(ছবির কৃতজ্ঞতা – কাজী মাহবুব হাসান)
মূলতঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী এবং মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্ররোচনা এবং চাপে সরকারী সংস্থা বাংলাদেশ টেলকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)র পক্ষ থেকে দুটি জনপ্রিয় ব্লগে কিছু ব্লগারের ব্লগ বন্ধ সহ তাদের আনুষঙ্গিক তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে আমরা অবগত হয়েছি।
মুক্তমনা এ ব্যাপারে কোন চিঠি না পেলেও অনেক ব্লগারই এ ব্যাপারে মুক্তমনার ভূমিকা এবং পদক্ষেপের ব্যাপারে অবস্থান জানতে চেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে আমাদের ইমেইল করেছেন। এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। মুক্তমনা বরাবরই বাক স্বাধীনতার পক্ষে থেকেছে এবং ভবিষ্যতেও বাক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার জন্য সবসময় কাজ করে যাবে। সমাজকে এগিয়ে নেবার জন্য ব্লগে যে কোন ধরণের আলোচনা এবং সমালোচনাকে মুক্তমনা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। ধর্মীয় বা যে কোন অনুভূতির ছুতায় এই পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়া বন্ধের উদ্যোগ কোনভাবেই মুক্তমনা কাঙ্ক্ষিত বলে মনে করে না।
আরো একটি ব্যাপার এখানে পরিষ্কার করে বলা প্রয়োজন। মুক্তমনায় ব্লগারদের নাম, ইমেইল অ্যাড্রেস এবং পোস্ট কিংবা মন্তব্য সংক্রান্ত আইপি অ্যাড্রেস ছাড়া আর কোনো তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না। মুক্তমনার পক্ষ থেকে লেখক এবং পাঠক এবং শুভানুধ্যায়ীদের এ আশ্বাস দেয়া হচ্ছে যে, এ ব্লগে প্রদত্ত ব্লগারদের ব্যক্তিগত তথ্য কোনো অনুরোধ বা হুমকিতে উন্মুক্ত করা হবে না।
মুক্তমনা মূলতঃ মুক্তচিন্তক, যুক্তিবাদী এবং মানবতাবাদীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং পরিচালিত আন্তর্জালিক আলোচনা চক্র। জন্মলগ্ন থেকেই থেকেই মুক্তমনার বাংলা এবং ইংরেজি ব্লগ এবং ফোরাম বহু দেশের নাগরিকদের পাদচারণায় উদ্ভাসিত, এবং বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ ধ্যান ধারণার মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মুক্তমনার বিচরণ কেবল একটি দেশের পরিমণ্ডলে সীমাবদ্ধ নয়, এর অবকাঠামো বহুভাবেই আন্তর্জাতিক। ‘ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস’-এর আর্টিকেল-১৯ এ স্পষ্ট বলা আছে –
“Everyone has the right to freedom of opinion and expression; this right includes freedom to hold opinions without interference and to seek, receive and impart information and ideas through any media and regardless of frontiers.”
মুক্তমনা এ ক্ষেত্রে ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিক নিয়ম ও নীতিমালার উপর শ্রদ্ধাশীল থেকে ব্লগীয় নীতিমালার মাধ্যমে ব্লগ পরিচালনা করে বলে অঙ্গীকার করছে।
বিভিন্ন ব্লগ এবং পত্রিকায় প্রকাশিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট এবং প্রবন্ধ –
- বাংলাব্লগ নিয়ন্ত্রনে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রেস বিজ্ঞপ্তি (আমার ব্লগ)
- ব্লগারদের বাকস্বাধীনতায় চাই না হস্তক্ষেপ – অভিজিৎ রায়
- বাংলা ব্লগোস্ফেয়ারে BTRC-র হস্তক্ষেপ – মোহাম্মদ মুনিম
- বিটিআরসি এর সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে ব্লগার ভাবনা – বাউল
