লিখেছেন:কামালউদ্দিন আহমেদ
কদিন পূর্বে বটিভিতে ভগবান কৃষ্ণের জন্ম উৎসব অনুষ্ঠানে একটি নাটিকা দেখলাম। তা থেকে যতোটুকু বুঝতে পারলাম। প্রায় একই কাহিনী ওখান থেকে ধার করে যীশু বা ঈসাকে বানানো হয়েছে! ঈসার বা যীশুর গল্পে পরে আসছি। প্রথমেই কৃষ্ণের যে কাহিনীটি দেখছিলাম তার যতোটা মনে পড়ে তার বিবরণ। এক অত্যাচারি রাজা (নামটা সম্ভবত দশরথ) তার পিতাকে বন্দি করে (আওরঙ্গজেবের মতো) রাজসিংহাসনে বসে প্রজাদের উপর জোরজুলুম চালিয়েই যাচ্ছে। ভগবানের এটা সহ্য হচ্ছিলো না, তাই সে চিন্তা করলো ওই রাজাকে শায়েস্তা করতে হলে তাকে জন্ম নিতে হবে। (যে ভগবান হও বললেই সব হয় তাকে কেন জন্ম নিয়ে শয়তান (অত্যাচারিদের) শায়েস্তা করতে হবে তা আমার বোধগম্য নয়)। যাহোক রাজা তার একমাত্র বোনকে বিয়ে দিলো এবং বোনকে তার নতুন জামাইসহ এগিয়ে দিতে যাচ্ছিলো। পথিমথ্যে হঠাৎ রাজা দৈববাণী শুনতে পেলো, “এর গর্ভে যে সন্তান হবে (৮ নম্বর সন্তান) সে তোমাকে হত্যা করবে।” হঠাৎ এরূপ দৈববাণী শুনে রাজা তরবারি বের করলো আদরের বোনকে হত্যা করার জন্য তা দেখে নতুন জামাই এবং বোন ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলো কেন সে নিজের বোনকে হত্যা করতে চাচ্ছে। তখন রাজা দৈববাণীর কথা বললো, পরে এরা দুজন প্রাণ ভিক্ষা চাইলে রাজা একটি শর্তে রাজি হলো। শর্তটি হলো তার বোনের যতো সন্তান হবে তা রাজার হাতে তুলে দিতে হবে। বিশেষ করে ৮ নম্বর সন্তান এবং তাদেরকে বন্দি জীবন-যাপন করতে হবে। বন্দিখানার গেট সব সময় বন্ধ থাকে এবং পাহারাদার থাকে যাতে ওরা পালিয়ে যেতে না পারে বা সন্তান হলে যাতে তাকে বাইরে পাচার করতে না পারে।
যখন আট নম্বর সন্তানটি হতে যাচ্ছে, অর্থাৎ ওই নারীর প্রসব ব্যাথ্যা ওঠে তখন দারোয়ান ঘুমিয়ে পড়ে আর এই ফাঁকে এক দেবদূত কারাগারের তালা খুলে মধ্যে এসে হঠাৎ হাজির এবং সে তাদের বললেন গোকূলে এক নারীর এক সন্তান হচ্ছে তাকে এখানে এনে রাখবে এবং তোমাদের সন্তান সেখানে রেখে আসবে। এজন্যই বোধকরি আমরা প্রায়ই এই শ্লোকটি বলি যে, “তোমারে বধিবে যে গোকূলে বেড়েছে সে।” যাহোক, দেবদূতের কথামত সন্তান জন্ম নেবার পর মা তখনও অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে, পিতা সন্তানটিকে নিয়ে বেরিয়ে যায় এবং গোকূলে গিয়ে সেখানে যেভাবে দেবদূত বলেছিলো সেইভাবে দেখতে পায় এক মহিলা সন্তান জন্ম দিয়েছে এবং ঘুমিয়ে আছে। কৃষ্ণর পিতা কৃষ্ণকে ওই মহিলার পাশে রেখে তার সন্তানটিকে নিয়ে আসে। কিছুক্ষণ পর দারোয়ানের ঘুম ভাঙ্গলে দেখতে পায় একটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। তখন রাজাকে খবর দিলে রাজা এসে সন্তানটিকে তার মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে দূরে ছুঁড়ে মারে। নাটিকাটিতে অবশ্য দেখানো হয়নি অন্য আর ৭টি সন্তানকে এভাবে মারা হয়েছিলো কিনা?
কৃষ্ণ ও ঈসার জন্ম কাহিনীতে আশ্চর্যরকমের মিল এবং অলৌকিক কাহিনীর ছোঁয়া। ঈসার জন্ম কাহিনীতে তো রয়েছে মহাঅলৌকিক কাহিনী! মুসা ও মোহাম্মদের এরূপ আশ্চর্যজনকভাবে জন্ম হয়নি। তাদের জন্ম হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই অর্থাৎ সাধারণ মানুষের মতোই। তবে ঈসা ও মুসার জন্মের পর যেসব ঘটনার বিবরণ জানা যায় তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং একজন তথাকথিত দয়ালু ঈশ্বর বা যিহোবা যে কিভাবে এমন নির্মম, নিষ্ঠুর, ঘাতক হতে পারে তা কল্পনারও অতীত। যখন কোন ভগবান বা ঈশ্বর নিজে জন্ম নেবার সময় অন্য শিশুদের হত্যা জায়েজ করে তখন ওসব ভগবান বা ঈশ্বরদেরকে (যদি থাকেও) অমান্য করলে বোধকরি কোন অন্যায় হবে না। যীশু বা ঈসা এবং মুসার জন্মের পর বহু শিশু হত্যা করা হয়েছিলো! যা কোনভাবেই একজন বা বহুজন দেবতা/ঈশ্বরের অকল্পনীয় হিংস্রতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এবার আসি যীশুর জন্ম কাহিনীতে। ভগবান কৃষ্ণ যেভাবে মানুষবেশে নারীর গর্ভে জন্মেছিলো (যদিও তার পিতা ছিলো) কিন্তু যীশু জন্মেছিলো পিতা ছাড়াই ঈশ্বরের কথিত মহাশক্তিবলে। যহোক, বিশ্বাসীদের বিশ্বাস মতে, ঈশ্বর বা আল্লা চাইলে যদি সবই হতে পারে, তাহলে পিতা ছাড়া সন্তানও হতে পারে! তাতে অবিশ্বাসীরা অবাক হলেও বিশ্বাসীদের কিছু যায়-আসে না! পূর্বেই উল্লেখ করেছি এদের তিনজনেরই জন্মের সময় শিশু হত্যা হয়েছিলো, যা ভগবান বা ঈশ্বরদের অত্যন্ত অমানবিক এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। যেমন বাইবেলে যীশুর জন্ম কাহিনী এরূপ:-
মথি ১ম অধ্যায় ১৮-২৫: 18 …য়োষেফের সঙ্গে তাঁর মা মরিয়মের বাগদান হযেছিল; কিন্তু তাঁদের বিযের আগেই জানতে পারা গেল যে পবিত্র আত্মার শক্তিতে মরিয়ম গর্ভবতী হযেছেন৷ 19 তাঁর ভাবী স্বামী য়োষেফ ন্যায়পরায়ণ লোক ছিলেন৷ তিনি মরিয়মকে লোক চক্ষে লজ্জায় ফেলতে চাইলেন না, তাই তিনি মরিয়মের সাথে বিবাহের এই বাগদান বাতিল করে গোপনে তাকে ত্যাগ করতে চাইলেন৷ 20 তিনি যখন এসব কথা চিন্তা করছেন, তখন প্রভুর এক দূত স্বপ্নে তাঁকে দেখা দিযে বললেন, “য়োষেফ, দায়ূদের সন্তান, মরিয়মকে তোমার স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে ভয় করো না, কারণ তার গর্ভে যে সন্তান এসেছে, তা পবিত্র আত্মার শক্তিতেই হযেছে৷ 21 দেখ, সে এক পুত্র সন্তান প্রসব করবে, তুমি তাঁর নাম রেখো যীশু, কারণ তিনি তাঁর লোকদের তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করবেন৷” 22 এই সব ঘটেছিল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভু যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়৷ 23 শোন! “এক কুমারী গর্ভবতী হবে, আর সে এক পুত্র সন্তান প্রসব করবে, তারা তাঁকে ইম্মানূযেল যার অর্থ “আমাদের সঙ্গে ঈশ্বর” বলে ডাকবে৷ 24 য়োষেফ ঘুম থেকে উঠে প্রভুর দূতের আদেশ অনুসারে কাজ করলেন৷ তিনি মরিয়মকে বিযে করে বাড়ি নিযে গেলেন৷ 25 কিন্তু মরিয়মের সেই সন্তানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত য়োষেফ মরিয়মের সঙ্গে সহবাস করলেন না৷ য়োষেফ সেই সন্তানের নাম রাখলেন যীশু৷
খ্রিস্টনগণ বিশ্বাস করেন, যীশু জন্মের পূর্বেই তার ভাববাণী বা ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছিলো ওল্টটেস্টামেন্ট বা ইহুদি শাস্ত্রে; যেখানে লেখা আছে (যিশাইয় বা ইসাইয়া ৭ অধ্যায় ১৩-১৪ পদ বা আয়াত) যিশাইয়া ভাববাদী বলছিলেন, ভবিষ্যতে এক কুমারী বা যুবতী মহিলা গর্ভবতী হয়ে পুত্র প্রসব করবে এবং তার নাম রাখা হবে ইম্মানূয়েল অর্থাৎ [আমাদের সহিত ঈশ্বর]। যা পরিপূর্ণভাবে খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের বিশ্বাস। যতোদূর জানি, এ আয়াত দুটো নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। সম্ভবত মুসলমানেরা দাবি করেন যে এ আয়াতের ভবিষ্যত বাণী অনুসারে মুহাম্মদ এসেছে আর খ্রিস্টানগণ দাবি করেন যীশু এসেছে। আয়াত দুটো হলোঃ 13 যিশাইয় বললেন, “দাযূদের পুত্র, আহস মন দিযে শোন| লোকের ধৈর্য়্য়ের পরীক্ষা কি তোমাদের কাছে যথেষ্ট নয়? তোমরা কি আমার ঈশ্বরেরও ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে চাও? 14 ঈশ্বর আমার প্রভু, তোমাদের একটা চিহ্ন দেখাবেন: ঐ যুবতী মহিলাটি গর্ভবতী হবে এবং দেখ সে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেবে| তার নাম রাখা হবে ইম্মানূযেল|” তবে যেহেতু ভবিষ্যতবানীতে ইম্মানুয়েল অর্থাৎ আমাদের সহিত ঈশ্বর নাম রাখার কথা বলা হয়েছে, সেহেতু খ্রীস্টানদের দাবী বেশি যৌক্তিক।
