গত সপ্তাহে ফেসবুকে সমকামি ইস্যু নিয়ে বেশ তোলপাড় হল। যথারীতি একদল সব ধর্মে নিষিদ্ধ কিংবা ‘প্রকৃতি বিরুদ্ধ’ এই ব্যাপার কিছুতেই মানতে পারবেন না। একদল এসব বিরুদ্ধতার তেমন তোয়াক্কা করেন না। তৃতীয় আরেক দল (মূলত যাদের উদ্দেশ্যে এই ক্ষুদ্র নিবেদন)তাদের সমকামিতায় তেমন আপত্তি নেই, যদিও ব্যাক্তিগতভাবে মনে করে ব্যাপারটা অরুচিকর, নোংরা বা ‘প্রকৃতি বিরুদ্ধ’ – কাজেই তীব্র অস্বস্থি বোধ করেন। (এ লেখা সমকামিতা সম্পর্কে প্রচলিত সব অভিযোগের জবাব নয়, শুধু প্রকৃতি বিরুদ্ধতা নিয়ে কথা)। আশা করি বিজ্ঞানের ভাষায় বিকৃতি কি তা বুঝতে কিছুটা হলেও সহায়তনা করবে।
প্রকৃতি বিরুদ্ধ বলতে তারা ঠিক কি বোঝান জানি না, সম্ভবত যা দেখতে তারা অভ্যস্ত নন তাই প্রকৃতি বিরুদ্ধ বোঝেন। এই একই গ্রুপের লোকজন তৃতীয় লিংগ মানুষ সম্পর্কে কিন্তু ‘প্রকৃতি বিরুদ্ধ’ শব্দটা যোগ করেন না। যদিও একজন সমকামি মানুষকে বাহ্যিকভাবে দেখে সমকামি বোঝার চাইতে তৃতীয় লিংগের মানুষের ‘প্রকৃতি বিরুদ্ধতা’ চোখে পড়ার কথা অনেক বেশী। খুব সম্ভবত সমকামিতার ধারনা হজম করতে আরো বেশ কিছু সময় লাগবে। মাত্র কয়েক বছর আগে আমরাও ছাত্রজীবনে যুবুথুবু বা লেদু কিসিমের বন্ধুবান্ধবকে ‘ঐ হিজড়া’ বলে গালি দিয়েছি, এখন নেহায়েত কাঠ ছাগু ছাড়া অন্তত মুখে মুখে কোন ভদ্রসন্তান এমন গালি দেবে না। সত্য বলতে ‘সম’ গালির প্রচলনও এখন অনেক কমে এসেছে।
রুচি, অরুচি নোংরা এসবের ইউনিভার্সেল সংজ্ঞা নেই। আমাদের দেশে ছেলে বন্ধুরা ঘাড়ে হাত রেখে চলা অতি স্বাভাবিক, বরং সেটা না করলেই মনে করা যায় যে বন্ধুত্ব আসলে তেমন পাকা নয়। পশ্চীমা বিশ্বে একই ব্যাপার দেখা গেলে লোকে ঘৃনা করবে না, তবে ধরে নেবে আপনি সমকামি, হ্যা, সেখানেও সমকাম ঘৃনা করার মত লোক কম নেই। আমি আমেরিকায় যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আসি সে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে আমি আসার মাত্র কিছুদিন আগেই শুধুমাত্র সমকামি হবার কারনে ই-মেইলে টোপ দিয়ে নির্জন যায়গায় এনে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করে খুন করা হয়েছিল। আরব মূলুকে পুরুষ পুরুষ চুমো দেওয়া খুব সাধারন ব্যাপার, এর সাথে সমকামিতার সম্পর্ক নেই; স্থানীয় কালচার। আমাদের দেশে সেই নির্দোষ স্থানীয় কালচার দেখলে অনেকেই আঁতকে উঠবেন।
সভ্য জগতে এই কারনে রুচি অরুচি নিয়ে ত্যাঁনা প্যাঁচানো হয় না। অন্যের জন্য যতক্ষন না সমস্যা হয় ততক্ষন কার কাছে কি রুচিকর অরুচিকর তা ব্যাক্তিগত মতামত হিসেবেই সম্মান করা হয়। কাজেই কেউ সমকামি বা তৃতীয় লিংগের মানুষকে অরুচিকর মনে করলে তেমন কিছু বলার থাকে না। শুধু কেবলমাত্র সেই কারনে তাকে ঘৃনা করা, কিংবা আর দশজন মানুষের মত মানবাধিকার বঞ্চিত করাটা গ্রহন করা হয় না। সমকামি বলে আপনি কারো সাথে সামাজিক মেশামেশি করবেন না বললে কেউ আপত্তি করবে না, কিন্তু যদি বলেন আমি কোন সমকামিকে আমার অফিসে চাকরি দেব না বা কর্মক্ষেত্রে তার সাথে শুধু এই কারনে বিদ্বেষমূলক ব্যাবহার করবো তাহলে বিপদে পড়বেন। সোশাল আউটলুক চট করে বদল হয় না, সময় লাগে সেটা মানা যায়; কিন্তু তার সেই আউটলুকের কারনে বিদ্বেষমূলক আচরন মানা যায় না।
