গত দুই-এক মাসে মুক্তমনায় লেখক ভবঘুরেকে ঘিরে বেশ কিছুটা বিতর্ক হয়েছে। অনেকেই তাকে ইসলামবিদ্বেষের দায়ে অভিযুক্ত করে অনেক কথা বলেছে, সেসবের মধ্যে আমিও ছিলাম। তার পক্ষে কথা বলার মতো তিনি ছাড়া আর তেমন কাউকে বেশী দেখা যায় নি। সেই বিতর্কের পর মুক্তমনায় ভবঘুরে ও তার সমমনা কয়েকজন লেখালেখি ও মন্তব্য একদম কমিয়ে দিয়েছেন। আমি মনে করি এই পরিবর্তনটি যদি কন্টিনিঊ করে তবে সেটা মুক্তমনার জন্যে অনেক ক্ষতিকর হবে। আমি মনে করি ভবঘুরে মুক্তমনার জন্যে অত্যন্ত মূল্যবান একজন কন্ট্রিবিউটর। আমি প্রত্যাশা করি তিনি আবার নিয়মিত লিখবেন। সেই প্রত্যাশার জন্যেই এই লেখাটি। এছাড়া আমি লক্ষ্য করেছি যে গত কয়েকমাসে মুক্তমনায় ধর্মবিষয়ে লেখালেখি একদম কমে গেছে। যদিও অনেকে মনে করতে পারেন যে খামোকা ধর্ম নিয়ে কেচাকেচি অরুচিকর এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে উন্নত কোনো discourse নয়, আমি তা মনে করি না। আমার মনে হয় অযৌক্তিক ধর্মীয় বিশ্বাসকে আক্রমন মুক্তমনার কোর মিশনের প্রধানতম এবং ধর্ম নিয়ে আলোচনা কমে যাওয়া মুক্তমনা ও বাংলাসমাজের জন্যে বড়ো লস। এই লেখাটি কোন গভীর বিষয় ভিত্তিক আলোচনা নয় বরং মুক্তমনা পরিবারের মধ্যে একটি মুক্ত বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস। একারনে লেখার দুর্বলতা নিয়ে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
আমার মুক্তমনায় মন্তব্য করা শুরু হয়েছিলোই ভবঘুরের একটি লেখায় তার বক্তব্যকে আক্রমন করে। আমি মনে হয় না এ পর্যন্ত তার সপক্ষে কোনো মন্তব্য করেছি। তবু আমি তার লেখালেখি চালিয়ে যাওয়াকে সমর্থন করি এবং উৎসাহিত করতে চাই। তার লেখাগুলো কেনো বাংলাজগতে মুক্তচিন্তার প্রসারে প্রয়োজনীয় সেকথা আসার আগে তার বিরুদ্ধে আসা মূল অভিযোগগুলি নিয়ে কয়েকটা কথা বলি।
আমিও ভবঘুরেকে ইসলাম-মুসলিম বিদ্বেষী মনে করি। কিন্তু তাতে কি হয়েছে? আমি আমার জীবনে খুব কম লোকই দেখেছি যাদের কোনো কিছু বলার মতো প্যাশন আছে কিন্তু কোনো কিছুর প্রতি বিদ্বেষ নেই। ভগবান বুদ্ধের মতো নির্বানলাভকারী সকল বিষয়ের প্রতি বিদ্বেষহীন মানুষ আমাদের আইডিয়াল হতে পারে কিন্তু সেই আইডিয়ালে পৌছানো লোক বুদ্ধের মতোই বিরল। আমাদের সবারই কমবেশী বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি অযৌক্তিক- visceral বিদ্বেষ থাকে। ধর্ম, বর্ণ, রাজনীতি, মতবাদ, চেহারাসুরৎ আরো অনেক কিছু। ভবঘুরের ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ থাকতেই পারে। যেকোনো স্বাভাবিক বিবেচনার লোকই স্বীকার করবেন যে মুসলমানের অতীত ও বর্তমানে এমন অনেক আচরন করেছে যে তাদের প্রতি বিদ্বেষ আসা অযৌক্তিক কিছু নয়। সকল ধর্মই সমান দোষী কিংবা সকল ধর্মের অনুসারীরাই সমান মানবিকতার বিরোধী এই ধারনাগুলি এতো অর্বাচীন যে এর বিরুদ্ধে যুক্তি দেখানোও সময়ের অপচয়। বিশেষ করে বর্তমান যুগে কোনো মুসলিম দেশে মাইনরিটি হিসেবে বড়ো হওয়া কারো জন্যে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ আরো কম অস্বাভাবিক। আমি সৌভাগ্যবশত বাংলাদেশে ডমিন্যান্ট মেজরিটির একজন হিসেবে জন্ম নিয়েছি এবং বড়ো হয়েছি। আমার যতো এমপ্যাথিই থাকুক, আমি কখনো বাংলাদেশে একজন মাইনরিটির পার্সপেক্টিভ আয়ত্ব করতে পারবো না। আর আমি বাংলাদেশের সমাজজীবনের গৎবাধা কয়েকটা কলেমার অন্যতম ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির লীলাভূমি’, এই আপ্তবাক্যটিকে হাস্যকর রকমের ভুল মনে করি।
আমি এটাও মনে করি যে ভবঘুরে তার বক্তব্যকে উপস্থাপন করতে যেয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা রকম মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন জেনে অথবা না জেনে। আমি মনে করি তার মধ্যে মৌলবাদের প্রবল লক্ষন দেখা যায় যেভাবে কখনো তিনি তার ভুল স্বীকার করে বিরুদ্ধ যুক্তি মেনে নেন না। দরকার হলে উধাও হয়ে যান কোন বিতর্ক থেকে তবু ভুল স্বীকার করেন না। এতো সব দোষ সত্বেও আমি তার লেখার ভক্ত এবং তার লেখাকে গুরুত্বপূর্ন মনে করি।
একথা বাংলাদেশের যে কোনো মুক্তচিন্তার সাধক স্বীকার করবেন যে বর্তমানে এইদেশে মুক্তচিন্তার সবচেয়ে বড়ো শত্রু ইসলাম ধর্ম। যদি লিকার্ট স্কেলে এখনকার বাংলাদেশে ওপেন সোসাইটির এনিমিদের র্যাংকিং করতে বলা হয় তবে ইসলাম হবে ১০ আর আওয়ামী জাতীয়তাবাদ, বিএনপি জাতীয়তাবাদ, বাংলাদেশী ইতিহাস-ঐতিহ্য জাতীয়তাবাদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ধর্ম, সমাজতন্ত্র, ধনতন্ত্র বাকী সব হবে ৫ এর নীচে। বাংলাদেশের ইতিহাস, ডেমোগ্র্যাফী, রাজনীতি এসব বিভিন্ন কারনেই ইসলাম মুক্তচিন্তার প্রসারে সবচেয়ে বড়ো বাধা। তার মানে এই নয় যে সারা বিশ্বের জন্যে একই অবস্থা। প্রতিটি দেশের অবস্থা ভিন্ন।
এই বাস্তবতার কারনেই বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার প্রসার করতে গেলে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা আসবেই, খুব বেশী করেই আসবে। একারনেই মুক্তমনায় ইসলাম বিরোধী লেখা আসা স্বাভাবিক ও উচিৎ। এখন আমরা মুক্তচিন্তার ফোরামে ইসলাম বিরোধী লেখার মধ্যে প্রধানত দুটি ধারা দেখতে পাই।
প্রথমেই আসে বিজ্ঞান বিষয়ের লেখা। ধর্মের প্রধান শত্রু বিজ্ঞান। বিজ্ঞান যখন গত কয়েকশ বছরে বিশ্ব-প্রকৃতি ও মানব জীবন নিয়ে একটি কনজিসটেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক দাড় করাতে পেরেছে তখনই ধর্মের অবধারিত পশ্চাৎ অপসারন শুরু হয়েছে. মুক্তমনায় একারনেই প্রচুর পরিমানে বিজ্ঞান লেখা আসে এবং সেটা বাংলাদেশে বিজ্ঞানচেতনার প্রসারে নি:সন্দেহে অমূল্য অবদান রাখছে। এখানে অবশ্যই মুক্তমনায় বিজ্ঞান লেখকদের বিশেষ করে অভিজিৎকে সর্বান্তকরনে ধন্যবাদ দিতে হয়। অন্য দেশ গুলোতে যে কাজগুলো শতশত বিজ্ঞানী-লেখক-একটিভিস্ট নিরলসভাবে করছে সেটার অনেকটা বাংলা ব্লগে অভিজিৎ অনেকটা একাই করছে সংসার ও জীবিকা সামলে নিয়েই।
আমরা দেখেছি যে বিজ্ঞান থেকে ধর্মের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড়ো চ্যালেন্জ এসেছে মূলত দুটি ধারা থেকে, উনবিংশ শতাব্দীর বিবর্তন-বায়োলজী এবং বিংশ শতাব্দীর আধুনিক পদার্থবিদ্যা-কসমোলজী থেকে। এর আগে নিউটনের মতো শ্রেষ্ঠ মেধাবী বিজ্ঞানীও ধর্ম ও স্রষ্টায় প্রবল বিশ্বাস থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন নি। বাংলাদেশের সমাজেও ধর্মীয় চিন্তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞান অন্যতম বড়ো অস্ত্র। কিন্তু এখানে আমার কিছু ব্যাক্তিগত মতামত আছে।
আমার মনে হয় বিজ্ঞানমনস্ক নয় এরকম অধিকাংশ শিক্ষিত লোকদের কাছে বিজ্ঞান একটি tool মাত্র একটি natural philosophy নয়। তারা মনে করে বিজ্ঞান অনেক আশ্চর্যরকম কাজ করে, তাদের জীবনে অভুতপূর্ব স্বাচ্ছন্দ দেয় কিন্তু তাই বলে তারা বিজ্ঞানকে বিশ্বাস করতে হবে এটা মনে না। এর কারন বিশ্বাস না করলে তো ক্ষতি নেই। বিজ্ঞানকে অবিশ্বাস করে বিজ্ঞানের সব রকমের সুবিধা নেয়া যায়, এর জন্যে মৃত্যুর পরে কোনো বৈজ্ঞানিক দোজখে যাবার ভয় নেই। অন্যদিকে ধর্মকে অবিশ্বাস করলে ইহকাল-পরকালে ভয়াবহ শাস্তির সম্ভাবনা। এজন্যে মানুষ সহজেই বিজ্ঞান ও ধর্মকে মনের মধ্যে পুরো আলাদা দুটো কম্পার্টমেন্টে রাখে। আমি এমন অনেক মানুষ দেখেছি যারা বিবর্তন কে অস্বীকার করে না আবার আদম-হাওয়াকেও অস্বীকার করতে পারে না। তাদের সোজা কথা আল্লাহ কুদরতে সবকিছুই সম্ভব। “খোদার কি কুদরত, লাঠির ভিতর শরবৎ”!
অনেকেই আছেন যারা বিগব্যাং কে অস্বীকার করে না আবার আল্লাহর হুকুমে সৃষ্টিও অস্বীকার করে না। বিজ্ঞান ও ধর্ম নিয়ে অসংখ্য কন্ট্রাডিকটরী বিশ্বাস নিয়ে চলতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। অনেকেই ভাবতে পারেন এতো কন্ট্রাডিকটরী বিশ্বাস নিয়ে কেমন করে চলা সম্ভব। খুবই সম্ভব। আমরা নিজেরাই আমাদের নিজস্ব দেশ, ইতিহাস, রাজনৈতিক দল, সামাজিক মূল্যবোধ ইত্যাদি সববিষয়ে নানারকম কন্ট্রাডিকটরী বিশ্বাস নিয়ে দিব্যি চলছি। এতে কারো মস্তিষ্কে রক্তক্ষরন হচ্ছে না কারো ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটছে না। মানুষের মধ্যে Cognitive Dissonance নরমালাইজ করার অপূর্ব ক্ষমতা রয়েছে। একারনে আমি মনে করি বাংলাদেশের মতো সামাজিক বিবর্তনে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোয় ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিজ্ঞান খুবই দরকারী অস্ত্র হলেও এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
ধর্মবিরোধী লেখাগুলো আরেকটি প্রধান ধারা হলো সরাসরি ধর্মের রীতিনীতি, বইপুস্তকগুলি নিয়ে আলোচনা বিশ্লেষন ইসলাম বিরোধী এই ধারায় মূলত কোরান-হাদিস এবং ইসলামের প্রারম্ভিক ইতিহাসের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয় এবং বর্তমান জ্ঞান-বিজ্ঞান, মূল্যবোধ-মানবিকতা’র সাথে এই ইসলামী ঐতিহ্যের অসামন্জস্যতা হাইলাইট করা হয়। ভবঘুরে, আবুল কাসেম, আকাশ মালিক এবং অন্যান্য আরও কিছু লেখক প্রধানত এই রকমের লেখা লিখেছেন এবং এগুলোই তাদের এরিয়া ওফ এক্সপার্টিজ। আমার কেনো জানি মনে হয় সাধারন মানুষের মধ্যে ধর্ম সম্পর্কে দ্বিধা সৃষ্টি করতে এবং নিজের বিশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ধর্মীয় সমালোচনার এই ধারাটি, বিজ্ঞান আলোচনার চাইতে অনেক বেশী সফল।
আমার জন্যে এই হাইপোথিসিস এর সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমান উপস্থাপন করা সম্ভব নয় কারন এরকম কোনো স্টাডির কথা এখনো দেখিনি। পশ্চিমা বিশ্বে হয়তো এরকম সামাজিক গবেষনা করা হয়ে থাকতে পারে বাইবেল এর অসামন্জস্যতা ও বিজ্ঞান ধারনা ধর্মীয় বিশ্বাসকে তুলনামূলকভাবে কিভাবে এফেক্ট করে, সেটা নিয়ে। তবে স্পেসিফিক কোনো স্টাডিও আমি দেখিনি বা এখন মনে করতে পারছি না। আমার এই ধারনার পেছনে রয়েছে একেবারে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা, কমন সেন্স এবং কিছুটা ইতিহাস চিন্তা।
আগেই বলেছি যে অধিকাংশ সাধারন মানুষের জন্যে বিজ্ঞান ও মুক্তচিন্তার চেতনা আয়ত্ব করা বেশ কঠিন কারন এর জন্যে সামজিক ও মনস্তাত্বিক প্রেশার নেই। কিন্তু আমাদের অধিকাংশের মধ্যেই বায়োলজীক্যাল বিবর্তন, সামাজিক বিবর্তন, ঐতিহ্য, পারিপার্শিক পরিবেশ ইত্যাদি নিয়ামকের প্রভাবে সামাজিকভাবে চলার উপযোগী কমবেশী নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে উঠে যা এতটা কাছাকাছি যে আমরা একজনের সাথে আরেকজন মূল্যবোধ নিয়ে কমুউনিকেট ও তুলনা করতে পারি। সময় ও স্থানভেদে অবশ্যই মূল্যবোধের পার্থক্য গড়ে উঠে কিন্তু আমরা এই সময়ে বাস করে মোটামুটি একমত হতে পারি যে গনতন্ত্র শ্রেয়তর, ধর্মীয় বিশ্বাস জোড় করে চাপিয়ে দেয়া উচিৎ নয়, ধর্ষন খারাপ, ক্রীতদাস সমর্থন করা যায় না, বাল্যবিবাহ খারাপ, নারীদের সমঅধিকার রয়েছে, গনহত্যা খারাপ, অন্যদেশ অন্য জাতি আক্রমন করে দখল করা খারাপ ইত্যাদি।
আমি নিজের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে অধিকাংশ সাধারন মানুষের নিজের পারিবারিক ধর্মবিশ্বাসের বিতর্কিত দিকগুলো নিয়ে ধারনা একেবারে নেই বললেই চলে। আমার মনে হয় এই অভিজ্ঞতা প্রায় সবারই রয়েছে। বাংলাদেশী মুসলিমদের জন্যে এটা অবশ্যই প্রযোজ্য। কোরান ও হাদিসের বিভিন্ন বিতর্কিত আয়াত তো দূরের কথা, ইসলামের ইতিহাসের একেবারে সাধারন বিতর্কের ব্যাপারগুলি যেমন মোহাম্মদের বহুবিবাহ, বালিকাবিবাহ, যুদ্ধবন্দী হত্যা, ধর্মত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, নানা রকম দোষে গলাকেটে-পাথর ছুড়ে মারা এরকম সাধারন ব্যাপারগুলিই অধিকাংশ সাধারন লোক জানে না। সাধারন মানুষ মনে করে ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলামে জবরদস্তি নেই, মোহাম্মদ সর্বযুগের জন্যে সকল দিক দিয়ে পারফেক্ট মানব, আল্লাহর আইন আমাদের নানা সীমাবদ্ধতার জন্যে বাস্তবায়ন না করতে পারলেও আল্লাহর আইন মানুষের জন্যে সবসময়ের শ্রেষ্ঠ বিধান ইত্যাদি।
এই সাধারন মানুষদেরকেই যখন ইসলামের বিভিন্ন অমানবিক, অযৌক্তিক দিকগুলো এবং ইসলামের ইতিহাসের বিতর্কিত ঘটনাগুলি সরাসরি চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয় তখন এই কগনিটিভ ডিসোন্যান্সকে অগ্রাহ্য করা তাদের পক্ষে সহজ হয় না। আজকের এই যুগে মানুষকে এই বিশ্বাস করানো কষ্টকর যে ১০-১৫টি বিবাহ, নয় বছরের মেয়েকে বিবাহ, যুদ্ধবন্দীদের পাইকারী হত্যা, ক্রীতদাস রাখা, নারীদের ঘরে অন্তরীন রাখা, জিজিয়া কর, একের পর এক দেশ দখল, এসবই সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রীতিনীতি। মানুষকে এটাও বোঝানো শক্ত যে ভালোমন্দ নির্বিশেষে সকল হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রীস্টান, অধার্মিক, হেরেটিক শিয়া-সুন্নী হাজার কোটি মানুষ অনন্তকাল দোজখে মুহুর্তে মুহুর্তে বেগুনপোড়া হওয়া মহত্তম স্রষ্টার বৈশিষ্ট্য। আমি নিজে পারিবারিকভাবে যখন ধর্মে প্রগাড় বিশ্বাসী, প্রকৃতপক্ষেই ভালোমানুষ দের কাছে ইনডাইরেক্টলি এসব প্রসংগ এনেছি তখন অনিবার্যভাবেই দেখেছি যে অধিকাংশ আশ্রয় নেয় সেই বিখ্যাত Pascal’s Wager এর উপরে। বিশ্বাস না করলে ভয়াবহ পরিনাম, তাই বিশ্বাস করাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে এই মানুষরা এইসব জানার পরে ব্যাক্তি ও সমাজে আল্লাহর শাসন কায়েমের জন্যে অতটা উৎসাহী আর থাকে না। আমার মনে হয় বর্তমান যুগের মানুষদের মধ্যে ধর্মীয় মৌলবাদের সবচেয়ে বড়ো এন্টোডোট আধুনিক মূল্যবোধ। এইকারনে কোরান-হাদিসের সরাসরি রেফারেন্স থাকলেও সাধারন মানুষেরা কিসাস, গলা কাটা, চোরের হাত কাটা এসব কে সরাসরি সমর্থন করতে দ্বিধা করে। নিজের মূল্যবোধ পরিবর্তন করা অনেক কষ্টকর একটি ব্যাপার। অধিকাংশ মানুষ ধর্মীয় বিশ্বাসকে নিজের মূল্যবোধ অনুযায়ী সাজিয়ে নিতে চায়, বিশ্বাস অনুযায়ী মূল্যবোধ পাল্টানোর প্রয়াস করে না। অবশ্য হঠাৎ মৌলবাদীদের জন্যে ব্যাপারটা আলাদা।
আমি মনে করি মুক্তচিন্তার জন্যে কোরান-হাদিস ও ইসলামের বিতর্কিত প্রসংগগুলি বারবার হাইলাইট করা দরকার। কারন বিশ্বাসীরা যখন এই বইগুলি পড়ে তখন অবচেতনভাবেই এই অস্বস্তিকর বানীগুলি মনে খুব একটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। বিশ্বাসের coherence বজায় রাখার জন্যে অবচেতন মন সহজেই এই দিকগুলো মগজের পেছনের কোনো অবহেলিত, অন্ধকার কুঠরীতে পাঠিয়ে দেয়। এই গোপন কুঠরী থেকে পীড়াদায়ক চিন্তাগুলো সামনে আনতে বারবার হাইলাইট করার বিকল্প নেই। কিন্তু এই বিতর্কিত প্রসংগগুলি নিয়ে চরম অধ্যাবসায় নিয়ে কারা দিনের পর দিন সাধনা চালিয়ে যাবে?
আমরা অধিকাংশ অবিশ্বাসী-সংশয়বাদীরা যখন থেকে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস থেকে আলাদা হতে পেরেছি তখন থেকেই ধর্মীয় বইপুস্তক নিয়ে দিনরাত লেগে থাকার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছি। এটা স্বীকার করতে হবে আমাদের অধিকাংশের কাছে এই বইগুলি কোনো সুলিখিত সাহিত্য নয় বরং নানারকম inconsistency তে ভরা প্রাকমধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনার সমাহার। আমাদের কাছে বর্তমান পৃথিবীতে জানার ও উপভোগ করার কত বিচিত্র বিষয় আছে। বিশ্বসাহিত্য, বিজ্ঞান-বিজ্ঞানের ইতিহাস, শিল্পকলা-সিনেমা, রাজনীতি, আন্তজাতিক প্রসংগ, অর্থনীতি আরো কত কিছু। এসব ফেলে সেই অস্বস্তিকর বইগুলো ঘাটাঘাটি করার মতো তাগিদ খুব কম লোকেরই আছে। কাদের মধ্যে এই বিষয়গুলি নিয়ে লেগে থাকার মতো উৎসাহ আছে?
