সন্তান
আমার বন্ধু বো এবং লীন দম্পতির সাথে যখন আমার প্রথম পরিচয় হয় তখন ওদের কন্যা অলিভিয়ার বয়েস তিন বছর। সবে প্রিকে’তে যেতে শুরু করেছে। বো এবং লীন দুজনই সাদা এমেরিকান। কিন্তু ওদের মেয়ে অলিভিয়া দেখতে একেবারেই চাইনিজ, একটুও ওর বাবা-মা কারুর মতনই নয়। প্রথম-প্রথম আমার মনে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছিল – অলিভিয়া দেখতে চাইনিজ কেন, ব্যাপার কী? কয়েকদিন যেতেই আমি কিছু জিগ্যেস করাই আগেই লীন বললো, জানো, অলিভিয়া আমাদের বায়োলজিক্যাল কন্যা নয়। আমরা ওকে চায়না থেকে দত্তক এনেছি। আমি আগ্রহী হয়ে ওকে জিগ্যেস করলাম, তাই নাকি? তারপর বলো তো কীভাবে তোমরা অলিভিয়াকে পেলে, কীভাবে ওকে চায়না থেকে এখানে নিয়ে এলে, ওর বায়োলজিক্যাল বাবা-মা কোথায়, ইত্যাদি। লীন আমাকে বললো একে একে সব গল্প।
বো এবং লীনের যখন বিয়ে হয় তখন ওদের দুজনেরই বেশ বয়েস হয়ে গিয়েছে। লীনের মেনোপজ হয়ে গিয়েছে। বো’এর বাচ্চা হতে পারলেও লীনের আর বাচ্চা ধারণের ক্ষমতা ছিল না। বিয়ের পর খুব মধুর সময় কাটছে ওদের। হানিমুনে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। সবই আছে ওদের। তবুও কীসের যেন অসীম শূন্যতা। সেই শূন্যতা একটি ছোট্ট মানবশিশুর। ওরা বাচ্চা নিতে চায়। কিন্তু সম্ভব নয়। লীনের বাচ্চা হবার বয়েস পেরিয়ে গেছে। ওরা বাচ্চা জন্ম দিতে পারবে না, তাতে কী হয়েছে। বাচ্চা ত দত্তক নেওয়া যায়। এমেরিকাতেও রয়েছে এতিমখানা। তবে ওরা এমেরিকান এতিমখানা থেকে বাচ্চা দত্তক নেবে না। নিয়ে আসবে অন্য কোনো দরিদ্র দেশ থেকে। কারণ এমেরিকান এতিমখানায় বাচ্চারা দরিদ্র দেশের এতিমখানার বাচ্চাদের চেয়ে তুলনামূলক ভালো অবস্থায় আছে। ওরা চলে গেল চায়নায়। এতিমখানাগুলোতে গিয়ে গিয়ে কথাবার্তা বলছে, খোঁজ-খবর নিচ্ছে, জেনে নিচ্ছে বাচ্চা দত্তক নেওয়ার সব নিয়ম-কানুন। সে এক এলাহি ব্যাপার-স্যাপার। একটা বাচ্চা দত্তক নিতে গেলে যে বা যারা দত্তক নিতে আগ্রহী তাদের জীবনের সমস্ত তথ্য-প্রমাণ; যেমন, বিগত জীবনের ইতিহাস, আয়-রোজগারের ফিরিস্তি, কখনো ড্রাগ নিয়েছে কিনা, এরা কেমন মানুষ, সবার সাথে কেমন আচরণ করে, মেজাজ-মর্জি কেমন, কোনো ক্রাইম করেছে কিনা, ইত্যাদি ইত্যাদি আকাশ-পাতাল কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে হবে এতিমখানায়। দরিদ্র দেশের এতিমখানায় হাজার কষ্টে, অনাদরে, অনাহারে, অবহেলায় বাচ্চারা দিনাতিপাত করে। কিন্তু কেউ দত্তক নিতে গেলে খুবই কড়াকড়ি। কারণ ওরা চায় বাচ্চাটি এক অনিশ্চয়তার থেকে যেন আরো অনিশ্চয়তার মধ্যে গিয়ে না পড়ে। যে তাকে দত্তক নিতে চায় সে মানুষটি যেন একজন স্নেহময় দায়িত্বশীল শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়। যাতে করে বাচ্চাটি একটি সুস্থ সুন্দর পরিবেশে পরম ভালোবাসায় আনন্দের সাথে বেড়ে উঠতে পারে।