যীশুর জন্মের সময় কি ঘটেছিলো তা দেখা যাক: মথি 2 : 1-23): 1 হেরোদ যখন রাজা ছিলেন, সেই সময় যিহূদিয়ার বৈত্লেহমে যীশুর জন্ম হয়৷ সেই সময় প্রাচ্য থেকে কযেকজন পণ্ডিত জেরুশালেমে এসে যীশুর খোঁজ করতে লাগলেন৷ 2 তাঁরা এসে জিজ্ঞেস করলেন, “ইহুদীদের যে নতুন রাজা জন্মেছেন তিনি কোথায়? কারণ পূর্ব দিকে আকাশে আমরা তাঁর তারা দেখে তাঁকে প্রণাম জানাতে এসেছি৷” 3 রাজা হেরোদ একথা শুনে খুব বিচলিত হলেন এবং তাঁর সঙ্গে জেরুশালেমের সব লোক বিচলিত হল৷ 4 তখন তিনি ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষক ছিলেন, তাঁদের ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, মশীহ (খ্রীষ্ট) কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন? 5 তাঁরা হেরোদকে বললেন, “যিহূদিয়া প্রদেশের বৈত্লেহমে, কারণ ভাববাদী সেরকমই লিখে গেছেন: 6 “আর তুমি যিহূদা প্রদেশের বৈত্লেহম, তুমি যিহূদার শাসনকর্তাদের চোখে কোন অংশে নগন্য নও, কারণ তোমার মধ্য থেকে একজন শাসনকর্তা উঠবেন যিনি আমার প্রজা ইস্রাযেলকে চরাবেন৷'” মীখা 5:2 7 তখন হেরোদ সেই পণ্ডিতদের সঙ্গে একান্তে দেখা করার জন্য তাঁদের ডেকে পাঠালেন৷ তিনি তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিলেন ঠিক কোন সময় তারাটা দেখা গিযেছিল৷ 8 এরপর হেরোদ তাদের বৈত্লেহমে পাঠিযে দিলেন আর বললেন, “দেখ, তোমরা সেখানে গিযে ভাল করে সেই শিশুর খোঁজ কর; আর খোঁজ পেলে, আমাকে জানিযে যেও,. যেন আমিও সেখানে গিযে তাঁকে প্রণাম করতে পারি৷” 9 তাঁরা রাজার কথা শুনে রওনা দিলেন৷ তাঁরা পূর্ব দিকে আকাশে যে তারাটা উঠতে দেখেছিলেন, সেটা তাঁদের আগে আগে চলল এবং শিশুটি যেখানে ছিলেন তার ওপরে থামল৷ 10 তাঁরা সেই তারাটি দেখে আনন্দে আত্মহারা হলেন৷ 11 পরে সেই ঘরের মধ্যে ঢুকে শিশুটি ও তাঁর মা মরিয়মকে দেখতে পেযে তাঁরা মাথা নত করে তাঁকে প্রণাম করলেন ও তাঁর উপাসনা করলেন৷ তারপর তাঁদের উপহার সামগ্রী খুলে বের করে তাঁকে সোনা, সুগন্ধি গুগ্গুল ও সুগন্ধি নির্যাস উপহার দিলেন৷ 12 এরপর ঈশ্বর স্বপ্নে তাঁদের সাবধান করে দিলেন যেন তাঁরা হেরোদের কাছে ফিরে না যান, তাই তাঁরা অন্য পথে নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন৷ 13 তাঁরা চলে যাবার পর প্রভুর এক দূত স্বপ্নে য়োষেফকে দেখা দিযে বললেন, “ওঠো! ” শিশুটি ও তাঁর মাকে নিযে মিশরে পালিযে যাও৷ যতদিন না আমি তোমাদের বলি, তোমরা সেখানেই থেকো, কারণ এই শিশুটিকে মেরে ফেলার জন্য হেরোদ এর খোঁজ করবে” 14 তখন য়োষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিযে রাতে মিশরে রওনা হলেন৷ 15 আর হেরোদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন৷ এরূপ ঘটল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভুর কথা সফল হয়; প্রভু বললেন, “আমি মিশর থেকে আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম৷” 16 হেরোদ যখন দেখলেন যে সেই পণ্ডিতরা তাঁকে বোকা বানিযেছে, তখন তিনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন৷ তিনি সেই পণ্ডিতদের কাছ থেকে যে সমযের কথা জেনেছিলেন, সেই হিসাব মতো “দুবছর ও তার কম বয়সের যত ছেলে বৈত্লেহম ও তার আশেপাশের অঞ্চলে ছিল, সকলকে হত্যা করার হুকুম দিলেন৷ 17 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র মাধ্যমে ঈশ্বর যে কথা বলেছিলেন তা পূর্ণ হল: 18 “রামায় একটা শব্দ শোনা গেল, কান্নার রোল ও তীব্র হাহাকার, রাহেল তাঁর সন্তানদের জন্য কাঁদছেন৷ তিনি কিছুতেই শান্ত হতে চাইছেন না, কারণ তারা কেউ আর বেঁচে নেই৷” যিরমিয় 31:15 19 হেরোদ মারা যাবার পর প্রভুর এক দূত মিশরে য়োষেফকে স্বপ্নে দেখা দিযে বললেন, 20 “ওঠো! এই শিশু ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিযে ইস্রাযেল দেশে ফিরে যাও, কারণ যাঁরা এই ছেলের প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছিল তারা সকলে মারা গেছে৷” 21 তখন য়োষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিযে ইস্রাযেল দেশে গেলেন৷ 22 কিন্তু য়োষেফ যখন শুনলেন যে হেরোদের জায়গায় তাঁর পুত্র আর্খিলায় যিহূদিয়ার রাজা হযেছে, তখন তিনি সেখানে ফিরে যেতে ভয় পেলেন৷ পরে আর এক স্বপ্নে তাঁকে সাবধান করে দেওয়া হল, 23 তখন তিনি গালীলে ফিরে নাসরত্ নগরে বসবাস করতে লাগলেন৷ এই রকম ঘটল যেন ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: তিনি নাসরতীয়বলে আখ্যাত হলেন৷
এবার আমরা দেখবো মুসার জন্মবৃত্তান্ত (ওল্ড স্টেটামেন থেকে)। তার জন্মের সময়ও ঈশ্বর প্রচুর শিশু হত্যায় মেতেছিলো।
যাত্রাপুস্তক ১ অধ্যায় ৭ থেকে ২২ আয়াত (আংশিক): 7 ইস্রায়েলের লোকদের অসংখ্য সন্তান ছিল| তাদের লোকসংখ্যা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে গিয়েছিল| ফলস্বরূপ মিশর দেশটি ইস্রায়েলীয়তে ভরে গিয়েছিল| 8 সেই সময় একজন নতুন রাজা মিশর শাসন করতে লাগলেন| 9 রাজা তাঁর প্রজাদের উদ্দেশ্যে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকদের দিকে দেখ, ওরা সংখ্যায় অসংখ্য এবং আমাদের থেকে বেশী শক্তিশালী! 10 তাদের শক্তিবৃদ্ধি বন্ধ করবার জন্য আমাদের কিছু একটা চতুরতার সাহায্য নিতেই হবে| কারণ, এখন যদি যুদ্ধ লাগে তাহলে ওরা আমাদের পরাজিত করবার জন্য ও আমাদের দেশ থেকে বের করে দেবার জন্য আমাদের শত্রুদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে|” 11 মিশরের লোকরা তাই ইস্রায়েলের লোকদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলার ফন্দি আঁটল| অতএব ইস্রায়েলীয়দের তত্ত্বাবধান করবার জন্য মিশরীয়রা ক্রীতদাস মনিবদের নিয়োগ করল| এই দাস শাসকরা ইহুদীদের দিয়ে জোর করে রাজার জন্য পিথোম ও রামিষেষ নামে দুটি শহর নির্মাণ করাল| এই দুই শহরে রাজা শস্য এবং অন্যান্য জিনিসপত্র মজুত করে রাখলেন| 12 মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল| কিন্তু তাদের যত বেশী কঠিন পরিশ্রম করানো হতে থাকল ততই ইস্রায়েলের লোকদের সংখ্যাবৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটতে থাকল| ফলে মিশরীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের আরও বেশী ভয় পেতে শুরু করল| 13 আর সেইজন্য তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি আরও বেশী নির্দয হয়ে উঠল| ফলস্বরূপ মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের আরো কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল| 14 মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের জীবন দুর্বিসহ করে তুলল…| 15 ইস্রায়েলীয় মহিলাদের