গনতন্ত্র হলো একটি মূল্যবোধের সিস্টেম, গনতন্ত্র একগুচ্ছ আইনকানুন নয়। কোন দেশের বৃহদাংশ জনগন যদি এই মূল্যবোধের সিস্টেম এর সারাংশ নিজেদের মধ্যে অন্তস্থ না করতে পারে তবে কোন শতশত আইনকানুনও দেশের গনতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারে না। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে যখন তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি একের পর এক স্বাধীনতা পেতে থাকলো তখন অনেক দেশেই দারুন সব গনতন্ত্রের সংবিধান প্রনয়ন করা হয়েছিলো। কিন্তু খুব কম দেশই এই গনতন্ত্র ধরে রাখতে পেরেছিলো স্বাধীনতার পরে। দেশে গনতান্ত্রিক মূল্যবোধের অভাবে দ্রুতই অগনতান্ত্রিক শক্তি পাকাপোক্তভাবে গেড়ে বসেছিলো। অন্যদিকে সবচেয়ে পুরাতন ও বিরতিহীনভাবে চলা গনতন্ত্রের দাবীদার ইংল্যান্ড তিনশ বছরের বেশীসময় ধরে নির্দিষ্ট লিখিত সংবিধান ছাড়াই চলেছে কারন সেখানকার জনগনের বৃহদাংশ, জনপ্রতিনিধিদের শাসনকে রাজার শাসনের চেয়ে অনেক শ্রেয়তর মনে করেছে। আমেরিকার ১৭৮৭ সালে লিপিবদ্ধ সংবিধানকে গনতন্ত্রের ইতিহাসে অন্যতম মাইলফলক ধরা হয় কিন্তু অনেকেই এটা উপলদ্ধি করেন না যে আমেরিকার গনতন্ত্রের আসল রক্ষাকবচ মূল সংবিধান নয় বরং Bill of Rights বা অধিকারনামা যেখানে সংবিধানের প্রথম দশটি সংশোধনীকে একত্র করা হয়েছে। এই অধিকারনামাতে স্পষ্টভাষায় উল্লেখ করা আছে মানুষের কতগুলি অলংঘনীয় অধিকার, যেমন বাকস্বাধীনতা, রাজনীতি করার অধিকার, মুক্ত সংবাদমাধ্যম, সংগঠনের অধিকার, অস্ত্র রাখার অধিকার, ওয়ারেন্টছাড়া সার্চ এবং গ্রেফতার থেকে রক্ষার অধিকার, ব্যাক্তি সম্পদের অধিকার ইত্যাদি। গত দুইশ বছরে বার বার রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যাক্তিজীবনের বিভিন্ন ঘটনার সাথে সংবিধানের সংঘর্ষ নিয়ে বিভিন্ন ইস্যু মীমাংসা হবার জন্যে বিভিন্ন আদালতের স্তর পেরিয়ে সুপ্রীম কোর্ট পর্যন্ত পৌছেচে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিরোধ মীমাংসার চূড়ান্ত অথরিটি নেয়া হয়েছে Bill of Rights কে।
গত চল্লিশ বছরে বাংলাদেশের জনগন বার বার দেখিয়েছে যে তারা তৃতীয় বিশ্বের অনেকে দেশের মানুষের চেয়ে অনেক বেশী গনতন্ত্র সচেতন। কিন্তু আমরা ক্ষমতার গনতন্ত্র নিয়ে যতটা সোচ্চার গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে ততটা নয়। বিশেষ করে অনেক অনূদার (illiberal) সমাজের মতো আমাদের মধ্যে আমাদের মধ্যেও প্রবনতা রয়েছে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সমাধান খোজার। আমরা মনে করি সমাজ থেকে সবরকমের অপছন্দনীয় বিশ্বাস কিংবা কার্যকলাপ দূর করার ওয়ান-স্টপ পথ হলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ। আমরা ভাবি আইন করলেই মানুষের মধ্য হতে সবরকমের কালিমা দূর হবে এবং বার বার এই পথেই সমাধান খুজি। আমরা এটা উপলদ্ধি করি না যে এর মাধ্যমে আইনকানুনই বারবার খেলো হয়ে যায় এবং গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ দিনে দিনে ক্ষীনকায় হয়ে যায়।
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করার স্বাধীনতা
বাংলাদেশের ১৯৭২ এর সংবিধান গনতন্ত্রের নানান আদর্শের কথায় পরিপূর্ণ একটি শাসনতন্ত্র। কিন্তু সংবিধানের সাফল্য তার কার্যকারীতায় আর এই কার্যকারিতার ক্ষেত্রে সংবিধান প্রথম থেকেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে এই সংবিধান realistic এর চেয়ে idealistic ই বেশী। আমাদের ১৯৭২ এর সংবিধানে অনেকগুলিই সীমাবদ্ধতা আছে, বিশেষ করে ক্ষমতার চেক এবং ব্যালেন্স এর ক্ষেত্রে। অবিবেচনাপ্রসূত প্রাথমিক ভুলগুলির একটি ছিলো ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। আমি এখন মুক্তিযু্দ্ধের চেতনা, দ্বিজাতি-তত্বের অবসান এসব নিয়ে বড়ো তত্ব কথা শুরু করতে চাই না। আমি কেবল পাঠকদের দুটি পয়েন্ট বিশেষভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই। প্রথমত, রাজনীতি করার অধিকার গনতন্ত্রে একদম প্রাথমিক অধিকারগুলির অন্যতম। রাজনীতি করার অধিকার মানে নিজের বিশ্বাস অনুযায়ী রাজনীতি করার অধিকার। যদি যথেষ্ট পরিমানে লোকজন মনে করে যে মানুষের তৈরী আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনার চেয়ে ধর্মপুস্তকে দেয়া স্রষ্টার আইন দিয়ে দেশ চালানো উত্তম, তবে তারা সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতে সংগঠন করে রাজনীতি করতেই পারে। যদি কিছু লোক মনে করে যে ব্যাক্তিসম্পদ ও ধনিকশ্রেণীকে উৎখাত করে প্রলেতারিয়েতের একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই বৈজ্ঞানিকভাবে রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনা করা সম্ভব, তবে সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতে তারা রাজনীতি করতেই পারে। গনতন্ত্র মানুষের উপর কোন বিশ্বাস চাপিয়ে দিতে পারে না, স্বয়ং গনতন্ত্রে বিশ্বাসকেও না। গনতন্ত্রে অগনতান্ত্রিক বিশ্বাস পোষন করার এবং সেই বিশ্বাস অনুযায়ী রাজনীতি করার অধিকার আছে।
রাজনীতির অধিকার মানেই ইচ্ছেমতো রাজনীতি করা নয়। যেমন আপনি যদি অন্যজাতি বা ধর্মের প্রতি তীব্র বিদ্বেষমূলক বিশ্বাস পোষন করেন, কিংবা দেশের অখন্ডতায় অবিশ্বাসী হন, তবে সেই বিশ্বাসকে ব্যাক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ না রেখে যদি সেটা নিয়ে প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে চান, তবে অনেক গনতন্ত্রই আপনার সেই অধিকার অস্বীকার করবে। আবার পৃথিবীতে অনেক গনতন্ত্রে বিদ্বেষমূলক কিংবা দেশের অখন্ডতা-বিরোধী রাজনীতি করাতেও বাধা দেয় না।আমরা সেটি কিছুক্ষন পরেই দেখবো।
এখন প্রশ্ন হলো প্রচলিত ধর্মগুলি কি বিদ্বেষমূলক? ধর্মবিরোধী কিংবা অন্যধর্মবিশ্বাসীরা কোন একটি বৃহৎ প্রচলিত ধর্মকে যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিকভাবে যতই বিদ্বেষমূলক মনে করুক না কেনো, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শান্তির জন্যে পৃথিবীর কোন দেশেই বৃহৎ প্রচলিত ধর্মগুলিকে বিদ্বেষমূলক বিশ্বাস বলে চিহ্নিত করা হয় নি।
এখন আসছি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে দ্বিতীয় পয়েন্টটিতে। পৃথিবীর কোন গনতান্ত্রিক দেশেই ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করার অধিকার নিষিদ্ধ করা হয় নি। সেকুলার ভারতে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল আছে, মুসলিম, হিন্দু সবরকমই। নাম ও বিশ্বাসের দিক দিয়ে “শিবসেনা” কিংবা “হিজবুল্লাহ” এর মধ্যে কতটা পার্থক্য? ঐতিহ্যবাহী গনতন্ত্র বৃটেনেও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল আছে। সেকুলার রিপাবলিক বলে খ্যাতনামা ফ্রান্সেও ক্রীশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র মতো স্পষ্ট ধর্মীয় দল আছে। আর ল্যান্ড ওফ দ্যা ফ্রী বলে পরিচিত আমেরিকায় তো কোনরকমের রাজনীতির উপরেই নিষেধাজ্ঞা নেই। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র কমিউনিস্ট পার্টি প্রকাশ্যেই রাজনীতি করে আসছে ১৯১৯ সাল থেকেই, এমনকি শীতলযুদ্ধের তুংগ সময়টিতেও। তথাকথিত ‘ইহুদী নিয়ন্ত্রিত’ আমেরিকায় এখনো অনেক রকম নাৎসী, নব্য-নাৎসী পার্টি আছে যারা স্বস্তিকা চিহ্ন আর হিটলারের ছবি নিয়ে প্রকাশ্যে র্যালী করে। আমেরিকায় এমনকি রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা বিরোধী পার্টিও রাজনীতি করতে পারে। সারা পেলিনের স্বামী আলাস্কা ইনডিপেন্ডন্স পার্টি নামের একটি দলের সদস্য ছিলেন।
কথা উঠতে পারে যে অন্য দেশে নেই তো কি হয়েছে, আমাদের দেশের ইতিহাসের প্রেক্ষিতে ধর্মীয় রাজনীতি আমরা নিষিদ্ধ করতেই পারি। কিন্তু পৃথিবীর কোন দেশই বিশেষভাবে আলাদা নয়। পৃথিবীর সর্বত্র মানুষের মৌলিক চিন্তা-চাহিদা অনেকটা একরকমেরই। পৃথিবীর কোন গনতন্ত্রেই যখন ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয় নি তখন আমাদের সংবিধান প্রণেতাদের বোঝা উচিৎ ছিলো যে এই অধিকারের সাথে মানুষের মৌলিক রাজনৈতিক অধিকার আর প্রবনতা জড়িয়ে আছে। এই অধিকার বিপন্ন হলে গনতন্ত্রই বিপন্ন হতে পারে, বিশেষ করে যেসব দেশে মানুষের মধ্যে ধর্মানুভুতি প্রবল।
জামাতের রাজনৈতিক অধিকার
স্বাধীন বাংলাদেশে জামাতে ইসলামী নামের দলটির রাজনীতি করার অধিকার তো দূরের কথা, অস্তিত্বের অধিকার থাকা উচিৎ নয়। এর কারন জামাতে ইসলামী ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো এবং বাংলাদেশ আক্রমনকারী বহি:শত্রুর সাথে সক্রিয় সহযোগিতা করেছে। সবচেয়ে বড়ো কথা শত্রুর সাথে হাত মিলিয়ে জামাত প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিজ জাতির বিরুদ্ধে ভয়ংকর মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত যেকোন সংগঠনকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা যেকোন গনতান্ত্রিক দেশেরই সাধারন রাষ্ট্রীয় পলিসি। আমেরিকায় সন্ত্রাস ও বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত কিংবা সহায়তা দেবার জন্যে দেশী-বিদেশী অনেক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ হয়েছে। জার্মানীর নাৎসী পার্টি কিংবা ইটালীর ফ্যাসিস্ট পার্টি স্ব স্ব দেশে পুরোপুরি নিষিদ্ধ নিজ ও অন্য দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্যে।
তবে গনতন্ত্রে অপরাধের জন্যে দল বা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা যত সহজ, শুধু মতাদর্শের জন্যে নিষিদ্ধ করা ততটাই কঠিন। কারন মতাদর্শের স্বাধীনতার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে চিন্তা আর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, যা গনতান্ত্রিক মূল্যবোধের একদম মৌলিক স্তম্ভগুলির একটি। জার্মানীতে নাৎসী পার্টি ও নাৎসী মতবাদ নিষিদ্ধ হয়েছে কিন্তু নাৎসী মতবাদের প্রতি সহানুভূতিশীল রাজনৈতিক মতবাদ নিষিদ্ধ করা যায় নি। যতক্ষন না কোন দল স্পষ্ট নাৎসীবাদকে নিজ আদর্শ হিসেবে প্রচার করে, কোন হিংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয় কিংবা ইহুদী বিদ্বেষ প্রকাশ করে অথবা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন গনহত্যাকে অস্বীকার করে ততক্ষন কোন উগ্রদক্ষিন পার্টিকে নিষিদ্ধ করা জার্মান আইনে সম্ভব নয়। জার্মানীতে অনেক উগ্রদক্ষিন দল আছে যারা প্রকাশ্যেই নাৎসীবাদের প্রতি বিভিন্নভাবে সহানূভুতি প্রকাশ করে। সবচেয়ে বড়ো নব্য-নাৎসী দল বলে পরিচিত ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র (NPD) এমনকি জার্মানীর কয়েকটি প্রাদেশিক পার্লামেন্টে ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিও আছে। ইটালীতে অনেক নব্য-ফ্যাসীবাদী দল আছে যারা মুসোলিনী আর ফ্যাসিজমের প্রতি সহানুভুতিশীল।
১৯৭১ এ দলের ভূমিকা ও কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে জামাতকে অনায়াসে নিষিদ্ধ করা যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ও এর পরে জামাত, মুসলীম লীগ সহ আরো কয়েকটি দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো ও। ১৯৭৫ এর পরে একের পর এক সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে জামাত ও তার ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধী নেতাকর্মীদের দেশের রাজনীতিতে পূন:র্বাসন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কলংক। এতোদিন পরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের সাথে সাথে জামাত সংগঠনকেও নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া শুরু করা ছিলো দেশের বড়ো একটি জনগোষ্ঠীর আকাংখা। সেই প্রক্রিয়ার পথে এগিয়ে যাওয়ার মূল দিক নির্দেশনাই হওয়া উচিৎ ১৯৭১ এ জামাতের ভূমিকা।
হাই কোর্টের রায়ে জামাতকে নির্বাচনে অংশগ্রহনের অযোগ্য ঘোষনা করা হয়েছে। কিন্তু যে যুক্তির মাধ্যমে কোর্ট জামাতকে নির্বাচনে অংশগ্রহনে বাধা দেয়া হচ্ছে সেই যুক্তির দূর্বলতা শুধু কোর্টকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, রাষ্ট্রের সংবিধান ও তার আওতা নিয়েই বড়ো প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। ডেইলী স্টারের অগাস্ট ৩ এর সম্পাদকীয় অনুযায়ী জামাতের নিবন্ধন বাতিলের কারন হিসেবে দেখানো হয়েছে, “ Though the party rewrote its constitution earlier, it fails to recognise democracy and parliament as the highest body responsible for enactment of laws…….. JI’s refusal to conform to the Representation of the People Order (RPO) which was changed by the EC in 2008 set the stage for this outcome. Furthermore, the charter has discriminatory provisions that disallow women and non-Muslims to ever become the party chief. Such clauses are in direct contravention to the constitution that holds specific views against discrimination based on religion and gender.” সংক্ষেপ করে কারনসমূহ হলো, ” এক. দলের গঠনতন্ত্র যদি সংবিধান পরিপন্থী হয়। দুই. গঠনতন্ত্রে কোনো বিশেষ ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, ভাষা বা লিঙ্গভেদে কোনো বৈষম্য প্রতীয়মান হয়। তিন. নাম, পতাকা, চিহ্ন বা অন্য কোনো কর্মকাণ্ড দ্বারা সাম্প্রদায়িক ঐক্য বিনষ্ট হওয়া কিংবা দেশকে বিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চার. দলের গঠনতন্ত্রে দেশের ভৌগোলিক সীমার বাইরে কোনো দপ্তর, শাখা বা কমিটি গঠন এবং পরিচালনার বিধান থাকে।” (1)
সংবিধান কোন ঐশীবাণী নয়
যেকোন দেশের সংবিধান স্বয়ং ইশ্বরের নিজমুখের কথা নয় যেটা মুসা নবী তুর পাহাড়ের চূড়া থেকে পাথরে খোদাই করে নিয়ে এসেছেন। এটা আমাদের মতই মানুষের লেখা একটি বিধান যা আমাদের সম্মতিতেই প্রতিষ্ঠিত এবং পরিমার্জনীয়। গনতন্ত্রে নাগরিকেরা স্বয়ং ইশ্বরের বাণীর বিরোধিতা, দ্বিমত প্রকাশ করতে পারে, সংবিধান তো কোন ছাড়। মানুষ সংবিধানের বিশেষ বিশেষ দিকগুলি কিংবা পুরোটারই বিরোধিতা করতে পারে এবং সেই বিরোধিতার ভিত্তিতে রাজনীতিও করতে পারে। এটা গনতন্ত্রে মৌলিক রাজনৈতিক অধিকার। এজিনিষটি এতো সহজ ও স্বাভাবিক যে এর পরও ‘সংবিধান বিরোধিতা করার অধিকার কারও নেই’ এধরনের কথা শুনতে খুব অস্বাভাবিক লাগে।
এখন, এই সময়ে, জাস্টিস খায়রুল হকের মতানুসারে, তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান বিরোধী। বিভিন্ন জরীপে দেখা গিয়েছে যে দেশের ৭০-৯০% লোক তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন চায়। এই দাবীতে প্রধান বিরোধী দলসহ কয়েকটি দল রাজনীতি ও আন্দোলনও করছে। তাহলে এই দলগুলি ও তার সমর্থকেরা কি সংবিধান বিরোধী অপরাধ করছে। ১৯৯৬ সালে বিরোধীদলের তত্বাবধায়কের দাবীর বিরুদ্ধে তখনকার সরকার যখন সংবিধানের দোহাই দিতো তখন বিরোধী দলের অনেকে এই দোহাই কে ব্যংগ করতো ‘সং এর বিধান’ বলে। যেকোন সময়ে সংবিধানের বিভিন্ন বিধান নিয়ে মানুষ বিরোধিতা প্রকাশ করতে পারে এবং সেই ভিত্তিতে রাজনীতি করতে পারে। রাজনৈতিক দল নির্বাচনের আগে তাদের প্ল্যাটফর্ম ঘোষনায় প্রকাশ্যে বলটে পারে যে যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে তারা সংবিধানের বিভিন্ন দিক পরিবর্তন করবে কিংবা নতুন সংবিধান প্রণয়নের ব্যবস্থা করবে। সংবিধান মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠতার স্বর, যথেষ্ট মানুষের স্বর পাল্টানোর সাথে সাথে সংবিধানও পাল্টে যেতে হয়।
নাগরিকেরা এমনকি সংবিধানের মৌলিক আদর্শগুলিকেও প্রশ্ন করতে পারে। আমাদের সংবিধান প্রনেতারা, তাদের অপরিসীম প্রজ্ঞায়, সমাজতন্ত্রকে জাতীয় সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি করেছিলেন। সামাজিক ন্যায়বিচার, সুষম বন্টন এরকম কোন ফাপা কথা বার্তা নয় একেবারে পিওর এবং সিম্পল সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মূলনীতি হিসেবে ছিলো গনতন্ত্রের পাশাপাশিই। আমি এখন সমাজতন্ত্রের দোষগুন আলোচনায় যাবো না তবে এতটুকু উল্লেখ করবো যে ১৯৭২ সালেই হোক কিংবা ২০১৩ সালেই হোক, এখন পর্যন্ত এমন কোন রাষ্ট্র পৃথিবীতে উদ্ভব হয় নি যেটা একই সাথে সমাজতান্ত্রিক আর গনতান্ত্রিক। সমাজতন্ত্র গনতান্ত্রিক নয়। ভারতেও এমনকি সংবিধান প্রনয়নের সময়ে সমাজতন্ত্রকে মূলনীতি রাখা হয় নি, ১৯৪৯ সালের সংবিধানে ভারতকে বলা হয়েছিলো সার্বভৌম গনতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। ১৯৭৬ সালে এমার্জেন্সীর সময়ে সমাজতান্ত্রিক সেকুলার শব্দদুটি ঢুকিয়ে দেয়া হয় সার্বভৌম আর গনতান্ত্রিক এর মাঝে।
১৯৭২ সালেই নিশ্চই বাংলাদেশে যথেষ্ট পরিমানে নাগরিক ছিলো যারা সমাজতন্ত্র বিরোধী। আজকে এই সমাজতন্ত্র বিরোধীতার অনুপাত নিশ্চই আরো অনেক বেড়েছে। এই লোকগুলি কি সবাই সংবিধান বিরোধী অপরাধী? এখনকার সংবিধানে বিসমিল্লাহ সংযুক্ত আছে এবং অনেকে এর বিরোধিতা করছে। এরাও কি সংবিধান বিরোধী অপরাধী। এখন আমেরিকায় সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী, যেখানে নাগরিকদের অস্ত্র রাখার অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে, নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে। অনেকেই বলছে সংবিধানের এই ধারা আজকের যুগে অচল। একারনে তাদেরকে তো কেউ অ্যান্টি-কনসটিটিউশন বলছে না।
জামাত এবং অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর বেশীরভাগই বিশ্বাস করে যে স্রষ্টার দেয়া বিধান মানুষের রচিত বিধানের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর। আমি এখন এইবিধান গুলি’র কোনটাই আদৌ স্রষ্টা বা কোন গায়েবী শক্তির দেয়া কি না এই বিতর্কে যাচ্ছি না। কিন্তু ধর্মীয় দলগুলি বিশ্বাস করে যে চূড়ান্ত সার্বভৌমত্ব ইশ্বরের কাছে। এটা শুধু গোড়া মুসলিমদের বিশ্বাসই না। গোড়া খ্রীস্টান কিংবা ইহুদী বা অন্য ধর্মের অনেকেই তা বিশ্বাস করে। God made countries, God makes kings, and the rules by which they govern (Chariots of Fire ছবির সংলাপ) এই রকমের বিশ্বাস আছে অধিকাংশ ধর্মপ্রান লোকদেরই। তারা এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে সমবেত হতে পারে, রাজনীতিও করতে পারে। এই বিশ্বাসের দলগুলিকে মানুষের সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে বলা হলো কমিউনিস্ট দলগুলোকে পুজিবাদ আর মুক্তবাজার অর্থনীতির শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিতে বলার সমতুল্য। গনতন্ত্র কোন মানুষ বা দলের উপরে একটি বিশ্বাস চাপিয়ে দিতে পারে না, সেই বিশ্বাস যুক্তিসম্মত হলেও।
আজকে যদি দেশের জনগনের কাছে প্রশ্ন করা হয় কোনটি উপরে, সংবিধান না কোরান, এর উত্তর কি হতে পারে বলে মনে হয়? এরকম প্রশ্ন করার সুযোগ এই কোর্টই করে দিয়েছে। জামাত এখন সকল ইসলামী দলগুলোর কাছে আরো বলার সুযোগ পেয়েছে যে আল্লাহ’র সার্বভৌমত্বের শ্রেষ্ঠতা ধারন করার জন্যে আজকে জামাতের উপরে খড়গ নেমে এসেছে, দুদিন পরে বাকী সবার উপরেই সেটা আসবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ৯০
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ৯০ সি (১) বলছে যে, কোন রাজনৈতিক দলের নিজস্ব বিধিমালা যদি জাতি, ধর্ম, ভাষা কিংবা লিংগভেদে বৈষম্য করে থাকে তবে সেদল নিবন্ধনের অযোগ্য হবে। একটি রাজনৈতিক দল হলো একটি এক্সক্লুসিভ প্ল্যাটফর্ম যেখানে কিছু লোক একত্র হয় কিছু কমন আদর্শ ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে। এই আদর্শগুলি উদার হতে পারে কিংবা অনুদারও হতে পারে কিন্তু আসল কথা হলো রাজনৈতিক দল কোন পাবলিক প্ল্যাটফর্ম নয়। রাজনৈতিক দলগুলি নিজস্ব মানদন্ড আরোপ করতে পারে যার ভিত্তিতে কারা কারা সেই দলে যুক্ত হতে পারবেন সেটা নির্ধারিত হবে। ইসলামী দলগুলোকে অন্যধর্মের কিংবা ধর্মবিহীন মানুষকে সদস্য ও নেতৃত্বের সুযোগ দেয়ার জন্যে বাধ্য করা কিভাবে সম্ভব? একটি ক্রিশ্চিয়ান পার্টি অবশ্যই যারা যীশুখৃষ্টকে ইশ্বরপুত্র স্বীকার করে না তাদেরকে সদস্য না করার অধিকার রাখে। একটি নারীবাদী রাজনৈতিক দল পুরুষ নেতৃত্ব নিষিদ্ধ করতে পারে। একটি আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক দল, দলের নেতার স্থান নিজস্ব জাতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারে। একটি বাংলাদেশী রাজনৈতিক দল বাংলা বলতে পারে না এমন কাউকে সদস্য করতে অস্বীকার করতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলির কোনো বিদেশী দলের সহযোগী কিংবা অনুজ সংগঠন না হওয়ার বিধানটি যুক্তিসম্মত। একটি রাষ্ট্রের পূর্ণ অধিকার আছে কোন নাগরিক বা সংগঠনের দ্বিমুখী বিশ্বস্ততাকে মেনে না নেয়ার। অনেক দেশই নাগরিকদের দ্বৈত নাগরিকত্ব মেনে নেয় না। রাষ্ট্রের রাজনীতি ও আভ্যন্তরীন বিষয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপ ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা একান্তই স্বাভাবিক। জামাত যদি কোন বিদেশী দলের সহযোগী সংগঠন হিসেবে পরিচালিত হয় তবে তাকে রাজনীতিতে বাধা দেয়াও স্বাভাবিক।
সত্তর, আশী কিংবা নব্বই দশকেও বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি এবং অন্যান্য অনেক বাম দলগুলি তাদের আর্ন্তজাতিক কানেকশনের কথা প্রকাশ্যে গর্বভরেই বলতো। তারা দাবী করতো যে তারা বিশ্বব্যাপী আর্ন্তজাতিক সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনেরই অংশ। নিয়মিত কয়েক বছর অন্তর অন্তর মস্কো কিংবা পিকিং এ আর্ন্তজাতিক সম্মেলন হতো এবং সেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি যেতো। এসব দলগুলো যে সোভিয়েত কিংবা চাইনিজ সরকার থেকে অর্থ এবং অন্যান্য আনুকুল্য পেতো এটা তো ছিলো ওপেন সিক্রেট। দলগুলি এমনকি নিজেদের নামের পাশে ব্র্যাকেটে লিখতো মস্কো কিংবা পিকিং এর কথা। এই দলগুলি এখন কতটা বিদেশী প্রভাবিত এটা আমি জানি না। তবে তাদের অতীত ইতিহাসের প্রেক্ষিতে এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এর আলোকে এইসব দলগুলির এখন thorough investigation হওয়া নিশ্চই দরকার। সেইসাথে এটিও তদন্ত করা দরকার বামপন্থী দলগুলির আদর্শ সংবিধানের সাথে কতটা সামন্জস্যপূর্ন। তারা কি মার্ক্সবাদের বিশ্বাস করে? মার্ক্সবাদ কি গনতান্ত্রিক? এই দলগুলি কোন পন্থায় সমাজতন্ত্র কায়েম করতে চায়? তারা কি প্রলেতারিয়েতের একনায়কতন্ত্রকে অপরিহার্য মনে করে? এই দলগুলি কি ব্যাক্তিসম্পদের অধিকারে বিশ্বাস করে? আমাদের সংবিধানে ব্যাক্তিসম্পদ গড়ার অধিকার স্পষ্টভাবে রয়েছে।
সঠিক উপায় আর বেঠিক উপায়
বলা হয়ে থাকে যেকোন কিছু করার জন্যে একটি Right Way আছে আর অনেক Wrong Way আছে। আগেই বলেছি যে জামাতকে নিষিদ্ধ সংগঠন ঘোষনা করার মতো যথেষ্ট মালমশলা অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত আছে। যুদ্ধাপরাধ এবং স্বাধীনতা বিরোধিতার দায়ে সংগঠনটিকে অনায়াসে নিষিদ্ধ করা যায়। এর জন্যে দরকার কেবল কোর্টে রিট দায়ের এবং ১৯৭১ এ জামাতের অপরাধ সংশ্লিষ্টতার জন্যে প্রমান দাখিল করা। ব্যাক্তির চাইতে প্রতিষ্ঠানকে যুদ্ধাপরাধী সাব্যস্ত করা অনেক সহজ। কারন এখানে শুধু দেখাতে হয় যে প্রতিষ্টানের যথেষ্ট পরিমানে সদস্য বিভিন্ন অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলো। অনেক সময়েই বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যাক্তিকে যুদ্ধাপরাধের সাথে সরাসরি যুক্ত করা কঠিন হয় কারন তারা যুক্তি দেখায় যে বিশেষ ঘটনাটির চেইন ওফ কমান্ডে তারা ছিলো না। যেহেতু যুদ্ধের সময়েও অপরাধীরা কাগজপত্রে প্রমান না রেখে যাওয়ার ব্যপারে বিশেষ সচেতন থাকে সেহেতু ব্যাক্তিসংশ্লিষ্টতার দালিলিক প্রমান অনেক সময়েই পাওয়া কঠিন হয়। কিন্তু কোন সংগঠনের উচ্চপদস্থ আর নিম্নপদস্থ যেকোন রকমের যথেষ্ট পরিমানে সদস্য অপরাধে যুক্ত থাকার আলামত পেলেই প্রতিষ্ঠানটি নিষিদ্ধ ঘোষনার সুযোগ চলে আসে।
জামাতকে অপরাধের কারনে নিষিদ্ধের পথে না যেয়ে সংবিধান ও গনপ্রতিনিধিত্ব আদেশের পথ ধরে নিবন্ধন বাতিলের পথে যেয়ে কোর্ট ও সরকার দেশের রাজনীতি ও গনতন্ত্রের অপরিমেয় ক্ষতি করেছে। দেশের সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কাউকে তাদের রাজনৈতিক তথা গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বিরত রাখার কোনো সুযোগ সংবিধানে নেই। এইরকম টেকনিক্যাল কারন দেখিয়ে রাজনীতি করার মতো মৌলিক অধিকার হরন করা খুবই খারাপ একটি প্রিসিডেন্স তৈরী করছে। এই পদক্ষেপ কেবল গনতন্ত্র আর সংবিধানকেই মুখোমুখি দাড় করায় নি, এটি সংবিধান আর ধর্মকেও সাংঘর্ষিক করেছে। এই সংঘর্ষের ফায়দা তোলার জন্যে জামাত এবং তার সহযোগী দলগুলো এরই মধ্যে তুমুল প্রচারণা শুরু করেছে।
রিটআবেদনকারীদের পক্ষে উকিলেরা এমনকি এই যুক্তি দেখাচ্ছে, যে গঠনতন্ত্রের ওপর ভিত্তি করে জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল, তা ছিল নিবন্ধনের অযোগ্য। তাই নিবন্ধনের পর ওই গঠনতন্ত্র সংশোধনের সুযোগ নেই। অর্থাৎ একবার আদেশ দেবার পরে সেটা সংশোধন করারও কোনো সুযোগ দেয়া যাবে না।
গনপ্রতিনিধিত্ব আদেশের মতো টেকনিক্যাল আইন দেখিয়ে নির্বাচনে অংশ না নিতে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ অনেক সময়েই নেয়া হতো তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন অগনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে। সামান্য অদল বদল করলে এইরকম আইন মারফত প্রতিটি রাজনৈতিক দলকেই বাদ দেয়া যায়। সম্ভবত দেশের জামাতবিরোধী ও সেক্যুলার দলগুলি নিশ্চিত হয়েছে যে তারা ক্ষমতা থেকে অচিরেই সড়ছে না। নাহলে এরকম আত্মঘাতি পদক্ষেপ নেয়ার কারন বের করা কঠিন। এই রকম অবিবেচক পদক্ষেপগুলি তাদের জ্ঞাত অথবা অজ্ঞাতসারেই শত্রুপক্ষের হাতে একের পর এক অস্ত্র তুলে দিচ্ছে যেটার একসময়ে তাদের দিকেই লক্ষ্য হতে পারে।
বাংলাদেশে সংবিধানের মূল্য দুইতৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। দুইতৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করা যায়। ক্ষমতায় থাকার সময়ে দুইতৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার পদক্ষেপগুলি কখনোই চ্যালেন্জের সম্মুখীন হয় না। সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে যে সংবিধানের মূলনীতির বিরুদ্ধ কোন আইন প্রনয়ন করা যাবে না। কিন্তু একের পর এক এমেন্ডমেন্ট মূলনীতিগুলিকে কাচকলা দেখিয়ে বিনা চ্যালেন্জে সংবিধিবদ্ধ হয়েছে। কেবল মাত্র সরকার পরিবর্তন হলেই এই সব এমেন্ডমেন্ট এর প্রতি বিরুদ্ধ সরকারের দৃষ্টি পড়েছে।
দুইতৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিয়মটি সুপ্রাচীনকাল থেকেই গনতন্ত্রে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো জনগনের তড়িৎ আবেগ থেকে রক্ষার জন্যে। জনতার এক বৃহৎ অংশ একমত হলেই মূল বিধান পাল্টানো যেতো। কিন্তু বাংলাদেশে শাসকদলের উপূর্যপুরি ব্যর্থতায় এখন দুইতৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অত্যন্ত সস্তা হয়ে গেছে। এই সস্তা সংখ্যাগরিষ্ঠতার সময়ে গনতন্ত্র রক্ষা আর তার ধারাবাহিকতার জন্যে সংবিধান আর আইনের অত্যেন্ত বিবেচনাপ্রসূত ব্যবহার প্রয়োজন।
(1) Prothom Alo, 5th August, 2013.
