বাংলাদেশে দূর্ঘটনা জনিত কারনে প্রানহানীর সংবাদ মনে আর তেমন রেখাপাত করে না, সবই অভ্যাস। অন্যায় হলেও স্বীকার করতে হচ্ছে যে কাল সকালেই খবরে দেখছিলাম ৯ জন নিহত, মনে তেমন বড় আলোড়ন হয়নি। রাতে খবর পেলাম ইতোমধ্যেই ১১৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কারন এখনো অনির্নেয়। আমার আলোচনায় আপাতত কারন বড় নয়।
কারনটা হয়ত এখনো অনির্নেয়, হতে পারে বিশুদ্ধ দূর্ঘটনা যা হয়ত প্রতিহত করা কোনভাবেই সম্ভব ছিল না, তেমন হতেও পারে। কিন্তু প্রানহানী ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা দেখে বেশ কিছু প্রাসংগিক প্রশ্ন ভাবনা আসে। প্রথমেই বোঝা যায় যে আধুনিক ইন্ডাষ্ট্রিয়াল সেফটি ব্যাবস্থার ন্যূনতম কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করা হলে, কিছুটা প্রস্তুতি আগে থেকে থাকলে কারন যাইই হোক এত বিপুল পরিমান প্রানহানী নিশ্চয়ই হত না। আগাম এই ভাবনা আসার কারন এমন দূর্ঘটনা এখন আর বিরল কোন ব্যাপার নয়, হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়মেরই মত। বেশ কিছু প্রানহানী ঘটবে, মিডিয়ায় বড় কাভারেজ আসবে, লোকে চোখের পানিও ফেলবে, সদাশয় গার্মেন্টস মালিক সরকার কিছু টাকা পয়সা সাহায্য দেবেন, তদন্ত কমিটিও হবে, দায়ী কেউ সে যেইই হোক কোনমতেই ছাড়া পাবে না এমন অংগীকারও শোনা যাবে। যে দেশে মানুষের জীবনের দাম ছাগলের মূল্যে যাচাই করা হয় সে দেশে লাখ টাকা ক্ষতিপূরন বা সাহায্য তো বেশ ব্যাপার বলতে হয়। সবই নিয়ম, তেমনি ভাবে নিয়ম পালিত হবে উত্তেজনা থিতিয়ে এলে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট, সে রিপোর্টে উল্লেখিত ব্যাবস্থা, বিশেষত দায়ী ব্যাক্তিদের শাস্তির দাবী এসবই চলে যাবে হিমঘরে, ততদিনে হয়ত এ জাতীয় আরেক ট্র্যাজেডী ঘটে গেছে, চক্র আবারো শুরু হয়ে যাবে। এভাবে অনিয়ম কেন নিয়মে পরিনত হবে?
গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে আমরা অনেক গর্ব করি, দেশের অর্থনীতিকে এই বিশ্বমন্দার দিনেও মূলত এই শিল্প বাঁচিয়ে রেখেছে, মোট রফতানী আয়ের ৮০% এখন আসে এই খাত থেকে। এই শিল্প প্রতিষ্ঠায় যেসব শিল্পপতি ভূমিকা রেখেছেন তারা অবশ্যই কৃতিত্বের দাবীদার, তাদের অবদান অস্বীকার করা যায় না। তেমনি এই শিল্প সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ যারা কায়িক পরিশ্রমে বাঁচিয়ে রাখছেন তাদের ন্যূনতম মানবিক অধিকার, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবীও খুবই যুক্তি সংগত। এ ব্যাপারে আমরা সাধারন জনতাই বা কতটা সচেতন বা সহানুভূতিশীল? সরকারের ওপর বেশী ভরসা না করাই মংগল। কিছুদিন আগে গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতন ভাতার দাবীতে বেশ কিছুদিন বিক্ষোভ, ধর্মঘট করলেন। তখন অনেক সচেতন ব্লগারের লেখায় পড়লাম যে সেটা আসলে চীন নাকি কার ষড়যন্ত্র, দেশের গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার এক নীল নকশার অংশ, শ্রমিকরা না বুঝে ফাঁদে পা দিচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র প্রিয় জাতি মনে হয় আমরা। যাক সে কথা, আমি বিস্তারিত তেমন জানি না, থাকি প্রবাসে, আপাত চোখে সব সময়ই মনে হয় যে দেশে যারা কায়িক পরিশ্রম করেন তাদের সকলকেই পুরো সমাজ সচেতন ভাবেই ঠকায়। এমন অবস্থায় এ ধরনের বিক্ষোভ, ধর্মঘট অত্যন্ত স্বাভাবিক, বাইরের ষড়যন্ত্রকারীরা সে সুযোগ নিতেই পারে।
এমষ্টার্ডাম ভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংস্থা জানাচ্ছে যে কেবলমাত্র ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশের গার্মেন্টসগুলিতে শুধুমাত্র আগুনে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৫০০। অর্থাত বছরে গড়ে প্রায় ১০০ জন গার্মেন্ট শ্রমিক আগুনে পুড়েই মারা যাচ্ছে, অন্য দূর্ঘটনা বাদই থাকল। ২০১০ সালে আশুলিয়াতেই হামিম গার্মেন্টস অগ্নিকান্ডে নিহত হয় ২৬ জন। ২০০৬ সালে চট্টগ্রামে এক গার্মেন্টসে আগুনে পুড়ে মারা গেছিল ৫৪ জন, তার ২৪ ঘন্টা না কাটতেই ঢাকার তেজগাঁয়ে অবৈধভাবে সংস্কার চালানোর সময় ফিনিক্স ভবন ধ্বসে মারা গেছিল ১৮ জন গরীব শ্রমিক। এর আগে বছর, এই দুই ঘটনার মাটর ৯ মাস আগে সাভারে স্পেক্ট্রাম ভবন ধ্বসে মারা যায় ৮৬ জন মানুষ, তখন বলা হয়েছিল কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে যেন ভবিষ্যতে এমন আর না ঘটে। তার মাত্র ৯ মাসের মধ্যেই মাটর ২৪ ঘন্টার ব্যাবধানে দেশের দুই প্রধান শহরে ঘটল দুই মারাত্মক দূর্ঘটনা যা এড়ানো খুবই সম্ভব ছিল। সাভারের ঘটনার কারন ছিল মনে পড়ে অবৈধভাবে অনুমোদিত নক্সার ওপরেও দুই তলা অতিরিক্ত বাড়ানো। এর মালিককে কদিন মনে আছে কোর্ট কাচারিতে দৌড়োদৌড়ি করতে হয়েছিল, কিন্তু চুড়ান্ত বিচারে তার ঠিক কি সাজা হয়েছিল কারো কি জানা আছে? আমি নিশ্চিত নই। মনে আছে ওনার স্ত্রী ছিলেন তখন সুপ্রীম কোর্টের একজন বিচারপতি।
জাফর ইকবাল স্যার একবার দেশের সড়ক দূর্ঘটনা বিষয়ে সোজা সরল মন্তব্য করেছিলেন যে এসব আসলে দূর্ঘটনা নয়, হত্যাকান্ড। কারন নিশ্চয়ই আমরা সকলেই জানি। গার্মেন্টেসের এসব দূর্ঘটনাকেও আসলে হত্যাকান্ড বলাটা খুব একটা বাড়াবাড়ি হবে না। হতে পারে এই হত্যাকান্ড পরিকল্পিত নয়। গার্মেন্টসগুলিতে কি চরম অমানবিক বিপদজনক পরিস্থিতিতে কাজ করানো হয় নিজের চোখেই দেখেছি। ঢাকায় আমার বাসা থেকে ৩টি গার্মেন্টস ওয়ালা এক ভবন দেখা যেত, তার পাশ দিয়েই বের হতে হত বড় রাস্তায়। সকালে দেখতাম সবাই ঢুকে যাবার পর দশাসই দারোয়ান গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। এই অবস্থায় আগুন লাগলে কি অবস্থা হতে পারে সেটা অনুমান করতে কোন তদন্ত লাগে? বিশেষ করে দারোয়ান যদি তালা না খুলে চাচা আপন জান বাঁচা নীতি পালন করে? দূর্ঘটনা ঘটলে আমরা পত্রিকায় দেখি, আরো কত দূর্ঘটনা শুধু এই তালা লাগানো থেকে হয়েছে, তবে সৌভাগ্যক্রমে প্রানহানী হয়নি দেখে পত্রিকায় আসেনি তার হিসেব কারো পক্ষে রাখা সম্ভব?
চট্টগ্রামের সেই দূর্ঘটনার পর মালিক দায় চাপিয়েছিলেন দারোয়ানের ওপর। নিরাপত্তার স্বার্থে গেটে কলাপসিবল তালা ছিল, দারোয়ান সময়মত খুলে দেয়নি। কি দারুন ব্যাবস্থা না? লাভের গুড় সবচেয়ে বেশী খাবেন ওনারা, কম আয়ের লোকে মারা যাবে গন্ডায় গন্ডায়, আবার দূর্ঘটনা ঘটলে তার দায় সেই নিম্ন আয়ের লোকের ওপরেই চাপানোর কি দারুন ব্যাবস্থা। ন্যূনতম নৈতিকতাবোধও মনে হয় কাজ করে না, কিছু টাকা দিয়েই ব্যাস দায় খালাস। অথচ সিংগাপুর, দক্ষিন কোরিয়ার দুটি বড় ধরনের বিল্ডিং ধ্বসের কাহিনী দেখেছিলাম টিভিতে, প্রথমেই সাজা দেওয়া হয়েছিল মালিক পক্ষকে। যে দেশের রাষ্ট্রের পতির মত সম্মানিত পদের মানুষ নিজের ক্ষমতার অপব্যাবহার করে দলীয় পরিচয়ে দাগী সন্ত্রাসীদের কলমের খোঁচায় মুক্ত করে দিতে পারে সে দেশে আইনের শাসন কোনদিন সম্ভব? এসবের প্রতিক্রিয়া সুদুরপ্রসারী হতে বাধ্য। ফিনিক্স ভবন, স্পেক্ট্রাম ভবনের দূর্ঘটনার পর ভয়াবহ তথ্য জেনেছিলাম যে দেশে ’৯৩ সালে প্রনীত হওয়া ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড আইনাকারে এক যুগেও নিবন্ধিত করা যায়নি। কি অদ্ভূত দেশ। দেশে আসলেঈ কোন নাস্তিক থাকার কথা না, এমন অবস্থায় যে আরো ভয়াবহ সব দূর্ঘটনা ঘটে না তা আল্লাহ জাতীয় কোন সত্ত্বার অস্তিত্ব ছাড়া ব্যাখ্যা সম্ভব নয়।
কাল একই সাথে চট্টগ্রামেও এক নির্মানাধীন ফ্লাই ওভারের গার্ডার ভেঙ্গে মারা গেল ১৩ জন নিরীহ মানুষ। এর তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী কাউকে না কাউকে তো সাজা পেতে হবে। সেটা কে হবে? আদৌ সে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আলোর মুখ দেখবে? গরীব লোকে ভিক্টিম বলেই এমন অবহেলা আর উঁচুতলার লোকদের বাঁচানো?
অথচ কয়েক বছর আগে একজন আত্মীয়ের কাছে শুনেছিলাম যে তাদের বাসার রাস্তায় রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কারন হল সে সময়কার সরকারের একন মন্ত্রী কন্যা সে পাড়ায় দয়া করে অবস্থান করেন, তার বাসায় আসা গেষ্টদের গাড়ি রিক্সার জন্য পার্ক করতে অসুবিধে হয়। আইনের কি বিচিত্র রকমারি ব্যাবহার। আইন সে তো তামাশা মাত্র কথাটা বার বারই মনে পড়ে যায়।
তদন্ত কমিটি, তার রিপোর্ট যথারীতি আলোর মুখ দেখে না। একবার পড়েছিলাম যে দেশের ৮৪% সংসদ সদস্যের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি আছে। রিপোর্ট আলোর মুখ দেখলেও ব্যাবস্থা নেওয়া হয় না। কার অত দায় পড়েছে সেসব নিয়ে মাথা ঘামাবার? যারা মারা যাচ্ছে তারা তো সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা মারা গেলে উহু আহা করা যায় কিংবা বড়জোর কিছু থোক টাকা ধরিয়ে দেওয়া যায়, তবে ভবিষ্যতে এসব ঠেকানোর মত ব্যাবস্থা নেওয়ার হ্যাপা করতে যাবে কে? ভাত ছড়ালে কি কাকের অভাব নাকি? ১০০ মরলে আরো ১০ হাজার এই দেশে পরের সপ্তাহেই পাওয়া যাবে।
আলোচিত এই দূর্ঘটনার পরও মালিক পক্ষ তাদের কোন দায় অস্বীকার করেছেন, তা নিয়ে মন্তব্য করার মত শক্ত তথ্য এখনো পাইনি। তবে কিছু মৌলিক সমস্যা এখানেও ছিল অনুমান খুব অযৌক্তিক নয়। সেই পুরনো নিয়মেই আগুন লাগার পর মহিলা শ্রমিকদের নীচে নামতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আরো অদ্ভূত ব্যাপার হল এ গার্মেন্টস এ পুরুষ মহিলাদের জন্য আলাদা সিঁড়ি, জানি না কোন উর্বর মস্তিষ্ক থেকে এসব বেরোয়। যথাযথ ইভ্যাকুয়েশন ব্যাবস্থা থাকলে এত লোকে মরতে পারে না, এক বড় সংখ্যক মারা গেছে আগুনে তাতক্ষনিক ভাবে পুড়ে নয়, জীবন রক্ষার্থে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে। যথাযথ ইমার্জেন্সী ইভ্যাকুয়শন ব্যাবস্থা থাকলে এরা অন্তত অনেকেই বেঁচে যেত। এসব অতি মৌলিক নিরাপত্তা ব্যাবস্থা কেন আবশ্যিক আইনাকারে পালন করা হয় না? যে গার্মেন্টস শত কোটি টাকা বছরে আয় করে সে নিরাপত্তা বাড়াতে কেন ১ কোটি টাকাও অতিরিক্ত খরচ করবে না? এই গার্মেন্টসের মালিক ঘটনার ২২ ঘন্টা পরেও ঘটনাস্থলে যাননি, তিনি অসূস্থ অবস্থায় বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছেন বলে দাবী করেছেন, ক্ষয়ক্ষতি ৩০০ কোটি টাকা দাবী করেছেন।
অতীতের মত এবারও দেখা গেছে উদ্ধারকারী দলের দেরীতে আসা, এবং যথাযথ ট্রেনিং, যন্ত্রপাতির অভাব। এসবই বা বার বার কেন ঘটে? আমাদের দেশ ঘন বসতিপূর্ন, এখানে উদ্ধারকাজ আসলেই খুব একটা সহজ নয়। গার্মেন্টসগুলিকে কোন একটি নির্দিষ্ট জোনে এক সাথে সরিয়ে কেন শক্তিশালী অগ্নিনির্বাপন ও উদ্ধার ব্যাবস্থা রাখা হয় না? সব কলকারখানায় শ্রমিক কর্মচারী কর্মকর্তাদের কেন আবশ্যিকভাবে ফায়ার ড্রিল করানো হয় না যেমন এই ধরনের জরূরী অবস্থায় সুশৃখংলভাবে কি করতে হবে সেটা তারা আগে থেকেই জানতে পারে? এসব চিন্তা করতে আমার লেগেছে ৫ মিনিট, বড় বড় কর্মকর্তা, গার্মেন্টস মালিক, জনপ্রতিনিধিরা কেন বছরে পর বছরেও এই সোজা কিছু মৌলিক নিরাপত্তামূলক ব্যাবস্থা চিন্তা করতে পারেন না?
২০০৫ সালের সাভারের স্পেক্ট্রাম দূর্ঘটনার পর ইন্টারন্যাশনাল টেক্সটাইল গার্মেন্টস লেদার ওয়ার্কাস ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক নীল কার্নেগী মিডিয়ার মুখোমুখি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন “হোয়্যার ইজ গভর্নমেন্ট!” গরীব লোকের মানবাধিকার বাদ দেই, এ জাতীয় দূর্ঘটনা ঘটতে থাকলে চীন ভারতের ষড়যন্ত্র লাগবে না, বিদেশে এমনিতেই আমাদের কোটা কমিয়ে দেবে। আগেই বলেছি যে সরকারের ওপর তেমন ভরসার কিছু নেই। সচেতন হতে হবে সাধারন নাগরিকদেরই, প্রশ্ন করতে হবে “হোয়্যার ইজ আওয়ার কনশাসনেস”। দূর্ঘটনা, প্রানহানী সব দেশেই কিছু না কিছু ঘটে। তবে তদন্ত হয়, দোষী লোকে শাস্তি পায়, ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা নেওয়া হয়। দায় অস্বীকারের সংস্কৃতি আর কতদিন? যে দেশে দায় নিজ কাঁধে নেবার মত লোক বেশী নেই সে দেশ খুবই দূর্ভাগা। দায় স্বীকার সভ্যতার মাত্রা নির্নায়ক।
আজকের নিউইয়র্কটাইমস-এর প্রথম পাতায়বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিয়ে একটা তথ্যবহুল সচিত্র প্রতিবেদন বেরিয়েছে।
Horrific Fire Revealed a Gap in Safety for Global Brands
পড়ে আমার মনে হয়েছে ১১২ জন গার্মেন্টস শ্রমিকের মৃত্যুকে দূর্ঘটনা বলাটাই একটা ক্রাইম। একে হত্যাকান্ড ছাড়া আর কিছু বলার উপায় নাই।
ওয়ালমার্টের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এই প্রতিবেদনে।
Documents Indicate Walmart Blocked Safety Push in Bangladesh
ওয়ালমার্টের কাছে অনলাইন পিটিশন শুরু করেছে sumofus.org.
http://action.sumofus.org/a/walmart-bangladesh/
Tell Walmart it must join an independent fire safety inspection program supported by Bangladeshi and international labour unions, to prevent tragedies like this.
