ছেলেরা সাধারণত নিজের চেয়ে কম বয়সী মেয়েদের প্রতি দুর্বল হয়। আর মেয়েরা দুর্বল হয় তাদের চেয়ে বেশি বয়েসী ছেলেদের প্রতি। এর ব্যতিক্রমও হয় কিন্তু।
আমি বেশ কয়েক বছর ধরে কয়েকটি জুটিকে চিনি যারা এর ব্যত্যয় ঘটিয়েছে এবং খুব প্রেমপূর্ণ জীবনযাপন করছে দীর্ঘদিন ধরে। আমার বন্ধু নিনা ও ল্যারী এমনই একটি জুটি।
ল্যারী একজন মিউজিসিয়ান। তখন তার ২২ বছর বয়েস। জন্ম ও বেড়ে ওঠা ব্রাজিলের এক দরিদ্র পরিবারে। একবার জার্মানিতে এক মিউজিক ট্যুরে যায় ল্যারী। সেখানে সে একটা কনসার্টে নিনাকে নৃত্যরত অবস্থায় দেখে। প্রথম দেখাতেই সে প্রেমে পড়ে যায় নিনার। নিনার বয়েস তখন ২৯ বছর। সুগভীর প্রেম। নিনার দিকে সে তন্ময় হয়ে অপলক তাকিয়ে থাকে। নিনার নাচ নয় সে নিনাকেই দেখে। নাচ শেষে নিনা স্টেজ ছেড়ে চলে যায়। ল্যারী পাগলপ্রায় হয়ে নিনাকে চারদিকে খুঁজতে থাকে। যে মেয়েটি এতক্ষণ স্টেজ কাঁপিয়ে নাচলো, স্টেজের চেয়ে বেশি কাঁপালো তার হৃদয় – কে এই মেয়ে? চপলা হরিণীর মত কোথায় হারিয়ে গেল পলক ফেলার আগেই? অবশেষে ল্যারী খুঁজে নিনাকে পায়, নিনা তার বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। ল্যারী সেখানে গিয়ে নিনার দিকে উন্মাদ-দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দুর্বোধ্য ভাষায় কী সব যেন বলতে থাকে। নিনা ল্যারীর আচরণ দেখে হতভম্ব হয়ে যায়। কথাবার্তা হাবভাব কিছুই বুঝতে পারে না। নিনা ইংরেজি ও জার্মান ভাষায় তাকে জিজ্ঞেস করে, তুমি কী বলছ? তোমার কী চাই? উত্তরে ল্যারী আরো এলোপাথাড়ি বলতে থাকে তার কথা। কেউ কারু কথা কিছুই বোঝে না। ল্যারী যেন ঘোরের মধ্যে কথা বলে যাচ্ছে অনর্গল। পর্তুগীজ ভাষায় কথা বলে সে। পর্তুগীজই তার একমাত্র ভাষা। এ ছাড়া আর কোনো ভাষায় সে কথাও বলতে পারে না, বোঝে না। ইতোমধ্যে ল্যারীর ট্যুর ম্যানেজার তাকে খুঁজতে খুঁজতে সেখানে এসে হাজির হলো। সে পর্তুগীজ ও জার্মান জানে। সে নিনা ও ল্যারীর দোভাষী হয়ে একজনকে আরেকজনের কথা অনুবাদ করে দিতে লাগলো। ল্যারী বলছে, নিনা, আমি তোমার প্রেমে পড়ে গেছি। আমি তোমাকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে চাই। তোমাকে চাইই চাই। নিনা বলছে, কী বলছ তুমি? আমরা তো পরস্পরকে চিনিই না। এইরকম ক্ষণিকের দেখা ও পরিচয়ে সারা জীবনের এতবড় সিদ্ধান্ত নেওয়া কি ঠিক? ল্যারী বলে, তোমাকে ছাড়া আমার জীবন বৃথা হয়ে যাবে। কী করবে এই পাগলকে নিয়ে নিনা!
