ধর্ষকের প্রতি, সমাজের জন্য
মত পথে নেমে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম
সবার পরনে পোশাক! লাল-নীল-হলুদ-সাদা কিংবা কালো।
কি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখি সবার শরীরে পোশাক কেউ নগ্ন নয়।
মাথার ভেতর পোকার গুনগুণ জেগে ওঠে। নির্মম গুনগুণ- নীরব জেগে ওঠা।
আরও অবাক বিস্ময়ে বাসে চড়ি। এখানেও একই অবস্থা।
কে বলেছে আমরা মানুষ রুপী পশু? কে বলেছে আমরা বর্বর!
আমাদের পশুত্বকে আমরা মখমলের সুতোয় বেঁধে রাখি। নরম তুলোয় ঢেকে রাখি।
বাসে-ক্লাসে-দোকানে আমি কখনো নারীর উন্মুক্ত স্তন দেখিনি।
আমি নারীকে দু পা প্রশারিত করে তার পাশের সিটে কিংবা তার কোলে বসতে বলতে শুনিনি।
আমি বাসে ক্লাসে দোকানে সত্যিই নগ্নতা দেখিনি।
আমি নারীকে দেখিনি নগ্ন।
দেখেছি কারুকার্যময় পোশাকে ঢাকা আমার মায়ের মত একটা শারীরিক অবয়ব।
ঘরে-খাবার টেবিলে কিংবা ছাদের দোলনায় আমার বোনের মত করে বসে থাকতে দেখেছি নারীকে।
তার কারুকার্যময় পোশাক-রঙ্গিন ফুল বারবার আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে-
তার পোশাকের অশ্লীলতা। কামুকতা ।
আমি ছুটে গিয়ে উন্মত্ত কামনায় ধর্ষণ করেছি মেয়েটির অশালীন পোশাককে। রঙ্গিন ফুলকে।
উথিত লিঙ্গের প্রতিটি বেয়নট-প্রমান খোঁচায় মেয়েটির অশালীন পোশাকটাকে আমি ক্ষত বিক্ষত করেছি।
একটা আধা হাত মাত্র চিকন লৌহদণ্ডকে আমি কৃত্তিম লিঙ্গ ভেবে,
মেয়েটির পোশাকের একটি বিশেষ অংশে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছি সমূলে।
আহ! কি শান্তি আহ! কি শান্তি আহ! আনন্দ।
যন্ত্রণা কাতর অশালীন পোশাকটাকে ছুড়ে ফেলে আমি
আবার ফিরে এলাম লোকালয়ে। বাজার ঘর ক্লাসে।
দরজা খুলেই আমার মা আমাকে দেখে আৎকে উঠলো। কিন্তু আমার হাতে ত রড নেই!
তবু আমার ভয়ার্ত মা আমাকে দেখে পোশাকের ভাঁজ ঠিক করার কাজে লেগে গেলেন।
লজ্জিত-বিরক্ত আমি ছাদে চলে গেলাম
আমার মায়াবী বোনের সাথে গল্প করতে।
ওমা একি হলো আজ সবার!
আমাকে দেখেই। আমার হাসি দেখেই
আমার বোন দোলনা থেকে লাফ দিয়ে নেমে, দেয়ালের কোনায় ছুটে গেল।
তার বিস্ফোরিত চোখ চিৎকার করে বলছে- বলে চলেছে-
আমি অশালীন পোশাক পরিনি দাদা। দাদা আমি অশালীন পোশাক পরিনি!