লীন ও বো সবকিছু জেনে নিয়ে এমেরিকায় ফিরে এলো। কর্মক্ষেত্র থেকে, থানা থেকে, এখান থেকে, ওখান থেকে জোগাড় করতে লাগলো প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র। কাগজের বস্তা নিয়ে আবার গেলো চায়না। যোগাযোগ করতে লাগলো বিভিন্ন এতিমখানায়। অবশেষে পেলো অলিভিয়াকে। অলিভিয়া তখন খুবই ছোট। কয়েক মাস বয়েস। ছোট্ট অলিভিয়াকে পেয়ে যেন আকাশে চাঁদ হাতে পেলো ওরা। ওর জন্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র কিনলো। পরম আদরে অলিভিয়াকে লালন-পালন করতে শুরু করলো দুজনে মিলে। ওর জন্য একজন চায়নিজ বেবীসিটার রেখে দিলো ওর সঙ্গে চায়নিজ ভাষায় কথা বলার জন্য এবং ওকে চায়নিজ খাবার রান্না করে খাওয়ানোর জন্য। ওকে একটা চায়নিজ ভাষা শেখার স্কুলে ভর্তি করালো যাতে ও ভালোভাবে চায়নিজ বলতে এবং লিখতে পারে। এখানে ত অলিভিয়া এখানকার সবকিছুই শিখছে। পাশাপাশি জন্মভূমির ভাষা ও সংস্কৃতির সাথেও যেন সে পরিচিত থাকে অথবা তার দত্তক পিতামাতাকে যেন দোষারোপ করতে না পারে – তোমরা আমার ভাষা ও সংস্কৃতি থেকে আমাকে দূরে রেখেছ ব’লে। এই জন্যই ওদের এই আপ্রাণ প্রচেষ্টা ও বিপুল অর্থব্যয়।
যে অনাথ আশ্রম থেকে অলিভিয়াকে দত্তক নেওয়া হয়েছে সে আশ্রমের খোলা বারান্দায় একদিন রাতের আঁধারে হঠাৎ ওঁয়া-ওঁয়া শিশুর কান্না শোনা যায়। ওখানকার কর্মরত কেউ গিয়ে দেখে নবজাত একটি মানব শিশু মেঝেতে পড়ে আছে একা, কাঁদছে প্রাণপণ। ওকে আশ্রমের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। চীনে এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এতিমখানাগুলির বারান্দায় বা আশেপাশে প্রায় পড়ে থাকতে দেখা যায় নবজাত শিশু। ওখানে একটার বেশি বাচ্চা নেওয়া নিষিদ্ধ। কেউ দ্বিতীয়বার এক্সিডেন্টলি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে গেলে সরকার যদি জানতে পারে কোনোভাবে তাহলে সেই গর্ভবতী মহিলাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাত করিয়ে দেয়। ৬/৭ মাসের গর্ভাবস্থা হলেও নিস্তার নেই। অনেকের একান্ত ইচ্ছাও থাকে একাধিক বাচ্চা নেওয়ার। সব ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। অনেকে তাই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে চলে যায় গোপন কোনো জায়গায়। বাচ্চাটি ভূমিষ্ঠ হলে যেন কেউ জানতে না পারে। কেউ জেনে গেলে মহা-সমস্যা বাবা-মা’র জীবন নিয়ে। তাদের চাকরি চলে যেতে পারে, ইনকাম ট্যাক্স বেরে যায় ইত্যাদি। এজন্যও অনেকে বাচ্চাটিকে কোনোভাবে জন্ম দিয়ে কেউ জানবার আগেই কোনো আশ্রমের আশেপাশে গোপনে বাচ্চাটিকে ফেলে চলে যায় নিজের প্রাণ নিয়ে।