- মত প্রকাশের স্বাধীনতা সাংবিধানিক অধিকার – কবির য়াহমদ
- বিটিআরসির ব্লগার সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান বিষয়ে (সচলায়তন)
- বিটিআরসি’র ব্লগার তথ্য অনুসন্ধান বিষয়ে চতুর্মাত্রিকের অবস্থান
যারা ইসলাম ধর্মকে রক্ষা করতে চান, তাদের কাছে অনুরোধ তারা বার্মায় গিয়ে মুসলমানদের ও মসজিদ সমূহকে রক্ষা করুন।
সিরিয়ায় গিয়ে মুসলমানদের রক্ষা করুন।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনুন।
দয়া করে বাংলাদেশে ধর্মরক্ষার নামে জ্বালাও পোড়াও করে, সংখ্যা লঘুদের উপর অত্যাতাচার করে,হরতালের পর হরতাল আহবান করে আর দেশটাকে ধংশ করে দিবেন না।
দয়া করে বাংলাদেশটাকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে পরিণত করবেননা।
দয়া করে মানুষের ধর্মানুভূতিকে পূজী করে রাজনীতি করবেননা।
দেশটাকে একটু অগ্রসর হতে দিন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা,ব্যবসা বাণিজ্য,যাতায়াত ব্যবস্থা,সব ধংস করে দিয়েছেন।
আর ধংস জজ্ঞ করা একটু ক্ষান্ত দিন। দেশবাসীকে আল্লাহর ওয়াস্তে একটু শান্তিতে বসবাস করতে দিন।
জামাত এক হ্ত-পা ধরে টানছে বি এনপি আর অপর হাত-পা ধরে টানছে সরকার। ভয় নেই আদালতের রায়ের আগেই এতেই জামায়াতের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা দাঁড়াবে এদেশের সেক্যুলার জনসাধারনের, ওয়াহাবী ভাবধারার ভাগাভাগীতে। আজ এক পক্ষকে সামলাতেই যে মূল্য গুনতে হচ্ছে, বিটিআরসি নেমেছে ব্লগ নিয়ন্ত্রনে! তখন দু-পক্ষকে এ-জাতি সামলাবে কি করে!
সংযুক্ত:
বাংলা ব্লগের ওপর খড়গহস্ত বিটিআরসি, গুরুচণ্ডালি ডটকম।
(Y)
এই ইস্যু মনে হয় বেশ গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠছে কমেই। বিষন্নতার কথার সূত্র ধরে বলি; যদিও এটা ব্লগ জগত নিয়ন্ত্রনের যে পাঁয়তারা চলছে সেটার বিরুদ্ধে নয়।
বাক স্বাধীনতার অপব্যাবহারের ব্যাপারে কি করা যায়? সেটা কি বাংলা ব্লগগুলিতে হয় না?
বাক স্বাধীনতা এবং কোন অনুভূতিতে আঘাতের মাঝে ব্যালেন্স কিভাবে করা যেতে পারে? অনুগ্রহ করে শুধু অনুভূতির পরোয়া করি না এভাবে চিন্তা না করে আরেকটু গভীরভাবে চিন্তা করা দরকার।
দেরীতে হলে পোস্টটি স্টিকি করায় ধন্যবাদ।
জয় হোক! (Y)
অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ মুক্তমনা কে ! (F) (F) (F)
মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে দৃড় অবস্থানের জন্য মুক্তমনা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
তবে আমাদের সকলের ভুলে গেলে চলবে না স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছা চারিতা নয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানে যাচ্ছাতাই বলা নয়।এটা একবিংশ শতাব্দী তাই রাজনীতি/সমাজনীতির সামালোচনার মতো ধর্মের সমালোচনা করাটাও মত প্রকাশের স্বাধীনতারই একটা অংশ বলে আমি মনে করি। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, যুগযুগ ধরে প্রচলিত, কোটি কোটি মানুষের এ বিশ্বাসের (ভুল বা সঠিক যা`ই হোক না কেন) সমালোচনা করতে গিয়ে আমরা যেন মাত্রা ছাড়িয়ে না ফেলি।
@বিষন্নতা,
আগে জানতে চাই, অনুভুতি জিনিসটা কী? উদাহরণঃ
একজন ম্যাকডনাল্ডে বসে শুওরের বার্গার খাচ্ছে দেখে আপনার পেটানুভুতিতে আঘাত লাগলো, আপনি বমি করলেন, অথবা পার্কে কোন অভিষারে কেউ কারো গার্লফ্রেন্ডকে চুম্বন করতে দেখে আপনার ইসলামানুভুতিতে আঘাত লাগলো, আপনার কাপড় নষ্ট হলো। সে কি কারো অনুভুতিতে আঘাতে অপরাধী হলো?
