আমার পরিচয় কি জানেন? হ্যাঁ আমি সমাজের চোখে তথাকথিত নাস্তিক, আমি ধর্মহীন, আমি প্রথাবিরোধী, আমি পাপী, আমি অপরাধী, এদেশে কুকান্ড করেও সৎ হওয়া যায় যদি কল্পিত ঈশ্বরে বিশ্বাস থাকে, কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকলে। আমি অপরাধী কারণ আমি অসৎ পথে অর্থ উপার্জন করতে জানি না। আমি আমার বয়স ঊর্ধ্বদের যথা সম্ভব সন্মান করার চেষ্টা করি, আমি আমার কনিষ্ঠদের সর্বস্ব দিয়ে স্নেহ, ভালবাসা দিতে চেষ্টা করি, আমি কোন নারীর সাথে অশালীন আচরণ করতে জানি না। আমি রাস্তার মুড়ে দাড়িয়ে ইভ-টিজিং করতে জানি না।
কোন আত্ম-অহমিকা বা ভাল মানুষ সাজার জন্য আমার এই কথাগুলি নয়। আমি কোন ধোয়া তুলসী পাতা নই। দোষে-গুনে মানুষ। তবে আমি একটা সুস্থ, মানবিক জীবন যাপন করার চেষ্টা করি।
লজ্জা লাগে যখন কোন দুশ্চরিত্র, নিষিদ্ধ-পল্লীতে যাওয়া কোন মাতাল আমাকে ধর্মের নৈতিকতা শিখাতে আসে। যুক্তি তর্কে না পেরে শেষে সমাজে ছড়ায় আমি নাস্তিক আমি মহাপাপী।
আমি দেখেছি আমার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল পশ্চিম চন্দ্রপুরে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া রোজা রাখা ছেলেটি পাশের বাড়ীর মেয়েটিকে ধর্ষণ করতে। শেষে ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় যুবকটি বীর দর্পে ঘুরে বেড়াতেও দেখেছি। বদলে মেয়েটির পাশে লাগিয়ে দেওয়া হল মেয়েটি ছিল দুশ্চরিত্র। হ্যাঁ দুশ্চরিত্র প্রমাণ করতে পারলে খুন, ধর্ষণ সব মাপ হয়ে যায়। যেন সংবিধান খুন ধর্ষণ করার অধিকার দিয়ে রেখেছে কিছু ক্ষমতাশীল পুরুষের হাতে। ঈশ্বরও থাকেন সুবিধাভোগীদের পক্ষে।
আমি দেখেছি দুর্গামুত্তি প্রতি বছর প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে আসতে তিনি নাকি আসেন অসুর বিনাশ করতে অথচ অসুরাই উনার নাকে ডগায় ‘মা’ ‘মা’ বলে নাচে তিনি দেখেন চলে যান। অসুর নাশ তো হয়ই না অসুররা ঘুরে বেড়ায় বীর-দর্পে।
তাও দেখেছি সপ্তম শ্রেণীতে বছর বছর ফেল করা ছেলেটির ভক্তিভরে সরস্বতী পুজো করতে সরস্বতী পুজোর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খাটতে। তবু তাকে সরস্বতী পাশ করান নি উল্টে তার ড্রপ আউট হতে হয়।
দরিদ্রের ঘরে ধুমধাম করে লক্ষীপুজো হতেও দেখেছি তবু লক্ষ্মী কৃপা করেন নি দারিদ্র্যের করাল জ্বালা মেটে নি। দারিদ্র্যের করাল গ্রাসে বিনা চিকিৎসায় তার সন্তানকে মরতে দেখেছি।
আমার চোখের সামনে দেখেছি সারাদিন ঠাকুর ঘরে বসা লোকটি মাদক ও নারী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত হতে।
আমি দেখেছি সরকারী কর্মচারীকে ঘুষ খেতে এও দেখেছি সেই ঘুষের টাকা দিয়ে ধুমধাম করে পুজো দিয়ে ভগবানকে সন্তুষ্ট করতে।
আমি দেখেছি মানুষকে বোকা বানিয়ে রামায়ণের এক কাল্পনিক নায়ককে বাস্তবে এনে রাজনীতি হতে, এই নায়ককে কেন্দ্র করে নিরীহ মানুষ মরতে, আমি দেখেছি মন্দির, মসজিদ চুরমার হতে।
এ-অভাগা দেশে মন্দির তৈরি হয়, মসজিদ তৈরি হয়, ভজন কীর্তন হয় কিন্তু ৮০% লোকের দু:খ দুর্দশা দূর হয় না, দুনীতি দূর হয় না।
আমি সেই ঈশ্বরকে ঘৃণা করি যিনি ধর্ম বিশ্বাসীকে অভুক্ত রেখে ধর্ম-ব্যবসায়ীকে রাখেন সুখে।
এদেশে স্যকুলারিজম বলে একটা শব্দ প্রায়ই শুনা যায় এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচার চালানো হয় সব ধর্মই সমান। অথচ স্যাকুলারিজম কথার অর্থ হল – The view that religious consideration should be excluded from civil affair or public education.