প্রথমত ও প্রধানত যাদের মধ্যে কোনো একটি বা অনেকগুলি ধর্মের প্রতি তীব্র বিদ্বেষ আছে তারা এবং দ্বিতীয়ত যাদের মধ্যে এই ধর্মীয় বিশ্বাসগুলি সংষ্কার করে সমাজ ও জাতিকে আধুনিকতায় আনার জন্যে প্রবল উৎসাহ আছে। মুক্তমনায় আলোচকদের মধ্যে প্রথম গ্রুপে কারা পড়েন এটা নিয়মিতরা ভালোভাবেই বোঝেন। দ্বীতিয় গ্রুপের মধ্যে কাদেরকে ফেলা যায় এটাও আমরা মোটামুটি অনুমান করতে পারি। এখানে বলে রাখা ভালো যে কাউকে পরিপূর্নভাবে না জেনে কোনো একটো গ্রুপভুক্ত বলে ট্যাগ করা নি:সন্দেহে অবিবেচনার কাজ। কিন্তু আমরা ব্লগজগতে একে অপরের সাথে ব্যাক্তিগতভাবেই খুব কমই পরিচিত। আমরা একে অপরকে জানি কেবল আমাদের লেখনী ও চিন্তার প্রকাশের মাধ্যমে। এই লেখক সত্বা এবং চিন্তাভাবনাগুলিকে যুক্তির ভিত্তিতে ট্যাগিং করা অবশ্যই ভুল কিছু নয়।
ধর্মকে আক্রমন করে যারা লেখালেখি করেন তাদের অনেক মধ্যেই মুক্তচিন্তা ও মানবিকতার অনেক ঘাটতি দেখা যায়। আমাদের বাংলাজগত তো দূরে কথা বিশ্বসমাজে অগ্রনীদের মধ্যেই নানারকম বিশাল ত্রুটি সবার কাছে স্পষ্ট। ক্রিস্টোফার হিচেন্স, স্যাম হ্যারিসের মতো মুক্তচিন্তার আইকনদের মধ্যেও অমানবিক-অযৌক্তিক, বিদ্বেষ-ফ্যাসিবাদী চিন্তার অনেক বহি:প্রকাশ রয়েছে। মুক্তচিন্তার বরেন্য অনেককে দেখা যায় যে মুক্তচিন্তার প্রচার তাদের কাছে সমাজ সংষ্কার এর চাইতেও personal ego প্রসারের মাধ্যম হিসেবে বান্ছনীয়। কিন্তু এতসব ত্রুটি থাকা সত্বেও যে তারা ধর্মকে আক্রমন করে বর্তমানে মুক্তচিন্তার প্রসারে অভুতপূর্ব অবদান রাখছেন এটা অস্বীকার করা যায় না। এখানে দেং শিয়াওপিং এর সেই বিখ্যাত কথাটি স্মরনীয়, “It doesn’t matter whether a cat is white or black, as long as it catches mice”। নিজের ভেতরে প্রবল তাগিদ না থাকলে কোরান-হাদিস এর বিতর্কিত দিক নিয়ে লেগে থাকার উৎসাহ আসার কথা নয়। এই তাগিদের উৎস হতে পারে ইসলাম বিদ্বেষ অথবা মুসলিম সমাজ সংষ্কার। উৎসের চাইতে গুরুত্বপূর্ন এই তাগিদ থেকে সৃষ্ট ফলাফল।
বাংলাজগতে যারা ধর্ম নিয়ে নিয়মিত লেখা লেখি করেন তাদের অনেকের লেখার মধ্যে অনেক চিন্তা ও চরিত্রের সীমাবদ্ধতা চোখে পড়ে। কিন্তু তাই বলে তাদের অবদান যে অনেক এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তাদের লেখালেখিকে অবশ্যই উৎসাহিত করতে হবে। তাদের লেখার ভুলত্রুটি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, ব্যাংগ-বিদ্রুপ করাতে তো কোনো বাধা নেই। আমরা আশা করতে পারি যে সমালোচনা বিতর্ক থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা নিজের লেখাকে আরো উন্নত করার চেষ্টা করবেন। না করলেও ক্ষতি নেই। তারা যা করছেন সেটা সেটা চালিয়ে গেলেও কোনো আপত্তি দরকার মনে করি না। সত্যি কথা বলতে গেলে, যারা নিজেদের বিজ্ঞানমনস্ক ও মানবিকতার অনুসারী দাবি করেন তাদের মধ্যেও ভুল ত্রুটির অভাব নেই। আমরা সবার কাছেই নিজেদের চিন্তার সীমাবদ্ধতা প্রত্যেকের blind spot। মুক্তচিন্তার জন্যে দরকার হলো কেউ আংগুল দিয়ে সেই blind spot দেখিয়ে দিলে নিজেকে সংশোধন করা।
আমি অবশ্যই মনে করি যে এমনকি মুক্তচিন্তার ফোরামেও কিছু সীমারেখা থাকা উচিৎ স্পষ্টভাবে অমানবিক চিন্তা, অন্যের প্রতি ভিত্তিহীন কুৎসা, অযাচিত অশ্লীলতা এবং গালিগালাজ, অযৌক্তিক-অবৈজ্ঞানিক কুসংষ্কার, এসবই মুক্তচিন্তার ফোরামে অবান্ছনীয় কারন তা মুক্তচিন্তার সহায়ক নয় বরং বাধা। কয়েকজন সাধারন গরীব মুসলিমের অসহায় মৃত্যুকে ব্যাংগ করে ভবঘুরে সেই সীমা অতিক্রম করেছিলেন। সেকারনে তাকে মুক্তমনার পক্ষ থেকে সাময়িক স্যাংশন অবশ্যই সমর্থনীয়। কিন্ত সেকারনে তাকে এই ফোরামে লেখালেখি করা থেকে অনুৎসাহিত করা ঠিক হবে না। মুক্তমনার কোর মিশনের সমর্থক হিসেবেই আশা করছি তিনি তার লেখালেখি চালিয়ে যাবেন এবং তার সমমতধারী লেখকেরাও অনুৎসাহিত হবেন না।
আমি লক্ষ্য করেছি যে ইদানীং বাংলা ব্লগজগতে একটা ক্রাইসিসের মতো চলছে। অনেক নিয়মিত লেখক, আলোচক লেখালেখি-মন্তব্য অনেক কমিয়ে দিয়েছে। আমার মনে হয় এর পিছনে বেশ কিছু কারন রয়েছে। প্রথমত এতো লেখালেখি সত্বেও চারপাশের সমাজ ও চিন্তাভাবনার কোনো দৃশ্যযোগ্য পরিবর্তন না হওয়া, সরকার ও দেশ শাসনে আস্থাহীনতা, নিজেদের রাজনৈতিক বিভক্তি এসবই অনেককে লেখালেখি থেকে অনুৎসাহী করছে। কিন্তু আমি মনে করি এই ধরনের হতাশার কোনো কারন নেই। লেখালেখি থেকে রাতারাতি বড়ো পরিবর্তনের আশা করাটা কখনোই উচিৎ ছিলো না, বিশেষ করে আমাদের দেশের মতো সমাজে যেখানে বৃহৎ পরিবেশে মুক্তচিন্তার ট্র্যাডিশন বলতে গেলে ছিলো না। কিন্তু এর মধ্যেই যে পরিবর্তন গুলো হয়েছে সেগুলোও কম নয়। মুক্তমনার মতো ফোরামগুলির কারনেই বর্তমানে ধর্মবিরোধী চিন্তা প্রকাশ করা আর কেবল বিখ্যাত বুদ্ধিজীবিদের পক্ষেই একমাত্র সম্ভব নয়, সাধারন মানুষও মুক্তসমাজে এটা প্রচারের সাহস করে। আসিফ মহীউদ্দীন ছুরিকাহত হওয়াটা আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয় নি, আশ্চর্য মনে হয়েছে যে একজন সাধারন ছেলে হয়েও সে এতদিন সরাসরি আক্রমনের শিকার না হয়ে তার দু:সাহসী কথাবার্তা চালিয়ে যেতে পেরেছে। বাংলাদেশে ক্ষুদ্র হলেও যে বিজ্ঞান মনষ্ক, নাস্তিক জন গোষ্ঠী রয়েছে এটা এস্টাবলিশমেন্ট সমাজ মিডিয়া স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। এখন মানুষ সমাজে নানা রকম অনাচারের ঘটনায় সরাসরি ধর্মীয় বিধানকে আক্রমন করে লিখতে সাহস করে, এমনকি এস্টাবলিশমেন্ট মিডিয়ার পাতায়ও সেটা স্থান পায়। এই পরিবর্তন গুলো আমরা যারা ৮০-৯০ দশকের সমাজ এবং মিডিয়াজগৎ এর সাথে পরিচিত, তাদের কাছে অনেক সিগনিফিক্যান্ট। সুতরাং পরিবর্তন হচ্ছে এবং মুক্তমনা ও বাংলা ব্লগজগৎ এই পরিবর্তনের ফ্রন্টিয়ারে রয়েছে। এজন্যে এই ফোরামগুলির কোর মিশনের সক্রিয়তা বজায় রাখা সকল মুক্তচিন্তকের জন্যে খুবই প্রয়োজনীয়।
ভাই, আপনারা কেউ কি দয়া করে আমাকে “মুক্ত মনা” কথাটার মানে এক্তু বুঝিয়ে দেবেন? আমার মনে হয় মুক্ত মনা মানে হল যার মন মুক্ত বা স্বাধীন । এখন আমি যদি স্বাধীনভাবে কথা না বলি তবে কি আমাকে মুক্তমনা বলা যায় ? এইটা আমার ক্ষুদ্র ধারনা ।আমার ধরনা ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ।তাই কেউ আমাকে দয়া করে “মুক্তমনা”র মানে টা এক্তু বুঝিয়ে দিন ।আর আমার যতদূর মনে হচ্ছে ভবঘুরে সাহেব অন্যায় কিছু করেন নি ।আসলে আপনারা তাকে ভুল বুঝছেন ।তিনি শুধুমাত্র ইসলামের দুর্বলতাই তুলে ধরতে চেয়েছিলেন ।আমার মনে হয়না তিনি মানুষের নির্মম মৃত্যু নিয়ে ব্যাঙ্গ করার মানসিকতার লোক । তিনি শুধুমাত্র একটা উদাহরন হিশেবে ঐ ঘটনাকে ব্যবহার করেছেন ।আমার ত মনে হয় তিনি সমগ্র মুছলমানদের ভালবাসেন এবং এই জন্যই ইসলামের নগ্ন চেহারা তিনি স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন ; কারন এই ফালতু ইসলামের কারনে মুছলমানরা দিন দিন পিছিয়েই যাচ্ছে ।উনি সাহসী লোক ।আপনারা যারা উনার সমালোচনা করছেন তারা আসলে শুধু লিখালিখিতেই সীমাবদ্ধ ।চেতনায় আপনাদের বিপ্লব ঘটেনি ।পৃথিবীর মানুষকে ভালবেসে থাকলে, তাদের সুখে রাখতে চাইলে মাও সেতুং এর মত সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটানু ছাড়া কোন বিকল্প নেই ।আপনারা কেউ কি সেটা করবেন ?কারো মধ্যে কি ঐ ধরনের চেতনা আছে ?
@অবুঝ, ভবঘুরের চরম বিরোধিতা যারা এখানে করছেন, তারাও কিন্তু চাচ্ছেন যে তিনি ফিরে এসে লেখালেখি করুন।এটাকেই কি আপনার মুক্ত মনা সুলভ আচরন বলে মনে হয় না?
নাকি আমার যা খুশি আমি তাই বলে যাব, কিন্তু কেউ আমাকে কিছুই বলতে পারবে না, কেউ চ্যালেঞ্জ করলে সেই প্রশ্ন আমি ডিফেন্ড না করে,এড়িয়ে যাব, এইটাকে কি আপনি মুক্ত মনা হিসাবে দাবী করতে পারেন?নির্বিচারে যা মনে আসে তাই বলে যাওয়া, আর চ্যালেঞ্জের মুখে ভেগে যাওয়া বা নিজের যুক্তি কে ডিফেন্ড না করা,সোজা কথায় গায়ের জোরে কাজ করার স্বাধীনতা পাওয়াটাই কি আপনার কাছে মুক্ত মনের পরিচয় বলে মনে হল? :-Y
@অর্ফিউস, (Y)
@অর্ফিউস,
খুব ভাল কথা। এ ব্যাপারে আমি আপনার সংগে দ্বিমত নই।
এজন্যই তো তার লেখার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া দরকার। তা না করলে তিনি কী ভাবে স্বাধীন ভাবে লিখবে?
আমার মতে তার লেখার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া হউক। এর পর তার সংগে বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হওয়া যাক।
কি মনে করেন?
আপনি আমার সংগে একমত পোষন করেন?
আপনি যদি এ ব্যাপারে আমার সংগে একমত হন, তাহলে আপনিও আমাদের সংগে সমস্বরে আওয়াজ তুলুন “ভবঘুরেকে পূর্ণাঙ্গ লেখকের মর্যাদা দিয়ে পুনরায় মুক্তমনায় ফিরিয়ে আনা হউক”
কী বলেন?
ভবঘুরে মূলতঃ মুসলমানদের উন্নতি কামনা করেন বলে মুলমানদের ধর্মান্ধত্ব,কুসংস্কার,ও কোরান হাদিছকে একমাত্র সর্বময় বিজ্ঞানের আধার হওয়ার মত মারাত্মক ভূল বিশ্বাষী হওয়ার থেকে ফিরিয়ে এনে প্রকৃত শিক্ষিত ও জ্ঞানী হওয়ার জন্য আহবান জানান।
ইসলামিক পন্ডিতগন বিজ্ঞানের আবিস্কারকে প্রথমে বলেন এটা কোরান বিরোধী , এটা মুসলমানেরা বিশ্বাষ করলে ঈমান থাকবেনা। জাহান্নামে যাবে।
আশ্চর্যের বিষয় হল , যে যখন সেই বিজ্ঞ্যানটা সত্য রুপে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ঠিক সাথে সাথে তাদের বোল পাল্টে যায়।
তখন তারা কোরানের আয়াতের ভষাগত প্রকৃত মূল অর্থ পর্যন্ত পাল্টিয়ে ঐ বিজ্ঞানটা কোরানে আছে বলে দাবী করতে থাকেন এবং শুধু তাইই নয় আরবী ভাষায় অজ্ঞ জনসাধারণের কাছে প্রচার করতে থাকেন , কোরান ই সমস্ত বিজ্ঞানের মূল।
ভবঘুরে এই সমস্ত ধোকাবাজী গুলো সাহসের সংগে জনসম্মুখে তুলে ধরেন। এটাই তার একমাত্র অপরাধ।
তাহলে মুসলমানেরা শুধু কোরান হতে বিজ্ঞান আহরন করে করে উন্নতি লাভ করুক,দেখি কিভাবে উন্নতি লাভ করতে পারে?
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
এটা মডারেটর দের সিদ্ধান্ত কাজেই আমার বিশেষ কিছু বলার নেই। শুধু এটুকুই বলতে পারি যে আমি যতদুর জানি সেটা হল, পুর্নাঙ্গ লেখক মর্যাদা না থাকলেও লেখা প্রকাশ করা যায়,শুধুমাত্র মডারেটররা সেটি যাচাই করে দেখেন।কাজেই এখনে স্বাধীন ভাবে লিখতে হলে পুর্নাঙ্গ লেখককে মডারেশনের আওতায় আনা যাবে না, এর কোন মানেই নেই।যা হোক আবার বলছি যে, এটা মডারেটরদের ব্যাপার।
শুধু মাত্র এই ইগোটাই যদি ভঘুরেকে মুক্ত মনায় লেখালেখি থেকে দূরে রাখে সেক্ষেত্রে তার সুযোগ পাওয়া উচিত বলেই আমি মনে করি। এটা আমি আল্লাহ চাইনার মন্তব্যেও বলেছি।
অনর্থক বাকবিতণ্ডা সবাই করতে চায়, অথবা সেটা করার মত যথেষ্ট সময় সবার আছে বলে আপনার মনে হল কেন?তাছাড়া এটার দরকারও নেই।উনি লিখুন, সেটার প্রেক্ষিতে আলোচনা হতে পারে;শুধু মাত্র আলোচনা হবে সেই জন্যে কাররুই লেখা লেখি উচিত না( সেটা যে কারুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)।লেখার জন্যেই আলোচনা অথবা বাক বিতণ্ডা হবে, বাক বিতণ্ডা হবে,তাই লেখাটাও ফরজ, আমার মনে হয় না যে খোদ ভবঘুরেও এটা মনে করেন।
ওটা ভবঘুরের ফিক্সড ভক্তদের কাজ, আমার না।ভবঘুরে লিখবেন উনার মত, তিনি না লিখলে আমার কোন লাভ নাই, লিখলেও আমার ক্ষতি নাই।কাজেই সমস্বরে আওয়াজ তোলার দরকার বোধ করছি না।
তবে আমি চাই ভবঘুরে লেখক হিসাবে ফিরে আসুন, কেন সেটা আগেও বলেছি।এর জন্য রাজনৈতিক দাবী তোলার মত করে গলা মিলানোর দরকার আমি মনে করছি না।আপনি তুলুন তাতেই হবে।
জি ঠিক। তবে উনার মুসলিম প্রেম মাঝে মাঝে মাত্রা ছাড়িয়ে যায় কিনা, তাতেই আপত্তি।প্রেমটা একটু কম করলে। অন্তত প্রেমের প্রকাশটা একটু মার্জিত ভাবে হলে কারুরই গায়ে বোধহয় লাগতো না।
ইসলামী পন্ডিত গন কি বিশ্বাস করল আর না করল তাতে কিছুই যায় আসে না। ধর্মাশ্রিত তথাকথিত পণ্ডিতরা চিরকালই বলে এসেছে যে সুর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে।যাহোক, এই তথাকথিত পন্ডিত সমাজের মাথা হেঁট করে দিয়েছেন বিজ্ঞানী না, কোন তার্কিক নন।
তাই তারা আজ বিজ্ঞান নিয়ে খেলায় মেতেছে। আমার মনে হয় আরো ভাল উপায়ে তাদের উপযুক্ত ভাবে জবাব দেয়া যায়।
যাদের ভাষা আরবি তারাও তো কোরান পড়ে নাকি? তারাও কি আরবী বোঝে না?তবে তাদের অজ্ঞতা কি অনারবদের থেকে কম? তাহলে আরবি পড়ে বুঝে এমন মুসলিমদের অনেক আগেই কোরানের ভণ্ডামি ধরে ফেলা উচিত ছিল, তারা তা পারেনি কেন?কারন এরা অন্ধ, আর এইসব ধর্মান্ধ লোক দের কে ঠান্ডা করতে আরো উস্কানির পরিবর্তে এমন কিছু বলা উচিত যেনো তারা চিন্তা করতে পারে।প্রথমেই মানুষের ইগোতে আঘাত দিলে তাদের হিতে বিপরীত হবে, এটাই স্বাভাবিক।প্রথমেই যদি তাদের বিদ্রুপ করতে থাকেন বুঝাতে ব্যর্থ হয়ে তবে তারা লাইনে আসবে কেন? এমনকি আপনার কথাও তারা শুনতে চাইবে না।মানুষকে প্রভাবিত করাটা অত সহজ না এইটা আপনার বুঝা উচিত।
এইটা আপনি মডারেটর দের সাথে আলাপ করুন।বাকি সাধারন কিছু পাঠক অথবা পুর্ন ব্লগারের ঠোকাঠুকি কেন লেগেছে আপনি সেটা জানেন, আর সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দেয়ানোর দায় কিছুটা আপনারও। কারন আপনি আর ভবঘুরে মিলেই একটা পোষ্টে সম্পুর্ন অপ্রাসঙ্গিক ভাবে ইসলামী ব্যাখ্যা দিয়ে লেখাটাকে নষ্ট করছিলেন, যেটা কেউ আপনাদের করতে বলে নি। ইসলামী ব্যাখ্যাদানের জন্য ইসলাম নিয়ে যে লেখাগুলো সেগুলোই মনে হয় যথেষ্ট।
কাজেই এখানে মনে হয় কারো দোষ গুন বিচার করতে কেউ আসে না।
এই কথাটা বা এই জাতীয় কথা বার বার বলছেন কেন? আচ্ছা মুসলিম রা তো কোরান থেকে বিজ্ঞান নিয়ে উন্নতি লাভ করতে পারবে না এটা জানা কথা। কিন্তু আপনারাই বা কেন জায়গা, অজায়গাতে খুচাখুচি করছেন? এতেও কি তাদের কোন উন্নতি হচ্ছে?যদি হয়েই থাকে তবে কি উন্নতি হয়েছে একটু দেখান তো।
ভবঘুরের মূল বক্তব্য হলো, আমরা স্বাভাবিক মানুষেরা মানবিক দৃষ্টিতে যা অত্যন্ত খারাপ বলে মনে করি তা অনেক সময় ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত ভাল কাজ। তবে এ জিনিস অশোক, বিপ্লবদের বোঝা যতো সহজ তা সফিক কিংবা কাশেমদের বোঝা ভীষণ কঠিন একটা ব্যাপার। কিন্তু এ জিনিস অনুধাবন করা যাদের খুব কষ্ট হয় তাদের সাধনার এখনো অনেক বাকী আছে বলে ধরে নিতে হবে।।আমরা রাজাকারদের সমালোচনা করবো কিন্তু ওরা যে আদর্শে অনুপ্রাণিত সে ব্যাপারে নীরব থাকবো, তা হলে চলবে কেন? বীজ বাঁচিয়ে রেখে বৃক্ষ উৎপাটন করা সহজ হবে না।তবে পথ নিয়ে মতের মিল না থাকতে পারে কিন্তু তা নিয়ে মুক্তমনাদের ভিতর মনান্তর কাম্য নয়। কাউকে ঘরে ডেকে পরে অপমান করাটাও কিন্তু ভাল দেখায় না। সবাই ভাল থাকুন।
@অশোক,
সহমত।
হতে পারে ভবঘুরের লেখা যথেষ্ট মানসম্পন্ন নয়।
হতেই পারে ভবঘুরে ইসলাম বিদ্বেষী।
কিন্তু তাঁর লেখা থেকে মুক্তমনা’র পাঠকদের বঞ্চিত করা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।
@সফটডক,
সহমত
মুমীন মুসলমানদের কথায় এবং কাজে যে অসঙগতি, তার হাজারো উদাহরন দেওয়া যায়। কেননা সবার উপরে বড়ো সত্য তারাও মানুষ। বিবর্তনের কারনেই সব মানুষের ভিতরই কম বেশী ভন্ডামী দেখতে পাওয়া কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। তাই এ প্রসঙ্গে ভবঘুরের নৌকাডুবির মতো মর্মান্তিক উদাহরন টানা মতেই কাম্য ছিল না। এ ব্যাপারটি তখন সবার নজর এড়িয়ে যাওটাও ঠিক হয় নি। তখনি এর একটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার ছিল।যাই হোক, মহানবী এবং কোরানের গুনগান করার জন্য বাংলায় হাজার হাজার পেশাদার লোক আছেন। কিন্তু বাংলার দুর্ভাগা আকাশে ভবঘুরে, তসলিমার মতো ইসলামের বিরুদ্ধে সরাসরি রুখে দাঁড়াবার মানুষ সত্যি বিরল। এদের কথা ছাপিয়ে মুক্তমনা যে এতোদিন দুঃসাহসী সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছে এর জন্য মুক্তমনার কর্নধারদের অভিনন্দন না জানালে অন্যায় হবে। এখন যদি ভবঘুরের জ্বালাময়ী লেখাকে ব্লগের উন্নতি এবং নিরাপত্তার স্বার্থে মডারেশনের আওতায় আনা হ্য় তবে সেটা বোধোগম্য। ভবঘুরের যেহেতু লেখার পিছনে একটা “মিশন“ আছে তাই ব্যক্তিগতো মানসম্মানের কথা না ভেবে লিখতে থাকুন। কেউ ইসলামের বিরুদ্ধে লিখলে মুক্তমনা তা ছাপাতে দ্বীধা করবে বলে মনে হয় না। যেমন অনেক নারীবাদীরা বলে থাকে তারা পুরুষদের ঘৃনা করে। তেমন করে ইসলামবিদ্বেষীরা যদি মুসলমানদের ঘৃনা করা শুরু করে তবে কোটি কোটি মানুষ যাবে কোথায় ? পাপকে ঘৃনা করা চলে পাপীকে নয়।এ ছাড়া ধর্মটা হলো মানুষের হাজারটা আইডেন্টির একটি মাত্র। কেবল ধর্মের কারনে কাউকে হেয় চোখে দেখা চরম মূর্খটা ছাড়া কিছু নয়।
আল্লাচালাইনা বলেছেন
আমি এমন আতেলেকেচুয়াল উক্তি আমার ব্লগিং জীবনে শুনিনি। 😀 😀
সৃজনশীল লেখা আছে বলেই মানুষ মননশীল লেখা সুখপাঠ্য করে লিখতে পারে এটাই জানতাম এবং সৃজনশীল লেখা মোটেও ততটা সহজ নয় যতটা মনে করা হয় এবং বেশিরভাগ সময়ই মননশীল লেখা হতে কঠিন :-s
যাই হোক ,
ভবঘুরের সব লেখার চেয়ে আপনার এই লেখটা চরম হীট হয়েছে…… :lotpot:
ভবঘুরে ধর্ম বিদ্বেষী, এই বার আশা ভবঘুরের বিপরীত লেখক আসবে, মানে ধর্মের পক্ষপাতী লোকর লেখাও আসবে… সকল ধর্মের ভাল ভাল আয়াত তুলে ধরে, মুক্তমনার অবস্থান অনেক উচুতে নিয়ে যাবে।
এই কামনায়ই করি।
আর আপনার লেখা আর সব মন্তব্য পড়ে মনে হল মুক্তমনার নামে সবোচ্চ অপমানই করা হইছে। যাই হোক ভাল থাকবেন।
শুভ কামনা রইল।
@(নির্জলা নির্লজ্জ),
ধন্যবাদ দাদা, কষ্ট করে লেখা আর “সমস্ত” মন্তব্য মনোযোগ দিয়ে পরার জন্য। আরেকটি বিষয় যদি কিছু মনে না করেন…… পাকবতনে আইয়ুব খান নিজের মনগড়া “মৌলিক গণতন্ত্র” সংজ্ঞায়িত এবং নিজ “তত্ত্ব” অনুযায়ী “বতন” চালাতে প্রয়াস নেয় সেই গত শতকে। আপনারও কি এমন কোন স্ব-সংজ্ঞায়িত “মৌলিক মুক্তমনা তত্ত্ব” আছে :-s যার বাহিরে যাওয়া মানা??? জানালে বাধিত হই… নিজের জ্ঞানকে আরও শাণিত করতে পারব কিনা… 🙂
উক্তির টোন শুনে মনে হচ্ছে ৫+৪=৯ এর জায়গায় ৪+৫=৯ দেখলেই হজম করতে কষ্ট হয়…… 😉
আবারো ধন্যবাদ আমার লেখা এবং উক্তি বিশ্লেষণের পেছনে মূল্যবান সময় ব্যয় করার জন্য 🙂
@সংবাদিকা,
কিছু কিছু শব্দ এই যেমন ভাল, চরিত্র বান ঠিক একই ভাবে মুক্তমনা এই শব্দটাও আমার কাছে হাস্যকর মনে… নারে ভাই, বাইরে যাওয়া মানা হবে কেন , বাইরে অবশ্যই জাবেন… আর আপনারাই বা কতটুকু বাইরে যেতে পেড়েছেন…???
