আমাদের এই দু:সময়ে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বাইরে থেকে যাঁরা বা যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান নি:স্বার্থভাবে সাহায্য এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, যাঁরা সহমর্মিতা প্রদর্শন করেছেন, পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো। আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানাচ্ছি যে, অভিজিৎ হত্যার সাথে জড়িত খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক এবং তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হোক। এবং সেই সাথে আজকে বাংলাদেশের সমাজে ধর্মীয় মৌলবাদ, সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্য যে সুগভীরভাবে গ্রথিত হয়ে গেছে, সেটিকে স্বীকার করে নিয়ে একে নির্মূল করার জন্য সুদৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হোক। এই বিষবৃক্ষকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা আশু প্রয়োজন। একটি ধর্ম-নিরপেক্ষ, প্রগতিশীল, নিপীড়নহীন, বাকস্বাধীনতাময় নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এটা অত্যন্ত জরুরী হয়ে দাড়িয়েছে ।
অভিজিৎ-কে হত্যা করে ঘাতকরা তার সৃষ্ট আন্দোলন ও আদর্শকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো, কিন্তু আমি আপনাদের এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে সেখান থেকে আমি বা আমরা কেউই পিছিয়ে আসবো না। মুক্তমনার অগ্রযাত্রা অভিজিৎ এর আত্মদানের মাধ্যমে আরো গতিশীল হবে। আমরা তার মৃত্যুতে যেমন গভীরভাবে শোকাহত, ঠিক একইভাবে আমরা তার বুদ্ধিদীপ্ত জীবনকে উদযাপন করতেও দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা আছি অভিজিৎ এর পাশে, তার আদর্শকে বুকে ধারণ করে। আমার এই বক্তব্য সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেবার জন্য আপনাদের সহযোগিতা চাইছি।
এখানে বিবিসিতে দেওয়া আমার বাংলা সাক্ষাৎকারটা রাখা আছে।
এখানে বিবিসিকে দেওয়া আমার ইংরেজি সাক্ষাৎকারটা রাখা আছে
সিএফআই এ প্রকাশিত হওয়া আমার বিবৃতির বাংলা অনুবাদ এখানে সংযোগ করে দিলাম। অনুবাদটি করেছেন ফরিদ আহমেদ।
আমার স্বামী অভিজিৎ রায় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ নিয়ে লেখালেখি করতেন, তিনি ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনামূখর ছিলেন। শুধুমাত্র এই কারণেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। গত ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনাকীর্ণ ক্যাম্পাসে আমরা দুজনে হামলার শিকার হই। অভিজিৎকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমি কোনোক্রমে বেঁচে যাই।
তাঁর স্ত্রী, একই ধারার লেখক এবং একজন মুক্তচিন্তক হিসাবে, আমি এই পৈশাচিক সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা করি। ঐতিহাসিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হচ্ছে সকল প্রগতিশীল আন্দোলনের কেন্দ্রভূমি। অভিজিৎ নিজেও এই ক্যাম্পাসেই বেড়ে উঠেছে। মৃত্যুর হুমকি থাকা সত্ত্বেও আমরা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারি নি যে, এরকম একটা জঘন্য অপরাধ এখানে সংঘটিত হতে পারে। এই অপরাধ শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ছিলো না, ছিলো বাক স্বাধীনতা এবং মানবতার বিরুদ্ধে।
আমি আর অভিজিৎ যখন নৃশংসভাবে আক্রান্ত হচ্ছি, স্থানীয় পুলিশ খুব কাছেই নিষ্ক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো। এখন আমাদের দাবি, যে করেই হোক খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকার তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করুক। আমি মনে করি না যে, শুধুমাত্র খুনিদের ধরাটাই যথেষ্ট। আমি সরকারের প্রতি সন্ত্রাস নির্মূলের জন্য আবেদন জানাই, সেই সাথে লেখক-হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় না আনার যে আইনী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা বন্ধ করার দাবি জানাই।
আমি যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে তার প্রতি সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং আমাদের সাথে এক হয়ে সুবিচার দাবি করার আহবান জানাচ্ছি।
– রাফিদা বন্যা আহমেদ
অভিজিৎ রায়কে নিয়ে আপনি (বন্যা আহমেদ) যখন বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন নিশ্চয়ই রিটার্ন টিকেট কিনেছিলেন। সুতরাং যতদিন বাংলাদেশে থাকবেন ততদিন কি কি করবেন বা কোথায় কোথায় যাবেন তার একটা কর্মসূচিও করে নিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশে থাকাকালীন আপনাদের নিরাপত্তার জন্য কি কোনো ব্যবস্থা নিয়েছিলেন?