সমকামিতা নিয়ে আসলে এখানে তেমন কিছু বলতে চাইনি, কিন্তু অনেকের এ সম্পর্কিত কিছু ভ্রান্ত ধারনা (মূলত প্রথম প্যারার তৃতীয় গ্রুপ) ভঞ্জনে দুটো কথা বলতে হচ্ছে। অনেকেই মনে করেন যে লোকে রুচি বিকৃতি বা এ জাতীয় কারনেই খালি সমকামি হয়ে যায়, অর্থাৎ; সমকামিরা ইচ্ছে করলেই ষ্ট্রেইট হতে পারে কিন্তু বদমায়েশি করে তারা স্বগোত্রীয় সংগী বেছে নেয়। ফলাফল যা হবার তাই, এদের প্রতি ঢালাও ঘৃনা। এক সময় পশ্চীমেও এই ধারনার বশবর্তি হয়ে সমকামিদের বহু রকম অমানবিকভাবে পিটিয়ে, ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে ‘চিকিতসা’ করে ষ্ট্রেট বানানোর চেষ্টা করা হত, বলাই বাহুল্য তেমন ফল হয়নি।
আসলে সমকামিরা মূলতঃ ইচ্ছেকৃত নয়, প্রকৃতিগত কিংবা ইশ্বরদত্ত যেভাবেই বলা হোক সেভাবেই সেক্সুয়ালি ওরিয়েন্টেড। কার প্রতি কার যৌন তাড়না জাগবে তাতো চিকিতসা করে ঠিক করা যায় না। সমকামিরা ইচ্ছে করলেই ষ্ট্রেট হতে পারে না। বৈজ্ঞানিক কারনটি ঠিক কি তা অবশ্য এখনো নিখুতভাবে জানা যায়নি, খুব সম্ভবত জেনেটিক এবং পরিবেশগত অনেক কিছুর মিলিত ফল। দীর্ঘদিন জেনেটিক কারন সম্পর্কে জানা যাচ্ছিল না, যদিও অতি সম্প্রতি শুনেছি সমকামের জ্বীন সনাক্ত করা গেছে, যদিও বিস্তারিত জানি না। আমাদের মত সমাজে স্বাভাবিকভাবেই কেউ সমকামি হলে মুখ ফুটে সহজে বলতে পারে না, সমসংগী পাবারও তেমন ব্যাবস্থা নেই। ফলাফল হতে পারে অনেক সময় মারাত্মক, দূর্ভোগ বয়ে আনতে পারে আশেপাশের যারা নিজেদের সম্পূর্ন স্বাভাবিক করেন তাদের জন্যও।
পাত্রপাত্রীর নাম অবশ্যই বলবো না, মন্ট্রিয়ল শহরের ঘটনা। আমি নিজে সেই বাংগালী দম্পত্তিকে দেখেছি একাধিকবার। আমি ২০০০ সালে প্রথম কানাডা আসার সময় মন্ট্রিয়ল প্রবাসী সেই শিক্ষিত ভাল চাকরি করা ভদ্রলোকের সাথে দেশের এক বাংগালী মহিলার বিবাহ হয়। ধীরে ধীরে শোনা যেতে থাকে তাদের কি কি যেন গুরুতর সমস্যা হচ্ছে। বছর আটেক পর অবশেষে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, মূল কারন ভদ্রলোক আসলে সমকামি; কাউকে কোনদিন বলতে পারেননি। ফলাফল যা হবার তাই। আমাদের সমাজে ডিভোর্স খুব সহজ ব্যাপার নয়, দুই জন ছাড়াও পারিবারিকভাবে আরো অনেকের নানান মাত্রায় সমস্যা হতে পারে। চিন্তা করতে পারেন শুধুমাত্র একটি সামাজিক টাবুর কারনে কতগুলি লোকের জীবনে দূর্ভোগ নেমে আসলো? জোর করে কি কারো যৌন তাড়না জাগ্রত করা যায়? এসবে কার কি লাভ হয়? ভদ্রলোক এভাবে আরো বছর দশেক থাকলে সন্তান জন্ম দিয়ে ধরনীকে কৃতার্থ করতে পারতেন? তিনি তার মত সমশ্রেনীর সংগী জুটিয়ে কারো বিঘ্ন না ঘটিয়ে জীবন যাপন করাই কি ভাল হত না? নাকি তাকে পিটিয়ে সিধে করে ফেলা সম্ভব?