একটা দেশে যেমন বিভিন্ন রকমের মানুষ থাকে, যেমন চোর, বাটপাড়। তাই বলে তো চোর বাটপাড়দের বাদ দিয়ে দেশে উন্নয়ন সম্ভব না…… তাদের মত মানুষদের নিয়েই সামনের দিকে আগাতে হয়…… কিন্তু আপনারা তো বেছে বেছে ভাল জিনিস গুলাই নেন… ঠিক যেমন ভাল ভাল স্কুল গুলা ভাল ভাল ছাত্র ভর্তি করায়… আপনাদের অবস্থা হইছে এইরকম।
একটা মানুষকে অপমান করবেন…… আবার হজম করার কথাও বলবেন, ভাল চালিয়ে জান।
আর আপনার পোস্টটা পড়ে মনে হয়েছে উপরে উপরে ভালবাসা আর ভিতরে কার্বন মনো অক্সাইড…
যাই হোক আপনের লেখা কিন্তু সুপার হিট!!!!!!
অপমানের মধ্যে দিয়ে মুক্ত মনা জমে উঠেছে… চালিয়ে জান!!!
শুভ কামনা রইল!!!
ভাল থাকবেন।
@(নির্জলা নির্লজ্জ),
আমার মনে তো মনে হয় চোর বাটপারদের সংখ্যাই কম। সমাজে ভালো মানুষদের সংখ্যাই বেশি, এজন্য তারা চোর-বাটপারদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করেনা। যাদের নিয়ে আগানো যায় মানবিক দৃষ্টিতে এগিয়ে যায় তাদের নিয়েই।
মানুষকে নিয়ে অযথা খোঁচাখুঁচি সভ্য সমাজের অংশ নয় এবং তা যদি অপরের ক্ষতিকর কিংবা অপমান জনক না হয় তাহলে তো ওটা অপরের অধিকার ভঙ্গের তথা মানবাধিকার লংঘনের পর্যায়ই পরে।
কিন্তু কেউ যদি অপরকে হেউ করে…… অপমান করে…… তাহলে তার অন্তত ঐ সব কথা গুলো আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়াও নাগরিক দায়িত্বের অংশ নয় কি????
আপনার রিজনিং দক্ষতাতো মারাত্মক ভয়াবহ!!!! আশাকরি কোননা কোন তর্ক সভায় অতি শীঘ্রই সভ্য হিসেবে কোন পদ অলঙ্কৃত করবেন।
ধন্যবাদ…… আহ হা! কেন যে “ডুপার” হিটও হলোনা।
হা হা…… কেউ যদি অপরের জন্য অপমানকর আচরণ কিংবা উক্তি করেন তাহলে তো অন্তত তাকে জানানো উচিৎ তিনি কি করেছেন!!!
ধন্যবাদ, আপনিও ভালো থাকবেন 🙂
আমি মনে করি ভবঘুরেকে তার ফুল রাইট ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যেই ম্যাসেজ তাকে পাস করার জন্য এতো কিছু করা, সেই ম্যাসেজটা মনে হয় তার কাছে খুবই ভালোভাবে কমিউনিকেট করা হয়েছে, যে-‘আরেকটু বেশী সংবেদনশীলতা কাম্য’। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এরচেয়েও অনেক অনেক বেশী অসংবেদনশীলতার উদাহারণ কি মুক্তমনাতে এর আগে কেউ দেখেনি? বিশদ উদাহারণে যাবো না আমি নিজেই এর আগে অসংবেদনশীল আচরণ করেছি যেটা কিনা আমি এখন মনে করি আমার করা উচিত হয়েছিলো না; আমি ছাড়াও একাধিক মানুষ করেছে। কিন্তুআমাদের কারো উপরে ওয়ান শট খেলা হয়নি। এইখানে এইটা বলার কোন অপেক্ষাই রাখে না যে একাউন্ট মডারেট করে তাকে এইটাই বলা হয়েছে যে- তুমি দৌড়ের উপ্রে থাকো? এইটা কি ওভারকিল হয়ে যায় নাই? এর আগে এমনটা কারো উপর কি হয়েছিলো? এর আগে প্রত্যেক এলেইজড অফেন্ডার একাধিক চান্স পেয়েছিলো, বস্তুত প্রত্যেকেই একাধিক চান্স ডিসার্ভ করে। এর বেলায় এর ব্যতিক্রম কি চোখে খানিকটা দৃষ্টিকটু লাগে না? আমি মনে করি আমাদের দলাদলি বন্ধ করা উচিত। দলাদলিই যদি করি তাহলে খামার ব্লগের সাথে মুক্তমনার কোন পার্থক্য থাকে না। আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকেই আরেকটু প্রফেশনাল আচরণ কাম্য।
এইখানে আরও একটা ব্যাপার সুস্পষ্ট সেটা হচ্ছে ভরঘুরে এট আলিবাই কে ব্লগ হতে বিতাড়িত করা হলে একপক্ষ বগল বাজাবে, এক পক্ষ হতাশ হবে আরেক পক্ষের কোনকিছুই আসবে যাবে না। মুক্তমনার এইটা অনুধাবন করা উচিত যে একজনকে বিতাড়িত করতে এদের সক্ষম হতে দিলে এরা এইখানেই থেমে থাকবে না, বিতাড়িত করতে সচেষ্ট হবে আরও একাধিক ব্যক্তিকে। এইভাবে বিতাড়ণচক্র চলতে থাকলে ইভেঞ্চুয়ালি কি হবে? ওয়েল ফোরামটা পরিণত হবে একটি হরিদাসপালে ভর্তি সবুজবাংলা ব্লগে যেইখানে কয়েকজন ঘনিষ্ট দোস্ত মিলে গল্প-কবিতা লিখে হাহাহোহো করে। এই শোচণীয়তার দিকে ধাবিত হওয়া আমাদের নিয়তি নয়। [যদিও আমি মনে করি গল্প-কবিতা লিখতে কোন স্কীল এবং যোগ্যতা এবং পরিশ্রম লাগে না, গল্প কবিতাকে যথেষ্টই নীচু দৃষ্টিতে দেখি আমি, তথাপিও আমার কোনই বিদ্বেষ নাই গল্প-কবিতার প্রতি 🙂 ]। মুক্তমনাকে যদি ক্র্যাকডাউনে নামতে হয় তাহলে নামা উচিত অসংলগ্ন বালছাল লেখার বিরুদ্ধে যেটা কিনা অনেকই লেখা হয় মুক্তমনাতে; সেগুলো কখনই কোন আলোচনা জন্ম দেয় না কেননা সেগুলোর বেশীরভাগ সময়েই থাকে না কোন মাথা এবং পাছা।
ভবঘুরেকে ফুল রাইট ফিরিয়ে দেওয়া হোক, মুক্তমনা থেকে সে বিতাড়িত হলে আসলেই তার অনেক কিছু আসে যায় কেননা অনেক সময় ও পরিশ্রম দিয়েছে এই ফোরামের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করেছে জন্ম দিয়েছে অনেক আলোচনার। নিদর্শন স্থাপনের জন্য কাউকে ব্যানকে করতে হলে আমাকে ব্যান করা যেতে পারে (একটি পরামর্শ); আমি নিজেকে ব্রান্ড করি খুবই খুবই ইসলাম বিদ্বেষী একজন মানুষ হিসেবে এবং এই ফোরামের প্রতি আমার কোনই অবদান নাই নিছকই একটি বঙ্গভাষী সমাজে সপ্তাহান্ত আন্তর্জালীয় সোশ্যালাইজিং ও বিনোদনলাভ ব্যতীত। তার প্রতি ট্রিটমেন্টটা ফেয়ার হচ্ছে না এবং দৃষ্টিকটু হচ্ছে, তার প্রতি ওয়ান শট খেলা উচিত না, সে ফার্দার চান্স ডিসার্ভ করে, সকলেই করে। যদিও আমি বুঝি ফেয়ার ট্রিটমেন্ট কোন ভিখ মাগার জিনিষ না বরং বাহুবলে প্রতিষ্ঠিত করার জিনিষ; বাহুবল নেই বিধায় থাকছে আমার নিছকই অনুরোধ এই ব্যাপারটা মুক্তমনাকে বিবেচনা করে দেখার।।
@আল্লাচালাইনা,
এই মেসেজ যদি ভবঘুরে বুঝে থাকেন তবে সেটাই হবে সবচেয়ে সুখের বিষয়।
হুম আমিও একমত।শুধুমাত্র spousal betrayal এর ক্ষেত্রে হয়ত কেউই একবার চান্সও দিতে চাইবে না, তবে এখানে এমন কিছু ঘটেনি।আমিও মনে করি যে ভবঘুরের সুযোগ পাওয়া উচিত।
যেহেতু উনি পুর্নাঙ্গ লেখক ছিলেন, কাজেই উনার সেই ক্ষমতা আবার ফিরিয়ে দিলে যদি তিনি আবার লেখালেখি শুরু করেন এখানে, তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবেই মনে করি যে ভবঘুরেকে পুর্নাঙ্গ লেখকের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবার বিষয়টি মডারেটররা বিবেচনা করে দেখুন, এটাই আমার অনুরোধ( ব্যক্তিগত) থাকবে মুক্ত মনার কাছে।
ভবঘুরের কাছেও অনুরোধ থাকবে,ফিরে এসে আরেকটু সচেতন হবেন।
সবাই তো আমাকে একেবারে হিরো বানিয়ে দিলেন। এটা আমার কল্পনাতেও আসে নি যে আমার মত একজন তুচ্ছ ব্লগ লেখককে নিয়ে রীতিমতো একটা নিবন্ধ লেখা হবে আর তা দারুন হিট হবে। তাই সবাইকে জানাচ্ছি আমার অভিনন্দন।
একটা ব্যপার লক্ষ্যনীয়, যারা আমার নিন্দা করেছেন তাদের বক্তব্য আমি ইসলাম বিদ্বেষী। আর যারা প্রশংসা করেছেন তারা বলেছেন আমি ইসলাম তার কিতাব অনুযায়ী আমি ঠিক সেটাই তুলে ধরেছি প্রাঞ্জল ভাষায়। আসলে উভয়েই সঠিক। যারা উপরে উপরে মুক্তমনা কিন্তু ভিতরে মৌলবাদি তাদের কাছে আমি অবশ্যই ইসলাম বিদ্বেষী কারন একজন সাচ্চা মুমিন মুসলমানের কাছে আমি সেরকমই। তবে আমি তাদের দোষ দেই না। বাপ-দাদা তথা চৌদ্দ পুরুষ থেকে বিশ্বাস করে আসা একটা ধর্ম হঠাৎ করেই কারো কাছে খারাপ হয়ে যায় না। বিশ্বাস ব্যপারটাই এরকম-এটা রক্ত অস্থি মজ্জায় মিশে থাকে। আর আমার বর্তমান বিশ্বাস এটা কোষের DNA তেও একটা পরিবর্তন এনে ফেলেছে হাজার হাজার বছর ধরে জিনিসটা চলে আসার কারনে। আর তাই বিশ্বাসী মানুষদের কাছে কোরান হাদিস ও সিরাত থেকে ইসলাম ও মোহাম্মদের নানা রকম আজগুবি, অমানবিক, অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক রীতি নীতি ও কর্মকান্ড সবিস্তারে প্রচার ও প্রকাশ করলেও তা তাদের কাছে সামান্যই রেখাপাত করে। কিন্তু আজব লাগে যখন তারা কোরান হাদিস বা সিরাত থেকে যথাযথ উদ্ধৃতি সহকারে কোন একটা ঘটনাকে ব্যখ্যা করলে সেটা যদি প্রচলিত প্রথার বিরুদ্ধে চলে যায় তাহলে সেটাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলে বা নিন্দা জানালে। আর এটা একটা চরম ভন্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়। ব্যপারটা এরকম, কিছু লোক দেখলাম আমার একটা নিবন্ধের – মেঘনায় লঞ্চ ডুবি ও শহিদী মর্যাদা নিচের অংশটুকু নিয়ে ব্যপকভাবে প্রমান করতে চেয়েছে আমি খুব নীচু স্তরের কোন প্রানী। এখন দেখা যাক সেটা কি-
উপরের ব্যখ্যটুকু করা হয়েছিল একটা হাদিসের ভিত্তিতে আর সে হাদিসটা হলো নিম্নরূপ-
আবু হুরায়রা বর্ণিত, আল্লাহর রসুল বলেছেন- একজন মানুষ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল, রাস্তার ওপর কাটাওয়ালা একটা শাখা দেখল ও তা তুলে রাস্তার বাইরে ফেলে দিল। আল্লাহ তা দেখে লোকটির ওপর খুব খুশী হলো ও তার সব গুনাহ মাফ করে দিলেন। এর পর নবী পাঁচ প্রকারের শহিদের কথা উল্লেখ করলেন তারা হলো-
(১) যারা প্লেগ বা মহামারীতে মারা যায়
(২) যারা পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়
(৩) যারা পানিতে ডুবে মারা যায়
(৪) যে দুর্ঘটনা (দুর্যোগ)য় জীবন্ত অবস্থায় কবরে (চাপা পড়ে) মারা যায়
(৫) যে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধে মারা যায়।
সহী বুখারী, বই নং-১১, হাদিস নং-৬২৪
Narrated Abu Huraira: Allah’s Apostle said, “While a man was going on a way, he saw a thorny branch and removed it from the way and Allah became pleased by his action and forgave him for that.” Then the Prophet said, “Five are martyrs: One who dies of plague, one who dies of an abdominal disease, one who dies of drowning, one who is buried alive (and) dies and one who is killed in Allah’s cause.” (The Prophet further said, “If the people knew the reward for pronouncing the Adhan and for standing in the first row (in the congregational prayer) and found no other way to get it except by drawing lots they would do so, and if they knew the reward of offering the Zuhr prayer early (in its stated time), they would race for it and they knew the reward for ‘Isha’ and Fajr prayers in congregation, they would attend them even if they were to crawl’). Bukhari, Volume 1, Book 11, Number 624
এখন যারা প্রকৃত মুমিন বান্দা তারা কি হাদিসের সাথে একমত হবে নাকি প্রচলিত সামাজিক ধ্যান ধারনা ও মূল্যবোধের দ্বারা তাড়িত হবে। যারা আমার উক্ত ইসলামিক ব্যাখ্যায় নিদারুন আঘাত প্রাপ্ত হয়ে নানাভাবে নিন্দাবাদ জ্ঞাপন করছে তাদেরকে অনুরোধ করছি , দয়া করে আপনারা ব্যখ্যা করুন ইসলামিক বিধান ও বিশ্বাস অনুযায়ী কোথায় আমি ভুল করলাম। যদি সেটা না করতে পারেন তাহলে আপনারা ভুয়া মুক্তমনা এবং সেটা প্রকাশ্যে স্বীকার করবেন যদি সত্যই সত্যবাদী ও মুক্তমনা হন। আর যদি ভুল প্রমান করতে পারেন, আমি আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করব। এখানে উল্লেখ্য , উক্ত নিবন্ধ কোনমতেই লঞ্চ ডুবিতে মারা যাওয়া লোকদের ব্যপারে দু:খ প্রকাশ বিষয়ক ছিল না , ওটা ছিল উক্ত ঘটনার ইসলামিক ব্যখ্যা। অনেকেই সেটা বুঝেছেন আর তা নানভাবে প্রকাশও করেছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ। এ নিবন্ধে দেখাতে চেয়েছি মুমিন মুসলমান বান্দারা কতটা ভন্ডামি তাদের জীবনে প্রতি নিয়ত করে চলে সেটা দেখাতে। আর বলা বাহুল্য, যারা আমাকে ব্যপকভাবে নিন্দাবাদ জ্ঞাপন করেছেন তারা আমার ব্যখ্যা খন্ডাতে না পারলে আমি তাদেরকে ভন্ড হিসাবেই আখ্যায়িত করব। এখন অপেক্ষায় থাকলাম দেখি কে আমার বক্তব্য খন্ডাতে এগিয়ে আসেন।
এবার সবচাইতে মজার বিষয় হলো- উক্ত নিবন্ধ যদি এতই মুক্তমনার নীতিমালার পরিপন্থি হয়ে থাকে, তাহলে সেই তখন( মার্চ /২০১২) কিন্তু আমাকে কোনরকম সতর্ক করা হয় নি বা কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, তা তখন করা হলে আমি কিছুই মনে করতাম না। করা হলো কখন? যখন সাইফুল ও ফরিদ নামক দুই ব্যক্তি আমার উপর পায় পাড়া দিয়ে আক্রমন করে , অশ্লীল গালাগালি দিয়ে গেল আর আমি তাদের প্রত্যূত্তর দিয়েছিলাম কোন রকম অশ্লীল শব্দ ব্যবহার না করেই যা ছিল সম্ভবত নভেম্বর/২০১২ মাসে, অর্থাৎ আমার কথিত অপরাধের ৮ মাস পর। এর পরেও আমার অনেক নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। আর যা এ ব্লগের সবাই প্রত্যক্ষ করেছেন। শুধু আমাকেই নয় আমার লেখা যারা পছন্দ করেন তাদেরকেও তারা ছাড়ে নি- তাদেরকেও তারা অকথ্য ভাষায় এই মুক্তমনাতেই প্রকাশ্যে গালাগালি করেছে। অথচ তখন মুক্তমনার মহামান্য মডারেটরবৃন্দ তখন চুড়ান্ত রকম নীরবতা পালন করেছেন ও তাদের এ হেন অশ্লীল শব্দ বা গালাগালি মডারেটরদের নজরে পড়েনি। এ ব্যপারে আমি কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমন না করেই একটা নিবন্ধ লিখেছিলাম এ শিরোনামে – তথাকথিত মুক্তমনারা, কিন্তু মহামান্য মডারেটর বৃন্দ তা প্রকাশ করেন নি এবং একই সাথে আমার লেখা প্রকাশের ক্ষমতাকে স্তব্ধ করা হয়। আমি পুরো তাজ্জব বনে যাই মডারেটরদের এহেন অদ্ভুত ও উদ্ভট আচরণে। আর বলা বাহুল্য, এটাকে আমি চরম অপমান সূচক হিসাবে জ্ঞান করি। সুতরাং পাঠক বৃন্দ এতক্ষনে সবাই বুঝতে পেরেছেন যে – মূলত: আমার লেখার বক্তব্য খন্ডাতে না পেরে এক শ্রেনীর লোকের গায়ে জ্বালা ধরে গেছিল, আর তারা যেন তেন ভাবে আমার কণ্ঠ রোধ করতে চাইছিল। তাদের আশা পূরণ হয়েছে আর আমি কথা দিচ্ছি এ ব্লগে আর কখনো আমাকে দেখা যাবে না। আমি এ মন্তব্যও লিখতাম না , দেখলাম কিছু কিছু বক্তব্য বড় এক তরফা হয়ে যাচ্ছে- আর তাই ভাবলাম কিছু লেখা দরকার।
আমি মুক্তমনের মানুষ, সাদা কে সাদা দেখি আর কাল কে কাল- ভন্ডামি আমি পছন্দ করি না। মুক্তমনা, আমি মনে করি শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও অনেক ভাল ভাল নিবন্ধ প্রকাশ করে যা থেকে মানুষ অনেক কিছু জানতে পারে। আমি এ ব্লগের উত্তরোত্তর সার্থকতা ও সাফল্য কামনা করছি। আমার কন্ঠ রোধ করা হয়েছে বলে ঈর্ষাকাতর হয়ে এর ধ্বংস কামনা করা আমার কাম্য নয়, কারন আমি এখনও মনে করি – এ ব্লগ অন্য হাজারটা ব্লগের চেয়ে মানুষের জ্ঞান অর্জনে অনেক বেশী সহায়ক। পরিশেষে, সবার মঙ্গল কামনা করে বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভাল থাকবেন।
@ভবঘুরে, ওয়েলকাম ব্যাক। 🙂
আপনি যদি ভাই দুনিয়াতে ঘটে যাওয়া প্রতিটা ঘটনার ইসলামী ব্যখ্যা দিতে শুরু করেন তাহলেই শর্বনাস।এইবার রেপ ভিক্টিম দের নিয়েও না হয় একটা ইসলামিক ব্যখ্যা দিয়ে ফেলুন।
আপনার মন্তব্যের বাকিটা ( শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত) নিয়ে আর কোন কথা না বাড়ানই বুদ্ধিমানে কাজ বলে মনে করছি।এতে আবার লেগে যেতে পারে ঠোকাঠুকি। দরকার কি আমার!!ভাল থাকুন।
@অর্ফিউস,
আপনার এক লেখাতেই কোরআন, হাদিসের প্রমান সহকারে ইসলামিক আদেশ ব্যখ্যা করেছিলেন কিনা, তাই বললাম আর কি।
@ভবঘুরে,
আপনি হেরে গেলেন ভবঘুরে। মুক্তমনার অঙ্গীকার থেকে উল্লেখ করছি- সমাজে বিদ্যমান অদৃষ্টবাদ, ভাববাদ, বিশ্বাসনির্ভর লাগাতার প্রকাশনা আর প্রচারণার বিপরীতে একটি বিজ্ঞানমনস্ক এবং যুক্তিবাদী ধারা প্রবর্তনে, শতাব্দী প্রাচীন ভাববাদী দর্শনের বিপরীতে, আজন্ম লালিত ধর্মীয় ও সামাজিক নিবর্তনমূলক সকল অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে আজ আপনি একজন পরাজিত সৈনিক, আমরা একজন সহযাত্রী হারালাম।
