দেশে একদিকে যুদ্ধপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবীতে অনলাইন ব্লগাররা আন্দোলন করেছেন; এবং আরেকদিকে নাস্তিক/মুরতাদ, ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগারদের শাস্তির দাবীতে সমান্তরালে আরেকটি আন্দোলন চালাচ্ছেন দেশের নামকরা আলেমগণ এবং ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলি। এই টানাপোড়েনে জামাত শিবির দেখালো স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের সবচেয়ে চরম সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের উদাহরন। আন্দোলনরত আলেমদের দাবীমতে শাহবাগের আন্দোলন আসলে যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবীর আড়ালে নাস্তিক এবং বামপন্থী লোকজনের ইসলামের বিরুদ্ধে এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র। শাহবাগের সাথে জড়িত নেতৃস্থানীয় ব্লগার, এমনকি যোগদানকারীরাও সকলে ওনাদের মতে ঘৃন্য নাস্তিক যাদের সাথে এমনকি ওনারা আলোচনাতেও বসতে রাজী নন। ওনাদের এমন ধারনার মূল কারন হিসেবে আপাত চোখে নিহত ব্লগার রাজীবের কিছু ইসলাম বিদ্বেষী লেখালেখিই টার্নিং পয়েন্ট বলে ধারনা করা হয়। মূল্যবোধগত পার্থক্যর কারনে আম জনতার এক একজনার কাছে এক একটি আন্দোলন গুরুত্বপূর্ন, আবার অনেকে আছেন দুই ধারার আন্দোলনেরই সমর্থক।
শাহবাগ আন্দোলনের স্বপক্ষেরও অধিকাংশই মনে করছেন যে নিহত রাজীবের লিখিত ইসলাম বিদ্বেষী কার্যক্রম কিছু ডানপন্থী মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রকাশ হবার কারনেই দেশের আলেম সমাজ এবং ইসলামী দলগুলি মাঠে নেমেছে যা প্রকারান্তে জামাতের পক্ষে গিয়েছে। এটা কতটা সঠিক তা আলোচনা করা দরকার। অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম আন্দোলনকারী আলেমদের অন্যতম বড় প্ল্যাটফর্ম, যার নেতা প্রখ্যাত আলেম আল্লামা শাহ আহমেদ শাফি, মূলতঃ উনিই আলেমদের বর্তমান আন্দোলন সংগঠিত করেছেন এমন প্রতীয়মান হয়। ওনারা একাধিকবার বলেছেন যে যুদ্ধপরাধীদের বিচার ইস্যু নিয়ে ওনাদের কোন আপত্তি নেই, আদালতেই তার ফয়সালা হবে, জামাত শিবিরের সাথে ওনাদের কোন সম্পর্ক তো নেইই এমনকি অনেকে জামাতকে ধর্মীয় কারনেই অত্যন্ত অপছন্দ করেন। ওনাদের মূল দাবী যা সেটা হল ওনাদের ভাষায় নাস্তিক/মুরতাদ ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগার যারা মহানবী সম্পর্কে অবমাননাকর উক্তি ব্লগে করেছে তাদের শাস্তির, যা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে রাজীবের মৃত্যুর পরে। কথা হল যে মৃত রাজীবকে নিয়ে এমন টানাটানি তার মৃত্যুর আগে ওনার বা হেফাজতে ইসলামের ভূমিকা কেমন বা কতটা নিরপেক্ষ ছিল? ওনারা কি আসলেই রাজীবের মৃত্যুর পরেই ক্রোধান্বিত হয়ে মাঠে নেমেছেন, নইলে নামতেন না? শাহবাগ আন্দোলন বয়া যুদ্ধপরাধীদের বিচার সম্পর্কে রাজীবের মৃত্যুর আগে ওনাদের দৃষ্টিভংগী কেমন ছিল?
সামান্য ঘাটাঘাটি করে দেখতে পাই যে মাননীয় আল্লামা শাফি ১৫ই ফেব্রুয়ারী ওনার মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিলে বিবৃতি দিয়েছেন “ইসলামের দুশমনরা তরুণ সমাজকে ইসলামের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে : আল্লামা শফী ”। শাহবাগ আন্দোলন মাননীয় আল্লামা শাফি কি চোখে দেখে এসেছেন তা সংবাদ শিরোনামই বলে দেয়, বিস্তারিত পাঠ করলে ওনার আপত্তির কারনগুলি পরিষ্কার হয় যেগুলি আলোচনা নিষ্প্রয়োযন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল ব্লগার রাজীব কিন্তু তখনো বেঁচে, রাজীব খুন হয় একই ১৫ই ফেব্রুয়ারী রাতে, তার নামে নানান ইসলাম বিদ্বেষী লেখালেখি আলোচনায় আসে আরো ২/৩ দিন পরে। কাজেই পরিষ্কার দেখা যায় যে আল্লামা শাফি আন্দোলনকে রাজীবের মৃত্যুর আগ থেকেই ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখে এসেছেন, প্রবল ভাবে বিরোধীতা করে এসেছেন। তার হেফাজতে ইসলাম দলের নেতারা আরো বেশ কিছু আলেমসহ রাজীব হত্যার ৩ দিন আগেও শাহবাগ আন্দোলন ইসলাম বিরোধী অপশক্তির আষ্ফালন বলে রণ হুংকার ছেড়েছেন। জামাতের সাথে সম্পর্ক বিহীন আল্লামা শাফি সাঈদী ন্যায় বিচার পায়নি এই অভিমত ব্যাক্ত করলেও জামাত শিবিরের দেশব্যাপী ভয়াবহ অব্যাহত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ওনাকে এখনো কিছু বলতে শোনা যায়নি। হেফাজতে ইসলাম দলের নেতারা আরো বেশ কিছু আলেমসহ রাজীব হত্যার ৩ দিন আগেও শাহবাগ আন্দোলন ইসলাম বিরোধী অপশক্তির আষ্ফালন বলে রণ হুংকার ছেড়েছেন । আন্দোলনকারীরা হেফাজতে ইসলামের ভাষায় ‘সাজানো নাটকের নট-নটি’। নাস্তিক রাজীবের কারনেই আলেমগন খেপেছেন এই তত্ত্ব কতটা বাস্তবসম্মত বলে মনে হয়? রাজীবের মৃত্যুর আগে থেকেই কি আল্লামা শাফি ও হেফাজতে ইসলাম প্রকাশ্যেই শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছিলেন না, উষ্কানিমূলক নানান অপমানকর বানী ছাড়ছিলেন না? অন্যান্য হাজার হাজার আলেমের (নয়া দিগন্তের ভাষায়) সাঈদীর মুক্তি দাবী করে আরো আগে জানানো দাবীর কথা নাহয় বাদই থাকল।
শাহবাগ আন্দোলনের বিরোধীতাকারি দলে আরো যোগ দিয়েছেন আরো বেশ কিছু ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল যাদের মাঝে আছেন বেশ ক’জন বিতর্কিত ব্যাক্তিত্ব যাদের বিরুদ্ধে ’৭১ সালে পাক বাহিনীর দালালির প্রমান আছে, বর্তমান সময়ে জামাত শিবিরের হয়ে কাজ করার অভিযোগ আগে থেকেই ছিল, প্রমান আছে নিষিদ্ধ হওয়া জংগী সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার বা পৃষ্ঠপোষকতা করার।
হেফাজতে ইসলামের সাথে একই মঞ্চে আন্দোলনরত সমমনা ১২ দলীয় জোটে আছেন নেজামে ইসলামী পার্টির (’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীতাকারি একটি দল) মুফতি ইজহারুল ইসলাম যিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত জংগী দল হরকতুল জিহাদের সাথে সম্পৃক্ততার কারনে বেশ ক’বার গ্রেফতার হয়েছেন, তার পুত্রকেও পাকিস্তানের জংগী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার কিছু সদস্যর সাথে ২০০৯ সালে গ্রেফতার করা হয়েছিল। উনি এখন যুদ্ধপরাধের থেকে ধর্মঅপরাধ ডবল শাস্তিযোগ্য ফতোয়া দিচ্ছেন এতে অবাক হবার তেমন কিছু নেই। সে কারনেই হয়ত আর রাখঢাকের পরোয়া না করে সরাসরি “‘মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে’ ” দৃপ্ত ঘোষনা দিচ্ছেন। তার দলের মহাসচিব অবশ্য সে দাবী একবার অস্বীকার করেছেন ব্যাক্তিগত অভিমত বলে।
আলেমদের আন্দোলনের আরেকজন গুরুত্বপূর্ন নেতা হিশেবে আবির্ভূত হয়েছেন আরেকজন বিশিষ্ট ব্যাক্তি মাওলানা মহিউদ্দিন খান, যাকে ইসলামে অগাধ পান্ডিত্যের কারনে ‘আলেমে দ্বীন’ বলে অভিহিত করা হয়। উনি মাসিক মদীনা নামক এক বিপুল জনপ্রিয় ইসলামী পত্রিকা প্রায় অর্ধশতাব্দী কাল ব্যাপী প্রকাশ করে আসছেন, বহু ইসলামী জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থের রচয়িতা। এই পত্রিকা আমার নিজের পরিচিত মহলেও অনেকে নিয়মিত সাবস্ক্রাইব করেন। এই আলেমে দ্বীন সাহেব বর্তমানে সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি ও রাবেতা আলম আল ইসলামীর স্থায়ী সদস্য, জমিয়াতুল ওলামায়ে ইসলাম নামের আর এক স্বাধীনতা বিরোধী দলেরও সভাপতি। উনি নিষিদ্ধ ঘোষিত জংগী সংগঠন হরকতুল জিহাদ (হুজি) দলের এডভাইজার ছিলেন বলে কড়া অভিযোগ আছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারী হুজি নেতা মুফতি হান্নানকে ছাড়াতে তিনি মেলা তদবির করেছিলেন। উনি বাংলা ভাইদের কার্যকলাপও ভাল কাজ হিশেবে গণ্য করে মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন । এতে বেজায় গোস্ম্যা করে এরপর উনি সাপ্তাহিক ২০০০ এর বিরুদ্ধে উকিল নোটিস দেন। সাপ্তাহিক ২০০০ মুফতি হান্নান ওনার মদিনা পত্রিকা অফিস কক্ষে ওনার সাথে বৈঠক করছে এমন ছবি সহ জবাব দেবার পর সংগত কারনেই আর উচ্চবাচ্য করেননি। ২০০৫ সালে উনি আজকের নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবুত তাহরির সাথেও যোগ দিয়েছিলেন। এই নরম দিলের আলেম সাহেব আল বদর সর্দার নিজামী এবং সাঈদীর গ্রেফতারের সংবাদে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। । ’৭১ সালে উনি ময়মনসিং এ রাজাকার দলের সাথে যুক্ত ছিলেন এই অভিযোগে ২০০৯ সালে ওনার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল।
আন্দোলনরত আলেমদের দলে আরেকজন নেতা আছেন খেলাফত মজলিশ দলের মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক যিনি ছিলেন ‘৭১ সালে পাক তাবেদার মালেক মন্ত্রীসভার একজন সদস্য। “একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়” বইতে সসম্মানে এই বিশিষ্ট আলেম সাহেবের নাম আছে। নাস্তিক মুরতাদ ব্লগারদের শাস্তি দাবীদার শীর্ষ আলেমদের মাঝে আরো দুজন প্রখ্যাত আলেম জৈনপুরী পীর এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ও খেলাফত আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ্জী হুজুর (একজন মূখ্য স্বাধীনতা বিরোধী) পুত্র আহমদউল্লাহ আশরাফও হুজির সাথে জড়িত ছিলেন ।
আন্দোলনরত ১২ দল (আহবায়ক উপরে বর্নিত মাওলানা মহিউদ্দিন খান) ও হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত মজলিশ, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলামী পার্টি জামাতের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, যুদ্ধপরাধীদের বিচারে তাদের কোনই আপত্তি নেই বলে চললেও তাই সংগত কারনেই প্রশ্ন উঠছে। যায় যায় দিনের খবর, হেফাজত ও ১২ দলের আড়ালে জামায়াত-হরকাতুল জেহাদ । মনে করার কারন নেই যে এসব দলের কাঁধে ভর করে জামাতের অপততপরতার সংবাদ এইই প্রথম এসেছে কিংবা নেহায়েতই কোন উর্বর মস্তিষ্কের রিপোর্টারের কন্সপিরেসি থিয়োরী। জামাতের হয়ে যুদ্ধপরাধীদের বিচার বাতিলের আন্দোলনে প্রক্সি দিতে গত সেপ্টেম্বর মাসে ১২ দল আন্দোলনে নেমেছিল, সে আন্দোলনে এমনকি সম্মুখে থেকে অংশ নিয়েছিলেন সাঈদী পুত্র শামীম সাঈদী। জামাতের দেওয়া বিভিন্ন সন্ত্রাসী পরিকল্পনা এই ইসলাম রক্ষক ১২ দল কার্যকর করার দায়িত্ব নিয়েছিল। জামাতের হয়ে যুদ্ধপরাধীদের বিচার বাতিলের আন্দোলনে প্রক্সি দিতে গত সেপ্টেম্বর মাসে ১২ দল আন্দোলনে নেমেছিল । আপাতত আর কারো উদাহরন দিতে চাই না।
আমি অবশ্যই দাবী করছি না যে আন্দোলনরত সকল আলেমই ওপরের উদাহরনগুলির ভেতর পড়ে যাবেন কিংবা সব সংগঠনই জংগী বা যুদ্ধপরাধী সহায়ক। নিঃসন্দেহে আন্দোলনে অনেক শান্তিকামি আলেম আছেন যারা আসলেই যুদ্ধপরাধী ইস্যু নিয়ে মাথা ঘামান না, যুদ্ধপরাধীদের সমর্থন করেন না, যারা প্রকৃতই মাঠে নেমেছেন ধর্ম ও নবী অবমাননার সংবাদ পেয়ে। যে কোন আইন সংগত শান্তিপূর্ন আন্দোলনেই আমার কোন আপত্তি নেই, তাতে আমার সমর্থন থাক কি না থাক। সেসব আলেমদের উচিত হবে নিজেদের আন্দোলনের স্বার্থেই বিতর্কিত লোকজনের সংসর্গ পরিত্যাগ করা। আর যারা যুদ্ধপরাধীদের বিচার কোন কারনে চান না তাদেরও উচিত ছলাকলা বাদ দিয়ে সরাসরি সেটা ব্যাক্ত করা। অনলাইন ব্লগার ও দেশের ধর্মভীরু জনতা আলেমদের ধর্মীয় সংস্কৃতির কারনেই খুবই সম্মান করে, সে সম্মান নষ্ট যেন না হয় সেটা রক্ষার দায়িত্ব আলেমদেরই। সম্মান কখনো কখনো জোর করে আদায় করা গেলেও মাত্রা ছাড়ালে জোর করে ধরে চিরজীবন রাখা যায় না।
নিহত ব্লগার রাজীব বা অন্য কেউই শাহবাগে ইসলাম বিদ্বেষী কিংবা নাস্তিক্য প্রচার হয় এমন কোন বক্তব্য দেয়নি, তারপরেও কিভাবে যেন শাহবাগ আন্দোলন নাস্তিকদের ইসলাম বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র এমন ধারনা ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছে (এ বিষয়ে সামনের পর্বে আলোকপাত করব)। তারা কেউ কোন রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন না, এই আন্দোলন এক অভূতপূর্ব শান্তিপূর্ন ও সুশৃংখল আন্দোলন হিশেবে আন্তর্জাতিভাবেও প্রসংশিত হয়েছে। অথচ সেসব চাপা পড়ে গেল ব্যাক্তিগত ধর্মবিশ্বাসের আড়ালে, বড় হয়ে সামনে চলে আসল কে আস্তিক কে নাস্তিক কে কত বড় ধার্মিক এসব বায়বীয় প্রশ্ন।
এক মৃত রাজীবের কারনে পুরো শাহবাগ আন্দোলনে অংশগ্রহনকারীরা সকলে নাস্তিক মুরতাদ হলে, আন্দোলন ইসলাম বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র হলে, (আদতে যদিও ঘটনা তেমন নয়) বেশ ক’জন জীবিত বিতর্কিত লোকজন ও সংগঠনের কারনে আলেমদের আন্দোলন যুদ্ধপরাধীদের বিচার বানচালের জন্য স্বাধীনতা বিরোধী কিংবা জংগীদের ষড়যন্ত্র বলে কেন চিহ্নিত করা যাবে না এই প্রশ্ন নিশ্চয়ই সম্মানিত আলেমদের করা যাবে না। এখন দেশে মনে হয় শিশু ধর্ষকের চাইতেও জঘন্য গালি নাস্তিক/মুরতাদ। আমি ইসলামের যতটা জানি তাতে শুনেছি যে কাউকে অমুসলমান বলার অধিকারও কাউকে দেওয়া হয়নি যতক্ষন না সে নিজে ইসলাম পরিত্যাগের ঘোষনা দেয়, কাউকে অমুসলমান অন্যায্যভাবে বলাটাও মহা গুনাহর কাজ, আলেমরা নিশ্চয়ই আরো ভাল জানেন। আন্দোলন নিয়ে যত যাইই কথা হোক শাহবাগের নেতা বা যোগদানকারী অনেকেই নাস্তিক কিংবা অমুসলমানও নন। কোন ধর্মের শিক্ষাদানকারী/হেফাজৎকারীরা উগ্রতা শিক্ষা দিলে সে ধর্মের প্রতি স্বাভাবিকভাবেই অনুসারীদেরও শ্রদ্ধা ফিকে হয়ে আসবে।
বহুদিন আগের ঢাকা কলেজের এক স্মৃতি এই প্রসংগে প্রায়ই মনে পড়ে। ক্লাসের একজনকে পেটাতে মোহাম্মদপুর থেকে হুবহু মাফিয়া ষ্টাইলের কোট প্যান্ট পরা বাছা বাছা ৩ জন ক্যাম্পাসে এসেছে। টার্গেটকে খেলার মাঠে পেয়ে একশন শুরু হল, মুশকিল হল টার্গেটের সাথের আরেকজনও দেখা গেল অযাচিতভাবে মার খাচ্ছে। সে বেচারা কাঁদ কাঁদ স্বরে বলে; ‘ভাই আমারে মারেন ক্যান, আমি কি করছি?’ ষন্ডা দল ক্ষনিকের জন্য একটু থমকে গেলেও জবাব দেয়, ‘তুই লাল শার্ট পরছস ক্যান….ক্যান পরলি লাল শার্ট” সাথে সাথে আরো দুই ঘুষি।
রাজীবের যায়গায় অমি পিয়াল মারা গেলেও ঘটনা একই ঘটত। তখন বার করা হত মুক্তিযুদ্ধ ব্যাবসায়ীর ছদ্মবেশে পর্ণ ব্যাবসায়ী অমি পিয়ালের কুতসিত চেহারা (অমি পিয়াল এক সময় যুদ্ধপরাধীদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে বাংলা পর্ন সাইটেও ঘোরাঘুরি করেছেন যার ব্যাখ্যা তিনি নিজে বহুবার কোন রকম সঙ্কোচ ছাড়াই দিয়েছেন)। ফলাফল হত একই, শাহবাগ আন্দোলন তখন সফলভাবে জামাতিদের দাবীমত চিত্রায়িত হত অসামাজিক কার্যকলাপের আড্ডাখানা হিসেবে। নয়া দিগন্ত আমাদের দেশে থাবা বাবার লেখার যায়গায় ছাপা হত পর্ন সাইটে লেখা অমি পিয়ালের নামে রসালো পোষ্ট। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী অনেকে আলোচনা শুরু করতেন পিয়ালের জন্যই কিভাবে আন্দোলন রসাতলে গেল……এসব বিতর্কিত লোক না এলেই ভাল হত। নয়া দিগন্ত, আমার দেশ, আন্দোলনরত আলেমগন তো প্রথম থেকেই বলে আসছেন যে শাহবাগ আন্দোলনে আগুন জ্বালানো, নাচগান, নারী পুরুষের অবাধ মিলন জাতীয় নানান বেশরিয়তি কাজকারবার চলছে। (আজ দেশের ৩ বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ম্যাডাম জিয়াও একই কথা বলেছেন)। পর্ণ ব্যাবসায়ী নেতাদের শিষ্যরা আর কতটা ভাল হতে পারে?