এ সংজ্ঞা থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ধর্ম রাষ্ট্রের সঙ্গে জড়ানো যাবে না। ধর্ম হবে সম্পর্ণ জনগণের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
অথচ রাজনৈতিক ফায়দার জন্য কিভাবে আমাদের বোকা বানানো হয় দেখুন।
হে আমি কাঁদি প্রতিনিয়ত কাঁদি আমার আমির জন্য নয়। কাঁদি সবার আমির জন্য। নির্যাতিত শ্রমজীবীর জন্য, নির্যাতিত পথের শিশুর জন্য, নির্যাতিত নারীর জন্য।
ধার্মিকদের মানবিকতা আমার নতুন চেনা নয়। আবারও পরিচিত হলাম আমার মা মারা যাবার পর। আমার মার মরা মুখটুকু দেখতে দেওয়া হয়নি। মার শেষ কৃত্যে যেতে পারি নি। আমার দোষ কি আমি নাস্তিক?
যে বন্ধুবান্ধবের বিপদে ঝাঁপিয়েছি একদিন তারাও সহানুভূতি দেখাতে আসে নি।
কোন যুক্তিবাদী অনুষ্ঠানে যেতে বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া শুনেছি ‘তুই এখনও এইসব ছাড়স না।‘
মানে সুযোগ বোঝে তারা আমার উপর প্রতিশোধ নিতে চায়। কি জন্য শুধুমাত্র আমি যুক্তিবাদী বলে? এদের মুখেই শুনি যত মত তত পথ” বাণী। তাহলে আমার এই যুক্তিবাদী মতবাদটাও তো একটা ভিন্ন মত তাই না? তাহলে এই ব্যাপারে তারা সহনশীল নয় কেন?
আমি একটা মানবিক, যুক্তিবাদী , বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখি আর তা যদি অপরাধ হয় তবে আমার বিচারের ভার জনগণের উপর ছেড়ে দিলাম।
এখানে লেখক বলেছেন যে, আমি দেখেছি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া রোজা রাখা ছেলে পাশের বাড়ির মেয়েকে ধর্ষন করতে।অত্যন্ত দুঃখ জনক যে মুসলিমরা এরকম করে।তার মানে এই না যে ইসলাম ধর্ম ভাল না।মনে করেন যে একটি নতুন বিএমডব্লিউ কার আপনি কিনলেন আর আমাকে চালাতে দিলেন আমি সেটা ধাম করে মেরে দিলাম তার মানে কি এই যে কারটা ভাল না? অবশ্যই না এটা আমার দোষ আমি ভাল চারক নই।
কুলাঙ্গার সব জাতিতেই থাকে তাই বলে এই না যে ঐ জাতী খারাপ
আমার মার মরা মুখটুকু দেখতে দেওয়া হয়নি। মার শেষ কৃত্যে যেতে পারি নি। আমার দোষ কি আমি নাস্তিক?
apni durbol chiter lok, tai apner sathe a rokom babohar kora hoese. nastikotar dohai na dea jukti dea bujate bolen upnake.keno-ar uttor jukti dea bujte chan — tahole kisuta somossa kombe. bangladesh-a 70 bosor age aroj ali matobbor- ar satheo a rokom babohar kora hoesilo. arpor se gosona dea nastik hoe sarajibon beche silen. tar likha akon bissobiddaloe porano hoe.so dont be upset.