আমার ফিরে আসাকে আমার নিন্দুকেরা ভাল চোখে দেখেন নি, প্রচুর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, খুঁচা-খুঁচি করেছেন। আমি পাত্তা দেইনি। এখানে টিকে থাকার একমাত্র অস্ত্র কলম আমি সারেন্ডার করিনি।
আমার অনু্রোধটা রাখলে খুশী হতাম। কামনা করি আপনার আগামী দিন সুন্দর হউক সুখী হউক।
@ভবঘুরে,
প্রথমেই বলি, আপনার মন্তব্য দেখে ভাল লাগছে। ফিরে আসার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার আলোচ্য মন্তব্যটি নিয়ে আমার সমস্যা কোথায় তা আমি উপরে বলেছি। দয়া করে আপনি এর উত্তর দিন। হাদীস অনুযায়ী ডুবে যাওয়া মানুষ বা পাকিস্তানী হানাদারদের হাতে নিহত মানুষ বেহেশতে যাবে, এটা মুসলিমদের বিশ্বাস। এখন এরকমভাবে কেউ মারা গেলে তাদের জন্য শোক প্রকাশ করাতে কোন ধর্মীয় বাঁধা আছে কি? শোকের প্রকাশ একটি ব্যক্তিগত ব্যাপার এবং এর ধরন বিভিন্ন রকম হতে পারে। শোকপ্রকাশকারী কেবলমাত্র মৃত ব্যক্তির বেহেশতে বা দোযখে যাবার কথা চিন্তা করেন না; তিনি মৃত ব্যক্তির সাথে তার স্মৃতি, অন্তরঙ্গতা, তার অভাবে নিজের অসহায়ত্ব ইত্যাদি চিন্তা করে শোকগ্রস্থ হতে পারেন। যদি ধর্মীয় বাঁধা না থাকে তাহলে প্রিয়জনদের জন্য শোক প্রকাশের মত একটি মানবিক কাজ করে শোকপ্রকাশকারীরা কোন অন্যায় করেন নি এবং তাদের এই শোক প্রকাশ ইসলাম-বিরুদ্ধও হবে না। যদি তা না হয় তাহলে এটি মুসলিমদের বিশ্বাস আর জীবন যাপনের ক্ষেত্রে দ্বিচারিতার উদাহরন হতে পারে না। বরং এক্ষেত্রে তাদের উল্লাস করতে বলাটা চরম অমানবিক একটি ব্যাপার হবে। যদি ইসলামে সুনির্দিষ্টভাবে এধরনের মৃতব্যক্তিদের জন্য উল্লাস করার নির্দেশনা থাকে তাহলে অবশ্যই আমি আপনার সাথে হাত মিলিয়ে আপনার মতের সাথে একমত প্রকাশ করব।
আমার আরো একটি প্রশ্ন আছে, আপনি আস্তিক না নাস্তিক? অবশ্যই এই প্রশ্নের উত্তর দেবার কোন বাধ্যবাধকতা নেই, তবে উত্তর পেলে খুশী হব।
@মনজুর মুরশেদ,
পড়ুন,
যদি ইসলামে সুনির্দিষ্টভাবে এধরনের মৃতব্যক্তিদের জন্য উল্লাস করার নির্দেশনা ও বাধ্যবাধকতা থাকে তাহলে অবশ্যই আমি আপনার সাথে হাত মিলিয়ে আপনার মতের সাথে একমত প্রকাশ করব।
@ভবঘুরে,
আপনি চলে যাবেননা। আপনার আন্দোলন অনেক এগিয়ে এবং অগ্রসরমান। আর মুক্তমনাই সম্ভবতঃ একমাত্র সবচাইতে ভাল স্থান সমাজের সমস্ত কুসংস্কার ও ভন্ডামী ভেঙে চুরমার করে দেওয়ার জন্য। আপনি এই মুহর্তে এটা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে এই ধরনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনটি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাবে।
এই মুক্তমনা যদি অভিজিৎ ও তার সহযোগীরা তৈরী না করতেন, এবং আপনাদের মত কিছু মেধা সম্পন্ন ব্যক্তি এ সব সামাজিক কাজে নিজেদের জীবনের প্রচন্ড ঝুকি নিয়ে হলেও এগিয়ে না আসতেন তা হলে বহু ব্যক্তি,আমি,সহ আজও ভন্ড দের কাছে তাদের মূল্যবান মস্তিস্কটি জন্ম হতে মৃত্যু অবধি বিক্রীত থাকিত। যেমনটা অন্যদের আছে দেখতে পাওয়া যায়।
কাজেই জনসমাজ, অভিজিৎ et al তথা মুক্তমনার নিকট চির কৃতজ্ঞ থাকবে।
কাজেই মুক্তমনার মহৎ উদ্যেশ্য অগ্রসর হচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নাই। আমি তো একাজ কখনোই করতে পারবনা- কারন আমার জীবনের ভয় আছে।
এক পরিবারে স্বামী-স্ত্রী, বাপ-ছেলে,ভাইয়ে-ভাইয়েও কলহ হয়। কিন্তু তা আবার মিটিয়েও নিতে হয়।
এ ধরণের একটা আন্দোলন ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ একটা তালেবান শাসিত রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে যাওয়া মোটেই বিচিত্র নয়।
@মুক্তমনা মডারেটর- ভবঘুরেকে “পূর্ণাঙ্গ লেখক” এর মর্যাদা ফিরয়ে দেওয়ার জন্য পুনরায় অনুরোধ করছি।
আর তা ছাড়া মুক্তমনা নীতি বিরুদ্ধ যে কোন লেখা নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতাতো সব সময়ই আপনাদের হাতে রয়ে গিয়েছে।
@ভবঘুরে,
বিশ্বাস ব্যপারটাই এরকম-এটা রক্ত অস্থি মজ্জায় মিশে থাকে। আর আমার বর্তমান বিশ্বাস এটা কোষের DNA তেও একটা পরিবর্তন এনে ফেলেছে হাজার হাজার বছর ধরে জিনিসটা চলে আসার কারনে। আর তাই বিশ্বাসী মানুষদের কাছে কোরান হাদিস ও সিরাত থেকে ইসলাম ও মোহাম্মদের নানা রকম আজগুবি, অমানবিক, অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক রীতি নীতি ও কর্মকান্ড সবিস্তারে প্রচার ও প্রকাশ করলেও তা তাদের কাছে সামান্যই রেখাপাত করে।
চিন্তার বিষয় বটে :-s
@ভবঘুরে,
জয়তু ভবঘুরে!!
ভবঘুরেকে ফেরত চাই। ধর্মকে তালি দিবার কিছু নাই, গালি দিবারও কিছু নাই। তবে ধর্মের বহু বছরের বুজরুকি সবার সামনে আনার সময় হয়েছে। ভবঘুরে তো তাই করছিলো। নাস্তিকতা মধুর কথাতে মাথায় ঢুকে না। ভবঘুরের মতো অনেকগুলো মানুষ দরকার যারা সংশয়বাদীদের মনে একটা টনক নাড়াবে, আর তারপর মুক্তমনার বাকি মুক্তমনা লেখকরা তো আছেই এই সদ্য বেহেস্ত হারানো দুখীদের সঙ্গ দেবার জন্য! ভবঘুরেকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন মুক্তমনা মডারেটরস। চান আর না চান ভবঘুরে মুক্তমনার বিশাল এক অংশ।
@নির্মিতব্য,
একটা কথা বলি কিছু মনে করবেন না।আচ্ছা মুক্ত মনা মডারেটর রা কিভাবে ভবঘুরেকে ফিরিয়ে আনবেন? আমার জানা মতে মডারেটররা ভবঘুরে কে তাড়াননি, ভবঘুরে নিজেই চলে গেছেন কারন ভবঘুরের লেখা মডারেশন করেছিলেন মডারেটর রা।আর এটা মডারেটররা করতেই পারেন।
এতেই ভবঘুরের ইগো আহত হয়েছিল আর তিনি একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক ভাবে সংসপ্তকের একটা লেখায় পাঠকদের কাছে বিচার দিয়ে চলে গিয়েছিলেন(ওই লেখায় নিজের অভিযোগ না করে নিজে একটা লেখা দিয়ে বিদায় নিলেন না কেন, ব্যাপারটা আমার কাছে পরিষ্কার না।তবে আমার অনুমান হল যে( সেটা সঠিক নাও হতে পারে) অন্যের লেখা অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য দিয়ে নষ্ট করার প্রবনতাই তাঁকে দিয়ে এমন কাজ করিয়েছিল)।
কাজেই মডারেটরস কিভাবে কাউকে ফিরিয়ে আনবে সেটা আমার বোধগম্য হল না। তবে কি আপনিও পুরাপুরি সেন্সরহীন ভাবেই দেখতে চাইছেন মুক্ত মনা কে? তবে আর মডারেটর দরকার কি, যদি তাঁরা মডারেশনই না করতে পারেন আপনাদের দাবী অনুসারে?
অনেকদিন আগে একটা বাংলাদেশী পত্রিকা( মনে করতে পারছি না নাম টা) অরুন্ধতী রায়ের একটা লেখার বরাত দিয়ে লিখছিল যে শচীন টেন্ডুল্কার কে নিয়ে খামোখাই বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে, ভুলে গেলে চলবে না যে সে ভারতীয় দলেরই একটা ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।
আমার প্রশ্ন হল যে শচীনের মত সর্বকালের অন্যতম একজন খেলোয়াড় যদি হন ভারতীয় দলের এক খুদ্র অংশ, তবে ভবঘুরে কেন মুক্ত মনার বিশাল অংশ সেটা বুঝলাম না। ভারতীয় ক্রিকেট দলে শচীনের অবদান যে কারো চেয়ে অনেক বেশি, সেখানে আমি তো দেখতে পাচ্ছি যে এই মুক্ত মনা তে ভবঘুরের চেয়ে অনেক বেশি অবদান অনেক লেখকেরই আছে, সেখানে এত স্থুলভাবে ভবঘুরের চাটুকারীতার কোন দরকার ছিল কি?
এখানে বিশাল কিছু যদি থেকে থাকে তবে সেটার একমাত্র দাবীদার মুক্ত মনা ব্লগ নিজে। আর বাকি সব লেখক বা পাঠক সবাই মুক্ত মনা পরিবারের ক্ষুদ্র অংশ হিসাবেই বিবেচিত হবেন এটাই স্বাভাবিক।
কাজেই কাউকে বিশাল বলে ঘোষণা করলেই সে বিশাল হয়ে যায় না।উপরে দেখেন সংশপ্তক একটা মন্তব্য করেছেন, ওটা পড়ে না থাকলে, দয়া করে একবার ভাল করে পড়ে নিন, আশা করি আপনার মন্তব্যের আরো কঠিন জবাব পেয়ে যাবেন।
@অর্ফিউস,
দ্বিমত।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম। দ্বিমত করাটা আপনার, আমার সহ সবারই অধিকার।বরং দ্বিমত কেউ না করলে সেটাই হবে অনাকাঙ্ক্ষিত।
@নির্মিতব্য,
সহমত
মুক্তমনায় ধর্মের সমালোচনা , বিশেষ করে ইসলামের সমালোচনা করে লিখতে কোন বারণ নেই , কখনও ছিলনা। এটা আপনি যেমন জানেন , ভবঘুরে et al -এরও তেমনি অজানা নয়। মুক্তমনার জন্মের পেছনে ধর্ম বিরোধিতা অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছে। একটা সময় ছিল যখন মুক্তমনা ওয়ার্ডপ্রেসের যুগে তখনও প্রবেশ করেনি, যখন সারা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে বাংলাদেশের ওপর লেখা ওয়েবসাইট ( বাংলায় নয় !) হারিকেন বাতি জালিয়ে খুঁজতে হতো , সেসময় আমরা ইয়াহু মেইলিং লিস্টে মুক্তমনা গ্রুপের লেখা পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকতাম , লেখা ছাড়ার পর পুরো তিন দিন অপেক্ষা করতে হত কখন লেখা মডারেশন ডিঙিয়ে প্রকাশিত হবে। সেসময় প্রায় সকল লেখাই ছিল ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদী অথবা নাস্তিকতাবাদ নিয়ে । লেখাগুলোর মান ছিল যথেষ্ট উন্নত। শুধু তাই নয় , সে লেখাগুলো যারা লিখতেন তারা জানতেন ক্রিটিকাল থিংকিং কাকে বলে । আংশিক রঙীন ধুম ধারক্কা কপি পেস্ট আর এক কুমীরের ছানা বারবার দেখানোর প্রবনতা সেসময় দেখা যেত না। এসব কারণে হুমায়ুন আজাদের মত ব্যক্তিত্ব সেসময় মুক্তমনার সাথে সংশ্রব রেখেছিলেন । সেসব ব্যক্তিরা আজ কেউ মুক্তমনায় লেখেন না যদিও নানা কারনে , সময় পেলে পড়ার চেষ্টা করেন।
আপনার ভবঘুরে et al -দের বলা যায় তুলনামূলক জামাই আদরে রাখা হয়েছে মুক্তমনায় । এনাদের এক আনা সমপর্যায়ের ধর্মীয় সমালোচনার কারণে সদস্যপদ বাতিলের ইতিহাস এই মুক্তমনাতেই আছে। সেখানে কোন ব্লগ না মুছে সাময়িক মডারেশনে আনাকে জামাই আদরই বলা যায়। অন্য কোন খামার ব্লগে এসব লেখা লিখলে ন্যুনতম পর্যায়ে এক বিশেষ থেরাপী ( গদাম) জোটার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগেরও বেশী । বিশ্বাস না হলে পরীক্ষা করতে পারেন । এটা ফলসিফায়েবল।
প্রথমেই বলেছি , মুক্তমনায় ধর্মের সমালোচনা , বিশেষ করে ইসলামের সমালোচনা করে লিখতে কোন বারণ নেই । আসলে আপনি যেটা বলতে চাচ্ছেন সরাসরি , আমি সেটা খোলাখুলি বলে দেই। ভবঘুরে et al – তাদের মত লিখতে চান একটি মাত্র শর্তে । শর্তটা টোটাল ইনডেমনিটি। তাদের লেখার ব্যপারে কোন চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। কোন প্রশ্ন করলে উত্তর না দেয়ার অধিকার তারা সংরক্ষণ করবেন যে সুবিধা আবার বিজ্ঞান লেখকেরা ভোগ করেন না। হোক না এসব লেখায় কোন ক্রিটিক্যাল থিংকিং নেই , লজিক নেই , ব্লগ হিট হওয়াটাই আসল । চেয়ারম্যান মাও জে দং -এর ভাষায় সংখ্যা নিজেই একটি গুনগত মানদন্ড ! তবে , এধরনের ইনডেমনিটি কি মুক্তচিন্তার পরিচায়ক না কাল্টলাইক সংস্কৃতি ? তাদের লিখতে দিন না তারা যেভাবে চান , তবে চ্যালেঞ্জের মুখে লেখার প্রতিটি য়ুক্তি তাদের ডিফেন্ড করতে হবে । পালিয়ে গর্তে লুকালে চলবে না । মুক্তমনায় ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুবিধা যে কেউ পাবে না – সেটা বলাই বাহুল্য । একজ স্বঘোষিত নাস্তিক হিসেবে আমিও চাইবো যে নাস্তিকতাবাদী লেখায় মুক্তমনা ভরে উঠুক । তবে একটা কথা আছে , একজন ধর্মান্তরিত নব্য ধার্মিক যখন তার সাবেক ধর্মের নিন্দা এবং বর্তমান ধর্মের গুনগান গাওয়ার জন্য মুক্তমনা বেছে নেয় – সে বোঝেনা যে সে ভুল গাছের সাননে দাড়িয়ে মূত্র ত্যাগ করছে । নিশ্চয়ই সব মানুষকে একই সাথে সব সময়ে বোকা বানিয়ে রাখা যায় না !
@সংশপ্তক,
খুবই খারাপ, এটা হওয়া উচিৎ নয়, আমিও তা সমর্থন করিনা।
দুঃখজনক ব্যাপার। আমি অনুরোধ করবো তারা আসুন, লিখুন ২০১৩ সালটায় মুক্তমনা তার আগের রূপে আবির্ভুত হউক। যে কোন মূল্যের বিনিময়ে ব্লগের স্বার্থে, ব্লগকে তার পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেয়া হউক। ব্লগের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে, প্রয়োজনে সন্দেহজনক লেখকদের ইসলামের সমালোচনামুলক লেখা ও মন্তব্যকে মডারেশনের আওতায় নিয়ে আসা হউক। অন্তত আমার কোন আপত্তি থাকবেনা। এখানে কাউকে জামাই আদর করে রাখার কোন যুক্তি নেই। তবে একটা কথা আছে, এই যে বললেন-
এই কথাটার সাথে আমি একমত নই। অন্যান্য ব্লগে এ রকম হয় আমি জানি। কবিতা লিখে নিজের বন্ধু বান্ধবকে টেলিফোনে ই-মেইলে বলা হয় প্রচুর মন্তব্য করার জন্যে। মুক্তমনায় সেটা হয় বা কেউ চায় তা আমি মনে করিনা। কারণ এখানে লেখাগুলোর ভাষা যতই দুর্বল হউক, লেখার মান যতই নিম্নমানের হউক এর পেছনের উদ্দেশ্যটা মহৎ থাকে বলে আমি মনে করি। আরো একটা কথা, অন্যের ব্যাপারে জানিনা আমার নিজের কথাই বলি, হাটি হাটি পা পা অবস্থা থেকে শুরু, দুর্ঘটনা অপ্রাত্যাশিত নয়। সুদীর্ঘ বারো বছর পরেও যে হাঠতে শিখেছি তা মোটেই বলবোনা। আর প্রত্যেকটি লেখার পেছনে যে দীর্ঘ দিনের যথেষ্ট শ্রম ও সময় ব্যয় করা হয়, সেই প্রচেষ্টাকে আমি শ্রদ্ধা করি, মুল্যায়ণ করি। আহমেদ শরিফ বলতেন- আগাছায়-পরগাছায় ভরা পরিত্যক্ত জঙ্গলের চেয়ে কুসুম শুন্য বাগানও ভাল, ফুল একদিন ফুটতেও পারে। মুক্তমনাকে লেখক তৈরীর প্লাটফর্ম হিসেবেই একদিন দেখেছিলাম। তাই সকল লেখাকে ক্রিটিক্যাল মানদন্ডে ওজন করে খামার ব্লগে পাঠানোর প্রস্তাবটা মনে হয় সুবিচার হবেনা।
ভবঘুরের জন্মের বহু আগে ( ভবঘুরের প্রথম লেখা প্রকাশ হয় ইসলামে নারীর মর্যাদা শিরোনামে নামে মার্চ ১৭, ২০১০ সালে) মুক্তমনা একটি ইসলাম ব্যাশার মুসলিম বিদ্বেষী ব্লগ হিসেবে সুখ্যাতি পেয়ে গিয়েছিল। ২০০১ সাল থেকে আবুল কাশেম, অভিজিৎ, আলমগীর, ইমরান হুসেন, অপার্থিব, মিজান রহমান, আসগর হোসেন, নন্দিনী হোসেন প্রমুখগণ ধর্মগ্রন্থগুলোকে কপচানো লেবু বানিয়ে দিয়েছেন। ভবঘুরের যখন শুরু ততক্ষণে মুক্তমনায় ধর্মালোচনা চর্বিত চর্বণ আওয়াজ উঠে গিয়েছিল। ধর্ম নিয়ে ঈশ্বরের ভাষা নামে শেষ লেখাটি লিখেছিলাম ২০১০ সালের মে মাসে। লিখতে লিখতে একটা বদ অভ্যাস হয়ে গেছে, আসলে নেশা হয়ে গেছে, কিছুদিন না লিখলে বড্ড বোরিং লাগে, জীবনটা মাটি মাটি লাগে। তাই মাঝে মাঝে আসি যখন কেউ লিখেন না।
ভবঘুরেরও লিখতে ভাল লাগে তাই লিখেন। আমি তাকে অনুরোধ করবো, আপনি আসুন আপনার
জনবিস্ফোরনে ভারাক্রান্ত বাংলাদেশ ও প্রাসঙ্গিক কথা
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জীবজগতের পরিনতি
৬০০ আলোক বর্ষ দুরের পৃথিবী কেপলার বি২২
এর মতো লেখা সমুহ নিয়ে। আপনার সেই প্রতিভা আছে, মেধা আছে লেখনী শক্তি আছে। কতো সুন্দর তিনটি লেখা, সে লেখার মন্তব্যগুলোও আরো সুন্দর। আমার অনুরোধ রইলো আপনি আসুন। আমি জানি একটা ব্লগে বেশী দিন থাকলে তার সাথে হৃদয়ের কেমন আত্ম্বিক সম্পর্ক গড়ে উঠে, তাকে ছেড়ে যাওয়া কত কষ্টকর।
নিজেকে সুপিরিওর আর অন্যকে ইনফিরিওর ভাবা জ্ঞানীদের মানায় না। জ্ঞানের অহংকার ভাল কিন্তু তা যেন অপরের অশ্রদ্ধার কারণ হয়ে না দাঁড়ায় তা খেয়াল রাখতে হয়। এখানে কারো পিতার সম্পত্তি নিয়ে কামড়া কামড়ি হচ্ছেনা, জমিনের আল নিয়ে টানাটানি নয়, কারো বিয়ে সাদী আটকাবারও ব্যাপার নয়, একে অন্যে জীবনে কোনদিন দেখা দেখি না’ও হতে পারে, তো কিসের এতো ঝগড়া কিসের এতো আক্রোশ। অগ্নিমূর্তি ভাব, যুদ্ধাংদেহী চেহারায় মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন ছায়ার সাথে? এখানে কেউ আমরা পর নই কেউ বহিরাগত নই, কেউ আর্য কেউ অনার্য নই, জাতি-উপজাতির ভেদাভেদ, কোন জাত্যাভিমান এখানে থাকা উচিৎ নয়। নতুন বছরটাকে সামনে রেখে আসুন আমরা অতীতের সকল আবর্জনা মুছে ফেলে সামনের দিকে অগ্রসর হই।
@আকাশ মালিক,
১০০% সহমত পোষণ করছি। (Y)
@সংশপ্তক,
শতভাগ একমত!!
