ধনঞ্জয় দেশাই। এবারের হিন্দু শৌর্য্য পুরস্কার প্রাপক। তার “হিন্দু বীরত্বের” গল্প? গত জুন মাসে মোসিন সাদিক নামে এক তথ্য প্রযুক্তি কর্মীকে এই মহান হিন্দু বীর হকি স্টিক দিয়ে খুন করে। থুরি, মোসিন সাদিক একজন মুসলমান। মুসলমানরা আবার ভারতে বাঙালী, মারাঠি, ভারতীয়, তথ্য প্রযুক্তি কর্মী হয় না -ভারতে মহামানবের মিলনস্থলে, তাহারা শুধুই মুসলমান। তাদের নেতারা, হিন্দুরা সবাই বলে তারা মুসলমান! তারা ভারতীয়, বাঙালী, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হতে চাইলেও, তাদের গলাধাক্কা দিয়ে সবাই বোঝাবে তারা মুসলমান।
আমি জানি এই পোষ্ট দেওয়া মাত্র, দুজন নিরীহ ক্লজেট হিন্দুত্ববাদি লিখবে দাদা আপনি মেহদি মসরু বিশ্বাসকে নিয়ে লিখলেন না ? শালার মুসলমানটা দেশে বসে আই সি সের টুইটার একাউন্ট চালাচ্ছে, জিহাদি রিক্রট করছে!! ধনঞ্জয় দেশাই জাস্ট একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা!! মুসলিমদের আই সি সিস জিহাদি হওয়াটা কিন্ত ভারতের নিরাপত্তার জন্য বিরাট একটা রিস্ক!
প্রশ্নটা হচ্ছে দুটি ক্ষেত্রেই দেখা উচিত, সাধারন হিন্দু বা মুসলমানরা এই ধনঞ্জয় দেশাই বা মেহদি মসরু বিশ্বাসকে কি চোখে দেখছে। মসরু বিশ্বাস কিন্ত তারা বাবা মাকে বলতে সাহস পায় নি সে জিহাদি। সে যা করেছে লুকিয়ে। পরিস্কার ভাবেই তার ফ্যামিলি, সমাজ তার পাশে ছিল না । হ্যা, কিছু বিভ্রান্ত মুসলমান যুবক অবশ্যই তার পাশে আছে নিশ্চয়। কিন্ত ধনঞ্জয় দেশাইকে দেখুন! মহারাষ্ট্রের সব হিন্দু সংগঠন গুলি তার বীরত্বের জন্য পুরস্কার দিচ্ছে!!
ক্লোজেট হিন্দুত্ববাদিরা আবার লিখবেন কেন ওসামা বিন লাদেনের সাপোর্ট বেস কি ভারত বা বাংলাদেশের মুসলিমদের মধ্যে নেই ? নিশ্চয় আছে। আমি নিজেই দেখেছি আজকালে প্রকাশিত হয়েছে সেসব প্রবন্ধ। ওসামাকে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বীরযোদ্ধা হিসাবে চালানোর চেষ্টা হয়েছে ভারতের বাম-মুসলিম এক্সিসে। ঠিক যেমন ধনঞ্জয়কে দেখানো হচ্ছে ইসলামের আগ্রাসী ধর্ম-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বীরযোদ্ধা। কি বীরত্ব সেত আপনারাই দেখলেন-এক নিরীহ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীকে হকি স্টিক দিয়ে পেটানো!! ওসামা বিন লাদেন ধনঞ্জয়ের বড় ভাই। উনি হাজার দুয়েক সাধারন আমেরিকানকে খুন করেছিলেন মাত্র!
ধর্ম এবং রাজনীতি যখন মনকে কলুষিত করে হৃদয়ের ওপর তার পরিচিতিকে টেনে আনে এমনটা হয়। আজ তাহের ভাই এক অসাধারন গল্প শোনালেন কোরবানীর। তাদের গ্রামে কোরবানীর ভোজনের জন্য সাতটা গরু আনা হয়েছিল। একে একে ছটা গরু কাটা হল কোরবানীর হালাল করে। বাকি ছটা গরুকে একে একে কাটা হল। সপ্তম গরুটা নিজে এসেই শুয়ে পড়ল। যে গলা কাটছিল, সে কিছুক্ষনের জন্য থমকে যায় এই আকস্মিক ঘটনায়। আফটার অল মানুষ ত! হৃদয়ত আছে! সে থমকে দাঁড়ানোয় সমবেত মুমিনদের মধ্যে কলরব ওঠে -আরে একটা গরুর জীবন না ইসমাইলের ধর্ম আগে ব্যাটা আহাম্মক? সে সঙ্গে সঙ্গে চেগে ওঠে-তাইত, সে মানুষ না মুসলমান-তাই সপ্তম গরুটাকে কাটতে হবে!