অবশ্য বলে রাখা ভাল যে পরিবেশগত কারনে ষ্ট্রেট বলে (মানে প্রকৃতিসিদ্ধ) যাদের মনে করা হয় তারাও সময়ে সময়ে সমকামি হতে পারে। যেমন বিশেষ কোন সময়ে বিপরীত যৌন সংগীর অভাবে। যে কারনে যুদ্ধের সময় সৈন্যদলের মাঝে এই প্রবনতা দেখা দিতে পারে। এটাকে ইন জেনারেল সমকামিতার সাথে মিলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।
যে কারনে লেখা শুরু করেছিলাম; প্রকৃতি বিরুদ্ধ বলতে যৌন বিষয়তেই প্রকৃতিতেই বহু কিছু আছে যা হয়ত আমরা জানি না। অস্বাভাবিকত্বের বিচারে সেসবের কাছে সমকাম তেমন কিছু না; এবং, এই ধরনের অস্বাভাবিক আচরন, প্রকৃতি বিরুদ্ধতা, বিকৃতি যাইই বলা হোক না কেন সেসব কিন্তু যে কোন ওরিয়েন্টেশনের মানুষের মাঝেই (সমকামী বা বিষমকামি) (পুরুষদের বেশী দেখা যায়) দেখা যেতে পারে। আপনার কাছে সমকামিরা যেভাবে যৌণতা উপভোগ করে তা অরুচিকর মনে হতে পারে। কিন্তু আপনি হয়ত জানেন না আপনার পাশের বাড়ির সুন্দরী বিবি বাচ্চাওয়ালা সুখী চেহারার ভদ্রলোক কিভাবে যৌনতা উপভোগ করেন। সকলের ক্ষেত্রে এমন না হলেও অনেকের ক্ষেত্রেই হতে পারে। এই তালিকায় হয়ত এমন কিছু জগতবিখ্যাত সেলিব্রিটিও আছেন।
শেকলাবদ্ধ কোন লোককে জাঁদরেল চেহারার কোন মহিলা বেত মারছে দেখলে মনে হবে না যে আহা রে; বেচারা লোকটাকে পিশাচিনীর মত মহিলা কি মারটাই না মারছে? আসলে ব্যাপারটা তেমন নাও হতে পারে। ছবির লোক গাঁটের পয়সা খরচা করেই সেই মহিলার কাছে গেছে শেকল বাঁধা অবস্থায় পশ্চাত দেশে বেতের বাড়ি খেতে! তার যৌন উত্তেজনা এভাবেই হয়। বিদেশে এই ধরনের প্রফেশনাল মহিলা আছে যাদের জীবিকাই এটা; ওনারা কিন্তু যৌনকর্মী নন। বেশীরভাগেরই শর্ত থাকে কোন রকম যৌনকর্ম চলবে না। আমাদের কাছে এই ধরনের ব্যাপার স্যাপার বিস্ময়কর এবং রুচিবিকৃতির হলেও মনোবিজ্ঞানের কাছে তেমন নয়।
মনোবিজ্ঞানে এই ধরনের স্পর্শ বা আপাতঃ চোখে যৌনাংগের সাথে সম্পর্কহীন যৌন উত্তেজনা জনিত যৌনাচরনের প্রবনতাকে প্যারাফিলিয়া (Paraphillia) বলা হয়। প্যারাফিলিয়া যে কত বিচিত্র রকমের হতে পারে তা বলে শেষ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে যে আমরা যাইই মনে করি না কেন; সব ধরনের প্যারাফিলিয়াই মনোবিজ্ঞানের চোখে মানসিক রোগ বা রুচিবিকৃতি জাতীয় কিছু নয়। মনোবিজ্ঞানীরা যেসব প্যারাফিলিয়াকে মানসিক রোগ মনে করেন সেগুলিকে বলা হয় Paraphillic Disorder; যেসবের চিকিতসা হতে পারে। ওপরের প্যারাফিলিয়ার নাম হল BDSM [Bondage and Discipline (BD), Dominance and Submission (DS), Sadism and Masochism (SM)]. যুক্তিসংগত কারনেই কোন ছবি দিচ্ছি না, আগ্রহীরা সার্চ দিয়েই বহু ধরনের প্যারাফিলিয়ার ছবি দেখে নিতে পারেন। উইকির তালিকায় বেশ কিছু প্যারাফিলিয়ার তালিকা দেখতে পারেন।