@সংশপ্তক,
দিনের সেরা মন্তব্য! দিন এখনো শেষ হয়নি, তবুও এটিই সেরা!!
@মনজুর মুরশেদ,
সেরা মন্তব্যকারীদের পুরস্কৃত করা দরকার!
ভবঘুরের লেখাতে পুনরাবৃত্তি ছাড়া আমি আর কোন সীমাবদ্ধতা (দোষ নয়) খুজে পাইনি। বরং তার লেখার ডিটেইলস এত স্পষ্ট যে আমি সবগুলো লেখা প্রিন্ট করে বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছি। তারা ইসলামের সঠিক রূপ বুঝতে পেরেছেন। মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় দুর্বল মন্তব্য করেছেন। সেটা ঠিক আছে। তাই বলে তিনি সর্বাংশে পরিত্যজ্য তা মনে করি না। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় বরং ভবঘুরের মত লেখকের দরকার আরো বেশি- যারা ঘোরালো প্যাচালো কথায় বিষয়ের বর্ণনা করবেন না। স্পষ্টভাবে উদাহরণসহ ইসলামের নগ্নরূপ ফুটিয়ে তুলবেন।
ভবঘুরে ফিরে আসুন। তিনি আরো বেশি লিখুন। মুক্তমনায় জায়গা না হলে নবযুগ ব্লগে লিখুন। আমরা পড়বো। বারবার পড়বো।
@নাজমুল,
আমিও সেটা মনে করি না। কিন্তু তার মানে এই না যে কেউ কারো সমালোচনা করতে পারবে না।সমালোচনা সহ্য করার শক্তি অর্জন না করে শুধুমাত্র যদি কেউ প্রশংসা পাবার আশায় লিখে যান, তবে লেখক হিসাবে তিনি বা তাঁরা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
লেখক যদি পাঠককেই মূল্যায়ন না করতে শেখেন, শুধু কিছু চাটুকারদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে হাততালি পেতেই পছন্দ করেন তবে লেখক হিসাবে তাঁর( সবার জন্যেই কথাটা প্রযোজ্য) মান কতটা উঁচুমানে সেটা নিয়ে প্রশ্ন করার যথেষ্ট অবকাশ থেকে যায়।
@সফিক,
এর কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে আপনি বলেছেন-
একমাত্র সময়ই বলে দিতে পারবে আপনার এই অনুমান কতটুকু সত্য। গোটা ১২ সাল জুড়ে নারী সদস্যদের উপস্থিতি দেখে আমি আপনার অনুমানের উপর ভরসা করতে পারছিনে। এখানে নিম্নবর্ণ ও উচ্চবর্ণের একটি জ্ঞাতিবিদ্বেষের রেখা টানা হয়ে গেছে অনেক আগেই। আমি ভবঘুরেকে নয় বরং সবিনয়ে অনুরোধ করবো সেই সকল নিষ্কলংক, সফেদ সাফ-সুতরা মুক্তমনা, অপেক্ষাকৃত শিক্ষিত, প্রগতিশীল, আধুনিক উচ্চবিত্ত্ব, নিখাদ বিজ্ঞান মনস্ক, চুড়ান্ত মানবতাবাদী, গগণচুম্বী জ্ঞানের অহমিকায় পরিপূর্ণ, সু-শীতল নির্জঞ্জাট পরিবেশবেষ্টিত, সমাজের উচ্চাসনে আধিষ্টিত, সুচিন্তিত লেখক-পাঠকদের, যারা একদিন এই ব্লগটাকে ধর্ম-সমালোচনার কারণে ঘুনে ধরা পঁচা, দুর্গন্ধময় বলে তাদের উঁচু নাসিকায় রুমাল চেপে ধরে বলেছিলেন, তাদের বন্ধু-বান্ধবগণও নাকি এখানে ইসলামের সমালোচনার কারণে আসতে সাচ্ছন্ধবোধ করেন না, আপনারা আসুন। যারা পাহাড় থেকে সমতল, নাফিস থেকে মালালা, সাতক্ষীরা থেকে রামু, কলেজের ছাত্রী অপমান থেকে মসজিদের কিশোরী ধর্ষণ, সর্বত্র খুঁজে পান আমেরিকা আর পুঁজিবাদের কালো হাত, ইসলাম ব্যাশার আর মুসলিম বিদ্বেষীদের চক্রান্ত আর প্রোপাগান্ডা। যারা মনে করেন কোথাও কোন অঘটনে, অশুভ কাজে, কোন অপকর্মে মুসলমান নেই, মুসলমান সব নিষ্কলংক, নির্দোষ, ছায়াহীন স্বর্গীয় অস্পরা, আপনারা আসুন। দেখুন, ব্লগে ইসলাম ব্যাশিং বা মুসলিম বিদ্বেষী লেখা প্রায় শুন্যের কোঠায়। একেলা বেচারা ভবঘুরে, কতো ভাবে বললাম-
ব্লগে লিখতে হলে ইসলামের ধর্মগ্রন্থ আর মুসলমানের সমালোচনা ত্যাগ করো। এই জায়গাটাকে বাবার সম্পত্তি, নিজের ভিটেমাটি মনে করে মেরুদন্ডহীন এই এক আমি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে উঠোনের এক নির্জন কোণে বসে আছি। লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে, আমার মতো বেহায়ার হদ্দ হতে যেয়োনা। প্রতিভা আছে, মেধা আছে, লেখনিতে শক্তি আছে অন্যদিকে মনযোগী হও। পাখা গজিয়েছিল মরতে, মরুক গে। আমার কী?
আপনারা আসেন, চোখ-জলসানো বৈদ্যুতিক আলোর মতো আপনাদের লেখনী দিয়ে ব্লগটাকে আলোকিত করে তুলুন। আপনাদের পবিত্র চরণের পরশে এই ব্লগ আরো পবিত্রময় হয়ে উঠুক। আসুন আপনাদের সুনিপুণ দক্ষ, পবিত্র হস্তে লেখা কবিতা, গল্প-কাহিনি, সাহিত্য-শিল্প, বিজ্ঞান-দর্শন, জীববিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে। ব্লগটা এবার সুগন্ধময়, পবিত্র, জ্যোতির্ময়ী হয়ে উঠুক।
@আকাশ মালিক,বাংগালীদের অজস্র দোষের মধ্যে কলহপ্রিয়তা এবং বক্তব্যের বিরুদ্ধাচারনকে ব্যাক্তিগত অপমান হিসেবে নেয়া নিশ্চই উপরের দিকে থাকবে। মুক্তচিন্তার ফোরামে একে অপরের বক্তব্যের বিরোধিতা আসবেই। থিসিস-এন্টেথিসিস-সিনথেসিস এর নিয়মেই তা আসা উচিৎ। কিন্তু আমাদের বড়ো দোষ হলো আমাদের মত ও চিন্তার উপরে আঘাতকে আমরা ব্যাক্তি চরিত্রের উপরে আঘাত পর্যায়ে নিয়ে নেই। তার উপরে এক কথার সূ্ত্র ধরে আরো দশ কথা নিজে থেকে জুড়ে দিয়ে নানারকম ট্যাগিং তো আছেই।
আপনার সাথে যখন অন্য কারো মুক্তমনায় বিবাদ হয়েছে তখন ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু লেগেছিলো। কার দোষ বেশী, কে শুরু করছে এই অর্থহীন প্যাচালে যাবার ইচ্ছে নেই। কিন্তু ব্যাক্তিগত প্রসংগ গুলো নানারকম রং চড়িয়ে টেনে আনা মুক্তমনার মতো ফোরামে প্রত্যাশিত ছিলো না। কখনো কখনো আশ্চর্য হতে হয় যে নানা বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে সক্ষম ও মুক্তচিন্তার সাধনাকারী বয়স্ক লোকজনে এতটা ছেলেমানুষী কেনো করে?
দেখুন কেউ যদি কখনো মনে করে সে সবার কাছে পপুলার হবে তবে দেখা যাবে শেষ পর্যন্ত কারো কাছেই পপুলার হবে না। আপনার বিভিন্ন লেখায় অনেক রকম তীব্র আক্রমন হবে এবং সেই সাথে অকুন্ঠ প্রশংসাও পাবেন। কোনোটাকেই ব্যাক্তিগত নেবার কোনো দরকার নেই। আপনি নিজেই দেখবেন যে এই ব্লগে সম্ভবত আর একজনকেও পাবেন না যার সকল রকম চিন্তার সাথে আপনার চিন্তা একেবারে খাপে খাপ মিলে যায়। এরকম খাপে খাপ মিলে গেলে আর ব্লগে আসার কি দরকার ছিলো?
ইসলামের সরাসরি সমালোচনাকারী লেখাগুলো যে বাংলাজগতে মুক্তচিন্তার প্রসারে খুবই গুরুত্বপূর্ন এব্যাপারে আমার সাথে মনে হয় এই ফোরামে আসা অধিকাংশ লোকই একমত হবেন। আপনার লেখাগুলো মূল্য এপ্রিশিয়েট করার মতো লোকের অভাব নেই। মুক্তমনা যদি কখনো কেবল মাত্র উচ্চমার্গের বিজ্ঞান-দর্শন-সাহিত্যের আসর হয়ে পড়ে তবে তার ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর নি:সন্দেহে অনেক কমে যাবে। বাংলাদেশে উচ্চমার্গের বিজ্ঞান-দর্শন-সাহিত্য আলোচনার জন্যে অনেক ফোরাম, ম্যাগাজিন, আসর সংগঠিত হয়েছিলো। কোনটিই বেশীদিন টিকে নি।
@সফিক,
সত্যি , আপনার চিন্তাভাবনা আর সেটাকে গুছিয়ে বলতে পারার ক্ষমতা অসাধারন।গভীরভাবে এই ব্যপারটা আমি অনুভব করি।আপনি আরো লেখা চালিয়ে যান ভাই, মনে হয় সম্প্রতি তৈরী হওয়া কিছু গ্যাপ,যারা ভবিষ্যতে পুরন করতে যাচ্ছেন, আপনি হতে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে অন্যতম।শুভেচ্ছা রইল। (F)
একমত। আশা করছি ভবঘুরে আবার তাঁর ক্ষুরধার লেখনি নিয়ে মুক্তমনায় ফিরে আসবেন।
শফিক সাহেবকে ধন্যবাদ চমৎকার ভাবে আপনি বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। ইতিপূর্বে বিভিন্ন লেখায় আপনার বেশ কিছু মন্তব্য আমাকে দারুণ বিমোহিত করেছিল। আপনার লেখা ও মন্তব্যবের ঢং সত্যি অসাধারণ। সংগত কারণেই আপনার থেকে আউটপুট বেশি প্রত্যাশা করছি। সেইসাথে আপানর মূল সুরের সাথে তাল ঠিক রেখে আমিও চাই বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় ভবঘুরের অতীত কিছু ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে নিয়ে তাঁকে সরাসরি লেখা প্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া হউক।
ধর্ম কি? ধর্মের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কি? ধর্ম বিকাশের ইতিহাস, সত্যিকারের মনুষত্ব্য বিকাশে ধর্মের উপকারিতা অপকারিতা, কুসংষ্কার মুক্ত সংবেদনশীল মনন তৈরীতে আদৌ ধর্মের কোন অবদান রয়েছে কিনা? তা মুক্তমনার নিয়মিত পাঠক লেখক মাত্রই কম বেশি সবাই অবগত। তাই অনেকের কাছে তা কচলানো লেবুর স্বাদের মত ঠেকতে পারে।
কিন্তু নতুন প্রজন্ম? চারিদিকে প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাসের চিৎকার চ্যাঁচামেচির বাইরে আরো একটি মুক্ত চিন্তার বিশ্বে তারা যে প্রশান্তির নিশ্বাস নিতে পারে সে খবর কি তারা পাচ্ছে? তারা কতটুকু পরিচিত ‘মুক্তমনা’র আর্দশ উদ্দেশ্যের সাথে? কজনেই মুক্তমনার সাথে পরিচিত? আমরা কজনই বা দায়িত্ব নিচ্ছি তাদের নতুন পথের সারথী তৈরীতে?
যারা ভবঘুরের লঞ্চডুবী যাত্রীর মৃত্যুকে অবলম্বন করে পানিতে ডুবে মরলে শহীদ হয় হাদিসের এই বিশ্বাসকে ব্যঙ্গ করায় মৃত যাত্রীকেই ব্যঙ্গ করা হচ্ছে এই সিদ্ধনাতে উপনীত হয়েছেন সন্দেহাতীতভাবে তাদেরকে প্রশ্ন করছি ভবঘুরের সে একই লেখায় যেখানে তিনি লিখেছিলেনঃ
তাহলে কি ভবঘুরে কি পাক হানাদারদের হত্যার শিকার লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালীদের মৃত্যুকে ব্যঙ্গ করেছেন, আর সত্যিই কি তিনি সত্যিই কি মনে করেন যে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকরা কোন অন্যায় কাজ তো দুরের কথা, তারা তো বরং ভাল কাজই করেছিল? (তিনি অবশ্য এখানে “ইসলামী বিধি তথা আল্লাহ ও মোহাম্মদের বিধান মোতাবেক” যোগ করেছেন, এটা লঞ্চ যাত্রীদের মৃত্যুর ক্ষেত্রেও উহ্য ছিল, যেহেতু হাদি্সকেউদ্ধৃতি করেছিলেন)”। ভবঘুরে একজন ৭১ এর চেতনায় বিশ্বাসী পাকি বিদ্বেষী বলেই জানি। যদি উত্তর ন হয় তাহলে লঞ্চ ডুবীর ক্ষেত্রে অন্য মানদন্ড কেন? মুক্ত-মনা হতে হলে কি “Satire” appreciate করা ভুলে যেতে হবে?
@যাযাবর, পরিকল্পিত হত্যাকান্ড আর লঞ্চডুবির মত দুর্ঘটনা বোধহয় এক না।আচ্ছা আপনাকে একটা পালটা প্রশ্ন করি, ভবঘুরে তো একটা হাদিস আর কোরানের আয়াত এক করে মিশিয়ে মুহাম্মদ নাকি যুদ্ধ বন্দীদের রেপ করতে বলে গেছে, এইটা প্রমানের চেষ্টা করেছিলেন।তাহলে ৭১ এ যেসব মা বোন রা নির্যাতিত হয়েছিলেন, অথবা এখনও হচ্ছেন রেপের শিকার, তবে তাদের নিয়েও মস্করা করাটাও কি ইসলামী বিধি তথা আল্লাহ ও মুহাম্মদের বিধি মোতাবেক, কাজেই কষ্ট না পেয়ে উল্লাস করা উচিত, এমনটা বলতে পারতেন?না উনি তা বলেননি, কারন এতে উনি আরো বেকায়দায় পড়তেন।আর যুদ্ধের সময় পাকি পশুদের হাতে মানুষ মারা গেছে, আর আজকাল কার রাজাকার হুজুররা তবু আমাদের সমাজে মর্যাদার আসনে বসে আছে,তাদের গাড়ীতে বাংলাদেশের পতাকা উড়েছে আর উড়বে যতদিন পর্যন্ত এই রাজনীতির নাম করে যে নোংরামি চলছে তা বন্ধ না হয়।যাহোক লঞ্চডুবি আর জিহাদ তথা সুইসাইড বোমায় মৃত্যুও কিন্তু এক না। কাজেই জিহাদীদের বিরুদ্ধে এই মন্তব্য করা আর দুর্ঘটনায় নিহতদের নিয়ে এই বিদ্রুপ করার মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য, এইটা বুঝার মত যথেষ্ট বুদ্ধি আপনার আছে বলেই মনে হয়।
তবে কি শুধুই তর্কের খাতিরে তর্ক করা?
@অর্ফিউস,
মুহাম্মদ নাকি যুদ্ধ বন্দীদের তাদের স্বামীদের সামনে রেপ করতে বলে গেছে,
আবার আমার বক্তব্য না বুঝেই দয়া করে বলে বসবেন না যে আমি ৭১ এর ৩০ লাখ শহীদ, আর জিহাদি বদমাশ গুলোকে এক করে দেখছি।এটা আগে ভাগেই পরিষ্কার করে দিলাম কারন,কথার প্যাঁচে আপনারা খুবই পারদর্শী।
@যাযাবর,
প্রথমেই বলে নেই আমি নিজেও ধর্মবিদ্বেষী, তাই ধর্ম প্রসংগে আমার অবস্থান ভবঘুরে বা আপনার থেকে খুব একটা আলাদা নয়। কিন্তু ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতে গিয়ে ভবঘুরে তার মন্তব্যগুলোতে স্বাভাবিক মানবতাবোধকে অগ্রাহ্য করেছেন
ভবঘুরের দুটো মন্তব্যই মূলত ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসীরা কিভাবে ব্যক্তিজীবনে ইসলামের আক্ষরিক চর্চা থেকে দূরে থাকেন তা দেখানোর উদ্দেশ্যে করা। এই দুই ক্ষেত্রেই মন্তব্যগুলো মোটেই যুক্তিযুক্ত হয় নি বরং তা অত্যন্ত অসংবেদনশীলভাবে কিছু মানুষের বক্তিগত অনুভূতিকে আঘাত করেছে। দূর্ঘটনা বা পাকিস্তানিদের হাতে নিহত ব্যক্তিরা ইসলামের বিশ্বাস অনুযায়ী বেহেশতে গেলেও তাদের জন্য শোক প্রকাশ করা যাবে না, বরং উল্লাস করা উচিত একথা বলার পেছনে যুক্তি কি? শোক প্রকাশের মত একটি মানবিক আচরন করা বা অপরাধীর শাস্তি দাবী করা কি ইসলামে নিষিদ্ধ? নিহত ব্যক্তি নাহয় বেহেশতে চলে গেলেন, কিন্তু তাকে বেহেশত লাভের সুযোগ করে দেয়ায় খুনীর অপরাধ কি ইসলামে মাফ করে দেয়া হয়? এসব প্রশ্নের উত্তর ঋনাত্নক হলে ইসলামের সমালোচনা করতে গিয়ে ভবঘুরের এই মন্তব্যগুলোর উপযোগীতা কতটুকু?
একেবারে ঠিক কথা ।
আমি ছোট বেলায় একজন নামকরা,কোরান হাদিছে পন্ডিত ও প্রভাশালী আলেমের মুখে বলতে শুনেছি, “তোমরা বিজ্ঞানের একথা, যে পৃথিবী গোলাকার এবং সূর্যকে প্রদক্ষিন করতেছে, এটা বিশ্বাষ করবেনা, কারণ এটা কোরান বিরোধী বক্তব্য।কোরানের মতে পৃথিবী স্থির এবং সূর্য প্রতিদিন উদয় ও অস্ত হইতেছে।”
বাল্যকালে মওলানা সাহেবরা আল্লাহর বানী বলে যাই বলতেন, তাই-ই তো মেনে নিতে হত।
এরপর এবিষয়ে আর কোন পড়াশুনা বা কোরান ঘাটাঘাটির সময় ও সুযোগ হয় নাই।
অনেক দীর্ঘকাল পরে মুক্তমনায় আসবার সুযোগে এবং ভবঘুরে এর কোরান হাদিছ সরাসরি আলোচনার ফলে-নিজে দেখতে সক্ষম হই, সত্যিই তো কোরানে মওলানা সাহেবের বক্তব্য সঠিক আছে।
তাহলে তো কোরানকে বিশ্বাষ করতে গেলে তো তাদের জন্য বিজ্ঞান শিক্ষা করা কোন ভাবেই বৈধ হতে পারেনা। এবং ইসলামী শিক্ষায় লক্ষ লক্ষ মাদ্রাসা গুলিতে লক্ষ লক্ষ ছাত্রদেরকে কোন বিজ্ঞান শিক্ষা দেওয়া হয়না। তারা বিজ্ঞান শিক্ষা হতে বঞ্চিত থাকতেছে।
একটি বিপুল সংক্ষক জনগনকে আধুনিক জ্ঞ্যান বিজ্ঞানের আলো হতে বঞ্চিত রেখে জাতির অগ্রগতি হওয়া কি করে সম্ভব?
ভবঘুরে এই কাজটিই করতেন,যে তিনি সরাসরি কোরান হাদিছের বানী গুলী সম্মুখে তুলে ধরে চাক্ষুষ দেখিয়ে দিতেন এগুলী কতবড় বিজ্ঞান বিরোধী। তিনি তো যেটা আছে সেইটাই দেখাতেন, যেটা নাই সেটা তো কখনো দেখাতেননা।
এতে তার দোষটা কি করে হয়, তা আমার বুঝে আসিলনা।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
কোন দোষ হয় নাই ভবঘুরের। উনি মহা পুন্যের কাজ করেছেন। খুশি তো এবার আপনি?আপনার মন্তব্যের বাকি অংশ নিয়ে কিছু বললাম না কারন, এই মন্তব্য গুলো আগেও আপনার কাছ থেকে এসেছে, একটু অন্যভাবে আর কি।
বুঝেছেন আশা করি এবার। 🙂
যা উচিৎ তা হলো কোন মন্তব্য বা লেখা সেন্সর না করা। যার যা ইচ্ছে তাই বলুক আর লিখুক, আর তুমুল আলোচনা বা ফাটাফাটি চলুক। কিন্তু মুক্তমনা মন্তব্য ও লেখা সেন্সর করতে শুরু করেছে। কাজেই মুক্তমনাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ও যাবে।
মুক্তমনা হোক সেন্সরহীন!