মোসিন সাদিকের জন্য যদি কোন হিন্দুর হৃদয় না কাঁদে, না কম্পিত হয়-তাকে যদি হিন্দুরা মনে করে ওই তাহের ভাই এর কোরবানীর সপ্তম গরু–আমি বলবো বেসিকে প্রবলেম। আগে মানুষ হৌক, তারপরে হিন্দু হওয়ার চেষ্টা করুক। আমাদের হৃদয়টাকে, সহজাত মানবতাকে ধর্মের কাছে, রাজনীতির স্বার্থে বন্ধক দিলে সেই সুযোগ আরো বেশী করে নেবে ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদরা।
মোদিকে ভারতীয়রা ভোট দিয়েছিল অর্থনীতির পুনঃউদ্ধারের জন্য। কংগ্রসের চুরি ডাকাতিতে তিক্ত বিরক্ত হয়ে। উন্নয়ন ছিল প্রত্যাশা। কিন্ত ভোটের পর ক্রমাগত ভাবে যেভাবে হিন্দুত্ববাদিরা সর্বত্র মুসলমান বিদ্বেশ, বেদে বিজ্ঞান চর্চা এবং মেয়েদের পোষাকের মাপ ঠিক করতে মাঠে নেমেছেন, তাতে পরিস্কার বিজেপির ফোকাস এবং মন নেই উন্নয়নে। কারন তার জন্যে যে রাজনৈতিক এবং আইন সংস্কার দরকার, তা মোটেও করতে দেবে না ভারতের ফরেদার ব্যবসায়ী শ্রেনী-যারা আবার বিজেপির ব্যাকবোন। সুতরাং ক্ষমতায় থাকতে হিন্দুত্ববাদির জিগির ছাড়া উপায় নেই । তবে কিনা, সেটা আবার বাঘের পিঠে চেপে হরিন শিকার। একদিন না একদিন ঐ বাঘটা তার আরোহীকে খাবেই।
মৌলবাদ আমাদের ভারত উপমহাদেশে মহামারী আকারে ধারণ করছে এখানে তারই বহিঃপ্রকাশ।
ধন্নবাদ দাদা খুব ভালো লিখেছেন । ধনঞ্জয় দেশাই এর ঘটনায় আমার খুব ছোটবেলার একটা সৃতি মনে পরে গেলো। আজ থেকে আনুমানিক ২০ বছর আগের কথা। ধান কাটার মৌসুমে ধান কাটতেছিল এমন একজন কাজের লোকের জন্ন আমি ভাত নিয়ে গিয়েছিলাম । ভাত খাওয়া শেষে বিরি ( ধুমপান ) খাবার জন্ন আগুন কোথাও না পাওয়ায় একটু দুরে পাথারের এক পাশে এক হিন্দু বাড়ির উঠানের চুলোয় বিরি আগুনে লাগিয়ে আনায় ঐ বাড়ির কর্তা দেখে ফেলে ।সেই টুকু মাত্র কারনে হিন্দু লোকটি এতোটাই ক্ষীপ্ত হয়েছিল যে , তাকে ধাওয়া শেষে , ঐ চুলোয় রাখা হারী সুদ্ধ ভাত ফেলে দিয়েছিল । তখন থেকেই ধীরে ধীরে বুঝতে পেরেছি হিন্দুরা সব হিন্দুই না কিছু কিছু হিন্দু , গরু খাওয়া মুসলমানদের খুব একটা নিকৃস্ট চোখে দেখে। হয়তো শুধু মাত্র গরু খাওয়ার জন্ন , কারন তখন তো মুসলমানেরা আজকের মত এতো বর্বর ছিল না।
তাহলে আমাদের এই অঞ্চলে গনতন্ত্র কি শুধুই পরিহাস হয়ে টিকে থাকবে?
:good:
:good:
:good:
:good:
কিন্তু কেন মোটেও সংস্কার করতে দেবে না ভারতের ফরেদার ব্যবসায়ী শ্রেনী? বুঝিনি এই জায়গাটা, বিপ্লবদা!
@গুবরে ফড়িং,
ব্যবসা ব্যপারটা কঠিন। সৎপথে সরল রেখায় লাভ করা যায় না। লাভ করার একমাত্র উপায় ইনোভেশন। সেটা ভারতে নেই। ফলে পরে রইল অসৎপথ। সেটা তুলে দিলে ভারতের ৯৯% ব্যবসায় লাল আলো জ্বলবে। সেটা ফরেদারেরা চাইবে কেন?
ধন্যবাদ একটি অসাধারণ লেখার জন্য
হুশিয়ার!! ISIS এর বিশ্বাষ সারা বিশ্বে ইছলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করবে।