আর-
যাচ্ছেতাই আর মাত্রা শব্দ দুটোর ব্যাখ্যা প্রয়োজন।
কোনটা যাচ্ছেতাই আর কোনটা মাত্রা অতিক্রম একটু বুঝায়ে বলেন। উত্তর পেলে, টার্ম বুঝতে পারলে আলোচনা করতে সুবিধে হয়।
উদাহরণঃ
১) গ্যালিলিও, ব্রুনো, মনসুর হাল্লাজ, হুমায়ুন আযাদ বাকস্বাধীনতার মাত্রা অতিক্রম করেছিলেন কি না?
২) দিনের শেষে সূর্য পঙ্কিল জলাশয়ে ডুবে বা ঈশ্বরের আরশের নিচে আশ্রয় গ্রহন করে, অথবা দুনিয়ার যাবতীয় বস্তুসামগ্রী তোমাদের উপভোগ্য সম্পদ, তম্মধ্যে শ্রেষ্ট সম্পদ তোমাদের সতী নারী, মুহাম্মদের এই উক্তিদ্বয় বাকস্বাধীনতার মাত্রা অতিক্রম করে কি না?
@আকাশ মালিক,
২ নং উদাহরন কি জুতসই হল?
– দিনের শেষে সূর্য পঙ্কিল জলাশয়ে ডুবে বা ঈশ্বরের আরশের নিচে আশ্রয় গ্রহন করে – এই উক্তিগুলির সাথে বাক স্বাধীনতার সঙ্ঘাতের প্রশ্ন কেন? এই উক্তিগুলি বিজ্ঞান সম্মত কিনা তা নিয়ে হয়ত পরিস্থিতি সাপেক্ষে প্রশ্ন হতে পারে।
অবৈজ্ঞানিক উক্তি মনে হয় না বাক স্বাধীনতা বিতর্কের আওতায় পড়ে বলে।
@আদিল মাহমুদ,
আচ্ছা একটু বেজুইতই হলো মানলাম কিন্তু বিজ্ঞানের ক্লাসে যদি কোন ছাত্র কথাটা তোলে তখন এর সমাধানটা কী রকম হতে পারে? সীমা বা লিমিটেশনটা কোথায়? ধর্মগ্রন্থের কোন আদেশ বিধান নির্দেশ যদি কারো জন্যে অপমান বোধের কারণ হয়, সে কি তা প্রকাশ করতে পারবে? মনুসংহিতা ও হাদিসে প্রচুর নারী অবমাননাকর উক্তি আছে, নারী এ সবকে অস্বীকার বা এর বিরোদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারবে কি না? করলে সেটা কি ধর্মের প্রতি ঘৃণা, বা ধর্ম অবমাননা হবে? আমি একজন নারী, ধর্ম বললো- আমার উপর পুরুষের কর্তৃত্ব থাকবে, আমি অধম পুরুষ উত্তম, আমার বুদ্ধী কম পুরুষের বুদ্ধী বেশী, আমার জাত নরকবাসী হবে বেশী পুরুষজাত স্বর্গবাসী হবে বেশী, আমি অচ্ছুত, নিকৃষ্ট, নাপাক, গাভী সমতুল্য, অন্যান্য ভোগ্য সম্পদের মত এক সম্পদ, এ সব শুনে আমি অপমানিত বোধ করিনা? আমার নারীত্ব আঘাত প্রাপ্ত হয় না? এ সবই তো হয়, হচ্ছে প্রকাশ্যে আমার চোখের সামনে। আমাকে অপমান করার কোন লিমিটেশন নাই, আমি প্রতিবাদ করতে গেলে সীমা নির্ধারণ কেন?