আমায় ছেড়ে দে দাদা। আমায় ছিঁড়িস না ।
সমাজ আলোর গতিতে ধর্ষিত
যান্ত্রিক পুরুষাঙ্গ কেঁপে উঠে অকারণ কামনায়
সমাজের যোনিপথ আন্দোলিত হয় কামনার যন্ত্রণায়।
তবু সমাজ সামাজিক ভাবে ধর্ষিত।। সমাজ পতিত।
কঠিন-তরলে ভেসে বেড়ানো মিলিয়ন মানবের পরমানু মিছিল।
মিছিলে মিছিলে মৌলবাদের শ্লোগান- অস্পষ্ট যৌন শীৎকার।
রাষ্ট্র-যন্ত্র সমকামী, এবং পরকীয়ায় আসক্ত-
বিছানায় রক্তাক্ত নগ্ন সমাজ।
বাধ্য সমাজ আত্মগামী।
ধর্ষিত সমাজ-লাঞ্ছিত পরমাণু মিছিল, তাই যোনির দেয়ালে দেয়াল লিখন।
সাদা কাগজে রক্তের দাগ দেখে জেনে রাখলাম সমাজ সতী ছিল।
প্রতিনিয়ত সমাজ যান্ত্রিক ভাবে ধর্ষিত, কামাতুর ব্যভিচারী আইনে
উরু বেয়ে গড়িয়ে পড়া লাভা-বীর্য শুষে নেয় আত্মবাদী রাজনীতি
সমাজের স্তন-নাভি-ঠোঁটে আঁচড় কাটা জমাট রক্ত। বিকৃত মৌলবাদ।
সমাজ আলোর গতিতে ধর্ষিত, সমাজ শব্দের গতিতে লাঞ্ছিত।
সমাজের জরায়ুতে জমাট আত্মবাদী কীটের বিষাক্ত-চাক,
সমাজ পতিতালয়ে পতিত, যোনিপথের খাজে বাসাবাধে জন্মবাদ।
সমাজের যোনি সংলগ্ন অবাঞ্ছিত লোমের জঙ্গলে সাপ-লুডু কিট।
সমাজ যৌন-রোগে আক্রান্ত।।
আইন দেখে গেছে কামাতুর চোখে- আইন হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত।।
অ সাধারণ লাগলো (Y)
মানুষ অশালীন পোশাকে নয় অন্তরে হয়। দুঃখের বিষয় হল তথা কথিত শিক্ষিত সমাজে কামুকতা ও অশালীনতা বেশি দেখা যাচ্ছে। একটু আগেই বিভিন্ন ব্লগ এ একটা পোস্ট দেখলাম…
এসব নিত্য দিনের ঘটনা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলতে।
এই যখন আমাদের অবস্থা তখন আইন করে করা যাবে না এর ব্যবস্থা।
মানুষের মত নিকৃষ্ট প্রাণী দ্বিতীয় দেখি নাই।
অদ্ভুদ! খুব ভাল লেগেছে। যেন চিৎকারটা কানে ধাক্কা মারছে। এতো আমারই বোনের কান্না। আবার,
এভাবে আমরা ধর্ষিত হতে হতে পুরো সমাজ ব্যবস্হাটাই এর শিকার হয়ে উঠছে। আর রাষ্ট্রযন্ত্রের বিকারগ্রস্ত অবস্হা আপনার শানিত কলমে ধরা পড়েছে সুন্দরভাবে-
টুপি খোলা শুভেচ্ছা ।
উত্যন্ত তীক্ষ্ণ ছুড়ির ফলা চালিয়ে দেয় কবিতা দুইটা। আগেও পড়েছি। এখন আবার পড়লাম। বিশেষকরে দ্বিতীয়টা শিল্পোন্নত, আর প্রথমটার শেষ লাইন একেবারে ছিড়ে ফেলল।
অনেক সুন্দরভাবে সমাজের ডিসেকশান দেখলাম কবিতার ভাষা, প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। সমাজের বিকালঙ্গতাকে আঘাত করার প্রচেষ্টা। দ্বিতীয় কবিতাটিতে ৬০ এর দশকের হাংরি কবিদের ছায়া দেখা যায়। প্রথম কবিতাটি যেন কবিতার গতানুগতিক কাঠামো ভাঙার কবিতা। এ রকম বলিষ্ঠ উচ্চারণে কবিতা অপসৃত করুক সকল অপশক্তি। কবির জন্য শুভকামনা।