এই লেখাটির পরিবর্তীত আকারে ইংরেজীতে প্রকাশিত হয়েছিলো ALAL O DULAL ব্লগে ২/৮/১৩ তে।
http://alalodulal.org/2013/08/02/constitutionalism-run-amuck/
@সফিক
শাব্বাস, বৎসরের সেরা কমেন্ট হইছে। ঘিলুহীনরা এবার বুঝুক কার সাথে কথা কইতে আইছে।
@আকাশ মালিক,
আরে ভাই আপনি দেখি মহা ঝামেলার লোক জ্ঞানীর মর্যাদা দিতে জানেন না।
আপনি মাত্র এই বছরের বললেন কেন?এইটা আমার মতে এযাবতকালের সেরা কমেন্ট।
মুক্ত মনা কোন ব্লগারের কাছে থেকে এমন নাক উচু মানসিকতা আশা করি না। তবে “আশরাফ” লোক বলে কথা উনি বলতেই পারেন।
আর এত দেরিতে বুঝলেন? আমি তো প্রথম থেকেই বুঝে এসেছি যে কি মহান লোক উনি।আর আমাদের মত নরাধমরা আতরাফ ছাড়া আর কিছুই না।
ইনি একজন মহান নরদেবতা,
অতএব,আসেন স্তব করি উনার,
হে মহান আনু(…), স্বর্গ মর্ত্য ভুমি
এনলিল, ইয়া, বেল, দেবকুল বরনীয় তুমি
সিন, শামাস গৌরবান্বিত হোক তব আবির্ভাবে
নারগেল, সিবি দেব বিপুল গৌরবে
একটা সুমেরীয় পুরানের স্তব
গুনীরাই যেখানে তার বিপুল গৌরব করবে, সেখানে
আমরা তো নেহায়েত ম্লেচ্ছ;যাদের সাথে উনি কথা বলার দরকার বোধ করেন না
🙂
প্রথম লাইনের ব্রাকেটে ড্যাশে আনুর স্থলে কেউ ইচ্ছে করলে লেখকের নাম বসাতে পারেন আমি আর বসালাম না। কি দরকার পাছে বেশি কথা বলে পাপের ভাগী হওয়ার :-s
ধর্ম সম্পর্কে জানতে হলে অলি আল্লাহ দের অনুসরন অ্যান্ড অনুকরন ছাড়া বিকল্প নাই
@islam,
তাই নাকি? এক ওলিআল্লাহ যে তেঁতুল তত্ব দিয়ে পরে অস্বীকার করেছেন আপনি কি এই ওলি আল্লাহর সান্নিধ্যে সময় কাটিয়েছেন কোনদিন?
না হলে কাটিয়ে আসেন, অনেক নেকি হবে আর ধর্ম সম্পর্কে জানতেও পারবেন মেলা কিছু।
অলি আল্লাহ্ মানে কি জানেন? অলি আল্লাহ্ মানে আল্লাহের বন্ধু । আর সফি শাহেব যা বলছেন তা পাগল দের কথা ছারা কিছু না… ভাই মুসলমান আপনার জাতি গুষ্টি কেমনে হইছে তার হিস্ট্রি টা ভাল করে জেনে নিবেন…।
সফিক ভাই, আপনার বাস্থব ধর্মী লেখার জন্য ধন্যবাদ। তবে আপনাদের সবার মনে রাখতে হবে……ইসলাম নিয়ে যত নাচা নাচি করবেন ইসলামের তত প্রসার হবে। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ৯/১১ পর স্বয়ং আমারেকিতেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী।
@হুতুমপেচা,
ইসলাম ধর্ম গ্রহনকারীর সংখ্যা বাড়লে সমস্যাটা কোথায়? আমেরিকায় যেসব বর্ন আমেরিকান ইসলাম গ্রহন করে তারা কি শাফি হুজুরদের মুরিদ হয়, তেতুল তত্ত্ব শুনে আকাশ ফাটিয়ে শ্লোগান দেয়? নিজের দেশের সংবিধান ব্লাসফেমি বলে ঘোষনা করে? তাদের কয়জনে শরিয়া নিয়ন্ত্রিত দেশগুলিতে হিজরত করে? তাদের পেটালেও তারা সেক্যুলার আমেরিকা ছেড়ে শরিয়া ওয়ালা দেশে যাবে?
জগতে এখনো খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। সে ধর্মেও মৌলবাদ,সংকীর্নতা, হানাহানি অশান্তির উপকরন নেহায়েত কম নেই। জগত কি খৃষ্ট মৌলবাদ জনিত সমস্যায় আছে?
ধর্ম নিয়ে “নাচানাচি” করার সুফল এখানেই। ধর্মের ক্ষতিকর দিকগুলি সম্পর্কে লোকে সচেতন হয়। কে কোন ধর্ম গ্রহন করল ত্যাগ করল, কতভাগ জনতা সে ধর্মের অমুসারী শুধু এসব হিসেবে কিছু যায় আসে না।
@আদিল মাহমুদ,
(Y)
@আদিল মাহমুদ,
(Y) (Y) (Y)
সফিক ভাই, আপনি কোথায় আসেন না কথা বার্তা বলি ;-),নাকি আমাদের মত আতরাফ তথা ছোটলোক দের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে নেই একেবারেই?আপনি তো নিজেকে প্রায়শ বিচারকের আসনে বসাতে ভালোবাসেন। আসেন এইবার আমাদের মত আতরাফ দের কে চাবুক দিয়ে পিটিয়ে গনতন্ত্রের উদারতার সবক দিন। :-s
@অর্ফিউস,
সংখ্যাটা গুরত্বপূ্র্ন নয় । সাতটা পদাতিক এবং বেশ কয়েকটি স্বতন্ত্র ব্রিগেড আছে। একটি আলাদা মিলিটারী ডক্ট্রিন ডিভিশন আছে যাদের কাজ ওয়ারগেইমস , প্রশিক্ষন ইত্যাটি পরিচালনা করা। আরো নতুন একটি ডিভিশন গঠনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে লজিস্টিকস নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার যথেষ্ঠ জায়গা আছে। একটি সেনাবাহিনীর ক্ষমতা নির্ধারিত হয় তার লজিস্টিকস , প্রশিক্ষন এবং কম্যান্ড-কন্ট্রোল (C2) কাঠামো দিয়ে। দেশ প্রতিরক্ষার মাপকাঠিতে জনবলের সংখ্যার দিক দিয়ে তাদের প্রায় ২৫-৩০ হাজার কমতি আছে যেহেতু জাতিসংঘ মিশনে বর্তমানে তারা কাজ করছে এবং একাজে তাদের রিসোর্স ব্যবহৃত হচ্ছে।
@সংশপ্তক, ধন্যবাদ ভাই , বুঝিয়ে বলার জন্য।হ্যাঁ এর আগেও আপনি কয়েকমাস আগে বলেছিলেন যে সংখ্যাটা বড় নয়।তবু সঠিক সংখ্যাটা কিন্তু আমরা কেউ জানতে পারছি না।বিভিন্ন অনির্ভরযোগ্য সুত্র ছাড়া যেগুলো পরস্পরবিরোধী।
আচ্ছা জামাতের ইসলামী অভ্যুত্থান ঠেকানোর মত যথেষ্ট ক্ষমতা ( এই যেমন ধরেন আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র এইসব) আর্মীর আছে তো?আর্মীর কি আধুনিকি করন শুরু হয়েছে?আসলে এইসব ব্যাপারে আমি অন্ধকারে আছি। গুগল করেও কিছুই পাই না।
এ নিয়ে বিশেষ মাথা ব্যাথাও ছিল না আমার আগে।কিন্তু বর্তমানে মিশরের সেনাবাহিনীর কর্মকান্ড আমাকে অনেকটাই আস্থা এনে দিয়েছে যে আর্মী পক্ষে থাকলে হয়ত মৌলবাদীরা মরন বাড় বেড়ে উঠতে পারবে না।
আমি আসলে হেফাজতের জনসমর্থনের পর থেকেই চিন্তায় আছি।ওই সময় আমি ঢাকা ছিলাম।বাইরে বের হবার সাহস হয়নি হেফাজতের ভয়ে ( সত্যি সাহস আমার অনেক খানি কম:-) ) । তবে এটুকু নিশ্চিত হয়ে গেছি যে বাংলাদেশের কপালে খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে এমতঅবস্থায় শক্তিশালী সেনাবাহিনী যেটা কিনা এই ইসলামী বিপ্লব চেক দিতে পারবে তাদের খুব দরকার আছে।
@অর্ফিউস,
একেবারে মতিঝিলের পাশেই
@অর্ফিউস,
এরশাদ-জিয়ার আমলে আর্মি ছিল অনেকটা একটি banana republic আর্মি , মানে তালপাতার সেপাই। সে অবস্থা এখন আর নেই। তারা কি করতে পারে তার ছোট্ট একটা নমুনা নিশ্চয়ই মধ্যরাতে মতিঝিলে সেদিন দেখেছেন। জলপাই রং নিয়ে নয় , কালো পোষাকে। জলপাই রং নিয়ে নামার প্রয়োজন হয়তো পড়বে না।
আসলে একটি অভ্যুত্থান কখন সফল হয় ? যখন দেখবেন যে , সাধারণ মানুষ আর্মির ট্যাংকের উপরে ফুলের তোড়া নিয়ে নাচা নাচি করছে। পৃথিবীর প্রায় সকল সফল অভ্যুত্থানেই এই দৃশ্যটা চোখে পড়ে। অর্থ্যাৎ আর্মির বড় অংশের সমর্থন ছাড়া অভ্যুত্থান সফল হয় না। আর্মির সমর্থন ছাড়া হয় অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয় , নতুবা গৃহযুদ্ধ শুরু হয় – যেমন সিরিয়া বা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। সেক্ষেত্রে বিদ্রোহীদের লজিস্টিকস লাগে। সৌদি তুর্কীরা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সাহায্য করছে , ১৯৭১ এ ভারত আমাদের সাহায্য করেছে। মিসরে কোন সাহায্য তারা পাচ্ছে না । বাংলাদেশে এরা সাহায্য কার কাছ থেকে পাবে ? ভারত নিশ্চয়ই তা করবে না। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আার্মি পাশে থেকে এদের সহায়তা করেও বাঁচাতে পারেনি এবং তখন এরা আরও শক্তিশালী ছিল।
গৃহযুদ্ধের কথা মুখে বললেই হয় না , যুদ্ধ মানেই লজিস্টিক্স যেটা ছাড়া কোন যুদ্ধই করা যায় না। প্রশিক্ষনে দূর্বল সাধারণ পুলিশের চোখ উপড়ানো এক জিনিষ আর জলপাই রংয়ের সাথে লড়াই করা অন্য বিষয়। যুদ্ধ শুধু একটি ধারণা নয় , এটাতে যথেষ্ট বিজ্ঞান জড়িত। সেই হিসেবে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কারও জন্য গৃহযুদ্ধের চেষ্টা করা হবে আত্মহত্যার সমতূল্য। এসব ছেড়ে রাজনীতি করলে বরং ইসলামীপন্হীদের কিছু করে খাওয়ার সুযোগ থাকবে। অন্যথায় , আমও যাবে , ছালও যাবে।
@সংশপ্তক, অনেক ধন্যবাদ ভাই বিশ্লেষণের জন্য।আমার মত যুদ্ধ বিষয়ে এক মহামুর্খ কেন, যুদ্ধ বিষয়ে যে সিভিলিয়ানরা ভাল জানেন তারাও আপনার এই বিশ্লেষণ থেকে বেটার আইডিয়া পাবে।
সেটা তো দেখলামই।কিন্তু এই পারাটা যদি আগেই করত তবে সাইদির ফাঁসীর রায়ে জামাতের তান্ডব আমাদের দেখতে হত না। আসলে এখানে সরকারের সিদ্ধান্তের দুর্বলতা ছিল বলেই মনে হয়।
তো সরকার অ্যাকশন নিলই একটু আগে ভাগে নিলেই আর অনেক মানুষ ক্ষুদ্র ব্যবসা বানিজ্য সহ সব কিছু অগ্নি দেবতার কাছে আহুতি দিয়ে ( বাধ্য হয়ে) রাস্তায় বসত না।
আচ্ছা এই হেফাজতী রা যদি রকেট লঞ্চার সহ আরো তালেবানী অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামত, তাহলে মনে হয় কালো পোষাকধারীদের পাশাপাশি জলপাই রংকেও নামতে হত তাই না?
আগে আমার এই জলপাই রঙ সম্পর্কে একটা ভুল ধারনা ছিল। এখন দেখছি যে এদের খুবই দরকার( সেটা জল্পাই রঙ হোক বা কালো পোষাকেই হোক!)
ভাই শুনেন, কোনএকদিন প্রথম আলোতে পড়েছিলাম যে র্যাব থেকে নাকি আর্মী কমিয়ে পুলিশ বাড়ানো হচ্ছে। এইভাবে র্যাব কি দুর্বল হয়ে পড়বে না?পুলিশ কি পারে সেটাতো আমরা সাইদি বাবার ফাসির আদেশের সময়েই দেখলাম।
এখন আমি আর নিজামীর ফাঁসিতেও উল্লাস করব না যদি না নাটের গুরু বড় হুজুরের ফাসি হয়।
@সংশপ্তক,
তাতো করবেই না। তবে বাংলাদেশে নাকি আই এস আই বেশ সক্রিয়( শোনা কথা কোন নির্ভরযোগ্য সুত্র থেকে জানি না অবশ্য)।
@অর্ফিউস,
বাংলাদেশে ইসলামি বিপ্লব ঘটার সম্ভাবনা শূন্যের কোঠায়। কাজেই, এই জুজুর ভয়ে ভীত হয়ে থাকার কোনো মানে নেই। রাজনীতিতে অবশ্য ধর্মের ব্যবহার থেকে যাবে দীর্ঘদিন। এর থেকে আশু মুক্তি নেই আমাদের। তারপরেও যদি কোনোদিন বাংলাদেশে ইসলামি বিপ্লব ঘটেও যায়, তবে তা সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই ঘটবে। দুই লেজে ইসলাম, জামায়াতে বা হেফাজতের মাধ্যমে নয়। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। সে কারণে ইসলামি কোনো মৌলবাদী দলের পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন আদায় করা সম্ভবপর নয়। অন্য কোনো বড় দলের পরগাছা হয়েই এরা থাকবে সারাজীবন। অন্যদিকে, আমাদের আর্মি গড়ে উঠেছে পাকিস্তানি আদলেই। আচার আচরণ, কথাবার্তায় এরা দারুণ স্মার্ট। বাহ্যিক ব্যবহারে জনগণের বন্ধু, কিন্তু মননে, মগজে ধর্মের ঘুণপোকায় কুরে কুরে খাওয়া চরম প্রতিক্রিয়াশীলতার বসবাস। অন্তরের গভীরে এরা গণবিরোধী মানসিকতাসম্পন্ন। জনগণের বন্ধু নয়, বরং প্রভু ভাবতেই বেশি পছন্দ এদের।
@ফরিদ ভাই, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
তবু ভয় করে ভাই,দেখেন না যেভাবে মাঠে ঘাটে হুজুরদের ওয়াজ শুনি, আর সাধারন কিছু মানুষের মুখে শুনি যে গণতন্ত্র হারাম।তবে ইসলামী বিপ্লব না হলেই মঙ্গল।
এই ভয়টা যে আমিও করি না তা কিন্তু নয়।যদি সামনে বি এন পি জামাত জোট ক্ষমতায় যায়, আর সেনাবাহিনীতে ইসলামী করন শুরু করে, তবেই এইটা হতে পারে তাই না? আসলে আমার আসল ভয় এখানেই। 🙁
জী আমিও সেটাই মনে করি যদিও ধর্মান্ধ লোকজনও একেবারে কম নেই।তবে এরা সবাই মনে হয় ইসলামী দলগুলোর সমর্থক।
খুবই সত্যি কথা বিশেষ করে ফখরুদ্দীনের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাই এর বড় প্রমান।
সে ক্ষেত্রে হয়ত সেনা বাহিনীতে একটা আমুল পরিবর্তন আনা দরকার, এবং সদস্য সংখ্যা এত বেশি না রাখাই ভাল। আপনি কি মনে করেন প্লিজ জানাবেন। কিন্তু দিন দিন সেনাবাহিনী তার সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। এই ব্যাপারটা আমার ভাল লাগে না।
যুক্ত রাজ্যের মত দেশের চেয়েও ৩ গুন সেনা দিয়ে আমাদের কি কাজ বলেন?