কেন শুধুই একতরফা উপদেশ? একতরফা উপদেশ যে অন্য পক্ষের সীমাহীন অধিকার ইঙ্গীত করে। থাকুক সীমাহীন অধিকার। ডারউইনকে বানানো হয় বিকৃত চেহারার বানর, রবীন্দ্রনাথ, কার্ল মার্ক্সের দাড়ি নিয়ে নোংরামি টানাটানি করা হয়, গালি দেয়া হয় কুইন ভিক্টোরিয়াকে, যীশুকে মেরীর জারজ সন্তান বলা হয়, কারো ধর্মানুভুতি, শ্রদ্ধানুভুতি, ভালবাসানুভুতি আঘাত প্রাপ্ত হয়না, কোথাও এর প্রতিবাদে বোমা ফুটেনা, কারো গলা কাটা যায় না, শুধু মুসলমানের বেলা ব্যতিক্রম কেন? এখানে এসেই হাজার বছরের পুরনো বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমার ভিতরে থেকে কথা বলতে হবে কেন? দুনিয়ার বিলিয়ন মানুষের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিজ্ঞান কি বলবে- সূর্য পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘুরে? আপনি আমাকে খুব খারাপ বিরাট বড় একটা গালি দিলেন আমি তা শুনে হয়তো সম পরিমাণ একটা গালি দিতে পারি অথবা অবজ্ঞা করতে পারি। এ জন্যে আপনার কল্লা কাটতে উদ্যত হবো কেন? অন্যান্য ধর্মের মানুষের ধর্মানুভুতি বিজ্ঞানের এন্টি অনুভুতি সেবন করে সহনশীলতা অর্জন করতে পারলে মুসলমান কেন পারবে না?
আমি সত্যিই কনফিউজড। জানার জন্যেই বারবার বলেছি সীমারেখাটা কোথায়?
@আকাশ মালিক,
আমিও জানতে চাই সীমারেখাটা কোথায়, কোন গাইড লাইনে মেনে জানা যাবে যে ধর্মানুভূতিতে আঘাত করা হল না বা হয়েছে?
নবী, রসূল ওনাদের অশ্রাব্য গালিগালাজ করাটা বোধগম্য, এটাও মানতে পারলাম যে বংগবন্ধু, জিয়া বা খালেদা হাসিনা ডারউইন ডকিন্স…এদের যা ইচ্ছে গালি দেওয়া যাবে কিন্তু নবী রসূলদের গালি দেওয়া যাবে না। এতে কনফিউশন নেই।
আজকে যদি দেশের সম্মানিত আলেম ওলামা মাশায়েখগন স্ত্রী পেটানোর ধর্মীয় অধিকার আইন আকারে পাশ করার দাবী করেন (অন্যান্য কিছু দেশে তেমন আইন আছে) তবে আমাদের উচিত কি হবে? নীরবে মেনে নেওয়া কারন এই প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে কথা বললে ধর্ম বিরোধীতা হয়ে যাবে? তথাকথিত ধর্মবিরোধীতা ছাড়া কিভাবে এই প্রস্তাবনার বিরোধীতা করা সম্ভব?
@আদিল মাহমুদ,
আরো একটা কথা, যেমন ধরুন আপনি সব সময় চেষ্টা করেছেন ফেয়ার ও ব্যালেন্সড বা ক্রিটিক্যাল আলোচনা সমালোচনা করতে, কিন্তু সকলকে খুশী করতে পারলেন কি? একদল লোক তো নাস্তিক মুরতাদ কোন কিছু বলতে বাকী রাখে নাই। আসল কথা আমি মনে করি সহনশীলতা, পরমত সহিষ্ণুতা, অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধা অর্জনই এর সমাধান হতে পারে। এই জিনিসটা যে সকল মুসলমানের মধ্যে নেই আমি তা মোটেই মনে করিনা। মুসলমানদের সাংস্কৃতিক সমাজে, বাউল শিল্পীদের মাঝে, সুফীবাদীদের মাঝে প্রচুর মানুষ আছেন যাদের ধর্মানুভুতি কোনভাবেই আঘাতপ্রাপ্ত হয় না। তারা মনে করেন, তোমার পাপ তোমার পুণ্য, তোমার কর্ম তোমার ফল, বিচারের মালিক আমি না। ব্যস, তাহলে তো আর কোন সমস্যাই থাকেনা।
জালালুদ্দীন রুমীর একটি প্রসিদ্ধ কবিতা শুনাই। ফার্সিতে জানতাম এখন সম্পূর্ণ ভুলে গেছি-
“Come, come, whoever you are.
Wanderer, worshiper, lover of leaving.
It doesn’t matter.
Ours is not a caravan of despair.
come, even if you have broken your vows a thousand times.
Come, yet again , come , come.”
@আকাশ মালিক, কারো মুজিবানুভুতিতে আঘাত করার স্বাধীনতার ব্যাপারে আপনার মত কি?