সন্তান প্রসবে সাহায্য করবার জন্য দুজন ধাইমা ছিল| তাদের দুজনের নাম ছিল শিফ্রা ও পূযা| 16 বয়ং রাজা এসে সেই দুই ধাইমাকে বললেন, “দেখছি তোমরা বরাবর হিব্রু মহিলাদের সন্তান প্রসবের সময় সাহায্য করে চলেছে| দেখ, যদি কেউ কন্যা সন্তান প্রসব করে তাহলে ঠিক আছে, তাকে বাঁচিয়ে রেখ, কিন্তু পুত্র সন্তান হলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে হত্যা করবে|” 17 কিন্তু ধাইমা দুজন ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখে রাজার আদেশ অমান্য করে পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখল| 18 রাজা এবার তাদের ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “তোমরা এটা কি করলে? কেন তোমরা আমার অবাধ্য হয়েছ এবং পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রেখেছ? ” 19 ধাইমারা রাজাকে বলল, “হে রাজা, ইস্রায়েলীয় মহিলারা মিশরের মহিলাদের থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী| আমরা তাদের সাহায্যের জন্য পৌঁছাবার আগেই ইস্রায়েলীয় মহিলারা সন্তান প্রসব করে ফেলে|” 20 …ইস্রায়েলীয়রা সংখ্যায় আরও বাড়তে থাকল এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল| 21 22 পরে ফরৌণ নিজস্ব লোকদের আদেশ দিলেন, “তোমরা কন্যা সন্তান বাঁচিয়ে রাখতে পারো| কিন্তু পুত্র সন্তান হলে তাকে নীলনদে ছুঁড়ে ফেলতে হবে|”
যাত্রাপুস্তক ২ অধ্যায় ২ থেকে ২৫ আয়াত (আংশিক): 2 সে সন্তানসম্ভবা হল এবং একটা সুন্দর ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| পুত্র সন্তান দেখতে এত সুন্দর হয়েছিল য়ে তার মা তাকে তিন মাস লুকিয়ে রেখেছিল| 3 তিন মাস পরে যখন সে তাকে আর লুকিয়ে রাখতে পারছিল না, তখন সে একটি ঝুড়িতে আলকাতরা মাখালো এবং তাতে শিশুটিকে রেখে নদীর তীরে লম্বা ঘাসবনে রেখে এলো| 4 শিশুটির বড় বোন তার ভাইয়ের কি অবস্থা হতে পারে দেখবার জন্য দূরে দাঁড়িয়ে ভাইয়ের ঝুড়ির দিকে লক্ষ্য রাখছিল| 5 ঠিক তখনই ফরৌণের মেয়ে নদীতে স্নান করতে এসেছিল| সে দেখতে পেল ঘাসবনে একটি ঝুড়ি ভাসছে| তার সহচরীরা তখন নদী তীরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল| তাই সে তার সহচরীদের একজনকে ঝুড়িটা তুলে আনতে বলল| 6 তারপর রাজকন্যা ঝুড়িটা খুলে দেখল য়ে তাতে রযেছে একটি শিশুপুত্র| শিশুটি তখন কাঁদছিল| আর তা দেখে রাজকন্যার বড় দযা হল| ভাল করে শিশুটিকে লক্ষ্য করার পর সে বুঝতে পারল য়ে শিশুটি হিব্রু| 7 এবার শিশুটির দিদি আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে রাজকন্যাকে বলল, “আমি কি আপনাকে সাহায্যের জন্য কোনও হিব্রু যাত্রীকে ডেকে আনব য়ে অন্তত শিশুটিকে দুধ খাওয়াতে পারবে? ” 8 রাজকন্যা বলল, “বেশ যাও|” সুতরাং মেয়েটি গেল এবং শিশুটির মাকে ডেকে আনল| 9 রাজকন্যা তাকে বলল, “আমার হয়ে তুমি এই শিশুটিকে দুধ পান করাও| এরজন্য আমি তোমাকে টাকা দেব|” তারই মা শিশুটিকে য়ত্ন করে বড় করে তুলতে লাগল| 10 শিশুটি বড় হয়ে উঠলে মহিলাটি তার সন্তানকে রাজকন্যাকে দিয়ে দিল| রাজকন্যা শিশুটিকে নিজের ছেলের মতোই গ্রহণ করে তার নাম দিল মোশি| শিশুটিকে সে জল থেকে পেয়েছিল বলে তার নামকরণ করা হল মোশি| 11 একদিন, মোশি বড় হয়ে যাবার পর সে তার নিজের লোকদের দেখবার জন্য বাইরে গেল এবং দেখল তাদের ভীষণ কঠিন কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে| সে এও দেখল য়ে একজন মিশরীয় একজন হিব্রু ছোকরাকে প্রচণ্ড মারধর করছে| 12 মোশি চারিদিকে তাকিয়ে দেখল কেউ ব্যাপারটা লক্ষ্য করছে না| তখন মোশি সেই মিশরীয়কে হত্যা করে তাকে বালিতে পুঁতে দিল| 13 পরদিন মোশি দেখল দুজন ইস্রায়েলীয় নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে| তাদের মধ্যে একজন অন্যাযভাবে আরেকজনকে মারছে| মোশি তখন সেই অন্যাযকারী লোকটির উদ্দেশ্যে বলল, “কেন তুমি তোমার প্রতিবেশীকে মারছো? ” 14 লোকটি উত্তরে জানাল, “তোমাকে কে আমাদের শাস্তি দিতে পাঠিয়েছে? বলো, তুমি কি আমাকে মারতে এসেছ য়েমনভাবে তুমি গতকাল ঐ মিশরীয়কে হত্যা করেছিলে? ” তখন মোশি ভয় পেয়ে মনে মনে বলল, “তাহলে এখন ব্যাপারটা সবাই জেনে গেছে|” 15 একদিন রাজা ফরৌণ মোশির কীর্তি জানতে পারলেন; তিনি তাকে হত্যা করতে চাইলেন| কিন্তু মোশি মিদিযন দেশে পালিয়ে গেল|মিদিয়নে এসে একটি কুয়োর সামনে মোশি বসে পড়ল| 16 সেখানে এক যাজক ছিল| তার ছিল সাতটি মেয়ে| কুযো থেকে জল তুলে পিতার পোষা মেষপালকে জল খাওয়ানোর জন্য সেই সাতটি মেয়ে কুযোর কাছে এল| তারা মেষদের জল পানের পাত্রটি ভর্তি করার চেষ্টা করছিল| 17 কিন্তু কিছু মেষপালক এসেছিল এবং তরুণীদের তাড়িয়ে দিয়েছিল| তাই মোশি তাদের সাহায্য করতে এলো এবং তাদের পশুর পালকে জল পান করালো| 18 তখন তরুণীরা তাদের পিতা রূয়েলের কাছে ফিরে গেল| সে বলল, “তোমরা আজ তাড়াতাড়ি ফিরে এসেছ দেখছি!” 19 তরুণীরা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, ওখানে কুযো থেকে জল তোলার সময় কিছু মেষপালক আমাদের তাড়িয়ে দিল| কিন্তু একজন অচেনা মিশরীয় এলো এবং আমাদের সাহায্য করল| সে আমাদের জন্য জলও তুলে দিল এবং আমাদের মেষের পালকে জল পান করালো|” 20 রূযেল তার মেয়েদের বলল, “সেই লোকটি কোথায? তোমরা তাকে ওখানে ছেড়ে এলে কেন? যাও তাকে আমাদের সঙ্গে খাবার নেমতন্ন করে এসো|” 21 মোশি রূযেলের সঙ্গে থাকবার জন্য খুশীর সঙ্গে রাজী হল| রূযেল তার মেয়ে সিপ্পোরার সঙ্গে মোশির বিয়ে দিল| 22 বিয়ের পর সিপ্পোরা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| মোশি তার নাম দিল গের্শোম কারণ সে ছিল প্রবাসে থাকা একজন অপরিচিত ব্যক্তি| 23 দেখতে দেখতে অনেক বছর পেরিযে গেল| মিশরের রাজাও ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন| কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের তখনও জোর করে কাজ করানো হচ্ছিল| তারা সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি শুরু করল| এবং সেই কান্না বয়ং ঈশ্বর শুনতে পাচ্ছিলেন| 24 ঈশ্বর তাদের গভীর আর্তনাদ শুনলেন এবং তিনি স্মরণ করলেন সেই চুক্তির কথা যা তিনি অব্রাহাম, ইস্হাক এবং যাকোবের সঙ্গে করেছিলেন| 25 ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের দেখেছিলেন এবং তিনি জানতেন তিনি কি করতে যাচ্ছেন এবং তিনি স্থির করলেন য়ে শীঘ্রই তিনি তাঁর সাহায্যের হাত তাদের দিকে বাড়িযে দেবেন|