ধন্যবাদ।
@আদনান আদনান,
সহমত।
@আদনান আদনান,
পুরাপুরি সেন্সরহীন হলেও চলবে না। কারন এতে কেউ এতে শুধু মাত্র প্রাপ্তবয়স্করাই পড়তে পারে, এমন লেখালেখিও শুরু করে, তখন মুক্ত মনা আর মুক্ত মনা না থেকে অ্যাডাল্ট সাইট হয়ে যাবে।
@আদনান আদনান,
সেন্সরবিহীন ব্লগগুলো কি মুক্তমনার থেকে ভালো চলছে? মুক্তমনা নতুন করে সেন্সর করতে শুরু করেনি, মান নিয়ন্ত্রণ শুরু থেকেই মুক্তমনায় ছিলো এবং যে কেও স্বীকার করবে যে মুক্তমনার পরিবেশ অন্য অনেক ব্লগের থেকে ভালো। তুমুল আলোচনা আগেও মুক্তমনায় হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে, তবে আপত্তিজনক বা নিম্নমানের কোনোকিছু আসলে সেটা নিয়ন্ত্রণের দরকার আছে আমার মতে।
@রামগড়ুড়ের ছানা, (Y)
@আদনান আদনান,
আমার লেখা থেকে কিঞ্চিৎ পরিমার্জন করে আপনাকে উত্তরাই –
আপনারা ভাবতে পারেন যে সকল মতের উপস্থিতিই কাম্য। কিন্তু উন্মুক্ত ব্যবস্থা মাত্র একটা আয়োজন দ্বারা নিশ্চিত করা যায় না। মুক্ত ব্যবস্থায় মতের বৈচিত্র্যের উপস্থিতি কিন্তু কোনো একটা বিশেষ প্রতিষ্ঠানের কারণে সৃষ্টি হয় না। বরং সৃষ্টি হয় অজস্র ভিন্ন ভিন্ন আয়োজনের সমারোহে। যেমন ইন্টারনেট। সরকার হাত দেবার আগ পর্যন্ত ইন্টারনেটকে বেশ উৎকৃষ্ট রকম মুক্ত ব্যবস্থা বলা যায়। এখানে বিজ্ঞানের কথা আছে, ধর্মের কথা আছে, কোয়ান্টাম বলবিদ্যার কথা আছে, কোয়ান্টাম হাতুড়ে বিদ্যার কথাও আছে, মুক্তিযুদ্ধপন্থীদের কথা আছে, রাজাকারপন্থীদের কথাও আছে, আছে বর্ণবিদ্বেষীদের মতের প্রকাশ, নারীবিদ্বেষীদের মতের উপস্থিতি, আছে নোয়াখালির মানুষের সুখদুঃখের কথা, আছে বলিয়াদি জমিদার পরিবারের ভাষ্য। ইন্টারনেটের এই বৈচিত্র্য কিন্তু কোনো একক ওয়েবসাইট প্রদত্ত নয়। পৃথিবীর অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ব্লগ, সংবাদপত্রের মন্তব্য বেশ ভালোভাবেই মডারেট করা হয়। প্রত্যেক ওয়েবসাইটের নিজস্ব ঢঙ/মত/রাজনীতি আছে, সে সেটা বজায় রাখে। ভিন্ন ঢঙ/মত/রাজনীতি যার, তার নিজের ব্লগ খোলায় কোনো বাধা নেই, এটাই ইন্টারনেটে বহু মতের সমারোহ তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে। এর জন্যে সকল ওয়েবসাইটে সকল কথা বলার অধিকারের কিন্তু প্রয়োজন নেই। সেটা হাস্যকরও। কল্পনা করুন যে এক মুক্তমনা সাইটেই যদি উপরে বলা সকল মতের সমারোহ হয় তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়াবে।
বাক স্বাধীনতার অর্থ সর্বত্র যা খুশি বলার অধিকার নয়, বরং নিজের অর্জিত মাধ্যমে (যেমন নিজের বাড়িতে, ছাপানো বইতে, ওয়েবসাইটে) যা খুশি বলার অধিকার হলো বাক স্বাধীনতা। এর সাথে কেবল সরকারের দ্বন্দ্ব, আর কারো নয়। এ কারণেই সরকার হাত দিলে আমরা বাকস্বাধীনতা হরণের অভিযোগ করি, মুক্তমনা ওয়েবসাইটে কোনো মন্তব্য বা লেখা মডারেট করা হলে সেই অভিযোগ আমরা করি না। মুক্তমনায় সবমতের প্রচার হতে না পারাটা একটা আশীর্বাদ হিসেবে দেখা সম্ভব, কিন্তু সরকারি আদেশে কোনো বিশেষ মতের প্রচার হতে না পারাটা নিতান্তই একটি অভিশাপ। মুক্তমনায় যে কথা বলা যায় না, সে কথা বক্তা তার খুশি মতো কোথাও না কোথাও নিশ্চয়ই বলতে পারবে। কিন্তু সরকার নিষেধ করে দিলে সেই কথা কোথাও বলার আর সুযোগ থাকে না।
মুক্তমনা ব্যক্তিগত (প্রাইভেট অ্যাজ অপোজ্ড টু পাবলিক) উদ্যোগে করা সাইট। এই উদ্যোগের নিজস্ব ঢঙ/মত/রাজনীতি আছে। সেটা বজায় রাখার সম্পূর্ণ অধিকার তার আছে। এখানে কোনো অতিথির যা খুশি বলার অধিকার আছে বা থাকতেই হবে তা কিন্তু নয়। যেমন আপনার বা আমার অধিকার আছে আমাদের বাড়িতে বা ব্যক্তি উদ্যোগে করা ক্লাবে কাকে সদস্য করবো সেটা নিয়ন্ত্রণ করার।
তো মুক্তমনার যে ঢঙ/মত/রাজনীতি, সেটার কারণেই এটা মুক্তমনা। এর পরিধি অনেক বড়। তারপরেও এমন কিন্তু না যে একেবারে যে কোনো কিছু গ্রহণেই মুক্তমনা আগ্রহী। কী ধরনের মত নিয়ে এখানের উদ্যোক্তা ও সদস্যরা আলোচনা করতেই আগ্রহী নয়, সেটা মোটামুটি সবারই জানা আছে (যেমন ধরুন যুক্তিরহিত বর্ণবিদ্বেষী নারীবিদ্বেষী রাজাকারপন্থী গণহত্যাপন্থী একটা লেখা)। ফলে সেটা সংরক্ষণের চেষ্টা থাকা দরকার।
@রূপম (ধ্রুব),আপনি বলেছেন, “মুক্তমনা ব্যক্তিগত (প্রাইভেট অ্যাজ অপোজ্ড টু পাবলিক) উদ্যোগে করা সাইট। এই উদ্যোগের নিজস্ব ঢঙ/মত/রাজনীতি আছে। সেটা বজায় রাখার সম্পূর্ণ অধিকার তার আছে”, — এবং ” যুক্তিরহিত বর্ণবিদ্বেষী নারীবিদ্বেষী রাজাকারপন্থী গণহত্যাপন্থী একটা লেখা” ।
কেউ যদি যুক্তিযুক্ত বর্ণবিদ্বেষী, নারীবিদ্বেষী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী লেখা লিখে, তবে সেগুলির কি হবে? আফটার অল বর্ণবাদ, লিংগভেদ, জাতীয়তাবাদ-ইতিহাসবাদের ভিত্তিহীনতা এসবের পক্ষেও তো যুক্তি ও তথ্যের অভাব নেই।
মুক্তমনার লেখক-পরিচালকদের নিজস্ব ঢঙ/মত/রাজনীতি থাকতে পারে তবে সেটা বজায় রাখার জন্যে খড়গ হস্ত হলে তো আর এই ফোরামকে মুক্তমনা বলা যাবে না। এটা হবে নিজেকে মুসলমান দাবী করে আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সমতুল্য। লেখা মডারেট করার জন্যে কয়েকটি স্পেসিফিক নীতির কথা আমি আমার লেখাতে বলেছি। সেই সাথে যদি নিজস্ব ঢঙ/মত/রাজনীতি ঢুকিয়ে দেন তবে তো অনেক কথা চলে আসে।
@সফিক,
ভালো কথা বলেছেন। আমার মতে যুক্তির অসঙ্গতি অল্প, তথ্য প্রমাণ দেয়ার প্রচেষ্টা আছে, এমন লেখা নিয়ে অন্তত তর্ক করা যায়। বিদ্বেষ ও মানবহত্যার পক্ষে তেমন লেখার অস্তিত্ব নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। যেমন ধরুন নরওয়ের ব্রেইভিকের ম্যানিফেস্টোটা যদি সে এখানে পাঠাতো, পাবলিশ করা উচিত হতো বলে মনে করেন?
“লেখা মডারেট করার জন্যে স্পেসিফিক নীতি”-টা নিঃসন্দেহে ওয়েবসাইটটার ” নিজস্ব ঢঙ/মত/রাজনীতি” উৎসারিতই, তাই না? আমিও তো এর বাড়তি কিছু প্রস্তাব করছি না।
@রূপম (ধ্রুব),আমার মনে হয় ব্রেইভিকের ম্যানিফেস্টি পাবলিশ করা যেতো। ব্রেইভিক যে ধরনের কথা বলেছে সে ধরনের কথা ইউরোপ-আমেরিকা-ভারত-বাংলাদেশ এর অনেক ইসলাম বিরোধী ব্যাক্তিত্ব অহরহই বলে থাকে। আমরা যদি ওপেন সোসাইটির শত্রুরা কি ভাবছে, কি বলছে এটা পড়াশোনা না করি, সেগুলো নিয়ে আলোচনা না করি তবে তো মুক্তচিন্তা একেবারে ইনেফেক্টিভ হয়ে পড়বে।
@সফিক,
কিন্তু ধরুন আলোচক যদি না পাওয়া যায়? বরং ব্রেইভিকের দলের লোক এসে যদি আরো ডালপালা গজায়? সেইসব মন্তব্যও তো এই প্রস্তাবে ছেড়ে দেওয়া হবে। যতোই উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মের কথা বলুন, সামাজিক ফোরাম কিন্তু শেষে গিয়ে তৈরি হয় সমমনাদের উপস্থিতিতে। এখানে যদি মুসলিম বিদ্বেষীদের লেখার পাঠক ভক্তের আনাগোনা বেশি হতে থাকে, আপনি কয়দিন সমালোচনা করবেন? অর্কুটে Secular Bangladesh নামে একটা গ্রুপ বানিয়েছিলাম। সদস্য নিয়ন্ত্রণ না করায় সেটা হয়ে গিয়েছিলো ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী মুসলিম ব্যাশারদের ঘাঁটি। আমরা একজন দুজন তখন শয়ে শয়ে মুসলিম ব্যাশারের পুনরাবৃত্ত, খণ্ডিত যুক্তি কতোদিন ধরে আর পুনরায় খণ্ডাবো? আপনি ছাড়া আর কয়জন ভবঘুরেদের লেখার দুর্বলতা খুটেখুটে ধরার পরিশ্রমটা করতো? আপনিও বা কী অনুপাতে সেটা করতে পেরেছেন?
সংগঠনে সমমনার উপস্থিতি ও তার একটি বিশেষ অবস্থানের অস্তিত্ব অবশ্যম্ভাবী। ভবঘুরেদের কথাই ধরুন। ওনাদের লেখা তো কোনো কালে বারণ ছিলো না। তাহলে দলবল সহকারে অনুপস্থিত কেনো? অন্য মূল দলের সাথে সমমনা নয় বলে।
আমি মুক্তমনাকে মূলত বাংলা ভাষায় স্কেপটিসিজম ও ক্রিটিকাল থিংকিংয়ের জায়গা হিসেবে দেখতে আগ্রহী। সে দিক দিয়ে অন্য যেকোনো সাইটের থেকে মুক্তমনা এখন পর্যন্ত অগ্রণীও রয়েছে বটে। এখানে ভবঘুরেরা কিন্তু একটা অ্যাডভান্টেজ পেতে পারতো। ধর্মের সমালোচনা জরুরি। ধর্মের সমালোচনা মাত্রেই বিদ্বেষ, এরকম কালচারাল মার্ক্সিজম আমি খাই না। ওনারা ধর্মের বিরুদ্ধে লিখেন, যেটা ঐতিহাসিকতার বিচারে এমনিতেই ক্রিটিকাল থিংকিংয়ের একটা পর্যায় উতরে যায়। ওনাদের আনক্রিটিকাল অংশ হলো লেখার ডিটেইলে ও গোটা গোষ্ঠিকে হরে দরে বিচার করায়। এগুলো শুধরে ওনারা বেশ ভালোভাবে কামব্যাক করতে পারবেন বলে আমি আশা রাখি। অন্তত এটা নিশ্চিত যে এই রোলটা ওনারা ক্রিটিকালি করতে যদি ব্যর্থ হন, জায়গাটা খালি পড়ে থাকবে না। ওনাদের বিষয়টাতে ওনাদের চেয়েও উৎকৃষ্ট লেখক ও চিন্তক এই জায়গাটা ঠিকই দখল করে নিবে।
@রূপম (ধ্রুব) ভাই,
সেক্ষেত্রে তা মুক্তমনাদের ব্যর্থতার কারণেই ঘটবে। বদ্ধমনাদের দাবিয়ে রাখা মুক্তমনাদের কাজ হতে পারে না, বদ্ধমনাদের বদ্ধচিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করে তার বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাওয়াই মুক্তমনাদের কাজ (ইতিহাস তাই বলে)। আর সে লড়াইয়ে আপনি যদি জয়ী হতে পারেন, তাহলে দেখবেন, ব্রেইভিকের দলের লোকজন কোথায় পালিয়ে যাবে!
@রূপম (ধ্রুব),
ভবঘুরেদের দল কোনটা আর মূল দল কোনটা একটু জানতে চাই। আর কী ভাবে জানলেন যে, দলবল সহকারে তারা অনুপস্থিত? অর্ফিসিউ সাহেবকেও দেখলাম এখানে দুইটা পক্ষ ভেবে ‘তারা’ ‘আমরা’ শব্দ ব্যবহার করেন। যেমন-
এই তারা কারা আর আপনারা কারা?
ভবঘুরেরা? কেন, কিসের অ্যাডভান্টেজ? মূল দলের করুণা ভিক্ষা? সমাজে শ্রেণী বৈষম্য, কাস্ট সিস্টেম এখনো তাহলে আছে?
মুসলিম জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলামিক দার্শনিক’আবু রুশদ থেকে শুরু করে ইবনে ওয়ারাক পর্যন্ত শত সহস্র ইসলামের ক্রিটিকাল সমালোচক, উন্নতমানের লেখকদের যারাই কোরানে হাত দিয়েছেন, যারাই মুহাম্মদের দিকে অঙ্গুলী তুলেছেন, তাদের সকলের কপালেই ইসলাম বিদ্বেষী তকমা জুটেছিল, অনেকেই খুনও হয়েছেন।
তা’ই হউক, সেটাই তো কাম্য।
@আকাশ মালিক,
সফিক সাহেব ভবঘুরে et al বলতে যে দলের কথা বলছেন, সেই দলটার ব্যাপারেই বলেছি। নাকি দলের কথা আমিই প্রথম তুললাম?
সফিক সাহেব লেখাটা কেনো লিখলেন? চাঁদ কেনো ওঠে? পাখি কেনো গায়? ঘুম কীভাবে যায়?
এটা তো আমি বলি নি।
সদালাপীরা এখানে বিশেষ অ্যাডভান্টেজ পায় না। ওরা কি তাহলে নমশুদ্র?
ইসলামের সমালোচনা করলেই একজন আবু রুশদ বা একজন ইবনে ওয়ারাক হয়ে যায় না, যায় কি? দেখুন সফিক সাহেবের মতো আমারও বিদ্বেষের কারণেই বা তেমন তকমার কারণেই আলাদা করে লেখা বাতিলের উৎসাহ নেই। ক্রিটিকাল চিন্তা ভাবনার অভাবের ক্ষেত্রে আছে। সেটা মানের নিয়ন্ত্রণে সম্পাদকীয় দায়িত্ব বলে মনে করি।
আমি এই ব্লগের একজন পাঠক। লিখালিখি খুব একটা করা হয়না। পারিও না বলা চলে। তবে আজ এই আলোচনায় লিখলাম। আমি ভবঘুরের লেখার সাথে পরিচিত, এখানে ভবঘুরের অনেক লেখা পড়েছি। আমার মনে হয় যারা লেখক তাদের সবার একটা নিজস্ব ধারা থাকে। ভবঘুরের লেখায় তার নিজস্ব ধারা বিদ্যমান। হতে পারে সেটা উগ্র বা আক্রমনাতক বেশি। কিন্তু তাই বলে তার লেখাকে কি আমরা ফালতু বলব। গান্ধীজি আহিংসার পথে যুদ্ধ জয় করেছেন, তাই বলে কি সব যুদ্ধ অহিংসার পথে জয় হয়? আমি হুমায়ুন আজাদের লেখা পরেছি। উনিও তো ধর্মান্ধ উগ্র বাদীদের
আপনি এত কম লেখেন কেন?
ধর্মের নানান কুপ্রভাব থেকে মুক্তি পাবার জন্য আপনি যে দুটি প্রধান ধারার উল্লেখ করেছেন আমি মনে করি তার বাইরেও আরেকটি ধারা খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং সাধারনভাবে খুবই অবহেলিত। সেটা হল ধার্মিক মনস্তত্ব বিশ্লেষন, যার চমতকার কিছু বিস্তারিত আলোচনা আপনি এখানে করেছেন। আমি নিজে ধর্ম বিষয়ক লেখালেখিতে এই দিকটি গুরুত্ব দিতে চেষ্টা করি।
বিজ্ঞানের হাজারো তত্ত্ব দিয়ে মনে হয় না অন্তত আমাদের দেশের অতি সামান্য কিছু লোক বাদে তেমন কারো মৌলিক ধর্মবিশ্বাসে সমস্যা হয় বলে, আর সমস্যা যেটুকু হয় সেটা কাটাবার জন্য এন্টি-ভাইরাস হিশেবে জাকির নায়েক/হারুন ইয়াহিয়া গোছের বাকপটূ শোম্যানদের লেকচার যথেষ্ট। ধার্মিক মন কেন এমন আচরন করে, কেন যৌক্তিক তথ্য প্রমান গ্রহন বর্জনে চরম সেলফ কন্ট্রাডিকশনের পরিচয় দেয় এসব ঠিকভাবে বিশ্লেষন করা না গেলে শুধু বিজ্ঞান কপচে তো নয়ই, এমনই সরাসরি ধর্মগ্রন্থ/মহাপুরুষদের অমানবিক/বাতিল কাজকারবার নিয়ে হাজারো লেখালেখিতে তেমন কাজ হবে না।
– একমত। তবে আমি এক্ষেত্রে ধর্মগ্রন্থের যেসব অংশ জীবন বিধান হিসেবে দাবী করা হয় সেসব নিয়ে আলোচনাই উত্তম মনে করি। কোরানে আকাশকে ছাদ বলা আছে জাতীয় আয়াত নিয়ে তর্ক তেমন ফলদায়ক মনে করি না।
আমি মূলতঃ যা গুরুত্ব দেই তা সামারাইজ আপনার ভাষাতেই করা যায়ঃ
যারা বিশ্বাস করেন তাদের ধর্মগ্রন্থের প্রতিটা বানীই অভ্রান্ত, সর্বযুগে পালন করাতেই মহা মানব মুক্তি তারা কেন এ জাতীয় আয়াত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কায়েম করানোর দাবী ঘুনাক্ষরেও করেন না এর জবাব সাচ্চা ধার্মিকদের সুযোগ পেলেই করি। মজার ব্যাপার এদের অনেকে আবার ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থার কড়া সমর্থক, ধর্মকে রাষ্ট্র বা রাজনীতির সাথে কোনভাবেই মেশাতে দেবেন না। কত রকমের সেলফ কন্ট্রাডিকশনে যে মানুষ ভুগতে পারে। মৌলবাদীদের আমি তেমন সমস্যা হিশেবে দেখি না, সমস্যা হিশেবে এ জাতীয় লোকদেরই দেখি, এরাই ধার্মিক শ্রেনীর বৃহত্তম অংশ। মৌলবাদীরা মূলত মৌলবাদ বহাল তবিয়ে বেচে খায় এদেরই দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভর করে। এর চরম উদাহরন হল মুক্তিযুদ্ধে্র আদর্শে বিশ্বাসী অনেকের রাজাকার মানসিকতার লোককে জেনে শুনে বড় আলেম হিশেবে সম্মান জানানো।
বিদ্বেষী ঠিক কাকে বলা যায় এর মনে হয় ধরাবাধা সংজ্ঞা নেই। যেমন কোরান হাদীসে পূর্ন বিশ্বাসী (অন্তত মুখে মুখে, কারন প্র্যাক্টিকেলি সেটা সম্ভব নয়) যে কারো কাছেই ভবঘুরে তো বাদই থাক, আমি আপনিও ইসলাম বিদ্বেষী; কারন আমরা কোরান হাদীসের সব বানী সব যুগে পালন করা যায় না, মহানবীর কিছু কাজ কারবার সে যুগের কুপ্রথার অংশ এসব সরাসরি স্বীকার করি। এইটুকুই আমাদের বিদ্বেষী লেবেল লাগাতে যথেষ্ট। আরো কয়েক ষ্টেপ আগালে দেখা যাবে যারা আমাদের বিদ্বেষী বলেন তাদেরও আবার আরো বড় মৌলবাদীরা একই রকমের অপবাদ দিচ্ছে। আমি নিজে মনে করি যে জেনে শুনে প্রাসংগিক কিছু চেপে যাওয়া, যার সমালোচনা করতে নেমেছি তার মধ্যে ভাল কিছু আছে সেটা কোনভাবেই স্বীকার না করাটাই বিদ্বেষীর লক্ষন।
ভবঘুরের প্রসংগেও আমার কথা অনেকটা আপনারই মত। ভবঘুরের সিরিজ থেকে আমিও অনেক কিছু জেনেছি, তবে আমিও মাঝে মাঝে দেখেছি যে উনি নিজ দাবীর পক্ষে যা যায় সেটাকেই একতরফা ভাবে হাইলাইট করেন, একই সূত্রে ভিন্ন কথা থাকলে এড়িয়ে যান, যা বিদ্বেষী মননেরই লক্ষন। তারপরেও বলতে হয় যে আমি তার বা সমমনা আরো কয়েকজনের লেখা থেকে অনেক কিছুই পাই, শুধু একটু সতর্কতা পালন করি সূত্র ভালভাবে চেক করে নিতে। ভবঘুরে কিন্তু নিজেকে নাস্তিক দাবী করেছেন বলে শুনিনি, উনি একাধিকবার নিজেকে আস্তিক দাবী করেছেন, যদিও কেউ কেউ তাকে ছদ্মবেশী নাস্তিক এমন কথাও মনে পড়ে বলেছেন। ভবঘুরে কথা প্রসংগে কেন তিনি ইসলাম বিদ্বেষী তার কারনও একাধিকবার বলেছেন। উনি বর্তমান বিশ্বে ইসলামকে খুব বড় ধরনের থ্রেট বিবেচনা করেন সেটা পরিষ্কার করেই বলেছেন।
গত ক’মাসে ইসলাম বিদ্বেষী বিষয়ক বিতর্কে আমার মনে হয়েছে যে কেউ কেউ ইসলাম বিদ্বেষী দমনের নামে সম্ভবত অতি উদার সাজার চেষ্টা করছেন, হতে পারে সেটা ব্লগের বদনাম প্রতিরোধের স্বার্থে? ধর্মের বিরদ্ধে আর কত এ ধরনের কথা মুক্তমনায় একেবারেই বেমানান লাগে, মুক্তমনার কোর ভ্যালুই এসেছে ধর্মের পেছু লেগে। গাছে উঠিয়ে মই কেড়ে নিলে তো চলবে না। মুক্তচেতনার প্রধান শত্রু অবশ্যই প্রচলিত ধর্মগুলিতেই আছে, সেসব নিয়ে প্রতি নিয়তই কথা বলতে হবে। পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের স্বার্থে ধর্মের পেছনে লাগতে হলে সব ধর্মের পেছনেই সমান ভাবে লাগতে হবে জাতীয় তত্ত্ব শুনলে অত্যন্ত বিরক্তি লাগে।
কেউ কাউকে কোন নির্দিষ্ট লেখার আলোকে বিদ্বেষী বললে অবশ্যই কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু বিরক্তি লাগে যখন দেখি সেটা ব্যাক্তিগত রেষারেষিতে মোড় নিচ্ছে তখন, সমমনা কজনা মিলে ঘেটো গঠন করে সেই বিদ্বেষীর যাবতীয় সব লেখা বর্জন, মোদ্দা কথা তাকে ব্লগীয়ভাবে বর্জন এসব মুক্তমনায় দেখতে চাই না। গত ক’মাসে তেমন আলামত চোখে লেগেছে। এক লেখার জের অপ্রাসংগিকভাবে আরেক লেখায় টেনে ব্যাক্তিগত রেষারেষি শুরু করার মারাত্মক প্রবনতা কয়েকবারই চোখে লেগেছে। আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকুক লেখাতেই, লেখকে নয়।
সবশেষে ভবঘুরের চরম বিরোধীতা করেও তাকে লেখার আহবানের মত উদারতা এবং তার কারন ব্যাখ্যার মত বিশ্লেষন মনে হয় মুক্তমনাতেই সম্ভব।
@আদিল মাহমুদ,
(Y) (Y)
@আদিল মাহমুদ,আমার বিজ্ঞান ও কোরান-হাদিস এই দুই ধারা মূলত ছিলো আলোচনার জন্যে একটা মোটাদাগের বিশ্লেষন। আপনার লেখাগুলোর ভিত্তিতে এই ক্যাটেগরীগুলোর মধ্যে আপনাকে ফেলা শক্ত। আমার মনে হয় আপনি মূলত আগ্রহী সমসাময়িক বাংলাসমাজের মধ্যে ধর্ম ও মতবাদের প্রভাবিত সামাজিক ও ব্যাক্তিগত মনস্তত্ত আলোচনায়। তবে কোরান-হাদিসের রেফারেন্সেও আপনার বুৎপত্তি উল্লেখকরার মতো।
আমি কিন্তু কোরান-হাদিসের অস্বস্থিকর কথা বলতে জীবনবিধান ও মুল্যবোধ ভিত্তিক কথাগুলোকেই বুঝিয়েছি। আমার মনে হয় এই ধরনের কথাগুলোই মনের ভিতরে সবচেয়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে সক্ষম। আমার নিজের খেয়াল আছে যে প্রথম যখন মনোযোগ দিয়ে তাফসীর সহ পুরো কোরান পড়েছিলাম তখন আমার মনে সবচেয়ে বেশী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিলো সূরা নিসা (৪:৩৪) যেখানে স্পষ্টত নারীর চেয়ে পুরুষকে শ্রেষ্ঠতর বলা হয়েছে। আমি আমার সংশয় নিয়ে আমার এক বন্ধুর মায়ের সাথে কথা বলেছিলাম। তিনি ছিলেন অত্যেন্ত উচ্চশিক্ষিত, আধুনিক এবং ধর্মপরায়ন একজন মহিলা। তাকে সূরা নিসার কথা বলাতে তিনি নির্দ্বিধায় বললেন যে মেয়েরা যে পুরুষদের চেয়ে ইনফেরিয়র এটা বাস্তব সত্য। তিনি এর সমর্থনে কিছু যুক্তিও দিয়েছিলেন। সেগুলো আমার খেয়াল নেই, খেয়াল আছে যে আমি কনভিনসড হই নি। ঐ সময়েই আমার এতটুকু জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছিলো যে মেয়েরা পুরুষদের চেয়ে হীনতর তো হতেই পারে না বরং প্রকৃত আধুনিক সমাজে মেয়েরা পুরুষদের চেয়ে বরং এগিয়ে থাকবে!