জেনেছি অভিজিৎ রায় তাঁর লেখালেখির কল্যাণে অনলাইনে কয়েকবার খুনের হুমকি পেয়েছিলেন। আপনারা কি কোনো জিডি করেছিলেন? এখনতো অনলাইনেও জিডি করা যায়। বা বাংলাদেশে পৌঁছে কোনো জিডি করেছিলেন? আমেরিকার নাগরিক হিসেবে আপনাদের দূতাবাসকেও জানাতে পারতেন। মুক্তমনা বা আপনাদের আত্মীয়-স্বজনদের আট-দশ সঙ্গে নিয়েওতো ঝুকিপূর্ন স্থানে যেতে পারতেন।
অভিজিৎ রায় নাকি হুমকিকে তেমন পাত্তাই দিতেননা। বিশেষ করে বইমেলা প্রাঙ্গণে তাঁর কেউ ক্ষতি করতে পারে তা উড়িয়ে দিতেন। বলতেন আমি এই এলাকায় বড় হয়েছি এখানে আমার কে কি করবে?
অভিজিৎ রায় তাদের ব্যাপারে উদাসীন থাকলেও তারা কিন্তু ঠিক ঠিক খোঁজ খবর রাখতো, অভিজিৎ রায় কবে দেশে আসবেন, কোথায় কখন তিনি থাকবেন। অপারেশন Light Off সাকসেস করে কীভাবে ডেরায় ফিরে যাবে। সবকিছুই রিহার্চাল করে রেখেছিলো। এবং পেশাগত দক্ষতার সাথেই মিশন সফল করেছে।
ড. হুমায়ুন আজাদের নির্মম পরিণতির উদাহরণ যাঁর সামনে, তাঁর পক্ষে বইমেলা প্রাঙ্গণ বা তার আশপাশ, বার বার খুনের হুমকি পাওয়া মুক্তমনার প্রতিস্ঠাতার নিরাপদ ভাবা আল্লাহর কমান্ডোদের সামর্থ্য-কৌশল-খুঁটিরজোর সম্পর্কে চরম অজ্ঞতারই পরিচায়ক। ভুললে চলবেনা বাংলাদেশস্থ সাবেক ইউ.এস.এ রাস্ট্রদূত হ্যারি কে টমাস জামায়াতে ইসলামী করতেন এবং মি. মর্জিনা বিষদল করতেন।
যুদ্ধে নামলে শত্রুর শক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা আবশ্যক। আল্লাহর কমান্ডোরা সি.আই.এ.-মোসাদ-আই.এস.আই’র ট্রেনিংপ্রাপ্ত। মিশন সফল করতে যতদরকার তত রুপিয়া ব্যয় করতে পারে। পঁচিশ মিলিয়ন ডলারে ইউ.এস.এ. তে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করতে পারে।
আর বিচার? দেশের প্রেসিডেন্ট সপরিবারে-আত্নীয়-পরিজনসহ খুন হন। নয়া প্রেসিডেন্ট ইনডেমনিটি এ্যাক্ট পাস করেন, ‘জনস্বার্থে’ বিচার করে জনঅসন্তুষ্টি করা যাবেনা। রাতের বেলাতেও সানগ্লাস পরা প্রেসিডেন্টের আদর্শের দল মুক্তমনাদের খুনের এবং খুনের হুমকিদাতাদের পৃষ্ঠপোষক। সুতরাং কেউটে খুঁজতে গিয়ে আনাকোন্ডার লেজ দেখেই খোঁজা থেমে যাবে। মূলকথা নিজের নিরাপত্তা আগে নিজেকেই নিতে হবে। সরকার বিচার করবে তার রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতি হিসাব করেই।
সাতাশ লাখ মামলা বিচারাধীন। মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। দেরীতে বিচার না-বিচারেরই নামান্তর। ড. হুমায়ুন আজাদের হত্যা মামলা দ্রুত-বিচার আদালতে নথিভুক্ত হয়না। তাঁর ছেলেকে জার্মানিতে পালিয়ে যেতে হয়। স্বরাস্ট্র প্রতিমন্ত্রী দক্ষতা প্রমানের পুরাস্কার-প্রমোশন পেয়ে পূর্ণ মন্ত্রী হলেন। প্রশাসনের কেউ ড. হুমায়ুন আজাদের পরিবারে খোঁজ নিয়ে জানেননি কারা হুমকিদাতা।
মুতাজিলা, শিখাগোষ্ঠী টিমটিম আলোর বেশী কিছু দিতে পারেনি। কারণ রাস্ট্রশক্তি তাদের সহয়োগীতা করেনি। আলোকিতরা পাঁচটি আলো জ্বালালে মানবতাবিরোধীরা জ্বালাতো পঞ্চাশটি অন্ধকার। কামাল আতাতুর্কের টার্কি এখন অশান্তিবাদীদের দখলে। কারণ তার আদর্শ ছোটোদের পাঠ্যপুস্তকে বাধ্যতামূলক পাঠ্য করতে পারেননি।
মুক্তমনা অনেক আলো জ্বালছে, জ্বেলেই যাচ্ছে নিরন্তর। কিন্তু আলোগুলো আরো আরো ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। আরো দ্রুত বেগে, অন্ধকার ছড়ানোর চেয়ে বেশী বেশী পরিমাণে বেশী দ্রুতগতিতে। বাংলার প্রতিটি কোণে কোণে। মুতাজিলা, শিখাগোষ্ঠীর সময় মোবাইলফোন, ইন্টারনেট ছিলোনা, মুক্তমনার সময়ে আছে। পড়ুয়ারা যাতায়াত করে (স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, লাইব্রেরী, বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্র, ছায়ানট, আজিজ সুপার মার্কেট) এমনসব স্থানে visit https://blog.mukto-mona.com স্টিকার লাগানো যেতে পারে। অভিজিৎ রায়ের উদ্দেশ্যে সফল হোক।
Though I am not aware of writings of Abhijit for any one of his book is not readily available in Book Stalls in Kolkata but I am sure all he honestly wanted a democratic condition of society where every one is not scared to speak out his/her thought without any bondage. We know very well that in Bangladesh Mushlim Fundamentalists are ruling the country in each sphere of society. Even regarding Bangladesh-India Cricket play it is beyond imagination how much hatred can be exposed through electronic media against not only Indian team but also against India . The score of filthy languages used in a blog Indian Tarao is making doubt about the The Intention making such provocation against
a neighbour country. So this people always try to break communal and religious harmony in a country which will be harmful for their society.They Bangladeshi Taliban it is sure and radical peoples of this country are scared to raise voice against this inhuman being.