আমি স্বাক্ষর করেছি। মুক্তমনার পাঠক, আপনাদেরও করার আবেদন জানাচ্ছি।
@ইরতিশাদ,
এ ঘটনায় অতি মৌলিক অসংখ্য সেফটি ফিচার লংঘনের যত প্রমান পাওয়া গেছে তাতে এটাকে দূর্ঘটনা বলাই অন্যায়। মালিক সাহেব যে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা আমাদের দেশেই সম্ভব।
আর দশজনেও করছে, এভাবেই হয়ত লোকে বিবেকের কাছে তেমন অপরাধী মনে করে না। সকলেই জানে যে প্রায় সব কারখানাতেই আসলে একই পরিস্থিতি, অপেক্ষা কেবল ঘটনা ঘটার। সরকারও জানে যে এটাই আমাদের সংস্কৃতির অলিখিত আইন, তাই সরকারওঁ কঠোর হয় না। সমাজে তীব্র শ্রেনী বৈষম্য থাকবে, গরীবেরা ধনীদের সেবা করে যাবে, বিনিময়ে কিছু উচ্ছিষ্ট দেওয়া হবে।
আমাদের দেশে বহু বছর ধরে গৃহকর্মচারী মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সকলেও বাড়িতেই আছে, এখন হয়ত কিছুটা কমেছে গার্মেন্টেসেরই কারনে। এই গৃহকর্মচারীরা কি অবস্থায় কাজ করে, দিনে কত ঘন্টা কাজ করে, কত বেতন পায় এসবের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালার কথা আজ পর্যন্ত কেউ ভেবেছে? অস্বাভাবিক পরিবেশে বসবাস করলে সেটাকেই মনে হয় স্বাভাবিক।
আমিও একটা পিটিশনে স্বাক্ষর করেছিলাম।
[img]http://unmochon.net/sites/default/files/styles/large/public/nishchitapur.jpg[/img]
আগেই বলেছিলাম, তথ্য সাংবাদিকতার পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে নিশ্চিন্তপুর ট্রাজেডির পর পরই ছুটে গিয়েছিলাম ঘটনাস্থলে। আগ্রহীরা এ বিষয়ে রিপোর্টারের ডায়েরি থেকে লেখা একটি নোট পড়তে পারেন:
আর কতোকাল?
(Y)
খবরে শুনতে পেলাম. আজো চিটাগং একটা গারমেন্টে আগুন আতঙ্ক ছটিয়ে পড়েছিল।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
খুবই স্বাভাবিক, এবং অত্যন্ত আশংকাজনক। অবিশ্বাসের কালচার যখন গেঁড়ে বসে তখন এমনঈ হবে। বাঘ আইলো পরিস্থিতি কখনোই ভাল নয়। একদিকে শ্রমিকদের নিরাপত্তার ইস্যু গুরুত্ব হারাবে আরেকদিকে উৎপাদন ব্যাহত হবে।
এটা শুধু হত্যাকান্ড না, গণহত্যা। মন্ত্রীরা বলছে তদন্ত হবে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হল, কীভাবে সেটা ছড়াল, শ্রমিকরা মরল কেন তার খুঁটিনাটি দিক নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার নিশ্চয়ই। দুর্ঘটনা হতেই পারে, তাতে এক-দু’জন মারাও যেতে পারে। কিন্তু ১২০-এর বেশি লোক যেখানে একটি ভবনের অগ্নিকান্ডে মারা যায়, সেখানে মৃত্যুর দায় কার সেটা তদন্ত ছাড়াই বলা যায়। যথাযথ ব্যবস্থা থাকলে এই ঘটনায় এত মৃত্যু হতে পারে না। কারখানার মালিক ও ব্যবস্থাপকদের গ্রেফতার করে তদন্ত চলুক। এ ব্যাপারে মিডিয়ায় ও জনসাধারণের মধ্য থেকে চাপ থাকা দরকার। তাহলে অবিবেচক, ধনকুবের মালিকের হয়ত কিছু শাস্তি হতে পারে। হলমার্কের মালিকের গ্রেফতার একটি উদাহরণ।
@কাঠ মোল্লা,
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/2012-11-28-14-34-00-ashulia-arrest-TM.jpg[/img]
খুনের ঘটনায় জড়িত তিন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল উদ্দিন, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম লাভলু ও সিকিউরিটি ইনচার্জ আল আমীন। আমার কথা হলো আসল খুনী এখনো বাইরে কেন? মন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন আসল খুনী কে? ‘ফায়ার এক্সিট সিড়ি না থাকলে কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে’। এটাই খুনের সাক্ষী। ১নং আসামী মালিক, ২নং সরকারের বানিজ্য মন্ত্রণালয়। শ্রমিকের জানের উপর দাঁড়িয়ে মুনাফা হিসেবকারী ১ম আসামী মালিককে গ্রেফতার করা হউক। ‘ফায়ার এক্সিট সিড়ি বিহীন কারখানা’ খোলার পারমিশন যে দিয়েছে (২য় আসামী) তাকে গ্রেফতার করা হউক।
সরকার এবং মালিকপক্ষ যতই ষঢ়যন্ত্র, নাশকতা তত্ত্ব আবিষ্কার করে ছল-চাতুরি নাটক করুক না কেন, আমাদের প্রথম দাবী থাকতে হবে- আমরা খুনীর শাস্তি চাই। যদি সাধারণ সচেতন বিবেকবান মানুষ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হোন, আমাদের দাবী আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরবোনা, হাতের কলম থামবেনা, নিশ্চয়ই আমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কৃতকার্য হতে পারবো।
@আকাশ মালিক/মোল্লা ভাই,
এখানে সরকারও আসলে নিজের গরজেই গা বাঁচাতে চুনোপুটির ওপর যাবতীয় দায় চাপাতে চাইবে।
যতটুকু জেনেছি আমাদের দেশের আইনী ব্যাবস্থাতেই নাকি ক্ষতিপূরন ১ লাখ টাকা সর্বোচ্চ, অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে এর ওপর নাকি আইনী পথে আদায় করার উপায় নেই। ক্রিমিলান নেগলিজেন্স এর কারনে মালিককে জেল হাজত খাটানোর মত শক্ত আইন নেই। কি বুঝলেন? সরকার কি চাইবে এসব প্রশ্নের জবাব দিতে? কেন এসব আদিম যুগের আইন বদলানো হয়নি উপুর্যপুরি দূর্ঘটনা নামক হত্যাকান্ডের পরেও?
আমরাও কম দায়ী নই, আমরাও কোনদিন সুশীল সমাজ দূর্ঘটনার পর আহা উহু করলেও সরব হইনি। আসলে শ্রেনী বৈষম্যের কারনে দূর্ত্ব থাকায় গরীব লোকদের জন্য আত্মিক টান বোধ করি না বলেই বেশী গরজ করার প্রয়োজন মনে করিনি কোনদিন। দয়া দেখানো আর অধিকার আদায় এক নয়। আমরা দয়া হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত, অধিকার হিসেবে নয়। দূর্ঘটনায় কত শত লোকে মারা যায়, আমরা তেমন চেঁচামেচি করি না, তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীররের মত ব্যাক্তিত্ব নিহত হলেই আমরা নড়ে চড়ে উঠি।
এই গার্মেন্টস মালিকের চমতকার ব্যাক আপ প্ল্যানও আছে। উনি কানাডারও নাগরিক। কাল প্রথম আলোয় পড়লাম উনি বর্তমানে বিজিএমই এর পরামর্শেই নীরবে গা ঢাকা দিয়ে আছেন, বেগতিক দেখলেই উড়াল দেবেন।
বিজিএমই এর লোকেরা বহু কথা বলছে। একটাবার কি তারা ওয়াদা করছে যে আর কোন কারখানায় শ্রমিকদের তালা মেরে রাখা হবে না? কেউ তালা মারলে তাকে তাদের সমিতি থেকে বাদ দেওয়া হবে? এইটুকু তাদের কাছে কেন প্রত্যাশা কিংবা আদায় করা যায় না?
@আদিল মাহমুদ,
অনেক অনেক গঠনমূলক আলোচনা হচ্ছে। খুব দরকারী কথাটা বলে ফেলেছেন –
নিজেদের ভেতরে অনুভূত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াগুলো সংগঠিত করে আমরাও একপা সামনে রাখতে পারি।
বার বার সেই বিদেশীদের কাছেই হাত পাততে হয়। দেশের সরকারও যা করতে পারে না তা হয়ত করতে পারে বিদেশীরা।
বাংলাদেশি সরবরাহকারীর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ ওয়ালমার্টের
আগেই বলেছিলাম এমন কিছু এবার অবশ্যই হবে, ঠিকই হয়েছে। এইবার যদি অর্থলোলুপ শিল্পপতি মহোদয়দের কিছুটা টনক নড়ে। নড়বে বলেই মনে হয়, যেই টাকা পয়সার লোভে এমন অবহেলা সেটার ওপরেই সরাসরি আঘাত পড়লে নড়তেই হবে। মাঝখান থেকে দেশ বঞ্চিত হবে এই মন্দার বাজারে বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রার।
বর্তমান ও অতীতের সরকারের চাঁই, গার্মেন্টস মালিকরা, দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা সকলের উচিত জাতীয় ঈদগাহে এক শুভ সকালে জামাতে নাকে খত দিয়ে তওবা তাবি করা।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল ভাই, উপরে ইরতিশাদ ভাই এর প্রস্তাবের পক্ষে এইরকম একটা ব্যপার আমাদের প্রশাসনের উপরে ধেয়ে আসুক বাইরে থেকে, এটিই প্রত্যাশা ছিলো। ওনার পিটিশনের বিষয়বস্তু কে ওভাবেই সাজানোর জন্যে আমি বলেছিলাম। দেখুন ওরকম কিছু একটা ব্যবস্থা নেওয়া যায় কিনা এই সব আকন্ঠ লোভে নিমজ্জিত রুই-কাৎলাদের বিরুদ্ধে!
@কেশব অধিকারী, আদিল মাহমুদ,
ওয়ালমার্টও ধোয়া তুলসী পাতা নয়, তাদের কর্মচারীরাই আমেরিকায় ধর্মঘটে নেমেছে কোম্পানীর নিবর্তনমূলক আচরণের বিরুদ্ধে। তাই আমি এদের, টমি হিলফিগার, টার্গেট, সবার পণ্য বর্জনের পক্ষে। ওয়ালমার্ট বাংলাদেশের এক সরবরাহকারীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেছে – অন্য সরবরাহকারীদের কারখানার অবস্থা কি শাজরীনের চেয়ে ভাল? কোন যুক্তিতে? এদের উচিত সার্বিকভাবে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন আর জীবনযাত্রার মান সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পণ্য না কেনা। কিন্তু তারা তা করবে না। ক্রেতাদের কাছ থেকে ঠেলা না খেলে। তাই বলছিলাম পিটিশনের কথা।
ওদিকে আমাদের বিজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই রায় দিয়ে বসেছেন। এই অগ্নিকান্ড না কি পূর্ব-পরিকল্পিত (যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার ষড়যন্ত্র হয়তো :-s )।
@ইরতিশাদ,
ওয়াল মার্ট সম্ভবত বড় ষ্টোরগুলির মধ্যে শ্রমিকদের ঠকানোর বেলায় এন নম্বর প্রতিষ্ঠান, সে আমি ভালই জানি। আরকানসাসের লিটল রকে যেখানে তাদের প্ল্যান্ট আছে সেখানে তারা অত্যন্ত ঘৃনিত। শস্তায় জিনিস তো আর এমনি এমনি দেয় না।
তবে কাঁটা দিয়ে কাঁটা উঠলে দোষ কি? এটা পরিষ্কার যে আমাদের সরকার এই ক্রিমিনালদের যথারীতিই বাঁচাবে। আমাদের লেখালেখিতে সরকার ও বিজিএমএই এর কিছুই আসবে যাবে না। হয়ত আমাদের কাগুজে আষ্ফালন দেখে এমনই হাঁসছে আর বলছে এই রকম ফালাফালি কত দেখলাম……আমাদের ইয়েও ছিড়তে পারবে না একটাও…ইচ্ছে করলে এই রকম সরকার দুটো কিনতে পারি……দুটো দিন যাক তারপর কোথায় যাবে এসব বড় বড় কথা আর মানবতার বানী…
ওয়াল মার্টের মত অন্যান্য আমেরিকান ইউরোপিয়ান বায়াররাও ক্যান্সেল করা শুরু করলে এদের টনক নড়তে বাধ্য। এরা মানবতার ধার ধারবে না পরিষ্কার, তবে নিজেদের ব্যাবসার পেটে লাথি খেলে নড়ে চড়ে উঠতে বাধ্য। তখন বায়ারদের দেখানোর স্বার্থে হলেও কিছুটা উন্নতি করবে। অন্যরাও কিছুটা ভয় পাবে ঠিকই। নেট এ দেখেছি যে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের অনেক অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, চরম নিরাপত্তার অভাব এসব নিয়ে বহু সংগঠন বাইরে অনেক ক্যাম্পেইন করছে। এদেরও ভাল করে লেলিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
@ইরতিশাদ,
ইরতিশাদ ভাই, আজকের প্রথম আলোর এই সংবাদটা দেখুন। আমি ওয়ালমার্ট বুঝতে চাইনা। আমি চাই, যারা (বিদেশী ক্রতা বা বিশ্বমানের ভালো কিংবা বদ কোম্পানী) আমাদের যোকোন প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পোষাক কিনতে আগ্রহী, তাহলে তার দেশের যে কুটনৈতিক মিশন রয়েছে আমাদের দেশে, তার মাধ্যমে কিনতে হবে। আমরা যেটা মনে হয় পারি, একটা আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে যাতে প্রত্যেকটা দেশ বাংলাদেশ থেকে পোষাক আমদিনীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশে তার যে কুটনৈতিক মিশন আছে সেই মিশনের মাধ্যমে বিজিএম ই এ এবং সরকার বাহাদুরকে পাশ কাটিয়ে নিজের দায়িত্ত্বে পণ্য আমদানী করবে, যদি সে মনে করে উক্ত বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান তাদের দৃষ্টিতে বিশ্বমানের। এইটুকু নিশ্চিন্ত হলেই আমাদের রুই-কাতলারা অনেকটাই সোজা হয়ে যাবে বলে আমার ধারনা। আমি যা বলেছি তা খুব ভেবে বলিনি, সীমিত জ্ঞানে অনেকটাই রাগে ক্ষোভে তাৎক্ষনিকভাবে মাথায় যা এসেছে তাই বলেছি। আমার উদ্দ্যেশ্য, সাপ মারা, লাঠি অক্ষত রাখা। আরোও ভালো করে ভেবে একটা ব্যবস্থা নিন ইরতিশাদ ভাই। সত্যি আর সরল থাকা একেবারেই অসম্ভব।
@ইরতিশাদ,
ইরতিশাদভাই, আরোও একটা ব্যপার মনে হয় করা যেতে পারে। আপনি একটা আমাদের পোষাক খাতের নানান অনিয়ম এবং দুর্ঘটনা সম্বলিত একটি সচিত্র প্রতিবেদন এবং সংর্শ্লিষ্ট দাবী প্রস্তাবাকারে উত্থাপন করতে পারেন। মুক্তমনা ফোরাম এটি ক্যম্পেন করে এর সমর্থন আদায় করবে। অতঃপর এটি দাবী আকারে আই এল ও, জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট দপ্তর, বিশ্বব্যাঙ্ক, এবং মুক্তমনারা বিশ্বের যে যে দেশে আছেন সেই সব দেশের সকল কূটনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক মিশনে একযোগে পাঠানোর ব্যবস্থা নিন। ভেবে দেখুন, এখনই সময়। আপনার পিটিশনের কথা মনে করেই এগুলো আমার মনে হয়েছে। সবাই ভালো থাকুন।
@আদিল মাহমুদ, খুব ভাল হয়েছে ব্যাপারটা।এইভাবে সবাই করতে পারলে আস্তে আস্তে বাংলাদেশ সরকারের টনক নড়তে বাধ্য।
আগুণ লাগা গামের্ন্ট-এ ৪ হাজার শ্রমিক কাজ করতো। আগুণ লাগার পর এলামর্ বেজে উঠলেো তাদেরকে কাজ থেকে উঠতে দেয়নি। কাজ করতে বাধ্য করেছিল। আগুণ লাগার পর বের হতে পেরেছিল প্রায় ৩০০ জনের মত। রাতে কনটেইরার দিয়ে লাশ বের করে কোথায় যেন নিয়ে যা োয়া হয়েছে। কিছু লাশ দেখানোর জন্য রাখ হয়েছে।-এটা একজন প্রত্যক্ষদশীর্র কথ।
@িশল্পভবন,
অনুগ্রহ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে জানাবেন কি? আমরা যারা প্রবাসে মূলতঃ প্রধান ধারার পত্র-পত্রিকার উপর নির্ভরশীল।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করার ভাষা আমার নেই।শুধু এটুকুই বলতে চাই যে সিস্টেমের পরিবর্তন না আনতে পারলে এইসব অমানবিক দুর্ঘটনা বার বার ঘটবেই। আর এজন্য মালিকদের কঠিন সাজা দেয়া দরকার।কিন্তু সমস্যা হল কাজটা করবে কারা যেখানে এই মৃত্যু নিয়েও এদেশে রাজনীতি হয়?সত্যই একটা অসুস্থ দেশের নাগরিক আমরা,যে দেশে মানুষের মৃত্যুতেও উদ্দেশ্য খোজা হয়।আসলে আমাদের দেশে প্রধান ক্রিমিনাল আমার মনে হয় সরকার নিজে ( যেকোন দলের সরকার), কাজেই সিস্টেমের আমুল পরিবর্তন দরকার।কিন্তু সিস্টেমের পরিবর্তন আনার মত সচেতন আমরা কি আদৌ হতে পারব?জানা নেই আমার।
আসুন না, আমরা এইবার ভোট দেয়া বন্ধ করে দেই।এটাই হোক প্রচলিত ধারার রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের অনাস্থার প্রকাশ।
আদিল ভাই, পুরা লেখাটাই পড়লাম।কিছু বলার ভাষা নেই আমার। শুধু এই কথাগূলি পড়ে আমার ভুপেন হাজারিকার একটা গান মনে আসছে বার বার আর তা হল,
‘‘আঁকাবাঁকা পথে মোরা কাঁধে নিয়ে ছুটে যাই রাজা-মহারাজাদের দোলা
আমাদের জীবনের, ঘামে ভেজা শরীরের বিনিময়ে পথ চলে দোলা’’
যারা আমাদের অর্থনিতি চাঙ্গা রেখেছে নিজদের রক্তের বিনিময়, তাদের সামান্য বেতন বৃদ্ধির দাবিটাই হয়ে যায় এ শ্রেনীর মানুষের কাছে, চৈনিক ষড়যন্ত্র সেখানে মানুষের মৃত্যুর পিছনেও উদ্দেশ্য খোঁজা হবে, তাতে আর অবাক হবার কি আছে!!
