নষ্ট রাত্রি
ছোট গল্প
আদনান আদনান
উৎসর্গ
গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ
রাত প্রায় বারোটার দিকে তিনি টের পান যে তার শিশ্নটি হারিয়ে গেছে।
কামাল খাঁনের রাত জেগে বই পড়ার খুব অভ্যাস। তিনি চেম্বার থেকে বাড়িতে ফেরেন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে। আর পৌনেদশটার দিকে তিনি পড়তে বসেন, যা শেষ হয় রাত বারোটার একটু আগে আগে। আজ রাতে তিনি পড়ছিলেন মিলান কুন্ডেরার “নোবডি উইল লাফ”। গল্পটা পড়তে পড়তে তিনি হো হো করে হেসে উঠছিলেন কিছুক্ষণ পর পর। খুব মজা পাচ্ছিলেন নায়কের পরিণতি কল্পণা করে। আর বারবার তার কাফকার উপন্যাসগুলোর কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো, বিশেষ করে দ্যা ট্রাইয়ালের কথা। তিনি শরীরের ভিতরে একটা চাঙ্গা ভাব অনুভব করছিলেন। জীবনের তিনটি প্রধান প্রশ্নের উত্তর তিনি সাহিত্যে খোঁজেন সবসময়। আমরা কোথার থেকে এলাম? এখানে আমাদের কিভাবে জীবন যাপন করা উচিৎ? আর আমরা কোথায় যাচ্ছি? তিনি উত্তর আজও খুঁজে পাননি, কিন্তু জীবনকে তিনি অর্থহীন ভাবেন না। বরং সাহিত্য, শোভা, আর সংসারের মাঝে তিনি খুঁজে পেয়েছেন আনন্দ। মানুষের দুঃখ তাকে দুঃখ দেয়। মানুষের সুখ তাকে সুখ দেয়। তিনি যতটা সম্ভব মানুষের উপকার করেন। জীবনের থেকে এর বেশি তিনি আশা করেন নি কখনো। তিনি ভাবতে ভালবাসেন যে তিনি একজন সুখি মানুষ। নিজেকে তার মাঝে মাঝেই স্বার্থপর বলে মনে হয়, কিন্তু তিনি আত্মহত্যায় বিশ্বাসি নন।
তার বয়স পঞ্চাশের একটু ওপাশে, কিন্তু চল্লিশের একপাও ওপাশে দেখায়না তাকে। আগে বেশ লম্বাই ছিলেন, কিন্তু বয়সের সাথে সাথে কেমন যেন হঠাৎ করেই একটু কুঁজো হতে শুরু করেছেন। দাঁড়িগোফ তার পছন্দ না, তাই প্রতিদিন সকালে শেভ করেন। চশমা পরেন। আর অধিকাংশ সময়ে পরেন কাল রঙের শার্ট-প্যান্ট। শরীরে কোন মেদ না থাকায় কিছুটা ছোঁকড়া ছোঁকড়া দেখায় তাকে। তার ডান চোখটা একটু টেরা, কিন্তু তিনি তা স্বীকার করতে রাজি নন। তার বাপের কোন টাকা ছিলো না। কিছুই কখনো দিতে পারেন নি তিনি, আর রেখেও যান নি কিছু। এ নিয়ে অবশ্য কামাল খাঁনের কোন ক্ষোভ নেই। তিনি নিজের চেষ্টায় ও অনেক কষ্টে ডাক্তারি পাশ করেছিলেন দেশ স্বাধীনের কিছু আগে কলকাতা থেকে। তার পরের থেকে তিনি যশোর শহরেই আছেন। তার গ্রাম যশোর শহর থেকে উনিশ কিলোমিটার দক্ষীণে মোবারাকপূরে। প্রতি মাসে তিনি সাইকেল চালিয়ে একবার এখনো গ্রামে যান। তিনি প্রায়ই বলেন, “জীবন তো গ্রামে, আর শহরে শুধু বেঁচে থাকা জীবনের অপেক্ষায়।”
কামাল খাঁনের মূলত উপন্যাস আর ছোট গল্প পড়ার দিকেই ঝোঁক বেশি। তিনি এমনভাবে নিয়মিত পড়াশুনা করেন যেন তা তার দায়িত্ব। না পড়লে দারুণ কোন ক্ষতি হয়ে যাবে তার বা অন্য কারো। আগে অনেক উপন্যাস পড়তেন, কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে পড়ছেন শুধু ছোট গল্প। তিনি কখনো একটার বেশী বই এক সাথে পড়েন না। বর্তমানে মিলান কুন্ডেরার কিছু গল্প পড়ে খুব মজা পাচ্ছেন। তিনি খুব ধিরে পড়েন। এক এক পাতা পড়তে তার কখনো কখনো কয়েক সপ্তাহ পার হয়ে যায়। তবে তিনি প্রথমে গল্পটা একবার দ্রুত পড়ে নেন। তারপর যখন দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার পড়েন তখন তিনি খুব ধিরে পড়েন। তিন বারের কম তিনি কোন গল্পই পড়েন না। তার বিশ্বাস একটা গল্প লিখতে লেখকের যদি পাঁচ বছর লেগে যায়, আর তা পড়তেও যদি কারো পাঁচ বছর লেগে যায় তবে তাতে কোন ক্ষতি নেই। দিনে তিনি কখনো বারো পাতার বেশি পড়েননা। এর বেশি পড়াকে তিনি অপরাধ বলে মনে করেন। এক জীবনে কতটা বই একটা মানুষ পড়তে পারে? কতটা বই একটা মানুষের পড়া উচিৎ? দশ বা বরো? এর বেশি পড়ে সত্যিই কি কিছু বোঝা সম্ভব? তিনি সুখ পান সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, শামসুর রাহমান, আর হুমায়ুন আজাদ পড়ে। তিনি তাঁদেরকে বাঙলার হিরকখন্ডত্রয় বলে মনে করেন।
তিনি একজন অভিজ্ঞ পাঠক। তারপরও কুন্ডেরার গল্পটির নায়িকা ক্লারা কেন যেন তার ভিতরে একটা কামভাব জাগিয়ে তোলে। ক্লারাকে তিনি যেন চোখের সামনে দেখতে থাকেন। তার ক্লারাকে প্রচন্ড রকম করতে ইচ্ছে করে। তিনি নিজেই লজ্জা পেয়ে যান যখন বুঝতে পারেন যে ব্যপারটা ভুল হয়ে যাচ্ছে। তিনি শিশ্নটিকে ছুঁয়ে দেখতে গেলে শিশ্নটিকে খুঁজে পান না। যদিও তিনি কামতাপ ও কামচাপ অনুভব করতে থাকেন, কিন্তু শিশ্নটিকে খুঁজে পান না। ওটির যেখানে থাকার কথা সে সেখানে নেই। অন্ডকোষ সহ শিশ্নটি নেই। এ কি কান্ড! তিনি চমকে ওঠেন প্রথমে, তারপর হেসে ওঠেন। এ কিভাবে সম্ভব? নিজেকে উন্মাদ বলে মনে হতে থাকে। একবার ভাবেন স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু তাও বা কিভাবে সম্ভব? স্বপ্নেরও তো একটা রসবোধ থাকা দরকার। আর আছে বলেই হয়তো তার এই খেলা! সামনে পিছনে নিচে সবখানে ছুঁয়ে দেখেন, কিন্তু না, তা নেই। বুকপঁকেটে দেখেন। নেই। চেয়ারের উপরে ও নিচে দেখেন। বইটির পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে দেখেন। নেই। অবাক হন নিজের কর্মকান্ড দেখে। নিজেকে তিনি একজন যুক্তিবান মানুষ বলেই জানেন। কিন্তু এ তিনি কি করছেন? কি ভাবছেন? কি দেখছেন? তিনি লুঙ্গি খুলে একটা ঝাড়া দেন। নেই। জামাটা খুলেও একটা ঝাড়া দেন। নেই। বাথরুমে যান একবার। প্যান্টের পকেটে খোঁজেন বেশ কয়েকবার। অফিসের প্যান্ট ও শার্ট ঝেড়ে দেখেন। নেই। তিনি মেঝেতে বসে পড়েন। হেসে গড়াগড়ি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে উঠে বসেন। এটা কিভাবে সম্ভব? যাবে কোথায়? পড়ার ঘরে বা বাথরুমের বাইরে তো হারাণোর কথা না। মনে আছে গোসলের সময় ওটিকে ছুঁয়েছিলেন একবার। তারপর থেকে তো এই ঘর ছেড়ে আর যান নি। তাহলে যাবে কোথায়? তিনি চিৎকার করে ওঠেন। তিনি আবার সারা ঘরে খুঁজে দেখেন আরো একবার। ঘর বলতে তো শুধু পড়ার টেবিল, চেয়ার, আর কিছু বই। এ সামান্য কিছু জিনিসের ভিতরে হারাবে কোথায় ওটা? বুঝে উঠতে পারেন না তিনি কি করবেন, বা তার কি করা উচিৎ। তার কি পুলিশে খবর দেওয়া উচিৎ? পুলিশকে খবর দিয়ে কি বলবেন? “যে আমার শিশ্ন হারিয়ে গেছে, আমাকে তা খুঁজে পেতে সাহায্য করুন?” নিজেকে তার এতো বোকা আর কখনো কোনদিন মনে হয়নি।