আমি বিদ্বেষী লেবেলটাকে বেশী গুরুত্ব না দিতেও লেখাটিতে বলেছি। আমার মনে হয় সব মানুষের মধ্যেই কমবেশী বিভিন্ন রকম বিদ্বেষ আছে। এই বিদ্বেষগুলি ঢেকেঢুকেই আমরা চেষ্টা করি সভ্যভাবে মতবিনিময় করতে। মুক্তচিন্তার ফোরামে বিদ্বেষ থাকা না থাকার চেয়ে বেশী দরকার যুক্তি আর তথ্য গ্রহন করার মানসিকতা।
যাই হোক, আপনারর দীর্ঘ সময় পরে দেশে সময় কাটানো কেমন হলো? এতোদিন ধরে বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কিছু লিখেছেন এবার দেশে সশরীরে যেয়ে থাকলেন। আপনার অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষন নিয়ে একটা লেখা অনেক আগ্রহ নিয়েআশা করছি।
@সফিক,
আপনার লেখায় আসলে আলোচনা করার অনেক ভাল পয়েন্ট আছে সবগুলিতে যেতে পারিনি। এটা খুবই সত্য যে মানুষের পক্ষে একেবারে নির্মোহ/নিরপেক্ষ বিশ্লেষন মনে হয় অসম্ভবের কাছাকাছি। ‘বিদ্বেষী’ কিংবা প্রেমি হয়ে পড়া খুবই সম্ভব, কখোন বা মনের অজান্তে। এই ব্যাপারটা সম্ভবত আরো বেশী হয় এক বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে, এবং বিপরীর মেরুর লোকের সাথে দীর্ঘদিন তর্কে লিপ্ত হতে হলে।
আমি নিজে যখন প্রথম নিজ ভাষায় প্রথম বাংলা কোরান পড়ি বহু বছর আগে তখন কিন্তু সুরা নিসা কিংবা আরো অনেক আয়াত আমার মনে বিন্দুমাত্র রেখাপাত করেনি। কারন আমার চোখে তখন আর দশজন বিশ্বাসীর মত অন্ধবিশ্বাসের ঠুলি, সেই চোখ দিয়েই আমি পড়ে গেছি এবং মনকে প্রবোধ দিয়েছি আল্লাহর পাক পবিত্র কালামে আপত্তিকর কিছুই থাকতে পারে না, আমিই জ্ঞানের অভাবে বুঝতে পারছি না। এভাবেই বিশ্বাসী মন কাজ করে। সাম্প্রতিক সময়ে মনে সংশয় ঢোকার পরেই কেবল এই মানসিকতা থেকে বার হতে পেরেছি। আমি ভাল রকমই বুঝি যে বেশীরভাগ ধার্মিকের মাঝেই আসলে কম বেশী সংশয় কাজ করে ঠিকই, তবে সেই চুড়ান্তভাবে পরকালে বিপদে পড়বে এই ভয়ে সেই সংশয় প্রকাশ কিংবা মনের ভেতর ডালপালা গজাতে দেয় না। তার বহিঃপ্রকাশ হল যিনি ইসলাম পূর্নাংগ জীবন বিধান বলে মনেপ্রানে বিশ্বাস করার দাবী করেন তিনিই আবার ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে লড়াই করেন।
দেশ ভ্রমন মন্দ হয়নি, ৭ বছর পর এবার গেলেও খুব বেশী অবাক হবার মত তেমন অনুভূতি হয়নি। মনে হয় মানসিকভাবে পরিবর্তনগুলির জন্য প্রস্তুত ছিলাম বলেই। জীবন এখন অনেক যান্ত্রিক, বদলে যাচ্ছে নগর জীবনের প্যাটার্ন। ঢাকার বাইরে কোথাও যাইনি, তারই অভিজ্ঞতায় বলা। যানজট সমস্যা মনে হয়েছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যার টলারেবল লেভেলেরও সমাধানের পথ দেখছি না। শুধু মনে হয়েছে সহসাই এই নগর মৃত অবস্থায় পড়ে থাকবে, নীতি নির্ধারক থেকে আম পাবলিক সকলেরই সম্মিলিত অবদান এতে আছে। আগে তেমন বিশ্বাস করিনি, তবে যা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে যে নিজ গাড়ী মেইন্টেন করা ছাড়া এখন প্র্যাক্টিকেলি তেমন পথ নেই। এর কন্সিকোয়েন্স মোটেও ভাল কিছু নয়। বসত বাড়ির প্যাটার্নও বদলে যাচ্ছে গাড়ি ভিত্তিক জীবন লক্ষ্য করে। ডেভোলাপার দিয়ে আগেকার বাড়িগুলি ভেংগে বানানো হচ্ছে বহুতল এপার্টমেন্ট, তাতে অবশ্যই রাখতে হচ্ছে পার্কিং। পার্কিং বিহীন এপার্টমেন্টের ভ্যালুয়েশন অনেক কম, ভাড়াও কম। এছাড়াও দেখলাম বাংগালীর ফুড হ্যাবিটও বদলে গেছে অনেকটাই। সময় পেলে লিখব হয়ত বিস্তারিত।
রেফারেন্স তিনি নিজের লেখাতে কিছু দিলেও তার বেশিরভাগ মন্তব্যগুলোই অযৌক্তিক আর অপ্রাসঙ্গিক। অমানবিকও।কিছু মনে করবেন না, এইসব কাজ আপনিও করে থাকেন।দেখুন জাজাবর কে জবাব দিতে গিয়ে যে লেখার লিঙ্ক দিয়েছি, ওখানে আবার একটু ঢুঁ মেরে আসেন আর নিজেদের অপ্রাসঙ্গিক, অযৌক্তিক আর একরোখা বিদ্বেষপুর্ন মন্তব্য গুলো দেখে আসেন আবার। অবশ্য দেখলেও লাভ নেই। নিজের ঘোল নাকি টক লাগে না।ভবঘুরের মত মানুষ যিনি নিজে পরচর্চা করতে সিদ্ধহস্ত হলেও সমালচনা একেবারেই সহ্য করতে পারেন না,তার কাছে তো নিজের ভুল কোনদিনই ধরা পড়বে না। একেবারে ছেলেমানুষি অভ্যাস এটা। আর আপনি তার ফিক্সড সমর্থকদের একজন, কাজেই আপনারও যে সেটা চোখে পড়বেনা, সেটা বলাই বাহুল্য।
সেজন্যেই এই ঘটনাগুলি কিভাবে বন্ধ করা যায় এ নিয়ে কিছু গঠন মুলক আলোচনাই বেশি কাজে লাগবে বলেই আমি মনে করি,ব্যাঙ্গাত্বক আর কটূক্তিতে ভরা লেখা আর মন্তব্য শুধুই মুসলিমদের ধর্মান্ধতাকে আরো উস্কে দেবে, ধর্ম সংস্কার প্রচেষ্টার পরিবর্তে।
ঠিক। জাকির নায়েকও মারাত্বক জনপ্রিয়।তাতে কিছুই যায় আসে না তাই না?
শিরোনামটা দেখেছেন?এখানেও উনার বিবেচ্য বিষয় হল যে নাফিস সাচ্চা মুসলিম কিনা। কাজি রহমানও সম্ভবত এই নিয়ে একটা লেখা দিয়েছেন। সেটা অনেক বেশি মানসম্মত ভবঘুরের এই ফালতু প্যাচালের চেয়ে। এই লেখাটায় ভবঘুরে কি পাহাড় উল্টিয়েছেন শুনি?শুধুমাত্র এইটা প্রমান করা ছাড়া যে ইসলামের দৃষ্টি তে এইটা ঠিক আছে?এসব প্রলাপ বকে কারও মনে তিনি কোন রেখাপাত করতে পারবেন না, হ্যাঁ তার মত কিছু বিদ্বেষীর হাততালি পাওয়া আর পরস্পরের পিঠ চাপড়াচাপড়ি ছাড়া।এতে কি লাভ? কিছুই না।
হিট এবং ফ্লপের কথা আগেই বলেছি। সাথে একটা কথাই যোগ করতে চাই আর তা হল, ভবঘুরের মুহাম্মদ ও ইসলামের শেষের দিকের পর্বগুলি ছিল মোটামুটি প্রথমদিকের গুলির চর্বিত চর্বন।যে লোকদের সারাদিন শুধু পরচর্চা করা ছাড়া আর মুসলিম বিদ্বেষ ছাড়া, আর বিন্দু মাত্র অন্য কাজ থাকে, তার পক্ষে এইগুলিকে কোন মান সম্মত প্রবন্ধ বলা সম্ভব না।
তাছাড়াও এই মহাভারত ( মুহাম্মদ ও ইসলাম) তিনি যদি অন্য ব্লগে পরের পর্ব গুলো লেখেন, জানি না কবে থামবে।নিজের লেখাকে চুইঙ্গামের মত যে ভাবে টেনে টেনে লম্বা করছেন,তিনি এবং বিষয় বস্তু মোটামুটি এক। এ থেকেই বুঝা যায় যে তাঁর লেখনী ক্ষমতা কতটা সাধারণ মানের।
ধন্যবাদ। সময়োপযোগী গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধ দিয়েছেন।
ভবঘুরে এর নিবন্ধ সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত কিছু মতামত-
১। উনি জনসাধারণের কাছে অনেক অপ্রীয় কথাটি বল্লেও উপযুক্ত রেফারেন্স ও যুক্তি ছাড়া কখনো বলতেন না।
আর যদি কারো কাছে তা অযৌক্তিক মনে হত, তাহলে তো মুক্তমনায় কলমের মাধ্যমে খন্ডন করার যথেষ্ট সুযোগ রয়ে গেছে। সেটা তো করা যেত। তাতে অসুবিধা কোথায় ছিল তা আমার বুঝে আসিলনা।
একেবার বিদায় করে দেওয়ার কি দরকার আছে? আমার তো তা মনে হয়না।
২। ভবঘুরে অন্য ধর্মের চেয়ে ইসলাম ধর্মের সমালোচনা বেশী করতেন। পশ্ন হল এটা তিনি কেন করতেন?
আমার যতদূর মনেহয় এটা তিনি এ কারণে করতেন, কারন অন্য ধর্মগুলী এখন শুধু নামে মাত্র দন্তিবিহীন অজগরে পরিণত হয়ে তাদের উপাসনালয়ের মধ্যে আটকে পড়ে আছে।
তাদের শাসকগোষ্ঠী তাদেরকে সামাজিক শাসন ব্যবস্থায় এদের বিষ দাতের আক্রমন কে প্রতিহত করে রেখেছে।
সেক্ষেত্রে ইসলাম ধর্মের এতবড় প্রভাব যে শাসনযন্ত্র এবং শাসকগোষ্ঠিও এদের কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়ে যায়।
অন্য কোন ধর্মালম্বীকে যদি তাদের ধর্মগুরুরা বলেন, যে তোমরা মসজিদে বা ঈদগাহে গিয়ে আত্বঘাতি হয়ে মুসলমান মুছল্লীদের কে হত্যা কর এবং নিজেও নিহত হও, তাহলে তোমরা মৃত্যুর পরেই সাথে সাথে স্বর্গে চলে যেতে পারবে।
অন্য ধর্মাবলম্বীরা কিন্তু এতটা গর্দভ নয় এবং তারা এটা কখনোই করতে যাবেনা।
সেখানে মুসলমানেরা এ ঘটনা প্রতিদিনই ঘটাচ্ছে।
তাহলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সংগেও মুসলমানদের যে কোন তুলনাই করা যায়না এটা তাই-ই প্রমান করে।
ভবঘুরের কোরান হাদিছের রেফারেন্স গুলী এদের উপর বোম্বের ন্যায় আঘাত করত। তাদের যথোপযুক্ত কোন উত্তর থাকতনা। এটাই তাদের সমস্যা হয়ে গিয়েছিল।
৩। ভবঘুরের নিবন্ধ অত্যন্ত জনপ্রীয়ও ছিল। এখানে অত্যধিক হিট পড়তো।
মক্তনাকে অত্যধিক পাঠকবর্গের কোলাহলে,ও তর্ক-বিতর্কে কোলাহলপূর্ণ রাখত।
লোক সমাগম বেশী হওয়াটাই তো জনপ্রীয়তার লক্ষণ এবং সামাজিক উন্নয়নে এটাইতো কাম্য।
যথেষ্ট লোক ভবঘুরের নিবন্ধ হতে ধর্মান্ধত্ব থেকে মুক্ত হয়েছে। তার নিবন্ধের মন্তব্য ছেকশনের বিভিন্ন যায়গায় এটা পাওয়া যায়।
ভবঘুরের নিবন্ধে যে প্রচন্ড হিট পড়তো, নীচে তার কিছু নমুনা পাওয়া যাব।
অতএব মুক্তমনার সম্মানীয় ও বিজ্ঞ মডারেটর বৃন্দের নিকট আবেদন জানাব যে ভবঘুরেকে
পূর্বের ন্যায় পুনরায়”পূর্ণাঙ্গ লেখক” এর সদশ্যপদের মর্যাদা দিয়ে তাকে মুক্তমনায় আবার লেখার সুযোগ করে দিয়ে সামাজিক উন্নয়নের কাজের সুযোগ করে দেওয়া হউক।
আর তা ছাড়া যে কেহ ত্রুটি বিচ্যুতি করলে মডারেটরদেরদের হাতে শাসন করার ক্ষমতা তো রয়েছেই। ধরা যাউক,কিছুদিন ছাছপেনসনে রাখলেই তো যথেষ্ঠ হয়ে যায়।
একেবারেই বিদায় দেওয়ার কি প্রয়োজন আছে?
ভবঘুরের প্রবন্ধ গুলীর কিছু হিট এখানে দেখানো হল। এর চাইতেও আরো বেশী হিটের প্রবন্ধও আছে।
১। মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-২০
মন্তব্য (৪৮) | ৩১২৫ বার পঠিত
২। নাফিস কি একজন বিভ্রান্ত মৌলবাদি সন্ত্রাসী নাকি সাচ্চা মুসলমান?
মন্তব্য (৫২) | ২১২৯ বার পঠিত
৩। ইসলামিক ব্লাসফেমি ও স্ব-বিরোধীতা
মন্তব্য (১৩৪) | ৩৯২৬ বার পঠিত
৪।মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৭
মন্তব্য (১৪২) | ৩৮৭৫ বার পঠিত
৫। মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব -১৬
মন্তব্য (২১৬) | ৩৪১৪ বার পঠিত
৬। মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৫
মন্তব্য (৩২১) | ৩১০৩ বার পঠিত
৭।মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৪
মন্তব্য (৩০৫) | ৪০৯৮ বার পঠিত
৮। মোহাম্মদ ও ইসলাম , পর্ব-১৩
মন্তব্য (১০৭) | ৩২৮৭ বার পঠিত
৯। মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১২
মন্তব্য (৫৭) | ২৮১৮ বার পঠিত
১০। মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১১
মন্তব্য (৫০) | ২৩৪৪ বার পঠিত
ভবঘুরের ফিরে আসা প্রয়োজন এ ব্যাপারে একমত। তবে ভবঘুরেকে মুসলীম/ইসলাম বিদ্বেষী বলে রায় দিয়ে রায়টি প্রত্যাহার না করেই আবার তার ফিরে আসার জন্য আবেদন করাটা স্ববিরোধী হয়ে যায়। কাউকে মানুষের বিদ্বেষী বলে রায় দেয়াটা (কোন সন্দেহের অবকাশ না রেখেই) একটা গুরুতর ব্যাপার। আর অন্তত ইসলামের সমালোচক লেখকদের বেলায় আমি মনে করি সেই সন্দেহের যথেষ্ঠ অবকাশ আছে। সন্দেহের অবকাশ থাকলে বেনেফিট অব দ্য ডাউট দেয়াটাই যুক্তিবান মানুষের কাছে প্রত্যাশিত। মুক্ত-মনারা যুক্তিবান হবেন সেটাও প্রত্যাশিত। ভবঘুরেকে মুসলীম বিদ্বেষী ব্লার মানে হলে তিনি নির্বিচারে প্রত্যেক মুসলীমের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন। বিদ্বেষ কথার ব্যাপক মানে হতে পারে। এর মধ্যে হত্যার চেষ্টাও অন্তর্ভুক্ত (যেমন ইসলামিস্টরা আসিফকে করেছে)। কাজেই বিদ্বেষী বলার এক অর্থ হতে পারে ভবঘুরেও কোন মুসলীমকে পারলে হত্যা করতে পারেন। কাজেই এই ধরণের অভিযোগ খেলোভাবে (ইংরেজীতে যাকে বলে Cavalierly ) করাটা বিবেক বর্জিত কাজ হবে। আমি ভবঘুরেকে সমর্থন দেয়ার খাতিরেই এটা লিখছি না। ভবঘুরের যায়গায় অন্য কেউ হতে পারতেন। এটা একটা নীতির প্রশ্ন। কোন গুরুতর অভিযোগ আনলে তা সন্দেহাতীত হতে হবে। না হলে এটা চরিত্রহনন বা Slander এর কাতারে পড়বে। আমি ভবঘুরের সম্ভবত সবচেয়ে ঘৃণীত একটা উক্তি নিয়েই আলোচনা যেটার ভিত্তিতে তাঁকে প্রায় সবাই কায় মনোবাক্যে মুসলীম বিদ্বেষী বলে রায় দিয়েছেন। সেটা হল,
উক্তিটি একটু নিরাসক্তভাবে দেখলে এটাতে শুধু ব্যঙ্গই দেখা যায়। ব্যঙ্গটা ইসলাম ধর্মের একটা বিশ্বাসকে নিয়েই। ভবঘুরে বলতে চাইছেন যারা বিশ্বাস করেন যে পানিতে ডুবে মরলে বেহেশত নসীব হবে তাদের উল্লাস করা উচিত ডুবে মরা যাত্রীদের বেহেশত নসীবের জন্য। তিনি “আমরা/আমি” একটা বাক্যালংকার হিসেবে বলেছেন ঐ বিশ্বাসীদের হয়েই। এর দ্বারা তিনি ঐ ডুবে মরা মানুষের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেছেন এটা বলা একটা টল অর্ডার। হ্যা মানুষ দুর্ঘটনায় পড়লে দুঃখ জানানটা একটা সামাজিক প্রথা ঠিকই। কিন্তু সব জায়গায় এরকম দুঃখ প্রকাশ করতেই হবে এমন কোন আইন নেই। অন্য প্রসঙ্গে সেটা ভবঘুরে করতেও পারেন বৈঠক খানায় । আমরা জানি না সেটা। সন্দেহের অবকাশ আছে। এ জন্যই বেনেফিট অব দ্য ডাউট এখানে খুবই জরুরী। জোর করে বলার চেষ্টা। যে কোন লেখায় (পাঠ্য পুস্তক ছাড়া) ব্যঙ্গ এর ব্যবহার প্রথাসিদ্ধ। তাঁর অন্যান্য বিতর্কিত মন্তব্যে রুচির অভাব বা ক্রুড ইমোশনাল বাক্য আছে ঠিকই কিন্তু সেটাও সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে না যে তিনি প্রত্যেক মুসলীমের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন। কিছু মন্তব্যকারী ব্যক্তি আক্রমণের অভিযোগ এনেছেন (“ধর্মের সমালোচনা করা লেখাগুলোতে অনেক সময়েই ব্যক্তিগত বিদ্বেষের প্রকাশ খুব দৃষ্টিকটুভাবেই হয়ে থাকে”)। ব্যক্তিগত বিদ্বেষটা কোথায় কোন উক্তি/বাক্যে আছে এটা জানা দরকার। না থাকলে সেটাও একটা স্ল্যান্ডার হবে। বরং যত মন্তব্য দেখেছি তাতে ব্যক্তিগত বিদ্বেষটা ভবঘুরের প্রতিই স্পষ্ট। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হল আব্দুল হাকিম চাকলাদারের মত মার্জিত ভাষা ব্যবহারকারী একজন ব্লগারের প্রতিও চরম অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য করতে দেখেছি অন্য মুক্ত-মনাদের। ব্যক্তিগত আক্রমণ বিচার করলে এগুলো বিশালভাবে একতরফাই হয়েছে। ইসলামের সমালোচনাকারীরা অন্য কোন মুক্তমনাকে আলাদা করে আক্রমণ করেননি বলেই আমি জানি ।
@যাযাবর,
খুবই হাস্যকর যুক্তি।তাহলে কি ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তীনিরা মরলেও তো একই কথা বলা যায় তাই না?তবে কি সেই সাইফুল ইসলামের এই পোস্টটিতেও
ভবঘুরে শুধুই ইসলাম ধর্মের একটা বিশ্বাস কে নিয়েই ব্যাঙ্গ করছিলেন বলে আপনার ধারনা?আর তাছাড়া মানুষের মৃত্যুকে নিরাসক্ত ভাবে দেখার চেষ্টা করলে নিজেদের আদৌ মানুষ বলে দাবী করার অধিকার থাকে কিনা সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আর তাছাড়াও আপনার কি মনে হয় যে ভবঘুরে দেখে এসেছিলেন যে ওই ১১২ জনের সবাই মুসলিম? আর তাছাড়া এইভাবে ভাবলে কিন্তু গার্মেন্টসে আগুন লেগে শতাধিক প্রাণহানীর ব্যাপারটাকেও এইভাবে মানে নিরাসক্তভাবে দেখা যায় কি বলেন আপনি?