@অর্ফিউস,
হয়তো হবে না, তবুও চমৎকার। খুব ভাল লাগলো। ঘৃণা প্রকাশ করার জন্য আমরা আর কি-ই-বা করতে পারি? ঘৃণা, সেও কম নয়।
@অর্ফিউস,
ষড়যন্ত্র হতে পারে না এমন নয়। এমনকি মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর দাবী অনুযায়ী শিবিরও এবারের আগুন লাগিয়ে থাকতেই পারে। সেটা কি মূল বিষয় হতে পারে?
আপনার ছেলে যদি আসলেই বখাটে হয় জানেন তবেএকজন লোকে বখাটে ছেলের নামে কোনদিন মিথ্যা অভিযোগ দিলেই সে সত চরিত্রবান হয়ে যাবে?
বেতন ভাতা কম দিয়ে সারা জীবন ঠকাতে থাকলে আগে সেটার সুরাহা আগে করতে হবে। ষড়যন্ত্র পরের কথা, একটা বিশাল শ্রমগোষ্ঠীকে সারা জীবন চুষে খাবার স্বপ্ন দেখলে ষড়যন্ত্রকারীদের পথই খুলে রাখা হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা অসন্তোষের সুযোগ নিতেই পারে। ভারত, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, ল্যাটিন আমেরিকা বহু দেশেরই তো রফতানীমূখী গার্মেন্টসসহ বহু শিল্প আছে। তারা কি এমন কথায় কথায় ষড়যন্ত্র দেখে? সে সব দেশেও শ্রমিক অসন্তোষ, কিছু ধর্মঘট হয় না এমন নয়।
শিবিরে আগুন লাগাক আর দূর্ঘটনা/অসতর্কতার কারনে আগুন লাগুক সেটা বড় কথা নয়। শিবিরে আগুন লাগালেই সম্পূর্ন তুচ্ছ নিদারুন অবহেলা দায়িত্বহীনতার কারনেই যে এত লোকে মরেছে তা মিথ্যা হতে পারে না। শিবির লাগালে তাদের বিচার অবশ্যই হতে হবে, তবে এই ছূতার আড়ালে দায়িত্বে অবহেলা, অমানবিক আচরনের জন্য দায়ী কারখানা কর্তৃপক্ষ পার পেতে বা সহানুভুতি পেতে পারে না।
@আদিল মাহমুদ,
(Y) ঠিক বলেছেন , তবে যারা আগুন লাগিয়েছে তাদের বিচার হবে তো? খুনিদের বিচার কি সরকার করতে পারবে?যেখানে সরকার নিজেই খুনের রাজনীতি তে বিশ্বাস করে?
আচ্ছা বলুন তো ভাই এই খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করা বাংলাদেশ সরকারের ( যেকোন দলের হোক না কেন) বিচার কে করবে? কে বিচার করবে এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির যারা বৌদ্ধ দের কে হত্যার পরেও এ নিয়ে নানা বিদেশী চক্রান্ত খোঁজে? আমি আজ বাংলাদেশ সরকারের নিচার চাইছি, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির বিচার চাইছি, যে রাষ্ট্র শুধুই একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রেই পরিনত হয়েছে?
বি.দ্র.
@ সবাই,
দয়া করে কেউ বলে বসবেন না যে এটা রাষ্ট্রের না সরকারের দোষ। এটা যদি কেউ বলেন তবে আমি বিনীত ভাবে প্রশ্ন করব যে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা কি বদলে গেছে তবে?রাষ্ট্র গঠনের মুল উপাদানগুলো কি বদলে গেছে?
একবার আমার অফিসের প্রেসে আগুণ লেগে যায়। আমি আর আমার এক সহকমীর্ দুজনে এই বিশাল আগুণ নিবাতে মরিয়া হয়ে গেলাম। তখন আবিস্কার করলাম বের হোয়ার রাস্তা একটাই । বিকল্প রাস্তা নেই। প্রেস ইতিমধ্যে একটা পুড়ে গেছে। মূল প্রেসটা বাচানোর চেষ্টা চলছে। সেখানে আগুণ নেবানোর যা আছে তা একজন মানুষের গায়ের আগুণ নেভানোর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু প্রেসের আগুণ নেভানোর জন্য খুবই সামান্য। পরে সাতটি ফায়ার সাভির্সের গাড়ি এসে সে আগুণ নিভায়। অবাক হয়ে গেলাম প্রেসের আগুন নেবানোর জন্য কোন ব্যবস্থায় ছিল না সেখানে। অথচ সবচেয়ে ব্যয়বহুল পত্রিকা অফিস ছিল সেটা।
গার্মেন্টেসের এসব দূর্ঘটনাকেও আসলে হত্যাকান্ড বলাটা খুব একটা বাড়াবাড়ি হবে না। হতে পারে এই হত্যাকান্ড পরিকল্পিত নয়। এটা হত্যাকান্ডই। এবং পরিকল্পিত। আমাদের দেশে গামের্ন্টসের প্রশাসনিক অবস্থা খুবই বাজে। দুঘর্টনার পর পত্রিকাতে লেখালেখি হলে ো কোন গা করে না গামেন্ট মালিকরা। ডাবল স্ট্যান্ডর্ড সরকারের কারণে। ভবনের গেটে কেন তালা মারে তা আজো আমার বোধগম্য হলো না। কিংবা আগুণ লাগলে বিকল্প পথ কেন রাখে না তাো বোধগম্য নয়। নিশ্চয়ই শ্রমিকদেরকে মানুষ মনে করে না। শুধুই দাস!
আলোচিত এই দূর্ঘটনার পরও মালিক পক্ষ তাদের কোন দায় অস্বীকার করেছেন, তা নিয়ে মন্তব্য করার মত শক্ত তথ্য এখনো পাইনি।দায় তো এক নারী নিয়েছেন। তদন্দ করে বরং দেখ যাবে কত টাকার বিনিময়ে োই নারী এই দায় নিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এখানে গামের্ন্ট মালিকরা ঈশ্বরের সমান। োরা মরে গিয়ে রেহাই পায়। আর আমরা এসব অনাচার দেখে ,মেনে,সহ্য করে বড় বড় পাপী হয়ে যাই। জন্মই আমাদের আজন্ম পাপ। োদের নয়। আমাদের দেশে তো কোন দুঘর্টনার বিচার এপযর্ন্ত হয়নি। তা কালবাটর্ হোক বা গামের্ন্ট হোক। মনে রাখতে হবে এটা শুধুই আমাদের দেশ। প্রাণের বিনিময় মাত্র ১ লাখ টাকা।
http://www.facebook.com/chatrodhara(ছাত্রধারা) এর একটি status পড়লাম এরকমঃ-
কারনঃ-এরা অর্থ-ক্ষমতা লোভী পাষণ্ড দানব! এদের ঘাড়ে মাথা নেই তাই ব্যথাও নেই;
@শামিম মিঠু,
সংসদে প্রধানমন্ত্রী তেমনই বলেছেন। ভাল কথা। সেটা হতেও পারে। কারন যাইই হোক তার সাথে এত লোকের প্রানহানীর সম্পর্ক নেই। ষড়যন্ত্র করে আগুন দিলে সেটার তদন্ত হবে, বার করা হোক কারা দিয়েছিল।
কিন্তু তাতে করে ঘটনার গুরুত্ব মোটেই হালকা হয়ে যায় না। আমরা আগুন কেন লাগল বা কারা লাগালো, কিই বা তাদের উদ্দেশ্য ছিল এসব নিয়ে চিন্তিত নই। চিন্তিত হল এত লোকের অর্থহীন প্রানহানী কার অবহেলায় ঘটল সেটা নিয়ে।
তালা মেরে লোক হত্যাকে শিবির বা চীনা এজেন্ট আগুন লাগিয়েছিল বলে কোন মতেই জায়েজ করা যাবে না।
আমাদের দেশেই কেন বার বার এমন হয় সবারই জিজ্ঞাসা। আমি কারন নিজের মত কিছুটা জানি। আর কিছুটা বুঝতে সাহায্য করবে হয়ত দক্ষিন কোরিয়ার বিখ্যাত এক ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর দূর্ঘটনায় ৫০২জন লোকের প্রানহানীর ঘটনার তদন্ত; বিচার প্রক্রিয়া, এবং ঘটনার শিক্ষা।
Sampoong Department Store collapse
এই দূর্ঘটনা আমাদের গার্মেন্টসগুলির মত অর্থলালচ কিংবা ইচ্ছেকৃত অবহেলা জনিত ছিল না। মূল কারন ছিল অসাবধতনা, ইঞ্জিনিয়ের সাথে পরামর্শ ছাড়াই ছাদের ওপর অতিরিক্ত ভারের এসি ইউনিট বসানো এবং ফায়ার প্রুফিং নিরাপত্তা বাড়াতে লোড বেয়ারিং কলামের প্রস্থ কিছুটা কমিয়ে ফেলা। এখানে বিল্ডিং এর অরিজিন্যাল ষ্ট্রাকচারাল ডিজাইনের ত্রুটিও পরে দেখা গেছে। সোজা কথায় পুরো দায় সহজেই ইঞ্জিনিয়র, অতিরিক্ত ভারের এসি যারা ফিট করেছিল (আমাদের গার্মেন্টসের দারোয়ানের ওপর যেমন দায় চাপানো হয়) সেসব লোকের ওপর দায় অনায়াসেই চাপিয়ে মালিক পক্ষে নিশ্চিন্তে থাকার কথা।
শাস্তি দেওয়া হয়েছিল কোম্পানীর মালিক লী জুনকেই, ৭ বছরের কারাদন্ড। সে ধানাই পানাই করার কিংবা বলির পাঁঠার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টাও করেনি। দূর্নীতিবাজ নগর কর্মকর্তা যারা বেআইনী পরিবর্তন এলাউ করেছিল তাদেরও জেল হয়েছিল। মোট ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতিপূরন আদায়ে মালিক পক্ষের যাবতীয় সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছিল।
দক্ষিন কোরিয়ায় অননুমোদিত অতিরিক্ত ভারের এসি ইউনিট বদলানোয় লোকের সাজা হয়েছিল, আর আমাদের সাভারের স্পেক্ট্রামের মালিক (২০০৫ সালে ৮৯ জন মারা যায় বিল্ডিং ধ্বসে) অনুমোদিত চার তলার ওপর অতিরিক্ত আরো পাঁচ তলা বসিয়ে গনহত্যা ঘটিয়েও পার পেয়ে যায়। সরকারী রিপোর্ট তদন্ত কিভাবে এদের সাহায্য করতে পারেন দেখুন।
এক বছর পর্যন্ত এই মামলার খবরে দেখা যায় যে সে সাকুল্যে এক মাস জেল খেটে দিব্ব্যী জামিনে বেরিয়ে আসে। এরপর অবশ্য জানা যায় না।
Just sixteen hours before the building crumbled, workers had reportedly complained that there were cracks in the structure’s supporting columns. Despite the lack of an adequate foundation and the apparent lack of building permits, five additional stories had been added to the original four-story structure to accommodate large clothing orders that the factory owners did not want to refuse.
To sum up, investigations into the Spectrum collapse are yet to be published, there have been no investigation into failures of the government and of companies sourcing at Spectrum, and legal punishment for those responsible still seems to be far off.
যে লোকে চার তলা প্ল্যান জালিয়াতি করে অতিরিক্ত আরো ৫ তলা বানায় সে কিভাবে আদৌ জামিন পেতে পারে, সেই তদন্তই বা কেন এক বছরেও শেষ করা যায় না বুঝতে খুব কষ্ট হয়? এই তদন্তে এমন কিছু জটিলতা থাকার কথা?
জনতা সচেতন না হলে এবারও তাই ঘটবে।
@আদিল মাহমুদ,
সত্যি আমাদের দেশটা কবে যে এদের ধারে কাছেও যেতে পারবে জানি না।
মুক্তমনা পরিবারের এই আলোচনা যেন বৃথা না যায় এই কামনা। এই লেখা প্রসঙ্গে কমেন্ট করতে গিয়ে একটু ভাবুন শিরোনামে পোস্টে কিছু ব্যক্তিগত মত দিলাম।
আদিল ভাইকে অভিনন্দন, আগুন লাগলো বলে!!!
(Y)
@কাজি মোঃ আশিকুর রহমান,
সে আগুন ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে।
পরিবর্তনের আগুন দিয়ে অর্থপিশাচদের লোভের আগুন নেভাতে হবে।
সকলে একটু সচেতন, লেগে থাকতে পারলে হতে বাধ্য।
তেমন কিছু না, শুধু আদালতে লেগে থাকলে হবে যেন পিশাচেরা কোন ভাবেই আইনের ফাঁক ফোকর থানা পুলিশ এমপি মন্ত্রী ম্যানেজ করে পার না পায়। কাজটা কঠিন হলেও খুবই সম্ভব।
@আদিল মাহমুদ,
এই আলোচনাকে একটি সামাজিক আন্দোলনের পথে পরিচালিত করতে না পারলে অতীতের পাতায় হারিয়ে যাবে। আদালতে লাগে থাকার ক্ষেত্রে সবার সুসংবদ্ধ প্রয়াসকে চাপে পরিনত করতে হবে। কাজটা কঠিন হলেও খুবই সম্ভব, আসলেই।
আগুন শব্দটি শোনার সাথে সাথে রণদীপম বসুর “আগুন, কিভাবে নিজে বাঁচবেন এবং অন্যকে বাঁচাবেন “ লেখাটির কথা মনে পড়ে বার বার।
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে। যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই শুধু আগুনের আলোচনা। কত ধরনের মন্তব্য যে শুনতে পাচ্ছি রাস্তা-ঘাটে, চায়ের দোকানে। কেউ বলছে- ষড়যন্ত্র, কেউ বলছে আল্লাহর গজব (মালিকের প্রতি নাকি শ্রমিকদের প্রতি?)। পর পর তিনটি গার্মেন্টসে আগুন!! মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে একটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এ আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে—।
@মাহফুজ,
রনদা খাটনি করে যে লেখাটা দিয়েছিলেন তার লাভটাই বা কি? বাস্তবায়নের তো নাম গন্ধও নাই!!!
তারপরেও চলবে নিঃস্বার্থ এইসব কাজ। তারপরেও, হ্যা, তারপরেও বাতাসে ভাসবে লাশের গন্ধ।
কি লজ্জা, কি লজ্জা
আজকের বাংলাদেশের যেটুকু অর্জন, তার প্রায় সিংহভাগই গার্মেন্টস আর প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত আর ঘামে গড়া। এইতো সেদিন বিশ্বখ্যাত ‘ইকোনোমিস্ট’ বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের বরাত দিয়ে শিরোনাম লিখল: ‘বাংলাদেশ আউট অব বাস্কেট।’ ইকোনোমিস্টের এই রিপোর্টে আমাদের সরকার বাহাদুর আর ধামাধরা গোষ্ঠী নর্তন-কুর্দন শুরু করে দিলেও মনোযোগী পাঠক মাত্রেই লক্ষ্য করবেন, পশ্চিমের এই প্রভাবশালী পত্রিকাটি বাংলাদেশের সামাজিক খাতের উন্নয়নকেই হাইলাইট করেছে, যার মধ্যে একটি লাইন আছে এমন:
যে মানুষগুলো বাংলাদেশকে বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরল, তারাই কিনা চরম অবহেলার স্বীকার? দুদিন পর পর মৃত্যুর মিছিল, স্বজনের আহাজারি….