এরপর মুসা বা মোশি তার শ্বশুরের মেষপাল চড়াতে চড়াতেই তার ঈশ্বরের দর্শন পায়। তবে মোদ্দা কথা এরা ঈশ্বরের নিয়োজিত নবী হয়ে প্রথমেই হিংস্রতা অর্থাৎ খুন দিয়েই ঈশ্বরের কাজ শুর” করেছিলো। যেমনটি দেখা যায় ইসলামেও। যদিও ইসলামের নবী কৃষ্ণ ও ঈসার ন্যায় অলৌকিভাবে জন্মগ্রহণ করেনি এবং ঈসা ও মুসার ন্যায় কোন অলৌকিক কাজ করেনি, কেবলমাত্র বাহুবলের উপর জোর দিয়েছে, যা এখনো বহমান। যাহোক, মোহাম্মদের জন্ম বৃত্তান্ত ও কার্যক্রম প্রায় সকলেরই জানা তাই এ নিয়ে তেমন আলোচনার প্রয়োজন নেই। তবে তার নবুয়ত প্রাপ্তি আর মোশির নবুয়ত প্রাপ্তি একই প্রকার। শুধু একটুখানি ঘুরিয়ে খাওয়া আর কি! যেমন মুসা নবুয়ত লাভ করে মেষপাল চড়াতে গিয়ে… যাত্রাপুস্তক 3 :1-17: 1 …মোশি মেষের পাল চরাতে মরুভূমির পশ্চিম প্রান্তে য়েত| একদিন সে মেষের পাল চরাতে চরাতে ঈশ্বরের পর্বত হোরেবে (সিনয়) গিয়ে উপস্থিত হল| 2 ঐ পর্বতে সে জ্বলন্ত ঝোপের ভিতরে প্রভুর দূতের দর্শন পেল| মোশি দেখল ঝোপে আগুন লাগলেও তা পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে না| 3 তাই সে অবাক হয়ে জ্বলন্ত ঝোপের আর একটু কাছে এগিয়ে গেল| মনে মনে ভাবল কি আশ্চর্য় ব্যাপার, ঝোপে আগুন লেগেছে, অথচ ঝোপটা পুড়ে নষ্ট হচ্ছে না! 4 প্রভু লক্ষ্য করছিলেন মোশি ক্রমশঃ ঝোপের দিকে দৃষ্টিপাত করতে করতে কাছে এগিয়ে আসছে| তাই ঈশ্বর ঐ ঝোপের ভিতর থেকে ডাকলেন, “মোশি, মোশি!” এবং মোশি উত্তর দিল, “হ্যাঁ, প্রভু|” 5 তখন প্রভু বললেন, “আর কাছে এসো না| পায়ের চটি খুলে নাও| তুমি এখন পবিত্র ভূমিতে দাঁড়িয়ে আছো| 6 আমি তোমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর| আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর|”মোশি ঈশ্বরের দিকে তাকানোর ভয়ে তার মুখ ঢেকে ফেলল| 7 তখন প্রভু বললেন, “মিশরে আমার লোকদের দুর্দশা আমি নিজের চোখে দেখেছি| এবং যখন তাদের ওপর অত্যাচার করা হয় তখন আমি তাদের চিত্কার শুনেছি| আমি তাদের যন্ত্রণার কথা জানি| 8 এখন সমতলে নেমে গিয়ে মিশরীয়দের হাত থেকে আমার লোকদের আমি রক্ষা করব| আমি তাদের মিশর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাব এবং আমি তাদের এমন এক সুন্দর দেশে নিয়ে যাব য়ে দেশে তারা স্বাধীনভাবে শান্তিতে বাস করতে পারবে| সেই দেশ হবে বহু ভাল জিনিসে ভরা ভূখণ্ড|নানা ধরণের মানুষ সে দেশে বাস করে: কনানীয, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও য়িবুষীয গোষ্ঠীর লোকরা সেখানে বাস করে| 9 আমি ইস্রায়েলীয়দের কান্না শুনেছি| দেখেছি, মিশরীয়রা কিভাবে তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে| 10 তাই এখন আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে পাঠাচ্ছি| যাও! তুমি আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বাইরে নিয়ে এসো|” 11 কিন্তু মোশি ঈশ্বরকে বলল, “আমি কোনও মহান ব্যক্তি নই! সুতরাং আমি কি করে ফরৌণের কাছে যাব এবং ইহুদীদের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনব?” 12 ঈশ্বর বললেন, “তুমি পারবে, কারণ আমি তোমার সঙ্গে থাকব! আমি য়ে তোমাকে পাঠাচ্ছি তার প্রমাণ হবে; তুমি ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনার পর এই পর্বতে এসে আমার উপাসনা করবে|” 13 তখন মোশি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলল, ‘কিন্তু আমি যদি গিয়ে ইস্রায়েলীয়দের বলি য়ে, “তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন,” তখন তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করবে, “তার নাম কি?” তখন আমি তাদের কি বলব?” 14 তখন ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “তাদের বলো, “আমি আমিই|” যখনই তুমি ইস্রায়েলীয়দের কাছে যাবে তখনই তাদের বলবে, “আমিই” আমাকে পাঠিয়েছেন|” 15 ঈশ্বর মোশিকে আরও বললেন, “তুমি অবশ্যই তাদের একথা বলবে: “যিহোবা হলেন তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর| আমার নাম সর্বদা হবে যিহোবা| এই নামেই আমাকে লোকে বংশ পরম্পরায চিনবে|” লোকদের বলো, যিহোবা তোমাকে পাঠিয়েছেন!” 16 প্রভু আরও বললেন, “যাও, ইস্রায়েলের প্রবীণদের একত্র করে তাদের বলো, “যিহোবা, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আমাকে দর্শন দিয়েছেন| অব্রাহামের, ইস্হাকের, এবং যাকোবের ঈশ্বর আমাকে বলেছেন: তোমাদের সঙ্গে মিশরে যা ঘটছে তা সবই আমি দেখেছি| 17 আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি য়ে মিশরের দুর্দশা থেকে তোমাদের উদ্ধার করব| আমি তোমাদের উদ্ধার করব এবং তোমাদের কনানীয, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের দেশে নিয়ে যাব| আমি তোমাদের বহু সুসম্পদে ভরা ভূখণ্ডে নিয়ে যাব|”
আমি তোমাদের উদ্ধার করব এবং তোমাদের কনানীয, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের দেশে নিয়ে যাব| আমি তোমাদের বহু সুসম্পদে ভরা ভূখণ্ডে নিয়ে যাব| ঈশ্বর বা যিহোবার এই প্রতিজ্ঞার বলেই ইস্রায়েলিরা নিজেদেরকে ঈশ্বরের বা যিহোবার মাহা আশির্বাদপ্রাপ্ত জাতি মনে করে এবং খ্রীস্টানগও তা স্বীকার করে যে ইস্রায়েলিরা ঈশ্বরের আশির্বাদপ্রাপ্ত জাতি, যে জাতিকে কেউ কোন দিন ধ্বংস করতে পারবে না। এমনকি এক জামায়েতে ইসলামী কর্মীর কথাও প্রায়ই একইরূপ। ইস্রায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের জিঘাংসা সম্পর্কে তার সাথে কথা হচ্ছিলো। তিনি আমাকে বলছিলেন, পৃথিবীর কোন মানুষ এর মীমাংসা করতে পারবে না, তাহলে কোরাণ মিথ্যা হয়ে যাবে কারণ কোরানেই নাকি আছে ইস্রায়েলিরা ইসলামের চিরশত্র“ অতএব কেউই ওদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে পারবে না। এই যদি হয় বিশ্বাস এবং আল্লার হুকুম, তাহালে শান্তির জন্য এতো দরি-দরবার কেন?
যাহোক, মুসার নবুয়ত লাভ হয় ঈশ্বররে র্পবত হোরবেে (সনিয়) পর্বতের পাদদেশে, আর মোহাম্মদের নবুয়ত লাভ হয় হেরা পর্বতের গুহায় প্রায় একই ভাবে এবং আশ্চর্যজনকরূপে। মুসার বিবরণে চমৎকার কিছু কাহিনী রয়েছে যেমন, হাতের লাঠিকে সাপ বানানো, নদীর পানিকে রক্ত বানানো, নীলদনদে দুভাগে বিভক্ত করে এর তলদেশ দিয়ে হেঁটে পার হওয়া ইত্যাদি। যীশুর রয়েছে আরো কয়েকগুণ বেশি মতা, সে নদীর পানির উপর দিয়ে হেঁটেছে, অন্ধকে চোখ দান করেছে, মৃতকেও জীবন দিয়েছে এবং নিজেও কবর থেকে জীবিত হয়েছে ইত্যাদি! যেসব আশ্চর্য ক্ষমতা মোহাম্মদের মধ্যে ছিলো না।
এসব নবীরা যে আল্লাহ বা ঈশ্বরের সমকক্ষ বা একই শক্তির অধিকারী অথবা নিজেরই যে ঈশ্বর বা আল্লা তা তাদের কার্যক্রম ও কথাবার্তায় স্পষ্ট। যেমন, যীশু নিজেকে বলেছে, “যে আমাকে দেখেছে সে পিতাকেও (ঈশ্বরকে) দেখেছে।” আবার বলেছে, “আমি ও পিতা এক।” অন্যদিকে মোশি বা মুসাকে ঈশ্বর বলেছে, তাদের বলবে, “আমিই” আমাকে পাঠিয়েছেন|” এতে প্রমাণিত হয় যে, মোশিকে ঈশ্বর তার সমকক্ষ করে ইস্রায়েলিদের কাছে পাঠিয়েছে “আমি আমিই বা আমিই আমাকে পাঠিয়েছেন।” অর্থাৎ আমিই ঈশ্বর, আমিই আমাকে পাঠিয়েছি বা নিজেই এসেছি। ভগবান কৃষ্ণও নিজেই এসেছে তারও প্রমাণ পাওয়া যায় তার কাহিনীতে। মোহাম্মদও নিজেই আল্লার সমকক্ষ বলে প্রচার করেছে বহু আয়াতে। যেমনÑ কুরানে আমরা শব্দটি প্রায়ই ব্যবহৃত হতে দেখা যায়, যেমনটা বাইবেলেও দেখা যায় এবং স্পষ্ট করে বলাও হয়েছে পিতা বা ঈশ্বর বা প্রভু ও আমি এক।
কুরান প্রমাণ দেয় যে, সূরা আল ইমরান, ০৩: ৩১ যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। ০৩: ৩২ বলুন, আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য প্রকাশ কর। ০৩: ১৩২ আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রসূলের, যাতে তোমাদের উপর রহমত করা হয়।