@িশল্পভবন,
দুর্বল চিত্তের যদি হতাম এতদিনে নাস্তিকতা ছেড়ে দিতাম। :-Y
Islam sekhai -Boroder Somman korte, Chotoder Bhalo baste… Eve-teasing to durer kotha, meyeder dike kharab dristi te takanoi nisedh koreche.. Han, Ami Muslim
পরবর্তীতে বাঙরেজিতে করা মন্তব্য প্রকাশ করা হবে না।
-মুক্তমনা মডারেটর
@Nasim, হুম! ইসলাম গত ১৪০০ বৎসরে এত আদর্শ মানুষের মগজে ধোকাতে পেরেছে যে ইসলামিক দেশে অপরাধ বলতে কিছু নেই। স্বর্গ রাজ্য হয়ে গেছে। আমি আপনার সাথে একমত। 😛
আপনার লেখাটা অনেক ভাল হয়েছে ।কিন্তু আমারা কি শুধু লেখালেখির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকব ।ইন্টারনেট আর কয়জন ব্যবহার করার সুযোগ পায় ?আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনা যখন কোন একটা ভাল কাজে ধার্মিকদের বাধা দিতে দেখি ।আর এই কারনে আমার বন্ধু ,আত্মীয় স্বজনরা আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ।অভাগা মানুষদের জন্য আমার ভীষণ করুনা হয় ।আর তাই সব সময় মানুষকে সময় পেলেই বুঝানোর চেষ্টা করি ।কিন্তু এতে করে আমার আমি সবার চক্ষুশূল হয়ে যাচ্ছি ।ভাইয়া আপনারা কিছু করুন ।কিংবা আপনারা চে গুভেরা, মাওশেতুং দের মত কিছু করুন । কিংবা আমাদের দেশের সিরাজ শিকদার এর মত কোন বিপ্লবী সঙ্ঘতন গড়ে তুলা যায় না ?
@অবুঝ, হুম! প্রথমে লেখাটা ভাল লাগার জন্য (F) প্রথমে আমাদের বিছিন্নতা দূর করতে হবে। দ্বিতীয় শক্তি নিয়ে মানুষকে কাছে আনতে হবে। হিংসার পথে নয় ভালবাসার পথে।
তাহলে আমার এই যুক্তিবাদী মতবাদটাও তো একটা ভিন্ন মত তাই না? তাহলে এই ব্যাপারে তারা সহনশীল নয় কেন?
সহনশীল নয় কারন অরাও ধর্ম ভালভাবে বিশ্বাস করে না। যার মধ্যে নৈতিকতা আছে ,নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ আছে তার কোন ধর্মের দরকার হয় না।
@শিল্পভবন, এটা যদি সমাজ বোঝতো। :-Y তবে সমস্যা ছিল না।
আমি সেই ঈশ্বরকে ঘৃণা করি যিনি ধর্ম বিশ্বাসীকে অভুক্ত রেখে ধর্ম-ব্যবসায়ীকে রাখেন সুখে। jekane eshhor-e nei sekhane kivabe অভুক্ত rakbe ?