এই লেখাটার খুব দরকার ছিল, আদিল ভাই!
জাহিদুল বলতে থাকেন, ‘‘প্রতিটি তলায় কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে দেন প্রোডাকশন ম্যানেজার রাজ্জাক ও কোয়ালিটি কন্ট্রোল ম্যানেজার দুলাল। তা না হলে ছাদে উঠে অন্তত অনেকে প্রাণ বাঁচাতে পারতেন।’’ সঙ্গে প্রশ্ন ছোড়েন, ‘’আমার সাড়ে চার বছরের ছেলেকে নিয়ে এখন কী করব? আমার স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দুই বোন লাইলী ও পপিকেও খুঁজে পাচ্ছি
– এর কি জবাব হতে পারে? আধুনিক অগ্নি নির্বাপনের ব্যাবস্থা নেই, সরকারী পরিদর্শক ঘূষ খেয়ে সার্টিফিকেট দিতে পারে এসব কিছুই হতে পারে, ব্যাতিক্রম হিসেবে ধরা যেতে পারে।
কিন্তু তালা মেরে অসহায় মানুষকে আটকে হত্যা করার ব্যাপারে কি অজুহাত আসতে পারে? এটা হওয়া উচিত ইমিডিয়েট কনসার্ন। এটা প্রমানিত সত্য যে এই কালচার প্রায় সব গার্মেন্টসেই পালন করা হয়, যেটা সম্পূর্ন অমানবিক ও আইন বিরোধী।
কারখানার নিরাপত্তার ন্যূনতম প্রশিক্ষনও এসব কর্মকর্তার নেই এতে পরিষ্কার প্রমান পাওয়া যায়। এর বিরুদ্ধে তাতক্ষনিক ব্যাবস্থা না নিলে কমিটি ফমিটি, মিটিং চিটিং এর ফাঁকেই ঘটতে পারে আরো ভয়াবহ প্রানহানী।
দূর্ঘটনা নিয়ে বহু কথা হবে, অনেক সংস্থা নানান দাবী দাওয়া, নিরাপত্তা জোরদার এসবের পরিকল্পনা দেবে, এবার হয়ত গনদাবীতে কিছু আইনও হবে। এসব অনেক পরের কথা।
সরকারের উচিত এই মুহুর্তে এই তালা মেরে ক্রীতদাসের কায়দায় শ্রমিকদের আটকানো বন্ধ করা। এর জন্য কোন চিন্তাভাবনা, কমিটি, নুতন আইনেরও দরকার নেই।
সচেতন জনতার উচিত চোখের সামনে যেসব গার্মেন্টস এ শ্রমিকদের তালা মেরে রাখা হয় সেসব নিজেরাই সুশৃংখলভাবে উপস্থিত হয়ে ঠান্ডা মাথায় ভেঙ্গে ফেলা। সরাসরি একশন না নিলে সরকার, মালিক পক্ষ কেউই গা করবে না। শুধু ব্লগে লেখালেখি ক্ষোভ প্রকাশ করে তেমন কিছু হবে না।
পরে সরকার নুতন আইন কি করবে, নিরাপত্তার জোরদার ব্যাবস্থা নেবে সেসব দেখা যাবে।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল ভাই,
আজ সন্ধ্যায় আমার এখানে একজন কানাডীয় অধ্যাপিকা পথে আমাকে পেয়ে বললেন, “অধিকারী, তোমাদের দেশে এই কি হলো? আমি যতোদূর খবর জেনেছি এটাকে কোন ভাবেই দুর্ঘটনা বলা যাবেনা, শ্রেফ হত্যাকান্ড! গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর মালিক কি আ্যরেস্টেড?” আমি বললাম “না”। তিনি জবাবে বললেন, ” এ মৃত্যুর দায় কিন্তু তোমাদের!” আমি লা জবাব হয়ে অপরাধীর মতো মাথা নীচু করে আমার গন্তব্যে চলে এলাম!
@কেশব অধিকারী,
ভদ্রমহিলা কিছুমাত্র বাড়িয়ে বলেননি। এর মাঝে আসলে অতিরিক্ত ভাবপ্রবন বা আবেগেরও কিছু নেই।
আমি তাই লেখার শেষে সবাইকে জিজ্ঞাসা করতে বলেছিলাম “সচেতন হতে হবে সাধারন নাগরিকদেরই, প্রশ্ন করতে হবে “হোয়্যার ইজ আওয়ার কনশাসনেস”।”
সরকারের ওপর একা দোষ চাপিয়ে তেমন ফায়দা নেই। একটি সংস্কৃতির পরিবর্তন এক সরকার করতে পারে না, আমরা যেমন এই সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত তারাও তেমনি অভ্যস্ত।
পত্রপত্রিকায় প্রায়ই ওঠে ভয়াবহ পৈশাচিক নির্যাতনে গৃহকর্মচারী শিশু গুরুতর আহত, জীবনের তরে পংগু। সেসব বাড়ির মালিকদের আদৌ চুড়ান্তভাবে আদালতে কয়জনার সাজা হয়েছে আমরা খবর নেই? আমরা মামলার পেছনে লেগে থাকলে দেশে থানা পুলিশ আইন আদালত যতই সহজে ম্যানেজ করা যাক না কেন পার পাওয়া কিন্তু সহজ হত না।
এসব গার্মেন্টেসের গনহত্যাকান্ড ঘটানোর আগে মালিক নামের অর্থ পিশাচরা তখন ঠিকই বহুবার ভাবত।
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/uploads/2012/11/2012-11-25-18-11-54-NovemberTwenty-Five-14.jpg[/img]
পেশাগত কারণে গত দুদিন নিশ্চিতপুর ট্র্যাজেডির তথ্য-সংবাদ সরেজমিনে সংগ্রহ করেছি। এখনো চোখে ভাসছে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া নারী-পুরুষের মরদেহ, আর হাজার মানুষের আহাজারী। সে দৃশ্যে যেনো চোখ ক্ষয়ে আসে।…এভাবে আর কতোকাল?
@বিপ্লব রহমান,
ই-বার্তা পাঠিয়েছি, অনুগ্রহ করে দেখে নেবেন। ধন্যবাদ।
তালাচাবী কালচারের কারনে মৃতের সংখ্যা এত বিপুল হয়েছে। আর তালাচাবীর কারন হলো চুরি ঠেকানো। গার্মেন্টস কর্মীরা নাকি সুযোগ পেলেই কারখানার সমুদয় কাপড়, সুতা, বোতাম পকেটে করে নিয়ে যায়। সেটা নিয়ন্ত্রনের জন্য ফ্লোরে ফ্লোরে তালা। মাথাব্যাথা দূর করার জন্য মাথা কেটে ফেলার বিধান।
@চলনামৃত,
দুই চার পিস কাপড় চুরি করে বলে তাদের ক্রীতদাসের মত তালা মেরে মারার বন্দোবস্ত করতে হবে।
গার্মেন্টস ওয়ালারা কয়জনে ফেয়ার ট্যাক্স দেয়, পানি বিদ্যুৎ গ্যাসের বিল দেয় এর হিসেব কে নেবে?
চুরির অভিযোগ মানা যেতে পারে, তাদের দিকও অবশ্যই দেখতে হবে। তাই বলে সেটা ঠেকাতে এমন মধ্যযুগীয় বর্বর পদ্ধুতি, আর কোন উপায় বার করা যায় না?
গার্মেন্টসে আগুণ দুর্ঘটনা কিংবা নির্মান এলাকায় দ্বায়ীত্ব হীনতার কারণে গার্ডার ধস…… এসবের বিচার বাংলাদেশে হয়না…… যেমন হয়না ভুল এবং দায়ীত্বহীন অস্ত্রপাচারের সময় রোগীর মৃত্যর বিচার। যেটা ডোমিনো ইফেক্টে পরিণত হয়েছে…… এমন ঘটনা আগেও হয়েছে…… ক্ষতিপূরণ হওয়াতো দূরে থাক, লাইসেন্সও বাতিলো হয়না। পুরোদমে কাজ শুরু করে পরে তারা, আরও সাহস নিয়ে!!!! সব কিছুই তারা “সিস্টেমে” ঠান্ডা করে…… পুলিশ-সাংবাদিক-উকিল-প্রশাসন এবং বেঁচে থাকা শ্রমিক সংগঠনের নেতা…… এর পর আম জনতা এটা আস্তে আসতে ভুলে যায়!!!!
আইন হল ধনীদের হাতিয়ার, গরীবদের সর্বনাশ……
@সংবাদিকা,
একেবারে হক কথা বলেছেন। বাংলাদেশে যত বড় দুর্ঘটনাই ঘটুক না কেন সবগুলোর পরিণতি এরকমই। দেশের মানুষগুলোও সেটা বুঝে গেছে। এটা একটা বৃত্তের মত। কবে যে এ বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসবে কেই জানে না।
আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা এত লোভী যে তারা যাদের ওপর নির্ভর করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে , তাদের জীবনের প্রতি সামান্যতম ভালবাসা তাদের নেই। দেশে এত বেশী বার বার যেভাবে গার্মেণ্টস ফ্যক্টরীতে আগুন লাগছে, হত দরিদ্র কর্মী আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে, এ নিয়ে কত কথা হচ্ছে, কিন্তু তাদের কোন সম্বিত ফিরছে না। ভাব খানা যেন- যা কিছুই হোক না কেন তাতে তাদের কিছুই যায় আসে না।
প্রায় সাত বছর আগে চট্টগ্রামের একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে অর্ধশতাধিক শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন। ক্ষোভে দুঃখে ভোরের কাগজ আর মুক্তমনায় লিখেছিলাম এই প্রবন্ধটি, এই মৃত্যুর শেষ কোথায়? শেষ যে হয় নি, তা আজকেও টের পাচ্ছি।
@ফরিদ আহমেদ,
এই আশাতো দূরাশা ফরিদ ভাই।
যে দেশে আইন আছে কিন্তু আইন প্রয়োগের বালাই নেই, মন্ত্রি, আমলা স্তর থেকে শুরু করে কেরানী স্তর পর্যন্ত দূর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত সে দেশে যে কোন আশাই দূরাশার নামান্তর।
@রাজেশ তালুকদার,
আইনের শাসন কি করে থাকবে? চিহ্নিত শ্রেনীর লোকে যদি পরিষ্কার ধারনা পায় যে অর্থ বিত্ত সম্পর্ক, দলীয় প্রভাব এসবের ছায়ায় তারা আইনের ঊর্ধ্বে তবে আইনের শাসন আসবে কোথা দিয়ে?
আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের এক দিন পর ঢাকার দক্ষিণ খানে আরেকটি পোশাক কারখানায় আগুন লেগেছে বলে জানিয়েছে অগ্নিনির্বাপক বাহিনী … (এখানে)
আগুনের কি মহামারী শুরু হল নাকি?
@অভিজিৎ,
ঠিক তাই।
আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ, মহামারীর পথে কাঁটা বিছিয়ে দিতে পারে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই-সব কাঁটা সংগ্রহ করি আর বিছিয়ে দেই পথে পথে।
আমিতো আতঙ্কে আছি যে কিছুক্ষনের মধ্যেই না আমাদের সরকারদলীয় কোন মুখপাত্র গায়েবী জোশে জেনে জান সরকারের উন্নয়ন্মূলক কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্থ করতে বিরোধী দলীয় ষড়যন্ত্র এটা।ব্যাপারটা এপর্যায়ে গড়াতে পারলেই হল …শুরু হয়ে যাবে ছোড়াছুড়ির অসুস্থ প্রতিযোগিতা……আপনার লেখার একটি লাইন খুব ভালো লেগেছে
@ছন্নছাড়া,
আসলেই তাই, শুধু দরকার কোনমতে একটু রাজনৈতিক সংযোগ। অমনি শুরু হয়ে যাবে এর পেছনে আমেরিকা ভারত চীন পাকিস্তান নানান দেশের ষড়যন্ত্র; সেই ষড়যন্ত্রের রূপ আবার নানান রকমের হতে পারে। যুদ্ধপরাধীদের বিচার বানচাল, সামনের নির্বাচনের গণরায় ছিনিয়ে নেওয়া, দেশের শিল্প কারখানা বিদেশের হাতে তুলে দেওয়ার নীল নকশা ইত্যাদী ইত্যাদী।
পর পর দুই আগুন তো মনে হয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আরো জোরদার করতে পারে।
@আদিল মাহমুদ,
ভাই আমি তো বিরাট জ্ঞানী হয়ে গেলাম দেখছি :-Y । আজকের(২৭-১১-১২) প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠায় স্বয়ং প্রধান মন্ত্রীই দাবী করে বসেছেন এটা পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।তার বক্তব্যে তিনি দূর্ঘটানাটিকে জামাত শিবিরের চক্রান্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন।দক্ষিন খানের গার্মেটস এর আগুন সুমি নামের এক মেয়ে লাগিয়েছে বলে তিনি দাবী করেছেন, তিনি আবার তাঁর ভিডিও ও দেখেছেন।কি কপাল রে ভাই আমাদের :-Y যেদেশে তদন্তের আগেই রাজনইতিক তদন্ত রপোর্ট প্রকাশিত হয়ে যায় সেখানে সুবিচারের আশা প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়
@ছন্নছাড়া,
এমন কিছু পাওয়া না গেলেই অবাক হতে হত।
এইবার শুরু হয়ে যাবে হুক্কা হুয়া কেয়া হুয়া রবের মত ব্লগে মিডিয়ায় মাতম, যুদ্ধপরাধী বিচার বানচালের নানামূখী ষড়যন্ত্র……পাল্টা ষড়যন্ত্রতত্ত্ব……
কাজেই কাজ কিছুই হবে না। আসল ষড়যন্ত্রকারীদের (যদি আদতেই তা হয়) কোন বাপের ব্যাটাই আদালতে হাজির করতে পারবে না, মাঝখান দিয়ে মূল চিন্তার বিষয়টাই যাবে হারিয়ে।
মাঝে মাঝে ‘৭২ সালের সরকারের ওপর চরম বিরক্তি লাগে, কি এক ভ্যাজাল, স্বাভাবিক চিন্তা বুদ্ধি আচ্ছন্ন করে রাখার মত এক জিনিস যে ওনারা রেখে গেছেন।
এ ধরনের ঘটনা যখনই ঘটে আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। একটা জিনিষ আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না একই ধরনের ঘটনা বারংবার ঘটার পরেও আমাদের কেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করতে হয়? সভ্য দেশ হিসাবে শাস্তি হওয়াটা ত অটোমেটিক হওয়ার কথা ছিল! কিন্তু আমরা এমনি দূর্ভাগা (অসভ্য) জাতি যে শাস্তি হওয়ার ঘটনাই বরং দুষ্প্রাপ্য।
@হোরাস,
কারণ, আমরা পুঁজি (পুঁজ) গঠনের প্রাক-পর্ব্বে অবস্থান করছি। গঠন হয়ে গেলেই আইনের শাসন অনেকটা শক্ত-পোক্ত হবে পুঁজি-বাবাজির নিরাপদ চলাচলের জন্য। যেমনটা সভ্য (পুঁজি-বাবাজির দেশে বিরাজমান) দেশে অটোমেটিক।
@স্বপন মাঝি,
আপনার পুজিবাদের উপর ক্ষোভ আছে বুঝতে পারছি। উদ্ধৃত কথাটি আপনি যদিও সারকাস্টিক টোনে বলেছেন তথাপি কথাটি কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সত্যি। আজকের ঘটনাই আপনাকে উদাহরণ দিয়ে দেখাতে পারি। টরন্টোর মত উত্তর আমেরিকার একটি বৃহৎ মেট্রোপলিটন সিটির মেয়রকে আদালত মাত্র তিন হাজার ডলারের জন্য অফিস থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। ঘটনা কি? ঘটনা হল সে সিটি কাউন্সিলর থাকার সময় সিটির প্যাড ব্যবহার করে তার প্রাইভেট চ্যারিটির জন্য ৩০০০+ ডলারের ডোনেশন তুলেছিল। তাও মেয়র থাকতে নয়, তার আগের ঘটনা। এবং এই ডোনেশন সে লুকায় নাই। শুধু সিটির প্যাড ব্যবহার করার জন্যই এই অবস্থা। আমি মোটামুটি নিশ্চিত কোন সমাজতান্ত্রিক দেশে এরকম উদাহরণ আমি খুঁজে পাব না।
@হোরাস,
দায় অস্বীকার আসলে একটি সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি সবচেয়ে বেশী আছে পাকিস্তানীদের মাঝে, তারপর মনে হয় আমাদের। ভারতীয়দের মাঝেও এই সংস্কৃতি অনেক কম; সেখানে দূর্নীতি অনাচার অনেক কিছু চললেও নৈতিক দায় স্বীকার করে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের উদাহরন ভুরি ভুরি আছে। রেলমন্ত্রী দূর্ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন এমন আছে যেখানে দূর্ঘটনায় তার সরাসরি ভূমিকার প্রশ্ন নেই।
একজন রাজপুত্রের বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা হল; এরপরেও সেই রাজপুত্রের দল চেঁচিয়ে যাচ্ছে সবই ষড়যন্ত্র। নির্লজ্জতার কোন সীমা পরিসীমা নেই, আরেক রাজপুত্রকে দল থেকে দেশনায়ক উপাধিও দিয়ে দেওয়া হল। এদের আবার কোটি কোটি লোকে পূজো করবে। এই সংস্কৃতিকে কি বলা যায়?