I must show my solidarity with Sister Bannya and some day this country will be totally freed from any type of fundamentalists I hope.
অভিজিৎ আমাকে ক্ষমা করো, তোমার মৃত্যু আমাকে অপরাধী করেছে।
বছরের শুরু থেকেই চলমান অস্থির রাজনৈতিক সংকটের প্রভাবে কিছুই লেখা হয়নি। আজই প্রথম লিখতে বসলাম ভীষণ শোকাহত হৃদয় নিয়ে। প্রায় একমাস হতে যাচ্ছে অভিজিৎ কে কাপুরুষের মতো পেছন থেকে নৃশংসভাবে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে রক্তাক্ত আহত করা হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি বা তদন্তের কোনো অগ্রগতি কোনোটাই দেখতে না পেয়ে তেমন আশ্চর্য হইনি কারণ এদেশে এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু আশ্চর্য হয়েছি তখন, যখন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটিবারের জন্যও অভিজিতের নামটি পর্যন্ত উচ্চারণ করলেন না (করেছেন কিনা আমার জানা নেই)। বাড়িতে গিয়ে পুত্রহারা বাবাকে শান্তনা দিলেন না।
গত মাসের ২৬ তারিখ রাত সাড়ে দশটায় টিভিতে এই খবর জানার পর আমার সমস্ত শরীর কেমন অবশ হয়ে গেছিল। দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছিলাম। শোকে স্তব্ধ হতবিহ্বল। কতক্ষণ ওভাবে ছিলাম জানিনা তবে বেশ কিছুক্ষণ। যখন সন্বিৎ ফিরে পেলাম দেখি আমার ঠোঁট কাঁপছে, চোখ অশ্রুশিক্ত, কেমন ঝাপসা চারিধার। এক বন্ধুকে মোবাইলে খবরটি দিয়ে চোখ মুছে রিমোট টিপে খবরের চ্যানেলে দিলাম। বলছে অভিজিতের মৃত্যুর কথা, হামলার কথা। অভিজিতের মৃত্যু সংবাদ আমাকে কী ভীষণ নাড়া দিয়ে গেল? কেন মনে হয়েছে, কেন নাড়া দিয়েছে? কে হয় আমার অভিজিৎ? আমি তো তাকে চিনিও না। দেখিওনি কখনও আর কথা হওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। অভিজিতের বাবা অজয় রায়ের লেখার সাথে আমার কিঞ্চিৎ জানা থাকলেও এই অভিজিৎই যে ওনার ছেলে তাও জানা ছিল না। কেন অভিজিতের মৃত্যু আমাকে অপরাধী করে দিল? কেন নিজেকে একজন অভিজিতের মতই ভাবছি? কারণ একটাই আর সেটা হলো অভিজিতের চিন্তা, চেতনা, ভাবনা, উপলব্ধিবোধ, মনুষ্যত্বজ্ঞান, বিশ্বাস এসবই আমারই মনের প্রতিফলন। পরদিন দেশজুড়ে যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে রাজপথে এবং অনলাইনে তখন নিজেকে দারুণ অসহায় মনে হয়েছে। বিপন্ন মানুষের মতো নিঃশ্চুপ বসে থেকেছি। একটি শব্দও লিখতে পারিনি। টিভির সংবাদ শুনেছি আর সেই পৈচাশিক নারকীয় তান্ডব দৃশ্য দেখতে হয়েছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও। রক্তাক্ত অভিজিৎ পড়ে আছে রাজপথে আর তার স্ত্রী রক্তাক্ত শরীরে হাত উঁচিয়ে সাহায্য চাইছে। পাশেই কত মানুষের ভীড়। একজনও তো এগিয়ে গেল না আরেকজন মানুষকে প্রাণে বাঁচাতে। আরও অবাক ব্যাপার অনতিদূরেই অবস্থান করছে একটি রাষ্ট্রের আইন শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যরা। তারা কী রক্ষা করলো? এই হচ্ছে আমার স্বদেশ। এই স্বদেশকেই কী ভালোবেসে সূদুর আমেরিকা থেকে বইমেলা প্রাণের মেলা দেখতে এসে নির্মমভাবে জীবন দিয়ে গেল? কবি নবারুণ ভট্টাচার্য যেমন বলেছেন, এই মৃত্যু উপত্যাকা আমার দেশ না, এই রক্তাক্ত কসাইখানা আমার দেশ না, এই জল্লাদের উল্লাস মঞ্চ আমার দেশ না। আর হুমায়ুন আজাদের “সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে”। আমারও আজ কেবল এসবই মনে হচ্ছে। ঘুম আসে না, চোখের সামনে ভেসে ওঠে রক্তাক্ত শরীর। কী অসহ্য যন্ত্রণা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আমার মস্তিস্ক। বেশ কদিন মস্তিস্ক বিভ্রাট অবস্থায় কেটেছে। সময় যেমন সবকিছু স্বাভাবিক করে দেয় তেমনি আমিও এখন অনেকটা স্বাভাবিক। কিন্তু বুকের মধ্যে যে ক্রোধ, ক্ষোভ, প্রতিহিংসার আগুন জ্বলে উঠেছে তা নিভাবো কি করে? মস্তিস্কের নিউরনের অভ্যন্তর থেকে প্রচন্ডতম এক তাগিদ অনুভব করলাম কিছু একটা লেখার। তাই বড্ড দেরি হয়ে গেল। আমাকে ক্ষমা করো অভিজিৎ।