আসলে ওইযে মাঝে মাঝেই বলে থাকি যে আমি বিভ্রান্ত। আমি কিন্তু সত্যি সত্যি বিভ্রান্ত।
এখনই সুশীল ব্লগারদের ( যারা হয়ত ব্লগে ছবি দেন অথবা সক্রিয়) উপর যে নাস্তিক্যবাদের ধুয়া তুলে যে অত্যচারটা হল, এতে একজন ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ হিসাবে বেশ ভয় হয়।
জানি না সামনে বি এন পি ক্ষমতায় আসলে মানুষের সাথে উদার ধর্মীয় সহাবস্থানের কথা বলার চেষ্টা করলেই মুরতাদ খেতাব কপালে জুটে যায় কিনা। ফলে সর্ব নিম্ন সাজা হতে পারে সমাজে এক ঘরে হয়ে থাকা।বাড়িতে তো মোটামুটি একঘরেই হয়ে আছি।
@অর্ফিউস,
ভয় পাবার কিছু নেই। হুজুররা এমনিতেই একটু উচ্চকণ্ঠ হয়, তারপরে মাইক হাতে পেয়ে আরেকটু জোরে চেচায়, আল্লাহ যাতে সাত আসমানের উপর থেকে শুনতে পায়। হুরপরী-গেলমান, সুরা সমৃদ্ধ বেহেশতে যাওয়া লাগবেতো, নাকি? এই উচ্চকণ্ঠী হুজুরদের বাইরে একদল নীরব লোক আছে। তাকিয়ে দেখুন আপনার চারপাশে। কেউ রিকশা চালাচ্ছে, কেউ ঠেলাগাড়ি ঠেলছে, কেউ হাতুড়ি দিয়ে ইট-পাথর ভাঙছে, কেউ বা হাতে টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে গার্মেন্টসের দিকে। এরাই আপনার শক্তি, এরাই আপনার সাহসের উৎস।
সেনাবাহিনীতে ইসলামিকরণ শুরু হয়েছে বহু আগেই। দুইবার ক্ষমতায় গিয়েও আওয়ামী লীগ সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ ঘটায় নি। বাংলাদেশ আর্মি পাকিস্তান আর্মির স্বার্থক উত্তরসূরী। সুরার পাত্র হাতে নিয়েও এরা কোরান থেকে সূরা তেলওয়াত করতে পারে।
এই সশস্ত্রবাহিনী কী ঘোড়ার ডিমের কাজে আসে তা আমি নিজেও জানি না। কোনো সামরিক বিশেষজ্ঞ বা বিশ্লেষককে জিজ্ঞেস করা দরকার। জিজ্ঞেস করা প্রয়োজন একটা ফাইটার প্লেন না কিনলে কয় হাজার বাস কেনা যায়, কিংবা একটা ফ্রিগেট না কিনলে কয় হাজার যাত্রী ও মালামাল পরিবাহী জলযান কেনা যায়? কিছুদিন আগে রাশা থেকে এক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার চুক্তি হলো। এই টাকা দিয়ে পদ্মা সেতুর তিনভাগের একভাগ নিজেরাই বানিয়ে ফেলা যায়। তার বদলে নিজের দেশের মানুষ মারা হবে এগুলো দিয়ে।
প্রচলিত বিশ্বাসের বাইরে যাবার ঝুঁকি প্রবল। এর জন্য ভয়ংকর সাহসের প্রয়োজন হয়। একঘরে হয়ে থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। আমি নিজেও একঘরে একজন মানুষ। স্বেচ্ছা সমাজচ্যূত।
একঘরে হয়ে থাকার কারণে ভাল-মন্দ খাওয়া-দাওয়াও কপালে জোটে না। এই যে ঈদ গেল। কেউ সামান্য দয়া দেখিয়ে দাওয়াত-টাওয়াতও করলো না আমাকে। হাফ ছদ্মবেশি, হাফ মুসলমান আদিল মাহমুদ আমার বাসা থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের দূরত্বে থাকে। সেও কিছু বলল না। একা একাই সব পোলাও-বিরিয়ানি, রোস্ট-রেজালা আর কোপ্তা-কাবাব সাবাড় করলো। এই দুঃখ রাখি কোথায় ভাই? 🙁
@ফরিদ ভাই,
আপনার কথায় ফুল চন্দন পড়ুক ( বোল্ড)।
হ্যাঁ বেহেশতের লোভ বড়ই ভয়াবহ।বেহেশত যদি থাকে সেখানে কি হবে জানি না, তবে দেখেন এই হুজুররা কিন্তু ভাল পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে,সম্মানীর নামে।
হ্যাঁ ভাই, এরা সত্যি যদি ধর্মগুরুদের দ্বারা মাতাল না হয়ে থাকে, তবে এরাই হতে পারে শক্তি যেখানে এই দরিদ্র মানুষেরাই দেশে বেশি।
আমাদের মত মধ্যবিত্ত যারা চাকুরি বা ছোট থেকে মাঝারী ব্যবসা করে জীবন চালাচ্ছি, এদের প্রধান সমস্যা হল যে পেটের ধান্ধায় আর যাই হোক হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খাটা লাগে না। যেই কাজই করি সবই প্রায় বসে থেকে। তবে ভাই, রোজার দিনে অনেক রিকশা চালকের রিকশাতে উঠেছি, যারা রোজা রেখে কি কষ্ট করেই না রিকশা চালায়।শুকনো মুখ দেখে মায়াই লাগে।
তবে এদের বউরা বিটিসির কাজ করে, কিন্তু এরা বাধা দেয় না। অবশ্যই দুইজন কাজ করলে সংসার ভাল চলবে এই আশায়।
উলটো তথাকথিত মধ্যবিত্ত সমাজের যেহেতু আয় ইনকাম ভালই এবং ঢাকার বাইরে একজনের ইনকামেই বেশ ভালই সংসার চলে ( নিজের বাড়ী থাকলে তো কথাই নেই), তাই এদের ক্ষেত্রেই বউয়ের চাকরি নিয়ে আপত্তি বেশি।আর ধর্মের কচকচানি বেশি।এই শিক্ষিত লোকগুলো আসলে কবে যে প্রকৃত শিক্ষিত হবে আমার জানা নেই।এদের বুঝানো যায় না যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষা দেয়া হয় এর সাথে প্রকৃত শিক্ষার কোন মিল নেই।ডাক্তার বলেন বা এঞ্জিনিয়ার অথবা ব্যঙ্কার, সবাই আছে শিক্ষার গরম নিয়ে, যদিও সুস্থ মাথায় চিন্তা করতে গেলে এগুলোর কোন দাম নেই।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুধু রুটিরুজির জন্য এর সাথে আজকাল বেশি জ্ঞান লাভ বা মননশীলতার সম্পর্ক নেই, সেইটা এরা বুঝে না।আর সঙ্কট এখানেই।
কিছু বললেই এদের কাছে থেকে শুনতে হইয়, “আরে ভাই আমি কি বুঝি না? অশিক্ষিত পাইসেন নাকি?”। অথচ যে বলছে সেও যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় তার চেয়ে কোনদিক দিয়েই কম না, আর সেটা চোখে দেখে না অথবা না দেখার ভান করে।
চমৎকার বলেছেন ভাই। আমিও এই সশস্ত্র বাহিনীর কোন দরকার আছে বলে মনে করি নি কোনদিন।
তবে সাইদির ফাঁসীর রায়ের পর জামাতের তান্ডব আর পুলিশের মার খাওয়া দেখেই কেন জানি মনে হচ্ছে যে সন্ত্রাসী ঠেঙ্গানোর জন্যে হলেও এদের দরকার আছে হয়ত।
তবে এত বেশি সংখ্যায় না। শুধু দেশের টাকা অপচয়।
উইকি তে যে বাংলাদেশের সামরিক বাজেট দেখলাম তা নেহায়েত বাস্তবের সাথে অসংগতিপুর্ন।কারন সামরিক বাহিনী যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে তার এক কনাও অন্যরা পাচ্ছে না। বেশি কিছু না বলে শুধু ঢাকার অন্য এলাকা আর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পার্থক্য দেখলেই বোঝা যায়।সেনানিবাস কে রীতিমত প্রমোদ কুঞ্জ বলা যেতে পারে, যেখানে ঢাকার অন্য যায়গাতে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়,যার অন্যতম প্রধান কারন জ্যাম আর মারাত্বক ঘনবসতি।
এখানেই ভাই আপনার সাথে আমার অনেকটাই পার্থক্য আছে।আর তাছাড়া নাস্তিক বলতে যা বলা হয় আমি সেটাও নই। আসলে ধর্ম কর্ম নিয়ে বা স্রষ্টার অস্তিত্ব নিয়ে আমি মাথা ঘামাবার চেয়ে নিজের কাজ করতেই পছন্দ করি বেশি যেহেতু স্রষ্টা থাকলেও আমার ২ পয়সার লাভ নেই না থাকলেও দু পয়সার ক্ষতি নেই।
জন্ম পরিচয়ে মুসলিম, কিন্তু যেহেতু মাথাই ঘামাই না তাই কোনভাবেই নিজের আইডেন্টিটি বদলাই নাই আমি।
তবে যদি বদলাতামও, তবু মনে হয় না আপনার মত প্রচন্ড সাহস( আমি যেটাকে সৎসাহস বলব) আমার নেই।কাজেই সমাজ থেকে একেবারে ছিটকে যাবার ইচ্ছা আমার নাই বলেই কারো সাথে ধর্ম নিয়ে কিছুই বলি না সযত্নে বিতর্ক এড়িয়ে যাই।
তবে সাম্যের কথা বলার চেষ্টা করি, তার বেশি কিছুই না।
আমি তো কোন দাওয়াতের কথা বুঝাই নাই ভাই :-)।তবে পরিবারে পিতামাতার সাথে যে মানসিক দুরত্ব তৈরি হয়ে গেছে, সেটা ঘুচাবার উপায় নেই আমার।
তাদের একটাই কথা যে তাদের সন্তানের নামাজ রোজা করতে হবে, ধর্ম কর্ম মানতে হবে, বন্ধুরাও একই সবক দেয়( যদিও বন্ধু রা নামাজ পড়ে না বললেই চলে, তবে রমজান মাসে এদের নামাজ পড়ার হার আশঙ্কা জনক হারে বেড়ে যায়)।
এমনকি এইবার রোজায় মা আমার জন্য দিনের বেলা রান্না করতেও অস্বীকার করেছিল একদিন(পাপের ভাগী হবার ভয়ে)।যাক এইসব ব্যক্তিগত কথা ব্লগে বলে আর কি লাভ।
হাহাহা আপনিও তাহলে ফরিদ ভাই কানাডাতেই থাকেন?তো আদিল ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগটা কিন্তু বেশ গুরুতর। :-p
@অর্ফিউস,
ফরিদ ভাই পড়ুন
তবে যদি বদলাতামও, তবু মনে হয় না আপনার মত প্রচন্ড সাহস( আমি যেটাকে সৎসাহস বলব) আমার আছে।
সংশোধন করলাম। আসলেই এই সৎসাহস আমার নেই যেটা আপনার আছে।
@অর্ফিউস,
সৎসাহস তোমাদেরই আছে, যারা বাংলাদেশে বসে কুপমণ্ডকতার বিরুদ্ধে লিখছো। আমরাতো হাজার মাইল দূরের নিরাপদে আছি। এখানে সৎসাহসের কিছু নেই।
@ফরিদ ভাই, ধন্যবাদ ভাই আপনার উৎসাহ দানের জন্য।আসলে আপনার যেকোনো পজিটিভ উৎসাহ দান, নতুনদের জন্য এক বিশাল অনুপ্রেরনা।
কিন্তু বেশিরভাগই লিখছে পর্দার অন্তরালে ছদ্মনামের আড়ালে, ছবি দেয়ার তো সাহসই নেই, জানের মায়া কার না আছে 🙁 ।
@অর্ফিউস,
আমি ভেবেছিলাম যে আপনি বাংলাদেশেই থাকেন। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
মুরতাদ মাহমুদের নিজেরই কপালে কিছু জুটে না আর আপনারে সে খাওয়াবে কি। তার অবস্থা আরো করুন, বাড়িতে কুকুর পুষলে টের পেতেন শুধু সে কারনেই কত সহজে সমাজচ্যূত হওয়া যায়।
– প্রমান করতে পারবেন? কোন বৈজ্ঞানিক বা ঐতিহাসিক প্রমান আছে? না হলে আইসিটি এক্টের ৫৭ ধারায় কিন্তু মামলা করতে পারি।
@আদিল মাহমুদ,
কুকুর নাপাক প্রাণী। নবীজী পছন্দ করতেন না। সেই নাপাক প্রাণী পুষলেতো সমাজচ্যুত হবেনই। এতে মাথা ঠোকার কী আছে? আপনি কি বিলাতি সাহেব নাকি যে কুকুর পোষার আদিখ্যেতা দেখান।
প্রমাণ লাগে ছোটো কাজে, বড় কাজে না। আপনি যে ধমাধম মার্কা ধর্ম বাজারে ছাড়ছেন তার ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ কই? বৈজ্ঞানিক জার্নালে লেখা দেখান, প্রত্নতাত্ত্বিক খোঁড়াখুঁড়ি দেখান, ফ্রিজের ভিতরের ছবি ফেইসবুকে আপলোড করেন, হাঁড়ি-পাতিলের গন্ধের ল্যাব টেস্ট দেখান।
@ফরিদ আহমেদ,
– আমি শুধু যোগ করব ভোট বা গনতন্ত্রের মাধ্যমে। লোকে মুখে যতই হেফাজত হেফাজত করে ঈমান প্রদর্শন করুক আর খালেদা হাসিনাকে গালাগালি করুক ভোটের বেলায় হেফাজতি গোছের কাউকে নয়, ভোট দেবে সেই হাসিনা খালেদাকেই।
কিন্তু গনতান্ত্রিক উপায় ছাড়াও ইরান কায়দায় বিপ্লব ঘটার সম্ভাবনা এ মুহুর্তে অবাস্তব বলে মনে হলেও ২০ বছর পর এতটা অবাস্তব নাও হতে পারে। সরল হিসেব বলে সাধারন জনতার মাঝে ইসলামী প্রভাব দিনে দিনে বাড়ছে, ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থার প্রতি এপ্যাথি বেড়েছে। এটা তো অস্বীকার করা যায় না। ‘৭২ সালে লোকে ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থায় কোনই আপত্তি করেনি, স্বাভাবিক ভাবে নিয়েছিল, আজকের বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থা ব্রুট মেজরিটি সরকারও ফেরাতে সাহস করবে না। যার জ্বলন্ত প্রমান দেখা গেছে শাহবাগ আন্দোলন কেন্দ্র করে। আন্দোলন প্রথম আন-এক্সপেক্টড হোঁচট খেয়েছিল ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী কেন্দ্র করে। ইরান আফগান কায়দার ইসলামী বিপ্লব আরো বড় সহায়ক হচ্ছে বড় দুই দলের নজির বিহীন ব্যার্থতা এবং দূর্নীতি অনাচার, যা সাধারন মানুষকে আরো বেশী করে বিকল্প ব্যাবস্থার সন্ধানে আগ্রহী করবে দিনকে দিন। মুসলমান মানসে সেই বিকল্প আর কি হতে পারে। ইরান, মিশর এসব দেশে এভাবেই ধর্মভিত্তিক দল ব্যাপক সমর্থনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতায় এসেছে। বাংলাদেশে এমন কিছু অসম্ভব হতে যাবে কেন?
আমারো মনে হয় না সেনাবাহিনী তেমন পরিস্থিতিতে নাটকীয় কিছু করবে বলে। তারা নিজেদের বাজেটে টান পড়বে না তার নিশ্চয়তা নিশ্চিত হলে নীরব ভূমিকাই পালন করবে। মিশরের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা দেখি অনেকে দেবতূল্য হিশেবে বিবেচনা করছেন। যতটা জানি সেখানে মূল সমস্যা হয়েছিল মুরসির সাথে সেনাবাহিনীর ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, এর সাথে গনতন্ত্রের বিজয়, মৌলবাদ রোধ করাকরির মহত্ব নেই। মুরসি চালে ভুল করেছেন।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইসলামি বিপ্লবতো প্রশ্নই উঠে না, ইরান কায়দায়ও বাংলাদেশে ইসলামি বিপ্লব ঘটার কোনো সম্ভাবনা আমি দেখি না। মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে ধর্মীয় আচার আচরণের দেখানি ভাবটা আগের তুলনায় দৃষ্টিকটুভাবে বেড়েছে এটা অনস্বীকার্য। কিন্তু এর বাইরে যে বিরাট সংখ্যক খেটে খাওয়া মানুষ আছে, তাঁদের মধ্যে কিন্তু এই বাড়াবাড়িটা এখনো তৈরি হয় নি। এই দেশের দীর্ঘ ইতিহাসে মৌলবাদ কখনোই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে দানা বেঁধে উঠতে পারে নি। বরং ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, সবচেয়ে উর্বর সময়ে, যখন রাষ্ট্র প্রাণপনে চেষ্টা করেছে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি মানুষের মধ্যে ঢোকানোর, তখনও মানুষ ধর্মীয় চিন্তার বাইরে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির জন্যই জানপ্রাণ বাজি রেখে আন্দোলন করেছে, সশস্ত্র যুদ্ধ করেছে। আমাদের সেই অসাধারণ সাধারণ মানুষদের খুব একটা পরিবর্তন হয় নি, পঁচে যাওয়া সময় তাঁদেরকে স্পর্শ করতে পারে নি।
সামাজিক সূচকের যে সমস্ত জায়গায় বাংলাদেশে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারী শিক্ষা। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাঁদের অবদান এখন সুস্পষ্ট। মৌলবাদের প্রথম এবং প্রাথমিক আঘাত যেহেতু আসে নারীদের উপরে, আমাদের এই সংগ্রামী নারীরা তাই সেই মৌলবাদের রাজনীতিকে রুখে দেবে নিজেদের প্রয়োজনে। কাঠমোল্লাদের ঠেকাতে অন্য কাউকে লাগবে না আমাদের।
আমার ফেইসবুকের বন্ধু তালিকায় পৃথু স্যন্যাল নামে একজন ভদ্রলোক আছেন। কদিন আগে তিনি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তাঁর ফেইসবুকে। এখানে সেটা তুলে দিচ্ছি। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষেরা কতখানি খাঁটি সোনা, তার একটা খণ্ডচিত্র পাবেন এখানে।
তাই বলছি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আস্থা হারিয়েন না। শুধু মধ্যবিত্ত আর উচ্চবিত্ত লোকজন নিয়ে বাংলাদেশ নয়, এর মূল অংশ হচ্ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। জামাতি, হেফাজতিরা আন্ধা হতে পারে, দুনিয়া দেখতে পারে বক্র দৃষ্টিতে। কিন্তু, আমাদের এই মাটির সাথে নিবিড় সম্পর্কযুক্ত মানুষগুলো পৃথিবীটাকে দেখেন দুই চোখ খোলা রেখে। সেই দেখা সরল কিন্তু অত্যন্ত সঠিক।
@ফরিদ আহমেদ,
ফেসবুকে ভিন্ন ধরনের ষ্ট্যাটাসও প্রচুর দেখা যায়। কোন ধারার ষ্ট্যাটাসের মত দেশে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ তা কিছুটা নিশ্চয়ই সিটি কর্পোরেশনগুলির অবাক করা ফলে বোঝা যেতে পারে। এসব নির্বাচনে হেফাজতিরা সরাসরি প্রচার প্রভাব খাটিয়েছে, তার ফলও ফলেছে (যদিও নিঃসন্দেহে এটা মনে করার কারন নেই যে শুধু এটাই আওয়ামী ভরাডুবির কারন।
বাংলার খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ নিঃসন্দেহে সাম্প্রদায়িক বা ধর্মান্ধ নয়। নারী উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জন আসলেই ঈর্ষনীয়, ভারতও এখন পেছনে পড়ে গেছে নারী শিক্ষার ইন্ডেক্সে। খুবই খুশীর কথা। শুধু স্মরন করাই যে ৬০/৭০ দশকে আফগানিস্তানের মহিলারাও প্রচুর স্বাধীনতা ভোগ করেছে, বাদশাহ আমানুল্লাহ/জহির শাহের বাস্তবমূখী নীতির ফলে সেখানেও নারী অগ্রগতি ভালই হয়েছিল। ৭০ এর দশকের শেষে আমার এক মামা মামী দূতাবাসে চাকরির সূত্রে সেখানে ছিলেন, ওনারা তখন গল্প করতেন কি চমতকার এক দেশে থাকেন। ঢাকার রাস্তায় তখনো মহিলাদের গাড়ি চালানো একেবারেই বিরল ছিল। মামী তখন কাবুলের রাস্তায় দিব্ব্যী আরামে গাড়ি চালাতেন। এরপরের চিত্র কি তা বলে সময় নষ্ট করছি না।
রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করে, নেতা নেত্রী সৃষ্টি করে খেটে খাওয়া অসাম্প্রদায়িক সাধারন মানুষ নয়। সেটা হয় শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত, সুশীল শ্রেনীর থেকেই। এরা কোনদিকে ইনক্লাইন হচ্ছে সেটা তাই গুরুত্বপূর্ন। ট্যাক্সি চালক বা গার্মেন্টস কর্মী মহিলা নেতা মন্ত্রী এমপি হবে না। হেফাজতের ঢাকা অবরোধের সময় সরকারের পতন কি খুব একটা অবাস্তব কিছু হত? আমার তেমন মনে হয় না। যতটা মনে হয় হেফাজত বিএনপি বোঝেনি যে সরকার হঠাতই কঠোর অবস্থানে যাবে, নইলে তারা ওভাবে অফগার্ড অবস্থায় পড়ত না। ঘটনা পরদিন পর্যন্ত গড়াতে দিলে পরিস্থিতি কোনদিকে যেত বলা শক্ত।
ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির ওপর থেকে যে লোকের আস্থা চলে গিয়েছে তাই নয়, এটাকে ঘৃনা করার সংস্কৃতিও চালূ হচ্ছে সেটা যদি এখনো না স্বীকার করে পাকিস্তান আমলে কিভাবে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় সংগ্রাম করেছে সেই দিনেই আবদ্ধ থাকি তাহলে বড়ই মুশকিল। সম্প্রতি PEW এর করা এক জরীপে বাংলাদেশে শরিয়া চায় এমন মতামত পাওয়া গেছে ৮২%। এটা কিসের ইংগিত করে বলে আমরা বুঝতে পারি? ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার? বলতে পারেন যে এই জরীপ কোন পরীক্ষিত সত্য নয়। সেটা না হলেও যথেষ্ট ইংগিতবাহী বলা যায়। বাংলাদেশের এই হার এমনকি কিছু আরব দেশের চেয়েও বেশী, ব্রাদারহুডের ইজিপ্টও আমাদের পেছনে আছে, সর্ববৃহত মুসলমানের দেশ এবং আংশিক শরিয়া আইনে চলা ইন্দোনেশীয়া পর্যন্ত ফেল।
আমিও বলতে পারি না ইসলামী বিপ্লব আদৌ হবে কিনা। তবে আপনার মত এতটা নিশ্চিত হতে পারলে খুশীই হতাম। এ জাতীয় জিনিস সঙ্ঘটনের জন্য অবশ্যই বাহ্যিক কিছু সহায়তা দরকার হবে, সেটার ওপরও অনেকটা নির্ভর করে। সামনের বছরগুলিতে জামাতের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল। রাজাকাররা শাস্তি পেয়ে হোক আর ন্যাচারালি পটল তুলে হোক খুব বেশী দিন নেই। এরপর যুদ্ধপরাধী মুক্ত জামাত সমর্থনে সংকোচের বালাই থাকবে? ইসলামী আন্দোলনের জন্য এর চাইতে যোগ্য দল আর কে হতে পারে? প্রথম আলোর জরিপ দেখে লোকে গোস্ম্যা করে, আমার তো মোটেও মনে হয়নি জরিপ উলটা কিছু বলেছে।
ইসলামী বিপ্লব হোক কি না হোক দেশে যে দুই ধরনের মূল্যবোধের সঙ্ঘাত শুরু হয়েছে সেটা তো অস্বীকার করা যাচ্ছে না। এটাই বা কম ক্ষতিকর কিসের? ব্যাক্তিগত থেকে সমষ্টিগত, রাষ্ট্রীয় সব ব্যাপারে এইস সঙ্ঘাতের প্রকট ভূমিকা দেখা যাবে দিনকে দিন।
@আদিল মাহমুদ,
গণতন্ত্র থাকলেই সেখানে দুই ধরণের আদর্শ বা মূল্যবোধ ক্রিয়াশীল থাকবে। এক ধরণের আদর্শ বা মুল্যবোধে গণতন্ত্র হয় না। এটি এক্সট্রিম লেভেলের দিকে গেলেই শুধুমাত্র ক্ষতির আশংকা, এর আগে নয়। এই আদর্শিক দ্বন্দ্ব বরং সুস্থ প্রতিযোগিতারই সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র খুব প্রাথমিক অবস্থায় আছে, যে কারণে অস্থিতিশীলতা ক্রিয়াশীল, সঙ্ঘাতের দৃশ্যপট বিরাজমান। অনাগত সময়টা যতখানি না আদর্শের হবে, তার চেয়ে ঢের বেশি হবে অর্থনীতির। অর্থনৈতিক প্রয়োজনেই আগামী দিনগুলোতে এই সংঘাত প্রকট না হয়ে বরং কমে আসবে বলেই আমার ধারণা।
মুক্তমনায় আপনাদের সব অসাধারণ রাজনৈতিক বিশ্লেষণ পড়লে বাংলাদেশকে কট্টর একটা মৌলবাদী দেশ ভেবে আতংকিত হতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। কিন্তু, আমার কেনো যেন আতংকিত হতে তেমন ইচ্ছা করে না। এক সময় রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলাম বলে, সাধারণ মানুষকে খুব কাছে থেকে দেখেছি বলেই এই সমস্যা আমার। এনিওয়ে, আপনি বরং বাংলাদেশে ইসলামি বিপ্লবের আশংকা নিয়ে আশংকিত থাকুন। আমি না হয় সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক সুবিবেচনার উপর আস্থা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যাই।
বুয়েনাস নচেস।
আমাদের দেখা দরকার যে, জামাত একটি গনতান্ত্রিক সংগঠন কি না। গনতন্ত্রের সাথে স্বচ্ছতা ঘনিষ্টভাবে জড়িত। তাহলে জামাতের সমস্ত রোকনদের নাম এবং পরিচয় কেন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয় না ? দলটি কিভাবে পরিচালিত হয় তা কেন জন সাধারণের কাছে গোপন রাখা হয় ? আপনি হয়তো জানবেন না যে আপনারই পরিচিত কেউ জামাতের একজন রোকন যিনি আবার প্রকাশ্যে বি এন পির একজন নেতা ?? এ ধরনের গোপনীয়তা জামাতের গনতান্ত্রিক চরিত্র সম্পর্কে মানুষকে বিচলিত করতে পারে । জামাত যে একটি মেষের চামড়া পরিধান করা একটি নব্য নাৎসী নেকড়ের দল নয় তা প্রমান করার দায়িত্ব জামাতের নিজের।
@প্রতিবেশী,
কিন্তু, জামাত যদি তাদের গঠনতন্ত্র পরিবৰ্তন করে, তবে কি বাংলার শরিয়াহভক্ত তৌহিদী জনতার সৰ্মথন তারা পাবে ???
বিম্পি(১৮+ দল) কিভাবে গ্রামের সহজ সরল তৌহিদী জনতার সামনে ইসলামী সাম্রাজ্যবাদের মূলা ঝুলাবে ???
সবাই গনতন্ত্র কে নিয়ে এত জল ঘোলা করছি। আগে দেখতে হবে গণতন্ত্র কতটা মানবিক। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যদি চায় সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নেবে তাহলে কি তা ঠিক? কিন্তু গণতন্ত্র এটাই বলে। যেহেতু গণতন্ত্র বলছে সব ধরণের বিশ্বাস আদর্শের মানুষের রাজনীতি করার অধিকার আছে তাহলে কারো যদি গণতন্ত্র বিরোধী আদর্শ থাকে সেও কি রাজনীতি করতে পারবে? তাই আমি মনে করি গণতন্ত্রকে কোরআন হাদিস , রামায়ন , বাইবেল এর মত করে নির্দোষ ভাবলে হবে না ।এর কিছু দোষ ত্রুটি ও আছে । এটি পুরোপুরি মানবিক নয়। আমাদের উচিত হবে এর ভাল দিক গুলি নেয়া । খারাপ দিক গুলি বর্জন করা । প্রয়োজনে গনতন্ত্রকে সংশোধন করে একে আরও অধিকতর মানবিক করে তুলতে পারি আমরা। আমেরিকা ইংল্যান্ড , জার্মান যদি গনতন্ত্রকে পুরোপুরি অনুসরন করে চলে তাহলেই যে তারা সঠিক পথে আছে এটা মনে করার কোন কারন নেই। মিসরের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করলে গণতন্ত্রের দুর্বলতা গুলি ধরা পড়বে ।
@মাসুদ রানা মন্তব্য নয় যেন মিশর জয় করে ফেলেছেন এমন কিছু
@মাসুদ রানা,
এই সবগুলি ধর্মগ্রন্থ রীতিমত খুনাখুনির, বিবরনের ভরা। আর প্রচণ্ড পরিমানে অসংলগ্ন আর পরস্পরবিরোধী ভার্স গুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম।
@অর্ফিউস,
প্রচণ্ড পরিমানে অসংলগ্ন, পরস্পরবিরোধী ভার্স, আর রীতিমত খুনাখুনির বিবরণে ভরা কোরানকে ‘পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান’ বলা হয় কীভাবে? যারা ইসলামী শাসনতন্ত্র কায়েম করতে চান তারা দাবী করেন, ঘর থেকে সংসদ, রাষ্ট্রের সর্বত্র চলবে কোরানের আইন। নাচতে হবে বোরকা পরে, বাজনাবিহীন গজল, সুদহীন ব্যাংক, কোরান হাদিসের সমর্থনযোগ্য বিজ্ঞান। কেমন হবে সোনার বাংলাদেশের অবস্থাটা? গণতন্ত্র কোরানে সাফ হারাম, তন্ত্র হবে একমাত্র আল্লাহর। কোরান হাদিস তথা শারিয়ার আইন কেমন হয় তা আমরা সকলেই মোটামুটি জানি। আমরা দেখেছি, কীভাবে চোরের দায়ে হাত কেটে গরীবকে জীবনের তরে পঙ্গু করে দেয়া হয়। কীভাবে ১১জন বাংলাদেশীর কল্লা তলোয়ার দিয়ে কচাকচ কেটে ফেলা হয়, সমকামী ২ কিশোরদের প্রকাশ্য মাঠে ফাসিতে লটকানো হয়, কীভাবে পাথর মেরে নিরপরাধ অবিবাহিত নারীর মগজ উড়িয়ে দিয়ে উল্লাস করা হয়। এ সব আমরা নিজের চোখেই দেখছি।
শাফির ১৩ দফার একটিও কোরান বহির্ভুত নয়। এখন প্রশ্ন হলো-
ইউরোপিয়ান সুষ্ট গনতন্ত্র অনুসরণ করে বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মুসলমান শারিয়া আইনের পক্ষে ভোট দিলেন। মানব রচিত সংবিধানকে আল্লাহর রচিত সংবিধান দিয়ে প্রতিস্থাপন করলেন। দেখা গেল দেশে (যদিও সংখ্যায় কম) কিছু মুসলমান আছেন তারা শা্রিয়া আইনকে অমানবিক মনে করেন এবং মানেন না। তারাও কি হাত কাটা, গলা কাটা, পাথর মারা মনতে বাধ্য হবেন?
সুষ্ট গণতন্ত্র চর্চার লক্ষ্যে জামাতকে রাজনীতির অধিকার দিলে, মুফতি হান্নানের হরকাতুল জিহাদ, বাংলা ভাই ও শায়েখ আব্দুর রহমানের জামাতুল মুজাহিদিন, নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরকে কেন দেয়া হবেনা?