@সফিক,
বেশ, খুব পছন্দ লাগলো আপনার প্রশ্নটি। উত্তরটা আসলে উপরে আদিল মাহমুদকে একটি মন্তব্যে বলে দিয়েছি। ইগনোর করবো, দ্বিমত পোষণ করবো অথবা তর্ক করে যাবো আমার সাধ্যানুযায়ী, কখনও অস্ত্র হাতে কাউকে খুন করতে উদ্যত হবোনা। মুজিবকে একদম ন্যাংটা কইরা ছাড়েন, হুমায়ুন আযাদের চেয়েও কঠিন ভাষায়। মুজিবের ৭১ পূর্ববর্তি ও পরবর্তি রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে আহমেদ শরিফ, হুমায়ুন আযাদ ও আহমেদ ছফার প্রচুর সমালোচনা পড়েছি, কিছুটা মেনে নিয়েছি আবার কিছুটার সাথে একমতও হয়নি।
যেখানে ঈশ্বরানুভুতিই নেই, মুজিবানুভুতি থাকবে কী ভাবে? তবে ছোটবেলা মুহা-উম্মদানুভুতি ছিল বেশ প্রকটভাবেই। তার প্রেমে দোকান-পাট ভেঙ্গেছি, আর আজ তাই তার সমালোচনা করে কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত করার চেষ্টা করি। মুহাম্মদ তার সাথে দ্বিমত পোষণকারীকে খুন করার নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন, বড় হয়ে বুঝতে পেরেছি সেটা অন্যায়।
@আকাশ মালিক,উত্তরের জন্যে ধন্যবাদ। স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে তীব্র ভালবাসা ও শ্রদ্ধা করার জন্যে যে কোনো বাংলাদেশীর যথেষ্ট যুক্তি সংগত কারন রয়েছে। কিন্তু তাই বলে তার সমালোচনাকারী, এমনকি ব্যংগকারীরও শাস্তি নির্যাতন কামনা করা কোনো গনতন্ত্রীর পক্ষে সমীচিন নয়।
এই উপলদ্ধি কিন্তু ক্ষমতায় আসীন আওয়ামী লীগ কিংবা তার অনেক সমর্থকের মধ্যে নেই। মুজিবানুভুতি আহত করা সংক্রান্ত আইন অনেক আগেই আইনের বইতে লিপিবদ্ধ হয়েছে এবং তার প্রয়োগও হয়েছে।
@সফিক,
জানি, এই আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নেই। একদিন এখানেই বলেছিলাম এই আওয়ামী লীগ ভোটের প্রয়োজনে নাম বদল করে আওয়ামী মুসলিম লীগ হতে একটুও দ্বিধাবোধ করবেনা। জামাত যখন ভাষণের প্রারম্ভে নাহমাদুহু বলে, বি এন পি যখন বিসমিল্লাহ বলে তখন তা নরম্যাল বা স্বাভাবিক মানানসই মনে হয়। আওয়ামী লীগ যখন বিসমিল্লাহ বলে বক্তৃতা শুরু করে তখন মনে হয় এটা পুরোপুরি বিশ্রী বাদরামি ছাড়া আর কিছু নয়। তখ শেখ মুজিবের কথা মনে পড়ে, ভায়েরা আমার বলে শুরু আর জয় বাংলা দিয়ে শেষ। এখন বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু দোয়া দিয়ে শেষ। যতদিন এই ভন্ডামী থাকবে ততদিন বাংলার আকাশে সুখ-সূর্য উদিত হবেনা।
@আকাশ মালিক,
আমি ব্যালেন্সড/ফেয়ার আলোচনা করি সকলকে সুখী করার মহতী উদ্যোগের অংশ হিশেবে নয়, যৌক্তিক আলোচনার জন্য। সকলকে খুশী করে চলার মতলব থাকলে ব্লগে সাহিত্য চর্চা শুরু করতে হবে। আমার জাতীয় রাজনীতি বা ব্লগীয় রাজনীতি কিছুতেই জড়াবার ইচ্ছে নেই, জনপ্রিয়তার পরোয়া তেমন করি না, নইলে চরম জনপ্রিয়তার মাথায় নীরবে কোন ব্লগ ছেড়ে আসতাম না। জনপ্রিয়তার চেয়ে সূস্থ কার্যকরী আলোচনা আমার অনেক পছন্দীয়।
আমাকে যেমন কিছু কট্টর ধার্মিক চরম অপছন্দ করে তেমনি সাধারন ধার্মিকদের এক বড় অংশই আবার কোন কারনে বেশ পছন্দ করে, এটা প্রথম দলকে আরো মানসিক পীড়া দেয়। ফলাফল হল আমার পশ্চাত দেশে দিনরাত লেগে থাকতে হয়।
@আদিল মাহমুদ,
আজকে যদি দেশের সম্মানিত আলেম ওলামা মাশায়েখগন স্ত্রী পেটানোর ধর্মীয় অধিকার আইন আকারে পাশ করার দাবী করেন (অন্যান্য কিছু দেশে তেমন আইন আছে) তবে আমাদের উচিত কি হবে? নীরবে মেনে নেওয়া কারন এই প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে কথা বললে ধর্ম বিরোধীতা হয়ে যাবে? তথাকথিত ধর্মবিরোধীতা ছাড়া কিভাবে এই প্রস্তাবনার বিরোধীতা করা সম্ভব?