সে সিদ্ধান্ত নেয় যে সে সারা বাড়ীটা একবার খুঁজে দেখবে। একাবার মনে হয় যে তার উচিৎ হবে তার স্ত্রীকে জাগিয়ে তোলা। কিন্তু চিন্তাটা তার ভালো লাগেনা। কেউ কি কখনো তার স্ত্রীকে গভীর ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে বলেছে, “আমার শিশ্ন হারিয়ে গেছে, আর আমি তা কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না”? সে বাইরের ঘরে সাইকেলের আশে পাশে আর ছিটের নিচে দেখেন। শিশ্ন নেই। রান্নাঘরেও দেখেন। নেই। তার নিজের শোবার ঘরে আর অন্য দু’ঘরেও নেই। বাইরে দরজার আশে পাশেও খুঁজে দেখেন। নেই। বাড়ির দো’তলায় উঠতে তিনি ভয় পান, লজ্জাবোধ করেন। অনেকক্ষণ তিনি দো’তলায় ওঠার দরজার পাশে দাড়িয়ে থাকেন। তার সাত মেয়ে ঘুমিয়ে আছে দো’তলার এক ঘরে। তারা সবাই সন্ধ্যার পরেই ঘুমিয়ে পড়ে। তাদের সবারই ভোর রাতে উঠে পড়তে বসার অভ্যাস। তিনি মেয়েদের ঘরটি বাদে বাকি তিনটি ঘরে শিশ্নটিকে খুঁজে না পেয়ে হতাশ হন। মেয়েদের ঘর ভিতর থেকে আটকানো থাকে। তিনি কঁড়া নাড়তে সাহস পাননা। কি বলবেন তিনি যখন তার মেয়েরা তার কঁড়া নাড়ার কারণ জানতে চাইবে? শুধু এই চিন্তাটা তাকে মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে থাকে। তিনি কেঁদে ফেলেন। নিজেকে মৃত বলে মনে হতে থাকে। লজ্জায় তার সারা শরীর কাঁপতে থাকে। ঘামতে শুরু করেন তিনি। তিনি সোজা হয়ে দাড়িয়ে থাকতে পারেন না। দ্রুত নিচে নেমে আসেন। রান্নাঘরে যান পানি পানের জন্য, আর তিন চার বা পাঁচ গ্লাস পানি গিলে ফেলেন। মনের ভিতরে তার একটা খটকা লেগেই থাকে। মেয়েদের ঘরটা বাদে তিনি অন্য সব যায়গায় খুঁজেছেন। তাদের ঘরে তো ওটা লুকিয়ে থাকতেই পারে। পারে না কি? তাদের ঘরটাই তো দো’তলার সবচেয়ে বড় ঘর। হারাতে যখন পারে, সে লুকিয়েও থাকতে পারে! তিনি স্ত্রীকে জাগিয়ে তোলা ছাড়া আর অন্য কোন পথ দেখতে পারেন না।
তার সন্দেহ হতে থাকে যে সে হয়তো শিশ্নটি চেম্বারেও হারিয়ে আসতে পারেন। মনে পড়ে গোসলের সময় ছুয়ে দেখেছেন, কিন্তু এমনও হতে পারে যে তা গতকালের বা তারও আগের স্মৃতি। তিনি সাইকেলটা নিয়ে একবার বেরুবেন বলে ভাবেন। কিন্তু মোড়ের পুলিশটির কথা মনে পড়ে যেতেই তার ইচ্ছেটা কিছুটা দমে যায়। যদিও পুলিশ, বাবলু, তাকে খুব ভালো করে চেনে, তারপরও তিনি ভয় পেতে থেকেন যে তাকে কিছু প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হতে পারে। কি বলবেন তিনি বাবলুকে? “বাবা আমার শীশ্নটি হারিয়ে গেছে, চলোতো আমার সাথে আমরা দু’জনে মিলে দেখি শালাকে খুঁজে পাওয়া যায় কি না!” বাবলু হয়তো তাকে মাতাল ভাববে, বা ভাববে মাথাটা গেছে। হয়তো তাকে ধরে বাড়িতে ফিরিয়ে আনবে যাতে তার কোন ক্ষতি না হয়। এসব ভাবতে ভাবতে তার মনে একটা ভয় জমাট বাঁধতে থাকে। এমন কি হতে পারেনা যে তার শিশ্নটি বাড়িতে ফেরার সময় রাস্তায় পড়ে গেছে? তার চেম্বার বাড়ির থেকে তিন মাইল মতো দূরে। যদি রাস্তায় হারিয়ে থাকে তো এতক্ষণে তা হয়তো রিকশা বা কোন গাড়ির নিচে পড়ে শেষ, বা কোন কুকুর বা কাকে মুখে করে নিয়ে গেছে। তার শরীর ঠান্ডা হয়ে উঠতে থাকে। আর যদি কেউ তা পড়ে পায় রাস্তায় আর তা তুলে বাড়ি নিয়ে কোথাও ফেলে রাখে? তার কি উচিৎ হবে কাগজে একটা বিজ্ঞাপণ দেওয়া? সে শিশ্নটির কি বর্ণনা দেবে? সে কি তার শিশ্নটিকে কোনদিন খুব ভালো করে দেখেছে? শিশ্নটি দেখতে কেমন? তাতে কি কোন তিল ছিলো? ছিলো কোন আঁচিল? শান্ত অবস্থায় লম্বাই সে কতটুকু? তিনি কোন বর্ণনা-ই দাড় করাতে পারেন না। আর তাছাড়া এই বিজ্ঞাপণ কি কোন কাগজ ছাপবে? ছাপলেও কেউ কি প্রমান ছাড়াই তাকে ফিরিয়ে দেবে শিশ্নটি? অন্য কেউ ও তো তার শিশ্নটি হারিয়ে থাকতে পারে? অসম্ভব তো নয়। আর তিনিই কি তার শিশ্নটিকে চিনতে পারবেন? হয়তো তার স্ত্রী চিনতে পারবে, কিন্তু তিনি চিনতে পারবেন না। এ ব্যপারে তিনি মোটামুটি নিশ্চিত হন। আর তখনই প্রথমবারের মতো তিনি বুঝতে পারেন যে তার শিশ্নটি আর কোনদিন খুঁজে না ও পাওয়া যেতে পারে। তিনি বুঝতে পারেন যে তার মুখ লাল উঠছে, আর তার সারা শরীর ঘামে বৃষ্টিতে ভেজার মতো হয়ে ওঠছে। তিনি হন্তদন্ত ভাবে দরজা খুলে শোবার ঘরে ঢোকেন।
তার স্ত্রী ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। তিনি প্রথমে কিছু বুঝতে না পেরে কামাল খাঁনকে একগ্লাস পানি আনতে বলেন। তার স্ত্রীর নাম শোভা। বয়সে কামাল খাঁনের থেকে কিছু কম। তবে লম্বায় তার থেকে সামান্য বেশি। এই বয়সেও যৌবন তার শরীর থেকে পালিয়ে যায়নি। লম্বা নাক-মুখ-চিবুকে তাকে অসাধারণ দেখায়। আর তার চোখ সারাক্ষণ হাসতে থাকে। অনেকেই এখনও বলে, “আপনার সৌন্দর্য তো সে’কালের ইন্ডিয়ান নায়িকাদের মতো”। কামাল খান জীবনে কখনো অন্য কোন নারীর সাথে শোননি, প্রয়োজন বলে মনে করেননি। তার দৃষ্টিতে কখনো শোভার সৌন্দর্যের বলয় পেরিয়ে যেতে পারিনি অন্য কেউ। আর তাছাড়া তিনি প্রায়ই নিজে নিজে বলে উঠেন, “শুধু শোভা-ই আমাকে বোঝে”।
তিনি কিছুক্ষণ চুপচাপ দাড়িয়ে থেকে বলেন, “আমার তোমারে কিছু বলার আছে”।
“কি? কেন? বাজে কতো এখন?”