ইসলামী সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূলের লক্ষ্যে ধর্মরাজনীতি নিষেদ্ধের কথা উঠলেই আমার দেশের কিছু উচ্চশিক্ষিত সুশীল সমাজ ইউরোপিয়ান গণতন্ত্র, উন্নতবিশ্বের রাজনীতির সবক নিয়ে আসেন। খুব সুচতুরভাবে কার্লমার্ক্স মাওসেতুং এর মতবাদের সাথে মুহাম্মদের মধ্যযুগীয় মতবাদকে নিয়ে আসেন। উন্নতশী্ল ও উন্নয়নশীল দুই বিশ্বের শিক্ষা-সংস্কৃতি, মন-মানস, চিন্তা-সচেতনতা, আর্থ সামাজিক অবস্থানের আকাশ পাতাল ব্যবধান তারা উল্লেখ করেন না। এক বিশ্বের মানুষ এখনও চাঁদে সাঈদীকে দেখতে পায়, অন্য বিশ্বের মানুষের স্বামী জানেই না তার স্ত্রী কাকে ভোট দেয়। আমার দেশের কোন নারী তার স্বামীর ইচ্ছের বিরোদ্ধে ভোটের মাধ্যমে তার নিজের অধিকার, ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারবে? স্ত্রীর এই ভোটের কোন মূল্য আছে? হেফাজতের এক অনুষ্ঠানে বক্তা সগর্বে উচ্চারণ করলেন-
এবার চিন্তা করেন একদিকে শাহবাগের স্বাধীন নারীও শ্রমজীবী গার্মেন্টসকর্মী নারীদের ভোট, অপরদিকে হেফাজতিদের পরজীবী পরাধীন নারীদের ভোটের মধ্যে পার্থক্যটা কী?
সুতরাং আমি বলবো, আমাদের গণতন্ত্র, আইন সংবিধান হবে আমার দেশের মাটি, আবহাওয়া, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও আর্থ-সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় রেখে।
@আকাশ মালিক ভাই, সৰ্ম্পূন সহমত।
আমারও প্রশ্ন :
@আকাশ মালিক,
অবশ্যই না বুঝে, আর কল্পিত দোজখের ভয়ে এবং বেহেশতের লালসায়।
এটাও না বুঝেই।আসলে আপনি ভাল করে লক্ষ্য করে দেখবেন যে, ৯০% মুসলিম শরিয়ার কিছুই বুঝে না।এরা ইসলাম কে নিজেদের সুবিধা মত সাজিয়ে নিয়ে সেটিকেই প্রকৃত ইসলাম বলে দাবী করে। শরিয়া আইন হলে আমাদের মত ইহুদী নাসারাদের কি হবে সেটা জানি না, তবে সবচেয়ে যন্ত্রনায় পড়বে এইসব মডারেট মুসলিম রা। আপনি দেখেন, এদের অধিকাংশের বউ কিন্তু চাকরি করে।
ঢাকার কথাই দেখেন না, একজন ছেলে বা মেয়ে এম এ পাশ করে চাকরি করে প্রারম্ভিক কত টাকা বেতন পায়? ১৫ থেকে ২৫ হাজার( খুব লাকি হলে অথবা এমবিএ ডিগ্রি থাকলে) যা দিয়ে ঢাকার মত শহরে পান্তা ভাত খেয়ে আর বস্তি টাইপের ঘরে থেকেও সংসার চালানো মুশকিল।( যেখানে ঢাকার সাধারন এলাকাতেই ২ রুমের একটা বাড়ি কমপক্ষে ১০০০০ টাকা ভাড়া।)
সেখানে যদি এই উপার্জন দ্বিগুণ হয় ( হাসবান্ড ওয়াইফের আয়ের ফলে) তবে সমস্যাটা কি?
ধর্মীয় মগজ ধোলাই অনুসারে চাকরি করলে নাকি মেয়েদের স্বভাব খারাপ হয়ে যায় বলেই অনেকের ধারনা। অথচ বাস্তবে দেখেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মেয়েরা কিন্তু কোন রিলেশনশিপে থাকলে বা বিয়ে করলে, শুধু হাতে গোনা কিছু বন্ধু ছাড়া কোন ছেলের সাথে এমন কি মজা করেও কথা বলে না( ফ্লার্ট না শুধুই ফান যাকে বলা হয়), অপর পক্ষে বেশিরভাগ ছেলেই সুযোগ পেলেই পরকীয়া পর্যন্ত করে, সোজা কথায় বউয়ের সাথে চিটিং। কাজেই বোল্ড করা অংশটুকু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটা ভ্রান্ত ধারনা, এবং নারীকে চরম অবমাননা করা ছাড়া আর কিছুই না।( কাউকে প্রতারক সাজানোর থেকে চরম অপমান আর কি হতে পারে?যদিও প্রকৃত প্রতারকরাই এইসব রটয়ে বেড়ায়)।
আহা আপনি তো বোরকার চাপে একেবারেই চাপা পড়ে গেলেন দেখছি। বোরকা পড়ে নাচাটা অনেক উত্তেজক হতে পারে।যেখানে পর পুরুষ মেয়ের কথা শুনলেই সেটাকে কন্ঠের যেনা বলা হয় ইসলামে।চোখ দিয়ে পরপুরুষ কে দেখলেই হয়ে যায় চোখের যেনা,সেখানে বোরকার পড়ে নাচাই বলেন আর অফিস করাই বলেন সবই হারাম, শরিয়াহ আইনে।কারন আপনি অফিস করবেন বোরকা পড়ে আর কোন ছেলে আপনার কন্ঠ শুনবে না এমন অবাস্তব কল্পনা করা কি সম্ভব?
সুদহীন ব্যাঙ্ক বলে কিছু আছে নাকি?ইসলামী ব্যাংক নিজেই সুদ খায় সচেয়ে বেশি, আর ভোক্তাদের সুদ দেয় সবচেয়ে কম।ডি পি এস করলে গড়ে ১০.৫% হারে সুদ যেখানে সরকারী ব্যাংক গুলো দিচ্ছে ১২%।আর আপনি যখন লোন নেবেন সেখানে আপনাকে হয়ত ১৫-১৮ % হারে সুদে টাকা ধার দেয়া হবে কিন্তু হিসাব করে দেখেন যে এরা আসলে পরে শতভাগ লাভ করে নেয় ( না হলে তো ব্যঙ্কই চলবে না; কর্মকর্তাদের বেতন আছে না?এই মাত্র ৭% সুদের পার্থক্য যদি রিয়েলিটি হত তবে সব ব্যাঙ্ক লাটে উঠত যা হোক এটাই ব্যাংকিংএর নিয়ম, যা ইসলামী ব্যাঙ্ক অস্বীকার করে থাকে।
কোরানে যেখানে স্থুল গাণিতিক ভুল আছে( পাটিগনিতের) কাজেই এই জিনিস কি বিজ্ঞান দিবে সেটা বুঝতে কারো বাকি থাকার কথা নয়, যদি মগজে ইসলামের বাইরেও কিছু চিন্তা করার ক্ষমতা থাকে।
এইটা আমি আজো বুঝি না একটু বুঝিয়ে দিতে পারবেন?প্রায়শ এটা শুনি কিন্তু বুঝি না।আল্লাহ কি নেমে এসে বলে যাবে যে অমুক হবে তোমার প্রধানমন্ত্রী?
আর এতে বাংলাদেশে হয় বিকৃত উল্লাস।
আরে এরা আবার মুসলিম নাকি? এরা নিজেরাও জানে না যে এরা নাসারা।
তবে বাধ্য এরা হবেই। আর সাথে আছে জিজিয়া।
একই প্রশ্ন আমারো। আমার মনে হয়, সফিক উত্তরটা ভাল দিতে পারবেন।
এরা হল ভেড়ার ছদ্মবেশে নেকড়ে।সাধারন মুসলিমরা শরিয়া বুঝে না, কিন্তু এই এলিট শ্রেনী শরিয়া বুঝে খুব ভাল ভাবে আর ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে অন্যদের উপর শরিয়াহ চালিয়ে ডমিনেট করতে চায়।আশরাফ আর আতরাফের মধ্যে যা পার্থ্যক আর কি।
এই লেখার লেখক খুবি আচানক ভাবেই বলেছিলেন অনেকদিন আগে এক মন্তব্যে( ভবঘুরে সংক্রান্ত ক্যাচালে), যে আমি নাকি মুহাম্মদ কে শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ক্রিমিনাল মনে করি।
অথচ ভবঘুরের একতরফা মুসলিম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে আমিই সবচেয়ে আগে রুখে দাড়িয়েছিলাম, পরে অন্যরা। আপনার হয়ত মনে আছে যে সাইফুল ইসলামের ইসরায়েল নিয়ে একটা লেখাতেই আমি সর্ব প্রথম মন্তব্য করি, আর আমার স্ট্যান্ড ছিল ভবঘুরে আর চাকলাদারের অযৌক্তিক আর অমানবিক চিন্তা চেতনার বিরুদ্ধে)
যাই হোক উনার প্রতিবাদ করে উনাকে ব্যাপারগুলো মনে করিয়ে দেয়ার পর উনু আর জবাব দেন নি ( জবাব থাকলে তো দেবেন!)
এমন কি উনার আরেক লেখাতেও ভবঘুরেকে আক্রমন করেছিলাম, আর উনিই বলেছিলেন যে এখন মনে হয় এটা আলোচনার সময় না।
তাহলে পরে আমার বিরুদ্ধে এই মন্তব্য কেন? সম্ভবত উনি এতই বেশি চিন্তাশীল যে নিজের কি পড়েন ভুলে যান।হয় হয়, মহা জ্ঞানীদের বেলায় এমন হয়;নিউটনের বিড়ালের ঘরের দরজার কাহিনী মনে আছে না? ছোট বিড়াল বড় দরজা দিয়ে কিভাবে ঢুকবেন। লেখক নিউটন না হলেও এইরকম কিছু একটা ( জ্ঞানের ক্ষেত্রে) ভং ধরতে ভালবাসেন।
আসলে উনি নিজেও ভবঘুরের মত অ্যারোগান্ট তবে তার এই একরোখা মনোভাব তার সব বিরুদ্ধ মতের বিরুদ্ধেই, যদিও ভবঘুরের একরোখা বিদ্বেষ ছিল শুধু একটি দিকে।
অপ্রাসঙ্গিক ভাবে ভবঘুরেকে টেনে আনার জন্য দুঃখিত, তবে সফিককে সঠিক ভাবে বিশ্লেষণ করতে গেলে, এই উপমা দেয়ার খুবই যৌক্তিক কারন ছিল।
এই ব্লগে ভবঘুরে কে অনেকেই অমুসলিম ধরে জন্মেছেন বলে মনে করেন কাজেই সেই সুত্র ধরেই সফিককেও আমি ছদ্মবেশি মৌলবাদী ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছি না( যদিও রাজাকার ভাবছি না)
এটাকে আমি জেনেশুনে প্রতারণা করা বলব যেটা লেখক করেছেন।
পার্থক্য একটাই, আত্ম নির্ভরশীল আর পরনির্ভরশীল।
অবশ্য ইসলামের জেহাদে নাকি মেয়েরাও অংশ নিত, এরা এখন মজুত আছে, ফরকার মত আপনার আমার বিরুদ্ধে জেহাদে নেমে পড়বে।
(Y) আমিও সেটাই মনে করি।
বি.দ্র. আমার মতে এটা আপনার একটা অন্যতম সেরা মন্তব্য। এটার সাথে আরেকটু যোগ করে লেখা আকারে দিয়ে দেন না মানুষ অনেক কিছু জানতে আর বুঝতে পারবে।
@অর্ফিউস,
পড়ুনঃ দরকার মত আপনার আমার বিরুদ্ধে জেহাদে নেমে পড়বে। 🙂 টাইপো ছিল।
@অর্ফিউস,
সফিক সাহেবকে তার জিয়ার শ্রেষ্ট শাসনামলে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসা দেশের চিত্র দেখানোর সুযোগটা আর আপনারা দিলেন কই? আমি তো সামরিক শাসক জিয়ার স্বর্ণযুগের বর্ণালী ইতিহাস পড়ার অপেক্ষায় অধীর হয়ে আছি। তখন কিছু লিখবো বলে আপাতত কলম কানেই তুলে রেখে দিয়েছি।
আচ্ছা আপনাকে একটা অনুরোধ করি মনে কিছু নিবেন না। আলোচনা ব্যক্তি পর্যায়ে না নিয়ে বিষয়ভিত্তিক রাখা ভাল, না হলে পাঠক একদিন আপনার দিক থেকে মুখ ফিরায়ে নিবে। আপনি যখন লেখালেখি শুরু করবেন তখন আপনার পাঠকের প্রয়োজন পড়বে কারণ পাঠকরাই একটা লেখার প্রাণ। আমাদের পূর্ব পুরুষরা লিখে গেছেন বলেই আমরা আজ জগত ও জীবনকে ভিন্নভাবে দেখতে ভাবতে শিখেছি। আপনি লেখা শুরু করুন। প্রচুর লিখুন।
@আকাশ মালিক,
উনি দেখছি আরেক পোষ্টে মন্তব্য করছেন।নিজের পোষ্টে কেন করছেন না বুঝতে পারছি না।সম্ভবত আমাদের মত আতরাফ দের সাথে তর্কে নামতে চাইছেন না। 🙂
তাহলে কানের কলম আপাতত সরান।উনি মনে হয় না এইসব ইতিহাস এখনই লিখতে পারবেন। কাহিনী বানাতেও কিছুদিন সময় লাগে।
দুঃখিত আসলেই ব্যক্তি পর্যায়ে আলোচনা করা ঠিক নেই তবে লেখক কি চীজ সেটা বুঝাতেই ওটা করতে হয়েছিল। তবু ধন্যবাদ আপনার কথা গুলোর জন্য।
@অর্ফিউস, সহমত।
জামাত শুধু একটা রাজনৈতিক সংগঠন নয়, এটা রাজনৈতিক কার্য্যকলাপের ছত্রছায়ায় একটি জঙ্গি সংগঠন। পৃথিবীর কোন দেশই একটি জঙ্গি সংগঠনকে তাদের কার্য্যকলাপ চলতে দিতে পারেনা বা দেশের জনগনের নিরাপত্তার স্বার্থে চলতে দেয়া উচিত নয়। এই ধরনের সংগঠনকে কাজ চালিয়ে যাবার সরকারের অনুমোদন দেয়ার মানে হলো সেই সরকারও নিজেদের স্বার্থে বা প্রয়োজনে জঙ্গিবাদকে সমর্থন করছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
এই জিনিসটা অতি মানবতাবাদী দের কে বুঝাবে কে? :-Y
সফিকের এই লেখা পড়ে তাকে জামাত সমর্থকারি বলে যারা নিশ্চিত হয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি। এ লেখা জামাত সমর্থনে নয়, জামাত নিষিদ্ধকরনের বিরোধিতাও এখানে হয়নি, উল্টা জামাত কিভাবে আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা যেত তার বিকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
এখানে মূল সমালোচনা করা হয়েছে যে প্রক্রিয়ায় জামাত নিষিদ্ধকরনের পাঁয়তারা চলছে সে প্রক্রিয়াকে।
ক্রশ ফায়ার পদ্ধুতির সমালোচনা মানে নিশ্চয়ই নিহ্ত ব্যাক্তিদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সমর্থন নয়।
মু্ক্তমনার সদস্য হিসেবে কেবল আবেগের জোয়ারে গা না ভাসিয়ে সামান্য সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা করাই যুক্তিসংগত মনে করি।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল ভাই সমস্যাটা এখানেই।উনি বাংলাদেশ কে আমেরিকা ভাবছেন।আর এখানেই আমার আপত্তি( অন্যদের কথা জানি না)।দেখেনতো বাংলাদেশ সহ বাদ বাকি মুসলিম দেশগুলো তে কবে আমেরিকান গনতন্ত্র প্রতিষ্টা হবে? আপনি কি আগামি ১০০ বছরের মধ্যে তা আশা করেন? আমি তো ১০০০ বছরের মধ্যেও আশা করি না। বাংলাদেশে আছে গণতন্ত্রের নামে প্রহসন।
ইন্দোনেশিয়াতে হয়ত গণতন্ত্র আছে, বাকি থাকে তুরস্ক।সেকুলার তুরস্ক কিভাবে গণতান্ত্রিক প্রভাবে আবার মধ্যযুগের অটোমান তুরস্কে পরিনত হচ্ছে দেখতে পাচ্ছেন তো?অটমান রা হয়ত সমসাময়িক কালে অন্যদের থেকে শ্রেয়তর ছিল, কিন্তু বর্তমান যুগে অচল হবারই কথা।
একই ভাবে গনতন্ত্রের পথ ধরে মিশর কোনদিকে যাচ্ছিল, দেখেছেন তো।
মিশরের সেনা বাহিনী শেষ কালে হস্তক্ষেপ করল ব্যাপারটায়।
তুরুস্কের বর্তমান AKP সরকার খুব স্মার্ট সেই তুলনায়। মেলা আগেই ঘর্ম নিরপেক্ষ জেনারেল দের ফাটকে পুরে দিয়েছে। কাজেই পথের কাঁটা আর নেই বললেই চলে।
তাকসিম স্কয়ারে বিক্ষোভ কারীদের পরিনতি খুব ভাল হয়নি, আমরা সবাই জানি।গণতান্ত্রিক ইরান কে আমরা মনে রাখব অনন্ত কাল।
কাজেই আসলে মুসলিম দেশগুলিতে গণতন্ত্রের স্থান কোথায়?যেখানে গণতন্ত্র কে ব্যবহার করে উগ্রবাদীরা ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে কবর দেয়?এই গণতন্ত্রের কি আদৌ কোন দরকার আছে? অন্তত মুসলিম দেশ গুলোতে?
তারপরেও যদি দরকার মনে করি আমরা, তবে আমেরিকার নিয়মের তো আর এইসব দেশ চলতে পারে না।
কাজেই লেখকের আগে কিভাবে বাংলাদেশ সহ মুসলিম দেশগুলোর সিস্টেম পরিবর্তন করা যায় সেই নিয়ে লেখালেখি করাই মনে হয় ভাল;গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী হয়ে গণতান্ত্রিক নিয়মে জামাত কে ট্রিট করা সংক্রান্ত লেখালেখির আগে।
না হলে বেশিরভাগ মানুষ তার এই লেখা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেই,এমনকি কেউ কেউ রাজাকার সমর্থক বলতেও দ্বিধা করবে না( যদিও আমি মোটেও তাকে রাজাকার বলার চেষ্টা করছি না, তবে উনার লেখায় অপ্রয়োজনীয় জনদরদ খুবই বেশি আর মোটামুটি বাস্তবতা বিবর্জিত, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে) ।
@আদিল মাহমুদ,কিছুটা দেরী হবার জন্যে দু:ক্ষিত। ঈদের শুভেচ্ছা। এই লেখাটি লেখার সময়ে জানতাম কেমন প্রতিক্রিয়া আসবে। কে কে কি প্রতিক্রিয়া দিবে এটা আগে থেকে অনুমান করাও কঠিন নয়। কার কার সাথে ডিসকাসন শুরু করে কনস্ট্রাকটিভ উপায়ে এগুনো যাবে সেটাও জানি।
প্রথমেই আসি একেবারে আসল ব্যাপারটাতেই। গনতন্ত্রে কিভাবে অগনতান্ত্রিক মতকে স্থান দেবে এটি একটি আদি এবং জটিল সমস্যা। সেই গ্রীসে প্রাচীন গনতন্ত্রের যুগেও প্লেটোর মতো বড়ো দার্শনিক প্রকাশ্যেই গনতন্ত্রের বিরোধিতা করতেন। আজকের দিনেও গনতন্ত্র নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। আপনি জানেন যে পৃথিবীতে যদি ১০১ টি দেশকে গনতান্ত্রিক বলা যায় তবে পৃথিবীতে ১০১ রকমের চালু গনতন্ত্র পাওয়া যাবে। ১০০% সহি গনতন্ত্রের কোন ফর্মূলা নেই। গনতন্ত্র একটি চলমান প্রসেস। পদ্ধতিগতভাবে আমেরিকাও গনতন্ত্র, পুতিনের রাশিয়াও গনতন্ত্র, এমনকি পাকিস্তানও দাবী করতে পারে যে সেটি একটি গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র। প্রতিটি গনতান্ত্রক দেশ নিজের দেশের অভ্যন্তরে নাগরিকদের বিভিন্ন রকম অধিকার, কর্তব্য এসবের সীমারেখা নির্ধারন করে নিজের মতো করে। এই সীমারেখাগুলিও খুব স্পষ্ট নয় এমনকি সবচেয়ে বেশী গনতান্ত্রিক দেশগুলোতেও। আমেরিকার মতো দেশেও ফ্রী স্পীচের সীমা কতটুকু হওয়া উচিৎ এই নিয়ে ডিবেট চলে আসছে অনেক আগে থেকেই।
মানুষের মনের মধ্যে থাকা রাজনৈতিক বিশ্বাস কে গনতন্ত্রে কিভাবে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব, বিশেষ করে সেই বিশ্বাসটি যখন অগনতান্ত্রিক হয়, এটি একটি জটিল প্রশ্ন। এর কোন সহজ সমাধান নেই। আমি আমার লেখাতেই দেখিয়েছি যে এর সবচয়ে বহুল ব্যবহৃত মানদন্ড হলো যে যতক্ষন না কোন পার্টি সংহিসতায় লিপ্ত হয়, পরিষ্কার জাতি বিদ্বেষ ছড়ায় কিংবা দেশের অখন্ডতা বিরুদ্ধে কাজ করে, ততক্ষন সাধারনত যেকোন দলকেই রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হয়। আমেরিকা, কানাডার মতো দেশে এই মানদন্ডগুলো আরো শিথিল।
জনগনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যখন এক ধরনের মতে বিশ্বাস করে তখন সেই বিশ্বাসকে রাজনৈতিক ভাবে নিষিদ্ধ করে রাখা, গনতন্ত্রে কঠিন কাজ। এতে গনতন্ত্রই বিপন্ন হয়ে যায়। জার্মানীতে নাৎসীপার্টি নিষিদ্ধ হয়েছে কিন্তু যেসব লোক নাৎসীবাদের মতো উগ্রদক্ষিন বিশ্বাস পোষন করে, তাদের কে কি রাজনীতির বাইরে রাখা গেছে? আস্তে আসতে একসময়ে তো নানা রকম উগ্রদক্ষিন পার্টি ঠিকই মাথা তুলে দাড়িয়েছে। জার্মানীতে এর মধ্যে গনতন্ত্র অনেক সুপ্রোথিত হয়েছে এবং দেশ অর্থনৈতিক ভাবে অনেক এগিয়েছে, একারনে উগ্রদক্ষিন রাজনীতি কখনোই মেইনস্ট্রীমে বড়ো সফলতা পায় নি।
আমি ধর্মীয় রাজনীতির সার্বজনীনতা, অর্থাৎ সকলগনতন্ত্রেই এর উপস্থিতির কথা বলাতে, এখানের কেউ কেউ রব তুলেছেন আমি ইউরোপ, আমেরিকার কথা তুলে বাংলাদেশের জন্যে অবাস্তব এক মানদন্ড খাড়া করছি। আসলে রক্ত টগবগ করায় তারা ঠিকমতো লাইনগুলো পড়ারও অবকাশ পাচ্ছেন না। আমি বার বার বলেছি যে পৃথিবীর কোন গনতান্ত্রিক দেশেই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয় নি।
আমাদেশ প্রতিবেশী ভারতকে নিশ্চই আমাদের থেকে বহু যোজন দূরের, ধরারছোয়ার বাইরে আদর্শ ধরবো না। আমি লেখাতেই বলেছি যে রক্তাক্ত দেশবিভাগ, একের পর এক হিন্দু-মুসলিম, হিন্দু-শিখ, হিন্দু-মুসলিম-শিখ, রায়টের পরও ভারতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির উপরে নিষেধাজ্ঞা নেই। সেখানে হিন্দু ধর্মভিত্তিক, মুসলিম ধর্মভিত্তিক অনেক দলই আছে। পান্জাব প্রদেশের অন্যতম বড়ো দল হলো শিরোমনি আকালী দল। এটি শিখ ধর্মভিত্তিক দল বলেই পরিচিতো। wikipedia তে আকালী দলের সম্পর্কে কি লেখা আছে দেখুন,
“The party recognized as “Shiromani Akali Dal” by the Election Commission of India is the one led by Sukhbir Singh Badal. It controls Sikh religious bodies Shiromani Gurudwara Prabandhak Committee, Delhi Sikh Gurdwara Management Committee and is the largest and most influential Sikh political party worldwide. The basic philosophy of Akali Dal (Badal) is to give political voice to Sikh issues and it believes that religion and politics go hand in hand. ”
শিরোমনি আকালী দলের চার্টারে কি লেখা আছে জানি না, তবে সেটা নিশ্চই সেকুলারিজমের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। আকালী দল কিন্তু ভারতের পান্জাব প্রদেশের ক্ষমতাসীন দল। আমেরিকার কমিউনিস্ট পার্টি কিংবা কানাডার পার্টি কুবেকোয়া’র মূল চার্টার সেইসব দেশের সংবিধানের সাথে কতটা সামন্জস্যপূর্ন সেটাও প্রশ্ন করা যেতে পারে।
সকল গনতান্ত্রিক দেশে যেটা প্রচলিত, সেই জিনিষটিকে কোন চিন্তাভাবনা ছাড়াই এদেশে নিষিদ্ধ করা যে একটি হটকারী পদক্ষেপ হতে পারে এটা চিন্তা করাটাও কারো কারো কাছে অপরাধ। এদের সাথে কথায় এনগেজমেন্ট এ কোন আগ্রহ বোধ করি না কারন জানি কথাগুলো বানান করে থেকে থেমে বললেও সেটা কখনোই তাদের চিন্তায় রেজিস্টার্ড হবে না।
আমি লেখায় বার বার বলেছি যে জামাতকে নিষিদ্ধ করার সহজ, গনতান্ত্রিক এবং বিশ্বে সার্বজনীন ব্যবহৃত পথ আছে, সেটা হলো জামাতের ১৯৭১ এর ভূমিকা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে সংশ্লিষ্টতা। এভাবে সাংবিধানিক অজুহাত তুলে, গনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এর বলে জামাতের রাজনীতিতে অংশ নিষিদ্ধ করা একটা হটকারী পদক্ষেপ। সরকার পাল্টে গেলে সংবিধান পাল্টানো আর নতুন গনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ জারী হতে কতক্ষন? সেই নতুন বিধান আর আদেশগুলোর বিরুদ্ধে তখন কোন মুখে প্রতিবাদ জানানো হবে? গনতান্ত্রিক রাজনীতির রক্ষাকবচ গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ। সেই মূল্যবোধকে পায়ে দলে, জনমতের বড়ো অংশকে নিয়ে অবিবেচক পদক্ষেপ নিলে সাময়িক সুবিধা পাওয়া যেতে পারে তবে এতে গনতন্ত্র তথা নিজের উপরেই ভয়াবহ বিপদ টেনে আনা হবে।
বিএনপি ক্ষমতায় এলে কি হবে এটা নিয়ে এখন কথা বলতে চাচ্ছি না। এখন শুধু ফরিদ ভাই এর একটা মন্তব্যের রেশ টেনে বলছি যে ২০০৮ এই বাংলাদেশের মানুষ ঝুলি ভরে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। এতে ২০০৮ এ বাংলাদেশ সেকুলার স্বর্গ হয়ে ওঠে নি। সামনে বিএনপি ভাগ্যে ভোটের ঝাপি খুললেও বাংলাদেশ, তালেবানদেশে পরিনত হবে না। আপনি যতই হেফাজতকে কামনা করুন বাংগালীকে আসল ধর্মশিক্ষাপাঠ দেবার জন্যে, তারা কিন্তু রুটির কোন দিকে মাখন সেটা ভালো ভাবেই জানে। খবরে শুনেছেন বোধহয় যে অলরেডী হেফাজতের কিছু নেতা বিএনপি’র জোট থেকে এমপি নমিনেশন নেবার জন্যে দৌড় ঝাপ শুরু করেছে। আপনার কি মনে হয় হেফাজতের নেতৃবৃন্দের লক্ষ্য কি? দেশে শরীয়া কায়েমের লক্ষ্যে আদর্শিক রাজনীতি শুরু করা, নাকি তাড়াতাড়ি হালুয়া-রুটির টেবিলে সিট নেওয়ার জন্যে দৌড়াদৌড়ি করা?