দূর্নীতি করেছে করেছে, সব দেশেই এমন হতে পারে। তাই বলে সিঁধেল চোরদের দেশনায়ক উপাধী দেওয়া, পাচার করা টাকা যা আনতে বিদেশী ২ সরকারের সরাসরি সহায়তা লেগেছে তাকে ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করা এবং কোটি লোকের এসব তত্ত্বে পূর্ন ঈমান আনা এগুলি বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়, জাতীয় সংস্কৃতিরই অংশ।
দূর্নীতি, দূর্ঘটনা এসব হওয়া বড় কথা নয়। ঘটনা হবার পর দায় অস্বীকার, এবং স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়ার সংকৃতিই হল সমস্যা। ঘটনার চেয়েও বড় সমস্যা এই মেনে নেবার সংস্কৃতি।
পুরা ঘটনাতে একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম, আমাদের গণমাধ্যমগুলি স্বজনহারাদের কাণ্ণাকাটি ইমোশনাল দৃশ্যগুলি নিয়ে রিপোর্ট করতে যতোটা না উৎসাহি ছিলো সেরকম ফোকাস তারা দেয়নি গারমেণ্টস মালিককে নিয়ে রিপোর্ট করতে ।
নিলীম আমাদের জন্য এ ব্যানারটি করেছেন হৃদয়বিদারক ঘটনাটিকে স্মরণ করে –
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/themes/neobox/headers_backup/ognikando_garents/ognikando_garments.jpg[/img]
ধন্যবাদ।
@মুক্তমনা এডমিন,
ধন্যবাদ নীলিম।
গনগনে হয়ে উঠলেই চামড়া তুলবো ওদের।
@মুক্তমনা এডমিন,
নীলিমকে ধন্যবাদ। (Y)
@মুক্তমনা এডমিন, (Y)
@অর্ফিউস, ধন্যবাদ নীলিম।
এভাবে ১ লাখ ১০ হাজার, ৫ হাজার করে টাকা না দিয়ে আগুন যাতে আর না ধরে সেই ব্যবস্থা করা হোক। কিছু হলেই খালি ছাগল, গরু অথবা নগদ দেওয়া প্রতিশ্রুতি। কেন, যারা মরে তারা গরীব বলে ? আরে বাবা যে মানুষটার বাবা গেল, যার মা গেল, যার সন্তান গেল, যার স্ত্রী গেল, যার স্বামী গেল, যার ভাই অথবা বোন গেল– কেউ পারবে তাদের ফিরিয়ে দিতে ? আপনি পারবেন আপনার প্রিয় জনকে ১ লাখ টাকা দিয়ে বিক্রি করতে? বুঝলাম ১ লাখ টাকা আপনার কাছে কোনো টাকা না, তাহলে ১০লাখ, ১০ কোটি ? এভাবে হয়না। এটাই যেন আমাদের ইতিহাসের শেষ ট্রাজেডি হয়–দয়া করে– সেই ব্যবস্থা করা হোক।
@মোজাফফর হোসেন,
– আসলে এটাই সত্য। গরীব না হলে এ ধরনের নির্মম রসিকতা কারো পক্ষে করা সম্ভব? তারেক মাসুদও অর্থনৈতিকভাবে খুব স্বচ্ছল ছিলেন না। তিনি সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যাবার পর তার পরিবারকে কেউ ছাগল বা লাখ টাকা দিয়ে সান্ত্বনা দেবার কথা চিন্তা করতে পারে?
যেহেতু তারা গরীব, তাই ধরে নেওয়া হয় যে টাকা পয়সা পেলেই তারা স্বজন হারানোর বেদনা ভুলে যাবে। এর মাঝে যতটা না দরিদ্র সেবা তার চাইতে বেশী মনে হয় মুখ বন্ধ করানোর তড়িত ব্যাবস্থা। বছর তিরিশেক আগে আমার পরিচিত এক পরিবারে এক মহিলা বাসার কাজের বুয়ার সন্তান হত্যা ঘটনা ১০ হাজার টাকায় সুরাহা করে ফেলেছিলেন।
আর কতদিন আমরা স্বজনদের লাশের ওপর কাঁদব আর কোন মন্ত্রী এসে বলবে আল্লার মাল আল্লায় নিয়া গেছে?
এত জন তরতাজা মানুষ, কিভাবে পুড়ে মরে ছাই হলো – সেটা ভাবনায় আনতেই স্নায়ু অবশ হয়ে পড়ছে।
এই গুহাযুগীয় বর্বরতার মাঝে, অসভ্যতার মাঝে মুক্তচিন্তার স্বপ্ন দেখা উদ্ভট ও হাস্যকর, নিজের দিকে চেয়ে নিজেই হাসছি, হাঃ হাঃ হা……………।
চলুক, যত গরিব মানুষ আছে সবাইকে পুড়িয়ে টাকা বানানো চলুক নিরন্তর, অসভ্যতার জয় হোক।
গরিব হয়ে জন্মেছ, শত প্রতিকূলতার মাঝে যদি তুমি বেচে থাকো তবে তোমার জীবন হবে শুওরের জীবন। ঘোলা পানি আর এঁটো খাবার খেয়ে বেচে থাকো, আত্মমর্যাদাও তোমার জন্য বেমানান, তারপর বেচে থাকার জন্য ঢুকে যাও কোনো এক খোঁয়াড়ে, অপেক্ষায় থাকো পুড়ে কাবাব হওয়ার। তারপর, তারপর… মন্ত্রী আসবেন ছাগল নিয়ে , কিছু ভিক্ষা দিতে। তোমার মূল্য কি তাহলে একটি ছাগলের সমপরিমাণ হতে পেরেছিল? না, না, সেটা তোমার না রে বাবু, ওটা তাদের ইজ্জত-ক্ষয়ের মূল্য।
@সৈকত চৌধুরী,
প্রবাসী বলে আমি নিজেকে আমি সব সময়ই খুব সৌভাগ্যবান মনে করি। অনেকের কাছে উন্নাসিকের মত শোনালেও আমার সরল কনফেশন।
খবরটা জেনেছি সকালে ঘুম থেকে উঠার পর, চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। নিজের উপর নিজেই বিরক্ত হয়েছি, কেন লইয়ার হলাম না। তাহলে অন্তত এখানকার(ইউকে) যে কোম্পানী(সি এ্যন্ড এ) ওই কারখানার সাথে জড়িত, তাকে করপোরেট সোসিয়াল রেসপন্সিবিলিটি শেখানো যেত। আমাদের গার্মেন্টস এর মালিকরা যা লাভ করে এদের তুলনায় তা খুবি কম। এদের মার্কআপ ৪০০% থেকে ৫০০% পর্যন্ত। তার মানে এইনা গার্মেন্টস মালিকদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কিন্তু এরা সভ্য জাতি অগ্নি নিরাপত্তা সম্পর্কে সম্মক জ্ঞান আছে, যাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই এমন কোম্পানীকে কার্যাদেশ না দিলেইতো হয়। ফেয়ার ট্টেডতো মানেইনা, জান মালের নিরাপত্তাটুকুতো দেখতে পারে। ইরতিশাদ ভাইয়ের প্র্রস্তাবটা ভেবে দেখার মত। আর দেশের কথা বলে লাভ নেই, রাজনীতিবিদরা তো মনুশ্যপদবাচ্য নয়। সেই জন্যে ভাবছিলাম এখানকার কোর্টে ব্যাপারটা তুলতে পারলে ভাল হত। ফেয়ার ট্টেড নিয়েতো অনেক আলোচনা শুনেছি। প্রাইমার্ক কে তো বাধ্য করিয়েছে ন্যায্যমুল্য দিতে। দেশে কি মামলা করা যায়না? কত কিছু নিয়েই তো রিট হয়, আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে কিছু কি করতে পারেনা? ভাবি এসবের সমাপ্তি কোথায়!
@সুমন,
আধুনিক যুগের অগ্নি নির্বাপন ব্যাবস্থাপনা না হয় বাদই দিলাম। কারখানায় তালা মেরে ক্রীতদাসের কায়দায় কাজ করানো কোন ধরনের সভ্য সমাজে সম্ভব?
এই সংস্কৃতি বছরের পর বছর কিভাবে সকলের চোখের সামনেই চলে আসছে?
কারখানায় তালা মেরে কাজ না করালে মালিকের কয় পিস কাপড় চুরি যায়? মালিক পক্ষের কথাও শোনা দরকার।
@সুমন,
ইংল্যান্ড, যে দেশে হেলথ এন্ড সেইফটির পদধুলি না পেয়ে বাহিরের শ্রমিক বিহীন অর্থাৎ শুধু নিজে শ্রম খেটেও একটা ছোট খাটো ব্যবসা খুলা যায়না, এখানে বসে ভাবছেন ফেয়ার ট্টেড, ট্রেড ইউনিয়ন, পাবলিক সেইফটি, বিসনিস স্টান্ডার্ড এসব? যে মানুষগুলো যাওয়ার বা থাকার কথা ছিল পাবনা হেমায়েত পুর, তারা পথ ভুলে উঠে গেছে সংসদে, ওরা এ সবের কী বুঝবে? জাতীয় বিল্ডিং কোড তো প্রণয়ন করা হয়েছিল ১৯ বছর আগে আইনে তো পরিণত হলোনা। পাগলেরা বুঝে গেছে আমরাও যে হেমায়েত পুরে অভ্যস্ত বাসিন্দা। বিদেশী ব্যবসায়ীরা ওসব জানে দেখছে। পোষাকে মেইড ইন অমুক ফ্যাকটোরি লেখা থাকেনা, থাকে মেইড ইন বাংলাদেশ। দেশে বিদেশে বাংলাদেশের কাপড় বৈকট করার চেয়ে আগে ঐ খুনী শুওরগুলোকে ধরা উত্তম মনে করি। শাস্তি না হলে তারা যে খুন করেছে তা তারা বুঝবেনা। উপযুক্ত শাস্তি দিতে পারলে দ্বিতীয়বার খুন করতে সাহস করবেনা। অন্যতায় টাকার ক্ষতি টাকা দিয়ে পুষিয়ে নিতে পারবে।
@আকাশ মালিক,
উপযুক্ত শাস্তি কিভাবে দেবেন! শুয়রওরের বাচ্চারা আইনের ফাক গলে এর আগেও বেরিয়ে গেছে এবার ও যাবে। সরকার ওদের গায়ে আচড়টি পর্যন্ত দেবেনা। তাই অস্থির হয়ে বিকল্প খুজছিলাম। কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা যে!
এই কয়েক বৎসরে বাংলাদেশে পোষাক তৈরীর শ্রমিকের আগুনে পুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেলো। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এটা কোন ব্যাপারই না, কিছু গরীব লোকজনের মৃত্যু হয়েছে, কয়েকদিন হৈ চৈ তারপর সব আবার ঠিক। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আইন, মানবতা ইত্যাদি আশা করাই বৃথা। অত্যন্ত হতাশ বোধ করছি।
আমি মনে করি টেস্কো, এইচ এন্ড এম, ওয়ালমার্ট, জেসিপেনি ইত্যাদি বিদেশী কোম্পানী যারা বাংলাদেশ গারমেন্টস ফেক্টরিগুলো থেকে কাপড় আমদানী করছে, তারাও দায়বদ্ধতা এড়াতে পারেনা এখানে। আইন অনুযায়ী সঠিক নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করার গ্যারেন্টি না পাওয়া পর্য্যন্ত বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফেক্টরিগুলোর সাথে এইসব বিদেশী কোম্পানীগুলোর আমদানী বন্ধ রাখা উচিৎ। আসলে এইসব নিরাপত্তা বিষয়ে বাংলাদেশের গারমেন্টস ফেক্টরীগুলো কোনরকম অর্থ ব্যয় না করার ফলে আমাদানীকারক বিদেশী কোম্পানীগুলোও এর থেকে লাভবান হচ্ছে, কারন তারা আরো সস্তা দামে কাপড় ক্রয় করতে পারছে।
বাংলাদেশে শ্রমিকের গুম হত্যার ব্যাপারে আমেরিকারতো খুব মাথা ব্যথা কয়েকমাস আগে হিলারী ক্লিন্টনের বাংলাদেশ সফরের সময় দেখা গেলো আর হ্যা সেটা খুবই ভালো কথা, কিন্তু এই যে নিরাপত্তা জনিত কারনে দুর্ঘটনায়du গারমেন্টস ফেক্টরীগুলোর শ্রমিকের মৃত্যু হচ্ছে সে ব্যাপারেতো কোন মাথা ব্যথা দেখছিনা। নাকি প্রথম কারনটি রাজনৈতিক তাই দৃষ্টি আকর্ষন করা যায়, কিন্তু শেষেরটির জন্য শোরগোল করে কোন ফায়দা নাই।
আসুন, আমরা দেশ-বিদেশে (বিশেষ করে বিদেশে) একটা পিটিশন শুরু করি। বাংলাদেশি রেডিমেইড গার্মেন্টস বর্জনের আহবান জানিয়ে। প্লিজ বলবেন না, ‘মাথা খারাপ নাকি, তাহলেত শ্রমিকেরা না খেয়ে মরবে’! তারা এমনিতেই মরছে, আগুনে পুড়ে, গুলি খেয়ে, অনাহারে, অর্ধাহারে। বাংলাদেশে তৈরি গার্মেন্টস না বিকোলে মালিকপক্ষ আর সরকারের টনক নড়বে।
@ইরতিশাদ,
একমত ইরতিশাদ ভাই। যতদিন না গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে, ততদিন বাংলাদেশের গার্মেন্টস-এর জিনিস বয়কট করা উচিৎ।
কমনড্রিমস এর এই রিপোর্টটা দেখেন –
@অভিজিৎ,
বেশ ক’বছর আগে মনে পড়ে বিরল প্রজাতির এক কচ্ছপ আমাদের উপকুলে ব্যাপক হারে মারা পড়ে এ অভিযোগে অনেকদিন গার্মেন্টস এর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ছিল। আমার মনে হচ্ছে আবারো এমন কোন খড়গ নেমে আসা আসন্ন। দূর্ঘটনা ছাড়াও Deadly Denim: Sandblasting in the Bangladesh Garment Industry ধরনের রিপোর্টও আছে।
আলোচিত এই গার্মেন্টস আগে থেকেই ওয়াল মার্ট এর পক্ষে একটি প্রতিষ্ঠান মনিটর করছিল।
Tazreen Fashions had been the subject of an audit conducted by an ethical sourcing assessor for Wal-Mart, according to a document on the website of Bangladeshi garment exporter Tuba Group, the Associated Press reported
@ইরতিশাদ,
আসলেই এমন কিছুই দরকার। চোখের পানিতে কাজ হবে না। যার জন্য এত কিছু সেই লাভের গুড়ে ভাটা পড়লে যদি কিছুটা টনক নড়ে। বিদেশে বসে নিজের দেশের পন্য বর্জন করার আহবানই মনে হয় আমাদের জানাতে হবে। এখনো যে বাজার ধরে রাখা যাচ্ছে এটাই বেশী, বিদেশের রাইটস গ্রুপগুলি ক্যাম্পেইন শুরু করতে পারে।
@ইরতিশাদ, আসুন, আমরা দেশ-বিদেশে (বিশেষ করে বিদেশে) একটা পিটিশন শুরু করি।
মালিকপক্ষ বাংলাদেশি বলেই পুতুপুতু আর অন্যদেশে হলে বিপ্লবী, এদের মুখে মুখে ঝাঁটা মেরে আমিও আপনার সাথে একমত।
@ইরতিশাদ,
জনাব ইরতিশাদ ভাই, ঠিক ওভাবে না যেয়ে যে দেশ বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস কিনবে বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস কে দিতে হবে একটা ছাড়পত্র যে সেই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর সেই ধরনের ব্যবস্থাপনা আছে কিনা যা তারা প্রত্যাশা করে শ্রমীক নিরাপত্তা, স্বাস্হ্য, বেতন ভাতা কাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা, আবাসিক (টয়লোট সহ) ব্যবস্থা, ফ্যাক্টরীর আভ্যন্তরীন পরিবেশ, টয়লেট ব্যবস্থাপনা, রেষ্টুরেন্ট (রেষ্টরুম সহ)এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয়ে। এতেকরে, রপ্তানী নীতিতে ক্রেতা রাষ্ট্রগুলোর একটা দায় বর্তাবে যেটা পক্ষান্তরে আমাদের সরকারের দায়ে পরিনত হবে।
আপনার প্রস্তাবটি সরাসরি স্ববিরোধী হয়ে যায়। আমাদের এমন একটা পথ খুঁজতে হবে যেখানে আমাদের অর্থনীতির ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন থাকবে কিন্তু খেটেখাওয়া মানুষেরা মানুষের অধিকার ভোগ করবে। আপনার অনুভবের সাথে আমি শতভাগ একমত, কিন্তু জোচ্চোরদের শায়েস্তা করতে এই অসহায় মানুষগুলোর শেষ অবলম্বনটুকু বিষর্জন দিতে বলার পক্ষপাতি নই। এ ব্যপারে আরোও ভেবে একটা পথ বের করা সত্যিই জরুরী। সবাই ভালো থাকুন।
@কেশব অধিকারী,
ধন্যবাদ প্রতি-মন্তব্যের জন্য। আপনার প্রস্তাবটাও ভালো, তবে কার্যকরী নয়। দূতাবাসকে দিয়ে ছাড়পত্র ইস্যু করানো – শ্রমিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, বেতন কাঠামো, ইত্যাদি ইত্যাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে – আমাদের কর্ম নয়। যদি পারতাম তাহলেত আমাদের সরকার বাহাদুরকে দিয়েই এসব করিয়ে নিতাম।
আমি বলতে চেয়েছি – আমাদের পক্ষে যা করা সম্ভব তাই। জনমত গড়ে তোলা ছাড়া আমরা আর কিছুই করতে পারি না এই মুহূর্তে।
আমার মনে হয় না আমার প্রস্তাবটা স্ববিরোধী। অর্থনীতির ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখার ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নাই। যে অর্থনীতি গার্মেন্ট শ্রমিকদের তিন হাজার টাকার (চল্লিশ মার্কিন ডলার) বেশি মাসেহারা দিতে পারেনা, যে অর্থনীতি গার্মেন্ট শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার কেড়ে নেয়, চুলোয় যাক সেই অর্থনীতি।
আপনাকে শুধু একটা উদাহরণ দিই – দক্ষিণ আফ্রিকার আ্যপার্টহিড- এর বিরুদ্ধে দুনিয়াব্যাপী যে বর্জন আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেই সময়ে সেই জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার গরীব কালো মানুষগুলোরও কম দূর্ভোগ হয় নি। কিন্তু শেষে ঐ ত্যাগ স্বীকারের বিনিময়েই তারা পেয়েছিল অভূতপূর্ব জয়। বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকরাও জয়ী হবে, মানুষের মর্যাদা পাবে – যে ভাবে তারা বেঁচে আছে তার সাথে মৃত্যুর পার্থক্য খুব একটা নেই।
দেখুন এই লিঙ্কে।”NISCHINTAPUR DEATHS: Killers at large”
@ইরতিশাদ,
ধন্যবাদ ইরতিশাদ ভাই জবাবের জন্যে। আমি নিজেও মনে করিনা যে আমি যা প্রস্তাব করেছি সেইটি যথেষ্ট। আমি আরোও ভেবে এমন একটি পিটিশন প্রস্তাব (যা আপনার প্রস্তাব ছিলো) বের করতে বলেছি যাতে, আমাদের দেশের চলমান এই নির্যাতনের শিকার নির্যাতিতরা আরোও মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য না হয়। আমি সচেতন ভাবে জানি যে আমাদের দেশের তথাকথিত এই সব নেতা (সে যেই লেভেলেরই হোক) দিয়ে, কিংবা কোন সরকারী বা বেসরকারী কর্মকর্তাই হোক, তাদের দিয়ে সমাধান সম্ভব নয়। কারন সমাজ ব্যবস্থার ভেতর থেকে পচন ধরেছে। আমি যেটা বলেছি (হয়তো ঠিক নয়) তা হলো এই ব্যপারে অনেকটা হতাশ হয়েই, বিদেশী ক্রেতারা তাদের কূটনৈতিক মিশনের মাধ্যমে যাচাই করুক যে যার কাছ থেকে কিনছে সে কতোটা সার্বিক ভাবে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন।
কারখানায় কোন ট্রেডইনিয়ন অনুমিত নয়, তবে এই বি জি এম ই এ সংগঠনটি কিভাবে অনুমিত হয়? এইটি তো সেই সব গার্মেন্টস মালিকদের স্বার্থরক্ষার পাহারাদার বই কিছু নয়। কোন এম ই এ নয়, বিদেশী ক্রেতারা সরাসরি আমাদের দেশের গার্মেন্টস ইন্টারপ্রেনিয়রদের সাথে চুক্তি করবে এবং আমদানী রফতানী বিষয়ক কাজ গুলো করবে। আর সেই জন্যে আমাদের একটি বিশেষ বানিজ্য মন্ত্রনালয় রয়েছে সার্বিক দেখভালের জন্যে। এই যে এতো বড় হৃদয়বিদারক হত্যাকান্ড সংগঠিত হলো কেউ কি দায় স্বীকার করেছে? সরকার বাহাদুর কি কাউকে চিহ্নিত করতে পেরেছে দায়ী হিসেবে? না। কারন সবাই এক গোয়ালেই জাবর কাটে। আপনি ঠিক বলেছেন, যে আমি আপনি আমরা কি করতে পারি একমাত্র জনমত গঠন ছাড়া? কিছ্ছুনা। কিন্তু সেই জনমত গঠন করবো কার বিরুদ্ধে, কিসের বিরুদ্ধে? কারা আমার বা আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে? কাকে রুখতে? আর তার ভিত্তিটাই বা হবে কি? সেই জনমত গঠনই কি সম্ভব? আমি জানি আমাদের সবার মনের মধ্যে আগুন জ্বলছে ধিকি ধিকি, আজ কাল পরশু…. ব্যাস। তারপর সব থিতিয়ে আসবে। আবার আমরা অপেক্ষা করবো আর একটা নিশ্চন্তপুর ট্র্যাজেডির জন্যে!