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন শাহবাগে তারুণ্যের আন্দোলন শুরু হলো। জয় বাংলা শ্লোগানে নতুন প্রজন্মের জাগরণের ঢেউ উঠলো। ঠিক তখনই সেই ঢেউয়ে আমিও উত্থিত হলাম। মনে জাগিল দোলা। ফেসবুকের মাধ্যমে প্রকাশ করলাম একাত্ততা। নেমে পড়লাম সাইবার যুদ্ধে। লেখার চেয়ে লাইক, পোষ্ট ও শেয়ার করতাম বেশি বেশি। মাঝে মধ্যে দুএকটি কমেন্ট। আমি প্রচার বিমুখ মানুষ। নিভৃতে কাজ করাই আমার স্বভাব। হঠাৎ ফেসবুকে একদিন ‘মুক্তমনা’ শব্দটির উপর চোখ পড়তেই আটকে গেল। ভালো করে পড়ে বুঝলাম ‘মুক্তমনা’ একটা ভিন্ন সাইট। যার লিংক দেয়া আছে। লিংকে ক্লিক করতেই অন্য ট্যাবে পেইজটি খুলতে শুরু করেছে। একসময় মুক্তমনার হোম পেজ চলে এলো। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবকিছু পড়লাম দেখলাম। সদস্য হওয়ার নিয়ম জানলাম। পেজের পাশেই বিষয়ের তালিকা থেকে ‘ধর্ম বিষয়ে বোকা মেয়ের ৬০টি জিজ্ঞাসা’ শিরোনামের লেখাটিতে ক্লিক করতেই লেখাটি চলে এলো। পড়তে শুরু করলাম। শেষ হওয়ার পরে নিচে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত দিয়েছে সেগুলোও পড়তে আরম্ভ করলাম। বেশ মজা পেলাম। চিত্তে দারুণ এক অনুভূতি সৃষ্টি হলো। তারপর থেকে প্রতিদিনই মুক্তমনার একজন একনিষ্ঠ পাঠক হয়ে উঠলাম। পাঠক হয়ে উঠতে উঠতেই বেশকিছু নামের সাথে পরিচিত হলাম। অভিজিৎ রায়, বিপ্লব পাল, সুব্রত শুভ, গীতা দাস, অনন্ত বিজয়, ফরিদ আহমেদ, ওয়াহিদ রেজা, স্বপন বিশ্বাস, রায়হান আবীর, দিগন্ত সরকার, সৈকত চৌধুরী আরও কত নামের সাথে নিজেকেও একাকার করে ফেললাম। এরা সবাই আমার বিশ্বাসের বন্ধু। আলো হাতে আধারের যাত্রী। মনে পড়ছে, দুএকদিন ছোট করে হলেও মন্তব্য লিখেছিলাম মাত্র। পিডিএফ ডাউনলোড করে শুধু পড়েই গেছি একভাবে। কত অজানা যে জেনেছি, কত ভ্রান্ত ধারণার যে অবসান হয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। যতই জেনেছি আর ততই আমার চিন্তা, চেতনার উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে আর বিশ্বাস হয়েছে আরও দৃঢ় বলিষ্ঠ। নিজেকে আবিস্কার করেছি একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে। অভিজিত আমার চেতনার নাম, অভিজিৎ আমার বিশ্বাসের নাম। রক্ত মাংশের অভিজিতের মৃত্যু হলেও তার বিশ্বাসের মৃত্যু হয় নাই, হবেও না কোনো কালে। বরং অভিজিৎ মরে গিয়ে হাজার লক্ষ অভিজিতের জন্ম দিয়ে গেছে। স্যালুট অভিজিৎ, তোমার মৃত্যু নেই। তুমি কালপুরুষ হয়ে থাকো। আমরা জেগে থাকবো তোমার বিশ্বাসকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেবার জন্য। তুমি নীরবে, নিভৃতে, নিশ্চিন্তে ঘুমাও।
-বায়েজীদ বাঙালি জর্জ
১৯.০৩.২০১৫ বৃহস্পতিবার
এগিয়ে যান। পাশে আছি।
May I ask Banya Ahmed to write some details about that fateful day? Maybe she can address some of these questions: 1) what were the purposes of the trip to Bangladesh, 1) what did Avijit do on that fateful day in the Bangla Academy, 2) who were there with him, 3) what they were discussing with Avijit, and 4) what was the purpose of the walk along the foot-path at night?