পরে সময় পেলে একটু বিশদ করে লিখবো যে কেনো গনতন্ত্রই হতে পারে ধর্মীয় মৌলবাদ ঠেকানোর সবচেয়ে ভালো এন্টিডোট। এখন পর্যন্ত কোন মুসলিম দেশ, যেখানে মানুষ মোটামুটি গনতন্ত্রের স্বাদ পেয়েছে, সেটা গনতন্ত্র ফেলে শরীয়া শাসনের পথ ধরে নি। আপনার জার্মান-নাৎসী পার্টির উদাহরনটি নিয়েও কথা বলবো আশাকরি।
@সফিক,
আপনাকেও বিলম্বিত মুরতাদ মোবারক।
গনতন্ত্রের সবচেয়ে বড় সমস্যা আমিও জানি, আগেই বলেছি। সংখ্যাগরিষ্ঠ মত মানেই আবশ্যিকভাবে সর্বোত্তম পন্থা নয়, হতে পারে না। সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের মাধ্যমেই ভুল সিদ্ধান্ত এবং তার প্রতিক্রিয়ায় বড় বড় মাশুল দেবার ইতিহাস আছে। গনতন্ত্র এরই পথ ধরে অগতান্ত্রিক শক্তি, এমনকি গনতন্ত্র বিধ্বংসী শক্তিরও জন্ম দিতে পারে।
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করা যে বর্তমান বাংলায় কতটা অসম্ভব সেটা যদি কেঊ এখনো না বুঝে থাকেন তবে বড়ই দূঃখজনক। আইন করে বলপূর্বক নিষিদ্ধ করা হবে আরো ক্ষতিকর, যা জংগী কায়দায় তালেবান গোছের বিপ্লব ঘটনের সম্ভাবনাই চাগিয়ে তুলবে। কথা হতে পারে তাহলে আমরা যারা ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থা চাই তাদের কি হবে? এখানে শর্টকাট নেই, সাধারন মানুষকেই তথ্য যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে, গায়ের জোরে নয়।
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি গ্রহনযোগ্য হতে পারে যতক্ষন না তারা প্রচলিত সংবিধানের মৌলিক বিধিবিধান মেনে চলে। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল (যেমন আপনার বলা পাঞ্জাবের আকালী দল, কিংবা বিজেপি) এরা ধর্মীয় রাজনীতির কথা বলে, যা সেক্যুলার ধারনার সাথে সম্ভবত সামঞ্জস্য নয়। তাই বলে কি সেক্যুলার ধারার সাথে অবশ্যই সাঙ্ঘর্ষিক? তেমন কিন্তু নাও হতে পারে। সব ধর্মেই ভাল ভাল কিছু কথা, নীতি বাক্য অবশ্যই আছে। কোন ধর্মভিত্তিক দল যদি তাদের মটো শুধু সেসবেই সীমাবদ্ধ রাখে তবে সমস্যা কোথায়? আকালি দলের কথা জানি না, কিন্তু বিজেপির মেনিফেষ্টোতে আমি দেশের প্রচলিত সেক্যুলার বাতিল করে রাম সংবিধান কায়েম করতে হবে, নারী নের্তৃত্ব হারাম, গনতন্ত্র হারাম, বিধর্মী রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবে না, বিধর্মী সংস্কৃতির চিহ্ন মুসলমান স্থাপত্য চুরমার করে দাও, সহশিক্ষা নিষিদ্ধ এমন কিছু আছে এখনো দেখিনি। হিন্দু সংস্কৃতি বলতে আমরা ধর্মের চোখে যা বুঝি তা প্রাচীন ভারতের স্থানীয় সংস্কৃতি, কোন রাজনৈতিক দল তাদের মেনিফেষ্টোতে সে সংস্কৃতির প্রতি আবেগম প্রদর্শন করতেই পারে। শুধু তাতেই সমস্যা হবার কথা নয় যতক্ষন না সে আপনার বলা গাইড লাইন সমূহের ভেতর থাকে। বলা বাহুল্য যে আমরা এখনো পিরামিডের অনেক ওপরের লেভেলে আছি, ধীরে ধীরে এসব আপত নির্দোষ মেনিফেষ্টোর মধ্য দিয়েই উষ্কানিমূলক বহু ব্যাপার বেরিয়ে আসবে। সেটা পরের কথা, আমরা এখানে আলোচনা করছি আইনী সমস্যা বা সঙ্ঘর্ষ নিয়ে।
হ্যা, সংবিধানও ঐশ্বী কিছু নয়, এরও সংশোধন সম্ভব। তবে সেটা করার জন্য আগে প্রচলিত বিধিবিধানের আওতাতেই রাজনীতি করতে হবে, ক্ষমতায় গেলে আইন সম্মত ভাবে সংশোধনের পথ খোলাই থাকে। এখানে অবশ্যই একটি মৌলিক এথিক্সের প্রশ্ন আসছে। কোন দল নির্বাচনের আগে ভাল ভাল কথা বলে ভোট জোগাড় করে ক্ষমতায় গেল, এরপর ক্ষমতায় গিয়ে বিষদাঁত দেখালো, তখন? এটা হয়ে গেল ভোটারদের সাথে প্রতারনা। তেমন সম্ভাবনা অবশ্যই আছে। এটাও গনতন্ত্রেরই সমস্যা। আমি যতটা বুঝি জামাত জাতীয় দলগুলি এই ধারার। তারা নিজেদের অবস্থান সুংসহত হবার আগ পর্যন্ত আসল বিষদাঁত দেখাবে না। অনেকে জামাতকে ভণ্ড ফন্ড বলেন এ কারনে যে এরা মুখে নারী নেতৃত্ব হারাম ফারাম বললেও খালেদার পদতলে বসে জনসভা করে…এ জাতীয় নানান ইস্যু। জামাতিদের সামান্য ভেতরে গেলে তাদের ভাষ্যেই জানা যায় যে এসবই হল তাদের সাময়িক কৌশল, তারা এসবকে অনৈসলামিও মনে করে না। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ধর্মীয় সূত্র খাটিয়েই জাষ্টিফাই করে। এদের সমর্থকরাও এই কৌশল সমর্থন করে ইসলাম কায়েমের স্বার্থেই। নইলে ভন্ড জামাতের এত বিশাল সমর্থন থাকে কিভাবে।
হেফাজত জাতীয় দলের লোকজন এ বিষয়ে এখনো অনেকটা সরল যেহেতু তাদের নিজ মাদ্রাসা ফাদ্রাসার বাইরের বাস্তব জগত সম্পর্কে ধারনা কম। তাই ভন্ডামি বা কৌশল কম। তবে এবারের আন্দোলন থেকে নিঃসন্দেহে হেফাজতিরাও শিক্ষা নেবে। এই যুগে যে লোকে তেতুলের মাসালা শুনতে চাইবে না তা নিশ্চয়ই এতদিনে তারা বুঝেছে।
‘৭১ এর জের ধরে ৪০ বছর পর জামাত নিষিদ্ধ করনের পথ অতটা সরল হবে মনে করি না আগেই বলেছি। প্রথমত জাতি হিশেবে আমরা কতটা দেউলিয়া তা আরেকবার প্রমান হবে। স্বাধীনতার ৪০ বছর পর আমাদের এই কথা মনে হচ্ছে, এর মধ্যে এরা সগৌরবে জনতার ফ্রি ভোটেই নির্বাচিত হয়ে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে মন্ত্রগিরি করে বেড়িয়েছে। এমন নয় যে দেশ দীর্ঘ সময় সামরিক শক্তি জাতীয় অগনতান্ত্রিক কিছুর অধীনে ছিল। আমি অন্য দেশের কোন নাগরিক হলে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে প্রথম এই প্রশ্নই আমার মনে আসত।
আর যুদ্ধপরাধের সাথে জড়িত জামাতি নেতারা সাজা পেয়ে হোক আর বয়সের কারনে হোক রিটায়ার করে গেলে, এবং জামাতের নামে সামান্য রদবদল করে দিলে আর কি অভিযোগ থাকতে পারে ৭১ সম্পর্কিত?
আমি নিজে মনে করি লোকে ধর্মীয় রাজনীতির কুফল সম্পর্কে যতক্ষন নিজেরা না বুঝবে ততক্ষন খুব বেশী কিছু করার নেই। জামাত সম্পর্কেও একই কথা। আইন করে নিষিদ্ধ করাকরি উলটা এদের আরো সহানুভূতিই এনে দেবে।
@আদিল মাহমুদ, আমার কিন্তু মনে হয় এবার একটা গোল্ডেন অপরচুনিটি ছিলো জামাতকে নিষিদ্ধ করার। এই বছর জানুয়ারী থেকেই পত্র পত্রিকা ও নানা ব্যাক্তিগত চ্যানেলে খবর আসছিলো যে জামাতের নতুন জেনারেশন প্রস্তুতি নিচ্ছিলো জামাত সংগঠন ফেলে দিয়ে নতুন নামে দল করার। জানি এটা হলে হতো কেবলই এক সিম্বলিক ভিক্টরী। কিন্তু দেশের এই পরিস্থিতিতে এই সিম্বলিক ভিক্টরীও অনেক প্রভাব ফেলতো।
একটা জিনিষ হলো যে আওয়ামী লীগ সরকার জামাত ও যুদ্ধাপরাধ নিয়ে অনেক ভালো কিছুই করলো যা দুই বছর আগে চিন্তাও করা যায় নি। বেশ কয়েকজন অপরাধীর ফাসী ও অন্যান্য দন্ড, জামাত-কে নির্বাচনে অযোগ্যতা। কিন্তু প্রথম থেকেই এই ব্যাপারগুলি প্রতিটি এমনভাবে করা হয়েছে যে সরকারের উদ্দ্যেশ্য হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। মানুষ মনে করেছে বিচারের চেয়ে রাজনীতিই ছিলো মূখ্য। কেবল শর্ট টার্ম ক্যালকুলেশন করেছে সরকার এবং শেষ পর্যন্ত ফায়দা কিছুই ওঠাতে পারে নি। বরং এখন অনেক ডিফেন্সিভ পজিশনে চলে গেছে।
যদি প্রথম থেকেই আইনসিদ্ধ ও স্বীকৃত উপায়ে বিচার ও জামাত এই সবকিছুই হ্যান্ডল করা হত দক্ষভাবে, তবে আজকে মনে হয় আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়েই থাকতো।
@সফিক ভাই,
যদিও জানি, আপনার কাছ থাইকা উত্তর পাওয়ার কুনো আশা নেই (ইদানীং আপনি মনে হয় মূর্খদের সাথে বেহুদা তক্কে না যাওয়ার প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন), তবু একটা কোশ্চেন করার লোভ সামলাইতে পারতেছি না:
গোল্ডেন অপরচুনিটি কাকে বলে? কি কি বিধিবিধানের আওতায় একটা নরমাল অপরচুনিটিকে গোল্ডেন অ্যাডজেক্টিভে বিভূষিত করা যায়?
দেশের অনেক জ্ঞানী-গুনি যে মনে করেন, জামাতরে এই মুহূর্তে নিষিদ্ধ করার গোল্ডেন তো দূরের কথা, এমনকি সাদামাটা অপরচুনিটি ও নাই? আদিল ভাই ত তেমনটাই কইলেন মনে হয়! আপনার এই ভবসিন্ধু-সম পোস্টটা পইড়া ও তো অনেক লোকের এইডাই মালুম হইছে। হেরা কইতেছে, চল্লিশ বছরের খাটি বাংলা পাকি আবাদের ফসল এক লহমায় বিলীন করা যায় না, এর জন্য প্রগতিশীলদের পাড়ি দিতে হবে দীর্ঘ পথ, করতে হবে দীর্ঘদিনের সংগ্রাম।
@কাজি মামুন,
হাহাহা সঠিক কথা। আমি তো জবাব পাবার আসা প্রথম থেকেই ছেড়ে দিয়েছি।
@সফিক,
হা হা। 🙂 (Y)
@রূপম (ধ্রুব),
যেহেতু সফিক ভাই পণই করেছেন, মুখ্যু-সুখ্যুদের সাথে আর কথা কইবেন না, তাই ভাইয়া আপনার উদ্দেশ্যেই আমাদের এই বিনীত নিবেদন। পারলে সফিক ভাইকে পৌঁছে দিয়েন।
@কাজি মামুন, :clap :hahahee: (Y)
@কাজি মামুন,
🙂 এই আপনার বিনীত নিবেদন? যারা গণহত্যার কারণ জামাতকে নিষিদ্ধ না করে বরং ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের মাধ্যমে জামাতকে নিষিদ্ধ করতে চাইছে, তারা আসলে হিডেন জামাতবান্ধব ও রাজাকারপন্থী। কারণ তারা ভালো করেই জানেন এর ফলাফল কোনদিকে যাবে। এমন করে বললে কেমন হয়? পসিবলি তাদের রোল সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহালও নন। কর্তৃত্বপরায়ণ সুশীলবেশধারী ছদ্মছাগুদের হাত ধরে তারা এসব রাজনীতি গিলছে দেশকে বিজামাতীকরণ ও গণতন্ত্রীকরণকে যাতে যতোটা সম্ভব পিছিয়ে রাখা যায়। অথবা তারা ভালো করেই জানে তাদের হিডেন রোলটা, তারাই সেইসব ছদ্মছাগু। এরা সব জামাতীদের সাথে একখাটেই শোয়। সকালবেলা বিছানা ছেড়ে উঠে আবার আজগুবি তত্ত্ব শোনায়। জামাতকে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বানানোর এ এক গোপন পায়তারা।
আলোচনা করতে চাইলে কথা আলোচনায় রাখুন। আমি উপরে যে কথাটি উদ্ধৃত করে মন্তব্য করেছিলাম, সেটা নিয়ে বলুন। সেক্যুলার স্টেট ধারণাটা স্টেট চার্চ সেপারেশনের কথা বলে। তাহলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের কথা কোথা থেকে আসলো?
@রূপম (ধ্রুব),
এ নিয়ে অনেক কিছু বলা যায়। কিন্তু তর্কের খাতিরে মেনে নিচ্ছি যে আ’লীগ সরকার হিডেন জামাত-বান্ধব ও রাজাকার-পন্থী। আর এই মানার প্রেক্ষিতে আপনার কাছে নীচের প্রশ্ন কটির খুব স্ট্রেইট (মানে, এক কথায়, ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিয়ে) উত্তর দাবী করব। আর আপনার সাথে একমত হওয়ায় এটুকু রিওয়ার্ড আমাদের প্রাপ্য বলেই মনে করি।
১. আ’লীগকে যদি ‘হিডেন’ জামাত-বান্ধব ও রাজাকার-পন্থী বলা হয়, তাহলে বিএনপিকে কি ‘ওপেন’ জামাত-বান্ধব ও রাজাকার-পন্থী বলা যেতে পারে না?
২. গণহত্যার কারণে জামাতকে নিষিদ্ধ না করায় আ’লীগকে গালমন্দ ও ঘৃণার আগুনে পোড়ানোর আগে প্রিকন্ডিশন হিসেবে বিএনপিকে কি সামান্য ঘৃণা করে নেয়া উচিত নয়? নাকি বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুরোধা হিসেবে বিএনপির এমনতরো ঘৃণা একেবারেই প্রাপ্য নয়? জামাতকে ঘৃণা করা ও বিএনপিকে আদর করা একই সাথে কি করে সম্ভব? বিজ্ঞান-দর্শন-সমাজ বিজ্ঞানে এমন কোন থিয়োরি আছে, যা দিয়ে একে ব্যাখ্যা করা যায়?
৩. গণহত্যার কারণে আ’লীগ যদি জামাতকে নিষিদ্ধ করে, তাহলে বিএনপি ও কি ক্ষমতায় এসে একটা তথাকথিত গোল্ডেন অপরচুনিটি লাভ করবে না আ’লীগকে নিষিদ্ধ করার যেহেতু বিএনপি এবং মুক্তমনার সাইফুল ভাইয়ের ভাষায় আ’লীগ ৫ মে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা চালিয়েছে হেফাজতের উপর এবং একই সঙ্গে পুরো এপ্রিল জুড়ে জামাতের উপর?
৪.এই প্রশ্নটা সফিক ভাইয়ের ব্লগের সাথে সম্পর্কিত নয়…….একান্তই আপনাকে করা, যেহেতু আপনার উপর এই অধমের অনেক আস্থা রয়েছে এবং আপনি তা জানেনও। প্রশ্নটা হল: আপনি (সফিক সাহেবের কথা বলছি না) কি সত্য সত্যই বিশ্বাস করেন, জামাতকে নিষিদ্ধ করা একটা ওয়াইজ ডিসিশন, সে গণহত্যা বা অন্য যে কারণেই হোক না কেন? জামাতকে কি এভাবে রাতারাতি বিলীন করা যাবে আদৌ??? নাকি, দীর্ঘমেয়াদি প্রগতিশীল আন্দোলনই পারে জামাতের শক্তি আস্তে আস্তে কমিয়ে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে?
@কাজি মামুন,
বলেন কি? সাইফুল ভাই এই কথা বলেছেন? কোথায় একটু লিঙ্কটা দিবেন? পড়ে দেখতাম!!
উনাকে আমার বেশ যুক্তিবাদী মানুষ বলেই মনে হয়, তার কাছ থেকে এইরকম কাচা কথাবার্তা আশা করি না( যদিও সরাসরি বলেই থাকেন)!!!
@অর্ফিউস,
পড়ুন,
উনাকে আমার বেশ যুক্তিবাদী মানুষ বলেই মনে হয়, তার কাছ থেকে এইরকম কাচা কথাবার্তা আশা করি না( যদি সরাসরি বলেই থাকেন)!!!
@কাজি মামুন,
দেখুন। আমার শেষ মন্তব্যের প্রথম প্যারাটা লিখেছি আপনার ‘বিনীত নিবেদনে’ যে নিজের অজান্তে সবার জন্যে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ফাঁদ তৈরি করছেন, সেটা বোঝানোর জন্যে। অন্যকে আমরা “জাতীয়তাবাদী মুক্তমনা ও তৎসংশ্লিষ্ট সুশীল” বলি আর “হিডেন জামাত-বান্ধব ও রাজাকার-পন্থী” বলি, এভাবে ট্যাগ আর চিহ্ণিতকরণ যে আলোচনা ও তর্কের খাতিরে কোনো কাজে দেয়ই না, বরং ক্ষতি করে সেটা বোঝানোর জন্যে। সেটা উপলব্ধি না করে আপনি বরং সেই ফাঁদেই পা দিলেন। এখন আওয়ামী লীগের ট্যাগিং মেনে নিয়ে সোৎসাহে আপনি বিএনপির ট্যাগিংটা, ঘৃণার অনুপাতটা নিশ্চিত হতে চাচ্ছেন। আর যে বিষয়ে মূল আলোচনাটা ছিলো ও এগুতে বললাম, সেটা বাদ দিয়ে অজস্র প্রশ্ন করছেন। তাই আবার বলছি –
আরেকটা বিষয়। এভাবে কমেন্টে যত্রতত্র বোল্ড করা ঠিক netiquette-এ পড়ে না। Shouting বা patronizing বা ঝগড়া করতে বলছেন এমন মনে হয়, যদিও আপনি হয়তো তেমনটা চাচ্ছেন না। এভাবে পড়তেও কষ্ট হয়।
সফিকের এই লেখা মনে হয় বহু আগেই ডিউ ছিল। জামাত সম্পর্কিত সাম্প্রতিক রায়ের পর মনে হচ্ছে সফিক অবশেষে লেখাটি দিতে পেরেছে।
লেখার টপিক পড়েই বুঝতে পেরেছিলাম যে খবরই আছে, এই জিনিস হজম করার মত মানসিকতা ছাগ সম্প্রদায় বাদে খুব কম লোকেরই আছে। আর বর্তমানে চরমপন্থা যেভাবে কেন্দ্রিভূত হয়েছে তাতে প্রতিক্রিয়া আরো তীব্র হবে সেটাই স্বাভাবিক।
লেখাটায় একমত দ্বি-মত হওয়ার প্রশ্ন ছাড়াও চিন্তা করার অনেক বিষয় আছে।
এখানে আপত্তিকারিরা সাধারনভাবে যে পয়েন্টে আপত্তি করছেন সেটাও অযৌক্তিক নয়। গনতন্ত্রে বিশ্বাসী বলে জেনেশুনে অন্যায় বা ভুল কোন মতবাদ মেনে নিতে হবে? গনতন্ত্রে বিশ্বাসী হলে আসলে উপায় নেই, অন্যের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করা না হলে মানতেই হবে। গনতন্ত্রের দূর্বলতা এখানেই, গনতন্ত্র বর্তমান বিশ্বে মোটামুটি সর্বোত্তম ব্যাবস্থা বলে পরিচিত হলেও এরও সমস্যা আছে। সমস্যা এখানেই। হিটলারের নাতসী পার্টি গনতন্ত্রের পথ ধরেই ফেয়ার ইলেকশনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল। তার কি কঠিন মূল্য জার্মানদের দিতে হয়েছিল তা সকলেই জানি।
জামাত নিষিদ্ধকরন প্রশ্নে আমিও নীতিগতভাবে কিছুটা একমত। আগেও বহুবার কথাটি বলে আসছি। আইন করে নিষিদ্ধ করাকরি কোন সমাধান নয় (হ্যা, এমনকি ৭১ এর কারনেও নয়)। সে শুধু জামাত হোক কি ধর্মভিত্তিক রাজনীতিই হোক। বিশেষ করে জামাতের মত একটি দলকে যার প্রতি দেশের এক বড় সংখ্যক জনতার সমর্থন আছে – এই কথাটি সম্ভবত সংকোচ বশত অনেকে স্বীকার করতে চান না, যদিও বাস্তবতা এটাই। সেদিন দেখলাম প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা গবেষক মুনতাসীর মামুনও কথাটা কই যেন বলেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি চিরকাল সেই ৫% মোটে জামাত সমর্থক এই চক্রে আবদ্ধ আছেন, বাস্তবতার জগতে প্রবেশ করতে পারেন না। আজ আওয়ামী লীগ ব্রুট মেজরিটির জোরে কাজটি করতে পারে, এতে লাভের লাভ হবে তাদের ভোট আরো কমবে, সামনেরবার বিএনপি জামাত ক্ষমতায় এসে শরিয়া আইন কায়েম করার ছূতা পাবে এবং আওয়ামী লীগকেও ব্রুট মেজরিটির জোরে নিষিদ্ধ করতে পারে।
৭১ এর ঘটনার ভিত্তিতে জামাত নিষিদ্ধ করন যত সহজ মনে হয় আসলেই কি তাই? আমার সন্দেহ আছে। প্রথমত কথা আসবে যে আজকের দিনের জামাতের অধিকাংশ লোকের জন্ম হয়েছে ৭১ এর পরে, কিংবা তখন তারা নিতান্ত শিশু…..তারা সন্ত্রাস করেছিল বলছেন, কয়টি আদালতে কয়জনের চুড়ান্ত শাস্তি হয়েছে……অন্যান্য দলের নেতা কর্মীরা কি সন্ত্রাস খুনাখুনী থেকে মুক্তি…আর শাস্তি হলে দল থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে……এমন নানান পয়েন্ট আসবে। বড়জোর নাম বদল করলেই সমস্যা সমাধান। মোদ্দা কথা বিতর্ক সেখানেও কম হবে না।
তবে ‘৭২ সালে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করাকে অবিবেচনা সূলভ বা অন্যায় আমি বলব না। তবে মনে হয় ঢালাও ভাবে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ না করে শুধু পাক সমর্থক/সহায়ক দলগুলি নিষিদ্ধ করা যেত। যদিও কার্যত ঘটনা একই হত। সে সময় যতটা জানি একেবারে কাগুজে দু একটি ধর্মভিত্তিক দল ছাড়া আর সব কটি ধর্মভিত্তিক দলই পাক সমর্থক/সহায়ক ছিল। এটাও সম্ভবত কোন অলৌকিক মাজেযাই হবে। সে যাক, গনতান্ত্রিক মূল্যবোধের সাথে না মিললেও সে সময়কার বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেটা খুব অস্বাভাবিক আউটকাম ছিল না। যদিও ততকালীন নেতৃত্ববৃন্দ এটা অনুধাবন করতে পারেননি যে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ সঙ্ঘটিত হয়েছিল তা উবে যেতে বেশী সময় লাগবে না। এ কারনে ধর্মওয়ালা লোকজনের চিরকালই আওয়ামী লীগের প্রতি এক ধরনের তীব্র এপ্যাথি আছে। ধর্মনিরপেক্ষতা বা সব ধর্মের লোকের বাস্তব জীবনে সমাধিকার এখানে অনেকটাই অবস্তাব। বর্তমানে হেফাজত ঘটিত ঘটনায় এই ধরনের এন্টি-আওয়ামী গোষ্ঠী নুতনভাবে বলীয়ান হয়েছে। হেফাজতের ব্যাপক সমর্থক নুতন কিছু নয়। আয়রনি হল ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থার প্রবর্তক খোদ বংগবন্ধু নিজেই আচার আচরনে নিজের মুসলমান পরিচয় নানান ভাবে জাহির করতেন। ধর্মীয় নানান প্রতিষ্ঠানের উত্থান, মাদ্রাসা শিক্ষায় পাকিস্তান আমলেরও ৩ গুন বরাদ্দ সে আমল থেকেই শুরু হয়। সোজা কথায় ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থার পতন প্রথম আওয়ামী সরকার থেকেই শুরু হয়। আসলে আমরা নিজেরাই নিজেদের চিনি না এই কথাটা আমার প্রায়ই মনে হয়।
যে দেশে লোকে নকল করে পাশ করে কিংবা জাল ডিগ্রী নিয়ে পাশ করে, ক্রশফায়ারের মাধ্যমে আইন শৃংখলা ব্যাবস্থা রক্ষায় মত দেয় সে দেশে সংবিধান, গনতন্ত্র রক্ষার তোয়াক্কা করতে যাবে কে?