অলিভিয়াকে দত্তক নেওয়ার পর বেশ কয়েকটি দিন বো ও লীন কাটিয়েছে চীনে। বেড়িয়েছে চীনের নানান জায়গায়। ওদের কোলে ছোট্ট একটি চাইনিজ শিশু দেখে চীনের কিছু কিছু লোকজন বলেছিল, অনেক ধন্যবাদ তোমাদেরকে। এখান থেকে একটি বাচ্চাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছ তোমরা। বিশেষ করে একটি মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছ তোমরা। কত নিদারুণ কষ্টে মেয়েটি বড় হতো নইলে, কত নিদারুণ কষ্টের হতো তার পুরোটা জীবন সেটা তোমরা কল্পনাও করতে পারবে না। বো ও লীন বলেছিল, আমাদেরকে কেন ধন্যবাদ দিচ্ছ? ধন্যবাদ তোমাদেরকে। একটা সন্তানের জন্য আমাদের কত হাহাকার ছিল, জীবন অপূর্ণ ছিল। তোমাদের দেশ থেকে আমরা আমাদের সন্তান নিয়ে যাচ্ছি বুকে করে।
অলিভিয়ার এখন ১১ বছর বয়েস। পড়াশোনায় খুব ভালো। ও পিয়ানো শেখে, ফুটবল খেলে, সাঁতার কাটে, ছুটিতে বেড়াতে যায় নানান জায়গায়। সুন্দর ফুটফুটে একটা বাচ্চা। হেসে খেলে বড় হচ্ছে। দেখে আনন্দে ছলছল করে ওঠে চোখ। কারণ এর বিপরীতই তো হতে চলেছিল ওর জীবন। একদিন লীনকে কথার কথা বলেছিলাম, অলিভিয়া খুব ভাগ্যবান তোমরা ওর বাবা-মা ব’লে। লীন বলেছিল, আমরা অনেক ভাগ্যবান, অলিভিয়া নয়। অলিভিয়া আমাদেরকে মাতৃত্ব দিয়েছে, পিতৃত্ব দিয়েছে। আমাদের জীবন অপার আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছে। লীনের কথা শুনে আমি আমার ওরকম কথার জন্য বিষম লজ্জা পেয়ে গিয়েছিলাম।
একদিন পার্কে বসে আছি। বাচ্চারা খেলছে। আমার পাশে এসে বসলো এক সাদা মহিলা। আমার সঙ্গে খুব আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে শুরু করলো। দেখলাম তার সঙ্গে ছোট্ট একটি মেয়ে। মেয়েটির গায়ের রঙ আমাদের মত অলিভ রঙের। আমি তাকে জিগ্যেস করলাম, ওকে তুমি বেবীসিটিং করো বুঝি? সে বললো, না, ও আমার মেয়ে। সাদা মায়ের মেয়ের গায়ের রঙ অলিভ দেখে আমি ভাবলাম মেয়ের বাবা নিশ্চয় আমাদের অঞ্চলের। আমি তাকে জিগ্যেস করলাম, তোমার মেয়ে ওর বাবার মত দেখতে হয়েছে বুঝি? সে বললো, আমি ওর বায়োলজিক্যাল মা নই। ওকে আমি ইন্ডিয়া থেকে দত্তক নিয়ে এসেছি। তোমাকে ইন্ডিয়ান ভেবে মনে হলো তুমি তো আমার মেয়ের জন্মভূমির মানুষ। তাই আলাপ করতে এলেম। তারপর বাচ্চা দত্তক নেবার দুঃসাধ্য ইতিহাস বর্ণনা করলো।
সে বিয়ে করেনি। একা থাকে। একটা বাচ্চার অনেক সাধ। তাই ইন্ডিয়া থেকে দত্তক নিয়ে এসেছে একটি ছোট্ট মেয়ে। যখন সে দত্তক নিয়েছিল তখন ছোট্ট শিশুটির নাম ছিল ভাইশালি। নামটি তার কাছে খুব সুন্দর লাগে। আর পাল্টায়নি তাই। অলিভ রঙের মানুষ দেখলেই তার মনে হয়, আরে, এ তো আমার মেয়ের জন্মভূমির মানুষ। প্রাণের টানে তার সঙ্গে যেচে কথা বলে নেয়, ভাব জমায়। ভাইশালিকে ডেকে বলে, দেখো এ তোমার জন্মভূমির মানুষ। আমার সাথে কথা বলার সময় ভাইশালিকে ডেকে বলেছিল, দেখো এ তোমার প্রতিবেশী, বাংলাদেশের মানুষ।