Also, I heard one individual commented to Banya – ‘you both wore red dresses today; you both look so good in red dresses …, and he took some pictures of both of them. Is this information correct? If correct – how did this person know Avijit and Bannya?
বাংলাদেশে এ কোন কিছুর এই বিচার হয় না। সাগর-রনি, ফারুকি থেকে শুর করে অনেক আছে। আমার কাছে মনে হয় FBI তেমন কিছু করবে না। এইতা জাস্ট লোক দেখানু। বাস্তবতা তাই। এইটাও মানুষ ভুলে যাবে। যেমন তা সাগর-রনি এর বেলাই !!
কত বছর লাগবে খুনিদের ধরতে? আদৌ কি মৌলবাদীদের দেশে অভিজিৎ দাদা হত্যার বিচার হবে? সন্দেহ হয় আমার। সত্যি খুবই সন্দেহ হয়।
থাবা বাবা খুনের বিচারের মতই অনিন্দ সুন্দর বিচার পাওয়ার ওপেক্ষায় আছি
I share unequivocally with you in demanding justice for Avijit’s murder.
I haven’t met Avijit, but I knew Dr A K Roy as my senior colleague (I was a Senior Lecturer at the Applied Physics Dept) of DU during the last few years of Pakistan. On hearing Avijit’s death, I felt that I lost a very good friend of mine. In the English blog, I posted the article ‘Brutality of religious fanatics’ within two days of his death.
Nothing will make me more happy than seeing the murderers of Avijit brought to book and punish properly.
অভিজিৎ হত্যার বিচার চাই
ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ চাই
অভিজিৎ রায় শুধু একজন মুক্তচিন্তার লেখকই ছিলেন না তিনি ছিলেন একজন সফল সংঘটক । একটি ব্লগের মাধ্যমে তিনি যে ভাবে মুক্তচিন্তাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন এই কাজটা বাংলাদেশে এ পর্যন্ত কেউ পেরেছেন বলে আমার মনে হয় না । এত কম বয়সে এটা একটা বিরাট সফলতা আর সফল মানুষদের কোন মৃত্যু নেই ।
বন্যা আহম্মদ, আপনি যা হারিছেন তা হয়তো আপনি কখনও ফিরে পাবেন না কিন্তু একথা বলতে পারি অভিজিৎ আপনাকে এই পৃথিবীতে একা রেখে যায়নি । তিনি আপনার চারিদকে রেখে গেছে এক ঝাক অনুসারী যারা আপনাকে সবসময় ঘিরে থাকবে, আপনি নির্ভয়ে এগিয়ে যান ।
এফবিআই প্রযুক্তির সহায়তায় জানিয়েছিলো অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডের সময় তাঁর চারপাশে ৫৩ টি মোবাইল এক্টিভ ছিলো। ইএমআই নাম্বার ব্যাবহার করে তাঁরা এটি সনাক্ত করেছে বলে জানা যায়। সেই বিষয়ে আর কি অগ্রগতি জানা যায়না। অপেক্ষায় আছি।
এটা যদি এফবিআই বের করতে পারে তবে এটাও বের করা সম্ভব যে, ছায়াবীথি’র সামনে অভিজিতের মোবাইলের পাশে আর কোন কোন নাম্বার এক্টিভ ছিলো। এই দুই লিস্টের মাঝে সাদৃশ্য আছে কোন কোন নাম্বারে। সাথে দেখা যেতে পারে ঐ নির্দিষ্ট এলাকায় (অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের আশপাশের এলাকা) কোন নাম্বার যুগলে ঐ নির্দিষ্ট সময়ে বারে বারে যোগাযোগ হয়েছে (প্রযুক্তির সহায়তায় টাওয়ারকে ভিত্তি ধরে মোবাইল অপারেটর থেকে এটি বের করা অসম্ভব নয়)। সাধারণ নাম্বারে এক-দুইবারের বেশি যোগাযোগ হবার কথা নয়।
অজয় স্যার অকারণে কথা বলার লোক নন। অবেগের বশবর্তী হয়ে ভুলভাল বলার লোকও নন। যেহেতু ঐ মিটিংকে ফোকাস করছেন তাই গোয়েন্দাদের উচিৎ সিরিয়াসলি বিষয়টি দেখা।