আপনার পিটিশনের কথা শুনেই মূলতঃ আমার মনে হয়েছে এমন একটি ব্যবস্থার জন্যে বরং আমরা কার্যক্রম শুরু করি যেখানে আমাদের এইসব ভেড়ার দল বাধ্য হবে আমজনতার তথা খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা বিধানে। হয় ভেড়া থেকে নিজেদের মানুষ পরিচয়টা বের করে আনবে নতুবা বিলুপ্ত হবে। কোন ছাড় দেওয়ার আর সুযোগ নেই।
যাই হোক আপনি পিটিশন দাঁড় করান আমি আছি আপনার পাশে, আর সব সমব্যাথি মুক্তমনাদের সাথে।
আদিল ভাই, এতক্ষন টিভির সামনে ছিলাম। জানি না কতটুকু দেখছেন। চোখে পানি ধইরা রাখা দুনিয়ার সবচাইতে কষ্টকর জিনিস হইয়া দাঁড়ায়।
শেষ খবর পর্যন্ত যতটুকু শুনলাম লাশের সংখ্যা ১২০ ছাড়াইছে সম্ভবত যার মধ্যে ৬০ জনের পরিচয় এখনও স্বজনরা নিশ্চিত করতে পারে নাই। সরকারীভাবে বলতেছে ১১১। সংখ্যাটা ১ হইলেও সরকার তায় দায় এড়াইতে পারে না। পারে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যেকটা ফ্লোরের সিড়ি যেইখানে মিলিত হইছে ঐখানেই রাখা ছিল সুতা, কেমিকেল(যেটা ফায়ারব্রিগ্রেড কর্তৃপক্ষের মতানুসারে অত্যন্ত বিষাক্ত এবং দাহ্য।) আর জেনারেটর যেইটা আইনের পরিষ্কার লঙ্ঘন।
যখন ফায়ার এলার্ম বাজে তখন শ্রমিকদের বলা হইছে এইটা রুটিন অনুসারেই হইতেছে, তারা যাতে কাজে ফেরত যায়। এই বলে শ্রমিকদের কাজে ফেরত পাঠানো হইছে মেইন গেইট আটকাইয়া দিয়া।
সাক্ষাতকার নেওয়া ফায়ারব্রিগ্রেড কর্মকর্তা পরিষ্কারভাবেই ফায়ারএক্সিট সিড়ির অনস্তিত্বের কথা জানাইয়াছে।
শুধুমাত্র এই দুইটা কারনই মালিক পক্ষরে রাস্তায় নামায়ে পিটাইয়া মাইরা ফেলানোর জন্য যথেষ্ট মনে করি।
হাসিনার খোয়ারের মন্ত্রী লেভেলের গরুকূল এবং হাসিনা একদিনের শোক প্রস্তাব পাশ করছে। খুবই ভালো লাগে শুনতে কিন্তু ইতিহাসটা জানলে মামদোবাজিটা টের পাওয়া যায়। গত ৬, ৭ বছরে এখন পর্যন্ত নুন্যতম হিসাবেও ৫০০র উপরে শ্রমিক মারা গেছে। আরেকটা মামদোবাজির উদাহরন দেই, আজকে একুশে রাতে আসা গার্মেন্টস শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল বলছেন এই সমস্ত আইন পালন না করলে মালিকের কমপক্ষে তিনমাস কারাভোগের দন্ডনীতি আছে(পড়ুন ছিল)। কিন্তু সেই আইনও উঠাইয়া দেওয়া হইছে। তারমানে হইল এদের বিপক্ষে আইনগতভাবে তেমন কিছুই করা নাও যাইতে পারে।
বিজিএমইএ প্রত্যেক পরিবাররে ১ লাখ করে দেওয়া মহানুভব ঘোষনা প্রদান করছে যদিও এই সংগঠনের প্রত্যেক খাসীই কোরবানীতে লাখ টাকার উপরে খরচ কইরা গরু কেনে। ঈদের বাজার করে বিদাশে। কোন দিন শুনবেন না এই সমস্ত জানোয়ারগুলার কোন দাবী অপূর্ন রইছে। দাবী মানা হইব না শুধু শ্রমিকের। কারন শ্রমিকের হ্যাডম নাই।
আর চট্টগ্রামের ট্রাজেডি পরিষ্কার দূর্নীতির ফসল। সম্পূর্ন অযোগ্য একটা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানরে এইরকম গুরুত্বপূর্ন একটা কাজ দেওয়াতেই এমন ভয়াবহ মাসুল গুনতে হইল সাধারন মানুষের। এইটা কিন্তু একটা পরিষ্কার ব্যাপার যে নির্মান চলাকালীন সময়ে যেকোন জায়গাতেই নির্দিষ্ট জায়গা নিরাপত্তা বেস্টনি হিসাবে থাকে। কিন্তু এইখানে ছিল না। এমন কি টিভি বলা জনগনের কথাতে দেখা যায় ঐখানে বসবাসকারী সাধারন জনগনের অনেক আপত্তিও কানে নেইয়া হয় নাই।
ফুলবাড়ির উদাহরন থিকে এইটা স্পষ্ট পরিষ্কার শ্রমিক/গন আন্দোলন ছাড়া শ্রমিকের/গনমানুষের ন্যায্য দাবী কেউ দিবো না।
@সাইফুল ইসলাম,
এটা আসলে ঠান্ডা মাথায় খুন না হলেও হত্যাকান্ড থেকে মোটেও কম কিছু নয়। দূর্ঘটনা বলা মোটেও উচিত হবে না।
কিছু ছবি এসেছে যেগুলিতে এবং ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীদের ভাষ্যে পরিষ্কার জানা যায় যে প্রতিটা ফ্লোরেই তাদের তালা কেটে কেটে প্রবেশ করতে হয়েছে। কোন সভ্য দেশে এমন হতে পারে কেউ বিশ্বাস করতে পারে? বিদেশে জন্তু জানোয়ারদের, এমনকি যাদের জবাই দেওয়া হবে খাবার জন্য তাদের নিরাপত্তা ব্যাবস্থাও আরো অনেক উন্নত হয়।
ফায়ার এস্কেপ রুট আর অন্যান্য নিরাপত্তা মূলক ব্যাবস্থা বাদই দিলাম, শুধু এই তালা মারা কালচার না থাকলেই বহু জীবন রক্ষা পেত যেটা কোনমতে অস্বীকার করা যায় না। এর দায় কাউকে না কাউকে নিতেই হবে।
ফ্রান্সের আইনে যার দোষে সড়ক, বিমান,বা এ জাতীয় দূর্ঘটনা ঘটে থাকে তাদের ক্রিমিনাল এক্টে বিচার করা হয়, এমনকি অনিচ্ছাকৃত ভুল জনিত দূর্ঘটনা হলেও। অন্যান্য দেশে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য শুধু আর্থিক ক্ষতিপূরন সাজা হয়।
এমন আইন অবশ্যই দরকার যাতে দারোয়ান শ্রেনীর কারো ঘাড়ে এসবের যাবতীয় দায় চাপিয়ে মালিক পক্ষ পার না পেতে পারে। নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিয়মিত মনিটর করার ব্যাবস্থা থাকতে হবে, এমন চরম অবহেলায় প্রানহানী হলে মালিক পক্ষের সাথে এই মনিটরকারিদেরও জবাবদিহি করতে হবে।
চট্টগ্রামের ব্যাপারও বিস্তারিত কিছু না পড়লেও পরিষ্কারই বুঝেছি যে নির্মানাধীন সেতুর আশেপাশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার মত একটি বাউন্ডারি গোছের কিছু যার খরচ হয়ত মূল কাজের হাজার ভাগের এক ভাগও হত না দেবার মত গরজও কারো হয়নি।
নিহত প্রতি পরিবারে একটা করে ছাগল দেওয়া থেকে এক লাখ টাকা – উন্নতি হয়েছে এটা কি অস্বীকার করা যায়?
@সাইফুল ইসলাম,
সব কথার শেষ কথাটা –
কারো ভাল লাগুক আর না-লাগুক, এটাই বাস্তবতা।
@সাইফুল ইসলাম,
বুঝেনই তো ব্যাপারটা কোরবানীর সময় লাখ টাকার উপর খরচ করে গরু কেনে, এতে তো তাদের লাভ হয়, মান সম্মান প্রতিপত্তি বাড়ে।
মানুষকে লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিলে তো ঐ টাকাটা কমে যায়।আসলে আপনার এই একটা কথার সাথে আমি খুব একমত। এরা মানে এই হাই লেভেলের পুঁজিবাদী রা আসলেই,মানুষ না, জানোয়ার।
বিজিএমইএ’র ঘোষনা, প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেয়া হবে, কি নিদারুন জোক! এক লা—–খ টাকা, ১২০০-১৩০০ ডলার!!
প্রতি ডলার রপ্তানীতে মাত্র এক সেন্ট যদি কেটে রেখে শ্রমিক কল্যানের জন্যে রাখা যেতো তবেও বছরে ২০০ মিলিয়নের বিরাট ফান্ড করা যেতো।
শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা ইন্সুরেন্স করা প্রত্যেক গার্মেন্টস মালিক কে বাধ্যতামূলক করা উচিৎ।
@সফিক,
যে দেশে ছাগলের মূল্য দিয়ে নিহতদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেবার মত নির্মম রসিকতা করা যায় সে দেশে লাখ টাকার প্রস্তাবনাকে উন্নতিই তো বলা বলতে হবে।
মৌলিক নিরাপত্তামূলক ব্যাবস্থাগুলি নিতে এমন কিছু টাকা খরচ হবার কথা নয়, এইটুকুও এসব শাইলক আর পিশাচের দল করবে না। উলটো হুমকি দেবে।
ফায়ার সার্ভিসের লোকদের প্রতি ফ্লোরে শুনেছি তালা কেটে কেটে ঢুকতে হয়েছে। এটাকে হত্যাকান্ড ছাড়া আর কি বলা যায় জানি না।
@আদিল মাহমুদ,
এটা হত্যা কান্ডই আর এখানে হত্যাকারী হল বাংলাদেশ সরকার এবং নষ্ট হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি, যে কিনা শুধু ধনিক শ্রেনীর স্বার্থ দেখছে।এর একটাই কারণ পুঁজিবাদের সবচেয়ে নগ্নরুপ মনে হয় বাংলাদেশেই চলছে। দেখুন ভাই আজ অনেক শিক্ষিতা ভদ্রমহিলা ( যাদের এমবিএ নেই) একটা ভাল চাকরির জন্য কত হন্যে হয়ে ঘুরছেন। চাকরি পাচ্ছেন মাত্র ১০০০০ টাঁকা প্রারম্ভিক বেতনে। ভাগ্যভাল হলে ১২০০০।ছেলেদের ক্ষেত্রে মামা চাচার জোরে হয়ত আর কিছুটা বেশি হচ্ছে। অপরদিকে দেখেন বেসরকারী ব্যাঙ্ক আর বিদেশী ব্যঙ্ক গুলোতে কর্পোরেট লুটেরা রা কি পরিমান বেতন ভাতা সব কিছু লুটে পুটে নিচ্ছে, আর মালিক দের কথা নাই বা বললাম। আপনি একজন সৎ সরকারী কর্ম কর্তার বাসায় যান, আর অসৎ পুলিস অফিসার বা আমলাদের বাড়ী যান। পার্থক্যটা পরিষ্কার চোখে পড়বে।একই পদবী, একই বেতনের স্কেল অথচ জীবন যাত্রার মানের কি আকাশ পাতাল তফাত।
আর এই সব কিছুর জন্যেই দায়ী বাংলাদেশ সরকার তথা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি।আমরা কোনদিন ভুলে যাবনা কিছুদিন আগে বৌদ্ধদের উপর চালানো তান্ডবটি, যেটির নেতৃত্বে নাকি ছিল এক ছাত্রলীগের নেতা।
এই লীগের প্রতিই কিছুটা ভরসা ছিল যে এরা হয়ত ধর্ম নিরপেক্ষতা আনতে পারবে কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে তার উল্টোটা।এরাই একমাত্র দল যারা কিনা বলছে আজ যে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম , আর ধর্ম নিরপেক্ষতা পাশাপাশি চলতে পারে( ভুল হলে সংশোধন কর দেবেন দয়া করে)।এমন ভণ্ডামি মনে হয় না জামাতও করতে পারবে।
যাহোক খুনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রই।কাজেই এই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই আন্তর্জাতিক আদালতে মানবাধীকার লঙ্ঘনে মামলা করা দরকার; মামলা করার দরকার সেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে , যে রাষ্ট্র কিনা পুজিপতিদের টাকা বাচাতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তার নুন্যতম ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।সেসব মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে কোনরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যারা মানুষ কে একটা ফ্লোরে ঢুকিয়ে দিয়ে তালা মেরে দিচ্ছে যেমন মুরগির বা গরুর খামারে তালা ঝুলানো হয়, যেন তারা পালাতে না পারে। এ যেন প্রাচীন ক্রীতদাস প্রথারই নামান্তর মাত্র।যেখানে গ্ল্যাডিয়েটর লড়াইয়ের নামান্তর মাত্র ।অথবা গ্যালিতে পায়ে শিকল বেঁধে ক্রীতদাসদের দিয়ে দাঁড় টানানো।
@আদিল মাহমুদ, ভাই আপনাকে একটা মেসেজ দিয়েছি বার্তা বাক্সে ।সময় পেলে একটু দেখে নিয়েন।
@সফিক,
সুন্দর বলেছেন।
আগুন ছড়িয়ে দেয়ার সময় হয়েছে।
@রৌরব,
সময় বহু আগেই ওভারডিউ।
ছড়াবে কে?