সফিকের লেখায় বেশ কিছু বিতর্কিত অংশও আছে। মেনে নিলাম যে সাধারন ভাবে অপরের গনতান্ত্রিক বা যে কোন মানবাধিকার ক্ষুন্ন না করে যে কোন মতবাদই প্রচার করা যেতে পারে। এ কারনে আমি নিজে তীব্র ভাবে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরোধী হলেও ঢালাও ভাবে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরোধীতা করতে পারি না যতক্ষন না এ দলের কেউ ফ্যাসীবাদী লাইনে কথাবার্তা বলা শুরু না করে। সংবিধান কোন ঐশ্বীগ্রন্থ নয় তাও মেনে নিলাম। কথা হল তারপরেও যেখানে সেট রুলস আছে সেই সেট রুলস লঙ্ঘিত হলে রুলস যতক্ষন না সংশধিত হয়ে আসে ততক্ষন সেই রুলস এর ফলাফল মানতে হবে। অবশ্যই রুলস ঐশ্বীবানী নয় এই যুক্তি মানি, তবে সংশোধনের আগেই যদি রুলস অমান্য করা হয় তবে আর বিধিবিধানের মূল্য থাকে কই?
জামাতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষনায় আমি যতদুর বুঝি আদালত প্রচলিত রুলসের আওতাতেই রায় দিয়েছে। এখন জামাত বা সমমনা দলগুলি অবশ্যই আন্দোলন করতে পারে সেই বিধি পাল্টাতে। তাতে কিছু বলার নেই। কিন্তু যা আইনে আছে তাতো মানতে হবে।
– এখন কোন দল যদি নিজস্ব বিধিমালায় জাতি ধর্ম লিংগ ভেদাভেদ করে তবে নিবন্ধনের অযোগ্য ঘোষনা তো বিধি অনুসারেই করতে হবে। নাকি? তাদের ধর্মীয় মতবাদে কি বলে তার অবকাশ এই বিধিতে কই? এই বিধি অনুযায়ী যতক্ষন না এটা ধর্মীয় বিধির (ধরে নিলাম তাতে বিধর্মী/মহিলা রাষ্ট্রনেতা হতে পারবে না)ভিত্তিতে সংশোধিত হয় ততক্ষন এটা অনুযায়ীই চলতে হবে। আপনি তো সংশোধনের আগেই বলতে পারেন না যে বিধি মানি না। সেটা কেমন হয়? তাহলে তো বিধিবিধানেরই আর গুরুত্ব থাকে না। আগে বর্তমান বিধি মানেন, এরপর পছন্দ না হলে পরিবর্তনের জন্য জনমত গড়ে তোলেন, আন্দোলন গড়ে তুলেন। সংশোধন করা গেলে আর সমস্যা নেই। কোন বিধিবিধানই সংশোধন/পরিবর্তনের অযোগ্য নয়। এটা কিন্তু ব্রুট মেজরিটি খাটিয়ে লীগ করেনি, এমনকি জামাতের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল লীগও নয়, তাদেরই ধর্মভিত্তিক অন্য কিছু দল। এই বিধানে কিন্তু সংবিধানের মৌলিক বিধানের পরিষ্কার ছাপ আছে; কাউকে ধর্ম, বর্ন, লিংগের ভিত্তিতে বৈষম্য করা যাবে না। এই বিধান অযৌক্তিক কিভাবে বলি? তাহলে বলতে হয় আগে সংবিধান বদলে আনা হোক, অবশ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকে চাইলে তাই মানতে হবে। তবে যতক্ষন না তা হচ্ছে ততক্ষন এটাই সকলে মানবে।
আমেরিকা ইউরোপের ধর্মভিত্তিক দলগুলির সম্পর্কে আমি তেমন জানি না। তবে এটা নিশ্চিত জানি যে সেখানেও যদি তারা বিধি বিধানের বাইরের কিছু তাদের দলের মটো হিশেবে রাখে তবে তার ভিত্তিতে একই ঘটনাই ঘটতে পারে।
ব্যাক্তি পর্যায়ে বিশ্বাস আর লিখিতভাবে দলের গঠনতন্ত্র লেখা কিন্তু এক নয়। আমেরিকা/ইউকের ধর্মভিত্তিক দলগুলির লিখিত বিধান কি সংবিধানের সাথে সাঙ্ঘর্ষিক?
গনতন্ত্রের কিছু প্রি-রিকুইজিট লাগে। যাদের সেইটুকু কমনসেন্স নেই তাদের আদৌ গনতন্ত্রের প্রয়োজন নেই কিংবা গনতন্ত্রের যোগ্য নয়। আমেরিকার ঘোর গোঁড়া খৃষ্টানও মনে হয় না ক্ষমতার উতস জনগন নয়, গড এই জাতীয় অর্থহীন আবেগময় নীতি আঁকড়ে বসে থাকবে। খৃষ্টান পার্টির কথা জানি না, তবে ভারতের বিজেপিতে মুসলমান সদস্য আছে। এক সময় বিজেপির একজন শীর্ষ নেতা ছিলেন সিকান্দার বখত নামের একজন ব্যাক্তি মনে পড়ে।
– খুবই সত্য কথা, যৌক্তিক পয়েন্ট। আপনি মনে হয় এতে চিন্তিত হয়েছেন, আমি এতে খুশীই হয়েছি। কারন বাংলাদেশের সাধারন মুসলমান যারা তাদের ইসলাম সম্পর্কে ধারনা অতি সামান্য। তারা যত তাড়াতাড়ি এই প্রশ্নের মুখোমুখি হবে ততই মংগল। বিপদের ভয়ে উটপাখি নীতি নিলেই বিপদ কেটে যায় না। আধুনিক যুগের মূল্যবোধ রীতিনীতির সংবিধানের সাথে কোরানিক বা শরিয়া ভিত্তিক আইন কানুনের সম্পর্ক আসলে কতটা তা তাদের বোঝা দরকার। সংবিধান বড় না কোরান বড় এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই হবে, আজ হোক আর কাল হোক। অন্য ধর্মের লোকেরা এই অপ্রীতিকর প্রশ্ন এড়াবার সহজ উপায় নিয়েছে বহু আগ থেকেই। আমরা উলটা দিনে দিনে যাতে এই সঙ্ঘাতের মাঝে পড়তে হয় সে পথে হেঁটেছি। এখন এড়াতে চাইলেই এড়ানো যাবে নাকি? দুই নৌকায় পা দিয়ে বহুদিন গেছে, আর বেশীদিন যাবে না।
একই কারনে আমি হেফাজতের ওপরেও খুশী। তেতুল তত্ত্ব জাতীয় যাবতীয় ধর্মভিত্তিক সমস্যার কথা বলা হলেই শিক্ষিত মডারেট শ্রেনী সব অশিক্ষিত কাঠমোল্লা জামাতিদের ওপর দায় চাপাতেন। এখন আর সে উপায় থাকছে না। এখন উলটা তাদেরই মোনাফেক, এমনকি ইসলামচ্যুত হয়ে গেছে এমন ফতোয়া আসছে। মডারেটগিরির ভাল পুরষ্কার পাওয়া যাচ্ছে। মুরতাদ হিশেবে তাদেরও মৃত্যুদন্ডের রায় তাদেরই বিচরনভূমিতে তাদের ধর্মের ভাইরাই দেবে। মডারেটগিরি করে দুই দিক সামাল দেওয়ার দিন শেষ। হেফাজত ক্ষমতায় আসুক, আল্লামা শাফি বাবুনগরী ওনারা দেশ চালান এটাই আমি চাই, নইলে ধর্ম বিষয়ক অবসেশন থেকে লোকে কোনদিন মুক্ত হবে না। বিএনপি জামাতও মুখে যতই ধর্ম ধর্ম করুক আর দেশের নামে বলতকার করুক, আসলে দেশ চালাবে ধর্মনিরপেক্ষ নীতিতেই। স্বপ্নের শরিয়া জামাতও কোনদিন আনবে না। আনলে আনবে শাফি বাবুনগরী এরাই। দেশের বেশীরভাগ লোকে সংবিধান নয়, কোরানই বড় রায় দেবে। তাই আমিও গনতন্ত্র মানি বলেই তাদের দলে। আমি চাই এই প্রশ্ন আরো বেশী বেশী করে উত্থাপিত হোক। আমার দাবী শুধু ধর্মনিরপেক্ষ লীগ হটানোই নয়, শরিয়া আইন কায়েম। ৩০ এর দশকে জার্মানীতে নাতসী দলের বিরুদ্ধে কিছু বলা ছিল অর্থহীন, যারা আসন্ন বিপদ টের পেয়ে সাবধান করার চেষ্টা করেছিলেন তাদের অবস্থা হয়েছিল কেরোসিন। অমোঘ পরিনতি অনেক সময়ই এড়ানো যায় না, ভুগে শিখতে হয়।
@আদিল ভাই,
বাঙালী কি ভুগেও শিখবে? আমার তো মনে হয় না।পাকিস্তানী ইমানদার রা নাকি আমাদের আধা মুসলিম ভাবত।পরে মুক্তি যুদ্ধের সময় তো হিন্দু আর ভারতের চামচা বলেই রায় দিয়ে দিল( কোথায় যেন পড়েছিলাম) । এর পরেও বাঙালী শেখেনি।
সত্যি হেফাজত ক্ষমতায় আসলে শিখবে কি?
কথায় আছে না, চালাক শেখে দেখে, বলদ শেখে ঠেকে।
পাকিস্তান আন্দোলনের মুলনায়ক রা এই অঞ্চলেও ছিলেন তাই না?
তাদের বংশধর রা আমরা তেমন কিছুই শিখতে পারলাম না, কাজেই কতবার ঠেকতে হবে শিখতে গেলে?
আমরা আসলে কোনটা? বলদ নাকি তারচেয়েও বেশি কিছু?
@অর্ফিউস, আদিল ভাই, আফগানিস্তানে নাকি আজকাল তালেবান সমর্থক বাড়ছে।আফগানিস্তানের মানুষ কি সেই কালো তালেবানী দিনগুলো ভুলে যাচ্ছে? যদি সেটাই হয়, তবে এই হুজুগে বাঙ্গালী কি আসলেই শিখবে কোনদিন;এমনকি যদি এদের ছাল ছাড়িয়ে জুতা বানানো হয়?নাও শিখতে পারে যদি সেটা হয় ধর্মীয় জুতা।
@অর্ফিউস,
আফগানিস্তানের খবর জানি না। তবে ধর্ম কায়েম করে সব রসাতলে গেলেও এ সদা সর্বত্র ধর্ম কায়েম করা লোকজন সমস্যা আসলে কোথায় স্বীকার করবে না সেটা ভালই জানি। তখন উলটা বলবে যে আসল ইসলামই তো কায়েম করা হয়নি, ইসলামের শত্রুরা নানান ষড়যন্ত্র করে শয়তানের সহযোগিতায় আসল ইসলাম কায়েম করতে দেয়নি ইত্যাদী নানান অজুহাত সর্বদাই প্রস্তুত রয়েছে। তালেবানী শাসন কায়েমের সময় জেহাদী জোশে যাদের লাফাতে দেখেছি তাদেরই এখন তালেবানদের উদাহরন দিলে উলটা চ্যালেঞ্জ করে বসে তালেবানরা ইসলামের কি জানে। ওনাদের পরাজয় কোনদিনই হবে না, “প্রকৃত ইসলাম” নামক কোন বস্তু সেটাই নিরূপন করা সম্ভব নয়। আর নানান ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তো আর তথ্য প্রমানের ধার ধারে না।
পাকিস্তান সৌদী আরবে ইসলামী আইন কায়েমের নামে কি ক্রিমিনাল আদালতের কি অবস্থা হয়েছে সেগুলি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলির রিপোর্ট আছে। সেগুলি দেখালেও প্রথমেই জবাব আসবে সবই পশ্চীমা কাফের নাছারা গোষ্ঠীর অপপ্রচার…
@আদিল মাহমুদ,
হ্যাঁরে ভাই, আর সেজন্যেই তো আমি বলছি যে হেফাজত বাবাজীরা ক্ষমতায় যদি আসে, তবে তো তারা ক্ষমতায় থেকে নামার পর ( অবশ্যই ন্যাটো আক্রমনের পর; না হলে আর তো রাস্তা দেখি না) মানুষ ষড়যন্ত্র তত্ব দেখবে আর বলবে যে ওটা ইসলাম ছিল না ঠিক যেমন এক কালের তালেবান লাদেন সমর্থক রা বর্তমানে তাদেরকে বিকৃত মুসলিম বলে মনে করে।
কাজেই আপনি যে বললেন যে,
সত্যি কি এরা ভোগার পরেও শিখবে?কোরান বড় নাকি সংবিধান এই প্রশ্নটা কি আদৌ উঠবে যেখানে এককালের নব্য সাহাবীরা ( আগের তালেবান আর বর্তমানের হেফাজত!) পরে হয়ে যায় ইসলাম বিকৃতকারী?এই মোডারেট মুসলিম জাতি মনে হয় না কোনদিন দুই নৌকার পা চিরকালের জন্য সরিয়ে নেবে।
সে আর বলতে।টুইন টাওয়ারে হামলাও নাকি লাদেন করেনি( যদিও লাদেন মুসলিম না সন্ত্রাসী!), করেছে ইহুদী রা।
কতই রঙ্গ দেখব রে ভাই এই শরীয়তী দুনিয়ায়!!মনে হয় কেয়ামত ত্বক চলতেই থাকবে।কেয়ামত কি আছে আসলে? না থাকলে এরাই একদিন নিয়ে আসবে।
@আদিল মাহমুদ,
এতো আফসুস এতো দুঃখ করার কী আছে ভাই? আমার দাবী হলো, ধমাধম ধর্মানুসারীদের জন্যে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রস্তাব উত্থাপন করা হউক। দাবী না মানলে সশস্ত্র বিপ্লব। অবশ্য যদি ধমাধম ধর্মে জিহাদ থাকে। গাছ কাটা লাগলে কইয়েন করাত নিয়া আইমুনে।
@আকাশ মালিক,
জাহেলি যুগে কি বলছি মনে নাই। শয়তানের কুতাড়নায় মানুষ কত কিছুই বলতে পারে, বিশেশ করে আশেপাশে আপনার মত শয়তানের প্রতিনিধিরা ঘোরাফেরা করলে।
আমার এখন দাবী একটাই, প্রথমে হেফাজতের ১৩ দফা কায়েম, এরপর পূর্নাংগ শরিয়া কায়েম। এতে কোন রকম ধানাই পানাই চলবে না। কোরান হাদীসে বর্নিত একটি বিধিবিধানও কোন রকমের অজুহাতে এড়ানো চলবে না।
বিএনপি জামাত জিতে এসে যদি হেফাজতের ১৩ দফা কায়েম না করে তবে হেফাজত নিশ্চয়ই তাদের কথামত আবারো লাখো মানুষ জড়ো করে ঘেরাও লংমার্চ এসব চালাবে। হেফাজত যদি সে সময় এ জাতীয় জিহাদী কর্মসূচী পালন না করে তাহলে আশা করি এখন হেফাজত সমর্থক দুনিয়া কাঁপিয়ে যারা আম্বা লীগকে নাস্তিক মুরতাদ ইসলাম বিদ্বেশী বলে বেড়াচ্ছেন তারাই হেফাজতিদের মোনাফেক বলবেন। তারা ধার্মিক, সব নৈতিকতার একমাত্র ধারক বাহক, তাদের ওপর এই আস্থা অবশ্যই রাখা যায়। তারা ১৩দফা না মানার দায়ে কেবল আম্বা লীগকেই নাস্তিক মুরতাদ বলবেন আর অন্যদের ইসলাম সেবক বলবেন এমন ডবল স্টান্ডার্ড নিশ্চয়ই পোশন করেন না। এখন কেবল অপেক্ষা।
সামনের বিএনপি আমলে হেফাজতিদের লং মার্চ ঢাকা অবরোধে আমিও অংশ নেবার আশা রাখি, ইন্সহাল্লাহ।
@আদিল মাহমুদ,
“স্বপ্নের শরিয়া জামাতও কোনদিন আনবেনা। আনলে আনবে শাফি বাবুনগরী এরাই।”
হেফাজতের এ বছরের সমাবেশের সময় একটা স্লোগান ছিল
‘আমাদের শরীরে,মওদুদির রক্ত’
জানিনা পরের বার কি স্লোগান দেবে..
@আদিল মাহমুদ,
পূর্নাংগ শরিয়া? নারী প্রধানমন্ত্রী? কত চুদুরবুদুর জানে রে হেফাজত। কিছু মুক্তমনের, মুক্তবুদ্ধিচর্চার, অন্তরে মননে বাংলা সংস্কৃত, বাংলাভাষা প্রেমী মানুষকে জেল জুলুম করা হবে, ব্যস এই টুকুই। এই যাহা কিছু ভেলকিবাজি দেখলেন সবটাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সাথে সম্পৃক্ত। দাখা যাক কী হয়, আর মাত্র কয়েক মাসই তো বাকি।
@আকাশ মালিক,
এইটা হল তেঁতুল শরিয়া বুঝলেন? :-))
@আদিল মাহমুদ,
তাহলে তো আগে দুই নেত্রীর খবর আছে;যেহেতু ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম।আচ্ছা তওবা করলে কি এই বিষয়ে ক্ষমার বিধান আছে, নাকি আগে সাজা দিয়ে তারপর ক্ষমা? পরেরটা হলেই ভালই হয়।
এতে যদি অন্তত পরিবার তন্ত্রের অবসান ঘটে। :-s
@অর্ফিউস,
প্রশ্নগুলি আল্লামা শাফি, বাবুনগরী ওনাদের কাছে করলে পারেন। অন্তত খালেদা ম্যাডামের তো ওনাদের ফতোয়া নিশ্চয়ই মানার কথা।
@আদিল মাহমুদ,
হ্যাঁ ওদের কাছে প্রশ্নগুলি করে সাধের প্রানটা হারাই ভালই বুদ্ধি দিসেন। 😀
উনি তো আমাদের মডেল। রুপচর্চা শিক্ষা নেয়া বা পার্লারে গিয়ে সৌন্দর্য বাড়ানর নিয়মাবলী নিয়ে উনার তো একটা বই লেখা দরকার।
সমস্যা কি? উনি ইসলামিক নেত্রী না? আল্লাহ উনাকে মাফ করে দিবেন। কপালে খারাবী আছে তো আপনার আমার মত নাসারা গোত্রীয় লোকজন নিয়ে।দরকার হলে পিটিয়ে ইসলাম মানানো হবে।
কানাডা থেকে বেঁচে গেছেন।দেশের যা অবস্থা, আপনার জায়গায় আমি হলে এই দেশে আর আসতামই না।
@আদিল মাহমুদ,
আওয়ামী লীগের আমলে হেফাজতিদের লং মার্চ হলো বিএনপির সমর্থন নিয়ে। জানতে ইচ্ছে করে, বিএনপি আমলে হেফাজতিদের লং মার্চ হবে কাদের সমর্থন নিয়ে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
কেন? হেফাজতিদের সাথে তো রাজনীতির বা কোন রাজনৈতিক দলের কোনই সম্পর্ক নাই। তারা নেহায়েত ঈমানী তাড়নাতেই মাঠে নেমেছিল, তাদের কথা অত্যন্ত পরিষ্কার; ক্ষমতায় থাকতে হলে বা যেতে হলে ১৩ দফা মানতেই হবে। আওয়ামী লীগ মানেনি, ক্ষমতা থেকে চলে যাবে। যারা সামনে আসবে তারাও না মানলে নিশ্চয়ই হেফাজতিরা একই ভাবে আন্দোলন গড়ে তুলবে। এখন শুধুই অপেক্ষা।
@আদিল মাহমুদ,
প্রথমবারতো জামাত-বিম্পির ফাইন্যান্সে লংমাৰ্চ-অবরোধ-হেলিকপ্টারের লীলাখেলা দেখলাম। কিন্তু, দ্বিতীয়বার কে বা কারা ফাইন্যান্স করবে ???
@আদিল মাহমুদ,
এইটা কি বললেন, আদিল ভাই? মনে হচ্ছে, আপনি লেখাটার ভাব-সিন্ধু আত্মস্থ করতে পারেননি, পারেননি এর ভাব-সম্প্রসারণ করতে!
আলবত, হক কথা। আর এজন্যই তো অনেক মডারেট উদারপন্থী বিএনপি সমর্থক বিএনপির সাথে জামাত-হেফাজতের গলাগলিতেও কোন রিস্ক দেখতে পান না, তাদের স্বপ্নের প্রগতিশীল বাংলাদেশের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে বিএনপির হাতেই, কারণ জামাত-হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা আছে একমাত্র বিএনপিরই, আ’লীগ তো মল্লযুদ্ধ করে খামোখা পরিবেশ নষ্ট করে, এমনকি জামাত-হেফাজতকে উস্কে দেয়। বিএনপি জামাত-হেফাজতকে কোলেই রাখবে, কিন্তু ঘুম পাড়িয়ে রাখবে, আর এইভাবেই না বাংলাদেশ হাঁটতে পারবে প্রগতির পথে—-খাঁটি বাংলা বিএনপি উদারমনাদের এই কড়া যুক্তি ভালুমত খেয়াল কইরা, আদিল ভাই..
সাধু, সাধু! যদিও আলোচ্য ব্লগটির মত গভীর হয়নি, তবু কেন্ জানি খুব মনে ধরল কথাটা। এ ছাড়া বোধহয় উপায় নাই আর।
ভবসিন্ধু পাড়ি না দিতে পারলেও ঠিকই বুলস আইকে হিট করতে সক্ষম হয়েছে আমার মতে। অত্র লেখাটির আসল ভাবার্থ চমৎকার ফুটে উঠেছে!
@কাজি মামুন,
– আমার তেমন মনে হয় না। আমার ধারনা আমি আত্মস্থ মোটামুটি সঠিকভাবেই করতে পেরেছি।
– কথাটা আসলে অনেকটাই সত্য। এ দেশে যাকে বলে ইসলামী আন্দোলনের বিজয় তেমন কিছু ধর্মপ্রিয় বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় থাকলে হবার চাইতে ধর্মনিরপেক্ষ (আপেক্ষিকতার বিচারে) লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেই হবার সম্ভাবনা অনেক বেশী। লক্ষ্য করেছেন নিশ্চয়ই আমি এখন অপেক্ষায় আছি সামনেরবার বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসলে ১৩ দফা কায়েমের লক্ষ্যে হেফাজত কয়টা লং মার্চ ঘেরাও দেশ অচল এসব করার কর্মসূচী দিয়ে মাঠে নামে। বিএনপি হেফাজতের মহাউত্থানের সময়েই পরিষ্কার বলেছে যে তারাও ১৩ দফার সব দফায় একমত না। অর্থাৎ ক্ষমতায় গেলে তারাও এসব উদ্ভট দাবী দাওয়া কায়েম করবে না মুখে যতই যতই হেফাজত প্রেম দেখাক। আমার অপেক্ষার কারন নিশ্চয়ই পরিষ্কার। হেফাজতের অন্ধ সমর্থকরা তখন নুতন কি অজুহাত খাড়া করে বিনোদন দেয় সেটাও হবে উপভোগ করার মত। ১৩ দফা না মানার কারনে আওয়ামী লীগ ইসলাম বিদ্বেষী এবং বিএনপি ইসলামপ্রেমি এমন ফতোয়া দেওয়া বিশেষ শ্রেনীর লোকের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব, এদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।
আবারো যারা এই লেখাকে জামাতি সমর্থন গোছের কিছু নিশ্চিত ভাবে দেখছেন তাদের কিছুটা গভীরভাবে ভাবতে বলি। সামান্য একটি চিন্তার খোরাক দেই যারা সংবিধান ফিদান নিয়ে তেমন গভীর চিন্তা করতে চান না তাদের জন্য। ৭২ সালে রাজাকারির দায়ে যাদের নাগরিকত্ব বাতিল হয় তাদের অন্যতম ছিল গোয়া। সে ৯২ সালে আদালতের মাধ্যমেই নাগরিকত্ব ফেরত পায়। এর মূল কারণ ছিল ৭২ সালে যে প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল সে প্রক্রিয়াই ছিল অত্যন্ত শর্টকাট, ত্রুটিপূর্ন। ৭২ সালে আইনী প্রক্রিয়াটি আরো শক্তভাবে করা হল গোয়ার নাগরিকত্ব প্রাপ্তি হয়ত সম্ভব হত না।
যারা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি করার অধিকারকে ব্রুট মেজরিটি জাতের প্রক্রিয়ায় দমনের চিন্তা করছেন তাদের বলি যে একটি দেশের বড় সংখ্যক মানুষ যা চায় সেটা জোর করে দমন করার চেষ্টা করলে ক্ষতিইই আরো বেশী হয়, বিশেষ করে ধর্মের মত সংবেদনশীল জিনিস যেখানে জড়িত। বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি জিয়া এরশাদ পূনউত্থান ঘটালেও এটা ছিল অনিবার্য, জিয়া এরশাদ সিনে না আসলেও হত।
ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থা কেন দরকার বা ধর্মীয় ব্যাবস্থার সমস্যাগুলি কোথায় তা প্রচার করে যেতে হবে। নিঃসন্দেহে এটা যথেষ্ট নয়। চুড়ান্তভাবে আমার নীতি হল রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলার কাহিনী। শিশু রবী যখন বড় ভাইদের বিদ্যালয়ে যাওয়া দেখে নিজেও সেখানে যাবার জন্য কান্নাকাটি করতেন তখন তাকে মেজদা বলেছিলেন যে এখন স্কুলে যাবার জন্য কাঁদছ, পরে না যাবার জন্য কাঁদবে।
পুরো জাতি্র মাঝে যখন শিশুসূলভ আচরন মহামারির মত ছড়ায় তখন আইনী নিষিদ্ধ ফিষিদ্ধ কিছুই না। চরম মূল্য দিয়ে শিক্ষা পাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এ কারনেই আমি চাই বিএনপি জামাতের মত ধর্ম ব্যাবহারকারি সেক্যুলার দল নয়, আসল ইসলামী শাসন যারা আনতে পারে তারাই ক্ষমতায় আসুক। হেফাজতিরা মনে হয় অন্তত ভন্ড নয়, কথাবার্তা, দাবী দাওয়ার বোঝা যায় যে তারা মোটামুটি প্রকৃত ইসলামী শাসন চায়। বাংলার লোকেও তাই চায়। তো তাদের ক্ষমতায় আসাই সমীচিন।
@আদিল মাহমুদ,
বি এন পি এবং তাদের রাজনৈতিক মিত্র জামাত আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসলে দেশের কি কি ক্ষতি হতে পারে ? ২০০১ সালের মত সংখ্যালঘু নারী কিশোরীদের গন ধর্ষনের মত ঘটনাসহ অন্যান্য সহিংসতার পূনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা কি রকম ?