আরো কিছু উদাহরন দেই। এক ধরনের মানুষ আছে যাদের যৌন উত্তেজনা জাগে অন্য কোন মহিলারও পদতলে পিষ্ট হলে। এটাকে foot fetish বলে। এমনকি মহিলার জুতা স্যান্ডেলেও কাজ হতে পারে। Retifism নামক আরেক ধরনের প্যারাফিলিয়া আছে যাতে মহিলার জুতো যৌন উত্তেজনা আনে। পেডোফিলিয়ার কথা তো সকলেই নিশ্চয়ই জানেন। Gerontophilia নামের আরেক ধরনের প্যারাফিলিয়া আছে যাদের বৃদ্ধদের প্রতি যৌন উত্তেজনা দেখা দেয়। বমন দৃশ্য নিশ্চয়ই কারো কাছেই তেমন রুচিকর কিছু নয়। কিন্তু বিরল হলেও সত্য যে কিছু লোকের যৌন উত্তেজনা জাগে অন্য কোন মহিলার বমির দৃশ্য দেখলে, কিংবা ছুয়ে বা গন্ধ শুঁকলে। এই ধরনের প্যারাফিলিয়ার নাম Emtophiliia. Urolagnia নামের একই জাতীয় প্যারাফিলিয়া আছে মূত্র বিষয়ক। এই শ্রেনীর প্যারাফিলিয়ায় আক্রান্ত আছেন কিছু সেলিব্রিটি।
আগেই বলেছি প্যারাফিলিয়া যে কত বিচিত্র রকমের হতে পারে বলে শেষ করা যাবে না। আমরা সাধারনভাবে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান ছাড়াই কিছু প্যারাফিলিয়ার সাথে কিন্তু ভালই পরিচিত। যেমন সুযোগ পেলে ভীড়ের মাঝে মহিলাদের অংগ স্পর্শ করে বিকৃত আনন্দ উপভোগ করাও একটি প্যারাফিলিয়া হতে পারে (Frotteurism)। হতে পারে এ কারনে বলছি যে কিছু লোক মানসিক রোগের কারনে নয়, সুযোগ পেলেই এ অপকর্ম করতে পারে, তাদের কথা আলাদা। Transvestic fetishism নামের এক ধরনের কমন প্যারাফিলিয়া আছে যাতে কিছু লোকে মহিলাদের পোষাক পরিধান করে আয়নায় নিজেকে দেখে আনন্দ পায়। পেডোফিলিয়ার কথা তো সকলেই জানেন।
সমকামিতাকে কিন্তু এখন আর কোন রকম বিকৃতি বা প্যারাফিলিয়ার পর্যায়ে ধরা হয় না। কেন ধরা হয় না জানতে আগ্রহী হলে মনোবিজ্ঞানের গবেষনাপত্র পড়তে পারেন। এখানে সহজবোধ্য একটি প্রেজেন্টেশন আছে। সমকামিদের মধ্যে সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন ছাড়া অন্য কোন ধরনের বৈশিষ্ট্য প্রিভ্যালেন্ট নয়। তাদের মাঝে সুপ্রাচীন যুগ থেকে বর্তমান যুগের কিছু জগদবিখ্যাত কিছু চরিত্রও আছেন। সমকামি হবার কারনে তাদের মেধার বিচ্ছুরনে সমস্যা হয়নি। সিএনএন এর বাঘা সেলেব্রিটি রিপোর্টার এন্ডারসন কুপার স্বঘোষিত সমকামি। বিখ্যাত পপ গায়ক রিক মার্টিন সমকামি এবং তার আবার Urolagnia আছে। নানান গবেষনায় দেখা গেছে যে প্যারাফিলিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে সমকামি বিষমকামি উভয় গ্রুপই বিদ্যমান; কোন গ্রুপের মধ্যে প্যারাফিলিক প্রবনতা বেশী বলা শক্ত। যেমন ফিনল্যান্ডে Coprophilia প্যারাফিলিকদের মাঝে এক গবেষনায় দেখা গেছে বিষমকামী এবং সমকামির মধ্যে তেমন ষ্ট্যাটিসটিক্যাল সিগনিফিকেন্স নেই। Transvestic fetishism প্যারাফিলিয়া প্রায় সম্পূর্নভাবেই বিষমকামী পুরুষদের মাঝেই দেখা যায়।