@shilpibhaban, কথাগুলি যারা ইশ্বরে বিশ্বাস করে তাদের উদ্দেশ্যে। :rotfl:
সেক্যুলারিজমের উপমহাদেশীয় ব্যাখ্যা হল ধর্মের ব্যাপারে উদাসীনতা নয়, বরং সব ধর্মের সমাধিকার সেটার কাগুজে অধিকার। ফলাফল হল ভারত বাংলাদেশ দুই দেশেই সংখ্যাগরিষ্ঠা লোকের ধর্ম ও জনগোষ্ঠীই রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিতে প্রাধান্য পায়।
সত, নৈতিকতা পূর্ন জীবন যাপন করলে ধার্মিক সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে এমন গ্যারান্টি নেই। ‘ধার্মিক’ সার্টিফিকেট যতক্ষন পর্যন্ত না কোন নির্দিষ্ট বিশ্বাসের ঠাকুর দেবতা, নবীতে পূর্ন বিশ্বাস করি এমন হুংকার দেওয়া না হয় ততক্ষন পাওয়া যাবে না। প্রচলিত ধর্মগু্লির অনুসারীরা মুখে যাইই বলুক ধর্মের আসল উদ্দেশ্য হল এক নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠি বা জাতীয়তা গড়ে তোলা যার মূল বন্ধন হল আমি অমূক ঠাকুর দেবতা গড নবীতে বিশ্বাস করি এটা আউড়ে যাওয়া। সত, পরিচ্ছন জীবন যাপন মূল উদ্দেশ্য হলে ঠাকুর দেবতা গড় নবীর পরিচয় বড় হত না, বড় হত সতকর্ম। সত লোকে কোন গড ঈশ্বর দেবতা নবীতে বিশ্বাসী তা নিয়ে ধার্মিকরা মাথা ঘামাতো না।
@আদিল মাহমুদ, শোষণ কার্য ভাল করে চালানোর জন্য। রাজনৈতিক দলগুলি আমাদের দেশের মানুষকে বোকা করে রাখতে চায়। কেউ জাগতে চাইলে এই শোষিত জনগনই আবার টেনে নামিয়ে নিতে চায়। কাঁকড়া চরিত্র যাকে বলে।
@আদিল মাহমুদ,
“সেক্যুলারিজমের উপমহাদেশীয় ব্যাখ্যা হল ধর্মের ব্যাপারে উদাসীনতা নয়, বরং সব ধর্মের সমাধিকার সেটার কাগুজে অধিকার। ফলাফল হল ভারত বাংলাদেশ দুই দেশেই সংখ্যাগরিষ্ঠা লোকের ধর্ম ও জনগোষ্ঠীই রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিতে প্রাধান্য পায়।” বাস্তবতার হালচিত্র আরো আজব! এদেশের প্রত্রিকায় খবর ছাপায় “হিন্দু-মুসলমানের প্রেম” শিরোনামে। পাড়ার নাম হয় হিন্দু পাড়া, মগ পাড়া, মুসলমান পাড়া——- তাই আমি সহমত
:guli:
(Y)
@উৎস মানুষ, ভাল লাগার জন্য (C)
মানুষ উপাসনার ধর্ম নিয়ে এতটা-ই মত্ত যে নিজের প্রকৃতি প্রদত্ত মানবিক ধর্ম কে বিসর্জন দিয়ে বসে আছে,আর ভাবছে এতে-ই মঙ্গল। কবে যে এই মানুষগুলি সত্যিকারের মানুষ হবে ……………………
@Niloy, ঠিক বলেছেন, মানুষকে ধর্মান্ধ করে রাখার জন্য রাষ্ট্রও যথেষ্ট পরিমানে দায়ী।
ভাল হয়েছে। এই বিজ্ঞানের যুগেও একজন নাস্তিক শুনলে আঁৎকে উঠে।
@আসরাফ, ঠিক বলেছো, এটাই সমস্যা। ভারতে অনেক নাস্তিক নিজেদের নাস্তিক বলতে সংকোচ বোধ করে। পরিচয় দে যুক্তিবাদী। ;-(
খুব সুন্দর । এই সমাজ আমাদের যত দুরে সরিয়ে দিতে চাইবে,আমাদের শক্তি তত বাড়বে ।
(Y)
@হিমাদ্রি, জীবনের অর্ধেক কাটিয়ে দিলাম। শক্তি কতটুকু বাড়লো বলতে পারছি না। (U)
আমি সত্যিই অন্তর থেকে বেদনাবোধ করছি আপনি নিজ মাকে শেষ বারের মত দেখা থেকে বন্চিত হওয়াতে। সহনশীলতা আমাদের সমাজে সহনশীলতার প্রচন্ড অভাব।
আপনার এ কথাটি খুবই মনে ধরেছে। যেদিন সকলের অন্তর আপনার পর্যায়ে পৌছাতে পারবে “বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন” অবশ্যই সত্য হবে।
@আসিফ, ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। তবে এই চিন্তাধারা নিয়ে কতটুকু সফল হই তাই দেখার।