আমার নিজের একটা সাম্প্রতিক দূঃখজনক অবজার্ভেশন হল যে এসব নিয়ে যারা লেখালেখি করেন, একটিভিষ্ট সোজা কথায় প্রগতিশীল বলতে আমরা যাদের বুঝি তারা সম্ভবত যুদ্ধপরাধীদের বিচারের স্বার্থেই বর্তমান সরকার কোন রকম বড় চাপ, সমালোচনায় পড়ুক কিছুতেই চান না। চট করে সরকারের বিরুদ্ধে যাইই যাক তাতেই ষড়যন্ত্র বার করে ফেলেন।
অথচ এসব যে শুধু বর্তমান সরকারের দায়িত্ব বা ব্যার্থতা তা নয়। ব্যার্থতা একটা পুরো সংস্কৃতির।
@আদিল মাহমুদ,
quoted for emphasis। সরকার-ফরকার ফেলে দেয়াই ভাল, সংস্কৃতির নিজের শক্তি অর্জন করতে হবে।
@রৌরব,
সরকার শোকপালন জাতীয় ধর্মীয় আচারাদি পালনে ব্যস্ত।
শ্রমমন্ত্রী হুঙ্কার দিছেন – একাধিক বহির্গমন সিঁড়ি না থাকলে কারখানা বন্ধ। এর জন্যে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে সময় দেয়া হবে। কিন্তু আবার আসল কথাও স্বীকার করছেন – নিয়ম ঠিকমত পালন হচ্ছে কিনা সেটা জানার জন্যে আসলে “কল-কারখানা পরিদর্শন দপ্তরে” জনবলই নাই। মানে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে সময় দেয়াটা একটা ব্লাফ।
এখন সরকার নাকি জনবল বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে। অ্যাজ ইফ খালি ইনাফ জনবল থাকলেই হইতো। কিন্তু এখানে ট্র্যাজেডি অব দা কমনসটা কেউ দেখে না। ঠিক যেই কারণে সরকার এতো দিনেও জনবল বাড়ায়ে উঠতে পারে না, ঠিক একই কারণে বাড়ন্ত জনবলও এই পরিদর্শনকাণ্ড সমাধা করে উঠতে পারে না।
@রূপম (ধ্রুব),
অ্যান্ড ফাইনালি, সরকার যেই কাজটায় সবচেয়ে পারঙ্গম, সেখানটায় মনোনিবেশ করেছে। ব্লাফ দেয়া। এখন পুলিশ পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে নিশ্চিত হবার চেষ্টা চালাচ্ছে। যেনো অকস্মাৎ আগুন লাগলে মানুষ মরতো না। সরকার সর্বাবস্থায় এখানে বেখেয়াল বেশরম ব্যবসায়ীগুলোর গা বাঁচাবে। কারণ সরকার ভাণে ভণিতায় সর্বক্ষমতাময় হলেও, কিন্তু কার্যকারিতায় পরগাছা শ্রেণী। সে যার গায়ে চড়ে বেঁচে থাকে, তারই তো গা বাঁচাবে।
একসময় সমাজ-সংস্কৃতি এসব নর্দমা ছেড়ে ঝেরে উঠবে। তখন পরগাছাটারও চরিত্রগত উন্নতি হবে। আর ভাণে ভণিতায় আবার সর্বক্ষমতাময়ের হুঙ্কার ছাড়বে। বলবে এইসব সাংস্কৃতিক উন্নতি তো তারই অবদান।
সরকার নিয়ে আলাপ, তার কাছে বিলাপ, তারে দায় দেয়া, এইসব জগতের সবচেয়ে বড় প্রিজনার্স ডিলেমা।
@রূপম (ধ্রুব),
এখানেই সংস্কৃতির প্রশ্ন আসে। ইনস্পেক্টর বাড়িয়ে খুব একটা লাভ কি হবে যদি তাদের সহজেই ১০ হাজার টাকা খাইয়ে বশ করে ফেলা যায়?
আসলে শক্ত আইন কানুন যতই করা হোক চুড়ান্ত বিচারে সেই মানুষের বিবেকের কাছেই যেতে হয়।
@রূপম (ধ্রুব),
শ্রম মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করায় তিনি তো বলতে পারলেন না, এটা দূর্ঘটনা না নাশকতা।
এটাকেই বুঝি বলে কর্পোরেট ক্রাইম। শ্রমিকের প্রাণের বিনিময়ে মালিকের লাভ। শ্রমিকের নিরাপত্তা খাতে ব্যয় = শতাদিক শ্রমিকের প্রাণ। এই হলো কর্পোরেট ক্রিমিনালদের ব্যবসায়ীক মুনাফার হিসাব। এখানে অনেক গুলো মানুষ অনেকটা সংস্থা মন্ত্রণালয় জড়িত।
এবারে আমার মনে হয় কিছু একটা হবে কারণ বেশ কিছু ওর্গেনাইজেশন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, বিশেষ করে বিচার বিভাগ। সচেতন নাগরিক যদি এগিয়ে আসেন ভাল একটা ফল আশা করা যাবে।
@রৌরব,
সরকারতো আসলে একটা লাগবেই কি বলেন? হ্যা পরিবর্তন আনতে হবে, কিন্তু সরকার ছাড়া দেশ চালাবে কে? 😉
@অর্ফিউস,
খোদা ছাড়া দুনিয়া চালাবে কে? :-s
@রূপম (ধ্রুব),
আসলে খোদার অস্তিত্ত্ব নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।খোদা দেখা যায় না। কাজেই সে থাকুক বা না থাউক আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু ছোট থেকেই দেখে আসছি যে একটা সরকার দেশ চালায়। আচ্ছা বাদ দেন তাহলে সরকার ছাড়া দেশ চলবে কিভাবে? কে নেতৃত্ব দেবে? :-s
@অর্ফিউস,
আপনার এই প্রশ্নের মধ্যে একটা অনুমিতি আছে যে একটা দেশ বা একটা দেশের অভ্যন্তরীণ সমাজ সরকার ছাড়া চলতেই পারে না। সমাজে যেনো নেতৃত্ব বাঞ্ছনীয়। অবশ্য তেমন ভাবনা বেশ প্রচলিত। কিন্তু জীবন স্পনটেনিয়াসলি এগোয়। মানুষ জীবনের তাগিদে উৎপাদন করে লেনদেন করে বেঁচেবর্তে থাকে। এমন না যে সেটা সরকারের অবর্তমানে অসম্ভব হয়ে ওঠে। ছোটবেলা থেকে ধর্মের অস্তিত্বও দেখে এসেছি। একসময় একে সমাজের জন্যে অপরিহার্যও মনে করা হতো। এর অনুপস্থিতিতে একটা সমাজ চলবে না বলে লোকে ভাবতো। সরকারও তেমনি একটা বয়ে আসা রেসিড্যু ভাবতে পারেন। “Government, even in its best state, is but a necessary evil; in its worst state, an intolerable one.” – থমাস পেইন।
যাহোক, টিপ্পনি কাটার জন্যে কেবল কথাটা তুললাম। :-s
@রূপম (ধ্রুব), কোনই দ্বিমত করব না আপনার কথায়, যদি একটা দিক নির্দেশনা দিতেন। ধরুন বাংলাদেশে কোন সরকার নেই। এখন কিভাবে দেশ চলবে।চুরি হল, ডাকাতি হল খুন হল ।অথবা অন্যান্য ক্রাইম। এইসবের বিরুদ্ধে আপনি বিচার চাইবেন কার কাছে?আসলে এর বিকল্প কোনকিছু সত্যি কি আছে? মাথায় আসছে না। হয়তো ছোটবেলার শিক্ষার কুফল হতে পারে!কাজেই বিকল্প থাকলে জানান কিছু। রাজনীতি আমি ভাল বুঝি না 🙂 ।
@অর্ফিউস,
কুফল কিনা জানিনা, তবে ছোটবেলায় সরকারি টেক্সটবইতে সরকার ব্যবস্থাকে অনেকটা টেম্স নদীর মতো চির-বহমান প্রাকৃতিক সুষমা হিসেবে যেনো বর্ণনা করা হয়। এটার ইতিহাস, এটা কেনো তৈরি হলো, এটার আদৌ দরকার কী, সেগুলো খুব অযত্নে, একপেশেভাবে শেখানো বা একেবারে এড়িয়ে যাওয়া হয়।
আধুনিক সরকার ব্যবস্থা একটা আপাত সাম্যাবস্থা বটে, নাহলে কেনোই বা আমরা সেটায় ধীরে ধীরে উপনীত হয়েছি (এটা পুরোপুরি সাম্যবস্থাও না, কারণ এটা পরিবর্তিত হচ্ছে)। কিন্তু এটা কি একমাত্র সাম্যাবস্থা? সম্ভবত না। কিন্তু সরকার ব্যবস্থা সেই স্কেপটিসিজমও এলাও করে না। সে বুঝ দেয় যে সে একমাত্র সাম্যাবস্থা। এটা ছাড়া পৃথিবী সূর্যের চারদিকেও পারলে ঘোরে না।
সরকারের দুরাবস্থা দেখানোর জন্যে বাংলাদেশ সরকার সবচেয়ে সহজ উদাহরণ 🙂 । যুক্তরাষ্ট্র কানাডা নিলে বরং আরেকটু কঠিন হতো। আপনার কি ধারণা বাংলাদেশের পুলিশ চুরি ডাকাতি রোধে ইফেক্টিভলি কিছু করে? বা চুরি ডাকাতি হলে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে দেখেছেন কখনো কী হয়? বাংলাদেশ দূরের কথা, পশ্চিমের কোনো দেশেই চুরি ডাকাতি হলে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে দেখতে পারেন। একটা উদাহরণ এখানে দেখতে পারেন। ব্যতিক্রমও নিশ্চয়ই আছে। তাছাড়া পশ্চিমে পুলিশ পেট্রোলিং বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ইফেক্টিভ। তবে বাংলাদেশে মোটামুটি সরকার না থাকলে আপনি যেগুলো থাকবে না বলে আশা করলেন, সেগুলো এখন সরকার থাকতেই যে নেই সেটা উপলব্ধি করুন। এর মানে এই নয় যে বাংলাদেশের সরকার এর চেয়ে বেটার হতে পারে না। কিন্তু আমাদের আলোচ্য প্রশ্ন ভিন্ন। প্রশ্ন হলো, সরকার ছাড়া এগুলো রক্ষা আদৌ সম্ভব কিনা। সম্ভব হলে কীভাবে। উত্তর হচ্ছে, যেভাবে আপনি একটা বাড়ি বানানোর জন্যে লোক জোগাড় করেন, গাড়ির ইন্সুরেন্স কিনেন, সেভাবে প্রাইভেট পুলিশ প্রোটেকশান কেনা যেতে পারে সরকারের অবর্তমানে। আপনি কল্পনা করতে পারছেন না বলে কল্পনার খোরাক দিলাম। এটা সরকার ব্যবস্থার চেয়ে ভালো না খারাপ সেটা আলাদা তর্ক হিসেবে রাখলাম। বিচার ব্যবস্থাও একইভাবে প্রাইভেট কোর্টের মাধ্যমে সম্ভব। এ নিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম। প্রথমে নিজের একটা রচনা। তারপর মারি রথবার্ডের লিবার্টারিয়ান ম্যানিফেস্টো অনুবাদ শুরু করেছিলাম, যার পরের দিকের চ্যাপ্টারে একেবারে বিনা সরকারে কীভাবে প্রাইভেট পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থা থাকা সম্ভব সেটার একটা বর্ণনা আছে। সময় পেলে সেগুলো নিয়ে একটু একটু করে লিখতাম। আপনি চাইলে মূল ইংরেজিটা এখনি পড়ে নিতে পারেন সরাসরি ওই চ্যাপ্টারে গিয়ে। এইসবই চিন্তার খোরাক। সরকার ছাড়া কেমনে টিকবে সেটার একটা তত্ত্বীয় উত্তর, যাতে অ্যাট লিস্ট কল্পনা করা যায় না এমন যাতে না হয়। কিন্তু আজকে আমরা একলাফে সেই ব্যবস্থায় চলে গেলে চলবে কিনা সেই প্রশ্ন আমাকে করে লাভ নাই। কিছু শ্রেণীর বলপ্রয়োগ আর ক্ষমতার চরম মনোপলির লোভকে বর্তমান সরকার ব্যবস্থা যেভাবে সার্ভ করে, ওই ব্যবস্থা তা মোটেও করতে পারে না। এটা ওই ব্যবস্থার বড় দুর্বলতা। :guli:
@রূপম (ধ্রুব),
হুম মন্দ না আইডিয়াটা।সত্যি চিন্তা করার মতই বিষয় 🙂 । ইতিমধ্যেই আপনার নিজের লেখাটা পড়া শুরু করে দিয়েছি। অনুবাদ টাও পড়ব।সত্যি যদি সরকার ফরকার ছাড়া দেশ চলে তবে সেটা ভাল জিনিস অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে!!
@অর্ফিউস,
ধন্যবাদ। 🙂
@রূপম (ধ্রুব),
চমৎকার, কোন জবাব নেই। সারা পৃথিবীতে ১০০ কোটির উপর মানুষ খেতে পারছে না, তারা কিনবে প্রাইভেট পুলিশ প্রোটেকশান?