“খুবই জরুরী একটা বিষয়”।
শোভা খাটের উপরে উঠে বসতে বসতে বলে, “কোন খারাপ খবর নাকি?” তিনি সবসময় তার মেয়েদের নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা-ই থাকেন। সাতটা মেয়েকে মানুষ করা তো আর কোন সহজ ব্যপার না! ছেলের আশার তারা সংসার বড় করেন নি। বরং বড় সংসার তাদের দু’জনেরই পছন্দ। বড় মেয়ের বয়স ছাব্বিশ, আর ছোটটির বয়স চৌদ্দ। তারা সবাই মেধাবী। তিরিশের আগে তারা সবাই বলে দিয়েছে তারা কেউ বিয়ে করবেনা। তারা তাদের মায়ের কাছ থেকে পেয়েছে তাদের সৌন্দর্য, আর বাবার কাছ থেকে পেয়েছে ছিপছিপে শরীরের গঠন।
“না তেমন কিছু না। তবে অদ্ভুত একটা ব্যাপার ঘটে গেছে।“
“অদ্ভুত? এত রাতে আবার কি ঘটলো? আমারে আবার বলো না যে তুমি অদ্ভুত কিছু একটা পড়েছো। সেরকম কিছু হলে সকালে শোনা যাবে। এখন শুয়ে পড়া যাক”।
“বিষয়টা জরুরী। আমার উচিৎ তোমারে জানানো”।
খাটের পাশে উঠে বসে শোভা, ঘরের আলো জ্বালিয়ে সে বলে, “বলো শুনি কি ব্যাপার।”
“আমার মনে হয় আমার শিশ্নটি হারিয়ে গেছে।”
“কি বলছো এসব? পাগল হয়ে গেলে নাকি? শীশ্ন হারাবে কিভাবে? এত রাতে এসব মজা করার কি কোন মানে হয়?”
“সত্যিই হারিয়ে গেছে।”
“আরে উন্মাদ নাকি তুমি?”
কামাল খাঁন তার স্ত্রীকে দেখায় যে সত্যিই তার শিশ্নটি নেই। শোভা খাটের থেকে নেমে দেয়ালের দিকে সরে যায়। সে ভয় পেয়ে যায়। সে পরিস্কার সেখতে পায় যে কামালের ঐ জায়গাটা তেলা, যেন সেখানে কোনদিন কিচ্ছু ছিলনা। সে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। কামাল খাঁনও দাড়িয়ে থাকেন বস্ত্রহীন।
শোভা বলে, “এ কিভাবে সম্ভব? এ কিভাবে হলো?”
“কে জানে! আমি সবখানে খুঁজেছি। হতে পারে চেম্বারে পড়ে গেছে। হতে পারে রাস্তায় পড়ে গেছে। যদি রাস্তায় পড়ে থাকে তো তার আর পাবার সম্ভাবনা নেই। শুধু ওদের ঘর বাদে আমি আর অন্য সবখানে খুঁজেছি। আমার মাথায় কিছু খেলছেনা। আমি কি করবো? আমার কি করা উচিৎ? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা। হতে পারে মেয়েদের ঘরে ওটা লুকিয়ে আছে। জানি তা সম্ভব না, তবে কে জানে, হতেও তো পারে!”
“কি বলছো এসব? ওদের ঘরে কি করবে ওটা? তোমার মাথায় এসব কিভাবে এলো? তোমার তো লজ্জা পাওয়া উচিৎ। তোমার কি লজ্জা করছে না এসব বলতে?”
“আমি তো কথাটা বলতে মরে যাচ্ছি। মাটির নিচে নেমে যাচ্ছি। কিন্তু ঐ একটা জায়গা বাদে আমি আর সবখানে খুঁজেছি। মনের ভিতরে খুঁতখুঁত করছে আর কি। অন্য কিছু না।”
“তোমার লজ্জা পাওয়া উচিৎ।”
“আহাঃ আমাকে নিশ্চিত হতে হবে তো!”
“নিশ্চিত হতে হবে?”
“যাওনা, দেখো ওখানে আছে কিনা। থাকলে থাকতেও তো পারে।”
শোভা দেখতে পায় যে কামাল কাঁপছে, ঠীক মতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না। সে আর কথা না বাড়িয়ে দ্রুত ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
সে মেয়েদের ঘরের কড়া নাড়ে খুব জোরের সাথে। ভিতর থেকে আমিনা বলে, “কি, আব্বা নাকি?”
“না, আমি। দরজাটা একটু খোল তো।”
“কেন? এত রাতে কি হলো আবার?”
“মহাসর্বনাশ হয়ে গেছে।”
আমিনা তাড়াতাড়ি দরজা খুলে বলে, “কি, কি হয়েছে মা? সব ঠিকটাক আছে তো? আব্বার কি শরীর খারাপ?”
শোভা ঘরের ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। আমিনা অবাক হয়ে ওর মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। অন্যরাও ততক্ষণে সবাই ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। সবাই একটা ভয় পেয়ে যায় যেন।
সারু কম্বলটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে উঠে বসে বলে, “কি মা? তোমারে এত ভয় পাওয়া দেখা যাচ্ছে কেনো? ব্যপার কি বলো তো!”
“তোমাদের আব্বার…তোমাদের আব্বার ওটা হারিয়ে গেছে।”
কাকলি বলে, “কোনটা? কি?”
“তারশিশ্নটি হারিয়ে গেছে। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।”
আমিনা বলে, “কি?”
“সে তো সারা বাড়ি খুঁজে ক্লান্ত। শুধু তোদের ঘরটা খুঁজতে বাকি।”
কথাটা শোনার পরে তার মেয়েরা সব খাটের উপরে লাফ মেরে উঠে জড়সড় হয়ে বসে। আর তারা ঘরের মেঝেতে এদিক ওদিক ওটাকে খুঁজতে থাকে। তাদের চোখে মুখে একটা ভয় নেমে আসে।
শোভা বলে, “তোদেরকে সব সাবধানে থাকতে হবে যতক্ষণ না ওটাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। কোন শিশ্নকেই বিশ্বাস করা যায়না।”
সামিন বলে, “কিভাবে হারালো? অবাক কান্ড যে!”
“কে জানে কিভাবে হারালো। কিন্তু ঘটনা সত্য। আমি দেখেছি”।
সাবিনা বলে, “মা, আমরা সবাই মিলে কি একটা স্বপ্ন দেখছি? এমন অবাস্তব ঘটনা কি সম্ভব?”
“সম্ভব। নিজের চোখেই তো দেখলাম”
মালিহা বলে, “আর ওটা আমাদের ঘরে থাকতে পারে শুনে তো আমার ঘিণ্ণা লাগছে।”
এমন সময় মপাঁশা হেসে ওঠে খিলখিল করে। সে সবার ছোট।
সামিন বলে, “তোর তো লজ্জা পাওয়া উচিৎ। তুই হাসছিস কেনো? তোরে তো মার লাগানো দরকার। বড় ফাজিল হয়েছো না?”