কথা বলতে বলতে রাত প্রায় ফুরিয়ে এলো। নিনা এবার ঘরে ফিরতে চায়। ক্লান্তি ও ঘুমে তার চোখ ঢুলুঢুলু। সে পার্কিংলটে পার্ক করা তার গাড়ির দিকে পা বাড়ায়। ল্যারীও তার সাথে সাথে উন্মাদের মত ছুটে যায় গাড়ি পর্যন্ত। নিনা তাকে বলে, আমি তোমার সাথে পরে যোগাযোগ করবো। এখন আমায় বাসায় যেতে দাও। নিনা গাড়ির দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে বসে। ল্যারীও এক লাফে নিনার গাড়ির ভেতরে গিয়ে বসে যায়। নিনা বলে, আরে কী আশ্চর্য! তুমি গাড়িতে এসে বসলে কেন? আমি তো বাসা যাচ্ছি। ল্যারী বলল, আমিও তোমার সঙ্গে যাবো। নিনা বলে তা কিকরে সম্ভব। ল্যারী বলে, তাহলে তুমি আমার জন্য পুলিশ কল দাও। যতক্ষণ পুলিশ এসে আমাকে গাড়ি থেকে বের করে না দেয় ততক্ষণ আমি গাড়ি থেকে বের হবো না। এভাবে কাটল অনেকক্ষণ। নিনা বুঝলো, ল্যারী নাছোড় পাগল। অগত্যা তাকে নিয়েই নিনা গাড়িতে স্টার্ট দিলো। নিনা তখন তার মায়ের সাথে একই বাসায় থাকে। ওর মা ঘুমাচ্ছিল। নিনাকে দরজা খুলে দিয়ে ঘুমাতে চলে গেল আবার। দরজা খোলার সময় ল্যারী লুকিয়ে ছিল একপাশে। নিনার পেছনে পেছনে বেড়ালের মত নিঃশব্দ পায়ে ল্যারী বেডরুমে গিয়ে ঢুকলো। ওর রুমের মধ্যে একটা হামাক ছিল। আরেকটা রেড। ল্যারীকে বেডে ঘুমাতে দিয়ে নিনা হামাকে ঘুমালো। প্রথম কয়েকদিন ওদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। শুধু হয়েছিল চুম্বন। নিনা ল্যারীকে বলেছিল, তোমার প্রতি যদি আমার প্রেম আসে তাহলেই আমরা মিলিত হবো নতুবা নয়।
নিনারও আস্তে আস্তে প্রেম এসে গেল ল্যারীর জন্য। ওরা একদিন বাইরে ঘুরতে গেল। কারু হাতেই বেশি টাকা ছিল না সেদিন। ওরা দোকান থেকে সস্তার দুটি আংটি কিনে পরস্পরকে পরিয়ে দিলো। ল্যারী যখন হোটেলে ফিরে আসে নিনাকে কল দেয় তার বাসায়। তখন মোবাইল নেই কারু কাছে। ওপাশ থেকে ল্যারী পর্তুগীজ ভাষায় কী বলে যায় নিনা তার কিছুই বোঝে না। এদিক থেকে নিনা একবার জার্মান একবার ইংরেজি ভাষায় কী বলে তার কিছুই বোঝে না ল্যারী। তবুও দুজনেই কথা বলে। কথা বলে শুধু দুজনে দুজনার গলার আওয়াজ শোনার জন্য। দুজনে দুজনার গলার শব্দ শুনেই মোহিত বিমোহিত হয়ে থাকে। অবোধ্য ভাষায় প্রেমের সংলাপেও প্রেমের সাগরে ভাসতে থাকে, ডুবতে থাকে। কখনো কখনো ল্যারী নিনাকে কল করে পায় না। নিনা বাসায় নেই। সে জানে ওই সময়ে নিনা বাসায় থাকে না। তবুও কল দেয় ভয়েস মেসেজে নিনার রেকর্ডেড গলা শোনার জন্য। তা-ই শুনেই অপার আনন্দ পায়। দেখা হলে তবু হাবভাব, কিছুটা সাংকেতিক ভাষায় ও চোখমুখের ভাষায় দুজন দুজনের কথা বুঝে নেয়। ফোনে কেউ কাউকে দেখতে পায় না, কথা বুঝতে পারে না। শুধু গলা শুনতে পায়। তবুও কী যে ভালো লাগে, কী যে মধুর লাগে দূর হতে তারের মধ্য দিয়ে ভেসে আসা প্রিয়তমের গলার আওয়াজ!