জোন নামের একজন মহিলাকে চিনি। একা থাকে। একটি মেয়ে দত্তক নিয়ে এসেছে চীন থেকে। এলিজাবেথ মেয়েটির নাম। এলিজাবেথই জোনের পৃথিবী। কত আদর, কত যত্ন, কত ভালোবাসা তার জন্য।
ওদের কাছ থেকে শুনেছি আরো অনেক দত্তক শিশু ও পিতামাতার গল্প। কেউ কেউ নিজের বায়োলজিক্যাল সন্তান থাকার পরেও বাচ্চা দত্তক নেয় এক বা একাধিক। ওরা শিশুদের প্রতি অনেক স্নেহশীল বলেই। একটা অবুঝ বাচ্চা এতিমখানায় মানবেতর জীবন যাপন করবে এটা ভাবলে এদের প্রাণ কাঁদে বলেই। পৃথিবীর সকল শিশুকে সুন্দর জীবন দেওয়া কয়েকজন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও কয়েকটি শিশুকে প্রেম ভালোবাসা দিয়ে সুন্দর করে বড় করে তোলাও কি কম কথা? কত সন্তানই ত, বিশেষ করে কন্যাসন্তান বায়োলজিক্যাল পিতামাতার কাছে লাথিগুঁতা অভিসম্পাত খেয়ে দিন কাটায়। কত কন্যাসন্তানই ত বায়োলজিক্যাল পিতার হাতে ধর্ষিত হয়। কত জন্মদাত্রীই ত তার বায়োলজিক্যাল কন্যাকে বলে, কোন কুক্ষণে জন্মেছিস, কোন কু-মূহুর্তে জন্মেছিস, আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য নিয়ে এসেছিস, এখনো মরিস না কেন? আর কয়েকজন দত্তক মা-বাবাকে দেখলাম যারা এতিমখানার জঘন্য পরিবেশ থেকে একটি ছোট্ট কন্যাশিশুকে বুকে তুলে নিয়ে এসে তাকে জীবন দিয়ে, হৃদয় নিঙড়ে ভালবাসা দিয়ে মানুষ করছে। আর এজন্য তারা শিশুটির কাছেই নিজেদেরকে চিরঋণী ভাবে। কারণ শিশুটিকে ওরা পেয়েছে বলেই, ওকে ভালোবাসবার সুযোগ পেয়েছে বলেই ওদের জীবন অর্থবহ হয়েছে। এসব দেখে শুনে এদের প্রতি অশেষ শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। ভাষাহীন হয়ে বসে থাকি।
:rose:
এমনিতে চিনে অনাথ শিশুদের সংখ্যা রোজ বাড়ছে | তারা কি চিনের জনসংখ্যার মধ্যে পড়ে না ? তাহলে সরকার কেন জনসংখ্যার বৃদ্ধি বন্ধ করতে একটা বাচ্চার ধূয় ধরে বসে আছে ? আসলে এই সরকার সম্পদ বাড়াতে চায় না | শুধু অমানবিক ভাবে জনগনের খুশিকে ধ্বংস করতে চায় |
বাচ্চা তার মা বাপের সাথে থাকবে না : এটা বড়ই হৃদয়হীন ব্যাপার |
সত্যি দারুন লাগলো | মমতার এমন বহিপ্রকাশ ভারতে কেন দেখা যায় না ? সাদাদের কাছ থেকে এগুলো আমাদের শিখতে হবে |
নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ডেনমার্ক, সুইটজারল্যান্ডে যুদ্ধ শিশুদের একটা বিরাট অংশ দত্তক এসেছে। নেদারল্যান্ডসে তাদের একটা বিরাট গ্রুপ আছে, যাদের সাথে আমার খুব জানাশোনা। আপনার গল্পগুলো যেনো আমি নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি। ভাল লাগলো পড়তে
ভাইশালি কি বৈশালীর অপভ্রংশ?