:-O :lotpot: (*)
সরকারের স্ববিরোধী মনোভাব সত্যি দু;খজনক। মূল্যবান পোষ্টের জন্যে মুক্তমনা কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ।ৃ
@আফরোজা আলম,
তোমার নাম সহ বেশ কিছু ব্লগারের নাম যে সংগ্রামে উঠে গেল। কোরবানীর চাঁদ উঠলো না সেলেব্রিটি হলাম? নাস্তিক কোরবানীর কসাইখানা পল্টন ময়দান না সোহরায়ার্দি উদ্যান হবে?
একটু সাবধানে থেকো আফরোজা।
@আকাশ মালিক,
তারা যদি নাম নিয়ে আনন্দিত হয়ে থাকে, তবে বলার কী আছে? আমি এমন কিছুই করিনি।
যাক কোরবানী হতে
আপত্তি নেই, তবে আগে কারণ জানতে চাই।
বাক স্বাধীনতার এত কী বিশাল অপরাধ? সরকার কান না দেখে চিলের পেছনে দৌড়াচ্ছে।
দৈনিক সংগ্রাম এ আমি ও দেখলাম, আমার নাম- হাসি পেলো। সাবধান আর কী ভাই? এ দেশে বাইরে গেলে ঘরে ফেরার নিশ্চয়তা নাই আর কী সাবধান হব। যা ভাগ্যে আছে হবে।
বাংলাদেশ টেলকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের এ সব পদক্ষেপ ধর্মের অন্ন্ধ ভক্তদের সামলানোর কৌশল ‘মাত্র’। হয়তোবা মাত্রাতিরিক্ত। তবে বেশিদিন এ সব করে সত্য চাপা রাখতে পারবে না। তাছাড়া এর মাধ্যমে জামাতীদের সাইট ও তো নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে। তা রাখছে কি?
একদিকে সরকার মৌলবাদ বিরোধী কঠোর অবস্থানের বদলে ১৯৭১ এর মতো লুঙ্গী খুলে ব্লগারদের মুসলমানিত্ব পরীক্ষা করতে মাঠে নেমেছে।
অন্যদিকে এই সুযোগে বিডিনিউজ প্রধান তৌফিক ইমরোজ খালিদীর মতো মিডিয়া ড্রাগন রাতারাতি ভোল পাল্টেছেন। শাহবাগ আন্দোলন- স্যোশাল মিডিয়া–একাত্তরের চেতনা–গণতন্ত্র — ইত্যাদি মহামহা বিষয় উদ্ধারে টেবিল চাপড়ে তিনি আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তুলেছেন।
অথচ এই একই ইন্টারনেট সর্দার মাত্র বছর খানেক আগেই সরকারি নীতিমালায় বাংলা ব্লগকে বেঁধে রাখার পক্ষে লম্বা-চওড়া ফরমান জারি করেছিলেন। নূরানী সুরত জেল্লা ছড়ায় বেশ। চাপাবাজিতেও।
http://www.amarblog.com/Biplob-Rahman/posts/146255
কিন্তু আফসোস… শেষ পর্যন্ত ল্যাঞ্জা লুকানো যায় না কিছুতেই। অতএব সাধু সাবধান।। 😛
একজন সাধারন পাবলিকের মুক্তমনা পড়লে মনে হবে ওয়েব সাইটি নাস্তিকদের । আস্তিক বা নাস্তিকতা ব্যক্তিগত
বিষয়, যা ওয়েব সাইটে আসা উচিত নয় ।মুক্তমনা একটি প্রগতিশীল ওয়েব সাইট । প্রগতিশীলের অর্থই হলো যুক্তিবাদী,
মানবতাবাদী, তবে তাকে স্থান, কাল ও অবস্থা ভেদে বক্তব্য দিতে হবে । বর্তমানের বক্তব্য হলো রাষ্ট্র থেকে ধর্ম
পৃথক-করন এবং যার যার ধর্ম ও বিশ্বাস তার তার ।
ভিন্ন মতের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী ।
@আ, হা, মহিউদ্দীন,