মপাঁশার মুখ কালো হয়ে ওঠে। সে চুপ মেরে যায়।
শোভা ঘরের সবখানে খুঁজে দেখে। নেই। কিছুটা শান্তি পায় সে। মেয়েরা মায়ের খোঁজা দেকে অবাক হয়। তাদের চোখ তাদের মায়ের গতিবিধির সাথে নড়তে থাকে ঘরময়। শোভা ঘর থেকে বের হয়ে যাবার আগে বলে, “দরজা ঠিক মতো লাগিয়ে দে। আর সবধানে থাক। আমরা অন্য এক জগতে বাস করছি আজ রাতে। কোন শিশ্নকেই বিশ্বাস করা যায়না।”
শিশ্নটিকে পাওয়া যায়নি শুনে কামাল খাঁনের মনটা একদম ভেঙ্গে পড়ে। তিনি মেঝেতেই শুয়ে পড়েন। শোভাও তার পাশে শুয়ে পড়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। কামাল খাঁনের মার্কেজের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে তাঁর ওয়ান হানড্রেড ইয়ারস অফ সলিচ্যুডের কথা। তিনি নিজের ভিতরে এক চরম নিঃসঙ্গতা অনুভব করেন। উপন্যাসটি ছিলো তার পড়া প্রথম ইংলিশ উপন্যাস। ওটা পড়ার পরে তিনি বুঝতে পারেণ যে বাঙলায় কোন উপন্যাস নেই। যা আছে তার সবই ব্যর্থ। তিনি এক চরম সত্যের মুখোমুখি পড়ে গিয়েছিলেন। তার আগের বিশ্বাস সব ধ্বসে পড়তে থাকে ঐ মহান উপন্যাসটি পড়ার পরে। অনেক পরে বাঙলায় শুধুমাত্র হুমায়ুন আজাদের তিনটি কাজকে (যাদুকরের মৃত্যু, মহান শয়তান, আর শুভব্রত, তার সম্পর্কিত সুসমাচার) তার ঐ পর্যায়ের কাছাকাছি বলে মনে হয়। এও একটা সুখের বিষয় বলে মনে করেণ তিনি। তিনি নিজেই এক সময় লিখতেন, কিন্তু তার প্রথম গল্প “অলৌকিক নরক” এর পরে তিনি আর কোন ভাল গল্প লিখতে পারেননি। তাই লেখা ছেড়ে শুধু পাঠকই হয়েছেন, আর তাতেই তিনি সুখি। তিনি বিড়বিড় করে প্রায়ই বলেন, “কি লাভ লিখে যদি মার্কেজের থেকে ভালো না লেখা যাই”? “অলৌকিক নরক” গল্পটি তিন বন্ধুকে নিয়ে এক কাহিনি। যারা সবাই চরম কামুক। গল্পের শেষে অলিদ দীর্ঘ তিন বছর চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয় তার প্রেমিকাকে বেশ্যা বানাতে। আদনান পরকিয়া প্রেমে বিশ্বাসি। যে অপেক্ষায় আছে থাকে প্রিয় মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ার জন্য। আর ফরিদ বাড়ির কাজের মেয়েটিকে যৌনদাসিতে রুপান্তরিত করে। মেয়েটিও যৌনদাসিত্বে নিজেকে আবিষ্কার করে সুখি হয়ে ওঠে। সারা জীবন কামাল খান একটা বিশ্বাস ধরে রেখেছেন আর তা হলো, “লেখকের কাজ শুধু কোন একটা বিষয়কে তুলে ধরা আর শিল্প সৃষ্টি করা। তার আর অন্য কোন সামাজিক দায়িত্ব নেই”। “অলৌকিক নরক” এই বিশ্বাসের উপরে ভিত্তি করেই লিখেছিলেন । আজ তিনি এই অবস্থায় পড়ে আরো বেশি করে বুঝতে পারছেন একজন লেখকের কতটা নির্মম হওয়া উচিৎ। তিনি শোভাকে বলেন, “যদিও ঘটনাটা অসম্ভব, কিন্তু তা এখন আমাদের জীবনেরই একটা অংশ। আমাদের দায়িত্ব শুধু দেখে যাওয়া”। শোভা বলে, “তুমি একটু ঘুমাতে চেষ্টা করো। সকালে দেখা যাবে কি করা যায়। হতে পারে আমরা সবাই একটা হাস্যকর স্বপ্ন দেখছি”। কামাল খাঁন হো হো করে হেসে উঠেন। শোভার ভয় হয় কামালের জন্য, কিন্তু নিজেকে সে সামলে রাখে।
ওদের মা চলে যাবার পরে মেয়েরা ঘুমাতে সাহস পায়না। তারা আলো নিভাতেও ভয় পায়। মশারি ঠিক মতো গুঁজে শুয়ে থাকে তারা সবাই পাশাপাশি দু’টো খাটে।
মপাঁশা জিজ্ঞস করে, “যদি এই ঘরে আসে তো আমরা কি করবো?”
মালিহা বলে, “আমি মনে হয় চিৎকার করতে শুরু করবো।”
সাবিনা বলে, “আমি খুব মজা পাবো। জীবনে এমন একটা ঘটনার সাথে জড়াতে পেরে আমার ভালই লাগছে, তোরা যা-ই বলিসনা কেনো।”
সামিন বলে, “যেহেতু ওটা আব্বার সাথে আর লাগানো নেই, সেহেতু কি ওটাকে আর আব্বার জিনিস বলা যায়?”
কাকলি বলে, “তোর কি মাথার ঠিক আছে? কি বলছিস এসব?”
সামিন বলে, “তুই কি জোক পছন্দ করিসনা? আর তোর কি শিশ্ন পছন্দ না?”
আমিনা বলে, “শিশ্ন আমার খুবই পছন্দের একটা জিনিস। আর তাছাড়া এই হারানো শিশ্নটি তো আর আব্বার নেই। আমি সামিনের সাথে একমত।”
সাবিনা বলে, “আমি তো ওটাকে খুঁজে পেতেই চাইছি। খুব মজা হবে।”
সারু বলে, “আমার খুব লজ্জা লাগছে। আমাদের ঘুমানো উচিৎ।” সে আলো নিভিয়ে দেয়।
সামিন বলে, “আমার তো শিশ্নটির জন্য একরকম খারাপ-ই লাগছে। হয়তো যে ভয় পেয়ে লুকিয়ে আছে কোথাও। সারাটা জীবন তো ঐ নিচেই ঝুলে থেকেছে সে, অন্ধকারে। এখন সে স্বাধীন। এখন সে নিজের ইচ্ছেমতো যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে। আমার মনে হয় সে আর আব্বার কাছে ফিরে যাবেনা। আমি খুঁজে পেলে আমি তাকে সুন্দর একটা জীবন দেবো। সে স্বাধীন। কিন্তু আমার থেকে সুন্দর জীবন আর তাকে কে দেবে! তাছাড়া যদি সে স্বাধীন না-ই হতে চাইতো তো এতক্ষণে আব্বার কাছে ফিরে যেতো। স্বাধীনতা কে না চায়!”
সাবিনা বলে, “আর আমার ভাগ?”
আমিনা বলে, “আমি সবার বড়, আমাকে প্রথমে দিতে হবে।”
সারু বলে, “তোর কি কিছুতেই মেটেনা? তুই তো একের পর এক ধরছিস আর ছাড়ছিস।”
আমিনা বলে, “আমি যেমন ঠিক তেমনই। আমি তো আর একটা নকল জীবন যাপন করতে পারি না!”
সামিন বলে, “আমরা সবাই না হয় ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবো। বেশ মজা হবে।”
সারু বলে, “আমরা ওটার বেশ্যা হবো?”
মালিহা খিলখিল করে হেসে ওঠে। মপাঁশাও।
সামিন বলে, “কি রে ঘুমাসনি, তোরাও ভাগ নিবি নাকি?”
মপাঁশা বলে, “আমি হবো ওটার ছোট বউ।”
মালিহা বলে, “আমি বউ হতে চাইনা, বেশ্যা হতে চাই।”
আমিনা বলে, “ওটা কোথায় কে জানে? শিশ্ন নারীর থেকে বেশী দূরে থাকার কথা নয়! মা তো এখন বৃদ্ধাই প্রায়। ওটার তো আমাদের কাছেই আসার কথা। ঠিকই আসবে দেখিস কুকুরের মতো গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে। ”
সারু বলে, “হয়তো লুকিয়ে আমদের কথা শুনছে।”
সামিন হেসে ওঠে। বলে, “আমি পেলে আমি ওটার বারোটা বাজিয়ে দেবো।” বলে, আবার সে হেসে ওঠে।
কাকলি বলে, “কাউকেই কিন্তু আমরা বলবোনা। ওটা একান্ত-ই আমাদের হবে। আমাদের নিজস্ব একটা শিশ্ন।”
আমিনা বলে, “ওটা দেখতে কেমন কে জানে? আব্বারে তো এখনও ছোঁকড়া দেখায়।”
মালিহা বলে, “ওটা দেখতে হবে একটা বড়সড়ো ইঁদুরের মতো।”
সবাই হেসে ওঠে।
কাকলি বলে, “কে নির্ধারণ করবে যে কে ওটাকে পাবে কোন রাতে?”