সূরা নিসা, ০৪: ১৩ …যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন, ০৪: ৫৯ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর…। ০৪: ৬৯ আর যে কেউ আল্লাহর হুকুম এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য করবে, তাহলে যাঁদের প্রতি আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, সে তাঁদের সঙ্গী হবে। তাঁরা হলেন নবী, ছিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ। আর তাদের সান্নিধ্যই হল উত্তম। অর্থাৎ আল্লাহ ও তার রসুলরে আনুগত্য স্বীকার করতে বহু আয়াতে বলা হয়েছে। একজনের আনুগত্য নয় দুজনের এবং এসব বাক্যে বোঝা যায় একজন ব্যতিত অন্যজন কিছুই না। অর্থাৎ সূরা নিসা, ০৪: ৮০ যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল।
অতএব সব ধর্মেরই কাহিনী এক এবং একটি থেকে অন্যটি বেশ কিছু হলেও নকল করা হয়েছে বললেও মনে করি। পাঠক চাইলে ঈসা ও মুসার আশ্চর্য ক্ষমতা নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছা আছে। সবার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।
দশরথ না কংস হবে।
প্রথমে নামটা দশরথ এর জায়গায় “কংশ” হবে ।
@samir,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনি ঠিকই বলেছেন।
আপনি সম্ভবত zeitgist সিনেমাটা দেখেন নি। ওখানে আপনারই কাছাকাছি রকম আলোচনা করে হয়েছে – এটা দাবী করা হয়েছে যে যিশু বলে কেউ ছিল না, কৃষ্ণ হোরাস ইত্যাদি বহু দেবদেবীর নামে প্রচলিত মিথগুলো নিয়ে যিশুর কল্পকাহিনীগুলোর জন্ম যা বাইবেলে গ্রথিত হয়েছে।
আর অত্যাচারী রাজা মানে কৃষ্ণের মামার নাম কংস।
আপনার আলোচনাটার একটা সমস্যা হল, ঘটনাগুলোর ক্রোনোলজি নিয়ে আপনার তেমন পড়া নেই বোধহয়। পরিস্থিতিটা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করি।
অনুমান করা যায় যে যাদব উপজাতিতে মহাভারতের সময়ে (ধরেন আজ থেকে আড়াই-তিন হাজার বছর আগে) বাস্তবিকই কৃষ্ণ নামে এক নেতা ছিল। সে ছিল একজন সাধারণ মানুষই, কিন্তু শক্তিশালী, বিচক্ষণ নেতা। ক্রমে তার কাহিনী ব্যাখ্যান হতে থাকার সময় দৈববাণী পূতনা রাক্ষসী ইত্যাদি গালগল্প ঢুকে পড়ে।
অন্যদিকে অনুমান করা হয়, হাজারদুয়েক বছর আগে একজন ইহুদী ধর্মপ্রচারক ছিল যিশু নামে, যে কিঞ্চিত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, কিন্তু অনেকে তার অস্তিত্ত্বকেও সন্দেহ করেন। যাহোক, বাইবেলে পল ম্যাথু মার্ক জন ইত্যাদিদের যে কাহিনীগুলো পাই সেগুলো যিশুর মৃত্যুর কয়েক শতাব্দী পরে গ্রথিত, এবং তারা প্রত্যেকেই যিশুর ইমেজকে নিজের ধর্মপ্রচারের সুবিধামত আপন মনের মাধুরী মিশায়ে সাজিয়েগুছিয়ে নিত। তাদের মধ্যে কারো কারো লেখা প্রতিষ্ঠিত ভার্শনটায় নেওয়া হয়েছে, কারোটা হয়নি। the pagan christ ধরনের ডকুগুলো দেখতে পারেন।
তো এই গল্পগুলোর ক্রোনোলজি লক্ষ্য করলে তার মধ্যে ক্রমবর্ধমান গাঁজাখুরি দেখতে পাওয়া যায়। আবার কৃষ্ণের কাহিনী যেসব বইতে আছে, যেমন মহাভারত, ভাগবত, বিষ্ণুপুরাণ, তাদের মধ্যেও একই ব্যাপার, এটা বঙ্কিম কিছুটা বিশ্লেষণ করেছেন। তো বিষ্ণুপুরাণ, যেটা তুলনায় বেশ কিছু পরে লেখা, তাতে প্রথম ঐশ্বরিক জন্মের দাবীটা পাওয়া যায়। তার আগে অবধি যে স্বামী-স্ত্রীকে কংস গাধামি করে এক কক্ষে বন্দী করে রেখেছিল সেটার কথাই বলা হত।
এবার দেখুন, মিশরীয় দেবতা হোরাস থেকে যিশু থেকে কৃষ্ণ, যা বোঝা যাচ্ছে, ওই দৈব জন্মের কাহিনীটা সেই সময় ওই অঞ্চলে বেশ প্রচলিত ছিল, এবং বড় বড় লোকেদের কাহিনী লিখতে গিয়ে কাহিনীকারেরা তাঁদের মাহাত্ম্য বৃদ্ধির জন্য কোনো এক সময় ওই গল্পটা ঢুকিয়ে দেওয়াই উচিত মনে করেছে।
@কৌস্তুভ,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনি ঠিকই বলেছেন, আমি গুছিয়ে লিখতে জানি না তবে চেষ্টা করছি। আপনাদের সাহায্য পেলে, সাহস পেলে আরো লেখার ইচ্ছা আছে।
এটা কি ” বিটিভি ” হবে?
@মহন,
হ্যাঁ ভাই, সময় অভাবে লেখা পুনঃপুন পড়া হয় না। তাছাড়া অভ্রতে কনভার্ট করার সময়ও কিছু কিছু ভুল থেকে যায় সেজন্য দুঃখিত। ধন্যবাদ আপনাকে।
সেটা ঠিকই বলেছেন।ধর্মান্ধতা খুব খারাপ জিনিস।ধর্মান্ধ মানুষ বিঙ্গানের মধ্যে কল্পকাহিনী,আর কল্পকাহিনী মধ্যে বিঙ্গান খুঁজে পায় 🙂 যাই হোক আপনাকে আপনার লেখার জন্য অভিনন্দন
আর হ্যাঁ আমি একমত যে ধর্মগুলোর ফলাফল ভয়ংকর।আর সকলকে ধর্মের ভুলগুলো জানানো উচিত।কিন্তু তারা তো চোখ থাকতেও অন্ধ।আপনি শ্রবণ প্রতীবন্ধির সামনে যত ভালো কথাই বলেন না কেন তা বৃথা যতক্ষণ পর্যন্ত না তার কানের সমস্যার সমাধান করা হয়
@সাদিয়া,
আপনার সাথে একমত। তবে জানেন কি ধার্মিকরা এসব শুনতে চায় না, বুঝতে চায় না। এর প্রমাণ আমি একজ হাজিকে শ্রদ্ধেয় আরজ আলী সাহেবের “সত্যের সন্ধানে” পড়তে দিয়েছিলাম, সে বইটি পড়ে ফিরিয়ে দিতে এসে বললো, এটা অশিক্ষিত আরজ আলীর কাজ না, খ্রীস্টান/ইহুদিদের কাজ। তারা লিখেছে ওর নাম দিয়ে ইত্যাদি। পরে আর এক বাঙালি-আমেরিকান সিটিজেনকে দিলাম, তিনি পড়ে বললেন, তাহলে একজন তো কেউ না কেউ আছে যে সব সৃষ্টি করেছে। এরা দুজনই আমার খুব ঘনিষ্ঠ এবং এরা দুজনেই মনে হয় আরো বেশি ধার্মিক হয়ে নিয়মিত ধর্মকর্ম যেন আরো বাড়িয়েই দিয়েছে। তাই যারা বোঝতে চায় না তাদের বোঝানো যাবে না, তবু চেষ্টা করতে ক্ষতি কি?
ফোন দিয়ে মন্তব্যের জবাব দেওয়া যাচ্ছে না তাই আলাদাভাবে মন্তব্য করছি।আসলে আমি যা বলেছিলাম সেটা শুধু ব্যাঙ্গাত্বক ছিল।আর তাহাদের ঈশ্বর?যদিও তিনি আদৌ সত্যি হতেন আমি তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতাম,কারণ তার মত পাপী কেউ নেই।যদি জাহান্নামের আগুনে কাউকে জ্বালানো উচিত তবে তিনি হলেন তাহাদের ঈশ্বর যার ব্যাপারে আমি ভাবতে চাইনা।আর আমরাই তো সেই মানুষ যারা ঈশ্বরকে সৃষ্টি করেছি।আমার মনে হয় আমাদের ধর্ম নিরসনের থেকে মানবতার প্রসার ঘটানোর দিকে,মানুষকে বিঙ্গানমনস্ক করার দিকে বেশী গুরুত্ব দেয়া উচিত।এক সময় ধর্মগুলো নিজে থেকেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে।আর ধর্মের কি দোষ,সেটাও তো আমরাই তৈরী করেছি।
@সাদিয়া,
মনের কথা সাজিয়ে লিখেছেন। এই ঈশ্বর নামের জিনিস টার প্রতি আমার অসম্ভব ঘৃণা। মানুষের তীব্র অপমানেও তিনি তার খেলা তিনি চালিয়ে যান অবিরাম। তিন বছরের যে ছোট মেয়েটি আজ ধর্ষনের শিকার হয়েছে ,ঈশ্বর থাকলে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে লক্ষ বার। জানেন তো আউসভিটজ এর দেয়ালে একটা লিখন পাওয়া গিয়েছিল,সেটা হল-ইশ্বর বলে যদি কেউ থাকে তাকে আমার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর আপনি তো জানেন -আউসভিটজ এ কি হয়েছিল।
অসাধারন……
@রুদ্র,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
যীশুর জন্মের বৈজ্ঞানিক ব্যাখা কি কিছু দাঁড়া করানো যায়??যেমন সে যদি কারো সাথে যৌনসঙ্গম না করে এবং প্রচলিত বিশ্বাসমতে সে করে নি,কিন্তু যীশু ঠিক ই এসেছে,তার মানে হল একটা গোপন সত্য এখানে আছে কিন্তু সেটা কি??
