আজ একটা ছোট্ট লোহার বাক্সে পুরে
ইচ্ছেগুলো অচিনপুরের ঠিকানায়
নদীর জলে বেহুলার ভাসানের সঙ্গী করে
স্রোতের মাঝে ভাসিয়ে দিলাম।
সাপে কাটা লক্ষীন্দরের সনে
অভিশপ্ত বাসনাগুলো কোন সুদূরে ভেসে যায়
কে জানে?
বেহুলাই কি শেষ অবদি থাকে চাঁদ সওদাগরের পুত্রের সনে?
মনসার অভিশাপে চাঁদ সওদাগর
যে পাপ নিয়ে সাত পুত্র হারায়
বেহুলার কি দায় মরা স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে আনার?
নাকি নারী-জন্মই তার একমাত্র পাপ?
পিতা-পুত্রের পাপ মুছতে মুছতে
নিজের অস্তিত্বের কথা ভুলে বেহুলা ভুলে যায়,
তার মনের কোন এক কোণে ছিল সুপ্ত বাসনা
কেন আজ তা ভেসে যায় ভেলার সনে?
দেবতার সন্তুষ্টি ঘুঙ্গুরের মূর্ছনায়
যুগে যুগে নারী শুধু বেহুলায় রয়ে যায়
কখনো জননী, কখনো জায়া কখনো বা লক্ষীর রুপে
জন্মদায়ের পাপ ঘোচায়।।
ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা
@ ফারজানা কবির খান স্নিগ্ধা
আমি বলিনি বেহুলারা নারী। তবে আমার আপত্তি নারীরা বেহুলা হয়ে ওঠার পিছনের গল্পতে। পুরুষরা নারীদেরকে কালের পর কাল ঘুঙ্গুর পড়িয়ে রেখেছে যেমন সত্য তেমনি নারীরা ঘুঙ্গুরের সৌন্দর্যে পুলকিত হয়েছে তাও সত্য। ভাবতে অবাক লাগে নারীবাদীদের যখন দেখি সংরক্ষিত মহিলা সিটে বসে নিজেদের অধিকার আদায়ে বিজয়ের গল্প করে। লেডিস ফাস্ট বললে হাসি মুখে পুরুষকে পিছনে রেখে সামনে এগিয়ে যায়। ভাবে সম্মান। এর পিছনে যে নব্য পুরুষতান্ত্রিকতা প্রতিষ্ঠীত হচ্ছে এবং নারীদের জন্য পরোক্ষভাবে শুধুই করুনা প্রকাশিত হচ্ছে তা কারো বোধগম্য নয়।
বেহুলাদের ঘানি টানার দিন একদিন শেষ হবে।
কবিতায় ভাললাগা (F)
@গৌমূমোকৃঈ, অনেক ধন্যবাদ 🙂
“দেবতার সন্তুষ্টি ঘুঙ্গুরের মূর্ছনায়
যুগে যুগে নারী শুধু বেহুলায় রয়ে যায়
কখনো জননী, কখনো জায়া কখনো বা লক্ষীর রুপে
জন্মদায়ের পাপ ঘোচায়।।”
ভালো লেগেছে এই লাইন চারটি। আমার বিশ্বাস বেহুলাদেরো ভালো লাগবে কারন তারা বেহুলা, নারী না। নারীদের ভালো লাগার কথা না।
@শামীম আহমেদ,বেহুলা নারী নয়, এই ধারনাটাই ভুল। নারীদের আজীবন ঘুঙ্গুর পড়িয়ে রাখা হয়েছে। খুব কম নারীরাই পারেন এই শিকল থেকে বের হতে। আর চেষ্টা চলেছে অনেক আগে থেকে। উন্নত দেশেও এখন পুরুষেরা নিজের থেকে কম বুদ্ধিদীপ্ত রমনী খোঁজে সঙ্গীনী হিসেবে। এই নির্দিষ্ট গন্ডি থেকে যেদিন তারা বের হতে পারবে তখনই সত্যিকারে নারী হওয়া সম্ভব।
চমৎকার লিখেছেন।
@নোবেল,ধন্যবাদ 🙂
যদিও আমি কবিতা খুব একটা বুঝি না, তবে ভালো লাগলো। (F)
@আসিফ এইচ তামিম, অনেক অনেক ধন্যবাদ।
যুগে যুগে নারী বেহুলায় থেকে যায়, আবার বেহুলাই হতে চায়। এই ভাবেই জন্ম দায়ে পাপ ঘুচিয়ে যাচ্ছে। নিজের অস্তিত্বের কথাই যে ভুলে যায় সেই হলো আমাদের নারী। এর থেকে বের হওয়া খুব জরুরী। খুব সুন্দর লিখেছেন।
@রওশন আরা, ধন্যবাদ আপা। আমাদের নারীদের এর থেকে বের হওয়া সত্যিই খুব জরুরী।
তবু হায়,
আজো শত নারী
বেহুলাই হতে চায়।
@প্রদীপ দেব, স্বর্গ দেবতাকে ঘুঙ্গুরের শব্দেই যদি ভোলাতে হবে যুগে তাহলে এই নারী জন্মের কি প্রয়োজন? লক্ষীন্দরের জন্য নিজের চাওয়া পাওয়া ত্যাগ আর এই লক্ষীন্দর আপন মামীকে ধর্ষণ করে। এই স্বামী কি বেহুলা চেয়েছিল? নারীদের আজীবন বেহুলা বানিয়ে রাখা হয়।
@প্রদীপ দেব,
এর উত্তর কিন্তু কবিতাটিতেই ছিল —-
তাই বলতে হয় —
নারী বেহুলাই হতে চায়
আর বেহুলাই রয়ে যায়
সমাজের ইচ্ছায়
@গীতা দাস, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। (F)
বাহ, দারুণ!
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ 🙂