ফারসীম মান্নানের ফেসবুকের স্ট্যাটাস থেকে যা জানা যায় সেটা হলো
* অভিজিৎ এই বৈঠকের ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন
* আলোচনায় অংশ নেয়া সবাই অভিজিতের পরিচিত ছিলেন
* অভিজিৎ ঐ বৈঠকে কিছুই বলেন নি।
কী দাঁড়ালো? যেই বৈঠকে অভিজিৎ আগ্রহী ছিলেন, যেই বৈঠকে সবাই অভিজিতের পরিচিত সেই বৈঠকে অভিজিৎ কিছু বলেননি। কেন? যারা অভিজিতকে চেনে সবাই জানে তিনি কী পরিমাণ আড্ডাবাজ ছিলেন এবং সেন্স অব হিউমার কতোটা প্রখর। হিসাব মিলছেনা। কিছুতেই মিলছেনা।
অজয় স্যারের বক্তব্য সিরিয়াসলি নেয়া উচিৎ বলে মনে করি, এখানেই কিছু একটা বেরিয়ে আসবে। ফারসীম মান্নান জড়িত আমি সেটা মনে করিনা। কিন্তু ওনাকে ব্যবহার করে কারা এখানে জড়ো হয়েছিলেন দৃশ্যতঃ এবং অন্তরালে, সেটা বেরিয়ে আসলে অনেক জট খুলবে আসা করছি। প্রযুক্তি একটা বড় সহায় হতে পারে। অকারণে ফারসীম মান্নানকে জটিলতায় জড়ানোরও অবকাশ নেই। যেমনটা হুমায়ুন আজাদ হত্যাকাণ্ডের সময় শরিফুল হাসান জড়িয়ে পড়ছিলেন প্রায়।
সেল্যুট অভিজিৎ, আমার শিক্ষক!
অভিজিৎ আর বন্যার মত সাহসী মানুষেরা যুগে যুগে সৃষ্টি হয়েছে বলেই পৃথিবীতে প্রগতির চাকা এখনো বন্ধ হয়ে যায় নি ! এখনো মানব সভ্যতা আর সংস্কৃতি বিকশিত হচ্ছে নিরন্তর ! যদিও পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এগুচ্ছে ধীর লয়ে তবুও শত বাঁধা- বিপত্তির মাঝেও, ধর্মান্ধগোষ্ঠির বর্বরোচিত হত্যাকান্ড আর সন্ত্রাসের মাঝেও বাংলাদেশেও প্রগতির চাকা থেমে নেই সেটাই বা কম কি?
অভিজিতের রক্তের ঋণ শুধিবার তরে বাংলাদেশে এখনো লক্ষ লক্ষ তরুণ অভিজিতের রেখে যাওয়া আলোর মশাল হাতে এগিয়ে আসছে ! বন্যা, আপনি এই লক্ষ তরুণ-তরুণীর আলোর মিছিলের অগ্রভাগে থাকবেন এই আত্মবিশ্বাস আছে আমাদের সকলের ! আপনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন, আপনার জন্য আমাদের সকলের এই আন্তরিক শুভ কামনা ! সত্যের জয় অনিবার্য !
“উদয়ের পথে শুনি কার বাণী
ভয় নাই ওরে ভয় নাই !
নি:শেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তাঁর ক্ষয় নাই” !!
I whole heartedly want that your two wishes (as mentioned in the title of the post) are fulfilled. I don’t want to dishearten you; but fulfillment of your wishes need a very steep and long uphill journey.
আমি এ নিয়ে অসঙ্খবার শুনলাম আপনার এ সাক্ষাৎকার টি….
আন্দোলন চলবে বন্যা পি…
ধর্মমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন …
আমাদের সামনে হাঁটার রাস্তা ওরা খুববেশী করে তৈরী করে দিয়ে গেলো এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে…
“ধর্মমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন …”
সন্দেহ হয় এ আন্দোলনের ডাকে। “ধর্মমুক্ত” বাংলাদেশ কেন? সন্ত্রাস মুক্তি এবং ধর্মনিরপেক্ষতা কি যথেষ্ট নয়? ধর্মমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন আর ধর্মীয় সন্ত্রাসযুক্ত বাংলদেশ গড়ার আন্দোলন – দুটোর উদ্দেশ্য কিন্তু সাধারন জনগনের ব্যক্তিগত ও নিজস্ব ধর্ম বিশ্বাস ও অনুভূতিতে আঘাত করা। কেউ নিজে ধর্মে বিশ্বাস করে না বলে অন্যের আন্তরিক ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুভূতিতে আঘাত করা কি নৈতিক কাজ হবে?