বহু মেধাবী লোক ব্লগ জগতে আছেন তারা কেউ যেন এ লেখার অর্থ আবার করে না বসেন যে আমি রাজীবের যাবতীয় ইসলাম বিদ্বেষী লেখালেখি হালাল করার দায় নিয়েছি। শাহবাগ আন্দোলন ইস্যুতে যে কারনে ‘ব্লগার’ রাজীবের শ্বশুড়ের নাম কিংবা দেশের বাড়ি কোথায় নিয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই সেই একই কারনে রাজীবের ধর্মবিশ্বাস কি তা নিয়েও আমার তেমন আগ্রহ নেই। আমার কিছুটা আগ্রহ হয়েছে আন্দোলনে তার ভূমিকা কি ছিল তাতে। তার লেখায় কেঊ আপত্তিকর কিছু অবশ্যই পেতে পারেন, যত খুশী তার নিন্দা করতে পারেন। তাকে শহীদ বলা কিংবা কুত্তা বলা কিছুতেই তার আর কিছু যাবে আসবে না – এইটুকুতে নিশ্চয়ই আস্তিক নাস্তিক সকলেই একমত হবেন। আল্লাহ থেকে থাকলে তিনি নিশ্চয়ই শাস্তি/পুরষ্কার নির্ধারনে অধম বান্দাদের রেকমেন্ডশনের অপেক্ষায় থাকেন না। শুধু এইটুকু অনুরোধ যে রাজীবের লেখার জের ধরে আন্দোলনে জড়িত অন্যান্যদেরও অপ্রাসংগিকভাবে গালিগালাজ করবেন না বা রাজীবের মত নাস্তিকদের জন্যই আলেমগণ মাঠে নেমে জামাতকে অজ্ঞাতসারে সুবিধে করে দিচ্ছেন এমন সিদ্ধান্ত একটু বাস্তব প্রসূতভাবে করবেন। শাহরিয়ার কবির, মুনতাসীর মামুন, জাহানারা ইমামও অতীতে নাস্তিক মুরতাদ এসব হয়েছেন, জাফর ইকবালও একই কারনে অনেকের কাছে নাস্তিক। জাহানারা ইমাম ‘জাহান্নামের ইমাম’ বলেও এক শ্রেনীর লোকের গাল খেয়েছেন। জাহানারা ইমামকে পরাজিত করা যায়নি কারন তিনি ব্যাক্তি জীবনে নামাজ রোজা করলেও এসব নাস্তিক মুরতাদ গালি খেয়ে কিছু অসূস্থ ধর্মব্যাবসায়ী ও উন্মাদের কাছে নিজে কত বড় ধার্মিক তা প্রমানের চেষ্টা করেননি, নিজের ধর্মবিশ্বাস নিজের কাছেই রেখেছিলেন, ধর্মকে চরম তামাশার বস্তুতে রূপান্তরিত করেননি।
[আপডেট]ঃ এই লেখা প্রকাশের পর খবর এসেছে আজই চট্টগ্রামে আলেমদের অরাজনৈতিক সংগঠন যারা যুদ্ধপরাধীদের বিচারে কোন আপত্তি নেই বলে দাবী করে আসছিলেন তাদের সমাবেশ থেকে সরাসরি সাঈদীর মুক্তি দাবী করা হয়েছে।
হেফাজতের সমাবেশে সাঈদীর মুক্তি দাবি
সত্যের পক্ষে যেমন এখনো আছে, তখনো ছিলো । তেমনী মানবতার বিরুদীরা এখনো আছে তখনো ছিলো। তবে সত্যের কলম কখনো থেমে থাকবে না । সত্যে আর অসত্যের লড়াইয়ের একপ্রান্তে আমরা বাংলার জমিনে যুদ্ধাপরাধীদের চরম পরিণতি দেখবোই দেখব । তাই আজ মুজাহীদ কলঙ্গের চূড়ান্ত রায় পেয়েছি আমরা ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।
এদের মুখোশ উন্মোক্ত করে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
রাজনীতি করা কোন আলেমকে আমি এখন পর্যন্ত ‘সিরাতুল মুস্তাকীম’ এ চলতে দেখলাম না। এরা ধর্ম রক্ষার আন্দোলনে নামলে ধর্মের কি অবস্থা দাঁড়ায় সেটা সারা পৃথিবী জুড়েই আজকে প্রমানিত।
@হোরাস,
এইগুলান কি বলেন? জলদি নাস্তিকি তরিকা মতে তওবা করেন।
পৃথিবীর সবখানেই আমরা দেখি যে যেসব দেশেই ধর্মভিত্তিক সমাজ ব্যাবস্থা, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলরা ক্ষমতায় সেসব প্রচলিত আছে সেসব দেশই উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছে, সেসব দেশের ছায়া সুশীতল আরশের নীচে চিরশান্তির সুবাতাস বইছে, ঐসব দেশে সব ধর্ম বর্ন গোত্রের লোকে সমাধিকার লাভ করে।
অপর দিকে কুফরি সেক্যুলার ব্যাবস্থার দেশগুলির দিকে তাকায় দেখেন কি ভয়াবহ অবস্থা। কারো বাপ মায়ের নাই ঠিক, ছিঃ ছিঃ। সেক্যুলারিজমের নামে নাস্তিকরা সংখ্যাগুরু ধর্মের লোকদের অত্যাচার শোষন করছে, ধার্মিকদের জন্য দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিকের মত আইন বানিয়ে রেখেছে। সেসব দেশে এক ধর্মের লোকে নিজ ধর্মেরই অন্য গোত্রের লোকের উপাসনালয়ে বোমা মেরে নির্বিচারে মানুষ মারে। বিস্ময়কর ব্যাপার হল যে এরা সারাক্ষন ধর্মভিত্তিক শাসন ব্যাবস্থাকে গালিগালাজ করতে থাকলেও ইমিগ্রেশন নেওয়াড় বেলায় সেক্যুলার নয়, ধর্মভিত্তিক দেশগুলির দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ এত চমৎকারভাবে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য। আমি বার বার বলছিলাম রাজীবের নাস্তিকতা-আস্তিকতা শাহবাগ বিরোধিতার পেছনে দায়ী নয়। কাউকে শায়াস্তা করতে হলে নাস্তিক ট্যাগ লাগানোর গেমটা এদশের মোল্লারা খেলছেন বহু বছর ধরে, তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে তাদের নিয়মে খেলতে গিয়ে শাহবাগ ভুল করেছে। গণজাগরন মঞ্চে কুরান থেকে ত্রিপিঠক পর্যন্ত পাঠ করে কোন লাভ হবে না, এটা বুঝতে যে রাজনৈতিক দূরদর্শিতা লাগে শাহবাগের অধিকাংশ অরাজৈতিক তরুণ ব্লগারের তা নেই। হেফাজত যা খেলছে সেটা কোন ধর্মীয় গেম না, রাজনোইতিক গেম, তবে ধর্মের নামে। এটা না বুঝলে তাদের মোকাবেলা করা যাবে কি করে?
@ফারহানা আহমেদ,
কারো সম্পর্কে আগে থেকেই নেতিবাচক ধারনা করে রাখলে যে কোন ছূতাতেই তার ভয়াবহ ত্রুটি বার করা যায়। আন্দোলনের শুরু থেকেই নানান ভাবে চেষ্টা হয়েছে, প্রথম দিকের গন জোয়ারের স্রোতে সেসব খাটেনি। অবশেষে লেগে গেছে রাজীবের লেখালেখি। এটা না খাটলেও আরো চেষ্টা চলতেই থাকত এবং ধর্ম জড়িয়ে একটা না একটা লেগে যেতই।
আদিল ভাই কেমন আছেন? মেলা দিন পর আপনার পোস্ট পড়লাম। যথারীতি সময়পোযোগী এবং একেবারে টু পয়েন্ট। বিএনপি-জামাত অত্যন্ত সফল ভাবে আন্দোলনের বারোটা বাজানোর জন্য এই আস্তিক-নাস্তিক ইস্যু তুলেছে এবং জামাত অন্য ইসলামিক দলের (!!!) মাধ্যমে কেওয়াস লাগিয়ে রেখেছে। এদিকে আন্দোলনের সংগঠকরা ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন নিজেদের আস্তিক প্রমানের দায়ে। অথচ উচিত ছিলো হেফাজতে ইসলাম যে আসলে হেফাজতে জামাত সেইটা পাবলিকের সামনে তুলে ধরা। দূর্বলতাটা এই জায়গায়। তারা ধর্মকে ব্যাবহার করে দাবার চাল চালছে আর আমরা তাদের চাল চালার সুযোগ করে দিচ্ছি।
ভালো থাইকেন ভাই।
@সাজিদ রেজা,
আপনি তো দেশে আর আওয়াজ দিলেন না।
ভাই রে, টু দ্যা পয়েন্ট এর কি তেমন একটা দাম আমাদের দেশে আছে? টু দ্যা পয়েন্টের দাম দুই পয়সা।
এ দেশেরই লাখ লাখ লোকে রাজাকার মান্নান মাওলানার ইনকিলাব পড়ে, এক সময় সেটা ছিল দেশের অন্যতম জনপ্রিয় জনপ্রিয় পত্রিকা। দেশের লোকে জানত না মান্নান মাওলানার মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা? ওপরে মাওলানা মহিউদ্দিন সাহেবের কীর্তিময় অবদানের কিছু সূত্র উল্লেখ করেছি। এসব পড়ার পরেও কি ওনার বিপুলভাবে প্রচারিত জনপ্রিয় পত্রিকার সার্কুলেশন কমে যাবে? নিয়মিত পাঠকরা কেউ বাদ দেবে? দেশের আলেম সমাজ থেকে ওনার বিরুদ্ধে কোন বিবৃতি আসবে?
রাজাকারদের বিচার দাবীকারি, জামাত নিষিদ্ধ দাবীদার অনেকেই নিষ্ঠার সাথে রাজীবের ইসলাম বিদ্বেষী কথাবার্তা গোপন করতে কে কি করেছে তা নিয়ে দীর্ঘ গবেষনা করবে, কিন্তু সরলমনা আলেমগনের আন্দোলনের মূল্যায়ন করতে দুই মিনিটও ব্যয় করবে না।
@ আদিল মাহমুদ
দেশ বিভাজিত নয়, মধ্যবিত্ত বিভাজিত । এরা সকলেই হালুয়া-রুটির ভাগ চায় । বিগত বেয়াল্লিশ বছর ধরে দেশকে
লুটপাট করে এক নব্য ধনী শ্রনীর উদ্ভব ঘটেছে । তারা দেশে অর্থ বিনিয়োগ করেছে । তারা লুটপাটকৃত নিজ অর্থের
নিরাপত্তা চায়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই তাদের এই অর্থের নিরাপত্তা দিতে পারে । এই ধনিক শ্রেনীই দেশ শাসন করে । তাই
এদের স্বার্থে নির্বাচন সূষ্ঠু হোতে বাধ্য ।
যারা কখনো গুজব রটানোর সাথে জড়িত ছিলেন, তারা নিশ্চই জানেন কাজটা বেশ কঠিন। সার্থকভাবে একটি গুজব রটানোর জন্যও প্রচুর প্রস্তুতি, হোমওয়ার্ক ছাড়াও আরও অনেক ইস্যু এর সাথে জড়িত। সেখানে এইসময়ে তিন তিনটি সফল গুজব জামাতিরা কিভাবে রটালো? এবং তা থেকে আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্থ করার এতটা রসদ কিভাবে সংগ্রহ করলো?