কয়েকদিন পর ল্যারী ফিরে গেল ব্রাজিলে। নিনা পর্তুগীজ ভাষা শিখতে শুরু করলো। দুনিয়াদারি একপাশে ফেলে দিনরাত পর্তুগীজ শিখতে লাগলো। শিখে গেলো অনেকটা। হয়ত প্রয়োজনেই শিখে গেছে অনেক তাড়াতাড়ি। এখন তাদের ফোনে কথা হলে নিনা ভাঙা ভাঙা পর্তুগীজ বলে, বুঝতে পাতে ল্যারীর কথা। একমাস পরে নিনা ব্রাজিলে গেলো। একমাস ওরা একসাথে কাটাল। নিনা সিদ্ধান্ত নিলো, জীবনসঙ্গী করতে হলে ল্যারীকেই করবে। ল্যারী নিনাকে দেখা মাত্রই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। একমাস পর নিনা জার্মানি ফিরে এলো। তার অনেক শখের গাড়িটা বিক্রি করে দিলো। তার তল্পিতল্পা গোছগাছ করে জার্মানি থেকে ব্রাজিল চলে এলো তার প্রেমিকের সঙ্গে বাস করার জন্য। কিছুদিন পরে ওরা বিয়ে করলো। একবছর পরে জন্মালো ওদের প্রথম সন্তান।
ওদের প্রথম সন্তান জন্মানোর পর নিনার মা তার নাতিকে দেখার জন্য ব্রাজিলে গেলো প্রথমবারের মতো। দেখলো নাতিকে এবং দেখলো, তার যে মেয়ে বড় হয়েছে উন্নত দেশে আধুনিকতা ও সমস্ত সুযোগ সুবিধার মধ্যে সে মেয়ে ওসব কিছু পেছনে ফেলে দিয়ে তার ভালোবাসার মানুষের সাথে একটি দরিদ্র দেশে জরাজীর্ণভাবে বাস করছে। নাচ-অন্তপ্রাণ মেয়েটি নাচ প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। গর্ভাবস্থায় নাচতে পারেনি। সন্তান জন্মানোর পরে সন্তানকে সময় দিচ্ছে পুরোপুরি। যে মেয়ে পৃথিবীকে পায়ের তলায় দিয়ে নেচে বেড়িয়েছে পৃথিবীব্যাপী, নাচিয়েছে লক্ষ মানুষের মন সে মেয়ে তার সন্তান বুকে নিয়ে জীর্ণ ঘরে বসে আছে। যে মেয়ে বড় বড় ডিজাইনারের তৈরি দামি দামি কাপড়, জুতা, ব্যাগ, গয়না ব্যবহার করেছে তার আর ওসবে তেমন আসক্তি নেই। কিন্তু তার কন্যাটির মুখে অনাবিল প্রশান্তি। মা জিজ্ঞেস করে, এখানে চারপাশে দৈন্য দেখতে পাচ্ছি। তুই ভালো আছিস তো, বুড়ি? নিনা হেসে জবাব দেয়, মা, যতক্ষণ আমার প্রেমিক ভালবেসে আমার সঙ্গে আছে আমি যেখানেই থাকি যেভাবেই থাকি ভালো থাকবো, আনন্দে থাকবো।
এরপর অনেকগুলি বছর কেটে গেছে। ওদের আরেকটি সন্তান হয়েছে। পেশাগত কারণে নানান দেশে নানান ভাবে বাস করেছে ওরা। সেই রকম ভালোবাসা আজো অটুট আছে ওদের মধ্যে। ল্যারী এখন খুব ভালো ইংরেজি জানে, জার্মানও জানে ভাঙা ভাঙা। নিনা তো এখন পর্তুগীজে ল্যারীর পর্যন্ত ভুল ধরিয়ে দেয়। পরস্পরের মৌখিক ভাষা বুঝতে এখন ওদের সমস্যা নেই। মনের ভাষা আগের মতই আছে।