উত্তর টা দেবেন আশা করি। না দিলেও সমস্যা নাই, কারন উত্তর দেয়া বা না দেয়াটা আপনার নিজের অধিকারভুক্ত।
ঠিক বিদ্বেষ না বলে আমি এটাকে বিরক্তি বলতেই বেশি পছন্দ করব।
জি ঠিক বলেছেন মার্জিত ভাষা ব্যবহারকারী।এবার আপনি সহ সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে,কিছু অশিষ্ট গালির মার্জিত রূপ আমি ব্যাবহার করতে যাচ্ছি এখন। দেখুন তো এইসব ভাষা কারো উদ্দেশে বললে সে আপনাকে কি করবে।
[এর অশিষ্ট গালিটা আমরা কমবেশি সবাই জানি, যেহেতু কেউ আমরা ফেরেশতা না।জানি তবে ভদ্রলোক বলে নিজেদের পরিচয় দিতে পছন্দ করি বলে ব্যবহার করি না।]
মার্জিত শব্দ সন্দেহ নেই, অন্তত অশিষ্ট ভাষার ব্যাবহার নেই এখানে।কিন্তু বাংলাদেশে এই জিনিস ভদ্র ভাবে কাউকে বললে কি হবে বলেনতো?একটু রুড হয়ে গেল উপমাটা তাই না? ক্ষমা আগেই চেয়ে নিয়েছি এজন্যে। কিন্তু চাকলাদার সাহেবের বেশিরভাগ মার্জিত মন্তব্যই ভবঘুরের অমার্জিত কথার মার্জিত রূপ মাত্র।
মানুষের মৃত্যু নিয়েও তিনি ওই একই পোস্টে ( সাইফুল ইসলামের) ভবঘুরের সাথেই তাল মিলিয়ে, ভবঘুরের কথাগুলিকে নিজের কথা এবং সেটা ভবঘুরের মুখ থেকে বেরিয়েছে শুধুমাত্র, এই বলে দাবী করেছেন তিনি নিজে। সেখানে আপনার কি বলার থাকতে পারে আর?
@যাযাবর, আপনি বলেছেন ,”তবে ভবঘুরেকে মুসলীম/ইসলাম বিদ্বেষী বলে রায় দিয়ে রায়টি প্রত্যাহার না করেই আবার তার ফিরে আসার জন্য আবেদন করাটা স্ববিরোধী হয়ে যায়”।
দেখুন আমি আগেই বলেছি যে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রকম ব্যাক্তিগত বিদ্বেষের উপস্হিতি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। সুতরাং বিদ্বেষ থাকাটা জঘন্য কোনো ব্যপার নয়। তবে অনেকেই আছেন যারা নিজের বিদ্বেষকে চাপা রেখে সফলভাবে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিতে পারেন। আবার অনেকের বিদ্বেষের আবেগ এতো তীব্র যে তারা সেটা ঢেকে রাখতে পারেন না।
আর বিদ্বেষের কারনে কাউকে লেখা লেখি হতে বন্চিত করতে হলে সম্ভবত ৯৯% লোককেই বাদ দিতে হবে। ভবঘুরে ইসলাম বিদ্বেষী কি না এটা নিয়ে আগেও আপনার সাথে কথা হয়েছে। আপনি বা ভবঘুরে কখনোই প্রতিউত্তর দেন নি। আমি সেই পুরনো কাসুন্দি আবার ঘাটতে চাইনা। আমি এখানে আগ্রহী বিভিন্ন রকম ইসলাম বিরোধী লেখার এফেক্টিভনেস নিয়ে আলোচনায়।
@যাযাবর,
বিদ্বেষী বলেই ভবঘুরে কোন মুসলিমকে হত্যা করতে পারেন এটি অতিকথন। তিনি মুসলিমদের প্রতি antipathetic, এই অর্থেই আমি তাকে বিদ্বেষী বলব।
না, দুঃখ প্রকাশ করতেই হবে এমন কথা কেউ বলেনি। কিন্তু ডুবে মরার মত একটি বিষয় নিয়ে নিরাসক্ত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করা আপনার কাছে গ্রহনযোগ্য হলেও অন্য সবাই তা বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেবেন তাই বা ভাবছেন কেন? আমি সেই ডুবে মরা হতভাগ্যদের ধর্ম পরিচয় জানি না, জানতে চাইও না। আমার কাছে তারা কেবল মানুষ। এধরনের খবর শুনলে আমি ভাবি না এই মানুষগুলো স্বর্গ না বেহেস্ত না নরক না দোযখে গেল। আমি ভাবি,ডুবে যাওয়া লঞ্চের কেবিনে আটকা পড়ে তারা কতটা আতঙ্কিত বোধ করেছিলেন, যখন পানিতে তাদের ফুসফুস ভরে গিয়েছিল তাদের কতটা কষ্ট হয়েছিল, তাদের মৃত্যু কি ধীরে না দ্রুত হয়েছিল…আর এসব চিন্তাভাবনা আমাকে স্বভাবতই বিচলিত করে তোলে। সবার শোক প্রকাশের ধরন একই রকম নাও হতে পারে, শোক প্রকাশ না করলেও আপত্তি নেই, কিন্তু যেকোন মানুষের দুঃখজনক অকাল মৃত্যু নিয়ে কেউ নিরাসক্ত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করলে আমি তাকে সেই গোষ্ঠীর প্রতি antipathetic বলবই।
আপনি লঞ্চডুবিতে মরা মানুষদের নিয়ে যে উক্তিটির উদ্ধৃতি দিয়েছেন সেটিই একটি উদাহরন। লক্ষ্যনীয় যে, এতজন পাঠকের আপত্তি সত্ত্বেও ভবঘুরে একবারো বলেন নি যে তার এই উক্তিটি তিনি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। আপনার মন্তব্যেও আপনি এর স্বপক্ষে সাফাই গাইবার চেষ্টা করেছেন। চিন্তা করে দেখুন ঐ লঞ্চে আপনার অতি নিকট কেউ থাকলে (অবশ্যই চাইবো না এমন কিছু ঘটুক) আপনি কি মন্তব্যটি এতটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন?
@মনজুর মুরশেদ,
ভাঙ্গা রেকর্ডের মত বলতে হচ্ছে যে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের লক্ষ্য মৃত লঞ্চযাত্রীরা নন, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের লক্ষ্য হল পানিতে ডুবলে বেহেশত নসীব হয় এই বিশ্বাসটা। আর যে কোন দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে দুঃখ পাওয়াটা ব্যক্তিগত অনুভূতির ব্যাপার। কে কিভাবে সি অনুভূতি প্রকাশ করবেন বা না করে অন্তরেই লুকিয়ে রাখবেন সেটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রকাশের ভঙ্গী বা প্রকাশ না করার ভিত্তিতে কারও মনের ভেতরের অনুভূতির বিচার করা মুক্তচিন্তা ভিত্তিক আলোচনার এখতিয়ারে পড়ে না। আপনি সেই বিচারই করছেন। দুঃখ ভিতরে লুকিয়ে রেখেও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে করা যেতে পারে।ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ টা তো যারা দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তাদেকে টার্গেট করে নয়। টার্গেট একটা বিশ্বেষ বিশ্বাস। কাজেই দুটোকে আলাদা করা সম্ভব এবং সেটা করতে পারাটা যুক্তিবাদী মুক্তচিন্তার বৈশিষ্ট্য হয়া উচিত।
@যাযাবর,
আপনার মন্তব্য ও পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
আমি যে কাজ করিনি কেন আমাকে সেই কাজের জন্য দায়ী করছেন? আমি উপরে পরিষ্কারভাবে বলেছি, “সবার শোক প্রকাশের ধরন একই রকম নাও হতে পারে, শোক প্রকাশ না করলেও আপত্তি নেই”।
এক্ষেত্রে ধর্ম বিশ্বাস লক্ষ্য হলেও দেখতে হবে কাদের উদ্দেশ্যে ভবঘুরে মন্তব্যটি করেছেন। তিনি মন্তব্যটি করেছেন সদ্য স্বজনহারা কিছু শোকাহত মানুষসহ অন্য মুসলিমদের উদ্দেশ্যে যারা মৃতদের জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। যদি ধরেও নেই শোককারীরা বিশ্বাস করেন যে মৃতরা বেহেশতে যাবেন তারপরও প্রিয়জনদের অকাল অনুপস্থিতি স্বজনদের শোকাচ্ছন্ন করতে পারে। অন্যরাও স্বদেশী/স্বজাতির জীবননাশে দুঃখ পেতেই পারেন। মৃতদের জন্য শোকের এই প্রকাশ তাদের স্বাভাবিক মানবিক অধিকার এবং তারা মুসলিম হলেও ধর্ম তাদের সেই অধিকার কেড়ে নেয় নি। এই অবস্থায় “উল্লাস” করতে বলে ভবঘুরে তাদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার মত অনধিকার চর্চা করছেন, যা একজন যুক্তিবান মুক্তমনার জন্য অতি স্থূল আচরণ। ধর্মের সমালোচনা করার মত এত কিছু থাকতে মৃতদের জন্য শোকপালন করা কিছু লোককে নিয়ে টানাটানির সত্যি কোন প্রয়োজন ছিল না। তার আলোচ্য মন্তব্যটি সোজা কথায় অমানবিক তা আপনি যেকোন মাপকাঠিতেই বিচার করুন না কেন।
ভবঘুরের একপেশে মন্তব্যগুলো প্রায়ই বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়ায়। তবে তিনি যথেষ্ট পরিশ্রম করে লেখেন। তার লেখা অনেক কিছুর সাথে একমত না হলেও মন্তব্যকারী আরো অনেকের মত আমিও চাই তিনি ফিরে এসে মুক্তমনায় লিখতে থাকুন।
ভাল লিখেছেন।
খুবই খাঁটি কথা। তবে ভবঘুরের ইসলাম বিরোধ ঠিক সুস্থ পর্যায়ে না থেকে রীতিমতো বিদ্বেষে পরিনত হয়েছে।তবে এটাও বড় কথা না। কোন কাল্টের( আমি খুব সচেতন ভাবেই ইসলাম কে কাল্ট বলছি) বিরুদ্ধে বিদ্বেষকেও মাথা ব্যাথা তেমনটা নেই। সমস্যাটা হল উনার পরিমিতিবোধ নিয়ে।উনার ইসলাম বিদ্বেষ টা আসলে গোটা মুসলিম জাতির প্রতি একধরণের বিজাতীয় বিদ্বেষের পর্যায়ে চলে গেছে,যা কিনা কোন ক্রমেই মুক্ত মনের মানুষের পরিচয় হতে পারে না। উনার বেশিরভাগ লেখা দেখেই মনে হয় যে উনি শুধুমাত্র শয়নে, স্বপনে, জাগরনে ইসলাম ছাড়া কিছুই চোখে দেখেন না; আর এটা থেকেই রীতিমত ১.৫ বিলিওন মানুষকে নির্মুল করে দেয়ার মত মানসিকতা জন্ম নেয়। আমার মনে হয় ক্ষমতা থাকলে ভবঘুরে এই কাজটিও বিনা দ্বিধায় করতে পারতেন।
এই ব্লগে ইসলামের সমালোচনাকারী আরো লেখক রয়েছেন। আদিল মাহমুদের লেখা গুলো দেখুন,আর নাস্তিকের ধর্ম কথার।সৈকত চৌধুরীও কয়েকটি লেখা লিখেছেন এইরকম। বাকিদের সবার নাম এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না। এদের লেখার স্টাইল গুলো দেখুন।অযথা বিদ্বেষ না ছড়িয়েও যে কত সুন্দর ভাবে ইসলাম আর তার পবিত্র কিতাবকে নগ্ন করা যায়; অনেকটা আদর করার ছলে চাবকানো, তার সুন্দর উদাহরন কিন্তু এনাদের লেখা।অসাধারন উপস্থাপনা, আর যুক্তি দিয়ে, কিন্তু আক্রোশ ছাড়া যেভাবে এরা লিখে থাকেন, তাতে মৌলবাদীরাও শুধু ভাঙ্গা রেকর্ডের মত হেদায়েত দান করা ছাড়া তাদের লেখার ( ইসলাম তথা কোরানের সমালচনা করে লেখা)যুক্তি গুলোকে খন্ডাতে পারে না।এই ঘরানার লেখকরা আজকাল মুক্ত মনায় লিখছেন না। সৈকত সাহেব সময় দিতে পারছেন না বেশি, নাস্তিকের ধর্ম কথা লেখা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন, আর আদিল মাহমুদ ও অনিয়মিত।এরা এবং এই ঘরানার লেখকরা আবার নিয়মিত লেখা লেখি শুরু করতে পারলেই ইসলামের সমালোচনামুলক লেখা শুরু করলেই, যে গ্যাপটা তৈরি হয়েছে মুক্ত মনাতে সেটা কেটে যাবে।
তার মানে কিন্তু এই না যে আমি ভবঘুরে কে লিখতে নিরুৎসাহিত করছি!
সবাই নিজের মতামত স্বাধীন ভাবে দিবেন এটাই আমার কামনা।কিন্তু ভবঘুরের ( আরো এমন কয়েকজন আছেন) প্রধান সমস্যা হল যে, তিনি বিরুদ্ধ মত একেবারেই সহ্য করতে পারেন না;এটা চরম হতাশাজনক ব্যাপার, আর এটাও একধরনের মৌলবাদ, যা আপনিও স্বীকার করেন। তালগাছটা আমার এই মনোভাব নিয়ে যারা লেখেন তাঁদের লেখা কিছু লোকের কাছে হটকেক হতে পারে, কিন্তু বেশিরভাগ প্রকৃত মুক্ত মনের মানুষদের জন্য এটা সুখ পাঠ্যতো নয়ই,রীতিমত বিরক্তিকর।
আর তাছাড়াও ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে ভবঘুরে একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে, কায়দা করে পেঁচিয়ে বার বার লেখেন।আর এটাই ভাঙ্গা রেকর্ডের মত মনে হয়। কেন জানি আমার মনে হয়েছে যে উনি বর্তমানে ইসলাম নিয়ে যে সঙ্কট চলছে,এটা কাটানোর পরিবর্তে মুসলিমদের ধর্মীয় গোড়ামী আরও বাড়িয়ে দিয়েই বেশি আগ্রহী, তার মারাত্মক শ্লেষাত্বক লেখাগুলির মাধ্যমে।এটা আমরা সবাই জানি যে ব্যাঙ্গ, বিদ্রূপ দিয়ে ভাল কিছুই করা যায় না।উনি আর উনার কিছু ফিক্সড সমর্থক এই কাজটা করতে অতিরিক্ত রকম পারদর্শী।
যাক তবু ভবঘুরে আবার ফিরে আসবেন এটাই প্রত্যাশা রইল।তবে অবশ্যই সমালচনা সহ্য করার সৎ সাহস তার থাকবে এই কামনাও রইল।সব শেষে সুন্দর লেখাটির জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা সফিক। (F)
@অর্ফিউস,
কুয়োটে বোল্ড অংশটা দিয়েই না, মুসলিমদের ধর্মীয় গোড়ামী আরও বাড়িয়ে দিতেই , এটা পড়তেহবে।টাইপে ভুল হয় গেছে, দুঃখিত।
@অর্ফিউস,ভবঘুরের লেখা ও আলোচনার মধ্যে মুক্তচিন্তার অভাব আর বিদ্বেষের উপস্হিতি নিয়ে আগেই বলেছি, সেটা নিয়ে আবার বেশী কথা বলাটা ঠিক মনে করছি না। আমার এই লেখাটির মুল উ্দ্দ্যেশ্য হলো কোরান-হাদিস নিয়ে লেখাগুলো বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার বিস্তারের জন্যে বেশী এফেক্টিভ কি না এটা নিয়ে একটা আলোচনা শুরু করা।
এবং সেই সাথে এই ধরনের লেখাগুলো যারা লেখেন (শুধু ভবঘুরেই হতে হবে এমন কোনো কথা নয়) তাদেরকে এই লেখাগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন্যে উৎসাহিত করাও আমার উদ্দ্যেশ্য।
গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা; আমার ধারণা বেশীরভাগ মুক্তমনাই আপনার এই লেখার সাথে একমত হবেন।
আমি মুক্তমনায় আসি নিজের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে, নিজের মত অন্যদের সাথে মেলে কিনা তা যাচাই করতে এবং নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশীদের দেশপ্রেম, চিন্তাভাবনার স্বচ্ছতা আর আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখে উজ্জীবিত হতে। শুধু মূল লেখাই নয়, পাঠকদের মন্তব্যগুলোও আমার কাছে একই রকম (কখনো বা বেশী) আকর্ষনীয় মনে হয়। তবে ধর্মের সমালোচনা করে লেখা ব্লগগুলোতে আমি তেমন উৎসাহিত নই, আর তা কেবলমাত্র ধর্ম বিশ্বাসগুলোর দূর্বলতা, অযৌক্তিক আচার, যুগের অনুপযোগী দর্শণ ইত্যাদি সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে নতুন করে মনস্থির করার কিছু নেই বলে। কিন্তু তার মানে এই না যে লেখাগুলো গুরুত্বপূর্ণ নয়। অনেকে ধর্মবিশ্বাসী, সংশয়বাদী পাঠক এই লেখাগুলো পড়ে রাতারাতি না হলেও পরবর্তীতে ধর্মের অসাড়তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারেন, যুক্তির আলোকে ধর্মের সমালোচনা করা শিখতে পারেন।
আপনি যেমন বলেছেন, ধর্মের সমালোচনা করা লেখাগুলোতে অনেক সময়েই ব্যক্তিগত বিদ্বেষের প্রকাশ খুব দৃষ্টিকটুভাবেই হয়ে থাকে। হয়তো এর কারণ এই যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধর্মবিশ্বাস লেখকদের কষ্টকর অনেক অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। তবুও বলতে চাই এধরনের বিদ্বেষের প্রকাশে লেখকের গ্রহনযোগ্যতা কমে যায় এবং এতে লেখার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। এক্ষেত্রে আদিল মাহমুদের ধর্ম-বিষয়ক লেখাগুলো অনুকরণীয় হতে পারে। তিনি শুধু ভারসাম্যপূর্ণ সমালোচনাই করেন না, আমাদের সমাজে এসবের ক্ষতিকর প্রভাবও তার লেখায় তুলে ধরেন।
পরিশেষে বলতে চাই, অশ্লীল, উত্তেজক এবং ব্যক্তি আক্রমনমূলক মন্তব্য মুক্তমনার মত একটি ফোরামে নিতান্তই নিষ্প্রয়োজনীয় এবং তা কেবল মন্তব্যকারীর দূর্বলতাই প্রকাশ করে।
@মনজুর মুরশেদ,ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে। আমার নিজের ব্যক্তিগত আগ্রহ রাজনীতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান ইত্যাদিতে কিন্তু তবু আমি ইসলাম-কোরান-হাদিস বিষয়ের লেখাগুলোয় পারলে একবার চোখ বুলিয়ে নেই। ধর্ম বিষয়ে সংশয়ী হবার পরে ধর্ম বিষয়ে গভীরভাবে পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি কিন্তু যেহেতু আজকের পৃথিবীতে ধর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা ডাইনামিক ফ্যাক্টর হয়ে দাড়িয়েছে সেকারনে বিশ্বাসীদের মধ্যে ধর্মের প্যাথলজিক্যাল বিস্তার কিভাবে ঠেকানো যায় এটা জানতে আগ্রহী হয়েছি। এটা ঠিক যে এই ধরনের লেখার বেশীর ভাগ লেখকের মধ্যে মুক্তচিন্তার মৌলিক দিকগুলোর অনুপস্থিতি দেখা যায়। কিন্তু এই সব আর্টিকেল থেকে আগে অজানা অনেক কিছু জানতে পেরেছি এটা অস্বীকার করা যায় না।
ধর্মবিষয়ের লেখকেরা যদি আদিল মাহমুদের মতো মুক্তমনে এবং ধৈর্য্য নিয়ে আলোচনায় আসতো তবে আর বলার কিছু থাকতো না। কিন্তু করার কি আছে? অভিজিৎ কিংবা আপনি তো আর এখন কোরান-হাদিস নিয়ে বসে পড়বেন না। সুতরাং এখন যে সোর্স থেকে আসছে সেটাকেই মেনে নিতে হচ্ছে। আশাকরি কিছু অযুক্তি, কিছু মিথ্যা আর কিছু বিদ্বেষের মধ্যে থেকে গুরুত্বপূর্ন তথ্যগুলো ছেকে নিতে পাঠকদের অসুবিধা হবে না।
@সফিক,
সহমত! আর তাই আদিল মাহমুদের মত বিশিষ্ট আলেমদের বেশী বেশী লেখা দিয়ে আমাদের জাহেলিয়াত দূর করার আবেদন জানাই। :))