আমার মনে হয় অন্য ইস্যুর মধ্যে যেটা এখানে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে তা হল ধর্মীকদের সম্পর্কে জনগনের একটি সাধারন ধারনা (বা মাইন্ডসেট) – তাঁরা তুলনামুলকভাবে কম ক্ষতিকর। যার সমান্তরিকিকরন করা হয় আবার এভাবে – তাঁরা তুলনামুলকভাবে বেশি বিশ্বাসযোগ্য।
খালি চোখে যাদের ধার্মিক মনে হয় (লেবাসের কারনে) তাঁদের প্রতি এই মাইন্ডসেট যতদিন এই অবস্থায় থাকবে, যেকোন সার্বজনিন আন্দোলন সফল করতে অনেক সাবধানী পদক্ষেপ নিতে হবে। এই মাইন্ডসেটকে একটা রিয়ালিটি হিসাবে মেনে নিয়েই প্রোগ্রাম ওয়ার্ক আউট করতে হবে।
@কাজী আহমদ পারভেজ,
গুজব রটনা আমাদের দেশে খুব কঠিন কিছু নয়, যুক্তিবাদের চর্চা এখানে উচ্চশিক্ষিত মহলেও ন্যূনতম। বেশীরভাগ লোকে নিজে যা বিশ্বাস করতে চায় তার স্বপক্ষে যাইই পায় তাকেই ধ্রুব সত্য মনে করে, ভিন্ন মত যাচাই বাছাই করে না।
আর ধর্ম বিষয়ে এটা আরো সহজ কারন স্বাভাবিকভাবেই দেশের লোকে ধর্মের প্রতি খুবই দূর্বল। আবাল্য কাল থেকে তারা শুনে আসে যে তাদের প্রইয় ধর্ম ইসলাম বিপন্ন, তার প্রমান হিসেবে দেখে আসে ইসরায়েলের অত্যাচার, ভারতে মুসলমানদের দূরবস্থা, সাম্প্রতিককালের ইরাক আফগানিস্তানে মার্কিন হামলা এসব। এ অবস্থায় নাস্তিকদের শয়তানির কিছু প্রমান হাতেনাতে পেয়ে গেলে আর কিছু লাগে?
জামাতের প্রস্তুতি অনেকদিনেরই ছিল। তারা বেশী কথা চালাচালিতে বিশ্বাসী না, কাজে বিশ্বাসী।
আদিল ভাই, অসাধারণ লিখেছেন। শেয়ার করলাম।
চলতে থাকুক এমন সব লেখা। সকল শুভ কামনা।
গন আন্দোলনের ব্যর্থতা নিয়ে অনেক কথাইতো বলা হলো, কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে এখনো আমার কাছে মনে হয় ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার বিরুদ্ধে কিছু একটা করার জনগনের কাছে এটা একটা সিগন্যাল, হউক না সেটা পরিমাপে অনেক ছোট, দুরদৃষ্টিতার অভাবে নানা দিক দিয়ে অসফল, কিন্তু ছোট-খাট একটা ধাক্কাতো বটে। দেশের লোক বুঝলো দেশে এমন ধরনের একটা জাগরনের অস্তিত্ব আছে, এটাই বা কম কিসে? সাময়িকভাবে স্তব্দ হলেও ভবিষ্যতে দরকারের সময় তরুন প্রজন্মের এই আন্দোলন যে শক্তি সঞ্চয় করে গর্জে উঠবেনা তার নিশ্চয়তা কে দিতে পারে?
@ব্রাইট স্মাইল্,
ভবিষ্যতের আশায় বসে থাকা ছাড়া উপায় নাই। তবে আমি আপাতত তেমন দিন সহসা দেখি না।
জনগন ধর্ম ও রাজনীতির মিশাল চায়, খুবই ভাল কথা। আমি খাস দিলে দোয়া করা ছাড়া আর তেমন কিছু করার দেখি না।
@আদিল মাহমুদ,
ধর্ম, রাজনীতি, মিথ্যাচার একাকার।
@গীতা দাস,
ফলাফল হল আত্মপ্রতারনা ও স্ববিরোধীতার সমাহার।
আদিল সাহেব, সিমিউলেটরে দেখার চেষ্টা করছিলাম যে , এখনি দেশে ইসলামী প্রজাতন্ত্র এবং ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রশ্নে গনভোট দেয়া হলে কি ফলাফল হতে পারে। যে ফলাফল দেখতে পেলাম তা বিস্ময়কর কিছু নয় তবে একটা কথাই কেবল বার বার ঘুরে ফিরে মনে আসে যে, বাস্তবতা বিবর্জিত ফ্যান্টাসী দিয়ে কি করে কিছু মানুষ গন আন্দোলন করার কথা ভাবে ? এর চেয়ে বরং দেশে সমকামীতা বৈধকরনের পক্ষে ভোট বেশী পড়ার সম্ভাবনা বেশী ! :))
@সংশপ্তক,
এই সিমুলেটর পেলেন কই?
ব্যাতিক্রম কিছু ক্ষেত্রে কখনো কখনো আবেগের কাছেও বাস্তব পরাজিত হয়।
ব্লগে ইতিহাস চর্চা, আলোচনা এক জিনিস আর সমাজের সব শ্রেনীর লোকে সম্পৃক্ত করে সফল আন্দোলন গড়ে তোলা ভিন্ন কথা। ব্লগে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সমর্থকদের গণহারে জামাতি ঠাউরানো ছিল বাস্তব অস্বীকার করার বড় পদক্ষেপ। এ কারনে আন্দোলনের সম্ভাব্য বিরোধীতা কোন যায়গা থেকে আসতে পারে সে সম্পর্কে অগ্রীম কোন প্রস্তুতিই ছিল না।
পাঠকবৃন্দ,
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাগলের প্রথম ও দ্বিতীয় ছানা । মায়ের দুধ খাওয়ার জন্য ছানা দু’টি গুতা গুতি করছে, তা দেখা আমরা
মধ্যবিত্তরা সমালোচনা করছি । কিন্তু যারা রাজনীতির মধ্যে পলিটিক্স ঢুকে গেছে বলে মনে করেন, সেই বিশাল জনগোষ্ঠি, দুই মহিলার উপর ক্ষিপ্ত । তারা এই দুই মহিলা থেকে পরিত্রান চান । তাই জনতার আপদ-বিপদে যে ব্যক্তি তাদের সাথে থেকেছেন,
তাকেই জনতা ভোট দিবেন । তাই আগামী নির্বাচনে নৌকা বা ধানের শীশ মার্কা প্রধান্য পাবে না ।
@আ, হা, মহিউদ্দীন,
– আমার এমন মনে হয় না। সামনের নির্বাচনে মেরুকরনের চরম অবস্থা দেখা যাবে বলে আমার ধারনা যদি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।
দেশ এখন অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে বেশী বিভাজিত, সেই বিভাজনের কার্যকারন কোন দল ভাল শাসক তেমন কিছু নয়।
খালেদা জিয়া এখন ধর্ষক রাজাকার -জামায়াত শিবির ও তাদের টাকা খাওয়া মোল্লাদের সর্দানী হয়েছেন।আধুনিক বেশভূষা ও বিদেশী বিউটি পার্লারে সজ্জিত খালেদা জিয়া এখন নতূন ফতুয়া বাজ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন! আওয়ামী লীগকে বলি এরা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে,আপনারা সত্যটাও প্রচার করতে পারেন না? ২০০১ সালে দেখেছি আপনারা ক্ষমতায় না থেকে বিএনপি -জামায়াতের মার খেয়ে পালিয়ে গেছেন,আবার এখন ক্ষমতায় থেকে আপনার নেতা কর্মীরা কয়দিন আগে মার খেয়ে পালিয়ে গেল। ক্ষমতায় থেকে পালিয়ে যান আপনাদের লজ্জা করে না?
@hossain,
খালেদার আচরনে অবাক হবার কিছু নেই, অপ্রত্যাশীত কিংবা একক সিদ্ধান্তে কিছু উনি করেননি। উনি ওনার দলের ভোট ব্যাংক যা চায় সেই মতই অবস্থা নিয়েছেন, এই সত্য গ্রহন করতে হবে। ‘৭৫ এর পর থেকেই যুদ্ধপরাধী/রাজাকার ইস্যুতে বিএনপির যা ষ্ট্যান্ড তার বাইরে কি অপ্রত্যাশীত কিছু কি উনি এবার করেছেন? করলেই বরং অবাক হতে হত। তাদের এমন প্রো-রাজাকারী নীতিতে কয়জনে বিরক্ত হয়ে দল ছেড়ে দিচ্ছে শুনেছেন? ছাত্রদলের কয়জনে বিএনপির সাথে আর থাকবে না বলেছে? এসব পরিষ্কার প্রমান করে যে এ দলের সমর্থক এক বিরাট অংশ রাজাকার বদরদের সমর্থক।
আওয়ামী লীগ দিচ্ছে পাপের কাফফারা। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল হিশেবে জামাতের সাথে অতীতে হাত মিলিয়ে সেই যে আদর্শচ্যূত হয়েছে সে পাপের প্রায়শ্চিত এখনো করে যেতে হচ্ছে। মেরুদন্ড ভাংগা শত্রু বড় হলেও সে নখদন্তহীন। বড় সমর্থক গোষ্ঠী, কর্মী বাহিনী নিয়েও তাই লীগ আছে দৌড়ের ওপর।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার প্রতিটা যুক্তিই খুব ভালো লাগে। এই কথাটার জন্য একটা স্যালুট :guru:
শাহবাগের আন্দোলনটির মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল শুধু মাত্র অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাশ্তির নিশ্চয়তা করা। তাদের এই আন্দোলনের সংগে ধর্মের আলোচনা,সমালোচনার কোন কিছু জড়িত করেছিলনা।
জামাত শিবির নিজেদের রক্ষার্থে জনগণের ধর্মানুভূতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার লক্ষে এদের সবাইকে নাস্তিক ও ধর্মের কতুক্তিকারী বানিয়ে জনগণকে একচেটিয়া ভাবে এদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিল।
ম্যাডাম জিয়া শিংগাপূর হতে ফিরে এসেই দেখতে পেলেন, এতবড় সুযোগ কি আর হাত ছাড়া করা যায়?
এতো এক ঢিলে দুই পাখীই শিকারের সুযোগ হাতের মুঠোয় এসে গেছে- একদিকে আওয়ামেলীগ সরকার খতম,অন্যদিকে ধর্মীয় বাহানায় একচেটিয়া জনগণও কবজাগত হয়ে যাওয়া।
তাই মুহূর্ত কাল বিলম্ব না করেই জামাত-শিবিরের সংগে একাত্ম হয়ে আন্দোলনের বিরুদ্ধে ও সরকার কে এক চোটে উৎখাত করার লক্ষে ঝাপিয়ে পড়লেন।
দেশের জাতীয় স্বার্থ জলান্জলী যাক,তাতে কিছু আসে যায়না রাজনৈতিক স্বার্থটাই মুখ্য বিষয়।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
– আন্দোলনকারী ব্লগাররা সরল মনে অপরাধীদের বিচারের সাথে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার দাবী যোগ করে কৌশলগত ভুল করে ফেলেছিলেন। এটাকে মুক্তিযুদ্ধ সমর্থক কড়া ধার্মিকরা ইন্টারপ্রেট করে নিয়েছে ধর্ম উতখাতের ষড়যন্ত্র।
বিএনপি জামাত দারুন সফলতার সাথে এই বিভাজন ব্যাবহার করতে পেরেছে,
ভোটের রাজনীতিতে মৌলবী সাহেবেরা ছাগলের তৃতীয় বাচ্চার মতো তিড়িং তিড়িং করে লাফাচ্ছেন ।যদিও তাদের নিজ শক্তিতে ভোটে জিতার ক্ষমতা নাই । একশত ভোট সং গ্রহ করা তাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবে । মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কমিউনিষ্ট ও ভারতের দালাল বলে যেমন ৭১ সালে পার পাওয়া যায়নি, তেমনি তরুনদেরকে নাস্তিক বলে আগামী নির্বাচনে তরী পার করা যাবে না । কোন দলই সংখ্যাগরিষ্ট আসন সং গ্রহ করতে পারবেনা বলে মনে হয় ।
@আ, হা, মহিউদ্দীন,
@আ, হা, মহিউদ্দীন,
আন্দোলনকারী আলেমদের ভেতর বহু গ্রুপ আছে; মূলত রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক। রাজনৈতিকরা মূলত বিএনপি সমর্থক, বিগত জোট সরকারের অংশ বা সমমনা। এই দলে আছেন বেশ কিছু চরম বিতর্কিত ব্যাক্তিত্ব যাদের ‘৭১ সালে পাক সমর্থন থেকে শুরু করে বিভিন্ন জংগী গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ততা আছে। এদের অনেকে জামাতের হয়ে প্রক্সি দিচ্ছে এমন আলামত নানান সূত্রে এসেছে যা যথেষ্ট যৌক্তিক।
অরাজনৈতিকরা সম্ভবত অজান্তেই ব্যাবহৃত হচ্ছেন বলে আপাত চোখে মনে হয়, তবে এদের ভেতরেও জামাতি ইনফিল্ট্রেশনের প্রমান আছে। ৯০ বছরের বৃদ্ধ আল্লামা শাফি ব্লগ পড়ে ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগারদের সন্ধান নিশ্চয়ই পাননি। এদের ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট ব্যাবহার করে উষ্কানো হয়েছে।
চমৎকার লেখা (Y)
১) শাহবাগ আন্দোলন এ দেশে যে একটি প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার উন্মেষ ঘটাচ্ছিল তা অকালে মারা গেল কিছু বামপন্থি এবং নাস্তিক ব্যক্তির আতি উৎসাহের কারণে। এখন আওয়ামীলীগ সরকারের মত একটি সরকারকে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বাদ দিয়ে ধর্মের সৈনিক হতে হচ্ছে । দেশে বিদেশে অবস্থানকারী বেশ কিছু মানুষ এ আন্দোলন দেখে মনে করেছিলেন দেশের মানুষ বোধ হয় প্রগতিশীল হয়ে গেছে, কাজেই এটাই হচ্ছে উত্তম সময় রাজাকার বিচারের সাথে সাথে ধর্মকে ছুঁড়ে ফেলার। এ সব ব্যক্তির সামান্য ধৈর্যের অভাবের কারণে আজ শাহবাগ আন্দোলনের ফল পচে গেল।
২) অনেকে বলেন ধর্মের সমালোচনা বা কটাক্ষ করা হল তাদের বাক স্বাধীনতা, এটা অন্যায় কিছু না । কিন্তু বাংলাদেশের আইনে ধর্মের সমালোচনা বা কটাক্ষ করা হল ফৌজদারী অপরাধ, যার শাস্তি জরিমানা এবং এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। অথচ যারা ধর্মকে কটাক্ষ করেন তারা হয় এই আইন জনেন না বা জেনেও না জানার ভান করেন। আপরদিকে মৌলবাদীরা আরো কয়েক কাঠি বেশি, তারা ধর্মের সমালোচনা কারীর শাস্তি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী চান না, তারা চান এর শাস্তি শরিয়া আইন অনুযায়ী, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড। উভয় পক্ষই এ দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখান।ফলাফল হল দেশে অশান্তি, অরাজকতা।
৩) অনেকের ধারণা ব্লগার রাজীবকে হত্যা করা হয়েছে ধর্মের সমালোচনা করার জন্য। আমিও তাই মনে করি, কিন্তু তারা এ ইকুয়েশনটিকে যত সহজ সরল ভাবে ব্যখ্যা করেন, আমার মনে হয় বিষয়টি অত সহজ সরল নয়। রাজীব শাহাবাগ আনেদালনের সাথে জড়িত ছিলেন কিন্তু একবারে সামনের সারীর কেউ ছিলেন না। তাহলে তাকে কেন হত্যা করা হল? শুধু ধর্মের সমালোচনা করার জন্য? আমার মনে হয় না।