মপাঁশা বলে, “আমি সবার ছোট। আমি কি সবার আগে পেতে পারি?”
আমিনা বলে, “আগে তো পাই ওটাকে, তারপর দেখা যাবে। আমরা সাবাই ব্যবহার করবো।”
কাকলি বলে, “আমাদের ভিতরে একটা গন্ডগোল হতে পারে। একটা নিয়ম তো দরকার।”
সাবিনা বলে, “ঠিক আছে আমি ঠিক করবো কে কখন কিভাবে পাবে।”
সামিন বলে, “না, তুই খেয়ে শেষ করে ফেলবি। আমি তোরে চিনি খুব ভালো করে।”
সারু বলে, “সাবিনা তুই কেন রাখবি? তোরে সে অধিকার কে দিলো?”
মপাঁশা বলে, “আমি রাখবো। আমি তোদের সবাইকে ভালবাসি। আমি সবাইকে সমান ভাগ দেবো।”
মালিহা বলে, “শিশ্ন হাতে গেলে তোর চেহারা পাল্টে যাবে। আমি মানুষ চিনি।”
মপাঁশা বলে, “তুই আমার কি জানিস?”
মালিহা বলে, “জানি, জানি, আমি এখন আর ওসব কথা তুলতে চাচ্ছিনা।”
সাবিনা বলে, “আমরা ওটাকেই বলবো বেছে নিতে আমাদের একজনকে প্রথম বার। তারপরে এক একজন এক একরাতে নেবে।”
আমিনা বলে, “অতো কমে তোর হবে!”
“হবে। হবে না কেন?”
সামিন বলে, “আমার হবেনা। তাছাড়া আমার রাতে পছন্দ না। আমি দিনে চাই।”
কাকলি বলে, “অতো করলে ওটা ক্লান্ত হয়ে যাবে। ম’রে যাবে।”
আমিনা বলে, “আরে নাহ! শিশ্নের কাজ তো শুধু করা। ক্লান্ত হবেনা। ওটা খুশিই হবে।”
মালিহা বলে, “সবকিছুই তো একদিন ক্লান্ত হয়ে যায়। সবচেয়ে সুন্দরির প্রেমিকও তো একদিন ক্লান্ত হয়ে যায়।। ক্লান্তি নামা-ই তো মহানিয়ম!”
কাকলি বলে, “তুই তো দেখছি দার্শনিক বণে গেলি রে!”
মালিহা বলে, “আমি সঠিক। দেখিস তোরা।”
মপাঁশা বলে, “আমরা কেনো ওটার বেশ্যা হবো? ওটা হবে আমাদের কৃতদাস।”
আমিনা বলে, “তুই না বউ হবি ওটার?”
মপাঁশা বলে, “কৃতদাসকে করতে মজা বেশি মনে হয়।”
মালিহা বলে, “ভাবতেই ভালো লাগছে যে আমাদের একটা শিশ্ন থাকবে ইচ্ছেমতো ব্যবহারের জন্য।”
আমিনা বলে, “দেখি ওটা কাজ কেমন করে। আমার মনের মতো হ’লে আমি আর বিয়ে করছিনে।”
সামিন বলে, “তোরে সুখ দিতে গেলে তো ওটা মারা যাবে।”
সাবিনা বলে, “এটা অতিরঞ্জণ। শীশ্ন ক্লান্ত হয়না কখনো। আমরা সাতজনে দিনে সাতবার করে করবো। ওটা হয়ত আরো সাতবার করে চা’বে। ওটার পরাণ কোনদিন ভরেণা হাজার বার করলেও”।
সারু বলে, “আমিও বিয়ে করছিনে। আমি তো এখনই ওটার প্রেমে পড়ে যাচ্ছি।”
সামিন বলে, “আহাঃ আমার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিস কেনো? চিন্তায়ই তো অর্ধেকের বেশি কামসুখ। তোর তো তা জানার কথা! কে না বসে বসে কামচিন্তা করতে পছন্দ করে? যারা অস্বীকার করে তারা মিথ্যে বলে।”
মালিহা বলে, “বিয়ের কি দরকার? আমরা ওটাকেই খাঁটাবো। আমার মনে হয় ওটা দারুণ খাঁটবে আমাদের জন্য।”
কথা বলতে বলতে এক সময় ওরা সবাই ঘুমিয়ে পড়ে।
ভোরের প্রথম আলো সামিনের চোখে লাগতেই তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। সে শুয়ে শুয়েই দেখতে পায় যে একটি শিশ্ন শুয়ে আছে মেঝের উপর তাদের দু’খাটের ঠিক মাঝখানে। সে খাটের থেকে নেমে হাতের তালুতে তুলে নেয় শিশ্নটিকে। ওটি হাতের থেকে মাথাটা একপাশে নিচে ঝুলিয়ে দিয়ে শুয়ে থাকে। শিশ্নটিকে খুব ক্লান্ত দেখায়, যেন সারা রাত তারও ঠিকমতো ঘুম হয়নি। সে শিশ্নটিকে তার কস্মেটিক ড্রয়ারে রেখে বাথরুমে যায়। ড্রয়ারটি সে বন্ধ করেনা। তার চোখে এক রকম কামোন্মত্ত হাসি ফুটে ওঠতে দেখা যায়।
নিচের ঘরে কামাল খাঁন প্রস্তুতি নিতে থাকেন চেম্বারে যাবার। সারা পথ তিনি ওটিকে খুঁজতে খুঁজতে যাবেন, আর আশা করবেন চেম্বারে খুঁজে পাবার। তাকে সাইকেলটা বের করতে শোনা যায়। আমি ড্রয়ারের ভিতরে কাঁপতে থাকি একদল মেয়ের তীব্র-ঝাঝালো যোনির গন্ধে।
বাঙলায় লেখা “নষ্ট রাত্রি” আমার প্রথম ছোট গল্প। অনেক ভুল-ত্রুটি হয়তো রয়ে গেলো, যা আশা করছি আপনাদেরকে এড়িয়ে টিকে থাকতে পারবেনা বেশিক্ষণ। আমি শ’তিনেক ছোট গল্প লিখেছি গত পাঁচ বছরে। আমি সাধারণত মানুষের নষ্ট হয়ে ওঠা, বা তাদের নষ্টামি নিয়ে লিখি। লেখা হয় ঠিকই, কিন্তু ছাপানো আর হয়ে ওঠেনা অনেকটা নিজেরই অলসতার কারণে। আর তাছাড়া আমার লেখার বিষয়গুলোও আবার একটু অন্য রকম (“নষ্ট রাত্রি” পড়ে আমি নিশ্চিত আপনারা তা বুঝতে পারছেন কিছুটা), যা বাঙলাদেশে ছাপাতে হলে বেশ সাহসের প্রয়োজন। আপনাদের উৎসাহ পেলে ভবিষ্যতে আরো কিছু ছোট গল্প মুক্তমনায় পোষ্ট করার ইচ্ছে রইলো। ই-মেইলঃ [email protected]
লিখতে চাই। গল্প।
গল্পটি পড়লাম| রচনাটি যে অসাধারণ সাহিত্য হয়েছে তা বলতে পারছি না বলে দুঃক্ষিত|তবে প্লটে অভিনবত্ব আছে| সাত কন্যার সংলাপে শিশ্নকে পরিচালন করতে পারার ক্ষমতার অহংকার ও পরিনামে ক্ষমতার দাস হয়ে যাওয়ার বিষয়টির কৌতূকপ্রদ ঈঙ্গিত রয়েছে| আমার মনে হয় অজাচারের অভিযোগ অযৌক্তিক, কারণ “যেহেতু ওটা আব্বার সাথে আর লাগানো নেই, সেহেতু কি ওটাকে আর আব্বার জিনিস বলা যায়?” তবে শেষ বাক্যে “আমি ড্রয়ারের ভিতর কাঁপতে থাকি”-এর পরিবর্তে “শিশ্নটি ড্রয়ারের ভিতর কাঁপতে থাকে” হওয়া উচিত| এটা কি টাইপের ভুল? বানানে আরো একটু যত্ন নিলে পড়তে পড়তে পাঠককে হোঁচট খেতে হত না|
আদনান ভাই সাহেব, আপনার গল্পটা খুইজা পাইসি।এইসব লিখা আবার কিনা অন্যের লেখাকে অরুচিকর বলেন?