সরকার ও রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়, করা উচিতও বটে। কিন্তু সমাধান প্রাইভেট পুলিশের দাওয়াই দিয়ে রুমপদা যে কোন পথে, কার জন্যে, কার নিরাপত্তার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন বুঝতে পারছি না।
@স্বপন মাঝি,
এগুলো অবশ্যই চিন্তার বিষয়। কেউ তো কিনতে বাধ্য না। কিন্তু আমার উল্লেখিত ব্যবস্থা তো প্রায় কোথাও নেই। সে জায়গায় সরকার ব্যবস্থা তো পৃথিবীতে অঢেল। সারা পৃথিবীর ওই ১০০ কোটির উপর না খেয়ে থাকা মানুষের জন্যে সেও তো কিছু করে উঠছে না, অদেখা অনাগত কল্যাণময় রাষ্ট্রের হাতছানি দেয়া ছাড়া। ব্যাপারটা তুলনামূলক ভাবতে পারেন। পৃথিবী সমস্যায় জর্জরিত। এবং তার উত্তরে সরকার ব্যবস্থা অব এনি ফ্লেভার ইজ নো বেটার, এটাই হলো প্রস্তাব। ইন দি ওর্সট কেইস, বর্তমান সরকার ব্যবস্থা আর আমার প্রস্তাবিত ব্যবস্থা কোনোটাই ওই ১০০ কোটির উপর না খেয়ে থাকা মানুষের কোনো ভাবনার বিষয় না। কিন্তু ইন দি বেস্ট কেইস মানুষের মুক্ত আদান প্রদান, খাদ্যের মুক্ত সরবরাহ, মূল্য কমিয়ে আনা, সম্প্রদান, এসবের কারণে সেই ১০০ কোটি মানুষ খেয়ে পরে বেঁচে বর্তে থাকতে পারবে। এর বিপরীতে সরকার ব্যবস্থাগুলো নামে সেই ১০০ কোটির খাওয়া পড়ার ব্যবস্থা করার কথা বললেও আসলে সে তার দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান আর ধনবানদেরকে ওইসব অঞ্চলে মনোপলি ব্যবসায় পাঠাতেই ব্যস্ত। কারণ সেটাই ক্ষমতার মনোপলি তথা সরকার ব্যবস্থার চরিত্র বা স্বরূপ। যুক্তরাষ্ট্র বলেন, বাংলাদেশ বলেন, আর চীন বলেন।
অর্ফিউস যার নিরাপত্তার চিন্তায় সরকারবিহীনতা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন, ঠিক তার। এবং মতান্তরে একই মানুষ যে এখন সরকার ব্যবস্থায় মোটামুটি একটা নিরাপত্তা পায়, সে আরও কম খরচে, আরো দক্ষ নিরাপত্তা পাবে নিরাপত্তা সংস্থার মুক্ত প্রতিযোগিতায়, এটা হলো এখানে তর্কসাপেক্ষ কনজেকচার। ফলে প্রিসাইসলি গণমানুষের কথাই ভাবা হচ্ছে। ক্ষমতাবানদের কথা নয়। ক্ষমতাবানদের নিরাপত্তার জন্যে সরকার ব্যবস্থার চেয়ে ভালো কোনো ব্যবস্থা যে নেই, সেটা আমরা সরকার ব্যবস্থার প্রায় সকল ফ্লেভারেই দেখে ফেলেছি।
যে না খেয়ে আছে, তার নিরাপত্তায় তো সরকার ব্যবস্থাও ইফেক্টিভলি অকার্যকর। অর্ফিউস কল্পনা করতে পারছিলেন না দেখে উদাহরণ দিলাম। উদাহরণে বিচলিত হবার কী আছে বলেন? আমি কোন পথে, কার জন্যে ব্যাকুল, সেটার চেয়ে বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে বেশি অবজেক্টিভ হয় না? তবে আমাকে নিয়ে যদি দুশ্চিন্তা করতে চান, তো অপেক্ষা করেন, গোটা লেখা দিয়ে দেবো নে। 😛
@রূপম (ধ্রুব)/অর্ফিউস ,
চুড়ান্তভাবে যে কোন পর্যায়েরই সরকার বা লিডারশিপ ছাড়া সুষ্ঠু সমাজ চালানো সম্ভব নয়। লিডারশিপ ধারনা সভ্যতার অনেক আগ থেকে, মানুষের আবির্ভাবের আগ থেকেই বোধকরি প্রানী জগতেই ছিল। আমার মনে হয় সরকার ও জনগন অনেকটা ইন্টার চেঞ্জেবল বা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল, অন্তত ফেয়ার ইলেকশনে ভোট দিয়ে যখন জনগন সরকার নির্বাচিত করে তখন ব্যাপারটা তেমনই দাঁড়ায়। এ অবস্থায় সরকারের দায় জনগনের ওপরেও কম বেশী চলে আসেই, এ দায় অবশ্যই কোন রাজপুত্রের বিদেশে টাকা পাচারের দায় নয়। তবে সরকার অনেক সময় প্রচলিত সংস্কৃতির দাস হয়ে যায়, যে প্রচলিত সংস্কৃতি গঠন ও জিইয়ে রাখার জন্য জনগনও দায়ী থাকে। সরকার তো আর বাইরের দেশ থেকে আসে না। যেমন ধর্মক্যা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়ে নানান রকমের ভন্ডামির কথাই ধরেন, কোন সরকারই এই কাজে কম যায় না। জনগনই এসব ভাঁড়ামোতে অব্যস্ত এবং বলতে গেলে পছন্দ করে বলেই সরকারগুলিও এসব করে।
গার্মেন্টসের আগুনের ঘটনায় সবচেয়ে ন্যক্কারজনক, কোন রকম অজুহাত যেখানে কোন ভাবেই গ্রহন করা যায় না সেটা হল তালা চাবি আটকে শ্রমিকদের আটকে রাখার সংস্কৃতি। এটা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়, অতীতের এ জাতীয় সব দূর্ঘটনা কাম হত্যাকান্ডেই এটা দেখা গেছে। এখনো সম্ভবত বেশীরভাগ গার্মেন্টসেই এই নিয়মই পালন করা হয়, কিছুদিন হয়ত বন্ধ থাকবে। হাওয়া ঠান্ডা হয়ে আসলেই আবারো চালু হবে। আল্লাহ খোদা কেউ আছেন কিংবা র্যান্ডমনেস যাইই হোক সব গার্মেন্টসে তেমন দূর্ঘটনা প্রতিদিন ঘটবে না, দু’চার বছর পর পর ঘটবে।
এবার একটু মাইক্রো লেভেলে আমরা আম জনতার দিকে তাকাই। এই সংস্কৃতি কি আসলে গার্মেন্টস মালিকরাই প্রথম শুরু করেছিল? সেটা সত্য নয়। আমরা সাধারন আম পাবলিকই গার্মেন্টস শুরু হবার বহু আগ থেকেই এই সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত। আমি আজন্ম দেখে এসেছি বেশীরভাগ বাসা বাড়িতেই যেখানে স্বামী স্ত্রী উভয়েই কর্মজীবি, দিনের বেলায় কেউ থাকে না সেসব বাসায় কাজের লোকদের ভেতরে রেখে বাইরে থেকে অকপটে তালা মেরে যাওয়া হয়। এসব বাসাতেও একইভাবে আগুন লেগে গৃহকর্মচারী মারা যেতেই পারে, তেমন গিয়েছেও, আমরা সেভাবে খেয়াল করিনি। গৃহকর্মচারীদের এই সম্ভাব্য বিপদের অতি যৌক্তিক আশংকা আমরা সাধারন পাবলিকই করি না। সকলেই এভাবেই অভ্যস্ত, কাজটির মাঝে তেমন অন্যায় কিছু মনে হয় না। বিদেশে যাদের বাড়িরে কুকুর বেড়াল থাকে তারাও দিনের বেলা কাজে গেলে পাছে কুকুর বেড়াল তালা বন্ধ অবস্থায় বিপদে পড়ে এই আংশংকায় দরজায় নোটিস মেরে যায় যে কোন দূর্ঘটনা ঘটলে যেন প্রথমেই তালা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করা হয়।
সংস্কৃতিগত পরিবর্তন না ঘটাতে পারলে শুধু আইন আদালত, কঠোর নির্বাপন ব্যাবস্থা এসব কোন কিছুই প্রয়োযনীয় সুফল আনতে পারে না। আলোচিত ঘটনার সেই গার্মেন্টসে দেখা গেছে যে আধুনিক অগ্নি নির্বাপনের অনেক ব্যাবস্থা ছিল, একটি ফায়ায় একস্টিংগুইশারও ব্যাবহার করা হয়নি, এমনকি ফায়ার ড্রিল পর্যন্ত নাকি করানো হত, অথচ চরম বিস্ময়কর হল যে এসব কিছুই কাজে আসেনি। কেউ আসল দূর্ঘটনার সময় এসবের চেষ্টাও করেনি। এর কারন কি? আমার মনে হয় কারন হল এসব ব্যাবস্থা রাখা হয়েছিল স্রেফ বিদেশী বায়ারদের সন্তুষ্ট করতে, মূল উদ্দেশ্য যে বিপদে এসবের ব্যাবহার করা সেটাই কেউ সিরিয়াসলি নেয়নি। কারন হল আমাদের সংস্কৃতিতে ফায়ার সেফটি, ইমার্জেন্সী প্রিপারেডনেস এসবের ধারনাই অনপস্থিত। এই দর্শনগত দিকটির দূর্বলতা এই দূর্ঘটনা কাম হত্যা থেকে ভালভাবে শিক্ষা নেওয়া উচিত। নইলে আইন করে যাবতীয় আধুনিক সেফটি ফিচার গায়ের জোরে বসিয়েও যেই লাউ সেই কদুই থাকবে।
সরকার ও জনগন সূস্থ সংস্কৃতির জন্ম দিলে সে অবস্থায় মনিটরিং, থানয়া পুলিশের ভূমিকা অনেক কমে যায়। পুলিশের পক্ষে কোন দেশেই প্রতিটা বাড়ি, কলকারখানা ২৪ ঘন্টা পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। সেই রকম গ্রহনযোগ্য সংস্কতির অভাব থাকলে প্রাইভেট পুলিশ ফুলিশেও কোন কাজ দেবে না, সময় গেলে ব্যাপার একই হবে। আমার এই দেশেও আজ আমার বাড়িতে চুরি হলে ৯০% সম্ভাবনা পুলিশ সেই চুরির মাল উদ্ধার করতে পারবে না। তবে আমি এই ঘটনায় সেভাবে ব্যাথিত হব না কারন আমি জানি যে তারা চেষ্টা করেছে ঠিকই, চোরাই দলের সাথে তাদের যোগাযোগ নেই, কিংবা সরকারী দলের পান্ডা চুরিতে জড়িত বলে তারা গায়ে বাতাস লাগিয়ে বেড়াচ্ছে এমন নয়। একইভাবে এখানেও কলকারখানায় আগুন লেগে কিছু লোকে মাঝে মধ্যে মরবে, কারখানা মালিকের দায়ও অনেক সময় থাকবে, কিন্তু সেটা এড়িয়ে যাবার মত সংস্কৃতি এখনো এখানে নিয়মে পরিনত হয়নি।
আমরা নিজেরাই আসলে ফ্র্যাঙ্কেনষ্টাইনের জন্ম দিয়েছি, নিজেদেরই প্রতি পদে সেই দানবে কুরে কুরে খাবে।
@আদিল মাহমুদ,
(Y)
চমৎকার মন্তব্য! বলি নি বোধহয়, আপনার লেখার উপসংহারটাও চমৎকার লেগেছে।
@আদিল মাহমুদ,
দেখবেন যে শেষ পর্যন্ত ইন্সুরেন্সের মোটা টাকা ফ্যাক্টরীর মালিক পক্ষ ঠিকই বাগিয়ে নিয়ে আরেকটা ফ্যাক্টরী খুলবে। একাজে তাদের সহায়তা দেবে আমাদেরই কোন আত্মীয় , সহপাঠি কিংবা শিক্ষক, এক কলমের খোঁচায়। এদেরই অনুমোদনই তো তারা প্রথমে ফ্যাক্টরী খুলতে পেরেছিল। নিরাপত্তাহীন ভবন পরিদর্শন করে নিরাপদ সনদ কারা দেয় ? আমাদেরই কোন আত্মীয় , সহপাঠি কিংবা শিক্ষক, এক কলমের খোঁচায়। সরকার টরকার এসব ফালতু কথা। সরকার তো আর ভীন গ্রহের কেউ না !
যে দেশে রাষ্ট্রনায়ক ও রথী মহারথীরা খুন হলে বিচার হয় না , দশ পত্রিকায় দশ রকম কাহিনী ছাপা হয় , সেই দেশের কাছে হীরক রাজার দেশও লজ্জা পাবে। যে রকম দেখছৈন এটাই বাস্তবতা এবং এটা থেকে পরিত্রাণ অদূর ভবিষ্যতেও সম্ভব নয়। সভ্যতা আলাদীনের চেরাগ নয় , একদিনের চমক লাগানো বিপ্লবও নয় , সভ্যতা হাজার বছরের বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠে।
@সংশপ্তক,
আসলেই তাই।
আমরা আবার বড় গলায় হাজার বছরের পুরনো সভ্যতার গর্ব করি…
@রৌরব,
যে আগুনে মানুষ মরে, সে আগুনের মুখ ঘুরিয়ে দে’য়ার দায় কে নেবে?
যারা পুড়ে মরে গেল তারা ফিরবে না জানি। কিন্তু দায়ী যারা তাদের কেন কঠিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় না? জনপ্রতি এক লাখ টাকা ছুঁড়ে দিইয়েই সাধারণতঃ তারা পার পেয়ে যায়। পরিবারটির দীর্ঘমেয়াদী মানসিক, আথিক ও অন্যান্য ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কিভাবে নির্ধারণ করা হয়? প্রচলিত আইনেই নাগরিক তার মৌলিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে মামলা করেন কি? ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার থেকে একক ভাবে কিংবা পরিবারগুলো থেকে যৌথ ভাবে ক্ষতিপূরনের মামলা এবং ন্যায্য ক্ষতিপূরনের উদাহরন আদৌ হয়েছে কি? হবে কি?
@কাজী রহমান,
বিচার কিভাবে আশা করেন? কিছুদিন আগে লোকমুখে শুনেছি যে আমেরিকা প্রবাসী একজন দীর্ঘ ২০ বছর পর দেশে ফিরেছেন, কারন দেশে নাকি এখন তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত। কিভাবে? তিনি এখন “পারডন” এর ব্যাবসা করবেন। আশা করি বুঝেছেন, সত্য মিথ্যা অবশ্যই জানি না, তবে খুবই সম্ভব।
এসব গরীব লোককে আদালতের পথ চেনাবে কে? উলটো আরেক দল সুশীল চেঁচানো শুরু করবে এভাবে বিদেশের ষড়যন্ত্রে দেশের গার্মেন্টস খাত ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে।
@আদিল মাহমুদ,
@আদিল মাহমুদ,
আজকাল তো সংসদ সদস্যদের অনেকেই স্বনামে,বেনামে ব্যবসায় নিয়োজিত বা উল্টোভাবে বললে ব্যবসায়ীদেরই প্রাধান্য সংসদে। তাই এসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম প্রতিরোধে আইন থাকলেও তার প্রয়োগে প্রায় সময়ই শিথিলতা দেখা যায়।
ধন্যবাদ,
উপযুক্ত সময়ে প্রবন্ধটি দেওয়ার জন্য। এর উপর একটা প্রবন্ধ আশা করতেছিলাম।
নতুন জামা কাপড় কিনলে, কোথাকার তৈরী তা দেখা আমার বহুদিনের অভ্যাস। আজ সকালে উপহার হিসেবে পাওয়া একটি শার্ট পরতে গিয়ে দেখলাম, মেড ইন বাংলাদেশ। কে জানে যিনি রাত জেগে শ্রম দিয়ে এই শার্টটি বানিয়েছিলেন তিনি হতভাগ্যদের একজন কিনা!
ধন্যবাদ পোষ্টটির জন্য!
অত্যন্ত হৃদয় বিদারক ঘটনা সন্দেহ নেই কিন্তু আরো হৃদয় বিদারক বিষয় হল যে এ ধরনের ‘দূর্ঘটনা’ বাংলাদেশে ভবিষ্যতে নিয়মিত ঘটতে থাকবে , এমন কি আরো ব্যপক মাত্রায়। বেশী দিন অপেক্ষা করতে হবে না। এর কারণ খুবই সরল।
বাস্তবে বাংলাদেশে কার্যকরী ফায়ার সেইফটি এবং ফায়ার প্রিভেনশন ব্যবস্থাপনার অস্তিত্ব কেবল মাত্র দুইটি প্রতিষ্ঠানে আছে। এর একটি সশস্ত্র বাহিনী এবং অন্যটি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। শুনলে অবাক হবেন যে , এমনকি বঙ্গবভবন , গন ভবন , জাতীয় সংসদ ভবন এবং সচিবালয়ের মত সংবেদনশীল জায়গাতেও কার্যকরী ফায়ার সেইফটি এবং ফায়ার প্রিভেনশন ব্যবস্থাপনা নেই ! পুলিশ সদর দপ্তর এবং থানা গুলোতেও নেই। আমাকে যদি কখনও পরিদর্শনে পাঠানো হয় তাহলে এই সমস্ত ভবনগুলিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়া ছাড়া অন্য কোন প্রস্তাব করতে আমার বিবেক সায় দেবে না। অর্ধ শিক্ষিত লোকদের দ্বারা পরিচালিত গার্মেন্ট কারখানার কথা বলে কি লাভ ?
@সংশপ্তক
এমন কেন হবে? আধুনিক ফায়ার সেফটি কার্যকর কেন করা হবে না? আমার ধারনা ছিল যে দেশে অনেক কিছুই বদলেছে, এসবও এখন পালন করা হচ্ছে। বিল্ডিং কোড মানা হলে সেখানেও ফায়ার সেফটির ব্যাবস্থা থাকার কথা।
আমেরিকান ষ্ট্যান্ডার্ড দরকার নেই, অন্তত অতি মৌলিক কিছু পদক্ষেপও কেন গ্রহন করা হয় না, বিশেষ করে শিল্প কারখানায়? শুধুমাত্র পর্যাপ্ত সংখ্যক বাধাহীন সিঁড়ি্র ব্যাবস্থা রাখলেও মনে হয় এ জাতীয় দূর্ঘটনায় অনেক জীবনই বাঁচতো।
এসব যে খুব খরচের ব্যাপার তাও নয়। আসলে সংস্কৃতিটাই হয়েছে এমন যে ঘটনা ঘটার আগে পর্যন্ত এসবের গুরুত্ব কেঊ দেয় না। ঐদিকে লেটেষ্ট মডেলের সেল ফোন, এলইডি টিভি ফ্যাশন শো এসবে তো উতসাহের কোন ঘাটতি দেখি না কারো।
@আদিল মাহমুদ,
মানুষ গুলো যে আদতেই প্রিমিটিভ ! গত চার হাজার বছরে মৌলিক বিষয়গুলো তো বদলায়নি । লেটেষ্ট মডেলের সেল ফোন, এলইডি টিভি ফ্যাশন শো করলে কি হবে ?
@সংশপ্তক,
আসলেই তাই মনে হয়। দেশের লোকজনের সাথে আগে লেগে যেত, এখন আর এসব তুলি না। তাদের ধারনা উলটো আমি যেহেতু বিদেশে থাকি তাই আমরাই বেশী বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত।
আধুনিক সভ্যতার রংচং এ দিকই কেবল লোকে দেখে, সেই রংগিন চিত্রকর্ম যার ওপর দাঁড় করানো তা দেখে না।
এ জন্যই বলেছিলাম যে সভ্যতার মৌলিক মান নিয়েই ভাবা উচিত।
@আদিল মাহমুদ,
দূখিত,এখানে কোন বিল্ডিং কোড মানা হয় না। আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে ৬ তলা ভবনের বেশি অনুমতি দেয় না সরকার। কিন্তু ১২ তলা পযর্ন্ত উঠিয়েছে । আমি কয়েক ভবনের মালিককে জিজ্ঞেস করলাম কিভাবে ব্যবস্থা করলেন ? বললো- অফিস থেকে লোক এলে কিছু টাকা দিয়ে দিই। ব্যস মৃতু্্যর গ্যারান্টি পেয়ে গেল।