আমার ধারণা জমাত/শিবির শাহবাগ আন্দোলন কে বিতর্কিত করার জন্য আন্দোলনের সাথে জড়িত এমন কাউকে খুঁজছিল যে ধর্মকে কটাক্ষ করেছে বা সমালোচনা করেছে এবং তারা জানতো তাকে হত্যা করতে পরলে তাদের বাকি পরিকল্পনা স্বয়ংক্রিয় ভাবেই বাস্তবায়িত হবে।
রাজীবকে হত্যা করার আগেও মৌলবাদীরা প্রচার করছিল যে শাহবাগ আন্দোলন নাস্তিকদের আন্দোলন কিন্তু এ খবর তখন লাইম লাইটে আসেনি, তেমন কোন গুরুত্বও পাইনি। তারা জানতো রাজীবকে(বা ইসলামকে কটাক্ষ করেছে এমন কাউকে) হত্যা করলে হত্যার খবরটি লাইম লাইটে চলে আসবে , মূলধারার সংবাদ মাধ্যম গুলোতে প্রচারিত হবে যে শাহবাগ আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে জামাত/শিবির এ কাজটি করেছে এবং এই সময় যদি তারা নিজেদের মিডিয়গুলোতে প্রচার করতে পারে যে রাজীব একজন নাস্তিক, ইসলামের কটাক্ষকারী তবে খুব সহজেই এদেশের মানুষের কাছে এই মেসেজটি পৌঁছে দিতে পারবে যে শাহবাগের আন্দোলন মুলতঃ নাস্তিকদের আন্দোলন এবং জামাত, শিবির হল ইসলামের রক্ষক। তারা খুব ভাল করেই বুঝতে পেরেছিল যে এ কাজটি করতে পারলে ৯০% ধর্মপ্রাণ আর ৬০% সামপ্রদায়িক মনভাবপন্ন মানুষের এদেশে, শাহবাদ আন্দোলনকে ধুলিসাৎ করার জন্য একটি বৃহৎ গোষ্ঠির নৈতিক সমর্থন পাবে। এখন দেখা যাচ্ছে যে জামাত,শিবির তাদের পরিকল্পনা বেশ ভাল ভাবেই সফল করতে পেরেছে।
৪) কোন এক মোবাইল কোম্পানীর এ্যডে হকারকে বাসে একটি মোবইলের বই বিক্রি করতে দেখা যায়। বইটির নাম ছিল সহি …, আর এ্যডটি হল কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক। উল্লেখ্য যে এ্যডটি এখনও প্রচার হয় তবে বইটির নামটি নাম মূছে দেওয়া হয়েছে।কারণ বইটির নাম কিছুটা ইসলমী বইয়ের স্টাইলে দেওয়া।প্রশ্ন হল এখন কেন বইটির নাম মূছে ফেলা হল? কারণ ক`দিন আগের চেয়ে এখন বাংলাদেশের মানুষ ইসলামের ব্যাপারে অনেক বেশি প্রতিক্রিয়শীল হয়ে পড়েছে সেটা মোবাইল কোম্পানীটিও বৃঝতে পেরেছে।
আমরা এক পা আগাতে গিয়ে তাড়াহুড়ো করায় মনে হয় দু`পা পিছিয়ে গেলাম।
@বিষন্নতা,
শাহবাগ থেকে ধর্মকে ছুঁড়ে ফেলার কথা কেউ তো দাবী করেনি। আপনি দেখি সরাসরি ধর্মসমালোচনা কারীদের দায়ী করলেন।
@আকাশ মালিক,
আমার মন্তব্যের উপরে আদিল সাহবের করা মন্তব্যের এ অংশটুকু পড়লেই বুঝতে পারবেন কেন আমি এ অভিযোগ করেছি। উপরোক্ত দাবী আসলে ছিল কিছু অতি উৎসাহী বামপন্থী এবং নাস্তিকদের।
@বিষন্নতা,
কথা সত্য। আমার পর্যবেক্ষনে তেমনই মনে হয়েছে। তবে এ সম্পর্কে আপনার এবং আরো অনেকের মত “অকালে মারা গেল কিছু বামপন্থি এবং নাস্তিক ব্যক্তির আতি উৎসাহের কারণে” এই অংশটায় আমি একমত নই।
আন্দোলন শুরু করেছিলেন মূলতঃ ব্লগাররা যারা ব্লগে ব্লগে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গবেষনার সাথে জড়িত, জামাত শিবিরের সাথে সাইবার যুদ্ধও তারা অক্লান্তভাবে গত কয়েক বছর চালিয়ে আসছেন ছাগু ফাইটার হিশেবে। ব্লগ জগত সম্পর্কে যারই ন্যূনতম ধারনা আছে তারই জানার কথা ব্লগে এই ছাগু ফাইটারদের কাছে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সমর্থক এবং জামাত শিবির সমর্থক সমার্থক। এই ছাগু ফাইটার গ্রুপটি রাজনৈতিকভাবে না হলেও ধর্মীয় প্রোফাইলিং এ মিশ্র গ্রুপ; এদের মাঝে নাস্তিক, আস্তিক, সাধারন চোখে আমাদের দেশে প্র্যাক্টিসিং মুসলমান বলতে যেমন বোঝায় তেমন সকলেই আছে। রাজনৈতিকভাবে চিন্তা করলে এই দলে বিএনপি সমর্থক অতি নগন্য, জামাত স্বাভাবিকভাবেই নেই। এদের মধ্যে নাস্তিক্যবাদী বা বামপন্থী চিন্তাচেতনার চর্চা নেই। সহজবোধে কারনেই এরা দেশে আরব দেশ, ইরান বা আফগানিস্তানের মত ধর্মভিত্তিক ব্যাবস্থা চালুর প্রস্তাবনার আলামত দেখলে কড়া প্রতিবাদ করে, ধর্ম নিয়ে তেমন মানসিকতার লোকের উদ্ভট দাবী দাওয়া কিংবা আদিখ্যেতা দেখলেও আপত্তি করে। এর মধ্যে অনেকে বামপন্থী বা নাস্তিক্যবাদী গন্ধ পেতে পারে। দেশের অবস্থা এখন যা তাতে মনে হয় শুধু আলেমগনের দাবী করার অপেক্ষা দেশ এখন থেকে সৌদী কায়দার শরিয়তী আইনে চলবে, সকলকে আস্তিকতার পরিচয় বজায় রাখার স্বার্থে তাতে একমত হতে হবে, নইলে নাস্তিক মুরতাদ বনে যাবে।
এসব প্রগতিশীল ব্লগাররা সোজা কথায় ধর্মের বিরুদ্ধে নন, দেশ থেকে ধর্ম বাতিল করার মত উন্মাদীয় পাগলামি দাবী এরা কস্মিনকালেও চিন্তা করেননি। শুধু এদের সমস্যা ছিল পু্রো দেশকে ব্লগ জগত হিশেবে ধরে নেওয়া। দেশ যে এখন ‘৭১ সালে নেই এটা তারা কিছুতেই বুঝতে চাইতেন না/। ৭০/৭১ সালে দেশের লোকের ধর্ম নিয়ে সূক্ষ্মানুভূতি এখনকার মাত্রায় ছিল না। সে আমলে শুধু ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলই নিষিদ্ধ করা হয়নি, ধর্মনিরপেক্ষতা মূলনীতি হিশেবে দেশের আপামর জনতা মেনে নিয়েছিল, কেউ বাম কিংবা নাস্তিক্যবাদী ষড়যন্ত্র খুজে পায়নি। বেচারা ব্লগাররা কিছুতেই সময়ের সাথে জনতার মূল্যবোধের পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করেননি। আজ কড়া আওয়ামী সমর্থক, বংগবন্ধুকে দেবতার মত ভক্তি করে এমন লোকেও ধর্মনিরপেক্ষতা শুনলে ইসলাম বিদ্বেষী সন্দেহ করে। ফলাফল হয়েছে ব্লগাররা প্রতিপক্ষের শক্তি সম্পর্কে আন্ডার এষ্টিমেশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। ধর্মের প্রতি লোকের ভক্তি এখন এমনই যে চির জীবন আওয়ামী সমর্থক এমন লোকেও এখন ধর্মনিরপেক্ষ নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নামলে বিএনপিতে ভোট দেবে, জামাতকে হয়ত সরাসরি দেবে না। ব্লগে এই ধরনের লোককে ছাগু ফাগু বলে তাড়ানো গেলেও বাস্তব জীবন থেকে তাড়ানো যায় না। কিংবা তাদের মূল্যবোধ দুই এক আবেগময় বক্তৃতা দিয়ে পরিবর্তন করা যায় না।
আমি নিজে মনে করি প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থা ছাড়া রাজাকারি মানসিকতার জন্ম ও বিকাশ প্রতিরোধের আর কোন উপায় নেই, তবে সেটা বর্তমানে দেশের লোকে হজম করতে পারবে না। তাই দেশ রাজাকারমুক্ত হবার আশু কোন সম্ভাবনা কোনদিন দেখিনি। জামাত নিষিদ্ধ করন ফলপ্রসূ কিছু হবে না। সেটা হবে মূলতঃ সাইনবোর্ড বদলের আহবান। এই আন্দোলন নিয়ে তেমন আশাবাদী আমি প্রথম থেকেই ছিলাম না। যেখানে জনতার মাঝে মূল্যবোধের পার্থক্য খুব বড় সেখানে সামান্য আঘাত লাগলেই তথাকথিত ঐক্য চুরমার হতে বেশীক্ষন লাগে না, দরকার কেবল সামান্য টোকা।
আন্দোলনকারী আলেমগণ প্রথম থেকেই এই আন্দোলনের কড়া বিরোধীতা করে এসেছেন। তাদের আপত্তির কারনগুলি খুটিয়ে দেখুন, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা নিয়ে কিন্তু তেমন কোন কথা নেই। উদ্ভট কিছু পয়েন্টে তারা আগে জোর দিয়েছিলেন যেমন শাহবাগে আগুন জ্বালানো, নারী পুরুষের উদ্দাম মেলামেশা, কাদিয়ানী ষড়যন্ত্র এইসব ওজর। ডানপন্থী মিডিয়াগুলি প্রথম থেকে চেষ্টা করে গেছে একের পর এক নানান মিথ্যা ইস্যু তুলে আন্দোলন নষ্ট করতে। যেমন প্রথম ক’দিনের অভিযোগ ছিল এটা আওয়ামী লীগের দলীয় এজেন্ডা, কারন ইমরান সরকার লীগের লোক। কাজ হয়নি। এরপর ভূয়া ছবি দিয়ে সেখানে উলংগ নৃত্য চলছে, মদ গাজার আসর চলছে, এসব প্রচারনা। কাজ হয়নি। এরপর ধর্মে নিয়ে খেলা শুরু হল; আগুন জালানো হলে মহা অপরাধ – হিন্দুয়ানীর চর্চা চলছে। চুড়ান্তভাবে রাজীবের হত্যাকান্ডের পর তার লেখালেখি ট্রাম্প কার্ড হিশেবে লেগে গেল।
এরা একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যেত, এবং ধর্ম নিয়ে খেলতে থাকলে সফলতা আসতোই। না। শাহবাগ আন্দোলন না হয়ে স্বাভাবিক বিচারে আসামীদের ফাঁসীর রায় হলেও ‘অজামাতি’ পক্ষ থেকেই আন্দোলন গড়ে উঠত, জেল হাজত ঘেরাও ফেরাও হত।
@আদিল মাহমুদ,
আমার মনে হয় আপনার এই বিশ্লষলটিতে সামন্য ভুল আছে। আসলে এ দেশে বর্তমানে কোন আদর্শ ভি্ত্তিক রাজনীতি হয় না, মূলত রাজনীতি হয় (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে) ক্ষমতা ভিত্তিক। আওয়ামীলীগ বুঝে গেছে ধর্মের গুটি না চাললে এ দেশে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব না, সে কারণেই আওয়ামীলীগের এখনকার এ অবস্থান।তবে আওয়ামীলীগ ক্ষমাতার লোভে মুখে যা`ই বলুক এখনও তারা আসলে ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। সুক্ষভাবে তাদের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করলেই এটা বুঝতে পারবেন।
আজ দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে যদি ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা জাগ্রত হয় তবে বেশির ভাগ আওয়মীলীগ নেতার এমনকি বেশ কিছু বি, এন,পি নেতারও দেখবেন বোল কি রকম পাল্টে গেছে।ধন্যবাদ।
@বিষন্নতা,
ও কথাটা বলেছিলাম বর্তমানে বাংলাদেশীদের মাঝে ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটি নিয়ে অবসেশনের কারনে কি পরিমান সেলফ কন্ট্রাডিশকন চলে এসেছে সেটা বোঝাতে।
– খুবই মূল্যবান কথা বলেছেন। এটা সবচেয়ে ভাল জানে আওয়ামী বিরোধী শিবির। শাহবাগ আন্দোলনকারীদেরও একই সূত্রেই ইসলাম বিদ্বেষী জেনারেলাইজশন করা হয়েছে। এ কারনেই শাহবাগের মঞ্চে ধর্ম ব্যাবহার করে ধর্মব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে পালটা কৌশলে কোন লাভ হবে না আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি। আওয়ামী লীগও যতই ধর্ম ধর্ম ভাব ধরুক কোন লাভ নেই, এ দেশের আলেম সমাজ সাধারনভাবে চিরকালই আওয়ামী বিদ্বেষী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশে ইসলাম বিপন্ন হয়, বিএনপি আসলে ইসলাম বিপন্ন হয় না।
– খুবই সত্য কথা। রাজনৈতিক দল রাজনীতি করে ক্ষমতায় যেতে, তাদের ভোট পেতেই হবে, মানে ভোটারদের খুশী করতে হবে। ভোটাররা চাইলে টিকি পৈতে বাধতে হবে, ভোটাররা চাইলে টুপি দাঁড়ি লাগাতে হবে। এ কারনে আমি ধর্মের স্রোতে ভাসার জন্য লীগকেও তেমন দোষ দেই না। কথায় আছে যে দেশের জনগন যেমন সে দেশ তেমনই নেতা পায়।
@আদিল মাহমুদ, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন ভোটে জিতার জন্যে যে কোনো কিছু জায়েজ। প্রিন্সিপাল বলে কোনো কিছু নেই। এর কারন ভোটে জিতলে একচ্ছত্র রাজত্ব, গাড়ীভর্তি টাকার বস্তা নিয়ে বাসায় হোম সার্ভিস। আর ভোটে হারলে রাজপথে রক্তপাত, মাসের পর মাস জেল, হত্যা, গুম, গ্রেনেড হামলা। এটা এখন অল অর নাথিং। আমরা নিজেরা সংবিধান কাটাছেড়া করে আর নিজেদের মধ্যে বিভাজিত হয়ে সরাসরি দুই লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে দেশ তুলে দিয়েছি।
একারনেই আমি এখনো আশা করি যে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির কিছুটা সমাধান হওয়ার পরে হয়তো আমাদের জ্বর কিছুটা নামবে। আমরা সংবিধান, সরকার ব্যবস্থা, আইনের শাসন এসব নিয়ে কথা বলা শুরু করতে পারবো।
আমার একটা প্রশ্ন আছে, কেউ কি জানেন যে কাদের মোল্লার রায়ের পর পরই শাহবাগে প্রথমে কারা গিয়েছিলো এবং কারা সবাই কে আহবান করেছিলো? আমি যতদূর জানি বিখ্যাত ব্লগারদের মধ্যে থেকে এই আহবানের সূত্রপাত হয় নি। এদের অনেককেই প্রথমে দ্বিধান্বিত ছিলো রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে ট্রাইবুনালকে বিতর্কিত করে ফেলা হবে কি না এই নিয়ে।
@বিষন্নতা,
এবং-
দাবীটা মুক্তমনার ব্যানারে বহুদিন ছিল, সাথে আগামী নির্বাচনে জামাতকে অংশ গ্রহন করতে না দেয়ার দাবীও ছিল। কিছুদিন যাবত ভাবছি কাউকে প্রশ্নটা করবো। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে দেশের ক্ষতিটা কী হবে, অথবা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি থাকলে দেশের লাভটা কী হতে পারে?