বলাই বাহুল্য যে বেশ কিছু ধরনের প্যারাফিলিয়ার বয়ান শুনলে সূস্থ রুচি সম্পন্ন যে কোন লোকেরই মনে ওয়াক ওয়াক ভাব চলে আসবে, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা যাইই হোক না কেন। গুরুত্বপূর্ন কথা হল, বুঝলাম মানসিক রোগ বা বৈশিষ্ট্যের কারনে অনেকে নানান আজগুবি কাজকারবার করে, কিন্তু শুধু রোগ বলেই কি তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না? শুধু মানসিক রোগ বলেই সাত খুন মাফ, ব্যাপারটা এত সরল নয়। এ ব্যাপারে মূলত আইনী দিক দেখা হয়। নিজের বা অন্য কারো কোন রকম ক্ষতির কারন হল কিনা সেটা বিবেচনা করা হয়। মানসিক রোগী বলেই অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক কারো সাথে যৌনকর্ম করার অধিকার দেওয়া হয় না। আধুনিক যুগে পশুপাখীর নির্যাতনও অপরাধ, কারো zoophillia আছে বলেই সে পশুপাখীর সাথে যৌনকর্ম করার অধিকার দাবী করতে পারে না। এসব Paraphillic Disorder এর চিকিতসা হতেই পারে। আবার কিছু ধরনের প্যারাফিলিয়াকে এসব বিবেচনায় নির্দোষ ধরা হয়, যেমন প্রথম উদাহরনের BDSM. বিজ্ঞান এখনো এসব ক্ষেত্রে নুতন, সব প্যারাফিলিয়ার চিকিতসার ব্যাবস্থা এখনো সেভাবে হয়নি। এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ন যে আমাদের চোখে যা বিকৃতি বিজ্ঞানের চোখে তা নাও হতে পারে।
আশা করি আমি সমকামি বা সমকামিতা প্রমোট করছি এমন ধারনা কারো হবে না। মোদ্দা কথা হল, সমকামিতাকে অতীতে যাইই মনে করা হোক, বর্তমান দিনে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বিকৃতি মনে হয় না। কিন্তু ব্যাক্তিগত দৃষ্টিভংগীতে এটাকে সহজভাবে গ্রহন করতে আমাদের সময় লাগবে, কেউ ব্যাক্তিগতভাবে সমকামিতাকে অস্বস্থিকর মনে করলে তেমন কিছু বলার নেই; কিন্তু সেই ব্যাক্তিগত ধারনার প্রভাবে সমকামিদের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব অবশ্যই আপত্তিকর। যে কোন লিংগ বা ওরিয়েন্টেশনের মানুষের যৌন অধিকার আধুনিক মানবাধিকার স্বীকৃত। তারা অন্য কারো ক্ষতির কারন না হয়ে নিজেদের ভেতর কিভাবে কি করল তা নিয়ে গবেষনা নিতান্তই সময় নষ্ট। সমকামিতাকে যারা এত ঘৃনা করেন তারা আবার সমকামিতা আইনী বৈধতা পেলে অনেকে সমকামিতায় লিপ্ত হয়ে বিশ্বকে মানবশূন্য করে ফেলবে এই আশংকায় ভোগেন বুঝি না।
লিখাটা পড়ে ভাল লাগলো। আমি একজন লেসবিয়ান। প্রতিনিয়ত নিজের সাথে লড়াইয়ের কষ্ট কি তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। কাউকে এ পর্যন্ত বলতে পারিনি আমি কী। প্রায়ই সব অর্থহীন লাগে, নিজের গলা নিজের টিপে মারতে ইচ্ছে করে। কিন্তু এই লিখাগুলো পড়লে মনে হয় কেউ আছে যারা আমাকে বুঝে।
আদিল মাহমুদ ভাই অত্যন্ত সুন্দর লেখা। সম্প্রতি আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে একটা আর্টিকেল এখানে জমা দিয়েছি। আমিও প্যারাফিলিয়ার ব্যাপারটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, তবে শুধুমাত্র আমাদের সমাজে প্রচলিত বা বেশি বেশি ঘটছে এমন গুলই। কারন ভেবে দেখলাম সব প্যারাফিলিয়ার ব্যাপারে হয়ত আলোচনা না হওয়াই ভাল। কারন বলা যায়না কেউ ব্যাপারটাকে ইন্টারেস্টিং মনে করে আবার