ভিন্ন মতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার প্রয়োজন নেই, ভিন্ন মতের প্রকাশ আপনার অধিকার; মুক্তমনা সেই অধিকার সমুন্নত রাখবে বলেই আমার বিশ্বাস।
ধর্ম বিশ্বাস একজন মানুষের ব্যক্তিগত বিষয় হলেও যখন তা ধর্মপালনকারীর ঘর ছেড়ে আশেপাশের মানুষের জীবনাচারে অযাচিত হস্তক্ষেপ করে, ক্ষেত্র বিশেষে সাধারণ মানুষের জীবন নাশের কারণ ঘটায়, তখন বহির্জাল বা অন্তর্জাল সবখানেই তার কঠোর সমালোচনার প্রয়োজন আছে বৈকি।
@আ, হা, মহিউদ্দীন,
অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের বিপরীতে কথা বলার মত গুটি কয় সাইটগুলোর একটি। এটাকে ‘নাস্তিকদের সাইট’ বলে কেউ অপছন্দ করলে করার কিছু নেই। সবার পছন্দ নিয়ে কাজ করার জন্য মুক্তমনা তৈরি হয়নি। মুক্তমনা তার উদ্দেশ্য এবং মিশনের প্রতি সৎ। বাইরের বিশ্বে রিচার্ডডকিন্স ডট নেট, সেকুলারহিউম্যানিজম ডট অর্গ, কিংবা স্কেপ্টিক ডট কম এর মত সাইট যেমন আছে, বাংলায় মুক্তমনার মত সাইট থাকার প্রয়োজনীয়তা ছিল। সে উদ্দেশ্যেই এটি করা হয়েছে। এখানে হুগো শাভেজ মারা গেলে তার কর্মকাণ্ড নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে গভীর আলোচনা হয়, যা অন্য কোথাও হয় না। জামাল নজরুল ইসলামের কাজের মূল্যায়ন করা হয় তার বই এবং পেপার উদ্ধৃত করে। এটা একটা নির্ভরযোগ্য এবং গঠনমূলক সাইট বলেই ড. ইরতিশাদ আহমদ, ড. মীজান রহমান কিংবা ড. অজয় রায়ের মত একাডেমিক এলাকায় বিদগ্ধ ব্যক্তিরা নিয়মিত লেখেন যা আর কোন ব্লগে পাওয়া যাবে না। আপনিও বার বার মুক্তমনা থেকে বিতারিত হয়েও ঘুরে ফিরে আসেন, কারণ মুক্তমনার একটা চার্ম আছে, নয় কি? দয়া করে সেটা বিনাশের চেষ্টা করবেন না।
আপনি যদি মনে করেন মার্ক্সিস্টরা নাস্তিকতার চর্চা করে না বা ব্যক্তিজীবনের বাইরে আনে না, তবে ভুল করবেন। আপনার কথা সত্য হলে Bhagat Singh সেই ত্রিশের দশকেই মহামূল্যবান গ্রন্থ ‘Why I am an Atheist’ লিখতেন না। কাজেই দেখা যাচ্ছে, মার্কিস্টরাও যখন প্রয়োজন মনে করেছে নাস্তিকতাকে সামনে নিয়ে এসেছে। কাজেই কেবল নিজের পছন্দের ছকে ফেলে ভাঙ্গা রেকর্ড আর নাই বা বাজালেন।
আপনার অনেক পছন্দের সাথে মুক্তমনা মিলবে না। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা উভয়ের পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারে বরং শদ্ধাশীল থাকি।
@অভি দা,
(Y)
@অভিজিৎ, (Y)
@আ, হা, মহিউদ্দীন,
– ধর্ম সংক্রান্ত সকল সাইট তাহলে বন্ধ করে দেওয়া দরকার মনে করেন? বুদ্ধি খারাপ না, কারন নাস্তিকতা বলে কোন দর্শন বা জীবন পদ্ধুতি নেই। আস্তিকতার অভাবই নাস্তিকতা। কাজেই আপনার চিন্তাধারায় ধর্ম সংক্রান্ত সকল ব্লগীয় ক্যাঁচাল মনে হয় দূর করা সম্ভব।
@আ, হা, মহিউদ্দীন,