এটা খুবই মর্মান্তিক যে এমন একটি ঘঠনা ঘটল – তাও আবার বাংলাদেশে। বাংলাদেশ সরকার (সে আওয়ামী সরকার হোক বা বি.এন.পি. বা অন্য কেউ হোক) সব সময় দেশটিকে সন্ত্রাসমুক্ত এবং সমপ্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বলে প্রচার করে। অথচ সন্ত্রাসীরা সেখানে অবাধে, নির্বিঘ্নে এবং নির্ভয়ে সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। তা না হলে এমন একটা হত্যাকান্ড ঘটল জনবহুল এলাকায় অথচ আজও পর্যন্ত তার কোন সুরাহা নেই। তাছাড়া এটাইতো প্রথম ঘটনা নয় – এর আগেও ঘটেছে এমন মর্মান্তিক ঘটনা। কোন তদন্ত বা বিচারই হয় নি তার। সরকার কি অযোগ্য, নাকি অক্ষম? অথবা আছে কি এ সদিচ্ছার অভাব?
নির্ভয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবারই থাকা উচিৎ। হতে পারে অভিজিৎ রায়ের লেখা অনেকের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছিল। তাই যদি হবে, তবে প্রচলিত আইনের আওতায় তার ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তাই বলে এমন একটা ঘটনা ঘটানো? কোন ধর্মপ্রাণ মানুষ নিশ্চয় কাউকে এমন নির্মম ভাবে কাপুরুষের মত হত্যা করতে পারে না। যারা এ কাজ করেছে তারা ধর্মপ্রাণ মানুষ নয়, তারা অন্ধকারের মানুষ, তারা সন্ত্রাসী। এদের বিচার হওয়া দরকার এবং যেন এমন ঘটনা বাংলাদেশের মাটিতে আর না ঘটতে পারে তার ব্যবস্থা করা। যারা সরকার চালাচ্ছেন তাদের সে সৎসাহস এবং সদিচ্ছা আছে কি?
আমরা আপনার সাথে আছি। জেগে উঠেছি, কলম চলছে এবঙ চলতেই থাকবে।
আপনারা যারা প্রবাসি বা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন, জেনে রাখুন যে ওয়াশিংটন-ডিসিতে অভিজিতের স্মরণে একটি মহাসমাবেশ হবে ২১ মার্চ দুপুর ৩টা ড্যুপন্ঠ সার্কল ময়দানে।
অভিজিত রায়কে হত্যার মধ্য দিয়ে আমরা জেগে উঠেছি আরো তীব্রভাবে। এতেই প্রমাণ হয় হত্যা করে কখনও মুক্ত চিন্তাকে থামিয়ে দেয়া যাবে না। অভিজিত রায় হত্যার বিচার চাই।
সাথে আছি
এখন যতটা ভেতর থেকে তীব্রভাবে বলছি, দুই বছর আগে যখন মুক্তমনার সাথে প্রথম পরিচয় বা পড়া শুরু করেছি তখন এত তীব্র ছিল না এই বোধ। এখন জানি আগামী দিনের জন্য আজই আমাকে কথা বলতে হবে।
আমি জানি কিছুতেই এই অভাব পূরণ হবার নয়, যে যতই বলুক লক্ষ অভিজিতের জন্ম হবে। প্রতিক্রিয়াশীলেরা আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং সংঘবদ্ধ।
আমরা অভিজিৎ হত্যার বিচার চাই।
বন্যা আপু আমরা সবাই আপনার সাথে আছি। আজ অভিজিত দা আমাদের যা দিয়েগেছেন তার জোর করে কণ্ঠ রোধ করা যাবে না।
অভিজিতের আত্মদান বৃথা যাবে না, যেত দেব না।
ডঃ অভিজিৎ রায় আমাদের মাঝেই আছেন! কোনদিনও উনি হাড়াবেন না। যে দীপশিখা তিনি জ্বেলেছেন, সে শিখা অনির্বাণ! আমার ভেতরের একটা সত্ত্বা আজ প্রতিশ্রুতিশীল, আর নিশ্চল হবোনা। যে আলোয় আমরা প্রদীপ্ত, যেটি আমাদের চলার পথ; সে পথে শ্বাপদের ভয় আছে বটে তবে ওরা আলোকে ডরায়!
এই হত্যার পিছনে এমন কেউ আছে যে পুলিশের ওপর কাপ্তেনি করতে পারে. সেই জন্যই পুলিস কোনো বাধা দেয় নি. এর পিছনে কোনো বড় মাথা আছে. ফারাবী তো একটা পুতুল মাত্র। সম্ভবত বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনের মধ্যেকার কেউ আছেন.