@আকাশ মালিক,
আপনি হয়তো মনে করছেন যে দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চালু থাকার পক্ষে আমি, আসলে কিন্তু তা নয়।দেশে ধর্ম ভি্ত্তিক রাজনীতি চালু থাকার ফলে দেশের লাভের চেয়ে ক্ষতি হবে সেটাও বুঝি। কিন্তু বর্তমানে এ দেশের মানুষের যে মন মানসিকতা তাতে ধর্ম ভি্ত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সম্ভব না, বা করলেও কোন লাভ হবে না বরং দেশে অরাজকতা বাড়বে।তাছাড়া ধর্মভি্ত্তিক রাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না এমন দাবী করাটা ঠিক গণতাস্ত্রিক নয় এবং এটা মুক্তমনের পরিচায়কও নয়।এ কারণেই আমি বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই।
@বিষন্নতা,
পূর্ন একমত।
নিষিদ্ধ করাকরি কোন কাজের কথা নয়, গনতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিপরীত।
এমন ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেখানে নিষিদ্ধ করার প্রয়োযন হবে না, লোকে নিজের জ্ঞানেই বুঝতে পারবে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির মধু।
নইলে শুধু আইন করে নিষিদ্ধ করা অবস্থা আরো খারাপ ছাড়া ভাল ফল আনবে না।
@বিষন্নতা,
তা মনে করিনি, আসলেই জানার জন্যে প্রশ্ন করেছিলাম।
এই মানসিকতার কথা চিন্তা করেই বোধ হয় আওয়ামী লীগ বাহাত্তরের সংবিধানে গিয়েও বিসমল্লাহ ও রাস্ট্রধর্ম ইসলাম উঠাতে সাহস করে নাই। শরিয়ত বিরোধী নারী উন্নয়ণ নীতি করবেনা বললো, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করবেনা ঘোষণা দিল। নাস্তিকদের ধরার জন্যে কমিটিও করলো। এতো কিছুর পরেও কি পিঠের ছাল বাঁচাতে পারলো? নাকি পারবে? আওয়ামী লীগ আগে ছিল হিন্দু এখন পুরোপুরি নাস্তিক বিধর্মী। খালেদার ফতোয়া। আর ফতোয়ায় সমর্থন দিচ্ছে তারা যাদেরকে খুশী করতে আওয়ামী লীগ এতো কিছু করলো।
ভাল কথা, তা আমিও বিশ্বাস করি। প্রশ্ন থাকে, এ দেশের মানুষের বর্তমান মানসিকতা আদৌ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কি আছে, না কি এদের সংখ্যাই বাড়তে থাকবে, এরাই দিন দিন শক্তিশালী হতে থাকবে? এ থেকে উত্তরণের কি প্রয়োজন আছে, থাকলে কী ভাবে? চতুর্দিক থেকে হতাশা নিরাশার দীর্ঘশ্বাস তো টেরই পাচ্ছি। আমরা একে অন্যকে প্রচুর দোষারুপ করছি। সমস্যা নিরসনে কারো কাছ থেকে খুব একটা দিক নির্দেশনামূলক কিছু দেখছিনা। আমি কখনো বি এন পি, জামাত শিবির ও অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর এই নারকীয় তান্ডবের জন্যে শাহবাগ মঞ্চকে দোষারুপ করিনা। আমি মনে করি, এ সবের একটাই কারণ, যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করা। এর সাথে ইসলাম বা ইসলামবিদ্বেষী লেখালেখির কোন সম্পর্ক নাই। শাহবাগ চত্বরে নাস্তিক্যবাদী বা ইসলামের সমালোচনাকারী লেখক একজনও যদি না থাকতো, ছয়দফা নয়, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ নয়, শুধু মাত্র একটা দাবী যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করা হতো, তবুও বি এন পি, ও জামাত শিবিররা প্রজন্ম চত্বরকে নাস্তিক বেশরিয়তি, বেলেল্লা, বিধর্মী, মুরতাদ, অগ্নিপুজক প্রমাণ করে ছাড়তো। টিকে থাকার জন্যে বাঁচার জন্যে তাদেরকে এটা কোন না কোন ভাবে করতেই হতো। এমন কি শাহবাগ মঞ্চ সৃষ্টি না হলেও তারা রেল লাইন উলটাতো, বাসে আগুন দিত, মন্দির ভাঙ্গতো। ভুল করেছে সরকার, ভন্ড ইসলামী সেজে। নাক কাটা গেছে আওয়ামী লীগের। মোল্লাদের খুশী করতে যদি ব্লগারদের ধরতে হয় তাহলে সোজা মোল্লাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরে গেলেই তো হয়। মোল্লারা ভালমত খুশী হয়ে যেতো।
@আকাশ মালিক,
একটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন কিনা জানিনা, শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বে একই ঘটনা ঘটছে। হঠাৎ করেই সারা বিশ্ব ইসলামের প্রতি বিশেষ ভাবে অনুরাগী মানুষের সংখ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষপটে এটির একটি নেতিবাচক দিক আছে, কিন্তু উন্নত বিশ্বর পেক্ষাপটে এর তেমন কোন নেতিবাচক ফল আছে বলে আমি মনে করিনা।
ইউরোপ, আমেরিকার মত উন্নত দেশে উচ্চ শিক্ষিত মুসলিমদের মধ্যে এ প্রবণতা যেন আরো বেশি। এমন কেন ঘটছে সে সম্পর্কে আমার নিজস্ব একটি ব্যখ্যা রয়েছে, তবে তা কতটুকু যু্ক্তিযুক্ত জানিনা, সে কারণে এখানে আর ব্যখ্যাটি দিলাম না। এ ব্যাপারে যদি কোন গবেষণা হয়ে থাকে বা কারও নিজস্ব কোন মতামত থাকে তবে তা আলোচনা করলে খুশি হতাম।
এ দেশের বেশিরভাগ মানুষের যদি ধর্মের প্রতি অন্ধ অনুরাগ থাকে তবে কি দরকার নিজের জীবন বিপন্ন করে তাদেকে সেখান থেকে
টেনে বের করার চেষ্টা করা? বড় জোর মুক্তমনা মানুষগুলো তাদেরকে আলোর পথ দেখাতে পারে। তারপর এ দেশের মানুষগুলো আলোর পথে আসবে না অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকবে সেটা তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।হয়তো এতে মুক্তমনের মানুষগুলো ক্ষতি গ্রস্থ হবে, তবে বৃহত্তর মানুষের মতকে মেনে নেওয়া ছাড়া আপাতত কোন পথ দেখছি না।
@বিষন্নতা,
– কে ব্যাক্তি জীবনে কোন ধর্ম অনুসরন করে; মসজিদে যায় না মন্দিরে যায় নাকি কোথাওই যায় না সে নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নেই। সে হিসেবে বিশ্বের ১০০% লোকে ইসলাম গ্রহন করলে কিছু যায় আসে না। যে কোন ধর্মেরই নেতিবাচক দিক প্রকাশ হয় সে ধর্মের যাবতীয় বিধিবিধান সবই নিখুত এই অন্ধবিশ্বাস অবলম্বন করে তার প্রয়োগের চেষ্টা শুরু করা হলে। উন্নত বিশ্ব বা পশ্চীমেও নেতিবাচক ফল আসতে বাধ্য যদি কোন ধর্মের লোকেরা সেখানকার ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান ব্যাবস্থা পালটে নিজেরা যে ধর্মে বিশ্বাসী সে ধর্মীয় সূত্র বার করে সংবিধান পালটানো শুরু করে। আজকে আমেরিকা কানাডা ইংল্যান্ড এদের সংবিধান খৃষ্ট ধর্মমতে চালানো শুরু করলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অবস্থা কেমন হতে পারে বলে মনে করেন?
– এটা আমাদের এখনকার আলোচনার বাইরে। খুব সংক্ষেপে বলা যায় এর পেছনের মূল কারন ইসলামের কিছু বিধিবিধান যার প্রেক্ষাপট ইসলাম প্রথম নাজিল হবার সময়কার নানান ঘাত প্রতিঘাতময় ইতিহাস, বিশ্বরাজনীতি, সর্বোপরি মধ্যপ্রাচ্যের ফান্ডিং এ নানান প্রচারনা।
– আমারো কথা অনেকটা একই রকমের। মূল্যবোধ জাতীয় ব্যাপার জোর করে পালটানো যায় না নিজে থেকে না বুঝলে। কেউ অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়, অনেকে ঠেকেও শেখে না।
@বিষন্নতা,
আপনি যে কথাগুলো লিখেছেন, লেখক তার পোস্টে সেটা নিয়েই চমৎকার বিশ্লেষন করছেন। আপনি কি পোস্টটা পড়েছেন?
@ফারহানা আহমেদ,
জি পোষ্টটি পড়েছি, লিঙ্কগুলো পড়িনি।এ পোষ্টের অনেক বিষয়ের সাথে আমি একমত, আবার কিছু কিছু বিষয়ের সাথে একমত নই। আমি এখানে পোষ্ট সম্পর্কে নয় বরং পোষ্ট সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমার নিজস্ব মতামত প্রদান করেছি। আপনি হয়তো লক্ষ করে থাকবেন এখানে মন্তব্য এবং পাল্টা মন্তব্য করতে করতে অনেক সময় পোষ্ট সংস্লিষ্ট বিষয় থেকে অনেক দূরে চলে যাওয়া হয়, তাছাড়া আমরা যারা এ ব্লগের রেজিষ্টার লেখক নই, তাদেরকে নিজস্ব মতামত তুলে ধরার জন্য মন্তব্যের উপরই ভরসা করতে হয়।
বিষয়গুলো আপনার সদয় বিবেচনার জন্য পেশ করলাম।ধন্যবাদ।
@বিষন্নতা,
আপনার চিন্তাভাবনা বেশ পরিষ্কার, আপনি রেজিষ্টারড নন জানতাম না।
দেশে এমন একটা অস্থির আর পরিবর্তনশীল সময় চলছে যে কোনরকম বিশ্লেষনই মনে হয় প্রকৃত পরিস্থিতিকে ধরতে পারছে না। প্রকৃত পরিস্থিতি কি এটা সরকার, বিরোধী, জনগন কেউ বুঝতে পারছে বলেও মনে হয় না। সরকার, বিএনপি, জামাত, শাহবাগ আন্দোলন, অন্যান্য ইসলামী দল সবাই যে যার মতো মুভ করছে, তবে এদের সবার মধ্যে এখন মনে হয় সবচেয়ে কনফিউজড আর দূর্বল অবস্হানে আছে শাহবাগ নেতৃত্ব। দুদিন আগে ফেসবুকে চিটাগাং থেকে ফিরে যাওয়া শাহবাগ নেতাদের বিবৃতির ভিডিও দেখলাম। এত অসহায় আত্মসমর্পন আর করুন ভাষা মনে হয় না সবচাইতে নিদারুনভাবে পর্যুদস্ত পক্ষও কখনো বলেছে। কদিন পরে শাহবাগ নেতাদের মাথায় টুপিও উঠতে পারে।
কোনো যুদ্ধ বা আন্দোলন শুরু করার জন্যে প্রচন্ড আবেগের দরকার পরে কিন্তু যুদ্ধ শুরু হবার পর নেতা, সিদ্ধান্তগ্রহনকারীদের হতে হয় প্রচন্ড রকমের নিরাবেগ। যুদ্ধের লক্ষ্য, স্ট্র্যাটেজী এসব নির্ধারনে আবেগের স্থান নেই। যেকোন যুদ্ধের কতগুলো অবশ্য পালনীয় দ্বায়িত্ব হলো শত্রুকে পরিষ্কার চিন্হিত করা, শত্রুর সকল সম্ভাব্য কৌশল বিবেচনা করা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হলো শত্রুকে যথাসম্ভব আলাদা করে দূ্র্বল করে ফেলা এবং মি্ত্র সন্ধান করে নিজেকে অপরাজেয় শক্তিতে পরিনত করা।
অনেক আগে থেকেই দেখেছি যে বাংলাদেশে যারা সেকুলার, বাংগালী জাতিয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধ এসবের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন তারাই সবচেয়ে বেশী আবেগী এবং অবাস্তব। তারা তাদের কল্পিত এক বাংলাদেশে বাস করেন, যে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক, জাতিগত সাংষ্কৃতিক এবং যেখানে জনগনের বৃহত্তম অংশ ঐক্যবদ্ধ। একারনেই তারা প্রায়ই শিকার হয় Reality Bites এর।
অন্যদিকে জামাত ও অন্যান্য কয়েকটি ইসলামী দল মানুষের ধর্মীয় আবেগকে ব্যবহার করায় সুনিপুন, কিন্তু তারা বিএনপি-আওয়ামী লীগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ছোট গনভিত্তিকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতিতে লক্ষ্য হাসিলের জন্যে এত নিরাবেগ আর cynical যে স্বয়ং চাণক্য-মেকিয়াভেলীরা এদের কলাকৌশল দেখলে মুগ্ধ হয়ে যেতেন।
@সফিক,
অত্যন্ত সত্য কথাগুলি চমতকারভাবে বলেছেন। আমি দেশের অবস্থা বা আন্দোলন নিয়ে সামগ্রিকভাবে এখনো চিন্তা করিনি। মনে হচ্ছে যে রাজীব হত্যার পর তার প্রকাশিত নানান ইসলাম বিদ্বেষী লেখা কেন্দ্র করে আন্দোলন সমর্থক জনতার মাঝেই বড় ধরনের ছন্দপতন ঘটেছে। যাতে বর ভুমিকা রেখেছে আলেম মোল্লাদের চলমান আন্দোলন। কৌশলগত কারনে আন্দোলনকারীরা আলেমরা যত গরম হবেন ওনারা তত নরম হবেন এই নীতি বজায় রেখে চলেছেন। যেভাবে চপোটাঘাত খেয়ে চলেছেন তার চাইতে এমন আন্দোলন না হওয়া অনেক ভাল ছিল। মৌলবাদী শক্তি আবারো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখালো যে এই দেশে তাদের দাপট কতটা, সরকার সমর্থিত এই বিশাল আন্দোলন তাদের হুজুর হুজুর করে।
দেশের অবস্থা দেখলে মাঝে মাঝে মনে হয় বুঝি দূঃস্বপ্ন দেখছি। রাজনীতিতে ধর্মের এমন কদর্য, নির্লজ্জ ব্যাবহার পাকিস্তান আমলেও হয়নি।
– সঠিক। তারা কেন যেন ধরে নেন যে সময়কাল ‘৭১ সালের মার্চ মাসেই থেমে আছে। জাফর ইকবাল স্যারের মত লোকেরও এই ত্রুটি আছে। এর অবশ্যম্ভাবী ফল যেটা সেটা হল,
যুদ্ধে নেমে অপ্রত্যাশীত প্রতিপক্ষের সাথে লড়াই, যেটা বর্তমানে হচ্ছে। মূল বাস্তব কারন হল তারা মনে করেন যে জামাত শিবিরই কেবল তাদের মূল শত্রু। যেহেতু জামাতের প্রকাশ্য সমর্থক ভোটের হিশেবে নগন্য তাই আর চিন্তার কিছুই নাই।
– আন্দোলনকারীরা এটা করতে গেছিলেন ধর্মে নিয়ে পালটা খেলা খেলতে গিয়ে। তাদের কিভাবে যেন ধারনা হয়েছে যে নিজেরা টুপি পড়ে মিডিয়ায় কোরান আওড়াতে থাকলে আর কিছু আলেম ধরে জামাত শিবির আসলে অনৈসলামিক এসব ফতোয়া দেওয়াতে পারলেই কেল্লা ফতে। দেশের যাবতীয় আলেমগন শাহবাগ মঞ্চে এসে জামাতের বিরুদ্ধে ঐক্যমত প্রকাশ করে যাবে। এটা হয়েছে বুমেরাং। ভিখিরির মত আলেমদের দূয়ারে করুনার আশায় গেছিলেন, আলেমগন দূর দূর করে তাড়িয়েছে। শান্তিপূর্ন আন্দোলন মানে মেনি বেড়ালের মত মিন মিন করা নয়।
– এর মূল কারন ডেডিকেশন। এ লড়াই জামাতের জন্য ডু অর ডাই এর লড়াই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির জন্য আসলে মুখে যত যাইই বলুন ততটা নয়। জামাত হল আদর্শ ভিত্তিক বা ক্যাডার ভিত্তিক দল। তারা দলীয়ভাবে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান চালায় যার টাকা দলীয় কাজে লাগায়, বিএনপি আওয়ামীরা লুটপাট করে টাকা যার যার পকেটে ভরে; জামাতকে যত যাইই গালি দেওয়া হোক এটা তো অস্বীকার করা যায় না। সেই টাকা জামাত যুদ্ধপরাধী বিচারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে পর্যায়ে খরচ করেছে, এবারের আন্দোলন বানচাল করতেও কাজে লাগাচ্ছে।
আরেকটি বড় কারন হল দেশের লোকের ধর্মের প্রতি অবসেশন। এ কারনে তারা অত্যন্ত সফলভাবে আস্তিক নাস্তিক ইস্যু তুলে আন্দোলনের মোমেন্টাম নষ্ট করে দিতে পেরেছে।
লশ অফ মোমেন্টাম কতটা প্রকট সেটা বোঝা যায় দেশের বুদ্বিজীবি মহলের নীরবতা দেখলেও। ওনারা সাধারনত এমন অবস্থায় ঘন ঘন বিবৃতি দিতে পছন্দ করেন। আজ অনেকদিন পর দেখলাম কয়েকজন কিছু বলেছেন।
আসলে আন্দোলনে বিভাজন মূলত শুরু হয়েছিল ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের দাবী কেন্দ্র করেই। ধর্মভীরু লোকজন তখন থেকেই আন্দোলন সন্দেহ করতে শুরু করে, এরপর রাজীবের লেখা আর আলেমদের আন্দোলন তাদের সিদ্ধান্ত নিতে চরমভাবে সাহায্য করেছে।
অযথা কাউকে নাস্তিক বা কাফের বলা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ !
قال المستبان ماقالا فعلى البادىمالم يعتد المظلوم- رواه مسلم
: হযরত আবু যার (রা) থেকে বর্নিত, রাসুল সা. বলেছেন, যে ব্যাক্তি কাউকে কাফের বলে ডাকে অথবা আল্লাহর শত্রু বলে, অথচ (যাকে কাফের ও আল্লাহ তাআলার শত্রু বলা হচ্ছে) সে তা নয়, তখন তার কথা নিজের দিকে ফিরবে। (বুখারী ও মুসলিম , মিশকাতঃ ৪৬০৬ অধ্যায়ঃজিহ্বার সংযম,গীবত…গাল -মন্দ প্রসঙ্গে।)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি তার অপর কোন ভাইকে কাফের বলে, তাহলে তা উভয়ের যেকোন একজনের দিকে ফিরবে।যদি সে যেমন বলেছে বাস্তবে তা’ই হয়, তাহলেতো ঠিক আছে, নতুবা উক্ত বিষয়টি যে বলেছে তার দিকেই ফিরে আসবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২২৫,সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-২৫০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৫০৩৫, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-৫৪, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২৩৭)
@(নির্জলা নির্লজ্জ),
এসব কথা কে কাকে বোঝায়।
এত বড় বড় বিজ্ঞ আলেম যাদের টাইটেল শুনলে ভিরমী খেতে হয় ওনারা জানেন না বেহুদা কাউকে অমুসলমান গাল দেওয়া কত বড় অপরাধ? এমনকি নিজেরই কাফের বনে যেতে হয়? এ হিশেবে শাহবাগিদের গনহারে নাস্তিক গাল দেওয়া আলেমরাই সম্ভবত কাফের বনে গেছেন।
এখন অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হচ্ছে যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অথবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে কথা বলা মানেই নাস্তিক উপাধি পাওয়া যেমন এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলাটা রাজাকার হওয়ার সামিল বলে গন্য হয়। জামাতীরা খেলায় মনে হচ্ছে ভালোই জিতে গেলো, আর এর কৃতিত্ব দেয়া যায় সরকার সহ ক্ষমতালিপ্সু সকল রাজনৈতিক দলগুলোর ধর্মের তোষন ও বর্তমানে দেশের ধর্মে নব দিক্ষিত লোকগুলোর মানসিকতা।
আপনার ঐ কথাটাই ঠিক,
@ব্রাইট স্মাইল্,
একই কথা এই প্রসংগে অতীতে বহুবার বলে এসেছি।
আমাদের দাবী আমরাও জোরাল মুসলমান। একই সংগে আমাদের এটাও দাবী
১।যে সব ব্যক্তিরা আল্লাহর দোহাই দিয়ে গণ হত্যা,গণধর্শন,বাড়ীঘর জ্বালাও পোড়াও করেছে- তাদের আইনানুসার সর্বোচ্চ শাশ্তি প্রদান করা হউক।
২।জামাত-শিবিরকে এই মুহূর্তেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হউক।
এই দাবী গুলীর কারণে আমি অবশ্যই মুসলমানিত্ব হতে বহিষ্কৃত হইবনা।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এ রকম একটা গবেষণা ধর্মী লেখার জন্য।
গতকাল মসজিদের ইমামও বলছিলেন “অই নাস্তিক/মুরতাদ ব্লগারদের ফাঁসি চাই, এ জন্য আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিল হবে” অথচ উনি জানেনই না যে ব্লগ কি! ! !
তাদের বোঝাবে কে?
শুধুমাত্র তাদের কারনেই সাধারন মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে গেছে যে শাহবাগে যারা আন্দলন করছে তারা সবাই নাস্তিক। সে মানুষগুলার ইমামের দেয়া বার্তা যাচাইয়ের কোন পথ নাই। তারা যেটা শুনবে সেটাই বিশ্বাস করবে। আজ আমি বুঝালে আমার কথা বিশ্বাস করে আবার যদি ইমাম বলে; তার কথাও বিশ্বাস করে। কিন্তু মনে মনে ঠিকই ইমাম যেটা বলছে সেইটা মানবে। কারন ধর্ম ভীতি বলেন আর প্রীতি বলেন তা সবারই আছে।
@ওয়াদুদ,
এটাই বাস্তবতা, তিক্ত সত্য। যে দেশে যুক্তিবোধের চর্চা অতি দূর্বল, সে দেশে ধর্মীয় জোশের কাছে সূস্থ স্বাভাবিক যুক্তিবোধ, বিবেচনাবোধ পরাজিত হয়। সাঈদী অনেকের চোখে নিরপরাধ কারন আসলে বিতর্কিত বিচার আদালত এসব কচকচানি নয়, আসল কারন সে বিরাট ইসলাম সেবক, ৭০০ বিপথগামী কাফেরকে সত্য পথের সন্ধান দিয়ে ঈমানী দায়িত্ব পালন করেছে। সেটা সবসময় সরাসরি বলা যায় না বলে আদালত নিয়ে নানান বিতর্ক, শাহবাগিরা সকলে নাস্তিক এসব বলতে হয়।
যে সমাজের উচ্চশিক্ষিত লোকে মসজিদের গম্ভুজ নিজে নিজে উড়ে বসে যাবার ভিডিও শেয়ার করে ঈমানী দায়িত্ব পালন করে সে দেশের সাধারন লোকে মসজিদের মাইকে চাঁদে সাঈদীর ছবি ভেসে ওঠার সংবাদে রাস্তায় নেমে জেহাদের নামে তান্ডব করবে সেটাই স্বাভাবিক, বাস্তবতা, লাইক ইট অর নট।
যুদ্ধপরাধীদের বিচারের বাধা আসলে জামাত শিবির নয়, আসল বাধা এই মানসিকতা। জামাতের সাথে লড়াই অনেক সহজ, কিন্তু এই মানসিকতার সাথে লড়াই সহজ নয়। এই মানসিকতা দূর্বল না হলে জামাত শিবিরের পরাজয় নেই, বড়জোর সাইনবোর্ড বদল হতে পারে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রথম দফা ধন্যবাদ ‘হেফাজতে ইসলাম’ নামক হঠাৎ আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসা সংগঠনটির পরিচয় উদঘাটনের জন্য। নূন্যতম বুদ্ধিসম্পন্ন যে কোন বাংলাদেশীর পক্ষে হেফাজতে ইসলামের হঠাৎ এই রণহুঙ্কার, বিপুল বিক্রমে যুদ্ধে নামা এসবের পেছনে আসলে কারা সেটা ধরতে কোন সমস্যা হয়নি। আপনি তথ্যপ্রমাণগুলো খুঁজে বের করে একসাথে উপস্থাপন করে তাদের সেই ধারণাটিকে শক্ত ভিত্তি দিলেন।
হেফাজতের কাজকারবারে প্রশাসনের অপেক্ষাকৃত নমনীয় মনোভাব আমার কাছে দৃষ্টিকটু লাগে। আজকের নূন্যতম অবহেলার জন্য আগামীকাল বিপুল মাশুল গুনতে হবে।
দ্বিতীয় দফা ধন্যবাদ গণজাগরণ কর্মীদের বিরুদ্ধে নাস্তিকতার অভিযোগ ডিফেন্ড করতে গিয়ে তারা নিজেরা কত বড় ধার্মিক সেটা প্রমাণের অপ্রয়োজনীয় চেষ্টার ব্যাপারটি তুলে ধরার জন্য। খোদ বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বাংলাদেশ বেতার-এ প্রতিদিন সকালে দেশের প্রধান চার ধর্মের ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করার সংস্কৃতি না থাকলেও গণজাগরণ মঞ্চ তাদের সমাবেশগুলোতে এই সংস্কৃতি চালু করেছে। আজকেও পত্রিকায় দেখলাম ডাঃ ইমরান এইচ সরকার ব্যক্তিগতভাবে কতো ধার্মিক ব্যক্তি বিভিন্ন জন সেটা প্রমাণের চেষ্টা করছেন। নাস্তিকতার অভিযোগটিকে অযাচিত গুরুত্বের সাথে হ্যান্ডেল করায় গণজাগরণ মঞ্চের মূল ইস্যুটি এখন সাধারণের আলোচনায় পেছনের সারিতে চলে গেছে। এই পরিস্থিতিটিই জামায়াতীরা তৈরি করতে চাইছিল।
সরকারে থাকা দলগুলো যে এই প্রতারণার ব্যাপারটি যে ধরতে পারে না তা নয়। তবে তাদের মাথায় আগামী নয়-দশ মাসের মধ্যে একটা জাতীয় নির্বাচন থাকায় তারা ভোট নষ্ট করার ঝুঁকি নিতে চাইছে না। আমরা দেখেছি ভোটের সময় আসলে মাথায় টুপি-হিযাব ওঠার, ব্যাপক ধর্মকর্ম শুরু করার, মৌলবাদী দলগুলোর সাথে নানা সন্ধি-সমঝোতা করার নোংরা তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। কে কতো বড় ধার্মিক সেটা প্রমাণের জন্য সবাই উঠেপড়ে লাগে।
জামায়াতের পাতা ‘নাস্তিকতা ইস্যু’র ফাঁদ থেকে এখনই বের হয়ে না আসলে সামনে যে খাদে পড়তে হবে আগামী নির্বাচনে জিতলেও আওয়ামী লীগ আর তার সঙ্গীরা সেটা থেকে উঠতে পারবে না।
@ষষ্ঠ পাণ্ডব,
হেফাজতে ইসলাম শাহবাগ আন্দোলনের বিরোধীতা রাজীবের মৃত্যুর পর নাস্তিকদের ইসলাম বিদ্বেষী লেখালেখির কারনেই শুরু করেছে এই ধারনা সম্পূর্ন ভুল। হেফাজতে ইসলাম রাজীবের মৃত্যুর ৩ দিন আগ থেকেই শাহবাগ আন্দোলন ইসলাম বিদ্বেষীদের ষড়যন্ত্র বলে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এটা কিভাবে অস্বীকার করা যায়? যেসব কারন তারা তখন দেখাচ্ছিল সেসব কারন এতই গোঁড়ামী আর অন্ধ বিদ্বেষপূর্ন যে সেসব নিয়ে মন্তব্য নিষ্প্রয়োযন।
– আসলেই তাই। এ জন্যই আমি মনে করি শাহবাগ আন্দোলন না হলেই মনে হয় ভাল হত। যারা নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশার কারন দেখিয়ে কোন আন্দোলনের বিরোধীতা করতে পারে তাদের পদতলে ব্রুট মেজরিটির সরকার, আন্দোলনকারীদের আত্মসমর্পনের মাশুল সামনের দিনে বড় করে দিতে হবে। দেশে মৌলবাদী শক্তির এহেন বিজয় মনে হয় আগে কোনদিন হয়নি। আন্দোলনকারীরা দুয়েকজনের ফাঁসির দাবীর বিনিময়ে মনে হয় দেশে সৌদী কায়দার শরিয়তি আইন কায়েমের দাবীতেও একমত হয়ে যাবে।
– মৌলবাদী শক্তি, জামাত শিবিরের সবচেয়ে বড় বিজয় এখানেই। আন্দোলনকারীরা খুব সহজেই এদের ফাঁদে ধরা পড়ে গেছেন, জানি যে তারা বলবেন এটা কৌশলগত কারনে করতে হয়েছে। এ কৌশল আসলে ব্যাক ফায়ার করেছে। কে কত বড় ধার্মিক, আমাদের মধ্যে কোন নাস্তিক নাই এসব করে কি লাভ হয়েছে? খালেদা ম্যাডাম পর্যন্ত সরাসরি শাহবাগের সকলে নাস্তিক রায় দিয়েছে।
আন্দোলনকারীরা কেবল যা সত্য তাই প্রথম থেকে বলে আসলে এমন হত না, আন্দোলনের সাথে কারো ব্যাক্তিগত ধর্মবিশ্বাসের সম্পর্ক নেই, আস্তিক নাস্তিক সকলেই এখানে স্বাগত, আন্দোলনকারীদের কারো ব্যাক্তি জীবন সম্পর্কেও দায় নেই। এ কথায় যদি দেশের বড় সংখ্যক মানুষ প্রভাবিত না হয়ে সব কৃত ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন হেফাজতে ইসলাম, ১২ দল এদের কথায় প্রভাবিত হয় তবে সে দেশে এমন আন্দোলন পরিত্যাগ করাই ভাল। তাতে অন্তত অবস্থা আরো খারাপ হবে না।
গত নির্বাচনে ব্যাতিক্রম ভাবে ইসলাম বিপন্ন এই কার্ড তেমন কাজে আসেনি। এইবার আর এটা এড়াবার উপায় নেই। সামনের নির্বাচনে কত রকমের ভন্ডামি ভড়ং যে দেখতে হবে।
আমি সিরিয়াসলিই চিন্তা করি যে দেশে তালেবান জাতীয় কোন শক্তি ক্ষমতায় আসুক। নইলে উপযুক্ত শিক্ষা হবে না।
ধন্যবাদ আপনাকে।
@আদিল মাহমুদ,
আমিও। তখন আমরা দেখবো, বাংলাদেশের খলিফা মাথায় আটার বোঝা নিয়ে রাতের অন্ধকারে গরীবের সন্ধানে ছুটেছেন। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সোনার বোঝা কাঁধে করে উলঙ্গ হয়ে হেঁটে যাচ্ছে যুবতি নারী, কেউ চোখ তুলে তার দিকে তাকাচ্ছেনা। দেখা যাবেনা রাস্তায় কোন অভুক্ত কুকুর। আমরা দেখবো, উটের উপরে ভৃত্য সোয়ার, আর লাগাম টেনে নিচ্ছেন খলিফা সাঈদী বা গোলাম আযম। এই তামান্নাই করে, এই সপ্নই দেখে এ দেশের বেশীরভাগ মুসলমান। আল্লাহ তাদের খায়েশ পুরন করুক, মঞ্জিলে মকসুদে পৌছার তওফিক দান করুন। আমিন।
@আকাশ মালিক,
আমিন, ছুম্মা আমিন!