আমার কিন্তু এমনটি মনে হয় না। বরং মনে হয় প্রখর প্রতিভাবানদের বসতঘর। তা নাহলে যুক্তি তর্কের এমন শালীন সমাবেশ আর কোথাও আমি দেখিনি। এখানে এলেই আমি কিছু শিখি। মনটা খুলে যায় আরোও।
নাস্তিকতা কোন ধর্ম নয়, অন্ধ বিশ্বাসের বিরোধিতা ও যুক্তিবাদিতাই হচ্ছে নাস্তিকতা । একজন যুক্তিবাদী হিসেবে নাস্তিকতার জন্য গর্ববোধ করি । মনে রাখতে হবে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মানবাধিকার, লিঙ্গসমতা, সমানাধিকার, ব্যক্তিস্বাধিনতা, বাকস্বাধিনতা, শিশু অধিকার, যুক্তিভিত্তিক আইনের শাসন নাস্তিকরা না হলে পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারতো না । এতোদিনে আস্তিকেরা মারামারি করে পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিতো । মুসলিমদের মনে রাখতে হবে অযোধ্যা-মথুরা-বেনারসের মাসজিদ-মন্দির প্রসঙ্গে নাস্তিক ও সেক্যুলাররা পাশে না দাঁড়ালে কোন ইমাম মাহদি কিংবা ফারিশ্তা এসে তাঁদের পাশে দাঁড়াতো না । কোন মুসলিম মেজরিটি দেশে তাঁরা উন্মুক্ত বাকস্বাধিনতা ও সেক্যুলারিজম পছন্দ করেন না অথচ ভারতে আর.এস.এস.-এর লাথিঝাঁটা খেলে সেই সেক্যুলার ও নাস্তিকদেরই শরণাপন্ন হন । এমন দ্বৈত নীতি কেনো ?
ইসলামপন্থীরা গণহত্যা ও গণধর্ষণকে জিহাদের নামে বৈধতা দেয় । এটা যুগে যুগে চলে আসছে । মুসলিমরা বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্ (অথবা বৃহত্তম?) আইকনোক্লাস্ট জনগোষ্ঠী । তাছাড়া এঁরা ইসলামি রাষ্ট্রে মুসলিম পুরুষ ব্যতীত অন্যদের যুক্তিপূর্ণ ও সঠিক মর্যাদা দেয় না । অন্ধবিশ্বাস কখনোই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারে না । যুক্তিবাদিতাই ন্যায় প্রতিষ্ঠার অবলম্বন ।
মনে রাখতে হবে সমস্ত পৃথিবীতে (মুসলিম মেজরিটি দেশের বাইরে) ইসিলামপন্থীরা সবচেয়ে ঘৃণিত, সেসব জায়গায় এথিস্ট এবং সেক্যুলারদের কারণে এবং সেক্যুলার আইনের কারণে সাধারণ মুসলমানরা নৈতিক সমর্থন পান । কিন্তু মুসলিম মেজরিটি দেশে এথিস্ট ও সেক্যুলারদের ওপর দমননীতি চললে … The last sigh of a Moor – আমরা তাঁদের পাশে দাঁড়াবো না (মুসলিম বিতাড়ন ইতিহাসে নতুন নয়) ।
বি:দ্র: নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি, রেপিজম, পিডোফিলিয়া, জেনোসাইড, লুটার – এসব শব্দ কি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হবে ? সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বললে মৃত্যুদণ্ড কায়েম হবে ?
ওরা আমার “ব্লগের” ভাষা কাইড়া নিবার চায়!
ব্লগারদের আশ্বস্ত করার জন্য ধন্যবাদ। (F)
মুক্তি মনার বিরুদ্ধে হয়তো চাপ আসবে না। কিন্তু যাদের কাছে বিটিআরসির চাপ আসবে তারা অনেকেই নতি স্বীকার করবে বলেই মনে হচ্ছে।