আকৃষ্টও হয়ে পড়তে পারে, তাই আন-কমন গুলো লেখাটায় এড়িয়ে যাই। আমি প্যারাফিলিয়াকে ঠিক যৌন বিকৃতি বলিনি, আসলে এটা একটা ডিজঅর্ডার। কিন্তু একটা “সেক্সুয়াল এক্টিভিটিজ” যখন সংগঠিত হচ্ছে তখন যদি সেখানে অংশগ্রহণ কারী সবাই রাজি থাকে তাহলে সেটাকে বিকৃতি নয় বড়জোর ডিজঅর্ডার বলা জেতে পারে। কিন্তু যদি ভিক্টিম এবং ওফেন্ডারের প্রশ্ন চলে আসে তাহলে সেটাকে আপনি কি বলবেন! আমার আর্টিকেলে ভিক্টিম এবং অফেন্ডারের বিষয়টাই মুল ব্যাপার ছিল, তাই আমি এটাকে বিকৃত হিসাবেই দেখানোর চেষ্টা করি (মানে ভিক্টিম এবং অফেন্ডার থাকলে সেটা বিকৃতি)। সামগ্রিক ভবে দেখলে বিষয়টা অত্যন্ত জটিল। মনবিজ্ঞানিরাও এখনো অনেক ব্যাপারে একমত হতে পারেন নি। কিন্তু অল্প কিছু মানুষের সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন আলাদা হওয়ার কারনেই হোক বা যে কারনেই হোক তাদের দ্বারা যখন বড় একটা সংখ্যার বাচ্চা শিশু বা বাসে ট্রেইনের ভিড়ে অন্যরা লাঞ্চিত হচ্চে তখন সেটাকে বিকৃতি বলাই যায়। (আবারো বলছি অফেন্ডার এবং ভিক্টিম থাকলেই শুধু বিকৃতি, অন্যথায় নয়)।
বেশ চমৎকার ভাবে গুছিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। ভাবছি আপনার লেখা পড়তে নিয়মিত হতে হবে। আরো ভালো ভালো নিবন্ধ লিখুন এই প্রত্যাশা করছি।
যে কোন লিংগ বা ওরিয়েন্টেশনের মানুষের যৌন অধিকার আধুনিক মানবাধিকার স্বীকৃত।
কবে এই সমাজের মানুষ স্বাভাবিকভাবে এটা মেনে নেবে কে জানে !!
অনেক ভালো লিখেছেন । ধন্যবাদ
ধন্যবাদ।
সময় লাগবে, তবে এক সময় মেনে নেবে। এই আমেরিকাতেই ২অ বছর আগেও সমকামি বিয়ের কথা খুব কম লোকেই চিন্তা করতে পারতো। ২০০৪ সালে যখন কানাডায় হাইকোর্ট সমকামি বিয়ে আইনসিদ্ধ করে তখন আম্রিকার প্রেসিডেন্ট বুশের মন্তব্য ছিল বিয়ে বলতে তিনি কেবল নারী পুরুষের সম্পর্কই বোঝেন। সেই আমেরিকার হোয়াইট হাউজ এখন রংধনু রং মেখে উল্লাস করে।
হাজার বছর পরে হলেও এই সমাজকে সেটা মেনে নিতেই হবে। অন্ধকার এক সময় কাটবেই।
সত্যিকার অর্থে লেখাটি পড়ে কিছু জানতে পেরেছি।
প্রায় সময় বাস্তবিক জীবনে প্রাকৃতিক অথবা প্রাকৃতিক নয় এরকম শুনতে হয়। মানুষ যখন প্রকৃতির গুণকীর্তন করে তখন আসলে সে তার সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে দেয় যে সে কতই অসহায়। এখানে মানব জাতির শ্রেষ্ঠত্য লুন্ঠিত হয় বলে মনে হচ্ছে। আমরাই নিজেদের সীমাবদ্ধতাকে ছাড়িয়ে প্রকৃতি তৈরী করব। রাদারফোর্ডের একটি কথা আলতো করে মনে পড়ছে, “যতদিন না বিজ্ঞান একটি ঘাসও তৈরী করছে ততদিন পর্যন্ত কিছু স্বভাবজাত মানুষ বিজ্ঞানকে আঙ্গুল দেখিয়ে যাবে।:
ধন্যবাদ। প্রক্ততিতে এত বেশী ভ্যারিয়েশন আছে যে প্রকৃতি বিরুদ্ধ শব্দটা ব্যাবহার করা বেশ বিভ্রান্তিকর (সেটা ভাল না খারাপ সেটা অন্য কথা)।
যাবতীয় বদমাইশিকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা অসুখ বানায়া দিতেছে না তো?