কোন এক জায়গায় পড়েছিলাম যে পালক পিতার সাথে মরিয়মের গোপন যৌনসম্পর্কের ব্যাপারটি,ব্যাপারটা অনেকটা এইরকম যে মরিয়মের পালক পিতাই যীশুর পিতা,তবে সময়ের অভাবে তথ্যটি কতটুকু অথেনটিক এ ব্যাপারে জানা হয়নি।
পোস্ট ভাল লাগলো।
@নিয়নের আলো,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানি না তবে এ নিয়ে বহু বিতর্ক আছে। আপনি যেমনটা শুনেছেন আমিও তাই শুনেছি কোন কোন হুজুররা একথা বলছে। এছাড়াও কিছু পশ্চিমা সাদা চামড়ার অবিশ্বাীরাও নানা ব্যাখ্যা দিচ্ছে যে যীশু কারো অবৈধ সন্তান ইত্যাদি তবে কোন সূত্র জানা নেই।
@কামালউদ্দিন আহমেদ,
বোল্ড করা শব্দটি ব্যবহারের কোন প্রয়োজন ছিলনা।
পৃথিবীর বাস্তব ইতিহাসে লিপিবদ্ধ নবি একজনই ছিলেন, তিনি মক্কার কোরায়েশ বংশের মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ। বাকি সব মানুষের কল্পিত নাম, আদম থেকে ঈসা পর্যন্ত ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৯ জন নবির মধ্যে কারো নাম পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। ডাইনোসরের হাড় পাওয়া গেলেও আদমের হাড় কোনদিন পাওয়া যাবেনা।
@আকাশ মালিক,
আপনার সুন্দর ব্যাখ্যা ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
@নিয়নের আলো,
খুবই ভাল প্রশ্ন করেছেন।
জীব বিজ্ঞানের নিয়ম অনুসারে পিতৃ ও মাতৃ DNA এর সম্মিলন ছাড়া কারো জন্মানো সম্ভব নয়।
মানুষের CHROMOSOME সংখ্যা ৪৬ টা,২৩ জোড়ায়। এর অর্ধেকটা আসে পিতৃ শুক্রানু হতে আর অর্ধেকটা আসে মাতৃ ডিম্ব কোষ হতে।
এদের সম্মিলনে একটি মাত্র কোষ “ZYGOTE ” পরিণত হয়। এরপর DNA এর GENE এর নির্দেশ অনুসারে সশৃংখল ভাবে MITOTIC কোষ বিভাজনের মধ্য দিয়ে এই আমরাই ১০০ ট্রিলিয়ন কোষ বিশিষ্ট মানব প্রাণীতে পরিনত হই।
অতএব পুরুষ ও স্ত্রী DNA এর সম্মিলন ব্যতিরেকে কোন প্রাণীর জন্ম হওয়া তো এক রকম অসম্ভব ই বটে।
তবে নীচে প্রকতির একটা বিচিত্র লীলা দেখুন। একটি বৃটিশ মিউজিয়ামে একটি সার্ক পুরুষের DNA ব্যতিরেকেই বাচ্চা প্রসব করেছে।
সংবাদ টি ২৩ শে মে,২০০৭ এর BBC ENGLISH NEWS এর।
খবরটির বিস্তারিত দেখতে পারেন এখানে।
অনেকদিন ঠাকুমার ঝুলি পড়া হয় না। আধুনিক যুগে নবরূপে রূপকথাগুলো পেলে সময়টা ভালই কাটবে।
@mahfuz, অবশ্যই লিখে ফেলুন
@রুদ্র,
আপনি ভুল করছেন, আমি নই; এই প্রবন্ধের লেখক কামাল উদ্দিন আহমেদ ঈসা মুসার আশ্চর্য ক্ষমতা নিয়ে রূপকথার গল্প লিখতে চেয়েছেন।
@mahfuz,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনি ঠিকই বলেছেন, রূপকথার গল্প ছাড়া এগুলো কিছু নয়, তবে কিছুটা মজা ও শিণীয়ও আছে। বিশেষ করে বাইবেলের নিউ স্টেটামেন্ট বা ঈসার কাহিনীর উপদেশগুলো আমাদের অনেককিছু শিখায়। যেমন, তোমার এক গালে কেউ চড় মারলে অন্য গালটা পেতে দিও। তোমার শত্র“কে অভিশাপ দিও না, তোমার ভাইয়ের বিচার করো না, কারো অন্যায়ের বিপরীতে অন্যায় করো না, কারো বিচার করো না, কারো অন্যায়ের বিচার ঈশ্বরই করবেন, ইত্যাদি। এমন উপদেশ আর কোন ধর্মে আছে কিনা জানি না। যদিও খ্রীস্টানরা তা কতোখানি মান্য করে তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে।
@কামালউদ্দিন আহমেদ,
পৃথিবীর সমস্ত ধর্মই উপরোক্ত শিক্ষাগুলো দেয়। যিশুর প্রদত্ত পাহাড়ে যে শিক্ষাগুলো রয়েছে তা অনেকের কাছেই চমতকার মনে হবে (নতুন নিয়ম, মথি ৫-অধ্যায়)। কিন্তু তার অনেক কথায় বিতর্ক হতে পারে, যেমন তিনি বলেছেন- “মনে কোরো না যে, আমি দুনিয়াতে শান্তি দিতে এসেছি; না, শান্তি নয়, তলোয়ার দিতে এসেছি। আমি তো এসেছি ছেলেকে তার বাপের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে, মেয়েকে তার মায়ের বিরুদ্ধে, বউকে তার শাশুড়ির বিরুদ্ধে, ……… ”মথি ১০:৩৪-৩৬/ লুক ১২:৫১-৫৩, ১৪:২৬) ।
আর বাইবেলের পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর যে কত মানুষকে তার পাঠানো নবীদের দিয়ে খুন করিয়েছেন তার হিসেব নাই।
এটা নতুন নিয়মের শিক্ষা। কিন্তু মুসার শিক্ষা ছিল- দাঁতের বদলে দাঁত। চোখের বদলে চোখ।
আপনি ইসপের গল্প থেকেও অনেক ভালো ভালো শিক্ষা পেতে পারেন।
@mahfuz,
একমত পোষণ করছি। তবে পুরাতন নিয়ম বা ওল্টটেস্টামেন্টের চেয়ে নতুন নিয়ম বা নিউটেস্টামেন্ট যেটা যীশুর বিবরণ এবং খ্রীস্টানরা পালন করে, সেটাতে হিংস্র বাক্য অনেক অনেক কম ও সুন্দর সুন্দর উপমা ও বাক্য রয়েছে।
যেমন, ১ করিন্থীয় ৮:১-২ আমরা জানি য়ে, আমাদের সবার জ্ঞান আছে৷ জ্ঞান মানুষকে আত্মগর্বে ফাঁপিয়ে তোলে; কিন্তু ভালোবাসা অপরকে গড়ে তোলে৷ যদি কেউ মনে করে সে কিছু জানে, তবে তার যা জানা উচিত ছিল এখনও সে তা জানে না৷ ২ করিন্থীয় ১০:১০ যদি তোমরা কাউকে ক্ষমা কর, আমিও তাকে ক্ষমা করি৷
কৃষ্ণ, নবী ইছা ও মুছার পৌরাণিক কাহীনি তো বেশ ভালই বর্ণনা করেছেন। আরো কিছু লিখতে থাকুন।
তবে ইছলাম ধর্মের জন্য ধার্মিকেরা বেহেশত পাওয়ার আসায় কোরান হাদিছের নির্দেশ অনুসারে নিজেদের জীবনকে যতটা জীবন দিয়ে আত্মঘাতিতে পরিণত হতে পারে, চাই এটা অন্য ধর্মালম্বীদের সংগে হোক বা অভ্যন্তরীন শাখা গ্রুপের সংঘেই (যেমন শিয়া/সুন্নী ইত্যাদি)হোক, এরুপ সম্ভবত অন্য কোনই ধর্মালম্বীরাই করিতে যায়না।
প্রয়োজনে মুসলিমেরা জুমার মসজিদে এমনকি জানাজার নামাজেও আক্রমন করে শহীদ হয়ে থাকে।
এইতো, মাত্র কয়কদিন আগেইতো, লিবিয়ার মত একটি ইসলামিক দেশের রজধানী ত্রীপলীতে আল্লাহর ঘর “মসজিদ” বূল ড্রেজার
দিয়ে গুড়িয়ে দিচ্ছে কোন ঈহুদী নাছারাদের বাহিনী নয় বরং স্বয়ং নবীর খাটি উম্মত বলে দাবীদার “ছালাফী’ গ্রুপ।
আর যাদের মসজিদ তারাও নবীর খাটি উম্মতের দাবীদার ‘ছুফী” গ্রুপ।
তাহলে একই আল্লাহর দেওয়া একই ধর্মে কত প্রকারের সংঘাতময়ী গ্রুপ থাকতে পারে?