মাত্র ১২ বছর বয়েসে ল্যারী স্কুল ছেড়ে দেয়। স্কুলের পড়াশোনা তার ভালো লাগেনি কখনো। এর পর সে বিভিন্ন ব্যান্ড দলে যোগ দেয়। অনেক রকমের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শেখে নিজে নিজে। জীবনে কোনোদিন মিউজিক স্কুলে যায়নি। এখন সে গান লিখে, গানে সুর দেয়, গান গায়, বাদ্যযন্ত্র বাজায় কয়েক রকমের। বেশ ভালো ছবি তোলে। কিন্তু কিছুতেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী নেই তার। ডিগ্রী নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই নিনার। নিনা বলে, ওর সুন্দর একটা মন আছে, আমাকে পাগলের মত ভালবাসে। এর চেয়ে বেশি কিছুর আমার দরকার নেই। ওরা কেউ কাউকে নাম ধরে ডাকে না। পরস্পরকে “ আমো” ডাকে সব সময়। আমি জিজ্ঞেস করি, আমো মানে কি? নিনা বলে, পর্তুগীজ ভাষায় আমো মানে হচ্ছে প্রিয়তম।
“প্রেম মানুষের জীবনে একবারই আসে । কাজেই তা এগিয়ে নিয়ে যেতে উভয়েরই কিছু না কিছু ছার দিতেই হয় ।আর যদি স্যাক্রিফাইস করতে না পারেন তা হলে প্রেম আপনার জন্য না। “মেবি এইটাই মুল বক্তব্য ??
অদ্ভুত সুন্দর ভালোলাগায় ভরে গেল মনটা; এটি গল্প না কি সত্যি এই ধাঁ ধাঁ তৈরি হচ্ছে মনে; আরেকবার মন বলছে, আহা! এমন ভালবাসা মানুষ কী একজীবন তপস্যা করেও পায়??? অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখককে।
এককথায় অসাধারণ/
ধন্যবাদ। আপনার লেখাও চাই। তাড়াতাড়ি ছাড়েন।
নীলাঞ্জনা নীলাঞ্জনাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে যে ! চমৎকার লেখা।
অনেক ধন্যবাদ কাজীদা! আপনার লেখা কই?
গল্প হিসেবে ভাল। ক্যারিঅন মেকিং গল্প…
ধন্যবাদ
মাইর একটাও মাটিতে পড়বে না। :yahoo:
আচ্ছা কোন মেয়ে কি এমন করে কোন ছেলেকে ভালোবেসেছিল , কোন কালে?
মাইর মাটিতে বা অন্য কোথাও পড়েনি। ওদের সংস্কৃতিতে এটা কোনো অপরাধ না। বরং ছেলেমেয়েরা টিনএজার হলে বাবা-মা জিজ্ঞেস করে কাউকে ভালো লাগে কিনা। বয়স আরেকটু বাড়ার পরেও যদি সন্তানরা প্রেমে না পড়ে বাবা-মা তাদের নিয়ে চিন্তিত হয়। এমন কি ডাক্তারের কাছে পর্যন্ত নিয়ে যায়। ছেলেমেয়ের শরীর বা মনে কোনো সমস্যা ছে কিনা তা পরীক্ষা করাতে।
এমন ভালো সব কালেই বাসে মানুষ।
এটা কি গল্প না সত্যি ঘটনা? খুব ভালো লাগলো পড়ে।
সত্যি ঘটনা। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
পশ্চিমা নারীদের অর্থনৈতিক মুক্তি , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিকাঠামো তাদের হৃদয় থেকে এই ধরনের সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। কিন্ত আমাদের দেশের নারীরা এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে। এদেশের অনেক নারীর কাছে এখনো পরম আকাংখিত পুরুষ বলতে সম্পদশালী ক্ষমতাবান কোন পুরুষকেই বোঝায় কারণ এই ধরনের পুরুষদের ছায়ায় তার অন্তত সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তাটুকু পায়। এই নিশ্চয়তার আশায় তারা অনেক সময় দীর্ঘদিনের প্রেমিককেও ছেড়ে দিতে দ্বিধা করে না। হৃদয়ের কথা না শুনে অতৃপ্ত প্রেমের বোঝা বহন করে এরা চিরকাল…