@আকাশ মালিক,
আমিন।
আমিও সেই দিনের অপেক্ষায় আছি, আফটার অল, এত কিছুর লক্ষ্য তো ভাল জীবন ব্যাবস্থা। সেটা যেভাবেই কায়েম হোক। আপনার বর্নিত ব্যাবস্থা যে আনতে পারবে তার সাথেই আছি।
তবে বাংগালী রুটি পছন্দ করে না, খলিফাকে আটা নয়, চালের বস্তা ঘাড়ে করেই দরিদ্রের সন্ধানে বেরুতে হবে। সেটা সম্ভবত পাকিস্তানী বাঁশমতি চাল হবে।
@আদিল মাহমুদ,
ভেরি গুড ভেরি গুড। যে বাঁশ দিছে খালেদা আজ, হ্যাঁ বাঁশমতি ই হবে।
@আদিল মাহমুদ, (Y)
@আদিল মাহমুদ,
(Y) সহমত
অনেক তথ্য জানতে পারলাম।
একটা তথ্য দিতে পারেন, বাংলাদেশে এপর্যন্ত কতগুলী ইসলামিক রাজনৈতিক,অরাজণৈতিক পার্টি ও সংগঠন আছে?
বিএনপি ও কী বর্তমানে একটি ইসলামী পার্টি? তাহলে এখন আওয়ামী লীগও একটি ইসলামিক পার্টি হয়ে গেলেই তো হল। তাহলে নিউট্রাল ভারসাম্য হয়ে যায়।
তাহলে ধর্মের আর কোন বিশেষ বাহাদুরী থাকেনা।
ধন্যবাদ আপনার তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধটির জন্য।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
চমৎকার আইডিয়া ভাই। (Y)
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
বাংলাদেশে এপর্যন্ত কতগুলী ইসলামিক রাজনৈতিক,অরাজণৈতিক পার্টি ও সংগঠন আছে?
অরাজনৈতিকের তো হিসেব করা সম্ভব নয়। লাখ খানেকের ঘরে হওয়া খুবই সম্ভব।
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক সংখ্যা জানি না। আছে মনে হয় অসংখ্য। বছর পাঁচেক আগের এক হিশেবে বিভিন্ন ইসলামী নামের মোড়কে চিহ্নিত জংগী সন্ত্রাসী দলের সংখ্যা ছিল ৫৩। মোট ইসলামী রাজনৈতিক দল নিশ্চয়ই আরো বেশী হবে। সংখ্যা খুব গুরুত্বপূর্ন নয়, বেশীরভাগই কাগুজে বা বড়জোর ২/৪ জন সদস্যের।
– খুব গুরুত্বপূর্ন কথা। আমিও এটা নিয়ে ভেবেছি, সামনের পর্ব লেখায় কিছুটা আলোকপাত করব। অনেকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করাকে জামাত শিবির প্রতিরোধের অন্যতম অস্ত্র মনে করেন। প্রথমেই প্রশ্ন আসে যে ধর্মভিত্তিক দল মানেটা আসলে কি? বিএনপিকে কি বলা যায়? আওয়ামী লীগও বা সে পথ থেকে কতটা দূরে?
‘৯৬ সালের নির্বাচনে হাসিনা হিজাব তসবিহ হাতে ছবি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন, ২০১৪তে মনে হয় নামবেন পুরো শরিয়তি বোরখা নিয়ে, ‘৭২ সালের সংবিধান করে ওনার পিতা অন্যায় করেছিলেন এই দাসখত লিখে দিয়ে। নইলে তো ভোটের বাজার অন্ধকার পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি।
হাফেজ্জী হুজুর আর শাহ আহমদ শাফি যদি জামাতি হয়ে তাহলে বাংলাদেশের কোন আলেমই স্বাধীনতার পক্ষে নাই! এমনকি তাবলীগ জামাতের গুলোও না। কারণ তারাও এই দুইজনকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করে।
ব্যাপারটা কি দাড়াল নাস্তিক ছাড়া দেশে খাটি দেশ প্রেমিক নাই।
তাড়াতাড়ি এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলুন। দেশ তো পুরাই স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে চলে গেল।
বাস্তবতা হচ্ছে নাস্তিকরা নিজেদের ব্যানারে বাংলাদেশে কোন ালও ফালাইতে পারে নাই। কোনদিন পারব না। াল ধইরা টানাটানি করলে হুমায়ন আজাদ না হয় তসলিমা নাসরিনের মত অবস্থা হবে।
মুরগির কলিজা নিয়ে কোন আন্দোলন হয় না।
@অ্যানোনিমাস,
খুব ইন্টারেষ্টিং যুগান্তকারী ধারনা দিয়েছেন।
– এমন দাবী আমি কোথায় করেছি একটু দেখান। এদের কাউকেই আমি সজ্ঞানে ‘জামাতি’ কোনদিন বলিনি। আপনি মনে হয় ‘৭১ সালে রাজাকারি বা পাক বাহিনীর দালালি করা মানেই ‘জামাতি’ এই ধারনা নিয়ে বসে আছেন। আপনার ধারনা ‘৭১ সালে জামাত ছাড়া আর কেহ স্বাধীনতা বিরোধী ছিল না? বর্তমানেও নেই?
মাওলানা মোহাম্মদউল্লাহ হাফেজ্জ্বী হুজুরের ‘৭১ সালের ভূমিকা “একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়” বই এর ৭৯ নং পৃষ্ঠায় পরিষ্কার করে বিস্তারিত বর্ননা আছে, দয়া করে পড়ে নিন। সামান্য একটু দেই, “বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের চতুর্থ প্ল্যালফর্মটি হচ্ছে হাফেজ্জী হুজুর নামে পরিচিত মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহর নেতৃত্বাধীন খেলাফত আন্দোলন। এই দলেরও বয়োজ্যেষ্ঠ কর্মীদের প্রায় সকলেই হয় শান্তি কমিটির সদস্য নতুবা রাজাকার। স্বাধীনতার পর অন্যান্য দালালদের মত হাফেজ্জীও একাত্তরে নিজের ভূমিকা ঢেকে ফেলতে ততপর হয়েছেন, কিন্তু তিনিও পাক সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে মদদ যুগিয়েছেন”। আপনার আর কতটা জানার আছে?
অবশ্য আজকাল মুক্তিযুদ্ধে আলেমদের ভূমিকা কত উজ্জ্বল সেটা প্রমানের জন্য কই যেন দেখি হাফেজ্জীর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধে যাবার দাবী করা হয়।
সোজা কথায় হাফেজ্জী হুজুর জামাতি নন, ইনি বেশ নরম সরম হুজুর হিসেবেই পরিচিত ছিলেন, ‘৮১ সালে জিয়া মারা যাবার পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু ‘৭১ সালে ওনার ভূমিকা পাক বাহিনীর দালালি ও হত্যাযজ্ঞে সহায়তা। আমিনী হুজুর ওনার জামাতা।
শাহ আহমেদ শাফি সম্পর্কে জামাতি কিংবা ‘৭১ এর ভূমিকা এমন কিছুও বলা হয়নি। শুধু এটাই বলা হয়েছে যে উনি বা ওনার দলবল শাহবাগ আন্দোলন প্রথম থেকেই বিরোধীতা করেছেন, ব্লগার রাজীবের মৃত্যুর আগ থেকেই। কেন করেছিলেন?
এটাও পরিষ্কার যে ওনার হেফাজতে ইসলাম দলের পক্ষ থেকেই যুদ্ধপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে শ্লোগান তোলা হচ্ছে এখন প্রকাশ্যেই। এ থেকে উনি ‘জামাতি’ কিনা বুঝে থাকলে তা আপনার সিদ্ধান্ত, আমার নয়।
তাবলীগ জামাত বা কাকে শ্রদ্ধা করে অশ্রদ্ধা করে সে দিয়ে ইতিহাস বদল হয় না। কুখ্যাত রাজাকার মাওলানা মান্নান মারা যাবার পর এ দেশের রাজধানীতেই শোকার্ত লাখো জনতার সমাবেশ হয়েছিল, তাতে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে পদক পাওয়া একাধিক বীর মুক্তযিযোদ্ধা, এমনকি সেক্টর কমান্ডার পদের লোক। এই রাজাকারের পত্রিকা ইনকিলাব এক সময় ছিল দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পত্রিকা। আরো কয়েকজন উল্লেখযোগ্য স্বাধীনতা বিরোধী ইসলামী জ্ঞান বিজ্ঞান লাইনে অবদানের জন্য দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত, তাতে তাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন অবস্থান ভূল প্রমান হয়ে যায়?
এসব তথ্য প্রকাশ করা মানে হল নাস্তিকতা, তাই না? হবেও বা, “একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়” বইটি প্রকাশ করেছিল মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্র নামক এক নাস্তিক সংগঠন, মূল লেখকদ্বয়ের দুই জন ড। আহমেদ শরীফ ছিলেন স্বঘোষিত নাস্তিক এবং শাহরিয়ার কবির ছূপা নাস্তিক আমরা সকলেই জানি। আপনি এবং আপনার সমমনারা এক কাজ করেন, জাতিকে এসব ভ্রান্ত ইতিহাস থেকে বাঁচান। হেফাজতে ইসলাম, ১২ দলীয় জোট এসব ‘অজামাতি’ বুজুর্গ ব্যাক্তিদের নিয়ে ইতিহাস গবেষনা করে জাতিকে উপহার দেন।
– দ্বি-মত করতে হচ্ছে। দেশে মনে হয় আসলে সকলেই নাস্তিক। এখন এটা পরিষ্কার যে দেশ আসলে দীর্ঘদিন ধরেই নাস্তিকরা চালাচ্ছে। খালেদা ম্যাডামের মতে (অবশ্যই আপনার প্রিয় আলেম আল্লামা শাফির মতেও) শাহবাগে যাওয়া সকলে নাস্তিক। এর কারন হুজুরদের মতে নাস্তিকদের সাহচার্যে যারা থাকে, সহায়তা করে তারাও নাকি নাস্তিক। সরকারের কয়েক মন্ত্রী নাস্তিক এমন ফতোয়া আপনার প্রিয় আলেমরা নাম ধরেই দিয়েছেন। এসব নাস্তিক মন্ত্রীদের মদদদাতা প্রধানমন্ত্রীও নিশ্চয়ই নাস্তিক? অতএব দেশ নাস্তিকরা চালাচ্ছে প্রমানিত।
আপনি দেখেন কিভাবে এদের অবস্থা হুমায়ুন আজাদের মত করা যায়, দল গঠন করতে মোটেও সমস্যা হবে না। অনেক রাজাকারই (সাহায্যকারী) এগিয়ে আসবেন ইনশাল্লাহ। মুরগীর কলিজা নিয়ে আন্দোলন হয় না, একশনে নামেন।
@অ্যানোনিমাস,
শাবাস বাঙ্গালী, থুক্কু, শাবাস মুসলমান। হুমায়ুন আযাদকে আপনি—-ইয়ে মানে চাপাতি আপনি চালাইছিলেন নি?
আসলে কথাটা একেবারে মিছা না কিন্তু।
@আদিল মাহমুদ , ভাই ব্লগার রাজিবের মৃত্যুকে জামাত/শিবির ব্যবহার করতে পারছে শুধুমাত্র বাংলাদেশীদের ৰ্ধমান্ধতার কারনে .
১৯৭১ ছিল হেফাজতে পাকিস্থান , ২০১৩ এ হইছে হেফাজতে ইসলাম … উদ্দেশ্য একই . জামাত/শিবিরের আরেকে রূপই হল হেফাজতে ইসলাম..
:-X :-Y
@তারিক,
এটাই বাস্তবতা।
এবারের অবস্থা আরো খারাপ। ৭১ সালে হেফাজতে ইসলামের কথা মনে হয় তারা নিজেরাও বিশ্বাস করত না। এবার হেফাজতে ইসলামের সমর্থনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনেককেও পাওয়া যাবে।
অনেক দিন পরে লিখলেন আদিল ভাই, বরাবরের মতোই চমৎকার লেখা।
রাজীব হায়দার নাস্তিক না হলেও আসলে এইসব অসূস্থ ধর্মব্যাবসায়ী ‘ধর্মীয়’ নেতাদের তেমন কিছু আসতো যেত না কারণ তাদের আসল লক্ষ্য তো রাজনৈতিক। তারা এটাকে যেভাবেই হোক ধর্মীয় ইস্যু বানাত, আর একই ভাবেই ধর্ম নিয়ে নোংরামি করত, প্রমাণের ধার ধারত না। বিএনপি সহ রাজনৈতিক নেতাদের কথাও নতুন করে কিছু বলার নেই। আমি আসলেই অবাক আর হতাশ হয়েছি কিছু ‘সাধারণ’ মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে- অনেককেই দেখলাম এই হত্যাকাণ্ডের পরে পুরো ভোল পালটে ফেলতে, তথাকথিত শিক্ষিতরাও এমন ভাব করতে শুরু করল যেন শাহবাগের এই আন্দোলন আসলেই ধর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলন আর নাস্তিক হলে তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মেরে ফেলাটাই সঙ্গত! 😕
ধন্যবাদ আপনাকে।
@ধ্রুবনীল,
এটাই বাস্তবতা। রাজাকার বদরদের বিচার নিয়ে আমি কোনদিনই এ কারনে খুব বেশী আশাবাদী হইনি। এদের বড়জোর কিছুদিন জেলে রাখার বাইরে চুড়ান্ত কিছু করা যাবে এ নিয়ে আমার গভীর সংশয় চিরকালই ছিল এবং আছে।
এদের ইস্যুতে ধর্ম এবং ধর্ম রক্ষক গোষ্ঠী চাই কি না চাই চলে আসবেই, যাদের কোন সরকার চটাতে চাইবে না। দেশের এক বড় সংখ্যক মানুষই এদের বিচার মানসিকভাবে গ্রহন করতে পারবে না, সমস্যা হল এই দলের লোকে ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে নানান ভাবে বিভ্রান্ত করে বলে প্রথমে বোঝা যায় না। এরপর বস্তুগত কিছু কারনও রয়েছে।
@আদিল ভাই,
ল্যাঞ্জা ইজ আ টাফ থিং টু হাইড, ই’নিট? বের হয়ে আসছে! গ্রামের বাড়িতে কথা বলে জানতে পেরেছি, অনেকে চাঁদে চাইদিকে দেখেছে! কিন্তু ঘের ঘেরু পাগলা চাঁদে চাইদিকে না দেখে দেখেছে একটা গোলাপ ফুল (সত্য ঘটনা)! শাহবাগকে আবার সংগঠিত হতে হবে, গা ঝাড়া দিয়ে জেগে উঠতে হবে ফিনিক্স পাখির মত। আমি জেগে রইলাম। আদিল ভাইকে ধন্যবাদ নৈতিকতার জায়গাটুকু চিহ্নিত করার জন্যে।
@সুমন,
সাধারন ভাবে আন্দোলনকারীগণ কোনদিনই বুঝতে চায়নি, এখনো মনে হয় অনেকটা জোর করেই বুঝতে চাচ্ছে না যে প্রতিপক্ষ কেবল জামাত শিবির নয়। সংখ্যার হিশেবে জামাত শিবিরের চাইতে আরো বড় প্রতিপক্ষ বিদ্যমান আছে যারা কেঊ কেউ নানান পাতি দলে বিভক্ত, অনেকে অরাজনৈতিক স্রেফ আমাদের মত ম্যাংগো পিপল। এরা নানান ভাবে চেহারা দেখাবে।
@আদিল ভাই,
অনেকেই শাহবাগকে অসীম উচ্চতায় পৌছে দিয়েছেন। এক আন্দোলন দিয়ে হাতি ঘোড়া মেরে সাফ করতে চাইছেন। তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই এটা কেবল শুরু। এত তাড়া কিসের! ধীরে ধীরে সমাজটাকে বদলাতে হবে, আগে তৈরী করতে সেটার প্লাটফর্ম। কারন প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিপক্ষ খুব শক্তিশালী, এক শাহবাগের আন্দোলন দিয়ে তাদের নির্মুল করা যাবেনা। কিছু আগাছা বাদে মেইন্সট্রিম মিডিয়া ওদের বিপক্ষে, এটা বড় একটা প্লাস পয়েন্ট। আপাততঃ আমি ধরেই নিচ্ছি শাহবাগ আন্দোলনের পরিসমাপ্তি। এই বিষয়ে আপনার কি মত?
ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
@সুমন,
আমারো মন্তব্য প্রায় আপনারই মত। দেশে সকলেই আবেগপ্রবন। শাহবাগের ব্লগাররাও আবেগপ্রবন, প্রথম দিকে বিপুল জনসমাবেশ দেখে ধরে নিয়েছেন যে দেশে ৭ই মার্চের মত পরিস্থিতি বিরাজ করছে, মূলধারার মিডিয়াও অনেকটা সে কৃতিত্বের ভাগীদার। দেশে দ্বিইয় মুক্তিযুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে ধরে নিয়েছেন সকলে। এটা কেউই বুঝতে চাননি যে শাহবাগে ১ লাখ লোকে জমায়েত হলেও যারা জমায়েত হয়নি তাদের সংখ্যাও কম নয়, শুধু তারা পালটা জমায়েত করার মত নৈতিক বল করে উঠতে পারছিল না।
মূল্যবোধের মৌলিক পরিবর্তন ছাড়া মৌলবাদী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এই ধরনের আন্দোলন চুড়ান্তভাবে তেমন সুফল আনবে না। একটা দুইটা শিবির ধর জবাই কর এইসব আবেগময় কথার তেমন মূল্য নেই, আন্দোলনকারীদের দিয়ে জবাই হবে না সেটা শিবিরও ভাল জানে। সঙ্ঘাত কাম্যও নয়। সমাবেশ ডেকে দু’একজন আলেম ধরে এনে জামাত শিবির অনৈসলামিক এমন ঘোষনা দেওয়া কোন কাজে আসবে না। যে দেশে লোকের মূল্যবোধের পার্থক্য অনেক বড় সে দেশে এই ধরনের আন্দোলনে বিভক্তি আসবেই, যেমনটা এসেছে কে আস্তিক কে নাস্তিক এসব নিয়ে।
@আদিল মাহমুদ, এবং আমিও জামাত-শিবির বাদে ঐ যে মানুষগুলো আছে, যারা ইসলামের অবমাননার বিরুদ্ধে কথা বলে, তাঁদের সাথে আছি। যদি তাঁদের বিরুদ্ধে আবার শাহবাগ জেগে ওঠে, তবে আমিও ঐ ইসলামপন্থী মানুষগুলার মাঝে মিশে যাব। এবং নানান চেহারা না, এক চেহারাতেই থাকব , ইনশাআল্লাহ।
@সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত,
আমিন
জেনে সুখী হলাম। শাহবাগ আন্দোলন যে ইসলাম অবমাননা বিরোধীতাকারিদের বিরুদ্ধে কথা বলে তার আরেকটি সার্টিফিকেট পাওয়া গেল।
আপনি তো মনে হয় আমার বেশ অনেকদিনের পরিচিত। দূঃখের একটা কথা বলি ভাই, আজকাল দিনকাল খারাপ। আমার এমনিতেই ঈমান বলে কিছু নেই অনেকে বলে, তাই নানান চেহারা দেখাই। মাওলানা সাঈদী সাহেবের মুক্তি দাবী করে সহসাই পোষ্ট দিব, এটাই এখন নিরাপদ থাকার সবচেয়ে ভাল উপায়। কেহ আর নাস্তিক মুরতাদ ইসলাম বিদ্বেষী লেবেল লাগাবে না।
বেশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য উঠে এসেছে লেখাটাতে।
১)
২)
৩)
৪)
এই যদি হয় আলেমদের অবস্থা, তাইলে এর চেয়ে নাস্তিক হওয়া অনেক ভাল। কিন্তু মুশকিল হল গণজাগরণমঞ্চ, সরকার, বিরোধীদল সবাই এখন বাটি চালান দিয়া নাস্তিক খুঁজতেসে। খালেদা জিয়া দেখলাম আজকে বলসেন, ‘শাহবাগের তরুণরা নষ্ট ও নাস্তিক‘। নাস্তিক নাহয় বুঝলাম, কিন্তু ‘দেশে ফালু বিদেশে জানজুয়া এই আমাদের খালেদা জিয়া’র কাছ থেকে যদি এখন ‘নষ্টামির’ সংজ্ঞা শিখা লাগে তাইলে কেমন দেখায়?
কালকে ‘নাস্তিকের ধর্মকথা’ একটা ভাল স্ট্যাটাস দিসে, উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ মনে করলাম –
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
নাস্তিকের ধর্মকথা পোষ্ট হিসেবে দেয় না কেন?
হতাশার কথা হল যে দেশে কে সাচ্চা শহীদ, কে নাস্তিক কে মুরতাদ তা হয় আলোচনার অতি গুরুত্বপূর্ন ইস্যু সে দেশে আন্দোলন ফান্দোলন নিয়ে সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই।
আল্লামা শাফি যতটা জানি অত্যন্ত বয়োবৃদ্ধ ব্যাক্তি, ওনার কাঁধে খুব সম্ভবত অন্য কেউ সওয়ার হয়ে উষ্কিয়ে নানান খেলা দেখাচ্ছে। আলেমদের আন্দোলনের সুযোগে নিষিদ্ধ ঘোষিত কিছু সংগঠন সুযোগ নিতে পারে, সরকারকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। নিরীহ আলেমদেরও উচিত নিজেদের স্বার্থেই এদের প্রতিহত করা।
জামায়াতের প্রখ্যাত তিন আলেমকে গ্রেফতার করা দেশের সব আলেম গ্রেফতারের শামিল
– এটা প্রায় ৩ বছর আগেকার খবর। এই বিবৃতিদানকারী দলের অনেকেই আন্দোলনকারী আলেম দলে আছেন, কেঊ কেঊ আবার যুদ্ধপরাধীদের বিচারে ওনাদের কোন আপত্তি নাই বলেও দাবী করেছেন।
@আদিল মাহমুদ,
প্রথমেই ধন্যবাদ আপনাকে। শুরু থেকে আপনার একটা লেখা পড়ার তাগাদা মন থেকে অনুভব করছিলাম।
অবশেষে তা পাওয়া গেলো। এবং পাওয়া গেলো অনেক মুল্যবান তথ্য।
পরে আরো বিস্তারিত মন্তব্য করার ইচ্ছে আছে। আপাতত-আপনার লেখার জন্যে- (F)
@আফরোজা আলম,
ধন্যবাদ আপা।
আসলে লিখে গেছিলাম অন্য জিনিস, লিখে ফেলতে হল অন্য; ভন্ডামি ভড়ং বিশেষ করে ধর্মের নামে চিরকালই অসহ্য লাগে।
@অভিজিৎ,
যদি তিনি দেখে থাকেন, তবে উনার আন্দোলন কি অযৌক্তিক?? আমি তো তা মনে করি না।
আর আজ চট্টগ্রামে শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ থেকে দাবি তোলা হয়- ‘সাঈদীর মুক্তি চাই, মুক্তি চাই।
@আকাশ মালিক,
ওনাদেরকে ধন্যবাদ ধীরে ধীরে আসল চেহারা দেখানোর জন্য।
আমি বুঝি না যে এত অভিনয় ভড়ং করার কি আছে। সরাসরি যা মনে আছে, যে কারনে প্রথম থেকেই ওনারা মাঠে নেমেছেন, একে তাকে আল্লাহর লোকাল রিপ্রেজেনটিটিভ হিশেবে দায়িত্ব নিয়ে খুশীমত নাস্তিক মুরতাদ রায় দিয়ে ফাঁসীর দাবী করছেন সেটা বলে ফেললেই হত।
যাক, দেরীতে হলেও ন্যায্য কাজটি ওনারা করেছেন। আর আমাদের আন্দোলনকারীরা এখনো বিভোর হয়ে আছেন জামাত ছাড়া দেশে স্বাধীনতা বিরোধী আর কেউ নাই বলে, এই সরলমনা ‘অজামাতি’ আলেমদের ওনারা বুঝিয়ে সুঝিয়ে যুদ্ধপরাধীদের বিচার চাই দাবীতে শরিক করিয়ে ফেলবেন এই আশায় এখনো আছেন।
হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রামেই কিছুদিন আগে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল, “সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির যে দাবি তোলা হয়েছে তাতে আমাদের কোন আপত্তি নেই।”
অবশ্য ওনাদের গতবাধা কথা আছে এসব দলের কথা নয়, বাইরে থেকে কে বা কারা এসে সাঈদীর মুক্তি দাবী করে যাচ্ছে যা ওনারা সমর্থন করেন না। অথচ অন্য সূত্রও বলে যে ওনাদের কালকের সমাবেশে সাঈদীর মুক্তির দাবীই হয়ে ওঠে মূখ্য।
@আদিল মাহমুদ,
আপ্ নি খুব সুন্দর করে লিখে ছেন আপ নাকে ধন্নবাদ। কে কি রাজনিতি করে তা নিয়া আমার কোন মাথা বেথা নেই। তবে শাহাবাগে যে সমস্ত কাজ কারবার চলে তা মোটেই ইস্ লাম গ্রহন করে না। মংঅল প্রদিপ, নাচ, গান, বাজনা, মেয়েদের রাতে বাহিরে ছেলে দের সাথে ঘুমানো এটা এই দেশে করতে দেয়া যায় না। কারন এটা ৯০% মুস্ লিম দেশ।
” জাহানারা ইমামকে পরাজিত করা যায়নি কারন তিনি ব্যাক্তি জীবনে নামাজ রোজা করলেও এসব নাস্তিক মুরতাদ গালি খেয়ে কিছু অসূস্থ ধর্মব্যাবসায়ী ও উন্মাদের কাছে নিজে কত বড় ধার্মিক তা প্রমানের চেষ্টা করেননি”
আপ্ নার উপ্ রের কথা ঠিক না। আপ্নি কি উনার বাড়ির লোক ছিলেন যে উনি নামাজ রোজা করতো আর আপ্ নি দেখতেন। আপ নাকে বলি যদি মুসল মান হয়ে থাকেন ও সব নাস্তিক দের কথা বাদ দেন।
আপ্ নি কি মনে করেন সাইদির বিচার সুস্টো হয়েছে।
আর এদেশে সাহাবাগি রা যে নাস্তিক তা প্রমানিত হয়েছে। আপ্নাদের ওখানে প্রথম অনেক লোক হতো আপ নারা নাস্তিক বোঝার পর এখন ওখানে ৫০০ লোক ও হয়না। আপ নাদের আন্দোলন
আলোর মুখ দেখেনি সুধু নাস্তিক্ তার কারোনে । আপ নাদের কারনে দেশ আজ দু ধারায় বিভক্ত এক হোল নাস্তিক আর ইস লাম দলের লোক। আপ নারা নাস্তিক সারা দেশে লোক পেয়েছেন হিন্দু সহ ২০% আর আম্ রা পেয়েছি ৮০% এটাই আমাদের বড় পাওয়া। আমা দের পরাজিত করতে এসে আপ্ না রা পরাজিত হয়েছেন। আমি কোনো দলের লোক না বা রাজনিতি করি না কেও বলতে পারবে না। তবে আমি ইস্ লাম পন্থি। আর ধরমো রক্ষা করার জন্ন যে কোন
রাজনিতির দলের সাথে মিলে আন্দলোন করতে আপত্তি নেই।
@Jobayer,
আপনার পরিষ্কার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার মত লোকেরা খোলা যায়গায় মত প্রকাশ করলে সকলেরই ভাল।
– মংগল প্রদীপ জিনিসটা ঠিক কি বলে আপনি বোঝেন? জন্মদিন, বিয়ে বাড়ি, গায়ে হলুদ এসব অনুষ্ঠানে মোমবাতি জ্বালানো কাজকারবারকে কি মংগল প্রদীপ বলা যেতে পারে? শাহবাগের সাথে এই সব অনুষ্ঠানের পার্থক্য ঠিক কতটা? শিখা অনির্বান নির্মানকারি জিয়াউর রহমান সাহেবকে চিরস্থায়ী মংগল প্রদীপ বানানোর দায়ে কেন অভিযুক্ত করা হয় না?
নাচ, গান বাজনা অনৈসলামিক বলে মনে হলে সেটা পরিষ্কার করে বলে ইসলাম রক্ষায় এতদিন আপনারা ৮০% লোকে এগিয়ে আসেননি কেন? দেশে কি নাচ গান এই প্রথম দেখেছেন? এর আগে নাচ গান জাতীয় অনৈসলামিক কিছু দেশে দেখা যায়নি?
ছেলে মেয়ে রাত দিন ২৪ ঘন্টা আন্দোলনের স্বার্থে রাস্তায় থাকলে এক সময় ঘুমাতে হবে, সেটাই স্বাভাবিক। ছেলে মেয়ে বিশেষ ব্যাবস্থা ছাড়া একসাথে মেলামেশাও ইসলামে নিষিদ্ধ বলে জানি। তো, আবারো প্রশ্ন করতে হয়; যে সব শিক্ষাংগনে কঠোর পর্দা প্রথা অনুসরন করা হয় না, সেসব বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাংগনে যে ভয়াবহ অনৈসলামিকাভাবে নারী পুরুষ অবাধে পর্দা জাতীয় প্রথা দিয়ে এতকাল মেলামেশা করে আসছে (সোজা কথায় মাদ্রাসা জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাদে বাকি সব শিক্ষাংগন) সেসব নিয়ে এতদিন আন্দোলনে নামা হয়নি কেন?
এসব ইসলাম সম্মত কিনা তা নিয়ে আমার মাথাব্যাথা নেই, আমার প্রশ্ন দেশের সব স্তরে প্রচলিত এসব অনৈসলামিক প্রথা নিয়ে এতদিন ব্যাপক আকারে আন্দোলনে নামা হয়নি কেন? আপনার উচিত ঢাঃবিঃ এর টিএসসির সামনে থেকে আন্দোলন শুরু করা। খালেদা জিয়ার চালচলন, পরপুরুষের সাহচার্যে অতীতে নানান আন্দোলনে রাস্তা ঘাটে বেপর্দা চলাফেরা কতটা ইসলামিক ছিল? ওনার আচার আচরন নিয়ে আপনারা কেন অনৈসলামিক কিছু দেখেন না?
– এখানে বর্নিত নাস্তিকটা কে? জাহানারা ইমাম? আমি ওনার বাড়ির লোক ছিলাম না তবে পারিবারিকভাবে ওনার পরিবারের সাথে এক সময় ভাল ঘনিষ্ঠতা ছিল তাই ওনার ব্যাক্তিজীবন কিছুটা জানি।
– শাহবাগিরা নাস্তিক হলে এখন তাদের নিয়ে কি করা যেতে পারে?
– সেটা প্রথমেই বুঝতে পেরেছি। যেকোন দলের সাথে মিলে (কোন দল তাও বোঝা যায়) আপনার ধর্ম রক্ষার আন্দোলনে আমার দোয়া রইল।
আপনাকে শেষএকটা প্রশ্ন; কে আস্তিক কে নাস্তিক এটা নির্নয়ের সার্টিফিকেট আপনাকে কে কবে দিল?
@Jobayer, ধন্যবাদ ভাই, আমি আপনার সাথে আছি। নাস্তিকদের সাথে কথা বলে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া কি জানেন?? ওরা আমাকে নবীপ্রেমিক, ইসলামপ্রেমিক, মুসলিম বলে ডাকে। যদিও তাদের ডাকের মাঝে কটাক্ষ বিদ্যমান, তবু হাশরের ময়দান এ বলার মত কিছু পাব।
আমার দীর্ঘ অনুপস্থিতি ও নীরবতার জন্য দুঃখিত।