🙂 , খুব ভাল প্রশ্ন। স্বাভাবিকভাবেই মনে এমন প্রশ্ন এসে যায়, আমারও আসে।
বদমায়েশি এবং মানসিক রোগ দুটো ভিন্ন ব্যাপার, আমরা সেভাবে ধরতে না পারলেও মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা ঠিকই নানান পরীক্ষার নিরীক্ষার মাধ্যমে বুঝতে পারেন।
ক্লেপ্টোম্যানিয়া রোগের কথা সম্ভবত শুনে থাকবেন। এই রোগ হল সোজা বাংলায় চুরি করা রোগ, রোগীরা নেশার মত চুরি করে। এখন সাধারন চোর যদি দাবী করে ভাই আমার কি দোষ, আমি রোগী মানুষ তাহলে কি সে রোগী বলে পার পেয়ে যাবে? যাবে না। সে যে সাধারন চোর নয়, ক্লেপ্টোম্যানিয়ায় আক্রান্ত তা প্রমান করতে হবে। সেটা প্রমানে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্টু বিবেচনা করা হবে। যেমন ক্লেপ্টোম্যানিয়াক নিজের প্রয়োযনে বা বিক্রির উদ্দেশ্যে চুরি করে না, চুরি করে স্রেফ স্বভাব বশতঃ।
বিদেশে অনেক সময় ভয়াবহ হত্যাকান্ডের সময় আসামী পক্ষের উকিল চেষ্টা করে তার মক্কেলকে মানসিক রোগী বানাতে, সেটা প্রমান করতে পারলে চিকিতসার সাথে লঘু সাজার বিনিময়ে পার পেয়ে যাওয়া যেতে পারে। তবে কাজটি তেমন সহজ নয়, দুই পক্ষেরই মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়।
নানান ধরনের বিকৃতি বা প্যারাফিলিক ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রেও একই রকম কথা খাটে। কোনটা বদমায়েশি এবং কোনটা রোগ তা নির্নয়ের সুনির্দিষ্ট উপায় আছে। আমেরিকায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders (DSM) গাইড লাইন ব্যাবহার করেন।
নাইস ওয়ার্ক।
মহল্লায় দেখা গেলো তাই’লে 🙂
মহল্লার পোলা, যাব কই আর।
সমকামিতা ও সমকামীদের সম্পর্কে আমারও বেশিরভাগ মানুষের মতো নেতিবাচক মনোভাব ছিল। অভিদার সমকামিতা বইটি পড়ে এই বিষয়ে আমার ধারণা সম্পূর্ণ পালটে যায়। এই বইটি পড়ে আমি যে কত উপকৃত হয়েছি বলবার নয়। সেদিন আমেরিকার প্রতিটা স্টেটে সমকামী-বিবাহের আইন পাস হয়েছে। সমকামিতা নিয়ে অভিজিৎদা এত লিখেছেন। এই চমৎকার খবর শুনতে পারলে তিনি যে খুশি হতেন।
সমকামিতার প্রাকৃতিক দিকটা তুলে ধরার দরকার অবশ্যই আছে। অনেক বছর আগে, নব্বই এর দশকে, শফিক রেহমান সমকামিতা নিয়ে কিছু কমেন্ট করেছিলেন যায়যায়দিনের একটি বিশেষ সংখ্যায়। সম্ভবত আমেরিকান বিউটি ছবিটি নিয়ে আলোচনা করতে যেয়ে। পরে সেই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যেসব কমেন্ট, চিঠি এসেছিলো তার একটি সংকলন পরে ছাপা হয়েছিলো। সেটা ছিলো অনলাইন মিডিয়ার আগের যুগ। সুতরাং নিশ্চই বলা যায় শফিক রেহমান প্রাপ্ত চিঠিগুলির মধ্যে কিছুটা হলেও ভদ্রস্থ এমন একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ ছাপিয়েছিলেন। আমার খেয়াল আছে যে সেই তীব্র মন্তব্যগুলির সিংহভাগই ছিলো এই রকমের যে যে ঘৃন্য কাজ রাস্তার কুকুর-শুয়োর করে না সেটা মানুষ কিভাবে করতে পারে, এই রকমের। এখনো অধিকাংশ তৃতীয় বিশ্বের মানুষের ধারনা যে সমকামীতা একটি অপার্থিব, অপ্রাকৃতিক বিকৃতি। এটলিস্ট এই ভুল ধারনা থেকে বিতর্ককে সরিয়ে আনার জন্যে প্রাকৃতিকতা বার বার উল্লেখ করতেই হবে।
আমাদের সমাজের লোকজন মনে হয় নিজে যার সাথে পরিচিত না, নিজে যা পছন্দ করেন না তাকেই প্রকৃতি বিরুদ্ধ, বিকৃত ভাবেন। তাদের যে কোন ভাবেই হোক বদ্ধমূল ধারনা হয় যে সমকামি লোকে ইচ্ছে করেই হয়ে যায়। পপুলেশন হিসেবে অনেক কম হলেও এটা যে প্রকৃতিগত একটি ফেনোমেনা তা ওনারা কিছুতেই বুঝতে চান না।