কলম চলুক।
সত্যি ভাষা হারিয়ে ফেললাম। কত মহৎ এদের মন, কত সুন্দর এদের ভাবনা!
আমরা সবসময় সাদাদের জীবন যাএা এর নেতিবাচক দিক গুলো নিয়ে কথা বলি, কিনতু ওদের এই মহৎ গুন টার কথা ঘুনাক্ষরে ও বলি না, দওক নিয়ে একটা বাচ্চা কে নতুন জীবন দেওয়াটা যে কতো বড় মহৎ কাজ সেটা আমরা (বিশেষ কোরে উপমহাদেশ এর মানুষ রা) অনুমান করতে পারলাম না আাজো, ধন্যবাদ লেখক কে এই বিষয় টা কে নিয়ে লেখার জন্য। পাশাপাশি আমি সাদাদের আরো একটা গুন এর কথা বলতে চাই, সেইটা হলো ওরগান (Organ) দান করা, আমরা বাংলাদেশ এর সব মানুষ রা শুধু আমাদের চোখ টা যদি দান করি, একজন লোক ও আর অন্্ধ থাকবে না।
লেখাটি সুন্দর ও সব্লীল। এই ধরনের লেখা শেষ অবধি না পড়লে তৃপ্তি হয়না। তবে সঠিকভাবে বলতে গেলে, আমাদের মত গরীব দেশে আনেক মা দারিদ্রতার জন্য সন্তানকে বেঁচে দেয়, বা আঁস্তাকুরে ফেলে দেয়, বা আনেক কুমারী মা নিজের স্নমান বাঁচাবার জন্য রাতের আন্দকারে রাস্তায় বা কোন হাসপাতালে সন্তানকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এই সমস্ত শিশুদের কিছু এন.জি.ও. মত সংস্থা প্রতিপালিত করার নাম করে দেশে বা বিদেশের লোকের কাছে বহু টাকার বিনিময়ে দত্তকের নামে বিক্র করে। যদিও বিদেশের লোকেরা এই সমস্ত দত্তক নেওয়া শিশুদের কিভাবে প্রতিপালিত করে, আমার ভালো জানা নেই। লেখিকার এই বিবরণীতে ভালো একটা ধারনা এসেছে।এই শিশুদের বিদেশি বাবা-মা’রা যে খুব ভালোভাবে তাদের লালন – পালন করে জেনে খুব ভালো লাগলো। কিন্তু আমাদের দেশের এতিমখানাগুলি বা এন.জি.ও. সংস্থাগুলির ব্যবহার মনুষ্য প্রয্যায়ে পড়েনা। এদের থেকে কোন শিশুকে দত্তক নিতে গেলে প্রচুর টাকা লাগে। যা বিদেশিরা দিতে পারে, আমাদের দেশের লোকের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। এই টাকা -পয়সা নেয়া দেয়া কাগজপত্রে হয়না। আমার এই লেখার কারন লেখিকার ধারনা আরও স্পট করে দেওয়া, অন্য কিছু নয়।