@সংশপ্তক,
আপনাকে তো বহুদিন দেখি না।
সম্ভাবনা অতি প্রবল। জিয়া পরবর্তি বিএনপি দলটির মাঝে ফ্যানাটিসিজম অতি প্রবল,ধর্ম ব্যাবহার করে আখের গোছাতে এরা জন্ম থেকেই সিদ্ধহস্ত। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর দেশে যেভাবে নজির বিহীন সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছিল তার পেছনের কারণ ছিল সম্ভবত আওয়ামী ভোট ব্যাংক বলে পরিচিত হিন্দু সম্প্রদায় নিশ্চিহ্ন করা, একই সাথে স্থানীয় পর্যায়ের কর্মী বাহিনীদের অবাধ লুটতরাজ ধর্ষনের সুযোগ করে দিয়ে পুরষ্কৃত করা। এ দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোন সাজা হয় না এটা তো জানাই কথা, এর পেছনে এক ধরনের নীরব সামাজিক স্বীকৃতি আছে বলা খুব অত্যুক্তি হয় না। সংখ্যালঘু সে হিন্দু জোক কি পাহাড়িই হোক। বিএনপি/জামাত বাদই থাকল, লীগ সরকারের আমলেও সেসব কোন ঘটনায় বিচারের মাধ্যমে কারো শাস্তি হয়েছে বলে এখনো জানি না।
এবারকার পরিস্থিতি সংখ্যালঘু নির্যাতনের জন্য আরো অনুকূলে, সম্ভবত পাকিস্তান আমলেও এমন অনুকূল পরিবেশ কখনো ছিল না। শাহবাগ আন্দোলনের সময় থেকেই রাজাকারি আদর্শে অনুরক্ত লোকজন যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীতা করতে পারে না তারা বলে বেড়িয়েছে এসব রাম-বামদের কারসাজি। এরা প্রথমে তেমন পাত্তা না পেলেও হেফাজত মাঠে নামার পর এই রাম-বাম তত্ত্ব কিন্তু ধর্মীয় রাজনীতির পক্ষের জনতার কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। বিশেষ করে হেফাজতিদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যাবস্থা নেবার পর এরা একেবারেই নিশ্চিত হয়েছেন রাম-বাম চক্রের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে। রাম-বাম তত্ত্বের ভিত্তি হল বর্তমান সরকারের ক’জন বিধর্মী এবং বাম ধারার ব্যাক্তিত্বের অবস্থান। সকল দোষই হল তাদের। কাদের ইসলাম বিদ্বেষী হলেও হাজার হলেও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই তো মুসলমান আইডেন্টিটির, কিন্তু দায় চাপাতে তো বিধর্মী দরকার। তাই প্রধানমন্ত্রী হাসিনা কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মখার চলে যাবে অন্তরালে, দায় চাপাতে হবে মেনন ইনু সুরঞ্জিতদের ওপর। এভাবে মনের মাঝের পুষে রাখা জাতিগত হীনমন্যতা জিঘাংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে। খালেদার সময়ের নানান কুকর্মের সময় অবশ্য তার দলে থাকা রাম বামদের ওপর দায় চাপানো যায় না। তখন ধর্মনিরপক্ষ চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
হেফাজতিদের ওপর সরকারের কঠোর অবস্থানের পেছনে রাম বামদের স্পেসিফিক কি ভূমিকা তা অবশ্যই কারো ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই, তথ্য প্রমানেরও দরকার নেই। বিদেশেঢ় নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করা লোকেও নিশ্চিত হয়ে গেছেন রাম বামদের ভয়াবহ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে।
২০০১ সালের সংখ্যালঘু নির্যাতনের সময়ে কিন্তু আমাদের মূলধারার পত্রিকাগুলি ভালই কাভারেজ দিয়েছিল। সে তূলনায় জনপ্রতিক্রিয়া তেমন একটি হয়নি। এবারকার অবস্থা সে তূলনায় আরো প্রতিকূল। গতবার মোটাদাগে গনপ্রিতিক্রিয়া ছিল
উদাসী ভূমিকা পালন করা, এবারের গন প্রতিক্রিয়া হবে সরাসরি অস্বীকার করা।
রাম বামরা তো ষড়যন্ত্র আগে থেকেই করে আসছে, হাজার হাজার আলেম হত্যার মূল কুচক্রি। মূল্য দিতে হবে না? একেবারেই অস্বীকার করা না গেলে বড়জোর দুয়েকটি কাগুজে কথা লোক দেখানোর খাতিরে হয়ত প্রকাশ করা যেতে পারে। বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে… সাথে সাথে বলতে হবে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা, সেক্যুলার ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়া তিলকে তাল করেছে, ভারতে আরো ভয়াবহ মুসলমান নির্যাতন হয়……
দেখার বিষয় ঘটনা ঠিক কিভাবে ঘটে। বিএনপি-জামাত ২০০৩ সালের ঘটনা থেকে কতটা শিক্ষা নিয়েছে দেখার বিষয়। গতবারের মত হয়ত ইমিডিয়েটলি ঘটবে না।
@আদিল মাহমুদ,
দেখবেন কিভাবে ? বাংলা ব্লগিংয়ে কয়েক বছর আগের মতন আর মজা পাই না। ব্লগিংয়ের নামে যা দেখি সেসবকে নানা পক্ষের নির্জলা গোয়েবলসীয় বিদ্যার চর্চা অথবা নির্জলা আত্মপ্রচার বললে অত্যুক্তি হবে না। এসব দেখে বাংলা ব্লগের থেকে মনটাই উবে গেছে।
যাহোক , আপনার উত্তর পড়ে ভীষণ শংকিত হলাম। আশা করি আগামী বছর এরকম ভয়াবহ মানবিক দূর্যোগময় পরিস্থিতিতে আমাদের দেখতে হবে না। নিশ্চয়ই ভাগ্যদেব জুপিটার আমাদের সঙ্গে আছেন।
@সংশপ্তক,
ব্লগিং সম্পর্কে আপনার বক্তব্য আংশিক সঠিক, পুরো নয়। ভাল লেখা আসে না এমন নয়।
আপনার মত জুপিটারবাদি হতে পারলে ভালই হত……অত সুখ তো কপালে নেই রে ভাই।
@আদিল মাহমুদ,ঈদ ও অন্যান্য ব্যস্ততার জন্যে মন্তব্যে অংশ নেয়া হয় নি। আজকে একটু সময় পেলেই আপনার প্রথম মন্তব্যটি নিয়ে বসবো।
বিএনপি-জামাত-হেফাজত এদেরকে ডিফেন্ড করার কোন ইচ্ছা থেকে নয়, বরং আপনি যেমন একটু আগে বললেন গনতন্ত্র আর পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া নিয়েই অল্প কিছু লিখবো আশা করি।
@আদিল মাহমুদ,
বিএনপি-জামাত আওয়ামী লীগের মত কোনো দ্বিধা-দ্বন্দে ভোগে না। ইমিডিয়েট একশনে বিশ্বাসী এরা। বিরানব্বই-তিরানব্বই সালে আমরা যখন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামতাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ছাত্রদলের ছেলেরা যুবকমান্ডের নামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তা ছত্রভঙ্গ করে দিতো।
বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই সংখ্যালঘুদের একটা বিরাট অংশ সীমান্ত পাড়ি দেবে। ভিটে ছাড়া, দেশছাড়া হবেন তাঁরা চিরকালের জন্য। আওয়ামী লীগের বহু লোককেও দেশ ছাড়তে হবে পাপিয়া পাণ্ডের ভালবাসার অত্যাচারে। এই সুন্দরী সর্পিনী যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন, এতে আমার তেমন কোনো সন্দেহ নেই। পাপিয়া পাণ্ডের পাণ্ডববাহিনীকে সামাল দেবার মতো মেরুদন্ডের মুরোদ আওয়ামী লীগের মনোবলবিহীন ক্ষমতাচ্যুত লোকজনের থাকার কথা নয়।
আরেকটা মজাদার ঘটনা ঘটবে অন্তর্জালে। আজকে যেমন ব্লগ এবং ফেসবুকে নাস্তিক এবং প্রগতিশীল লোকের বিপুল জোয়ার বইছে। হাঠে মাঠে ঘাটে সবাই এখন নাস্তিক, প্রগতিশীল আর নারীবাদী। এতে বিরাট ভাটার টান পড়বে। হঠাৎ করে কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখবেন যে সবার পকেট থেকে গোল টুপি বের হয়ে মাথায় চড়ে বসেছে। বোরকা-হিজাব আর তেঁতুলতত্ত্বের প্রতি ভালবাসা উথলে উঠবে সবার তখন।
@ফরিদ আহমেদ,
একদম, সত্যি, ফরিদ ভাই। সবারই জান আছে, আর জান বাঁচানো ………তা তো বেকুবও জানে!
@ফরিদ আহমেদ,
ভাই আর ভয় দেখাইয়েন না…. ;-( ;-( ;-(
@ফরিদ আহমেদ,
বিএনপি-জামাতের ট্র্যাক রেকর্ড তেমনই বলে। ২০০১ সালের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার মত এমন অনুকুল পরিস্থিতি অতীতে আর কখনো হয়নি। এবারে আরো বোনাস হিসেবে বিরাট এক জনতার নীরব সমর্থনও পাওয়া যাবে। কাজেই দ্বিধা দ্বন্দে ভোগার খুব বেশী কিছু থাকার কথা নয়। এই দলের মাঝে এমনিতেই ফ্যানাটিজম প্রতিহিংসা পরায়নতা প্রবল। তার ওপর এবার লীগ সরকারও বেহুদা বেহুদা মামলা হামলা করে পথ আরো সুগম করেছে। পাপিয়া পান্ডেকে দেখলে আমারই ভয়ে হাত পা শীতল হয়ে আসে।
প্যানিক সৃষ্টি করতে ইচ্ছে করে না। আমার সাথে সংখ্যালঘু যাদেরই কথা হয় তাদেরই পরিষ্কার বলি রাস্তা দেখে রাখতে, সামনে ভয়াবহ দিন আসছে। এ দেশ আপনাদেরও, চলে যাবেন কেন এই জাতীয় আবেগময় কথা বলা তাদের ক্ষতি করারই নামান্তর। সময় সুযোগ থাকতে মানে মানে রাস্তা দেখাই উত্তম।
ফেসবুকিয় আঁতেল সমাজের বিবর্তনের দরকার আছে। বেহুদা বেহুদা আইনী বে-আইনী মামলা হামলায় ভোগার মানে নেই। আমি দেশে থাকলেই নিজেই দুই ডবল সাবধান হতাম। অনলাইন ব্লগ সমাজ যে তাদের পথের এক বিরাট কাঁটা এই তথ্য নিশ্চয়ই বিএনপি/জামাত হাই-কমান্ডের এতদিনে ভালই জানা হয়েছে। এই সমস্যা কিভাবে উতপাটন করতে হবে তাও নিশ্চয়ই গেম প্ল্যানে আছে, বিরোধী কন্ঠ হজম করার জিনিস এরা নয়। আমার সতীর্থ বহু ব্লগারের সামনে শনি আসছে দেখতে পাচ্ছি।
@আদিল মাহমুদ,
জামাত শিবির ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্লগিং এবং গণজাগরণ মঞ্চের সাথে সংশ্লিষ্টতার জের ধরে গাইবান্ধায় স্থানীয় শিবির সন্ত্রাসীরা আজ ব্লগার তন্ময়ের উপর হামলা করেছে। ব্লগার তন্ময় বুয়েটের শিক্ষার্থী এবং বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
নিউজ লিংক: এখানে এবং আহত তন্ময়।
@তারিক,
এই সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থাতেই এমন শুরু হলে আক্রমনকারিরা ক্ষমতায় গেলে কি অবস্থাটা হতে পারে চিন্তা করাটা খুব কঠিন কিছু নয়। আইনী বে-আইনী দুই উপায়েই সাইজ করা হবে।
@আদিল মাহমুদ,
দেখেন গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে ‘শহীদ জিয়ার’ অবদান এবং আদর্শের উপর লেখালেখি করে শনির দশা কাটানো যায় কি না। মুক্তমনার লোগো বদলিয়ে সেখানে দাড়িপাল্লা না হোক ধানের শীষ লাগিয়ে দেখা যেতে পারে। অনেক ‘ধর্ম নিরপেক্ষ ব্যক্তি’ বর্তমান সরকারকে যেভাবে আক্রমন করছেন , তাতে মনে হয় যে ‘শহীদ জিয়ার সেনানীরা’ হয়তো তাদের ভালই নজরানা দেবে , জামাই আদরে রাখবে। বি এন পি এবং জামাত যে রকম গনতন্ত্রে বিশ্বাস করে , আমরা হয়তো বৈধ উপায়ে হল্যান্ড ও কানাডার মত স্বল্প মূল্যে গাঁজা খরিদ করতে পারবো , সমকামীরাও বৈধ উপায়ে সংসার বাঁধতে পারবে। চারিদিকে মধু এবং দুধের ফোয়ারা বইতে আর বাকী নেই যে !
তবে, সামনে কি আছে বলা যায় না। পাশার দান উলটাতে সময় লাগে না। বাংলাদেশে সেনা বাহিনীকে দিন রাত গালি গালাজ আর ধমকিয়ে কেউ ক্ষমতায় যেতে পারে নি এখন পর্যন্ত। যতই একাডেমিক মাথা চুলকাক , বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সেনা বাহিনী – এই সত্য যাদের মাথায় এখনও ঢুকেনি , তাদের মাথায় এটা ঢুকানোর সহজ কোন রাস্তা নেই ,’বাঁকা রাস্তা’ অবশ্যই আছে।
@সংশপ্তক,আপনার রাজনীতির দূরদৃষ্টি সত্যিই প্রশংসনীয়। কয়েকমাস আগে আপনি যেমন বলেছিলেন আপনার সেই বিখ্যাত লেখায়, দেশের রাজনীতি সেই পথেই এগিয়েছে।
শাহবাগে হামলা এবং সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা
লিখেছেন: সংশপ্তক
http://blog.mukto-mona.com/?p=34042
তবে একটু আশ্চর্য লাগছে যে সেই সময়ে আপনি বলছিলেন যে বিএনপি-জামাত সামরিক হস্তক্ষেপ চায় নিজের নাক কেটে যাত্রা ভংগ করার জন্যে। সেটাকে ঠেকিয়ে রাখতে আপনি সবাইকে উদাত্ত আহবান জানিয়েছিলেন। আজ দেখি আপনি নিজেই সেনা বাহিনীকে ডাকছেন! এই কয় মাসে তেমন কিছু ঘটে গেছে নাকি?
@সফিক,
না , তেমন কিছুই ঘটে নি। সবকিছু আগের মতই আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি বলেন আর আওয়ামী লীগই বলেন, এরা সবাই variable , যেখানে একমাত্র constant হচ্ছে সেনা বাহিনী। চীন, পাকিস্তান এবং মিসরের সেনাবাহিনীর মত আমাদের সেনা বাহিনীও একটি বিশাল অর্থনৈতিক-বানিজ্যিক এন্টারপ্রাইজ , সম্ভবত দেশের সবচেয়ে বড় । ১-১১ এর পর আওয়ামী লীকে দিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে বেসামরিক রং মাখিয়ে স্হিতিশীলতা বজায় রাখার- তারা ব্যর্থ হলে সাবেক বিচারপতি কিংবা সাবেক আমলাদের আবার ডাক পরতে কতক্ষণ ?
অনেকে আন্তর্জাতিক চাপের কথা বলবেন না বুঝে । বড় দাদারা ভালই বোঝেন কে constant আর কে variable । পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে একমাত্র সেনাবাহিনীই পারে নাস্তিক এবং মোল্লাদের এক ঘাটে জল খাওয়াতে। সাধারণ জনগনের বেশীরভাগও তদের পছন্দ করে । আমি বরং অবাকই হয়েছিলাম যখন ২০০৮ সালে জেনারেল মইন ইউ টার্ন নিয়ে নির্বাচন দিলেন , যদিও পর্দার অন্তরালে কথা ছিল যে ২০২০ পর্যন্ত টেকনোক্র্যাট সরকার দিয়ে দেশ চালানো হবে।
@সংশপ্তক,
কেমন আছেন ভাই?অনেক দিন পর দেখা।
আচ্ছা বাংলাদেশের সেনা বাহিনীর সঠিক সংখ্যা আসলে কত?উইকি তে দু রকম তথ্য পাচ্ছি।
৩৫০০০০
এবং মোট মিলিটারি হল
১৫৭০০০
আমি পুরাই বিভ্রান্ত এই আকাশ পাতাল ব্যবধান দেখে।
আপনার কি সঠিক সংখ্যাটি জানা আছে? জানলে দয়া করে জানাবেন।
@সংশপ্তক,
যত যাইই বলেন আর মনে হয় না বাংলাদেশে আর্মির দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতায় থাকার মত পরিস্থিতি আর আছে বলে। আর্মির ভেতরেরো মানসিকতা যতটা শুনেছি তারা এখন আর ক্ষমতায় যেতে চায় না। মঈনের আমলে লোকে সেনা হস্তক্ষেপে খুশীই হয়েছিল সেটা ছাড়া নিশ্চিত গৃহযুদ্ধের দিকে যাত্রা ঠেকানোর পথ ছিল না বলে। তবে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের প্রভাব লোকে মানত না।
চীন, মিশর, পাকিস্তানের মত আমাদের পরিস্থিতি নয়। আমাদের দেশে লোকে হাসিনা খালেদাকে যতই গাল দিক ভোট দেয় খুশী মনেই। এদের মাইনাস করার প্লটও লোকে পছন্দ করেনি। পাকিস্তানে কাজটি সহজেই করা যায়, আমাদের দেশে করা যায়নি।
@সংশপ্তক,
বিএনপি জামাত মূলত কাল্ট টাইপের সংগঠন। এদের এত সহজে তেলানো সম্ভব নয়। আমি নিরাপদে থাকার আরো ভাল ব্যাবস্থা নিচ্ছি। অধ্যাপক গোলাম আজমের মুক্তির দাবীতে পোষ্ট দিয়ে যেতে পারি, আর দেশে পূর্নাংগ শরিয়া আইন তো দাবী করে আসছি। নির্বাচন যত ঘনাবে তত বেশী করে দাবী করতে থাকব।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার উর্দু কি রকম ? দেশে গেলে পাঠানী কোর্তা , সালোয়ার , কামিস পড়তে ভুলবেন না এবং ” কিসিকে সাথ গুফতগু করনা হ্যার তো , জবান-এ-উর্দুন মেই গুফতগু হামেশা জারী রাখনা বহুত জারুরী হ্যায়।” কারও নাম জানতে চাইলে জিজ্ঞেস করবেন,” ভাইজান , আপকা ইসমে শরীফ কেয়া হ্যায় ?” শফীর ছাত্ররা ভাববে বড় আলেম এসেছেন।
আহা সফিক ভাই, শেষ মেস অতি উদারতার পরিচয় দিয়েই ফেললেন, জামাত কে বৈধতা দানের মাধ্যমে?দুনিয়া গোল্লায় যাচ্ছে কেন জানেন? আপনাদের মত অতি উদার পন্থী মানুষের জন্যে।মেলাদিন পর এসেই বদহজম হবার মত আর্টিকেল পড়লাম। নিশ্চয়ই বহু চিন্তাভাবনা করেই লিখেছেন লেখাটা?
আমি এবার একটা প্রস্তাব রাখব,ধরে নেন আমেরিকা ইসলাম পন্থী দেশ হয়ে গেছে।এইবার আপনার স্ত্রীর চাকরি সরকার খেয়ে নিল।আপনি না মেনে গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদ করলেন,তারপর শরিয়াহ আইন লঙ্ঘনের দরুন আপনাকে সমুচিত সাজা দেয়া হল।
তারপর আপনার চাকরিও কেড়ে নেয়া হল এবং তারপর জিজিয়া দাবী করা হল ( জিজিয়া না দিলে আপনাকে সপরিবারে জেলে ঢুকানো হবে;কিন্তু রক্তপাত হবে না)।
এইবার আপনি কি করে জিজিয়া দেবার টাকাটা জোগাড় করবেন বলেন দেখি? এইখানে আপনাকে ভিনদেশে ( কাফিরদের দেশে) গিয়ে টাকা রোজগারের একটা অপশন দেয়া হবে, কারন এতে ইসলাম পন্থী দেশের ইনকাম বাড়বে।
যেহেতু আমি অতি উদার মানুষ, অতএব আপনি সেই ভিনদেশেও গিয়ে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বৈধতা দানের দাবী তুল্লেন, তারপর সেটাও বাস্তবায়ন হল অর্থাৎ যেই লাউ সেই কদু।
এইভাবে সারা দুনিয়াতেই আপনার মত মহৎ হৃদয়ের মানুষের জন্য ইসলামিক শারিয়াহ কায়েম হয়ে গেল। এইবার কি আপনি রকেটে করে চাঁদে গমন করবেন? 🙂
আমি ধরেই নেব যে আমি উত্তর পাচ্ছি না কারন শাহবাগ নিয়ে আপনার আর আদনানের সাথে আমার কিছু বিতন্ডা হয়েছিল শেষবার।আর আপনি আমাকে ইগ্নর করা শুরু করেছিলেন।
কেন জানি আপনার সেই ডাবল স্টান্ডার্ড মনে আছে। অনেক অতি উদার শুভেচ্ছা রইল। 😉
প্রিয় মডারেটর,
প্রথম পাতায় দুটি লেখা থাকা অবশ্যই সমীচীন নয়। কিন্তু আমি আমার আগের লেখাটি দেয়ার পরে এগারো দিন পরে পরের লেখাটি দিয়েছি। সংবিধান ও জামাত প্রসংগটি current affair সংক্রান্ত লেখা। এই ধরনের লেখা বেশী দেরী করে দিলে উপযুক্ততা থাকে না।
এই কয়দিনে Artificial meat পৃথিবীতে হৈ চৈ ফেলে দেবার মতো সংবাদ। এমনকি বাংলাদেশেও এই সংবাদটি অনেক গুরুত্ব দিয়ে প্রচারিত হয়েছে। আমি তো Artificial meat এর এর ফলে কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে এই নিয়ে আর কোন লেখা দেখছি না। এই সময়ে কৃত্রিম মাংসের লেখাটি প্রথম পাতা থেকে একেবারে সরিয়ে ব্যক্তিগত পাতায় দেয়াটা কি একেবারে যুক্তিযুক্ত?
নিয়ম ভাংগার কথা বলছি না, তবে এগারো দিন পরে লেখা দিলে সেটাকে ফ্লাডিং এর অভিযোগে অভিযুক্ত করা বোধহয় ঠিক নয়। লেখার গুরুত্ব ও সময়োপযোগীতাও নিশ্চই বিবেচ্য হওয়া উচিৎ।
@ সফিক,
জামাত নামক এই রাজনৈতিক দলটির বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকারই নেই ।
আবার পৃথিবীতে অনেক গনতন্ত্রে বিদ্বেষমূলক কিংবা দেশের অখন্ডতা-বিরোধী রাজনীতি করাতেও বাধা দেয় না।
এই বক্তব্বের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার জন্য একটি প্রশ্ন , ‘তাহলে কি সন্তু লারমা ও তার অনুসারীরা বাংলাদেশের অখণ্ডতা বিরোধী রাজনীতি করলেও আমরা বসে বসে নিরোর বাঁশি ফুঁকাবো ? ‘ অখণ্ডতা বিরোধী রাজনীতি কি সংবিধান সম্মত ? ‘
@অর্ক আহমেদ,এটা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম পলিসি নেয়া হয়। অধিকাংশ উন্নত গনতন্ত্রেই সেপারেটিস্ট রাজনীতি করার অধিকার মেনে নেয়া হয় যতক্ষন না পর্যন্ত তারা হিংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয়।
আমি নিজে মনে করি সন্তু লারমা ও তার অনুসারীরা বাংলাদেশের অখণ্ডতা বিরোধী রাজনীতি করলেও যতক্ষন না তারা হিংসাত্মক রাজনীতি করে ততক্ষন তা অবশ্যই মেনে নেয়া উচিৎ। আর পার্বত্য চট্রগ্রাম নিয়ে আমার নিজের মত হলো যে আমরা চেষ্টা করতে পারি বিভিন্ন ভাবে যেনো সেখানকার আদিবাসীরা আলাদা না হতে চায়। তাদেরকে বিশেষ ইনসেনটিভ দেয়া উচিৎ। তবে শেষ পর্যন্ত যদি তারা আলাদা হতেই চায় তবে সেটা ঠেকিয়ে রাখা উচিৎ না।
কোনো জনগোষ্ঠীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের আদিভূমিতে পরাধীন করে রাখা চরম রাজনৈতিক অপরাধ। পাকিস্তানীরা আমাদের সাথে ১৯৭১ এর আগে যেরকম ট্রিটমেন্ট করতো তারচেয়ে বহুগুনে জঘন্য অপরাধ আমরা নিত্য করে চলেছি পার্বত্য চট্রগ্রামের আদিবাসীদের সাথে।
@সফিক,
ক্যানাডার ব্লক কুইবেকা হচ্ছে এর সেরা উদাহরণ। এই রাজনৈতিক দলটি ক্যানাডা থেকে কুইবেককে আলাদা করে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠার কাজ করে যাচ্ছে। অথচ এটি ক্যানাডার বৈধ রাজনৈতিক দল। ফেডারেল নির্বাচনে নিয়িমিত অংশ নিয়ে চলেছে, পার্লামেন্টে সদস্য পাঠাচ্ছে।
@ফরিদ আহমেদ, বাংলাদেশের ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকদিন থেকেই “ইসলামী রাষ্ট্র” দাবী করে আসছে। “আমরা সবাই তালেবান বাংলা হবে আফগান” শ্লোগান শুনে আমরা তাহলে গোস্বা হয়েছিলাম কেন সে প্রশ্ন এখন উঠতেই পারে। আসলে পৃথিবীর উদার আধুনিক রাষ্ট্রগুলোর গণতান্ত্রিক অবস্থার কথা আমাদের জানাশুনা কই। এইসব শ্লোগানের মধ্যে হিংসাত্মক কিছু তো সত্যি নেইও। কাল থেকে যদি বাংলাদেশে “অখন্ড পাকিস্তান আন্দোলন” জাতীয় কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠন কার্যক্রম শুরু করে তাহলে অবশ্যই যারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করতে আসবে তাদের এই বলে ছবক দিবো- এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। একই কারণে হিজবুত তাহেরিরকে নিষিদ্ধের জন্য সরকারকে নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে হিজবুত তাহরির (এই সংগঠন বাংলাদেশে কি হিংস্রাত্মক কার্যক্রম করেছে জানি না)-কে তাদের প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যেতে সরকারকে সহযোগিতা করে যেতে অনুরোধ করবো। কারণ আমাদের হাতে আছে ক্যানাডার ব্লক কুইবেকার সেরা উদাহরণ। পশ্চিমাদের মত আমাদের উদার হতে হবে। কারণ তাতেই শরীয়াপন্থিদের রাজনীতি করার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমার সমস্যাটা হচ্ছে, আমি মানুষটা শিক্ষা-দীক্ষায় ছোটখাটো কিস্তু বড় বড় জিনিস নিয়ে নাড়াচাড়া করি। এক সময় ভাবী, কি দরকার আমার এই সীমিত জ্ঞান নিয়ে বিদ্যান- উচ্চ শিক্ষিত মানুষগুলোর সঙ্গে তর্ক করার। এই কুলিন সমাজের আদৌ যৌগ্য আমি নই। আমি গল্প লিখি, সেটা লিখেই দায় সারা যায়। কিন্তু আমার স্বভাব দোষ। চুপ করে আমি থাকতে পারি না। এই পোষ্টের লেখক কোন জবাব দিবেন না বুঝেছি। আপনি একটা কমেন্ট করেছেন পোষ্টের লেখককে। দেখিয়েছেন কানাডায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও কিভাবে রাজনৈতিক অধিকার পায়। এটা যদি আপনার ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পক্ষে অবস্থা ধরে নেই, তাতে আপনাকে কিছুতেই “ইসলাম দরদী” ট্যাগ মারা হবে না। কারণ অনেক কট্টর মুসলিম নাস্তিকদের দেথেছি তারা বাংলাদেশে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির প্রতি সহানুভূতিশীল। তারা মনে করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা তাদেরও আছে। আমি দ্বিধার মধ্যে আছি। গণতান্ত্রিক অধিকার তো “বাংলাদেশ বিরোধীদেরও” আছে তাহলে! কিছুদিন আগে অন্য একটা ব্লগে একজন ব্লগার মুক্তিযুদ্ধাদের কুলাঙ্গার বলে গালি দিয়েছিল, তার সঙ্গে আমার একচোট হয়ে গেছে। আমার সঙ্গে আরো মুক্তিযুদ্ধপন্ধি ব্লগার যোগ দিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধাদের হেয় করার জন্য আমরা মডারেটরদের অনুরোধ করেছিলাম ঐ ব্লগারকে ব্যান মারার জন্য। এখন মনে হচ্ছে, ওটা তো ঐ ব্লগারকে তার গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার সামিল। ইনকিলাবের পাতায় জাতীয় সংগীতের প্যারডী করার জন্য ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম মনে পড়ে। ১৬ ডিসেম্বর বিএনপির আমলে পাকিস্তানের পতাকা তুলেছিল বলে খুব হৈ চৈ হয়েছিল, পাকিস্তানের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ নিয়ে কটুক্তি করার ঘটনাও তো আধুনিক গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় দোষের নয়। আমাকে ভুল বুঝবেন না প্লিজ। এর আগে অনাকাঙ্খিতভাবে আপনি আমাকে ভুল বুঝেছিলেন। আমি আপনাকে আঘাত দেইনি। এখানেও একই কথা খাটে। আমি আপনার সঙ্গে শেয়ার করছি একজন নবীন লেখক হিসেবে অগ্রজ সিনিয়র লেখকের কাছে। এই পোষ্টের লেখক যেহেতু উত্তর দিবেন না, আপনাকে তার পোষ্টের উত্তর দিতেও বলছি না, কিন্তু গণতন্তের যে সংজ্ঞা নতুন করে জানছি তা কি ঠিক আছে? জানালে ভাল লাগবে। ভাল থাকবেন।
@সুষুপ্ত পাঠক, আমার মনে হয় ফরিদ ভাই পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে লিঙ্কটা দিয়েছেন,ইসলামী রাষ্ট্র দাবীর প্রসঙ্গে নয়। ধন্যবাদ।
@অর্ফিউস, আমি ইসলামী রাষ্ট্রের দাবী প্রসঙ্গে বলিনি। বলেছি গণতান্ত্রিক অধিকার প্রসঙ্গে।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনি যদি গণতান্ত্রিক অধিকার প্রসঙ্গেই করে থাকেন তবে ফরিদ ভাইকে প্রশ্নটা করলেন কেন? এই লেখাটা কি উনি লিখেছেন? আপনি সরাসরি লেখকের উদ্যেশ্যেই প্রশ্নটা করতে পারতেন।
তা না করে ফরিদ ভাইকে অপ্রাসঙ্গিক ভাবে প্রশ্ন করাটা ( যেখানে তিনি শুধুই একটি উদাহরন দিয়েছেন) কতটা যৌক্তিক?