আরো হতাশার হল এর সাথে ধর্মীয় বিশ্বাসের মিশাল ঘটালে। কাল একজনের লেখা দেখছিলাম সমকামিতা্র বিরুদ্ধে প্রচলিত বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারনার বিপরীতে বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত। তার জবাবে বেশ ক’জন শিক্ষিত লোকের সাফ বক্তব্য হল যে যেহেতু সব প্রধান ধর্মেই সমকামিতা নিষিদ্ধ তাই বিজ্ঞান কি বলে না বলে সে দিয়ে তাদের কিছু যায় আসে না, বিজ্ঞান তো আজ এক কথা বলে কাল আরেক কথা বলে। সাথে লেখক ভদ্রলোকের ধর্ম ওরিয়েন্টেশন নিয়ে টানাটানি। এইসব লোকে আবার দাবী করবে উগ্র নাস্তিকরা বিজ্ঞানের অপব্যাবহার করে ধর্ম অবমাননা করছে। নিজেরা সেধে সেধে অনর্থক ধর্ম টেনে অপ্রীতিকর কথা শুনবেন তারপর তার দায় হবে অপরের।
সুন্দর ব্যাক্ষা করেছেন। কিন্তু বাংগালীর হৃদয়ে সীল মারা, হোক সে কিছু না জানা আস্তিক বা অনেক কিছু জানা সেই তৃতীয় পক্ষ।
মানুষের বদ্ধ ধারনা ভঞ্জন খুব সহজ কাজ না……বিশেষ করে কনজারভেটিভ সমাজে সেটা আরো অনেক কঠিন।
চমৎকার লেখা, সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশন নিয়ে বাংলা লেখালেখিতে একটা দারুন সংযোজন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে একটা অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় ‘ট্যাবু’ নামে। ওখানে লোকজনের অদ্ভূত সব ফেটিশ দেখে তাজ্জব বনে যেতে হয়। যার যা পছন্দ-অপছন্দ, অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন না করে ওগুলো যতক্ষণ কেউ নিজের মধ্যে রাখছে, ততক্ষণ কোন ভ্যাল্যু জাজমেন্ট দেয়ার যৌক্তিকতা দেখি না।
সমকামিতার ব্যাপারে অনেকটা উদার হতে পারলেও পেডোফিলিয়া নিয়ে পশ্চিমাদের মধ্যেও একটা জিরো টলারেন্স নীতি আছে। শিশুদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এটা মেনে নেয়া যায়। কিন্তু এটা ভুলে গেলেও চলবে না যে এরকম প্রেফারেন্সের পেছনে বেচারাদের কোন হাত নেই। বিবেকের কারণেই অনেক শিশুকামী আছেন যারা কখনোই কোন শিশুকে মলেস্ট করেন নি বা করতেও চান নি। অবশ্য উল্টোটাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে আমাদের মতো পশ্চাদপদ সমাজে সচেতনতার অভাবে অনেক শিশুই নিগ্রহের শিকার হচ্ছে প্রতিদিন। এসব ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে এরকম লেখালেখির প্রয়োজন আরও।
ধন্যবাদ।
পেডোফিলিয়া নিয়ে পশীমা সমাজ অত্যন্ত কঠোর। বহু পেডোফাইল বা শিশু ধর্ষক কারাগারে অন্য কয়েদীদের হাতে নিহত হয়। ব্যাপারটার কারনও সহজবোধ্য। অবোধ শিশুদের ওপর নির্যাতন মানা অত্যন্ত কঠিন। সব চাইল্ড মলেষ্টারই যে পেডোফাইল হবে এমন নয়। প্যারাফিলিয়া ডায়াগনোসিসে রেকারেন্সের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
আসল পেডোফাইল যারা তাদের শাস্তির আগে চিকিতসা হওয়া দরকার; বিশেষ করে অপরাধ সঙ্ঘটনের আগেই চিকিতসার দরকার। এ কারনে তার নিজেরও দায় থাকে নিজের মধ্যে এমন তাড়না অনুভব করলে চিকিতসকের শরনাপন্ন হওয়া।
কেউ নিজেকে “মুক্তমনা” দাবী করে তার কোনো ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের নিরীখে কাউকে ভালো কিংবা খারাপ তকমা দেওয়াটা নিশ্চয়ই তার মুক্তমনের পরিচায়ক নয়। প্যারাফিলিয়া সম্পর্কে একটি বিস্তারিত লেখা আশা করছি।
লেখা সুখপাঠ্য হয়েছে…
আমি নিজে জানলেই না লেখবো। প্যারাফিলিয়া সম্পর্কে যা কিছু বিদ্যা সবই এইখানেই মোটামুটি সীমাবদ্ধ। প্রফেশনাল মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কেউ ছাড়া ভাল লেখা সম্ভব না। বাংলা ভাষায় এসব লেখার চরম অভাব আছে। মনোরোগ জিনিসটাকেই আমাদের সমাজে কোন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। উলটা সমকামকে মনোরোগের পর্যায়ে বিবেচনা করা হয়।