(N) (N) (N)
অভিজিৎ দাদার ওই মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ দাদা কে।তা না হইলে আদনান ভাইজানের আসল মানসিকতা চিনতাম না।
ধরণী দ্বিধা হও। (N) (N) (N) (N) (N) (N) আমি কি বাস্তবেই কোন মুক্ত মনা মানুষের লেখা পড়তেছি?
@অর্ফিউস,
এটা একটি রুপক গল্প ছিলো। হুজুগে মাতাল মানুষ যেভাবে অতীত ও ভবিষ্যতের কথা না ভেবেই বর্তমান নিয়ে মেতে ওঠে আমার গল্পে আমি তাই দেখিয়েছি। যেসব মানুষের মানবতার কথা মনে থাকেনা আরকি; যারা সু্যোগ পেলেই সুবিধা আদায় করে আরকি! এই মেয়েগুলো সেই রকমের মানুষ। মানুষ যেনো নষ্ট হওয়ার অপেক্ষা-ই থাকে, আর সু্যোগ পেলেই সে যুক্তি খোঁজে নষ্ট হওয়ারও।
এবার আর একবার পড়ে দেখেন আমার গল্পটি কতটা সফল! আপনার জানার ইচ্ছে আছে দেখেই আপ্নাকেই শুধু জানালাম। আর কাওকে কিন্তু জানাইনি!
ধন্যবাদ।
গল্পটি একটুও ভালো লাগেনি। একটুও না। :-Y :-X
@ভক্ত, কন যে বিটকেলে, আর অশ্লিল।একেবারে অজাচার কে যেন বাস্তবে দেখতে চাওয়া।
আপনার মন্তব্য পড়ে বোঝা যায়, আপনার ধারণা, আপনি বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান রাখেন। আপনার লেখা পড়ে বোঝা যায়
স্বীকারোক্তির যথার্থতা।
আপনার গল্পে কোন গল্প নাই, একধরণের মানসিক বিকারের প্রকাশই ঘটেছে বহুলাংশে। এটি আমার পড়া জঘন্যতম গল্প।
আর পাঠকদের ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্যের জবাবে একাধিকবার একই অর্থহীন কমেন্ট-
আপনার উন্নাসিকতা এবং মানসিক জড়তার পরিচায়ক।
অবাক হয়ে গেছি , এ ধরণের লেখা মডারেশন পেরিয়ে আসল কিভাবে।
আমার মনে হয়েছে আপনি আপনার পছন্দের লেখকের অনুকরনে একটি গল্প লিখতে চেয়েছেন, কিন্তু গল্পটি ব্যর্থ হয়েছে। আমি যতটুকু দেখেছি লেখকরা গল্পের প্রয়োজনে যৌনতা কে নিয়ে আসেন। আপনার গল্পে সেধরনের কোন ব্যপার দেখছি না।
সাহিত্ত যদি বারবার পড়ে বুঝতে হয় তাহলে সেটা পাঠকের বিরক্তিই উৎপাদন করবে।
বুঝতেই পারছেন পাঠকরা খুবই চেতেছে। সেই গ্রিক মিথোলজীর কথাই ধরেন- ইদিপাস, এখানে ইনসেস্টটাকে (নিষিদ্ধ যৌনতা) ব্যবহার করা হয়েছে নিতান্ত দৈব দুর্বপাকে বা দুর্ঘটনার ভিতর দিয়ে। ইনসেস্ট সাহিত্যের উপকরন হতে পারে যদি না তাকে সজ্ঞানে ঠান্ডা মাথায় সাহিত্য নিয়ে আসা হয়, যাতে পাঠকের কাছে মনে হতে পারে এটাকে সামাজিকি করনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আরো একটা উদাহরন দেয়া যেতে পারে- আমাদের ফরিদ আহমেদ সাহেবের এই কিছুদিন আগের একটা লেখার কথা ধরা যায়- সেখানেও ইনসেস্ট আনা হয়েছে খুবি সুন্দর ভাবে। তার গল্পটা খুব পপুলার হয়েছিল। বাবা-মেয়ের কাহীনি- বাবা জানতোনা সেটা তার মেয়ে- গল্পটা এরকমই। স ত্যি কথা বলতে কি আমার চটি বই পড়ার কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই, তবে কিশোর বয়েসে কিছু বন্ধু ছিল যারা সুজোগ পেলেই ওগুলো পড়তো এবং প্রায়ই সেগুলো শুনাতো। আমার সেসব স্মৃতি-গল্প থেকে বলতে পারি, সেসব গল্পের কোনটাতেই ইনসেস্টকে অস্বীকার করা হয়নি বা ছোট করে দেখা হয়নি। ওটা করলে তাদের বই চলতো না। আপনাকে আমি নিরুতসাহিত করছি না। আমার মনে হয় পাঠক এইসব কারনে এই লেখাটার উপরে বিরক্ত। আপনাকে জানতে হবে কোথায়, কখন কিভাবে এইসব উপকরন ব্যবহার করতে হবে। কারন ইনসেস্ট সব সমাজেই খুব শক্ত একটা টাবু। লেখায় এসব জিনিস উপড়ে ফেলা যায় না- ফেললে রুচিহীন লাগে। ধন্যবাদ।
@শাখা নির্ভানা,
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তবে আপনার বক্তব্য পড়ে দারুণ এক খবর পেলাম। আপনি গল্পটিতে যা খুঁজে পেয়েছেন তা আমার জন্য একটা খবর-ই বটে। ধন্যবাদ।
@শাখা নির্ভানা,
একমত! কোন সমাজেই ইনসেস্টকে উৎসাহিত করা হয়না; করা উচিতও না। একটি প্রজাতির টিকে থাকার প্রশ্ন এর সাথে জড়িত।
@শাখা নির্ভানা,
(Y)
বেশ লিখেছেন। বাংলা চটি সাইট গুলি এইবার মার খাবে দেখছি। মুক্তমনাতেই যখন পাওয়া যায়, তখন অন্যখানে যাব কেনে হায়??