যেকোনো বিবেচনা সম্পন্ন মানুষ কিন্তু আপনার এই বাক্যটাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলেই ধরে নেবে।
@অর্ফিউস, @অর্ফিউস, ফরিদ আহমেদকে কেন প্রশ্ন করেছিলাম সেটা মন্তব্যেই লেখা আছে। নানা সময়ে আমি অন্যের পোষ্টে আকাশ মালিক, আদিল মাহমুদকে নানা রকম প্রশ্ন করে নিজের কৌতূহল মিটিয়েছি। তাঁরা দুজন আমাকে আমার এই অযাযিত কৌতূহলেক প্রশ্রয় দিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করেছেন। ফরিদ আহমেদের সঙ্গেও আমার ভাবনা বিনিময়ের ঊদ্দেশ্য প্রশ্ন করা। কিন্তু তিনি এসব আলোচনায় যেতে আগ্রহী নয় পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন। ফরিদ আহমেদ আমাকে প্রথম থেকে ভূর বুঝে আসছেন। সেটা অবশ্যই আমার দোষ। কারণ আমি তাঁকে বুঝাতে সক্ষম নই যে আমি আসলে জানতে এসেছি, জানাতে নই। শিখতে এসেছি, শিখাতে নয়। প্রশ্ন করে করে আমি শিখেছি। আমি একজন স্বশিক্ষিত মানুষ। অনেক বিজ্ঞ, বিদ্যান, শিক্ষিত মানুষ আমাকে আমার এই অতি কৌতূহলকে মেনে নিয়েছন ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে। তারা ভৎর্সনা করে তাড়িয়ে দিতে পারতেন। তারা তা করেনিন। ধরুন, এই যে মুক্তমনায় মুক্তমনার প্রচারের উদ্দশ্য সেটা কি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসার জন্য নয়? নাকি মানুষ মুক্তমনা হয়ে তারপর মুক্তমনায় আসবে? আমার মত অবার্চিন যদি মুক্তমনায় এসে কিছু শিখতে না পারে তাহলে কিন্তু আপনাদেরই উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে না। কাজেই আমি এখনো মনে করি ফরিদ আহমেদকে প্রশ্নটা করা আমার অনচিত হয়নি। যেমন এই পোষ্টে আপনি ও আমি এসে এখন পরস্পর কথা বলছি। এই পোষ্টের লেখক কথা বলবেন না সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি। ফরিদ আহমেদ কেন তার হয়ে উত্তর দিবেন। সে দাবী আমি করিওনি। আশা করি এই প্রসঙ্গে সব ভুল বুঝাবুঝির অবসান হবে।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আমারও সেটাই ধারনা, তবে লেখক আবার আসতেও পারেন। মনে হয় তলোয়ারে শান দিচ্ছেন আমাদের ( যারা উনার বিরুদ্ধে যুক্তি দিচ্ছে) তাদের কেটে ফেলার জন্য।মুক্ত মনায় যখন প্রথম আসি, তখন থেকেই সফিকের এই স্টাইলের সাথে আমি পরিচিত।
একটু ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করেন।সফিক ফিরে আসবেন অবশ্যই। 😉
@ প্রিয় সুষুপ্ত পাঠক,
আপনাকে আমি আগেও বলেছি, আবারো বলছি, আপনি যে বিষয় নিয়ে আমার সাথে আলোচনায় করতে চান, সে বিষয়ে আমার প্রবল অনাগ্রহ এবং অনিচ্ছা রয়েছে। আপনার এই অসংলগ্ন, অগভীর, অর্থহীন এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান একদেশদর্শী সীমাবদ্ধ চিন্তাধারার উত্তর দেওয়া মানে আপনার পছন্দনীয় ময়দানে আমার খেলতে নামা। উঁহু, এই ভুল আমি আর করতে রাজি নই।
সফিক সাহেবের এই লেখাটা আমার দেখা মুক্তমনার অন্যতম সেরা রাজনৈতিক প্রবন্ধ। এর গভীরতা, ব্যাপকতা এবং তাৎপর্য যদি আপনি বুঝতে অক্ষম হন, কিংবা একে ভিন্ন বা বক্র দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে থাকেন, অথবা আপনার পায়ের মাপের সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন, তবে সেটি আপনারই অকৃতকার্যত এবং অসফলতা। সফিক সাহেবের কোনো ভুমিকা আমি অন্তত এতে দেখছি না।
@অর্ক আহমেদ,
অখণ্ডতা বিরোধী রাজনীতি যদি বাস্তব সম্মত নাই হয় তবে কেন আমরা অখণ্ড পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশের জন্য মুক্তি যুদ্ধ করেছিলাম?
আপনি পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের, মানুষ বলে মনে করবেন না, যা ইচ্ছা তাই ভাবে সরকারী সহায়তায় নির্যাতন করবেন, ইসরায়েলী কায়দায় বাঙ্গালী সেটলমেন্ট করতে থাকবেন আর তারা কিছুই করতে পারবে না নিজদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে এমন অন্যায় ধারনা আমার হল কিভাবে?
@অর্ফিউস,
পড়ুন, এমন অন্যায় ধারনা আপনার হল কিভাবে?
@ সফিক,
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা যদি ৭২ এর সংবিধানে কাচা কাজই হয়ে থাকে তবে আসেন আমরা সবাই ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির সুযোগ করে দিয়ে দেশটাকে দ্রুত খোমেনীর ইরান বা তালেবানের আফগানিস্তান বানিয়ে ফেলি।সমস্যা কি বলেন?হাজার হোক এটা রাজনৈতিক অধিকার।জামাত ক্ষমতায় আসুক সেনাবাহিনীতে জামাতীকরন শুরু করুক অতপর ইসলামী বিপ্লব বা শরিয়াহ ভিত্তিক দেশ হতে আর কোন বাধা থাকবে না।তারপর আপনি দেশে চলে আসেন, যেন কোকাকোলার বোতল দিয়ে আপনার দাড়ি মেপে আপনাকে সাচ্চা মুসলিম বানাতে পারে তখনকার জামাত/তালেবান শাসক।না হলেই কতল হয়ে যাবেন কাজেই আগেই দাড়ি রেখে দিন;কোকা কোলার বোতলের সমান লম্বা দাড়ি হতে মেলাদিন সময় লাগবে।
আসেন এইবার আমরা নব্য পুর্ব পাকি হয়ে ইয়াহিয়া খানের ছবি নিয়ে র্যালী করি;অবশ্যই গণতান্ত্রিক মহান অধিকার বলে আর শান্তিপুর্ন ভাবে।
“”যদি যথেষ্ট পরিমানে লোকজন মনে করে যে মানুষের তৈরী আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনার চেয়ে ধর্মপুস্তকে দেয়া স্রষ্টার আইন দিয়ে দেশ চালানো উত্তম, তবে তারা সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতে সংগঠন করে রাজনীতি করতেই পারে।””
সহমত প্রকাশ করে জনাব/জনাবা সমীপে একটা প্রস্তাবনা
“”যদি যথেষ্ট পরিমানে লোকজন মনে করে যে মানুষের তৈরী আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনার চেয়ে ‘ডাকাতনামায়’ দেয়া ‘ডাকাত সর্দারের’ আইন দিয়ে দেশ চালানো উত্তম, তবে তারা সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতে সংগঠন করে রাজনীতি করতেই পারে।””
এখানে উল্লেখ যে, এই সংগঠনের নাম হবে ‘নিখিল পূর্ব পাকিস্তান ডাকাত সংঘ’।ডাকাতির সময় হাতে না মেরে,ভাতে মারা এদের ঐতিহ্য অর্থভেদে শান্তিপূর্ণভাবে ডাকাতি এবং ডাকাতির পর প্রাপ্ত সম্পদ নিজেদের এবং গরীবদের মধ্যে উত্তম রূপে বিতরণ ও জনকল্যানে ব্যায় করার উদারতাও এই সংগঠনের ঐতিহ্য।
পোষ্টের লেখক মনে করেন ” যদি যথেষ্ট পরিমানে লোকজন মনে করে যে মানুষের তৈরী আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনার চেয়ে ধর্মপুস্তকে দেয়া স্রষ্টার আইন দিয়ে দেশ চালানো উত্তম, তবে তারা সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতে সংগঠন করে রাজনীতি করতেই পারে।”
এখন প্রশ্ন এরা রাজনীতি কেন করে বা করবে কেন?ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নিশ্চয়,তাছাড়া তো আল্লারে খুশি (আল্লা আইন চালু) করার অন্য তেমন কোন উপায় দেখি না!তো ধরেন এরা ক্ষমতায় গেলে(সম্ভাবনা আছে)তখন,তখন কিন্তু আপনার উদারপন্থী গণতান্ত্রিক পাখনা কেটে ফলতে হবে।নইলে আপনার জন্য শরিয়া আইনে কি আছে,জানেন না বোধহয়!!আশা করি শরিয়া আইন তখন আপনাকে যা দেবে(দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি)তা দৃঢ় চিত্তে মেনে নেবেন।ওখানে আবার অতি রোমান্টিক হয়ে গিয়ে আপনার গণতান্ত্রিক আধিকারের কথা বইলেন না তাহলে কিন্তু তল্লা বাঁশ…..!
খুবই সত্য কথা। তবে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা-ভোগকারী সামরিক শাসকেরা সময়ে সময়ে সংবিধানের যে বারোটা বাজিয়েছেন, তার কিঞ্চিত উল্লেখ থাকলে কিন্তু মন্দ হত না, সফিক ভাই। দেখুন না, আশি-নব্বই দশকের ঐ শাসকেরা সংবিধানের যে কাঁটাছেড়া করেছেন, তা জোড়া লাগাতে গিয়ে কেমন হাসজারু বানাচ্ছে আজকের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মালেক-মালেকিনরা! শ্যাম রাখি না কূল রাখি – এই ভাবনাতেই তাদের প্রাণ একেবারে ওষ্ঠাগত!
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ঝেটিয়ে বিদেয় করা হল যে নিরংকুশগরিষ্ঠতার উর্দি জোরে, বাহাত্তরের সংবিধানকে খোলনলচে বদলে দেয়া হল যে পাকিজাত চেতনার জ্বরে, তার কিছু উল্লেখ না থাকলে আমরা ইতিহাস জানব কি করে, সফিক ভাই? নাকি আপনিও অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাটি পছন্দ করেন না? শুধু বর্তমান নিয়েই ভাবতে ও লিখতে ভালবাসেন? আদর্শ হিসেবে মন্দ না, আমাদের কিন্তু প্রায়শ অনেক জাতীয় নেতা-নেত্রী অতীত ভুলে মিলে-মিশে দেশ গড়ার কথা বলেন।
একটা অদ্ভুত রুল বিরাজ করছে আজকের বাংলাদেশে। যারা যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় -লালন করে, তাদের ব্যাপারে আমরা কিচ্ছুটি বলব না, কারণ তাদের কাছে তো আমাদের প্রত্যাশা নেই। অন্যদিকে, যারা এই যুদ্ধাপরাধীদের অন্তত একটা বিচার শুরু করে (এবং যেজন্য যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে একটা প্রকাশ্য যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয় যাদের), তাদের পান থেকে সামান্য চুন খসলেও আমরা কলকলিয়ে উঠবো, একযোগে হামলে পড়বে, হাড্ডি-মাংস আলাদা করে ফেলব, কারণ আমাদের যে অনেক প্রত্যাশা ছিল তাদের উপর।
একইভাবে, যারা বাহাত্তরের সংবিধানের উপর ছুরি চালিয়েছে নির্মমভাবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে করেছে ছিন্নভিন্ন, তাদের সেহেন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আমরা একেবারেই নীরব রইব, কিন্তু যারা সেই রক্তাক্ত সংবিধানকে আদি রূপ দিতে গিয়ে আপোষ করে ফেলেছে (মুক্তিযুদ্ধের চার দশক পরের পরিবর্তিত বাংলাদেশ ও তার ভিতর ব্যাপক গজিয়ে উঠা সাম্প্রদায়িক চেতনার ক্রমবর্ধমান আস্ফালনের মুখে), তাদেরকে আমরা একেবারেই পিষে ফেলতে চাইব মাটির সাথে, কারণ আমাদের যে অনেক প্রত্যাশা ছিল তাদের উপর।
রুলটা ভালই, আসলেই তো আমাদের অতীত ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত! সবাই মিলে-মিশে প্রাণের বাংলাদেশ গড়ব মোরা!
@কাজি মামুন, দুর্দান্ত উত্তর হয়েছে।আমার হাত তালি দিতে ইচ্ছে করছে। :clap
@কাজি মামুন,
অন্য আরেক পোষ্টে দেখেন গিয়ে একজন কে উত্তর দিতে গিয়ে সফিক ভাই নিজেই বলেছেন যে উনি বি এন পি কে ভোট দেবেন, আর উনি জিয়া কে মুজিবের চেয়ে অনেক শ্রেয়তর শাসক মনে করেন, এর পরেও কিভাবে আপনি এইটা আশা করেন কাজি সাহেব 😉 ? যাক উনি এলিট মানুষ, যা ভাববেন সেটাই আমি( জনৈক আতরাফ) আজ থেকে নত মস্তকে মেনে নেব। :-p
জামাতের নিবন্ধন আদালতকৃত বাতিল এবং একে নিষিদ্ধের জোর দাবী যখন জাতির সামনে তখন এই পোষ্ট নিঃসন্দেহে সমোপযুগি এবং অপ্রসঙ্গিক নয়। এই পোষ্ট জামাত বিরোধী নয়। জামায়াত নিষিদ্ধের দাবীর কথাও কোথাও বলা হয়নি। বলা হয়েছে জামাতকে অনেক সহজেই নিষিদ্ধ করা যায় তার পাপের জন্য। তবে…
আসুন দেখি শফিক সাহেব কি লিখেছেন।
কোত্থেকে পান এসব কে জানে? নিদিষ্ট কোন ধর্মগ্রন্থ দিয়ে দেশ চালালে যে অন্য কারুর গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয় সেটা বুঝেন না কেন? বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করে এদেশের হিন্দুসহ অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায় ও ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তাকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। সেটা কি গণতান্ত্রিক কিছু ছিল? অথচ এই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তো দেশের একটা অংশ সমর্থন করে।কাজেই এটা হালাল হয়ে গেছে! বাহ্ খুব ভাল কথা। তারপর-
আজব কথা! আপনিই তো বললেন সংখ্যাগরিষ্ঠ চাইলেই সেটা পারে। যারা এই দেশে তাগুদি আইনের বদলে আল্লার আইন চান সেটা “ইচ্ছে মত রাজনীতির” আওতায় পড়ে না? যারা এই দেশে কাদেয়ানীদের ধর্মীয় পুস্তক নিষিদ্ধ ও তাদের অমুসলিম করার দাবী করেন তাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার আছে কি এই দেশে? পোষ্টের লেখকের কাছে সবিনয়ে প্রশ্ন রইল। যদি না যায় তাহলে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে একটাও ইসলামী দলের রাজনীতি করার কোন অধিকার আছে কি?
আপনার কাছে আমার প্রশ্ন, বাংলাদেশের এমন একটা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নাম বলুন যাদের আর্দশ বাংলাদেশ আর গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘষিক হবে না। অন্য জাতির প্রতি বিদ্বেষ প্রসন করে না, মানুষের বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করে। এগুলোকে সমর্থন না করলে কেমন করে কোন দলের গণতান্ত্রিক সমাজে তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে? কি আজব কথা, কোন দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকেও নাকি প্রকাশ্যে রাজনীতি করার অধিকার দেয়া হয়। তাহলে বাংলাদেশ বিরোধী জামাত-শিবিরকে রাজনীতি করতে দেয়ার মধ্যে দোষের কিছু নেই!
বিদ্বেষ জিনিসটাই যেখানে খারাপ সেখানে অধিকারের প্রশ্ন আসে কিভাবে। মানুষ খুন করার অধিকারও তাহলে গণতন্ত্রে থাকা উচিত!
পোষ্টের লেখক ধর্মভিত্তিক রাজনীতির একজন সমর্থক এতে কোন লুকোচুরি করেননি। জামাত যদি কোন বহিশত্রুর সঙ্গে (তিনি একবারও পাকিস্তানের দোসর এটি উল্লেখ করেননি) মিলে যুদ্ধের সময় গণহত্যা ও ধর্ষণের মত অপরাধ (যদিও পোষ্টের লেখক এভাবে অপরাধের কথা চিহ্নিত করে লেখেননি) না করতো তাহলে জামাতে তার অরুচি ছিল না। কারণ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে এবং সেই অধিকার রক্ষার জন্যই তিনি কলম ধরেছেন। এক্ষেত্রে তিনি বারবার আমেরিকা- আমেরিকা করে মাতম করেছেন। ভারতের শিবসেনার উদাহরণ দিয়েছেন। বলেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ চাইলেই যারা মানুষের বানানো আইনের বদলে স্বৈগীয় কিতাবের আইনে দেশ চলতে চান তাদের সে আর্দশ নিয়ে রাজনীতি করতেই পারেন। এটা নাকি গণতান্ত্রিক অধিকার। স্বয়ং গণতন্ত্র এই অধিকার প্রতিক্রিয়াশীলদের দিয়েছে! এখন প্রশ্ন সেই রাজনৈতিক দল যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে তাদের বিশ্বাস যদি বাস্তবায়ন করতে যায় তখন কারুর গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয় কিনা? ধরা যাক আকাশের কিতাবের শাসন হবে। এখণ আকাশ তো কিতাব একটা পাঠায়নি। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিশেষ কোন কিতাবী লোকের শাসন চললে অন্য কিতাবীদের সেটা পছন্দ হবে কিনা? গণতন্ত্র তো বলে একজনও যদি ভিন্নমত থাকে তবে তাকেও গ্রহণ করতে হবে। সেটাই গণতন্ত্র। ধর্মীয় দলগুলো রাজনীতি করতে পারবে। যে কোন দেশেই সেটা সম্ভব। কিন্তু কোন রাষ্ট্রের সংঙ্গে সাংঘষিক, গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘাষিক হলে সেটা কেমন করে সম্ভব? কোন ইসলামীক, হিন্দুবাদী, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ধর্মীয় রাজনৈতিক দল নির্বাচন, দেশের প্রচলিত আইন, সর্বপরি সেই দেশের স্বাধীনতার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। কোন দল যদি বলে পার্লামেন্ট শুয়োরের খোয়ার তার কি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনীতি করার অধিকার আছে? তাকে তো একটা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে হবে। কেউ যদি বলে, তারা ক্ষমতায় আসলে শরীয়া আইন চালু করবে- তারপর কি তার রাজনীতি করার অধিকার থাকে? সে তো সরাসরিই গণতন্ত্রকে হুমকি দিলো। শরীয়া আইন তো ব্যক্তি স্বাধীনতাকে স্বীকার করবে না। বাক স্বাধীনতাকে স্বীকার করবে না। এই মুক্তমনাকে স্বীকার করবে না…।
সেটা আপনি বুঝবেন না বা বুঝতে চাইবেন না। বিজেপি ভারতে ক্ষমতায় এসেছিল ভারতকে মেনে নিয়েই। গান্ধিকে নতমস্তকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্টীয়ভাবে অটল বিহারী বাজপায়ি। বিজেপির মুসলিম নেতাকর্মী আছে।একজন মুসলিমকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিল। এসবকে রাজনৈতিক ধান্দাবাজী বা ভন্ডামী যাই বলেন না কেন, এই রকম উদাহরণ বাংলাদেশের একটা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে দেখাতে পারবেন? হেফাজতের ১৩ দফা, বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন ভাষ্কর্য ভাঙ্গার চেষ্টা (এরা সবাই ইসলামীক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত) আর যাই হোক গণতান্ত্রিক অধিকার বলে তাদের রাজনীতির সুযোগ দিতে ভরসা হয় না। তবু তো তারা রাজনীতি করছে। ৭২ সালের সংবিধান এদের সেই অধিকার রোধ করেছিল।
এই ব্লগ সাইটটি মুক্তমনা না হয়ে যদি অন্য কোন সাইট হতো তাহলে আপনাকে অনায়াসে জামাতী বলে ঠাউরানো যেতো! কিন্তু মুক্তমনা নিশ্চিতভাবে এমন কাউকে সদস্যপদ দিবে না বলেই আমরা জানি। কিন্তু জামাতের নিবন্ধন বাতিল, জামাত নিষিদ্ধের তোড়জোর- এই সময়ে আপনার ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পক্ষে পোষ্ট লেখা সত্যি কেমন ধন্দে ফেলে দিচ্ছে!
আপনি কি লিখেছেন আপনি বুঝেছেন? গোড়া মুসলিম, খ্রিস্টান, হিন্দু কি বিশ্বাস করে তাতে কি আসে যায়? ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু গণতান্ত্রিক রাজনীতি করার অধিকারের সুযোগে বেদের শাসন কায়েম শুরু করলে মসলিমসহ অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের গণতান্ত্রিক অধিকার বজায় থাকবে? ব্যক্তিগত বিশ্বাসকে রাজনীতিতে আনার পক্ষে আপনি যুক্তি দেখাচ্ছেন। সত্যি আশ্চর্য না হয়ে পারছি না! জনগনের ভোটে যেখানে নির্বাচনে জিতে পার্লামেন্ট যেতে হয় সেখানে কোত্থেকে “ঈশ্বর সকল ক্ষমতার উৎস” আসছে বুঝতে পারছি না। আপনি গণতন্ত্র বুঝেন, সবিনয়ে প্রশ্নটি করলাম।আপনি নিজেই লিখছেন, গণতন্ত্র কোন মানুষ বা দলের উপর একটা বিশ্বাস চাপিয়ে দিতে পারে না। অথচ এরা নিজেদের ব্যক্তিগত বিশ্বাস চাপিয়ে দিতে সদা তৎপর। আর আপনি এসেছেস তাদের হয়ে গণতান্ত্রিক অধিকারের ওকালতি করতে! আপনার উদ্দেশ্য মুটামুটি বুঝা গেছে। বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির অধিকারই নয় তারা যে যে মামার বাড়ির আবদার জানায় তার সবকটা গণতান্ত্রিক অধিকারের ধারায় এনে গণতন্ত্রকেই পুটু মারা ব্যবস্থা করা!
ধর্ম আর রাজনীতিকে আলাদা করার কথা বলা আপনাকে আমার সাজে না। শুধু বলবো, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চলতে পারে, যদি তারা তাদের কিতাবী আইন ও শাসনের দাবী ছাড়তে পারে। বাক স্বাধীনতা (যেখানে ধর্মের সমালোচনাও থাকবে), ব্যক্তি স্বাধীনতা, প্রচলিত আইনে আস্থা, নারী-পুরুষের সমঅধিকার, অসাম্প্রদায়িক নাগরিক ব্যবস্থা, রাষ্ট্রকে বিশেষ কোন ধর্মের বিশেষ পক্ষপাতিত্ব থেকে দূরে রাখা ইত্যাদি ব্যাপারগুলোকে মেনে নেয় তাহলেই তাদের অধিকার গণতান্ত্রিক হয়।
অনেক কিছুই জানতে পারলাম এমন একটা তথ্যবহুল পোস্টের জন্যে ধন্যবাদ!
তবে,
“অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে এই সংবিধান realistic এর চেয়ে idealistic ই বেশী”– একই সাথে আপনার লিখটাও আরও বেশী idealistic হয়ে গেছে realistic না হয়ে কেননা ‘পৃথিবীর কোন গনতান্ত্রিক দেশেই ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করার অধিকার নিষিদ্ধ করা হয় নি। ‘ এই কথাটা উন্নত বিশ্বের জন্যে গ্রহণযোগ্য হলেও আমাদের জন্যে কতটা বাস্তবসম্মত?
যতদিন জামাতি-হেফাজতিরা থাকবে ততদিন তারা বারবার ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে আবির্ভূত হবে! তাহলে সমাধান কি? সমাধান একটাই ৭২-এর সংবিধানে গিয়ে আপাতত ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা. অর্থাৎ শুরুতেই Realistic করার প্রতি একটা মোহ লক্ষ্য করলেও আপনি বারবার ইউরোপের বা উন্নত বিশ্বের উদাহরণ দিয়ে নিজের লিখার চেতনাকেই আকাশচুম্বী স্বপ্নের মুখে ফেলে দিলেন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন যে এখন নাচতে নেমে ঘোমটা টানার কোন সুযোগ নেই। দেশে একটাই বাস্তবতা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে জনকল্যানকর রাজনৈতিক আবহ সৃষ্টি করা। অতি উদার নৈতিক সংবিধান করা কতটা Realistic হবে আমার জানা নেই…
একটা কথায় মনে পরে এমন ক্ষেত্রে ‘কুত্তার পেটে ঘি সয় না…’