তাহলে নীচের হাদিছটা একটু লক্ষ করুন। নবী নিজেই ঘোষনা দিয়েছেন তারই অনুসারীরা অচীরেই ৭৩ দলে বিভক্ত হয়ে যাবে।
এই নিন তরজমা ও ব্যখ্যাসহ-
ستفترق أمتى ثلاثا وسبعين فرقة كلهم فى النار إلا واحدة : قالوا من هى يا رسول الله! قال: ما أ نا عليه وأصحابى
অতিশীঘ্র আমার উম্মত তেহাত্তর(৭৩) ফের্কায় বিভক্ত হয়ে পড়বে। তন্মধ্যে মাত্র একটি দলই মুক্তিপ্রাপ্ত এবং জান্নাতী হবে। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেনঃ সেই মুক্তিপ্রাপ্ত সৌভাগ্যশালী দলটি কারা এবং এত বড় সৌভাগ্য লাভের ভিত্তি কোন নীতি বা আদর্শের উপর ? উত্তরে নবী(সাঃ) বললেন,যে নীতি,তরীকা ও আদর্শের উপর আমি এবং আমার সাহাবায়ে কেরাম আছেন।
(তিরমিজী শরীফ,ইবনে মাজা,মুসনাদে আহমদ,আল-মুসতাদরাক)
হাদিসের ভাবার্থ-
মুহাম্মদ বলছেন, তিনি যেমন সত্যের মাপকাঠি,এবং তার যেমন সমালোচনা করা যাবেনা, প্রশ্নাতীতভাবে তার অনুসরণ ও অনুকরণ ব্যতিরেকে যেমন নাজাতের বা মুক্তির কোন পথ নাই, তেমনি তার সাহাবাগণও সত্যের মাপকাঠী ও সকল প্রকার সমালোচনার উর্দ্ধে এবং তাঁদের অনুকরণ ও অনুকরণ ব্যতিরেকে উম্মতের নাজাতের বা মুক্তির কোন বিকল্প পথ খোলা নাই।
@আঃ হাকিম চাকলাদার, কারন তিনি জানতেন তিনি যেমন ব্যক্তি স্বার্থের কথা ভাবছেন তার উম্মতেরা ও ভাববে
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনি একজন হাদিস বিশেষজ্ঞ আপনার মন্তব্যের জবাব দেয়া আমার মতো কম বুদ্ধিসম্পন্ন লোকের উচিত নয়। ভবঘুরে হলে সঠিক জবাব দিতে পারতো। কিছুদিন হলো মুক্তমনায় ঢু-মারছি এবং দেখছি আপনি কেবলই সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করছেন কিন্তু কিছু লিখছেন না কেন? আপনার হাড়িতে অনেক কিছু আছে, আমরা জানতে চাই।
[…তিনি যেমন সত্যের মাপকাঠি,এবং তার যেমন সমালোচনা করা যাবেনা, প্রশ্নাতীতভাবে তার অনুসরণ ও অনুকরণ ব্যতিরেকে যেমন নাজাতের বা মুক্তির কোন পথ নাই, তেমনি তার সাহাবাগণও সত্যের মাপকাঠী ও সকল প্রকার সমালোচনার উর্দ্ধে এবং তাঁদের অনুকরণ ও অনুকরণ ব্যতিরেকে উম্মতের নাজাতের বা মুক্তির কোন বিকল্প পথ খোলা নাই।]
এমন কথা খ্রীস্টধর্মেও আছে যেমন যীশু বলেছে, আমিই পথ ও সত্য ও জীবন, আমা দিয়া না আসিলে কেহই পিতার নিকট আইসে না। অর্থাৎ তার মাধ্যমে পিতা বা ঈশ্বরের নিকট যেতে হবে, তাকে বিশ্বাস না করলে কেউই পরিত্রাণ বা নাজাত পাবে না। তিনিই কেবল একমাত্র নাজাত দাতা। যার স্বীকারোক্তি কোরানেও পাওয়া যায়। কিছু তথ্য আমি পেয়েছি মুসলিম থেকে ধর্মান্তরিত নব্য পাদ্রিদের কাছ থেকে, তারা মুসলমানদের বিশেষ করে গরিব মুসলমানদের কাছে কোরানের যে বাণীগুলো নিয়ে যায় সেগুলো যদি ঠিক থাকে তবে কোরান এবং মুহাম্মদ দুটোই মিথ্যা হয়ে যায়। যেমন তারা বলেন, (কোরান ও হাদিসে নাকি লেখা আছে):-
[হে ঈসা আমি তোমাকে আমার কাছে তুলিয়া নিতেছি আর তোমার অনুসারীগণকে কিয়ামত পর্যন্ত প্রাধান্য দিতেছি। (সুরা ৩ঃ৫৫ ও সুরা ৪ঃ১৭১ আঃ)। হযরত মুহাম্মাদ বলেন, সেই সত্ত্বার হাতে আমার জীবন, তারই শক্তি হযরত ঈসা আল মসীহ (আঃ) সত্যই বিচারক ও বাদশাহ্ হয়ে দুনিয়াতে অবতরণ করবেন। তখন সমস্ত জাতি তাঁর হুকুম মেনে চলবে। আর তিনি দাজ্জালদেরকে ধ্বংস করে অশান্তি নির্মূল করে সারা বিশ্বে শান্তি কায়েম করবেন। (সহিমুসলিম ৭০ অনুচ্ছেদ, হাদিস নং ২৯৭)। অতএব, কুরআন ও হাদিসের আলোকে আমরা জানতে পারলাম হযরত ঈসা আল মসীহ (আঃ) আমাদের জন্য অনুগ্রহ ও নাজাতদাতা। তিনিই আল্লাহর জীবন্ত কালাম। তাঁর কোন কথার পরিবর্তন নাই। তিনি জগতে আসছেন, আর সকল জাতিকেই তাঁর কাছে ফিরে আসিতে ও তাঁকে বিশ্বাস করিতেই হইবে। (সুরা ৪ঃ১৫৯ আঃ)।] কোরানের এরূপ বহু সূরা ও আয়াত দিয়েই ওরা গরিব মুসলমানদের মধ্যে খ্রীস্টধর্ম প্রচার করে। ধর্মব্যবসায়ীদের প্রচারের জন্য আরো কিছু আয়াত ব্যবহার করে দেখুন:
তিনি আল্লাহর জীবন্ত কালাম ৪:১৭১ নং আঃ। তিনি মহা পবিত্র আত্মায় জন্ম নিয়েছিলেন। তিনিই ইহকালে ও পরকালের সম্মানীয় বাদশাহ্। (৩নং সুরা, এমরান ৪৫, মারিয়াম ১৯ ও আম্বিয়া ৯১ আঃ)। তিনি আল্লাহর নিকট থেকে এসেছিলেন, অবিশ্বাসীরা তাঁকে মেরেছিল। আল্লাহ তাঁকে নিজের কাছে তুলে নিয়েছেন। আবার জগতে আসছেন। (সুরা ৩ঃ৪৫ ও ৫৫, সুরা ১৯ঃ৩৩ ও সুরা যখরুফ ৪৩ঃ৬১ আঃ)। তাঁর মা, জগতের শ্রেষ্ঠ ও পবিত্র নারী। (সুরা ৩ঃ৪২ আঃ)। আল্লাহর কাছে মারিয়ামের প্রশ্ন, কোন পুরুষ আমাকে স্পর্শ করে নাই, আমি অসতী না তাহলে কেন আমার গর্ভে সন্তান হবে? (সুরা ৩ঃ৪৭ ও সুরা ১৯ঃ২০ আঃ)। আল্লাহ পাকের উত্তর: আমি উহাকে এই জন্য সৃষ্টি করিব, যেন সে হয় মানুষের জন্য এক নিদর্শন ও আমার নিকট থেকে এক অনুগ্রহ বা দয়া রাহমত। ইহাতো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার বা পূর্ব পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত। (১৯নং সুরা মারিয়াম ২১ আঃ)। তিনি দোলনায় থাকতেই নবুয়ত প্রকাশ করেছেন। (সুরা ৩ঃ৪৬ ও সুরা ১৯ঃ২৯-৩৩ আঃ)। তাঁর কাজ, শিা, মোজেজা, ও তিনি ইব্রাহীম বংশের জন্য নবী ও রাসুল। (সুরা ৩ঃ৪৮-৫০ আঃ) তাঁর ইঞ্জিল কিতাব মুমিনদের পথ নির্দেশ ও আলো। (৫নং সুরা মায়িদা ৪৬ আঃ)।
এগুলো সত্য হলে দেখা যাচ্ছে যে, কোরান অনুসারেই মোহাম্মদ এবং মুসার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিলো ঈসা যদিও আমরা জানি যে এসবই পৌরাণিক কাহিনী।
আল্লার বা মুহম্মদের উম্মতরা ৭৩ ভাগে নয় আরো বেশি ভাগে বিভক্ত। লিবিয়াতেই শুধু নয়, প্রতিদিন পাকিস্তানে ইদানিং কালে মালিতে কি ঘটছে এবং কারা ঘটাচ্ছে সবই জানি। বিস্তারিত লিখতে গেলে অনেক বড় হয়ে যায়। তবে সবচেয়ে কষ্ট পাই যখন দেখি মসজিদে নামাজরত অবস্থায় একসাথে দু’তিনটে বোম মেরে মসজিদের ছাদসহ ৭০/৮০জন মেরে ফেললো পাকিস্তানে এবং শব যাত্রার সময়কার হামলাগুলো এতোটাই অমানবিক যে এর ঘৃণা প্রকাশ করার ভাষা আমার নেই। তবে কি জানেন খ্রীস্টানরাও বহু ভাগে বিভিক্ত কিন্তু তারা এরূপ আত্মঘাতি নয় (বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বাদ দিলে)। এদের এক গ্র“পের সাথে অন্য গ্র“পের কিছু সমালোচনা ছাড়া হাতাহাতি পর্যন্তও হয় না বললেই চলে। যাহোক ভালো থাকবেন, আবারও ধন্যবাদ দিচ্ছে। কেবল মন্তব্য না করে লিখে আমাদের ধন্য করার অনুরোধ রাখছি।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
আচ্ছা ভাইজান, আপনি – সাল্লাহল্লাহি আলাইহে সাল্লাম- এ আরবি বাক্যের সঠিক বঙ্গানুবাদ কি হবে একটু জানালে কৃতার্থ হতাম।
@ভবঘুরে,
বাক্যটি আরবীতে নিম্ন রুপে আসে।
صل الله علىه و سلم
তাহলে দেখা যাক বাংলায় অনুবাদ করিলে কী দাড়ায়। মূলত এখানে আরবী و (ওয়াও) সংযোগ অব্যয় ব্যবহার করে দুইটি বাক্যকে একত্রে যোগ করা হয়েছে।
অর্থাৎ صل الله علىه (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে) হইল প্রথম বাক্য।
তারপর و (অ) হইল সংযোগ অব্যয়। এর অর্থ “এবং”। পরবর্তী বাক্যকে প্রথম বাক্যের সংগে সংযুক্ত করেছে।
দ্বিতীয় বাক্য হইল سلم (ছাল্লামা)
যেমন আমরা বংলায় বলতে পারি “সুমন গোছল করিল এবং ভাত খাইল।”
প্রথম বাক্য- صل الله (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি)-
এখানে صل (ছাল্লা) শব্দটি ক্রীয়াপদ। এটা এসেছে আরবী صلوات (ছালাত) শব্দ থেকে। যার সোজা সাপটা অর্থ হইল নামাজ, প্রার্থনা,প্রশংসা, বড়ত্ব প্রকাশ, মাথা নত করা (যেমন রুকু,ছেজদা তে করা হয়)
এরপরে الله (আল্লাহু) শব্দ টা হইল এই ক্রীয়াটির কর্তা পদ।
এরপর علىه (আলাইহি) যৌগ শব্দটি কর্মপদ, على (আলা অবয়)এবং ه (হি) সর্বনাম যুক্ত হয়ে হয়েছে।
এর অর্থ “তাহার (নবীর)উপর”
অতএব প্রথম বাক্যের পূর্ণ অর্থ দাড়াইল “আল্লাহ তাহার (নবীর) উপর صلوات (ছালাত) করুন।
আর দ্বিতীয় বাক্য-
سلم (ছাল্লামা)- অর্থ “শান্তি বর্ষিত করুন”
তাহলে পূর্ণ বাক্যটির সোজা সাপটা অর্থটি এরুপ দাড়াইল,
“আল্লাহ তাহার (নবীর) উপর صلوات ছালাত) করুন, ও শান্তি বর্ষিত করুন”
আশা করি বাক্যটির অর্থ আমি পরিস্কার ভাবে বুঝাইতে সক্ষম হইয়াছি।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
আরবি ভাষায় ‘ছ’ নামক কোন অক্ষর বা বর্ন আছে নাকি? যেমন আপনি লিখেছেন; ছাল্লামা, ছালাত ইত্যাদি। দয়া করে জানালে খুব খুশি হব। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
@মুরতাদ,
এখানে নীচে আরবীর তিনটি অক্ষর লক্ষ করুন।
ث س ص
এরা তিনটাই কন্ঠনালী উচ্চারনের কিছু পার্থক্য সহ বাংলায় প্রায় “ছ” এর মত উচ্চারিত হয়।
যেমন এখানে ছল্লা ও ছালাত শব্দের ছ এসেছে ص (ছোয়াদ) অক্ষর থেকে।
আবার “ছাল্লামা” শব্দের ছ এসেছে س (ছিন) থেকে।
এভাবে বাংলা ও আরবীতে অনেক পার্থক্য আছে।
@আঃ হাকিম চাকলাদার, বেশ জটিলতার কারনে দেরি হলো। আপনার বক্তব্য যদি সঠিক তাহলে আমার আরো জিজ্ঞাসা আছে। আমার কিছু বন্ধু আছে যাদের দেশ জর্ডান, ইরাক, মিশর এবং লেবানন। এদের সাথে আমি নামাজ পড়েছি। তাদের মুখে কোনদিন বিছমিল্লাহ শুনি নি। ওরা বিসমিল্লাহ উচ্চারন করে। যেসব আরবীয়রা জুম্মার নামাজে খুতবা পড়ান তারা কখনই বিছমিল্লাহ বলেন না। তারা কখনই আছছালাম অলাইকুম বলে না। বাংলাদেশের বেশ কিছু অঞ্চলের মানুষ ‘স’ এর জায়গায় ‘ছ’ ব্যাবহার করে। মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং ক্যাম্পে নওগা, নাটোর, শান্তাহার, বগুড়া, বাঘমারা এলাকার ছেলেরা আমাকে ডাকতো ছাত্তার নামে। তারা এসএসসি বলতে পারতো না, বলতো এছএছছি। ইংরেজি বর্নমালা পড়তে গিয়ে পড়তো, এ বি ছি। যুদ্ধের পরে রাজশাহি কলেজে পড়তে গিয়ে সেই একই ঘটনা। আত্রাই এলাকার ছাত্ররা আমাকে ডাকে ছাত্তার নামে। রোল কলে বলে, ‘ইয়েছ ছার।’ থাকে মেসে কিন্তু বলে ম্যাচে থাকি। নাম লিখে আনিচুর রহমান, ছানোয়ার হুছেন ইত্যাদি। আমার মনে হয় আপনি এবার বুঝতে পারছেন সম্যসাটা কোথায়!
আরবি বর্নমালায় ‘ট’ ‘প’ নাই। তাই ইংরাজি ‘টু’ দিয়ে শব্দগুলো ‘তু’ শব্দে উচ্চারন করে আরবি ভাষা ভাষিরা। তারা বলে; পাকিস্থানকে বাকিস্থান, প্যারালাল পার্কিংকে ব্যারালাল বার্কিং, রেপ কে রেব, পুট হবে বুট ইত্যাদি। সব ভাষার বর্নমালায় সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন চীন, কোরিয়া, জাপান এবং কেনিয়ার কিছু অঞ্চলের মানুষের বর্নমালায় ‘এল’ বা ‘ল’ নাই। তারা ‘এল’ বা ‘ল’ এর পরিবর্তে ‘র’ ব্যাবহার করে। তাই ‘লাভ’ হয় ‘রাভ’, ‘লাইক’ হয় ‘রাইক’, ‘লেমন’ হয় ‘রেমন’ আর ‘ইলেকশন’ হয়ে যায় ‘ইরেকশন।’ অবশ্য অনান্য আফ্রিকানেরা ‘এল’ কে ‘ডি’ দিয়ে চালায়। যেমন, ‘আই কলড ইউ’ না ‘আই কড ইউ’, ‘ইট ইজ কোল্ড’ না ‘ইট ইজ কোড’।
বাংলা ভাষার বর্নমালায় সীমাবদ্ধতা অনেক কম। পৃথিবীর প্রায় সব শব্দ বাংলা অক্ষরে লেখা যায়। তারপরেও ‘স’ উধাও হয়ে যায়। ‘ড়’ এর জায়গায় ‘র’ ব্যাবহার হয়। তাই ‘আব্দুল বারি’ লেখা আর বলা হ্য় ‘আব্দুল বারি’ আর ‘আমার বাড়ি’ লেখা আর বলা হয় ‘আমার বারি’। আব্দুল্লাহ আবু সাইয়িদ, হুমায়ুন আহমেদ, আসাদ চৌধুরি, নির্মলেন্দ গুন, সৈয়দ আব্দুল হাদি দের মত মানুষেরা ‘স’ দিয়ে শব্দ ‘স’ দিয়ে লিখে এবং বলে। আশা করবো আপনি আমার অভিমত বুঝতে পেরেছেন। আপনাকে অসংখয ধন্যবাদ।
কুরআনের কাহিনী পরতে ভাল্লাগে না।তবে লেখাটা পরে একটা জিনিস মনে হচ্ছে।যেহুতু তাদের মতে মরিয়ম পিতা ছাড়াই সন্তান জন্ম দিয়েছে তাহলে তো সে উভলিঙ্গ।প্রাণীবিদ্যা বইয়ে লেখা থাকা উচিত যে মানুষ একটি এক বা উভলিঙ্গী প্রাণী।
@সাদিয়া মাশারুফ,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। সব ধর্মের কাহিনীই প্রায় এক এবং এরূপ কাহিনী পড়তে কারোই ভালো লাগে না, তবে সমস্যা এমন যে এসব কাহিনী পড়ে এর ভুলভ্রান্তিগুলো তুলে না ধরলে মানুষ (পুরুষ মানুষ) আরো বেশি আত্মঘাতি হয়ে বেহেশতে যাবার জন্য, হুরপরী পাবার জন্য লালায়িত হবে এবং মানুষ মারতেই থাকবে। আর পিতা ছাড়া সন্তান জন্ম দেয়া সর্বশক্তিমানের কাছে কোন ব্যাপারই না, এতে উভলিঙ্গ হবার প্রয়োজন নেই, কারণ সে বা তারা নাকি হও বললেই হয়ে যায়। প্রশ্ন হলো, হও বললেই যখন হয়ে যায় তখন কেন যে এসব নবী-রাসূলদের জন্মের সময় শিশু হত্যা করতে হয়েছিলো? কেনই বা ধর্মযুদ্ধের প্রয়োজন? কেনই বা আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নত মানুষ এখনো ওইসব কল্পকাহিনীতে বিশ্বাসী? কেন যুক্তি দিয়ে, চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলেও ধার্মিকরা বুঝতে চায় না সেটাই বিষয়। পিতা ছাড়া যীশুর জন্ম বাইবেল ও কোরান দুটোতেই সমর্থিত। খ্রীস্টানরা বলে ঈশ্বরিক শক্তিবলে যীশুর জন্ম হয়েছে। তাই বোধহয় লিঙ্গটিঙ্গ প্রয়োজন পড়ে নাই, ঈশ্বর চাইলে হয়তো পুরুষের পেটেও যীশুর জন্ম হতে পারতো!