আমরা আছি, আপনার পাশে সব সময়।
অন্যায়, অজ্ঞানতা, কুসংস্কার আর ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে এই লড়াই-এ মুক্তমনার পাশে আছি।
মানুষ চলে গেলেও তার চিন্তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে যায়। অভিজিৎ দার মৃত্যু আমাদের জন্য কতোটুকু ক্ষতিকারক তা হয়তো আমরা নিকটবর্তী ভবিষ্যতে হাড়ে হাড়ে টের পাবো। তার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের অবশ্যই বিচারের আওতায় এনে সাজার ব্যবস্থা করতে হবে । কিন্তু এটা কি আদৌ সম্ভব নাকি প্রতিবারের মতোন এবারও আমরা দাবী-দাওয়া, মিটিং-মিছিল, সভা-সেমিনার করে একসময় ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে যাবো। আর হত্যাকারীরা আমাদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে সোনালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে ?
“হত্যাকারীরা আমাদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে সোনালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে?” – সে হবে কেমন করে? হত্যাকারীরা সোনালী বাংলাদেশ গড়তে চাইছে কি? না কি ওদের উদ্দেশ্য ভিন্ন?
” অভিজিৎ-কে হত্যা করে ঘাতকরা তার সৃষ্ট আন্দোলন ও আদর্শকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো, কিন্তু আমি আপনাদের এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে সেখান থেকে আমি বা আমরা কেউই পিছিয়ে আসবো না। ”-
যদি এই দেশের উপর রাগ করে, আমাদের উপর রাগ করে , নিরাপত্তার খাতিরে সরেও আসতেন তবুও কোন অভিযোগ বা অভিমান দেখানোর অধিকার আমাদের থাক্তনা। এত কিছুর পরেও আপনি লিখে যাবেন এবং অভিজিতদা কে এভাবেই আমাদের মাঝে বাচিয়ে রাখবেন এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নাই আমাদের। সুস্থ হয়ে উঠেন এই এক্টাই কামনা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ বন্যা আপাকে…
”রেস্পেক্ট”
সাথে আছি।
“মুক্তি আসুক যুক্তির পথে।” – অভিজিত রায়
বিচারের বাণী যেন আর নিভৃতে না কাঁদে। এই মর্মান্তিক শোককে আমরা শক্তিতে পরিণত করবো। এবং আমাদের কলম চলবেই আরো জোরদার ভাবে।
যাক, ভরসা পেলাম আপনি হাল ধরবেন শুনে।।দাদার স্মরণে আমরা কোন মুক্তমনা ভাস্কর্য বানাতে পারি কিনা বিবেচনা করবেন।। আর হে, এই আত্মত্যাগ আমাদের বলিয়ান করেছে, এতটুকু বলতে পারি।
আমরা জেগে আছি। কলম চলবেই।
প্রতেক মানুষের একটা Incredible power আছে যা বিশ্বাস দিয়ে অর্জন করা সম্ভব সত্যতা যাচাই করে না ৷
আপনার সাহস আজ সংক্রমিত আমার, এবং আমি নিশ্চিৎ, আমার মত আরো অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে। অামরা অভিজিৎ রায়কে হারানোর অপূরণীয় ক্ষতিটিকে রুপান্তর করবো তাঁর প্রতি বাংলাদেশের সব মুক্তমনাদের ভালোবাসা আর সংগ্রামের স্মৃতি স্মারকে।
অভিজিৎ দার হত্যার বিচার চাই আমরা এবং অবশ্যই ধর্ম-নিরপেক্ষ বাংলাদেশ চাই ! আমাদের সংগ্রাম, প্রতিবাদ এবং কাজ সবটাই চলবে । কেউ থামিয়ে বা দমিয়ে রাখতে পারবে না । বন্যা আপু আপনার সাহসের প্রসংশা করছি । আপনার দৃঢ় মনোবলের কোনো তুলনা নেই আমরা পাশে থাকবো ।জয়ি আমাদের হতেই হবে !
“মুক্তমনার অগ্রযাত্রা অভিজিৎ এর আত্মদানের মাধ্যমে আরো গতিশীল হবে। আমরা তার মৃত্যুতে যেমন গভীরভাবে শোকাহত, ঠিক একইভাবে আমরা তার বুদ্ধিদীপ্ত জীবনকে উদযাপন করতেও দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা আছি অভিজিৎ এর পাশে, তার আদর্শকে বুকে ধারণ করে।”
সম্পুর্ন ভাবে সহমত। এখন আমাদের খুব কাছাকাছি থাকবার সময়। প্রগতি আর সত্যের জন্য যা কিছু করা সম্ভব; অকৃপণ ভাবে সেগুলোর সবটাই করবার সময় । সবাই ভালো থাকুন।
অভিজিৎ রায় হত্যার বিচার চাই।।
ধর্ম-নিরপেক্ষ বাংলাদেশ চাই।।
মুক্ত মত প্রকাশের পূর্ণ অধিকার চাই।।
নিরাপত্তা চাই।।