আজকাল শিশ্ন ভগাঙ্কুর নিয়ে না লিখলে পাঠক খায় না।(লেখক এখন পর্যন্ত ৭ টি পোস্ট করেছেন, সর্বমোট মন্তব্য ২৪ টি, আর এই নষ্ট রাত্রি তে এক রাত্রেই ২৯ টি!!) আইডিয়া ভাল।
@অরণ্য,
ভাই আপনি তো চটির পাঠক (বেশ খবরও রাখেন আবার!), তাই স্বাভাবিক ভাবেই আপনার মগজ তার থেকে বেশি দূরে যেতে পারিনি। আপনি গল্পটির সঠিক রসবোধটি ধরতে পারেন নি। যে রসবোধটি ধরেছেন তাতে আপনার চিত্তের দারুণ পরিচয় মেলে। আপনার সাহিত্যের চর্চা শুরু হোক এখানেঃ- The Castle By Franz Kafka. ধন্যবাদ।
আমি আপনার জাগায় থাকলে গল্পের একটা সুস্পষ্ট বক্তব্য যেনো বিকশিত হয় এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতাম। আমার দৃষ্টিতে গল্পটা একটু বেশী ধোয়াশাচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছে। গল্পটা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছি আমি এই দাবী করবো না। তবে লেখককে তার প্রচেষ্টার জন্য বাহবাই দিবো। চালিয়ে যান, প্রচেষ্টা অব্যহত থাকলে ভুল ত্রুটি শুধরে একদিন সুলেখক হয়ে উঠবেন।।
@আল্লাচালাইনা,
সুস্থ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ব্যপারটা আমি মাথায় রাখবো।
ভাই জান আপনার গল্প থেকে কোট করে আমি কোন মন্তব্য করছিনা, করলে মন্তব্যের পরিধি আপনার গল্পের চেয়ে বড় হবে। আমরা বাংলা ভাষায় আষাঢ়ে গল্পের কথা শুনেছি, গাঁজা খুরি গল্পের কথা শুনেছি, আপনার টি কোন শাখার অনুমান করতে পারছিনা। আপনার এই গল্পের জন্য নতুন বিশেষণ এর প্রয়োজন। আর কামাল খানের শিশ্নটি মনে হয় প্ল্যাস্টিক এর ছিল,এই জন্যে হারিয়ে গিয়েছিল। বাবার শিশ্ন নিয়ে কন্যাদের আলোচনা,এটা রুচির সর্বনিন্ম প্রকাশ। মুক্সুদুল মমিন পড়ে হুমায়ুন আজাদ সাহেবের বমি হচ্ছিল, আপনার টা পড়ে আমার ও তাই। আপনার জন্য আমার একখান পরামর্শ আছে। যদিও পরামর্শ দেবার যোগ্যতা আমার নাই। গল্প লেখা নয়, গল্প পড়া। :-Y
@ওমর ফারুক,
আপনি গল্পটিতে যা খুঁজে পেয়েছেন তা গল্পটিতে নেই। গল্পটি আসলে ক্ষীণদৃষ্টি, বিশ্বাসের দাসত্ব, আর নষ্টামির বিরুদ্ধে আমার, আপনার, ও আমাদের একটা সংগ্রাম। আর গল্পটি বলাও হয়েছে শিশ্নটির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। কয়েকবার পড়লেই পাঠক বুঝতে পারবেন যে মানুষ ক্ষমতাবাণ হয়ে ওঠতে চায় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, কিন্তু আসলে ক্রমাগত সে তার নিজেরই ক্ষমতার দাস হয়ে ওঠে। ধন্যবাদ।
@আদনান,
গল্প যে একেবারে বুঝি নাই তা নয়। হুমায়ুন আযাদের শুভব্রত, তার সম্পর্কিত সুসমাচার (১৯৯৭) আর পাক সার জমিন সাদ বাদ (২০০৪) যে আপনি পড়েছেন তাও বুঝতে কষ্ট হয়নি। তবে একখান কথা আছে-
“If skill would be gained by watching, every dog would become a butcher”
@আকাশ মালিক,
বুঝতে পারছি কথাটা বলতে পেরে বড়ো শান্তি পেয়েছেন। সারাদিন হয়তো আপনার মগজ চুল্কাচ্ছিলো কথাটা বলার জন্য। তবে যা সত্যি তা হলো বাঙলা সাহিত্যে হুমায়ুন আজাদকে পেরিয়ে যাবার চেষ্টা যার ভিতরে নেই, তার লেখা উচিৎ না। বাঙলা সাহিত্যে হীরক-মাণদন্ড তিনি স্থাপন করে গেছেন। আর তাই আমাদের সবাইকেই সৃষ্টি করতে হবে নতুন কিছু, যা আগে দেখা যায়নি।
মানুষের অস্তিত্বের সংকট ও সংগ্রামের কাহিনী জানতে হলে আমাদেরকে যেতে হবে গভীর থেকে গভীরে। “নষ্ট রাত্রি” সেই পথযাত্রী। সম্ভবত বিশ্ব-সাহিত্যের সাথে আপনার পরিচয় নেই বলেই আপনি নিজেরই বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন। শুরুতে আপনি এই বইটা পড়তে পারেণঃ-
The Brief Wondrous Life of Oscar Wao by Junot Díaz
আর একটা কথা, আপনি “আজাদ” না লিখে “আযাদ” লিখেছেন। দয়া করে ঠীক করে দিলে খুশি হবো।
ধন্যবাদ।
@ওমর ফারুক,
যে যোগ্যতা আপনার নাই ঐ যোগ্যতা ফলাইতে যান কেন?
আমার কাছে খারাপ লাগে নাই। গদ্যরীতিতে হুমায়ুন আজাদের প্রবল আধিপত্ত দেখছি মনে হচ্ছে। আজাদপ্রীতি একটা কারন হতে পারে। তবে যাই হোক আমার কাছে ভালোই লেগেছে।
কুন্ডেরা কেমন লেখে?
@সাইফুল ইসলাম,
কুন্ডেরাকে জানুন এখানে
http://www.libertarian.co.uk/lapubs/cultn/cultn023.pdf
আর এখানে
http://en.wikipedia.org/wiki/Milan_Kundera
অসাধারণ লেখেন তিনি। আমি তাকে আধুনিকতার একজন মাণদন্ড বলে মনে করি।
ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
এই ভাল লাগার কারণটা যদি একটু শেয়ার করতেন! এটা জাস্ট একটা অনুরোধ, মুক্তমনা একটা আলোচনার ফোরাম বলেই আপনার কাছে অনুরোধটি করলাম। হয়ত আপনার আলোচনা হতে গল্পটির প্রকৃত মর্মোদ্ধার সামান্য হলেও হতে পারে আমার মত অধম পাঠকদের!
ভাল থাকবেন!
@কাজি মামুন,
আচ্ছা আমি বলতেছি আমার কাছে কেন ভালোই লাগছে।
আপনার কাছে ভালো লাগে নাই কেন? পছন্দ অপছন্দ অনেক সময়ই যুক্তির পথ ধইরা আসে না, যদিও আমার কাছে গল্পটা অযৌক্তিক ভাবে ভালো লাগে নাই। কিন্তু আপনার কাছে ভালো না লাগার কারন জিজ্ঞাসা করলে কী কী কারন দেখাইবেন?
লেখক দাবী করছেন, তার লেখাটি ধারণ করছে বিশ্ব সাহিত্যের আধুনিক ধারা, অর্থাৎ Absurd, Shock and Provoke প্রভৃতি! তবে অনুবাদ হোক, বিদেশী গল্পের ছায়া অবলম্বনে লেখা হোক বা লেখকের মৌলিক হোক, গল্পটি আমাদের বিচারে চরমভাবে ব্যর্থ! পুরো গল্প পড়ে কেউ কি বলতে পারবে, গল্পটির কোন অর্থ আছে? যতই মার্কেজ বা ডালিকে দিয়ে জাস্টিফাই করা হোক না কেন, এটি শেষ পর্যন্ত নোংরামি উস্কে দেয়া ছাড়া পাঠককে আর কোন দিক দিয়ে আলোড়িত করতে পারে না! বস্তুত গল্পটির উত্তেজিত করার ক্ষমতা আছে, আলোড়িত বা আলোকিত করার নয়! সাহিত্য নিয়ে যার রয়েছে অগাধ পড়াশোনা, সেই শফিউল জয় ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি লেখাটির ব্যাপারে!
@কাজি মামুন,
মডুদের রোজায় ধরছে বোধ হয়। এতক্ষণ এই নোংরা গল্প প্রথম পাতায় থাকার কথা না।
@আকাশ মালিক,
ওনারা মনে হয়, রোজায় ক্লান্ত হয় ঘুমিয়ে আছেন।
@কাজি মামুন,
আপনি গল্পটিতে যা খুঁজে পেয়েছেন তা গল্পটিতে নেই। গল্পটি আসলে ক্ষীণদৃষ্টি, বিশ্বাসের দাসত্ব, আর নষ্টামির বিরুদ্ধে আমার, আপনার, ও আমাদের একটা সংগ্রাম। আর গল্পটি বলাও হয়েছে শিশ্নটির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। কয়েকবার পড়লেই পাঠক বুঝতে পারবেন যে মানুষ ক্ষমতাবাণ হয়ে ওঠতে চায় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, কিন্তু আসলে ক্রমাগত সে তার নিজেরই ক্ষমতার দাস হয়ে ওঠে। ধন্যবাদ।
@আদনান,
একই কথা একাধিকবার বলার প্রয়োজন ছিল না; এমন তো না যে, আকাশ মালিক ভাইয়ের প্রতিত্তোরে আপনি যা লিখেছেন, তা অন্য পাঠকরা পড়তে পারে না!
কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, সেই সংগ্রামকে চিরুনী অভিযান চালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না শিশ্নমান গল্পটিতে! শুনেছি, বড় লেখকরা অনেক সময় শক দিতে পছন্দ করেন তাদের ভুবনজোড়া পাঠককূলকে! একজন বিশ্বখ্যাত লেখক নাকি পিতা-মাতার যৌন জীবন নিয়ে লিখেছেন এবং তাও বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ!
আমাদের দুর্ভাগ্য হল, আদনান ভাই আমাদের জন্য তেমন কিছু লিখতে চেয়েছেন, কিন্তু আমরা তা বুঝতে পারছি না!
@কাজি মামুন,
পাঠকের জীবন ও শিল্প সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা যখন এমন ভয়ঙ্করভাবে কম, তখন লেখককে তো একটু দুঃখবোধ করতেই হবে পাঠকের জন্য। ধন্যবাদ।
সংখ্যায় হবে ৩০০-এর মতো। দু’দশটি কমবেশি হবে হয়তো। তবে অনেক কিছু ঠিকঠাকের প্রয়োজন। আমি তো ভাই ব্যাকরণ আর বানানে খুবই দুর্বল। সব গল্পের একরকম হওয়া তো সম্ভব না, তবে আমার কাজে Magic Realism, Surrealism, আর Absurd এর প্রভাব আছে। আর তাছাড়া ডালির “Shock and Provoke” ব্যপারটা আমার খুব পছন্দের। এছাড়া Rimbaud তো বলেই গেছেন, “We have to be absolutely modern”।
@আদনান,
আমি ভাবছি এই গল্প মুক্তমনায় ছাড় পেল কী ভাবে?
হয় উনি মডার্নের সংজ্ঞা ভুল বলেছেন আর না হয় আপনি ভুল বুঝেছেন।
এটা বাৎস্যায়নের কাম-সুত্র, না যৌবনের ঢেউ?
এই আপনিই না সেদিন বললেন-
@আকাশ মালিক,
আপনি গল্পটিতে যা খুঁজে পেয়েছেন তা গল্পটিতে নেই। গল্পটি আসলে ক্ষীণদৃষ্টি, বিশ্বাসের দাসত্ব, আর নষ্টামির বিরুদ্ধে আমার, আপনার, ও আমাদের একটা সংগ্রাম। আর গল্পটি বলাও হয়েছে শিশ্নটির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। কয়েকবার পড়লেই পাঠক বুঝতে পারবেন যে মানুষ ক্ষমতাবাণ হয়ে ওঠতে চায় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, কিন্তু আসলে ক্রমাগত সে তার নিজেরই ক্ষমতার দাস হয়ে ওঠে। ধন্যবাদ।
@আদনান,
শুনেন, আপনার এই লেখায় আর মন্তব্য করার ইচ্ছে নাই মিয়া ভাই। হ্যা মডার্ন হইতে হইলে যদি মেয়েদের জন্য বাবার পুরুষাঙ্গকে ( অবধারিত ভাবেই ছেলেদের জন্য মায়ের যোনী) নিয়ে নাড়া চাড়া করতে হয়, তবে জীবনে কোনদিন যেন তেমন মর্ডান না হতে হয়।
গুরু, ভালই সবক দিলেন।
ভাল মন্দ কিছুই বলছি না; আসলে গল্পটা আমি বুঝিনি। পিতার শিশ্ন নিয়ে কন্যাদের রসালো আলোচনা রুচিকর ঠেকেনি।
@মনজুর মুরশেদ,
আপনি গল্পটিতে যা খুঁজে পেয়েছেন তা গল্পটিতে নেই। গল্পটি আসলে ক্ষীণদৃষ্টি, বিশ্বাসের দাসত্ব, আর নষ্টামির বিরুদ্ধে আমার, আপনার, ও আমাদের একটা সংগ্রাম। আর গল্পটি বলাও হয়েছে শিশ্নটির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। কয়েকবার পড়লেই পাঠক বুঝতে পারবেন যে মানুষ ক্ষমতাবাণ হয়ে ওঠতে চায় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, কিন্তু আসলে ক্রমাগত সে তার নিজেরই ক্ষমতার দাস হয়ে ওঠে। ধন্যবাদ।
@আদনান, এই গল্পের ভাবার্থ এতই কঠিন, যে বারবার পড়তে হবে?
@ওমর ফারুক,
আপনি বিশ্বাসের দাসত্বের জীবন-যাপন করছেন। আপনি আপনার নিজস্ব একটা জগতে বন্দী হয়ে পড়েছেন। আপনি গল্পটি বেশ কয়েকবার পড়লে উপকার পাবেন বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ।
@আদনান,
ধন্যবাদ, হিন্টস-র জন্য। আরও কয়েকবার পড়ে আপনাকে জানাবো।
@আদনান,
মানুষ ক্ষমতাবাণ হয়ে ওঠতে চায় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বুঝতে পারছি, কিন্তু ঠিক পরিষ্কার হল না কিভাবে এই গল্পে আপনি দেখিয়েছেন যে ক্রমাগত সে তার নিজেরই ক্ষমতার দাস হয়ে ওঠে। মনে হয় আপনার নিজেরই গল্পটা নিয়ে একটা আলোচনা লেখা উচিত।
@মনজুর মুরশেদ,
আপাতত আমি বেশ কয়েক বছর শুধু সৃষ্টি করে যেতে চাই। নিজের সৃষ্টিকে ভেঙ্গে দেখানোর কোন ইচ্ছে নেই।
@আদনান,
ইংরেজি শব্দগুলোর বাংলা করে একটু দেন তো প্লিজ।
এটা একটা ভাল প্রকল্প। আপনার সৃষ্টির রহস্য আপনি নিজে ভেঙ্গে দেখানোর কী দরকার? লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মোনালিসার ছবি আঁকা নিয়ে ফরাসী বিজ্ঞানীগন আজও গবেষণা করছেন, শুনেছি নেরুদার (১৯০৪—১৯৭৩) কবিতা নিয়েও প্রচুর গবেষণা হয়। আপনার সৃষ্টি্র অমোঘ রহস্য ভেদ করতে গিয়ে মানুষ হাজার বছর গবেষণা করুক, তবে ‘বেশ কয়েক বছর’ এর একটা টাইম লিমিট দিলে আমার মত জীবন সন্ধ্যার কাছাকাছি মানুষ আপনার সৃষ্টির কিছুটা রহস্যও হয়তো দেখে যেতে পারতাম।
@আদনান,
ঠিক আছে, লিখতে থাকুন; আমরাও পড়ে দেখি ক্ষীণদৃষ্টি, বিশ্বাসের দাসত্ব, আর নষ্টামি থেকে বের হয়ে আসতে পারি কিনা। তবে কিনা নিজে বুঝতে পারিনি, তাই অন্যদের শানে নযুল আর ছহি তাফসীরই এখন ভরসা 🙁 ।
শ’তিনেক ছোট গল্প অলরেডি লেখা আছে? বাকি গল্পগুলোও কি এ রকম হবে? এ জাতীয় গল্প আসতে থাকলে মুক্তমনার জন্যে খবর আছে।
@আকাশ মালিক,
সংখ্যায় হবে ৩০০-এর মতো। দু’দশটি কমবেশি হবে হয়তো। তবে অনেক কিছু ঠিকঠাকের প্রয়োজন। আমি তো ভাই ব্যাকরণ আর বানানে খুবই দুর্বল। সব গল্পের একরকম হওয়া তো সম্ভব না, তবে আমার কাজে Magic Realism, Surrealism, আর Absurd এর প্রভাব আছে। আর তাছাড়া ডালির “Shock and Provoke” ব্যপারটা আমার খুব পছন্দের। এছাড়া Rimbaud তো বলেই গেছেন, “We have to be absolutely modern”। ধন্যবাদ।
প্রথম হলেও আমার কিন্তু আপনার গল্পটি ভালই লেগেছে। চালিয়ে যান ভূল ত্রুটি শুধরাতে শুধরাতে একদিন বড় লেখক হতে পারবেন। ধন্যবাদ।
@Two Steps From Home,
আরো দু’একটা কথা হয়তো লিখতে পারতেন!
ধন্যবাদ।