আমাদের দেশের নারীরাও আস্তে আস্তে অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হচ্ছে। যেকোনো স্বাধীনতার জন্য এটাই সবার চেয়ে জরুরি। আর্থিকভাবে স্বাধীন হলে স্রোতের বিপরীতে দাঁড়ানো সম্ভব।
চমৎকার মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প
ধন্যবাদ
ভালো লাগলো
ধন্যবাদ
:good:
আপনাকে :good:
গল্পটা অসাধারন হয়েছে, আমিও বিয়ে করলে কার কি ধর্ম, ভার্জীন আছে কিনা এসব কখনোই চেক করবো না। শুধু ভালবাসার মত একটা মন চাই।
ঠিক তাই।
সম্পূর্ন আলাদা ভাষাভাষী দুজন মানুষের অসাধারন এক ভালবাসার কাছে আসার গল্প।বেশ ভাল লাগ্লো।
প্রেমটাই প্রধান। জাতি ভাষা বর্ণ ধর্ম – ওসব কিছু না।
অধিকাংশ মানুষের জীবনে অপূর্ণতা থাকে। সব চাওয়া তো কারুর পূরণ হয় না। প্রেমের ক্ষেত্রেও তাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
অসাধারণ লেখা। দুক্ষজনক হলেও সত্যি যে সবার ক্ষেত্রে এমনটা হয়না।একজন হয়ত সারাজীবন একা(কাংখিত মানুষকে না পেয়ে) থেকে যায়।
প্রতিবেদন টির নাম হতেই পারত ‘ রোমাঞ্চের খোঁজে’। পশ্চিমের মেয়েরা এখানেই স্বাধীন। তারা নিজের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পারে। অর্থনৈতিক এবং সংস্কৃতিক কাঠামোও তাদের সাহায্য করেছে। যদি কোনো কারণে ছন্দ পতন হয় তা হলেও তারা অসহায় হয়ে পড়ে না। এখানেই তাদের সুবিধা হওয়ায় তারা এই সব সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং জীবনে প্রেমের রোমাঞ্চ পরিপূর্ণ ভাবে উপভোগ করতে পারে। আমাদের মত দেশে মেয়েদের কাছেই সুধু নয় ছেলেদের কাছেও কাজটা কঠিন।প্রেমের বদলে অন্য ফ্যাক্টর বেশি কাজ করে, ফলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রেম হীন দাম্পত্য জীবন কাটাতে বাধ্য হয়। যে সব মেয়েরা অর্থনৈতিক স্বনির্ভর তারাই বা এগিয়ে আসছে কোথায় ? রোমাঞ্চ এবং প্রেমের চেয়ে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং প্রাচুর্যই তাদের কাছেও প্রেমের থেকে বেশি কাম্য। এও এক সামাজিক পরাধীনতা।
শত বছর আগে পশ্চিমও এরকম ছিল না। পশ্চিমের মেয়েরাও এমন স্বাধীন ছিল না। রাষ্ট্র, সমা্জ সংস্কৃতি এসব তৈরি করে মানুষ। সমাজের অন্যায় নিয়ম নীতিগুলিও মানুষেরই তৈরি। এবং মানুষই একসময় বুঝতে পেরে আরো মানবিক নীতির অনুসরণ করে পুরাতন অন্যায় নীতি বর্জন ক’রে। এজন্য কাজ করতে হয়। এগিয়ে আসতে হয় সচেতনদের। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা আজ থেকে ৫০ বছর আগে এইরকম ছিল না। আরো ৫০ বছর পরে হবে অন্য রকম। মানুষই তার পরিবর্তন করবে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
গল্পটি সুন্দর ও সাবলীল। খুব ভালো লাগলো। প্রেম ও ভালবাসা বয়স, ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি, দেশ ও অর্থের বাধা মানেনা। লেখকে ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকেও।