একটি জাতির চিন্তা চেতনা মৌলিক ও প্রভাববর্জিত রূপ ধারণ করে সেই জাতির অর্থনৈতিক কাঠামোর দৃঢ়তার উপর। এটা অবশ্যই অনস্বীকার্য। কিন্তু এই অর্থনৈতিক কাঠামোর সঠিক বন্টনের আড়ালে যে জিনিসটা পার পেয়ে যায় তা হচ্ছে রাজনৈতিক ক্ষমতার সুষম বন্টন। জি এ হবসন তাঁর “আধুনিক পুঁজিবাদের বিবর্তন” এ যে ব্যাপারটা গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছিলেন সেটা হচ্ছে, ধনিকতন্ত্রের মনস্তত্ব। অধিক থেকে অধিকতর সম্পদ করায়ত্ত করার পেছনে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে অধিকতর অর্থনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রন। একই ব্যাপারটি রাজনৈতিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রেও খাটে। রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়দের যে পরিমাণ অর্থলোভ থাকে তার চেয়ে ক্ষমতালোভের পরিমাণটাই বেশি। আর সংঘবদ্ধভাবে যখন রাজনীতিকরা এই ক্ষমতালিপ্সাকে তরান্বিত করে তখন ঘটে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ। প্রশাসনের এই কেন্দ্রীকরণে রাষ্ট্রের চিন্তাধারা সমূহ সংখ্যাগুরুদের আশ্রিত হয়ে যায়। এবং এই ঘটনাটি এত সুন্দরভাবে চলে যে, সেটা একসময় সমস্ত জনগণের স্বার্থকে অস্বীকার করে ব্যক্তিবাদী প্রতিষ্ঠান হয়ে পড়ে। আর এখানেই মার খেয়ে যায় বহু সাধের গণতন্ত্র।
গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে একটি অপরিহার্য বিষয় হচ্ছে, পৃথক জাতিসত্তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা ও চিন্তা চেতনার পার্থক্য ও বিরোধ মীমাংসা করার দায়টা তাদের নিজেদের আয়ত্তে ছেড়ে দেয়া। কারণ, গণতান্ত্রিক চেতনা চালিত হয় একটি সাধারণ নীতির অনুসারে। কিন্তু সেই সাধারণ নীতিটা সকল জাতিসত্তার প্রয়োজন সাধনে যথেষ্ট হয়না। এবং এভাবে একটি সাধারণ স্কেল স্থাপন করতে গিয়ে রাষ্ট্রে বিভিন্ন চিন্তাধারার জাতিসত্তার সাথে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিরোধ দেখা যায়। এই বিরোধের পরিণতি হয় সরকার বিরোধীতা এবং অসন্তোষে। সরকারকে বাধ্য হতে হয় আপাত স্বেচ্ছাচারিতার দিকে। আধুনিক রাষ্ট্রে আমলাদের ক্ষমতা এক বিরাট ও ক্রমবর্ধমান বিপদ। আমলারা পরোক্ষভাবে নামেমাত্র জনসাধারণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। প্রত্যক্ষ ভাবে গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিরা আমলাদের নিয়ন্ত্রন করলেও আমলাদের চেতনা সাধারণ জনমনের পালস্ ধরতে ব্যর্থ হয়। আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত অধিকাংশ সময়ই গণতান্ত্রিক সরকারের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে যেটা আমাদের দেশে অহরহ পরিলক্ষিত হয়। প্রথমেই বলা যায়, কোনো বড় প্রতিষ্ঠান কিংবা বিরাট রাষ্ট্রে আমলারা জনসাধারণ হতে অনেক দূরত্বে অবস্থান করেন। এবং যাদের উপর তারা তাদের বুদ্ধিপ্রসূত আইন ও চিন্তা আরোপ করেন সেই জনসমষ্টি সম্পর্কে তারা মোটেই অবহিত থাকেন না। এ ধরনের আমলারা যদি বুদ্ধিমান হন, তাহলেই বড় বিপদে পড়ে যায় সামাজিক গোষ্ঠী গুলো। কারণ, উক্ত আমলা সবার জন্য এমন একটি কঠোর নিয়ম প্রয়োগ করে দেন যার ফলে সমাজের সকলের সন্তুষ্টি অর্জন করতে তা ব্যর্থ হয়। প্রকৃতিগতভাবেই স্বার্থবাদী মানুষ এই ব্যাপারটা চিন্তা করে দেখেনা। তারা কেবল অনুভব করে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং সমস্ত ক্ষোভ গিয়ে পড়ে কয়েকবছর আগে তাদেরই নির্বাচিত প্রতিনিধির উপর।
.
গণতন্ত্র আমাদের দেশে এই একটা কারণেই মূলত অযোগ্যতম হয়ে পড়ছে দিনের পর দিন। সেটা হচ্ছে রাষ্ট্রে অন্তর্ভূক্ত সমস্ত বিষয়েই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ। সরকার যখন এই নিরেট ক্ষমতার চর্চা করে তখন তা অধিকতর ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা জাগায়। এটাই সবচেয়ে ভয়ানক। গণতন্ত্রের অপরিহার্য একটি তত্ত্ব হচ্ছে সকলের মাঝে ক্ষমতার বিস্তৃতি- যাতে একজনের হাতে বিরাট ক্ষমতার অধিকার থাকার ফলে সৃষ্ট অন্যায়ের পথ বন্ধ হয়। বিরাট বিরাট ক্ষমতাগুলো যদি এমন লোকদের হাতে দেয়া হয়, যাদের উপর সংসদের পরোক্ষ নিয়ন্ত্রন ছাড়া জনসাধারণের আর কোনো নিয়ন্ত্রন থাকেনা, সেসব ব্যবস্থা দ্বারা গণতন্ত্রের প্রকৃত উদ্দেশ্য সফল হয়না। ক্ষমতালিপ্সা অধিকাংশ রাজনীতিবিদেরই মূল চালিকা শক্তি। অনেকেই বলতে পারেন অর্থই ক্ষমতার উৎস। অবশ্যই। কিন্তু এই কথাটা কেবলমাত্র সাধারণ কোনো ধনী শিল্পপতি কিংবা পুঁজিবাদীর উপরে খাটে। রাজনীতির সক্রিয় নেতাদের জন্য ব্যাপারটা উল্টো। তাদের জন্য ক্ষমতাই সকল অর্থের উৎস। এবং মানুষের চিরায়ত অর্থলিপ্সার সাথে যখনই এই ক্ষমতালিপ্সাটা কাজ করে তখনই সেটা হয়ে যায় “দানব”। এই দানবীয় আগ্রাসন সমস্ত দেশের গণতন্ত্রের চেতনাকে গৌণ করে ফেলে এবং ব্যক্তিস্বার্থবাদীতার আড়ালে ক্ষমতার সুসম বন্টনের বিপরীতে ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট গন্ডির মাঝে কেন্দ্রীভূত করে ফেলে।
ক্ষমতা বন্টনের সমস্যা সম্পদ বন্টনের সমস্যার চেয়ে বস্তুত অনেক কষ্টসাধ্য কাজ। প্রতিনিধিত্বমূলক শাসন ব্যবস্থায় সকল রাজনীতিবিদেরই অন্তিম লক্ষ্য থাকে চূড়ান্ত ক্ষমতা। কিন্তু প্রশাসনকে গণতান্ত্রিক করার প্রতি কারো কোনো তাড়া থাকেনা। এজন্য আমাদের নির্বাচিত রাজনৈতিক প্রতিনিধি থাকলেও, প্রশাসনিক প্রতিনিধি এবং আমলাদের নির্বাচন করার ক্ষমতা আমাদের নেই। সরকার মানুষকে বোকা বানায়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে তারা সরকার গঠন করে আর মানুষকে বুঝায় যে তারা মানুষের প্রতিনিধি। প্রতিনিধি হিসেবেই তারা প্রশাসনের জন্য সচিব, আমলাদের ঠিক করে দেয়। এরাই পরিচালনা করে রাষ্ট্রের শক্তিশালী প্রশাসন ব্যবস্থা। বস্তুত, গণতন্ত্র নামক ধূলোয় মানুষ অন্ধ হয়ে পরিপূর্ণ আস্থা রাখে প্রতিনিধির উপর। এবং এরপরই ধরা খায়। রাজনৈতিক প্রতিনিধি এককভাবে কিভাবে আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে? একটি সুনির্দিষ্ট ভৌগলিক অবস্থানের উপর ভিত্তি করে সেই অঞ্চলের কালচার গড়ে উঠে, সেই কালচার সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান সমগ্র সরকারের থাকার কথা নয়, তারাই নির্বাচন করে দেয়, আঞ্চলিক প্রশাসনের স্নায়ুতন্ত্র। এটিই আমাদের চলমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সংকীর্ণতা।
সমাজের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনেক অধিকারবোধ ও চিন্তা চেতনা থাকে যাকে সংখ্যালঘুর প্রাপ্যতা বলে চিহ্নিত করা যায়। এইসব অধিকার প্রবণতা সম্পর্কে সংখ্যাগুরুদের কোনো ধারণা থাকা সম্ভবই নয়। একটি পরিবারের দৈনন্দিন কী কী প্রয়োজন সেটা সমগ্র সমাজের জানার কথা নয় নিশ্চয়। কিন্তু সামাজিক আইন গুলো তৈরী করা হয় কালেক্টিভ ভাবে। এই ছোটো ছোটো প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করে। ঠিক তেমনি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেও সংখ্যাগুরুদের অধিকার সচেতনতায় চাপা পড়ে যায় সংখ্যালঘুরা। সংখ্যাগুরুদের স্বেচ্ছাচারিতা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়াবহ বিপদ। সংখ্যাগুরু যা নির্ধারণ করবে সেটাই যে ঠিক তা কিন্তু নয়। প্রতিটি নতুন চিন্তার বিকাশে সংখ্যাগুরুরা প্রায়ই ভুল সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, তারা সাধারণ প্রচলিত বিশ্বাস ও রীতির জালে জড়িত থাকেন। তাই কোনো নতুন চিন্তা সামগ্রিকভাবে তাদেরকে তাৎক্ষণিক ভাবাতে পারেনা। আর তাদের ভুল গুলো চাপিয়ে দেয়া হয় সমগ্র জাতির উপর। সংখ্যাগুরুদের এই কর্মকান্ড কখনোই একটি আধুনিক রাষ্ট্রে গ্রহণযোগ্য নয়।
ফরাসি সিন্ডিকালিস্টরাই সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয় সমাজতন্ত্রের পরিবর্তে শিল্প কারখানার আত্মনিয়ন্ত্রনাধিকারকে উৎকৃষ্টতর সমাধান রূপে মতামত দেন। তাদের মতে শিল্পকারখানা সমূহ রাষ্ট্রের মতই স্বাধীন হওয়া উচিত। আমি শিল্পের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কিন্তু ঠিক “রাষ্ট্রের মত” কথাটায় আমার আপত্তি আছে। যেসব জনসমষ্টি রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে চিহ্নিত, তাদের প্রত্যেকেরই অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকার থাকা উচিত। কিন্তু বৈদেশিক বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ যাতে শতভাগ না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। কারণ, দুইটি জনসমষ্টি যখন পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকে তাহলে সেখানে প্রকাশ্য কিংবা গোপন বলপ্রয়োগের বিপদ থেকে যায়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ শিল্প বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই স্বাধীনতাটা থাকা প্রয়োজন বলেই আমি মনে করি। যেমন, যারা সেই শিল্প কারখানায় শ্রম দেয় এবং যাদের জীবনাচারণের সাথে সেটা জড়িত, তারাই সেই কারখানার পণ্য উৎপাদন ও বন্টন ব্যবস্থা নিয়ে সর্বাধিক জ্ঞান রাখবে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে পণ্যের মূল্য নির্ধারণের কাজটাই কেবল সরকার করে দেয়া উচিত, কারণ সেক্ষেত্রে কেবল কারখানা নয়, সমস্ত দেশের স্বার্থ জড়িত থাকে।
রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগ কেবলমাত্র জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধি হিসেবেই প্রয়োগ করা উচিত। প্রতিনিধি যখনই পরোক্ষ হয়ে উঠে তখনই সেখানে জনমনে সন্দেহ প্রবণতা সৃষ্টি হয়। এবং গণতন্ত্রের সমস্ত উদ্দেশ্য ব্যহত হয়। গণতন্ত্র তখন হয়ে উঠে শোষণের এক স্বীকৃত মাধ্যম। তবে, হতাশার ব্যাপার হচ্ছে, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং জনবিচ্ছিন্নতা থেকে সৃষ্ট জনরোষের কারণে জনগণ কেবলই সরকার বিরোধী হয়ে উঠে। এবং পরের নির্বাচনে মত পাল্টে অন্য সীলে ব্যালট ভরায় এবং আবারো সেই একই ধোঁকা খায়। কিন্তু, জনগণ কখনোই সমস্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কৃত্তিম দূর্বলতার ব্যাপারটা ভেবে দেখেনা। গণতন্ত্রে অন্ধভাবে আস্থা রাখতে গিয়ে তারা ভেবেও দেখেনা যে, তাদের ভুল ও বিষাক্ত গণতন্ত্র গেলানো হচ্ছে। এটাই হচ্ছে, আমাদের বর্তমান রাজনীতি চিন্তার আয়রনি। মানুষ এটা যত তাড়াতাড়ি বুঝতে শিখবে, ততই মঙ্গল।
“এ জগতে হায়, সে ই বেশি চায়, যার আছে ভুরি ভুরি/রাজার হস্ত করে কাঙ্গালের ধন চুরি”_বর্তমান সংসদের সদস্যদের মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ ব্যবসায়ী , যারা সবাই কোটি টাকার মালিক সেই এমপি, মন্ত্রীসহ সরকারি আমলা ও চাকুরীজিবিদের বেতন সরকার বৃদ্ধি করল। কিন্তু যারা সরকারি না বিভিন্ন মালিক গোষ্ঠী র মুনাফা র স্বার্থে কাজ করে রাষ্ট্রের চাকা সচল রাখে, সেই শ্রমজীবি মানুষ কি রাষ্ট্রের নাগরিক নয়? রাষ্ট্র বর্তমান পে স্কেলে যদি সর্বনিম্ন বেতন ৮২৫০ টাকা, সব মিলিয়ে প্রায় ১৬ হাজার টাকা দিবে, তাহলে সরকারের এটা ঘোষনা দেয়া উচিত সব সেক্টরের শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা দিতে হবে। দেশটা শুধু এমপি, মন্ত্রী, আমলাদের নয়, আর দেশের ৯০ ভাগ শ্রমজীবির কথা যে সরকার বিবেচনা করে না, সে সরকার দিয়ে রাষ্ট্রের জনগণের আমূল পরিবর্তন সম্ভব নয়।
অত্যন্ত মূল্যবান ও সময়োপযোগী লেখা।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আমলাতান্ত্রিক কাঠামো নিঃসন্দেহে একটা প্যারালাল ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। একথা উন্নত দুনিয়ার ক্ষেত্রে যতটা সত্যি আরো বেশি সত্যি উন্নয়নশীল দুনিয়ার ক্ষেত্রেও। প্রাচীণ ভারতীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে রোমান শাসনব্যবস্থায় এই প্রবনতা বিদ্যমান ছিল। গোটা মধ্যযুগে অভিযাততন্ত্রের ক্ষমতা কীভাবে শাসনব্যবস্থাকে নৈরাজ্যে পরিনত করেছিল তা ইতিহাসকে আজো শিহরিত করে।
তবে একথাও তো ঠিক, আমলাদের এই ক্ষমতায়নের পশ্চাতে আমাদের রাজনীতিবিদদের ভূমিকা কম নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জনপ্রতিনিধি হয়ে যারা আসেন, সরকার গঠন করেন তাদের অযোগ্যতা, অপদার্থতার সুযোগ নেয় আমলারা। ফলশ্রুতি হিসাবে নিজেরা সরকারের আড়ালে একটি শক্ত বর্ম বানিয়ে ফেলে যাকে ভেদ করা কোনো গণতান্র্রিক সরকারের পক্ষে সম্ভব হয় না। সরকার যদি দক্ষ হয় তবে এই ক্ষমতার বর্মকে অনেকটাই গুড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার আরেকটি উপায় হল সিভিল সোসাইটির ক্রমাগত চাপ ও তাদের সক্রিয় হস্তক্ষেপ। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে সিভিল সোসাইটি অনেকক্ষেত্রে এই ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়।
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির শাসন কাঠামোর আরেকটি দুর্বলতম দিক হল– এখানে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতার
বিকেন্দ্রীকরণ হয় না। বা হলেও স্থানীয় শাসনব্যবস্থায় যারা অংশ নেয় তারা নির্দিষ্ট দল কতৃক এমনভাবে পরিচালিত হয় যে গোটা ব্যবস্থাটা গোলমেলে হয়ে পড়ে। যার সুযোগ নেয় আমলাতন্ত্র। তাছাড়া তাদের অযোগ্যতাও প্রশ্নাতীত।