটা সহজে বলে দেয়া যায়, এগুলা মানুষের সৃষ্টি, কিন্তু শেষ ৮০০০ বছরের কিছূ দলিল একটু হলেও ভাবনার উদ্রেক ঘটায়। আব্রাহামিক ধর্ম (Judaism, Christianity & Islam) গুলোর রেফারেন্স বারবার আসতে থাকে। তাওরাত – বাইবেল এর অনেক পুরনো নানান রেফারেন্স যেমন ওল্ড সী স্ক্রল, নাগা হাম্মাদি স্ক্রল, বুক অফ কেলস এসব বার বার অনেকটা একইরকম ইতিহাস এর কথা বলে। এরপর আসে কুরআন। বার্মিংহামে পাওয়া যায় পুরনো একটা কুরআনের মানুস্ক্রিপ্ট যা কার্বন ডেটিং করে বিজ্ঞানীরা আমাদেরকে একটা টাইমলাইন রেঞ্জ দেন যেটা আমরা মুসলিমরা আমাদের অন্যান্য রেফারেন্স গুলোর সাথে মিলিয়ে মোটামুটি শিওর হয়ে বলতে পারি খলিফা উসমানের সময় প্রথম সংকলিত কুরআনেরই কপি এটি। এবং আরো প্রশান্তির বিষয় যে কপিটি বর্তমান কুরআনের সাথে প্রায়ই অভিন্ন। এথেকে আমরা আরো জোড় গলায় বলতে পারি কুরআন বিকৃতি হয়নি তাওরাত বাইবেল এর মত। আমরা আমাদের কমন সেন্স ইউজ করলে এটুকু বুঝি যে ‘ডিভাইন’ বলতে একটা একটা ব্যাপার অবশ্যই আছে এবং এই কুরআন এবং ইসলামের ক্লেইমই সেই ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্ট্রং। আমাদের পয়েন্ট অফ ভিউ আলাদা হবেই। তাই অন্যর কথা না বলে আমার কথাই বলি। (বাংলা লেখতে কাহিল লাগতেছে) আমার কাছে ইসলাম ও কুরআন হল CLOSEST TO THE TRUTH. So, I will continue to follow Islam and keep searching for the truth. I tried not to be biased, yet I’m sure I was bias to my religion. You are of course better than me. Please continue your pursuit for the truth and don’t be biased. May our creator feed us the answers. :bye:
কেন অন্যের ধর্মে আপনি টোকা দিতে যাবেন,আপনি আপনার ধর্ম নিয়ে থাকুন, সে তার ধর্ম নিয়ে থাকুক। কেন নিজের খেয়ে অন্যের মোষের মাঁচি তারান। কোন ধর্মেই ঊল্লেখ নাই যে,আপনি অন্য ধর্মের লোকদের অভজ্ঞা করুন।
আবেগ ও যুক্তির মিশ্রণে লেখাটি ভালো লেগেছে। যেমনঃ প্রতিটি ধর্মের স্পষ্ট ও কঠোর বিরোধিতা ছাড়া কেউ অসামপ্রদায়িক হতে পারে না। আবেগ তাড়িত কথা। তবে প্রচুর এবং প্রচুর যুক্তি ছিল লেখাটিতে। যাহোক, টাইপিং এ বেশ ভূল রয়েছে ও বানানে সচেতন থাকার জন্য অনুরোধ রইল। লেখা অব্যাহত থাকুক।
আপনার লেখা পড়ে আমার ভাল লাগল।
অভিদা যদি সতর্ক হতেন তাহলে তাকে হারাতাম না। রাজীব খুন হবার পর আমাদের সবাইকেই সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল সব সময়ের জন্য। এখনো সবাইকে বলছি, সতর্ক হোন, পরিচয় গোপন রাখুন নিজের কাছেও। তারপর লিখে যান অবিরাম।
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। মুক্তমনায় স্বাগতম। মুক্তমনায় নিয়মিত লিখুন প্লিজ।
শাণিত যুক্তি আর মুক্তবুদ্ধির আলোকে একটি অসামান্য লেখা ! এমন একটি অসাধারণ লেখার জন্য লেখককে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ! লেখাটির বহুল প্রচার কামনা করি !
আমি এই ব্লগে নতুন। এখানে এসে খুব অবাক হয়েছি। যে কথাগুলো প্রাণের ভয়ে মনে চেপে রেখেছি, এখানে দেখছি কিছু সাহসী মানুষ সেগুলোই বলে চলেছেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। আমি স্যার আকাশ মালিকের “যে সত্য বলা হয়নি” বইটা ডাউনলোড দিতে পারছি না। আমাকে কি কেউ সাহায্য করবেন?
কালের বিবর্তনে অন্যান্য ধর্মগুলোর অনেক কুসংস্কার তাদের ধর্ম বিশারদ কর্তৃক ঝেড়ে ফেলা সম্ভবপর হলেও ইসলাম এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। সোজাসাপটা বলতে গেলে—বোধহয় ইসলামই একমাত্র স্পর্শকাতর ধর্ম।